Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
ধন্যবাদ sohom. ভবিষ্যতে আবার হয়তো এরকম মিষ্টি গল্প আপনাদের সামনে নিয়ে আসবো.
কিন্তু এই মুহূর্তে কিছু লিখবোনা. কিছুদিন শুধু পাঠক হিসেবে আসবো এখানে. তারপরে আবার ভালো গল্প মাথায় এলে আমার লেখক রূপটা প্রকাশ পাবে.
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
(02-08-2020, 02:27 AM)Baban Wrote:
দুদিন পর........
অভি নিজের ঘরে অনিলের সাথে বসে আছে. অভির এই একমাত্র বন্ধুটার কাছে অভিষেক কিচ্ছু লুকোয় না. অভি আজকের দিনের স্মার্ট ছেলে হলেও সে সত্যিকারের বন্ধুত্বে বিশ্বাস রাখে. স্বার্থপর বন্ধুদের সাথে, বা ওভার স্মার্ট বন্ধুদের সাথে সে বেশি সময় কাটাতে কোনোদিনই চায়নি. তাদের সাথে মেশেও নি. অভিষেকের মতো ওতো উচ্চতা নয় অনিলের কিন্তু এই ছেলেটি অভির থেকে বেশি স্বাস্থবান. আবার উল্টোদিকে খুবই নরম মনের. বন্ধুটার জন্য খুবই চিন্তা করে. অভির মনে হয় যেন ওর নিজের ভাই. খুনসুটি, মারামারি গালাগালি সব হয়েছে দুজনে.... কিন্তু ছাড়াছাড়ি কোনোদিন হয়নি. যাকগে... আবার গল্পে ফিরি.
অনিল অভিষেকের কাঁধে চাপড় মেরে বললো..
অনিল : শালা... এখানে আমি তোর চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম.. ভাবছিলাম কিজানি কি অবস্থা আমার বন্ধুটার আর ওদিকে তুমি....
অভি : আরে আমি কি করবো ভাই? সব তো বাবা মা মিলেই..
অনিল : চুপ কর ব্যাটা.... আগে ফোন করা যেতোনা? এত বড়ো একটা good news কিনা কাল রাতে জানাচ্ছিস?
অভিষেক : ওরে ভাই বিশ্বাস কর... মানে হঠাৎ করে.. আমি নিজেও বোঝার আগেই এত কিছু..... মানে....
অনিল : চুপ শালা...... হঠাৎ করে? হ্যা? দেবো একটা দুম করে ? ব্যাটা.... ছুপা রুস্তম.
অভি : এই ভাই মারিসনা....তোর হাতের কেলানি খেলে সোজা হাসপাতাল এডমিট হতে হবে.... বাবারে যা বডি বানাচ্ছিস.....
অনিল : ওটাই হওয়া উচিত তোমার সাথে.... ছাড় মাফ করে দিলাম...... আচ্ছা ভাই বলনা সেদিন কি হলো? বলনা বাকিটা?
অভি হেসে আবার বলতে শুরু করলো বাকিটা. সেদিনের সেই মুহূর্তে আবার ফিরে গেলো অভিষেক. সেই সামনাসামনি দুজন দাঁড়িয়ে.... একটা প্রশ্নের সম্মুখীন তারা.
রিমি : তুমি চাওনা আমাদের মধ্যে কোনোরকম..........
অভি : না....... আমি চাইনা.
অভির উত্তরে অবাক হয়ে গেলো রিমি ! এটা কি বলছে অভিষেক? কি শুনলো এটা রিমি ! নিজেকে নিশ্চিত করতে আবার জিজ্ঞেস করলো ও অভিকে.
রিমি : তার মানে তুমি চাওনা আমাদের মধ্যে......
অভিষেক : না... চাইনা... কারণ আমি একজনকে পছন্দ করি .
রিমি আবার অবাক হলো. কি বলছে অভি? তাহলে ও অভির চোখে যেটা দেখেছিলো সেটা কি? অভির ওই দৃষ্টি কি মিথ্যে? সন্ধেবেলার ওই প্রশ্ন.. সেটাও কি মিথ্যে?
রিমি মুখ নামিয়ে পেছন ফিরে ওকে জিজ্ঞেস করলো : কিন্তু... তুমি যে বলেছিলে তোমার কোনো বান্ধবী নেই.
অভি : নেই তো.
রিমি : তাহলে?
অভি হেসে : আমি বলেছি আমি একজনকে পছন্দ করি..... কিন্তু সে আমায় পছন্দ করে কিনা.... তার উত্তর আমি পাইনি.
