Thread Rating:
  • 97 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছাইচাপা আগুন ।।কামদেব
 

।।১৮।।


সাধন কর্মকারের জুয়েলারী ব্যবসা।তাকেও হাসপাতাল চত্বরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে।এতদিন বিধবা ভাই-বৌয়ের খোজ নেয়নি এখন দরদ উথলে পড়ছে।অঝোরে কাদছেন মৃণালিণী দেবী,বিভুতি বাবু মাথায় হাত দিয়ে বসে।ময়না তদন্ত শেষ হলে মৃতদেহ দেওয়া হবে।ওয়াশ করলেও বিষ রক্তে ছড়িয়ে পড়েছিল।মৃতদেহ কাকে দেওয়া হবে এই নিয়ে শুরু হয়েছে টানা পোড়েন।
সাধনের দাবী তার সহোদর ভাইয়ের বউ।বিয়ের পর বাপের বাড়ীর হক থাকে না। হাসপাতাল চত্বরে মায়ের কান্না অবশেষে সুপারের সিদ্ধান্ত মৃতার বাবাকেই সৎকারের অধিকার দেওয়া হল।
পূর্ণেন্দু বাসায় ফিরলে এলিনা বলল,বেরোলে বাড়ীর কথা খেয়াল থাকে না।
--আজ তোমার অফডে অন্য দিন তুমি কখন ফেরো?
--ঠিক আছে আমিও এবার থেকে কখন ফিরি দেখবে।
পূর্ণেন্দু পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,আমি মজা করে বললাম।
মজা খারাপ লাগেনা আসল জিনিসটা যদি একটু-- এলিনা মনে মনে ভাবে।এলিনা বলল,হয়েছে হয়েছে এবার হাত-মুখ ধুয়ে এসো।
এলিনাকে অন্যদিনের চেয়ে আজ একটু মুডি মনে হচ্ছে।ইয়াং বন্ধুরা এসেছিল নাকি?হাত-মুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে বসে জিজ্ঞেস করে,তোমার ইয়াং বন্ধুরা এসেছিল?
তাতাই একথা কেন জিজ্ঞেস করল?চোখ তুলে বলল,ওদের সময় কোথায়?হঠাৎ একথা কেন জিজ্ঞেস করলে?
--না আসারই কথা।আজ একটা স্যাড ব্যাপার ঘটে গেছে।
এলিনার ভ্রু কুঞ্চিত হয়,কিসের স্যাড ব্যাপার?
--তুমি শোনোনি কিছু? 
--কি করে শুনবো আমি কি বাইরে বাইরে ঘুরি?
--কিশোরের বউ মারা গেছে।
--হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল না? 
--হ্যা ওয়াশ করে ডাক্তারবাবুরা চেষ্টা করেছিল।ততক্ষনে বিষ ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেহে।কিশোরের দাদা হাসপাতালে গেছিল।
--কেন ভাই-বৌয়ের মৃতদেহ দেখতে।
--শুনলাম কিশোরের ফ্লাটটা হাতাবার মতলব।মানুষ এত লোভী হয়--।
মনোসিজের কথা মনে পড়ল।ছেলেটার অবস্থা তেমন ভাল নয় শুনেছে তবু অন্যের জিনিসের প্রতি কোনো লোভ নেই।কত ভাবে চেষ্টা করেছে ওকে সাহায্য করার কোনো সুযোগই দেয়নি।
মনোসিজ চুপচাপ বসে আছে।পূর্ণিমা কর্মকার মারা গেলেন আর তার পতন হল।এলিনা বৌদি তাকে হারিয়ে দিল।তার মধ্যে প্রবৃত্তি ছিল বলেই এলিনা বৌদি জাগাতে পেরেছে।নিজেকে অসুচি মনে হতে থাকে।
বঙ্কা লক্ষ্য করে মনা তখন থেকে চুপচাপ।জিজ্ঞেস করে,পূর্ণিমাবৌদির জন্য খারাপ লাগছে?
