12-01-2021, 10:28 PM
খুব সুন্দর।
Adultery কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব
|
14-01-2021, 04:13 PM
বাহহ, কামদেব বাবুর থ্রেডে পিনুরাম বাবুর কমেন্ট ! দুই নক্ষত্রের সহাবস্থান
14-01-2021, 05:56 PM
14-01-2021, 08:02 PM
14-01-2021, 08:40 PM
15-01-2021, 12:01 AM
Kumdeb babu kemon achen? Updater khabor ki?
15-01-2021, 01:57 PM
15-01-2021, 05:50 PM
(This post was last modified: 15-01-2021, 05:55 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
[৯৪]
ছোটো ছিল যখন কোমরে বেধে ঘুরতো মনে হতো কবে বড় হবে,হাটতে শিখবে।এখন হাটতে শিখে হয়েছে আরেক বিপদ।মুহূর্তকাল চোখের আড়াল করা যায়না। সমস্যা একটা যায় আরেকটা সেই জায়গা নেয়।জানলা দিয়ে কেমন বাইরে তাকিয়ে আছে একেবারে শান্ত।উফস যা করল আজ তার দম বন্ধ হবার উপক্রম।কিছু একটা হয়ে গেলে অঙ্গনকে মুখ দেখাতে পারতো না। সন্তান নিয়েছে যশবিন্দার নিজের গরজে অঙ্গনের দিক থেকে কোনো চাপ ছিল না।নিজের ইচ্ছে কারও উপর চাপিয়ে দেওয়ার স্বভাব নয় ওর। দিল্লীতে ছিল বিয়ে হয়নি একেবারে স্বাধীন যখন যা ইচ্ছে করতো,তাকে এটা না ওটা না কিছু বলার মতো কেউ ছিলনা।এখনো নেই কিন্তু অদৃশ্য বাধন তাকে বেধেছে আষ্টেপৃষ্ঠে। মানুষ যখন কোনো কিছু কামনা করে সবদিক ভেবে দেখেনা।যখন সেটা হাসিল হয় বুঝতে পারে না চাইতে তার সঙ্গে আরও কিছু এসে গেছে।সন্তান জন্ম দেবার চেয়ে পালন করা আরো কঠিণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যশ। অঙ্গন বলে সব কিছুর সঙ্গে এ্যাডজাস্ট করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।নাথিং ইজ আনন্যাচারাল এভ্রিথিং ইজ ন্যাচারাল।ড সোম হয়তো এই শহরে অনেক আছে কিন্তু ড সোম বলতে সবাই অঙ্গনকেই চেনে। রিয়েলি হি ইজ আ গ্রেট ডক।যখন যে কাজ করে বাহ্য জগৎ ভুলে সেই কাজে ডুবে যায়।চোখমুখের চেহারা বদলে যায় তখন।অনেক বিদেশ ফেরত সার্জানও ওকে ঈর্ষার চোখে দেখে।অঙ্গনের একটা গুণ অতীতকে ভুলে যায়নি।অনেককে দেখেছে পুরানোকে ভুলতেই তারা স্বস্তি বোধ করে।দিলীপের কাছেই শুনেছে এক সময় গুণ্ডামী করে বেড়াতো।অঙ্গন তবু ওর সঙ্গে নিঃসঙ্কোচে মিশতো। দিলীপও ওকে খুব ভালবাসে।দিলীপ ছিল বলেই বাড়ীটা সংস্কার সম্ভব হয়েছে। কত বড় বড় লোকের ফোন আসে তাকেই ধরতে হয়।বলতে হয় লেকভিউতে যোগাযোগ করুন।অথচ সকালে যে আউরতটা এসেছিল দিলীপ বলছিল এই পাড়ায় এক সময় থাকতো।ঐ আউরতের জন্য অঙ্গনকে তাড়াতাড়ি বেরোতে হল।অঙ্গন তার হাবি ভেবে তৃপ্তির নিঃশ্বাস নিল।মুন্নার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবে শালা অঙ্গন কি বেটা বড় হয়ে কেমন হবে কে জানে? বাড়ীর নীচে গাড়ী থামিয়ে গাড়ী থেকে নেমে গ্যারাজের দরজা খুলে আবার গাড়ীতে উঠে গাড়ী গ্যারাজে ঢূকিয়ে দিল। বেল বাজাতে ইকবালের বিবি নাজমা দরজা খুলে দিয়ে বলল,মিতাদিদি একটু বাড়ী গেছে এখুনি চলে আসবে। মৌসী নেই বিরক্ত হল যশ। মুন্নার হাত ধরে সিড়ি বেয়ে উপরে ঊঠে নিজে চেঞ্জ করল মুন্নাকেও পোশাক বদলে দিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে মুন্নার টিফিন করতে থাকে।