Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
02-02-2021, 12:36 PM
(This post was last modified: 14-03-2023, 01:53 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ভেসে থাকার অধিকার
ধর্মাশোক
সেদিন হঠাৎ দেখতে পেলাম জাগরীকে
গড়িয়াহাটে
শীতের রোদের বাদামি মলাট রাস্তাঘাটে
দোকান পাটে ,
"তুমি , কতদিন পর দেখা , কী খবর , কেমন আছ? "
কেমন যেন অচেনা লাগল শব্দ দুটো
জাগরীর পৃথুলা শরীরের মত ,
" খবর" মানে তো ব্যতিক্রম
আর আমি যেরকম ভাবে আছি সে তো নিয়ম ,
জাগরী কী জানতে চায় ?
একটার সাথে যোজন তফাতে অন্যটা ,
তবু চারপাশে এত খবরের নেশা,
আকাশের কোনো খবর নেই , মাছেদের নেই
পাখীদের নেই , শিশুদের নেই ,
মানুষ কেবল খবর খুঁজে খুঁজে
ব্যতিক্রমটাই নিয়ম বলে ধরে নেয় ,
তাই নিয়ম হয়ে যায় ব্যতিক্রম ,
এরকম কোনো দুনিয়া সৃস্টি করা যায় ?
যেখানে কোনো খবর হবে না ,
শুধু থাকা হবে , ঝরা হবে ,
ধরা ও না , ছাড়া ও না ,
জন্ম মৃত্যুও খবর না ,
সেদিন হয়তো জাগরী আবার আসবে গড়িয়াহাটে,
কোজাগরী চাঁদের
টিপ পরে
ঝলমলে হেমন্ত সন্ধ্যায়
আমায় দেখে বলবে
" তোমায় দেখেই বুঝি তুমি ভাল আছ
আমিও আছি
আর দেখ ঐ চাঁদ আছে ,
কেমন যেন হাসছে , ......
সেদিন ঐ নিস্খবরী সন্ধ্যায়
বাঁচা হবে জোরদার
খবর নয়
মানুষের শুধু ভালবাসাতেই
ভেসে থাকার অধিকার !!!!
Collected..
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
দর্শন মূলক গল্প, খুব ভালো লেখা
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(02-02-2021, 12:36 PM)ddey333 Wrote: ভেসে থাকার অধিকার
ধর্মাশোক
সেদিন হঠাৎ দেখতে পেলাম জাগরীকে
গড়িয়াহাটে
শীতের রোদের বাদামি মলাট রাস্তাঘাটে
দোকান পাটে ,
"তুমি , কতদিন পর দেখা , কী খবর , কেমন আছ? "
কেমন যেন অচেনা লাগল শব্দ দুটো
জাগরীর পৃথুলা শরীরের মত ,
" খবর" মানে তো ব্যতিক্রম
আর আমি যেরকম ভাবে আছি সে তো নিয়ম ,
জাগরী কী জানতে চায় ?
একটার সাথে যোজন তফাতে অন্যটা ,
তবু চারপাশে এত খবরের নেশা,
আকাশের কোনো খবর নেই , মাছেদের নেই
পাখীদের নেই , শিশুদের নেই ,
মানুষ কেবল খবর খুঁজে খুঁজে
ব্যতিক্রমটাই নিয়ম বলে ধরে নেয় ,
তাই নিয়ম হয়ে যায় ব্যতিক্রম ,
এরকম কোনো দুনিয়া সৃস্টি করা যায় ?
যেখানে কোনো খবর হবে না ,
শুধু থাকা হবে , ঝরা হবে ,
ধরা ও না , ছাড়া ও না ,
জন্ম মৃত্যুও খবর না ,
সেদিন হয়তো জাগরী আবার আসবে গড়িয়াহাটে,
কোজাগরী চাঁদের
টিপ পরে
ঝলমলে হেমন্ত সন্ধ্যায়
আমায় দেখে বলবে
" তোমায় দেখেই বুঝি তুমি ভাল আছ
আমিও আছি
আর দেখ ঐ চাঁদ আছে ,
কেমন যেন হাসছে , ......
সেদিন ঐ নিস্খবরী সন্ধ্যায়
বাঁচা হবে জোরদার
খবর নয়
মানুষের শুধু ভালবাসাতেই
ভেসে থাকার অধিকার !!!!
Collected..
দারুন লাগলো !!! !!!!
Reps Added +1
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
#অন্য_রূপকথা
কোনো এক অজ্ঞাত কারণে, দমদমের যেখানে আমি থাকি সেখানে মাত্র একটি এটিএম ই আজ সকালে কাজ করছিল। বাকিগুলোর কোনোটায় টাকা নেই তো কোনোটায় নোটিশ সাঁটা 'এটিএম নট ওয়ার্কিং'!
