Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
এক ফালি রোদ আর তার নাম আশা
উফফ কি রোদ!!! জিনিয়া কোনরকমে মাথায় নিজের ব্যাগ টা ঢাকা দিয়ে রাস্তা টা ছুটে পেরিয়ে গেল।ওপারে পৌঁছতেইই দেখল রাস্তার পাশে যে নতুন খাবারের দোকান টা হয়েছে সেখানে শিবা মাথায় টুপি পরে ওভেন এর সামনে। জাক শেষে একটা কাজ পেল ও। স্টুডেন্ট ছিল শিবা জিনিয়ার। স্কুলেও আর প্রাইভেট টিউশানি ও পড়ত ওর কাছে। বদমাইশের চূড়ান্ত ছিল।ওর একটা ভাই ও ছিল। যতদূর মনে পড়ছে। জিনিয়া তা করতে করতে এগিয়ে গেল আর একটু। বড্ড খিদেও পেয়েছে। বসে পড়ল দকানের সামনে রাখা চেয়ার গুলর একটা তে।
- শিবা অ্যায়ই শিবা... শিবা বলে ছেলেটি তাকিয়ে দেখল সামনে। হাসল যেন একটু। জিনিয়া মনে মনে ভাবল, এখন ও সেই রকম ই আছে, হাসলেও বোঝা যায় না আর কাঁদলেও না। উফফ কি মার টাই না মারত ওকে জিনিয়া। আর তেমনি দুরন্ত ছিল। ছেলেটা হঠাৎ করে একদিন আসা বন্ধ করে দিল।
- ম্যাম বলুন!! কেমন আছেন??? ... উম্ম গলার স্বর টা কি ভারিক্কি হয়েছে রে বাবা। জিনিয়ার চিন্তায় ছেদ পরতেই সামনে তাকিয়ে লম্বা তার সাথে মানানসই চেহারার একটা ছেলেকে দেখল। ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি। শক্ত চোয়াল। ডান হাতের কবজি তে একটা ডমরুর উল্কি। গলায় আড়াআড়ি ভাবে ত্রিশূলের উল্কি। - বাবা একি? এ তো পুরো ম্যান হয়ে গেছিস রে তুই শিবা?? শিবা যেন লজ্জা পেল একটু। কিন্তু বোঝা বিশেষ গেল না। ঠোঁটের কোনে চিলতে হাসি টা উঠেই আবার মিলিয়ে গেল।মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল শিবা। জিনিয়া বলল- ভাল আছি রে? কি করছিস এখন?
- এখানেই কাজ করছি। আবার সেই ছোট্ট উত্তর। যখন পড়ত জিনিয়ার কাছে তখন উত্তর তো দিতই না আর পরে পরে মার খেত, জাক এখন উত্তর টা অল্প হলেও দেয়। - রান্না শিখলি কোথায়? এই উত্তর টা জিনিয়া আশা করে নি। পেল ও না। - কি নেবেন আপনি ম্যাম?
- তুই সব থেকে যেটা ভাল বানাস সেইটা নিয়ে আয়... জিনিয়া এবারেও উত্তর আশা করে নি। শিবা চলে যেতেই ওর পিছনে তাকিয়ে দেখল ঘাড়েও একটা উল্কি। ছোট ছোট করে ছাঁটা চুল প্রায় শাঁস বেড়িয়ে যাওয়া মাথার ঠিক নিচে ঘাড়ের একটু ওপরে একটা সাপের উল্কি দেখতে পেল জিনিয়া। আবার পুরনো ব্যাপার গুলো মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। প্রায় আঠেরো বছর দেখতে পায় নি ছেলেটাকে ও।কিন্তু মুখ টা সেই রকম ই নিষ্পাপ আছে। তাই এক ঝলক দেখেই চিনতে অসুবিধা হয় নি জিনিয়ার। শিবা পড়তে আসা বন্ধ করার পরে গেছিল ওদের বাড়িতে জিনিয়া। এই জন্য নয় যে একটা স্টুডেন্ট চলে গেল। এই জন্য যে যেদিন শিবা কে প্রচণ্ড মেরেছিল তার পর দিন থেকে আর পড়তে আসে নি।
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
চিন্তায় ছিল জিনিয়া। ওদের বাড়ি চিনত। কলকাতার এই পার্সি পাড়ার সেশের দিকে কয়েক ঘর * থাকত। সেই খানেই ছিল শিবার বাড়ি। জদিও পার্সি দেড় সাথে থাকতে থাকতে ওদের আদব কায়দা প্রায় পার্সিদের মতই হয়ে গেছিল। খুব লেখাপড়া না জানা ছেলে মেয়েরাও পার্সিদের দৌলতে ইংরাজি টা বুঝতে আর বলতে পারত। এমন কি উৎসবেও সামিল হত * রা। জদিও * দের পুজ তে কোন আপত্তি ছিল না প্রায় চারশো বছরের পুরনো এই পার্সি দেড়। জিনিয়া শিবা দেড় বাড়ি গিয়ে দেখেছিল বাড়ি খোলা। কেউ নেই। ভিতরে ঢুকতে গিয়ে এক মহিলা পাশের বাড়ি থেকে এসে বলেছিল “ যাবেন না মেমসাহেব, হপ্তা খানেক আগে ওই বাড়িতে খুন হয়েছে”। চমকে উঠে পিছিয়ে এসেছিল জিনিয়া। খোঁজ খবরে জানতে পেরেছিল শিবার বাবা শিবার মা কে খুন করে পুলিশের হেপাজত এ আর শিবা বাড়ি থেকে পালিয়েছে। শিবার ভাই জিষ্ণু কে মামার বাড়ির লোকেরা নিয়ে চলে গেছে। বাস তার পর থেকে আর কোন যোগাযোগ নেই। হঠাৎ করে টেবিলে রাখার আওয়াজ পেতেই দেখল সামনে খাবার টা রাখা।উম্মম্মম কি সুন্দর একটা গন্ধ।
- কি রে এটা?
