Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
#81
এই থ্রেড টা বেশ কয়েকদিন ধরেই চুপচাপ ! কোনো রসদ নেই নাকি?
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
#অন্য_রূপকথা
শনিবার, ঠিক ভূতের ঢেলা মারা দুপ্পুরবেলা, আমার মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল।
ক'দিন ধরেই একটি বিশেষ জিনিসের প্রত্যাশায় ছিলাম। ভীষন ভাবে অপেক্ষায় ছিলাম তার। কিন্তু, শনিবার ই জানতে পারলাম আমার প্রতীক্ষা আরও প্রলম্বিত হতে চলেছে। মুষড়ে পড়েছিলাম বেশ! আর মন খারাপ হলেই আমি যা করি, যেমন তেমন ভাবে রেডি হয়ে, বেরিয়ে পড়ি বাড়ি থেকে। আমাদের শহর এত্ত সুন্দর, ঠিক কোনো না কোনো দিকশুন্যপুর ঠিক জুটে যায় আমার, প্রতিবার!
তা, কাল গেছিলাম ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম। কোভিড পরবর্তী, 'নিউ নর্ম্যাল' গাইডলাইন মেনে সদ্যই খুলেছে মিউজিয়াম। খুব কম মানুষই ছিলেন ওখানে। আর, আমি গিয়েই ঢুকে গেলাম আমার সবচেয়ে প্রিয় কক্ষ, ভারতীয় পুরাতত্ত্বের হলে। ঘন্টাখানেক পরে, দেখে, ফটো তুলে, নোট নিয়ে, বড্ড হাঁপিয়ে গেছিলাম। তাই যে মাঠটি আছে মিউজিয়ামের মাঝে, তার কাছাকাছি একটি বেঞ্চে বসে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলাম। জল-টল খাচ্ছিলাম। ফাঁকা চত্বর। আকাশ থেকে সুয্যি মামা বিদায় নিয়েছেন ততক্ষণে...শুধু, উনি ছিলেন জানান দেবার জন্য একটা হাল্কা লাল রেখা রেখে গেছেন আকাশে। দুটো শালিখ পাখি খেলছিল নিজেদের মতো।
আমার মন খারাপ কাটছিল না কিছুতেই।
হঠাৎ শুনি, শিশুকন্ঠের চিৎকার "টাটা! বাই! বাই! আবার যেন দেখা পাই!"
আমি ভাবলাম 'এ আবার কি!"
তাকিয়ে দেখি, একটি নিতান্ত শিশু...কত হবে? বছর সাত বা আট? আকাশের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে নেড়ে 'টাটা বাই বাই' করছে। একটু দূরে দুজন বসে আছেন। ওর বাবা-মা হবেন।
কেন জানি না, মন টা খুব ভালো হয়ে গেল। পায়ে পায়ে ওর কাছে এগিয়ে গিয়ে বললাম, "তোমার নাম কি?"
লজ্জা লজ্জা মুখে বলল "সোহিনী"।
"কোন ক্লাসে পড়ো?"
"ক্লাস থ্রি। এখন ছুটি!"
ছুটি! আহা রে! এই হতভাগা করোনা যে কেন এলো!
কি মনে হতে জিজ্ঞেস করলাম "তুমি কাকে টাটা করলে?"
একগাল হেসে মেয়েটি বলল "কেন? একটা প্লেন যাচ্ছিল তো...ওকে..."
এবার আমার অবাক হবার পালা। বলে উঠলাম, "কিন্তু প্লেন তো অনেএএএক দূরে আর উঁচুতে...তোমার কথা তো শুনতে পাবে না!"
আমার দিকে হতাশ চোখে তাকিয়ে মেয়েটি বলে উঠল "ওমা, আমি তো প্লেনের জন্য 'টাটা' করিনি! আমার করতে ইচ্ছে হয়েছে, ভালো লাগে, তাই করেছি। প্লেন দেখল কি না দেখল তাতে আমার কি?"
একটা ঝটকা লাগল যেন! নিউ নর্ম্যাল নিয়ম অগ্রাহ্য করে ওর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিলাম। তারপর আমার সেই বেঞ্চিতে এসে বসলাম আবার।
কী গভীর কথা, তাই না?
আমার করতে ইচ্ছে হয়েছে, ভালো লাগে, তাই! অপরপক্ষের দেখা না দেখায় যায় আসে না কিছু!
অনেকটা যেন "কর্মন্যে বাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন"...।
কাজ টা করা পর্যন্ত আমার অধিকার। তারপরে আমার না।
বুক ভরে শ্বাস নিলাম একটা।
যে কাজের জন্য প্রতীক্ষায় ছিলাম, আমি নিজে নিজের যোগ্যতা এবং এফোর্ট নিয়ে সন্তুষ্ট...আর সেই সন্তুষ্টি...সেই ভালো লাগা তো আমার ই, আমার একার সম্পদ! আর অন্যের সিদ্ধান্ত, যা আমার একার নয়, সেজন্য আমি মনখারাপ করে বসে ছিলাম?
ধ্যাত!
পায়ে পায়ে সেই শিশু ভোলানাথ তখন আবার উঠে এসেছে মা বাবার পাশ টি থেকে। দৌড়চ্ছে...যেন উড়ছে পরীর মতো...
বড্ড ভালো লাগছিল আমার সবকিছু... ভালো লাগছিল এই পৃথিবীটাকে...যেখানে অবিরাম ঘটে যাচ্ছে রূপকথা...শুধু হাত বাড়ানোর অপেক্ষায়....।।
[+] 5 users Like ddey333's post
Like Reply
#83
বাহ্ বাহ্ খুব সুন্দর, নির্ভেজাল সারল্য মাখা।
Like Reply
#84
darun. please continue.
আসুন আমরা সবাই চটি গল্প উপভোগ করি।
[+] 1 user Likes Mr.Wafer's post
Like Reply
#85
clps clps clps clps এইভাবেই মাঝে মাঝে কালেক্ট করে আমাদের পড়ার সুযোগ করে দিও !!!!!! 
