Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller RE: '' মিকি মাউস '' (সমাপ্ত ) ।
#41
[Image: micky-1.jpg]

পর্ব ৭।

------------------------- ।

মিস শালিনী কোনদিনই ছেলেদের পছন্দ করতো না কারন সে ছোট থেকেই দেখেছিলো যে তার বাবা কীভাবে নিত্যনতুন গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে বাড়ীতে নোংরামির আসর বসাতো আর সে বাচ্চা অবস্থায় এটাও চোখের সামনে দেখেছে সেই আসরের প্রতিবাদ করলে তাঁর মাকে ঠিক কতটা অত্যচার সহ্য করতে হতো ।
শালিনী নিজের চোখেই দেখেছিলো যে তার মা কীভাবে তিল তিল করে শেষ হয়ে গেছিলো, সেই ব্যাভিচারি বাবার প্রতি ঘৃণাতেই শালিনী নিজেকে আজ ঘোরতর পুরুষ বিদ্বেষী করে তুলেছিল। নিশিকান্তর কথাতে এইবার শালিনী আবার বর্তমানে ফেরত আসে, শালিনী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে নিশিকান্ত আবার বলে
'' ম্যাডাম আমার মনে হয় ওই শুয়োরের বাচ্চা সুমিতকে আমাদের ইমিডিয়েট গ্রেফতার করা উচিত, কারন আমার কাছে পুরো প্রমান আছে ওর বিরুদ্ধে ''। পুরনো কথা মনে পড়ে যাওয়াতে শালিনী এমনিতেই একটু বিষণ্ণ বোধ করে তার উপর নিশিকান্তর মুখে খিস্তি শুনে শালিনী এইবার একটু বিরক্ত হয়েই বলে
'' আপনি তখন থেকে শুধু বলে যাচ্ছেন যে সুমিত দোষী, আপনার কাছে প্রমান আছে টা কি প্রমান আপনার কাছে আছে তা শুনি!''। শালিনীর বিরক্তি নিশিকান্তের চোখে ভালোই ধরা পড়ে কিন্তু সে রাগে না কারন সে জানে এর পড়ে সে যা বলতে চলেছে সেটা শুনেই ম্যাডামের চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে। নিশিকান্ত অল্প হেসে প্রত্যায় এর সঙ্গে  বলে  '' ম্যাডাম এখন মডার্ন টেকনোলজির যুগ তাই অপরাধী অন্যায় করে ছাড়া পাবেনা, লাস্ট চারটে মৃত্যুর সময় আমাদের সুমিত বাবুকে কেউ কেউ দেখেছে সেই নদীর পাড়ে ঘুরতে।  দ্বিতীয়ত সুমিত নিজে থার্ড ইয়ার অব্দি ডাক্তারি পড়ে ছেড়ে দেয় আর মৃত্যুগুলো যে রকম জটিল তাতে এটা যে একদম পাকা হাতের কাজ তা তো বোঝায় যায় আর .........''
বলতে বলতেই নিশিকান্ত কে এবার থামতে হয় কারন তখন ঘরে সহায় সাহেব ঢুকেছেন।  তিনি ঢুকেই বলে উঠেন '' কি হলও নিশি তুমি থামলে কেন? ভালোই তো বলছিলে বাকিটা বলো ''।
নিশিকান্ত সহায় সাহেবের ভরসা পেয়ে আবার বলতে শুরু করে, সে বলে '' ম্যাডাম আর সহায় সাহেব আপনারা দুজনেই যখন এখানে আছেন তখন ভালোই হলো, আমার সন্দেহের কথা ভালো করেই আপনাদের কাছে ব্যাক্ত করবো। আমার প্রথম মৃত্যুর পরেই একটা সন্দেহ মনে দানা বাধে তবে দ্বিতীয় মৃত্যুর পড়ে সেই ধারনাটা আমার আরও পোক্ত হয়ে যায়। দুজন ছেলেমেয়ে মারা গেলো একি রকম সিম্পটম, একি ধরনের পোশাক আসাক, পড়াশোনার ধরনও প্রায় এক । তবে এই মৃত্যুর পেছনে লুকিয়ে থাকা মানুষটি নিজেকে খুবই বুদ্ধিমান/ বুদ্ধিমতি মনে করেন কারন এই মৃত্যুগুলো যে খুন আমি অবশ্য সেটা এখনো প্রমান করতে পারিনি । তবে সুমিতের মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন কিন্তু সেই নদীর পারেই ছিল চারটে মৃত্যুর সময়েই, তাই দুইয়ে দুইয়ে চার করেই বলছি যে সুমিতকে তুলে আনার পারমিশন দেন। বাকী আমি রুল ভরে সব সত্যি বার করে আনবো''।
সহায় সাহেব আর শালিনী দুজনেই গভীর মনোযোগে নিশিকান্তের বয়ান শুনে যাচ্ছিলো, নিশিকান্তের বক্তব্য শেষ হতেই সহায় সাহেব বললেন '' সবই বুঝলাম নিশি কিন্তু আদালতে তো তোমাকে দাঁড়িয়ে প্রমান করতে হবে যে সুমিতই খুনি, যদি অবশ্য তুমি এই চারটে মৃত্যুকে খুন বলে প্রমান করতে পারো তবেই। কারন প্রথম দুজনের ময়না তদন্ত রিপোর্টে কিছুই অস্বাভাবিক পাওয়া যায় নি, জাস্ট হার্ট ব্লক হয়ে মারা যাওয়া ছাড়া। আর বাকীদের ক্ষেত্রে তো তাঁদের বাড়ীর লোক অভিযোগ ও করেনি অস্বাভাবিক মৃত্যুর, তাই তাঁদের দেহের ময়না তদন্ত অব্দি হয়নি  '' বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ান।
নিশিকান্ত ঝাঁপিয়ে উঠে বলে '' স্যার আমি তো এটাই বলতে চাইছিলাম, সুমিত কেন করতে দেবে তাঁর মামার দেহের ময়না তদন্ত ? স্যার প্লিস আমায় একবার পারমিশন দিন ওই কালপ্রিট কে লকআপে তুলে আনার,বাকী আমি বুঝে নেব '' কিন্তু তাঁর সবটা শুনেও শালিনীর আর সহায় সাহেবের মুখের নির্লিপ্ত অভিব্যাক্তি জানিয়ে দেয় যে তাঁর দলিল এবারের মত খারিজ হয়ে গেল ।
নিশিকান্ত নিজেও খুব হতাশ বোধ করলো কারন তার মনে হয়েছিলো যে সহায় সাহেব হয়তো তাকে এই কেসটা নিয়ে এগিয়ে যাবার অনুমতি দেবেন,আর সে খুবই নিশ্চিত ছিল যে সুমিত কে তুলে নিয়ে এলেই হয়তো এই কেসটার একটা সুরহা হবেই । তবে এখন সে বুঝতে পারে, যে যতক্ষণ না তার কাছে কোনও অকাট্য প্রমান আসছে যে ওই চারটে মৃত্যু খুনই , আর তাদের সঙ্গে সুমিতবাবু জড়িত ততক্ষণ তাকে কোন রকম ধরপাকড়ের অনুমতি দেওয়া হবে উপরমহল থেকে।
শালিনী আর সহায় সাহেব কে কোন ব্যাপারে একটু নিচুস্বরে আলোচনা করতে দেখে নিশিকান্ত বুঝে যায় যে সে এইখানে সে এখন অযাযিত, তাই দুজন অফিসারের কাছে মৃদু স্বরে পারমিশন নিয়ে সে চুপচাপ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
নিশিকান্তের মনটা খুব খারাপ হয়ে ছিলো কারন সে স্পষ্ট বুঝে গেছিলো যে তার তদন্তের ধারা তার দুই অফিসারের মনে ধরেনি। বিক্ষিপ্ত মনে  বাইরে আসতেই সে অপর্ণা ঘোষের একদম মুখোমুখি হয়ে যায়, তাকে দেখে যেন অপর্ণা ঘোষ আকুল পাথারে একটা কিনারা পান। এত খুশী যে তাঁর মত একটা বাজে লোককে দেখে কেউ হতে পারে তা নিশিকান্তর ধারনার বাইরেই ছিলো।  অপর্ণা ঘোষের মুখের পবিত্র হাসি দেখে নিশিকান্তর মনের সব অন্ধকার যেন কেটে যায়, তার মনে হয় এই পৃথিবীতে তো কত মানুষ মনে কত দুঃখ নিয়ে বেঁচে আছে তাদের থেকে সে তো অনেক গুন ভালো আছে, নিজের দুঃখ কে মদ মাগী দিয়ে ভুলে থাকতে পারে । এটা ভাবতেই তার মনটা অনেকটা হাল্কা হয়ে গেলো।
সে এবার হাসি মুখেই অপর্ণার দিকে এগিয়ে যেয়ে নিজে থেকেই বলে '' কি ব্যাপার আপনি এখানে আবার? সব ঠিক আছে তো?''।
এই কথা শুনেই অপর্ণা দুঃখী মুখে মাথা নেড়ে বলে '' না সার যে কে সেই, আপনি একবার চলুন না তাহলেই হয়তো আমার ছেলেটার ভয় কেটে যাবে, সার প্লিস একবার চলুন''। নিশিকান্ত অপর্ণার নিস্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে আর না করতে পারে না, তাছাড়া সেও চাইছিলো এই থানার চৌহদ্দি থেকে একটু বাইরে বেড়িয়ে খোলা হাওয়ায় একটু শ্বাস নিতে।  গাড়ীতে অপর্ণা সমানে নিশিকান্তকে তার ছেলের ব্যাপারেই গড়গড় করে অনেক গল্পই করে যায়, তবে নিশিকান্ত কিন্তু সেদিকে কান না দিয়ে মাঝে মাঝে শুধু আড়চোখে দেখে যাচ্ছিলো। যে হাওয়ায় অপর্ণার চুলের গছি কীভাবে বারবার তার কপালে আসছিলো আর অপর্ণা তা আলগোছে সরিয়ে দিয়ে নিজের কথা বলে যাচ্ছিলো অত্যান্ত সরলতার সঙ্গে, নিশিকান্ত মাঝে মাঝেই অপর্ণার কথা শুনতে শুনতে ভাবছিলো যে এই হানাহানির যুগে মানুষ এতটাও সরল হতে পারে?
তবে সে এতদিনে এটা জানতো যে অপর্ণা মানসিক ভাবে একটু অসুস্থ, কিন্তু নিশিকান্ত গাড়ী চালাতে চালাতে ভাবে যে হয়তো এই যুগের পৃথিবীতে একটু মানসিক ভাবে অসুস্থ মানুষরাই সরল কারন তাদের মনে কোন কালিমা লাগেনা। নানা কথা ভাবতে ভাবতে নিশিকান্ত অপর্ণার নির্দেশে গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছিলো সে খেয়ালও করেনি যে তাড়া গাড়ী নিয়ে ততক্ষণে শহরের একদম শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছিলো। শহরের তুলনায় এই শহরতলি অনেক বেশী নির্জন, শেষ বিকেলে চারিদিকে বড় বড় গাছের ছায়ায় ততক্ষণে প্রায় অন্ধকার হয়ে আসছিলো, নিশিকান্ত জয়েন করার পড়ে এই এলাকায় এর আগে হয়তো বার দুয়েক এসেছিলো।
