Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance নীলা by Kalidash
#21
পাঁচ-৫

গাবতলী বাস ষ্ট্যান্ডে ভোর চারটা ছত্রিশ মিনিটে গাড়ী পার্ক করল। তখন ছিল ভাদ্র মাস। বৃষ্টির কোন ধরাবাধা নিয়ম ছিল না। এই রৌদ্র, এই বৃষ্টি, এমন অবস্থা। সেদিন বৃষ্টি শুরু হল, ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টির বড় বড় ফোটা ইলেকট্রিক লাইটের আলোয় মুক্তার মত ছড়িয়ে পড়তে লাগল। বৃষ্টির প্রতিটা ফোটা যেন নীলার হাসির মত। আমি উসখুস করতে লাগলাম। বৃষ্টির মধ্যে হেটে হেটে যাব বলে বের হলাম। হেলপার বললেন, আরে ভাই, এই ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কোথায় যাচ্ছেন? কাকভেজা হয়ে যাবেন ত। আমি হাসলাম। বললাম, ভিজতে আমার ভালই লাগে। যে অন্ধ আবেগ আর ভালবাসার টানে আমি ঢাকায় পৌছালাম তা কি বৃষ্টির মত শীতল বস্তু আটকাতে পারে? যদি সমস্ত ঢাকা শহর অগ্নিকুন্ড হয়ে যেত? আর তার মধ্য দিয়েই যদি হাটতে হত? আমি তবুও থামতাম না। আগুনে পুড়তে পুড়তে আমি নীলার ঘরের দরজায় কড়া নাড়তাম। আর এ তো শান্ত শীতল বৃষ্টি।
আমার নীলা কি এই বৃষ্টির শব্দ শুনতে পেয়েছিল? বৃষ্টির ছন্দ কি আমার আগমন বার্তা পৌছিয়ে দিয়েছিল? জানিনা পেয়েছিল কি না। তবে আমি পিচের উপর হাটতে হাটতে বৃষ্টি ভেজা নীলা ফূলের গন্ধ পেয়েছিলাম। সমস্ত ঢাকা শহর যেন নীলাফুলের গন্ধে ভরপুর। দুহাতে নীলা যে ভাবে আমাকে জাপটে ধরত ঠান্ডা বৃষ্টির পানিকে মনে হয়েছিল জাপটে ধরা নীলার সেই হাত। আনন্দে হাটতে হাটতে সকাল আটটায় উত্তরায় পাঁচ বাই চার সড়ক ধরে নকশী নামের বাড়ীর গেটে পৌছলাম।প্রকান্ড বাড়ি। দুই তলা। বাড়ির নাম, “নকশী। একটি নিয়ন বাতি জ্বলজ্বল করছে।সমস্ত বাড়িটা ঝলমলে । গেটের উপর তরুলতা ফুলের গাছ। লতার মত বেয়ে উঠেছে।গেটের কাছে যেয়ে নাম ফলক দেখলাম। বীর মুক্তি যোদ্ধা মোহাম্মদ ছাকিব হাসান।বাড়ি নং পাঁচ বাই এক, উত্তরা, ঢাকা। ডান পাশে কলিংবেল বোর্ড।
পৃথিবীতে কত রকমের আশ্চার্য ঘটনা ঘটে। আমার চাচার বাসায় সেই রকম একটা আশ্চার্য ঘটনা সে দিন ঘটল।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#22
আমাকে দেখে চাচী আবেগ সামলাতে পারলেন না। শাড়ির আচল দিয়ে ভেজা মাথা-মুখ মুছিয়ে দিলেন। অনেক সময় বুকে চেপে ধরলেন। বুঝতে পারলাম চাচী কাঁদছেন। আমারও চোখে পানি এসে গেল। চাচা আনন্দে প্রায় লাফিয়ে উঠলেন। চাচার চোখের তারা চকচক করতে লাগল। কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন। না পেরে দ্রুত সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন। ডাকতে লাগলেন নীলা মা-নীলা দেখে যা কে এসেছে। আমাদের বংশের আলো, প্রদীপ, সিগগির ওঠ। চাচার চেচামেচিতে নীলা ঘুম জড়ানো চোখে আশ্চার্য মানুষটিকে দেখতে নেমে এল। আমাকে দেখে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল।চাচা-চাচীর মত কোন উচ্ছ্বাস নেই। কোন আবেগ নেই। শুধু এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগল। মনে হল আমাকে কত কাল দেখেনি। চোখের তারা স্থির। মাথার চুল এলোমেলো। পরনে হালকা খয়েরী রংঙের স্কাট। আমি দেখতে লাগলাম আমার মানসপ্রিয়াকে। যাকে একটু দেখার জন্য ছুটে আসা। বৃষ্টি থামা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারলাম না। সেই আমার সামনে দাঁড়িয়ে। স্থির। নিশ্চল। দুজনই বিহ্বল।মনে হল, আমাদের এই দেখা দেখির লগন শেষ হবে না কোন দিন। কিছুক্ষণ পর আমার নীলা সোনার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে গালবেয়ে টপ টপ করে পড়তে লাগল। হাত উঠিয়ে পানি মোছানোর দরকার বোধ করল না।একটু পরে ঠোটে মৃদ হাসি ফুটে উঠল। এই জল ভেজা চোখ, গাল বেয়ে ঝরে পড়া পানি, ঠোটে মৃদ হাসি, এক সাথে এত রূপ আর কজনের আছে? আমার সোনা কিছু না বলে আস্তে আস্তে উুপরে উঠে গেল। প্রকৃতি যাকে এত রূপ এক সাঙ্গে দিয়েছে তার কথা বলার কি দরকার?
বেডরুমের স্মৃতি আমার আজও স্পষ্ট মনে আছে। আমি বাথরুম থেকে ফিরে এসে দেখি, এরই মধ্যে নীলা নিজেকে তৈরী করে নিয়েছে। নীল বঙের একটা শাড়ী পরেছে।চুল ব্রাস করেছে। কানে লাল-নীল পাথরের দুটো দুল। শাড়ীর আচল মেঝে বরাবর নেমে গেছে। ডান হাতে অনেকগুলো কাচের চুড়ি, টুন টুন করে আওয়াজ তুলে বিছানা তৈরী করছে।
আমি বললাম, নীলা কেমন আছ?
বলল, ভাল, এতদিন পরে মনে পড়ল?
আমি বললাম, এতদিন পরে মনে পড়বে কেন? সব সময়ই তো মনে পড়ে।
নীলা কপট রাগ দেখিয়ে বলল, সব সময় না ছাই, চাচা কেমন আছেন, তাই বল। একটা খবর দিলে তো গাড়ী পাঠাতে পারতাম। আমি বললাম, খবর দেবার সময় পেলাম কোথায়? তোমার চিঠি পড়ে আমার মাথা খারাপ হবার উপক্রম হল। ভাবলাম, আমার সম্পদ কেউ চুরি করবে হয়ত! তাই পাহারা দিতে এলাম। বাবাকে হালকা নোনিশ দিয়েছি মাত্র।
নীলা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। একটা স্বর্গীয় পরী আমাকে দেখছে। আস্তে আস্তে নীলার একটা হাত ধরলাম। ও কেঁপে উঠল। মনে হল যেন, বৃষ্টিতে ও ভিজে ঠান্ডাহয়ে যাচ্ছে। চোখের তারা জ্বলজ্বল করছে। আমি নিজেকে সামলাতে পারলাম না।বুকের ভিতর টেনে নিলাম। আদর করলাম। অনেক সময় জড়িয়ে থাকলাম দুজন। একসময় নীলা বলল, ঠিক আছে আর না। এবার একটু বিশ্রাম কর। সারা রাত জার্নি করে এসেছ।তার উপর আবার ভিজেছ, অসুখ বিশুখ বেধে যেতে পারে। তখন আমার দায়িত্ব বেড়ে যাবে। আমি বললাম, তাহলে তো বেঁচে যাই। তোমার ছোয়ায় ছোয়ায় মরে যাব। রাগী ভাবে নীলা বলল, ছিঃ- এসব কি বল, বলত? তুমি শোও। আমি চা-আনতে যাচ্ছি। চা না কপি খাবে বলত? আমি বললাম, তোমার হাতের চা, কপি, পরটা সব খাব, নিয়ে এস। আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#23
চাচী এসে চা দিয়ে গেলেন। চাচা বাইরে বেরিয়ে গেলেন।যাবার আগে আমার ঘরে এলেন। বাবার কথা জিজ্ঞাসা করলেন। কিছু সময় অন্যান্য গল্প করলেন। বিশ্রাম নিতে বললেন। চা খেয়ে আমি শুয়ে পড়লাম। নীলা আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগল। ক্লান্তি মাখা ঘুম ঘুম আবেশে বুঝতে পারলাম, একটা অপূর্ব রূপবর্তী নারী আমার মুখের উপর ঝুকে আমাকে দেখছে। তার মাথার এলো চুল আমার মুখের উপর ঝুলে পড়েছে। হালকা শুড়সুড়ি লাগছে। কাচের চুড়ির টুন টুন শব্দ শুনতে পাচ্ছি। একটা পরী মাখা গন্ধ নাকে ভেসে আসছে। আমার মাথার চুল টেনে দিচ্ছে। আমি ঘুমিয়ে যাচ্ছি। আবার শুনতে পাচ্ছি। আমাকে বলছে, এ্যাই, এ্যাই দুষ্ট শোন, শুনছ, আমি ডাকছি, তুমি এই কয়দিন আমাকে না দেখে কি ভাবে থাকলে? এ্যাই শোন, আমি আর কিছু মনে করতে পারলাম না। ঘুম ভাঙ্গল দুপুর দুইটা বেজে একচলি¬শ মিনিটে। হাত ঘড়িটা দেখে আবার কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকলাম। বাইরের কোলাহল কানে ভেসে আসতে লাগল। বাইরে ঝলমলে রোদ, চার দিকে শুমনো খট খটা অবস্থা। ভোরের বৃষ্টির কোন চিহ্ন নেই। মানব জীবনকি এই রকম। এই ভাল, এই মন্দ। আরও কিছু ভাবতে যাচ্ছিলাম, ঠিক এমন সময় চাচী এলেন ঘরে। বললেন, এ্যাই সঞ্জু, ওঠ খাবি না? কত বেলা হয়েছে জানিস?
আমি বললাম, জানি চাচীজান?
চাচী বললেন ,বলতো একটা আন্দাজ করে শুনি, দেখি তোর আন্দাজ কেমন?
আমি বললাম, দুইটা সাতচলি¬শ মিনিট, কত সেকেন্ড সেটা বলতে পারছিনা।
চাচী বললেন, ঠিক আছে। তোর ধারনা ক্ষমতা ভাল, তোর বাবার মত। ওঠ খাবি চল।
আমি উঠলাম। বাথরুমে যেয়ে হাত মুখ ধুলাম। লূুকিং গ্লাসে দেখলাম, চোখ লাল হয়ে আছে। শরীর বেশ ঝরঝরে। ভিজে যাওয়ার কারনে জর-জারী হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই।
এই প্রথম ঘর বাড়ির চাকচিক্যময় জৌলুস লক্ষ করলাম। আধুনিকতার ছোয়া আছে।লাইব্রেরী, একুইরিয়াম, টিভিরুম, টেনিস কোর্ট সবই আছে। একটা ছোট খাট বেহেস্ত খানা। সেই বেহেস্তের পরী নীলা। কবুতরের মত উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। নেই শুধু চাকর-বাকর। হাটতে হাটতে ডাইনিং টেবিলে গেলাম। নীলা বসে আছে আমার জন্য।আমাকে দেখে মিটি মিটি হাসছে, ঠিক যেন বেহেস্তের পরী টাইপের কোন এক মেয়ে।চোখ নামানো যায় না। চাচী বললেন, নে খাবি তো কিছু। ক্ষিধে লাগেনি তোর? আমি বললাম মনে মনে, ক্ষিধে আমার লেগেছে চাচী জান, তবে তা ভাত মাংসের নয়। রূপের ক্ষিধে। প্রেমের ক্ষিধে। তা না হলে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসি?
