Thread Rating:
  • 34 Vote(s) - 3.24 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চোরাবালি (কালেক্টেড)
#81
দাদা পিনুরাম যতটা লিখেছেন সেই অবধি পুরোটাই দিয়ে দিন
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
Knocking Again....
Like Reply
#83
Please update
Like Reply
#84
Valo likchilen... Update dile noyto kobe deben seta bole dile valo hoy.
Like Reply
#85
পরের অংশগুলো একসাথে দিয়ে দিন
Like Reply
#86
পরের আপডেট চাই
Like Reply
#87
দাদা আপডেট কবে পাব???
Like Reply
#88
এতো দেরি করে আপডেট দিচ্ছেন কেন বলুন তো মশাই, এটা তো রেডিমেড গল্প আপনার কাছে। আপনি আর পোষ্ট করতে না চাইলে কোথা থেকে কালেক্ট করছেন সেই সাইটের নাম বলে দিন তাহলে অন্তত। 
Like Reply
#89
(10-09-2020, 02:35 PM)Mr Fantastic Wrote: এতো দেরি করে আপডেট দিচ্ছেন কেন বলুন তো মশাই, এটা তো রেডিমেড গল্প আপনার কাছে। আপনি আর পোষ্ট করতে না চাইলে কোথা থেকে কালেক্ট করছেন সেই সাইটের নাম বলে দিন তাহলে অন্তত। 

Available in 'কিছু মনের কথা ' FB group .
The group was started by Pinuram himself.
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#90
(10-09-2020, 04:07 PM)ddey333 Wrote: Available in 'কিছু মনের কথা ' FB group .
The group was started by Pinuram himself.

 ভাই অনেক ধন্যবাদ।  কিন্তু খুজে পাচ্ছি না। যদি কষ্ট করে link টা দিতেন।
Like Reply
#91
(10-09-2020, 04:07 PM)ddey333 Wrote: Available in 'কিছু মনের কথা ' FB group .
The group was started by Pinuram himself.

 ভাই অনেক ধন্যবাদ।  কিন্তু খুজে পাচ্ছি না। যদি কষ্ট করে link টা দিতেন।
[+] 1 user Likes S2929's post
Like Reply
#92
(10-09-2020, 04:07 PM)ddey333 Wrote: Available in 'কিছু মনের কথা ' FB group .
The group was started by Pinuram himself.

গ্রূপে তো আমিও আছি, কিন্তু গল্প পোষ্ট করা হয়েছে এমন কিছু তো খুঁজে পাইনি দাদা !
Like Reply
#93
(10-09-2020, 08:45 PM)S2929 Wrote:  ভাই অনেক ধন্যবাদ।  কিন্তু খুজে পাচ্ছি না। যদি কষ্ট করে link টা দিতেন।

চেষ্টা করছি , একটু সময় লাগবে

এখন একটু অফিস এর কাজে ব্যস্ত আছি
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#94
(11-09-2020, 08:51 AM)ddey333 Wrote: চেষ্টা করছি , একটু সময় লাগবে

এখন একটু অফিস এর কাজে ব্যস্ত আছি

Thank you
Like Reply
#95
পর্ব চার। অনুভূতি (#5-#23)
অভিদের বাড়ির আত্মীয় যারা নিজের নিজের গাড়িতে এসেছিল, তারা এক এক করে খাওয়া দাওয়া সেরে বিদায় নিয়ে নেয়। রাত বাড়ে সেই সাথে অতিথি আত্মীয়দের সংখ্যা এক এক করে কমে আসে। বিয়ের বাড়িতে শুধু মাত্র বাড়ির লোক। এর মাঝে কখন দেবাশিস বাবু চলে গেছেন খেয়াল নেই। অদুরে দাঁড়িয়ে দেবী লেখা দিয়া আর ঝন্টুর জটলা। অন্যপাশে দিদিভাইকে ঘিরে বড়মা বড়দি নিলাদ্রি জামাইবাবু আর শিতাভ্র। ওদের ও খাওয়া শেষ করে নেওয়া উচিত, তাই বাড়ির সবাইকে অনুরোধ করে খাওয়া সেরে নিতে। খাওয়া শেষে বাড়ির সবার একসাথে জটলা। বিদায়ের পালা, সবার চোখেই একটু জল, ঠোঁটে একটু ম্লান মিষ্টি হাসি। এর মাঝে দিয়া কখন অভির পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা ওর খেয়াল নেই। ঘড়ির দেখে অভি, রাত এগারোটা, এবারে বিদায় নেওয়া উচিত না হলে বাড়ি পৌঁছাতে অনেক রাত হয়ে যাবে। এক এক করে যে যে গাড়িতে এসেছিল সেই গাড়িতে উঠে বসে।
দিয়া অভির সুট একটু টেনে নিজের দিকে নজর টেনে জিজ্ঞেস করে, “তুমি আমাকে পৌঁছে দেবে’ত।”
অভি মাথা দোলায়, “হুম।”
লেখা মুচকি হেসে ওদের কাছে এসে বলে, “সাবধানে যাস আর পৌঁছে একটা ফোন করে দিস।”
দিয়াও মাথা দোলায়, “আচ্ছা করে দেব।”
এর মাঝে দেবী অভির কাছে এসে বলে, “দাদাভাই, আমি কার সাথে যাবো?”
হেসে ফেলে অভি, “তুই আমার সাথে যাবি।”
ডিসেম্বরের শীত, রাত অনেক, ঠান্ডাটা বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে এই সোনারপুর এলাকায়। দেবী ইতিমধ্যে একটা ব্যাগ থেকে একটা লম্বা লাল রঙের ওভার কোট গায়ে চড়িয়ে নেয়। অভি ওকে দেখে স্মিত হেসে ফেলে, মেয়েটা আজকে শুধু লাল রঙ্গেই সেজেছে। ওয়াগন-আর এর পেছনের সিটে দেবী আর দিয়া উঠে পড়ল।
মনামি তখন বাইরে দাঁড়িয়ে পাশে শিতাভ্র। দিদিভাই আর শিতাভ্রের কাছে গিয়ে দুজনকে জড়িয়ে ধরে বলে, “ভালো থাকিস, আসছি রে।”
বেশি কথা বলার মতন শক্তি ছিল না ওর। পেছনে না তাকিয়ে গাড়ির সামনের সিটে বসে পড়ল। অন্ধকার শীতকালের রাত কেটে হুহু করে গাড়ি ছেড়ে দিল। গাড়ির ভেতরটা ভীষণ নিস্তব্ধ। জানালা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও গাড়ির ভেতরটা ভীষণ শীতল মনে হল। দেবী দুই কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে মগ্ন। ঠান্ডায় দিয়া একটু কুঁকড়ে চোখ বুজে চুপচাপ বসে। অভি নিজের চিন্তায় মগ্ন। ওর জীবনে নারীর সানিদ্ধ্য যে আসেনি সেটা নয়, খরগপুরে থাকাকালীন অথবা জোকাতে পড়াকালীন অনেকে বান্ধবী ছিল, তবে কারুর সাথে ভালোবাসা করার ইচ্ছেটা জাগেনি। বন্ধু বান্ধবী হই হুল্লোড় এতেই সীমিত। ওর জীবনের পরিধি খুব সীমিত, বড়মা আর দিদিভাই, এই দুইজন ছাড়া ওর ছোট্ট গণ্ডীর ভেতরে আজ পর্যন্ত কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। তবে এই আঁধার রাতে, পেছনে বসা চাপা রঙের মেয়েটার ভাসা ভাসা নীলচে চোখের সরোবরে এই প্রথমবার ডুব দেওয়ার ইচ্ছেটা প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছে।
রাত দেড়টা নাগাদ, দেবীকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে গাড়ি আবার চলতে শুরু করে দেয়। অভি সামনে থেকে পেছনের সিটে এসে দিয়ার পাশে বসে। অন্ধকার গাড়ি, সিটের একপাশে অভি অন্য পাশে দিয়া, মাঝেখানের ব্যাবধান প্রচুর।
অভি গলা খ্যাঁকরে দিয়াকে জিজ্ঞেস করে, “ঠান্ডা লাগছে নাকি?”
দিয়া মাথা নাড়ায়, “না, ঠিক আছে।” হ্যাঁ, ঠান্ডা একটু লাগছে বটে তবে সেটা বাইরের ঠান্ডার জন্য নয়, ভীষণ ভাবেই ভারাক্রান্ত ওর বুকটা।
অভি ওর পাশে সরে আসতেই কেঁপে ওঠে দিয়ার কমনীয় দেহ পল্লব। নিজের গায়ের কোট খুলে দিয়ার কাঁধে জড়িয়ে দিয়ে নরম গলায় বলে, “কাঁপছ দেখি।”
কাঁধে হাত পড়তেই আলতো ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “তাতে তোমার কি যায় আসে।”
বলতে যাচ্ছিল, অনেক কিছুই যায় আসে, বুঝবে না। সত্যি কি বললে বুঝবে দিয়া? গম্ভীর গলায় আদেশের সুরে বলে, “বেশি তেজ না দেখিয়ে গায়ে জড়িয়ে নাও।”
আদেশ অমান্য করতে অক্ষম হয়ে পরে দিয়া। মনে হয় যেন এই ছেলেটা ওকে আদেশ দেওয়ার জন্যেই জন্মেছে। কোট খানি গায়ে জড়িয়ে পাশ ঘেঁসে জড়সড় হয়ে বসে। আধো আলো আঁধারে ছলছল চোখে অভির দিকে মুখ তুলে তাকায়। নরম পাতলা ঠোঁট জোড়া তিরতির করে কেঁপে ওঠে। অভির মুখ ওর মুখের খুব কাছে, ওর সারা মুখ মন্ডল ভেসে যায় অভির উষ্ণ শ্বাসের ঢেউয়ে।
অভি নরম গলায় বলে, “বারাসাত পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেক রাত হয়ে যাবে, এত রাতে বাড়ি না গেলেই কি নয়?”