আদতে ওই জায়গাটা একটা রেলওয়ে কলোনি আর একদম শান্তশিষ্ট ভদ্রলোকেদের জায়গা । চারিদিকে শুধু ছবির মত সাজানো লাল রঙের বাংলো টাইপের সব ঘর আর তাদের সামনে সাজানো বাগান দেখলেই যে কোনও মানুষেরই মন ভালো হয়ে যায়।
শেষ বিকেলে ততক্ষণে পাখীরা সব বাসায় ফিরছিলো আর সেই প্রকিতির বুকে সাজানো কলোনিটি যেন একটি অদ্ভুত নির্জনতায় ডুবে যাচ্ছিলো।  নিশিকান্ত এতক্ষণে একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছিলো কারন তারা প্রায় একঘণ্টা ধরে যাচ্ছিলো তবুও তাদের গন্তব্য এসে পৌঁছায়নি, গাড়ী আস্তে আস্তে এবার রেলওয়ে কলোনির সীমাও অতিক্রম করে যায় কিন্তু তখনো অপর্ণার বাড়ী এসে পৌছয়নি। নিশিকান্ত আবছা অন্ধকারের মধ্য গাড়ীর জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে যে তারা জনপদ ছাড়িয়ে একটু জঙ্গল ঘেঁষা নির্জন জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলো যার দূর দুরান্তেও কোন লোকালয়ের চিহ্নও দেখা যাচ্ছিলো না।
নিশিকান্ত এইবার অধৈর্য হয়েই জিগ্যেস করে উঠে '' আচ্ছা আর কত দুরে আপনার বাড়ী ?রাস্তা তো শেষই হয়না দেখছি ''। অপর্ণা নিশিকান্তর কথাতে নিজের বকবকানি বন্ধ করে তার দিকে একবার আহত পাখির মত তাকিয়ে করুন স্বরে বলে উঠে '' আমার জন্য আপনার খুব সময় নষ্ট হছে তাই না? ঠিক আছে আপনি আমাকে এখানে নামিয়ে দিয়ে চলে যান বাকি পথটা না হয় আমি হেঁটেই চলে যাবো '', বলে ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকেন নিশিকান্তর দিকে।
নিশিকান্তর অতি বড় শত্রুও কোনোদিন বলবে না যে সে সুন্দরী মেয়েদের প্রতি কক্ষনো কঠোর হতে পেরেছে বলে !  আর সে নিজের ট্র্যাক রেকর্ড ঠিক রেখে আজকেও অপর্ণার চোখে জল দেখে গলে গেল । নিশিকান্ত কথা না বাড়িয়ে গাড়ীটা সোজা চালিয়ে দেয় সামনে দেখা জঙ্গলের মধ্য একটি মাত্র সরু রাস্তা ধরেই।
গাড়ীর হেডলাইটের মায়াবি আলোতে নিশিকান্ত তার ঘাড় না ঘুরিয়েই মাঝে মাঝেই আড়চোখে অপর্ণার অনন্য সুন্দর মুখটা দেখে যাচ্ছিলো আর নিজের একাকীত্বর কথা ভেবে বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে যাচ্ছিলো। অপর্ণার মুখটা দেখে নিশিকান্তর ইচ্ছা হচ্ছিলো যে সে নিজের হাত বাড়িয়ে তার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে তার মাথাটা ধরে নিজের চওড়া কাঁধে রেখে দেয়, কিন্তু সংযম আর সম্ভ্রম এই দুই যে বড় বালাই।  তাই নিশিকান্তকে তার এই ইচ্ছা কে নিজের মনেই পুষে রেখে দিয়ে সামনের রাস্তায় মনঃসংযোগ করতে হয়।  কিছুক্ষণ চলার পর এইবার জঙ্গলের গভীরতা কেটে গিয়ে সামনে যেন একটা হাল্কা আলোর রেখা দেখা যেতে থাকে। নিশিকান্তর মন একটু বিষণ্ণ হয়ে যায় কারন গোধূলির আলোতে অপর্ণার মত অপার্থিব সুন্দরীর সঙ্গও যে এইবার শেষ হয়ে আসছে সেটা নিশিকান্ত বুঝতে পারছিলো। নিশিকান্তর আশঙ্কায় সত্যি হয় আর তারা রাস্তা শেষেই একটি বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়ায়।ঘরটি এমন ভাবে বানানো যে রাস্তা শেষ হতেই ঘরটি যেন একটি পাহাড়ের মত পথ আটকে দাঁড়িয়ে ছিল।  ঘরটির জন্যই যেন রাস্তাটা এইখানে বানানো হয়েছিলো কারন নিশিকান্ত তার অভিজ্ঞ চোখেও আশেপাশে অন্য কোনও জনপদের চিহ্ন দেখতে পেলো না।
গাড়ী থামতেই অপর্ণা তার সেই অভিমানী স্বরে বলে '' এবার আপনি যেতে পারেন, আমি ভালো ভাবেই পৌঁছে গেছি, ধন্যবাদ''।
নিশিকান্তর মনে হয় তার যেন আবার সেই কলেজের বয়েস ফিরে এলো, কারন অপর্ণার অভিমানী কণ্ঠে এই কথা শুনে তার মনে হয় যেন বুকটা ফেটে যাবে।  সবাই জানে যে নিশিকান্ত কামুক, মাতাল, ঘুষখোর, গুন্ডা  কিন্তু এই নিশিকান্তর বুকের মধ্য যে এতটা ভালবাসা সেধিয়ে ছিল নিশিকান্ত মনে হয় তা নিজেই আজই প্রথম জানতে পারে!
অপর্ণা চলে যেতে উদ্যাত হলে নিশিকান্ত পেছ থেকে শুধু বলে ''চা না খাইয়েই দরজা থেকেই বিদায় করে দেবেন তো?
অপর্ণা এবার চকিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে একটু রেগে গিয়েই বলে উঠে ''আপনার তো আমার জন্য সময় নেই, আপনি ভারী ব্যাস্ত ''। নিশিকান্তর আর সহ্য হলো না, সে এবার এগিয়ে এসে সোজা অপর্ণার চোখের দিকে তাকিয়ে নিচু গলাতে বলে '' ক্ষমা চাইছি, অনেক দিন পড়ে কারুর সান্নিধ্য এসে একটু শান্তি পেলাম, আমার অশান্ত মনটা জুড়িয়ে গেছে, দয়া করে আমাকে আপনার থেকে দুরে চলে যেতে বলে শাস্তি দেবেন না''।
নিশিকান্তর কথা শেষ হতে অপর্ণাও যেন থম মেরে যায়,  সে ভাবতেও পারেনি যে নিশিকান্তর মত রাশভারী অফিসার তার সঙ্গে ভালো করে পরিচিত না হয়েই দ্বিতীয় আলাপেই এইভাবে কথা বলবে। তার এই জীবনে অপর্ণা অনেক অনুরাগী দেখেছে যারা তার জন্য জীবন দিতেও রাজী ছিল, কিন্তু এইভাবে সত্যি কথাটা তার মুখের উপর বলার মত সৎসাহস কেউই দেখাতে পারেনি।
অপর্ণা বোঝে যে নিশিকান্ত অন্তত তার শরীরের জন্য লালায়িত নয়, তার চোখে অপর্ণা মুগ্ধতা ছাড়া আর কিছুই লক্ষ্য করেনি। একটা নারী ঠিকই বুঝতে পারে উপস্থিত পুরুষটা তাঁর থেকে ঠিক কি চাইছে ! অপর্ণা এটাও জানে যে লোকে আড়ালে তাকে পাগল বলে , কেন বলে তার কারণটাও সে ভালো করেই জানে।
আর এই শহরের পুলিসের হিরো হয়ে নিশিকান্ত সেই খবরটা জানবে না সেটা ভাবাও যে বাতুলতা সেটা বোঝার মত বুদ্ধি এই পাগল অপর্ণার ও আছে । অপর্ণা এবার দেখে নিশিকান্তর চোখে মুখে একটা নিঃস্ব , রিক্ত ভাব ফুটে উঠেছে।
অপর্ণার মনের মধ্য স্নেহময়ি ভাবটা এবার জেগে উঠে আর ঘরের দিকে অগ্রসর হতে হতে একবার নিশিকান্তর দিকে তাকিয়ে অল্প হেসে বলে ''আসুন নাহয় চায়ের সঙ্গে একটু ডিমও খেয়ে যাবেন''।
অপর্ণার এই সামান্য কথাতেই নিশিকান্তর মনে হয় যেন সে একটা বন্দি দশা থেকে মুক্তি পেলো , এমন ভাবেই ছোট্ট ছেলের মত প্রায় লাফিয়ে লাফিয়ে অপর্ণার পেছনে তার ঘরে গিয়ে ঢোকে। সদর দরজার তালাটা অপর্ণা নিজের ব্যাগ থেকে একটা চাবি বের করে খুলতে থাকে, তা দেখে নিশিকান্ত একটু অবাক হয়েই জিগ্যেস করে '' আপনার বাড়ীতে আর কেউ নেই? আপনার ছেলে যার জন্য আপনি আমাকে ডেকে নিয়ে এলেন সে কোথায়? আর আপনার মা?''। নিশিকান্তর এই পর পর প্রশ্নের অপর্ণা কোনও জবাব না দিয়ে শুধু মৃদু স্বরে বলে '' আপনি ভেতরে চলুন আপনার সব প্রশ্নেরই জবাব মনে হয় পেয়ে যাবেন''।
ঘরে ঢুকতেই নিশিকান্ত একটু বিস্মিত ভাবেই চারিদিকে তাকিয়ে দেখে। তার কোনোভাবেই মনে হচ্ছিলো না যে এই ঘরে কারুর সংসার থাকতে পারে। এতটা অন্ধকার আর নিস্তব্ধ ছিল যে নিশিকান্ত যেন একটু সন্দিহান হয়েই পড়ে,অপর্ণার সম্বন্ধে যে কথাটা শুনেছিলো তার সত্যতা নিয়ে।
অপর্ণা কিন্তু শুধুমাত্র সুন্দরী ছিলনা তারও প্রমান নিশিকান্ত এবার পেয়ে যায়। তার ঘরের ব্যাপারে সে নিশিকান্তর যে একটু হলেও তাল কেটেছে সেটা না বোঝার মত বোকা অপর্ণা ছিলনা।  নিশিকান্ত এবার কিছু বলার আগেই অপর্ণার হাত এসে পড়ে তার কাঁধে আর নিশিকান্ত চমকে ঘুরতেই দেখে মুখে একটা স্মিত হাসি নিয়ে অপর্ণা তার দিকে অপলক চেয়ে আছে।  নিশিকান্তর মনে হচ্ছিলো যেন সময় তখনই থমকে দাঁড়াক, এই মুহূর্ত যেন আর শেষ না হয় ! তাঁর একাকী জীবনে এই মুহূর্তটার জন্যই হয়তো সে অপেক্ষা করেছিল, কিন্তু নিশিকান্ত জানতো যে তাঁর জীবন অভিশপ্ত, তাই হয়তো আজীবন একা থাকাই তাঁর ললাট লিখন। কিন্তু তবুও সে সব জেনেও এই সামান্য মুহূর্তটা কে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু সে হয়তো জানতো না যে বিধাতা এখানেও তাঁর জন্য কাঁটা বিছিয়ে রেখেছেন !
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
[+] 3 users Like DHRITHARASTHA's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
ভালো চলছে ...
লাইক আর রেপু দুটোই রইলো !! Smile
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#43
(18-06-2021, 10:39 AM)ddey333 Wrote: ভালো চলছে ...
লাইক আর রেপু দুটোই রইলো !! Smile