খেতে বসলাম। একটা এলাহী ব্যাপার। খাশীর মাংস দিয়ে পোলাও রান্না। এরই মধ্যে বগুড়ার দই আনিয়েছেন। আমি আর নীলা খাচ্ছি, চাচী পাতে বেড়ে দিয়ে আনন্দ পাচ্ছেন। তিনটা কুড়ি মিনিটে খাওয়া শেষ করলাম।
নীলাদের নকশী নামক ছোট খাট বেহেস্তের মত বাড়ীতে আমি দশ দিন ছিলাম। এই দশদিনের মধ্যে যা যা ঘটেছিল তারসবটা এখন আর আমার মনে নেই। তবে দশ দিনের সমস্ত ঘটনার সার বস্তু এই রকম…..
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#24
…..নীলা কলেজে যাওয়া বন্দ করে দিল। সকালে খাওয়া দাওয়া সেরে চাচা যেতেন ব্যবসা দেখা শুনা করতে। আমি আর নীলা বেরিয়ে পড়তাম গাড়িতে করে। চিড়িয়া খানা, সংসদ ভবন, চান্দ্রিমা উদ্যান, রমনা পার্ক, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, বুড়িগঙ্গা লেক, এয়ার পোর্ট ঘুরে বেড়াতাম। প্রকৃতির উম্মুক্ত কবুতরের মত আমরা দুজন উড়ে বেড়াতাম। সারা দিন বাকম বাকম করে ক্লান্ত হয়ে বিকালে বাসায় ফিরতাম।খাওয়া দাওয়া সেরে রেষ্ট নিতাম।সন্ধ্যায় চাচী আমাকে ঢাকা শহরের সব চেয়ে নামী মিষ্টির দোকানে নিয়ে যেতেন। মিষ্টি খাওয়াতেন। ফিরতাম রাত আটটার দিকে।কোন কোন দিন এই সময় চাচা বাসায় ফিরতেন। কোন কোন দিন রাত এগার,বারটাও বেজে যেত। আমরা খেয়ে নিতাম। চাচী ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়তেন। আমি আর নীলা ছাদে উঠে রাতের ঢাকা শহর দেখতাম। আমরা ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকতাম ব্যস্তময় শহরের দিকে। রাস্তায় অহরহ গাড়ি আলো ফেলে ছুটে চলেছে। রঙিন আলোর ঝলকানি। আকাশে তাকাতাম। অন্ধকার মনে হত। অনেক সময় তাকানোর পর জোনাকের মততারা দেখা যেত। চাঁদের আলো ম্ল¬ান মনে হত। আমি আর নীলা তারা গুনতে চেষ্টা করতাম। এক সময় আমার কোলে মাথা রেখে তারা গুনতে গুনতে ঘুমিয়ে পড়ত। একহাজার, এক হাজার এক,দুই তারা—— আমি আস্তে আস্তে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতাম। চাঁদের আলোয় ওর আশ্চর্য ফর্সা মুখটা অনেক্ষণ ধরে দেখতাম। এক সময় ওর ঘুমন্ত শরীর কোলে করে বিছানায় শুইয়ে দিতাম। চাচার সাথে খুব কম দেখা হত। সকালে আমি যখন উঠতাম, দেখতাম চাচা বাইরে, আর চাচী ভাত বেড়ে বসে আছেন। সকালে নাস্তা করে আবার আমাদের উড়ে বেড়ান। আমাদের বেপরোয়া চাল চলন চাচীর চোখ এড়াল না। নীলার উড় উড় ভাব। আমার ভালবাসায় ভরা চোখের তারা। যখন তখন আমাকে নিয়ে নীলার অতিরিক্ত আগ্রহ। ছাদে বসে রাতের নিস্তব্ধতা উপভোগ করা। তারা গোনা। এ সবই চাচীজানকে সন্দেহ বাতিক গ্রন্থ করে তুলল। পঞ্চম দিন রাতে আমরা খাচ্ছি।চাচীজান কিছুটা বিমর্ষ হয়ে বললেন। সঞ্জু, তোর বয়স কতরে? আমি বললাম, আঠারো।চাচী বললেন, নীলার কত জানিস? আমি কিছু বললাম না। চাচী বললেন, ওর এখন বার।এই বয়সে তোরা দুজন কত কাছা কাছি চলে যাচ্ছিস, জানিস? এই বয়সটা গলে যাওয়ার বয়স। একটু সাবধান হ। নইলে সবাই কষ্ট পাবি। তোর কোন কষ্ট হোক আমি চাইনা।আবার নীলার কোন কষ্ট হোক তাও চাইনা। আমি আর খেতে পারলাম না। হাত ধুয়ে উঠে চলে গেলাম বেডরুমে। নীলার মুখ গম্ভীর। আমি কিছু না বলে ব্যাগ গোছাতে লাগলাম। রাতের বাসেই বাড়ি ফিরব। নীলা ঝর ঝর করে ঁেকদে উঠল। সোনা গো তুমি আমাকে একা রেখে যেওনা। আমি এই শহরে একা থাকতে পারবনা। বললাম, নীলা তোমার কোন কষ্ট হবে না। এই ব্যস্তময় শহরে আমাকে ভূলে থাকার সব কিছুই তুমি পাবে।এই সময় চাচী জান ছুটে আসলেন আমার ঘরে। আমার গোছগাছ দেখে অবাক হলেন কিছুটা।তার পর বললেন, রাগ করিসনা সঞ্জু, তোকে আমি যেতে দেব না। তুইতো আমাদের বংশের আলো। আমার কথায় কষ্ট নিতে নেই, বাবা। তোকে ছাড়া আমার খুব কষ্ট হয়, তাকি জানিস? জানিস তুই? তোর মাথাটা আমি সারারাত কোলে করে বসে থাকতে চাই। জানিস তা? চাচিজান ঁেকদে ফেললেন। বললেন, আমি তোর চাচার সাথে তোদের ব্যাপারে কথা বলব। এখন ফ্রেস হয়ে আনন্দ কর। টিভি দ্যাখ, টেনিস খ্যাল, মন ভাল হবে।ভাবলাম, মন ভাল হবে না-ছাই হবে। টিভিতে কি নীলার মত মেয়েদের দেখা যাবে? আমার মনের ভাষা বুঝবে? আমার সাথে দুষ্টামি করবে? ছাই করবে। সেদিনও আমরা দুজন ছাদে উঠলাম। হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে দুজন দুজনকে জড়িয়ে আটকে ধরতে চেষ্টা করলাম। ওর কড়া সেন্টে আমার বুক ভরে তুলতে লাগল। ও বার বার বলতে লাগল, জান, ওগো সোনা আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না। তুমি আমাকে ছেড়ে পালাবে না। বল, পালাবে না? আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। আদর করতে করতে বললাম, না নীলা, আমি তোমাকে অন্য কোথাও রাখব না। সারা জীবন আমার বুকের মধ্যে তোমাকে চেপে রাখব। আদর করব, ভালবাসব, ভালবাসতে বাসতে আমরা জীবন নিঃশেষ করে দেব।তবুও কারও কথা আমরা মানব না। নীলা সেদিন সারা রাত আমার বুকের মধ্যে ওর মুখ গুজে দিয়ে শুয়েছিল। সেদিন ঘরে শুতে যাইনি। ছাদে শুয়েছিলাম। শিশিরে আমাদের শরীর ভিজে গিয়েছিল। রাতে চাচী আমাদের খুজতে এসেছিলন কিনা কে জানে?
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#25
ষষ্ট দিন সকালে ব্যতিক্রম ঘটল। চাচাজান, আমি,নীলা একত্রে নাস্তা করতে বসলাম। চাচার মুখটা হাসিখুশি কি ভারী বুঝা গেলনা। তবে মাঝে মাঝে হাসি ফোটাতে লাগলেন। একসময় বললেন, সঞ্জুকে তো আমি কোথাও নিয়ে যেতে পারিনি। আজ নিয়ে যাব। শুধু সঞ্জুকে নিয়ে সারা দিন কাটাব। কত দিন একা একা থেকেছি। চাচী বললেন, কোথায় নিয়ে বেরুবে? চাচা বললেন, যাব কোথাও দুবাপ বেটায়। আমার কি যাওয়ার জায়গার অভাব আছে? চাচী শুধু বললেন, অঁ। নীলা ওর বাবার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষণ। ও আর খেতে পারলনা। মাংস রান্নাটা খুব বাজে হয়েছে বলে চাচীকে বকাঝকা করতে করতে হাত মুখ ধুয়ে উঠে গেল। এ নীরব অভিমান আর প্রতিবাদ আমার অন্তরকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিল।
সকাল নয়টায় আমি আর চাচা রওনা হলাম। এয়ারকন্ডিশনড পাজেরো গাড়ী। ড্রাইভার গাড়ি স্টাট দিলেন। লোকজনের ভিড় আর অসংখ্য রিক্সার মাঝ দিয়ে আমাদের গাড়ি ছুটে চলল। বিশ মিনিট পরে গাড়ি যেখানে এসে থামল, সেই জায়গার নাম গাজীপুর।একটা কটন মিলেন সামনে।
চাচার নির্দেশ মত আমি গাড়ি থেকে নামলাম। কর্মচারীরা ছুটা ছুটি করতে লাগল।আমাকে বিশেষ মেহমান ভাবতে লাগল। চাচা মিলের কর্মকর্তা শ্রেণীর সকলকে ডাকলেন। তাদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সব শেষে ছোট একটা বক্তৃতা দিলেন যার সারমর্ম এই রকমআমি তার বড় ভাইয়ের ছেলে। তবে তার কাছে আমি নিজের সন্তানের মত। আমি এক মাত্র বংশধর। ভবিষ্যতে মার্কিন মুল্লুকে পড়াশুনার উদ্দেশ্য রওনা হব এবং ফিরে এসে এই সব ব্যবসা দেখা শুনা করব। কর্মকর্তা দের মুহু মুহু হাতে তালি আর দীর্ঘায়ূ কামনায় আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম। আমাদের অন্য যায়গায় যেতে হবে এই কথা বলে সভা শেষ করলেন। একাউন্টট্যন্টের সাথে কিছু জরুরি চেক ট্যান্সফর করার ব্যাপারে আলোচনা করলেন।কিছু ক্ষণ পর ম্যানেজার সাহেব আসলেন। তার সাথেও চাচা আন্তরিক ভঙ্গিতে কথা বললেন। সালাম জানিয়ে তারা দুজনেই বিদায় হলেন। আমরা আবার বেরিয়ে পড়লাম। সেদিন সমস্ত দিন চাচা আমাকে নিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে বেড়ালেন এবং একই রকম বক্তৃতা দিলেন।ঢাকা শহবে তার আটটা বাড়ির গল্প শুনেছিলাম। গত পাঁচ দিনে নিলা বা চাচি সে সম্পর্কে কোন কথা বলেনি। এমনকি কৈতুহলি হয়েও নীলা বলেনি যে সাভারের বাড়িটা এমন, জয়দেবপুরেরটা এমন কিংবা গুলশান বনানীর শফিং মলটা এমন। চাচাই সেই কাজটি করলেন। সব শেষে একটা সেমিনারে হাজির হলাম। চাচা সেখানে প্রধান অথিতী।সরকারী প্রতিনিধি ও শিল্পপতিদের মধ্যে ব্যবসায়িক সংক্রান্ত আলোচনা। আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এক সময় চাচা গাড়ি করে বাড়ি ফিরতে বললেন। আর বললেন, তার ফিরতে একটু দেরি হবে। হঠাৎ করেই একদল জাপানী প্রতিনিধদের সাথে সভার আয়োজন।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#26
বাসায় ফিরে আর এক যন্ত্রনায় পড়লাম। নীলা আমাকে জেকে ধরল, বলল, কোথায় কোথায় গেলে? আমি সমস্ত দিনের হিসাব মহারনীর কাছে দাখিল করলাম। তিনি বিশ্বাস করলেন না। মুখ ভার করে জানালা দিয়ে বাহিরে একটা ফেরিওয়ালার দিকে চেয়ে থাকল। আমি একটু আদর করে ডেকে একটা মিথ্যে বলে ওকে হাঁসাতে চেষ্টা করলাম ও খিলখিল করে হাঁসতে লাগল। মনে হল যেন সমস্ত বাড়িটা খুশিতে ঝলমল করছে। গোসল করে খেয়ে একটু রেষ্ট নিয়ে চাচির সাথে আরেক দফা বেড়াতে বের হলাম। গাড়ি থাকলে বেড়াতে কত সুবিধা!
