10-08-2021, 07:18 PM
দেখার অপেক্ষায় যে জিষ্ণুর কেমন ভূমিকা থাকে শিবার পাশে
Romance এক ফালি রোদ আর তার নাম আশা by nandanadas1975
|
10-08-2021, 07:18 PM
দেখার অপেক্ষায় যে জিষ্ণুর কেমন ভূমিকা থাকে শিবার পাশে
10-08-2021, 09:00 PM
(10-08-2021, 04:22 PM)ddey333 Wrote: এই ধরণের গল্পের একটা পূর্ব-পরিকল্পিত প্লট বানানো হয় , যেটা শুধু মূল লেখক বা লেখিকার মনের ভেতরেই থাকে ...Thik bolchen......but don't think ato din por uni asben r likhben again......dekhun na satta golpo ta r ki hal.....jini post korchilen onar kache puro ta thaka satteo post korchen na......eta o khub bhalo lekha ekta
11-08-2021, 05:51 PM
আড়াই বছর আর শিনা সাক্ষাৎ করে নি জিষ্ণুর সাথে। জিষ্ণু কে আর দেখতেও পায় না ওদের পাড়ায়। কিন্তু ও জানে যে জিষ্ণু ওদের বাড়িতে চলে গেছে। সেটা গিয়ে সে দেখেও এসেছে। ওর বাবা মনে হয় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গেছিলেন। শিনা নিজেকে তৈরি করেছে। মাস্টার্স কমপ্লিট করে যতদিন না চাকরি পেয়েছে বাড়ি থেকে বেরয় ও নি। যেদিন চাকরি পেয়েছিল সেইদিন ওর মা কে বলেছিল জিষ্ণুর কথা। ওর মা তো শুনেই হাউমাউ করে কেঁদে অস্থির। কিন্তু কেন জানিনা বাবা কিছু বলেন নি। আসতে করে মাথায় হাত রেখে শিনা কে সাপোর্ট ই করেছিল।
সেদিন রাতে ওই নয়টার দিকে জিষ্ণু প্রায় আধপাগল বাবাকে বিছানায় শুইয়ে ঘুম পাড়িয়ে বসে ছিল ঘরের চেয়ার টি তে। ঠিক এই চেয়ারের নিচেই ওর মায়ের মৃতদেহ টা পড়েছিল রক্ত মাখা অবস্থায়। দাদা পাগলের মতন দৌড়ে এসে মা কে মৃত দেখে সেই যে দৌড়ে বেড়িয়ে গেল... উফফ আর ভাবতে পারছে না জিষ্ণু। ডুকরে ডুকরে কান্না যেন ফেটে বেড়িয়ে আসবে গলা থেকে। ঠিক সেই সময়ে দরজায় কড়া নাড়ানোর শব্দ হতেই বিরক্ত হয়ে উঠে লাইট টা জ্বেলে দরজা খুলতেই দেখে শিনা দাঁড়িয়ে। শিনা কে দেখে জিষ্ণু অবাক হয় নি ,হয়েছিল শকড। প্রায় চিৎকার করে বলে ফেলেছিল - একী ইইইই তুমি এখানে??????? - ভিতরে আসতে বলবে না”? জিষ্ণু ঘাবড়ে গিয়ে বলল - ও হ্যাঁ এস” শিনা ঘরে ঢুকে দরজা টা বন্ধ করতে বলেছিল। জিষ্ণু সত্যি আবার ও ঘাবড়ে গেল। একী রে বাবা যাবে না নাকি আজকে ফেরত প্যাভেলিওন এ? - সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত খুব , একটু চা পাওয়া যাবে? না না তুমি না আমি করব চা। কোথায় রান্না ঘর”? জিষ্ণুর এখন ও ঘোর কাটে নি যেন। ও কেমন ক্যাবলার মতন তাকিয়ে হাত বাড়িতে দেখিয়ে দিয়েছিল কোথায় রান্না ঘর টা। চা করে নিয়ে এসে জিষ্ণু কেও এক কাপ দিয়ে শিনা বলল – দেখ সেদিনের পর থেকে আমি তোমাকে একদিনের জন্যেও জ্বালাতন করিনি। করেছি বল?” জিষ্ণু আবার ও ক্যাবলার মতন ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানাল। শিনা বলে চলে – “ কেন জ্বালাতন করিনি? কারন আমি তোমাকে তখন বললেও তুমি বিশ্বাস করতে না যে তোমাকে আমি কত টা ভালবাসি। তাই আমি এই আড়াই বছরে নিজেকে তৈরি করেছি। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। আজকে প্রথম মাইনে ও পেয়েছি। আর আমি সব ছেড়ে তোমার কাছে চলে এসেছি” কথা গুলো এক নিঃশ্বাসে বলে শিনা চুপ করে গেল। জিষ্ণু চেয়ার এ বসে চা খাচ্ছিল। শিনার কথা গুলো শুনে এবারে ওর মোটেই বাচ্চা মেয়ের কথার ফুলঝুরি মনে হয় নি। সেদিন ও মোটেই ভয় পায় নি যেদিন শিনা ওকে প্রথম বলেছিল। সেদিন ও জানত এটা শিনার পাগলামি। কিন্তু আজকে ভয় পেল। ও বুঝে গেছে যে আজকে যেটা ও করছে সেটা পাগলামি নয়। আর জিষ্ণু এটাও বুঝে গেছে এই ভালবাসা কে উপেক্ষা করার সাধ্যি ওর নেই।
