Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
লেখাটা লিখেছেন সাব্বির ইমন পড়ে কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেছি! Smile
 
//মুদি দোকানে ডিম কিনতে গিয়েছি পাশে এক লোক বাচ্চা নিয়ে দোকানে এসেছে লোকটা সম্ভবত শ্রমিক বা রিকশাচালক শুকনা কন্ঠার হাড্ডি বের হয়ে গেছে অভাব অনটন তাকে কেমন জীর্ণশীর্ণ করে দিয়েছে 
 
তার বাচ্চাটারও একই অবস্থা লোকটা ২৫০ গ্রাম তেল আর লবন কিনতে এসেছে বাচ্চাটা জুলজুল চোখে লজেন্সের বয়ামের দিকে তাকিয়ে আছে বেচারা চাইতে সাহস পাচ্ছে না ওর বাবা সেটা বুঝতে পেরেছে কিন্তু দারিদ্র্য মাঝেমাঝে চোখে নির্লজ্জ টিনের চশমা পড়িয়ে দেয় সেই কথিত  "চশমার" আড়ালে ছেলের মায়াভরা মুখটা দেখে ভালোবাসায় ভেজা গলায় বাবাটা বললো, "কিছু লইবি?"
 
ছেলেটা লাজুক ভাবে কথা না বলে আঙ্গুল তুলে দেখালো বাবা হেসে লজেন্সের বয়ামের কৌটা খুলে দুইটা লজেন্স বের করে ছেলেকে খুব আদর করে বলো, "তিনের ঘরের নামতাটা কও তো বাপ"
 
বলেই লোকটা আড়চোখে সবার দিকে হালকা তাকালো তার সেই দৃষ্টিতে কেমন একটা চাপা উত্তেজনা যদি না পারে? সবাই তো তাকিয়ে আছে!
 
ডিমের পুটুলি হাতে নিয়ে আমিও তাকিয়ে আছি ছেলেটার দিকে
 
দোকানদারও সরু চোখে তাকিয়ে আছে এই পিচ্চি পোলা! নাক দিয়ে সিকনি ঝরছে, সে বলবে তিনের ঘরের নামতা! এই কঙ্কালসার ছেলে তিনে তিনে কত হয় সেটাই তো জানে না!
 
ছেলের হাতে লজেন্স সে লজেন্স দুইটা এহাত-ওহাত করছে বাবার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে স্পোর্টস কারের গতিতে সে বলতে শুরু করলো,
 
"তিন অক্কে তিন, তিন দুগুনি ছয়, তিন তিরিক্কা নয়, তিন চাইরে বারো...."
 
কেমন টেনেটেনে গানের তালে মাথা নেড়েনেড়ে সে বলে যাচ্ছে বাবার চোখে যেন নামতার পাতাটা সেঁটে আছে, শুধু দেখে দেখে পড়ে যাচ্ছে
 
নামতা শেষ হলো ত্রিশ কি চল্লিশ সেকেন্ডে শেষ করে সে একটা লজেন্স মুখে পুড়লো মুখ ঝলমল করে বাবাকে বললো, "আব্বা, চাইরের নামতাও পারি কমু?"
 
সেই জীর্ণ লোকটা, হয়তো প্রতিদিন ঠিক মতো পয়সা পায় না পাঁচটাকা বেশী রিকশা ভাড়া চাইলে দুইচারটা গালি খায়, মহাজনের গুঁতা খায়
 
সেই গাল ভাঙ্গা কুঁজো হয়ে যাওয়া লোকটা প্রতিদিনই হেরে যায় সমাজের কাছে, সংসারের কাছে, পিতৃত্বের কাছে
 
আজ সে হারেনি আজ তার অনেক বেশি আনন্দ সবার সামনে ছেলে তার মুখ উজ্জ্বল করেছে এবার সে আড়চোখে না, পূর্ণ দৃষ্টিতে আমাদের সবার দিকে তাকালো তার চোখে গর্বের অশ্রু, আনন্দাশ্রু
 
যে লোক শুধু পরাজিতই হয়, আমাদের চোখে, আসলে সে পরাজিত না সে আসলে অনেক বড় যোদ্ধা আমাদের চেয়ে অনেক সাহসী আমরা তো যুদ্ধের আগে নানান পরিকল্পনা করি, কত ফন্দিফিকির, কাকে নিচে নামিয়ে কাকে মাড়িয়ে আমরা উপরে উঠবো
 
কিন্তু এই লোকগুলো কাউকে মাড়িয়ে উপরে উঠতে চায় না, নিশ্চিত পরাজয় জেনেও প্রাণপণ যুদ্ধ করে যায়
 
যে সিঁড়ি বেয়ে আমরা তড়তড়িয়ে উপরে উঠে যাই, আমরা কি জানি তাদের কাঁধের উপরই সেই সিঁড়ি চাপানো!
 
লোকটা আজ সাহস পেয়েছে তিনের ঘরের নামতাটা শুধু নামতা নয়, একটা সাহস, একজন বাবার শক্ত একটা কাঁধ, একটা অবলম্বন তিনের ঘরের নামতাটা এই দরিদ্র লোকটার স্বপ্ন পূরণের উপাখ্যান
 
লোকটা তার ছেলেকে কোলে তুলে ফেললো সে কেঁদেই ফেলেছে এই সময় হুট করে দোকানী ডীপফ্রিজ খুলে একটা ললি আইসক্রিম পিচ্চির হাতে দিলো,
 
"সাবাস! জজ ব্যারিস্টার হইয়া দেখায়া দিস সবাইরে! , আইসক্রিম খা বেশি খাইস না, গলা ফুইলা গেলে কথা কইবার পারবি না"
 
ছেলেটা খুশি মনে আইসক্রিমটা নিলো বাবা ছেলে চলে গেলো আমি ওদের দিকে তাকিয়ে আছি
 
দোকানদার আমাকে বললো, "আমি তো ভাববারও পারি নাই বান্দরটা কেমনে চ্যালচ্যালাইয়া নামতা কইয়া দিলো! দেখলেন নি কারবার ডা!"
 
একি! দোকানির চোখেও পানি! আসলে যারা ক্ষুধার কষ্ট বোঝে, তাদের একজনের মনের সাথে অন্যজনের মন একই সুতোয় গাঁথা থাকে একজনের কষ্ট আরেকজন বুঝতে পারে, আবার আনন্দগুলোও স্পর্শ করে প্রবলভাবে
 
আর আমরা? কোটি টাকার স্বপ্নে বিভোর আর প্রতিযোগীতার উন্নাসিকতায় ভুলে যাই আমরা আসলে কি!!!
 
আমি ডিম হাতে একা একাই হাঁটছি আর বলছি, "তিন অক্কে তিন, তিন দুকুনে ছয় ..."
 
আমাকেও সংক্রামিত করেছে তাদের জয়ের আনন্দ//
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
কপাল পোড়া জন্ম সুখী 
 
 
আমার মা প্রতিবেশিনী মাসীমার সাথে 
গল্প করতো প্রতিদিন 
কোনো বিষয় থাকতো না 
সবকিছুই থেকে যেত সাবলীল হাসিতে 
মা আমার , দুঃখের কথাও 
বলে ফেলে হাসতো
বলতো ,
"আমার পোড়া কপাল "
বলেই আবার চলেযেত ইঁচড়ের রান্নার বিস্তারে
বাবা রাগ করে বলতো
"কী এত কথা তোমাদের, বুঝি না
আমি তো সময় পাই না "
মা বলতো , তুমি অনেক কিছু বোঝ 
তাই বয়ে যেতে জান না
আমরা কয়ে যাই , বয়ে যাই , গল্পেই রয়ে যাই .....
বুঝতে পারার জন্যে তুমি অনেক সময় দাও
তাই না বোঝার আনন্দ অসময় হয়ে যায়
বলেই সেই লাজুক হাসি .....
বাবা বিরক্ত হয়ে বলেছিল ,
"কী যে ছাই বল , না আছে মাথা না কিছু "
 
 
মায়ের শিয়রে ছিলাম 
যখন একঘন্টা পরেই মা চলে যাবে ,
"আয় আয় "করে মা ডাকছিল ,
বোধহয় মৃত্যুকে 
নাকী পাশের বাড়ির মাসীমাকে ,
মৃত্যু কী বলেছিল , আর একটু বাঁচবি না , কচুর ঘন্টে
কলমী শাকে আর লাউয়ের চোচার চচ্চড়িতে ?
মা শেষ হাসি ঠোঁট পেতে নিয়েছিল
আর নিতে গিয়ে থরথর কেঁপেছিল 
সম্ভবত বলেছিল , আমার পোড়া কপাল !
 