বেড়ানো সময় সাধারণত চাচি থাকতেন না। এই অভিভাবকহীন স্বাধীন বেড়ানোতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠলাম। নীলা বোধ হয় ভাবতে লাগল, আমি আর নীলা ছাড়া আমাদের পাশে আর কেউ নেই। গাড়ি ছুটে চলেছে চন্দ্রিমা উদ্যানের দিকে। আমার বাম পাশে নীলা ডান পাশে চাচি। গাড়ির পিছনের ছিটে আমরা বসা। এর মধ্যে নীলা ডান পায়ের হাটু দিয়ে আমার হাটুটে ঘষতে লাগল। চোখ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আর হাটু চলে এল আমার দিকে- ভাবা যায়! এমন দুর্দন্ত প্রেমিকা যার আছে সেই জানে এইসব মেয়েদের দাপাদাপি সামলানো কত কঠিন কাজ। আমি চাচির সাথে কথা বলতে বলতে বাম হাতটা আমার বাম কানের লতিতে ঘষতে লাগলাম। হাতে নীলার উড়ান্ত চুলের স্পর্শ্ব পেলাম এই স্পশ্বের সুখ অনুভব করলাম শুধু আমরা দুজন। চন্দ্রিমা উদ্যান যাবার কথা থাকলেও আমরা শের-এ বাংলা নগর হয়ে সংসদ ভবন এলাকায় এসে নামলাম।চমৎকার! সমনে কত লোক অথচ কেউ কাউকে চিনি না। ড্রাইভার গাড়িতে বসে। আমরা তিনজন হাটতে লাগলাম। লুই অ্যাই ক্যান কে ধন্যবাদ দিলাম। আমরা হাটছি এর মধ্যে নীলা আমার একটা হাত ধরে ফেলল। কাছা কাছি চলতে চলতে আমি প্রায় ওর পায়ে জড়িয়ে পড়ে গেলাম। সাথে সাথে চাচি ডান হাতটা ধরে রক্ষা করলেন। চাচি নিজেকে সামলাতে পারলেন না, নীলার দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে বললেল, এভাবে হামলে পড়ছিস কেন? একটু ভদ্র, সভ্য হ বেহায়া হয়ে গেছিস দিন দিন। প্রেমে কি দুনিয়ায় আর কেউ পড়ে না। লোকজন মানবি না? নীলার সাদা ফর্সাা আশ্বর্য মুখটা মুহুর্তে মলিন হয়ে গেল। আমি যে খুশি হলাম তা না। আমার অন্তরের উচ্ছ্বাস মরে কাট হয়ে গেল। বেড়ানোর আর কোন ইচ্ছা থাকল না। দ্রুত বাসায় ফিরে আসলাম।
সে দিন রাত আটটার সময় চাচা জান বাসায় ফিরলেন খাওয়া দাওয়া সারলেন। আমি তখন নীলার রিডিং রুমে বসে ম্যাগাজিন দেখছিলাম। ম্যাগাজিনের নাম উরংঢ়ষধু ড়ভভষড়বিৎ.নানা রকম সব ফুলের বর্ণনা দেওয়া তাতে। নীলার কোন ফুল পছন্দ, কোন ফুল কত দিন পর পর ফোটে আর ঝরে যায় এই নিয়ে আলোচনা করছিলাম আমরা। দেখলাম, এ ব্যাপারে নীলা মাঝারী ধরনের একজন বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছেন। চিন দেশের একটা ফুলের বর্ণনা দিচ্ছিল হাত নেড়ে নেড়ে। এমন সময় চাচি জান আমাদের মাঝে হাজির হলেন। মুখটা খুব খুশি খুশি মনে হলো না। তবে যে খুব মরা মরা তাও না। এই দুটির মাঝা মাঝি অবস্থায়। এর কি নাম বাংলা অভিধানে আছে মনে পড়ছে না। আমাকে বললেন সঞ্জু ছাদে যা তোর চাচা তোর জন্য অপেক্ষা করছে। কথা বলবে। সেদিন ছাদে চাচা আমার সম্পর্কে বললেন,— শোন সঞ্জু, তুমি আমাদের বংশের এক মাত্র আলো। আমি তোমাকে ভীষণ ভালবাসি, স্নেহ করি। আমি চায় তুমি জীবনে অনেক বড় হও, প্রতিষ্টিত হও। আমাদের বংশের মুখ উজ্জ্বল কর। আমি কত বড় হয়েছি সেটা নিজের চোখে দেখেছো। আগামী দশ বছরের একটা প্লান আছে আমার। সেই অনুযায়ী আমি ঢাকা সিটি করর্পোরেশন এর মেয়র সহ মুন্ত্রি পর্যায় চলে যাব। কেউ ঠেকাতে পারবেনা। তাই আমি চাই তুমিও বড় হও। ফালতু আবেগ বাদ দিয়ে লেখা পড়া করে মানুষ হও।তুমি ইচ্ছা করলে পৃথিবীর যে কোন উন্নত দেশে যেয়ে পড়া শুনা করতে পার। সব ব্যবস্থা আমি করে দেব। আমার যে অর্থ সম্পদ আছে সাভাবিক ভাবেও তুমি তার একটা অংশ পাবে। তার পরও আমি দুটো কটন মিল এবং সাভারের বাড়িটা তোমার নামে লিখে দিচ্ছি। বাড়িটা কতটুকু জমির উপর তৈরী তা জান? মাত্র এগার একর। কটন মিলদুটোর খরচ বাদ দিয়ে বাৎসরিক আয় কত টাকা জান? কোটি টাকার উর্দ্ধে।বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় দুটি কটন মিল আছে। সেই দুটিই আমার। আজ থেকে তুমি তার মালিক। তবুও তুমি নীলাকে চেয়েও না সঞ্জু।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#27
তিনি আরও বললেনশোন সঞ্জু, আমার নিখোজ জীবনে নীলা নীলার মা তোমার বাবার কাছে নিরাপদ ছিল। আমি ভুলিনি তা। আমিও নিশ্চিত ছিলাম যে, তারা তোমার বাবার কাছে নিরাপদ আছে। এই সুযোগে আমি ব্যবসায়ি হয়েছি, রথি- মহারতি টাইপের একজন মানুষ হয়েছি। তাই তো চেয়েছিলাম তোমার বাবাকে ঢাকায় এনে সুখে রাখি। একজন মুক্তি যোদ্ধা, ঢাকায় তার পরিচিতি হোক। তার নামে কলেজ, কলেজ বানিয়ে দিই। দুএকটা দেশি-বিদেশী সেমিনারে বক্তৃতা দিক। তার দর্শন তুলে ধরুক। তা তিনি করলেন না। উল্টো আমাকে খুনি, চোর, নকশাল টকশল বলে ঘৃণা করলেন। তা করুকগে ঘৃণা। আমাকে ঘৃণা করার একজনই আছেন তিনি তোমার বাবা। পৃথিবীর আর কেউ আমাকে ঘৃণা করার মত নেই। ঢাকায় এখন আমি স্বনামে প্রতিষ্ঠিত। যে প্রতিষ্ঠার জন্য আমি এত সংগ্রাম করলাম, মিথ্যার আশ্রায় নিলাম, খুন টুন ও করলাম। আজ কি করে সে প্রতিষ্ঠার অপমৃত্যু ঘটাবো নীলাকে তোমার সাথে বিয়ে দিয়ে? আমি যদি গ্রামের সেই ল্যাদ লিদে বেকার বিএ পাস আবিদ হাসান থাকতাম, নীলা যদি তার মেয়ে হত, আমি আপত্তি করতাম না।কিন্তু এখন নীলা একজন মুক্তি যোদ্ধার মেয়ে, তার বিয়েও হতে হবে রাজ রাণীর মত। সবাই যখন জানবে তোমার মত একজনের সাথে মেযে বিয়ে দিচ্ছি, তখন এলিট সুচাইটিতে আমার মুখ কালি হয়ে যাবে। দোহাই সঞ্জু আমার এত বড় ক্ষতি করো না।তুমি আমাদের বংশের একমাত্র আলো, আমি চাই না সেই আলো এত তাড়া তাড়ি নিভে যাক, বরং সেই আলো আরো উজ্জ্বল হোক আমি সাহায্য করব।
এর পর নীলার ভবিষ্যত সম্পর্কে যা বললেন, তা হুবহু তুলে ধরলাম- নীলার জন্য ছেলেকে হতে হবে শ্রেষ্ট রুপবান, শ্রেষ্ট মেধাবী, শ্রেষ্ট ফ্যামিলি এবং ধনী। এক কথায় ক্লাস ওয়ান টাইপ ছেলে, যে ছেলে জীবনে কোন পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়নি, সেই রকম। কারণ নীলাও শ্রেষ্ট রূপবতী। লেখাপড়াও চমৎকার। কলেজের রেকড বলছে- ও ফাষ্ট হবে। নীলার যখন বিয়ে হবে তখন এক এলাহি ব্যাপার ঘটবে। বিয়েরদিন তারিখ ঠিক করা হবে এক বৎসর আগে। সেই দিন থেকে ঢাকার শহরের সব শ্রেণীর মানুষকে খাওয়ানো হবে। ঢাকা শহরের ম্যাপ ধরে কয়েকটা সেকশানে ভাগ করা হবে।প্রথমে খাবে এতিম ফকির তার পর খাবে রিক্সাওয়ারা, ট্রেক্সী ওয়ালা, বাস চালক।এর পর খাবে ব্যবসায়ীরা, এখানে ও পুজি ভিত্তিক শ্রেণী বিন্যাস করা হবে। এরপর চাকুরীজিবীদের ও এভাবে খাওয়ানো হবে। এখানেও শ্রেণীবিন্যাস করা হবে।তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণীর চাকুরীজিবীদের একদিন, এরপর দ্বিতীয়। সব শেসে প্রথমশ্রেণী কর্মচারীদের। এরপরের পর্বে খাওয়ানো হবে রাজনিতী বিদদের।এখানে প্রথমে খাওয়ানো হবে ফিল্ড লেভেলের নেতা কর্মিদের। পরে খাওয়ানো হবে, পাতি নেতা ও মাঝারী ধরণের নেতাদের। সব শেষে খাওয়ানো হবে এমপি, মন্ত্রিদের। তবে প্রধানমন্ত্রি ও রাষ্ট্রপতিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। শুধু কি তাই? নীলার এই বিয়ের খাওয়ানো পর্ব থেকে পাতি মাস্তান, বড় মাস্তান, গড ফাদার, পকেট মার, ভাসমান পতিতা, লাইসেন্স ধারী পতিতা কেহই বাদ পড়বে না। তবে এসব ক্লাসিফিকিসনের জন্য ভাল কোন দেশীও পরিসংখ্যান কোম্পানীকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। কেউ যাতে বাদ না পড়ে। সব শেষে ঢাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রতিটা মহাসড়কে এবং এয়ারপোর্টে একটি করে উন্নত মানের হোটেল বসানো হবে। যাতে ঢাকা শহরে আগমণ ও বহিরগমনকারী কেউ খওয়া থেকে বাদ না পড়ে। ঐ এক বৎসর ঢাকা শহবে লোডশেডিং থাকবে না। এ জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রি ও বিদ্যুৎ সচিবদের নিয়ে একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হবে।