--মৃত্যু মাত্রই দুঃখজনক। কতভাবেই মনুষ্যত্বের মৃত্যু হয়।
কথাটা কানে যেতে শুভ বলল,আসলে লজ্জায় সুইসাইড করেছে।
মনোসিজ ফ্যাকাসে হাসে।সে যে কথা বলতে চায় তা এদের বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়।মনোসিজ উঠে দাঁড়ায় বলে,আজ আসি রে।
দিলীপ এসে ধরল বলল,আজ এলিনা তো?
--কলেজ থেকে ফিরতে দেরী হয়ে গেছিল।
একটা মিথ্যে ঢাকতে আরেকটা মিথ্যে বলতে হয়।এইভাবে ধীরে ধীরে নীচে নামতে থাকে মানুষ।
--আজ মিনু বাংলা পড়িয়েছে।শালা ভালই পড়ায় মাইরি।মিনুই আমার কথা ভাবে।বাড়িতে কেউ আমার সঙ্গে কথা বলে না।
একবার বলতে ইচ্ছে হল মিনুকে দেখে মেয়েদের একটু সম্মান করতে শেখ কিন্তু মনে এলেও বলতে পারেনা।মনোসিজ বলল,আজ আসি শরীরটা ভাল নেই। 
তখনো রাত নামেনি তবু মনে হয় পৃথিবীটা বড় অন্ধকার।মনোসিজ ক্লান্ত পায়ে বাড়ীর দিকে হাটতে থাকে।অন্যদের মত হয়ে যাচ্ছে নিজেকে মনে মনে ভাবত অন্যর থেকে আলাদা।ভুল মানুষমাত্রই করে একথা ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে চায় মনোসিজ।
বাসায় ফিরতে দরজা খুলে হিমানীদেবী বললেন,বাবা তোর শরীর খারাপ?
--কেন?
--চোখ মুখ কেমন শুকনো শুকনো লাগছে।
মনোসিজ কি বলবে নিজের ঘরে চলে গেল।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
Ba valo i cholche ...
Like Reply
গল্পের তরণী তরতরিয়ে বেয়ে চলেছে।
[+] 1 user Likes surjosekhar's post
Like Reply
পূর্ণিমা ঝড়ে পড়লো অকালেই, ভেবেছিলাম মনের সাথে ঘটনা বহুদূর গড়াবে। দেখি কামদেব দাদা কি চমক রাখে সামনে.......
[+] 1 user Likes a-man's post
Like Reply
পূর্ণিমার মৃত্যু মনোসিজের মনে গভীর 
ছাপ ফেলেছে।
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
ঠিকই শুনেছিলাম। আপনার লেখায় নারীর আবেগ ও অনুভূতির স্পর্শ থাকে। অনেক ধন্যবাদ ও ভালবাসা।
Like Reply
 


।।১৯।।


রবিবার ছুটির দিন।তাড়া নেই কাল অনেক রাত অবধি পড়েছে।ঘুম ভাঙ্গলেও চোখ বুজে শুয়ে আছে মনোসিজ।এক সময় হিমানীদেবী এক গেলাস হরলিকস করে ছেলেকে ডেকে তুললেন।চোখ খুলে মায়ের মুখটা দেখতে মনটা আলোকে উদ্ভাসিত হয়।
--হরলিকস?চা দেবে না?
--চা খেতে হবে না।সারারাত জেগে পড়িস একটু হরলিকস খেয়ে বাইরে থেকে ঘুরে আয়,ভাল লাগবে।
অন্য দিকে তাকিয়ে চোখের জল আড়াল করে।মায়েরা কেন এমন হয়।
হিমানীদেবী চলে গেলেন অনেক কাজ পড়ে আছে।চোখের জল মুছে হরলিকসের গেলাসে চুমুক দিতে দিতে ভাবে,রকে নয় একটু হাটতে বেরোবে।
পাড়ার পূব দিকে রেল লাইন।তার নীচ দিয়ে এক ফালি রাস্তা স্টেশনের দিকে চলে গেছে।যান বাহন চলে না বললেই হয়।সেই পথ দিয়ে হাটতে হাটতে চলেছে মনোসিজ।কানে এল কে যেন তার নাম ধরে ডাকছে।পিছন ফিরে তাকাতে দেখল বঙ্কিম।
--শালা ডাকতে ডাকতে গলা চিরে গেল কি ভাবছিলি বলতো?কাছে এসে বঙ্কিম বলল।
-- কি ব্যাপার আড্ডা বসেনি?