দিয়া উত্তর দেয়, “মা চিন্তা করবে।”
অভি বলে, “ফোন করে দাও যে যাবে না।”
দিয়া ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, “কোথায় যাবো তাহলে?”
অভি উত্তর দেয়, “আমার বাড়িতে চল।”
দিয়া অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, “তোমার বাড়ির লোক কিছু বলবে না?”
অভি মাথা নাড়ায়, “না, সেটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। বারাসাত পৌঁছাতে পৌঁছাতে আড়াইটে তিনটে হতে পারে, অত রাতে তোমাকে ছাড়তে পারছি না।”
দিয়ার বুক চেঁচিয়ে ওঠে, কেন পার না, আমার জন্য এত চিন্তা কিসের? আমি’ত তোমার কেউ নয়। নিচু গলায় ছোট এক উত্তর দেয়, “আচ্ছা।”
অভির ভেতরটা ককিয়ে ওঠে, একদিকে যেমন জানে এই সম্পর্কের সুস্থ সুরাহা নেই ঠিক তেমনি এই সুন্দরী ললনার ছলছল চোখের ভাষা ওর পক্ষে সহ্য করা ভীষণ কঠিন। দাঁতে দাঁত পিষে উত্তাল চিন্তা ধারা দমিয়ে দিয়াকে নরম করেই প্রশ্ন করে, “খুব টায়ার্ড লাগছে নাকি?”
পোড়া কপাল, কি যে বলে না ছেলেটা, সত্যি। দিয়া মাথা নাড়িয়ে হেসে বলে, “না না, একদম নয়।” এই ভাবে পাশে বসে থাকলে সব ক্লান্তি ভুলে থাকতে পারে।
অভি কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থাকে আর ভাবে, কি করবে, ভীষণ ইচ্ছে করছে এই মেয়েটার প্রেমে পড়তে, কিন্তু সেই সাথে খুব বাধো বাধো ঠেকছে এই ভেবে যে হয়ত বড়মা মেনে নিতে পারবে না দিয়াকে, হয়ত ওদের এই প্রেম কোনদিন সাফল্যের সকাল দেখতে পাবে না। প্রেমের আগুনে ঝাঁপ দেওয়ার পর সেখান থেকে চুপিচুপি সরে এসে কারুর হৃদয় ভাঙ্গার মতন পাপ, জীবনের সব থেকে বড় পাপ। কিছু কথা ঠিক সময়ে উচিত জায়গায় না বলতে পারলে চিরজীবন সেই ভুলের মাশুল বয়ে বেড়াতে হয়। দিয়াকে পরিষ্কার করে না হলেও একটু আভাস দেওয়া উচিত যে দিয়া যেটা চাইছে সেটা দিতে অভি অক্ষম।
বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকার পর অভি দিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে, “দিয়া।”
দিয়া একটা ঘোরের মধ্যে ছিল, তাই আনমনা হয়েই উত্তর দেয়, “হুম”
অভি, “আমার জীবনের পরিধি খুব ছোট।”
দিয়া ঠিক বুঝতে পারে না কি কারনে হটাত করেই অভি এই কথা গুলো ওকে বলছে, তাই হাজার প্রশ্ন নিয়েই অভির দিকে তাকায়।
অভি বলে, “বড়মা আর দিদিভাই, এই আমার জীবনের সব।”
বুক কেঁপে ওঠে দিয়ার, তোমার এই বুকের কোন এক কোনায় কি সত্যি আমার জন্য কোন জায়গা হবে না। দিয়া অভির চোখের দিকে নিস্পলক নয়নে তাকিয়ে থাকে।
বুক ভরে একটা শ্বাস নিয়ে অভি বলে, “আমি কারুর চোখে জল দেখতে পারি না, দিয়া।”
না, ওর কপালে হয়ত প্রেম নেই। ভালোবাসা জিনিসটা অনেক দামী মনে হল। দিয়ার চোখ জোড়া ছলকে ওঠে, চোয়াল চেপে কোটের তলায় হাত মুঠো করে চোখের জল আয়ত্তে নিয়ে এসে ঠোঁটে এক হাসি মাখিয়ে নেয়, “আমি কাঁদছি না’ত।”
অভি একটু হেসে ওর দিকে হাত বাড়িয়ে বলে, “তাহলে ফ্রেন্ডস, বন্ধু হবে?”
দিয়া শক্ত করে অভির হাতটা ধরে হৃদয় উজাড় করে বলে, “হ্যাঁ, চিরজীবন।”
অভি একটু হেসে বলে, “তোমার চোখ জোড়া কিন্তু অন্য কথা বলছে।”
হায় রে, কি যে ভাষা বোঝে। বুকের মধ্যে এক সুর বেজে ওঠে, না বলে এসেছি, তা বলে ভেবোনা, না বলে বিদায় নেবো, চলে যাই যদি, যেন হই নদী, সাগরে হারিয়ে যাবো। রসিতকতা করে মিষ্টি হেসে প্রশ্ন করে, “আচ্ছা বাবা, কি বলছে আমার চোখ?”
এই চোখের ভাষা ওর অজানা নয়, প্রহর শেষে আলোয় রাঙ্গা, সেদিন চৈত্র মাস, তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ। অভি হেসে ফেলে, “তুমি ভীষণ দুষ্টু মেয়ে।”
দিয়াও খিলখিল করে হেসে ফেলে, “কি এমন দুষ্টুমি দেখলে বল’ত?”
এই মেয়টার দুষ্টুমি দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করছে, কিন্তু সেটা কি আর মুখ ফুটে বলতে পারে? মাথা চুলকে উত্তর দেয়, “না মানে তেমন কিছু নয়।”
ঠোঁটে একটা দুষ্টুমি ভরা হাসি মাখিয়ে বলে, “লেখাও কিন্তু কম দুষ্টু নয়, জানো।”
লেখার কথা এখানে কেন উঠছে, তাও উতসুক হয়েই প্রশ্ন করে, “কেমন দুষ্টু? ওকে ত খুব শান্ত স্বভাবের জানি।”
দিয়া খিলখিল করে হেসে ফেলে, “না না, সেই রকমের দুষ্টু নয় রে বাবা।” গলা নামিয়ে ফিসফিস করে বলে, “একটা গ্রে সাইড (ধুসর এলাকা) বলে সবার মধ্যে একটা কিছু থাকে, বুঝেছ।” বলেই চোখ টিপে হেসে ফেলে।
বর্ষার রাতে, খালি ছাদের ওপর, লেখার সুমিষ্ট অধর সুধার কথা মনে পড়তেই অভির গায়ের রক্ত চনমন করে ওঠে। সেদিন আর একটু হলেই পা পিছলে যেত অভির। অভি ভীষণ ভাবেই কৌতূহলী হয়ে ওঠে, “কি রকম গ্রে সাইড, একটু জানতে পারি কি?”
দিয়া মুচকি হেসে বলে, “সব কথা জানতে নেই, বুঝলেন মিস্টার চ্যাটারজি।”
অভিও হেসে ফেলে, “আচ্ছা বাবা, সেটা বুঝলাম যে সবার মধ্যে একটা গ্রে সাইড আছে। তারমানে তোমার মধ্যেও একটা গ্রে সাইড আছে।”
গাড়ির মধ্যে এতক্ষন যে ঠান্ডা ভাবটা ছিল সেটা কেটে গিয়ে একটা মনোরম উষ্ণ পরিবেশে পরিনত হয়ে যায়। অভির কথা শুনে দিয়ার কান গাল লজ্জায় লাল হয়ে যায়। অন্ধকার গাড়ির মধ্যেও এই গালের লালিমা অভির চোখে ধরা পরে যায়। দিয়া মুখ ঘুরিয়ে ফিক করে হেসে বলে, “তুমি বড্ড শয়তান ছেলে।”
দিয়ার কাঁধে নিজের কাঁধ দিয়ে আলতো ধাক্কা মেরে উত্তর দেয়, “একটা গ্রে সাইড কিন্তু আমারও আছে।” বলে কানের কাছে মুখ এনে বলে, “শুনবে নাকি?”
অভির গরম শ্বাস কানের লতির ওপর পড়তেই দিয়া চোখ বন্ধ করে নেয়, কি ভীষণ শয়তান। গলা থেকে এক চাপা মিষ্টি চিৎকার বেড়িয়ে আসে, “নাআআআ...” বলেই অভির বাজুতে একটা কিল মারে।
অভি বাম হাতটা দিয়ার পিঠের পেছন দিয়ে বাড়িয়ে দেয়। দিয়ার কোমল কমনীয় দেহটা সরে আসে অভির পাশে। কাঁধের ওপরে মাথা এলিয়ে দেয় দিয়া, কেমন যেন আপনা হতেই হয়ে যায় এটা। অভি গাল চেপে ধরে দিয়ার মাথার ওপরে, নিজেকে ধরে রাখা সত্যি অসম্ভব। সারাদিনের খাটাখাটুনির পর গায়ের এক ম্যাজম্যাজানির গন্ধ তার সাথে মিশে মিষ্টি কোন সুবাস, অভিকে মাতাল করে তোলে। বাকিটা রাস্তা দুইজনেই ভীষণ চুপচাপ, শুধু মাত্র এই ক্ষনিকের ছোঁয়ায় নিজেদের ভিজিয়ে নেয় দুই প্রান।
গাড়ি বাড়ির সামনে না দাঁড়ানো পর্যন্ত দুইজনেই চুপচাপ নিজেদের মধ্যেই বিলীন হয়েছিল। গাড়িটা দাঁড়াতেই অভির খেয়াল হয় যে বাড়ি এসে গেছে, এবং দিয়া প্রায় ওর বুকের ওপর সেঁধিয়ে।
দিয়া কাঁধে ধরে আলতো ঝাঁকিয়ে বলে, “বাড়ি পৌঁছে গেছি।”
আলিস্যি ভরা নয়ন মেলে অভির দিকে ম্লান সুরে বলে, “এত্ত তাড়াতাড়ি?”