আমার কপাল বেশ ভাল
স্বল্প বুদ্ধিতেই বাড়ি গাড়ি বিদেশ ভ্রমন 
এখন সব শেষ ,
তবু ঠোঁট দুটো ম্যমি হয়ে থাকে 
রোজ জেগে উঠে
মন খারাপের দেশ 
নটে শাক , বকুল ফুলের ভাজা 
আবিরেও নেই 
পলাশের হাসির সেই রেশ
"আয় আয় " বলে আমিও ডাকি 
মৃত্যু অথবা গ্যালাক্সি বন্ধুকে ,
কেউই আসে না ,
অভিমানে , হতাশায় আরও বিব্রত করি
প্রিয়জন পরিজন 
ঠোঁটের ইমন ঠাটে চিলতে হাসির আকাল ,
না বলাই রয়ে যায়
"আমার পোড়া কপাল "!!!!!
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#কথোপকথন

-"এই, মনে আছে তোমার?"
-"কি?"
-"বা রে, আমাদের প্রথম দেখা?"
-"থাকবে না? কী ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে!"
-"কিসের ভয়?"
-"কানের কাছে সাইকেল নিয়ে কিরিং কিরিং...ওফ, অসহ্য!"
-"হা হা! ভাগ্যিস করেছিলাম! তাই তো আমার দিকে চাইলে তুমি! আর আমার মনে হল, এই তো, সাক্ষাত 'আমার সর্বনাশ"!
-"আহা, আমার পাশে তো শ্রাবণী, অসীমারাও ছিল!"
-"তাই বুঝি? কিন্তু আমার তো চোখ শুধু তোমাতেই আটকে গেছিল.."
-"ধ্যাত!"
-"এখনও এত লজ্জা পাও তুমি? গাল এখনও এত লাল হয় তোমার? আহা, দোলের আবীর কোথায় লাগে!"
-"আবীর! ধ্যাত? তুমি পারোও..."
-"অবশ্য আরেকজনের গাল ও এমনি লাল হতো...সেই যে তোমার বান্ধবী, শর্মিলা?"
-"বাব্বা! আমি তো ওকে ভুলেই গেছিলাম! কতদিন দেখাসাক্ষাৎ নেই! আর তোমার শুধু ওকে না, ওর গালের কথাও মনে আছে?"
-"হা হা হা! গিন্নি, হিংসে হচ্ছে? ঈর্ষার রং যেন কি? সবুজ?"
-"আহ!"
-"আর হ্যাঁ, এই সেদিনও হলুদ তাঁতের শাড়িটা যখন পরেছিলে, তখন মনে হচ্ছিল..."
-"কি?"
-"তুমি স্বয়ং শ্রীরাধিকা..."
-"বুড়ো হয়েছ, এখনও আক্কেল হলো না তোমার! কথার ছিরি দেখো! ঠাকুর দেবতার নামে..."
-"আহা, ওনারা সেই যুগে, আর আমরা এই যুগে.."
-"আমরাও আর এই যুগের না মশাই! মেঘে মেঘে বেলা কম হলো?"
-"মেঘ? যতই মেঘ আসুক, কালো আঁচ লাগতে দেব না তোমার গায়ে!"
-"কোনোদিন ও না?"
-"তোমার গা ছুঁয়ে বলছি!"
-"থাক! গা ছুঁয়ে কাজ নেই! আছো তো ফটোর মধ্যে বসে! গা ছোঁবে কি করে শুনি?"
-"বাহ! এই ঘরে না হয় আলাদা আলাদা ছবি, খোকার ঘরে তো আমাদের একসাথেই রেখেছে...কাল যখন বৌমা ছবিতে আবীর দেবে, একটু তোমাকেও লাগিয়ে দেব, দেখো!"
-"মরণ..."
-"তুঁহু মম শ্যাম সমান..."
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
# কথোপকথন - অসাধারণ লাগলো. শেষের কটা লাইন..... সোজা বুকে ধাক্কা মারলো....❤❤

যে ভালোবাসা পবিত্র সেই ভালোবাসায় ঈশ্বরের বাস. ❤
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
-"এক্সকিউজ মি?"
-"আমাকে ডাকছেন?"
-"হ্যাঁ, আসলে একটা ছোট্ট হেল্প চাই..."
-"হেল্প? আমার কাছে?"
-"হ্যাঁ...আসলে... ইয়ে... আপনি তো পাহাড়-টাহাড়ে যান, এখান থেকে গাড়িভাডা কত হওয়া উচিত? শুনেছি খুব ঠকায়, যদি কেউ না জানে?"
-"সে তো আপনি কোথায় যাবেন, তার ওপর নির্ভর করছে..."
-"আমি? ইয়ে...আপনি কোথায় যাবেন?"
-"মানে? আমার সাথে আপনার কি? আপনি যাবেন আপনার মতো, আমি যাব আমার মতো..."
-"আরে ম্যাডাম, রাগছেন কেন! আসলে আমি আগে কখনও পাহাড় দেখিনিআমার সমুদ্র প্রিয় ছিলতাই আইডিয়া নেই আর কি!"
-"দেখুন, প্লিজ আমাকে ডিস্টার্ব করবেন নাস্টেশানের বাইরে অনেক গাড়ি আছে, কথা বলতে পারেন"
-"ইয়ে...শেয়ার করবেন ক্যাব? আমি খুব ভাল কো প্যাসেঞ্জার...কোনোরকম বদার করব না আপনাকেআপনি সামনে, পেছনে, যে সিটে ইচ্ছে বসবেন..."
-"না, আমি একা যাবআসছি"
-"আরে, শুনুন না...আমার কাছে খুব বেশি টাকা নেইশেয়ার করলে ভাল হয়আর জানেন ই তো, শেয়ারিং ইজ কেয়ারিং?"
-"কী আশ্চর্য! এত কথা হচ্ছে কেন? এখানে শেয়ার কার পাওয়া যায়টোটো নিয়ে সেখানে চলে যান"
-"সবার সাথে শেয়ার করা আর তোমার সাথে শেয়ার করা এক হলো?"
-"মানে টা কি?"
-", এখনও সেই 'মানেটা কি' বলো! ভাল"
-"রাতুল, কাট দ্য ক্র্যাপতুমি এখানে কেন?"
-"ওই যে, ক্যাব শেয়ার করব বলেজীবন তো শেয়ার করতে দিলে না!"
-"উই ডিসকাসড অ্যাবাউট ইট! ইয়ার্স এগো! নাও, আই অ্যাম গেটিং লেট! আমি যাচ্ছি"
-"বাহ্! এখনও রেগে গেলে ইংলিশ বলো! গুড! তা, 'উই' না, 'আই' বলো! তুমিই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে, একতরফা আমার ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল সেটাআমি কি চাই, চেয়েছি, বলার সুযোগ ই দাও নি"
-"ইটস বিন টুউ লং, রাতুলসেভেন ইয়ার্স"
-"হ্যাঁ, সাত সাতটা বছরতাও তোমাকে ভুলিনি শ্রী! ভুলতে পারিনি"
-"আমি এখানে আসছি, এই ট্রেনে জানলে কি করে?"
-"রাহুল আমার অফিসেই জয়েন করেছে শ্রীআমি তোমার সব খবর পাই"
-"ভাইয়া? ভাইয়া বলেছে তোমাকে? "
-"হ্যাঁবলল, প্রতিবছরই এইসময়টায় পাহাড়ে চলে আসো তুমি কয়েকদিনের জন্য...ক্যান্সার ডে তে... নিজেকে সেলিব্রেট করো... আর তখনই আমিও ডিসাইড করেছিলাম, কিছু প্রশ্ন করব তোমাকেযে প্রশ্নের জবাব আটকে ছিল এতদিন, সেটাও জিজ্ঞেস করার ছিল"
-"প্রশ্ন? আমাকে? "
-"কেন আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলে, শ্রী? কেন? খুব তো পজিটিভ কথা বলতে...আর এটাও বুঝতে পারলে না যে একটা অরগ্যান থাকা না থাকায় তোমার তুমিটার কিছু পরিবর্তন হয় নাঅন্তত আমার চোখে না!"
-" রাতুল, লেটস নট টক অ্যাবাউট দ্যাটপ্লিজ"
-"কেন নয়, শ্রী? এই সাতবছরে আমার জীবনে এসেছে অনেকেকিন্তু টেকে নি কোনো সম্পর্কপরে বুঝলাম, আমার মনটা আজও তোমার কাছেই রয়ে গেছেতাই তো, রাহুলের কাছ থেকে কোন ট্রেনে যাচ্ছ জেনে টিকিট করলামএইভাবে এলামআর সরিয়ে দিও না, শ্রীসাত বছর আলাদা ছিলাম, সাতজন্মের অপেক্ষা ওখানেই হয়ে গেছে"
-"সাদা রঙের গাড়ি, সামনে বুদ্ধদেবের মূর্তি রাখাড্রাইভারের নাম কৃষ্ণ থাপা"
-"অ্যাঁ?"
-"সেই হাঁদাই রয়ে গেলেচলো, তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দেব, সাতবছরে ভেবেছি অনেক অমিওইমম্যাচিওর ছিলাম তখন অনেকম্যাসটেকটমির পরে ভেবেছিলাম সব শেষ হয়ে গেল বোধহয়..."
-"শ্রী..."
-"শ্ শ্ শ্... বাকি কথা পাহাড়ের কোলে বসে হবেএখন কৃষ্ণ দাইজুকে ফোন করি আগে..."
 
