06-01-2021, 02:58 PM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
কিছু মনের সত্যি কথা
|
06-01-2021, 10:18 PM
#অন্য_রূপকথা
এই হতচ্ছাড়া করোনা টা এইবছর টা একদম শেষ করে দিল! দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ঈদের আনন্দ মাটি করে এবার ক্রিসমাসে যে আনন্দ করব, সে গুড়েও বালি (না বাপু, আমি সোশ্যাল ডিসটেন্সিং ভেঙে পার্ক স্ট্রিটে যাব না)! প্রতিবছর পঁচিশ তারিখ আমাদের বাড়ির কাছের 'নির্মলা মাতা মারিয়া গির্জা'য় যাই...কী সুন্দর করে সাজানো হয় সবকিছু ওখানে... লাল নীল টুনি দিয়ে...কাগজের শিকল বানিয়ে...আর ছোট্ট ছোট্ট তাঁবুর ভিতরে বেথলহেম বানানো হয়, আস্তাবল বানানো হয়... দেখে বারবার মনে হয় এ যেন...কংসের কারাগারের দৃশ্যান্তর... কেষ্ট আর খৃষ্ট...মিলে মিশে এক হয়ে যান...। কিন্তু এই 'নিউ নর্ম্যাল' দিনে চার্চে ঢোকার উপায় নেই। তাই গ্রিলের ফাঁক দিয়েই সাজানো দেখছিলাম হাঁ করে! হঠাৎ দেখি, আমার পাশে একটা ছোট্ট বাচ্চা দাঁড়িয়ে আছে। পথশিশু। এই শীতেও গায়ে ছেঁড়াখোঁড়া একটা মাটি মাটি সোয়েটার। চুল, মুখ সব ই মাটি মাটি, মুখে মাস্ক নেই। ও ও হাঁ করেই সাজানো দেখছে ভিতরের। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে বাড়ি আসার জন্য রাস্তার দিকে পা বাড়াতে যাব, হঠাৎ ছেলেটি বলে উঠল "আচ্ছা, ওরা কবে এগুলো ভেঙে দেবে?" প্রথমে খুব অবাক হয়ে গেছিলাম। তারপর ভাবলাম ও বোধহয় রোজ একবার করে দেখতে আসবে। আমার ই মতো প্রায়! তাই বললাম "এক তারিখ অবধি তো থাকবেই...তারপর জানি না।" ছেলেটি গম্ভীর মুখে বলল "তাহলে আর কতদিন হয়?" আমিও গম্ভীর ভাবে বললাম "আর ছয়দিন ধর।" ছেলেটা মাথা নেড়ে জিজ্ঞেস করল "এরা তো সব ফেলে দেবে, তাই না? আমি চাইলে আমাকে দেবে না?" ভাবলাম ছোট্ট পুতুল- মডেল নিতে চায় ও। তাই কিন্তু কিন্তু করে বললাম "তা তো জানি না।" ছেলেটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসল। সামনের দুটো দাঁতই ফোকলা। তারপর বলল "আমি সকালেই চলে আসব। তারপর খড় গুলো নিয়ে যাব।" পুতুল না? খড়? খুব অবাক হয়ে তাকালাম। ফোকলা -রাম হেসে বলল "দেখছ না আজ থেকে আবার ঠান্ডা পড়েছে? কুত্তাগুলোর জন্য পেতে দেব...ওরা একটু আরামে ঘুমোবে। খুব কষ্ট পাচ্ছে ওরা গো...ওরাই তো আমাদের পাহারা দেয়..." অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। 'কুত্তা' শব্দটা কানে লাগা সত্ত্বেও...মনে হলো... প্রতিবার এক ভুল করি, তাই আজ আকুল হয়ে জিজ্ঞেস করলাম "এই এই, তোর নাম কি রে? কোথায় থাকিস?" উত্তরে জানাল ওর নাম 'রাজু শেখ', থাকে গির্জার কাছে, ক্যারি রোডের কাছের এক বস্তিতে। জরির কাজ করে আব্বু, আম্মুর 'মাথা খারাপ'। আব্বু খুব রাগী। বলতে বলতে আবার একটু ফোকলা হেসে চলে গেল। আর, আমি ভাবছিলাম... বস্তিতে থাকে, যেতে -আসতে একবার দুবার দেখেছি এলাকাটিকে...অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর...নোংরা পরিবেশ...সেখানের একজন, নিজের জন্য তো ফ্লেক্স গুলোও চাইতে পারত...তা না করে খড়...সারমেয়রা কষ্ট পাচ্ছে বলে... আর, কী অপরূপ আমাদের দেশ! রাজু শেখ যাবে মারিয়া গির্জায় কেষ্টর মতো করে খৃষ্টের জন্মবৃত্তান্ত সাজানো তাঁবুর ঘাস নিয়ে এমন প্রানীদের কষ্ট লাঘব করতে...যারা সব ধর্মের ঊর্ধে। কলকাতার যীশুর হাতে...উঠে আসবে প্রভু যীশুর একটা অংশ... আহা রে জীবন! বাহ্ রে এই জীবন!