- খান, চিকেন কষা আর লেবু দিয়ে বানান রুটি... বলে চলে গেল শিবা ওভেন এর ধারে। উফফ কি যে টেস্ট হয়েছিল। কি জানি খিদে পেয়েছিল কিনা খুব সেই জন্য এতো ভাল খেতে লাগলো। জীবনে দুটো রুটি খেয়ে সেশ করতে পারে নি জিনিয়া, আজকে গোগ্রাসে খেয়ে ফেলল। খেয়ে দেয়ে মুখ ধুয়ে দাম দিতে এগিয়ে গিয়ে দেখল ডেভিড আঙ্কেল এর দোকান এটা। তাকিয়ে দেখল শিবা আবার কাজে মত্ত হয়ে পড়েছে।
- আঙ্কেল কত দেব? ডেভিড আঙ্কেল হেসে আঙ্গুলের ইশারায় ৯০ দেখিয়ে দিল। ডেভিড আঙ্কেল বোবা কথা বলতে পারে না। জিনিয়া দাম মিটিয়ে “ শিবা চললাম রে” বলে বেড়িয়ে এলো অখান থেকে চলল সোজা এন জি ও র দিকে।
The following 12 users Like ddey333's post:12 users Like ddey333's post
• a-man, anirban080, asmit003, bad_boy, Boti babu, h1996, Kallol, Lajuklata, raja05, Rajibbro, S.K.P, Siraz
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,561 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
দেখি সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায়........
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
এই গল্পটা খুব জনপ্রিয় হয়েছিল Xossip এ ...
আমাদের মতো সাধারণ পাঠকদের কথা তো ছেড়েই দিলাম , মস্ত মস্ত বড়ো লেখকেরাও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন এটাকে
পিনুরাম , রৌনক , অভি ,বোরসেস , তুমি যে আমার .... এনারা সবাই ... আরো অনেকেই ....
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
শিবার জন্য মন টা ভারি হলেও এখন অনেক টা হাল্কা জিনি। তার নিজের জীবন ও তো কম নয়। বাবার ইচ্ছে তে এক পার্সি র সাথে বিয়ে হয়েছিল জিনিয়ার। কিন্তু বিয়ের পরে মাতাল বর কে নিয়ে কম ঝামেলা পোহায় নি জিনিয়া। বরের অত্যধিক মদ্য পান বিয়ের দশ বছরেই টাকে বিধবা করে দিল। কোন সন্তান উতপাদনের ক্ষমতাও ছিল না বরের। কিন্তু গোল টা বাধল তার পরে। দক্ষিন কলকাতার একটি পাড়ায় ও থাকত বর আর তার ফ্যামিলির সাথে। সেখানে একটি বড় রকমের গুন্ডা। মানে বেশ বড় রকমের গুন্ডা জিনিয়ার প্রেমে পড়ল। প্রেম বলা ভুল শরীরের প্রেমে পড়ল। তার ওপরে জিনিয়া বিধবা। নজর পড়তে দেরি হয় নি মহেশের জিনিয়ার ওপরে। ভাব্লেও জিনিয়ার শরীর ঘিনঘিন করে ওঠে। মহেশ ভয়ঙ্কর রকমের বাজে ছেলে। বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ছিল। কিন্তু রাজনীতির জন্য তাকে লড়তে দেওয়া হয় নি ন্যাশানাল লেভেল এ। এক্ষেত্রে সবাই হারিয়ে যায়, মহেশ উঠে এসেছিল নিজের শারীরিক ক্ষমতা আর ক্ষমতা লোভের দুর্লভ আখাঙ্খায়। অনেক খুন করে বছর চল্লিশেকের মহেশ আজকে এমন জায়গায় যেখানে পুলিশ ও কিচ্ছু বলতে সাহস করে না। জিনিয়াদের পাড়ায় নারি ;., হতেই থাকত। আর সেটা কে করত সবাই জানত। দু একবার কিছু সাহসি পুলিশের লাশ ও পাওয়া গেছে মরা গঙ্গার খালে। যাই হোক, জিনিয়া এই বিপদে নিজের ওপরে আস্থা না হারিয়ে, কলকাতার এই ঘিঞ্জি পার্সি পাড়ায় উঠে এসেছে একদিন রাতে কাউকে কিচ্ছু না বলে। জিনিয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকেরাও হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে। আর জিনিয়াও। একটু শান্তির নিঃশ্বাস সে চেয়েছে মাত্র। সে সুখের আশা করে না। কিন্তু শান্তি টা চায়। বর মারা জাবার পড়েই ও এই এন জি ও তে জয়েন করেছিল। টাই নিজের ব্যাপার টা ও নিজেই চালিয়ে নিতে পারে। আর এই পার্সি পাড়ায় মহেশ আসে না। কারন সাম্নের তিনটে বিশাল বস্তি পাড়া টা কে ঘিরে রেখেছে। বস্তি তে '.েরা একটু বেশি খাপ্পা মহেশ এর উপরে। হয়ত মহেশ কে ওরাও ভয় পায় কিন্তু এই পাড়ায় মহেশ কে দেখলে নিশ্চয়ই ওরাও চুপচাপ বসে থাকবে না। এই ছত্রিশ বছর বয়সে নিজেকে অন্যের কামনার পাত্রি ভাবতে ঘেন্নাই করে জিনিয়ার। জিনিয়া কিন্তু বেশ সুন্দরী। এক ঝলক দেখলে মেম বলেই ভুল হবে। গাড় বাদামি ঘন ঢেউ খেলান চুল পাছা অব্দি। নিচে টা সমান করে কাটা বাঙ্গালীদের মতই। স্লিম। লম্বা প্রায় পাঁচ ফুর ৪ ইঞ্চি। সুন্দর ঠোঁট। লাল টুকটুক করছে। লিপস্টিক না লাগিয়েও লাল ই থাকে। লম্বা গ্রীবা। মসৃণ ত্বক। কাজেই পুরুশের কামনার পাত্রি হিসাব এ জিনি বেশ ভাল। কিন্তু এই বয়সে সেটা খুব মানানসই নয়। জিনিয়ার বাবা রাজি থাকলেও ভাই রাজি হয় নি জিনিয়া কে ওদের বাড়ি তে রাখতে। বদলে ওর ভাই ওদের যে বিশাল মহল্লায় কম করে চল্লিশ ঘর পার্সি থাকে ঠিক তার পিছনেই বড় বিশাল নর্দমার ধারে একটা একতলা বাড়ি ওকে ঠিক করে দিয়েছিল। জিনিয়ার ও ভালই হয়েছিল। এক প্রকার লুকিয়েই থাকা মহেশের হাত থেকে। আর এখান থেকে এন জি ও টা কাছেই।
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
- বাবা ও বাবা আমাকে এই খেলনা টা বানিয়ে দাও না?