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
#86
#অনুগল্প[
-'তুমি আমার সাথে সবসময় এভাবে কথা বলো কেন, সৌগত? হয় দায়সারাভাবে, বা রেগে রেগে? আজ ট্রেনে এত গন্ডগোল, নিউ ব্যারাকপুরে অবরোধ হয়েছে, তুমি সারাক্ষন নিউজ নিয়ে পড়ে থাকো, আমাকে একবার ও ফোন করলে না?' একটানা কথা বলছিলেন দমদম স্টেশনে একটা বেঞ্চিতে বসা মধ্যতিরিশের এক ভদ্রমহিলা। ... 'না না, আমি জানি আমরা টিন এজার নই আর যে তোমাকে বার বার কল করতে হবে বা আমি ঠিক ই বাড়ি পৌঁছে যাব, বাট, এই একবার ও কল না করা টা...খারাপ লেগেছে আর কি....ও, ঠিক আছে, আমি ঝগড়া করতে চাই না। রাখছি। কখন ফিরব জানি না।'
বেঞ্চের উল্টোদিক টায় বসে সব শুনছিল অর্ক। অভদ্রতা ঠিক ই, ভদ্রমহিলা কথাও বলছিলেন বেশ চাপা গলায়, তাও কান তো বন্ধ করা যায় না! ঘাড় ঘুরিয়ে আড়চোখে তাকাল অর্ক। ভদ্রমহিলার চোখে আবছা জল। দৈনন্দিনতায় জেরবার ক্লান্ত মুখ। একটু ভাবল অর্ক, তারপর মনস্থির করে চলে এল সামনের দিকে, যেদিকে উনি বসে আছেন।
'এক্সিউজ মি, আপনাকে না আমার খুব চেনা লাগছে!'
'আমাকে?'
'হ্যাঁ। ইনফ্যান্ট আমি আপনাকে চিনি। মানে প্রায় ই দেখি আর কি।'
'মানে? কি বলতে চান আপনি?'
'আসলে আমি আপনি এক ই স্টেশন থেকে উঠি। আপনি কোনওদিন দেখেন নি আমাকে। আপনার মতো সুন্দরী মহিলা অবশ্য আমার মতো কীটপতঙ্গ সম মানুষদের পাত্তাই দেন না।'
'আরে কি মুশকিল। আমি আপনাকে চিনি ই না।'
'জানি ম্যাডাম, জানি। কি আর করা যাবে, কীটপতঙ্গ আমি। সরি ম্যাডাম ডিস্টার্ব করার জন্য। তাও আপনাকে বলি, আমার সাথে ট্রেনে আরো অনেকে ওঠে, যারা আপনার ফ্যান। আমাদের কথা ভেবে একটু হাসবেন মাঝে মাঝে, ওই টুকু তেই আমাদের শান্তি।'
'কিন্তু....'
'কোনো কিন্তু না, আসছি, ম্যাডাম।' নাম না জানা ভদ্রমহিলাটিকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সোজা ভিড়ে মিশে গেল অর্ক। ওভারব্রিজে ওঠার আগে একবার তাকিয়ে দেখল ভদ্রমহিলা ও যেদিকে এসেছে, সেদিকের ভিড়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। মুখে মৃদু, প্রায় দেখা যায় না, কিন্তু আছে, এমন একটা হাসি। রোজকার বাঁধাধরা জীবন, দশটা সাতটার লড়াই আর কলুর বলদের সংসারে একটু অন্য প্রাপ্তির হাসি। এখনো সুন্দর আছেন, ভাবার আনন্দের হাসি। আর ওই হাসি দেখেই অর্কর মুখেও হাসি ফুটে উঠল। কর্কট তার বংশ বৃদ্ধি করছে শরীরে, সেই অসম লড়াই এ হারার আগে কিছু মানুষের মুখে অপ্রত্যাশিত ভাবে হাসি ফুটিয়ে তোলার আনন্দ যে কম না!
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
#87
শহুরে পার্কের কোণের বেঞ্চিতে বসে থাকা ঝলমলে শাড়ির মেয়েটা চোখ বন্ধ রেখে মাথা রাখল জ্যালজেলে গেঞ্জি পরা ছেলেটির কাঁধে।
মধ্যবয়সী কাকু গিন্নির দেওয়া ফর্দ মিলিয়ে মাসকাবারি বাজার নিতে গিয়ে ভুঁরু কুঁচকে তাকিয়ে, মাথা নেড়ে, যোগ করলেন একটি বডি লোশান এবং ফুট ক্রিম।
প্রাইম টাইমে গুরুত্বপূর্ণ খবরের চ্যানেল ছেড়ে হাসিমুখে উঠে পড়লেন প্রৌঢ়... রোজকার মতোই...।
#ভালো_থাকুক_ভালোবাসা
[Image: 2764.png]
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
#88
#অন্য_রূপকথা
আজ সকালবেলাটা একটু অন্যভাবে শুরু হলো।
আমি ঘুমকাতুরে মনিষ্যি। রোববার সক্কাল সক্কাল ঘুম থেকে উঠলে ঠাকুর পাপ দেন শুনেছি, তাই ঘড়ির কাঁটার সাথে আমার আড়ি থাকে এইদিন। তা, আজ ও সেইরকম একটা ঘুম ঘুম রবিবার কাটছিল, তাও ঘুম থেকে উঠে পড়তে হলো তাড়াতাড়ি।
সৌজন্যে - কলিং বেল!