রিমি : কতদিনের পরিচয় তোমাদের?
অভি : বেশিদিন না.. এইতো সেদিনের. এখনও ওকে বলে উঠতে পারিনি মনের কথা... কিন্তু একদিন পারবো.
রিমি : ওহ..... তাহলে তো আর এই ব্যাপারে এগোনো আমাদের আর উচিত নয়. আমরা বরং নীচে গিয়ে জানিয়ে দি ওরা যা ভাবছে সেটা সম্ভব নয়.
অভি : হ্যা.....আমরা যদি আমাদের বাবা মায়ের মতে বিয়ে করি তাহলে ওরা হয়তো খুশি হবে কিন্তু আমরা নয়.... কি বলো?
রিমি পেছন ফিরেই রয়েছে. একবারও তাকায়নি অভির দিকে. শুধু হালকা করে বললো : হুম.... ঠিকই.... তাইতো.
অভি : হ্যা.... চলো ওদের গিয়ে জানিয়ে দি. আমি মানে আমরা রাজী নই... কি বলো? তাছাড়া তুমিও নিশ্চই রাজী ছিলেনা... শুধু আমাদের বাবা মায়ের কথা মানতে এখানে আলোচনা করতে এসেছিলে..... কি? তাইতো?
রিমি ঐভাবেই জবাব দিলো : হ্যা....তাই.
অভি আর রিমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে যার ঠিক বাঁ দিকেই ড্রেসিং টেবিল. বেশ বড়ো একটা আয়না. অভি সেই আয়নায় তাকাতেই বুঝলো আয়নায় যে মেয়েটির ছবি প্রতিফলিত হচ্ছে তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সেই মেয়েটি হাত দিয়ে চোখ মুচ্ছে.
অভি এবারে হেঁটে এগিয়ে গেলো রিমির টেবিলের কাছে. ওখান থেকে একটা জিনিস তুলে আবার এগিয়ে এলো রিমির কাছে.
অভি : ওর একটা ছবি আছে আমার কাছে. দেখবে? দেখো.... ওকে কি সুন্দর দেখতে. দেখো একবার.
এইবলে একটা হাত সামনের দিকে এগিয়ে দিলো অভিষেক. রিমির দেখার কোনো ইচ্ছা ছিলোনা. কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে পাশে চাইতেই চমকে উঠলো রিমি. অভি যে হাতটা ওরদিকে বাড়িয়ে দিয়েছে সেই হাতে রিমিরই ছবি. ওর টেবিলে যে ছবিটা ছিল!
অভির দিকে ফিরলো রিমি. অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো অভির দিকে.
অভি বললো : আমি তোমাকে নয়...... এই রিমিকে ভালোবাসি. আজ থেকে নয়.... সেই সেদিন থেকে... যেদিন ওর সাথে প্রথম শপিং মলে দেখা হলো. ওর ওই চোখ, ওই হাসি, ওর সব কিছু. সবটুকু নিয়ে ওকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম আমি. সেদিন ওকে মলে খোঁজার অনেক চেষ্টা করি কিন্তু আর পাইনি ওকে. আজ আবার পেলাম ওকে আমার বাবারই বন্ধুর বাড়িতে. কিন্তু ভেবেছিলাম ওকে পেয়েও হারিয়ে ফেলেছি.....আমি এই রিমিকে ভালোবাসি.... একে বিয়ে করতে চাই. তোমাকে নয়. আমাকে কি ওই রিমির সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে যে হাসে প্রানখুলে, যার চোখে কোনো জল নেই, যার হাসিমুখটা দেখলে নিজের মনেও আনন্দ জেগে ওঠে. আমি তার সাথে দেখা করতে চাই.
রিমি তাকালো ওই ছবিটার দিকে. সেই প্রাণখোলা হাসি নিয়ে বাবা মায়ের সাথে দাঁড়িয়ে রিমি. তখনও ওর পরিচয় হয়নি ওই ছেলেটার সাথে যার থেকে এত বড়ো ধাক্কাটা পেয়েছিলো ও.