ফ্রিজ খুলে একটা মুরগীর ঠ্যাং বের করে নুন হলুদ মাখিয়ে ভিনিগারে ভিজিয়ে রাখল।মুন্না এখন চিবিয়ে খেতে পারে।টিফিন করতে করতে মৌসী এসে গেল। --সরেন মেমসাব আমি করতিছি। যশ মুরগীর ঠ্যংটা মাইক্রোভেনে শেকে নিয়ে বলল,মৌসী তুমি টিফিন শেষ হলে মুন্নাকে খাইয়ে দিও তুমিও খেয়ে নিও।আমার জন্য কিছু করতে হবেনা। একটা গেলাসে একটু পানীয় আর স্যাকা মুরগীর ঠ্যাং নিয়ে ব্যালকনিতে একটা চেয়ার নিয়ে বসল।ব্যালকনি থেকে সারা পাড়াটা দেখা যায়।শিপ করতে করতে উদাস চোখে দূরের দিকে তাকিয়ে থাকে।অঙ্গনের কথা মনে পড়ল।এখন কি করছে কে জানে হয়তো এখন গাড়ীতে বাড়ীর পথে। পর মুহূর্তে মনে হল অঙ্গনের কি তাকে মনে পড়ে যখন বাড়ীর বাইরে থাকে। মৌসী চা নিয়ে এল।যশ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করে,মুন্না কি করছে? --ঘুমিয়ে পড়েছে। --একী না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। --গল্প শুনতি শুনতি ঘুমিয়ে পড়ল।ডাকবো? --না থাক। আচ্ছা তুমি যাও। মৌসী চলে যেতে ভাবতে থাকে যশ। জেগে গেলে বিরক্ত করবে ভেবে সেকি দায় এড়াবার জন্য মুন্নাকে জাগাতে নিষেধ করল।অঙ্গন ক্লান্ত হয়ে বাড়ী ফিরলে মুন্না জ্বালাতন করলেও বিরক্ত হয়না।মৌসীর রান্না হয়ে গেছে মনে হয়।মিথ্যে ওকে আটকে রাখার কি দরকার?গলা তুলে বলল,মৌসী তোমার হয়ে গেলে তুমি যাও।কাল সকাল সকাল এসো। --মুন্না একা রয়েছে।আমি আসতেছি? মৌসী চলে গেল।মৌসী বেরিয়ে যেতে নাজমা দরজা বন্ধ করে দিল।নীচে থাকে নাজমার এই কাজ। যশ বিন্দার এসে ঘরে উকি দিয়ে দেখল মুন্না ঘুমিয়ে আছে।খেতে দেবার সময় ডাকলেই হবে ভেবে ডাকেনা।গাড়ির শব্দ শুনে ব্যালকনিতে গিয়ে ঝুকে দেখল অঙ্গন ফিরেছে।ফিরে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে শুনলো সিড়িতে পায়ের শব্দ।বেল বাজাবার আগেই দরজা খুলে দিল।ঘরে নিয়ে অঙ্গনকে চেঞ্জ করিয়ে সোফায় এসে বসল।পল্টু জিজ্ঞেস করে দস্যিটা কোথায়? অঙ্গনের গা-ঘেষে যশ বলল,কেন আমাকে নজরে পড়ছে না? পল্টু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাসল। --সকালে গেছিলে কেমন দেখলে?অঙ্গনের বুকে এলিয়ে পড়ে জিজ্ঞেস করে। --ভাল নয়।তবে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হল। যশ মুখ উচু করে অঙ্গনের মুখের দিকে তাকায়। এই রমেন কাকুর স্ত্রী ক্যান্সারে ভুগছিল।ওর এক ছেলে ছিল হীরু।রেল লাইনে গলা দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। --কেন? --মণিকা আন্টির পিছনে লেগে ছিল আণ্টী দূরছাই করতো তবু নাছোড়বান্দার মতো লেগেছিল।একবার পিকনিকে গিয়ে সেবার আমি যাইনি শুনেছি ডায়মণ্ড হারবারে একটা গির্জার কাছে মণিকাআন্টির সঙ্গে কি করছিল।সবাই ধরে রমেনকাকুকে কান ধরিয়েছিল।সেই লজ্জায় হীরু আত্মহত্যা করে। --ভেরি স্যাড। --কিছুদিন পরেই আণ্টি মারা গেল।মণিকাআণ্টির এক মেয়ে লায়লি হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়।