দরজা খুলে দেখি আমাদের আবাসনের এক বাসিন্দা। মধ্যবয়সী এক কাকু। এই নিউ নর্ম্যাল দিনে মাস্কের আড়ালে থাকা মুখ তো চেনা যায় না...তাই, বলা ভালো, ওনার সাথে চোখ চেনা। তবে, ক'দিন আগেই ওনার ফ্ল্যাটের সামনে বিস্তর চ্যাঁচামেচি শুনেছি। ওনার এক বোন সম্ভবত, সম্পত্তি, বাড়ি ইত্যাদি সম্পর্কে কিছু আলোচনা করছিলেন, যে টি ঠিক আলোচনা নয়, ঝগড়ার পর্যায়ে চলে গেছিল। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে শুনতে পেয়েছিলাম বেশ কিছু অপ্রীতিকর শব্দ। শান্তিপ্রিয় মানুষ আমি, খারাপ লেগেছিল শুনে।
যাই হোক, আজ সকালে ওঁকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। কেন জানি না, মনে হচ্ছিল "এই রে, ইনি আবার কেন!" আর, অবান্তর ভাবেই মনে হচ্ছিল "ইনি আমার সাথে ঝগড়া করবেন না তো!"
আমাকে অবাক করে উনি বলে উঠলেন "আমাকে একটা সাহায্য করবে মা? আমার একজনকে...মানে তাকে কিছু পাঠাতে চাই...সেই জন্য..."
"আ...আমি কি করব কাকু..." আমতা আমতা করে বলে উঠেছিলাম।
"তুমি তো প্রায়ই বাইরে থেকে খাবার আনাও...আমার জন্য একটা অর্ডার দিয়ে দেবে? এখানে না...পাশের পাড়ায় একজনের বাড়ি..." বললেন কাকু।
'একজনের বাড়ি!' সেরেছে!
কৌতুহল হচ্ছিল খুব। তাই ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম "কার বাড়ি কাকু?"
"আমার বোনের কাছে...এই তো পাশের পাড়াতেই থাকে...সেদিন ঝগড়াঝাঁটি করে চলে গেল...আজ জন্মদিন...ফোন ও ধরছে না যে বলব 'আজ তোর নেমতন্ন'... তাই একটু যদি অর্ডার করে দাও...ওই ফোন দেখে...আমি তোমাকে ক্যাশ টাকা দিয়ে দেব..." একটানা বলছিলেন উনি।
একটা হাতাওলা গেঞ্জি পরা... কাঁধের কাছে দুটো ছোট্ট ছোট্ট ফুটো...কাঁচাপাকা দাড়ি... কন্ঠার হাড় উঁচু হয়ে আছে।
হাত দুটো একসাথে... ঢোঁক গিলছেন...চোখে প্রত্যাশা...
আর একটু জল ও কি!?
হ্যাঁবাচক মাথা নাড়ার পরে স্বস্তির চিহ্ন ফুটে উঠল সেই দুটি চোখে।
"কাকু, এখন তো সবে সকাল আটটা...আরো পরে লাঞ্চের অর্ডার দেওয়া যায়... আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করে অর্ডার দিয়ে দেব..."
হাসিমুখে মাথা নেড়ে, আমাকে আশীর্বাদ করে চলে গেলেন উনি।
ঘরে ঢুকে ভাবছিলাম... কতরকম রূপকথা ই যে ঘটে যায় চারিদিকে...খালি চোখে কইটুকুই বা বুঝতে পারি আমরা!
আর, অনেক সময় কানে শোনা, চোখে দেখা সবকিছুর বাইরেও... বুকের ধুকপুকুনিটাই সত্যি। আর সেইটুকুকে খুঁজে নিতে হবে, নিতে হয় আমাদের... আর তাই, সেদিনের ঝগড়া করা দাদা যেমন সত্যি, তেমনি বোনের জন্মদিনে খাবার পাঠানোর জন্য...সামান্য চেনা একজনের কাছে ছুটে আসা...পরম সত্যি...
এই সাদা আর কালোর মাঝের রঙ ঝলমলে মানুষ গুলোকে...একটু খুঁজে যদি নেওয়া যেত...সবসময়...প্রত্যেকদিন...
ভালোটাকে আঁকড়ে ভালো থাকুন সবাই...
ভালোবাসার রঙ রামধনু ছড়াক সব্বার জীবনে...
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#89
প্রত্যেকটা গল্প অনিন্দ্য সুন্দর  Heart
Like Reply
#90
নতুন করে

স্নান করে বেরিয়ে ড্রায়ারে চুল শুকোতে শুকোতে আয়নায় নিজেকে দেখছিলেন শম্পা। সাদা লম্বা ঝুলের চিকনের কাজের কুর্তি আর মানানসই পালাজোয় আজ নিজের চোখের নিজেকে অনন্যা লাগছিল ওঁর।
হয়ত, অন্যরকম পোষাকের জন্য।
নইলে তো, বিজনেস স্যুটেই কেটে যায় সোম থেকে শুক্র...কখনো কখনো শনিও। আর রবিবার পাজামা - টি শার্টের বাইরে বেরোতেই ইচ্ছে করে না। সারা সপ্তাহ ধরে যা ধকল যায়! রবিবার মনে হয় শুধুই রেস্ট নেবার দিন। আর এখন তো সিনেমা টিনেমা দেখার জন্যও বাড়ির বাইরে যেতে হয় না। বাজার -হাট, কেনাকাটা সব অ্যাপেই। আর সামান্য যদি কিছু আনার থাকে মা নিজেই চলে যান... ওঁদের এই বিলাসবহুল সোসাইটির এক পাশেই একটি সুপার মার্কেট আছে, সেখান থেকে কিনে কেটে আনেন।
এইভাবেই কেটে গেল কত গুলো বছর!
শৈবালের সাথে ছাড়াছাড়ি হবার পর থেকেই তো!