অভি এগিয়ে আসলো রিমির কাছে. মেয়েটার চোখে জল ভরে গেছে. নিজের হাতে ওর চোখ দুটো মুছিয়ে দিয়ে অভি বললো : আমি তো তোমায় জানতামই না... না জেনেই তোমায় ভালোবেসে বসে আছি. কিন্তু যখন জানলাম তুমিই আমার বাবার বন্ধু... বিশ্বাস করো... খুব কষ্ট হচ্ছিলো. বার বার মনে হচ্ছিলো কেন তোমাকেই বাবার বন্ধুর মেয়ে হতে হলো. বার বার মনে হচ্ছিলো.... আমি তোমায় একটু একটু করে হারিয়ে ফেলছি. আমি তোমাকে এত কাছে পেয়েও কিচ্ছু বলতে পারিনি. সেটা আরও বড়ো কষ্ট. কিন্তু যখন আমরা আজ এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি, ঈশ্বর যখন আমাদের এই ভাবে কাছে আনতে চাইছে তখন আমি বলতে চাই আমাদের বাবা মায়ের কথা রাখতে শুধু নয়, সত্যি সত্যি কি আমরা এক হতে পারিনা? তছাড়া তোমায় সন্ধেবেলায় যে প্রশ্নটা তখন করেছিলাম তার জবাব কিন্তু দাওনি.....
রিমি : আমার কাছে তখন যে জবাব ছিলোনা অভি .
অভি রিমির চোখে চোখ রেখে বললো : ভালোবাসার জন্য কখনো সারা জীবন কম পড়ে যায়... আবার এক পলকই যথেষ্ট. তুমি সত্যি করে বলো.... তোমার আমাকে দেখে একবারও মনে হয়নি যে কেন আমাদের আগে দেখা হয়নি. কেন তোমার জীবনে ওই ছেলেটার আগে আমি আসিনি? মনে হয়নি?
রিমি : হয়েছে.... মনে হয়েছে কিন্তু...
অভি : আমাকে বিয়ে করবে রিমি? তোমার মুখে আবার হাসি ফোটানোর দায়িত্ব নিতে পারি আমি ? কথা দিচ্ছি.. এবারে তুমি ঠকবে না.
রিমির চোখ ভেজা কিন্তু মুখে ফুটে উঠলো হাসি. সেই মিষ্টি হাসি. প্রানোচ্ছল হাসি. মুখে কিছুই বল্লোনা, শুধু মাথা নেড়ে হ্যা জানালো রিমি. এগিয়ে এলো অভির কাছে. মাথা রাখলো অভির কাঁধে. পরম ভালোবাসায় অভিষেক জড়িয়ে ধরলো রিমিকে. রিমির মাথায় রেশমি কালো চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো.
হ্যা......সে জয়ী আজ . স্বার্থপরের মতো নয়, ভালোবাসা দিয়ে জয় করেছে ও রিমিকে. রিমির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নয়, রিমির চোখে চোখ রেখে পুরুষের মতো ওর মনের লুকোনো সত্যিটাকে রিমির সামনে তুলে আনতে পেরেছে সে.
মনটা প্রচন্ড খুশি অভির. যাকে প্রথম দেখাতেই ও ভালোবেসেছে আজ সেই ওকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে. এই মেয়েটাকে খুশি রাখার দায়িত্ব আজ থেকে ওর. কোনোদিন কোনো ক্ষতি হতে দেবেনা রিমির. ওর মনের ব্যাথা গুলো ভুলিয়ে আবার হাসি ফুটিয়ে তুলবেই অভিষেক. তবেই না ও অভিষেক.
নীচে নেমে এলো দুজনে. গুরুজনেরা নীচে অপেক্ষা করছিলো. চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়েছিল সবাই. ঈদের নেমে আসতে দেখে আরও চিন্তিত হয়ে গেলো ওরা. অর্ক আর ঝিলমিলও বড়োদের কাছ থেকে সব জেনে ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে. অভি আর রিমি নেমে এসে পাশাপাশি দাঁড়ালো.
অরিন্দম বাবু ছেলের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো : অভি? কি ঠিক করলি বাবা?
রঞ্জিত বাবু আর বাকিরাও পাশাপাশি এসে দাঁড়িয়েছে. অভি আর রিমি একবার বড়োদের দিকে তাকিয়ে তারপরে নিজেদের দিকে তাকালো. তারপরে মাথায় নামিয়ে হালকা করে মাথাটা ওপর নিচ করলো.
