Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(26-06-2021, 11:29 PM)ddey333 Wrote: নতুন মা
ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে করতে মাঝে মাঝে পিঠটা ব্যথা করে ওঠে সায়ন্তনের। তাই একটু স্ট্রেচিং করার জন্য চেয়ার থেকে উঠল ও। আজ এগারোটা থেকে টানা মিটিং চলেছে ওর। তাই ক্লান্তু লাগছে খুব। একটু চা খেলে হতো। ভাবতে ভাবতেই ঘর থেকে বেরোল ও।
ছোট্ট ফ্ল্যাট ওদের। দুটো বেডরুম, ড্রয়িংরুম,রান্নাঘর, বাথরুম আর এক চিলতে একটা ছোট্ট ঘর, একটা ক্যাম্প খাট আর একটা চেয়ার রাখার পরেই যেখানে আর নড়াচড়ার জায়গা নেই। আর দুটো বেডরুমের একটায় বাবা থাকেন, অপেক্ষাকৃত বড় ঘরটায় ও আর সোনালী থাকে। আগে ওটা মা বাবার ঘর ছিল, কিন্তু মা চলে যাবার পর, বাবা ওকে একদিন ডেকে বলেছিলেন 'বুবুন, তুই এই ঘরে চলে আয়, আমি ওই ঘরটায় চলে যাব'। প্রথমে ওর ইচ্ছে ছিল না একেবারেই, কিন্তু বিয়ের জন্য দেখাশোনা শুরু হবার পর থেকে বাধ্য হয়েই সায় দিয়েছিল। আর ওর বিয়েও তো হয়ে গেল জানুয়ারিতে। দেখাশোনার বিয়ে, এখনো পর্যন্ত কেন জানি না ওরা তেমনি বন্ধু হয়ে উঠতে পারেনি, সোনালী একটু বেশিই চুপচাপ, শান্ত। তবে মোটের ওপর সুখীই আছে ওরা।
রান্নাঘরে যাবে বলে বেরিয়েছে, দেখে একটা কেমন যেন গন্ধ..একটু নাকটা কুঁচকে বুঝতে পারে ফিনাইলের গন্ধ। বাথরুমের দিকে তাকিয়ে দেখে বাবা বেরিয়ে আসছেন, হাতে একটা ভিজে আন্ডারওয়্যার। আর, সোনালী উবু হয়ে বসে ঘর মুছছে। দেখেই বুঝতে পারল, বাবার হয়ত বাথরুমে যেতে যেতেই টয়লেট হয়ে গেছিল, তাই এখন সোনালীকে পরিষ্কার করতে হচ্ছে। সত্যি, সারাদিন রান্নাবান্না, ঘরের সব কাজ করার পর যদি এভাবে টয়লেট পরিষ্কার করতে হয়, ওর তো খারাপ লাগবেই। বাবার আগে এমন ছিল না, এই কিছুদিন হলো টয়লেট চেপে রাখতে পারছেন না। যেতে যেতেই হয়ে যাচ্ছে।।
মাথা নিচু করে ঘরে এলো সায়ন্তন। সোনালী কি ভাবছে কে জানে...বাবা ও তো অসহায়!
ভাবতে ভাবতেই ঘরে এলো সোনালী। ওকে এইসময়ে এই ঘরে দেখে যেন একটু অবাক হয়েছে মেয়েটা। বলল 'কি গো, তোমার মিটিং শেষ? চা খাবে?'
এক নজর তাকালো বৌয়ের দিকে সায়ন্তন। তারপর বলল 'সোনালী স্যরি..'
'ওমা!কেন?'
'আসলে বাবা কিন্তু ইচ্ছে করে কিছু করেন না, জাস্ট হয়ে যায়। আমি কালই নেট খুঁজে কোনো একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলব.. আর বাবার সাথেও কথা বলব'
ওর কথা শুনে একটু চুপ করে থাকে সোনালী। তারপর, খুব আস্তে, প্রায় শোনা যায় না, এমন গলায় বলল 'আমার দাদুর রেনাল ফেলিওর হয়েছিল। দাদু ছিল আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার বড় হবার সবচেয়ে বড় সঙ্গী। কিন্তু...সেই দাদু...জানো, সারা শরীর ফুলে গেছিল দাদুর, টয়লেট না হওয়ায়। তোমার বাবা, এত শান্ত একজন মানুষ...ওনার জন্য নিশ্চয়ই ডাক্তার কনসাল্ট করবে, কিন্তু, প্লিজ বাবাকে বকাবকি করো না...আসলে উনি কেমন অপরাধীর মতো তাকান আমার দিকে বাথরুম হয়ে গেলে। আমার খুব খুব কষ্ট হয় দেখে...মনে হয়, হাতটা ধরে বলি, "ইটস ওকে বাবা...কিচ্ছু হয়নি..."
সোনালীর কথা শুনতে শুনতে চোখটা কেমন ঝাপসা লাগে সায়ন্তনের। এত ভাল ওর বৌ টা! এত গভীর!
কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছিল না সায়ন্তন, নইলে দেখতে পেত বাবা ওদের ঘরের দরজার সামনে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন...হয়ত কিছু বলতে আসছিলেন...হয়ত দুঃখপ্রকাশ করতে আসছিলেন...কিন্তু এখন তাঁরও চোখে জল...আর বুক ভরা আনন্দ...বাড়িতে 'বৌমা' নয়, 'মা' এসেছেন যে...।।
মন ভোরে গেলো... কি সুন্দর গল্প. ❤❤
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
এই মাত্তর কদিন হল আবার অফিস শুরু হয়েছে রেখাদের। ভাগ্যিস! নইলে ওদের তো ভয় লাগছিল এবার.. ছোট কোম্পানি, সেরকম পকেটের জোর তো নেই...যদি বন্ধ হয়ে যায়? বা, ছাঁটাই হয়ে যায়? যা দিনকাল! হয়ত বড়বাবু ডেকে বলে দিলেন "রেখাদি, এতজনের আর অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টে দরকার নেই। এই মাসই আপনার শেষ!" হ্যাঁ, হয়ত না খেতে পেয়ে মরবে না ও, কিন্তু মাস গেলে এই ক'টা টাকা না পেলে অসুবিধা হবে বড্ড। বুবলির কলেজের মাইনে ওকেই দিতে হয়। সাথে শখ আহ্লাদ, মা কে মাসে মাসে হাতখরচা দেওয়া...সব ই এই সামান্য মাইনেতেই তো! আর এই বয়সে নতুন চাকরি পাওয়াও তো অসম্ভব! এইসব সাতপাঁচ ভেবেই রাতে ঘুম হয় না রেখার। খালি মনে হয় আরো দশটা বছর অন্তত... চাকরিটা বড্ড দরকার...
ভাবতে ভাবতেই দেখে বড়বাবু আসছেন ওদের দিকে। দেখে তাড়াতাড়ি কম্পিউটার খুলে হিসাব মেলাতে শুরু করে ও। পুরোনো পেমেন্টের হিসাব, হার্ড কপি থেকে সফট কপি করে রাখা হয়েছে, সেই হিসাব।
"আজও চন্দ্রানী আসেনি? কি হয়েছে কিছু জানেন কেউ?" জিজ্ঞেস করেন বড়বাবু।
চন্দ্রানীর নাম শুনেই মুখ বাঁকায় রেখা। চন্দ্রানী ওদের সাথেই কাজ করে। তবে নামেই 'কাজ'। বরের প্রশংসা করেই কূল পায় না! দুকথা তিনকথার পরেই 'অমিত এই, অমিত সেই' করে। যেন আর কারো বর ভাল হয় না! যেন আর কারো বর তার জন্য নিত্যনতুন শাড়ি, বা বাইরে থেকে খাবার দাবার কিনে দেয় না! তবে কেউ এত সাতকান করে না। আসলে বাচ্চাকাচ্চা নেই তো, চেহারার বাঁধন ও ভাল, তাই হয়ত...
বড়বাবু চলে যাবার পরে একবার ভাবল রেখা। একবার ফোন করা উচিৎ চন্দ্রানীকে। একসাথে কাজ করে...এটুকু তো কর্তব্য। শরীর টরীর খারাপ হল কিনা কে জানে! দিনকাল ভাল না.. ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি হচ্ছে খুব।
ভাবতে ভাবতেই ফোনটা হাতে নিল রেখা। কন্টাক্ট লিস্ট খুলে চন্দ্রানীর নাম্বারটা বের করে কানে লাগাল। রিং হচ্ছে।
"হ্যালো" পুরুষের কর্কশ গলা...নিশ্চয়ই ওর স্বামী!
"হ্যালো, দাদা, চন্দ্রানী আছে?"
"চ..আপনি কে?"
"আমি..ওর কলিগ, রেখা। আসলে ও তিন চারদিন হয়ে গেল অফিস আসছে না, তাই ফোন করছি।"
"চারদিন? সেকি! আমাকে তো বলল মঙ্গলবার থেকে যাচ্ছে না, আজ শুক্কুর... মানে সোমবার ও যায় নি? শয়তান মেয়েছেলে! কার সাথে দেখা করতে গেছিল তবে সোমবার? ফুটুনি মেরে বেরিয়েছিল, আমার স্পষ্ট মনে আছে..."
'শয়তান মেয়েছেলে'! 'ফুটুনি'! শব্দগুলো যেন আঘাত করছিল রেখাকে! শুধু শব্দচয়ন না, বলার ভঙ্গিটাও অত্যন্ত কর্কশ এবং একেবারেই ভদ্রসুলভ নয়। আর 'চারদিন' মানে কি সত্যিই চারদিন ই? ওটা তো কথার তালে বলা! তাই নিয়ে জলঘোলা করছেন কেন উনি!