একসময়ের হাসিখুশি, মিষ্টি মেয়েটা যেন হারিয়ে গেলেন কোথায়! 'প্রতিষ্ঠিত হতেই হবে' আর 'ভুলে থাকতে গেলে কাজ করতে হবে আরও বেশি করে' র জাঁতাকলে কত যে বসন্ত শীত হয়ে গেল! তখন মাঝে মাঝে হাল ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করত...ভাবতেন, হেরেই গেলেন বুঝি...কিন্তু... ওই 'পারতেই হবে' টা কে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়েছিলেন। বেশ কয়েকটা কোম্পানি টপকে আটবছর আগে নিজের কোম্পানি শুরু করেছিলেন। তখন মা একটু অসন্তুষ্ট ই হয়েছিলেন, অত ভালো চাকরি, পার্কস, সব ছেড়ে স্টার্ট আপের 'ভূত' মাথায় উঠেছিল বলে। মায়ের ও দোষ নেই, খুব মধ্যবিত্ত অবস্থা থেকে মেধাবী মেয়ের কল্যানেই যাবতীয় জাগতিক সুখ। যে ক'বছর বিয়ে হয়ে সংসার করেছিলেন, তখনও যথেষ্ট পাশে ছিলেন শম্পা মায়ের। আর, তারপর তো চলেই এলেন।
মাঝে মাঝে অভিমান হয় ওঁর, আজও। মা একবার ও নিজে থেকে চেষ্টা করেন নি সম্পর্কটাকে জোড়া লাগানোর। শৈবালের সাথে একবার ও কথা বলেন নি। এমনকি ওঁর মাথাতেও হাত বুলিয়ে দেন নি একবার ও...সেইসব বালিশ ভেজা বৃষ্টির দিনেও। আজকাল মনে হয়...বাবা থাকলে হয়ত...এমনি হতো না কিছুতেই। বাবা বুঝতেন। বোঝাতেন। আবার, মনে হয়... মায়ের ও তো বয়েস হয়েছে... হয়ত চাইছিলেন পাশে থাকুন উনি... রাতবিরেতে... হাঁপানির টানে আর প্রেসারের অনিয়মের দিনগুলিতে। তবে...অভিমান ও পাহাড়ের মতো হয়ে আছে যেন।
ভাবতে ভাবতে অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে এলেন শম্পা। কী আর হবে সেসব ভেবে! ভাবলেই মন খারাপ! বরং এখন একটা নতুন সময় আসতে চলেছে।
আর মায়ের তো সব ই খারাপ ছিল না! এই তো, ডিভোর্স হবার আগে সেই দমচাপা সময়ে উনি কত স্ট্রং, মনে করিয়ে দিয়েছেন বারবার। প্রতিবার প্রমোশান - ইনক্রিমেন্টের সময়ে, নতুন ফ্ল্যাট কিনে শিফট করার সময়, কালো রঙের নতুন গাড়ি কেনার সময়ে, বা হালে 'ফর্টি আন্ডার ফর্টি' লিস্টিতে নাম ওঠার পরে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠা... আত্মীয়দের কাছে চোদ্দরকম ভাবে গল্প করে শোনানো... সব ই করেছেন সুচারু ভাবে। এমনকি, এই যে ইস্টার্ন বাইপাসের ওপরের এই ফ্ল্যাট...এতে এতটুকুও সময় দিতে হয় না শম্পাকে। সব মা একাই সামলে দেন। এই বয়সেও। এও তো অনেক কিছু করাই, তাই না?
তাও...মাঝে মাঝে কুট করে কামড়ায় বুকের মাঝে...যদি একবার মা ওকে বোঝাতেন...বিয়ের পরে একটু পরিবর্তন আসেই, অত গায়ে মাখতে নেই! আর শৈবালকে ফোন করে বলতেন "আর একবার চেষ্টা করো দেখি তোমরা!"
মা ছাড়া আর কেই বা ছিল ওঁর!
যাই হোক, 'সময় চলিয়া যায়, নদীর স্রোতের প্রায়!' সময় নিজের মতো বয়ে গেছে। শৈবাল এখন নিউইয়র্ক না কোথায় একটা আছে! একবার ফেসবুকে খুঁজেছিলেন শম্পা। কভার ফটোতে এক মহিলার হাসিমুখের পাশে দেখে বুকটা খালি হয়েছিল অনেকক্ষণ! সে বড় কষ্ট! তাই আর খোঁজেন নি! কে আর চায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে!
একটা দীর্ঘশ্বাস বুক ভেঙে এলো শম্পার। বিছানায় রাখা রয়্যাল ব্লু বেনারসি কাজের দোপাট্টা টা পরে একবার নিজের প্রতিবিম্ব টা দেখলেন শম্পা। অন্যরকম সাজে দিব্যি মানিয়েছে তো আজ! হঠাৎ কি মনে হতে একটা ছোট্ট নীল বিন্দি পরে নিলেন কপালের মাঝটিতে। এই তো! আজকের দিনের উপযুক্ত সাজ।
আজ যে বড় ভালো দিন!
বড় ড্রয়িংরুমটার একপাশে ডাইনিং জোন। সেখানে এসে বসতেই মা এক গ্লাস জুস এনে রাখলেন। তারপর লাগোয়া কিচেনে চলে গেলেন। রোজকার মতোই।
জুসের গ্লাসটা দেখে একটু হাসলেন শম্পা। সোনালী রঙের জুস। পাইন আপেল কি? তাহলে খাবেন না আজ।
দুটো হোল হুইট ব্রেড, পিনাট বাটার দিয়ে খাওয়া অভ্যেস শম্পার। আর একটা এগ পোচ। মা প্লেট এনে রাখলেন। একটু হেসে শম্পা বলে উঠলেন, "মা, আজ ডিমটা খাব না...গন্ধ লাগছে...আর জুসটাও না। "
"গন্ধ লাগছে! সে কি! শরীর ঠিক আছে তো?" মায়ের উদ্বিগ্ন কন্ঠ।
"হ্যাঁ হ্যাঁ,এমনিতে তো ঠিক ই আছে। কিন্তু ডিমটায় স্মেল লাগছে হঠাৎ করে। শুনেছি এমন হয়। আর পাইন আপেল খাওয়াও শুনেছি ঠিক না...গন্ধ নেই যদিও...দেখি ডক্টরকে একবার জিজ্ঞেস করে..." বলে ওঠে ও।
"গন্ধ লাগে! খাওয়া ঠিক না! কি হয়েছে তোমার?" কপালে হাত ছুঁইয়ে বলেন মা।
মায়ের দিকে তাকিয়ে একটু হাসে শম্পা।
তারপর বলে "কিচ্ছু না...আমি খুব ভালো আছি...আসলে কাল ই জানতে পারলাম তো যে আমি পজিটিভ...মানে...প্রেগনেন্সি টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ...তাই আর কি...আগে দেখি ডাক্তার কী বলেন..."