যাই হোক, সেই 'শিবরাত্রির সলতে', বন্ধন ব্যাঙ্কের এটিএম টাতে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার আগে দুজন, আর আরেকজন ভেতরে ছিলেন।
তা বলতে নেই, যিনি ভেতরে ছিলেন, বেশ অনেকক্ষন সময় লাগাচ্ছিলেন! এদিকে ভিনাইল লাগানো ঘষা কাঁচের মধ্যে দিয়ে দেখা যাচ্ছিল না কিছুই। আমার আগের চরকা বরকা বারমুডা পরা, কমলা চুলের ছেলেটি উসখুশ করছিল অনেকক্ষন ধরে। তারপর তার সামনের লোকটির থেকে একটু সরে গিয়ে এটিএমের দরজায় টোকা মেরে বলল "আরে কি করছেন টা কি? রোব্বারের বাজার...সবার ই তো তাড়া আছে!" আর তারপর ই 'উহ!' করে একটা বিরক্তির আওয়াজ করল।
সামান্য পরেই দরজা খুলে গেল। বেরোলেন একজন বয়স্ক মানুষ। ধূসর রঙের সোয়েটার পরা...মাথায় একটা হনুমান টুপি। হাতে বাজারের ব্যাগ। আরেক হাতে খাপে ধরা এটিএম কার্ড...সেটিকে যত্ন করে সোয়েটারের নীচে, পাঞ্জাবির বুকপকেটে রাখলেন উনি। তারপর এগিয়ে গেলেন।
ততক্ষনে লাইনে থাকা প্রথম ভদ্রলোকটি এটিএমে ঢুকে গেছেন।
হঠাৎ আমাকে চমকে দিয়ে কমলা চুলের ছেলেটি "দিদি আমার লাইনটা রইল" বলেই সেই ভদ্রলোকের দিকে এগিয়ে গেল। আমার ও, কেন জানি না, চোখ ঘুরে গেল সেই দিকে।
দেখি, ছেলেটি ভদ্রলোকের সামনে গিয়ে বলল "জ্যেঠু, কিছু মনে করবেন না...আমি বুঝতে পারি নি আপনি, মানে একজন বয়স্ক মানুষ ছিলেন এটিএমে... বাজে ভাবে কথা বলে ফেলেছি। স্যরি জ্যেঠু। "
দুজনেই আমার দিকে পিছন ফিরে ছিলেন...তাই শুনতে পেলেও, দেখতে পাচ্ছিলাম না কাউকে...কিন্তু কেন জানি না মনে হচ্ছিল...ছেলেটির মুখে হয়ত একটু লাজুক হাসি ছিল...আর, বৃদ্ধ, কিঞ্চিৎ জবুথবু মানুষটির চোখ হয়ত ছলছল করছিল...একদম আমার ই মতো...
কত সাধারণ একটা কাজ...ক্ষমা চাওয়া...ভুল স্বীকার করা...আর হয়ত মনে মনে সেটা পুনরায় করার অঙ্গীকার না করা...এই তো...এইটুকুই তো... আর সেটুকুই কিভাবে কানায় কানায় ভরিয়ে দিতে পারে মনের আনাচকানাচ...আজ ও...
ফেরার পথে, নিজের মনেই একটা কথা মনে হচ্ছিল... , হালফিলের রাজনীতির অনেক ঊর্ধে...ত্যাগের, তিতিক্ষার...আর হয়ত ক্ষমা চাওয়া বা করারও...
আর তাও...তবুও...
কেন যে এত বিবাদ চারিদিকে...
এত..এত... "এত রক্ত কেন?"
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
বাহ্ খুব সুন্দর কবিতাটা, বেশ ভালো লাগলো
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
এবার ddey তুমি নিজে কিছু লেখো, একটা চেষ্টা করেই দেখো না !
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(09-02-2021, 02:32 PM)Mr Fantastic Wrote: এবার ddey তুমি নিজে কিছু লেখো, একটা চেষ্টা করেই দেখো না !
ইচ্ছে যে করে না তা নয় , কিন্তু সমস্যা হলো লিখতে গেলে যে পরিমানের ধৈর্য আর মনঃসংযোগের দরকার সেটার খামতি
পিনুদার মতো লেখককে দিয়ে গল্প লেখাছি , এটাই একটা বিরাট বড়ো প্রাপ্তি আমার জন্য , আর কি চাই ??
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(09-02-2021, 02:32 PM)Mr Fantastic Wrote: এবার ddey তুমি নিজে কিছু লেখো, একটা চেষ্টা করেই দেখো না !
এটা আমিও বলছি...... আপনিও এবারে কিছু লিখুন. আপনার লেখার ধরণ থেকে বোঝা যায় আপনার মধ্যেও লেখক আছে.