অভি হেসে ফেলে, “হুম।” গাড়ি থেকে নামতে নামতে বলে, “কাল আবার তাড়াতাড়ি ওঠার আছে।”
দিয়া প্রশ্ন করে, “কেন?”
দিয়ার ব্যাগ হাতে বাড়ির মধ্যে ঢুকতে ঢুকতে উত্তর দেয়, “কাল দুপুরে বড়দির ফ্লাইট, মুম্বাই চলে যাবে।”
দিয়ার মুখটা একটু শুকনো হয়ে গেল, “বাড়িটা একদম খালি হয়ে যাবে, তাই না।”
ম্লান হেসে উত্তর দেয় অভি, “হুম।”
বাড়ির একটা চাবি ওর পকেটে ছিল, সেটা দিয়ে দরজা খুলতে যাবে, ঠিক সেই সময়ে দীপাদেবী দরজা খুলে বলেন, “এসে গেছিস?” পেছনে দিয়াকে দেখে একটু হাসেন, “ওহ, তুমিও এসেছ? এত রাতে না গিয়ে ভালোই করেছ।”
অভি ঘরে ঢুকে বড়মাকে প্রশ্ন করে, “তুমি এখন ঘুমাওনি?”
ছেলের দিকে তাকিয়ে হেসে বলেন, “তুই এখন আসিসনি তাই ঘুম আসেনি।”
অভি প্রশ্ন করে, “বড়দি ঘুমিয়ে পড়েছে?”
দীপাদেবী উত্তর দেন, “হ্যাঁ, কাল আবার সকাল সকাল ওঠার আছে।” দিয়ার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলেন, “যাও শুয়ে পর, অনেক ধকল গেল।” অভিকে বলে, “তুই একটা কম্বল নিয়ে সোফায় শুয়ে যাস তাহলে।”
অভি মাথা দোলায়, “হ্যাঁ রে বাবা, তুমি এখন শুতে যাও।”
অভি, দিয়াকে নিজের ঘরে নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে পরে। দিয়া চারপাশ তাকিয়ে দেখে, এই প্রথম বার এই ঘরে ঢুকেছে। দেয়াল ঘেঁসে বেশ বড়সড় বক্স খাট, একপাশে একটা টেবিলে ল্যাপটপ, বই ইত্যাদি রাখা। একদিকের দেয়াল জুড়ে বেশ বড় একটা আলমারি। টেবিলের তলায় চোখ যেতেই হাসি পায়, এস্ট্রে ভর্তি সিগারেট। কত সিগারেট খায় রে বাবা।
গায়ের থেকে কোট খুলে অভির হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “বাথরুমটা কোথায়?”
দিয়াকে বাথরুমটা দেখিয়ে বলে, “তুমি ফ্রেস হয়ে শুয়ে পর তাহলে।”
দিয়া মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করে, “তুমি সোফায় শোবে?”
অভি উত্তর দেয়, “হ্যাঁ, আর কোথায় শোব?”
দিয়া কয়েকপা ওর দিকে এগিয়ে এসে বলে, “আমার জন্য তোমার খুব কষ্ট হল, তাই না।”
আলমারি থেকে নিজের জন্য একটা বারমুডা আর গেঞ্জি বার করতে করতে হেসে বলে, “বহুত কষ্ট মাইরি, কি বলব।”
দিয়াও হেসে ফেলে অভির রসিকতা শুনে। স্তব্ধ ঘরের দেয়ালে সেই হাসির কল্লোল প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে অভির কানে। দিয়া হাসি থামিয়ে নিচু গলায় জিজ্ঞেস করে, “শাড়ি পরে শোয়াটা একটু কষ্টকর, তোমার দিদির কোন নাইটি নেই?”
অভি দিয়ার দিকে ঝুঁকে মস্করা করে বলে, “দরজা বন্ধ করে, কাপড় জামা খুলে লেপের তলায় ঢুকে পর, কেউ দেখতে আসবে না তোমার গ্রে সাইড।” বলেই হিহি করে হেসে ফেলে।
কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে অভির বাজুতে একটা ছোট কিল মেরে বলে, “ধ্যাত, শয়তান ছেলে, খুব মারব কিন্তু, যাও বেড়িয়ে যাও।”
অভি আলমারি দেখিয়ে বলে, “ওই যে আমার আলমারি, যা ইচ্ছে হয় পরে নিও।”
দিয়া আরো রেগে যায়, “ধ্যাত, আমি তোমার জামা কাপড় কি করে পরব?”
অভি মনে মনে বলে, একদিন তোমাকে আমার জামা পড়িয়েই ছাড়বো। রসিকতা করে উত্তর দেয়, “দেখিয়ে দেবো নাকি?” দিয়া ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, কি ভাবে? অভি বলে, “শাড়িটা খুলবে, তারপরে ব্লাউজটা খুলবে...”
দিয়া লজ্জায় লাল হয়ে যায় সেই সাথে একটু রেগে যায়, এই রাগ ঠিক ক্রোধ নয় এটা অনুরাগের প্রথম বসন্তরাগ। চাপা চেঁচিয়ে ওঠে অভির দিকে, “বের হও এখুনি।”
অভি হাসতে হাসতে কম্বল আর নিজের জামা কাপড় নিয়ে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। বসার ঘরে পা রাখতেই চমকে ওঠে। বড়মা সোফায় বসে ওর ঘরের খোলা দরজার দিকে একভাবে তাকিয়ে। বড়মাকে দেখেই ওর শিরদাঁড়া বেয়ে এক হিমশীতল ধারা বয়ে যায়।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#96
পর্ব চার। অনুভূতি (#6-#24)
অভি বেড়িয়ে যেতেই দরজা বন্ধ করে দিল দিয়া। টিউব লাইটা বড্ড বেশি জ্বলজ্বল করছে, টিউব বন্ধ করে ছোট নীলচে আলোটা জ্বালিয়ে দিল। ঘরের এক পাশের দেয়াল নীল রঙের সেই দেয়ালে প্রতিফলিত হয়ে ঘরটাকে আরো বেশি নীলচে করে দিয়েছে ছোট বাল্বটা। মৃদু নীলচে আলোয় একটা ঘোরের মধ্যে পরে যায় পাগল পারা হৃদয়। সত্যি ছেলেটা বড্ড শয়তান, বলে কি না দেখিয়ে দেবে, শাড়ি খুলবে তারপর ব্লাউজ। ছিঃ ইসসস, ভাবতে ভাবতে লজ্জা পেয়ে গেল, কানের লতি উত্তপ্ত হয়ে উঠল, বুকের রক্তে লাগে হিল্লোল। এই ঘরের দেয়াল দেখে, ওপরে টাঙ্গানো পাখাটাকে দেখে, এই টেবিল চেয়ার দেখে, সাদা বিছানা দেখে মনে হল এটা সম্পূর্ণ ওর নিজের জায়গা। খুব পরিচিত নিরাপদ এক স্থান, এক নিরাপত্তার আবেশ ওর বুকের মধ্যে ভর করে আসে। মনে হল যেন এই ঘরের মধ্যে ও যা খুশি তাই করতে পারে, কেউ কিছু বলবে না। জামা কাপড় না খুলেই দুম করে বিছানার ওপর গা ছেড়ে এলিয়ে পরে। ছেলেটা ভাঙবে কিন্তু কিছুতেই মচকাবে না, নিজের মনেই হেসে ফেলে। দিয়ার উচ্চতা পাঁচ চার, তাও অভির কাঁধের একটু নিচে আসে ওর মাথা, কত হবে ওর উচ্চতা? বন্ধুত্ত্ব, না ঘেঁচু কলা, কেউ কি কোন মেয়ে বন্ধুর কাঁধে ওইভাবে হাত রেখে, মাথার ওপর গাল চেপে বাড়িতে নিয়ে আসে নাকি? ইসসস... একটু হলেই নাকের সাথে নাক ঠেকে যেত। কি ভীষণ আগ্রহ নিয়ে ওর রসালো ঠোঁট জোড়ার দিকে তাকিয়েছিল। আর একটু হলেই চুমু খেয়ে নিত দিয়া। শয়তানটার একটা গ্রে সাইড আছে তাহলে। গাড়িতে যেভাবে অধিকার দেখাল আরেকটু হলেই ভাবাবেগে কেঁদে ফেলত।
বালিশে মুখ ডুবিয়ে ঘ্রান নেওয়ার বৃথা চেষ্টা করে। না বালিশে কোন গন্ধ নেই, তবে গাড়িতে আসার সময়ে ক্ষনিকের জন্য অভির বুকের কাছে চলে এসেছিল ওর মাথা, তখন ওর নাকে ভেসে এসেছিল পুরুষালী গন্ধ, সেই গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে গিয়েছিল দিয়া। নাসারন্ধ্রে, মাথার মধ্যে, দেহের শিরায় শিরায় এখন সেই গন্ধা বেঁচে আছে। সেই গন্ধটাই খুঁজে পেল অভির বালিশে। উম্মম, কেমন যেন পাগল পারা, জ্বালিয়ে দেবে ওর বুকটাকে। যদি জানত যে এইখানে রাতে থাকতে হবে তাহলে একটা নাইটি নিয়ে আসত, কে জানত যে এত রাত হবে? দেয়াল আলমারির দিকে তাকিয়ে দেখল, অভির সব জিনিসের ওপর যেন ওর জন্মগত অধিকার। দেয়াল আলমারির একটা পাল্লাতে আয়না, নিজের প্রতিফলন দেখে এক চটুল হাসি হাসে। কি রে, কেমন লাগছে তোর? দারুন তবে একটাই দুঃখ যার বিছানায় শুয়েছে সেই বিছানার মালিক বাইরে সোফায় শুয়ে।