অর্ক আর ঝিলমিল তো লাফিয়ে উঠলো. অর্কও অভিদাকে একদিনেই আপন করে নিয়েছে. তাছাড়া অভির মতো একজনের সাথেই ওর দিদির ভবিষ্যত কল্পনা করেও ও খুব খুশি. দিদির সাথে এই অভিকেই দারুন মানাবে. সাথে বড়োরাও আনন্দে হাসতে লাগলো. ওরা দুজন লজ্জাতে পড়ে গেলো. অর্ক আর ঝিলমিল এসে জড়িয়ে ধরলো ওদেরকে. সাথে দুজনের মায়েরাও.
ওদিকে দুই বন্ধু জড়িয়ে ধরলো নিজেদের.
অরিন্দম : আজ থেকে তাহলে আমরা আরও কাছে চলে এলাম কি বল? ব্যাটা... মোটকু
রঞ্জিত বাবু : সে আর বলতে শিম্পাঞ্জি.
সব শুনে অনিল বলেছিলো - জিও কাকা.... তার মানে Ek ladki ko dekha toh aisa lagaa থেকে dilwale dulhaniya le jayengey? .... super....এইনা হলে তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড.
এরপর আরও মাস খানেক কেটে গেছে. এর মধ্যে রোজই রিমির সাথে অভির কথা হয়েছে ফোনে. এখন থেকেই মেয়েটা ওর ওপর অধিকার ফলাতে শুরু করে দিয়েছে. দেরি করে একদম ঘুমোনো যাবেনা, রাত জেগে ফিল্ম দেখা বন্ধ, আরও কত কি. আশ্চর্য... এই ব্যাপার গুলোকেই এতদিন ভয় পেতো অভি, এই জন্যই এড়িয়ে যেত বিয়ের কথা বার্তা. আর আজ সব মুখ বুজে পালন করছে. কারণ আদেশ গুলো যে প্রাণের মানুষটার থেকে আসছে.
আজ রিমিরা বেড়াতে আসছে অভিষেকদের বাড়িতে. রঞ্জিত বাবু বলেছিলেন একবেলা কাটিয়ে ফিরে যাবেন. হবু বেয়াই আর প্রিয় বন্ধুর আদেশ একবেলার বদলে একরাত কাটাতেই হবে. সেদিনের কিছুতেই ফিরতেই দেবেন না. সারাদিন দুই বন্ধু আবার একসাথে কাটাতে চায়. তাতেই রাজী হতে হলো.
এদিকে অভি নিজের ঘর গুছিয়ে রাখছে. যে ছেলেটার ঘর জামা কাপড়, আঁকার খাতা, ফাইল পেন পেন্সিলে একেবারে অগোছালো হয়ে থাকে আজ সে সব গুছিয়ে রাখছে. বাবারে কি খাটনি ! উফফ এসব মানুষের কাজ?
কিরে দাদা? কি করছিস?
দেখছিস না... ঘর গোছাচ্ছি. (পেছন না ফিরেই জবাব দিলো অভি)
ঝিলমিল : সেতো দেখতেই পাচ্ছি. তা আজ পর্যন্ত তো কোনোদিন ঘর গোছাতে দেখলাম না... আজ কি হলো দাদা?
অভি ঘাবড়ে গিয়ে : আজ... আ.. আজ আবার ক..কি হবে আমার.. ইচ্ছে হলো.. তাছাড়া বাড়িতে বাবার বন্ধু আসবে. ওরা যদি এরকম ঘর দেখেন কি ভাববেন? তাই আরকি....
ঝিলমিল : বাবার বন্ধু আসবে বলে....নাকি.... বন্ধুর কন্যা আসবেন বলে?
অভি : তবেরে.... খুব পাকা হয়েছো তাইনা...
অভি কান মুলে দিলো বোনের.
আঃহ্হ্হ......মা.. মা দেখোনা দাদা মারছে. আহহহহহ্হঃ লাগছে.
বাবা পাশের ঘর থেকে : খবরদার আমার মেয়েটাকে একদম মারবিনা.... ছাড় ওকে.
অভি বাবার কথা শুনে অমনি ছেড়ে দিলো বোনকে.
ঝিলমিল : ঠিক হয়েছে.... বাবার কাছে বকা খেয়েছিস. দাঁড়া..... বৌদি আসুক..... সব বলবো বৌদিকে...
তবেরে.....
দে দৌড়.
অভি আবার ঘর গোছাতে লাগলো. আর ভাবলো কি বলে গেলো ঝিলমিল? বৌদি?
লজ্জা পেয়ে গেলো অভিষেক. সত্যিই তো... যে আসছে সেতো আর কিছুদিন পরে এইবাড়ির একজন হয়ে যাবে. এইঘরের হবু মালকিন আসছে আজ.
দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ওরা এসে পৌঁছলো অভিদের বাড়ির সামনে. আগেই ফোন করে দিয়েছিলো রঞ্জিত বাবু যে কিছুক্ষনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে তাই অভি, ওর বাবা মা ঝিলমিল বাইরেই বারান্দাতে অপেক্ষা করছিলো. গেটের বাইরে গাড়ি দাঁড়াতেই এগিয়ে গেলো ওরা. গাড়ি থেকে এক এক করে নামতে লাগলো সবাই. প্রথমেই রঞ্জিত বাবু. উনিই ড্রাইভ করে এসেছেন. তারপরে অর্ক. তারপরে দীপালি দেবী আর শেষে সেই শপিং মলে দেখা সুন্দরী.
অভি ওকে দেখে হা হয়ে গেলো. একি?! সেদিন রিমি শপিং মলে যে সালোয়ার কামিজটা পড়ে ছিল.... আজ সেটাই পড়েছে. সেই একি সাদা আর সোনালী ডিসাইন করা সালোয়ার কামিজ আর সেই সাদা ওড়না. শুধু হাতের চুড়ি গুলো সবুজের বদলে নীল.
ওরে বাবা.... অভিষেকের তো বুকের বাঁ পাশটা আবার কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে.
রিমি এগিয়ে গিয়ে অভির বাবাকে আর মাকে প্রণাম করলো তখন অভির মাথায় এলো তাকেও তো বড়োদের প্রণাম করতে হবে. সে ওর থেকে চোখ সরিয়ে রিমির বাবা মাকে প্রণাম করলো.... অবশ্য এখন আপনারা বলতেই পারেন হবু শশুর শাশুড়ি.
অর্ককে বুকে জড়িয়ে ধরলো অভি. ওদিকে ঝিলমিলও বড়োদের প্রণাম করে রিমি দিদির কাছে চলে গেলো. আর ওকে নিয়ে ভেতরে যেতে লাগলো. ওদিকে অভির বাবা মাও হবু বেয়াই বেয়াইন কে নিয়ে এগোতে লাগলো. আর অভি অর্ক গাড়িটা ওদের গ্যারেজে ঢুকিয়ে ভেতরে এলো.
অভি ভেতরে এসে দেখলো ওর সেই সেদিনের দেখা সুন্দরী আজ ওরই বাবা মায়ের সাথে বসে গল্প করছে. পাশে ঝিলমিল রিমির বাবা মায়ের সাথে কথা বলছে.
অর্ক বললো : অভিদা.... তোমার ঘরটা দেখাও... দেখি একটু....
অভিষেক ওকে নিজের ঘরে নিয়ে গেলো.
অর্ক : wow তোমার ঘরটা কি সুন্দর আর বড়ো.....
যাক বাবা.... এই সকালের খাটনি কাজে দিয়েছে. ঘরটা খুবই সুন্দর. কিন্তু অভি অগোছালো করে রাখতো. আজ সব গুছিয়ে রাখতে সত্যি দারুন লাগছে দেখতে.
অভি ওর সাথে কথা বলছে. নানারকম কথা. ছেলেদের নিজেদের কথা... আলাদা করে বলার দরকার পড়েনা. এমন সময় বাইরে থেকে ওর বাবা মায়েদের গলার স্বর শুনতে পেলো. ওরা পেছন ঘুরে দেখলো অভির বাবা মা, রিমির বাবা মা আর সাথে রিমি আর ঝিলমিল অভির ঘরে ঢুকলো.
অভির মা বললো : আর এইযে আমার ছেলের ঘর.
রিমির মা : বাহ্..... খুব সুন্দর. দেখ বাবলু দেখ..... অভি কি সুন্দর গুছিয়ে রাখে ঘরটা.... আর তুই উফফফ যা করে রাখিস ঘরটা.
ঝিলমিল : হ্যা... দাদা ঘর পরিষ্কার রাখতে পছন্দ করে... তাইনা দাদা?
অভি ইশারায় বলল ঝিলমিলকে চুপ করতে. ঝিলমিল মুচকি হাসলো.
অভির মা এগিয়ে গেলো রিমির কাছে. মাথায় হাত বুলিয়ে ওকে বললো : কিরে? তোর পছন্দ হয়েছে তো ঘরটা?
রিমি হেসে মাথায় নামিয়ে নিলো. অভিও লজ্জা পেলো.