11-01-2021, 05:42 AM
লকডাউনের বিকেল।
শিবানী দাশ। দক্ষিণাপনের পঁয়ত্রিশ নম্বর স্টল 'বিকিকিনি'র সাটারে বড় বড় পাঁচ খানা তালা ঝুলিয়ে সুমন্ত যখন বাইরে বেরিয়ে এলো, বেশ কিছু দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। কয়টাতে আবার আসর গোটানোর তোড়জোড় চলছে। গেট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে ওভার ব্রিজের সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে অভ্যেস মত উল্টোদিকের ফুটে তাকিয়ে দেখল। রোজকার মতই অবিরাম গাড়ি চলাচল ও জনস্রোতের ঢল। ওভারব্রিজের সিঁড়িগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখে সুমন্ত। এতগুলো সিঁড়ি ভাঙার পরিশ্রম। তারপর ওপারে পৌঁছে অটো কিংবা বাসে ফাঁকা জায়গা পাওয়ার ভাগ্যের পরীক্ষা। ভাগ্য যদি অনুকূলে না থাকে, তাহলে ওপারে গিয়ে আবার ও সেই একই হন্টন। সব মিলিয়ে বেশ খানিকটা সময়ের অপচয়। এতগুলো 'যদি' ও 'কিন্তু'র গেরোয় না গিয়ে এখনই যদি এদিকের ফুট বরাবর হাঁটা দেয়, আধঘন্টার মধ্যে যাদবপুরের পালপাড়ায় পৌঁছে যাবে। সময় নষ্ট না করে হনহনিয়ে হাঁটা লাগায় সুমন্ত। কিছু দূর এগোনোর পর আচমকা ওর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পথ আটকাল কেউ। সুমন্তর পা থেকে মাথা পর্যন্ত কড়া নজরে জরিপ করতে করতে লোকটার কেটে গেল কিছুটা সময়। তারপর উল্লাসের সঙ্গে বলে উঠলো ---আরে, সুমন্ত না! সুমন্ত ও একইভাবে স্যুট প্যান্ট টাই পরা লোকটিকে কড়া নজরে মেপে চলছিল। চেহারা পোশাক আশাক ঝকঝকে। কেতাদুরস্ত। যার পাশে নিজের সারাদিনের ঘেমো রঙ চটা পুরোনো জামাকাপড় একেবারেই জুতসই লাগছিল না। অস্বস্তি হচ্ছিল সুমন্তর। লোকটার হাতে একটা মাঝারি সাইজের ভারি চামড়ার ব্যাগ। পাশের ফুটে লোহার জাল ঘেরা দোকানের দিকে তাকিয়ে দেখল সুমন্ত। কয়েকজন লাইনে দাঁড়িয়ে। লোহার জালের কাটা চৌখুপির ও পাশ থেকে সিল করা বোতল বেরিয়ে আসছে। এদিক থেকে পাঁচশ দুই হাজারি বড় বড় অঙ্কের নোট চৌখুপির মধ্যে দিয়ে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। আচমকাই সুমন্তর সামনে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে উঠল। স্পষ্টতই সে বুঝতে পারল এই লাইন থেকে বেরিয়ে তাকে দেখতে পেয়েছে লোকটি। এবং নিমেষের মধ্যে লোকটির পরিচয় ও উন্মুক্ত হয়ে উঠল সুমন্তর সামনে। ততোধিক বিস্ময়ে সুমন্ত ও প্রায় চেঁচিয়ে উঠলো ---আরে সৌরভ! তুই! এখানে! হাঁটতে হাঁটতে দুই বন্ধু এগিয়ে চলে। সৌরভ জিজ্ঞেস করল ---কোথায় থাকিস? কী করছিস এখন? সুমন্ত বলল---থাকব আবার কোথায়? তুই তো চিনিস আমাদের বাড়ি। ---ও, তার মানে যাদবপুরে পালপাড়ার তোদের ওই পৈতৃক বাড়ি? কেন, কোলকাতায় তো এখন ব্যাঙের ছাতার মত এখানে ওখানে ফ্ল্যাটের ছড়াছড়ি। সেরকম একটা কিছু জোগাড় করতে পারিসনি এখনও? ---সে সাধ্য কী আর সামান্য এক ব্যবসায়ীর থাকে রে ভাই? যে মাগ্গিগন্ডার যুগ পড়েছে। অগত্যা সেই ভাঙাচোরা পৈতৃক নিবাস। তবে যতটা সম্ভব সারিয়ে সুরিয়ে নিয়ে আধুনিক বসবাসের উপযোগী করে নিয়েছি । সুমন্ত বলে। সৌরভ বলে ---আচ্ছা, তুই তাহলে ব্যবসা ধরেছিস। ভালো। এটা তো ব্যবসায়ীদেরই যুগ। কথায় আছে না 'বানিজ্যে বসতি লক্ষ্মী'। সুমন্ত বলে ---ধুর। কোথায়ই বা বানিজ্য। আর কোথায়ই বা লক্ষ্মী। যা দিনকাল পড়েছে। ছোট্ট একটা নাইটি চুড়িদারের দোকান থেকে কতটুকু লাভই বা আর থাকে। তাছাড়া এতদিন এই সর্বনাশা লকডাউনের জেরে বিক্রিবাটা সব বন্ধ ছিল। এতদিনে লকডাউন যদিও বা উঠল, কিন্তু খদ্দের তেমন নেই বললেই চলে। বাজার ভীষণ ডাল। হাঁটতে হাঁটতে দুই বন্ধুর চলার গতি নিজেদের অজান্তেই কিছুটা ধীর হয়ে আসছিল। ফুটের পাশে একটা সাউথ ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁ দেখতে পেয়ে সুমন্তর হাত ধরে টান দিল সৌরভ। ---এইভাবে হাঁটতে হাঁটতে কী আলাপ জমে নাকি! চল ভেতরে। সাউথ ইন্ডিয়ান ডিস খেতে খেতে জমিয়ে গল্প করা যাবে। কতদিন পরে দেখা বলত। প্রায় এক যুগ। তাইনা? হাতের কব্জি উল্টে সময় দেখে নিয়ে আঁতকে ওঠে সুমন্ত। ---না রে। আজ নয়। নটা প্রায় বাজতে চললো। এরপর বাড়ি পৌঁছতে আরও দেরি হয়ে গেলে খিচির মিচির শুরু দেবে বৌ। ---ওরে বাব্বা! এরই মধ্যে বিয়ে ও করে ফেলেছিস? ---শুধুই কী বিয়ে। একটা আড়াই একটা চার বছরের দুটো গুঁড়ি গুঁড়ি ছেলেমেয়ে। অসুস্থ বাবা মা। সকাল থেকে সারাটা দিন বাড়ির হাজারো ঝক্কি সামলিয়ে বৌয়ের মাথাটা ফুটন্ত আগ্নেয়গিরির মত জ্বলতে থাকে। আমাকে দেখলেই গলন্ত লাভাস্রোত বেরিয়ে আসতে থাকে। ---বাপরে। তুই তো দেখছি খুব গুনী মানুষ। এই বয়সে ঘর সংসার পাতিয়ে পুরো একটা কলোনি বানিয়ে ফেলেছিস। এর উপর আবার বুড়ো বাপ মাও ঘাড়ের উপর! এতকিছু সামলাস কী করে! একটা নাইটি চুড়িদারের দোকান থেকে এতসব হয়ে যায়! ---সহজে কী আর হয় রে