কিছুকাল পর ফিরে আসে।ছেলেটির কাছে প্রতারিত হয়ে মেয়েটী নিজেই নিজের গায়ে আগুণ দিয়েছিল।এই নিয়ে থানা পুলিশ,রমেণকাকু সর্বক্ষন মণিকাআণ্টির পাশে পাশে ছিল।তাদের মধ্যে হৃদ্যতা তৈরী হয়।মাঝে মাঝে রমেনকাকুর বাসা থেকে মণিকাআণ্টিকে বেরোতে দেখে পাড়ার লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে।ওরা বাড়ী বিক্রী করে চলে যায় অন্যত্র।এই মোটামুটি অতীত।আজ দেখলাম বিয়ে করেনি কিন্তু দম্পতির মত জীবন যাপন করছে।যারা জানেনা বুঝতেই পারবে না তারা বিবাহিত নয়।একজন আরেকজনকে চোখে হারায়।অথচ একসময় ছিল আদায় কাচকলা সম্পর্ক। মানুষ কেমন বদলে যায় না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না। --কি হয়েছে? --বয়স হয়েছে।শরীরের কলকব্জা একেবারে দুর্বল।চিকিৎসা নেবার মত সামর্থ্য নেই।আণ্টির পরিচর্যায় এখনো টিকে আছে। হঠাৎ মুন্না এসে যশ ঠেলে দিয়ে মাঝখানে বসে পল্টূকে জড়িয়ে ধরে বলল,আমার বাপি। পল্টু হাসতে থাকে।যশের চোখমুখ লাল।অঙ্গনের বুকে মাথা দিয়ে একটা আবেশ এসেছিল সোফা হতে উঠে দাড়ায়।পল্টু বলল,কি হল? --হিজ রুডনেস ইজ ইনক্রজিং ডে বাই ডে এ্যাণ্ড ইউ আর ইন্ডালজিং হিম। পল্টু অবাক হয় বিল্লুর আচরণে বলে,ওকি অত বোঝে? যশবিন্দার যেতে উদ্যত হলে পল্টু বলল,কোথায় যাচ্ছো? --রাত হয়েছে ডিনার দিচ্ছি। যশ চলে গেল।পল্টু ভাবে বিল্লুটা এক এক সময় এমন ছেলেমানুষী করে।ছেলে বলল,তুমি মমের সঙ্গে ওরকম করলে কেন? মুন্না খিল খিল হাসে।যেন কোনো মজার ব্যাপার। যশ গুরু গম্ভীর টেবিলে খাবার সাজিয়ে বলল,আসবে তো? মুন্নাকে কোলে নিয়ে টেবিলে এসে বসল।বিল্লুর মুখ দেখে কথা বলতে ভরসা হয়না।কিন্তু বিল্লুকে এরকম দেখতে ভাল লাগেনা। পল্টু মুন্নাকে বলল,মমকে স্যরি বলো। --এনাফ এতরাতে এসব ন্যাকামী ভালো লাগেনা।যশ বিরক্ত হয়ে বলল। কেউ কারো সঙ্গে কথা বলেনা নীরবে খেতে থাকে।ছেলের সামনে সিন ক্রিয়েট হোক ইচ্ছে নয়,পল্টু আর কথা বাড়ায় না।চুপচাপ খেয়ে ছেলের মুখ ধুইয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল। রাত বাড়তে থাকে ঘুমিয়ে পড়েছে সারা পাড়া।মুন্নাও ঘুমিয়ে পড়ে একসময়।পল্টূ বেরিয়ে দেখল একটা গেলাসে পানীয় ঢালা বিল্লু চুপচাপ শিপ করছে।পাশে বসে গেলাসটা তুলে চুমুক দিয়ে বলল,বিল্লু আর ইউ ক্রেজি? যশ কোনো কথা বলেনা। --হু ইজ অয়ন? একবার ঘাড় ঘুরিয়ে অঙ্গনকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিল। --হি ইজ ইয়োর সান।ওকী তোমার প্রতিদন্দ্বী? --আয় এ্যাম ক্রেজি,ওকে?যশ ভেংচিয়ে বলল। পল্টু নিজের মনে বলতে থাকে,সারাদিন লেকভিউতে কেটে যায়।সূর্য অস্ত গেলে অস্থির লাগে মন।কখন বাড়ী ফিরে এই মুখটা দেখব।এসে যদি এমন মুখ দেখতে হয় কার ভালো লাগে। যশ উঠে দাঁড়িয়ে কট্মট করে কয়েক পলক দেখে বলল,ঝুটি কাহিকা। পিছন থেকে পল্টূ বলল,আমি অসত্য বলিনা।
15-01-2021, 09:25 PM
Punjabi meyera to sunechi bacchader ke chokhe harai... Ekhane billur ei babohar keno?