রিমির বাবা বললেন : সত্যি খুব গোছালো.... ভেরি গুড.... আচ্ছা.. চল অরিন্দম.... আমরা তোদের ঘরে গিয়ে গল্প করি. এতদিন পরে এলাম আমরা... জমিয়ে সারাদিন আড্ডা দেবো. চলো চলো.
রিমির মা : হ্যা চলো.... বাবলি.... তুই এখানেই থাক... অভির সাথে গল্প কর. আমরা ওই ঘরে যাচ্ছি. এই বাবলু...চল.....অভিদার ঘর আবার পরে দেখবি... ওই ঘরে চল.
রিমি বাদে ওরা সবাই পাশের ঘরে চলে গেলো. এখন খালি অভিষেক আর রিমি এই ঘরে.
অভি : এসোনা..... বসো.
রিমি হালকা হেসে এগিয়ে এসে দেখতে লাগলো ভালো করে ঘরটা. আর অভিষেক দেখতে লাগলো রিমিকে. অভির আনন্দে লাফাতে ইচ্ছে করছে. ঈশ্বরকে বার বার ধন্যবাদ দিচ্ছে সে. যে মেয়েটাকে সেদিন প্রথমবার দেখেই নিজের মন হারিয়ে ফেলেছিলো, আজ সেই মেয়েটা নিজে এসেছে ওর ঘরে. ওর প্রেয়সী আজ নিজে এসেছে অভির সাথে দেখা করতে.
রিমি ঘরটা দেখে অভিকে বললো : খুব সুন্দর তোমার এই ঘরটা.
অভি এগিয়ে এসে রিমির পাশে দাঁড়িয়ে বললো : আমার? নাকি আমাদের ঘরটা?
রিমি : ধ্যাৎ.....
অভি হাসলো.
রিমি বললো : ওহ বাবা.... আবার গিটারও বাজানো হয়. আমি তো শুনলাম আপনি নাকি খুব সুন্দর ছবি আঁকেন...
অভি : তা একটু আধটু আঁকি বটে.
রিমি : আমায় দেখাবেনা?
অভি : নিশ্চই... (এই বলে ও নিজের আঁকার খাতাটা এনে রিমির হাতে দিলো.)
রিমি দেখতে লাগলো অভির আঁকা গুলো. দারুন আঁকার হাত ছেলেটার. অভি ওর পাশে বসে বলছে কোনটা কবে এঁকেছিল. এই ঘোড়ার ছবিটা একটা ক্যালেন্ডার থেকে আঁকা, এই বাঘটা টিভিতে দেখে, আর বাবা মায়ের ছবিটা ওদের অ্যালবাম দেখে.... যেন ছোট্ট বাচ্চা তার প্রিয় বন্ধুকে দেখাচ্ছে তার আঁকা.
এইভাবে ও একের পর এক ছবি দেখাচ্ছে আর ওর প্রেয়সী অবাক হয়ে দেখছে অভির অঙ্কিত চিত্র গুলো. যেন ছবি নয়, আসল. পোর্ট্রেট থেকে ল্যান্ডস্কেপ সবেতেই অভিষেকের হাত দারুন.
তখনি পাশের ঘর থেকে মায়ের ডাক- বাবু... নে রিমির আর তোর খাবারটা নিয়ে যা বাবা.
অভি : তুমি দেখো... আমি আসছি.
অভি চলে গেলো. ওর মা ওর হাতেই অভি আর রিমির দুজনের খাবারের প্লেট দিয়ে যেতে বললো. অভি দুই হাতে দুই প্লেট নিয়ে সামলে নিয়ে আসতে লাগলো. বাবারে.... মা কতটা করে খাবার দিয়েছে....হবু বৌমার জন্য এত কিছু বানিয়েছে মা. উফফফ বাবারে.
কোনোরকমে সব সামলে ঘরে ঢুকলো অভি.
অভি : উফফফ.. এই নাও আগে খেয়ে নাও... মায়ের হুকুম... সব খেতে হবে কিন্তু.... জানিনা বাবা... এত খাবার কি করে আমরা দুজনের খা........
পুরো কথাটা শেষ হলোনা অভিষেকের. অভি রিমির দিকে তাকিয়ে দেখলো ও একদৃষ্টিতে খাতায় আঁকা একটা ছবি দেখছে. অভি এগিয়ে এসে দেখলো - এইরে...! এটা যে রিমিরই ছবি. সেই সেদিন রাত জেগে এঁকেছিল.
লজ্জায় পড়ে গেলো ছেলেটা.
রিমি : এটা কবে আঁকলে?