"ও ঠিক আছে তো দাদা?"
"হ্যাঁ, ঠিক ই আছে। বাহানা মেরে খাটে শুয়ে আছেন মহারানি। কোন কাজ করছে না। কিছু বললেই বলছে মাথা ঘুরছে...কাশতে কাশতে পিঠ বুক ব্যথা...যত্তসব! সব ন্যাকামি, বুঝলেন? কাজ না করার বাহানা।"
শুনতে শুনতে অবাক হচ্ছিল রেখা। চন্দ্রানী না বারবার বলত সামান্য হাঁচি হলেও ওর বর ওকে রান্না করতে দেয় না আর। শুয়ে থাকতে বলে! একবার ওর মাথার যন্ত্রণা করছিল বলে নিজে সারারাত ঘুমোয়নি! আর সেই লোকের এমনি আচরণ... নাহ্, এটা অন্য কেউ হবে হয়ত... রং নাম্বার না তো?
"আচ্ছা, আপনি কে বলছেন!" জিজ্ঞেস করল রেখা।
"বাওয়া, এতক্ষণ 'দাদা' বলে কথা বললেন আর এখন জিজ্ঞেস করছেন! আমি ওর হাসব্যান্ড বলছি। তা, সে তো ঘুমোচ্ছে এখন...বললাম না...কাজ না করার বাহানা। ডাকলেও ওঠে না। তা, আপনি ওর অফিসের? কি নাম বললেন যেন?"
"আমি? ইয়ে, আমার নাম রেখা। দাদা, আপনি ওকে প্লিজ বলবেন না আমি ফোন করেছিলাম। আসলে চন্দ্রানীদি আমার সিনিয়ার, আর খুব ভাল কাজ করেন বলে সারা অফিস ওনাকে খুব শ্রদ্ধা করে। আমি তেমন ভাল কাজ পারি না। তাই বকাঝকা খাই রোজ.."
"তার সাথে ওকে না বলার কি সম্পক্ক?"
"না, আসলে সিনিয়ার তো, উনি যদি রেগে যান, তাহলে খুব সমস্যা হবে। উনি সুস্থ হয়ে কাজে জয়েন করুন, এটাই চাই। উনি না এলে সব কাজ আটকে থাকছে আসলে। দাদা, আমি রাখি, কেমন?" তড়িঘড়ি ফোন কাটে রেখা।
তারপর বাথরুমে যায়। চোখে মুখে জল দেবে একটু।
"আহা রে চন্দ্রানী! এতদিন তোর কথা শুনে কত হিংসা করেছি তোকে... 'স্বামী সোহাগিনী' বলে টিটকিরি দিয়েছি, 'অকম্মার ধাড়ি' বলে মুখ বেঁকিয়েছি...কিন্তু বুঝিনি তুই আসলে আমাদের সাথে দেয়ালা করতিস! ভাল থাকার রামধনু রঙের ছবি আঁকতিস! যা নয়, তাই হয়...এই ভেবেই ক্ষণিকের সুখ পেতিস...তাই তো আজ এত প্রশংসা করলাম তোর...জানি না তাতে কাজ হবে কিনা, তবে যদি তোর ঘরের লোকটা একবার হলেও ভাবে "বাহ, বৌটা আমার নেহাত ফ্যালনা নয়" আর মনে মনে লজ্জা পায় তোর প্রতি রূঢ় হবার জন্য... সে ও তো কম প্রাপ্তি হবে না..." মনে মনে দীর্ঘ মনোলগ সেরে হাসে রেখা। বড়বাবুর কাছে চন্দ্রানীর হয়ে লিভ অ্যাপ্লিকেশান করে দিতে হবে। মেয়েটার যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেটা দেখতে হবে। দরকারে ওর কিছু কাজ ও এগিয়ে রাখতে হবে...।
এই যে পাশে থাকা... দরকারে আর অদরকারেও... এই নিয়েই তো জীবন... নানা রঙের এই জীবন...
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
আমাদের অতি প্রিয় কাকসন ভাই আমার এই থ্রেডের জন্য বিশেষ করে একটা অনুগল্প লিখে পাঠিয়েছে ..
নিজে পোস্ট করতে চায় না , তাই ওর হয়ে আমিই নিচে পোস্ট করে দিলাম !!
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
17-07-2021, 04:20 PM
(This post was last modified: 17-07-2021, 04:21 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আমি নন্দিনী,
সসসসস…… তোমারা কেউ আবার এ নামে ডেকো না আমায় কিন্তু , ও আর ওর মা রাগ করবে । নামটা নাকি খুব অশ্লীল শোনায়, তবে আমি যখন একা থাকি তখন নিজেকে নিজে এই নাম ধরে ডাকি । নামটা যে কাঁদে ডুকরে ডুকরে , আমার খুব কষ্ট হয় । তাই সান্তনা দেয়ার জন্য ডাকি ।
শুরুটা হয়েছিলো যেদিন আমি ঘোমটা মাথায় এ বাড়ি প্রবেশ করি । এক ঝাক লোকের সামনে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো রাতুল এর বউ হিসেবে । বড্ড খুসি হয়েছিলাম “রাতুল এর বউ” আহা কেউ যেন আমার কানে মুধু ঢেলে দিয়েছিলো । এখন অবশ্য টের পাচ্ছি , দিন দিন আমি রাতুলের বউ ই হয়ে যাচ্ছি , আমার নিজেকে যে আমি খুঁজে পাই না আর , এমন কি আয়নার সামনে দাঁড়ালেও রাতুল এর বউ কে দেখি । অবশ্য রাতুলের বউ ছাড়াও আমার বেশ কিছু নাম আছে , যেগুলি সুধু রাতুল ডাকে অন্য কেউ নয় ।
বিয়ের আগের টিয়া পাখি ডাক নয় , বাবু শোনা ও নয় । এখন ওই নাম গুলি মুছে গেছে , নতুন নাম উঠেছে রাতুল এর রেজিস্টার খাতায়। “তোর ভাবি” “ তোমাদের বউমা” অথবা একেবারেই যদি সরাসরি ডাকতে হয় তাহলে “এই শুনছো” , বেশ আদুরে লাগে নামগুলি তাই না ? এইতো সেদিন রাতুল সবার জন্য সপিং করে নিয়ে এলো , মা কে বললে “ মা এটা তোমার জন্য” বাবা কে বলল “বাবা এটা তোমার জন্য” ভাই কে বলল “ সুমন নে এটা তোর জন্য” তারপর একটা সুন্দর শারি দেখিয়ে বলল “ এটা তোমাদের বউমার জন্য এনেছি”
সাড়িটা বেশ সুন্দর ছিলো , বেশ দামি , বিশ্বাস করুন আমি অনেক খুসি হয়েছিলাম । কিন্তু আমার ভেতরকার নন্দিনী যে গুমরে কেদেছিলো , তার জন্য তো কিছুই আনা হয়নি । আচ্ছা নন্দিনির জন্য কিছু না আনুক , অন্তত এটা তো বলতে পারতো “ সরি নন্দিনী তোমার জন্য কিছুই আনতে পারিনি” এটুকু বললেই নন্দিনী আনন্দে নেচে উঠত । নন্দিনী যে খুব বেশি কিছু চায় না , সুধু নিজের পরিচয়ে বাচতে চায়।
অবশ্য একেবারেই যে সব পরিচয় মুছে ফেলা হয়ছে এমন কিন্তু নয় । এমনটা বললে আমি একজন অকৃতজ্ঞ ছাড়া আর কিছুই না ।
বাইড়ের কেউ এসে যদি “বৌমা” নামে সন্তুষ্ট না হয়ে তখন তার কাছে নাফিসা নামে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। নাফিসা নিশাত নন্দিনী থেকে শেষটা বাদ দিয়ে বাকি দুটো এখনো বলবত আছে। আমি অবশ্য এর জন্য খুব কৃতজ্ঞ । অন্তত পুরোটা তো বাদ দেয়নি , দিলেও হয়ত কিছুই করার থাকতো না । যেমন আমি করতে পারিনি যখন আমাকে সম্পূর্ণ রুপে ঢেলে সাজানো হয়েছিলো । হয়েছিলো বলা ঠিক হবে না এখনো সেই প্রক্রিয়া চলমান । নিত্য দিন আমি আমার পুরনো আমি কে ভুলে নতুন আমি কে চিনে নিচ্ছি । আজকাল আমার পুরনো ছবি গুলো দেখলে মাঝে মাঝে বড় অচেনা মনে হয় । কারন এ্যালবামের এই মেয়েটি যে ছিলো নাফিসা নিশাত নন্দিনী আর এখন সে কখনো রাতুলের বউ, কখনো কারো ভাবি , কখনো আবার এই শুনছো , একজন বহুরূপী বহুনামি , হয়ত জীবনে চলতে চলতে আরও নাম যুক্ত হবে , হয়ত সে খোকার মা অথবা খুকির মা হিসেবেও পরিচিত হতে পারে ।
মাঝে মাঝে আমি ভেতরের অবুঝ নন্দিনী কে বুঝানোর চেষ্টা করি , বলি “আরে এতো মন খারাপ করার কি আছে , নাম গুলো কোনটাই তো খারাপ নয় , আদর করেই তো তোকে এই নাম গুলো দেয়া হয়েছে , এইজে বৌমা বলে ডাকে , কেউ বা ভাবি বলে ডাকে , এগুলি না বলে যদি নন্দিনী বলে ডাকা হতো তাহলে তোকে কেমন পর পর মনে হতো না ? আরে পাগলী এসব তো আপন করে নেয়ার ডাক।“
কিন্তু নন্দিনী কিছুতেই বুঝতে পারে না , খালি বলে “নামটা যে কাঁদে কাঁদে”
Cuck Son
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
17-07-2021, 04:42 PM
(This post was last modified: 17-07-2021, 06:03 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কালকেই ওর সাথে কথা হচ্ছিল। আমি বলেছিলাম নিজের একটা থ্রেড খুলে ছেড়ে দাও। ও বললো অসুবিধা আছে। তাই আপনার থ্রেড থেকে ছাড়লো।
গল্পটা বেশ অর্থবহন করে । একটা মেয়ের আসল নাম বাঁচানোর ইচ্ছা। ❤❤❤
•
Posts: 1,391
Threads: 12
Likes Received: 2,354 in 824 posts
Likes Given: 1,054
Joined: Nov 2019
Reputation:
378
দাদা এটা কি করলেন , নাম টা না দিলে নিজের লেখায় নিজে প্রশংসা করতে পারতাম
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(17-07-2021, 09:19 PM)cuck son Wrote: দাদা এটা কি করলেন , নাম টা না দিলে নিজের লেখায় নিজে প্রশংসা করতে পারতাম
আপনার হয়ে সেটি আমিই করে দিচ্ছি.... খুব ভালো একটা গল্প. কে একজন বলেছিলো - what's in a name? আজ যদি সেই মানুষটার নাম আমরা ভুলে যাই তাহলে কি আমরা বুক ফুলিয়ে সেটা সবাইকে বলতে পারবো? যদি সেই মানুষটার নামই ভুলে যাই আজ তাহলে কি আমরা জানতেও পারবো কেউ একজন ছিল যে অসাধারণ সব লেখা উপহার দিয়ে গেছেন আমাদের. নাম শুধু নাম নয়, অস্তিত্বও বটে..... আবার আরেকদিকে কি আর যায় আসে নামে? কটা অক্ষর মাত্র.