হ্যা এটা ঠিক সবাই লেখক হয়না... অনেকে খুব ভালো পাঠকও হয়... কিন্তু আমার মনে হয় আপনি পারবেন. যেটা আমি ফ্যান্টাস্টিক দাদাকেও বলেছিলাম... লেখার ক্ষেত্রে মন হলো আপনার সেই মুহূর্তে প্রিয় বন্ধু. মন যা বলবে... হাত তাই লিখবে. শুরুই করুন না কিছু একটা বিষয় নিয়ে.. বড়ো গল্প নয়.... ছোট্ট কোনো গল্পও না হয় চেষ্টা করুন. দেখবেন.... এমন লেখার নেশা ভর করবে যে নানারকম আইডিয়া আসতে শুরু করবে তখন. কে কি ভাববে ওসব মাথাতেও আসবেনা.
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
- হ্যালো আমি সাইকিয়াট্রিস্ট ডঃ অরিন্দম বাগচীর সঙ্গে কথা বলতে পারি?
- হ্যাঁ বলুন, আমি ওনার পি এ বলছি।
- আসলে আজ আমার অ্যাপয়মেন্ট ফিক্স করা ছিলো ওনার সাথে।
- আচ্ছা আপনার নামটা একবার বলুন।
- অন্তরা। অন্তরা মিত্র।
- ওয়ান মিনিট প্লিজ।
- শিওর।
- হ্যাঁ, অন্তরা মিত্র, পেয়েছি। হ্যাঁ আজ দুপুর দুটোয় কলেজ স্ট্রীটে কফি হাউসে চলে আসবেন। উপরে উঠে একদম বামদিকের টেবিলটায় বসবেন।
- কফি হাউসে? ওনার চেম্বার?
- ওটাই ওনার চেম্বার!
- বুঝলাম না
- যেমন বলা হচ্ছে করুন। আর আশা করি আপনার জানা আছে ডক্টর পার পেশেন্ট সময় দেন অনেক বেশী, তাই তার চার্জ টাও তুলনায় বেশী।
- হ্যাঁ জানি। মানি ইজ নট দ্য প্রবলেম। আই ওয়ান্ট সলুউশন। আই এম টায়ার্ড উওথ মাই লাইফ।
- বেশ তাহলে দুটোয় চলে আসুন। রাখলাম। হ্যাভ এ নাইস ডে।
কি অদ্ভুত! কফি হাউসে কোন ডাক্তার দেখে। পাগল দেখতে দেখতে ডাক্তারও পাগল হয়ে গিয়েছে বোধহয়।
কিন্তু আর পারা যাচ্ছিলো না। রাতে ঘুমের ওষুধ ছাড়া ঘুম নাই। নানা রকমের বাজে দুশ্চিন্তা, আদৌ যার কোনো ভ্যালু নেই। সবসময় একটা ভয়। কিসের ভয় ভাবতে বসলে আর কোনো উত্তর মেলে না, কিন্তু ভয় টা জাঁকিয়ে ধরে থাকে সবসময়। বারবার মানিব্যাগ চেক, হারিয়ে গেলো না তো? ঘরে ঢুকে ছিটকিনি বারবার চেক, ও জানে ভালো করে যে ছিটকিনি ও টেনেছে, তাও মনে হয় যদি খোলা থেকে যায়।
বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাচ্ছিলো। সবাই বলতো কেমন মনমরা হয়ে থাকিস সবসময়।
শেষে নিজেই সাহস করে সিদ্ধান্তটা নিলো অন্তরা।
স্নান করে হালকা একটু খেয়ে রেডি হয়ে নিলো। ক্যাব বুক করে পৌছে গেলো কলেজ স্ট্রীটে। উপরে উঠে বামদিকের টেবিলটায় গিয়ে বসলো। কফি হাউস অন্তরার পছন্দের জায়গা নয়, সিগারেটের গন্ধ সহ্য হয়না একেবারে।
দুটো বাজতে মিনিট দশেক দেরী। কফি হাউস আজ তুলনামূলক ভাবে অনেকটা ফাঁকা। সামনের টেবিলে একটা প্রায় সমবয়সী ছেলে কফি নিয়ে ফোন ঘাঁটছে। সবাই নিজের নিজের মতো গল্প করিছে, ধোঁয়া উড়াচ্ছে।
দুটো বাজলো। দুটো পনেরো। আড়াইটা।
ফোন করলো। ফোন ও তোলেনা। কি অদ্ভুত!
হঠাৎ করে সামনে বসা সেই ছেলেটা উঠে তার টেবিলে এসে বসলো।
- এক্সিউজ মি, আপনাকে অনেকক্ষন ধরে দেখছি, আপনাকে কি ডঃ বাগচী এখানে আসতে বলেছেন?
বিস্মিত হয় অন্তরা।
- আপনি কি করে জানলেন?