পুরা ঢাকা শহরকে আধুনীক সাজে সাজানো হবে। এজন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। আবেদন করার সুযোগ সীমাবদ্ধ থাকবে শুধুমাত্র- জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, লণ্ডন, ও ফ্রান্সদের জন্য। তবে চীনকেও বিশেষ বিবেচনায় আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে। কারণ ওরাও আজকাল ভাল সাজগোজ বোঝে। নীলার বিয়ের পোশাক, গহনা সবকিছুই আন্তজাতিক ভাবে যাচাই বাচাই করে কেনা হবে। যাচাই বাচই কমিটি সচিবদের মধ্য থেকে করা হবে। এ সব ব্যাপারে বিদেশী কিছু নাম করা কম্পানীকে অফার করাহবে। এমন কি কাজল দানিটাও আনা হবে জার্মান থেকে।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#28
চাচার এই ভাষণ শুনার পর আমি থ হয়ে গেলাম। সে দিন রাতে আর ঘুম হলো না।সারা রাত ছাদে দাড়িয়ে কাটিয়ে দিলাম। আমার চোখের সামনে ভাসতে লাগল ঢাকা শহরের সুসর্জিত ঝিলমিল ছবি। বধু বেসে নীলা দাড়িয়ে। রূপ ঝলমল করছে। চোখে জার্মান কাজল কোম্পানীর কাজল আর হরিণীর চঞ্চলতা। ঠোটে দুষ্টামির হাসি। চোখে খুশির কান্না, যেন পান্না হয়ে ঝরছে গাল বেয়ে। আলোয় ঝলমল করছে ওর সমস্ত শরীর, সমস্ত নারী বৈশিষ্ট্য। আমি আর কল্পনা করতে পারলাম না। কাকডাকা ভোরে বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
প্রিয় পাঠক, যিনি আমাকে ভীষণ ভালবাসেন,উন্নতি, প্রতিষ্টা কামনা করেন।তিনি আমাকে, আমার ভালবাসাকে কি করে হত্য করতে পারেন? আর তিনিও বা কি করে ভাবতে পারলেন যে, দুটো কটোন মিল আর সাভারের এগার একর জমির উপর তৈরী বাড়িটার লোভে আমি আমার সোনা রানীকে অন্যের হাতে তুলে দেব? অন্য একজন টাকাওয়ালা, ক্ষমতা ওয়ালা, লোমশ বুদ্ধিজিবী টাইপ পুরুষ আমার সোনাকে খুবলে খুবলে খাবে। আমি এ অন্যায় করতে পারি না।
মুহুর্তে অনুভব করলাম, আমি নীলাকে ছাড়া বাঁচব না। নীলা আমার প্রাণ, মণ, দেহ সব।আমার সমস্ত অস্তিত্ব। আমি যে হাত দিয়ে ওর শরীরে আদর করেছি, সেই হাত এখনও নীলাময় হয়ে আছে। আমার সমস্ত শরীরে নীলার আদরের চিহ্ন। আমার ঠোট, চোখ, কপাল, গলা সবই নীলার আদর সোহাগে ভরা। আমি কি করে তাকে ভূলব? আমার সামনে আমার নীলাসোনা অন্য একজনের বৌ হবে, আদর করবে। হয় না, হতে পারে না।নীলার অঙ্গ সৌন্দার্য শুধু আমার জন্য। ঐ রূপ, যৌবনের শিখায়, রূপের দাপাদাপি, সব- সবই আমার। আমি ছাড়া ওর শরীরে কেউ হাত দিতে পারবে না। আমি ছাড়া ওর শরীরের ব্যাকরণ কে ভাল বুূঝবে? ওর যৌবন বসন্তে অন্য কোন ভ্রমর মধু খাক আমি তা চায় না। ওর যত মধু সব আমি চুষে খেতে চাই। আর কেউ নাকেউ নাকেউ না—-কেউ না—–
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#29
পিয় পাঠক, আমার চাচার সাথে বুঝাপড়ার তিন দিনের মাথায় আমার সোনাকে নিয়ে পালিয়ে গেলাম। আমি বহু চেষ্ট করেছিলাম, যাতে সমস্ত ঘটনা তিনি সহজ ভাবে মেনে নেন। তাতে তার সব কিছুই বজায় থাকত। তিনি তার ধারের কাছেও গেলেন না। বাবা পর্যন্ত টেলিফোনে সব কথা শুনে তাকে অনুরোধ করলেন। তিনি কারো চোখের পানি, অনুরোধ কিছুই শুনলেন না। তার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন। আমিও আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম।
প্রিয় পাঠক, আর একটু ধৈর্য ধরুন। অধির হবেন না। আমাকে গালা গালি করবেননা। আমার এই লেখা পড়ে হয়তো বুদ্ধিজীবি ধাড়ী পাকা চুল ওয়ালা অভিভাবকরা বলবেন, হারামজাদাকে জুতিয়ে গালের সব কটি দাঁত ফেলে দেওয়া দরকার। কিন্তু আপনারাই বলুন, সামাজিক রীতিনীতি আর বড়দের হুমকি ধামকিতে প্রেম কি কখনও চাপা পড়ে? আপনারা হয়তো আপনাদের জীবনের প্রেমকে অস্বীকার করে মহৎ হয়েছেন।কিন্তু আমি আমার প্রেমকে স্বীকার করেই মহৎ হতে চাইতাই তো আমি আমার নীলাসোনাকে নিয়ে পালিয়ে গেলাম।
রাজরানী নীলা সোনাকে নিয়ে পালানো পর যে সময় আমাদের কাটল, যে সমস্যায় আমি নিপতিত হয়েছিলাম সে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। এ অভিজ্ঞতার কথা আমাকে বলতে হবে।আজ না বলতে পারলে আমি আর কোন দিনই বলতে পারবো না। কারণ আমার হোস্টেলে পুলিশ রেড এলার্ট জারি করেছে। কোন কোন রুমে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সবই শুনতে পাচ্ছি। হয়তো একটু পরে আমি পালিয়ে যাব, নয়তো গুলি খেয়ে মারা যাব, নতুবা আমি পুলিশের হাতে ধরা পড়ব। তখন পুলিশের লাঠির গুতো খেয়ে সব ভূলে যাব।এই ছাদে এখন আর কেউ নেই। উপরে আকাশ, তার, ছোট ছোট পাখি মাঝে মাঝে উড়েযাচ্ছে মাথার উপর দিয়ে। পাশে অনেক বড় বিল। ধান গাছ বাতাসে দুলে দুলে উঠছে, অন্ধকারে ঢেউয়ের মত লাগছে। একটা মোমবাতির যে আলো তাও আবার আমি আড়াল করে রেখেছি যাতে বেশি দুর হতে বোঝা না যায়। হ্যঁ, আমার সেই অভিজ্ঞতা বড়ই বিচিত্র , বড়ই করুন। সোনা রানীর সাথে পালিয়ে দিন কাটানো ঘটনাকে লিখতে আমার হাত কাপছে। চোখের পানিতে ভিজে যাচ্ছে হাতের কব্জি। তবুওতবুওআমাকে লিখতে হবে।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#30
অপরিকল্পিত ভাবে পালিয়ে প্রথম একটা হোচট খেলাম। কোথায় যাব, থাকব ঠিক ছিলনা। ঢাকার বাইরে একটা অখ্যাত হোটেলে আশ্রয় নিলাম। প্রথম দিন গেল খোজ খবর নিতে। প্রথমে ঠিক করলাম দেশের কোন এক অখ্যাত গ্রামে আশ্রয় নেব। পরে বুঝলাম, সেটা ঠিক হবে না। সারা দেশ চষে ফেলাবে আমার নকশানলী কসাই চাচা। ঠিকই ধরে নিয়ে যাবে আমার সোনারাণীকে। এমন এক জায়গায় যেতে হবে যেখানে আমার কসাই চাচা পৌছাতে পাবেনা। এই প্রথম বুঝলাম, প্রেম করে পালাতে হলে ভূগোল সম্পর্কেও ভাল জ্ঞান থাকা চাই। এই দিকটাই আমি দুর্বল। ঠিক করলাম কোন একজন ভাল ভূগোলবিদের কাছে জানতে হবে পৃথিবীর কোন কোন এলাকায় এখনও জনবসতি গড়ে উঠেনি। কিংবা কোথায় আশ্রায় নিলে আমাদের কেউ খুজে পাবে না। তেমন একজনকে পেয়েও গেলাম।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের চেয়ারম্যান। ভদ্রলোক প্রথমে আমাকে আমল দিলেন না। ভ্রু কুচকে তাকাতে লাগলেন। শেষে একটা কার্ড দিয়ে বললেন, সন্ধার পর বাসায় এসো, এখন ব্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে একটা সন্দেহ মনের কোণে উকি মারল। সোনাকে নিয়ে পালিয়েছি আজ দুদিন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়নি তো ছবি দিয়ে? ফার্মগেট থেকে কয়েকটা পত্রিকা কিনলাম। তন্ন তন্ন করে ঘাটলাম।কোথাও আমাদের খরব ছাপা হয়নি। কিছুটা দুঃচিন্তা মুক্ত হলাম। ভাবলাম সমানে বড় কঠিন পথ এই পথ আমাদের একা একা চলতে হবে। আমাদের এই প্রেমের স্বীকৃতি কেউ দেবেনা। নিজেদের প্রেমের পথে নিজেদেরকেই চলতে হবে।

সন্ধ্যা হতে তখন চার ঘন্টা বাকী। এই সময়টা কি করা যায়? নীলাকে রেখে এসেছি সেই হোটেলে। সেখানে আপাতাত নিরাপদ আছে। কারও মনে কোন সন্ধেহ জন্মেনি।একবার ভাবলাম হোটেলে যেয়ে একবার ওকে দেখে আসি। পরক্ষণে ভাবলাম সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। আমাদের কিছু কেনা কাটা করতে হবে। সেটা আগে করা দরকার। আমি গুলশান- মতিঝিল এলাকার দোকান গুলোর ধারে কাছে গেলাম না। কারণ ওসব দোকানের কর্মচারী, ম্যানেজার সবাই আমাকে দেখেছে চাচার সাথে। শেষে সব ধুলোয় মিশে যাবে। আমি ঢুকলাম ফার্মগেটের পাশে কিছু দোকান আছে সেখানে। একটা ব্যাগ কিনলাম। আমার জন্য কয়েকটা প্যান্ট, গেঞ্জি, রাফ ইউজের জন্য তিনটা হাফশার্ট, চারটা তোয়ালে। নীলার জন্য এক ডজন স্কার্ট,মোজা, কেডস। সামনে শিতকাল সেজন্য ওম ধরনের গরম কোর্ট। চুলের ফিতা, গাদার, সিনেটারী প্যাড, কিছু ঔষধপত্র। ওখান থেকে বাংলা বাজার গেলাম। কিছু বই কিনার দরকার। দীর্ঘ পথের সাথি বই। নীলার খুব পছন্দের কিছু ম্যাগাজিন। রূপ চর্চার উপর তিনটি বই। একটা পৃথিবী ভ্রমণের গাইড ও একটি বিশ্ব মানচিত্র। এই সব কিনতে কিনতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। জিনিষ গুলি গুছিয়ে একটা দোকানে রাখলাম। বললাম একটু পরে নিয়ে যাব, ধরেন এক ঘন্টা পর। দোকান দার কাচা-পাকা চুলের মাঝারী বয়েসের মাইডিয়ার টাইপের একজন লোক। তিনি হাসি মুখে সম্মতি দিলেন।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#31