•
Posts: 1,391
Threads: 12
Likes Received: 2,354 in 824 posts
Likes Given: 1,054
Joined: Nov 2019
Reputation:
378
(17-07-2021, 09:31 PM)Baban Wrote: আপনার হয়ে সেটি আমিই করে দিচ্ছি.... খুব ভালো একটা গল্প. কে একজন বলেছিলো - what's in a name? আজ যদি সেই মানুষটার নাম আমরা ভুলে যাই তাহলে কি আমরা বুক ফুলিয়ে সেটা সবাইকে বলতে পারবো? যদি সেই মানুষটার নামই ভুলে যাই আজ তাহলে কি আমরা জানতেও পারবো কেউ একজন ছিল যে অসাধারণ সব লেখা উপহার দিয়ে গেছেন আমাদের. নাম শুধু নাম নয়, অস্তিত্বও বটে..... আবার আরেকদিকে কি আর যায় আসে নামে? কটা অক্ষর মাত্র.
ভালো বলেছেন ভাই ,
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
#অন্য_রূপকথা
এবার লকডাউনের পর থেকেই দেখছি, আমাদের পাড়ায় অনেকে ভ্যান বা সাইকেলে চড়ে জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসছেন। তরি-তরকারি, ফল, বিভিন্নরকম মাছ, ফুল-মালা... সব ই পাওয়া যায় এভাবে। আমার বেশ সুবিধা হয়েছে তাতে... রোজ রোজ বাজার যেতে হয় না, জাস্ট হাঁকডাক শুনে গুটিগুটি পায়ে নিচে নেমে এলেই হলো...। এভাবেই, বেশ কয়েকজনের সাথে রীতিমতো দোস্তি হয়ে গেছে আমার। ওঁরাও জেনে গেছেন কী কী লাগে আমার, আর সেইমতো জানলার কাছে এসে "ও দিদিইইইইই" বা "ও বৌদিইইইইইই" বলে ডাক দেন।
কিন্তু সবকিছু পাওয়া গেলেও, আমার ছোট্ট খরগোশটার জন্য ওর প্রিয় কলমী শাক সবাই আনেন না। শুধু একজন দাদা ই আনেন। তা, তিনিও গত সপ্তাহে একদিন ও আসেননি...তাই বাধ্য হয়ে আমাকেই যেতে হয়েছিল বাজারে। বেচারা ছোট্ট খরগোশ...আর তো কিছু খায়ও না!
আজ সকালে...কি যেন একটা করছিলাম, হঠাৎ সেই পরিচিত গলার আওয়াজ পেয়ে "দাদা, দাঁড়াও" বলে নেমে এলাম। বেশ কয়েক আঁটি শাক নিয়ে, একটু রাগ আর অভিমান মিশিয়ে বললাম "দাদা, তুমি গেল হপ্তায় আসো নি কেন? জানো, তোমার জন্য আমার কত অসুবিধা হয়েছে? একদিন তোমার জন্য অপেক্ষা করে করে তারপর বাজারে যেতে গিয়ে আমার লগ ইন করতে দেরি হয়ে গেছে। ভাগ্যিস, আমার অফিসের সবাই খুব ভাল, নইলে কি হতো বলো তো?"
আমার কথা শুনে একটুও বেজার হলেন না দাদা। বরং একগাল হাসলেন। তারপর বললেন "আর বলবেন না দিদি, আমার ছেলের কান্ড! সবে এই ক'মাস হলো উবের বাইক চালানো শুরু করেছে। তা, আমি বাড়িতে কিছু দিতেটিতে বলিনা। যতদিন পারি, একাই চালাই। ছেলেও দিচ্ছিল না টাকা। ওর মা রেগে যেত, বলতো ছেলে গোল্লায় যাবে এবার। আমি তাও কিছু চাইনি। হঠাৎ এই রোববারের আগের রোববার বাড়িতে মিস্ত্রি এনে হাজির! কি না, এতদিন ধরে টাকা জমাচ্ছিল, এবার আমাদের বাথরুমটা ঠিকঠাক করবে। আমাদের...ইয়ে...ওই বাংলা বাথরুম তো...ওর মায়ের অসুবিধা হয়...হেঁ হেঁ...ছেলে বলল শুধু মায়ের কেন, তোমার ও বয়স বাড়ছে, এত হাঁটাহাঁটি করো ভ্যান নিয়ে, পা ব্যথা হয় নিশ্চয়ই...তাই দুজনের জন্যই কমোড দরকার। তা, এক সপ্তাহ ধরে সেসব চলল। ভাগ্যিস পাশের বাড়ি ওদের বাথরুমে যেতে দিত আমাদের...তবে হ্যাঁ, খুব সুবিধা হয়েছে দিদি... হেঁ হেঁ...পাগল ছেলে...যা জমিয়েছিল, সব দিয়ে দিল... বলে আবার জমবে, কিন্তু তোমাদের সুস্থ থাকাটা আগে দরকার..."
আরও কিছু বলছিলেন উনি।
তোবড়ানো গালে হাসতে হাসতে।
সে হাসিতে জ্যোৎস্নার ঝিলিক!
পরনে মলিণ জামা, কিন্তু, হৃদয়ে মালিণ্য নেই এতটুকু!
মুখে 'পাগল ছেলে' কিন্তু... আসলে গর্বে উদ্বেলিত পিতৃহৃদয়।
আমরা সবাই চাই বাবা মা কে খুশি রাখতে। কেউ পারি, কেউ পারিনা। কিন্তু, বাবা মায়েরা বড্ড অল্পেতেই খুশি...। এই যেমন ইনি। বারবার মনে হচ্ছিল 'কমোডে খুব সুবিধা' ছাপিয়ে 'আমার ছেলে আমাদের কথা ভেবেছে' এতেই ওঁর যাবতীয় তৃপ্তি। এই ভাবনাতেই বড় সুখ!
আজ, আরও একবার ঈশ্বর আমাকে দেখিয়ে দিলেন রূপকথা হয়! রাজপুত্তুর রাজা-রানির জন্য জীবনের যুদ্ধ জয় করতে পারে, আর বলতে পারে "তোমাদের দুজনের দরকার ছিল, তাই..."। আর ভালবাসার উষ্ণতায় ভরে যেতে পারে হৃদয়...
জীবন কত্ত সাধারণ।
জীবন কত্ত সুন্দর!
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
অণুগল্প
কোমরটা একটু স্ট্রেচ করে নিল ঈশিতা। সকাল থেকে যা ঝড় বয়ে যায়, বাবা! এই এতক্ষণে একটু ফাঁকা হল, এবার একটু আয়েশ করে খবরের কাগজ পড়তে পড়তে কফি খাবে। তারপর স্নান করতে যাবে। চাট্টি খেতে না খেতেই তো আবার বিকেলের কাজ শুরু হয়ে যাবে। সে শেষ হতে হতে সেই রাত বারোটা।
ভাবতে ভাবতে নিজের মনেই একটু হাসল ও। এক বছর হতে চলল প্রায়!
গতবছরের বিশ্বজোড়া অতিমারি তে আরও অনেকের মতো চাকরি চলে গেছিল ওর ও। প্রথম তিনমাস ওয়ার্ক ফ্রম হোম তাই কম মাইনে, তারপর তো একটা মেইলেই পিংক স্লিপ!