ভাই। হওয়াতে হয়। সুমন্তর গলায় আক্ষেপের সুর। ---নাকি অন্য কোনো ইনকাম আছে? আজকাল তো ইন্ডিয়ায়, বিশেষ করে ওয়েস্ট বেঙ্গলে শুনি মানুষ নানারকমের ফন্দিফিকিরের সঙ্গে লেপটে থাকে। তোর ও তেমন কিছু আছে নাকি? সৌরভ বলে। ---আরে দুর। তাহলে তো হয়েই যেত। তুই তো আমাকে কলেজ লাইফ থেকে চিনিস। আমার মত বোকা হাঁদাকে দিয়ে ও সব ধান্দাবাজি চলে নাকি! যাক্। বাদ দে। আমার কথা ছাড়। তোর কথা বল। তোকে যে এভাবে কোলকাতার অলিগলিতে দেখতে পাব, এতো আমার স্বপ্নের ও বাইরে। আমি তো জানতাম তুই আমেরিকায় থাকিস। ---ঠিকই শুনেছিস। আমেরিকাতেই থাকি। তবে এখন এখানে থাকাটাও ওই লকডাউনের কল্যাণে। বাড়ি থেকে বাবা মা এমন কিচির মিচির শুরু করে দিল, যেন আমেরিকায় কোনো জীবিত মানুষ নেই আর এখন। এরমধ্যে ওখানকার অফিসগুলো ও বন্ধ হয়ে গেল। একরকম বাধ্য হয়েই চলে আসতে হল। তবে এই লকডাউনটা আমাদের মত কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের লোকেদের জন্য শাপে বর হয়েছে, জানিস। ---সে কেমন? ---কেমন আবার। এখানে ওখানে রেসের ঘোড়ার মত চরকিবাজি নেই। অফিসের কাজকর্ম সব ঘরে বসে অনলাইনে চলছে। বাদ বাকি সময় দুই বন্ধুতে আড্ডা মেরে নেশার মৌতাতে বেশ কেটে যাচ্ছে লকডাউন পিরিয়ড। দ্যাখনা, এ জন্যেই তো এই ভর সন্ধ্যায় ঘর থেকে বেরোনো। নিজের হাতের কালো ব্যাগটাকে দেখিয়ে কান এঁটো করা হাসি হাসতে হাসতে সৌরভ বলে। ---বাঃ, বেশ আছিস তাহলে। ঘর সংসারের ঝামেলা নেই। টাকা পয়সার চিন্তা নেই। বিয়ে থা ও করিসনি নিশ্চয়ই। ---পাগল! কোনো ভদ্রলোক বিয়ের গেরোয় পা দেয় নাকি! কোম্পানিতে কাজ করে ওই দেশের একটা মেয়ে। ওর সঙ্গে লিভ টুগেদারে থাকি। যতক্ষণ ভালো লাগে একসাথে থাকা। এই যেমন এখন। ও আমেরিকায়। আমি এখানে। বিন্দাস আছি। হাল্কা মেজাজের ঢঙে সৌরভ বলে। সুমন্ত বলে ---কিন্তু তোর বাড়ি তো বরানগরে। তাহলে তুই এই দক্ষিণ কোলকাতায় কেন? আর দুই বন্ধু মিলে থাকার কথা যে বললি, তাও তো বুঝতে পারছি না। তোর কথা গুলো কেমন হেঁয়ালির মত লাগছে আমার। সুমন্তর কথার জবাবে চোখে মুখে রহস্যের হাসি ছড়িয়ে সৌরভ বলে ---সব কথা কী আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে হয় রে ভাই। এক কাজ কর কালকের দিনটা বাদ দিয়ে পরশু তো রোববার। তোর দোকান নিশ্চয়ই বন্ধ ওই দিন। আমাদের আস্তানায় চলে আয়। নেশার মৌতাতে সারাটা দিন আড্ডা জমে যাবে। রাম, ভদকা, হুইস্কি, কনিয়াক --- যা চাস স—--ব পাবি।। ---কিন্তু তোর আস্তানাটা কোথায়? ---যাদবপুরে সুলেখার মেইন রোডের বাঁ দিক দিয়ে দেখবি একটা রাস্তা বেরিয়ে গেছে। দুটো আবাসন পার করে জি প্লাস টু একটা ফ্ল্যাট বাড়ি দেখতে পাবি। গেটে বড় বড় অক্ষরে খোদাই করা নাম দেখবি 'মানিক জোড়'। ওটাই আমাদের এখনকার আড্ডা খানা। আমি আর দুর্বার একটা চার কাঠার প্লট কিনে বানিয়েছি। ---তুই আর দুর্বার! ক্লাসের উজ্জ্বল দুই রত্ন। সারা ক্লাসে তোরা দুজনই তো ছিলি টপে। ---সেই টপের গেরোয় জড়িয়েই তো এখনকার এই জেরবার অবস্থা। নিজের রক্ত জল করা খাটনি খাটতে খাটতে কোম্পানির সেবা করে চলেছি। তবে তোদের সঙ্গে ও কিন্তু গলাগলি ভাব আমার সবসময়ই ছিল। তাইনা বল? ---হ্যাঁ, তুই সবসময় হিসেব করে আর ছক কষে কিছুটা ব্যালান্স করে চলতি। বন্ধুর কথার খোঁচাটাকে পাত্তা না দিয়ে সৌরভ বলে ---তা হ্যাঁরে সুমন্ত, আমাদের সেই স্বপন, বিভাস আর প্রত্যুষের কী খবর? এখন ও যোগাযোগ আছে তোর সঙ্গে? থাকলে ওদেরকেও নিয়ে আয় ওই দিন। যাদবপুরে পড়ার সময় মনে আছে, কফি হাউসে, মাঝে মাঝে তোদের বাড়ির ছাদে কত আড্ডা মারতাম সবাই মিলে। কলেজ লাইফের কথায় সুমন্তর গলা দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। উদাস হয়ে ওঠে চোখ মুখ। ঝাপসা আলো আঁধারিতে সৌরভের তা নজরে পড়ল না। সে তখনও নিজেকে পুরোণো স্মৃতির জালে জড়িয়েই চলেছে। সেই স্মৃতির রেশ ধরে ভরা গলায় বলল ---তবে যাই বল, কলেজের সেই দিন গুলোই লাইফের সব চেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্ত। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সঙ্গে থেকে যাবে। সৌরভের আগের কথার রেশ ধরে সুমন্ত বলে ---স্বপন, বিভাস আর প্রত্যুষের সঙ্গে যোগাযোগ সেভাবে নেই ঠিকই, তবে ফোন নম্বর আছে। যোগাযোগ করে নেওয়া যায়। আসলে সরাসরি কানেকশন রাখার সময়ই বা কার এখন আছে বল। আগে তাও কখনও সখনও রাস্তা ঘাটে দেখা হয়ে যেত। কিন্তু এই সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং এর ধাক্কায় দেখা সাক্ষাৎ না হতে হতে মানুষে মানুষে এক বিরাট মানসিক দূরত্ব ও তৈরি হয়ে গেছে এই কয়মাসে। এরপর নিজের হাতের কব্জি উল্টে সময় দেখে নিয়ে আঁতকে ওঠে সুমন্ত। ---ওরে বাপরে! কথায় কথায় কীভাবে যে সময় কেটে গেল। সাড়ে নটা বাজতে চললো। এরপর আর ও দেরি করলে মুড়ো ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করবে বৌ। চলিরে ভাই। ---ঠিক আছে। তোদের গৃহবিবাদের কারণ হতে চাই না আমি। তবে ওই কথাই রইল। সামনের রোববার সদলবলে আসছিস আমাদের বাড়ি। সুমন্ত বলে ---আমি তো যাচ্ছিই। ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় কী না দেখি। ওরা ও যে খুব একটা দূরে থাকে তা নয়। স্বপন আর প্রত্যুষ বাঘাযতীন। বিভাস গড়িয়ায়। ইচ্ছে করলেই আসতে পারে। 'সুলেখা'য় 'মানিকজোড়' আবাসন খুঁজে পেতে কোনো বেগ পেতে হল না। দশটা বাজার কয়েক মিনিট আগে ভেজানো দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকল চার বন্ধু। বড় মাপের একটা হল ঘর। ড্রয়িং কাম ডাইনিং। এখনকার ফ্ল্যাট বাড়িগুলো যেমন হয়ে থাকে।। ওদের দেখেই সৌরভ আর দুর্বার সমস্বরে হইচই বাধিয়ে দিল। ---আয়। সেই কোন্ সকাল থেকে তোদের জন্য আসর সাজিয়ে বসে আছি। ঘরের চতুর্দিকে দামি দামি আসবাব অগোছালোভাবে ছড়ানো। আধুনিক ডিজাইনের সেন্টার টেবিলকে মাঝখানে রেখে চার বন্ধু কলেজ লাইফের পুরোণো দুই বন্ধুর মুখোমুখি সোফায় বসল। কাচের ডাইনিং টেবিলের উপর স্যান্ডউইচ, পিৎজা, বার্গার ইত্যাদি নানা ধরনের কন্টিনেন্টাল খাবারের প্যাকেট আর নানা আকৃতির মদের বোতল। যার বেশিরভাগই জীবনে এরা প্রথম দেখছে। এরা সাধারণত বিয়ার হুইস্কি বা রামের বোতল চেনে। মাঝে মাঝে সময় সুযোগ পেলে আসরে ভীড়ে ও যায়। বিশেষ করে পাড়ার ক্লাবের পুজোর ভাসানের সময় বা কালীপুজোর রাতে চলে দেদার হুল্লোড়। তবে এ সবই বিনে পয়সায়। পয়সা খরচা করে এমন মহার্ঘ ফুর্তি করার পক্ষে এদের কারও পকেট ততখানি স্বচ্ছল নয়। এরা সবাই যাদবপুর ডিগ্রি কোর্সের কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছে। এদের মধ্যে সৌরভ আর দুর্বার এখন কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের বাসিন্দা। আমেরিকার ডালাস শহরে দুই ভিন্ন সংস্থায় কর্মরত। লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে চাকরি পাওয়ার পর কয় বছর বাদে ফেসবুকের মাধ্যমে এদের পুরোণো বন্ধুত্ব আবার ফিরে এসেছে। এবং পরবর্তীতে দুই বন্ধু জমি কিনে এই আবাসনটি তৈরি করে। এখনকার এই লকডাউন আবার ওদের একসঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছে। প্রধানত একসাথে থাকবে বলেই দেশে ফিরে পৈতৃক বাড়িতে না থেকে নিজেদের বাড়িতে থেকে লকডাউন পিরিয়ড চুটিয়ে উপভোগ করছে। সুমন্ত স্বপন বিভাস আর প্রত্যুষ ---চার বন্ধু কলেজের পাট শেষ করার পর আর এগোতে পারেনি। ছাত্র হিসেবে এরা ছিল মধ্য মেধার। বাড়ির অবস্থা ও ততখানি স্বচ্ছল নয়। ফলে চটজলদি অর্থ উপার্জনের পথ দেখতে শুরু করে। ঢাকুরিয়ার দক্ষিণাপনে সুমন্তর নাইটি চুড়িদারের দোকান। বিভাসের এল আই সি এজেন্সির ব্যবসা। সারা সপ্তাহের মধ্যে মূলত ছুটির দিনগুলোতেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে ওর কাজের ব্যবস্থা করতে হয়। আজ পুরোণো বন্ধুত্বের টানে একবেলার ব্যবসা মাটি হল। স্বপন আর প্রত্যুষ তাদের নিজেদের এলাকার প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেন কলেজে মাস্টারি করে। আর্থিক সামাজিক কাঠামোর দুই বিপরীত মেরুর বাসিন্দা কয়জন বন্ধু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সামাজিক বৈসম্য ভুলে এক যুগ আগের ছাত্র জীবনে ডুবে যেতে থাকে। এরা সবাই কলেজ লাইফ নিজেদের মত এনজয় করেছে। সুমন্ত আর স্বপন ছিল সিনেমার পোকা। প্রায়শই ক্লাস বাঙ্ক করে কোলকাতার বিভিন্ন সিনেমা হলে দেশী বিদেশী সিনেমা দেখতে ছুটত। কখনও সখনও সৌরভও জুটে যেত ওদের সঙ্গে। কিন্তু ক্লাস বাঙ্ক করে কখনোই নয়। স্বভাব কবি বিভাসের কাঁধে সর্বদাই ঝোলানো থাকত একটা শান্তিনিকেতনী ঝোলা। যখনই যা মাথায় আসত, বসে পড়তে খাতা কলম নিয়ে। গঙ্গার ধার, ভিক্টোরিয়া কিংবা গড়ের মাঠের নির্জন কোন খুঁজে নিয়ে খোলা প্রকৃতির বুকে নির্মাণ করে চলত নানান সৃষ্টি। তার দু একটা কখনও সখনও কলেজ পত্রিকা বা লিটলম্যাগে ছাপার অক্ষরে ও ফুটে উঠত। প্রত্যুষ মেতে থাকত রাজনীতি নিয়ে। প্রায়শই লাল ঝান্ডা হাতে সমাজ বদলে দেওয়ার স্লোগান দিতে দিতে রাজনীতির দাদাদের সঙ্গে মিছিলে পা মেলাত। কলেজে ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচনে জিতে ও ছিল একবার। কফি হাউসের সান্ধ্য কফি টেবিলের আসরে ছয় বন্ধুর আড্ডা জমে উঠত। রাজনীতি, দর্শন, সাময়িক প্রসঙ্গ খেলাধুলো --- বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনায় দেড় দুই ঘন্টা সময় নিমেষের মধ্যে কেটে যেত। আসরের সমাপনী হত বিভাসের শান্তিনিকেতনী ঝোলার শিল্পকর্ম দিয়ে। খেলা, রাজনীতি, সাময়িক ঘটনাবলি, প্রেম --- যে কোনো বিষয় নিয়ে ঝরঝরে রচনার মধ্যে দিয়ে 'মধুরেণ সমাপয়েত' হত সান্ধ্য আসরের। আজও বিভাসের কাঁধে সেদিনের মত শান্তিনিকেতনী ঝোলা। ছয় বন্ধুর মধ্যে