ধন্যবাদ বস, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#44
এক, দুই, তিন .............. এবং চার !!!

এই গল্পটা আপনি শুধু দুটো পর্ব Xossip এ লিখেছিলেন ...

আশা করি এখানে কমপ্লিট করবেন ...
Like Reply
#45
(18-06-2021, 10:06 AM)DHRITHARASTHA Wrote: এই কমেন্টের জন্যই তো পুরনো লেখাটা আবার এত কষ্ট করে ফিরিয়ে আনা বন্ধু ! সপ্তম পর্ব পোস্ট হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যই। সঙ্গে থাকবেন ।
se to thaktai hobe boss.
Like Reply
#46
(18-06-2021, 04:42 PM)ddey333 Wrote: এক, দুই, তিন .............. এবং চার !!!

এই গল্পটা আপনি শুধু দুটো পর্ব Xossip এ লিখেছিলেন ...

আশা করি এখানে কমপ্লিট করবেন ...

মিকি মাউস শেষ করে একটা নতুন লেখা শুরু করবো আগে, তারপরে হয়তো বা এক দুই তিন এবং চার পোস্ট করবো। সুস্থ থাকবেন, সঙ্গে থাকবেন, ভালো থাকবেন ।
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#47
(18-06-2021, 05:45 PM)tarunpatra9386; Wrote: se to thaktai hobe boss.