ঠিক সন্ধ্যায় আমি প্রফেসর সাহেবের বাসায় উপস্থিত হলাম। ভদ্রলোককে দেখে মনে হলো তিনি আমার জন্য রেডি ছিলেন। চোখের চশমা খুলতে খুলতে বললেন বসো।আঙ্গুল দিয়ে সোফা দেখিয়ে দিলেন। আমি বসলাম। ঘরের দেয়ালের দিকে তাকালাম, নানা রঙ্গের ছবি বাধানো। দৃশ্যাবলি, পাহাড়, নদী এই সব ছবি। তিনি বললেন, বল তুমি কি জানতে চাও? আমি বললাম, স্যার, পৃথিবীর এমন কোন জায়গা কি আছে সেখানে সারা জীবনের জন্য পালিয়ে থাকা যায়? কেউ খুজতে যাবে নাআমার প্রশ্ন শুনে হা-বনে গেলেন। তিনি বললেন, সব জায়গায় তো যাওয়া যায়। তা না হলে সেখানে যারা থাকে তারা গেল কি ভাবে? বসতি গড়ল কি ভাবে? আমি ব্যাপারটা বুঝিয়ে বললাম যে, স্যার এমন কোন জায়গায় আমি যেতে চাই যেখানে আমাদের খুজতে যেতে পারে কিন্তু খুজে পাবে না, লুকানোর অজশ্র জায়গা থাকবে। প্রফেসর সাহেব খানিকক্ষণ ভাবলেন।তার পর বললেন, এশিয়ার মধ্যে একটাা জায়গার নাম বলতে পারি, এটা ভারত নেপাল সিমান্তে। তাপল্যাং নামক জায়গায়। ওখানে ভারতীয় পুলিশ ও যায় না, নেপালী পুলিশও যায় না। যায়গাটা সাংঘাতিক নিরাপদ। তবে সেখানে পৌছানো খুবই কঠিন।পাহাড়ী উচু নিচু পথ। প্রচন্ড ঠান্ডা বরফ পড়ে। ওখান থেকে সম্ববত নেপালের মধ্য দিয়ে চীনেও যাওয়া যায়। চীনের কিছু পাহাড়ী এলাকা আছে যেখানে তুমি চিরকালের মত লুকিয়ে বসবাস করতে পার। তিনি তাপল্যাং যাওয়ার একটা গাইড লাইন দিলেন। আর এই বিষয় সংক্রান্ত কিছু বইয়েল নাম লিখে দিলেন যাতে আমি নিজে পড়ে সে সব যায়গায় যেতে পারি। প্রফেসর সাহেব আমার প্রশ্ন শুনে প্রথমে ভেবেছিলেন আমি খুন টুন করেছি কিনা? পরে আমি সত্য কথা বললে সামান্য হেসে স্বাগত জানালেন। আমাদের সুখী জীবন কামনা করলেন। চলে আসার সময় তাঁকে ইনফরমেশন ফি বাবদ দুটো কচকচে পাঁচশত টাকার বের করে দিলাম। তিনি নিতে চাননি। আমি জোর করেদিলাম। দ্রুত ব্যাগ বই পত্র গুছিয়ে আমি একঘন্টার মধে হোটেলে উঠলাম। কলিংবেল টিপতেই নীলা দরজা খুলে দিল। দেরির জন্য কিছু কপট রাগ দেখাল। তাতে ওর সৌন্দর্য বেড়ে গেল দ্বিগুন। আমি রাগ কমানোর জন্য জড়িয়ে ধরে হালকা আদর করলাম। চুলের মধ্যে আঙ্গুল চালিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম। ভেবেছিলামমা-বাবাকে ফেলে এসে নীলা খুব ভেঙ্গে পড়বে। হয়তো কান্না কাটি করবে। আমাকে দোষারোপ করবে। ফিরে যেতে চাইবে। তার কোনটিই করলনা। বরং কিছু পরে খুব আনন্দেও ফেটে পড়ল। জামা কাপড় বই দেখে নেচে উঠল। এত সব কেন? আমি বললাম, রাজকন্যার জন্য এসব তো লাগবে। সেদিন রাতটা কেটেছিল অনেকটা চিন্তামুক্ত ভাবে।আগের দিনের মতো ভয়ে ভয়ে নয়। সেদিন বেছে বেছে চকৎকার একটা স্কাট পরল ও। পয়ে দিল কেডস। এর পর আমরা রাতের খাবার খেতে গেলাম। নিকটেই একটা খাবার হোটেল পেলাম। বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ফিট ফাট। পছন্দ মত খাবার খেলাম। আমি কিছুটা কম খেতে চাইলে নীলা রাগ করল। বলল, তুমি কি টাকা বাচাচ্ছ কম খেয়ে? আমি কিছু বললাম না। নীলা বলল, যে টাকা আমি এনেছি আগামী ছয় বছর যদি আমরা দুজন প্রজাপতির মত উড়ে উড়ে বেড়ায় আর প্রথম শ্রেণী হোটেলে থাকি আর খাই তবুও ফুরাবে না। এখন ভাল করে খাও। টাকার চিন্তা তোমাকে করতে হবে না। ছয় বছর কম সময় নয়, এর মধ্যে কিছু একটা উপায় হবে। বার বছর বয়সের একটা মেয়ের এই ধরণের পাকা পাকা কথায় আমি না হেসে পারলাম না। খেয়ে দেয়ে হোটেলে ঢুকলাম।ম্যানেজারকে একটা গিফট দিলাম। বললাম, আমরা এই হোটেলে আছি বাবা শুনেছেন, তাঁর পক্ষ থেকে আপনার উপহার, যেন আপনি আমাদের দিকে খেয়াল রাখেন- এই আর কি!ম্যানেজার গলে গেলেন যেন। কোন অসুবিধা হবে না এই বাক্যটি অন্তত দশ বার বললেন। আরও বললাম, বাবা হয়ত আপনার কাছে টেলিফোন করতে পারেন, খেয়াল রাখবেন।ম্যানেজার ঘাড় নাড়লেন। রুমে ঢুকেই নীলা বইয়ের উপর হামলে পড়ল। রুপ চর্চার বইদেখে থ হয়ে গেল। আরও রূপ চাই? আমি হাসলাম। একটু বিশ্রাম নিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মেতে উঠলাম। তাপল্যাং এর কথা শুনে নীলা আনন্দে আটখানা হয়ে গেল।মাউন্ট এভারেষ্ট, সাদা সাদা বরফে ঢাকা পাহাড়, গাছ- সব যেন ওর চোখের তারায় ভেসে উঠল। আমি বললাম, নীলা, এত আনন্দ করো না এখনও আনন্দের সময় আসেনি। আগে একটা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা দরকার। পাসপোর্ট অফিসে যাওয়া দরকার। কাল এক ঘন্টার মধ্যে পাসপোর্ট বের করতে হবে। দেখতে দেখতে রাত এগারটাা বেজে গেল।নীলা হাই তুলছে দুহাত উচু করে। এই সময় ওর বুকের উপর থেকে উড়না সরে গেল।আমি দেখলাম লোভী চোখে। ও একটু হাসল। ঠোট চেপে মুখ নীচু করে বলল, এ্যাই, তুমি গোপনে এসব দেখ নাকি? আমি বললাম, কি-কি দেখি? কিছু না বলে ও পালাতে গেল।আমি পালাতে দিলাম না। দুহাতে জোরে এটে ধরলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, বল না সোনা- আমি তোমার কি দেখি? আমার সোনা লজ্জায় মরে গেল যেন। দুহাতে মুখ এটে ধরে বলল, বলব না, বলব না। ছাড়, ছাড় কেউ দেখে ফেলবে। আমি আরও জরে এসে ধরলাম বুকের মধ্যে। ওর শরীরের উষ্ণু স্পর্শ আমার বুকে লেগে পাগল করে তুলল। থুতনি ধরে মুখ উচু করে ঠোটে চুমু খেলাম। অজশ্র আদর করলাম। আমার আদরে ও অতিষ্ট হয়ে উম্ উম্ শব্দ করতে লাগল। জড়িয়ে ধরে থাকলাম অনেক্ষণ। আর পালাতে পারলো না আমার সোনা। আমার অজশ্র আদরে ও গলে গেল। কত সময় আমি ওকে বুকের ভিতর জড়িয়ে ধরেছিলাম ঠিক খেয়াল নেই। ডুবে ছিলাম দুজন দুজনার আদরের সাগরে। সেদিন আমার প্রিয়া সোনার রূপ দেখে আমি পাগল হয়েছিলাম, ওর রূপ সুধা চুষে খেয়েছিলাম।আমি বুঝতে পারলাম, ওর ঘুম ছুটে গেছে। যে কামনার ঝড় ওর শরীরে বয়ে চলেছে তার চুড়ান্ত নিস্পতি না হওয়া পর্যন্ত ঘুমাতে পাবে না।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#32
ওর চোখে মুখে চুড়ান্ত কামনার আহবান- আবার উত্তেজনা দমাবারও প্রবল ইচ্ছা। ও থর থর করে কাপতে লাগল।আমি ওকে বিছানায় শুয়ে দিলাম। মাথা টিপে দিলাম। হাত ম্যাসেজ করে দিলাম।অনেক পরে ও শান্ত হল। মাথায় দুটো বালিশ দিয়ে দুহাটু ভাজ করে ঘুমিয়ে পড়ল।কিন্তুৃ পাঠক, বিশ্বাস করুন, আমি আমার সোনা রাণীর দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করিনি। আমি ওকে অপবিত্র করিনি। গোপনে আমার সোনা রাণীর মধু চুরি করিনি। যাকে আমি ভাল বাসি যার গর্ভে তার মত আর এক ভবিষ্যত সোনা রাণীর আগমণ ঘটবে, তাকে আমি কি করে অপবিত্র করব? এতটা চরিত্রহীণ, বেহায়া আমি নই। আমার বাবা, চাচা, চাচী, সমাজ সবাই আমাকে দিন্দা করতে পারে কিন্তু দোষি করতে পারবে না। অনেক রাত্রে নীলার ঘুম ভাঙ্গল। পানি খেতে চাইল। পানি দিলাম। ফ্লাক্সে রাখা চা একটা বিস্কুট ও কয়েকটা আফেল দিলাম। শান্ত ভাবে খেল। খাওয়া শেষে আমার সোনা আমার বুকের মধ্যে কুন্ডুলি পাকিয়ে দুহাতে আমার গলা জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ল।মাঝে মাঝে আমার পায়ের উপর ওর উরু, হাটু উঠে আসতে লাগল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সোনা বাবা মায়ের কথা মনে পড়ছে? ঘুমের ঘোরে বলল মার কথা।
পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙ্গল সকাল সাতটায়। ঘুম জড়ানো চোখে আমি দেখলাম, নীলা আমার মুখের উপর ঝুকে পড়া, ওর এলো চুলগুলো মুখের উপর কয়েক গোছা, কয়েক গোছা ওর পিঠে ছড়িয়ে আছে। ডান হাতটা আমার মাথার চুলের গোড়া ধরে হালকা টান দিচ্ছে, চোখ দুটি আশ্চার্য মায়াময় হরিনীর মত।
আমাকে বলল, এই আর কত ঘুমাবে, বল? আমি বললাম, আরও দুঘন্টা, ও বলল, ইশ কুড়ের বাচ্ছা। উঠ আর ঘুমাতে হবে না। আমি বললাম উঠে কি করব? ও বলল, গল্প করব। আমি বললাম, ঠিক আছে তুমি গল্প বল আমি শুনি।