 
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
অজয়দেব এর পুরনো ছবির মতো নায়ক নাইকা কে বিরক্ত করে তারপর দুজনের মান অভিমান মিটে যায় ।  Big Grin Big Grin

সুনিল বাবুর না জানি কার একটা গল্প আছে না, কি জানি নাম ভুলে গেছি  , ঐযে আত্তা এসে বাবা মা চয়েস করে । ঐ গল্পেও কিন্তু এক মেয়ের স্তন ক্যানসার হয় , আচ্ছা ঐ গল্পে কি নায়ক ঐ স্তন ছাড়া মেয়েকেই বিয়ে করেছিলো নাকি অন্য একজন কে । মনে নেই , জানা থাকলে মনে করিয়ে দেবেন ।
[+] 1 user Likes cuck son's post
Like Reply
(31-03-2021, 04:51 PM)cuck son Wrote: অজয়দেব এর পুরনো ছবির মতো নায়ক নাইকা কে বিরক্ত করে তারপর দুজনের মান অভিমান মিটে যায় ।  Big Grin Big Grin

সুনিল বাবুর না জানি কার একটা গল্প আছে না, কি জানি নাম ভুলে গেছি  , ঐযে আত্তা এসে বাবা মা চয়েস করে । ঐ গল্পেও কিন্তু এক মেয়ের স্তন ক্যানসার হয় , আচ্ছা ঐ গল্পে কি নায়ক ঐ স্তন ছাড়া মেয়েকেই বিয়ে করেছিলো নাকি অন্য একজন কে । মনে নেই , জানা থাকলে মনে করিয়ে দেবেন ।

হ্যাঁ , বহুদিন আগে এরকম একটা কিছু পড়েছিলাম ... ভাসা ভাসা মনে পড়ছে ... নায়ক স্তন বিহীন মেয়েটিকেই গ্রহণ করেছিল ...
তবে সুনীল নয় ওটা খুব সম্ভবত শীর্ষেন্দুর লেখা ছিল ....

নতুন অতীত এর সমাপ্তিটা দেখার জন্য অপেখ্যায় আছি ....
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(01-04-2021, 09:58 AM)ddey333 Wrote: হ্যাঁ , বহুদিন আগে এরকম একটা কিছু পড়েছিলাম ... ভাসা ভাসা মনে পড়ছে ... নায়ক স্তন বিহীন মেয়েটিকেই গ্রহণ করেছিল ...
তবে সুনীল নয় ওটা খুব সম্ভবত শীর্ষেন্দুর লেখা ছিল ....

নতুন অতীত এর সমাপ্তিটা দেখার জন্য অপেখ্যায় আছি ....

মনে হয় , গল্প পড়ে লেখক আর গল্পের নাম ভুলে যাওয়া আমার একটা আদিম দোষ। নতুন আরও একটা দোষ দেখা দিচ্ছে সেটা হলো গল্পের শেষ আপডেট দিতে দেরি করা । বিশ্বাস করেন আপডেট প্রায় রেডি ঘণ্টা দুই কাজ করলে পোস্ট করতে পারবো । কিন্তু গত কাল থেকে আজ পর্যন্ত নতুন তিনটা গল্প শুরু করেছি , এক দের হাজার শব্দ লিখে ফেলেছি একেকটার কিন্তু নতুন অতীত শেষ করতে ইচ্ছা হচ্ছে না । শনিবার পাক্কা কথা দিলাম । শেষ করে দেবো ।
[+] 1 user Likes cuck son's post
Like Reply
কাল থেকেই ফেসবুক খুললেই একটাই জিনিস চোখে পড়ছে - পৌষ পার্বণ! মনে হচ্ছে বেছে বেছে সায়নীর বন্ধুরাই সবাই যেন হয় পিঠে বানিয়েছে, বা পিঠে খাচ্ছে! আর এইসব হাসিখুশি ছবি গুলো দেখে কান্না পাচ্ছে ওর! খালি মনে পড়ে যাচ্ছে গতবছরের কথামা আর ঠাম্মি মিলে পাটিসাপটা, দুধপুলি, চিতই পিঠে, চোষির পায়েস বানিয়েছিলেনআর "এত মিষ্টি খাব না!" বলে ঠোঁট বেঁকিয়েছিল ও
এই বছর প্লেসমেন্ট যখন মুম্বাইতে হলো, খুব খুশি হয়েছিল সায়নীমুম্বাই হলো স্বপ্ননগরী! খুব মজা করবে ভেবেছিল ওকিন্তু মাত্র এই কয়েকদিনেই 'ভাল্লাগছে না' রোগ হয়েছে ওরঅফিস ভাল্লাগছে না, যেখানে পেয়িং গেস্ট থাকে সেখানে ভাল্লাগছে না, কোনো কলিগকেই ভাল্লাগছে না! কিভাবে যে কাটবে এখানে দিন গুলো কে জানে! এই তো, কাল ই সব্বার পিঠে-পায়েসের ছবি দেখছিল ল্যাপটপে, ওর এক সিনিয়ার কলিগ দেখেছে...সেই নিয়েও কোনো ঘোঁট পাকাবে কিনা কে জানে! কিন্তু, এখন টেনশান করতেও ভাল্লাগছে না!
বেজার মুখে অফিসের জন্য তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল ওপ্রথম কয়েকদিন বাইরে থেকেই টিফিন আনিয়ে খাচ্ছিল, কিন্তু রোজ রোজ বাইরের খাবারে পেট মানছে না, খরচাও হচ্ছে বেজায়...তাই পেয়িং গেস্টের আন্টির সাথে কথা বলে কিচেনে সামান্য কিছু বানিয়ে নিয়ে অফিস যাচ্ছে ওতেমন কিছু নয়, জাস্ট চালিয়ে নেবার মতো...যেমন আজ বানিয়েছে নুডলস
অফিসে পৌঁছে নিজের ডেস্কে বসেছে জাস্ট, হঠাৎ এক্সটেনশানে ওর ম্যানেজারের ফোনকিউবিকলে ডাকছেনহন্তদন্ত হয়ে গিয়ে দেখে সেখানে শ্রেয়া, মানে ওর সেই কলিগ ও আছে, যে কাল ওকে সোশ্যাল মিফিয়ায় স্ক্রল করতে দেখেছিলশিট! এর মধ্যেই ম্যানেজারের কাছে কমপ্লেন করা হয়ে গেছে তাহলে! ঠোঁট টিপে, কঠিন কথা শোনার জন্য মনে মনে তৈরি হলো সায়নী
'সায়ানী, তোমাকে একটা নতুন অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছেতোমাকে সেটার কোয়ালিটি চেক করে ফিডব্যাক দিতে হবে, কেমন? তোমার ওয়ার্ক প্লেসে স্যাম্পেল রাখা আছে...নাউ গো..."বসের ঘর থেকে বেরোনোর সময় দেখছিল শ্রেয়ার মুখে চাপা হাসি! নিশ্চয়ই খুব কঠিন কাজ হবে!
ভাবতে ভাবতেই ডেস্কে এসে দেখে -কোনো ফাইল বা মেটিরিয়াল না...একটা টিফিন বাক্স রাখা...আর তার ওপরে পোস্ট এডে লেখা "ওয়েলকাম টু দ্যা টিম"!
টিফিন বাক্স খুলতেই দেখে অপটু হাতে করা পাটিসাপটা আর পায়েস!
"ঠিক হ্যায় ক্যায়া?" প্রশ্ন শুনে তাকিয়ে দেখে শ্রেয়া তাকিয়ে আছে ওর দিকে...
সেই চোখে হাসি, উৎকন্ঠার সাথে মিশে আছে বন্ধুত্বের আহ্বান...
ওর দিকে তাকিয়ে একগাল হাসল সায়নীতারপর একটু পাটিসাপটা মুখে দিল
আহ! জীবন কী মিষ্টি!
এখন সব কিছু 'ভাল্লাগছে' সায়নীর
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
সকালের চা টা বিপত্নীক হওয়ার পর একাই খান বিকাশ বাবু। বউমা ঘুম থেকে উঠে চা বানিয়ে দেয়, একটু ব্যাজার মুখে দিলেও কিছু মনে করেন না তিনি। যতই হোক, গোটা দিন কত খাটনি মেয়েটার। একটা সংসার সামলানো কি চাট্টিখানি কথা?! 
ছেলে সুপ্রতিষ্ঠিত, মোটা টাকা মাইনে পায়। বড় গর্ব হয়, মানুষের মতো মানুষ করে তুলেছেন তিনি ছেলেকে। 