ওর কথা শেষ হবার আগেই ধপ করে চেয়ারে বসে পড়েন মা।
কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থাকার পরে জিজ্ঞেস করেন "প্রে...প্রেগনেন্সি...পজিটিভ...মানে?"
"মানে তো খুব সিম্পল মা, তুমি দিম্মি হতে চলেছ! তবে আমার তো চল্লিশ প্রায়, একটু সাবধানে থাকতে হবে আমাকে, এই যা!"
"বান্টি! তুমি জানো, তুমি কি বলছ! তুমি...তুমি প্রেগন্যান্ট! কে সে? না কি ওই...আই ভি এফ না কি বলে, সেটা করেছ! ছিঃ ছিঃ ছিঃ!" একটানা বলে থামেন মা।
একনজর মায়ের দিকে তাকান শম্পা।
কুসন্তান হলেও কুমাতা হতে পারেন না কখনো। তাও, অভিমান হয় বড্ড। ওর ও যে সংসার, স্বামী, সন্তানের প্রয়োজন হতে পারে...ডিভোর্স হলেও যে চাহিদা থেকে যায়, স্বপ্ন মরে না...বোঝেন নি মা। তাই ও...উনিই এবার, নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন...
"না মা, আই ভি এফ না...কোনো সম্পর্কেও নেই আমি। এরচেয়ে বেশি কিছু জানতে চেয়ো না, প্লিজ। তোমার ভালো লাগবে না। শুধু বলি, আমি চেয়েছিলাম... সঙ্গ এবং সন্তান, দুটোই, ঠিক যেভাবে আমি তোমার খেয়াল রাখি, রেখে এসেছি, তেমনি কেউ একটা থাকুক আমার ও। আমার নিজস্ব কেউ। তাই। "
"আমি এবার সবাইকে মুখ দেখাব কি করে! লোকে কি বলবে! " কাঁদতে কাঁদতে বলেন মা।
খারাপ লাগে শম্পার। টেবিলে রাখা মায়ের হাতটা আলতো জড়িয়ে ধরে বলেন "লোকে কি বলবে ভেবেই তো এতগুলো বছর নিজেকে কষ্ট দিয়েছি মা...আর পারলাম না! বরং লোকে কি বলবে না...ডাক্তারবাবু কী কী বলবেন, সেটাই আমার প্রায়োরিটি এখন। আমি খুব খুশি মা...জোর করছি না...তবে আমি চাই তুমিও খুশি হও আমার এই খুশিতে..." বলে টোস্টে কামড় বসান শম্পা।
অন্যহাত টা তখনও মায়ের হাতের ওপর রাখা।
বাইরে সোনাঝরা রোদ্দুর।
অথচ ঘরের ভেতরে, মনের মাঝে বর্ষণ!
কিন্তু, কিচ্ছু করার নেই শম্পার। এবার বাইরের লোক না, নিজের মনের মাঝে থাকা ঈশ্বরের কথা শোনার সময়।
মা পাশে থাকলে ভালো লাগত, এই যা!
একটা আওয়াজ হওয়ায় চমকে তাকান শম্পা।
হাত ছাড়িয়ে উঠে গেছেন মা।
মাথা নীচু করেন শম্পা। হাল ছাড়বেন না উনি, কিছুতেই না।
আরেকটা আওয়াজ।
ওঁর চেয়ারের পেছনেই।
মা এসেছেন...জড়িয়ে ধরেছেন পেছন দিক থেকে...হাত বুলোচ্ছেন মাথায়...
চোখে জল আসে শম্পার, সেই অভয়- স্পর্শে...
পাহাড় গলছে...
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#91
তাড়াহুড়ো করে পার্কিং সেরে গাড়ি থেকে নামল শ্রেয়ান। কিভাবে যে প্রায় ঝড়ের বেগে ড্রাইভ করে এসেছে শুধু ও ই জানে আজ!
তানিয়াদের ফ্ল্যাটে কলিং বেল বাজাবার পর খুলতে যেটুকু সময় লাগে...তাতেই তর আর সইছিল না ওর। মনে হচ্ছিল অনন্তকালের অপেক্ষা যেন!
থমথমে মুখে দরজা খুলে দাঁড়ালেন প্রীতি আন্টি। তানিয়ার মা। চোখ ফুলে আছে ওঁর।
ড্রয়িংরুমের সোফায় তানিয়ার বাবা বসে আছেন...কেমন হাল ছেড়ে দেওয়া, উদভ্রান্ত মুখ ওঁর। ডাইনিং টেবিলের ওপর ডাঁই করে রাখা কয়েকটা চকচকে ট্রে...
ওদের বিয়ের তত্ত্বের ট্রে।
যে বিয়েটা...হবে কিনা আদৌ, সন্দেহ।
তানিয়া অদ্ভুত একটা কথা বলে বিয়েটা ক্যানসেল করে দিতে চাইছে। মাত্র সতেরো দিন আগে!
"আন্টি, তানিয়া কোথায়?" ফ্যাঁসফ্যাঁসে গলায় জিজ্ঞেস করে শ্রেয়ান।
কাল সারা রাত ঘুম হয় নি ওর। তানিয়ার মেসেজ পেয়েই চলে আসত...নেহাত মা বেরোতে দেন নি, তাই!
"আর কোথায়, নিজের ঘরে.." বলেন আন্টি। গলার আওয়াজ বসে গেছে। খুব কান্নাকাটি করলে যেমন হয়।
"আমি একটু দেখা করতে যাচ্ছি " বলে শ্রেয়ান।
"যাও...দেখো, দরজা খোলে কিনা! সকাল থেকে বাইরেও আসে নি!"