বিছানা ছেড়ে উঠে পরল, সোজা হয়ে একটু আড়ামোড়া খেয়ে শরীরে ক্লেদ ভাঙ্গার বৃথা চেষ্টা করল। কাঁধ দুটো একটু ব্যাথা ব্যাথা করছে, কেউ টিপে দিলে বড় ভালো হত। খোঁপা থেকে হেয়ার ক্লিপ গুলো খুলতেই কালো ঘন মেঘের মতন ঢালাও চুল, কোমর পর্যন্ত নেমে আসে। চুল খুলে একটা হাত খোঁপা করে ঘাড়ের কাছে বেঁধে নিল। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ির আঁচল খুলে দিল, নাভির নিচে গোঁজা শাড়ির খুঁট টেনে খুলতেই শাড়িটা দেহ থেকে মাটিতে লুটিয়ে গেল। সায়ার দড়িতে টান মারতেই, শায়াটা কোমর ছাড়িয়ে পায়ের কাছে গুটিয়ে গেল। একটু পেছন ঘুরে নিজের সুগোল নিতম্বের দিকে চোখ ঘুরিয়ে দেখে নিল। কালো রঙের সুতির প্যান্টিটা ত্বকের সাথে মিশে গেছে। দুপুরে ওকে নিতে আসার সময়ে, পেছন পেছন হাঁটতে হাঁটতে কি দেখছিল ছেলেটা? চোখ ছোট ছোট করে, ঠোঁট কুঁচকে নিজের নিতম্ব জোড়ায় চোখ বুলিয়ে নেয়। যেভাবে পেছনে ঠেলে বেড়িয়ে আছে দুই সুগোল নিতম্ব ইসস, হাঁটতে চলতে ভীষণ ভাবেই দুলে দুলে ওঠে। কত লোক ওর এই নিতম্ব দুলুনি মাদক চাল দেখে পাগল পারা। ব্লাউজ খুলতেই হাঁসফাঁস করতে থাকা ব্রার মধ্যে বাঁধা দুটো সুগোল নিটোল স্তন ছলকে ওঠে। ব্লাউজটা একটান মেরে বুকের থেকে সরিয়ে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। পরনে শুধু মাত্র কালো ব্রা আর প্যান্টি। দিয়া, সত্যি তোর দেহের গড়ন যেকোনো মানুষের দেহে উত্তপ্ত লাভা বইয়ে দিতে পারে। সামনের দিকে একটু ঝুঁকে দুই স্তন দুই হাতের মুঠোতে ধরে আলতো চাপ দেয়। ইসস, সত্যি ভীষণ নরম ওর দেহ। পিঠের পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে ব্রার হুক খুলতেই দুই ভারী নিটোল স্তন জোড়া মুক্তি পেয়ে লাফিয়ে ওঠে। দিয়া নিজেকে দেখে মুচকি হেসে ফেলে। ঠান্ডায় স্তনের বোঁটা জোড়া একটু ফুলে উঠেছে। নীলচে আলোয় দিয়াকে এক নীল পরীর মতন দেখায়। দুই নিটোল ভারী স্তন হাতের মধ্যে নিয়ে আলতো চেপে ঘুড়িয়ে দেখে। সামনের দিকে উঁচিয়ে দুই গাড় বাদামি রঙের স্তনের বোঁটা, সেই বোঁটার চারপাশে বাদামি বৃন্ত। দেহের ত্বক বেশ মসৃণ, তাই স্তনের ত্বকের ওপর নীলচে আলো পিছল খেয়ে পরে। স্তনের আকার চেপে নেড়ে দেখার পরে হাত চলে আসে গোলগাল পেটের ওপরে, কোমরে হাত দিয়ে এদিক ওদিকে ঘুরে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করে।
আলমারি খুলে এক এক করে ভাঁজ করা জামা গুলো দেখে, না সব কটাই পরিষ্কার, দিয়া চায় এমন জামা অথবা টিশারট যেটা অভির গায়ে ছিল, যাতে অভির গায়ের গন্ধ থাকবে। একদম নিচের তাকে একটা কুঁচকানো হাল্কা হলদে রঙের টিশারট দেখতে পেল, এটা নিশ্চয় কাচা নয়। টিশারট হাতে নিয়ে নাকের কাছে ধরতেই বুঝতে পারল ঠিক যেটা চাইছিল সেটাই পেয়ে গেছে। চোখ বুজে, নাকে চেপে ভীষণ ভাবে অভির গায়ের গন্ধে নিজেকে মাতোয়ারা করে তোলে। টিশারট গায়ে চড়িয়ে নিল, গায়ে একটু ঢিলে হল, কিন্তু বুকের কাছে বেশ আঁটো। হেসে ফেলল দিয়া, তাহলে ওর স্তন জোড়া আর অভির ছাতির আয়তন মোটামুটি এক। ঝুলে টিশারটটা দিয়ার পাছার একটু নিচ পর্যন্ত, কোন রকমে সুগোল নিতম্ব জোড়া ঢেকেছে। মোবাইলে গান চালিয়ে দিল, মুস্কুরানে কি ওয়জহ তুম হো, গুনগুনানে কি ওয়জহ তুম হো, জিয়া জায়ে না জায়ে না জায়ে না, ওরে পিয়া রে... গানের তালে সারা অঙ্গে হিল্লোল তুলে একটু নেচে নিল।
বাথরুমে ঢুকে মুখে জল দিয়ে, সাবান দিয়ে ধিরে ধিরে সব মেকআপ তুলে ফেলল। দুই হাতে পায়ে সাবান দিয়ে পরিষ্কার হয়ে নিল। তোয়ালে দিয়ে গা হাত মুছতে মুছতে ঢুকে গেল ঘরে। চেয়ার নিয়ে বসে পরল আয়নার সামনে। রাতে হাতে পায়ে একটু ক্রিম না মাখলে হয় না, তাই মেকআপ বক্স খুলে ক্রিম বের করে হাতে পায়ে মাখা শুরু করে দিল। পায়ের গোড়ালি থেকে বেশ টেনেটেনে পুরুষ্টু ঊরু পর্যন্ত ধিরে ধিরে ক্রিম মাখিয়ে তৈলাক্ত করে দিল। চেয়ারে বসার ফলে টিশারট কোমর পর্যন্ত উঠে যায়, দুই পুরুষ্টু জঙ্ঘা মাঝে কালো প্যান্টি ইতরের মতন ওর যোনির সাথে লেপটে। ঊরু দুটো একটু মেলে ধরে ভেতরের দিকের ত্বকে ক্রিম মাখিয়ে নেয়। কুঁচকিতে ক্রিম মাখানোর সময়ে দুষ্টুমি করে আলতো আঙ্গুল বুলিয়ে নেয় নিজের যৌনাঙ্গে। ইসসস, শিরশির করে ওঠে সারা শরীর নিজের কোমল আঙ্গুলের ছোঁয়ায়। এই অঙ্গে এখন কোন পুরুষ ছুঁতে পারেনি তবে এক নারীর আঙ্গুল ওর এই অঙ্গ নিয়ে মাতালের মতন খেলা করে গেছে। আধা বোজা চোখে, ঠোঁট কুঁচকে আয়নার প্রতিফলনে একটা চুমু ছুঁড়ে দেয়। লেখা বাইরে ভীষণ শান্ত হলে কি হবে, ভেতরে ভেতরে ভীষণ দুষ্টু।
চেয়ার ছেড়ে উঠে হাতে ক্রিম মাখতে মাখতে বিছানার দিকে চলে যায়। কলেজের সেকেন্ড ইয়ার, বর্ষা শেষে আকাশে শরতের মেঘ। পুজোর আগে একদিন রাতে লেখার বাড়িতে গিয়েছিল দিয়া। রাতে খাওয়ার পর দুই বান্ধবী এক বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প শুরু করে দেয়। লেখা ভীষণ লাজুক, বেশ ফর্সা আর দেখতে সুন্দরী, কলেজের ছেলেরা ওর জন্য পাগল। দিয়ার মাদকতা ময় রূপেও ছেলেরা কম পাগল নয়। কথা হচ্ছিল, নিজেদের গোপনতম ইচ্ছে গুলো নিয়ে। বাইরে লেখা লাজুক হলেও, যৌনতা নিয়ে বেশ উৎসুক। ওর মোবাইলে বেশ কিছু পর্ণক্লিপ ছিল। দিয়ার মধ্যেও কম কামজ্বালা নেই। ভাবলেই গা শিরশির করে ওঠে ওর। দিয়ার স্বপ্ন, কোন এক অচেনা পুরুষ ওকে ধরে নিয়ে যাক কোন এক অজানা জায়গায় আর সেখানে সবার সামনে ভীষণ ভাবে ওর সাথে কামঘন সঙ্গমে মেতে উঠুক। সবাই বুঝতে পারবে যে ওদের মধ্যে যৌনতার তীব্র খেলা চলছে কিন্তু সেইভাবে কেউ দেখতে পাবে না ওদের রতিখেলা। দিয়ার খুব ইচ্ছে, কেউ ওকে কোলে বসিয়ে ওর টপের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে পেছন থেকে ওর সুগোল নিটোল স্তন জোড়া পিষে একাকার করে দিক। দিয়ার এই গোপন স্বপ্নের কথা শুনতেই লেখার সারা গায়ে কাম যাতনার কাঁটা দিয়ে ওঠে। লেখার গোপন কামুক স্বপ্ন হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে, দিনের বেলায় কেউ ওকে আদর করে রতি সঙ্গম করুক। বনের