11-08-2021, 05:52 PM
কিন্তু আবার সেই ভয়, কি খাওয়াবে কি ভাবে একটা ভাল জীবন দেবে এই মেয়েটাকে। কারন এটা ও খুব সত্যি যে এই মেয়েটাকেও ততোধিক ভাল জিষ্ণু ও বাসে। আর শিনা সেটা ভাল করেই জানে। শিনা জানে ভালবাসার মানুষের সুখের জন্য তাকেই ছেড়ে দেওয়া, পাগলের মতন ভাল না বাসতে পারলে হয় না। জিষ্ণু কিছু না বলেই উঠে গেছিল জানালার ধারে। দাঁড়িয়েছিলো চুপ করে। আসলে ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু টা বিহ্বল ও হয়ে গেছিল ও। কিন্তু বিহ্বলতা মিটে গেছিল যখন শিনা পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরেছিল জিষ্ণু কে আর পাগলের মতন চুমু খাচ্ছিল জিষ্ণুর ঘেমো পিঠ টা কে।
11-08-2021, 05:52 PM
কথায় আছে না যে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে! সেটা বোধহয় শত প্রতি শত সত্যি কথা। না হলে শিবা এই জায়গায় এসেও জড়িয়ে পড়বে কেন সেই এক ই ব্যাপারে। আসলে দোষ টা শিবার না। দোষ টা ভগবানের। মুম্বাই শহরে কম করে হাজার পাঁচেক রেস্টুরেন্ট আছে আর তাতে আছে হাজার তিরিশ কুক। তার মধ্যে শিবাই বা কেন থাকবে? হি হি মাঝে মাঝে ভাবি কেউ কেউ অদ্ভুত রকমের কপাল নিয়ে আসে। কিম্বা অদ্ভুত রকমের মানসিকতা। এই পুলিশ অফিসার টা রোজ ই আসে এখানে খেতে। দুপুরের খাবার টা এখানেই খায়। আর সেটা শিবার জন্যেই খায়। যবে থেকে শিবা এই রেস্টুরেন্ট এ ননভেজ এর দায়িত্ব টা নিয়েছে, তবে থেকে ননভেজ এর কাস্টমার বেড়ে গেছে উসমান চাচার। আর ওই পুলিশ টা ও এখানেই খায় দুপুরে। মাঝে মাঝে ছেলে মেয়ে বউ কে নিয়ে আসে রাতে খেতে। আর শিবার ও ভাল লাগে এই রকম ভাল কাস্টমার কে আর ও ভাল করে রেঁধে খাওয়াতে। ভদ্রলোকের নাম মঙ্গেশ হাল্বে। ওনার মেয়েটি একদম পাপির বয়সী। আর অমনি চঞ্চল। উসমান চাচা মঙ্গেশের কথায় শিবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। সেই থেকে ভালই পরিচয় আর কথাবার্তা ও হয় প্রায় ই। মোদ্দা কথা শিবার বেশ ভাল লেগেছে পুলিশ টা কে। ও দেখে এসেছে পুলিশ মানেই বিনা পয়সায় খাবার চিন্তা। কিন্তু এই লোকটি আলাদা। একাই খেয়ে যাক বা ফ্যামিলি নিয়ে আসুক ঠিক ততটাই পেমেন্ট করে যতটা উসমান চাচা বিল করেন। তবে এমন কাস্টমার তো পাওয়া যায় না খুব বেশি তাই উসমান চাচা অনেক কম ই নেন। যাই হোক এই কথা গুলো বলা উদ্দেশ্য নয় আমার। যেটা বলার কথা পুলিশ টা একজন সৎ মানুষ। আর যেহেতু সৎ তাই তাদের জীবন অনেক টা ই অনিশ্চয়তায় মোড়া।তাই শিবার একটা সফট কর্নার হয়ে গেছিল পুলিশ টার ওপরে। আর সেটা হয়ত পুলিশ আর তার সাথে সৎ হবার অসাধারন কম্বিনেশন এর জন্যই। আজকে শিবা একটু তাড়াতাড়ি চলে যাবে। সকালে ম্যাম বারাবার বলে দিয়েছেন যে আজকে ফিরতেই হবে তাড়াতাড়ি।উসমান চাচা কে বলতেই চাচা এক কথায় রাজি। শিবা ও হেঁসেল গুটিয়ে বেরিয়েই পড়েছিল। কিন্তু বেড়িয়ে এসেই বাইরে একটা দৃশ্য দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। দেখল একজন মহিলার চুলের মুঠি ধরে একটা অল্প বয়সী ছেলে রাস্তার মাঝে নিয়ে আসছে। আর রাস্তার ওদিকে দুটো ছেলে সেই পুলিশ টার মাথায় একটা পিস্তল রেখে ধরে রয়েছে। উসমান চাচা ভিতর থেকে বাইরে এসে দেখেই পরিস্থিতি আঁচ করে ভিতরে ঢুকে ফোন করে পাড়ার ছেলেদের ডাকার চেষ্টায় ভিতরে যাবার চেষ্টা করতেই আরেক টা ছেলে কোথা থেকে এসে চাচার গলায় একটা বড় ছুরি ধরে সোজা সাপটা ভাবে বলল – এ বুডঢে, হামে আপনা কাম কারনে দে, কাম খতম হনে কে বাদ জিসকো চাহে বুলা লেনা, উস পোলিশ ওয়ালে আজ মরনা হি হ্যায়। সালে নে বহত তাং কিয়া আপনে কো”। চাচা কিছু করতে না পেরে চুপ মেরে গেল যেন। ওদিকে বাচ্চা মেয়েটা ছুটে এসে সোজা শিবার হাঁটু জড়িয়ে ধরল। শিবা তাকিয়ে দেখল মেয়েটির চোখে জল। যেন মিনতি করছে কাকু বাবাকে আর মা কে বাঁচাও।