"আন্টি, কি হলো বলুন তো, হঠাৎ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কাল একটা অদ্ভুত মেসেজ পেলাম..." গলা ভেঙে আসে ওর।
"কী যে বলি বাবা...আমাদের ও মাথা কাজ করছে না!"
আর কথা না বাড়িয়ে এগিয়ে যায় শ্রেয়ান।
"তানি, প্লিজ দরজা খোলো। উই নিড টু টক!" নক করতে করতে বলে ও।
খুট করে একটা আওয়াজ। দরজা খোলে তানিয়া।
গোলাপী বার্বি আঁকা নাইট স্যুট পরা, পনিটেল বাঁধা তানিয়া যেন নিজেই একটা বার্বি ডল!
কিন্তু, ওর ও চোখ ফোলা। দেখেই মনে হচ্ছে 'কাল রাত্তিরে ঝড় বয়ে গেছে রজনীগন্ধার বনে"।
তানিয়ার হুইমসের প্রতি সারা রাত ধরে যে রাগ হচ্ছিল, এক মুহূর্তেই কেটে যাচ্ছিল শ্রেয়ানের।
বড্ড কেঁদেছে মেয়েটা!
"কী হয়েছে বাবু? কাল এমনি একটা মেসেজ করলে? তারপর থেকে ফোন অফ..."
কোনোদিন ন্যাকা ন্যাকা "বাবু", "সোনা" না করা শ্রেয়ান জিজ্ঞেস করল।
উত্তরে শুধু একটু ম্লান হাসল তানিয়া।
তারপরে বলে "আমি তো ভুল কিছু লিখি নি...যা সত্যি, তাই লিখেছি!"
"কি সত্যি? দ্যাট ইউ হ্যাভ সামওয়ান ইন ইয়োর লাইফ? আ সো কলড ফিঁয়ান্সে?" রাগ হচ্ছে শ্রেয়ানের এবার।
তানিয়া কি বুঝতে পারছে না ওর কষ্ট? মজা করছে এখনও?
"শ্রেয়ান, আমি ঠিক ই বলেছিলাম। আই হ্যাভ আ ফিঁয়ান্সে...হঠাৎ করেই যে আমার জীবনে এসেছে..."
"হোয়াট দ্যা ফা...তানি? শাট আপ! জাস্ট শাট আপ..." নিজের কোঁকড়া চুলে হাত বুলোতে বুলোতে বলল শ্রেয়ান।
"আমি কেন চুপ করব? ইন ফ্যাক্ট, সে আমার ঘরেই আছে এখন..."
চমকে তাকালো শ্রেয়ান। ঘর তো ফাঁকা...লাগোয়া ব্যালকনিতে চোখ গেল ওর। ওখানে আছে নাকি সে? দ্যাট বাস...
"এসো.." বলে ব্যালকনির দিকে এগিয়ে যায় তানিয়া।
যা ভেবেছে তাই!?
রাগত চোখে ওদিকে যায় শ্রেয়ান।
তানিয়া দাঁড়িয়ে আছে দরজার কাছে।
"এই দেখো..."
তাকায় শ্রেয়ান। ব্যালকনির দরজার উপরে একটা ছবি।
দেবাদিদেব মহাদেব।
অবাক হয়ে তাকাল শ্রেয়ান। তানিয়ার কি মাথাটা গেল?
"আমি নাকি মাঙ্গলিক... পরশু আন্টি, তোমার মা ফোন করেছিলেন...বললেন আমাকে বিয়ে করলে তোমার জীবনের ভয় আছে...আর তাই আমাকে ওঁকে বিয়ে করতে হবে...ফিঁয়ান্সে ই তো হলেন, তাই না?
সারা রাত, সারা দিন অনেক ভাবলাম... মাঙ্গলিক আমি...কিন্তু...এভাবে...হয় নাকি?" তানিয়া হাঁপাচ্ছে এবার।
চুপ করে থাকে শ্রেয়ান। মাথা নীচু। মা কিসব বলছিলেন ক'দিন ধরেই...হ্যাঁ হু করে উড়িয়ে দিয়েছিল... বোঝে নি, যে মেয়েটা এতটা ভালবাসে ওকে... তার কাছে আঘাত লাগতে পারে কিনা...
চোখ তুলে তাকায় শ্রেয়ান। তানিয়া তাকিয়ে আছে ওর দিকে। চোখে জল...ঠোঁট টা কাঁপছে অল্প অল্প...
মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগিয়ে যায় ও তানিয়ার দিকে। মৃত্যু অমোঘ...কিন্তু তারচেয়েও অমোঘ বেঁচে থাকা...প্রতিমুহূর্ত জুড়ে...
আর তানিয়াই ওর প্রতিদিনের অক্সিজেন...
হাঁটু গেড়ে বসে শ্রেয়ান, তানিয়ার পায়ের কাছে। ক্ষমা চাইতে হবে ওকে। এক্ষুণি।
ভালোবাসার মানুষ কষ্ট পেলে প্রতি মুহূর্ত যে মৃত্যুর ই সমান হয়...।।
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#92
@ddey333
আপনার ছোট্ট ছোট্ট লেখাগুলি ভারি সুন্দর। বুঝতে পারি যে আপনি খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করেন জীবনের জটিল তথ্যগুলি। বাচ্চাদের সরল স্বভাব আর মানুষের অসহায় অবস্থা আপনাকে বিচলিত করে। ভালো লিখছেন, অল দা বেস্ট।
[+] 1 user Likes Trambak's post
Like Reply
#93
(24-12-2020, 12:05 AM)Trambak Wrote: @ddey333
আপনার ছোট্ট ছোট্ট লেখাগুলি ভারি সুন্দর। বুঝতে পারি যে আপনি খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করেন জীবনের জটিল তথ্যগুলি। বাচ্চাদের সরল স্বভাব আর মানুষের অসহায় অবস্থা আপনাকে বিচলিত করে। ভালো লিখছেন, অল দা বেস্ট।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ..