মধ্যে, অথবা সমুদ্র তীরে অথবা খোলা মাঠে যেখানে চারপাশে কেউ থাকবে না। লেখার খুব ইচ্ছে কেউ ওর স্তনের বোঁটা জোড়া কামড়ে ছিঁড়ে দিক। এই রাতে সেই রাতের কথা ভাবতে ভাবতে দিয়ার সর্বাঙ্গে কামঘাম দেখা দেয়। এই কথা গুলো শুনতে শুনতে লেখা প্রচন্ড কামোত্তেজিত হয়ে গিয়েছিল। দিয়ার গায়ের গেঞ্জির ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দুই স্তন টিপে ধরে লেখা। লেখার কোমল থাবায় দিয়ার স্তন বন্দি হতেই দিয়ার কামাগ্নি ভীষণ ভাবে জ্বলে ওঠে, যোনি রসে শিক্ত হয়ে যায় দুই পুরুষ্টু ঊরুর মাঝে লুকিয়ে থাকা কোমল যোনি। শুরু লেখা করেছিল, কিন্তু কামজ্বালায় দিয়া দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছিল সেই রাতে। লেখার কোমল শরীর নিচে ফেলে ভীষণ ভাবেই দুই নারী সমকামী কামের খেলায় মেতে উঠেছিল। লেখার ফর্সা কোমল দেহ কামড়ে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলেছিল। লেখাও কম যায়নি, ওর যোনির ভেতরে দুই আঙ্গুল ঢুকিয়ে আর কামঘন চুম্বনে দিয়ার গাল ঠোঁট লালায় ভাসিয়ে ভীষণ সমকামী কাম খেলায় মেতে উঠেছিল সেই রাতে।
উম্মম, মিষ্টি ছোট একটা মিহি শিতকার দিয়ে অভির বিছানায় গা এলিয়ে চিত হয়ে শুয়ে পরে। খুব ইচ্ছে করে, সেই অচেনা মানুষটা যেন বাইরের সোফায় শোয়া ওর ভালোবাসার পুরুষ অভিনন্দন হয়। বালিশে মাথা দিয়ে টানটান হয়ে শুয়ে পরে দিয়া। বাম হাত উঠে আসে স্তনের ওপর, বুক থেকে টিশারট সরিয়ে বাম স্তন মুঠো করে চেপে ধরে। মৃদু এক ইসস, শিতকার বেড়িয়ে আসে আধা খোলা ঠোঁটের ভেতর থেকে। নরম পেটের ওপর হাতের পাতা মেলে বুলিয়ে আদর করে নিজেকে। ধিরে ধিরে ডান হাত নিয়ে যায় নিজের কুঁচকির কাছে। প্যান্টির ওপর দিয়েই নরম ফোলা যোনির চারপাশে আঙ্গুল বুলিয়ে কামাগ্নি শতগুন বাড়িয়ে তোলে। উম্মম, মিহি ডাক দেয়, অভি তুমি এসো। সুতির প্যান্টি অল্প অল্প করে ভিজতে শুরু করে, দিয়ার আঙ্গুল সঞ্চালন বেড়ে ওঠে যোনিচেরার ওপরে। যোনির ওপর থেকে প্যান্টি সরিয়ে নগ্ন যোনি চেরায় আঙ্গুল বুলিয়ে নেয়। ইসসস, কি ভীষণ ভাবে ভিজে গেছে ওর যোনি গুহা। বাম হাতের থাবায় নিজের স্তন খামচে ধরে, দুই আঙ্গুলের মাঝে স্তনের বোঁটা চেপে ধরে ডলে দেয়। সেই সাথে, আঙ্গুল দিয়ে নিজের যোনি চেরা মেলে ধরে মধ্যমা দিয়ে ফাটল বরাবর আগুপিছু করতে শুরু করে দেয়। পায়ের পাতা জোড়া টানটান হয়ে বেঁকে যায় ধিরে ধিরে।
উফফফ, পারছে না দিয়ার শরীর এই ভীষণ স্বকাম খেলায়, ওর এইবার আসল পুরুষ চাই। মাথার মধ্যে শুধু মাত্র একটাই ছবি, কালো কুচকুচে বিশাল এক দৈত্য, দৈত্যের মুখখানি অভিনন্দনের, কিন্তু দেহ খানি কালো কষ্টি পাথরের গড়া। দুই পায়ের মাঝে উদ্ধত এক বিশাল ষাঁড়ের লিঙ্গ দিয়ে ওকে ঘায়েল করতে প্রস্তুত। মাথা চেপে ধরে বালিশে, উফফ পারছে না আর দিয়া, নাহহহ নাহহহ দিয়া... মিহি শিতকার ঠিকরে বেড়িয়ে আসে ওর আধাখোলা ঠোঁটের ভেতর থেকে। যোনির মধ্যে দুটো কোমল আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয় দিয়া, বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ভগাঙ্কুর ডলতে ডলতে তীব্র বেগে আঙ্গুল সঞ্চালনে মেতে ওঠে।
উফফ, মাগো, অভি একি করছ দুষ্টু ছেলে, প্লিস সবাই দেখতে পাবে যে। বন্ধ চোখে ভেসে ওঠে সেই গোপন স্বপ্ন। গঙ্গার পাড়ে মিলেনিয়াম পার্কের রেস্টুরেন্টে অভি ওকে কোলে বসিয়ে কোমর চেপে ধরে প্যান্ট খুলে কঠিন লিঙ্গ ওর কোমল যোনির শেষ প্রান্তে ঠেলে ঢুকিয়ে দিয়েছে। অভির কোলে বসে যতবার ছটফট করে দিয়া, তত বেশি করে অভির বিশাল পুরুষাঙ্গ ওর দেহের গোপন স্থান গুলোকে খুঁজে নেয়। এক কামুক কল্পনায় মেতে উঠে দিয়া একবার আঙ্গুল দিয়ে ভগাঙ্কুর ডলে আর মাঝে মাঝে ছোট ছোট চাটি মারে নিজের যোনির ওপরের দিকে। পেছন থেকে দিয়ার দুই ভারী নিটোল স্তন জোড়া অভির কামুক থাবার মধ্যে বন্দি, ভীষণ ভাবেই চটকে পিষে একাকার করে দেয় কোমল স্তন জোড়া। বারেবারে স্তনের বোঁটা দুই আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে টেনে ছিঁড়ে দেয়। লেখার মোবাইলে দেখা মেয়েদের দুষ্টুমি করার ভিডিওর মতন নিজের দেহের কামাগ্নি জ্বালাতে সচেষ্ট হয়। উফফ, দিয়ার শরীরে এই ঠান্ডায় ও ঘাম দিয়ে আসে, নাআআহহহহ, ভীষণ জ্বালা এই কামজ্বালা। এক অদ্ভুত শিরশিরানি শুরু হয় ওর মেরুদন্ডে, ধিরে ধিরে সেই তরল আগুন বয়ে যায় তলেপেটের নিচে। ভীষণ ভাবে কাঁপতে শুরু করে পুরুষ্টু দুই জঙ্ঘা। কামনার শিখরে পৌঁছে যায় দিয়ার দেহ, তলপেট ঢুকে যায়, শরীর বেঁকে যায় ধনুকের মতন। সারা দেহ কাঠ হয়ে আসে দিয়ার, যেন অভি ওকে চেপে ধরেছে দুই বলশালী হাত দিয়ে। ইসস, উহহহহ আহহহ করতে করতে দিয়া এক সময়ে যোনিরস ঝরিয়ে খান্ত হয়ে এলিয়ে পরে বিছানায়। দুই আঙ্গুল ভিজে জবজব করে। ওর যোনি কেশ ভিজে যায়। ছিঃ কত রস ওর যোনি বেয়ে গরিয়ে পড়েছে।
এতদিন শুধু মাত্র কোন অজানা মাথা বিহীন পুরুষের কথা চিন্তা করেই মাঝে মাঝে স্বমেহনে রতি হত। কিন্তু সেদিন কামনার পুরুষকে বুকে এঁকে স্বমেহন করে বুঝতে পারে যে এত যোনি রস এর আগে কোনদিন ঝরায়নি। হ্যাঁ, যেদিন প্রথম লেখার সাথে সমকামী খেলায় মেতেছিল সেদিন ভীষণ ভাবেই কামোত্তেজিত হয়ে উঠেছিল দুই বান্ধবী। যোনি উপচে পাছার চেরা বেয়ে কিছুটা যোনিরস অভির লেপের সাথে লেগে যায়। সেটা বুঝতে পেরে ভীষণ ভাবেই লজ্জিত হয়ে পরে দিয়া। কিন্তু কিছুই করার নেই, এই রাতে যদি লেপ ভেজায় তাহলে শুকাবে না। প্যান্টিটাও ভীষণ ভাবেই ভিজে গেছে। পাশ থেকে একটা বালিশ নিয়ে পায়ের মাঝে চেপে, স্বপ্নের সেই মানুষের সাথে কল্পনায় সঙ্গম সেরে রতিসুখের আনন্দ নেয়।
আগামী কাল সকাল হলেই চোখ খুলেই সব থেকে আগে অভির সামনে যাবে আর বলে দেবে, আই লাভ ইউ। তারপর যা হয় হোক, যদি না বলে তাহলে বন্ধুত্ত্ব পর্যন্ত রাখবে না, কারন সঠিক ভাবে অভির সাথে বন্ধুত্ত্ব করতে পারবে না দিয়া, দূরে চলে যাবে, লেখার থেকেও দূরে চলে যাবে। আর যদি, হ্যাঁ বলে? ইসস, সত্যি পাগল হয়ে গেছে দিয়া। বিছানা ছেড়ে উঠে পরল, খুব ইচ্ছে করছে একবার দেখতে, কি করছে ছেলেটা, শুয়ে পরল নাকি? ধ্যাত দিয়া, এত উতলা হওয়া একদম ভালো নয় কিন্তু। তাও কি বুকের রক্ত মানে?