ধন্যবাদ জানায় আপনাকে, সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন।
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#48
[Image: micky.jpg]

পর্ব ৮।

__________________


তবে তার কপালে সুখ কোনোদিনও বড় বেশী স্থায়ী হয়না আর এবারও হলো না। অপর্ণা নিশিকান্তকে এইবার সেই অবস্থায় রেখেই ভিতরের দিকে চলে গেলো, আর নিশিকান্ত দরজার পেছন থেকে অপর্ণার সেই সুরেলা গলায় শুনলো '' আপনি একটু বসুন আমি আসছি''। নিশিকান্ত স্থানুর মত দাঁড়িয়ে ছিল আর তখনই অপর্ণা দরজার পেছ থেকেই আবার বলে উঠে '' আপনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন তার পেছনেই লাইটের সুইচ আছে, লাইট জ্বেলে সোফাতে বসুন''। নিশিকান্ত লাইট জ্বালতে জ্বালতে বাড় দুয়েক হোঁচট খেয়ে পড়তে পড়তে বাঁচলো, কোনোরকমে লাইট জ্বালতেই ঘরটা যেন ঝলমল করে উঠে। নিশিকান্ত এবার ভালো করে ঘরটা দেখার সুযোগ পেল, আর সে দেখে যে ঘরটিতে আসবাবপত্রের থেকে অনেক বেশী বইয়ে ঠাসা।  নিশিকান্ত নিজেও বই পড়তে খুবই ভালোবাসতো তাই সে বই দেখে প্রথমেই সেই দিকে এগিয়ে যায়, তবে নিশিকান্ত একটু অবাকই হয় বইগুলির বিষয়বস্তু দেখে।
সাধারন গল্প উপন্যাসের বই ছিলনা তাদের মধ্য, নিশিকান্ত নেড়েচেড়ে দেখে যে তাদের মধ্য বেশির ভাগই ছিল এনাটমি আর মানুষের শরীর আর তার নানা রোগ বিষয়ী,আর বাকি যা ছিল তা মুলত জৈবরসায়নিক নিয়েই ছিল। সে এমনিতেই নানা চাপে ছিল তারপর এইসব পাহাড়ের মত শক্ত বিষয়ের বই দেখে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে সরে পড়তে যাচ্ছিলো আর তখনই তার চোখ পড়ে আলমারির একদম নিচের দিকে একটা চটি বইতে। বইটা ব্রাউন পেপার দিয়ে যত্ন করে মলাট দেওয়া ছিল, সময় কাটাবার জন্য আর কৌতূহলে বইটা টেনে নিয়ে সে সোফাতে বসে বইটা ভালো করে দেখবে বলে। উজ্জল আলোতে নিশিকান্ত বইটা তার চোখের সামনে খুলে ধরতেই যেন একদম চমকে উঠে, বইটা একটা ইংরাজি কমিকস বই ছিল, বইটার উপরে বড়বড় হরফে লাল আর কালো কালিতে লেখা ছিল '' MICKEY MOUSE BY WALT DISNEY'' । নিশিকান্ত একজন পুলিস অফিসার আর তার ট্রেনিঙেই শেখানো হয়েছিল সমস্ত ঘটনাকেই সন্দেহের চোখে দেখতে। তাই সে বইটা হাতে নিয়েই উল্টে পাল্টে দেখতে দেখতেই নিজের পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে সেটার সুইচ অন করে দেয়।
সে ফোনটা হাতে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করে , সে একবার ভাবে যে সে ফোনটা সোজা শালিনীকে লাগায়,তবে আবারও ভাবে যে একটা সামান্য বই পেয়েই যদি সে তার বস কে ফোন লাগিয়ে দেয়, তাহলে এবার সত্যি করেই হয়তো তাকে এই কেস থেকে সহায় সাহেব সরিয়ে দেবেন। এইরকম নানা ভাবনা ভাবতে ভাবতেই নিশিকান্ত একটু একা থাকার জন্যই আবারও তার ফোনটা সুইচ অফ করে দেয়। নিশিকান্ত ফোনটা রেখে এবার তার হাতের বইটা ভালো করে দেখতে থাকে, গোটা বইটার প্রায় সব পাতাতেই কোনও বাচ্চা ছেলের কাঁচা হাতের লেখাতে ভর্তি ছিল, যার মধ্য পুচু বলে একটা নাম বারবারই দেখতে পাচ্ছিলো নিশিকান্ত, তবে সেই নামটা যেই লিখুক তার হাতের লেখা আর বানান দুই অত্যান্ত খারাপ।
যেন কোনোরকমে লিখেছে, একে বইটার অর্ধেক ওপর বেশী পাতা ছিল না। যে কটা পাতা ছিল তাঁর বেশীরভাগই এবড়ো খেবড়ো করে কাটা,  তার ওপর বইটার পাতায় পাতায় নানা রকম বিদঘুটে ছবি আর লেখাতে ভর্তি, নিশিকান্ত ভাবে যে একমাত্র রাখাল দাস বাবু এলে হয়তো সেই হরাপ্পার মত এটারও মানে উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন।  কিন্তু তার পুলিসি নাকে একটা কিছুর গন্ধ সে পাচ্ছিলো, তার মনে কোথায় একটা যেন কিছু খিঁচ লেগে গেছিলো,সে বইটা হাতে নিয়ে এবার চোখ বন্ধ করে একটা কঠিন অঙ্ক মেলাবার চেষ্টা করতে থাকে, তবে সে কিছুতেই অপর্ণার সঙ্গে ওই চারটে খুনকে মেলাতে পারছিলো না।
তবে তার মনে একটা বিশ্বাস জন্মেছিল যে কিছু না কিছু সুত্র তো নিশ্চয় আছেই অপর্ণার আর সেই চারটে মৃত্যুর সঙ্গে, আচমকায় নিশিকান্তর হাতের বইটাতে একটা হ্যাঁচকা টান পড়ে আর নিশিকান্তর চোখ খুলে যায়।
নিশিকান্ত দেখে তার সামনে একদম রুদ্রমূর্তি ধারন করে অপর্ণা দাঁড়িয়ে ছিল, তার চোখ মুখ একদম টকটকে লাল হয়েছিল, আর তার মুখ থেকে একটা জান্তব শব্দ বের হছিল। নিশিকান্ত জীবনে অনেক কিছুই দেখেছে তার চাকরীর সুবাদে তবে একটা শান্ত, সুন্দরী ভদ্রমহিলার এই রকম রূপান্তর এত তারাতারির মধ্য সে জীবনেও দেখেনি।
নিশিকান্ত কিছু বলতে যাওয়ার আগেই অপর্ণা গর্জন করে বলে উঠে '' কোন সাহসে আপনি আমার পুচুর বইয়ে হাত দিয়েছেন ? জানেন না সে এই বই ছাড়া থাকতে পারে না ? আপনার এত বড় সাহস যে ওর বইয়ে হাত দেন? যান এখুনি আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যান, যান বেরোন ! '' বলে অপর্ণা একটা বিকট চিৎকার করে উঠে।
নিশিকান্ত অপর্ণার এই রূপ দেখে আর কিছু বলতে যাওয়ার সাহস পায়না, অপর্ণা বইটা হাতে পেয়ে যেন তখন তার সামনে দাঁড়ানো নিশিকান্তর অস্তিত্বও ভুলে গেছিল। মাতৃস্নেহে অপর্ণা তখন বইটার উপর পরম মমতায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছিলো আর নিজের মনেই বিড়বিড় করে দ্রুত কত কথা বলে যাচ্ছিলো, নিশিকান্ত এবার বুঝতে পারে যে অপর্ণার মানসিক সুস্থতা সম্বন্ধে যে কথা সে শুনেছিলো তা একদমই সত্যি। তবে সে এবার তার একটু সাহস সঞ্চয় করে অপর্ণার দিকে একটু এগিয়ে যেতেই যে এমন একটা ঘটনা ঘটবে তা স্বপ্নেও ভাবেনি, নিশিকান্ত একটু এগিয়ে গিয়ে তার হাতটা অপর্ণার কাঁধে রেখে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করতেই অপর্ণা একদম ছিটকে সরে গিয়ে একটা হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠে '' নোংরা, দুশ্চরিত্র লোক আমার গায়ে হাত, একলা মেয়ে মানুষ দেখলেই নোলা একদম লকলক করে উঠে না? বেরো আমার ঘর থেকে এখনি বের হও'' । নিশিকান্তর কান একদম গরম হয়ে যায়, এতটা অপমানিত সে তার জ্ঞ্যান অবস্থায় হয়নি,
তার মাথা একদম ভ্যাবলা হয়ে পড়ে সে বুঝে পায় না তার কি করণীয় । ঠিক তখনই পাশের ঘর থেকে একটি বৃদ্ধা বেরিয়ে আসেন, উনি একবার অপর্ণার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে নিশিকান্তর দিকে এগিয়ে যেয়ে মৃদু স্বরে বলে '' মেয়েটার কথাই কিছু মনে না করে তুমি এখন না হয় চলে যাও বাবা, ওর অবস্থা তো দেখতেই পাচ্ছ না হয় পরে আসবে ''।  নিশিকান্ত আর কথা না বাড়িয়ে দরজার দিকে এগোতেই অপর্ণা তার একটা ফাঁকা গ্লাস টেবিল থেকে তুলে নিশিকান্তর দিকে ছুড়ে মারে, আর বিকট গলাতে প্রায় চিৎকার করে বলে উঠে '' খবরদার আর যদি আমার কাছে আসারও চেষ্টা করিস তাহলে আমি তোর নোংরামি একদমই ঘুচিয়ে দেবো, জানোয়ার কোথাকার ''। নিশিকান্ত পিঠে গ্লাসের আঘাত নিয়ে যখন ঘরের বাইরে রাখা তার গাড়ীতে চাপে তখন রাগে, অপমানে, অভিমানে তার কান মাথা একদম ঝাঁঝাঁ করছিলো।