কানাঘুষো চলছিল কদিন ধরেই। টানা তিনমাস ধরে কোনো ব্যবসা হয়নি, এদিকে অফিসের ভাড়া গুনতে হচ্ছে, তাই বোধহয় ছাঁটাই হবে। কিন্তু, দু বছর ধরে এক জায়গায় কাজ করার পরেও যে এরকম ভাবে একটা মেইল করে 'আর আসতে হবে না' বলা যায়, ও ভাবতেই পারেনি। আর তাই হয়ত অভিঘাত টাও বেশি হয়েছিল। এখনও মনে আছে, জুলাই মাস ই ছিল... প্রচন্ড রোদ ছিল। মেইলটা দেখে রাস্তায় বেরিয়ে গেছিল ও। খালি একটাই কথা ভাবছিল... এবার, এবার কি হবে? মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, রেজাল্ট ও সাদামাটা। বিয়ে থা করে সংসারী হবে ভেবে রেখেছিল, কিন্তু কলেজ পাশের পরে চাকরী করতে করতেই বাবার রাজরোগ ধরা পড়ল! ক্যানসার! স্টেজ থ্রি থেকে ফোর হতে সময় লাগেনি বিশেষ। কেমো, রে, ওরাল কেমো ইত্যাদির পরেও বাবা রইলেন মাত্র বছর খানেক। বাবা চলে গেলেন, সঞ্চয়টুকুও চলে গেল। তাও ভাগ্যিস, মাথার ওপরে ছাদ টা ছিল! তখনও মনে হত, একটা ভাল চাকরি হলে, দাঁড়িয়ে যাবে ঠিক... চাকরিটা পেয়ে মনে হয়েছিল এই তো, এবার আস্তে আস্তে জমাতে হবে টাকা...আর দুটো বছর...।
কিন্তু হায় হতোস্মি! দুবছর কাটার আগেই এসে গেল হাহাকারের দিন। আর... চাকরিটাও চলে গেল।
আজ ভাবতে দ্বিধা নেই, সেদিন মাকে "একটু আসছি দোকান থেকে" বলে বেরিয়ে এসেছিল ও। মাথা কাজ করছিল না তখন। বারবার মনে হচ্ছিল মাত্র কুড়ি হাজার আটশো টাকা জমা আছে অ্যাকাউন্টে... এটা শেষ হতে কতদিন আর? আর তারপর? তারপর? তারচেয়ে... কোনো চলন্ত বাসের সামনে যদি পড়ে যায়? বাস...ট্যাক্সি...যা হোক... এই টেনশান... 'কি হবে, কি হবে' র হাত থেকে তো মুক্তি পাওয়া যাবে! ভাবতে ভাবতেই চোখ কড়কড় করে উঠেছিল ওর...মা! মায়ের কি হবে! বাবা চলে গেছেন... ও এইভাবে চলে গেলে মা কি সামলাতে পারবেন? মা যে এমনিতেই একা হয়ে গেছেন বড্ড। অফিস থেকে ফিরতে ওর সামান্য দেরি হলেই চিন্তা করতেন, ফোন করে করে পাগল করে দিতেন... মায়ের কি হবে... উফ, কেন যে একটা ভাই, দাদা, দিদি, বোন... কিচ্ছু নেই ওর? কেন যে এত সাধারণ ও? নাচ গান ছবি আঁকা... কিচ্ছু পারে না! কোনোদিন আগ্রহও ছিল না এসবে। শুধু মায়ের দেখাদেখি রান্নাটা করতে ভালবাসত ও। বড় হয়ে 'বেলা দে' র রান্নার বই কিনে এনেছিল... তখন কতরকম রকমারি রান্না করেছে! চাকরি পাবার তিনমাস পরে একটা মাইক্রোওয়েভ ও কিনেছিল এইজন্য। ওদের সাদা কালো সংসারে একমাত্র রঙিন জিনিস!
ফাঁকা রাস্তা, লক ডাউন উঠে গেলেও বাস খুব কম চলছিল। তারমধ্যেও বারবার মনে হচ্ছিল ফুটপাথ থেকে নেমে যাই রাস্তায়... বাস টাস কিছু এসে ধাক্কা মারুক... মা কে মামারা দেখবেন না?
এইসব এতাল বেতাল ভাবনার মাঝেই জোরে ধাক্কা লেগেছিল একটা। একটি ছেলের সাথে। বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে দেখে ছেলেটি কাউকে বলছে "হ্যাঁ দাদা, এই তো আমি গলি থেকে বেরিয়ে বড় রাস্তায় এসে গেলাম, আপনি কোথায় আছেন...আচ্ছা...কোনো দোকান দেখতে পাচ্ছেন?" আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লাল জামা পরা ফুড ডেলিভারি অ্যাপের একটি ছেলে এসে ফোনে কথা বলা ছেলেটির হাতে কয়েকটি খাবারের প্যাকেট তুলে দিল। ছেলেটিও "থ্যাংকইউ দাদা" বলে চলে গেল।
...আজ একটি বছর পরে, ঈশিতা ভাবে, সেদিন ভাগ্যিস উদভ্রান্তের মতো বেরিয়ে গেছিল! তাই তো মাথায় আইডিয়াটা এসেছিল!
সেদিন বাড়ি ফিরে মা কে সব বলেছিল ও। চাকরি চলে যাবার ব্যাপার... আর নতুন পরিকল্পনার বিষয়ও। আর তার সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই শুরু করে দিয়েছিল "ঈশিতার রান্নাঘর"। প্রথমে সাধারণ মাছ, ডিম আর মুরগীর মাংসের থালি দিয়ে কাজ শুরু করেছিল। ভাত, ডাল, আলুভাজা, একটি তরকারি আর মাছ, ডিম বা মাংস...সাথে সামান্য স্যালাড...এই ছিল থালির উপকরণ। প্রথম প্রথম মা রান্না করতেন ও নিজেই কলেজজীবনে কেনা 'লেডিবার্ড' সাইকেল নিয়ে ডেলিভারি দিতে যেত। পাড়ার প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টে সস্তার হলুদ কাগজে কালো হরফে লেখা "ঈশিতার রান্নাঘর" এর পোস্টার ছাপিয়ে রাতের অন্ধকারে লাগিয়েছিল নিজেই। তারপর আস্তে আস্তে নাম হল। শনিবার - রবিবার খবরের কাগজের সাথে মেনুকার্ড পাঠাত। ফেসবুক, ইউটিউবে নিজের নামে চ্যানেল খুলে লাইভে রান্না দেখাত, মায়ের হাতে মোবাইল টা দিয়ে। মাস তিনেক এইভাবে চালানোর পরে ফুড ডেলিভারি অ্যাপের সাথেও পার্টনারশিপ হয়ে গেল । এখন একজন দিদি ও আছেন, যিনি কুটনো কুটে, বাটিতে বাটিতে খাবার ভরে প্যাকিং এর কাজে সাহায্য করেন। সকাল থেকেই এখন বড্ড ব্যস্ত থাকে ওরা সবাই। মা ও সব অবসাদ ঝেড়ে ফেলেছেন। সাধ্যমত সাহায্য করেন ওকে। রাতে মা মেয়ে যখন ঘুমোতে যান, শত ক্লান্তির মাঝেও তখন দুজনের মুখেই হাসি লেগে থাকে... সৎ মানুষের, হেরে না যাওয়া মানুষের জয়ের গর্ব লেপা থাকে সেই হাসিতে।
কফির কাপে শেষ চুমুক দিয়ে নিজের ফোনটা টেনে নেয় ঈশিতা। তারপর গুগল থেকে খুঁজতে থাকে রন্ধনশিল্পীর ছবি। আর মনে মনে বলতে থাকে -
"গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু
গুরু দেব মহেশ্বর I
গুরু সাক্ষাত পর্ ব্রহ্মা
তাস্মাই শ্রী গুরুরেব নমঃ II"
যাঁর বই পড়ে, শিখে আজ নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছে... গুরুপূর্ণিমার দিনে তাঁকে সম্মান না জানালে হয়?
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
#কথোপকথন
-" এক্সকিউজ মি! আপনি কি বাঙালি?"
-"হ্যাঁ, কেন বলুন তো?"
-"ইয়েস! ইয়েস! ইয়েস!"
-"এক্সকিউজ মি!"
-" স্যরি... আসলে নিজের সাথে বাজি ধরেছিলাম যে আপনি বাঙালি কিনা... আসলে বিদেশ বিভুঁইতে নিজের লোক পেলে যা মজা হয় না..."
-"আমি আপনার নিজের লোক না!"
-"হ্যাঁ তো! মানে, না তো! ইয়ে মানে বাঙালি বাঙালি একটা ইয়ে আর কি..."
-"ইয়ে, মানে?"
-"মানে ইয়ে...কিছু না!"
-"আশ্চর্য ইরিটেটিং পাবলিক তো!"
-"আ..আমি ইরিটেটিং? "
-"অফকোর্স! চেনা নেই শোনা নেই, 'নিজের মানুষ'! ডিসগাস্টিং!"
-"প্লিজ এভাবে বলবেন না...আমি একজন ভাল মানুষ। নিরীহ মানুষ।"
-"..."
-"ইয়ে... একটা কথা বলব? এটাই শেষ কথা, প্রমিস!"
-"বলুন"
-"গ্রাউন্ড ফ্লোর এসে গেল। আপনার শরীর এখন ঠিক লাগছে তো?"
-"মা...মানে?"
-"মানে... লিফটে উঠেই দেখলাম আপনি ভীষণ ঘামছেন... চোখ বন্ধ করে এই স্টিলের রডটাকে ধরে আছেন...এত সুন্দর ভিউ...তাও উল্টোদিকে ফিরে...তাই মনে হচ্ছিল আপনার বোধহয় বন্ধ, বদ্ধ জায়গায় থাকার ভয়, মানে ক্লসটোফোবিয়া আছে... তাই ভুলভাল কথা বলে ডিস্ট্র্যাক্ট করছিলাম... স্যরি..."
-"শুনুন, এই যে, এক্সকিউজ মি!"
-"হ্যাঁ, বলুন..."
-"আপনি ঠিক বলেছেন। আমি বদ্ধ জায়গায় ভয় পাই। তবে আজ...ভাগ্যিস আপনি ছিলেন..."
-""
-"আই অ্যাম স্যরি। রিয়েলি। খুব রুডলি কথা বলেছি আপনার সাথে..."