- হুম্ম সোনা দি দাঁড়া। তোর খাবার টা বানিয়ে নি মা?
- না না আগে খেলা বানিয়ে দাও তারপরে, প্লিস বাবা।
- আছছা আচ্ছা বেশ... গ্যাস টা বন্ধ করে মেয়ের কাছে এসে শিবা খেলা বানাতে লাগলো। হঠাৎ ঘরের সব নড়ে উঠতেই পাপি ( প্রাপ্তি, ভাল নাম শিবার মেয়ের) দৌড়ে এসে বাবার কোলে শুয়ে পড়ল ভয়ে। একদম একটা ছোট্ট ঘরের ঠিক দশ হাত দূর দিয়ে চক্র রেল টা পেরিয়ে যেতেই শিবা মেয়ের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলল- ভয় কি সোনা, আমি তো আছি। আর ওটা তো ট্রেন... পাপি তখন কেঁপে চলেছে। শিবা জানে ভয় টা একদিন কাটবেই। ওর ও ভীষণ ভয় করেছিল যেদিন ও সামান্য দুশ টাকার জন্য ফাইট এ নেমে ছিল রাস্তায়। পেটের খিদে বরদাস্ত করতে না পেরে ও আগিয়ে গেছিল ওই নিশ্চিত জম দুতের কাছে। মেয়ের মাথায় হাত বোলাতে লাগলো শিবা। কতই বা বয়েস তখন। ১৫ হবে। বাড়ি থেকে পালিয়ে একটা রেল গুদামে কাজ নিয়ে ছিল শিবা। পাঁচ বছর কাজ করেছিল লুকিয়ে। যাতে কেউ দেখতে না পায়। পেলেই কোন হোম এ দিয়ে দিত। কাজ করে রোজ রাতে ও চলে আস্ত পাঁচ মাথার মোড় থেকে একটু ভিতরে ঢুকে এসে একটা বিশাল পোড় বাড়ির অন্দর মহলে। কিছু লোকের আওয়াজ পেয়ে ঘুরতে ঘুরতেই চলে এসেছিল ও। এসে তাজ্জব বনে গেছিল। এত্ত লোক কি করছে। মাঝখানে খাঁচা করা বিশাল। আসতে আসতে লোকজন পেরিয়ে সামনে চলে এসেছিল একেবারে শিবা। দু এক জন ধাক্কা মেরে ফেলেও দিয়েছিল ওকে। কিন্তু বয়সের তুলনায় শিবা একটু লম্বা চওড়া ছিল। যার জন্য ওকে একদম বাচ্চা বলে ভুল করে নি কেউ। গা শিউরে উঠেছিল শিবার। এটা কি??? এ তো মৃত্যুর খেলা। দুজন পেশীবহুল মানুষ একে অপর কে এ কি ভাবে মারছে? যেখান টা খেলা হচ্ছে সেটা খাঁচা দিয়ে ঘেরা। একবার ঢুকে পড়লে আর বেরনর উপায় নেই। সবাই মুস্তাফা মুস্তাফা বলে চেঁচাচ্ছে আর একজন ছেলে অন্য ছেলে টা কে মেরেই চলেছে অনবরত। গলগল করে রক্ত বেরচ্ছে মার খেতে থাকা ছেলেটির নাক মুখ দিয়ে। মার খেতে থাকা ছেলেটি স্থির হয়ে গেলে খাঁচার মধ্যে থাকা আর একটি লোক গিয়ে ছাড়িয়ে দিল। নেশা লেগে গেছিল শিবার। রোজ যেতে থাকল। একদিন পরিচয় হল হাসান এর সাথে। ওর মতই একটি ছেলে হয়ত বয়সে কিছু টা বড় হবে।– কি গুরু এখানে কি মনে করে? অনেক দিন ধরেই তমাকে এখানে ঘুর ঘুর করতে দেখছি কাকা। পুলিশের ঘুঘু নউ তো চাঁদ?? একটা মস্তানি মারকা গলা শুনে পিছনে তাকিয়ে হাসান কে দেখে ভয় পেয়েছিল শিবা – আরে ভয় কেন চাঁদু? ভিতু তো তুমি নউ। এখানে ভিতু লোকেরা রোজ আসতে পারে না...... কি করে যে বন্ধু হয়ে গেছিল হাসানের সশিবা কে জানে? কিন্তু তারপর থেকে রোজ দুজনায় একসাথে বসে ফাইট দেখত। - ওই যে দেখছিস খাঁচা? ওটা কে বলে রিং। দুজন ফাইটার লড়ে, ততক্ষন যতক্ষণ না একজন হার মেনে নেয়। একে বলে স্ট্রীট ফাইটিং।পৃথিবীর সব থেকে বিপজ্জনক খেলা। ওই দেখ রেফারী। খেলা টা ওই চালায়”। শিবার মধ্যে কার যে লড়াকু ছেলে টা ছিল লড়াই গুলো কাছ থেকে দেখতে দেখতে মনে গেঁথে গেল.................................... শিবা ওই বয়সেই জেনে গেছিল জ সব জিনিস টা সে সুখ হোক বা দুঃখ কিছুই স্থায়ী হয় না চিরকাল। গুদামে কাজ টা গেল। কেউ বলে দিয়েছিল যে শিবার বয়েস ১৫ মাত্র। ও পালিয়ে এসেছিল লড়াই এর জায়গা তে। সেদিন ভোর বেলায় সবাই যখন চলে গেল ও শুয়ে পড়ল পেটে হাত টা টিপে ধরে। খিদেয় প্রান বেড়িয়ে যাচ্ছিল ওর। কিন্তু কিচ্ছু ছিল না ওর কাছে। - কি রে বাড়ি যাস নি? ধড়মড় করে উঠে বসে দেখল হাসান। ও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল হাসানের দিকে।
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,561 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
•
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