পা টিপে টিপে আলতো করে দরজা খুলে বসার ঘরে উঁকি মারে। বসার ঘরের দৃশ্য দেখে দিয়া থমকে যায়, নিমেষের মধ্যে ওর স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায় নিমেষের মধ্যে, যেন সারা দেহ থেকে কেউ সব রক্ত চুষে নিয়েছে। সোফায় অভির মা বসে আর তাঁর সামনে অপরাধির মাথা নিচু করে হাঁটু গেড়ে বসে অভি। একি হল, দিয়ার মনের ভাব কি অভির মায়ের চোখে ধরা পরে গেছে? যেভাবে অভির কোট গায়ে চাপিয়ে হাসতে হাসতে অভির পেছন পেছন বাড়িতে ঢুকেছে, যে কোন মা এই অবস্থা দেখে অতি সহজে আন্দাজ করে নেবে যে কি হয়েছে।
কান পেতে শুনতে চেষ্টা করল অভির মা কি বলছেন। অস্পষ্ট একটা মাত্র বাক্য কানে এলো, “আমি কিছু বলিনা বলে এই নয় যে আমি অন্ধ অথবা কানে শুনতে পাই না। শয়তান ছেলে, এইখানে বসে তোর ঘরের সব কিছু শোনা যায়, বুঝেছিস। খুব বাঁদর হয়ে গেছিস, তাই না?”
অভির মায়ের গলায় ওই কথা শুনে, এতক্ষনের কামজ্বালার যে আগুন দিয়ার দেহে ধিকধিক করে জ্বলছিল, সেটা এক নিমেষে উড়ে গেল। ঠিক যেভাবে চুপিচুপি দরজা খুলেছিল, ঠিক সেই ভাবে দরজা বন্ধ করে মাথার চুল আঁকড়ে ধরে বিছানায় নিজেকে ছুঁড়ে মারে। একি করলি দিয়া, তোর ভুলের মাশুল অন্য একজনকে দিলি। কি দরকার ছিল এই শান্ত শিষ্ট ছেলেটার পেছনে এই ভাবে দৌড়ে যাওয়ার। লেখা বলেই দিয়েছিল যে অভি অন্য ধরনের মানুষ। হয়ত এটাই বুঝাতে চেয়েছিল যে ওর পেছনে ছুটতে যাওয়া বৃথা। অভিও কথায় কথায় বুঝাতে চেষ্টা করেছিল যে ওর জীবন শুধু মাত্র ওর মা আর দিদিভাইকে নিয়েই। ওদের প্রেমের তরী এখন ঠিক ভাবে পাল তোলেনি তার আগেই এই বিশাল ঝড়? কি ভাবে সকালে অভিকে মুখ দেখাবে দিয়া। জানত শীতকাল, অতগুলো ব্যাগ আনতে পারল, নিজের শাড়ি আনতে পারল আর একটা শাল আনতে পারল না? কেন অভির কোট গায়ে জড়াতে গেল? বারাসাতে চলে গেলেই হত, একটু জোর দিয়ে বললেই নিশ্চয় অভি ওকে বাড়িতে ছেড়ে আসত। না, দিয়া, একি করল, শেষ পর্যন্ত শুকনো চাতালে আছাড় খেল। ডুকরে কেঁদে ওঠে দিয়ার প্রান, এত ভালো ছেলেটা শেষ পর্যন্ত কিনা ওর জন্য মায়ের সামনে মাথা নিচু করে বসে? মাথার চুল আঁকড়ে ধরে বারেবারে বালিশে মাথা ঠোকে। এর প্রায়শ্চিত্ত কি করে করবে দিয়া। এর কিছুই লেখাকে জানানো যাবে না। অভির জীবন থেকে চিরদিনের জন্য সরে যাবে। এতদিনের ভালো বান্ধবীর লেখার কাছ থেকেও দূরে সরে যাবে। বালিশ মুখে চেপে অনেকক্ষণ কাঁদে, চোখে আর ঘুম আসে না। ওর সাধের স্বপ্ন সাজানোর আগেই ভেঙ্গে চুরমার, সেই স্বপ্নে অভিনন্দন আর নেই, শুধু মাত্র ধুধু বালুচরে একা যোগিনীর মতন উন্মাদ দময়ন্তী ঘুরে বেড়ায়।
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
#97
দারুন
Like Reply
#98
(11-09-2020, 12:55 AM)Mr Fantastic Wrote: গ্রূপে তো আমিও আছি, কিন্তু গল্প পোষ্ট করা হয়েছে এমন কিছু তো খুঁজে পাইনি দাদা !
Like Reply
#99
(11-09-2020, 12:55 AM)Mr Fantastic Wrote: গ্রূপে তো আমিও আছি, কিন্তু গল্প পোষ্ট করা হয়েছে এমন কিছু তো খুঁজে পাইনি দাদা !


গ্রুপ এ পিনুরাম এর পোস্ট গুলো  খুলে দেখুন , আছে
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
পর্ব চার। অনুভূতি (#7-#25)
অভি হাসতে হাসতে কম্বল আর নিজের জামা কাপড় নিয়ে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। বসার ঘরে পা রাখতেই চমকে ওঠে। বড়মা সোফায় বসে ওর ঘরের খোলা দরজার দিকে একভাবে তাকিয়ে। বড়মাকে দেখেই ওর শিরদাঁড়া বেয়ে এক হিমশীতল ধারা বয়ে যায়। বড়মা কতক্ষন বসে? ওদের সব কথা কি শুনে ফেলেছে? এই যে শাড়ি ব্লাউজ খোলার কথা, সেটাও? ধরণী দ্বিধা হও, আমি তোমার ভেতরে ডুবে যেতে চাই। কেন মাটি ফেটে গেল না, কেন অভি তলিয়ে গেল না। গলা শুকিয়ে আসে, পা দুটো কেউ যেন মাটিতে পেরেক দিয়ে ঠুকে দিয়েছে। বড়মায়ের দৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য, মাথা নিচু করে বড় সোফার ওপরে কম্বল রেখে অন্যপাশের বাথরুমে নিজের জামা কাপড় নিয়ে ঢুকে পরে। বড়মায়ের মুখের দিকে তাকানোর সাহস ছিল না একদম তাই ঠিক বুঝতে পারেনা বড়মায়ের মনের অভিব্যাক্তি। বুকের মাঝে প্রচন্ড জোরে ধুকপুকানি শুরু হয়ে যায়। বাথরুমের দরজা খুলে আবার সেই বসার ঘরেই ওকে যেতে হবে। বাথরুমের দেয়ালে বারবার মাথা পেটায় অভি, কি দরকার ছিল দিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসার, রাত হোক আর যাই হোক, বারাসাতে নামিয়ে দিতে পারত, নিজে গিয়ে পৌঁছে দিতে পারত ওর বাড়িতে। যদিও বা বাড়িতে নিয়ে এসেছে, কি দরকার ছিল, দিয়ার সাথে এতটা হাসি ঠাট্টা করার। ঘর দেখিয়ে, শুতে বলে দিয়ে চলে আসলেই হত। এই নিস্তব্ধ শীতের রাতে এইভাবে হেসে কথা বললে যে কেউ শুনতে পাবে, তার ওপরে যদি কেউ বসার ঘরেই বসে থাকে তাহলে তার কানে সব কথাই আসবে। ওর ঘরের দরজা খোলাই ছিল, বন্ধ হলে না হয় বাইরে কোন আওয়াজ আসত না। সাহস জুগাতে পারল না তাও ভয়ে ভয়ে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এলো।
দীপাদেবী ছেলেকে মাথা নিচু করে বাথরুম থেকে বের হতে দেখে গম্ভীর কণ্ঠে বলেন, “এদিকে আয়।”
সুবোধ বালকের মতন, গুটি পায়ে দুরের একটা চেয়ারে বসতে যায়। দীপাদেবী নিজের পাশের ছোট সোফায় বসতে বলে প্রশ্ন করে, “কি ব্যাপার? হ্যাঁ?”