জীবনে যেটা নিশিকান্ত কক্ষনো করেনা আজ সেটাই যেন তার এই অপমানের মলম ছিল, সে তার সমস্ত রাগ অপমানের বদলা নেবার জন্য যেন গাড়ির এক্সিলিটারটাকেই বেছে নিয়েছিলো । নিশিকান্ত যখন তার অপমান ভোলার জন্য তার গাড়ীটা পাগলের মত চালাছিলো ,তখন যারা দেখছিলো তাদের মনে হচ্ছিলো যে একটা ষাঁড় পাগল হয়ে দৌড়ে যাচ্ছে আর সামনে যাকেই পাবে তাকে হয়তো ধ্বংসই করে ফেলবে!
গনগনে রাগ নিয়ে যখন নিশিকান্ত তার বাড়ীতে পৌঁছায় তখন সে দেখে তার সামনের ঘর খোলা আর তাতে লাইটের উজ্জল আলোতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে কেউ তার চেয়ারে বসে সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে যাচ্ছে । নিশিকান্ত খাট্টা মেজাজ নিয়েই ঘরে ঢোকে আর বিস্ময়ের সঙ্গে দেখে, যে তারই চেয়ারে বসে তার বাবা-মার ছবির সামনে পায়ের উপর পা তুলে শালিনী বিরক্ত মুখে সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে আর লালু তার সামনে বংশবদের মত দাঁড়িয়ে আছে। এই দৃশ্য দেখেই নিশিকান্তর মাথায় রক্ত উঠে যায়, তবে সে নিজেকে একটু সামলায় আর ঘরে ঢুকে সোজা লালুকে হুকুম করে  '' তুই এখানে বাঁদরের মত দাঁড়িয়ে আছিস কেন ? যা আমার জন্য ঠাণ্ডা জল নিয়ে আয় ''।
তবে নিশিকান্ত অবাক হয়ে দেখে যে লালু তার কথাতে ভয়ে পেচ্ছাব করে দিতো সে নিশিকান্তর কথা শুনেও জল না আনতে গিয়ে শালিনীর সামনে স্থাণুর মত দাঁড়িয়ে ছিল, নিশিকান্ত এবার রেগে একদম আগুন হয়ে গেলেও নিজেকে কোনমতে কন্ট্রোল করে তেতো গলায় বলে উঠে '' কিরে লালু কানে কি কালা হয়ে গেছিস নাকি? কি বললাম শুনতে পেলি না?''।  এবার লালু কিছু জবাব দেবার আগেই শালিনী চেয়ারে বসে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে '' ওর সঙ্গে কি কথা বলছেন? আমাকে জিগ্যেস করুন যা জিগ্যেস করবার কারন আমি যখন আপনার বস তখন আপনার চাকরেরও আমিই বস, সেটা আপনার মোটা মাথাতে না ঢুকলেও আপনার চাকরের মাথাতে ভালো করেই ঢুকে গেছে। ও তো একটা পুরনো কেসের আসামী, তবুও সে কি করে কেস থেকে রেহাই পেল ঘোষ বাবু ? বাদ দিন সে জবাব আমি ঠিক সময় মত নিয়ে নেব, আর তাঁর আগে  ওকে অর্ডার না দিয়ে আগে আমাকে জবাব দেন যে বিকেল থেকে এই রাত নটা অব্দি কোন ভাগাড়ে গিয়ে মারানো হছিলো?''।
শালিনী বরাবরই তার অধস্তন কর্মচারীদের সঙ্গে এইভাবেই কথা বলতে অভ্যাস্ত হলেও, নিশিকান্ত সব সময় জীবনের সর্বক্ষেত্রে সম্মানকেই জীবনের মুল পাওনা মেনে চলতেই ভালোবাসতো । লালুর সামনে তাকে এই ধরনের কথা নিশিকান্তকে আরও তাতিয়ে দিলেও সে তখনো নিজেকে কন্ট্রোলে রাখতে সক্ষম হয়েছিলো,কারন নিশিকান্ত নিজেকে ভালো করেই চিনতো ।  সে এটা বেশ  জানতো যে যদি একবার সে নিজের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে তাহলে তার পড়ে আর যা হবে তার ভালো মন্দ বিচার করার মত অবস্থায় হয়তো সে নিজে কেন কেউই থাকবে না, তাই নিশিকান্ত শালিনীর কথার জবাবে শান্ত ভাবেই বলে  '' ম্যাডাম আপনি আমার বস হতে পারেন কিন্তু সেটা অফিসে, আমার ঘরে ঢুকে এই রাত্রি বেলায় আপনার আমার সঙ্গে এইভাবে কথা বলার কিন্তু কোনও অধিকার নেই ''।
শালিনী নিজেও একজন দাপুটে অফিসার আর তারও কারুর চোখ রাঙ্গানি সহ্য করার অভ্যাস ছিল না, তাই নিশিকান্তর মুখের কথা শেষ হতেই না হতেই শালিনী একেবারে প্রায় লাফিয়ে উঠে চিৎকার করে বলে উঠে '' টু হেল উইথ ইয়োর অধিকার, আমাকে একদম বেশী আইন মারাবেন না। আমার আণ্ডারে কাজ করতে হলে আমার মত চলতে হবে নাহলে কাল সকালে আমার অফিসে নিজের ইস্তিফা পাঠিয়ে দেবেন '' ।
বলেই শালিনী তার এতক্ষণের পুষে রাখা রাগের চোটে বলেই ফেলে '' আপনার মতন নষ্ট চরিত্রের মানুষদের পুলিসে না রাখায় ভালো, একটা আধপাগল মহিলাকেও নিজের কামলালসার হাত থেকে যে ছাড়েনা সে রকম বিকৃত মানসিকতার লোককে আমি আমার টীমে দেখতে চাইনা। কাল সকালেই যেন আমি আমার টেবিলে আপনার ইস্তফা দেখতে পায়, না হলে আমাকে বাধ্য হয়েই প্রেস আর সহায় সাহেবকে সব জানাতে হবে'' । কথাটা শেষ হতেই শালিনী এক লাথি মেরে সামনের টেবিলে ঘর থেকে গটগট করে বেড়িয়ে গেলো লালুর স্তম্ভিত চোখের সামনে দিয়েই।
নিশিকান্ত ছোট থেকেই একটু অন্যধরনের ছিল, সে নিজের ছোট্ট বৃত্তে থাকতে পছন্দ করতো শান্ত ভাবে, কিন্তু যদি কেউ তাঁর মানসিক শান্তি কে নষ্ট করার চেষ্টা করতো, তাঁর স্মমানে আঘাত দিত তাহলেই মানুষ নিশিকান্তের খোলসের ভেতরে যে একটা হিংস্র , জান্তব পশু লুকিয়ে থাকতো স্বযত্নে । নিশিকান্ত সেই পশুটার খাঁচা খুলে তাঁকে বাইরে আসার অনুমতি দিয়ে দিত ।
শালিনীর গাড়ীর আওয়াজ মিলিয়ে যাবার পরেও  ঘরে নিশিকান্ত আর লালু দুজনেই নিসচুপ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। মালিকের থমথমে চোখমুখ দেখে লালু ভয়ে আর আজানা এক আগত ঝড়ের আশঙ্কায় যেন কাঁটা হয়ে যায়, লালু তার মনিবের এই ধরনের চোখমুখ ভালো করেই চেনে। লালু জানতো তার মালিক এখন আহত সাপের মতই ভয়ঙ্কর, সে পারেনা এখন হেন কোন কাজ নেই।
তবে লালুর মাথায় যখন এতসব চিন্তা, ভাবনা খেলছে তখন নিশিকান্ত কিন্তু পাথরের মত শক্ত মুখে স্থির, শান্ত মুখে সেই চেয়ারেই বসে আছে যেখানে বসে কিছুক্ষণ আগেই শালিনী তাকে লালুর সামনে অপমান করে গেছিলো। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পড়ে লালু আর না পেরে কাতর স্বরে বলে '' বাবু আপনি চলুন ভিতরে স্নান খাওয়া সেরে নেবেন ''। নিশিকান্ত লালুর কথা যেন কোনও স্বপ্নের গভীর থেকে শুনলো এমন ভাবে তার দিকে তাকালো আর ক্লান্ত স্বরে কেটে কেটে বলে '' আমি ভালো হয়েই থাকতে চাই রে লালু, কিন্তু কেউ আমায় বেশীদিন ভালো হতে দেয়না ''।
সামান্য এই সামান্য কথাতেও লালুর মেরুদণ্ড দিয়ে যেন একটা ঠাণ্ডা হিমের স্রোত নেমে যায়,কারন নিশিকান্ত যতই ক্লান্ত আর করুন স্বরেই এই কথাটা বলুক এর ফল আর পরিণাম যে কি ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটার ধারণা লালুর এত বছর তার মালিকের সঙ্গে থেকে ভালো করেই আছে। দেখতে দেখতে ঘড়ির কাঁটা যখন রাত এগারোটার কাছা কাছি তখন নিশিকান্ত একটা আড়মোড়া ভেঙ্গে তার চেয়ার থেকে উঠে নিজের ঘরের দিকে যায়, লালু একটু খুশিই হয় যে যাক তাহলে আজ রাতের মতন ফাঁড়াটা কেটেছে।
তবে লালুর ধারণা ভুল প্রমান করে দিয়ে দশমিনিটের মধ্যই নিশিকান্ত মিসকালো জামাকাপড়ে সুসজ্জিত হয়ে কাঁধে একটা ছোট্ট চামড়ার ব্যাগ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে । লালু কিছু বলতে যাওয়ার আগেই নিশিকান্ত তাকে শুধু হাত তুলে নিরস্ত করে দেয়, তার মালিকের চোখের দৃষ্টিতেই লালু যেন একদম চুপ মেরে যায়। আজ তার মালিকের চোখে সেই খুনে দৃষ্টিটাই ছিল যেটা তার মালিকের নামটা কুখ্যাত করে তুলেছিল। নিশিকান্ত যখন তার বুলেট ফটফটিয়ে রাতের নিস্তব্দতা ভেদ করে বেড়িয়ে গেলো লালু তখনো এক অজানা বিপদের আসার আশঙ্কায় দাঁড়িয়ে কাঁপছিল।
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#49
Awesome..............waiting for next update.
[+] 2 users Like RANA ROY's post
Like Reply
#50
অনেকদিন পর এইরকম একটি টানটান উত্তেজনায় ভরা থ্রিলার পড়ছি।