- কিরে বাড়ি যাসনি? এখানে থাকা ঠিক না। পুলিশে তুলে নিয়ে যেতে পারে” ... চোখ দিয়ে টপটপ করে দু ফোঁটা জল পড়েছিল সেদিন। এই জন্য নয় যে ওর কোথাও জাবার জায়গা নেই। এই জন্য যে ওকে সব থেকে ভাল বাস্ত বাড়িতে সেই মা আর নেই। - হুম্ম বুঝেছি। চল তোর এই বন্ধু তো আছে? বাস শিবার ঠিকানা হাসানের ছোট্ট এক চিলতে বারান্দায় হয়ে গেল। খাবার পয়সাও ছিল না। ওই লড়াই এর আসরে দালালি করে যা দু পয়সা হত কোন রকমে চলে যেত। কিন্তু শিবার লক্ষ্য ছিল লড়াই এর দিকে। কিন্তু এমন একদিন এলো যেদিন শিবার জিবনের মোড় টাই ঘুরে গেল উলটো দিকে। সেদিন প্রতিপক্ষ না আসার কারনে মুস্তাফা একাই রিঙে বিভিন্ন রকম কলা প্রদর্শন করছিল। সহসা একটা গুঞ্জন উঠল যে মুস্তাফার সামনে যত মিনিট থাকবে তত একশ টাকার নোট পাবে। কিছু অপেশাদার ছেলে গেল রিং এ কিন্তু খুব বেশি হলে এক দু মিনিট টিকতে পারল। কি মনে হতে শিবা ঢুকে পড়ল রিং এর ভিতরে। যখন লোহার শক্ত গেট টা বন্ধ হয়ে গেছে তখন হাসান দেখতে পেল টার প্রিয় বন্ধু রিঙ্গের ভিতরে ঢুকে পড়েছে।ও শিবার নাম ধরে জোরে জোরে ডাকতে ডাকতে খাঁচা টা যেন ভেঙ্গে শিবা বের করে আনবে এই ভাবে দু চোখে জল নিয়ে ঝাকাতে লাগলো। “ শিবা নাআআআআআআআআআআআআআআ”
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
শিবার যেন চমক ভাঙল। দরজায় টোকার আওয়াজ পেয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে দরজা টা খুলে দেখল মুস্তাফা। - এস মুস্তাফা দা, মুস্তাফা ঘরের ভিতরে ঢুকে মেঝেতে বসে পড়ল চুপ করে দুটো পা কে নিজের হাতের মধ্যে বের দিয়ে। - চা খাবে?
- নাহ। শিবা কি করছিস ভাই? আমার নিজের কেউ নেই তুই ছাড়া। এখানে কেন ভাই? আমি কি তোর কেউ নই?
- মুস্তাফা দা প্লিস ও কথা বল না। তুমি হাসান আর আমার পাপি ছাড়া আমার ও যে কেউ নেই” ততক্ষনে পাপি উঠে মুস্তাফার কোলে বসে পড়েছে। - কিন্তু আমি আর এ লাইন এ থাকতে চাই না।
- কেন? সামান্য ওই টাই তোর কারন ? যে জিষ্ণু ও লড়ছে?- মাথা মিছু করে রইল শিবা। “ শোন পরের মাসের শীতকালে দিল্লী তে এই ফাইটিং এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শিপ হবে। আমি চাই তুই অতে অংশ নে। লকে জানুক শিবা কি জিনিস!!
- কি হবে মুস্তাফা দা? থাক না।
- কি হবে মানে? নিজের না ভাবিস মেয়েতার কথা ভাব। ওর ভিতরে যে রোগ টা আছে সেটার কথা ও তো ভাববি।
- প্লিস মুস্তাফা দা। আমার মেয়ে কে আমি সুস্থ করবই। আর নিজেই করব। আমি একটা চাকরি পেয়েছি
- হু জানি। মাসে তিন হাজার টাকা। কি চাস তুই? আমার ও নিবি না !! আর আমার তো নয় অতে তোর ও তো সমান অধিকার। হাসান আর আগের মতন নেই। ছেলেটা মনে হয় এবারে আর বাঞ্ছবে না।
- নাআআআআ( চমকে উঠল শিবা) ওর কিচ্ছু হবে না।
মুস্তাফা পাগল হয়ে গেছিল সেদিন রিং এর মধ্যে। একটা একরত্তি বাচ্চা এতো মারের পরেও উঠে দাঁড়াচ্ছে কি করে? প্রথম ঘুসি টা মেরে ছিল পেট আর বুকের ঠিক মাঝ খানে। উজবুক টা ছাতি খুলে দাঁড়িয়েছিলো। মুস্তাফা দেখেও নি ওর দিকে তাকিয়ে , জানত এই ঘুসি টা খেলে ও শুয়ে পড়বেই। ছেলেটা প্রায় উড়ে গিয়ে খাঁচায় পড়ল। স্তব্ধ হয়ে গেছিল চারিপাশের জনতা। এই স্তব্ধ হয়ে যাওয়া টা ও জানে। নক আউট করলে এমনি ই স্তব্ধ হয়ে ফের চিল্লে ওঠে রক্ত দেখার নেশায় পাগল এই মানুষ গুলো। কিন্তু একি!!!! লোক গুলো হাত তুলে কি বলতে চাইছে? ও ঘুরে দেখল ছেলে টার মুখের থেকে দলা রক্ত রিং এর মাঝ খানে পড়েছে, আর ও দাঁড়িয়ে আছে মুখের সামনে দুটো হাত কে ঘুসির মতন পাকিয়ে। যা শালা। একী? মাথায় যেন আগুল চড়ে গেল। নিজের যা ছিল জ্ঞান লড়াই এর, আধ ঘণ্টা ধরে প্রয়গ করেছিল ওই ছেলেতার উপরে। কিন্তু সময় নিলেও প্রতিবার ই উঠে দাঁড়িয়েছিলো ওই এক রত্তি ছেলেটা। হাপিয়ে গেছে নিজেও মুস্তাফা। মারতেও খারাপ লাগছে ছেলেটা কে । কিন্তু রিং এর মধ্যে এই অপমান কখন ও ও পায় নি। এলোপাথাড়ি মেরেছিল ছেলেটাকে।
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
শিবার চোখ দুটো যখন বুজে এলো রিং এর মধ্যে মায়ের মৃত্যুর আগের করুন মুখ টা মনে পড়ল, আর রিঙ্গের বাইরে পাগলের মতন খাঁচা ধরে ঝাকাতে থাকা হাসান কে দেখল ও। মা আর হাসানের দুজনার মধ্যেই অসহায়তার সেই ভয়ংকর ছবি নিয়েই চোখ বুঝল শিবা।