- আমারও তো সেম কেস। এদিকে ফোনও ধরছেননা। কি যে বাজে ঝামেলায় পড়লাম। দেখি আর আধঘন্টা মতো, মনে তো হয়না আর আসবেন।
- হুম দেখা যাক।
অল্পবিস্তর কথা হলো। অন্তরা ভীষন ইন্ট্রোভার্ট, অচেনা লোকের সঙ্গে একদম কথা বলতে পারেনা। তাও ছেলেটার সঙ্গে অনেক কথা বললো। ছেলেটা ভীষন মজাদার। কথায় কথায় হাসে। মনে হচ্ছিলোনা এর কোনো মানসিক রোগ থাকতে পারে। তবুও, বাহির থেকে কী আর সব বোঝা যায়!
তিনটে বাজলো। ফোনও ধরছেননা। নাহ এবার উঠতে হয়।
- আচ্ছা আপনার প্ল্যান কি আজ?
- কোনো প্ল্যান নেই। ডক্টর তো অনেক সময় নিয়ে দেখেন শুনেছিলাম, তাই আর কোনো প্ল্যান রাখিনি।
- আমিও তো তাই। আচ্ছা আপনি তো বললেন কলকাতা তেমন চেনেননা, চলুন আপনাকে কলকাতা চেনাই।
- কীভাবে শুনি?
- প্রথমেই যাবো কাছেই পুঁটিরাম এ, কড়াইশুঁটির কচুড়ি আর রাবড়ী দিয়ে টিফিন। তারপরে মেট্রো করে ময়দান। শীতের কুয়াশাঘেরা ময়দান ভীষন মায়াবী। তারপরে হলুদ ট্যাক্সি করে কাছেই প্রিন্সেপ ঘাট। সেখানে নৌকা করে সূর্যাস্ত। আহা জমে ক্ষীর। কি বলেন?
ঢোক গিললো অন্তরা। এরকম পাগলের মতো ও বাঁচতো এককালে। তারপরে কবে যে বাঁচতে ভুলে গেলো কে জানে।
আরে ছেলেটার নামটাই তো জানা হয়নি।
- শুভব্রত। লোক প্যার সে হমে শুভ বুলাতে হ্যায়।
- হাহা।
- বলুন এবার যাবেন কি না? এরকম অফার কিন্তু অ্যামাজনেও পাবেননা! আর একটা রিকোয়েস্ট, প্লিজ আপনি বলবে না আর, ওতো ও বুড়ো হয়ে যাইনি এখনো!
না বলতে গিয়েও কখন হাঁ বলে ফেললো অন্তরা। নিজের ভেতরের বন্যপ্রানীরা বহুদিন পর লাগাম খোলার সুযোগ পেয়ে নাচানাচি জুড়েছে।
পুঁটিরামে খেলো। ময়দানে বিকেলের রোদ মাখলো। এবার গন্তব্য প্রিন্সেপ ঘাট।
শুভ ও একের পর এক জোকস বলে হাসিয়েই চলেছে। যেখানে সেখানে গুনগুনিয়ে ওঠে নিজের মতো।
প্রিন্সেপ ঘাট এ পৌছে তার মাথায় আর এক ভূত চাপলো।
- প্রাঙ্ক করবো
- মানে?
- আরে প্রাঙ্ক!! ভিডিও দেখোনি
- হ্যাঁ সে দেখেছি খানকতক। কিন্তু এখানে?
- হ্যাঁ এখানেই।
শোনো প্ল্যানটা। দেখো লোকজন এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। তো আমি প্রথমে হাঁটতে হাঁটতে একটা জায়গায় এমন ভাবে টপকাবো যেনো ওখানে কিছু পড়ে আছে। আসলে কিচ্ছুই নেই। কিন্তু ভান করবো। তুমিও ইক্সাক্টলি একই জিনিস করবে। তিন নম্বরে যে পার করবে তার রিয়েকশান কি হয়, আমরা দেখবো।
যথারীতি তাই হলো। প্রথমে শুভ করলো, দেখাদেখি অন্তরা। ওদের পরে আসছিলো একতা ছেলে, হাতে ক্যামেরা। সেও দেখাদেখি ওইটুকু যায়গা লাফ দিয়ে পাড় হলো, কিন্তু ঘুরে কিছু দেখতে পেলোনা!
ওদের তো হাসতে হাসতে পেটব্যাথা। হাসি থামতেই চায়না। অন্তরাও হাসলো প্রানখুলে, অনেকদিন পর।
এরপরে নৌকা নেওয়া হলো একঘন্টার জন্য। সারা নদী যেনো সোনায় মুড়ে গেছিলো। অন্তরা হাঁ হয়ে দেখছিলো সেই দৃশ্য।
- ম্যাডাম, প্রতিদিন নেচার ফ্রীতে মর্নিং আর ইভিনিং শো দেখায়, আমরা দেখি কদিন?
- সুর্যাস্তটা বড়োই সুন্দর।
- জানি। আচ্ছা কোনো গান চালানো যাক।
শুভ গান চালালো। ' জানি দেখা হবে', শ্রেয়া ঘোষালের গলায়..