মাথা নিচু করে হাতের নখ খুটতে খুটতে নিচু গলায় উত্তর দেয়, “না, কিছু না।”
কিছুক্ষন ছেলের নত মাথার দিকে তাকিয়ে বলেন, “যা করছিস একটু ভেবে চিন্তে করিস। বড় হয়েছিস, এমন কিছু করিস না যাতে তোর পাপার মান সন্মানে আঘাত করে।”
অপরাধ বোধে গলা শুকিয়ে আসে অভির। ঠিক এই কারনেই এখন পর্যন্ত দিয়ার দিকে পা বাড়াতে পারেনি। বড়মা ওর সর্বস্ব। বড়মায়ের সামনে মাথা নিচু করে বলে, “না, মানে তুমি যা ভাবছ তার কিছুই হয়নি।”
অভির মুখ আঁজলা করে নিজের দিকে তুলে ধরে দেখেন যে ছেলের চোখে জল। ছেলের চোখের জল মুছিয়ে বলতে শুরু করেন, “তুই এইটুকুনি ছিলিস যখন তোকে হসপিটাল থেকে এনেছিলাম। তোর জন্মের সময়ে রেণুর শরীর ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি হল, তোকে তুলোর মধ্যে করে বাড়িতে আনলাম। রেনু আর ফেরেনি।” বলেই বড়মা কেঁদে ফেললেন।
বড়মায়ের হাত দুটো ধরে অভি কেঁদে ফেলে, “মা গো, আমি এইসব কিছু জানতে চাই না।”
পুত্রের কণ্ঠে “মা” ডাক যেকোনো নারীর হৃদয়, মায়া মমতায় গলিয়ে দেয়। দীপাদেবী চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, “একদিকে মনামি, একদিকে তুই। একবার এই বাড়ি, একবার সল্টলেকের বাড়িতে মনিকে নিয়ে দৌড়াই। সেই এইটুকু বয়স থেকে তোকে বুকে আগলে মানুষ করে গেছি। তুই হাঁ করলে হাঁচি দিবি না হ্যাঁ বলবি, সব বুঝতে পারি।”
ডুকরে কেঁদে ওঠে অভি, “মাগো, তুমি যা বলবে যেমন বলবে তাই করব।”
ছেলের কান্না দেখে চোখের জল মুছে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, “মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে, বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে, সেটাই সত্য। তুইই আমার সবে ধন নীলমণি, তুই হোঁচট খেয়ে পরলেও আমার বড্ড লাগে রে বাবা। এমন কিছু করিস নে যাতে কারুর সামনে মুখ দেখাতে লজ্জা করে।”
বড়মায়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে হাত ধরে বলে, “না মা, তুমি ভুল ভাবছ। আমি সত্যি বলছি আমি এমন কিছুই করিনি যাতে তোমার বা পাপার মাথা নিচু হয়ে যায়।”
বেশ কিছুক্ষন ছেলের ভিজে চোখের দিকে তাকিয়ে রইলেন দীপাদেবী। এই টুকু বিশ্বাস এই ছেলের ওপরে তাঁর আছে। যে ছেলে, এত পড়াশুনা করেও শুধু মাত্র তাঁদের জন্য মধ্যমগ্রামে থেকে যেতে পারে, সেই ছেলে অন্তত তাঁর বিস্বাসে আঘাত হেনে কিছু করবে না। মাতৃহারা ছেলেটাকে বুকে করে মানুষ করেছে, ছেলের হাসিটাই তাঁর কাছে সব। তবুও কোথাও যেন একটা কালো মেঘের উঁকিঝুঁকি, একটা কিন্তু ভাব চলে আসে মনের মধ্যে। ভবিষ্যতে কি হবে জানেন না, কিন্তু লড়াই করতে দোষ কোথায়? মুখ বুজে সারা জীবন কত ধরনের লড়াই করেই কাটিয়ে গেছেন। একবার না হয় মুখ খুলেই চেষ্টা করবেন ছেলেকে আগলে রাখতে।
দীপাদেবী ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন, “দময়ন্তীকে কি তোর সত্যি ভালো লাগে?”
অভি কি উত্তর দেবে ভেবে পায়না, দময়ন্তীকে ভালো লাগে ভীষণ ভাবেই ভালো লাগে কিন্তু সরাসরি কি এইভাবে বলা যায়। মায়ের সামনে মাথা নিচু করে আলতো মাথা দোলায়।
দীপাদেবী আবার প্রশ্ন করেন অভিকে, “তুই কি কিছু বলেছিস ওকে এই ব্যাপারে?”
অভি মাথা নাড়ায়, “না” কি বলবে, কি করে বলবে। বড়মাকে দুঃখ দিয়ে জীবনে কিছুই করতে চায় না।
নিজের চোখ মুছে, ছেলের চোখ মুছে বলেন, “তুই যে কিছু করিসনি অথবা বলিসনি সেটাও আমি বুঝতে পেরে গেছিলাম। আমার সেই বিশ্বাস আমার ছেলের ওপর আছে।” বুক ভরে শ্বাস নিয়ে, ছেলের মাথাটা কোলের কাছে টেনে স্মিত হেসে বলেন, “দময়ন্তী বেশ ভালো দেখতে, কর্মঠ মেয়ে, খুব ভালো মেয়ে তাতে সন্দেহ নেই। কার সাথে কি ভাবে মিশতে হয়, কাকে সন্মান দিয়ে কথা বলতে হয়, সব কিছুই জানে। কিন্তু তোর পাপাকে’ত চিনিস, একটু রাগী, একটু একগুঁয়ে, সেখানেই ভয়, সেটা নিয়েই একটু চিন্তা।”
একটু লজিত হয়ে পরে অভি, বড়মায়ের কোলের মধ্যে মুখ গুঁজে বলে, “মাগো, তুমি পাশে থাকলেই হবে আমার আর কিছু চাইনে।”
চোখের কোল মুছে, আদর করে ছেলের কান ধরে টেনে উঠিয়ে বলেন, “কেন কিছু চাই না? এই একটু আগেই তো বললি যে দময়ন্তীকে তোর ভালো লাগে।” অভি ভীষণ লজ্জায় পরে যায়। দীপাদেবী একটু হেসে বলেন, “আগে একটা ভালো চাকরিতে ঢোক, তারপর ঠিক সময় মতন আমি তোর পাপাকে বুঝিয়ে বলব।”
বড়মায়ের সম্মতি পেয়ে খুশিতে ধড়ে প্রান ফিরে পায় অভি। বড়মায়ের হাত দুটো ধরে কোলের মধ্যে মাথা গুঁজে বলে, “তুমি পৃথিবীর সব থেকে ভালো মা।”
দীপাদেবী হেসে ফেলেন এই কথা শুনে, “সব ছেলের কাছে তাদের মা অনন্যা হয় রে বাবা।”
অভি মাথা নাড়ায়, “বাকিদের কথা কি করে জানবো, আমার এই একটাই মা।”
ছেলের এই কথা শুনে স্নেহ ভরা এক কান্না গলার কাছে দলা পাকিয়ে উঠে আসে, “আমার দুষ্টু ছেলে।” একটু নাক টেনে কান্না সামলে নিজেকে সামলে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে সবাধান করে বলেন, “মডার্ন হওয়া ভালো, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা ভালো তবে এমন কিছু করা একদম ভালো নয় যাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ছোট বলে মনে হয়, সেটা মনে রাখিস।”
এই কথার তাৎপর্য ঠিক বুঝতে পারল না অভি, তাই অবাক চোখে হাজার প্রশ্ন নিয়ে বড়মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। বড়মা ওর কান টেনে একটু মিঠে একটু গম্ভীর কণ্ঠে বলেন, “আমি কিছু বলিনা বলে এই নয় যে আমি অন্ধ অথবা কানে শুনতে পাই না। শয়তান ছেলে, এইখানে বসে তোর ঘরের সব কিছু শোনা যায়, বুঝেছিস। খুব বাঁদর হয়ে গেছিস, তাই না?”
বড়মায়ের কথা শুনে লজ্জায় কোথাও লুকিয়ে যেতে পারলে বাঁচে। মুখ লুকাতে কোলের মধ্যে মাথা গুঁজে মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, একদম না।
ছেলের পিঠের ওপর ছোট কিল মেরে বলেন, “হ্যাঁ, অনেক হয়েছে, আর লজ্জা পেতে হবে না, আমার দুষ্টু বাঁদর একটা।” অভি জল ভরা চোখে একটু হাসি নিয়ে বড়মার দিকে তাকায়। দীপাদেবী ওকে বলেন, “তোর দিদিকে বেশ সুন্দর সাজিয়েছে, কি বল।” অভিও একটা লাজুক হাসি হেসে মাথা দোলায়, হ্যাঁ। দীপাদেবী ওকে জিজ্ঞেস করেন, “লেখার সাথে এই ব্যাপারে কিছু কথা বলেছিস কি?”
অভি প্রশ্ন করে, “কি ব্যাপারে?”
দীপাদেবী উত্তর দেন, “দময়ন্তী তিনদিন এসে, তোর দিদিকে এত সুন্দর করে সাজিয়ে গেল, তার একটা পারিশ্রমিক নেই?”
অভি মাথা দোলায়, “হ্যাঁ, কিন্তু আমি ত ভেবেছিলাম যে এই ব্যাপারটা লেখা দেখবে।”
ওর হাতে একটা সাদা খাম ধরিয়ে বলেন, “লেখা কি করবে না করবে সেটা জানি না। তবে মনামি এটা দিয়েছে। এটা কাল সকালে ওকে দিয়ে দিস।”
অভি বড়মায়ের হাত দুটো ধরে, আদর করে নাকমুখ ঘসে বলে, “কাল সকালে তুমি না হয় নিজে হাতে দিয়ে দিও।”
দীপাদেবী ছেলের চুলে বিলি কেটে মিষ্টি হেসে বলেন, “আচ্ছা বাবা তাই হবে, আর কাল সকালে তোর পাপার সামনে একটু সাবধানে চলাফেরা করিস।”
অভি মাথা নাড়িয়ে হেসে ফেলে, “আমি পাগল নাকি? অতটা বোকা আমি নই।”
অভির কান ভীষণ জোরে মুলে দিয়ে হেসে বলেন, “আমার ছেলে কি আর বোকা হতে পারে নাকি? শুধু একটু বেশি আবেগপ্রবণ।” একটু থেমে প্রশ্ন করেন, “আচ্ছা আমাকে একটা সত্যি কথা বলবি?”
অভি মাথা দোলায়, “কি কথা?”
দীপাদেবী ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন, “আচ্ছা, তুই আশীর্বাদের আগের দিন শিতাভ্রকে কি বলেছিলি বল’ত?”
এই বাড়ি ছেড়ে, ওকে ছেড়ে ওর দিদিভাই চিরদিনের জন্য চলে যাবে সেই আবেগের বশে সেদিন একটু বেশিই বলে ফেলেছিল। অভি একটু লজ্জা পেয়ে বলে, “ছাড়ো না ওইসব কথা।”
দীপাদেবী অভিকে বুঝিয়ে বলেন, “দ্যাখ বাবা, মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে তারা শ্বশুর বাড়ির লোক হয়ে যায়। আমি জানি না তুই সেদিন কি বলেছিলিস, কিন্তু যেভাবে মনামি তোকে থাপ্পড় মারল তাতেই আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে তুই একটা কান্ড ঘটিয়ে এসেছিস।” অভি বড়মায়ের কথা শুনে মাথা নিচু করে নেয়। দীপাদেবী আরো বলেন, “বিয়ের পর মেয়েদের মুখে যদি সব সময়ে বাপের বাড়ির কথা ওঠে তাহলে সেটা বৈবাহিক জীবনে খুব খারাপ ভাবেই প্রভাব পরে। প্রথম প্রথম হয়ত মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে স্বামীরা কিন্তু পরবর্তী কালে যদি এই জিনিস বারবার ঘটে তাহলে বৈবাহিক জীবনে চিড় ধরে যায়।”
অভি এই কথার তাৎপর্য ঠিক বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করে, “তুমি সোজা সুজি বল কি বলতে চাইছ?”