আপনার জয় হোক  Namaskar

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
#51
(19-06-2021, 05:41 PM)RANA ROY Wrote: Awesome..............waiting for next update.

আন্তরিক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য, সাপোর্ট দেবার জন্য। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন।
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#52
(19-06-2021, 05:45 PM)Bumba_1 Wrote: অনেকদিন পর এইরকম একটি টানটান উত্তেজনায় ভরা থ্রিলার পড়ছি।

আপনার জয় হোক  Namaskar

প্রাপ্তি এটা ! সুপারস্টার এর প্রশংসা মনের গভীরে স্থান পেল বস। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আনন্দে থাকবেন।
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#53
next part er er jonno wait kora chara r kono upay nai...
Like Reply
#54
আগেই বলেছি। থ্রিলার পুরোটা একসাথে পড়ার মজাই আলাদা।
তাই পুরোটা একসাথে পড়বো।
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
#55
(19-06-2021, 05:41 PM)RANA ROY Wrote: Awesome..............waiting for next update.

আন্তরিক ধন্যবাদ সঙ্গে থাকার জন্য। পরের পর্বে আসছে আজ শালিনী আর নিশিকান্তের খেলাধুলা।
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#56
(20-06-2021, 12:04 AM)satyakam Wrote: আগেই বলেছি। থ্রিলার পুরোটা একসাথে পড়ার মজাই আলাদা।
তাই পুরোটা একসাথে পড়বো।

বেশ তাই করবেন না হয়, তবে ততদিনে কিন্তু এই রকম সাপোর্ট আমার চাইই। নইলে ফল ভালো হবে না কিন্তু
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
Like Reply
#57
আরে দাদা আছি ❤ আছি ❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
#58
(20-06-2021, 12:04 AM)satyakam Wrote: আগেই বলেছি। থ্রিলার পুরোটা একসাথে পড়ার মজাই আলাদা।
তাই পুরোটা একসাথে পড়বো।

apnar sate puropuri sahomot dada.
Like Reply
#59
(20-06-2021, 04:52 PM)tarunpatra9386; Wrote: apnar sate puropuri sahomot dada.

আমি নিজেও তো তাই করি বন্ধু ! সঙ্গে থাকবেন, সুস্থ থাকবেন
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
[+] 1 user Likes DHRITHARASTHA's post
Like Reply
#60
[Image: 3160f890-fd84-4061-a792-edf08d651146.jpg]