অন্তরা ভাবছিলো কিকরে এতোদিন এতো কাছে থেকেও এতো সুন্দর সন্ধ্যাগুলো ও মিস করতে পারে! উঠতে ইচ্ছা করছিলো না৷ কিন্তু সময় হয়ে এসেছে।
- ম্যাডামজি, আমাদের জীবনে এতো টেনশন, এতো দুশ্চিন্তা কেনো জানো? আমরা এই মুহুর্তে না বেঁচে ফিউচারে বাচতে যাই, হুইচ ইউ অবভিয়াসলি কেন্ট ডু। ফলে এইসব আসে। যে আজকের দিনটায় বাঁচে তার টেনশন করার সময় কোথায়?
লিভ ম্যাডাম, লিভ। মরার আগে বেঁচে নিন। বুঝলেন?
অন্তরা তখনো ঘোরে। অনেকদিন পর একটা সত্যিকারের ভালো দিন কাটালো।
রাত হয়েছে। ক্যাব বুক করলো। আসার আগে শুভকে নিজের নম্বর দিলো। মিসকল করে দিতে বললো। সেভ করে নেবে। এরকম ভালো বন্ধু আজকাল সহজে পাওয়া যায়না।
ট্যাক্সিতেও সেই ঘোর যায়না। হাসি ফুটে ওঠে মুখের কোনায়। অনেকদিন পর।
হোয়াটসঅ্যাপ খোলে। অনেকক্ষন খোলা হয়নি হোয়াটসঅ্যাপ।
দেখে ডক্টরের পি এ- এর ম্যাসেজ। অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে ভিজিট অ্যামাউন্টটা পাঠিয়ে দিতে পারে।
দেখেই মাথাটা গরম হয়ে গেলো। হাউ কেয়ারলেস এন্ড এরোগেন্ট!
ফোন করে। ঝাঁঝালো গলায় বলে কীসের ফিজ, ডক্টর তো আসেনইনি।
পি এ অবাক হয়। সারাদিন তো আপনার সঙ্গেই ছিলেন ডক্টর!
শুভর তখনকার মিসকল দেখে হোয়াটস অ্যাপ নম্বরটা খোলে অন্তরা ম্যাসেজ করার জন্য। দেখে নীচে ছোট্ট হরফে জ্বলজ্বল করছে একটা নাম, ডঃ অরিন্দম বাগচী।
আর প্রোফাইল পিকচারে একটি বিখ্যাত লাইন। বাংলা মানে করলে যেটা দাঁড়ায়-
' অন্ধকার কখনো অন্ধকার নেভাতে পারেনা। শুধু আলোই পারে……'
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
তোমার এই থ্রেডের নাম "কিছু মনের সত্যি কথা" তা তুমি নিজের মনের সত্যি কথা কেন বলছ না? ফালতু ফালতু কেন এই নাম রেখেছ? বলেই ফেল, একটা গল্প লিখে ফেল, সেই মনের সুপ্ত বাসনা নিয়ে! মাফিনের মালকিন কে নিয়ে, তুমি না লিখলে কিন্তু আমি লিখে ফেলব "ডিদের মনের সত্যি কথা" !!!!!!
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(09-02-2021, 02:32 PM)Mr Fantastic Wrote: এবার ddey তুমি নিজে কিছু লেখো, একটা চেষ্টা করেই দেখো না !
ও না লিখলে আমি লিখবো ওর মনের সত্যি কথা, "মাফিনের মালকিন" !!!!!!
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
12-02-2021, 02:01 PM
(This post was last modified: 13-02-2021, 09:27 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(12-02-2021, 12:56 PM)pinuram Wrote: ও না লিখলে আমি লিখবো ওর মনের সত্যি কথা, "মাফিনের মালকিন" !!!!!!
হ্যাঁ , সুপ্তির ... শেষ হওয়ার পরে একটা ছোটগল্প লিখতে পারো চাইলে ...
একদিন সন্ধেবেলা বসতে হবে তোমার সাথে গ্লাস আর কাগজ কলম নিয়ে ..
আমি কিছু কিছু বলবো আর তুমি ওগুলোকে লেখার পাতায় জীবন্ত করে তুলবে
পিনুরাম আর ডিডে৩৩৩ র যৌথ প্রয়াস , বেশ জমবে ,ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে ওই চূড়ান্ত পাগলামির ব্যাপারটা ...
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
ভালবাসা -নবনীতা দেব সেন
ভালবাসা হল - বাড়ি ফিরতে দেরী হলে যখন মা বলে " কি হল আজ অনেক দেরী হয়ে গেল "!
ভালবাসা হল - কাজের থেকে ফিরে বাবা যখন প্রশ্ন করে "আজ খুব খাটাখাটুনি গেল "?
ভালবাসা হল - বৌদি যখন বলে "কিরে মেয়ে দেখেছি তোর জন্য । তোর কাউকে পছন্দ থাকলে বল "!