সৌরভ আর দুর্বার ছিল নির্বাক শ্রোতা। মাঝে মাঝে দু একটা মন্তব্য করা ছাড়া আড্ডার আসরে এদের তেমন কোনো ভূমিকা থাকত না কখনও। কন্টিনেন্টাল খাবার আর দামি ড্রিংকসের গন্ধে ঘরের বাতাস ভরপুর। সবার গলার স্বরে নেশার জড়তা। বারো বছর আগের স্মৃতি চারনায় মশগুল পরিবেশ। আচমকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সজাগ হয়ে ওঠে বিভাস। জড়ানো গলায় বলে ---আরে দুপুর গড়িয়ে বিকেল পার হতে চলল। এবার তো আমাকে উঠতেই হচ্ছে। সন্ধে সাতটায় এক ক্লায়েন্টের বাড়িতে আ্যপো করা আছে। এখনি না উঠলে দেরি হয়ে যাবে। তোরা আড্ডা মারতে থাক। আমি আজ চলি রে ভাই। গেস্ট এবং হোস্ট কারও অনুমতির অপেক্ষায় না থেকে অসংলগ্ন পায়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায় বিভাস। বাকি তিনজন ও নড়েচড়ে বসল। ঠিকই তো! গল্পে গল্পে অনেকটা বেলা পার হয়ে গেছে। দুর্বার এগিয়ে এসে বিভাসের মুখোমুখি পথ আগলে দাঁড়ায়। ---চলে যাবি মানে! তোর ঝোলার মধ্যেকার গুপ্তধনগুলো বের করে এবার। তোর লেখা ছাড়া আমাদের আড্ডা শেষ হয়েছে কখনও? যে আজ হবে। বরাবরের মতো এবারও 'মধুরেণ সমাপয়েত' হোক। ওঃ, কতকাল পরে তোর খোলা গলায় তোর স্বরচিত গল্প কবিতা শুনব বলে তীর্থের কাকের মত বসে আছি। কথা বলতে বলতে দুর্বার বিভাসের ঝোলার জিপ খুলে কয়েক গোছা কাগজ ভেতর থেকে বার করে আনে। শক্ত হাতে সেগুলোকে আঁকড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে বিভাস। পারে না। টানাটানিতে ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ে লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ফর্ম আর নিয়মাবলী লেখা এক তাড়া কাগজ। আচমকা বিভাসের মুখের উপর একটা কালো ছায়া ঘনিয়ে আসে। গভীর এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে ভেতর থেকে। মেঝে থেকে দরকারি কাগজগুলো তুলে নিয়ে সেগুলো আবার ঝোলার মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়। শুকনো গলায় বলে ---গল্প কবিতা সাহিত্য এসব হচ্ছে অল্পবয়সের দুষ্ট ব্রণর মত। একটা বিশেষ বয়সে নাছোড়বান্দার মত কিছুদিন খুব জ্বালায়। এরপর সংসারের জাঁতাকলে পিষতে পিষতে নিজের অজান্তে কবে যে সেসব চুকে বুকে যায়, টেরটাও পাওয়া যায় না। জমজমাট আড্ডার আসরে হঠাৎ নীরবতা নেমে আসে। রঙ্গমঞ্চের যবনিকা পতনের মত একটা কালো পর্দা নেমে আসে সবার চোখের উপর। বাকি তিন বন্ধুও উঠে দরজার দিকে পা বাড়িয়েছে। বিভাস দুর্বারকে বলে ---ওসবের পাট কবেই চুকিয়ে দিয়েছি। এখন আমি তরঙ্গ বিক্ষুব্ধ মহাসমুদ্রে ভাসমান এক নাবিক। নিজের হাড় জিরজিরে ফুটোফাটা নৌকোটাকে সামলাতে সামলাতে এখন শুধু কবি সুকান্তর সেই অমোঘ বাণী সারাক্ষণ আমার মাথার মধ্যে তোলপাড় চালায় 'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি'। ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে বাইরে পা বাড়ায় চার বন্ধু। সৌরভ আর দুর্বার বন্ধুদের এগিয়ে দিতে আসে বাইরের গেট পর্যন্ত। সৌরভ বলে ---সেই দেখাই যদি হল, একেবারে শেষ বেলায়। আরো কটা দিন আগে যদি দেখা হত, আরও কয়বার আড্ডা জমানো যেত। স্বপন বলে ---কেন, এরমধ্যেই ফিরে যাচ্ছিস নাকি? কবে ফিরছিস ? দিন কয়েক পরে সৌরভ আর দুর্বার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল দুই রত্ন আজ তাদের কর্মস্থলে ফিরে যাবে। সুমন্ত স্বপন বিভাস আর প্রত্যুষ --- চার বন্ধু নিজেদের কাজকর্ম বাদ দিয়ে বন্ধুদের বিদায় জানাতে বিমান বন্দরে হাজির। সৌরভ দুর্বার তাদের মা বাবার সঙ্গে চার বন্ধুর পরিচয় করিয়ে দেয়। বাবা মায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম আর চার বন্ধুর সঙ্গে গলা জড়াজড়ি করে শেষ বিদায় জানায়। এয়ারপোর্টের গেটের ভিতর ওরা ঢুকে যাওয়ার পর দুই বৃদ্ধ বৃদ্ধা বিষন্ন মুখে ফিরতি পথে পা বাড়ান। সেই সঙ্গে চলে ছেলের বন্ধুদের সঙ্গে নানা রকম আলাপ পরিচয় আর তত্ত্বতালাশ। কে কী করে, কোথায় থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। আলাপন পর্ব শেষ হলে চার বন্ধু তড়িঘড়ি বাসস্ট্যান্ডের দিকে পা বাড়ায়। দুই জোড়া বৃদ্ধ বৃদ্ধা তখনও নিজেদের মধ্যে গল্পে মশগুল। হঠাৎ পেছন থেকে দুর্বারের বাবার ডাক শুনতে পেয়ে ঘুরে দাঁড়ায় চারজন। ---এই যে শোনো। ফিরে আসে ওরা ---হ্যাঁ বলুন মেসোমশাই। তোমরা তো সবাই দক্ষিণ কোলকাতায় যাবে, তাইনা? ---হ্যাঁ মেসোমশাই। কেন বলুন তো? ওদিকে কোনো দরকার আছে নাকি আপনাদের? সুমন্ত বলে। ---তাহলে বাসে যাবে কেন? আমার গাড়িতে উঠে বোসো। আমি ও তো গড়িয়ায় যাচ্ছি। তোমাদের নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরব। দুর্বারের বাবার গলায় আন্তরিকতার সুর। চার বন্ধু পরস্পর মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকে। এই অপ্রত্যাশিত সাহায্য