কিন্তু একটা ভুল করে ফেলেছেন আপনি , এগুলোর কোনোটাই আমার লেখা নয়, অত বিদ্যে নেই আমার পেটে !!
থ্রেডের প্রথম পাতাতেই উল্লেখ করেছিলাম যে এগুলো সব রূপান্বিতা রায়ের ফেসবুক ওয়াল থেকে তুলে আনা , আমি ওনার একজন অনুগামী মাত্র ...
পড়ে ভালো লাগে বলে এখানে এসে বন্ধুদের জন্য শেয়ার করি

আপনার লেখা দুটো অসাধারণ গল্পই অনেকদিন আগে পড়েছিলাম , যদি ওরকম আরো কিছু থাকে তাহলে অনুরোধ করছি এখানে দেবার জন্য     

Namaskar Namaskar
Like Reply
#94
(24-12-2020, 04:39 PM)ddey333 Wrote: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ..
কিন্তু একটা ভুল করে ফেলেছেন আপনি , এগুলোর কোনোটাই আমার লেখা নয়, অত বিদ্যে নেই আমার পেটে !!
থ্রেডের প্রথম পাতাতেই উল্লেখ করেছিলাম যে এগুলো সব রূপান্বিতা রায়ের ফেসবুক ওয়াল থেকে তুলে আনা , আমি ওনার একজন অনুগামী মাত্র ...
পড়ে ভালো লাগে বলে এখানে এসে বন্ধুদের জন্য শেয়ার করি

আপনার লেখা দুটো অসাধারণ গল্পই অনেকদিন আগে পড়েছিলাম , যদি ওরকম আরো কিছু থাকে তাহলে অনুরোধ করছি এখানে দেবার জন্য     

Namaskar Namaskar

এবার লকের কপি পেস্ট করা ছেরে দিয়ে নিজেও কিছু লেখ ! আমার মনে হয় তুমি খুব ভালো লিখতে পারবে ! তখন না হয় আমরাই কপি করে অন্য কোন জায়গায় পেস্ট করতে শুরু করে দেবো ! 
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#95
।। ঝগড়া ।।

স্বামী আর স্ত্রীর মধ্যে প্রচুর ঝগড়া হচ্ছে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রী চুপ হয়ে যায়। স্বামী তবুও ইচ্ছেমতো স্ত্রী কে বকে গেলো। বকতে- বকতে একসময় স্বামী ও চুপ হয়ে যায়,। স্ত্রীর পাশে গিয়ে বসে, নিচু স্বরে স্ত্রী কে জিজ্ঞাসা করে ---- চুপ হয়ে গেছো কেন? 
---- স্ত্রী তখন নিজের লাগেজ গুছাতে- গুছাতে বললো ---বিয়ের রাতে আমাদের মাঝে কথা হয়েছে একজন রেগে গেলে আরেকজন চুপ থাকবো তাই সে কথা রাখতে নিজেই নিশ্চুপ হয়ে গেছি। এই বলে লাগেজ হাতে নিয়ে স্ত্রী চলে যেতে চাইলে স্বামী শক্ত করে প্রেয়সীর হাতটা ধরে বললো --- কোথায় যাচ্ছ তুমি? 
--- বাপের বাড়ি যাচ্ছি। 
স্বামী তখন গম্ভীর কন্ঠে বললো ---- বিয়ের রাতে আমাদের মাঝে এ ও কথা হয়েছে যে --- যতই মনোমালিন্য কিংবা জগড়া হোক না কেন, দিনশেষে রাতের আধারে তুমি ঠিকেই আমার বুকের বা পাশে মাথাটা রেখে ঘুমোবে। অতএব তোমার যদি সত্যিই কোথা ও যেতে ইচ্ছে করে আমাকে ছাড়া যে যেতে পারবেনা। তাই তুমি বসো আমি ও নিজের লাগেজটা গুছিয়ে নেই।

স্বামীর এমন কথা শুনে প্রেয়সীর মুখে সেই হাসিটা আবার উদয় হলো, যেটা মানুষকে সংসারের হাজারো রকম ঝামেলার মাঝে ও দিপ্ত কন্ঠে বলতে বাধ্য করে --এইতো আমার সুখ, এই তো আমার মায়াজাল, এইতো আমার সংসার। ??
সংগৃহীত।
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
#96
#কথোপকথন
-"ভালো আছো?"
-"ওহ্, আনব্লক করেছ!"
-"ভালো আছো? বললে না তো..."
-"আছি, আমার মতো..."
-"আনব্লক করলাম একটা কারণে..."
-"ঢেলে দাও কানে"
-"সার্কাজম! এনি ওয়ে, আজ কি বার?"
-"কেন? রবিবার!"
-"বছর আর দশকেরও শেষ হলো এবার।"
-"ও..."
-"শুধু ও! ভালো!"
-"আর কি বলব? জ্ঞান বাড়ল?"
-"না, শুধু আমার ই দুঃখ বাড়ল।"
-"হ্যাঁ, আমি তো শুধু তোমাকে দুঃখই দিয়েছি.."
-"ঝগড়া করো না মিছিমিছি। "
-"মেসেজ কেন করলে বলবে? প্লিজ!"
-"দশবছর আগের এইদিনটাকে করছিলাম মিস।"
-"দঅঅশ বছর আগে? কি হয়েছিল?"
-"এইদিনটার কদিন পরে নতুন বছর এসেছিল!"
-"বাহ! সুন্দর লজিক। সাতাশে ডিসেম্বরের পর এসেছে নতুন বছর।"
-"সেই নতুন বছরে আমরা বেঁধেছিলাম ঘর।"
-"হুম, তখন তো জানতে না আমি এত বর্বর।"
-"সাথে মাথায় এক বস্তা গোবর!"
-"গোবর? ছ্যাঃ! কেন?"
-"আহা জানে না যেন!"