--তোকে খুজছি একটা খবর আছে।
বঙ্কা আবার কি খবর আনল।পূর্ণিমা কর্মকারের ব্যাপারে কিছু নয়তো?খবর শোনার জন্য বঙ্কার দিকে তাকালো।
--একটা ট্যুইশনির ব্যবস্থা করেছি।
--কোন ক্লাস?
--মেয়েটা নাইনে পড়ে লরেটোতে।
--মেয়ে?
--অন্য রকম ট্যুইশনি।মিসেস পাকড়াসীর মেয়ে।
--অন্যরকম মানে?
--মেয়েটা বাংলা ভাল জানে না।বাংলা শেখাতে হবে।
মিসেস পাকড়াশীর নাম শুনেছে।বড় চাকুরে লোকে বলে দজ্জাল টাইপ,বেশ প্রভাবশালী।স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হয়নি।ভদ্রলোক নাকি আবার বিয়ে করে সংসার করছে।মনোসিজ কিছুটা হতাশ।
--তোর টাকা নিয়ে কথা,ছেলে না মেয়ে তাতে তোর কি?তুই আমার সাথে চল।আমি ম্যাডামকে কথা দিয়েছি।
বঙ্কিম সত্যিই তার হিতৈষী।মুখের উপর না বলতে পারে না। 
প্রান্তিক ছাড়িয়ে দোতলা বাড়ী।নীচে গ্যারাজ, কয়েক ঘর ভাড়াটে ঊপরে মেয়ে উশ্রীকে নিয়ে একা থাকেন উশতী পাকড়াশী।দোতলায় উঠে বঙ্কা কলিং বেলে চাপ দিতে ভিতর থেকে বাজখাই গলা শোনা গেল,কে-এ-এ?
--ম্যাম আমি বঙ্কা।
মনোসিজকে বলল,তুই আবার আণ্টী-ফাণ্টি বলতে যাবিনা উনি পছন্দ করেন না।
--গীতা দরজাটা খুলে দেও।
গীতা রান্নার লোক সারাদিন থাকে রাতে বাড়ী চলে যায়।তাছাড়া মেয়েকে কলেজ বাসে তুলে দেওয়া নিয়ে আসাও করতে হয়।নাইনে পড়লেও উশতীদেবী মেয়েকে একা ছাড়েন না।
দরজা খুলে ওদের ভিতরে নিয়ে একটা ঘরে বসালো।মাথার উপর পাখা ঘুরছে।মনোসিজ ভাবে বঙ্কার কথা এ কোথায় এল।কিছুক্ষন পর গীতা দু-কাপ চা দিয়ে গেল।সকালে চা খাওয়া হয়নি।মনোসিজ চায়ের কাপ নিয়ে বঙ্কার দিকে তাকাতে বঙ্কা চোখ টেপে।বলতে চাইছে চুপচাপ চা খেয়ে যা।রাত জেগে পড়ে মনোসিজের ঘুম-ঘুম ভাব,চায়ে চুমুক দিয়ে বেশ চাঙ্গা লাগছে।বেশ কিছুক্ষন পর খাটো ঝুলের পাঞ্জাবী নীচে ছিটের লুঙ্গি পরা উশতী পাকড়াশী প্রবেশ করলেন।ওরা উঠে দাড়াতে গেলে ম্যাম হাত নেড়ে বসতে বললেন।
স্থুলদেহী শ্যামলা গায়ের রঙ ঠোট জোড়া পুরু মনোসিজ লক্ষ্য করে।
উশতী এক পলক চোখ বুলিয়ে বললেন,টুউ ইয়াং।
--বয়স্ক কাউকে পেলাম না।বঙ্কা বলল।
--মেয়েদের এই এ্যাডোলেসেন্ট পিরিওড খুব খারাপ সময়।
মনে হয় নিজের মেয়ের কথা বলছেন মনোসিজ ভাবে।
--খালি ছুকছুকানি।হি-হি করে হাসলেন ম্যাম।বাট আয়াম ভেরি স্ট্রিক্ট।টয়লেটে তিনি মিনিটের বেশী হলেই নক করি।ম্যাম নিজের খেয়ালে বলতে থাকেন।
নজরে পড়ে লুঙ্গির ভিতর থেকে থামের মত একজোড়া পা। মনোসিজ ভাবে তাকে কোথায় নিয়ে এল বঙ্কা।
--হার্ড ইট অল ফ্রম বঙ্কা?