নেওয়াটা উচিত হবে কী না বুঝতে পারে না। দুজোড়া বয়স্ক নারী পুরুষ কিন্তু নাছোড়বান্দা। দুর্বারের বাবার নির্দেশে গাড়ির ড্রাইভার মস্ত এইট সিটারের দরজা খুলে দাঁড়িয়ে। সৌরভের বাবা বললেন ---একটা কথা বলব বাবা, কিছু মনে করবে না তো তোমরা? গলার স্বরে কুন্ঠা আর সঙ্কোচ। যা এদের মত হাই প্রোফাইলের মানুষের চরিত্রের সঙ্গে খাপ খায় না। সুমন্ত বলে ---হ্যাঁ বলুন না মেসোমশাই। আমরা কিচ্ছু মনে করব না। আমরাও তো আপনাদের ছেলেরই মত। ---তোমাদের ফোন নম্বরটা দেবে বাবা? আর মাঝে মাঝে ফোন করলে বিরক্ত হবে না তো? বুঝতেই তো পারছ, আমরা প্রত্যেকেই বয়স্ক। সবারই বয়স আশির আশপাশ দিয়ে। এই বয়সে প্রত্যেক মানুষই চায়, ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনি তাদের চারপাশে ঘিরে থাকুক। কিন্তু আমাদের তো সেই সৌভাগ্য কোনোকালেই হবে না। তোমাদের বাবা মায়েরা জীবনে অনেক পুণ্য করেছেন। তাই তোমাদের মত এমন রত্নদের জন্ম দিয়েছেন। প্রত্যুষ বলে ---এভাবে বলবেন না মেসোমশাই। একটুও কুন্ঠিত হবেন না। দরকার মনে করলেই, শুধু একটা ফোন কল দেবেন। তাছাড়া রাজনীতির সঙ্গে কিঞ্চিত যোগাযোগ আছে আমার। প্রয়োজন পড়লেই বলবেন। দলবলসুদ্ধু হাজির হয়ে যাব। চার বন্ধুকে তাদের তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় নামিয়ে দিয়ে দুর্বারের বাবা মা যখন নিজের বাড়ির লন দিয়ে ঢুকছেন, দিনের আলোর ম্লান আভা আর শহরের ল্যাম্পপোস্টের আলো একসাথে মিলেমিশে এক বিষণ্ণ সন্ধ্যার পরিবেশ রচিত হয়েছে চতুস্পার্শে। বাড়ির দরজার তালা খুলতে খুলতে দুর্বারের মায়ের গলা দিয়ে গভীর এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। স্বামীকে বললেন ---ছেলেগুলো কিন্তু বেশ। না গো? প্রথম আলাপেই কেমন আপন করে নিয়েছে আমাদের। অথচ আমাদের নিজের রক্তের ছেলেকে দ্যাখ, এতদিন কোলকাতায় এসে থাকল, একটি বারের জন্য বুড়ো বাপ মায়ের বাড়িতে এলো না পর্যন্ত। নিজের জীবনের সমস্ত শখ-আহ্লাদ, সুখ-আনন্দ বিসর্জন দিয়ে ছেলে মানুষ করার এই তো আলটিমেট পরিণতি। আনমনাভাবে দুর্বারের বাবার গলা দিয়ে নির্লিপ্ত জবাব বেরিয়ে আসে ---হ্যাঁ। সত্যিই খুব অমায়িক ছেলেগুলো।
11-01-2021, 06:07 AM
(This post was last modified: 11-01-2021, 06:09 AM by Rajdip123. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বাহহ.........সুন্দর......সাবলিল লেখা। নতুন কিছু অপেক্ষা করছে মনে হচ্ছে। গুণী মানুষ ভাই তুমি...... লেখ লেখ...
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
11-01-2021, 11:29 AM
11-01-2021, 04:52 PM
(This post was last modified: 11-01-2021, 04:55 PM by bourses. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
#প্রাক্তন#
দীর্ঘ সাত বছর পর একটা মোড়ে দুই প্রাক্তনের হঠাৎ দেখা; - আমাকে দেখে অবাক হওনি ? সৌরভ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে মুচকি হেসে উত্তর দেয়, - হয়েছি তবে তোমাকে দেখে নয়, তোমার লম্বা চুলগুলোকে দেখে। রুমকি হয়তো খানিকটা ইতস্ততবোধ করে বলে, - আসলে ওর লম্বা চুলই পছন্দ। তাই এখন আর আগের মত তিনমাস অন্তর অন্তর নতুন নতুন হেয়ার কাট করি না৷ - আচ্ছা ভালো তো। তারপর বলো কেমন আছো ? - যেরকম থাকার কথা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি, সেরকম আছি। রুমকি একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে, - বাবার কথামতো বিয়েতে রাজি হয়ে যাওয়ার পর মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিলো আমি সুখী হতে পারবো না। তোমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবো না। কিন্তু বিয়ের পর আর এক মূহুর্তের জন্যেও এমন ভয় বা শঙ্কা কাজ করেনি কখনো। কপালগুণে অসম্ভব ভালো একজন মানুষ পেয়েছি আমি। তার কথা বলতে গেলে সময় ফুরিয়ে যাবে কিন্তু কথা ফুরাবে না, বুঝলে ? শেষ কথাটা বলতে গিয়ে রুমকির ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটে ওঠে। সৌরভ স্থির দৃষ্টি নিয়ে সেই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে। - কি হল? এভাবে কি দেখছো ? - দেখছি তোমার সরলতাকে। এমন করে অবলীলায় কেউ তার প্রাক্তনের সামনে নিজের হাজবেন্ড এর গুণগান করতে পারে বলে জানা ছিল না। - ওমা! এ আবার কেমন কথা! যা সত্যি তা বলবো না ? এটা কি কোনো নাটক সিনেমা নাকি যে প্রাক্তনের সামনে সবসময় দুঃখী দুঃখী চেহারা নিয়ে উদাসী হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে! - তা অবশ্য ঠিক বলেছো। - তুমি কেমন আছো ? - যেমনটা আশা করেছিলাম তেমনই আছি। সৌরভও একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে, - তুমি চলে যাওয়ার পর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম একজন সঠিক মানুষের