নীলা সোনা আমার ঘুমের আবেশ বুঝতে পারল। বলল ঠিক আছে তুমি ঘুমাও আমি তোমার মাথা ম্যাসেজ করে দিই। বুঝলাম, আমার সোনা বেশ পাকা গিন্নী হয়ে গেছে।মাথা ম্যাসেজ করতে করতে বলল, ইস দেখেছ, তোমার নাকের গোড়ায় মস্ত একটা ব্রোন, কেটে দেব? আমি বললাম, ব্যাথা পাবতো। আমার সোনা রানী বলল, দাড়াও আস্তে দিচ্ছি। ব্যাথা লাগবে না। দেখতে বিশ্রী দেখাচ্ছে। আমি ঘুমের ভান করলাম। ও মুখের ব্রোন কাটার পর আস্তে আস্তে আমার ঠোটে আঙ্গুল বোলাতে লাগল। আশ্চর্য শিহরন জেগে উঠল আমার মধ্যে। পরে আস্তে করে হামি খেতে লাগল। ও আস্তে আস্তে আমাকে কমনার দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। আমি বাধা দিলাম না। ওর কামনার শিহরনে, আদরের অত্যাচারে আমার ঠোট ছিড়ে যেতে লাগল। আমি আমার হাত দুটো দিয়ে ওর চুলে বোলাতে লাগলাম। ও পরম তৃপ্তিতে আমাকে আদর করতে লাগল। ও জ্বিব দিয়ে ঠোট চাটতে লাগল। নোনতা স্বাদ পেতে লাগলাম। একসময় আমার চোখের পাতা চোখ, গলা, ঘাড়ের নীচে নরম চুলে আদর বসিয়ে দিল। আমি চেষ্টা করলাম নিজেকে দমন করতে। আমি একটি হাত ওর মাথার চুলের মধ্যে থেকে সরিয়ে পিঠে বোলাতে লাগলাম। কি কোমল আমার সোনা রানীর পিঠ! আমি প্রান পনে নিজেকে দমন করলাম। আমি ইচ্ছা করলে আমার সোনারানীর সমস্ত সম্পদ সেই সময় চুরি করতে পারতাম, ওকে নিঃস করে ছোবড়ার মত ফেলে দিতে পারতাম। আমি তা করিনি। আমার সোনারানীকে আমি ধ্বংস করিনি, ঠকাইনি।রক্ষা করেছি। চরম বিপর্যয়ের মুহুর্ত থেকে ওকে আমি সরিয়ে পবিত্র রেখেছি।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#33
আমার সোনার কামভরা ভালবাসার আঠা থেকে নিজেকে মুক্ত করে বাথরুমে গেলাম।প্রথম কর্মটা সারলাম। ফিরে এসে দাত ব্রাস করলাম। বিস্কুট, ফল, আর চা দিয়ে নাস্তার শেষে নীলাকে বললাম, সোনাগো, আমরা পালিয়েছি, তোমার বাবা আমাদের সন্ধান পেলে আমাকে গুলি করে মারবে, তোমাকেও আস্ত রাখবে না। নীলা কিছু বললনা।
আমি আবার বললাম- নীলা, আমরা যে পথে বেরিয়েছি, এক সাথেই আমাদের থাকতে হবে। একই খাটে শুতে হবে। তুমিতো ভাল ভাবেই বোঝ। একই পর্যায়ের একটা ছেলে একটা মেয়ে একসাথে থাকলে প্রথমে একটু বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়। তার পর বন্ধুতের সুবাদে, একটু আদর স্নেহ বিনিময় হয়। এক সময় আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছা জাগে।
নীলা হাসতে হাসতে বলল, অনেক কিছুটা কি? আমি বললাম, বলবনা। ও প্রায় হামলে আমার মুখের উপর মুখনিয়ে এসে বলল, এই বলনাগো- কি করার ইচ্ছা হয়? আমি একটু আস্তে বললাম সহবাস করার ইচ্ছা হয়॥
নীলা প্রায় সাথে সাথে বলল, এই তুমি একটা আস্ত ফাজিল, চোর। তুমি আমাকে চুরি করেছ। তোমাকে পুলিশে দেব। আমি বাবা ও সব কিছু করতে পারবনা বলে দিলাম।আমি হাসলাম সোনার দিকে তাকিয়ে। খুশিতে ওর চোখ ঝলমল করছে। আমি বললাম, ঠিক আছে- কিছুৃ না কর, একটা সম্পর্ক তো তৈরী করা দরকার। চল আমরা বিয়ে করি।সেদিন সকাল নয়টায় আমি হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে গেলাম। প্রথমে খেয়ে নিলাম। নীলার জন্য খাবার রুমে পাঠিয়ে দিলাম। ওকে রেষ্ট নিতে বলে আমি বেরিয়ে পড়রাম। সেদিন বেরুনোর উদ্দেশ্য ছিল দুটো । একটা পাসপোর্ট অফিস, দ্বিতীয়টা হল কাজী অফিস খোজ করা।
আমি প্রথমে গেলাম পাসপোর্ট অফিসে। কিচূ দালাল সেখানে ঘোরা ঘুরি করে।পাসপোর্ট নেয়ার নিয়ম, সময ও টাকার পরিমান একটা নোটিশ বোর্ডে মারা। সেদিকে তাকিলাম না। খুজতে লাগলাম দালালদের। বিপদের সময় এসব অসৎ মানুষেরা বেশী উপকারে আসে। পেয়ে গেলাম এক দালালকে। এক ঘন্টার মধ্যে পাসপোর্ট করে দেয়ার দাবী শুনে আকাশ থেকে পড়ল যেন। আমি নগদ চারখানা চকচকে পাচশত টাকার নোট সামনে মেলে ধরলাম। বললাম কাজ হলে তোমার জন্য স্পেশাল পুরুস্কার। তোমার বসকে তুমি ম্যানেজ কর। বাংলাদেশে টাকা দিলে সব হয়। যত টাকা লাগুক, দেব। তবু এক-দুই ঘন্টার মধ্যে আমার পাসপোর্ট চাই-চাই। পুরস্কারের লোভে দালাল সামলাতে পারল না। ছুটে গেল তার বসের কাছে। হাসিমুখে ফিরে এল। ছবি আর টাকা পয়সা নিয়ে গেল। পাঁচ মিনিট পরে আমাকে ফরম পুরুন করতে ডাক পড়ল। আমার দিকে তাকিয়ে তার বসের চোখ স্থির হয়ে গেল। মনে হল, তিনি যেন আমাকে খুজছেন। মুখে শুধু বলল, ও আই সি, তাহলে ইউ আর। আমাকে বললেন, বস এখানে। আমি বসলাম। অফিসার বাথরুমের দিকে গেলেন। এক কর্মচারীকে বললেন, মফিজ তুমি ফরমটা পুরুন করে সই সাক্ষর করিয়ে নাও আমি কয়েকটা জরুরী টেখিফোন করব, তুমিতো জান আমার ওয়াইফ এখন ইন্ডিয়ায় পিয়ারলেস হসপিটালে চিকিৎসাধীন, ওখানে খোজ নিতে হবে। বলে একটু চোখ ইশারা করলেন। তার পর বললেন, ওনাকে চা দাও। এত বড় মালদার পার্টি, একটু আদয়যতœ কর। আমার সন্দেহ হল। আমি আগে একবার বলেছিযে, আমার আই, কিউ, ভাল। চাচীর ধারনা আমার আনুমান ক্ষমতাও ভাল। আমি ঘোরতর সন্দেহের মধ্যে পড়লাম। নিশ্চয় কোন ষড়যন্ত্র আছে। আমার চাচা সমস্ত অফিসে ব্যাপারটা জানিয়ে দেয়নি তো? পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়নি তো? সাথে সাথে স্থির হয়ে গেলাম। আগে পত্রিকা দেখতে হবে। আমি উঠব বলে ঠিক করলাম। কিন্তু তড়িঘড়ি করলে সন্দেহের মধ্যে পড়ব বলে পকেটে হাত দিয়েই বললাম এই যা। মফিজ বলল, কি হল? আমি বোকার মতো হেসে বললাম, ভাই সর্বনাশ হয়ে গেছে। টাকা আনতে পরিনি, শার্ট চেঞ্জ হয়ে গেছে। আমি আধা ঘন্টার মধ্যে এনে দিচ্ছি। বলে পকেট থেকে আর একখানা পাঁচশত টাকার নোট মফিজকে দিলাম। বললাম এটাও রাখুন বাকী টাকা আনতে যাচ্ছি এসে দেব। তবে কাজটা দ্রুত করেন। জি আচ্ছা বলে মফিজ তার বসকে ডাকতে গেল। আমি এই ফাঁকে বেরিয়ে পড়লাম।আগে পত্রিকা অফিসে গেলাম। চার পাঁচটা জাতীয় পত্রিকা কিনলাম। একি! সবপত্রিায় আমাদের ছবি সহ বিজ্ঞাপন দিয়েছে। সন্ধান চেয়েছেন। সন্ধান প্রার্থী আমার চাচা নয়, স্বয়ং স্ব-রাষ্ট্র সচীব, আমি পাথর হয়ে গেলাম, পালাতে পারব তো! ঘোরতর সন্দেহ হল আমার পিছনেই কোন গোয়েন্দা নেই তো? একসময় মনে হল আমাকে কে একজন অনুসরণ করছে। আমি পিছন ফিরে তাকাতেই সেও তাকাচ্ছে। আমি হাটলাম তো সেও হাটল। লোকটার চোখে কাল চশমা। কদমছাট চুল। আমি নিশ্চিত হলাম, ব্যাটা পুলিশের লোক। আমি হঠাৎ একটু জেদি হয়ে গেলাম, একটু চ্যালেঞ্জ নিলাম ব্যাটা কেমন পুলিশের লোক। আর কিভাবেই বা আমাকে অনুসরন করে। একবার ভাবলাম ওনার কাছেই না হয় সিগারেট চেয়ে নেব। সাহসে কুলালো না। আমার চাচা যে মানুষ তিনি হযত শুধু পুলিশকেই জানাননি গোটা ঢাকা শহরের মানুষকে লেলিয়ে দিয়েছেন আমার পিছনে। আমি সাহস হারালাম না। এগলি ও গলি এ দোকানে ও দোকানে করে প্রায় আধা ঘন্টা পর লোকটাকে আর দেখলাম না। আমি সরাসরি বাসে না উঠে, রিকসা ভ্যন চড়ে চড়ে হোটেলে ফিরলাম। হোটেলে এসে দেখি নীলা রাজবানীর মত সেজে বসে আছে। চোখে কাজল সুরমাও দিয়েছে। লাল রঙ্গের স্কার্ট মোজা আর কেডস পরে খাটে বসে বিশ্বভ্রমনের গাইড দেখছে। আমাকে দেখেই নেচে উঠল আনন্দে।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#34
আমি বললাম সর্বনাশ হয়েছে নীলা। ও ফ্যাকাসে হয়ে বলল, কি হয়েছে? আমি পত্রিকা গুলো ওর সামনে ফেলে দিলাম। ও দেখল। আমি দেখলাম ও কিছুটা ভয় পেয়ে গেছে। আমি কিছুটা সন্দেহের মধ্যে রাখলাম ওকে। ভাল করে যাচাই করা দরকার। চরম বিপদে অনেক সময় সবাই দৃঢ়তা ধরে রাখতে পারে না। যে আবেগে আমার সাথে ঘর ছেড়েছে। এই দুর্যেগে জীবন মরনের সন্ধিক্ষনে হয়ত ওর মোহ কেটে যেতে পারে। আমি বললাম এখন কি করবে নীলা? নীলা বলল, কি করব আবার, পালাতে হবে। আমি বললাম, নীলা এখন আবেগের চেয়ে যুক্তির বেশী প্রয়োজন। তুমি ভেবে দেখ- তোমার বাবা যে কাজটা করেছে- তাতে গোটা প্রশাসন আমাদের খুজে বেড়াচ্ছে। এখনও সময় আছে, তুমি তোমার বাবার কাছে ফিরে যাও। তুমি তার একমাত্র মেয়ে। তিনি তোমাকে ক্ষমা করবেন। আমি তাদের বংশের একমাত্র প্রদীপ। আমাকেও হয়ত ক্ষমা করতে পারেন। অথবা আমাকে টুকরো টুকরো করে দিতে পারেন। কেউ কিছুই জানতে পারবেনা। এইটাই সম্ভবনা বেশী। তুমি ইচ্ছা করলে তোমার বাবার কাছে ফিরে যেতে পার কিন্তু আমার পক্ষে আর কোথাও ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। কারন এই ঘটনার জের হিসেবে আমার বাবাকেও হয়ত এতক্ষন পুলিশ জিঞ্জাসা বাদ করছে। নীলা বলল-তাও অসম্ভব কিছু না।খুনীরা আপন পর মানে না। আমি বললাম, নীলা আমার নীলা সোনা, স্বপ্নের রাণী আমার, তুমি তোমার বাবার কাছে ফিরে যাও। তোমার ছোয়া যতটুকু পেয়েছি তাতে এই পৃথিবীতে আমার আর কিছুই পাবার নেই। সেই স্মৃতি নিয়ে আমি সারা জীবন বেচে থাকব।