পর্ব ৯।

________________

নিশিকান্ত তার বুলেটে ঝড় তুলে দিলেও শালিনীর বাংলোর কিছুটা আগেই সেটার স্পীড কমিয়ে দেয়,কারন সে জানতো যে এখন তাকে তার ক্ষ্যাপা রাগের চেয়ে বেশী তার বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে নাহলে সে তার আজকে রাতের প্ল্যানকে সফল করতে সক্ষম হবে না। শালিনীর বাংলোটা ভি আই পি পাড়াতে ছিল আর এই পাড়া বাকি সব ভি আই পি পাড়ার মতোই শান্ত আর ফাঁকা ছিলো। নিশিকান্ত এটা জানতো যে প্রতিটা বাংলোর পেছনেই হাল্কা জঙ্গল ছিল আর শালিনী এখন যে বাংলোটায় থাকে আগে সেটার মালিক ছিল সহায় সাহেব । তাই নিশিকান্ত নিজে সেই বাংলোর তদারকি করার সুবাদে সেই বাংলোর নাড়িনক্ষত্র সবই জানে। নিশিকান্ত তার ভারী বুলেট মোটর সাইকেলটাকে স্টার্ট বন্ধ অবস্থায় ঠেলে ঠেলে রাতের অন্ধকারে বাংলোর ঠিক পেছনে নিয়ে যেয়ে একটা ঝোপের আড়ালেই রাখে, অবশ্য বাংলোর পেছন দিকে কোনদিনও কেউ আসেনা, তবুও নিশিকান্ত তার পুলিসি অভিজ্ঞতার জন্যই ভালো করে জানে যে কোনদিন যেটা হয়না কপাল খারাপ থাকলে সেটা হতে বেশীক্ষণ নয়। নিশিকান্ত তার বুলেটটা রেখে পড়ে একটু কানখাড়া করে শোনার চেষ্টা করে যে বাংলোর ভেতর থেকে কোনও আওয়াজ আসছে কিনা, একটু পরে নিশিকান্ত নিশ্চিত হয়ে যায় যে হয়তো সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। বাংলোর পেছন দিকের পাঁচিল টপকানোটা এই বয়েসেও নিশিকান্তর কাছে তেমন কোন কঠিন কাজ ছিলনা , পাঁচিল টপকিয়ে নিশিকান্ত বিড়ালের মত লঘু পায়ে পাঁচিল থেকে বাংলোর বাগানে প্রায় নিঃশব্দেই নেমে এলো। যতই হোক এ এস পি বলে ব্যাপার, তাই নিশিকান্ত জানতই যে অন্তত দুটো গার্ড তো থাকবেই শালিনীর সুরক্ষাতে। তবে নিশিকান্ত চারিদিকে তাকিয়েও যখন কোনও গার্ড দেখতে পেলো না তখন তারও একটু অবাক লাগলো, তবে সে তো আর জানতো না যে শালিনী এখন তার সঙ্গে ''স্পেশাল বডিগার্ড'' নিয়ে ঘুমোতে যায়।
নিশিকান্ত বাগানে ঢুকেই চারিদিকে তাকিয়ে চকিতে একদম পেছন দিকে একটা অন্ধকার ঘরের দরজার সঙ্গে নিজেকে প্রায় চিটিয়ে নিয়ে পকেট থেকে মাস্টার কি টা বের করে সঙ্গে সঙ্গেই ঘরটার ইয়েল লকটা খুলে ফেলে বিনা বাঁধায় একদম নিঃশব্দে ঢুকে যায়। নিশিকান্ত ঘরে ঢুকে একটু সময় নিয়ে দেখে যে কারুর কোন উপস্থিতি টের পায় কি না, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নিশ্চিত হয়ে তবে সে তার পকেট থেকে পেন্সিল টর্চটা বের করে। টর্চের সেই সরু আলোতে দেখে যে সে শালিনীর রান্নাঘরে পৌঁছে গেছে ।  নিশিকান্ত এবার টর্চের আলোতে আস্তে আস্তে সেই ঘর থেকে বেড়িয়ে ডাইনিং হলে এসে পৌঁছায়, চারিদিকে অন্ধকারের মধ্য সে শুধু একটা ঘর থেকেই আলোর হাল্কা আভাস পাচ্ছিলো। সে  প্রায় বেড়ালের মত নিঃশব্দেই সেই ঘরের কাছে পৌঁছে তার চাবির ফুটোতে চোখ রেখে ঘরের একটা সামান্য অংশই দেখতে পায়, তবে সেটুকুই যথেষ্ট ছিল তার জন্য।  ঘরের মধ্য তখন শালিনী রীতার সঙ্গে তার আদিম খেলা শুরু করার উদ্যাগ নিচ্ছিলো,
তবে রীতা আজ একদমই রাজী ছিলনা, সে জেদি বাচ্চার মতই শালিনীর সমস্ত রাগ, অনুরোধ সমস্ত উপেক্ষা করেই সে নিজের অবস্থানে আজ অনড় ছিল।  শালিনীর জীবনে ধৈর্যের অভাব এমনিতেই ছিল তার উপর আজ নিশিকান্ত তার মেজাজটাকে আরও চড়িয়ে দিয়েছিলো, তার ওপরে রীতার এই ধরনের নখরা শালিনীকে একদম তাতিয়ে দিয়েছিলো, শালিনী এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে ঠাটিয়ে এক চড় মেরে দেয় রীতার গালে, সেই চড়ের চোটে রীতা একদম ককিয়ে কেঁদে উঠে।
তবে রীতার কান্নার সঙ্গে শালিনীর কোনদিনও কিছু এসে যেত না, শালিনী সেই অবস্থায় রীতার চুলের মুঠি ধরে তার মুখটা নিজের দিকে টানার চেষ্টা করতে থাকে চুমু খাবার জন্য। তবে রীতা সেই অবস্থায়ও কাঁদতে কাঁদতে বারবার নিজের মুখটা সরিয়ে নিচ্ছিলো। শালিনীর পক্ষেও এবার আর সহ্য করা কঠিন হয়ে উঠে আর সে সোজা এবার রীতার ঘাড়ে ধরে তাকে দরজার দিকে টেনে নিয়ে আসে আর কঠিন গলায় বলে '' আমি দশমিনিট সময় দিলাম এর মধ্য ঠিক করে নে যে আমার সঙ্গে রাতে শুবি না কাল সকালেই পুলিশ ব্যারাকে ট্রান্সফার হয়ে প্রতিদিন গুদ গাঁড় দুই মারাবি  ?'' বলেই দরজার দিকে তাকে হিড়হিড় করে টানতে টানতে নিয়ে আসতে দেখেই নিশিকান্ত তাড়াতাড়ি আবারও সেই রান্নাঘরের দিকে আড়ালে চলে যায়।
কিছুক্ষণের মধ্যই দরজা খুলে রীতাকে টানতে টানতে শালিনী বের করে দেয় আর শাসিয়ে বলে যায় '' আমি মাত্র দশ মিনিট সময় দেব, তারই মধ্য ভেবে নে কি করবি'' বলে কাঁদতে থাকা রীতার মুখের ওপরেই শব্দ করে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।
নিশিকান্তর মাথা অপারেশন এর সময়  খুব পরিষ্কার থাকে, তার এই পরিষ্কার মাথা যে কত বার তাকে সাফল্য দিয়েছিলো তা সে বোধহয় গোনাও ছেড়ে দিয়েছিলো।তবে শুধু তাঁর মাথা পরিষ্কার তা নয়, তার সাহস আর শক্তি ছাড়াও যে কোন উঁচুদরের অপরাধীর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মত তার অসম্ভব নার্ভের জোর ছিল।
তার নির্মম ভাবে এনকাউন্টার দেখে  অনেক সুপিরিয়ার বস তাকে অনেকবারই বলেছে যে সে হচ্ছে ব্রণ ক্রিমিনাল আর পুলিসের মধ্য মিসিং লিঙ্ক, এমনকি একজন জ্যোতিষী তো তার হাত দেখে এটাও বলেছিলো যে তার হাত একদম দাগী অপরাধীর মতই। তাঁর হাতে নাকি অনেক মৃত্যুর দাগ লেগে আছে। সে হেসেই উত্তর দিয়েছিল সেই জ্যোতিষ ঠাকুর কে '' যুদ্ধের ময়দানে হয় বিজয়ী হয়, নচেৎ শহীদ ! তো বাবা আমার এত তাড়াতাড়ি শহীদ হবার কোন ইচ্ছে নেই । তাই মেশিন জিন্দাবাদ '' বলেই চোখ মেরে ছিল সেই হতভম্ব জ্যোতিষ কে। তাই তাঁর মত প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকা মানুষ ঘরের ভিতরে ঢোকার এমন অযাযিত সুযোগ পেয়েও যে হেলায় হারাবে সেটা ভাবাও অন্যায়। সে ইতিমধ্যিই তার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ থেকে একটা কালো আঁট মুখোশ বের করে পড়ে নিয়েছিলো, হাঁটুতে মুখ গুজে কাঁদতে থাকা রীতার পেছনে যখন সে নিঃশব্দে দাঁড়ায় তখনো রীতা জানতো না যে ঘরের ভিতরে যে বিপদের ভয়ে সে এখন বাইরে , তার থেকে তার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মূর্তিমান বিপদও কিছু কম ছিলো না।
রীতা কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিশিকান্তর হাত তার মুখ চেপে ধরে গলায় আরেকটা হাত দিয়ে তার প্রায় নিশ্বাস আটকে দেয়। রীতা সেই অবস্থায় তার কানে নিশিকান্তর শাসানি কঠিন কণ্ঠে শুনতে পায়। তবে রীতার নরম শরীরের ছোঁয়াতে নিশিকান্ত এবার আস্তে আস্তে যেন জেগে উঠে,নিশিকান্ত এবার আর দেরি না করে তার ব্যাগ থেকে শুরু লাইলনের দড়ি বের করে রীতা কে বেঁধে তার মুখে একটা কাপড় গুজে তাকে ছোট্ট পুতুলের মত কাঁধে তুলে সেই অন্ধকার রান্ন ঘরেই রেখে দিয়ে আসে । দরজার ঠক ঠক আওয়াজ শুনে শালিনীর মুখে এতক্ষণে হাসি ফুটে উঠে, সে তার পরনের খোলামেলা সাটিনের নাইটিটা ঠিক করে নিয়ে খুশী মুখেই দরজা খোলে আর দরজা খোলা মাত্রই তার মাথায় একটা প্রচণ্ড আঘাতে তার জ্ঞ্যান হারিয়ে যেতে বেশী সময় লাগেনা। জ্ঞ্যান হারাতে হারাতেও শালিনী একবার আবছা দেখতে পায় একটি মানুষ মুখে কালো মুখোশ পড়ে খুব আগ্রহের সঙ্গেই যেন তাকে দেখছে, সেই মানুষটির মুখ ঢাকা থাকলেও তার চোখগুলি ভালো করেই দেখা যাচ্ছিলো । আর সেই চোখে শালিনী যেন প্রচণ্ড কৌতুকের একটা ঝিলিক দেখতে দেখতেই জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে। শালিনী মাথায় একটা যন্ত্রনা নিয়ে যখন চোখ খোলে তখন প্রথমে সে বুঝতেই পারে না যে সে কোথায় আছে, সে মনের ভুলেই জড়ানো গলায় বলে উঠে '' একটু জল এনে দে রীতা ''।