জন্য। যে আমাকে তোমার দেওয়া দুঃখগুলো ভুলিয়ে দেবে। আমার সকল দূর্বলতাকে মেনে নিয়ে শক্ত হাতে আমাকে সামলে নেবে। আর আমাকে তোমার থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালোবাসবে। ভাগ্যগুণে পেয়েও গেলাম সেই সঠিক মানুষটাকে। হ্যাঁ, সে খানিকটা দেরি করেই আমার জীবনে এসেছে কিন্তু তবুও এসেছে তো! অনেকে তো সময়ের আগে চলে এসে আবার সময়ের আগেই চলে যায়। শেষ কথাটা যে রুমকিকে উদ্দেশ্য করে বলা, তা রুমকি ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বরং কৌশলে প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলে; - তা এখানে কেন এসেছিলে ? কোনো দরকারে নাকি এমনিই.? - বেলী ফুলের মালা কিনতে এসেছিলাম। বউয়ের হুকুম প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার সময় তার জন্য একটা করে বেলীফুলের মালা নিয়ে যেতে হবে। বিয়ের পর থেকে এভাবেই চলছে আর কি। - ও আচ্ছা। কিনেছো বেলী ফুলের মালা ? - না। যে বাচ্চা মেয়েটা মালা বিক্রি করে, আজ ওকে দেখতে পাচ্ছি না। দেখি অন্য কোথাও পাই কিনা। বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কেন এসেছিলে ? - মালাই চা খেতে এসেছিলাম। - একা একা ? - আরে না। ভেবেছিলাম এখানে এসে ওকে কল করে বলবো অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসতে। প্রায়ই করি এমন। কিন্তু আজ তো তোমার সাথে কথা বলতে বলতে দেরি হয়ে গেল। - হ্যাঁ আমারও দেরি হয়ে যাচ্ছে। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বের হলাম যেন জলদি বাড়িতে ফিরতে পারি। তা আর হল কই! আরো দেরি করলে জ্যামে পড়তে হবে নিশ্চিত৷ খানিকক্ষণের মধ্যে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যে যার পথে হাঁটা শুরু করলো। বাড়িতে ফিরে ফ্রেশ না হয়েই সৌরভ দুটো বেলী ফুলের মালা তার বউয়ের দিকে এগিয়ে দিতেই চোখমুখ কুঁচকে বউ তার দিকে তাকালো, - তোমাকে না কতদিন বলেছি এসব ঢং আমার ভালো লাগে না ? তাও মানতাম যদি এই সস্তা মালার বদলে দামী কিছু আনতে। সৌরভ কোনো প্রতিউত্তর না দিয়ে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তারপর ফ্রেশ হতে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে সে তার বউয়ের গলা শুনতে পায়। গলা উঁচিয়ে বউ তাকে উদ্দেশ্য করে বলছে, - অনলাইনে একটা কমদামী শাড়ি অর্ডার করেছি। ৪০০০টাকা কাল অফিসে যাওয়ার আগে রেখে যেও। আমি মায়ের বাড়ি যাচ্ছি। রাতে ওখানেই থাকবো। আর শোনো রান্না করার সময় একটু সাবধানে কাজ করো৷ গতবার রান্নাঘরের বারোটা বাজিয়ে রেখেছিলে। সেগুলো পরিষ্কার করানোর জন্য কাজের মাসিকে বাড়তি ৫০০টাকা দিতে হয়েছে। মেকআপ কেনার বাজেটে টান পড়েছিলো পরে। সৌরভ বেসিনের আয়নার দিকে তাকিয়ে অন্যান্য দিনের মত আজও রুমকির সাথে মনে মনে কথা বলা শুরু করে দেয়; - তুমি আমাকে আজও বুঝতে পারলে না রুমকি! চোখের মিথ্যে অভিনয় ধরতে পারলে না! মোড়ে আমি কখনো বেলী ফুলের মালা কিনতে যাই না, যাই তোমার স্মৃতিচারণ করতে। ড্রেসিংটেবিলের আয়নার সামনে বসে একমনে আয়নায় নিজেকে দেখছে রুমকি। পিঠ সমান চুলগুলো সামনে এনে কাঁধের একপাশে ছড়িয়ে রেখে ভাবছে, - নতুন নতুন হেয়ার কাট দেয়ার মতো মানসিক বা আর্থিক সুখ কোনোটাই যে নেই এখন আমার। অথচ তুমি বুঝতে পারলেই না আমি আসলে ঠিক কতখানি সুখী। সে আমার লম্বা চুল পছন্দ করে ঠিকই কিন্তু ভালোবেসে নয়, বরং প্রতিরাতে মাতাল হয়ে এসে যেন আমার চুলের মুঠিটা আয়েশ করে ধরতে পারে সেজন্য। মোড়ে গিয়ে আমি কখনোই ওকে কল করে অফিস থেকে চলে আসতে বলি না একসাথে মালাই চা খাওয়ার জন্য। বরং মনে মনে প্রার্থনা করি, সে যেন ঘুণাক্ষরেও টের না পায় যে আমি আমার প্রাক্তনের স্মৃতিচারণ করতে এখানে আসি। বরাবরের মতো আজও আমাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে গেলে সৌরভ ।
11-01-2021, 05:10 PM
বাপরে , কি ব্যাপার রে ভাই !!
ভারতীয় দাদা , বোরসেস দাদার মতো মহারথীরা আমার মতো একটা টুকলিবাজ অধমের থ্রেডে লেখালেখি শুরু করে দিয়েছে,.... গায়ে চিমটি দিয়ে দেখতে হবে , স্বপ্ন দেখছি নাকি ???
11-01-2021, 05:45 PM
রুমকি নির্ঘাত আটের দশকের অবলা নারীর প্রতীক, নাহলে আজকের দিনে কোনো বিবাহিতা মহিলা এভাবে গার্হস্থ্য অত্যাচারের শিকার হলে ছেড়ে দেবে ভেবেছো ?
11-01-2021, 05:49 PM
(11-01-2021, 05:45 PM)Mr Fantastic Wrote: রুমকি নির্ঘাত আটের দশকের অবলা নারীর প্রতীক, নাহলে আজকের দিনে কোনো বিবাহিতা মহিলা এভাবে গার্হস্থ্য অত্যাচারের শিকার হলে ছেড়ে দেবে ভেবেছো ? তাই কি? পরিসংখ্যান বলছে, এই আজকের শতকেও কিন্তু মেয়েরা সব থেকে বেশি ধর্ষিতা হয় নিজের সংসারেই... নিজের নিকটজনের কাছে থেকে... যেটার অধিকাংশ খবর বাইরে, আমাদের চোখের সামনে আসে না... বা তারা নিজেরাই জানায় না...