-"ইটস ওকে!"
-"নো ইট ইজ নট! আপনি অচেনা মানুষ হয়েও আমার সমস্যা বুঝে আমাকে হেল্প করলেন..."
-"আসলে...সত্যি বলতে কি...লিফটে ওঠার পর থেকেই আপনার দিক থেকে চোখ সরাতে পারিনি...তাই তো খেয়াল করলাম..."
-"তাইই বুঝি?"
-"হুম..."
-"স্টিল...আই ওয়াজ রুড। কফি অন মি? চলবে?"
-"দৌড়বে..."
-"চলুন তবে...নেক্সট স্ট্রিটে একটা ভাল ক্যাফে আছে..."
-"গ্রাউন্ড ফ্লোরে তো? নইলে তো আবার বকা খেতে হবে আপনার কাছে..."
-"হা হা হা!"
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
খাটিয়া-অলভ্য ঘোষ
ষোল তলায় দাঁড়িয়ে সুইসাইড করার আগে শেষবার আমারমনে হচ্ছে এ জীবনের টোটাল টাই বেকার হয়ে গেল । কিন্তু চেয়ে ছিলাম ষোল কলাপূর্ণ করতে । সবাই যেমন চায় । সবাই চায় দ্রুত উঁচুতে আরও উঁচুতেউঠতে।সূর্যের কাছে গেলে পুড়ে যাবে জেনেও। ওপর থেকে নিচেটা খুব ছোট দেখায় ।নিচের লোকরাও ওপরের লোকদের নির্ঘাত ছোট লোক বলে মনে করে উপরের মতো। যাইদেখাক না কেন ; আমার মতো বায়ন-কুলার দিয়ে তাদের কেউ আমার নিকটে আসার চেষ্টাকরলেও আত্মহত্যার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ তারা বুঝতে পারবে তারা কত সুখীএই ওপরের বহুমাত্রিক নিশাচর প্রাণীটার চাইতে ।
এই শহরের বুকে বড় বড় মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং প্রতিদিন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছেআকাশ ছোঁবে বলে। যত ওপরে উঠছে আকাশ ততো-দূরে যাচ্ছে পেছিয়ে ।হারিয়ে যাচ্ছেআকাশ ছুঁবার স্বপ্ন ছাদের তলায়। ব্যার্থ হচ্ছে সব আস্ফালন। এই পায়রার খোপেবন্দী জীবনে অতৃষ্ট হয়ে ;আমার মতো একদিন সবাই আত্মঘাতী হবে ওপর তলারমানুষেরা ! মগজে সাইবার কাফে আর শিরায় মেঘাসিটির ঘন কার্বনেটে জমা দুষিতঅ্যালকহল রক্ত বহন করে ; হৃদপিন্ডের বাইপাস সার্জারির পর দেখবে সবকিছু কতকম । প্রেম,ভালবাসা,বিশ্বাস । শুধু বেশি বুন বিষ যৌবন ।কামনা থেকে জাগ্রতপাশবিক হিংস্রতার জংলা গাছ সারা সমাজ টাকেই জঞ্জাল করে তুলেছে । ঝুপড়িরপাসে লাইট পোস্টের নিচে ; খাটিয়ার ওপর জড়াজড়ি করে শুয়ে ঘুমায় দুইজন শীতার্তমানুষ । নব দম্পতি বোধয় । জড়াজড়ির কায়দাটার মধ্যে যে আন্তরিকতা আছে,তাঅপটু নাবালকত্যপূর্ণ অথচ ভাব গভীর । যা বিবাহিত জীবনের বছর দুই তিন গড়ালেইআর থাকে না বলে আমার বিশ্বাস জন্মেছে । অবশ্য আমার বিশ্বাস টা একান্তব্যক্তিগত । এর ব্যতিক্রম নেই এমনটা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি না ।আমারবায়ন-কুলার টা আমি কিনেছিলাম বিয়ের পর হানিমুনে কাঞ্চনজঞ্জার অপরূপসৌন্দর্য কাছে এনে দেখবো বলে । ইডেনে শেষ ভারত পাকিস্তান টেস্ট-ম্যাচদেখেছি এটা দিয়ে ।কিন্তু কখনও ভাবতে পারিনি এটাই আমার চোখ খুলে এগিয়ে দেবেমৃত্যুর দিকে । কেন দেখতে গেলাম ! ষোল তলার ওপর যখন আমি আমার শোকেস টাতুলে-ছিলাম যে চার জোন মুঠে সেটা মাথায় করে এনেছিল তার মধ্যে ঐ লোকটা ছিল ;যে এখন বৌকে জড়িয়ে গভীর ঘুম ঘুমচ্ছে । ঘুমিয়ে পড়ার আগে একটা ছোট্ট চাদরযেটা দিয়ে এক জনেরী ঠিক ঠাক শরীর ঢাকা যায়না ; নিজের গা থেকে খুলে চুমুখেয়ে ঢেকে দিয়েছিল তার বৌয়ের গায়ে।মালা বদলের মতো বৌটা নিজের গা থেকে চাদরটা খুলে ঢেকে দিয়েছিল তার স্বামীকে। অবশেষে সহজ সমাধান ;জড়াজড়ি করে শুয়েপড়েছে একি চাদরের তলায় । অবিরত ছুটতে থাকা অশান্ত এই শহরে ওদের চোখেশান্তির ঘুম আসে । আমার চোখে ঘুমনেই । শ্যাম্পেন , কোনিয়্যাক , ব্র্যান্ডি , হোয়াইট –রেড ওয়াইন , রাম , ভদকা , হুইস্কি , জিন , টিকিলা ,মহুয়া ,হাঁড়িয়া,তাড়ি এমন কী জালেফ্লোন,সৌনাটা,রামেলটেওম,রোজেরেম , ট্রায়াজোলাম,হালসিওন ঘুমের ওষুধ গুলোও অতি ব্যাবহারে ফেল মেরে গেছে ।
-“এই বস্তির লোকটা আমাকে তোদের খাটিয়া টা দিবি ? আমার ডবল বেড্ বিছানা টা অবহেলায় ফাঁকা পড়ে আছে ;এই নিয়ে য়া । “আমি চেঁচাচ্ছি ;কিন্তু আমার বিন্দুবিসর্গ শব্দও পৌঁছচ্ছে না ওদের কানে ।দাঁড়া; ষোল তলা থেকে নেমে সুখের খোঁজে আমিও আসছি তোদের ঐ বস্তির আস্তা কুড়ে।বস্তির মাটিতে হাওয়ার সাথে যুদ্ধ করে শূন্য থেকে যখন ধপ করে পড়লাম ;খাটিয়াটা থেকে আমি হাত কুড়ি দূরে ।ঘুম ভেঙে লাফিয়ে উঠেছে খাটিয়ারসওয়ারীরা। আমার মাথার পিছনটা ফেটে ঘিলু বেড়িয়ে পড়েছে ;মল ,মূত্রের মতো আমারশরীরের দূষিত রক্ত বয়ে চলেছে বস্তির মাটিতে ।আঃ কি শান্তি !
-”এই তোদের খাটিয়া টায় আমাকে একটু ঘুমতে দিবি । আমি ঐ নোংরা খাটিয়াটায় শুতে চাইছি এটা তোদের সৌভাগ্য । ”আগের মতোই আমার এক বর্ণও পৌঁছচ্ছে না ওদের কানে । মানুষ আর মানুষের মাঝেরব্যবধান কিছুতেই কমছে না। এই প্রথম বুঝতে পারছি মানুষ মরে গেলে তার কথা আরকেউ শোনে না । মরে ব্যবধান বাড়ে; তবে বাঁচার মতো বাঁচায় ।সবাই ঘুম ভাঙ্গা চোখে ছোটা ছুটি করছে ; বলছে পুলিশে ফোন কর ।ওপর থেকে কেউধাক্কা মেরে ফেললো ? না পা হড়কে পড়ে গেল ? নাকি আত্ম হত্যা !
ধাক্কা আমি একটা খেয়েছি বটে ; তবে ময়নাতদন্তেও তা কেউ জানবে না ।জানলে ভাল হতো ; অন্তত সে ধাক্কা খাবার আগে বাকিরা সচেতন হতে পারতেন ।পুলিশের ডোম এসে পলিথিন প্যাকেটেতে মুড়ে ভ্যান রিক্সা করে আমার বডিটা তুলেনিয়ে যাচ্ছে । খাটিয়া টা এখন শূন্য পড়ে । আমার স্ত্রী ও দেখছি খবর টা পেয়েছুটে এসেছে ;বাপের বাড়ির সুখ ঘুম ফেলে । সাথে আমার শ্বশুর শাশুড়িওআছেন।আমার বৌ ফ্ল্যাটের সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে আমার ফ্লোরের ডুপ্লিকেটচাবি টা নিচ্ছে । অরিজিনাল টা কতবার ওকে দিতে চেয়েছি ; কোনদিন নিলো না ।এবার মর্গ থেকে শ্মশানে । প্লীজ স্বর্গ রথের বদলে আমাকে একটা খাটিয়ায় নিয়েযেও । খরচ কম শান্তি বেশি । শান্তির মূল্য সামান্য আমি মরার পর বুঝেছি।
(সংগৃহীত গল্প)
Posts: 650
Threads: 0
Likes Received: 798 in 496 posts
Likes Given: 1,119
Joined: Mar 2021
Reputation:
87
(21-10-2020, 03:02 PM)ddey333 Wrote: ভালো -বাসা
আজ চতুর্থী। সক্কাল থেকে শরতের সোনা রোদ্দুর আকাশ ছুঁয়ে ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে, আদুরে বিড়ালের মতো। আর, সেই মেঝেতে বসে একমনে মোচা কাটছিলেন সুলেখা।
এবারের সব যেন কেমনতর। দিব্যি একটা ভালো বছর শুরু হলো। তারপর ই সব শেষ! পুজোটাও ঘরে বসেই কাটাতে হবে। একটাও নতুন জামা-কাপড় কেনেন নি ওঁরা কেউ। ইচ্ছে করেই...মেয়ের জন্য অনলাইনে ফ্রক আর গাউন আনিয়েছেন, ওঁরা কর্তা -গিন্নি কিচ্ছু কেনেন নি...বলা নেই কওয়া নেই কর্তার অফিস মাইনে কমিয়ে দিয়েছে অনেকটা। সবমিলিয়ে চাপ যাচ্ছে বড্ড।
তাও, মা আসছেন...মন খারাপ করে থাকলে কী হয়! আসল আনন্দ তো মনে! তাই আজ চা খেতে খেতে বিকাশ বাবুকে সুলেখা বলেছিলেন "শোনো, পারলে বাবুর জন্য একটা ক্যাপ বন্দুক এনো তো! এবার তো বেরোনো নেই, তাও বারান্দা থেকেই না হয় ফাটাবে বন্দুক!" শুনে বিকাশ বাবু ভুরু কুঁচকে একটা "হুম" বলে চলে গেলেন। একবার ও বললেন না "সুলেখা, তোমার জন্য কিছু আনব? তুমিও তো নতুন কিচ্ছু কেনো নি এবার!" উনি তো "না" ই বলতেন...তবু...শুনতে তো ভালো লাগত!