11-08-2021, 06:03 PM
Gr8....golpo ta besh bhalo suru tei bolechilam......sotta r mato ekta intence romantic drama etao
11-08-2021, 08:02 PM
বাহ্, মনে হচ্ছে ফিল্মি হিরো স্টাইলে শিবার আগমন ঘটবে এবার ঘটনাস্থলে
11-08-2021, 08:32 PM
Dada apni the end of restless sleep story tar baki tuku post korun plz.....pinu da jakhon anek din aschen na tai bollam.....ota khub bhalo ekta
12-08-2021, 09:13 AM
12-08-2021, 11:29 AM
(12-08-2021, 09:13 AM)ddey333 Wrote: Yes , I also think that I should do that now ..... পিনুদার অনুমতির অপেক্ষায় ছিলাম !!! জাস্ট এক্ষুনি পেলাম পেলাম ওনার কাছ থেকে .... " The End of Restless Sleep" এর বাকিটা দেওয়া শুরু করছি ইংলিশ ফোরামে .... ইচ্ছুক পাঠকেরা পড়তে পারেন ওখানে ... " সুপ্তির সন্ধানে " গল্পটার অরিজিনাল ইংলিশ ভার্সন ....
12-08-2021, 12:11 PM
(12-08-2021, 11:29 AM)ddey333 Wrote: পিনুদার অনুমতির অপেক্ষায় ছিলাম !!! আছেন তো তিনি ভালো? শুধুমাত্র একবার এসে সাইট থেকে ঘুরে গেলেও পারতেন তিনি, তাকে কোনো গল্পের আপডেট দিতে হবেনা, শুধু একবার দেখা দিলেই হত..........
12-08-2021, 05:23 PM
শিবা প্রতিজ্ঞা বদ্ধ ছিল যে কোনরকম ঝামেলায় জড়াবে না কিন্তু আজ যদি কিছু না করে আবার একটা শিবা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে। আর কে বলতে পারে শিবা না হয়ে হয়ত মহেশ তৈরি হল। এদিকে বাচ্চা মেয়েটি অনবরত শিবার প্যান্ট টা টানতে থাকল। শিবা একবার দেখেনিল পরিস্থিতি টা। পুলিশ টা কে দুটো হুমদো চেহারার লোক ধরে আছে।পুলিশ টাকে হাঁটু মুড়ে বসতে বাধ্য করেছে লোক দুটো। ওদের একজনের হাতে রিভলবার। আর একজনের হাতে একটা হকিস্টিক। মেয়েটির মা কে যে ছেলেটা চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে শ্লীলতা হানি করছে সে নিরস্ত্র।হয়ত পকেটে কিছু থাকলেও থাকতে পারে। উসমান চাচার কাছে যে আছে সে হাতে একটা বড় ভোজালি নিয়ে আছে। ও টার্গেট নিল যার হাতে রিভলবার আছে তাকে। ততক্ষনে লোক জড়ো হতে শুরু করেছে চারিদিকে। ও বাচ্চা মেয়েটি কে ওর দাদার কাছে দিয়ে এগিয়ে গেল যেন কিছুই হয় নি। রাস্তায় যেখানে মেয়েটির মা কে জড়িয়ে ধরে ছেলেটি চেষ্টা করছে মেয়েটির মায়ের ওড়না খুলে ফেলার, সেটা কে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেল সামনে বেশ দ্রুত গতি তে। উসমান চাচা দেখছে শিবা কে সামনে বেশ দ্রুত গতি তে এগিয়ে যেতে। চাচা বুঝতে পেরেছে যে কিছু একটা করবেই শিবা। কারন মুস্তাফার কাছে শিবার ব্যাপারে শুনেছে আগেই। চাচা নিজের বাম হাত টা পিছনে বাড়িয়ে টেবিল এর উপরে রাখা কিছু একটা ভারি জিনিস হাতে নেবার চেষ্টায় ছিল। পেয়েও গেল সুপুরি গুঁড়ো করার মাঝারী হামান দিস্তা টা। কিন্তু চাচা আক্রমন করতে পারছে না সামনের উজবুক টা কে। কারন পিস্তল ধারী তখন ও হাতে পিস্তল ধরে আছে। যতক্ষণ ওটাকে শোয়ান যাবে কিচ্ছু লাভ নেই। গুলি চালিয়ে দিতে পারে দুম করে। মারামারি চাচাও করেছেন বয়েস কালে। এমনি এমনি আজকে এত বড় জায়গায় পৌঁছয় নি চাচা। ততক্ষনে শিবা অনেক টা কাছে পৌঁছে গেছে যেখানটায় পুলিশ টা কে হাঁটু মুড়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ওই লোক দুটো ধরে রেখেছিল।