15-01-2021, 10:46 PM
সমুদ্রে আবার ঝড় আসার পূর্বাভাস ? যশবিন্দার একটু বেশিই পসেজিভ, বুঝতে পারছি পল্টুর মানসিক অবস্থাটা।
15-01-2021, 10:48 PM
16-01-2021, 12:14 AM
আগের আপডেটে কামদেব দা যশের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার সমস্যার কথা বলেছিলেন।
আসলে পল্টুর উপর রাগটা মুন্নার উপর পরেছে। ওই যে সে যা চেয়েছিল সেটা পায়নি। আমরা যা ভেবে রাখি ভবিষ্যত অনুরূপ সেটা ঘটে না। এটাই বাস্তব। পল্টু সারাদিন নার্সিং হোম, অন্যান্য দিকে থাকে। ঘরেও বেশ রাত করে ফেরে। যশ এই জন্য একটা একাকীত্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, বাড়িতে তেমন কেউ না থাকায় মন খুলে কারো সাথে কথা বলতে পারে না রাতে যতটুকু সময় পল্টুর সাথে কাটাবে ভাবে সেটাও মুন্নার জন্য সম্ভব হচ্ছে না। পল্টুও নিরুপায় কাজ সামলে স্ত্রী সন্তান উভয়কেই সামলাতে হচ্ছে। জীবনটা এরকমই সব দিকে সামলে চলতে হয় দেখা যাক সামনে কি অপেক্ষা করছে।
16-01-2021, 09:45 AM
(15-01-2021, 10:46 PM)Mr Fantastic Wrote: সমুদ্রে আবার ঝড় আসার পূর্বাভাস ? যশবিন্দার একটু বেশিই পসেজিভ, বুঝতে পারছি পল্টুর মানসিক অবস্থাটা। যশের ব্যবহার immature. আর সংসারে এরকম লেগেই থাকে, যদি না থাকে সেটা সুখী দাম্পত্যের লক্ষণ না বছরে ছয় ঋতুর মতো শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সংসারেও থাকবে এতে অস্বাভাবিক মনে করার কিছু না ।
16-01-2021, 02:29 PM
(16-01-2021, 09:45 AM)Buro_Modon Wrote: যশের ব্যবহার immature. আর সংসারে এরকম লেগেই থাকে, যদি না থাকে সেটা সুখী দাম্পত্যের লক্ষণ না বছরে ছয় ঋতুর মতো শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সংসারেও থাকবে এতে অস্বাভাবিক মনে করার কিছু না । হ্যাঁ যশ immatured একটু। আর হাঁড়ি-কলসি একজায়গায় থাকলে ঠোকাঠুকি একটু হবেই কিন্তু এরকম অশান্তি, ভুল বোঝাবুঝি বেশিদিন চললে আবার অন্য কিছু না হয়ে যায়
16-01-2021, 03:52 PM
17-01-2021, 08:01 PM
(This post was last modified: 19-01-2021, 12:48 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
[৯৫]
মুন্নার দিকে ফিরে কাত হয়ে শুয়ে আছে যশবিন্দার।পাশে শুয়ে পল্টু পড়ল।কিছুক্ষন চুপচাপ থেকে জিজ্ঞেস করল,ঘুমিয়ে পড়েছো? যশ কোনো সাড়া দেয়না।বিল্লুর পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে পল্টূ বুঝতে পারে জেগে আছে।অভিমান ভাঙ্গেনি পল্টু বলতে থাকে,অয়ন তোমার শরীরের অংশ,তিল তিল করে শরীরে মধ্যে তৈরী হয়েছে।সব সময় কাছেকাছে থাকে তাই বুঝতে পারছো না।বড় হয়ে কলেজে ভর্তি হবে ওর বন্ধু-বান্ধব হবে সারাদিন বাইরে বাইরে কাটাবে তখন হা-পিত্যেশ ওর অপেক্ষায় তুমি বসে থাকবে।তখন আর আমাকে মনে পড়বে না। পাশ ফিরে অঙ্গন পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।কাধ ম্যাসেজ করছে।