ভাবতে ভাবতেই, সেই পুরোনো দিন গুলোতে ফিরে যাচ্ছিলেন সুলেখা। বিকাশের সাথে প্রথমবার দেখা পাড়ার পুজো প্যান্ডেলে। বিকাশ ভলিন্টিয়ার ছিলেন... আর তখন খুব ই বিরক্তিকর লেগেছিল ওঁর হাবভাব! বাজখাঁই গলায় "লাইনে দাঁড়ান" বলে চিৎকার। তবে, অষ্টমীর অঞ্জলিতে অত ভিড়েও ওনার হাতেই সব্বার আগে ফুল-বেলপাতা দিচ্ছিলেন বিকাশ। নবমীতে পাড়ার খাওয়া দাওয়াতেও দুটো বেগুনি পড়েছিল পাতে! সেই থেকেই শুরু হয়েছিল নতুন শাড়ি আর পাঞ্জাবির সোহাগের!
তা, নতুন শাড়ি এখন পুরোনো হয়ে গেছে!বারো বছর কেটে গেছে বিয়ের। সেদিনের ষোড়শী চল্লিশ পেরিয়েছেন জুলাইতে। তাই হয়ত থোড় - বড়ি -খাড়ার জীবনে আজ মোচা কাটতে হচ্ছে।
জীবনের ধর্মই পরিবর্তন, তাও কেন কে জানে চোখে জল আসছিল সুলেখার। পুরোনো দিন গুলো কেন যে পুরোনো হয়ে যায় এভাবে! মানুষ যে কেন পুরোনো হয়ে যায়!
কাটাকুটি শেষ, এবার রান্না বসানোর পালা। সব ই একা হাতে করতে হয়। ছেলের অনলাইন ক্লাস চলছে, আজ ই শেষ ক্লাস পুজোর আগে। আর বিকাশ এখন ভলিন্টিয়ার থেকে ক্লাবের পান্ডা। আজ ওঁর ওয়ার্ক ফ্রম হোমে দিন ছিল, কিন্তু "ও আজ মোবাইল থেকে ম্যানেজ করে দেব" বলে বেরিয়ে গেছেন উনিও। উনি না থাকলে তো পুজোই হবে না! কত্ত ব্যবস্থাপনা বাকি!
গ্যাস জ্বালিয়ে কড়া বসিয়েছেন সুলেখা...হঠাৎ শুনলেন পাড়ার ক্লাবে বেজে উঠল "আজ এই দিনটাকে মনের খাতায় লিখে রাখো...আমায় পড়বে মনে কাছে দূরে যেখানেই থাকোওওও..."
আরে এ তো সেই গানটা! যে গান বাজিয়ে ওঁকে প্রপোজ করেছিলেন বিকাশ! চোখে চোখে কথা হলেও 'হ্যাঁ' বলতে সময় নিচ্ছিলেন উনি...। আর তখনই...। এরপরেই বিকাশ চালিয়েছিলেন "আর কত রাত একা থাকব...!"
ভাবতে ভাবতেই মুখটা লাল হয়ে গেল সুলেখার। কতবছর আগের কথা...সেই ১৯৯৭/৯৮... আর এখনও সেই এক শিহরন...সেই এক আনন্দ...
বিকাশের ক্লাবে আশা ভোঁসলে তখন গাইছেন "এমন লগ্ন পেয়ে কি করে বলো
নিজেকে সরিয়ে আমি রাখবো
আর কত রাত একা থাকবো
আর কত রাত একা থাকবো"
সেদিনের ষোড়শী ৪০ পেড়িয়েছেন আর তাদের বিবাহিত জীবন ১২ বছরের।তাহলে কি এটা দ্বিতীয় বিয়ে নাকি উনি ২৭-২৮ বছরে বিয়ে করেছিলেন? আর তাই যদি হয় তাহলে ২৮ বছরের মহিলা ষোড়শী কিভাবে হয়?হ্যাঁ তারা যদি ১২ বচ্ছর প্রেম করার পর বিয়ে করেন তাহলে হিসেবে মেলে।
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(29-07-2021, 11:05 AM)Ankit Roy Wrote: সেদিনের ষোড়শী ৪০ পেড়িয়েছেন আর তাদের বিবাহিত জীবন ১২ বছরের।তাহলে কি এটা দ্বিতীয় বিয়ে নাকি উনি ২৭-২৮ বছরে বিয়ে করেছিলেন? আর তাই যদি হয় তাহলে ২৮ বছরের মহিলা ষোড়শী কিভাবে হয়?হ্যাঁ তারা যদি ১২ বচ্ছর প্রেম করার পর বিয়ে করেন তাহলে হিসেবে মেলে।
ওতো জটিল হিসাব কিতাব আমার মাথায় ঢোকে না ...
কিন্তু গল্পটা আপনি এতো মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন দেখে খুব ভালো লাগলো !!
•
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(12-02-2021, 03:47 PM)ddey333 Wrote:
image hosting service
এর মানে হলো --- প্রীতম বাঁ হাতে লেখে । তাইতো !
❤❤❤
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(03-08-2021, 08:21 PM)Bichitravirya Wrote: এর মানে হলো --- প্রীতম বাঁ হাতে লেখে । তাইতো !
❤❤❤
হ্যাঁ , তাই তো মনে হচ্ছে ... আগে খেয়াল করিনি ব্যাপারটা !!!
•
Posts: 3,682
Threads: 14
Likes Received: 2,558 in 1,403 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
04-08-2021, 04:32 PM
(This post was last modified: 04-08-2021, 04:34 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(10-05-2021, 10:25 AM)dada_of_india Wrote: বাস্তব কাহিনী:-
########################
সম্রাট : বয়স কত ?
স্বপ্না : কেন বাবু, বয়স শুনলে ২০০ আরো বেশি দেবেন ?
সম্রাট : নাম ?
স্বপ্না : কেনো নাম দিয়ে ধুয়ে খাবেন ?স্বপ্না আমার নাম ….
সম্রাট : এমন ভাবে কথা বলছো কেন ?
সেই ভুল টা আপনি ৫ মিনিটেই ভেঙে দিলেন.. যেটা পয়সার থেকেও অনেক দামি ….যান বাবু, ভালো থাকবেন আপনার উত্তরা কে নিয়ে …আর অনেক ধন্যবাদ এই সত্যিটা আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে যাবার জন্য “সব পুরুষ সমান নয়” …..কেউ রেখে যায়, কেউ নিয়ে যায় ….কেউ রাখতে আসে, কেউ ফেরাতে আসে... ❤️
এটা বেশ মন ছুলো, ভালো লাগলো
লাইক রেপু দিলাম।
❤❤❤
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
#আলোর_ঠিকানা
#রূপান্বিতা
মাথায় পেঁচিয়ে রাখা ভিজে গামছাটা খুলে চুল মুছতে মুছতে আন্নার দিকে তাকালো চামেলি। চুল আগের চেয়ে পাতলা হয়েছে অনেক, তাও গোছ আছে বেশ! চুল মুছে, গামছাটা নিংড়াতে নিংড়াতে দেখে আন্না ওর দিকেই তাকিয়ে আছে, মুখে একটা কেমন হাসি!
"কি রে, হাসছিস কেন?"
"তোর 'সে' এয়েচে রে...আজ আবার বাজারের ব্যাগ এনেচে...জানি না সেই ব্যাগে কি আচে..."আন্নার হাসি আর থামেই না।
"কোথায় তিনি"?