আজ সকাল থেকেই ছেলে প্রচন্ড ব্যস্ত, অফিসের কাজে। 31st মার্চ যে। 
রাতে শুনলেন ছেলে বউ এর ঘর থেকে একটু কথা কাটাকাটির আওয়াজ। তেমন পাত্তা দিলেন না তিনি, ওসব একটু হতেই পারে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে। 

পরদিন সকালে চা টা ছেলেই নিয়ে এল, একটু অবাক হলেও খুশী হলেন মনে মনে। 
- "বউমার শরীর খারাপ নাকি বাবা?"
- "না। আমার কিছু কথা ছিল তোমার সাথে।"
- "হ্যাঁ, বল না। কথাই তো হয়না আর তোর সাথে।" 
- "আসলে.. তোমার বউমা আর মানে আমাদের মনে হয় তোমার এখন একটু নিজের বয়সী লোকজনের সাথে থাকা উচিত। আর তোমার বউমাও আর এত চাপ নিতে পারছে না।" 
- "হ্যাঁ, মেয়ে টা খুব খাটে। কিন্ত নিজের বয়সী বন্ধু আর পাই কোথায় বল, এই কমপ্লেক্সে তো কেউই নেই তেমন। যা দু একজন ছিল তারাও তো পটল তুলল। হে হে।" 
- "বাবা আজ তোমাকে একটা ওল্ড এজ হোমে দিয়ে আসব, আমরা দুজনেই ঠিক করেছি তুমি ওখানেই ভালো থাকবে। তোমার ব্যাগ তোমার বউমা গুছিয়ে দিচ্ছে।" 

কথা গুলো এক নিঃশ্বাসে বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ছেলে। বিকাশ বাবু প্রথমটা হতভম্ব হলেও তার বেশিক্ষণ লাগল না বুঝতে, আজ যে 1st April, ছেলে তো তাকে বোকা বানাচ্ছে। কি সুন্দর অভিনয় করে গেল, হাসলেন তিনি। 
তিনিও ঠিক করলেন অভিনয় তিনিও করবেন। 

কাঁদার অভিনয় করা কি কঠিন, গাড়িতে বসে মনে মনে হাসলেন তিনি। গম্ভীর মুখে গাড়ি চালাচ্ছে ছেলেটা। 
শহরের এদিকটা দেখতে দেখতে বেশ বড় হয়ে গেছে, যেমন ছেলেটা হয়েছে। ছোটবেলায় চায়ে নুন মিশিয়ে এপ্রিল ফুল করত, এখন বড় হয়ে এসব বড় নাটক করছে। মুখ টিপে হাসলেন আবার, জেনে বুঝে নাটক করার মধ্যে একটা পৈশাচিক আনন্দ আছে। 

ওল্ড এজ টা একটু গ্রামের দিকেই, বেশ সুন্দর সাজানো। তবে যারা থাকে তাদের জন্য খারাপই লাগে। 
ছেলেটা নিশ্চয়ই কোম্পানির কোন ডোনেশান দিতে এসেছে, তাই এত নিখুঁত ভাবে প্ল্যান টা করেছে। 
কারো সাথে একটা পরিচয় করাতে নিয়ে আসছে ছেলে, এখানকার ম্যানেজার হয়ত। 

পরিচয় পর্ব শেষ হতে ছেলে বলল, "ভালো থেকো। মাসে দুবার তো আসবই দেখা করতে। কোন অসুবিধা হলে ফোন করো।" 
আবার অভিনয় করার পালা, হাঁটতে হাঁটতে গাড়ির কাছে এলেন দুজনে। বললেন, "তোমরাও ভালো থেকো বাবা। আমার আশীর্বাদ তোমাদের সাথেই থাকবে। বলে অপেক্ষা করতে লাগলেন কখন ছেলে বলে উঠবে এপ্রিল ফুল!" 

গাড়িতে বসল ছেলে। জানলার কাচ দিয়ে মিটি মিটি হেসে অপেক্ষা করতে থাকলেন তিনি। 
গাড়ি স্টার্ট দিল, এই বুঝি বলল বলে। জীবনে কোনদিন এপ্রিল ফুল শোনার জন্য এত অধীর আগ্রহে থাকেনি কেউ হয়তো। 

চাকা ঘুরল। বাঁদর ছেলে কখন অভিনয় শেষ করতে হয় জানেনা, এবার অস্থির হলেন বৃদ্ধ। সাথে সাথেই একটা চাপা ভয় গ্রাস করল তাকে। 
ডেকে উঠলেন এবার থাকতে না পেরে। চিৎকার করে উঠলেন "এপ্রিল ফুল বলে আমায় নিয়ে চল হতচ্ছাড়া।" 

কান রইল এপ্রিল ফুল শোনার অপেক্ষায়, হাত ছুঁল ভেজা চোখ। 
ধুলো উড়িয়ে গাড়ি টা ছোট হয়ে আসছে ক্রমশ। 

অবাক হলেন, মানুষের মতো মানুষ করেছিলেন যে তিনি ছেলেকে? 
দমকা হাওয়ায় লাল মাটির ধূলো আছড়ে পরল বিকাশ বাবুর গায়ে। যেন বলে গেল, 'এপ্রিল ফুল!'
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
জয় বাবা ভ্যালেন্টাইন