একটা হাঁসির শব্দে শালিনী ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখতে চেষ্টা করে তবে সে সফল হয়না, তার হাত, পা কিছুই যেন সে নাড়াতে পারেনা। শালিনীর মনে হয় যেন কেউ তার হাত, পা বিছানার সঙ্গে পেরেক দিয়ে গেথে দিয়েছে কারন তার হাত, পা একদম স্থির হয়েছিল। শালিনী আপ্রান চেষ্টা করেও যখন নিজেকে নাড়াতে ছাড়াতে পারে না তখন সে বুঝতে পারে যে তাকে হয়তো বেঁধে রাখা হয়েছে। ঠিক তখনই তার মুখে ঠাণ্ডা জলের ছিটে এসে লাগে আর শালিনীর মনে পড়ে যায় যে সে নিজের বাংলোয় কারুর হাতে আক্রান্ত। শালিনী এবার দেখতে পায় তার সামনে এসে সেই মুখোশ পড়া মানুষটি এসে দাঁড়ায়, তার হাতে একটা জলের বোতল ছিল আর অনাবৃত চোখে একটা পৈশাচিক হাসি খেলা করে যাচ্ছিলো। সেই লোকটি এগিয়ে এসে এবার শালিনীর বেঁধে রাখা শরীরের ওপর প্রায় ঝুকে পড়ে ফিসফিস করে বলে '' বাঃ এত সুন্দর আগে তো দেখিনি ''।
শালিনীর জীবনে ভয়ের কোন জায়গা ছিলনা তবে লোকটির কথা বলার ধরনে শালিনীর শরীরে যেন একটা ভয়ের ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। শালিনী এতক্ষণে তার অবস্থা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হয়, সে কোনক্রমে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় যে তার হাত দুটো খাটের রেলিঙের সঙ্গে টানটান করে বাঁধা, যার ফলে পাতলা সাটিনের নাইটির ওপর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো তার সুন্দর, মাঝারি মাপের দুটি স্তনের আকার থেকে বোঁটার পজিশন সবই। শালিনীর পা গুলোও খাটের রেলিঙের দুদিকে চওড়া করে বাঁধা ছিলো, তাতে তার হাঁটু ঝুলের নাইটিটা অনেকটায় ওপরে উঠে প্রায় প্যানটির দোরগোড়ায় এসে গেছিলো।
শালিনী এবার বুঝতে পারে যে মুখোশ পড়া মানুষটা কিছু একটা করছে তার পেছনে দাঁড়িয়ে। কিছুক্ষণের মধ্যই শালিনী দেখতে পেলো যে মানুষটির হাতে একটা ডিজিটাল ক্যামেরা, সেই মানুষটি ক্যামেরাটা একদম শালিনীর পায়ের দিকে একটা টেবিলে এমন ভাবে বসালো যাতে বিছানাটা পুরোটায় সেই ক্যামেরাতে ভালো ভাবে ধরা যায়। শালিনী বুঝতে পারে যে সে একটা বড় গাড্ডায় পড়তে চলেছে তাই মরীয়া হয়ে শেষ চেষ্টা হিসাবে শালিনী কাতর কণ্ঠে বলে উঠে '' আপনি প্লিস আমাকে ছেড়ে দেন, যা পয়সা লাগে নিয়ে যান ''।
শালিনীর কথাতে মানুষটি শুধু একটু নিঃশব্দে হেসে আবার নিজের হাতের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো , শালিনী ভালো করেই বুঝতে পারে যে মানুষটি ক্যামেরা লাগিয়ে কি করতে পারে !
শালিনী এবার আতঙ্কে ঘেমে উঠে আর চিৎকার করে বলে '' তুই জানিস আমি কে ? তোকে আমি জেলে পচাবো ''। তবে মানুষটি এই কথাতেও ভ্রূক্ষেপ না করে নিজের কাজ করতেই থাকলো। শালিনী অবশ হয়ে দেখলো যে মানুষটি ক্যামেরাটা একটা ভালো পজিশনে ফিট করে বার দুয়েক তার ভিউ চেক করে নিয়ে এবার একটু শান্ত হয়ে দাঁড়ালো। সোজা এগিয়ে এসে মানুষটি তার পিঠের ব্যাগ থেকে একটা ছুরি বার করে টা হাতে নিয়েই শালিনীর দিকে এগিয়ে আসে,আর শালিনী কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার হাতের ছুরিটা দিয়ে শালিনীর পরনের সাটিনের পাতলা নাইটীটা ফালা ফালা করে কেটে দিয়ে তাকে একদম উন্মুক্ত করে দেয়। শালিনীর পরনে এখন শুধু একটা নীল কালারের প্যানটি ছাড়া কিছুই ছিলো না, ঘরের উজ্জল আলোতে শালিনীর প্রায় নগ্ন রূপ নিশিকান্ত একটু অবাক হয়েই দেখে যাচ্ছিলো। শালিনী তথাকথিত সুন্দরীর সংজ্ঞার মধ্য পড়েনা, তার গায়ের রঙ খুব একটা ফর্সা না হলেও, তার চেহারার মধ্য একটা রুক্ষ ভাব  আছে আর শালিনীর যে রকম অসাধারন ফিগার তাতে ফর্সা রঙের চেয়ে এই একটু তামাটে রঙটায় ভালো লাগে। শালিনীর শরীরের প্রধান আকর্ষণ ছিল তার সুন্দর দুটো তরমুজের মতন শক্ত পাছাটা। স্তনের তুলনায় তার পাছা সাইজে অনেক বেশী বড় ছিল তবে নিয়মিত ব্যায়াম করার জন্য শালিনীর শরীরে চর্বির অধিক্য একদমই বেশী ছিলনা। তবে নিশিকান্ত যতক্ষণ শালিনীকে তার চোখ দিয়ে চেটে যাচ্ছিলো শালিনী কিন্তু ছটফট করে চেষ্টা করে যাচ্ছিলো তার এই বন্দি দশা থেকে মুক্তি পাবার,তবে বিধি বাম আজ আর তার মুক্তির কোনও সম্ভাবনা ছিলনা।
নিশিকান্ত ততক্ষণে শালিনীর পাশেই বিছানায় বসে পড়েছিলো , আর তার একটা হাতের আঙ্গুল দিয়ে আস্তে আস্তে শালিনীর নগ্ন বাহুতে বোলাতে বোলাতে অন্য হাত দিয়ে শালিনীর ঠোঁটের ওপর লিপস্টিক ঘসার মত আস্তে আস্তে ঘষতে থাকে। পুরুষের স্পর্শে শালিনীর বমি পেয়ে যায়, সে তার মাথা সরিয়ে নিতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যায়, কিন্তু বাঁধা পরে থাকার জন্য সে অসহায় ছিল ওই সময় ! শালিনির এই ছটফটানি যেন নিশিকান্তর ওপর কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি, সে শুধু অসীম ধৈর্যর সঙ্গে তার দুহাতের আঙ্গুলের কাজ ঠিকই করে যাচ্ছিলো। কিছুক্ষণ পরে  নিশিকান্ত বেশ বুঝতে পারছিলো যে শালিনী আর অতটা প্রতিরোধ করছিলো না, নিশিকান্ত আপন মনে হেসে তার হাতের কাজ ঠিকই করে চলেছিলো। ওষুধ পড়লে রোগিণী সেরে ঠিকই উঠে, শুধু অসুধের ডোজটা ঠিক করা অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাজ ।
নিজের মনে অল্প স্মিত হেঁসে এবার নিশিকান্ত তার একটা আঙ্গুল শালিনীর নগ্ন বাহু থেকে সরিয়ে তার গালে এনে রাখে,
শালিনী যেন সামান্য শিউরে উঠে নিশিকান্তর আঙ্গুল তার গালে খেলা শুরু করতেই, সেই আঙ্গুল কখন যে গালের গণ্ডি ছাড়িয়ে শালিনীর স্পর্শকাতর কানের লতিতে নিজের খেলা আরম্ভ করে দিয়েছিলো শালিনী তা বুঝতেই পারেনি। তবে আঙ্গুলের স্পর্শে শালিনীর কেঁপে কেঁপে উঠা নিশিকান্ত ভালো ভাবেই অনুভব করতে পারছিলো। নিশিকান্ত আগেই আন্দাজ করেছিলো যে শালিনী একজন লেসবি,আর সে নিজের বিশাল যৌন অভিজ্ঞতাতে এটা ভালো করেই জানতো যে লেসবিয়ানদের যদি কেউ ভালো ভাবে সিঙ্গার করে গরম করে তুলতে পারে তবে তাদের মতন পুরুষ পেষাই কল হয়তো ভগবান আর বানাননি। সেই জাঁতাকলে নিজের নোড়াটা কে পেষাই করিয়ে ছিবড়ে বানাবার জন্য নিশিকান্ত ততক্ষণে গরম হতে শুরু করে দিয়েছিল, কিন্তু সে জানে মজা বেশীক্ষণ নিতে গেলে ধৈর্য ধরতে হয় আর শালিনীর মত একটা বুনো বিল্লি কে খেলিয়ে শিকার করার মত ধৈর্য আজ রাতে নিশিকান্ত ঘোষ সঙ্গে নিয়েই এসেছে এই অভিসারে !
ধৃতরাষ্ট্র - দা বস !
[+] 6 users Like DHRITHARASTHA's post
Like Reply




Users browsing this thread: 8 Guest(s)