ভালবাসা হল - যখন দাদা বলে " তুই একদম চিন্তা করিস না । আমি তো আছিই"!
ভালবাসা হল - মন খারাপ বুঝতে পেরে ছোটো বোন যখন বলে " চলনা দাদা , একটু ঘুরে আসি "!
ভালবাসা হল - প্রিয় বন্ধু যখন জড়িয়ে ধরে বলে " তোকে ছাড়া কিছু জমে না রে " !
এইগুলো খুবই ছোট কিন্ত জীবনের অমুল্য মুহূর্ত । এইগুলো হারিয়ো না ।
ভালবাসা শুধুমাত্র বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড থাকা নয়।
ভালবাস তাদের যারা তোমার জীবনের এক একটা বিশেষ অংশ জুড়ে আছে ।
যখন ছোট্ট মেয়েটি বাবার মাথা যন্ত্রনা করছে বলে কপাল টিপে দেয় - সেটাই ভালবাসা ।
যখন স্বামীর জন্য চা করতে গিয়ে স্ত্রী তাতে একটা চুমুক দিয়ে দেখে চিনি টা ঠিকঠাক হয়েছে কিনা ! - সেটাই ভালবাসা ।
যখন মা সন্তানের জন্য খাবারের বড় টুকরোটা সরিয়ে রাখে - সেটাই ভালবাসা ।
পিচ্ছিল রাস্তায় যখন তোমার বন্ধু তোমার হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে - সেটাই ভালবাসা ।
ফোনের ইনবক্সে যখন দাদার মেসেজ আসে - কিরে ঠিকঠাক পৌঁছে গেছিস তো ! - সেটাই ভালবাসা ।
একটা ছেলে একটা মেয়ের হাত ধরাধরি করে ঘুরে বেড়ানোর নাম ভালবাসা নয় ।
ভালবাসা হল - যখন তোমার একটা একটা ছোট্ট মেসেজ তোমার বন্ধুর মুখে হাসি ফোটায় ।
নিরাপত্তা , বন্ধন , বিশ্বাস আর একটু যত্নের নামই ভালবাসা ।
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
13-02-2021, 12:38 PM
(This post was last modified: 13-02-2021, 12:39 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কাল ভ্যালেনটাইন ডে , নবনীতা দেব সেন এর লেখা ভালোবাসার কথাগুলো দিলাম।
আমাদের ইউনিভার্সিটি তে কম্পারেটিভ লিটারেচার এর প্রফেসর ছিলেন উনি , যখন আমি পড়তাম সেখানে।
আমি অবশ্য ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে ছিলাম আর উনি পড়াতেন আর্টস এ। দুটো ছোট ছোট ঘটনা মনে পড়লো আজ।
আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্রদের প্রথম সেমেস্টার এ ইংলিশের একটা পেপার থাকতো তখন , এখন জানিনা আছে কিনা।
একবার আমাদের যিনি ইংলিশের ক্লাস নিতেন সেই ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের মহিলা প্রফেসর অনুপস্থিত থাকার জন্য , খামখেয়ালি নবনিতাদি ( এই নামেই সব ছাত্র ছাত্রীরা ডাকতো ওনাকে ) হঠাৎ এসে হাজির আমাদের ইংলিশের ক্লাস নিতে।
সেদিন ওই ৪০ না ৫০ মিনিটের ক্লাস , এখনো অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। পড়াশোনা কিছুই হয়নি , সবার নাম পরিচয় নেয়া আর নানারকম মজার মজার কথা বলে সবাইকে হাসিয়ে মাতিয়ে নিজেও হাঁসতে হাঁসতে ক্লাসের শেষে চলে গেছিলেন আমাদের নবনিতাদি।
আরেকবার মনে আছে , আমি য়ুনিভার্সিটির অফিস বিল্ডিং থেকে ফিস জমা করার পরে দৌড়ে বেরোচ্ছিলাম নিজের ডিপার্টমেন্টের দিকে , ক্লাসের জন্য দেরি হয়ে গেছিলো। উনি কি কাজে জানিনা এসেছিলেন ওখানে , একটা রিক্সা থেকে নামছিলেন। পায়ের কাছে একটু ফুলে থাকা তাঁতের শাড়ির কুচিটা রিক্সার নিচের দিকে জড়িয়ে গিয়ে প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। আমাকে ঠিক ওই সময় একদম সামনে পেয়ে আমার কাঁধে হাত রেখে কোনোরকমে সামলালেন নিজেকে।
হায় ভগবান , তারপরে উল্টে আমাকেই বকুনি !! এই ছেলে ঠিকমতো দেখে চলতে পারিস না নাকি ? আরেকটু হলেই তো আমাকে ফেলে দিতি !!
মুখে একটা অনাবিল দুস্টু হাসি !!