আজ একটু আগেই ক্ষিধে পেয়ে গেছে।।আসলে ভ্যালেন্টাইনস ডে বলে সব খাবারের অ্যাপেই প্রায় খুব ভাল ডিল, ডিসকাউন্ট পাওয়া যাচ্ছেআর, কাপলদের কথা জানে না রাহী, কিন্তু, ওর মতো সিঙ্গেলের কাছে তো এ যেন আসল ভালবাসার হরির লুট! ওর জীবনের ইশক ওয়ালা লাভ, মানে, বিরিয়ানি, চাঁপের বেশ ভাল একটা ডিল ছিল, সেটাই অর্ডার করে দিলসাথে একটা ফিরনিব্যস, জমে যাবে ওর ভি ডে!
কিন্তু, সময় যেন কাটছেই না আর! এখনো অ্যাপে দেখাচ্ছে 'ইয়োর ফুড ইজ বিয়িং প্রিপেয়ারড'! ধুত! বিরক্ত হয়ে ফেসবুকে অনলাইন হল রাহীএইসব দিন ফেসবুক এড়িয়ে যায় ওকাপলরা যা সব পোস্ট দেয়...মুখে 'ন্যাকামি' বললেও বেশ হিংসে হয় ওরভাবে, ওর কেন এখনো 'ইসপেশাল কেউ' হলো না কেন!
তবে আজ কাপলদের নিজেদের ডেডিকেট করা পোস্ট আসার আগেই টুং করে আওয়াজমেসেঞ্জারে মেসেজ ঢুকেছে একটাক্লিক করে দেখে, আরে! এ তো সেই ছেলেটা...ক মাস আগে একটা গল্পের গ্রুপে চার লাইনের লেখা কবিতা পড়ে ভাল লেগেছিল ছেলেটাকেশাক্য বসুচার লাইনের বেশি লেখেনা...কিন্তু বুকে ধাক্কা লাগে এক একটা লেখায়তাই একদিন দুরু দুরু বুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল...কদিন পরে অ্যাকসেপ্ট ও হয়ে গেছিলতারপর থেকে মাঝে মাঝে স্টক করে ছেলেটাকেবেশ হ্যান্ডু আছে! সাথে ফটোগ্রাফির হাত টা ও দারুনকিন্তু সে ও কে নিজে থেকে মেসেজ করেছে!
'হাই!'
'হ্যালো!'
'আপনি কি বিজি?'
'নট মাচ...বলুন?'
'অ্যাকচুয়ালি একটা জিনিস জিজ্ঞেস করার ছিল...আপনি কি সেক্টর ফাইভ দিয়ে যাতায়াত করেন? কলেজ মোড় দিয়ে?'
'হ্যাঁ...কিন্তু আপনি জানলেন কি করে?'
'আসলে এর মধ্যে এক দিন আপনাকে দেখলাম মনে হলো বাসে...আজ অনলাইন দেখে মনে হলো আপনিই ছিলেন...তাই আর কি...'
বাবা! 'একদিন' বাসে দেখেই মনে রেখেছে! সেদিন কি জামা পরে ছিল কে জানে! ভাল লাগছিল তো, ওকে দেখতে? নাহ্, কায়দা করে জিজ্ঞেস করতে হবে তো!
'তাই? কবে?'
'একজ্যাক্ট ডেট টা মনে নেই...লাস্ট উইক হবে!'
'বাবা, আপনার এত দিন ধরে মনে আছে?' টাইপ করতে করতে সেই বিজ্ঞাপনের মতো 'মন মে লাড্ডু ফুটা' হচ্ছিল রাহীর
'আসলে...সেদিন আপনি খুব রেগে ছিলেন...একটু...মানে...চিৎকার করছিলেন...তাই...'
শিট! প্রায় জোরেই বলে দিল রাহীগত বুধবারের ঘটনাবাসে নামতে যাবে, ওর আগে একটা কলেজ ছাত্রী, ড্রেস দেখেই মনে হচ্ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটায় পড়ে, তার গায়ে একজন অভদ্র লোক হাত দিয়ে দিল বাজে ভাবেফলে প্রতিবাদ করেছিল ওকিন্তু 'আপনার কি অ্যাঁ...আপনাকে কিছু করা হয়েছে' শুনে মাথা ঠিক ছিল না ওরদিয়েছে আচ্ছাসে ঝেড়েসোজা মুখের ওপর বলে দিয়েছে 'আপনাদের জানোয়ার বলা জানোয়ারকে অপমান..ওরা অনেক ভদ্র হয়...নরাধম আপনারা!' ঝগড়ার চোটে সেদিন প্রায় স্টপেজ মিস হচ্ছিলসেই কলেজ ছাত্রীটি 'দিদি ছেড়ে দাও' বলার পর হুঁশ হয়েছিলতবে মেয়েটিকেও ছাড়েনি ওবলে দিয়েছে 'অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শেখো...' আর এই ছেলেটি, একমাত্র ছেলে যাকে মাঝে মাঝে স্টক করে ও, সে ব্যাটা আর দিন পেল না, সেদিন ই ঘাপটি মেরে বসে ছিল বাসে?
-'ওহ্ ওকে'...পালাতে পারলে বাঁচে এখন রাহীতারপর চুপ করে যায়
অ্যাপে দেখাচ্ছে 'বিমল রাউত' ওর খাবার নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে, কুড়ি মিনিট লাগবেকুড়িইইইই মিনিট! এখন অনলাইন ও থাকা যাবে না, ক্রাশের কাছে বাঁশ খেয়েছে!
হঠাৎ, আবার 'টুং'
'প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড...'
'না না, ইটস ওকে...আসলে আমিই খুব মাথা গরম করে ফেলেছিলাম...'
'না রাহী, আমি সেজন্য স্যরি বলিনি...আসলে...আমিও বাকি বাসের মতো চুপ করে ছিলাম...আপনাকে সাপোর্ট না করে...'
একটু চুপ করে রইল রাহীসত্যি এই জিনিস টা খুব খারাপ লেগেছিল ওর সেদিনএক বাস লোক...কেউ প্রোটেস্ট করল না?
'হুম...ইটস ওকে..'
'আসলে রাহী, আপনি যখন কথা বলছিলেন...লোকটা পুরো চুপসে যাচ্ছিল...পুরো দুর্গা ঠাকুরের মতো লাগছিল আপনাকে...'
মাথাটা ঝিমঝিম করছিল রাহীর
'অ্যাঁ' তো লেখা যায় না মেসেঞ্জারে, তাই একটা স্মাইলি পাঠিয়ে দিল রাহী
'রাহী, আমার অফিস ও কাছাকাছি এরিয়াতে...সেদিন আপনার পেছন পেছন অন্য গেট টা দিয়ে নেমে পড়েছিলামদেখি, আপনি ব্যাগ থেকে একটা বিস্কুটের প্যাকেট বের করলেন...তারপর দুটো কুকুর কে খাওয়ালেন...ছুঁড়ে ছুঁড়ে না...হাত দিয়ে...দেখেই মনে হলো রোজ খাওয়ান ওদের...তারপর রাস্তা ক্রস করে চলে গেলেন...'
'বাব্বা...আপনি তো বেশ ফলো করেছেন আমাকে?'
'ফলো কোথায় করতে পারলাম? সেই বুধবারের পর আরেক বুধ চলে গিয়ে আজ শুক্কুর...আপনাকে একদিন ও দেখতে পাইনিভাবছিলাম কাল কুকুর দুটোকেই জিজ্ঞেস করব... ওদের ভাষা কিভাবে বুঝব ভেবে টেনশান করছিলাম, তাও ভাল "বাবা" আপনার দেখা পাইয়ে দিলেন...'
ফ্লাটারড হতে হতেও চুপ করে গেল রাহী"বাবা" টা কে রে বাবা!
'বাবা মানে?'
'আরে "বাবা" জানেন না? খুব জাগ্রত, জানেন? ওনাকে মাথা ঠেকিয়েছিলাম কাল...আর আজই পেয়ে গেলাম আপনাকে...'
'কে বলুন না...'
'সেন্ট ভ্যালেন্টাইন...বললাম না খুব জাগ্রত ঠাকুর...'
উত্তর দিতে যাবে, হঠাৎ ফোন, খাবার এসে গেছে...কিন্তু ওদের বিল্ডিং এর ব্লক টা খুঁজে পাচ্ছেন না ডেলিভারি দিতে আসা মানুষটিওনাকে বুঝিয়ে ফোন রেখে দেখে আরো কয়েকটা মেসেজ এসে গেছে...
'স্যরি, আপনি অফলাইন হয়ে গেলেন মেসেজ দেখে...'
'আমি কি ভুল কিছু বললাম?'
'প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড...'
হাসি পেল রাহীরতারপর লিখল 'শাক্য, আমি আমি যাকে খুব ভালবাসি, তার সাথে আছি এখন...'
'ওহ্, শিওর, আই আন্ডারস্ট্যান্ডস্যরি...আই বদারড ইউ...'
'জিজ্ঞেস করবেন না, সে কে?'
'আমি কিভাবে চিনব? সেলিব্রিটি কেউ?'
'না শাক্য...বিরিয়ানি আর চিকেন চাঁপআজ আবার ফিরনি ও অর্ডার করেছিলাম...'
এবার ওই দিক চুপ! কি হলো রে বাবা! একেই রাহীর কেমন স্বপ্নের মতো লাগছে সব...তারমধ্যে...
'হাই! স্যরি...আসলে..বাবা ভ্যালেন্টাইনকে প্রনাম করছিলাম, তাই রিপ্লাই করতে দেরি হলো...
কি খাচ্ছেন? বিরিয়ানি, চাঁপ, ফিরনি...এহ হে...কোল্ড ড্রিংক টা বাকি রয়ে গেল তো...'
'হুম...কিন্তু ওটা...আপনি খাওয়ান...'
'বেশ! সাড়ে ছ টা? আর ডি বি র কফি শপে? অসুবিধা হবে না তো মা দুর্গার আসতে?'
'মা দুর্গা! যাঃ...'
'যাঃ! জানেন তো? যাঃ মানেই হ্যাঁ...স্বয়ং পরশুরাম বলে গেছেন...'
ঠোঁট কামড়ে লেখা টা পড়তে পড়তে হাসছিল রাহী...আর মনে মনে বলছিল 'জয় বাবা ভ্যালেন্টাইনের জয়'।।
 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
আমার প্রথম প্রেমিক বলেছিল, আমায় একদিন না দেখলে সে অন্ধ হয়ে যাবে।
আমাদের দেখা হয় না বছর কয়েক। না সে অন্ধ হয়নি বরং তার চোখ দিয়েই রোজ নতুন মেয়েটিকে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।