--ইয়েস ম্যাম।
--নো নীড ইফ আদার সাবজেক্টস নীড ক্যান ইউ?
--যা বলবেন সব করব।কিন্তু--। 
সব করবে কথাটায় উশতীর ঠোটে এক চিলতে হাসি খেলে যায়।চোখ তুলে বললেন, স্যালারি?হাণ্ড্রেড উইল বি লেস?
--থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম।
--উশ্রী মাই ডার্লিং।
--ইয়েস মম।
উশ্রী ঢুকলো মনেহল আশে পাশে অপেক্ষা করছিল।
উশতী বললেন দিস ইজ ইয়র টিচার।
--হেলো।উশ্রী বলল।
মনোসিজ এসব আদব কায়দায় অভ্যস্ত নয় বলল,বোসো।ম্যাম ওর জন্য একটা বই আনবো বেশি দাম নয়--।
--ওকে নো প্রবলেম।ইউ হ্যাভ টু কাম এভেরি সানডে।
ওরা চলে গেলে উশ্রী লাফিয়ে উঠে বলল,হি ইস ভেরি হ্যাণ্ডসাম সো মম?
--ডোন্ট বি সো এক্সাইটেড।লেট সি হাউ হি টিচ?
পাকড়াশীর সেখানেই ভয় অল্প বয়স এই বয়সে মন পাগলা ঘোড়ার মত।বলেছিলেন এজেড কারো কথা।  
মিসেস পাকড়াশির বাড়ী থেকে বেরিয়ে বঙ্কা বলল, চারদিনে একশো টাকা খারাপ কি?
--খারাপ নয় একটু বেশিই বলা যায়।ভদ্রমহিলা মেয়েকে খুব কড়া শাসনে রেখেছেন।একটা কথা আছে বজ্র আটুনি ফস্কা গেরো।
--ছাড়তো আমাদের ওসবে কি দরকার।তোমার পাঠা তুমি ঘাড়ে না লেজে কাটবি তোমার ব্যাপার।
--সব কিছু এভাবে এড়িয়ে যাওয়া যায় না।শিক্ষকতা আর পাচটা মজুরের পেশা এক নয়।একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিস হাতীর মত চেহারা অথচ মেয়েটা বেশ দেখতে।মায়ের সঙ্গে কোনো মিল নেই।
--এসব তো একা হয়না।আমি ওর বাবাকে দেখিনি ভদ্রলোক হয়তো হ্যাণ্ডসাম ছিল।আজকের কাগজে দেখেছিস?কিশোরদার অফিসের এক সহকর্মী মাধুরী শর্মা ঐ শালা কুন্তলকে হেল্প করেছিল।মাগীটাকেও গ্রেপ্তার করেছে।
--খুব কষ্ট হয় ভাবতে একজন মহিলা কিভাবে আরেকজন মহিলার সব্বোনাশ করতে পারে।
--ক্রিমিন্যালের কোনো জাত ধর্ম মহিলা পুরুষ হয়না ক্রিমিন্যাল ইজ ক্রিমিন্যাল।
--দারুণ বলেছিস।মনোসিজ হাসলো।আচ্ছা বঙ্কা পাকড়াশী ম্যামকে কেমন মনে হল তোর?