"তোর ঘরে...হা হা, আমাকে আবার জিজ্ঞেস করল 'তোমার দিদির ঘরে একটু বসি?' আমার জাঁইবাবু!" অশ্লীল ভাবে হাসল আন্না।
দড়িতে গামছা আর কাচা শাড়ি জামা গুলো মেলতে মেলতে একটু থমকে গেল চামেলি।
এই ক' মাস হলো লোকটা আসছে ওর ঘরে। রোগাসোগা মানুষ, কেমন ভিজে বিড়ালের মতো চেহারা। দেখে মনে হয় না, এমন মানুষ যে এই পাড়ায় আসতে পারে। কিন্তু এই তিন চার বছরে, মানে যবে থেকে এখানে আছে চামেলি, এরকম যে কত দেখল! দেখে মনে হবে ছেলে-মেয়ে-সংসার ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না, এদিকে এখানে আসা চাই! তা বলতে নেই, এমনিধারা লোকেদের জন্যই তো চামেলিদের পেট ভরে। তাই, এই লোকটাকে প্রথমদিন দেখেও তেমনি মিটমিটে শয়তান বলে মনে হয়েছিল। তাই অভ্যাস মতো মোহিনী হেসে এগিয়ে গেছিল লোকটার দিকে। আর, ওর দিকে এক পলক তাকিয়ে মাথা নীচু করে ফেলেছিল লোকটা।
"কি গো বাবু, লজ্জা পেলে? নাকি আমাকে পছন্দ হচ্ছে না?" স্বভাব মতো হেসে হেসে বলেছিল চামেলি। সেই তো শাড়ি খুলবে, তার জন্য কত ঢং!
"আ...আপনার নাম কী?" কেমন তোতলাতে তোতলাতে বলেছিল লোকটা।
শুনে খিলখিল করে হেসে উঠেছিল চামেলি। তারপর বলেছিল "রাতের পরীদের আবার নাম! তা বাবু, তোমার কোন হিরোইন পছন্দ? দীপিকা না করিনা না ক্যাটরিনা? সেই নামটাই আমার ধরে নাও!"
ওর কথা শুনে আরো চুপসে গেছিল লোকটা।
ততক্ষণে নিজেই শাড়ি খুলতে শুরু করে দিয়েছিল চামেলি। সবে সন্ধ্যে, একে মিটিয়ে নিলে আরো এক -দু'জনের জন্য অপেক্ষা করা যেতে পারে।
"শুনুন, আ - আমি এসব করতে আসিনি...আপনি আমাকে একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দেবেন?" যেন অনেক সাহস নিয়ে বলেছিল লোকটি।
"মাথায় হাত বুলিয়ে মানে!" অবাক হয়ে গেছিল চামেলি।
"আমি খুব একা...বিয়ে থা করিনি, সামান্য সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করি, রাতে ডিউটি থাকে। মা চলে গেলেন গেল বছর..সেই থেকে বাড়ি যেতেও ইচ্ছে করে না..ভাই ভাই বৌ বিরক্ত হয় আমি গেলে, বুঝতে পারি..." এসব রামকাহিনীতে আগ্রহ নেই চামেলির, তবু কেন জানি না শুনে কষ্ট হচ্ছিল বড্ড। আর কেন জানি না, নিজের কোল পেতে দিয়েছিল সেই অচেনা মানুষটির জন্য।
তারপর থেকে এই মাস তিনেকের মধ্যে বার চারেক এসেছে লোকটা ওর ঘরে। কোনোবার ই খালি হাতে আসেনি। একবার কানের গলার সেট,যেরকম ফুটপাতে পাওয়া যায়, তেমন এনেছে, একবার একটা ক'টা টিপের পাতা। এসব দেখে হাসতে গিয়েও হাসেনি চামেলি। লোকটা ওর যা পাওনা সেটা ঠিক দিয়ে যায়, তবে কোনোবার হাতে দেয় না, বালিশের নিচে রেখে যায়। প্রথম দু বার গুনে নিয়েছিল চামেলি। তিনবারের বার থেকে আর গোনেনি। ইচ্ছে করেনি। মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া, অফিসের কোন বাবু কী বললেন, সেইসব গল্প শোনার জন্য টাকা নিয়ে আবার সেই টাকা কি গোনা যায়? আর, লোকটা আসেও দুপুর দুপুর বা বিকেল বিকেল, এখান থেকেই কাজে যায়।"আবার আসব তাড়াতাড়ি" বলে হাত নেড়ে বেরিয়ে যায়... দেখে কেমন মায়া হয় চামেলির। কেন কে জানে, সেই ফেলে আসা জীবনের কথা মনে পড়ে। এভাবেই তো সংসারী মানুষেরা অফিস কাছারি যায়...।
নিজের একচিলতে ঘরটায় ঢুকে চামেলি দেখে ওর তক্তপোষে বসে আছে লোকটা। ফ্যান চলছে, তাও ঘাম পড়ছে কপাল, গলা গড়িয়ে। ওকে দেখেই একগাল হাসল লোকটা।
"তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে আজ" কেমন ঘোরলাগা আওয়াজ।
শুনে লজ্জা পেল চামেলি। এটা দুপুরে খাওয়া দাওয়ার সময়। স্নান করে বেরিয়েছে সবে। শড়িটাও এলোথেলো করে পরা।
"কি যে বলেন?"
"সত্যি বলছি চামেলি...আজ তোমাকে...মা মা লাগছে...এইভাবে শাড়ি পরা, ভিজে চুল..." বলতে বলতেই থেমে গেল লোকটি। যেন বুঝে গেল 'মা' আর 'গনিকা' এক না!
"তা আজ এইসময়ে কী মনে করে?" ইচ্ছে করেই একটু রুক্ষ হলো ও।
"আজ...ইয়ে, তোমাকে একটা জিনিস দেবার ছিল...সামনে পুজো...এই যে এটা...জানি না, তোমার পছন্দ হবে কিনা..."
তাকিয়ে দেখে একটা লাল সিন্থেটিক সিল্কের শাড়ি। সাথে লাল টিপ আর একটা আলতার শিশি।
লাজুক মুখে ওর দিকে তাকিয়ে লোকটা বলছে "তুমি এত সুন্দর...শাড়ি তো বুঝিনা আমি, তবে এই শাড়িটা দেখে মনে হলো, তোমাকে পরলে মা দুগ্গার মতোই লাগবে...তাই আর কী...আর টিপটাও, আলতাটা...ইয়ে মানে..."
"আপনি বিয়ে করেননি কেন,আর আপনি আমার কাছেই আসেন কেন? এত জিনিস নিয়ে?" কোনোদিন কাউকে ব্যক্তিগত কথা জিজ্ঞেস করে না, কিন্তু আজ করেই ফেলল চামেলি।
লোকটা একটু চুপ করে থেকে বলে উঠল "কেউ তো দিলই না বিয়ে! আমি বোকা মানুষ, যা মাইনে পাই, তাতে সংসার করার উপায় নেই...কেউ ভাবেইনি আমার ও একটা সুখ দুঃখের কথা বলার কেউ লাগতে পারে। তাও, মা যদ্দিন ছিলেন...মাকে বলতাম...তারপর তো মা চলে গেলেন, কথা বলার কেউ নেই, যে মেসে থাকি, সেখানের একজন বলায় এখানে এলাম... তোমার কাছেই প্রথম এসেছি...তুমি কোলে শুতে দিলে, সব কথা শুনলে...তোমার কাছে এলে মনে হয় আমার কলিগদের মতো,ওরা যেমন সপ্তায় সপ্তায় বাড়ি যায়, বৌ, বাচ্চার কাছে, তেমনি আমিও এসেছি তোমার কাছে..."
শুনতে শুনতে সবকিছু ঝাপসা দেখছিল চামেলি। বোকা কোথায়, সামনে তো একজন গোটা মানুষ, যে ওকে নিছক বাজারি মেয়ে না ভেবে...স্ত্রীয়ের মতো কেউ ভেবেছে! আর একসময়ে যার হাত ধরে ঘর ছেড়েছিল, সে এখানে বিক্রি করে দিয়ে গেছিল...
"সুন্দর হয়েছে শাড়ি, তুমি একটু বসো, আমি একটু ভাত বেড়ে আনি, দুপুরে কিছু খাওয়া হয়নি নিশ্চয়ই? এসো, আগে খেয়ে নাও,,তারপর তোমায় মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেব..." বলতে বলতে ছোট্ট বারান্দায় চলে যায় চামেলি। কলাইয়ের থালায় ভাত, ডাল আর শাকভাজা বাড়ে...আজ ওঁর সাথে এক থালাতেই খাবে চামেলি...না না, চামেলি না, কৃষ্ণা...সেই কৃষ্ণা, সংসার করবে বলে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতে দেখতে যার জীবনটাই অন্ধকার হয়ে গেছে...
আর...ঘরে একটু আলো দেখা যাচ্ছে... ভালোবাসার ওম আছে সে আলোতে...।।
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(07-08-2021, 11:41 AM)ddey333 Wrote: #আলোর_ঠিকানা
#রূপান্বিতা
মাথায় পেঁচিয়ে রাখা ভিজে গামছাটা খুলে চুল মুছতে মুছতে আন্নার দিকে তাকালো চামেলি। চুল আগের চেয়ে পাতলা হয়েছে অনেক, তাও গোছ আছে বেশ! চুল মুছে, গামছাটা নিংড়াতে নিংড়াতে দেখে আন্না ওর দিকেই তাকিয়ে আছে, মুখে একটা কেমন হাসি!
"কি রে, হাসছিস কেন?"
"তোর 'সে' এয়েচে রে...আজ আবার বাজারের ব্যাগ এনেচে...জানি না সেই ব্যাগে কি আচে..."আন্নার হাসি আর থামেই না।
"কোথায় তিনি"?