শিবা কে এগিয়ে আসতে দেখেই ওই লোকদুটোর মধ্যে একটা হালচাল শুরু হয়ে গেল। শিবা এতই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল যে লোক দুটো একটু বিপাকেই পড়ল মনে হচ্ছে। আর শিবা এটাই চাইছিল। শিবা চাইছিল পিস্তল ধারী এগিয়ে আসুক সামনে। আর হল ও সেটাই। কারন এটা মনস্তাত্ত্বিক খেলা একটা। প্রথমত ওরা ভাবেও নি যে এই পরিস্থিতি তে কেউ এগিয়ে আসবে ঝামেলা করার জন্য। আর দ্বিতীয়ত ঝামেলায় এলে সব থেকে সোজা উপায় হল গুলি চালান। সেই ভুল টাই করল পিস্তল ধারী। যদি অন্য লোকটা এগিয়ে আসত শিবা কিছু টা হলেও ভয়ে থাকত যে গুলি চললেও চলতে পারে। কিন্তু যখন পিস্তল ধারী এগিয়ে এলো শিবা বুঝে গেল এই গুন্ডা গুলোর লেভেল। যত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল, পিস্তল ধারী পুলিশের মাথা থেকে পিস্তল সরিয়ে শিবার দিকে শিবার দিকে তাক করতে যেতেই, শিবা নিজেকে আর ও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে লোকটার একদম সামনে নিজেকে দাঁড় করিয়ে দিল। তখন ও লোকটা পিস্তল টা শিবার সামনে আনতে পারে নি। শিবা সামান্য সুযোগ ও দিল না। যে হাতে পিস্তল ছিল সেই হাত টা নিজের ডান হাতে ধরে নিজের শরীর টা ঢুকিয়ে নিল সেই হাতের তলায়। পিস্তল ধরা হাত টার কবজি টা ধরে নিজেকে লোকটার শরীরের কাছে নিয়ে গিয়ে কনুই দিয়ে মারল পেট আর বুকের মাঝখানে।“ঊপ” করে একটা আওয়াজ হল। হুমদো টা আনকোরা বলেই শিবা কে সুযোগ টা দিল। এই সুযোগ শিবা পেলে প্রথমের নক আউট করে দেবে প্রতিপক্ষ কে কোন ঘুষি না মেরেই। লোকটা “ আই” বলে বসতে যেতেই শিবা লোকটার ভার টা নিজের পিঠে নিয়ে, পিস্তল ধরা হাত টা কে কব্জির কাছে ধরে, ওই হাতের কনুই টা নিজের কাঁধে রেখে নিচের দিকে ঝটকা দিতেই “করাক” করে একটা আওয়াজ পেল। হাত টা নেতিয়ে পড়ল শিবার কাঁধে। শিবা লোকটা কে ছেড়ে দিতেই ভয়ংকর যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে অন্য হাত দিয়ে ভাঙ্গা হাত টা ধরে বসে পড়ল।এতটাই জোর দিয়েছিল শিবা যে, হাড় বেড়িয়ে গেছে ভাঙ্গা হাত টার ঠিক কনুই এর কাছে। পিস্তল টা ছিটকে পড়ল একটু দূরে। ততক্ষনে পুলিশ টা বুঝে গেছে ওকে একশন এ নামতে হবে। দরকার ছিল না শিবার কাছে। কিন্তু ওর চিন্তা চাচা কি করছে।তখন তিনটে ঘটনা একসাথে ঘটল। উসমান চাচা যখন ই দেখল পিস্তল মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে ঠিক তখন ই বা হাতে ধরা হামান দিস্তা দিয়ে মারল সামনের লোকটার মুখে। ছেলেটা অন্যমনস্ক ছিল। তাকিয়ে ছিল শিবার দিকে। খটাশ করে আওয়াজ টা হতেই ছেলেটা ভোজালি টা ফেলে মুখ চিপে বসে পড়ল। আর সাথে সাথেই আর একটা আঘাত ঠিক মুখেই করল চাচা। ছেলেটা শুয়ে পড়ল চাচার রেস্টুরেন্ট এর সামনে। আর এদিকে পিস্তল টা পরে যেতেই হাত থেকে হকিস্টিক ধারী লোকটা পুলিশ টা কে ছেড়ে শিবাকে মারতে এলো। কিন্তু পুলিশ টা দেখল লোকটা এগোতে পারল না আর। কারন শিবার বাম পা টা এত সুন্দর ভাবে প্রায় ১২০ ডিগ্রি হয়ে লোকটার মুখে বসে গেল যে লোকটা ধানুর মতন খানিক শুন্যে বিচরণ করে নীচে ধপাস করে পড়ল। আর উঠল না। মাঝে যে ছেলেটি পুলিশের স্ত্রীর ওড়না খুলে সালোয়ার টা ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টায় ছিল সে হঠাৎ করে আবিস্কার করল ওর সাথে আর কেউ নেই। রক্ত মাখা হামান দিস্তা নিয়ে চাচা এগিয়ে আসছে। শিবা দ্রুত এগিয়ে আসছে ওর দিকে আর পুলিশ অফিসার টা পিস্তল টা কুড়িয়ে নিয়ে অত্যন্ত দ্রুত এগিয়ে আসছে.............................................