নীলা বলল- তার মানে তুমি আমাকে নিতে চাচ্ছ না? তুমি এতই ভীত? আমাকে কি ভেবেছ বলত? তোমাকে বিপদে ফেলে আমি ফিরে যাব বাবার কাছে? না- গো সোনা তা আর হয় না। যে পথে পা বাড়িয়েছি সেই পথই আমার একান্ত আপন। তুমি বিশ্বাস না কর চল কাজী অফিসে। আমি দেখলাম নীলাকে আর ফেরানো যাবে না। দ্রুত পরিস্থিতি পাল্টে নিলাম। আমি বললাম, এখানে আর থাকা নিরাপদ নয়। দ্রুত গোছ গাছ কর। এক্ষুনি বেরুতে হবে। সময় মাত্র দশ মিনিট।

সেদিন দশ মিনিটের মধ্যে আমরা হোটেল ত্যাগ কললাম। আসার সময় ম্যানেজারকে বললাম, বাবার এক বন্ধুর ম্যাসিভ হার্ট এটাক হয়েছে। যখন তখন অবস্থা।হাসপাতালে আছে। তাই চলে যাচ্ছি। আরও একখানা পাঁচশত টাকার নোট বকশিস দিলাম ম্যানেজারকে। পথে এসে একটা ট্যাক্সি নিলাম। ট্রাক্সিতে করে সায়েদাবাদ নামলাম। ঠিক করলাম আগে সীমান্ত বর্তী কোন এলাকায় যাওয়া দরকার। আনেকটা নিরাপদ হবে। ওখানকার পুলিশরা চোরাকারবারীদের ধরার জন্য ব্যাস্ত থাকে।আমাদের মত প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য ওদের নজর কম।

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#35
ছয়-৬

সেদিন বাসে উঠে আমার রানী সোনার নতুন রূপ দেখলাম। হোটেলে যে স্কার্ট আর কেডস পরেছিল সেটা পাল্টে কাঁচা হলুদ রংয়ের একটা স্কার্ট পরেছে। পায়ে কুসুম কালারের মোজা, সাদা কেডস, চোখে সান গ্লাস মোটা ফ্রেমের। আমি থ হয়ে দেখতে লাগলাম। গাড়ির ড্রাইভারের পিছনে আমাদের ছিট। জানালার ধারে ও বসা। বাতাসে চুলগুলো এলোমেলো ভাবে উড়ে আমার মুখে আছড়ে পড়তে লাগল। মিষ্টি মিষ্টি একটা গন্ধ আমার নাকে এল। ঠোটে আবার হালকা লিপষ্টিক ও দিয়েছে। তারই ফাঁক দিয়ে মুক্তোর মত দাঁত বের করে কথা বলতে লাগল। আমি বললাম, মাথায় একটা টুপি, হাতে একটা ছড়ি নিলেনা কেন? ও বলল কেন? আমি বললাম, যে সাজা তুমি সেজেছ এই দুটো নিলে পুরো ফরাসী মেম হয়ে যেত্ েআমি একটু সাহেব সাহেব ভাব দিয়ে তোমার পাসে বসে থাকতে পারতাম আর কি? নীলা বলল, ফাজলামী করনা সোনা। চুপ কর। আমি চুপ করলাম।
আমি এখনও এক হাজার ডলার বাজী ধরে বলতে পারি সেদিন নীলা যে,, ভাবে সেজেছিল তাতে গাড়ীর প্রত্যেক পুরুষ উতালা হয়েছিল। এমনতেই নীলা শ্রেষ্ট সুন্দরী। তার উপর একটু সাজগোজ, পোশাক, সব মিলিয়ে ওকে যে কি রুপবর্তী আর ব্যক্তিত্বময় করে তুলেছিল তার তুলনা করা সত্যিই মুসকিল।
এরই মধ্যে একটা সমস্যা বাধিয়ে দিল নীলা। আমি তখন ম্যাগাজিন দেখছি। নীলা দেখছে চরংঢ়ষধু ড়ভ ভঃড়ধিৎ পত্রিকাটা। এই সময় একটা ত্রিশোর্ধ পুরুষ নীলাকে জিজ্ঞাসা করল, প্লিজ ম্যাডাম, কিছু মনে করবেন না, আপনি কি একা? নীলা হেসে উত্তর দিল ঘড়ঃ ধঃ ধষষ, নঁঃ যিু? ইংরাজীতে উত্তর দেওয়ায় লোকটা হচকচিয়ে গেল।লোকটা আবার জিজ্ঞাসা করল, আপনি কি অনেক দূরে যাবেন? নীলা বলল, ওঃ রং ধহ ড়ষফঃৎরপশ.আপনি কি জানতে চান, সরাসরি বলুন। লোকটা আমতা আমতা করতে লাগল। আমি কথা বলতে যাব এমন সময় নীলা বলল, তুমি চুপ কর। আমি এই সমস্ত পথে ঘাটে প্রেম নিবেদনকারীদের ভালভাবে চিনি। লোকটা থতমত খেয়ে তার জায়গায় গিয়ে বসল। আমি নীলাকে বললাম, ছি নীলা, এভাবে মাথা গরম করনা। লোকটা পুলিশের লোকও হতে পারে।আমরা সন্দেহ হচ্ছে। শেষে সব কয়লা হয়ে যাবে। আমার কথায় পর নীলা যে উত্তর দিল তার উপর আর কোন কথা চলে না। নীলা বলল, নামো তুমি গাড়ি থেকে। নামো বলছি।আমাকে বাসায় রেখে এস। আমি তোমার সাথে যাব না। একজন ভীতু লোক আমার স্বামী হতে পারে না। একজন ভীতু মানুষের সাথে আমাকে সারা জীবন কাটাতে হবে ভাবতে ভাল লাগছেনা। নীলার হাসিমাখা রূপ দেখেছি, অভিমানি রূপ দেখেছি, কামনায় রূপ দেখেছি, কাঁদলে সেই জবাফুলের মত ফোলা ফোলা রূপও দেখেছি। কিন্তু রেগে গেলে কেমন দেখায় সেই দিন দেখলাম। আমি অবাক হয়ে বললাম, আর একটু রাগ করনা সোনা..রাগলে তোমাকে যে কি ভাল লাগে.. নীলাকে কথা গুলো এমন ভাবে বললাম যে, নীলার রাগ নেমে গেল। মুখ নীচু করে হাসতে লাগল। একটু পরে দেখলাম, ওর চোখ দুটো একটু ভেজা ভেজা। একটা হাত আমি হাতের মধ্যে টেনে নিলাম। গাড়ির মধ্যে লোকের চোখকে ফাঁকি দিয়ে যত টুকু আদর করা যায় করলাম।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#36
আমার সোনাকে নিয়ে যখন মেঘনার উপর উঠলাম, তখন আনন্দে আতœহারা হয়ে গেল।আঙ্গুল দিয়ে নীলা পানি দেখাতে লাগল। রেল সেতু দেখছে, ওর কাছে যেন সব কিছুই একটা ছন্দময় আনন্দ। একবারও ওর মনে হয়নি যে, বাংলাদেশের গোটা পুলিশ প্রশাসন আমাদের খুজে বেড়াচ্ছে। এই মুহুর্তে গাড়ির মধ্যে থেকে একজন এসে বলতে পারে, কোথায় পালাচ্ছ বদমাইয়েশের দল? ঐ হারামীদের জেলে পাঠাও আমি পুলিশের লোক। এই দেখ আমার পরিচয় পত্র। প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি আমরা নিরপদে সিলেটে পৌছলাম।
সিলেটে পৌছানোর পর নতুন একটা অনুভুতি উপলব্দি করলাম। শহর টাকে মনে হল রক্ষকবচ মায়ের মত। মনে হল যেন, আমি পবিত্র মাটিতে পা দিয়েছি। এই মাটি আমাকে আশ্রয় দেবে। যখন টার্মিনাল থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসলাম, তখন হঠাৎ মনে হল আমি বাংলাদেশে নেই, লন্ডন। এখনকার অনেক মানুষ লন্ডন বসবাস করে।বিল্ডিংগুলোও সেরকম ধাচে তৈরী করা। একারনে সিলেটকে বলা হয় বাংলাদেশের লন্ডন। আমি সেই লন্ডনে আমার প্রিয়া সুন্দরীকে নিয়ে হাজির হলাম এদিক ওদিককিছু সময় পরিচিত ভঙ্গিতে ঘোরাঘুরি করলাম অহেতুক ভয় এড়ানোর জন্য। শেষে একটা আবাসিক হোটেলের খোজ করতে লাগলাম।
হোটেল খুজতে আমার জান কয়লা হয়ে গেল। রাস্তায় যাকে জিজ্ঞ্যেস করি, সেইবলে ঐ তো সামনে। একটু আগে, একটু ঘুরে, এই ভাবে। এদিকে আমার সোনার খিদেও পেয়ে গেছে। হাটতে পারছেনা। রিকসা নেব তারও উপয় নেই। দুমিনিটেই খালি রিকসা চোখে পড়ছে না। শেষে এক বৃদ্ধ বললেন, সামনের ট্রাফিক আইল্যান্ড পার হয়ে বায়ে একটা হোটেল আছে, নাম সূর্যমুখী।
হোটেলের সামনে বেশ চমৎকার একটা ফুলের বাগান। তাজা তাজা ফুল ফুটে আছে।লাইট পড়ে চকচক করছে। ভীড় একটু কম। বুঝলাম এটা বড়লোকদের হোটেল। আমি ম্যানেজারের সাথে কথা বলছি, এই ফাকে নীলা ফুল বাগানের দিকে এগুলো। একটু পরে দেখি আমার সোনা মস্ত একটা তাজা ফুল তুলে বুকে চেপে ধরে গন্ধ নিচ্ছে। আমি বুঝলাম, আমার সোনা এই ভাবে আমাকেও বুকের মাঝে চেপে ধরবে। কোন দিনও কোথাও যেতে দেবে না। আমি এক সপ্তাহের বুকিং দিলাম। হোটেলের খাতায় লিখলাম এম, সঞ্জু, এবং নীলা। ঠিকানা পাচ বাই এক, উত্তরা, ঢাকা। সম্পর্ক-স্বামী-স্ত্রুী। উদ্দেশ্য-হানিমুন। ২০৩ নম্বর লেখা একটা চাবি আমার হাতে দিলেন। সাথে একজন বয় পাঠলেন। ২০৩ নম্বর ঘরের সামনে পৌছালে বয়কে একটা পাঁচশত টাকার নোট দিলাম। বললাম বকশিস।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#37
তালা খুলে ঘরে ঢুকলাম। ডবল বেড মাঝারী আয়না। পাশে বাথরুমের দরজা। দরজায় আয়না লাগানো। কাচের জানালা, নীল রঙের পর্দা টাঙ্গানো। দুটো চেয়ার। বেতের তৈরী, কাচ লাগানো টেবিল, মেঝেতে সুন্দর কার্পেট, চিনা মাটির তৈরী লাইটল্যাম্প পিছনের দিকে ঝুলন্ত বারান্দা। কাঠের তৈরী। বিচিত্র প্রজাতির ফুলের টব দিয়ে সাজানো। আমার সোনা ঘরে ঢুকেই আয়নার সামনে দাড়াল। নিজেকে দেখছে।কাঁচা হলদে রঙের পোশাকে নিজের রূপে নিজেই মুগ্ধ হচ্ছে। রূপসুধা পান করছে।আমি ডাকলাম নীলা, ও মুখ তুলে আমার দিকে তাকাল। হাসল। আমি বললাম- রেষ্ট নাও।সারাদিন গাড়িতে জার্ণি করে এসেছ, খিদেও পেয়েছে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নাও।