এন জি ও র পাশেই একটা ছোট পার্ক আছে, একটা ছোট পুকুরের ধারে গোল করে। কিছু বড় বড় সিমেন্টের ছাতা বানান আছে। আর ঝোপ আছে অনেক। স্বাভাবিক প্রেমিক প্রেমিকা দেড় জন্য। গত কয়েকদিন জিনিয়া শিবার সাথে এখানেই দেখা করে। শিবার হাতের রান্না টা বড্ড ভাল। কিন্তু জিনিয়ার পক্ষে তিন হাজার টাকা মাইনে পেয়ে রোজ ওই খাবার খাওয়া সম্ভব না। সেটা শিবা কে বলতেই শিবা বুঝে গেছিল। যাওয়া বন্ধ ও করে দিয়েছিল জিনিয়া শিবার দোকানে। জিনিয়া এক একদিন বাইরে বেড়িয়ে সামনের দোকান টা থেকে রুটি আলু ভাজা খেয়ে নিত। দশ টাকায় পেট ভরে যেত। এমনি করে দিন পাঁচেক জাবার পরে একদিন হঠাৎ শিবা কে দুটো প্লাস্টিক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে গেছিল।
- কি রে কিছু বলবি? জিনিয়া জানত কিছু বলবে না ও। জথা রিতি কিছু না বলেই এগিয়ে গেল শিবা পার্কের দিকে। জিনিয়া পিছু পিছু এসে দুজনায় একটা চেয়ার এ বসল। দেখল পাঁচটা রুটি আর অনেক টা ঝোল আর তিনটে আলু সমেত দু পিস মুরগী। ছোট ছোট কিন্তু দু পিস।
- কি রে কি এগুল। কোন সাড়া না দিয়েই দুটো কাগজের প্লেট এক পিস করে মাংশ সমের আলু আর ঝোল ঢেলে প্লাস্টিক টা কে একটা ডাস্টবিন এ ফেলে দিল শিবা। নিজে তিনটে রুটি নিয়ে আর জিনিয়ার জন্য দুটো রুটি দিয়ে খেতে শুরু করল। জিনিয়া সেই ছোট্ট বেলায় দেখা গোঁয়ার আর কথা না বলে মার খেতে থাকা শিবার কাণ্ড দেখে হেসে বাঁচে না। কিন্তু শিবার মধ্যে যেমন নিষ্পাপ ব্যাপার টা ছিল সেটা এক্তুও কমে নি। ও হেসে ফেলে রুটি দুটো খেয়ে নিল। সেটা শিবার হাতের গুন। পাতলা ঝোল টাও ও এতো সুন্দর করে রাঁধে যে বলার নয়। এমনি রোজ ই চলতে থাকে। এখানেই জিনিয়া নিজের ব্যাপারে শিবা কে জানিয়েছে। শিবাও যে দু তিনটি কথা বলে টার মধ্যেই জানিয়েছে যে সে বাবা, আর টার তিন বছরের একটি মেয়ে আছে। আর একটি দুর্ঘটনায় টার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।মেয়েকে রেখে আসে পাশের বাড়ির এক পিসির কাছে। এক এক হয়েছে ভাল। দুজন ছরম দুঃখ অসমবয়সী নরনারী যেন নিজের দুঃখের কথা বলে হালকা হয়ে যাওয়া।
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,561 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
ভালোই চলছে তবে বানানে কিছুটা সমস্যা দেখা যাচ্ছে........
•
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
(27-07-2021, 08:11 PM)a-man Wrote: ভালোই চলছে তবে বানানে কিছুটা সমস্যা দেখা যাচ্ছে........
হ্যাঁ কিছু কিছু বানানের সমস্যা আগেই ছিল , চেষ্টা করবো এবার থেকে ঠিক করে দিতে যদি সময় পাই ....
•
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
জিনিয়া অনেক ভেবেছে সে কি শিবা কে ভাল বেসে ফেলেছে। নাহ। কিন্তু এতো টান কেন? শিবার তরফে নিশ্চয়ই কিছু নেই। কারন টা হলে ও প্রনাম করতে যেত না সেদিন জিনিয়ার গায়ে পা লেগে জাবার পরে। ও জানে * রা প্রনাম করে জাদের সম্মান করে। শিক্ষক দের * রা পিতা বা মাতা জ্ঞানেই দেখে। জাক আর ও পারে না । এই যে একটা মিষ্টি সম্পর্ক হয়েছে এটাই কি অনেক নয়? কিন্তু ছেলেটা এই আঠাশ বছরেই কত কিছু সয়ে ফেলেছে। রোজ ই ওরা খায় ওই ভাবেই জিনিয়া কথা বলে চলে আর শিবা কিচ্ছু না বলে খেয়ে চলে। খাবার হয়ে গেলে শিবা নিজেই সব কিছু পরিস্কার করে ফেলে দেয় ডাস্টবিন এ। সেদিন খেতে খেতে শিবা বলে উঠল, “ভাবছি নিজেই একটা ছোট দোকান করব খাবারের”। বাস বলা তো কাজ। জিনিয়া এতো খুশী হয়েছিল যে বলার নয়। সেটা যে কেন এখন ও বোঝে না। যা ছিল নিজের সেই সব দিয়ে একটা টানা চাকা লাগান গাড়ি কিনে শুরু করে দিল নিজের খাবারের দোকান। উদ্বোধন হল আজকেই। বিক্রি ভালই হয়েছে। কারন সামনের যে ব্লেড কারখানা টা আছে সেই শ্রমিকেরা অনেকটা বড় খদ্দের এখানে। সন্ধ্যে বালায় শিবা যখন সব কিছু ধুয়ে পরিস্কার করে ঘরে ঢুকল দেখল জিনিয়া তখন ও যায় নি। খাতায় হিসাব লিখতে ব্যাস্ত। আর পাপি জিনিয়ার ঘাড়ে।
- পাপি ম্যাম ঘাড় থেকে নাম সোনা। পাপি নামতে যেতেই জিনি পাপি কে আর ও জোরে নিজের মধ্যে যেন টেনে নিল। বলল
- কেন শুনি? পাপি নামবে না না পাপি সোনা??