লুঙ্গিটা ঢিল করে দিল যশ।অঙ্গনের হাত সারা পিঠে সঞ্চালিত হতে হতে নীচে নেমে পাছার বলদুটো করতলে চাপ দিল।একটু আগের কথা ভেবে ইচ্ছে হলেও যশ লজ্জায় অঙ্গনের দিকে তাকাতে পারেনা।অঙ্গন মিথ্যে বলতে পারেনা যশের চাইতে বেশি আর কে জানে।সত্যি খুব ছেলেমানুষী হয়ে গেছে।মুন্নার গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে ভাবে এতো আমারই শরীর হতে বেরিয়েছে।দু-বছরও পুরা হয়নি এমন বাপি-বাপি করে।বেটা বাপি তোকে কতটুকু সময় দেয়?আসলে অঙ্গনকে কারো সঙ্গে শেয়ার করার কথা ভাবলে মাথায় আগ জ্বলে। পল্টু বলতে থাকে,আমি লেক ভিউতে হাজার কাজের ব্যস্ততায় থাকি যখন বেলা পড়ে আসে মনটা অস্থির হয়ে ওঠে কখন আমার বিল্লুকে দেখবো।না পাওয়া পরিসর পাওয়ার আকাঙ্খ্যাকে তীব্রতর করে। যশের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে অন্ধকারে বোঝা যায় না।খুব ইচ্ছে হয় পালটি খেয়ে অঙ্গনকে জড়িয়ে ধরে কিন্তু কেমন একটা সঙ্কোচভাব তার উৎসাহের পথ আগলে থাকে। একসময় অঙ্গনের কথা জড়িয়ে যায় তার হাত থেমে যায়। ওকী ঘুমিয়ে পড়ল? কয়েক মুহূর্ত ভেবে পাশ ফিরে দেখল ঘুমিয়ে পড়েছে বেচারী।সারাদিনের খাটনি কত সয়।যশ পালটি খেয়ে অঙ্গনের দিকে ঘুরে শোয়।হাত দিয়ে টেনে অঙ্গনের মাথা বুকে চেপে ধরল।অঙ্গনের নিশ্বাস বুকে এসে লাগছে।মাথায় গাল ঘষতে ঘষতে বলে, ডাক্তারসাব তুমি আমার জান আছো। রাত গভীর হতে থাকে।আকাশে চাঁদ নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে।টুকরো টুকরো মেঘের দল ভেসে চলেছে অনির্দেশ উদ্দেশ্যে।মণিকার চোখে ঘুম নেই।পাশে রমু শুয়ে বড়বড় শ্বাস ফেলছে।কখন রাত শেষ হয়ে ভোরের আলো ফুটবে ভাবছে মণিকা।মানুষটা তাকে লায়লির বাপের চেয়েও বেশি ভালবাসে।ফল্টু ওর বাপের মতো বড় ডাক্তার হইছে।আরো আগে যাওয়া উচিত ছেলো।তা হইলে রমু এত কষ্ট পাইতোনা। কলিং বেলের শব্দে যশের ঘুম ভেঙ্গে যায়।বিছানায় উঠে বসে লুঙ্গিটা টেনে কোমরে বাধে।অঙ্গনের দিকে তাকালো,ঘুমোচ্ছে।ধীরে ধীরে খাট হতে নেমে দরজা খুলে দিতে মৌসী ঢুকলো।যশ বাথরুমে গেল।কমোডে বসে রাতের কথা মনে পড়ল।রাগ করেছিল বলে অঙ্গন খুব আদর করেছে।মনে মনে হাসে।গম্ভীর থাকবে দেখি অঙ্গন কি করে?চোখে মুখে জল দিয়ে বাথরুম হতে বেরিয়ে রান্না ঘরে গেল।মৌসীর চা হয়ে গেছে।দু-কাপ চা নিয়ে মুখ গম্ভীর করে ঘরে ঢুকলো। --চা এনেছি।চায়ের কাপ হাতে ধরে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। পল্টু উঠে বসে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিয়ে বলল,থ্যাঙ্কস।যশ আড়চোখে দেখল চায়ের কাপের দিকেই নজর তার দিকে ফিরেও তাকালো না।বিল্লুকে দেখার জন্য বেচাইন হয়ে যাই।লাইয়ার। যশ রান্না ঘরে গিয়ে মুন্নার জন্য দুধ গরম করতে থাকে।মিতামাসী খবরের কাগজটা পল্টুকে দিয়ে আসে।সকালে ব্যস্ত সকলেই।সময় কিভাবে পেরিয়ে যায় হুশ থাকেনা। মুন্নাকে তুলে যশ বোর্ণভিটা খাওয়াতে থাকে। সন্ধ্যেবেলার তুলনায় সকালে পেশেণ্ট কম থাকে।