দ্বিতীয়বার যে আমার জীবনে এসেছিল সে বলেছিল, আমায় ছাড়া বাঁচবে না।
কোনোরকম লাইফ সাপোর্ট ছাড়াই পাঁচ বছরের বৈবাহিক জীবনে সে দিব্যি বেঁচে আছে।

যার হাত ধরে সংসারে পদার্পণ করলাম সে বলেছিল, আমি তার অর্ধাঙ্গিনী।
ডিভোর্সের দু'বছর পরেও সে বহাল তাবিয়্যাতে আছে।

সংসারের কাজকর্ম ও লেখাপড়ায় ভালো হওয়ার জন্য বাবা বলেছিল, তুই আমার ঘরের লক্ষ্মী।
আজ তার কাছেই আমি সংসারের বাড়তি বোঝা।

একটা সময় আমার আচরণে মা গর্ব করে বলেছিল, আমার মেয়ে অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে শেখেনি।
আজ সেই মা-ই কথায় কথায় দোষারোপ করে, আমি কেন মানিয়ে নিলাম না।

নিজে সাধারণভাবে চলে যে ভাইকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালাম তখন সে বলেছিল, আমার অবদান সে কখনো অস্বীকার করতে পারবে না।
আজ সে আমার জন্য বন্ধুদের সামনে মুখ তুলে দাঁড়াতে পারে না।

ছেলের টিউশনের টাকা জোগাড় করতে না পারা কাকীমাকে বলেছিলাম কোনো টাকা লাগবে না, আমি পড়াবো; তখন কাকীমা হাতজোড় করে বলেছিল, তোমার মত ভালো মানুষ হয় না।
আজ সেই কাকীমাই পড়শিদের কানে কানে বলে বেড়ায়, ডিভোর্সি মেয়ে।

যেই বন্ধুটাকে পরীক্ষার আগে হ্যান্ডনোট দিতাম সে বলেছিল, চাকরি হলে সবার আগে আমায় জানাবে।
একের পর এক পদন্নোতি পেয়ে এখন সে মস্তবড় অফিসার, রাস্তাঘাটে আমায় চিনতেই পারে না।

আমার যে বান্ধবী বলেছিল আমি না উপস্থিতি থাকলে বিয়ের পিঁড়িতে বসবে না।
তার দ্বিতীয় সন্তান হবার খবরটাও শুনতে হয়েছে অন্যের মুখে।

আসলে মানুষ যখন কথা দেয় তখন সেই সময়ের কথা ভেবে কথা দেয়। আর এতে সেই সময়টা অনেক মধুর হয়তো হয়, কিন্তু জীবন সুন্দর হয় না। সময় বদলালে প্রতিশ্রুতিও বদলে যায়।
স্বার্থ অনুযায়ী আমরা সবাই সম্পর্ককে উল্টেপাল্টে সুবিধামত করে নিই। আসলে কারও জন্য কোনকিছু পড়ে থাকে না। মানুষ কোনো না কোনভাবে বাঁচতে শিখেই যায়, শিখে নিতে হয়।


Moumita Tasrin !
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
আজ থেকে আর এই গ্রুপে আসবো না ! লিখবও না ! স্বার্থের পৃথিবী এটা ! স্বার্থ নিয়ে আমি বাঁচতে পারবো না ! 
Like Reply
(07-04-2021, 09:18 PM)dada_of_india Wrote: আজ থেকে আর এই গ্রুপে আসবো না ! লিখবও না ! স্বার্থের পৃথিবী এটা ! স্বার্থ নিয়ে আমি বাঁচতে পারবো না ! 

ধুর বাল ... বোকাচোদা কোথাকার একটা ....

Big Grin
Like Reply
-"কি ভাবছ?"
-"কিচ্ছু না!"
-"বললেই হবে? বিছানায় শুয়েও এপাশ - ওপাশ করছ..."
-"তার মানেই কি কিছু ভাবছি?"
-"আহা, রাগছ কেন?"
-"রাগছি নাজাস্ট ইনফর্ম করছি"
-"যে, কিছু ভাবছ না? আচ্ছা, বেশ!"
-"আজ দেখলে আমাকে কেমনভাবে বলল ছোট কাকিমা? আমার মুখে দাগ, ওজন বেশি...কত অভিযোগ!"
-"বাদ দাও! উনি কি জানেন তোমার ব্যাপারে সব?"
-"সব মানে? কি সব?"
-"আহা! সব মানে, তোমার থাইরয়েডের কথাতোমার পিসিওডির কথাজানেন উনি?"
-"আমি কি ওজন কমাবার চেষ্টা করিনি বলো? জিম করেছি, ডায়েট করেছি..."
-"হ্যাঁ, সাতদিনের জন্য..."
-"কি বললে?"
-"আরে, ইয়ার্কি মারছি বাবা"
-"...."
-"অ্যাই, শোনো?"
-"হুমকি?"
-"ছোট কাকিমাকে মারো গুলি! আজ মায়ের নীল পিওর সিল্কে তোমাকে দারুণ লাগছিল কিন্তুএকটা সাদা জামা পরা ছেলে...বারবার তোমার দিকে তাকাচ্ছিল"
-"ধ্যাত!"
-"সত্যি বলো, লক্ষ্য করোনি তুমি?"
-"হুম, এক দু'বার করেছি"
-"মানে তুমিও তার দিকে তাকিয়েছিলে!"
-"উউউউউউফফফফফফ! তুমি না!"
-"এই তো হাসি ফুটেছে মুখে! গুড গার্ল!"
-"হুম!"
-"আর, আমার তোমাকে নিয়ে কোনো সমস্যা নেই তো দুনিয়াসে ক্যায়া লেনা দেনা, ডার্লিং! "
-"শোনো..."
-"ইয়েস..."
-"আই লাভ ইউ, মনথ্যাংকইউ ফর বিয়িং দেয়ার! রিয়্যালি!"
-"হাহা, নিজেকে নিজে থ্যাংকইউ দিচ্ছি আমরা, ইশিতা! মন, আরেক মনকে! গুড, গুড! চলো এবার ঘুমিয়ে পড়ি, কাল তো সকাল থেকে কাজ"
-"গুড নাইট! আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী আর, আই লাভ মাইসেল্ফ!"
 