- হি হি হি। আমি নামব না।---- জানত শিবা কিছুই কথা বলবে না, জথারিতু শিবা হেসে বাসন পত্র গুলো সাজিয়ে রাখতে লাগলো। শিবার কাজ করম সেশ হলে টাকার থোক টা শিবার হাতে ধরিয়ে দিল জিনিয়া। - এখানে আড়াই হাজার আছে। কালকের জন্য দুই তুলে রাখ। কালকে কিন্তু বুধবার। আজকে অনেকে খাবার না পেয়ে চলে গেছে।
- এখানে হাজার আপনার ম্যাম
- ফেরত দিতে চাস?
- কেন টাকাটা নিয়েছি ফেরত দেব না?
- ভেবেছিলাম তুই সফল হলে বলব এটা আমার ও সফলতা। অতে আমার ও ভাগ আছে। তুই সেটা যখন চাস না তখন দে” টাকাটা নিয়ে নিল শিবা ফেরত। জীবনে বন্ধু অনেক কষ্টে পাওয়া যায়। আর এমন মায়ের মতন আগলে রাখা বন্ধু তো পাওয়াই যায় না। হেসে ফেলল জিনি শিবার টাকাটা ফের ঢুকিয়ে নেবার ধরন দেখে। সত্যি ছেলেটা এত্ত ভাল ও জান্তই না। রোজ ই সন্ধ্যে বেলা এন জি ও থেকে ফিরে শিবার ঠেলার কাছে চলে আসত জিনি। মেয়েটা যেন অপেক্ষায় থাকত ওর। ওকে দূর থেকে আসতে দেখলেই ছুটে গিয়ে কোলে উঠে পড়ত জিনিয়ার। থাকত সাড়ে আটটা অব্দি। তারপরে দুজনায় বসে হিসাব সেশ করে শিবা জিনিয়া কে ওর ঘরে পউছে দিত। যেন একটা নিয়ম হয়ে গেছিল। শিবা ও কেমন ঠায় তাকিয়ে থাকত রাস্তার দিকে। কখন আসবে। আর মেয়েটা যেন এখন বেশি বেশি পাগলামো করে। হয়ত অসুস্থ বলে। ওর যে হার্ট এর রোগ আছে সেটা জিনিয়া জানে। সেদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি। মেয়েটা দূরে বসে আছে সামনের বারিটার বারান্দায়। আর শিবা থেলা টা খুলে ভিজে ভিজেই খদ্দের দের খাওয়াচ্ছে। একটা বড় ত্রিপল তাঙ্গিয়ে দিয়েছে। বার বার ঘড়ি দেখছে ও। ম্যাম এর আসার সময় পেরিয়ে গেছে।কি ব্যাপার বুঝতে পারছে না। মেয়েটার চোখ ও ছলছল করছে। এই ভয় টাই পেয়েছিল ও। যে কোনদিন ম্যাম আসবেন না আর ওর মেয়েটা কেঁদে কেঁদে শরীর টা আবার খারাপ করবে।
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
পকেটে টাকা টা গুঁজে মেয়েটা কে পিসির কোলে দিয়ে শিবা বেড়িয়ে পড়ল জিনিয়ার বাড়ির উদ্দেশ্যে। বিশাল মহল্লা টা পেরিয়ে যখন নর্দমার পাশ দিয়ে যাচ্ছে একটু সুনসান মনে হল। কিন্তু ওর মনে হল যে বৃষ্টির দিনে নিশ্চয়ই কেউ বেরয় নি। না হলে এই সময় টা এই খানে পার্সি দের ভিড়ে গম গম করে। সবে তো সাড়ে নটা বাজছে। ম্যাম এর ঘরে আলো জ্বলছে দেখে নিশ্চিন্ত হল। কিছু মস্তান মতন ছেলে দেখল যাতায়াত করছে। ওর তাতে ভয় নেই। অনেক দেখেছে এমন মস্তান। ম্যাম এর দরজার সামনে এসে ও কড়া নাড়াতেই দেখল খোলা আছে দরজা। ও ঢুকতেই দেখল ম্যাম চেয়ার এ বসে। ওকে দেখেই জিনিয়া হেসে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েই আবার বসে পড়ল। শিবা জিজ্ঞাসা করতে যাবে সেই সময়েই দরাম করে দরজা টা খুলে যে ঢুকল তাকে শিবা চেনে। উত্তর পাড়ার গলাকাটা লাকি। দিনের বেলায় পুলিশের গলা কেটে দিয়েছিল বলে ওর ওই নাম।শিবা ওকে চেনে কিন্তু ও শিবা কে চেনে না। হয়ত হাড়ে হাড়ে চেনে কিন্তু সামনাসামনি কোনদিন ও দেখেনি।
- এই শালা এখানে কি চাই, আমি মহেশের লোক। পালা এখান থেকে। মহেশের সাথে দিদিমনির কিছু কথা আছে। দিদিমনি মহেশের... শিবা জিনিয়ার দিকে তাকাতেই বুঝে গেল কি ব্যাপার। ম্যামের চোখে জল আবার তাকে মনে পড়িয়ে দিল মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা মায়ের মুখ টা, খাঁচার বাইরে পাগলের মতন চিৎকার করতে থাকা হাসানের অসহায় মুখ টা। মুহূর্তএই শরীর টা যেন ছেড়ে দিল শিবা। ঠিক করে নিয়েছে ওকে কি করতে হবে। পেশি গুলো কে খেলতে দিল শিবা। কেউ জান্তেই পারল না ঢিলে জামার ভিতরে কিলবিল করতে থাকা পেশি গুলো যেন নিজেদের মধ্যে জায়গা ঠিক করে নিয়ে বসে গেল শরীরের মধ্যে।