যশবিন্দার তৈরী হতে থাকে।অঙ্গণ স্নানে গেছে।সকাল সকাল বেরোবে কটা অপারেশন আছে।কবিতা এসে খবর দিয়ে গেল পেশেণ্ট এসে গেছে। অঙ্গন বেরিয়ে গেল।যাবার আগে তার সঙ্গে তেমন কথা হয়না।যশ অবাক হয়ে ভাবে অঙ্গনের কথাগুলো কেবল কথার কথা।এখন আর ভেবে ক লাভ অদৃষ্টে যা আছে তাই হবে।মুন্নাকে কোলে নিয়ে নীচে নেমে এল।যশকে ঢুকতে কবিতা পেশেণ্টকে ডাকে।একের পর এক রোগী আসে।কবিতা ভিতরে নিয়ে পেশেণ্টকে টেবিলে শুইয়ে প্রেশার ইত্যাদি নিতে থাকে।বেশির ভাগ পেশেণ্ট কন্সিভ করেছে।রুটিন চেক আপের জন্য এসেছে।এই সময় অনেকের এ ্যানিমিয়ার লক্ষন দেখা যায়।লবন যথা সম্ভব কম খাওয়ার পরামর্শ দেয়।খুবই সাধারন পেশেণ্ট।রোগী দেখা প্রায় শেষ এমন সময় হুড়মুড়িয়ে এক মহিলা ঢুকে বলল,ফল্টূ নাই? যশ চিনতে পারে এই মহিলা আগের দিন অঙ্গনের কাছে এসেছিল।বিরক্ত হয়ে বলল,ডাক্তারবাবু বেরিয়ে গেছে।আপনার পেশেণ্ট কেমন আছে? --ভাল না।ফল্টূ নাই?মহিলা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। যশ কয়েক মুহূর্ত ভাবে।অঙ্গন এতক্ষন লেকভিউতে পৌছে গেছে তার পক্ষে এখন আসা অসম্ভব।কি ভেবে বলল,চলুন আমি যাচ্ছি। মহিলা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে।কবিতা বলল,উনিও ভালো ডাক্তার।আপনার কোনো চিন্তা নেই। যশবিন্দার গাড়ী বের করে বলল,আসুন।সামনে মুন্নাকে নিয়ে বসে পিছনে উঠল সেই মহিলা।যশ জিজ্ঞেস করে,আপনার বাসা কতদূর? --বেশি দূর না।ন-পাড়া চিনেন? --আপনি বলবেন।যশ ভাবে কত সময় লাগবে।একদিন একটু বেলা করে খেলে কিছু হবেনা। মহিলার নির্দেশিত পথে গাড়ী চলতে থাকে।কিন্তু আধ ঘণ্টার উপর হল নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌছাতে পারল না। মহিলা বলল,মনে হয় ভুল পথে আইয়া পড়ছি। --হোয়াট?যশ বিরক্ত হয়।আপনার পাতা বলুণ আই ইন এ্যাড্রেস কি আছে? মহিলা এ্যাড্রেস বলতে যশ গাড়ী থামিয়ে একজন পথচারীকে জিজ্ঞেস করতে লোকটি বলল,আপনি পিছনে ফেলে এসেছেন।আপনি ড.সোম আপনাকে চিনি। --কি ভাবে যাবো? --ভিতর দিয়ে রাস্তা আছে আপনি চিনবেন না।আপনি গাড়ী ঘুরিয়ে বড় রাস্তা দিয়ে গিয়ে উইই মোড়ে গিয়ে বা-দিকে ঢূকে যাবেন। --থাঙ্কস।যশ নিজের প্রতি বিরক্ত হয়।সে নিজেই আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে।গাড়ী ঘুরিয়ে উলটো দিকে চলতে থাকে। --আমি তো বাড়ী থিকা বাইর হইতাম না।রমুই সব কাম করতো। যশ মোড়ের কাছে পৌছে জিজ্ঞেস করে বা-দিকে বাক নিল।একবার মনে হল মহিলাকে রাস্তায় নামিয়ে দেবে কিনা।নিজের জন্য নয় মুন্না এতবেলা পর্যন্ত খায়নি। এক সময় মহিলা বলল,এইযে আইয়া পড়ছি। যশ গাড়ী থামিয়ে নেমে দরজা খুলে দিতে মহিলা বেরিয়ে বলল,আসেন ডাক্তারসাব। দরজা লক করে মহিলার পিছন পিছন দো-তলায় উঠে এল।মহিলা চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলল।ভিতরে ঢুকে অবাক,খাট থেকে নীচে পড়ে আছে এক বৃদ্ধ।অঙ্গন বলেছিল পেশেণ্টের অবস্থা ভাল নয়।মহিলা পাজাকোলা করে তুলে বৃদ্ধকে খাটে শুইয়ে দিয়ে বলল,রমু ডাক্তার আসছে। যশ এগিয়ে গিয়ে বৃদ্ধের কব্জি ধরে নাড়ি পরীক্ষা করে।মহিলা উদ্গ্রীব চেয়ে আছে যশের মুখের দিকে।অস্বস্তি বোধ করে যশ।কিভাবে বলবে কথাটা। --ফল্টুর ওষুধ খাইয়া উন্নতি হইতেছিল।সক্কাল বেলা বড় বড় শ্বাস নিতেছিল--। যশ ঠোটে ঠোট চেপে এক মুহূর্ত ভাবে। এত বেলা হল মেমসাবের দেখা নাই।লগে অয়নরে নিয়া গেছে।মিতামাসীর দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে।ঘড়ির দিকে চোখ পড়তে দেখল দুটো বাজে প্রায়।মনের মধ্যে অনুমানের পোকাটা চলতে শুরু করে।ছোড়দাদাবাবুকে খবর দেবে কিনা ভাবতে ভাবতে টেলিফোনের ডায়াল ঘোরায়।রিং হচ্ছে কানে লাগিয়ে অপেক্ষা করে। --হ্যালো লেকভিউ নার্সিং হোম। --ছোড়দাদাবাবুরে দিবেন? --মাসী বলছেন? বোঝা গেল এর আগেও বার কয়েক ফোন করেছে মিতামাসী।মিতামাসী বলল,ছোড়দাদাবাবুর সংগে কথা আছে--। --ড সোম জরুরী অপারেশনে করছেন।কিছু বলতে হবে? --না ম্যাডাম এখনো ফেরেননি তাই--। --মিসেস সোম?আচ্ছা আমি বলে দেবো। মিতামাসী রিসিভার রেখে হাফ ছাড়ে। যশ বলল,স্যরি উনি আর নেই প্রায় ঘণ্টা খানেক আগেই--। কথা শেষ হবার আগেই মণিকা আছড়ে পড়ে মৃত রমেনবাবুর উপর,রমু-উ-উ-উ-উ। যশ বিব্রত বোধ করে বাড়ীতে কেউ নেই।তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হয় এতো লোক দেখানো কান্না নয়।অন্তরের অন্তস্থল হতে বেরিয়ে আসছে কান্না।অঙ্গনের কাছে শুনেছিল লোকটি তার বিবাহিত স্বামী নয়।দেখলে মনে হয় যেন শরীরের একটা অঙ্গ শরীর হতে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।ইতিমধ্যে কিছু ছেলে এসে দরজার কাছে জড়ো হয়েছে সম্ভবত কান্না শুনে। --আপনারা? --ম্যাডাম আপনাকে চিনি ড্যাফোডিলে বসেন।আমরা পাড়ার ছেলে। --ভদ্রলোক মারা গেছে।তোমরা যদি--। --আপনি কিছু ভাববেন না।আমরা পাড়ার ছেলে যা করার করবো। যশ ব্যাগ খুলে হাজার খানেক টাকা বের করে ওদের হাতে দিলে টাকা গুণে বলল,ম্যাডাম এত টাকা লাগবেনা--। --ঠীক আছে রেখে দিন। একটা টুলে বসে ডেথ সার্টিফিকেট লিখে একটা ছেলের হাতে দিয়ে বলল,আমি আসি। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে সীড়ি দিয়ে নামতে নামতে মহিলার কথা ভাবতে থাকে।সম্পর্কের বাধন এত জোরালো হয় কিভাবে?অঙ্গনের সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন?গাড়ী স্টার্ট করে বাড়ীর পথ ধরে।মুন্নাকে দেখে কষ্ট হয়।সকালে টিফিন করেছে তারপর কিছুই খায়নি।যশ ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করে,বেটা ভুখ লেগেছে? মুন্না কিছু বলেনা।যশ আবার বলে,ক্ষিধে লেগেছে? মুন্না হাসলো।ব্যাগ থেকে একটা চকোলেট বের করে ওর হাতে দিল। মিতামাসী দরজা খুলে দেখল ম্যাডামের মুখ গম্ভীর।