11-01-2021, 05:56 PM
(11-01-2021, 05:49 PM)bourses Wrote: তাই কি? পরিসংখ্যান বলছে, এই আজকের শতকেও কিন্তু মেয়েরা সব থেকে বেশি ধর্ষিতা হয় নিজের সংসারেই... নিজের নিকটজনের কাছে থেকে... যেটার অধিকাংশ খবর বাইরে, আমাদের চোখের সামনে আসে না... বা তারা নিজেরাই জানায় না... ওটাই তো ব্যাপার, আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও জানায় না কেন ? কিসের টানে ? বিয়ে ভেঙে গেলে লোকে কি বলবে সেই ভয়ে ? বাপের বাড়িতে থাকতে হবে আবার সেই চক্ষুলজ্জা ? যদি ফের বিয়ে না হয় সেই চিন্তায় ? যত্তসব বস্তাপচা ধ্যান ধারণা পুষে রাখে
12-01-2021, 07:25 PM
(11-01-2021, 05:45 PM)Mr Fantastic Wrote: রুমকি নির্ঘাত আটের দশকের অবলা নারীর প্রতীক, নাহলে আজকের দিনে কোনো বিবাহিতা মহিলা এভাবে গার্হস্থ্য অত্যাচারের শিকার হলে ছেড়ে দেবে ভেবেছো ? এখানে বলতে বাধ্য হচ্ছি, তুমি এখন তাহলে পৃথিবী দেখোনি বন্ধু! এমন মহিলা অনেক আছে, চুপচাপ সহ্য করে যায়, বাঁচার পথ নেই তাদের! শুধু মাত্র এইদেশে নয়, অন্যান্য অনেক দেশে এই ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে !!!!!
12-01-2021, 07:27 PM
(11-01-2021, 04:52 PM)bourses Wrote: #প্রাক্তন# আহা, দীর্ঘ সাত নয়, দীর্ঘ দশ বছর পরে দেখা, মনে পরে গেল! নাহ থাক আমার কথা, তোমার এই গল্পটা দারুন !!!!!!
12-01-2021, 07:32 PM
(11-01-2021, 05:42 AM)dada_of_india Wrote: লকডাউনের বিকেল। শুধু মাত্র পয়সার একদিক দেখেই বিচার করা উচিত নয়! ইংরেজিতে একটা কথা আছে "A coin has two sides" যদিও গল্পটা খুব ভালো তাও ওই শেষের দিকে মন থেকে মেনে নিতে পারি না অনেক কারনে !!!!!
16-01-2021, 06:36 PM
16-01-2021, 07:47 PM
(16-01-2021, 06:36 PM)dada_of_india Wrote: একদম ঠিক কথা বলেছ ! এখনও মানুষ আছে ! গল্পটার শেষের দিকটাই তো আমাদের কথা ! আমার বলার বিষয়টা ঠিক সেই অর্থে নয়, কে মানুষ কে অমানুষ! আমার বলার বিষয়টা অন্য, সেটা এই ফোরামে বিস্তারে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়, বিতর্কিত আলোচনা সেটা! সুতরাং সেই বিতর্কিত আলোচনা করে ৯৯.৯৯% মানুষের মন খারাপ করতে চাই না !!!!!!
21-01-2021, 05:01 PM
(This post was last modified: 14-03-2023, 01:51 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
যাপন
ক্যালেন্ডারের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়েছিলেন অসীম বাবু। তিন সপ্তাহ হয়ে গেল অমিতাভ চলে যাবার পর। কেন যে সেই দিন টা এসেছিল... তরতাজা জোয়ান ছেলেটাকে...ঘাতক ট্রাক এসে...এখনও ভাবলে শিউরে ওঠেন উনি। পাড়ার বন্ধুদের সাথে পিকনিক করতে গেছিল অমিতাভ। ফেরার পথেই হয়েছিল দুর্ঘটনা টা। যখন খবরটা পেয়েছিলেন, তখন গিন্নি আর বৌমা মিলে রাতের খাবার বানাচ্ছিলেন, বছর শুরুর দিনে একটু ভালোমন্দ আয়োজন ও হয়েছিল... আর তারপরই তো... চোখ থেকে নেমে আসা জলটা তর্জনী দিয়ে মুছলেন অসীম বাবু। অপঘাতে মৃত্যু, তাই কাজ মিটে গেছে চারদিনের মাথাতেই। আর তারপর থেকেই অবিরাম শূন্যতা। কিভাবে যে সকাল হয়...রাত্তির আসে...খেয়াল ই থাকে না। প্রথম প্রথম লোকজন আসত বাড়িতে, সময় কেটে যেত নিজের নিয়মে। কিন্তু এখন...লোক আসা কমে গেছে অনেক...আর তাই সময় কেটে যেত নিজের মনে...কিন্তু এখন তো লোকের যাতায়াত কমে গেছে, সময় কাটতেই চায় না। তাই এই দিন দুয়েক হলো বাড়ির কাছের মন্দিরে যাওয়া শুরু করেছেন উনি। সময় ও কাটে, আবার ধর্মের তত্ত্ব শুনে পোড়া মনকে শান্ত ও করা যায়। আজ ও সেখানেই গেছিলেন। ফেরার পথে থমকে গেলেন হঠাৎ। পুকুরধারে সাদা শাড়ি পরে...বউমা না? এই অন্ধকারে পুকুর ধারে কেন? ভুলভাল কিছু করবে না তো মেয়ে? দ্রুতপায়ে এগিয়ে গেলেন উনি। আর তারপর ই থমকে গেলেন। বাঁধানো ঘাটের ধাপিতে বসে আছে বউমা, হাতে একটা ঠোঙা... কিছু একটা খাচ্ছে... নিমিষে মাথায় এলো একটা কথা...বাড়িতে ঠিকভাবে রান্না হয় না কতদিন হল...খোকা যেদিন চলে গেল, সেদিন মাংস রান্না হচ্ছিল...কিন্তু সেটাও... আর এখন তো শুধুই একসিদ্ধ ভাত খেয়ে দিনযাপন... মাত্র পঁচিশ বছরের মেয়ে...পেট, মন মানে? তাই হয়ত... গলার কাছটা দলা পাকিয়ে গেল ওঁর। বাড়ির দিকে না গিয়ে আবার বাজারের পথ ধরলেন অসীম বাবু। যা হোক একটু আমিষ কিনে নিয়ে যেতে হবে... ছেলেটা গেছে...বউমা...না, না, মেয়েটা তো আছে...ওর জন্য...ওর জন্য...
26-01-2021, 08:03 AM
(This post was last modified: 26-01-2021, 08:08 AM by TumiJeAmar. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আমিও এইমাত্র পড়লাম রূপান্বিতার পোস্টে। সত্যি খুব সুন্দর লেখে মেয়েটা।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 4 Guest(s)