-"না জানি না। তুমিই বোঝাও।"
-"কী মশা এখানে! রোজ রোজ জানলা বন্ধ করতে ভুলে যাও!"
-"এখানে একটাও নেই মশা"
-"বেহায়া! লজ্জাও করে না!"
-"ঝগড়া করে গেছ কেন ড্রয়িং এ শুতে?"
-"তোমাকে আজ ধরবে ভূতে!"
-"কিস্যু হবে না। পেত্নী আছে ওয়ালপেপারে।"
-"আমি পেত্নী? আজ হচ্ছে তোর, দাঁড়া রে।"
-"শোন শোন, আসার সময় একটা জলের বোতল আনিস।"
-"আজও জলের বোতল নিস নি? তুই আজ হবিইইই ফিনিশ..."
-"জলদি আয় প্লিজ..."
-"আসছি, ততক্ষণ কর আমাকে মিস..
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#97
[Image: 133661855_10158785849746815_424818091945...e=601172E2]
Like Reply
#98
মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় থাকা ছেলেটি বাবার চোখে চোখ রেখে বলতে পারুক... "বাবা জয়েন্ট না, আমি সাহিত্য নিয়ে পড়তে চাই...ইংরিজি পড়তে আমি..."
একমাস ও হয়নি সিঁথি সাদা হয়েছে যে মেয়েটির, সে শাশুড়ি মা কে বলুক "মা আমি আতপ চাল খাব না। আর কাল আমি কেক খেতে চাই। কারণ কেক খেতে আমি খুব..."
উচ্চতায় এবং পদমর্যাদায় খাটো ছেলেটির দিকে হাসি হাসি চোখে চেয়ে মেয়েটি বলে দিক "এই যে শুনছেন মশাই, আমাকে বিয়ে করবেন? আমি আপনাকে বড্ড..."
কলেজের সবচেয়ে বিচ্ছু মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ভালোমানুষ ছেলেটি গলায় জোর এনে শোনাক 'এই, শো...শো...শোন...আ..আমি...তো...তোকে..."
"ভালোবাসি!"
"ভালোবাসি!"
"ভালোবাসি!"
"ভালোবাসি!"
জোর গলায় বলুক সবাই। বলুক, ভালোবাসি।
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#99
#কথোপকথন
"হ্যালো...
স্যরি, ডিস্টার্ব করলাম বোধহয়...
আসলে একটা কথা ছিল...
আমার একটা জিনিস রয়ে গেছে ওই বাড়িতে...আনতে যেতে চাই!"
"এই বাড়িতে? বেশ তো...যে কোনো দিন এসে নিয়ে যেও। যদিও আমি জানতাম তুমি সবকিছু নিয়ে গেছ লিস্ট মিলিয়ে...।"
"হ্যাঁ, আসলে...একটা জিনিস...ভুলে গেছিলাম, লিস্টে ছিল না। আমার একার জিনিস...তাই..."
"ওহ! নিয়ে যেও। যেদিন খুশি...
খুব ভারী কিছু? তাহলে আমি থাকতে পারি...মানে, যদি তুমি চাও..."
"ভারী? নাহ্, খুব হাল্কা...। কিন্তু...ভারীও..."
"হাল্কা, কিন্তু ভারী? ভালো হেঁয়ালি...!"
"তোমার কাছে হাল্কা, হয়ত...আমার কাছে খুব, খুউউউব ভারী..."
"কি যে বলছ..."
"আমার...হোম প্রেগনেন্সি টেস্টের রিপোর্ট টা...সেই সাদা প্লেটে দুটো লাল দাগ...ওটা...ঘরের জানলায় রাখা মানিপ্ল্যান্টের টবে পুঁতে রেখেছিলাম...ওটা...ওটা আমার.."
"তোমার? তোমার কিভাবে হয় ওটা চন্দ্রানী? ও তোমার একার ছিল?"
"হ্যাঁ, আমার একার ই ছিল। তুমি... কেয়ার ই করো নি...ও চলে যাবার পরেও না। নির্বিকারে অফিসে গেছিলে..."
"হ্যাঁ, গেছিলাম। বাড়িতে থাকতে পারছিলাম না আমি।
স্বপ্ন আমার ও ছিল চন্দ্রানী। ও আমার ও ছিল..."
"আমাকে দাও ওটা। প্লিজ। "
"বেশ। তাহলে লিস্টের বাইরে ও যে একটা জিনিস নিয়ে গেছ তুমি, সেটা আমাকে ফেরত দাও।"
"ক্কি...কি জিনিস? আমার কাছে কিচ্ছু এক্সট্রা নেই...বিশ্বাস করো?"
"আছে...খুব ঠুনকো একটা জিনিস..."
"কি?"
"আমার মন টা... যে তোমার কথা ভেবে আজও কাঁদে, আর ভাবে... 'কি ভুল টা করলাম...কি করলে এমন হতো না...' দাও ফেরত..."
"তুমি...এখনও..."
"হ্যাঁ, ভালোবাসি... খুব বোকা আমি, মুখ ফুটে বলতে পারি না। শুধু বুকটা ফেটে যায়..."
"কেঁদো না... প্লিজ.."
"আমি কাঁদছি না। কেন কাঁদব? আমি তো তোমার যোগ্য ছিলাম না। ভালো রাখতে পারিনি তোমাকে.."
"আমি সেটা বলিনি। আমি...আমি আসব? তোমার কাছে? আরেকবার?"
"না..."
"না?"
"না...কারণ, এবার তুমি চলে গেলে আমি আর..."
"আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখব এবার তোমায়..."
"চন্দ্রানী..."
"উবার বুক করছি...আসছি আমি...তুমি কিছু খাবার অর্ডার করে দাও..."
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
ভালো হচ্ছে, দাদা। লিখতে থাকুন নিয়মিত।

মা ছেলে ভরপুর সঙ্গম চাই।
Heart  বাংলা চটি পড়ুন, ঠাকুরদা'র সেরা চটির সাথেই থাকুন  Heart
[+] 1 user Likes Chodon.Thakur's post
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)