12-08-2021, 06:42 PM
Gr8 suspence
13-08-2021, 11:00 AM
বাঙ্গালী * দের দুর্গাপূজা তে কিছু তো একটা আছেই। না হলে পূজা এখন দেরি মাস দেড়েক আর জিনিয়ার মন টা কেমন কেমন করছে, এটা হবে কেন? জন্ম থেকে এই ৩৬ টা বসন্ত দেখা জিনিয়ার একটা বছর ও পূজা তে কলকাতার বাইরে কাটে নি। নাই বা হল ও * । কিন্তু বাঙ্গালী তো বটে। আর দুর্গা পূজা বাঙ্গালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।সেই পুজার আগে নতুন জামা কাপড় কেনা। বাঙ্গালী বন্ধুরা নতুন জামা কাপড় পড়ত সেই দেখে বাবার কাছে বায়না করে নিজের জন্য ও কিনত জিনিয়া। নতুন ফ্রক পড়ে বন্ধু দের সাথে বেরত ঠাকুর প্রতিমা দেখতে। সকাল বেলায় ওদের পার্সি মহল্লায় শিউলি ফুল পড়ে থাকত অনেক। ফুল কুড়োতে আসত সব মেয়েরা। জিনিয়া ও তুলত ফুল ওদের সাথে। যখন পূজা চলত ও নিজেই ফুল তুলে ওদের পাশেই এক বাঙ্গালী বাড়ীতে দিতে যেত। খুব ভালবাসত ওদের বাড়ীর বুড়ি মা। ও শুনেছে যে * রা অন্য জাতের ছোঁয়া ফুল নেয় না। কিন্তু অবাক হয়েছিল যখন ওই ঠাকুমা আর তার ছেলে ওকে নিয়ে গেছিল বাড়ীর অন্দর মহলে। প্রতিমার সামনে দাঁড় করিয়ে বুঝিয়েছিল এটা কার প্রতিমা। কেনই বা পূজা করেন তারা এই প্রতিমার।ভক্তি তে নয়। ভালবাসায়, উঁচু চিন্তা ধারায় ও যেন কেঁপে গেছিল। তাই কলকাতা তার সব কেড়ে নিলেও মানুষ হিসাবে তাকে এই জায়গায় কলকাতাই এনেছে। সব থেকে অবাক হত যখন ও দেখত যে ওরা অপেক্ষা করত কখন জিনিয়া ফুলের ঝুরি হাতে যাবে ওদের বাড়ি। ও সত্যি খুব মিস করছে পুজার আগের এই কলকাতা কে। ও ২০০০ কিমি দূরে এক '. লোকালিটির মাঝে দাঁড়িয়ে ও যেন দেখতে পাচ্ছে আকাশে সেই সুর বাজছে।বাঙ্গালী রা বলে আগমনী। কেমন আনমনা হয়ে যায় মন টা জিনিয়ার। নিজের মনেও টের পায় সেই আগমনীর সুর বেজে উঠেছে।একটা ঠাণ্ডা বাতাস যেন ছুয়ে গেল ওর অনাবৃত সুগোল দুটো বাহু কে। শিরশিরিয়ে উঠল ও। নিজের হাত দিয়ে নিজেকেই জড়িয়ে ধরে আবৃত করতে গেল।– আআআআহ কি ব্যাথা” নিজেই বলে উঠল নিজেকে। হাত টা ঘুরিয়ে কাঁধের ঠিক নিচের অংশ টা দেখতে গিয়ে দেখল হাতের আঙ্গুল বসে গিয়ে হালকা কালশিরা। মনে পড়ে গেল কালকে রাতের কথা। লজ্জায় লাল হয়ে উঠল ও। ওর ফর্সা মুখ খানা যেন রক্তিম হয়ে উঠল। এ এক ভারি মজা হয়েছে। না ও আর না শিবা কেউ রাতে একে অপর থেকে জড়িয়ে না ধরে থাকতে পারে না। এ মা তার মানে এই নয় যে শিবা ওকে কিছু করেছে। অতো ভাল ছেলে শিবা নয়। ম্যাম ম্যাম করে পাগল ওরে দিল। কেন নাম ধরে ডাকতে কি হয়? শিবার ঘরে ঢুকে পর্দা টা খুলে দিল। বাইরের নরম আলো ঘরে ঢুকল। শিবার মুখ টা হালকা কুঁচকে গেল। সামান্যও আলো ও বরদাস্ত করতে পারে না। মেয়ে টাও হয়েছে এক ই রকম। চোখে একটু আলো পড়লেই মুখ টা জিনিয়ার বুকে গুঁজে শোবে। যাতে চোখে আলো না লাগে। হি হি, বাপ বেটি একদম এক ই রকম। শিবা উঠে বসল। ওর ভিতরে মনে হয় কোন অ্যালার্ম আছে। না হলে ঠিক পাঁচটায় ওর ঘুম কি করে ভাঙ্গে। জিনিয়া ওকে তুলে দিয়ে রান্না ঘরে গেল চা করতে। শিবা উঠে বাথরুম এ গেল ফ্রেশ হতে। শিবা বেড়িয়ে এসে জুতো টা পড়ছে চা খেয়ে বেরবে বলে দৌড়তে ঠিক সেই সময়ে কলিং বেল টা বাজল। দুজনেই দুজনের মুখের দিকে চেয়ে রইল অবাক হয়ে, ভাব খানা এমন