--ম্যাম খুব খোলাম্যালা তবে এলিনা বৌদির চেয়ে আলাদা।বৌদি যেমন সবার সঙ্গে মিশে যায় পাকড়াশী ম্যাম একটু স্বাতন্ত্র বজায় রেখে চলেন।
এলিনা বৌদির কথা বলতে গা ছম ছম করে উঠল।এসব তো একা হয়না বঙ্কার কথার ইঙ্গিত বুঝতে পারে।আসার সময় সে ওষুধ কিনে দিয়ে এসেছে। বঙ্কাকে সবাই বোকা হাদা ভাবে।মনোসিজের কখনো তেমন মনে হয়নি।
এলিনা গাড়িতে বসে।ভাবে তাতাই কেন বলল,তোমাকে বেশ মুডি মনে হচ্ছে।তার আচরণে কি তেমন কিছু ধরা পড়েছে? চিন্তা হচ্ছে ফ্রাইডের কথা ভেবে।ঐদিন তার ডেট, হলে শনিবারটা মাটি।
মেয়েদের এই এক ঝামেলা,প্রতিমাসে অস্বস্তিকর অবস্থা।টয়লেট করতে গেলে ঝামেলা।ছেলেদের বেশ সুবিধে নল বের করে যেখানে ইচ্ছে দাঁড়িয়ে যাও।    
Like Reply
Gratitude to you for regular update
[+] 1 user Likes Wonderkid's post
Like Reply
চলছিল পথ সোজা,
হটাৎ নিল বাক।
চার দিনে একশ টাকা,
কি হয় দেখা যাক।
Like Reply
বের করো নল
ছাড় কল কল
Like Reply
(24-08-2021, 03:16 AM)poka64 Wrote: চলছিল পথ সোজা,
হটাৎ নিল বাক।
চার দিনে একশ টাকা,
কি হয় দেখা যাক।

পোকাদার পদ্যের ছন্দ 

আহা কি আনন্দ, কি আনন্দ
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
দেখা যাক মিসেস পাকড়াশীর কি ভূমিকা হয় সামনে.....
Like Reply
উশতী শব্দের অর্থটা কি? প্রথম শুনলাম। এতো ৬০-৭০ খ্রিস্টাব্দের ঘটনা শুনাচ্ছেন - তখন কি ম্যাম কথাত প্রচলন ছিল? ম্যাডামই তো বলতো।
Like Reply
(22-08-2021, 09:52 PM)buddy12 Wrote: পূর্ণিমার মৃত্যু মনোসিজের মনে গভীর 
ছাপ ফেলেছে।

পাঠকের মনেও ছাপ ফেলেছে কারণ সবাই আন্দাজ করছিলো এলিনার তুলনায় পূর্ণিমাই মনের বেশি কাছাকাছি থাকবে। কিন্তু কামদেব দাদা বলেই কথা যে কখন কিভাবে পাঠককে চমকে দেবে!
[+] 1 user Likes a-man's post
Like Reply
বেশ গল্প।
Like Reply
অসাধারণ লেখাটি।
তবে আমি বেশ দেরি করে ফেলেছি গল্পটা পড়তে।
মনোসিজে চরিত্র টি খুব এনজয় করছি।
পরের আপডেট এর অপেক্ষায় রইলাম।
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
  

।।২০।।


বাসায় ফিরে দেখল সকালের বাসী কাগজ নিয়ে বাবা বসে আছে।ট্যুইশনির কথা শুনে মা বিরক্ত হয়ে বলল,সামনে তোর পরীক্ষা না? 
--আমি তো রাতে পড়ি।
--তোর পড়াশুনায় কি টাকার ঘাটতি হচ্ছে?
--হিমু শোনো।ও ঘর থেকে বাবার গলা পাওয়া গেল।
--হ্যা আসছি।
হিমানীদেবী চলে গেলেন।মনোসিজ দরজার আড়াল থেকে শোনার চেষ্টা করে বাবা কি বলে।বাবা কথা বলে কম কিন্তু প্রতিটি কথা মনোসিজের কাছে মনে হয় মূল্যবান।বাবার সততা আত্মসম্মানবোধের জন্য মনোসিজ গর্ববোধ করে।তাদের প্রাচুর্যে ভরা সংসার নয় কিন্তু কোনোদিন বাবাকে কারো কাছে হাত পাততে দেখেনি।
স্বামীর কাছে গিয়ে বললেন,কি বলছো বলো।
--শোনো হিমু প্রশ্নটা অভাবের নয়।নিজের কাজ ঠিকমতো করে টিউশনি করতে চায় করুক না।টাকাটা বড়কথা কথা নয় আসল কথা এতে আত্মনির্ভরতা বাড়ে।আমি কি বললাম তুমি বুঝেছো?
--বুঝেছি।হিমানীদেবী স্বামীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,তোমার শরীর ভাল আছে তো?