অভি : এটা....... ঐতো....... সেদিন ইয়ে মানে এই কিছুদিন আগেই.... মানে তোমার....
রিমি : মিথ্যে বলোনা..... এই ছবিতে আমি আজকের এই সাদা সালোয়ারটাই পড়ে আছি..... আমিতো এটা বাড়িতে তোমার সামনে পড়িনি..... শুধু সেদিন শপিং মলে আমি এটা পড়েছিলাম. যেদিন প্রথম আমাদের দেখা হয়েছিল. তার মানে এটা সেই তখনকার আঁকা? কি তাইতো?
এইরে.. ধরা পড়ে গেছে. অভি মাথা চুলকে বললো : হ্যা....মানে আসলে.....
রিমি ছেলেটার লজ্জা পাওয়া মুখটা দেখে আরও ভালোবেসে ফেললো অভিকে. এত ভালোবাসে অভি ওকে?
রিমি ছবিটা রেখে মাথায় নীচে নামিয়ে অভিকে বললো : অভি.... আমি তোমায় কিছু বলতে চাই.. বার বার ভেবেছি আগেই বলবো কিন্তু পারিনি.... আমি.... মানে..
রিমিকে এইভাবে দেখে অভি ওর সামনে এসে মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে রিমিকে জিজ্ঞেস করলো : কি হয়েছে রিমি? বলো আমাকে? আমার কাছে আবার........ এইটুকু বলে ও রিমির হাতের ওপর হাত রাখলো.
রিমি : অভি আমাদের এই সম্পর্ক এগোনোর আগে আমি তোমায় কয়েকটা কথা জানাতে চাই. এই কথাগুলো তোমার জানা উচিত. আমি তোমায় অয়নের কথা বলেছিলাম মনে আছে.
অভি : তোমার যার সাথে সম্পর্ক ছিল তাইতো?
রিমি : হুম.... আমি সেই ব্যাপারেই তোমায় কিছু বলতে চাই. এটা জানা তোমার অধিকার. আমার তোমার কাছ থেকে কিছু লুকোতে চাই না...... অভি আমার আর অয়নের সম্পর্ক যখন শুরু হয়েছিল তখন আমি ওকে মন দিয়ে ভালোবাসতাম. ওকে এতটাই ভালোবাসতাম যে ওর সব কথা আমি বিশ্বাস করতাম. ওর খুশির জন্য আমি ওর পছন্দের ড্রেস পড়তাম, ওর সাথে ঘুরতে যেতাম. আমরা একবার বন্ধুদের সাথে ট্রিপে গেছিলাম. আমি আর ও এক সাথেই ছিলাম সেখানে. আর... আর.. আমরা....
রিমিকে এইভাবে বিব্রত অবস্থায় দেখে অভিষেক ওর দুই হাত নিজের হাতে নিয়ে ওকে বলে : বলো রিমি..... কি?
রিমি মাথায় নামিয়ে বলে : আমরা আমাদের ভালোবাসার সীমা একসময় অতিক্রম করে ফেলি. আমি ওকে বিশ্বাস করতাম অভি, কিন্তু ও..... ও শুধু আমার..... I am sorry অভি.... এটা আমি তোমাকে আগেই জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু বলতে গিয়েও পারিনি. কিন্তু আজ বললাম. আমি জানিনা তুমি এটাকে কিভাবে নেবে কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে কিছু লুকোতে চাইনা....
এইটুকু বলে থেমে গেলো রিমি.
অভি মুচকি হেসে রিমির গালে হাত রেখে ওর মুখ তুলে বললো..
অভি : ব্যাস.. এই কথা...? এর জন্য তুমি এত guilty feel করছিলে? কিসের জন্য আমার কাছে সরি চাইছো? কি দোষ করেছো তুমি? ভালোবেসে একজনকে বিশ্বাস করা ভুল? তাকে নিজের করে পেতে চাওয়া ভুল? নাকি যে সেই ভালোবাসার ফায়দা তোলে সে ভুল? সে শুধু তোমার শরীরটা দেখেছে.... আমি দেখেছি তোমার এই মনটা. তুমি চাইলে এটা আমার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে পারতে... কিন্তু তুমি সব আমায় নিজেই বলে দিলে. তুমি আমার চোখে আরও উঁচু হয়েছে গেলে আজ.
রিমি : তুমি কিছু মনে করোনি.. আমি যে অন্য একজনের...