যে এত সকালে আবার কে এলো। শিবা কে জুতো টা পড়তে বলে চায়ের কাপ টা শিবার সামনে টেবিল এ রেখে দরজা খুলেই দেখল একজন পুরুষ আর একজন মহিলা দাঁড়িয়ে। পিছনে উসমান চাচা। ওনারা নমস্কার করে শিবার ব্যাপারে জানতে চাইতেই শিবা উঠে এসে দেখল, পুলিশ টা আর তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছে। ও খুশী হয়ে ওদের কে ঘরে আসতে বলতেই ওরা ঢুকে এলো। মহিলা টি শিবার পায়ে ধরে ফেলে আরকি। জিনিয়া অবাক হয়ে গেল মহিলাটির এই রকম আচরনে। পিছনে তাকিয়ে দেখল উসমান চাচা মিটিমিটি হাসছেন।
13-08-2021, 11:01 AM
ঘরে ওদের সবার জন্য কফি করতে করতে জিনিয়ার বেশ গর্ব বোধ হচ্ছিল। কালকে রাতে শিবা যা করে এসেছে ওকে বলেনি। সেটার ব্যবস্থা করবে ও পরে, কিন্তু এতক্ষন যা শুনল তাতে শিবার ওপরে ওর শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। একটা মানুষের প্রান বাঁচানোই শুধু নয় একটা পরিবার কে ও রক্ষা করে এসেছে। মনের মধ্যে এই ব্যাপারে শিবার প্রানের ব্যাপারে অনেক অনেক ভয় ঢুকলেও ভেবে দেখল একদিন প্রানের মায়া তুচ্ছ করে জিনিয়া কে শিবা না বাঁচালে তো...... ভয় টা মনের মধ্যেই চেপে নিয়ে কফির কাপ গুলো নিয়ে বেড়িয়ে এলো ডাইনিং এ। সবাই কে দিয়ে নিয়ে বসল শিবার পাশে।
- সচ ভাবিজি, অগর শিবা নে কাল হামে নেহি বাচায়া হতা তো ক্যায়া হ জাতা পাতা নেহি। আপকে কে পতি নে তো হামারি পরিবার কো সব কুছ খোনে সে বাঁচা লিয়া” জিনিয়া কথা টা শুনেই শিবার দিকে তাকিয়ে দেখল। দেখল শিবা লজ্জায় মুখ নামিয়ে বসে আছে। জিনিয়া কে ভাবি বোলাতে আর কেউ খুশী হোক না হোক জিনিয়া সেই জায়গায় নিজেকে বসিয়েই ফেলেছে।
13-08-2021, 01:35 PM
khub sundar bhalo
13-08-2021, 07:58 PM
বেশ ভালোই চলছে
15-08-2021, 07:54 PM
আসলে দুর্বলতা মানুষের শরীরে থাকে না। থাকে মনের ভিতরে। শরীরে থাকলে মেয়েরা পারত না শত শত ভিমের গদার আঘাতের থেকেও বেশি যন্ত্রণার, প্রসব যন্ত্রণা নিজের শরীরে নিতে। আসলে আমার মনে হয় ভয় বা দুর্বলতা বলে কিছুই হয় না। আসলে মানুষ বা যেকোনো জীব বা জন্তু সেই ভয় বা দুর্বলতা টপকে নিজেকে সামনে নিয়ে যাওয়ার রসদ খুঁজে পায় না তাই ভয় পায় বা নিজেকে দুর্বল ভাবে। প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করা হবু মায়ের সব থেকে বড় রসদ তার পেট থেকে যে বেরবে তাকে চোখে একবার অন্তত দেখা। যাকে সে নয় মাস ধরে নিজের রক্ত দিয়ে বড় করল নিজের পেটের মধ্যে। নিজের খাবারের পুষ্টির অর্ধেক দিয়ে তার শরীরে রক্ত দিল। তাকে একবার ও দেখবে না? সেই বিশাল আকিঞ্চন ই সেই মা কে বাঁচিয়ে রাখে ওই অসম্ভব যন্ত্রণার হাত থেকে। জীবন যুদ্ধে প্রায় মৃত পিতামাতা নিজের সন্তানের আকাশ ছুঁয়ে ফেলা দেখবার জন্যই সব আঘাত, অপমান সয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে। সন্ধ্যে বেলায় বাইরের ইজি চেয়ার এ বসে মতিবাবু এই কথাই ভাবেন। নিজের ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্বপ্ন নিজের ছেলেরা পূরণ করছে এই স্বপ্ন কোনও বাবা মা দেখে না, এ আমি জানিনা। মতিবাবু ও তার ব্যতিক্রম নন। কি অদ্ভুত পরিহাস। সে বছর অলিম্পিক এ ভারতের কোন পদক ই আসে নি। কিন্তু মতিবাবু লড়লে একটা পদক নিশ্চিন্ত ছিল সেটা অলিম্পিক দলের প্রধান জানত। কিন্তু তাকেই দলবাজি করে সরিয়ে দিল। নিজের দুটো হাত কে মুঠো করে জড়ো করে মাথায় ঠেকিয়ে রেখে বসে রইলেন।