"তোর ঘরে...হা হা, আমাকে আবার জিজ্ঞেস করল 'তোমার দিদির ঘরে একটু বসি?' আমার জাঁইবাবু!" অশ্লীল ভাবে হাসল আন্না।
দড়িতে গামছা আর কাচা শাড়ি জামা গুলো মেলতে মেলতে একটু থমকে গেল চামেলি।
এই ক' মাস হলো লোকটা আসছে ওর ঘরে। রোগাসোগা মানুষ, কেমন ভিজে বিড়ালের মতো চেহারা। দেখে মনে হয় না, এমন মানুষ যে এই পাড়ায় আসতে পারে। কিন্তু এই তিন চার বছরে, মানে যবে থেকে এখানে আছে চামেলি, এরকম যে কত দেখল! দেখে মনে হবে ছেলে-মেয়ে-সংসার ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না, এদিকে এখানে আসা চাই! তা বলতে নেই, এমনিধারা লোকেদের জন্যই তো চামেলিদের পেট ভরে। তাই, এই লোকটাকে প্রথমদিন দেখেও তেমনি মিটমিটে শয়তান বলে মনে হয়েছিল। তাই অভ্যাস মতো মোহিনী হেসে এগিয়ে গেছিল লোকটার দিকে। আর, ওর দিকে এক পলক তাকিয়ে মাথা নীচু করে ফেলেছিল লোকটা।
"কি গো বাবু, লজ্জা পেলে? নাকি আমাকে পছন্দ হচ্ছে না?" স্বভাব মতো হেসে হেসে বলেছিল চামেলি। সেই তো শাড়ি খুলবে, তার জন্য কত ঢং!
"আ...আপনার নাম কী?" কেমন তোতলাতে তোতলাতে বলেছিল লোকটা।
শুনে খিলখিল করে হেসে উঠেছিল চামেলি। তারপর বলেছিল "রাতের পরীদের আবার নাম! তা বাবু, তোমার কোন হিরোইন পছন্দ? দীপিকা না করিনা না ক্যাটরিনা? সেই নামটাই আমার ধরে নাও!"
ওর কথা শুনে আরো চুপসে গেছিল লোকটা।
ততক্ষণে নিজেই শাড়ি খুলতে শুরু করে দিয়েছিল চামেলি। সবে সন্ধ্যে, একে মিটিয়ে নিলে আরো এক -দু'জনের জন্য অপেক্ষা করা যেতে পারে।
"শুনুন, আ - আমি এসব করতে আসিনি...আপনি আমাকে একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দেবেন?" যেন অনেক সাহস নিয়ে বলেছিল লোকটি।
"মাথায় হাত বুলিয়ে মানে!" অবাক হয়ে গেছিল চামেলি।
"আমি খুব একা...বিয়ে থা করিনি, সামান্য সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করি, রাতে ডিউটি থাকে। মা চলে গেলেন গেল বছর..সেই থেকে বাড়ি যেতেও ইচ্ছে করে না..ভাই ভাই বৌ বিরক্ত হয় আমি গেলে, বুঝতে পারি..." এসব রামকাহিনীতে আগ্রহ নেই চামেলির, তবু কেন জানি না শুনে কষ্ট হচ্ছিল বড্ড। আর কেন জানি না, নিজের কোল পেতে দিয়েছিল সেই অচেনা মানুষটির জন্য।
তারপর থেকে এই মাস তিনেকের মধ্যে বার চারেক এসেছে লোকটা ওর ঘরে। কোনোবার ই খালি হাতে আসেনি। একবার কানের গলার সেট,যেরকম ফুটপাতে পাওয়া যায়, তেমন এনেছে, একবার একটা ক'টা টিপের পাতা। এসব দেখে হাসতে গিয়েও হাসেনি চামেলি। লোকটা ওর যা পাওনা সেটা ঠিক দিয়ে যায়, তবে কোনোবার হাতে দেয় না, বালিশের নিচে রেখে যায়। প্রথম দু বার গুনে নিয়েছিল চামেলি। তিনবারের বার থেকে আর গোনেনি। ইচ্ছে করেনি। মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া, অফিসের কোন বাবু কী বললেন, সেইসব গল্প শোনার জন্য টাকা নিয়ে আবার সেই টাকা কি গোনা যায়? আর, লোকটা আসেও দুপুর দুপুর বা বিকেল বিকেল, এখান থেকেই কাজে যায়।"আবার আসব তাড়াতাড়ি" বলে হাত নেড়ে বেরিয়ে যায়... দেখে কেমন মায়া হয় চামেলির। কেন কে জানে, সেই ফেলে আসা জীবনের কথা মনে পড়ে। এভাবেই তো সংসারী মানুষেরা অফিস কাছারি যায়...।
নিজের একচিলতে ঘরটায় ঢুকে চামেলি দেখে ওর তক্তপোষে বসে আছে লোকটা। ফ্যান চলছে, তাও ঘাম পড়ছে কপাল, গলা গড়িয়ে। ওকে দেখেই একগাল হাসল লোকটা।
"তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে আজ" কেমন ঘোরলাগা আওয়াজ।
শুনে লজ্জা পেল চামেলি। এটা দুপুরে খাওয়া দাওয়ার সময়। স্নান করে বেরিয়েছে সবে। শড়িটাও এলোথেলো করে পরা।
"কি যে বলেন?"
"সত্যি বলছি চামেলি...আজ তোমাকে...মা মা লাগছে...এইভাবে শাড়ি পরা, ভিজে চুল..." বলতে বলতেই থেমে গেল লোকটি। যেন বুঝে গেল 'মা' আর 'গনিকা' এক না!
"তা আজ এইসময়ে কী মনে করে?" ইচ্ছে করেই একটু রুক্ষ হলো ও।
"আজ...ইয়ে, তোমাকে একটা জিনিস দেবার ছিল...সামনে পুজো...এই যে এটা...জানি না, তোমার পছন্দ হবে কিনা..."
তাকিয়ে দেখে একটা লাল সিন্থেটিক সিল্কের শাড়ি। সাথে লাল টিপ আর একটা আলতার শিশি।
লাজুক মুখে ওর দিকে তাকিয়ে লোকটা বলছে "তুমি এত সুন্দর...শাড়ি তো বুঝিনা আমি, তবে এই শাড়িটা দেখে মনে হলো, তোমাকে পরলে মা দুগ্গার মতোই লাগবে...তাই আর কী...আর টিপটাও, আলতাটা...ইয়ে মানে..."
"আপনি বিয়ে করেননি কেন,আর আপনি আমার কাছেই আসেন কেন? এত জিনিস নিয়ে?" কোনোদিন কাউকে ব্যক্তিগত কথা জিজ্ঞেস করে না, কিন্তু আজ করেই ফেলল চামেলি।
লোকটা একটু চুপ করে থেকে বলে উঠল "কেউ তো দিলই না বিয়ে! আমি বোকা মানুষ, যা মাইনে পাই, তাতে সংসার করার উপায় নেই...কেউ ভাবেইনি আমার ও একটা সুখ দুঃখের কথা বলার কেউ লাগতে পারে। তাও, মা যদ্দিন ছিলেন...মাকে বলতাম...তারপর তো মা চলে গেলেন, কথা বলার কেউ নেই, যে মেসে থাকি, সেখানের একজন বলায় এখানে এলাম... তোমার কাছেই প্রথম এসেছি...তুমি কোলে শুতে দিলে, সব কথা শুনলে...তোমার কাছে এলে মনে হয় আমার কলিগদের মতো,ওরা যেমন সপ্তায় সপ্তায় বাড়ি যায়, বৌ, বাচ্চার কাছে, তেমনি আমিও এসেছি তোমার কাছে..."
শুনতে শুনতে সবকিছু ঝাপসা দেখছিল চামেলি। বোকা কোথায়, সামনে তো একজন গোটা মানুষ, যে ওকে নিছক বাজারি মেয়ে না ভেবে...স্ত্রীয়ের মতো কেউ ভেবেছে! আর একসময়ে যার হাত ধরে ঘর ছেড়েছিল, সে এখানে বিক্রি করে দিয়ে গেছিল...
"সুন্দর হয়েছে শাড়ি, তুমি একটু বসো, আমি একটু ভাত বেড়ে আনি, দুপুরে কিছু খাওয়া হয়নি নিশ্চয়ই? এসো, আগে খেয়ে নাও,,তারপর তোমায় মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেব..." বলতে বলতে ছোট্ট বারান্দায় চলে যায় চামেলি। কলাইয়ের থালায় ভাত, ডাল আর শাকভাজা বাড়ে...আজ ওঁর সাথে এক থালাতেই খাবে চামেলি...না না, চামেলি না, কৃষ্ণা...সেই কৃষ্ণা, সংসার করবে বলে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতে দেখতে যার জীবনটাই অন্ধকার হয়ে গেছে...
আর...ঘরে একটু আলো দেখা যাচ্ছে... ভালোবাসার ওম আছে সে আলোতে...।।
কিছু গল্প হয় যেগুলো সোজা বুকের বাঁদিকে মোচড় দিয়ে যায়... এই কাহিনী.... কাহিনী? নাকি বাস্তব? সেইরকমই ❤
রিপুর থেকে বেরিয়ে এই পুরুষ নারী শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসার কাঙাল. অসাধারণ.....
বন্ধ মনের দুয়ার দিয়েছি খুলে
এসেছে ফাগুন হওয়া,
এখন সবই দেবার পালা
নেই তো কিছু চাওয়া
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(07-08-2021, 11:55 AM)Baban Wrote: কিছু গল্প হয় যেগুলো সোজা বুকের বাঁদিকে মোচড় দিয়ে যায়... এই কাহিনী.... কাহিনী? নাকি বাস্তব? সেইরকমই ❤
রিপুর থেকে বেরিয়ে এই পুরুষ নারী শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসার কাঙাল. অসাধারণ.....
বন্ধ মনের দুয়ার দিয়েছি খুলে
এসেছে ফাগুন হওয়া,
এখন সবই দেবার পালা
নেই তো কিছু চাওয়া
সত্যি বড়ো অদ্ভুত সুন্দর গল্পটা ,
ব্যতিক্রমী সম্পর্ক নিয়ে একটি ছোট গল্পের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান পেয়েছে এটি ....
|