২০১৯ এর নভেম্বর এ নবনিতাদি চলে গেছেন , সেই আর কখনো না ফেরার দেশে।
সেই নোবেলজয়ী মহাপুরুষটি , যিনি বিয়ের ১৮ বছর পরে নবনিতাদিকে ত্যাগ করে চলে গেছিলেন এক অন্য বিদেশিনীর সাথে ঘর বসাতে , মিডিয়াতে তার বয়ান পড়েছিলাম সেদিন। তিনি বলেছিলেন , হ্যাঁ খুব খারাপ লাগছে কিন্তু গিয়ে আর কি হবে , মারা গেছে , তাই দেখা তো আর হবে না !
একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিল সেদিন , না রাগ বা ক্ষোভ নয় , একটা অন্য কিছু যেটা বলে বোঝানো যাবে না আজ আর !
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,072 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(13-02-2021, 12:35 PM)ddey333 Wrote: ভালবাসা -নবনীতা দেব সেন
ভালবাসা হল - বাড়ি ফিরতে দেরী হলে যখন মা বলে " কি হল আজ অনেক দেরী হয়ে গেল "!
ভালবাসা হল - কাজের থেকে ফিরে বাবা যখন প্রশ্ন করে "আজ খুব খাটাখাটুনি গেল "?
ভালবাসা হল - বৌদি যখন বলে "কিরে মেয়ে দেখেছি তোর জন্য । তোর কাউকে পছন্দ থাকলে বল "!
ভালবাসা হল - যখন দাদা বলে " তুই একদম চিন্তা করিস না । আমি তো আছিই"!
ভালবাসা হল - মন খারাপ বুঝতে পেরে ছোটো বোন যখন বলে " চলনা দাদা , একটু ঘুরে আসি "!
ভালবাসা হল - প্রিয় বন্ধু যখন জড়িয়ে ধরে বলে " তোকে ছাড়া কিছু জমে না রে " !
এইগুলো খুবই ছোট কিন্ত জীবনের অমুল্য মুহূর্ত । এইগুলো হারিয়ো না ।
ভালবাসা শুধুমাত্র বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড থাকা নয়।
ভালবাস তাদের যারা তোমার জীবনের এক একটা বিশেষ অংশ জুড়ে আছে ।
যখন ছোট্ট মেয়েটি বাবার মাথা যন্ত্রনা করছে বলে কপাল টিপে দেয় - সেটাই ভালবাসা ।
যখন স্বামীর জন্য চা করতে গিয়ে স্ত্রী তাতে একটা চুমুক দিয়ে দেখে চিনি টা ঠিকঠাক হয়েছে কিনা ! - সেটাই ভালবাসা ।
যখন মা সন্তানের জন্য খাবারের বড় টুকরোটা সরিয়ে রাখে - সেটাই ভালবাসা ।
পিচ্ছিল রাস্তায় যখন তোমার বন্ধু তোমার হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে - সেটাই ভালবাসা ।
ফোনের ইনবক্সে যখন দাদার মেসেজ আসে - কিরে ঠিকঠাক পৌঁছে গেছিস তো ! - সেটাই ভালবাসা ।
একটা ছেলে একটা মেয়ের হাত ধরাধরি করে ঘুরে বেড়ানোর নাম ভালবাসা নয় ।
ভালবাসা হল - যখন তোমার একটা একটা ছোট্ট মেসেজ তোমার বন্ধুর মুখে হাসি ফোটায় ।
নিরাপত্তা , বন্ধন , বিশ্বাস আর একটু যত্নের নামই ভালবাসা ।
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
এতবড়ো সত্যি টা কি সহজে বুঝিয়ে দিয়েছেন উনি.....
কিছু বোঝাতে সবসময় ভারী ভারী শব্দের প্রয়োজন পড়েনা... খুব সহজ সরল ভাবেও অনেক দামি কথা বুঝিয়ে দেওয়া যায় ❤
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
#কথোপকথন
-"অ্যাই!"
-" হুম?"
-"কাল কি পরবে?"
-"জানি না। কেন?"
-"বলো না!"
-"ভাবিনি"
-"বলো না!"
-"উফ!"
-"অ্যাই!"
-"কিইইই?"
-"কাল হলুদ শাড়ি পরবে?"
-"আর তুমি সাদা পাঞ্জাবি? "
-"হতেই পারে!"
-"সেই আগের মতো?"
-"সেই আগের মতো। প্রথমবারের মতো"
-"প্রথমবারের কথা আর বলো না! কী ভয় পেয়েছিলাম...এই বুঝি কেউ দেখে নিল..."
-"তাও তো হাত ধরেছিলে..."
-"হাত না, কনুই..."
-"কি যেন বলতে? নিজেকে সবচেয়ে সুন্দরী মনে হয় আমার কনুই ধরে হাঁটলে?"
-"হুম!"