দীপাদেবী বলেন, “মনামি এর পরের মঙ্গলবার দিল্লী চলে যাবে, এর মাঝে তুই কিন্তু একদিনের জন্যেও ওই বাড়িতে যাবি না। যদি মনামি ফোন করে ডাকে তাহলে কোন কাজের ছুতো দিয়ে দিবি। মঙ্গলবারের দিনে এয়ারপোরটেই যেন দেখা হয়।”
বেদনা ঢাকতে চোয়াল শক্ত করে ঢোক গিলে নিল ব্যাথাটা। দিদিভাইয়ের ডাক আজ পর্যন্ত এইভাবে কোনদিন উপেক্ষা করেনি, যেখানেই থেকেছে, যখন ডেকেছে তখন সব কাজ ফেলে দৌড়ে এসেছে। এক অজানা কোন মানুষ আজকে ওর দিদিভাইকে কত দূরে করে দিল। বড় করুন সুর বেজে ওঠে ওর বুকের মধ্যে তাও বড়মায়ের সাবধান বানীর তাৎপর্য বুঝেই কাজ করবে।
মাথা দোলায় অভি, “পারতপক্ষে তুমি বলতে চাইছ যে এই কয়দিন আমি দিদিভাইকে এড়িয়ে চলব?”
দীপাদেবী করুন কণ্ঠে বলেন, “তুই বাবা, বুঝিস না কেন বল’ত?”
বড়মায়ের হাত ধরে বলে, “আমার ত শুধু দিদিভাই, তোমার ব্যাথা করবে না?”
চোখের কোল মুছে দীপাদেবী বলেন, “এটাই যে ভাগ্য রে, এটাই মেয়েদের কপালে লিখন। এক সুস্থ সংসার করতে হলে, অনেক কিছুই ছাড়তে হয়, অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। এই নিয়ে মনামির জন্য বড্ড চিন্তা হয় জানিস। তুই যেমন একটু ইমোশানাল আবেগপ্রবন, তেমনি মনামি প্রচন্ড ভাবুক আর নিজের ছোট গন্ডি নিয়েই থাকে।”
অভি বড়মাকে স্বান্তনা দিয়ে বলে, “তুমি এত চিন্তা কর না, দিদিভাই ঠিক হয়ে যাবে, না হলে শিতাভ্রদা ঠিক করে নেবে।”
দীপাদেবী একটা চিন্তামগ্ন হাসি দিয়ে বলেন, “ভালো হলেই ভালো রে। এমএসসি করার পর চাকরি করলে ভালো করত, একটু বাইরের জীবন সম্পর্কে জ্ঞান বুদ্ধি হত। তা না, মায়ের হাতের ভাত খাওয়া চাই, ভাইয়ের কাছে থাকা চাই।” বলেই একটু হেসে ফেলেন, “তোদের দুটো কে সামলাতে সামলাতে, আমার বড়টা যে কখন নিজে নিজেই বড় হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না রে।” আঁচল দিয়ে চোখের কোনা মুছে স্মিত হেসে বলেন, “যেদিন ওর জন্য বিয়ের সম্বন্ধ এলো সেদিন বুঝতে পারলাম যে আমার বড় মেয়ে বড় হয়ে গেছে।”
বড়মায়ের শেষ বাক্যটা অভির বুকে শক্তিশেলের মতন বাঁধে। ছোটবেলা থেকেই বড়দির মধ্যে একটা বড় বড় ভাব ছিল, আজ বুঝতে পারল যে কেন বড়দির মধ্যে সেই বড় ভাবটা এসেছিল। বড়দির এই ত্যাগ কথা জানতে পেরে ভীষণ দুঃখ পেল অভি। ছোট বেলার দিন আর ফিরে আসবে না, খুব ইচ্ছে করছে ছোট হয়ে একবার বড়দির কাছে আবার যেতে, আবার “গুষ্টির পিন্ডি” খেতে, এবারে রাগ করবে না, এবারে শান্ত ছেলে, বাধ্য ছেলে হয়েই বড়দির হাত থেকে খাবে।
বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকার পর, দীপাদেবী অভির মাথায় গালে হাত বুলিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, “নে, অনেক রাত হয়েছে এবারে ঘুমাতে যা। এই আবার ভোরবেলা উঠতে হবে, সকাল থেকেই দৌড়াদৌড়ি আছে কিন্তু। মহেশ কটায় গাড়ি নিয়ে আসবে?”
অভি ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উত্তর দিল, “মহেশদা আট’টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে চলে আসবে।”
বড়মা চলে যাওয়ার পর, বিছানা ছেড়ে উঠে পরল। চারটে বাজে, এখন ঘুমিয়ে আর কি হবে, আর এক ঘন্টা পরেই পাপা উঠে পড়বেন। সকাল সকাল ঋগবেদের মন্ত্র উচ্চারণ করতে শুরু করবেন, “ওম মধুবাতাঃ ঋতায়তে মধুঃ ক্সরন্তি সিন্ধবহঃ, মাধ্বীর নহঃ সন্তোষদিহঃ মধুনাক্তম উতোঃ শশী...” অনেক ছোটবেলায় পাপা বেশ কয়েক বার এই মন্ত্রের অর্থ বুঝিয়েছিলেন। ছোট বেলায় পাপার চাপে পড়ে সকাল সকাল উঠে মন্ত্র জপতে হত ওকে। দিদিভাই খুব হাসাহাসি করত, বলত অভি নাকি বড় হয়ে পইতে গলায় ঝুলিয়ে পাড়ার কালী মন্দিরের পূজারী হবে। একটু বড় হওয়ার পর বড়মা বলেন যে ছেলেকে অত মন্ত্র তন্ত্র শিখাতে হবে না, সকালে উঠে একটু পড়াশুনা করুক। তারপর আর কোনদিন অভিকে মন্ত্রপাঠ করতে হয়নি। পাপা অনেকবার ওকে বলেছে, ঋগবেদ পড়তে, উপনিষদ পড়তে। অনেকবার বুঝিয়েছেন যে বেদ উপনিষদ গুলোকে ধর্ম গ্রন্থ হিসাবে না পড়ে জীবন দর্শন হিসাবে পড়তে। অভি কোন না কোন ছুতো দিয়ে প্রত্যেক বার পালিয়ে যেত।
প্রেম করার সব থেকে বড় সম্মতি বড় মায়ের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ভেবেই মন নেচে উঠল, এবারে আর দেখে কে। ওর ঘরে, ওর বিছানায়, ওর লেপের তলায় দিয়া ঘুমিয়ে আছে এটা ভাবতেই শরীরের সকল ধমনী বেয়ে একটা উষ্ণ ধারা বয়ে গেল। উচ্ছল গোলগাল সুন্দরীর কথা ভাবতেই মনে মনে একটু শয়তানি করার ইচ্ছে জেগে ওঠে, একবার দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখবে নাকি, খোলা না বন্ধ? শেষ পর্যন্ত কি পরে ঘুমালো? রাতে থাকার কথা ছিল না, সুতরাং জামা কাপড় কিছুই আনেনি, শেষ পর্যন্ত কি নিজের জিনস আর টপটা পরেই শুয়েছে নাকি? না কি ওর কোন একটা শারট অথবা টিশার্ট পড়েছে। ওর পায়জামা দিয়ার হবে না, সুতরাং কোন পায়জামা অথবা বারমুডা হয়ত পড়বে না। এতক্ষনে নিশ্চয় কোন গ্রে সাইড জেগে উঠেছে সুন্দরী চপলা লাস্যময়ী দিয়ার মধ্যে। গাড়ির মধ্যে দিয়ার মাথার ওপর গাল চেপে বসে থাকার সময়ে ভীষণ ইচ্ছে করছিল একবার অন্তত মাথায় চুমু খায়। যে ভাবে দিয়া পা বাড়িয়েছিল ওর দিকে তাতে একটা চুম্বুনে কিছু হত না, হয়ত উজাড় করে দিত নিজেকে। ঠিক যেভাবে সেই বর্ষার রাতে লেখা নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিল অভির কঠিন বাহুপাশে, তীব্র বিষাক্ত চুম্বনের রসে মাতাল হয়ে উঠেছিল অভি। শুধু মাত্র ওই লাল মিষ্টি অধর সুধাই পান করতে চেয়েছিল, কিন্তু নিশপিশ করা আঙ্গুল গুলো বাধ মানেনি, লেখার নিতম্বের খাঁজে লুকিয়ে লুকিয়ে চোরাপথে সেই গোপন অঙ্গের ওপর চলে গিয়েছিল। ছিঃ লেখার বিষয়ে এমন ভাবা ঠিক নয়। এখন শুধু মাত্র দিয়া, দময়ন্তীকেই ওর চাই। মুচকি হেসে ঘরের দরজায় টোকা মারতে বুঝতে পারল যে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। বিফল মনোরথ হয়েই ছাদে উঠে গেল সিগারেট খেতে। শীতকাল, সুতরাং পূবের আকাশে আলো ফুটতে অনেক দেরি। সেই আকাশে কি রঙ ধরবে সঠিক জানা নেই অভিনন্দনের, তবে যাই রঙ ধরুক হুঁশিয়ার কাণ্ডারির মতন শক্ত হাতে চিরজীবন সেই দাঁড় ধরে থাকবে।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)