আমি ঘামে ভেজা চট চটে শার্ট প্যান্ট খুলে বাথরুমে ঢুকলাম। গোসল করলাম।ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলাম। প্রথমে ম্যানেজারের সাথে ভাব জমালাম। কোথায়কি দেখার আছে , কি ভাবে যেতে হবে ভাড়া টাড়া কেমন, লোকজন ভদ্র কিনা, বখাটে ছেলেদের উৎপাত আছে কিনা! এরকম সমস্যায় পড়লে জরুরী টেলিফোন নাম্বর, ভদ্রলোক সব তথ্য দিলেন। বললেন, জাফলং, মাধবকুন্ড, হযরত শাহজালাল (র) মাজার খুবই আকর্ষনীয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে আসে এখানে। হাচান রাজার বাড়িও দেখে আসতে পারেন। খুব মরমী গান লিখেছেন তিনি। নামকরা লোক। ম্যানেজারকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে রুমে ঢুকলেন।
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#38
এর মধ্যে নীলা গোসল সেরেছে। লেবু গ্েন্ধর সাবান মেখেছে। সুমিষ্ট গন্ধে ঘর খানা ভরে আছে। আয়নার সামনে চেয়ারে বসে চুল আচড়াচ্ছে। আমি পিছন তেকে ওর গলা জড়িয়ে ধরে আদর করালাম। ও বলল, এখন আর আদর করতে হবে না, ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে। আমি আদর করলাম। আমার আদর খেয়ে সুটকেসের কাছে গেল। চাবি খুলে একটা শাড়ি পরল। দোর্দান্ত আকর্ষনীয় গোলাপী টাইপের একটা শাড়ী । চুলগুলো পিঠের উপর ছড়িয়ে আমার বুকের মধ্যে মাথা গুজে দিল। প্রানপন আবেশে আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম। প্রান ভরে আদর করলাম। মিষ্টি গন্ধ শুকলাম। ওর মাথায় নরম চুলের মধ্যে আমি মুখ ডুবিয়ে মিষ্টি স্বাদ নিলাম। কিছু পরে আমার বাহু থেকে মুক্ত করে বাইরে বেরিয়ে পড়লাম খেতে। মাছভাজি আর খাশির পোলাও খেলাম। আমি বললাম, ঠান্ডা কিছু খাবে। ও বলল না। খাওয়ার পাঠ চুকিয়ে দ্রুত রুমে ফিরে আসলাম। রুমে ঢুকে দুজন চুপচাপ শুয়ে থাকলাম কিছু সময়। খানিক বাদে নীলা বলল, একটা জিনিস লক্ষ করেছ? আমি বললাম কি? ও বলল, আমার কেন জানি মনে হচ্ছে পৃথিবীর কোন পুলিশ আমাদের সন্ধান পাবেনা। আমি বললাম, কি করে বুঝলে? ও বলল আজ দিনটা লাকী বুঝতে পারছনা? তুমি যে ভাবে ভয় পাইয়ে দিলে তাতে আমি তো ভেবে ছিলাম এতক্ষন এই হোটেলে না থেকে আমি থাকতাম বাসায় আর তুমি থাকতে জেলে হাজতে । আমি বললাম, তা ঠিক। নীলা বলল, এখন কি করবে ঠিক করেছ? আমি বললাম, কিছু খোজ নিয়েছি। একসপ্তাহের বুকিং দিয়েছি। যাতে আমাদের উপর নজর না পড়ে। তবে তিন চার দিনের মধ্যে আমরা হোটেল পাল্টাবো। তবে একটা ব্যাপার হবে। ও বলল কি? আমি বললাম কাল যাখন আমরা বেড়াতে বের হব, খাতায় লিখছি আমরা হানিমুনে এসেছি, সেইভাবে উচ্ছাস বাহার রাখতে হবে। কোন বিষন্নতা যেন চোখে না পড়ে। নীলা বলল, ঠিক আছে।আমি দেখলাম, নীলার চোখে ঘুম নেমে আসছে। কথা জাড়িয়ে যাচ্ছে। আমি কথা বাড়ালাম না। ও ঘুমিয়ে পড়ল। আমি একটা বই ঘাটতে লাগলাম। ঘুমের মাধ্যে নীলা অদ্ভুত একটা কান্ড করল। ও শুয়ে আছে কাত হয়ে, বাম হাতটা মাথার তলে, ডানহাতটা মুখের আছে থুতনির নিচে। পা ভাজ করা। শাড়ির একটা প্রান্ত হাটুর উপরউঠে গেছে। লাইট পড়ে ওর ফর্সা পা জ্বল জ্বল করছে রুপোর মত। হঠাৎ ও কি যেন বলতে শুরু করল বিড় বিড় করে। বোঝার চেষ্টা করলাম। অস্পষ্ট কথা। কাকে যেন ডাকছে। বার বার বলছে, এই এই। হাত নাড়ছে। ঘুমের মধ্যে বালিশ টানছে। আমি ওর হাতটা ধরলাম। ও টানছে আমাকে। আমি ওর মুখের কাছে মুখ নিয়ে গেলাম। ঘুম জড়ানো চোখে দুষ্টামির হাসি। আমি ডাকলাম ও উউম উউম করে ডাক শুনল। হাটুতে হাটু ঘসছে। আমি ওর মাথাটা বুকের মধ্যে তুলে নিলাম। ও চোখ খুলে আমাকে দেখল। হাসল।আবার চোখ বুঝল। আমাকে জড়িয়ে ধরল। ওর রেশম রেশম নরম বুকের চাপ আমার বুকে ঠেকল।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#39
আমি কেপে উঠলাম। ঠোটে আদরের ছোয়া দিলাম। ওর ঘুম ছুটে গেল। ও দুপায়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমরা দুজন কামনার গভীরে প্রবেশ করতে চাইলাম। ও আমাকে আদরে আদরে ক্ষত বিক্ষত করতে লাগল। প্রেমের আবেগে ও আমাকে ওর সর্বস্ব দিতে চাইল। ওর নরম হাত দুটো আমার দুচোয়াল ধরে ঠোট চুষতে লাগল। আমি জ্বলে যেতে লাগলাম। নোনতা স্বদে গাল ভরে গেল। ওর শরীরের মিষ্টি গন্ধে আমাকে আবিষ্ট করে তুলল। আমি বুঝতে পারলাম, ও কামনায় চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছাতে চাচ্ছে। আমি নিজেও চাচ্ছি। কিন্তু পারলাম না- আমার সত্যবোধ, সৎচরিত্রবোধ, পবিত্রতাবোধ, আমাকে দমন করে দিল। ওকে আমার বুকের মধ্যে চেপে ধরলাম, ও থর থর করে কাপতে লাগল।
প্রিয় পাঠক, আমার প্রিয়া সোনার দপদপে যৌন শিখায় আমি পুড়ে পুড়ে খাক হয়েছি। ক্ষত বিক্ষত হয়েছি। যন্ত্রনা চেপে ধরেছি। ওর আহবানকে অপমান করেছি।বাহুর বন্ধন কে ছিন্ন করেছি নিষ্টুর কসাইয়ের মত। ওর কষ্ট অনুভব করে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবুও আমার দুষ্ট প্রিয়া সোনাকে আমি নষ্ট করিনি। ওর পবিত্রতার মূলে আমি আঘাত করিনি। মোম শিখার গলনের মত আমি গলে গলে ভিজে গেছি।তবুও আমার সোনাকে আমি অক্ষত রেখেছি। ওর প্রেমকে আমি কলঙ্কিত করিনি। করতে পারিনা। আমার সোনা সুন্দরীর রানী, পাবিত্রতার দিক থেকে ওকে ছোট করতে চাইনি।আমার সেই পবিত্র সোনা, কামনার সোনারানী, দুষ্ট মেয়ে এখন কোথায় তুমি…..ওগো সোনা আমার —-যেখানেই থাক ভাল থাক।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#40
সেদিন অনেক রাত পর্যন্ত আর আমাদের ঘুম হল না। আমরা আগামী দিন গুলোতে কি করব, কোথায় কোথায় ঘুরব, তাপল্যাং কি ভাবে যাব তাই নিয়ে ভাবতে লাগলামসিলেটে দেখার জায়গার বর্ণনা শুনে ও আনন্দিত হয়ে উঠল। চা বাগান, জাফলাং

মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের নাম শুনে ও ছোট সোনা পরীদের মত ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখতে লাগল। ঐ সময় ও যেন এ্রকটা খুশির গানও গুন গুন করে গাইতে শুরু করল। আমি বললাম, এক্ষুনিই বেরুবে নাকি? মিষ্টি করে হেসে বলল, জান, আমি যেন চা বাগান চোখে দেখতে পাচ্ছি। কি সবুজ! কি চমৎকার সবুজ দৃশ্য।ওহ কখন যে সকাল হবে? আমি বললাম সোনা, আগে ঠিক কর কোথায় প্রথমে বেড়াতে যাবে? চা বাগানের চমৎকার দৃশ্য দেখতে হলে শ্রীমঙ্গল যেতে হবে। শ্রীমঙ্গলকে চায়ের দেশ বলা হয়। আমি এমন ভাবে কথাটা বললাম, যাতে মনে হয় শ্রীমঙ্গল অনেক অনেকদূর, যাওয়াও কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। কারণ আমি আগে যেতে চেয়েছিলাম জাফলং। নীলা বলল, ঠিক আছে, তুমিই ঠিক কর প্রথমে কোথায় যাবে? আমি বললাম , আগে জাফলং চল, বই থেকে জেনেছি, সিলেটের যত সৌন্দার্য আছে তার মধ্যে শ্রেষ্ট সৌন্দার্যময় স্থান হল জাফলং। তার পর মাধবকুন্ড জলপ্রপাত ।ও বলল ঠিক আছে, তুমি যেটা চাইবে সেটাই হবে। আমি হেসে বললাম, এই তো আমার সোনা ভাল বুঝেছে। একটু আদর করতে গেলে নীলা বলল, থাক প্লিজ, এখন আর না। বড্ড ঘুম আসছে। একটু ঘুমাব।আমার সোনারানী সেদিন রাত প্রায় দুইটা বার মিনিটে ঘুমিয়ে পড়ল একটা নাইট গাউনপরে। আমি ঘুমাতে পারলাম না। ঘুমান্ত সোনারানীর দিকে তাকিয়ে থাকলাম বহুসময়। সাংঘাতিক রূপবতি নীলা নাইট গাউন পরে আরও সরল রূপবতীতে পরিণত হয়েছে।মাথায় একরাশ কালচুল বালিশের উপর ছড়ানো। বাম দিকে কাত হয়ে শুয়েছে। পা ভাজ করা। দুটো বালিশই মাথায় দিয়েছে। আমি কিসে মাথা রাখব তা ভাবেনি আমার সোনা।ওর অপুর্ব সুন্দর মুখ খানা মুহুর্তেই আমার কাছে দুঃখী মনে হলো। আমি আস্তে আস্তে নীলার মাথার কাছে বসলাম, ওর চোখে মুখে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম।ভাবতে লাগলাম, এই তো সেই মেয়ে যে তার আদর্শ বোধ থেকে বিচ্যুত হয়নি।ভালবাসার মুল্য দিতে সে সাগরে ঝাপ দিয়েছে। সে জানে না তার তীর কোথায়॥ সাথেসাথে নিজেকে সামলে নিলাম। উঠে এসে ঝুলান্ত বারান্দায় বেতের চেয়ার পেতে বসলাম। চার দিকে নিস্তব্দ। গভীর রাতে বৈদ্যুতিক আলোকেও অনেকটা ক্লান্ত মনেহল। এই সময় আমার মনটা একটু দুর্বল হয়ে গেল। বাবা-মা চাচীর কথা মনে পড়ল। আর ভাবতে পারলাম না। প্রায় সাড়ে তিনটার দিকে বিছানায় এসে ঘুমিয়ে পড়লাম॥
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)