-"চলো না, কাল আবার..."
-"হলুদ শাড়ি পরতে পারব না, লোকে কি বলবে? তুমিও সাদা পাঞ্জাবির বায়না করো না..ইস্ত্রি করা আছে কিনা কে জানে... সাদা শার্টটা পরো, যেটা মেয়ে দিল গেল পুজোতে?"
-"অগত্যা...যদিও এই 'লোকে কি বলবে' ই খেলো আমাদের!"
-"কোথায় মেয়ে ঘুরতে যাবে, তা না...ঘুমোও তো, কাল অনেক কাজ..."
-"অনেক কাজ...আর আমাদের... ওই আজকাল কি বলে? ডেট!"
-"ধ্যাত!"
ইসস এরকম যেনো একটা জীবন পাই।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,429 in 27,679 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
দৃষ্টি
আজকাল বাড়ি থেকে বেরোলেই খুব ভয় লাগে গৌতমের। কেমন হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়...এই হাল্কা শীতেও ঘাম হয়... মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়... খালি মনে হয় বেশ কয়েক জোড়া চোখ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি মেল তাকিয়ে আছে ওর দিকে...।
ঘটনার শুরু মাসখানেক আগে থেকে।
প্রথম প্রথম অত পাত্তা দেয় নি গৌতম। ওর মতো স্মার্ট, ড্যাশিং মানুষের এসব বিষয়ে মাথা ঘামানোর মতো সময় কোথায়? তাই প্রথম কদিন দুয়েকবার মাথায় এলেও মনের ভুল ভেবে কাটিয়ে দিতে সময় লাগেনি একটুও।
কিন্তু এই একমাস পরে, ও জানে, এটা মনের ভুল না।
বাড়ি থেকে বেরোনোর সাথে সাথেই মনে হয় মার্বেলের মতো তীক্ষ্ণ একটা দৃষ্টি অনুসরণ করছে ওকে। সেই দৃষ্টি শুধু তীক্ষ্ণ ই না, হিংস্র ও বটে।
এমনকি আজকাল বাড়িতে থাকলেও অনুভব করতে পারে সেটা। শুধু দৃষ্টিই না, আওয়াজ ও পাচ্ছে আজকাল ও। অথচ এমনটা হবার কথা না।
সারা দিন এই একই চিন্তা মাথায় ঘুরছে ওর। আর রাতেও ঘুম আসছে না। চোখ বন্ধ করলেই মনে পড়ে যাচ্ছে ঘাড় বেঁকানো দৃষ্টিটা...আর সাথে... একটানা সেই আওয়াজ...
আজও ঠিক এমনটাই হচ্ছে ওর। প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে মনে হচ্ছে....হাতে পায়ে জোর নেই একটুও...ঘাম হচ্ছে বড্ড...
ঠিক কাকলির মতো!
মাস দেড়েক আগে কাকলি ওর প্রস্তাবে 'না' করে দিয়েছিল। সটান বলে দিয়েছিল "আমি তোমাকে 'বন্ধু' ভেবেছিলাম। অন্য কিছু না। আর তাছাড়া আমি ম্যারেড। লেভেল নেই এমন সম্পর্কে আগ্রহী নই আমি। কখনও ছিলাম না। "
প্রত্যাখ্যান নিতে পারে নি গৌতম। তাই কদিন পরে ফটোগ্রাফির কথা বলে উত্তর কলকাতার বিশেষ একটি লোকেশানে নিয়ে গেছিল ওকে । ঠান্ডা মাথায়। জেনেশুনে।
অরনিথোফোবিয়া অর্থাৎ বার্ড ফোবিয়া আছে কাকলির, জানত ও। তাই, এমনকি রাস্তার কোনো দোকান থেকে চাউমিন টাউমিন ও খেত না ও। কাক উড়ে আসবে সেই ভয়ে। কোনো বাজারের পাশ দিয়ে যাবার সময় সিঁটিয়ে থাকত ভয়ে। আর সেই মেয়েকে একটা ভ্যাটের কাছে নিয়ে গিয়ে, খাবার আর দানা ছড়িয়ে শয়ে শয়ে পাখি ডেকে আনলে... অ্যাংজাইটি থেকে তার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না, জানত গৌতম। কিন্তু যেটা বুঝতে পারেনি যে, তারপর থেকে ওকেও তাড়া করে বেড়াবে পায়রার মতো ঘাড় বেঁকা তীক্ষ্ণ চাউনি। সারাক্ষণ কানে বাজবে বকম বকম শব্দ....
অন্ধকার ঘরে ডানা ঝাপটানোর আওয়াজ পাচ্ছে গৌতম...বাঁকানো থাবা আর চঞ্চু নেমে আসছে ওর গলার নলির কাছে...
প্রলয় আসছে...
প্রলয়রূপী মহাকাল, যিনি কাউকেই শাস্তি দিতে ভোলেন না...
|