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(06-04-2021, 08:50 PM)dada_of_india Wrote: আমার প্রথম প্রেমিক বলেছিল, আমায় একদিন না দেখলে সে অন্ধ হয়ে যাবে।
আমাদের দেখা হয় না বছর কয়েক। না সে অন্ধ হয়নি বরং তার চোখ দিয়েই রোজ নতুন মেয়েটিকে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।


দ্বিতীয়বার যে আমার জীবনে এসেছিল সে বলেছিল, আমায় ছাড়া বাঁচবে না।
কোনোরকম লাইফ সাপোর্ট ছাড়াই পাঁচ বছরের বৈবাহিক জীবনে সে দিব্যি বেঁচে আছে।

যার হাত ধরে সংসারে পদার্পণ করলাম সে বলেছিল, আমি তার অর্ধাঙ্গিনী।
ডিভোর্সের দু'বছর পরেও সে বহাল তাবিয়্যাতে আছে।

সংসারের কাজকর্ম ও লেখাপড়ায় ভালো হওয়ার জন্য বাবা বলেছিল, তুই আমার ঘরের লক্ষ্মী।
আজ তার কাছেই আমি সংসারের বাড়তি বোঝা।

একটা সময় আমার আচরণে মা গর্ব করে বলেছিল, আমার মেয়ে অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে শেখেনি।
আজ সেই মা-ই কথায় কথায় দোষারোপ করে, আমি কেন মানিয়ে নিলাম না।

নিজে সাধারণভাবে চলে যে ভাইকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালাম তখন সে বলেছিল, আমার অবদান সে কখনো অস্বীকার করতে পারবে না।
আজ সে আমার জন্য বন্ধুদের সামনে মুখ তুলে দাঁড়াতে পারে না।

ছেলের টিউশনের টাকা জোগাড় করতে না পারা কাকীমাকে বলেছিলাম কোনো টাকা লাগবে না, আমি পড়াবো; তখন কাকীমা হাতজোড় করে বলেছিল, তোমার মত ভালো মানুষ হয় না।
আজ সেই কাকীমাই পড়শিদের কানে কানে বলে বেড়ায়, ডিভোর্সি মেয়ে।

যেই বন্ধুটাকে পরীক্ষার আগে হ্যান্ডনোট দিতাম সে বলেছিল, চাকরি হলে সবার আগে আমায় জানাবে।
একের পর এক পদন্নোতি পেয়ে এখন সে মস্তবড় অফিসার, রাস্তাঘাটে আমায় চিনতেই পারে না।

আমার যে বান্ধবী বলেছিল আমি না উপস্থিতি থাকলে বিয়ের পিঁড়িতে বসবে না।
তার দ্বিতীয় সন্তান হবার খবরটাও শুনতে হয়েছে অন্যের মুখে।

আসলে মানুষ যখন কথা দেয় তখন সেই সময়ের কথা ভেবে কথা দেয়। আর এতে সেই সময়টা অনেক মধুর হয়তো হয়, কিন্তু জীবন সুন্দর হয় না। সময় বদলালে প্রতিশ্রুতিও বদলে যায়।
স্বার্থ অনুযায়ী আমরা সবাই সম্পর্ককে উল্টেপাল্টে সুবিধামত করে নিই। আসলে কারও জন্য কোনকিছু পড়ে থাকে না। মানুষ কোনো না কোনভাবে বাঁচতে শিখেই যায়, শিখে নিতে হয়।


Moumita Tasrin !


এই ঘুরন্ত নাগর দোলায়

কখন কাঁদায় আর কখন ভুলায় ।
কখন সাদা আর কখন কালো
কখন মন্দ যে কখন ভালো ।
জীবন জুয়ায় বীর জিতে গেলে,
বোকার হদ্দ যদি হেরে গেলে ।
কপাল মন্দ আজ, কাল চিচিং ফাঁক।
এই দুনিয়া ঘুরে বনবন বনবন
ছন্দে ছন্দে কত রঙ বদলায়
রঙ বদলায়
দুরন্ত ঘূর্ণির এই লেগেছে পাক

এই দুনিয়া ঘোরে বন বন বন বন
ছন্দে ছন্দে কত রং বদলায়....
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
এই মাঘেই বিয়ে হয়ে কলকাতায় এসেছে দিতিপ্রিয়াসত্যি বলতে কি, এই টোনাটুনির সংসার বেশ ভালোই লাগছে ওরএকটাই সমস্যা, বরাবর বাড়িতে থাকার অভ্যাস, আগরতলায় ওদের জয়েন্ট ফ্যামিলিআর এখানে এসে একটা ছোট্ট দুকামরার ফ্ল্যাটঅরূপ বেরিয়ে যাবার পর সময় আর কাটতেই চায় না ওর
আগে শুনেছিল, কলকাতার, বিশেষত, ফ্ল্যাটের লোকজন কেউ কারো সাথে মেশে নাএখানে এসে দেখলো সেরকম নয় ব্যাপার টাপ্রতিবেশীদের মধ্যে যাতায়াত আছে মোটামুটিএকটু একটু করে আলাপ ও হচ্ছিল সবার সাথেওদের ফ্ল্যাটে এক একটা ফ্লোরে তিনটে করে ফ্ল্যাটওদের ফ্লোরে একটি ফ্ল্যাটে একটা পাঞ্জাবি পরিবার থাকে আর অন্যটিতে একজন দাদা থাকেন, আগে কিছু একটা চাকরি করতেন, এখন আর্লি রিটায়ারমেন্ট নিয়ে একটি গবেষনামূলক বই লিখছেনগবেষনামূলক বই শুনে আগ্রহী হয়েছিল ওভাল করে আলাপ জমানোর ও ইচ্ছে ছিলকিন্তু দাদা ব্যাচেলার ভেবে আর যায় নি ওনার বাড়িতবে কোন কারনে সিঁড়িতে বা লিফটে দেখা হলে সৌজন্যের হাসি আর অল্প বাক বিনিময় হয়েছেঅবশ্য তিনতলার কৃষ্ণা কাকিমাদের সাথে ভালোই আলাপ হয়েছে দিতিরবিকেলের দিকে মাঝে মাঝেই ওনার বাড়ি চলে যায় দিতিআর সারা দুপুর নিজের বেডরুমের বক্স জানলায় বসে থাকে
রোজই দুপুরে জানলায় বসে দিতি দেখে সামনের বাড়ির দাদা কোথায় যেন বেড়িয়ে যানআর প্রায় এক ই সময়ে...দুপুর আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যেএকদিন কাকিমাকে জিজ্ঞেস করায় উনি চোখ ঘুরিয়ে হেসে বলেছিলেন 'দেখো কোথায় যায়...একা মানুষ...' শুনে কেমন গা রি রি করে উঠেছিল ওরতবে অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলবে না, তাও আবার নতুন জায়গায়, তাই চুপ করে ছিল ও
এই কদিন হলো লক ডাউন হয়ে গেছে সারা দেশচিন্তার মধ্যেও অরূপ আছে সবসময় কাছে, যতই ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলুক না কেন, বরের মুখ দেখতে পাচ্ছে সবসময়, এতেই দিতি খুশ!
আজ অরূপের একটা দরকারি কন কল আছে, তাই ড্রয়িংরুমে বসে গেছে ওলাঞ্চ শেষ করে নিজের বক্স জানলায় বসল দিতিমাত্র দুজনের সংসার, তাও আড়াইটে বেজেই গেল সব কাজ সারতে সারতে
আয়েশ করে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, দেখে সামনের বাড়ির দাদা হনহন করে হেঁটে যাচ্ছেদেখে খুব অবাক হলো ওসারা দেশ তালা বন্ধ, সরকার থেকে বারবার করে ঘরে থাকতে বলছে, আর এই অবস্থাতেও উনি...ছিঃ!
হঠাৎ কি হয়ে গেল, মাথাটা গরম হয়ে গেল দিতিরকলেজের সেই ডিবেট চ্যাম্পিয়ন জেগে উঠল ওর মধ্যেএই লোকটার কোনো রাইট নেই এই ভাবে বেরোনোর, কার্ফু অস্বীকার করেসোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি নেই একটা?
এক নজর অরূপের দিকে তাকিয়ে, কুর্তির ওপর একটা স্কার্ফ জড়িয়ে বেরিয়ে পড়ল ওআজ দেখে নেবে ও গবেষক কে!
খানিকটা যেতেই, কমপ্লেক্সের গেটের কাছেই দেখা মিলল তাঁরকেমন হাঁটু গেড়ে বসে আছে! পড়ে গেল নাকি! হলে বেশ হবে! যেমন কর্ম, তেমন ফল!
দেখার জন্য এগিয়ে এসে দেখে সামনে একটা বড় কুকুর, আর চারটে ছোট ছোট ছানাআর উনি একটা খবরের কাগজ পেতে তাতে ভাত রাখছেনআর কুকুর গুলোকে বলছেন 'নে তোরা খেয়ে নে, আমি বাকিদের খাবার টা চট করে দিয়ে আসিআবার কাল আসব...' কুকুর গুলো চুপ করে খাচ্ছেদেখেই মনে হচ্ছে ওরা এভাবে রোজ খাবার খেতে অভ্যস্ত
তারপর ওদের মাথায় হাত দিয়ে একটু আদর করে গলায় রাখা মাস্ক টা পরে বেরিয়ে গেলেন গেট দিয়েএকটু এগিয়ে দিতি দেখে, রাস্তার ওই ফুটে কটা কুকুরকে খেতে দিচ্ছেন উনি
বেচারা কুকুর গুলো! ওরা যে কিছু খেতে পারছে না, দোকান পাট সব বন্ধ...ভাগ্যিস এই দাদা ছিলেন...
কাঠ দুপুরে সব কিছু ভিজে ভিজে লাগছে দিতিরমনে মনে ঠিক করে নিল এবার থেকে সকালে আর রাতে ও একটু খাবার দেবে এদেরমাস্ক পরে বেরোবে, ফিরেই জামা কেচে নেবে নিয়ম মতোআহা, বেচারারা...আমাদের কত ভালোবাসে...আর দাদাটার সাথেও ভাব করে নেবে আজই
চোখে জল,তবু মন টা যে কি ভাল লাগছে দিতির এখন...
 