তারপরে নিজের প্রাণপ্রিয় স্ত্রী কে হত্যা করে কার ই বা বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে? কিন্তু ওই যে বললাম, কিছু তো একটা আকিঞ্চন ছিলই যার জন্য মতিবাবু আজকে বেঁচে। সেটা হল শিবা আর জিষ্ণুর রিং এ নেমে মাস্তানি দেখা। শিবা মনে হয় তাকে কোনদিন ও ক্ষমা করতে পারবে না। অতো বড় মানুষটার চোখ থেকে জল গড়িয়ে গাল বেয়ে পড়তে লাগলো। হে ঠাকুর আমি কেন বেঁচে আছি? মানুষ টা এই কথাই ভাবতে লাগলো। এমন অবস্থা যে ছোট টা ভাল করে ট্রেনিং ও নিতে পারছে না।বাবা হয়ে একদিন একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটিয়ে পুরো পরিবার টা কে জলে ভাসিয়ে চলে গেছিলো। সেটা যে কত বড় কষ্টের মতিবাবু ছাড়া মনে হয় কেউ অনুধাবন ও করতে পারবে না। মতিবাবুর একটা মুহূর্তের ভুলে এত বড় সর্বনাশ ঘটে গেছিলো পুরো পরিবারে। ও ভেবেছিল জেল থেকে ছাড়া পেয়ে চলে যাবে কোথাও। কিন্তু বেড়িয়ে দেখে একটা লম্বা চওড়া হাটটা কাট্টা জোয়ান ছেলে দাঁড়িয়ে আছে ওর জন্য। প্রথমে ভেবেছিল এটাই হয়ত শিবা। কিন্তু ভুল টা ভাঙল যখন মনে পড়ল শিবা এত টা ফর্সা না। এটা জিষ্ণু। কিন্তু চোখ খুঁজে বেড়াচ্ছিল শিবা কে। যখন জিষ্ণু প্রনাম করল তখন বুকে জড়িয়ে ধরেছিল নিজের সন্তান কে। আর এই সন্তানের জন্যই চলে গেছে তার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী। ভাগ্যের কি অদ্ভুত পরিহাস। যাকে সব থেকে বেশি ভালবাসত সে একবার ও মনে হয় বাবার কথা ভেবেও দেখেনি। আর যার জন্য স্ত্রী মারা গেল, যার সামনে স্ত্রী কে হত্যা করেছিলেন মতিবাবু, সেই ছেলে তাকে এখন বুকে আগলে রেখে দিয়েছে। সেই ছেলের রিং এ ঢুকে মাস্তানি দেখবে না মতিবাবু? এই ইচ্ছা টাই যে তাকে বাঁচিয়ে রেখে দিয়েছে! আর সেই ছেলের জন্য কিছুই করতে পারছে না মতিবাবু। নাহ একবার পুরনো ডেরায় যেতেই হবে। চেনা পুরনো লোক পেয়ে যেতেই পারে।
15-08-2021, 07:55 PM
ওখানে একটা গ্রুপ ছিল যারা মানুষের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ধান্দা করত। ওদের সাথে যোগাযোগ করে যদি একটা কিডনি দিয়ে ছেলেটার ট্রেনিং এর স্পন্সর টা জোগাড় করতে পারে খুব ভাল হয়। কিছু তো করতে পারবে ছেলেটার জন্য। সংসার টা কে ভাসিয়ে দিয়ে যাবার সারা জীবনের যন্ত্রণা থেকে কিছু টা হলেও মুক্তি পাবে মতিবাবু। তারপরে বেঁচে না থাকলেও দুঃখ নেই ওনার।
ছোট টা কেঁদে উঠতেই মতিবাবু উঠে এলেন ভিতরে। কাঁপা হাতে বাচ্চা টা কে নিকে কোলে নিয়ে বুকে চেপে ধরলেন। অদ্ভুত ভাবে বাচ্চা টা কান্না থামিয়ে দিল। মুখ টা দেখে নিয়ে দেখলেন যেন অবিকল শিবার ছোট বেলার মুখ টা। গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল যেন। মনে পড়ে গেল সেদিনের শিবার ছুটে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবার দৃশ্য টা। চোখের জল বাগ মানল না। বাচ্চা টা কে কোলে নিয়ে বুকে চেপে ধরে কেঁদে উঠলেন নিজের ই অজান্তে। পিছন থেকে শিনা দেখল ছেলেকে কোলে নিয়ে শ্বশুর কাঁদছে আর কেঁপে কেঁপে উঠছে ওনার শরীর টা। সেদিন ছিল রবিবার। ওই