- এ কি রে লড়বি নাকি? হা হা হা ওরে হাবলা, দেখে যা এই বাঞ্চত কথা বুঝছে না। ওকে বলে দে লাকি কি মাল!! কথা টা সেশ ও হল না লাকির, জিনিয়া দেখল চোখের পলক পড়ার আগেই একটা ঘুষি লাকির চোয়ালে বসে গেল এমন ভাবে যে শব্দ টা এলো অনেক পরে। ততক্ষনে লাকি যেন একটু উড়ে গিয়ে দরজায় শব্দ করে ধাক্কা খেল জোরে, আর কাটা কলাগাছের মতন পরে গেল জিনিয়ার পায়ের কাছে। জিনিয়া হাঁ করে চেয়ে রইল। কাঁপতে থাকল জিনিয়া, এই ভেবে যে শিবা কে মনে হয় আর বাঁচানো যাবে বাইরে কম করে সাত আট জন আছে। প্রায় দু বছর বাদে হাড়ে হাড়ে ঠোকাঠুকির আওয়াজ পেয়ে যেন ভিতরের বাঘ টা জেগে উঠছে শিবার। শরীরের পেশি গুলো যেন জানান দিচ্ছে তারা তৈরি। পা দুটো কে অদ্ভুত ভঙ্গি তে নাচাতে থাকল শিবা। ততক্ষনে দুজন এসে গেছে ঘরের ভিতরে। শিবা জানে বেশি সময় পাওয়া যাবে না। যে ঘুষি টা মারবে সেটাই ফাইনাল হতে হবে। গেম প্ল্যানের জন্য ছিল ও বিখ্যাত। ও সামনের ছেলে টার থেকে পিছনের টাকে আগে বেছে নিল। সামনের ছেলেটার দুর্বার ঘুষি টা মাথাটা সামান্য কাট করে এরিয়ে গেল। ছেলেটা ঝুকে পড়ল সামনে অনেক টা। শিবা জানে এই ফুল সুইং ঘুষি গুলতে অনেক শক্তি ক্ষয় হয়। ওকে দেখল ও না। ওর টাইম জ্ঞান অসাধারন। ও জানে ওই ভাবে ফলস খাবার পরে একজন বিশেষজ্ঞের কত টাইম লাগতে পারে উঠতে। কিন্তু ও সামনেই পেয়ে গেল পরের মোটা মাল টাকে। ওকে চোয়ালে না মেরে ঘুষি টা বাম হাতে নিল হালকা পিছনে ভাসিয়ে । সোজা হিট করল ছেলেটার কানের পিছনের ঘাড়ের ডান দিকে। দরজার পাশেই যে কোন টা ছিল সেখানে ছেলেটা ধাক্কা খেয়ে গড়িয়ে পড়ল মেঝেতে। ঠিক পরের ছেলেটা বুক চিতিয়ে রাজার মত লড়তে এসেই কাল করল। শিবার বহু বিখ্যাত বাম পায়ের মোক্ষম লাথি টা বসে গেল ছেলেটার বুকের মাঝে। পিছনের দুটো ছেলেকে কে নিয়ে পড়ল পাশের নর্দমায়। শিবার ফাইনাল শট গুলো যেন মুখ থেকে আওয়াজ করতে দিচ্ছে না প্রতিপক্ষ কে। সেশের ছেলেটা একটা লাঠি হাতে ঘরে ঢুকেই সপাটে চালাল শিবার মুণ্ডু লক্ষ্য করে। কি আশ্চর্য শিক্ষা শিবার। ও আওয়াজেই বুঝে গেল লাঠিটা কথা দিয়ে আসছে। শক্ত করে নিল নিজের বাইসেপ্স টা। লাঠি টা যেন রাবার এ ধাক্কা খেয়ে ফিরে গেল ফুল সুইং এ। ততক্ষনে সময় হয়ে গিয়েছে সেই ছেলেটার নিজেকে সাম্লে উঠে আক্রমন করার। পিছন ফিরে চালাল ডান হাতের একটা পাঞ্চ। ছেলেটা ঘুষি টা মেরে টাল সাম্লাতে না পেরে পরে গিয়েছিল। বেচারি উঠে সবে ঘুরেছে সেই সময়ে পাঞ্চ টা ল্যান্ড করল চোয়ালে।ওর দিকে তাকিয়েও দেখল না শিবা, পিছনে ঘুরে লাঠি হাতে ছেলেটা কে দ্বিতীয় বার লাঠি তোলার সুযোগ না দিয়ে ডান পা দিয়ে ছেলেটার পাঁজরে মারতেই ছেলেটা পাঁজর চেপে ধরে ঝুঁকল। ততক্ষনে খেল খতম। শিবার বাম পা টা ছেলেটার ঘাড়ে টাচ করেই নেমে এলো মেঝেতে। খুব বেশি হলে তিন সেকেন্ড। টার মধ্যেই সাতটা ছেলে কে শুইয়ে দিয়ে জিনিয়ার হাত টা ধরে বেড়িয়ে এসেছে শিবা।
Posts: 43
Threads: 0
Likes Received: 235 in 78 posts
Likes Given: 455
Joined: Jun 2021
Reputation:
72
(28-07-2021, 10:53 AM)ddey333 Wrote: শিবার বাম পা টা ছেলেটার ঘাড়ে টাচ করেই নেমে এলো মেঝেতে। খুব বেশি হলে তিন সেকেন্ড। টার মধ্যেই সাতটা ছেলে কে শুইয়ে দিয়ে জিনিয়ার হাত টা ধরে বেড়িয়ে এসেছে শিবা।
বেশ ভাল লেখা। বানানের কিছু ভুল হলেও ভাবতে ভাল লাগে, কোন নারীর রচনা এটি।
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
স্বপ্নে বার বার ই হাসানের খাঁচা টা ঝাঁকিয়ে “ শিবা নাআআআআআআ, ওকে মের না ছেড়ে দাও’ এই দৃশ্য টা ভেসে উঠছে শিবার কাছে। জতবার ই চোখ খুলছে সামনে টা অন্ধকার। সর্বাঙ্গে ব্যাথা। আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে শিবা। জানে না কতদিন ও ছিল হাসপাতালে। যেদিন ওর ব্যান্ডেজ খোলা হল দেখল হাসান বসে আছে। একজন নার্স জুস বানাচ্ছে আর মুস্তাফা দাঁড়িয়ে আছে বিছানার ঠিক পাশেই।
- কিছু তো আছেই তোর মধ্যে শিবা। এর মধ্যেই হাসান বলে উঠল।– শিবা মুস্তাফা দা তোকে মেরেছে সত্যি কথাই কিন্তু গত তিন্মাসে তোর সব চিকিৎসা মুস্তাফা দা ই করিয়েছে… শিবা চমকে উঠেছিল। এতো খরছ ও কথা থেকে পাবে। ও বলে উঠল- কিন্তু আমি তো কিছুই শোধ করতে পারব না!!!