মনোময়বাবু হাসলেন,ইদানীং তুমি আমার শরীর নিয়ে খুব ভাবছো।
--ভাববো না।তুমি যা মুখে আসে বলবে--আমি ভাবলেই দোষ?
--অত না ভেবে নিজেকে প্রস্তুত করো।ভাল মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে।
--আবার?আবার তুমি আরম্ভ করলে?
--তোমার উদবেগ আমাকে আনন্দ দেয়।
মনোসিজ আর দাঁড়ায় না।দ্রুত ঘরের দিকে পা বাড়ায়।বাবা কিসে আনন্দ পায় শুনে মজা লাগল।একজনের উদবেগে আরেকজন মজা পায় ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে।ভালো কিছু খেলে ভালো কিছু দেখলে ভাল কিছু শুনলে যখন আরেকজনের কথা মনে পড়ে একেই বলে বুঝি একাত্মতা।
খাওয়া দাওয়ার পর একটু গড়িয়ে নেয় মনোসিজ।ওদিকে বেলা গড়াতে থাকে।চোখ লেগে গেছিল চোখ মেলতে কানে এল রান্না ঘরে খুটখাট শব্দ।মা হয়তো চা করছে।প্রথমদিন একটু সকাল-সকাল যাবে।কিভাবে শুরু করবে মনে মনে ছক কষে।যাবার পথে একটা বর্ণপরিচয় দ্বিতীয়ভাগ কিনে নেবে।চর্চার অভাবে বাংলা শব্দ ভাণ্ডার খুবই দুর্বল।ভাবতে ভাবতে ঝিমুনি এসে যায়।রাতের অনিদ্রা দিনে ঘুমিয়ে পূরণ করা যায় না।তবে কাজের মধ্যে থাকলে অসুবিধে হয়না।

সাধন কর্মকার বাসায় ফিরতে লীলাবতী জিজ্ঞেস করেন,কি বলল উকিল?
--এক গেলাস জল দাও।
বৈঠকখানায় ঢূকে পোশাক বদলে ধুতিটা হাটু অবধি তুলে সোফায় বসতে লীলাবতী জল নিয়ে ঢুকলেন।হাত বাড়িয়ে গেলাস নিয়ে এক নিশ্বাসে জল্টুকু পান করে বললেন,উকিলরা তো মক্কেলকে উৎসাহ দেবেই।
--ফ্লাট তো ঠাকুর-পোর টাকায় কেনা।লীলাবতী বললেন।
--উকিলবাবুও সেকথা বললেন।বৌমার নামে ফ্লাট হলেও তার তো কোনো উপার্জন ছিল না।আমি ভাবছি বৌমার বাপের বাড়ীর কথা।কর্মকারদের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে আপত্তি তাদের টাকা নিতে লজ্জা করেনা?
--বামুনের মেয়ে কি কেলেঙ্কারিই করল।
--তোমার ছেলেরা বাড়ী নেই?
লীলাবতীর মুখ দেখে বুঝতে পারেন সাধনবাবু বললেন,দোকানে বসবে না সারাদিন খালি টো-টো ছেলে দুটো যদি মানুষ হত তাহলে এই বয়সে--।
--বড়ছেলের চারতলার ফ্লাট পছন্দ নয়।
--গাছে কাঠাল গোফে তেল।এভাবে চললে গাছ তলাতেও ঠাই হবে না।
লীলাবতী কোনো কথা বলে না।দিনের বেলা যত জারিজুরি লীলাবতী জানে,রাতের বিছানায় এই মানুষটা তার গোলাম।
 মনোসিজ কলিং বেল টিপতে দরজা খুলে দিলেন মিসেস পাকড়াশী।
--ওয়েলকাম ইয়াং ম্যান।উশ্রীকে দেখতে না পেয়ে মিসেস পাকড়াশী টয়লেটের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,হোয়াট আর ইউ ডুইং সো লং টিমে--।
ছাদ থেকে নামতে নামতে উশ্রী সাড়া দিল,এ্যাম হিয়ার হোয়াই আর ইউ শাউটিং মম।
ঘরে ঢুকে মনসিজকে দেখে বলল গুদ এভিনিং স্যার।
মনোসিজ মনে মনে ছকে নিয়েছে কিভাবে শুরু করবে।মিসেস পাকড়াশী থাকেন স্টাডি রুমের পাশের ঘরে,স্টাডিতে কি হচ্ছে সেদিকে সজাগ কান।
মনোসিজ শুরু করে,আমি দু-একটা কথা আগে বলতে চাই।মাতৃভাষার কোনো বিকল্প নেই--।
--বিকলপ?