দিনে মতিবাবু একটু হলেও মাতাল হতেন। ওই দিনেই নিজের কাহিনী আগে একশ বার শুনিয়েও পুনরার নতুন করে শোনাতেন বন্ধুদের মদ খেয়ে। লোকে আনন্দের বাৎসরিক করে। যেমন বিবাহ বার্ষিকী, জন্মদিন। কিন্তু উনি নিজের দুঃখের সাপ্তাহিকী করতেন ওই রবিবার এ। সকাল থেকেই চলত। মতিবাবুর সংসারে ছিলেন ওনার স্ত্রী নীলিমা, বড় ছেলে শিবা আর ছোট ছেলে জিষ্ণু। বড়ই সুখের সংসার। মতিবাবু সেই ভাবে কিছু কাজ করতেন না, কিন্তু দুই তিনটি কলেজ এ ফিজিক্যাল ট্রেনিং দিয়ে মোটামুটি রোজগার করতেন। নীলিমা দেবী একটি কলেজের শিক্ষক ছিলেন। শত শত ছেলে পিছনে থাকলেও একটি বদরাগী কিন্তু ভীষণ ভাল মনের একটা মানুষ কে নিজের জীবন সঙ্গী করতে দুবার ভাবেনি নীলিমা। বাড়ীর সাথে এক প্রকার ঝগড়া করেই বিয়ে করেছিলেন যে বছর অলিম্পিক থেকে রাজ নিতির শিকার হয়ে ফিরেছিল মতিবাবু। তারপরে কাটিয়ে দিয়েছিলেন দুজনায় হেসে খেলে প্রায় ১৪ বছর। সমস্যা যেমন সব স্বামী স্ত্রীর মধ্যেই থাকে ঠিক তেমনি ওদের মধ্যেও ছিল। না থাকা টাই অস্বাভাবিক। আর ঝামেলা বেশি হত যেদিন মদ খেয়ে আসতেন মতিবাবু। খুব ই বালখিল্য ঝামেলা। নীলিমা মদ খাওয়া সহ্য করতে না পারলেও স্বামীর জন্য ওই দিন ছাড় দিয়েছিলেন। এবং সেটা খুশী মনেই। কিন্তু ওই যত শিক্ষিত যত ভাল মেয়েই হোক না কেন, স্বামীর সাথে একটু ঝগড়া করতে না পারলে খাবার ঠিক হজম হয় না। খুব ভাল করে জানলেও বার বার স্বামীর মুখ দিয়ে স্বিকার করিইয়ে নিতে পছন্দ করে যে স্বামী তাকে কতটা ভালবাসে। বউ মুখ ঝামটা দিচ্ছে আর স্বামী আহা কি সুন্দর বউ আমার ভেবে চুপ করে আছে এটা সব ই বউ দেখতে ভালবাসে। যাই হোক সেদিন মদ খেতে খেতে মতি উঠে এসেছিল একবার ঘর থেকে একটু বীট নুন নিতে। মতি সেই নিয়ে আজকেও আফসোস করে পাগলের মতন। ইসস যদি না আসতাম সেদিন বাড়িতে তবে এত বড় ঘটনা টা ঘটতো না। আক্ষরিক ভাবেই হাত কামড়ায় মতিবাবু। সেদিন এসে বাড়িতে ঢুকেই দেখল বাড়িতে বসে আছে নীলিমার এক পুরনো বন্ধু। তার নাম ছিল গোপেশ তরফদার। নীলিমাই বলেছিল মতি কে যে তরফদার নাকি তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এবং তাই নয় নীলিমা যখন মতি কে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল তখন গোপেশ অনেক চেষ্টা করেছিল নীলিমা কে আটকাতে। সেই সব গল্প সব স্বামী স্ত্রীর মধ্যেই হয় আর নীলিমাও বলেছিল সেই সব কথা মতি কে। কয়েকদিন ধরে গোপেশ নীলিমার সাথে কলেজ এ দেখা করতে আসে সেটা মতি দেখেছে। নীলিমা অবশ্য বলেছিল মতি কে যে ওর ছোট বোনের ছেলে অসময়ে কলকাতায় এসে পড়েছে কোথাও এডমিশন পাচ্ছে না যদি নীলিমা একটা ব্যবস্থা করে দেয় নীলিমার কলেজ এ। মতি প্রানের থেকেও বেশি ভালবাসে নীলিমা কে। স্বপ্নেও ভাবে নি যে নীলিমার তরফ থেকে কিছু আছে।কিন্তু আজকে ঘরে ঢুকেই গোপেশ কে দেখে মদের ঘোরে ছিল কিনা বলে জানিনা, দুম করে সন্দেহ টা মাথায় চেপে বসল মতির। “ আচ্ছা নিলি তো জানে যে আজকে ও মদ খেতে যায়, সেই সুযোগে গোপেশ কে ডাকে নি তো” “ এটা কি আজকেই হল নাকি আগেও হয়েছে? ও তো গত সাত বছর মদ খায় এই দিনেই”।
15-08-2021, 08:29 PM
এক নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে মনে হচ্ছে ঘটনা
|
« Next Oldest | Next Newest »
|