একটু ইতস্তত করে বলল,খেতে দেবো? --জরুর--হ্যা দাও খুব ক্ষিধে লেগেছে।আমাকে অল্প করে দিও। মুন্নাকে পাশে বসিয়ে যশ খেতে থাকে।মাঝে মাঝে মুন্নার মুখে গ্রাস তুলে দেয়। --মেমসাব আমি বাড়ী থেকে একটূ ঘুরে আসবো?সন্ধ্যের আগেই চলে আসবো। --হ্যা-হ্যা জরুর যাবেন। মেমসাব খুব খারাপ নয়।ফোন করার কথাটা বলতে গিয়েও বলল না। খাওয়া শেষ হলে মুন্নাকে নিয়ে শুয়ে পড়ল।কিছুক্ষন পর ঘুমিয়ে পড়ল মুন্না।যশ উঠে বোতল হতে একটু পানীয় নিয়ে লুঙ্গি গুটিয়ে একটা চেয়ারে পা তুলে বসে।কান্নার দৃশ্যটা কিছুতেই ভুলতে পারেনা।মৃতদেহ জড়িয়ে ধরে কান্না।রক্তের কেন কোনো সম্পর্কই নেই দেখে কে বলবে?সম্পর্কের জন্য পাড়া থেকে ওদের তাড়িয়ে দিয়েছে।সম্পর্ক আইনত বৈধ নয়।আইন দিয়ে সম্পর্কের পরিমাপ করা যায়।কলিং বেল বাজতে অবাক হয়,মৌসী এর মধ্যে ফিরে এল? দরজা খুলে চমকে ওঠে কাকে দেখছে! --অঙ্গন তুমি এখন? কোনো উত্তর না দিয়ে ঘরে ঢূকে চেঞ্জ করতে থাকে।পিছে পিছে যশ ঢুকে বলল,এনি প্রবলেম? --মাসী বলল তুমি ফেরোনি। --ব্যাস তুমি তুমি ডিউটি ছেড়ে চলে এলে? --তুমি কলকাতার পথ ভালো চেনো না। --আমি দিল্লী থেকে আকেলাই এসেছি।আমি বাচ্চা আছি? --সারাদিন না খেয়ে রয়েছো। --ব্যাস এই জন্য? --মুন্নাও খায়নি।, --ব্যাস? বিল্লু ফেরেনি শুনে কাজকাম ছেড়ে ছুটে এসেছে তার জন্য ইতনা ফিকর? যশের চোখের কোল চিক চিক করে।পল্টু আমতা আমতা করে,না মানে-। মানে মানে করছে তবু আসলি কথাটা বলবে না।অঙ্গনের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে চোখের জল আড়াল করার চেষ্টা করে বলে ঝুটি কাহিকা।তুমি ভেবেছো বিল্লু ভেগে গেল কিনা? বিল্লুর মাথার চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলল,তুমি যা পাগল তা তুমি পারো। --আপনা বাড়ী চেম্বার পরিবার ছেড়ে কেন আমি যাবো?কান্নায় জড়িয়ে যায় কথা। পল্টু দুহাতে বিল্লুর মুখটা তুলে ধরে ঠোটে ঠোট রাখে,যশ প্রাণপণ শক্তিতে জড়ীয়ে ধরে। মুন্না ঘুম থেকে উঠে এসেছে কখন ওরা খেয়াল করেনি।মুন্না বলল,আমাকেও হামি দাও। --আ গিয়া লাডলা বেটা,সামালো,অঙ্গনের বাহুবন্ধন মুক্ত করে যশ সরে গিয়ে খিল খিল হাসিতে ঘর ভরিয়ে দিল। বিল্লুর অভাবনীয় পরিবর্তনে পল্টূ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।যশ চোখ টিপে বলল,সামালো বেটা কো রাত আভি বাকি আছে। [সমাপ্ত]
17-01-2021, 09:10 PM
সুন্দর সমাপ্তি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এইরকম একটা প্রানবন্ত গল্পের জন্য।
17-01-2021, 09:12 PM
(This post was last modified: 17-01-2021, 09:12 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
সুন্দর সমাপ্তি ! সমাপ্তির মাঝেই যে নতুন জীবনের সংবাদ রেখে যাওয়া যায় সেটা আপনার লেখাতেই শিখতে হয় সব সময় ! অনেক অনেক শুভেচ্ছা ! দাদা ! এবার একটা নতুন লেখা শুরু করুন ! অপেখ্যায় থাকলাম ~!
|
« Next Oldest | Next Newest »
|