--আই মিন অল্টারনেটিভ।সে যে ভাষাই হোক না।অনেকে ইংরেজী বলতে পেরে আত্মশ্লাঘা বোধ করে--
--আত্তসলাগা?
--মনে মনে অহঙ্কার বোধ করে।এটা এক ধরণের হীনমন্যতা।কি বলছি বুঝতে পারছ--?
--বাংলা বুঝতে পারি।আপনি বলুন স্যার।
--এক জায়গায় পড়েছি মাও-জে-দং--তুমি মাওয়ের নাম শুনেছো?
--ইয়া হি ইজ আ প্রেসিডেণ্ট অফ চায়না কমিউনিষ্ট পার্টি ভেরি পাওয়ারফুল।
--মাও ভাল ইংরেজি জানলেও বিদেশী রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে ইংরেজিতে নয় মাতৃভাষায় কথা বলতেন।এটা তার আত্মমর্যাদাবোধের পরিচয়।মাইকেল মধুসূদন বিদেশী ভাষায় কাব্য চর্চা করতে গিয়ে সফল হননি।সেজন্য তাকে আক্ষেপ করতে হয়েছিল তিনি বলছেন,"হে বঙ্গ ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন/তা সবে অবহেলা করি/ পরধন লোভে মত্ত করিনু ভ্রমন পরদেশে--। 
--স্যার আপনি সুন্দর বোঝাতে পারেন। ইফ ইউ দোণ্ট মাইন্দ ক্যান আই আস্ক--
মনোসিজ একটু থামল।
উশ্রী জিজ্ঞেস করে,আর ইউ ম্যারেড স্যার?
--আমি বিএসসি ফাইন্যাল ইয়ারের ছাত্র,বিয়ের কোনো প্রশ্নই আসেনা।
--ইউ আর ভেরি কিউট আই লাইক ইউ স্যার।
মনোসিজ রক্তিম হয়,মেয়েটি বেশী পাকা।ইংরেজী মিডিয়ামে পড়া মেয়েগুলো একটু বেশি পাকা হয়।
এইভাবে মনোসিজের টিউশনি চলতে থাকে।প্রথমদিকে যেমন ভেবেছিল মেয়েটিকে পরে বুঝেছে মেয়েটি খুব সহজ সরল।সারাক্ষন কলেজে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বাসায় মায়ের কড়া শাসনে হাপিয়ে উঠেছিল।মনোসিজকে পেয়ে প্রাণখুলে কথা বলার সুযোগ পেয়ে খুব খুশী।কলেজে ওর বন্ধুদের প্রায় সকলের বয়ফ্রেণ্ড আছে সেজন্য তার কোনো আক্ষেপ নেই।আরো জানার আকাঙ্খ্যার রুদ্ধ দ্বার যেন খুলে গেছে মনোসিজকে পেয়ে।বাংলা শিখতে শিখতে কখনো বিষয় হতে অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করে দুজনে।কথা বলার সময় খেয়াল থাকে না মনোসিজ ওর টিচার।একদিন তো বলেই ফেলল "ইউ আর ভেরি ইম্ম্যাচিওর।"
মনোসিজ রাগ করেনি হেসেছিল।সত্যি কথা বলতে কি ছাত্রীটির প্রতি সমস্ত বিরূপতা ধীরে ধীরে কেটে গিয়ে একসময় ভাল লাগতে শুরু করে।  
[+] 12 users Like kumdev's post
Like Reply
ঊশ্রী বলে , গুদ ইভনিং
আমরা নাচি তিড়িং বিড়িং !!!

Tongue
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
স্যান্ডির কথা মনে পরে গেলো
[+] 1 user Likes Wonderkid's post
Like Reply
এলিনা মনের দৃশ্যের অপেক্ষায়.........
Like Reply




Users browsing this thread: 43 Guest(s)