 
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
[Image: Whats-App-Image-2021-04-15-at-4-26-50-PM.jpg]
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(15-04-2021, 12:54 PM)ddey333 Wrote: এই মাঘেই বিয়ে হয়ে কলকাতায় এসেছে দিতিপ্রিয়াসত্যি বলতে কি, এই টোনাটুনির সংসার বেশ ভালোই লাগছে ওরএকটাই সমস্যা, বরাবর বাড়িতে থাকার অভ্যাস, আগরতলায় ওদের জয়েন্ট ফ্যামিলিআর এখানে এসে একটা ছোট্ট দুকামরার ফ্ল্যাটঅরূপ বেরিয়ে যাবার পর সময় আর কাটতেই চায় না ওর
আগে শুনেছিল, কলকাতার, বিশেষত, ফ্ল্যাটের লোকজন কেউ কারো সাথে মেশে নাএখানে এসে দেখলো সেরকম নয় ব্যাপার টাপ্রতিবেশীদের মধ্যে যাতায়াত আছে মোটামুটিএকটু একটু করে আলাপ ও হচ্ছিল সবার সাথেওদের ফ্ল্যাটে এক একটা ফ্লোরে তিনটে করে ফ্ল্যাটওদের ফ্লোরে একটি ফ্ল্যাটে একটা পাঞ্জাবি পরিবার থাকে আর অন্যটিতে একজন দাদা থাকেন, আগে কিছু একটা চাকরি করতেন, এখন আর্লি রিটায়ারমেন্ট নিয়ে একটি গবেষনামূলক বই লিখছেনগবেষনামূলক বই শুনে আগ্রহী হয়েছিল ওভাল করে আলাপ জমানোর ও ইচ্ছে ছিলকিন্তু দাদা ব্যাচেলার ভেবে আর যায় নি ওনার বাড়িতবে কোন কারনে সিঁড়িতে বা লিফটে দেখা হলে সৌজন্যের হাসি আর অল্প বাক বিনিময় হয়েছেঅবশ্য তিনতলার কৃষ্ণা কাকিমাদের সাথে ভালোই আলাপ হয়েছে দিতিরবিকেলের দিকে মাঝে মাঝেই ওনার বাড়ি চলে যায় দিতিআর সারা দুপুর নিজের বেডরুমের বক্স জানলায় বসে থাকে
রোজই দুপুরে জানলায় বসে দিতি দেখে সামনের বাড়ির দাদা কোথায় যেন বেড়িয়ে যানআর প্রায় এক ই সময়ে...দুপুর আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যেএকদিন কাকিমাকে জিজ্ঞেস করায় উনি চোখ ঘুরিয়ে হেসে বলেছিলেন 'দেখো কোথায় যায়...একা মানুষ...' শুনে কেমন গা রি রি করে উঠেছিল ওরতবে অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলবে না, তাও আবার নতুন জায়গায়, তাই চুপ করে ছিল ও
এই কদিন হলো লক ডাউন হয়ে গেছে সারা দেশচিন্তার মধ্যেও অরূপ আছে সবসময় কাছে, যতই ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলুক না কেন, বরের মুখ দেখতে পাচ্ছে সবসময়, এতেই দিতি খুশ!
আজ অরূপের একটা দরকারি কন কল আছে, তাই ড্রয়িংরুমে বসে গেছে ওলাঞ্চ শেষ করে নিজের বক্স জানলায় বসল দিতিমাত্র দুজনের সংসার, তাও আড়াইটে বেজেই গেল সব কাজ সারতে সারতে
আয়েশ করে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, দেখে সামনের বাড়ির দাদা হনহন করে হেঁটে যাচ্ছেদেখে খুব অবাক হলো ওসারা দেশ তালা বন্ধ, সরকার থেকে বারবার করে ঘরে থাকতে বলছে, আর এই অবস্থাতেও উনি...ছিঃ!
হঠাৎ কি হয়ে গেল, মাথাটা গরম হয়ে গেল দিতিরকলেজের সেই ডিবেট চ্যাম্পিয়ন জেগে উঠল ওর মধ্যেএই লোকটার কোনো রাইট নেই এই ভাবে বেরোনোর, কার্ফু অস্বীকার করেসোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি নেই একটা?
এক নজর অরূপের দিকে তাকিয়ে, কুর্তির ওপর একটা স্কার্ফ জড়িয়ে বেরিয়ে পড়ল ওআজ দেখে নেবে ও গবেষক কে!
খানিকটা যেতেই, কমপ্লেক্সের গেটের কাছেই দেখা মিলল তাঁরকেমন হাঁটু গেড়ে বসে আছে! পড়ে গেল নাকি! হলে বেশ হবে! যেমন কর্ম, তেমন ফল!
দেখার জন্য এগিয়ে এসে দেখে সামনে একটা বড় কুকুর, আর চারটে ছোট ছোট ছানাআর উনি একটা খবরের কাগজ পেতে তাতে ভাত রাখছেনআর কুকুর গুলোকে বলছেন 'নে তোরা খেয়ে নে, আমি বাকিদের খাবার টা চট করে দিয়ে আসিআবার কাল আসব...' কুকুর গুলো চুপ করে খাচ্ছেদেখেই মনে হচ্ছে ওরা এভাবে রোজ খাবার খেতে অভ্যস্ত
তারপর ওদের মাথায় হাত দিয়ে একটু আদর করে গলায় রাখা মাস্ক টা পরে বেরিয়ে গেলেন গেট দিয়েএকটু এগিয়ে দিতি দেখে, রাস্তার ওই ফুটে কটা কুকুরকে খেতে দিচ্ছেন উনি
বেচারা কুকুর গুলো! ওরা যে কিছু খেতে পারছে না, দোকান পাট সব বন্ধ...ভাগ্যিস এই দাদা ছিলেন...
কাঠ দুপুরে সব কিছু ভিজে ভিজে লাগছে দিতিরমনে মনে ঠিক করে নিল এবার থেকে সকালে আর রাতে ও একটু খাবার দেবে এদেরমাস্ক পরে বেরোবে, ফিরেই জামা কেচে নেবে নিয়ম মতোআহা, বেচারারা...আমাদের কত ভালোবাসে...আর দাদাটার সাথেও ভাব করে নেবে আজই
চোখে জল,তবু মন টা যে কি ভাল লাগছে দিতির এখন...
 
 

লকডাউন শুরু হওয়া থেকে আমার নিজেরটা ছাড়া আরও আটটি সারমেয় আছে যাদেরকে রোজ দুবেলা খাবার দিতে হয় ! আমার বাড়ির গেট ছেরে তারা কোথাও নরেনা !
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(16-04-2021, 06:51 PM)dada_of_india Wrote: লকডাউন শুরু হওয়া থেকে আমার নিজেরটা ছাড়া আরও আটটি সারমেয় আছে যাদেরকে রোজ দুবেলা খাবার দিতে হয় ! আমার বাড়ির গেট ছেরে তারা কোথাও নরেনা !

খুব ভালো কাজ করছেন দাদা ❤
ওরাও তো সামান্য ভালোবাসা আর খাদ্যই চায়. আমরা স্বার্থপর.  আধু নিজেকে নিয়ে থাকি... তার মধ্যেই কিছু মানুষ.. যাদের মান আর হুশ দুই আছে তাদের জন্যই এই জন্তুরা খেতে পাচ্ছে.......❤
Like Reply




Users browsing this thread: 7 Guest(s)