- হাহাহাহাহাহা ঘর কাপিয়ে হেসে উঠেছিল মুস্তাফা। - সে নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। সে আমি ঠিক উসুল করে নেব” জুস টা দিয়ে নার্স চলে যেতেই মুস্তাফা শিবার হাত টা হাতে নিয়ে বলেছিল- জানিস শিবা ফাইটার তৈরি হয় এই খানে” বলে শিবার বুকে হাত রেখেছিল। “ এক জন বেস্ট ফাইটার মার টা খেতেই ভাল জানে। তুই পারবি ভাই। তোকে সুধু মারতে শিখতে হবে। আমি তোকে শেখাব।“ কথা টা বলার সময় উত্তেজনায় মুস্তাফা কাঁপছিল।
শুরু হয়েছিল ট্রেনিং। প্রথম তিন বছর ফাইট এর কিছুই করে নি শিবা। শুধু দৌড় আর দৌড়। শিবার আপাত নিরীহ চেহারা টা সফট ট্রেনিং আর ভাল খাবারের জোরে পেশি বহুল হতে সময় নিল। সাথে চলল লেখা পড়া। হাসান আর শিবার দুজনার ই। পার্সি দের কল্যান এ শিবার ইংরাজি টা বেশ সরগর ছিল। কিন্তু ট্রেনিং টা নিতে হত হাড় ভাঙ্গা। সকালে আর বিকালে রোজ কুরি কিমি দৌড়। একদিন দৌড় অন্য দিন পাশের পুকুর এ সাঁতার। কিছু দিন পর থেকে ১৩ কিমি দৌড়ে গঙ্গার পাড়। সেখানে গঙ্গা উজিয়ে অন্য পাড়ে গিয়ে আবার ফিরে আসা দুবার। শিবার মধ্যে তৈরি হল অভূতপূর্ব সহন শীলতা। মুখ বুঝে ট্রেনিং করতে শিবাই হয়ত পারে। চতুর্থ বছর থেকে এই দুটোর সাথে শুরু হল কিক প্র্যাকটিস আর বক্সিং। মুস্তাফা কোন আয়রন প্র্যাকটিস এ গেল না। ও চায় না শিবার পেশি গুলো শক্ত হোক। ও চায় সফট পেশী। যাকে যত টা পাড়া যাবে স্ত্রেচ কড়া যাবে। ওকে দিয়ে বড় বড় ড্রাম এ জল ভরে কপিকল দিয়ে ওপরে তোলান আর নামান হল। জোয়ারের মুখে ওই ভয়ঙ্কর জলরাশি ঠেলে আসা বড় নৌকা ওকে পা দিয়ে থামাতে শেখান হল। দুই দিকে ওজোন ঝুলিয়ে দৌড়তে বলা হল কিমির পর কিমি। তারপরে ওকে নামান হল রিং এ। ও এখন পরিপূর্ণ এক যুবক। ওকে টার্গেট দেওয়া পাঞ্চিং ব্যাগ এ মিনিটে ৪০ টা কিক করতে। আর কম করে আশি টা পাঞ্চ মারতে। রাতে ফিরে ওর মেয়াদ বলতে থাকত না। শুয়ে কোন গহিন রাজ্যে চলে যেত কে জানে।
Posts: 761
Threads: 0
Likes Received: 1,561 in 905 posts
Likes Given: 1,422
Joined: Jan 2021
Reputation:
184
দেখা যাক শিবা তার আশা কে কেমন করে পায়........
Posts: 3,677
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
এই গল্পের নাম দিয়ে আমার মাথায় আর একটা লাইন এলো ---
এক ফালি রোদ আর তার নাম আশা
বেশি গাঁড় মাড়িও না বাছা
❤❤❤
•
Posts: 18,165
Threads: 471
Likes Received: 63,934 in 27,355 posts
Likes Given: 23,438
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,229
(29-07-2021, 09:38 AM)satyakam Wrote: এই গল্পের নাম দিয়ে আমার মাথায় আর একটা লাইন এলো ---
এক ফালি রোদ আর তার নাম আশা
বেশি গাঁড় মাড়িও না বাছা
❤❤❤
আশার সঙ্গে বাছা ????
কবিতার গাঁড় মেরে গেলো তো !!!!
•
Posts: 3,677
Threads: 14
Likes Received: 2,478 in 1,386 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
523
(29-07-2021, 09:44 AM)ddey333 Wrote: আশার সঙ্গে বাছা ????
কবিতার গাঁড় মেরে গেলো তো !!!!
আমার কবিতা আমার মতোই হয়
আমরা সফল ভাবে তামিল এর থেকে এগিয়ে গেছি। ওদের আছে 1670 আর আমাদের আছে 1671 ❤❤❤ বাংলা বিভাগের জয় হোক ❤❤❤
❤❤❤
•
|