অভি হেসে : আরে ধুর...... কিসের মনে করা? আমাদের দুজনের পরিচয়ের আগে তোমার একটা জীবন ছিল, একটা অতীত ছিল, সেই অতীতে আমি তো আর ছিলাম না. সেই অতীতে একজন ছিল যাকে তুমি ভালোবেসেছিলে কিন্তু সে সেই ভালোবাসার যোগ্য ছিলোনা... তোমার কি ভুল এতে? নিজেকে নিজের চোখে ছোট হতে দিওনা রিমি...... আমার চোখে তুমি পবিত্র. যে ভালোবাসতে জানে. তুমি এইটা ভেবে দুশ্চিন্তা করছো যে আমি কি ভাববো?
অভি রিমির দুই হাত ধরে ওর চোখে চোখ রেখে বললো : আমি কি ভাবছি জানো? আমি ভাবছি আমার থেকে ভাগ্যবান আর কেউ নেই. একদিন যাকে হঠাৎ করে দেখে আমি নিজের মনটা হারিয়ে ফেলেছিলাম, যার মুখটা সবসময় মনে রাখার জন্য এই ছবিটা এঁকে ছিলাম........ আজ সেই মেয়েটা আমারই ঘরে আমার এত কাছে বসে আছে. আমি আর কিচ্ছু জানতে চাইনা......ওটা তোমার অতীত ছিল. ভুলে যাও. আমি তোমার বর্তমান হতে চাই. ভবিষ্যত কেউ জানেনা.... কিন্তু এই বর্তমান তো আমাদের হাতে. আমি সেইটা তোমার সাথে কাটাতে চাই.
রিমি : এত ভালোবাসো আমায়?
অভি : কেন? তুমি বাসনা?
রিমি : বাসি..... খুব.... (চোখে জল এসে গেছে রিমির.তবে এই জল দুঃখের নয়. আনন্দের.)
অভি : ব্যাস তাহলে no কান্না only হাসি.... হাসো.. নইলে কাতুকুতু দোবো কিন্তু....
রিমি হাসলো. সেই হাসি ছিল মনের লুকোনো ভার মুক্তির হাসি, সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাবার হাসি, অন্তরের হাসি.
অভি এবারে একটু গম্ভীর মুখ করে বললো : সব ঠিক হলেও একটা সমস্যা যে রইলো... ওটা কি করে যে মেটাই?
রিমি : কি সমস্যা অভি?
অভি আরও গম্ভীর মুখ করে : খুবই গুরুতর সমস্যা.
রিমি অভির গম্ভীর মুখ দেখে আবার বললো : কি হয়েছে অভি.. বলোনা? কি সমস্যা? আমাকে নিয়ে?
অভি হ্যা সূচক মাথায় নাড়লো.
রিমির ভয় হলো. অভির আবার কি সমস্যা ওকে নিয়ে? ও তাও অভিকে বললো -
রিমি : কি সমস্যা অভি... আমিতো সব তোমায় খুলেই বলে দিলাম. তাহলে?
অভি দাঁড়িয়ে ওকে বললো : এই ভাবে বোঝাতে পারবোনা... একটু দাড়াও.
রিমি দাঁড়ালো. অভি রিমির কাছে গম্ভীর মুখে এগিয়ে এসে বললো : এমনিতে সব ঠিকই আছে. কিন্তু যেটা আসল সমস্যা সেটা হলো........ তোমার আমার হাইট তো একদম এক. হিল ওয়ালা জুতো পড়লে যে তুমি আমার থেকেও লম্বা হয়ে যাবে... তখন আমি যে তোমার থেকে নাটা হয়ে যাবো. তখন আমার কি হবে? লোকে যদি প্যাক দেয়?
রিমি অবাক হয়ে : কি?
অভি এতক্ষন হাসি চেপে ছিল. রিমিকে দেখে আর হাসি চাপতে পারলোনা. হেসেই দিলো এবারে.
রিমি গিয়ে কিল চড় মারতে লাগলো অভিকে.
রিমি : অসভ্য, শয়তান আবার ইয়ার্কি? কথাই বলবোনা আর... ভয় পাইয়ে দিয়েছিলো. বেশ হবে নাটা হয়ে যাবে তুমি আর সবাই নাটা বলবে. ঠিক হবে. বৌয়ের থেকে নাটা বর.
অভি হাসতে হাসতে রিমির কাছে এসে ওর হাত ধরে বললো : আর আমার লম্বু সুন্দরী বউ. রিমি অভির মাথায় আলতো করে চাঁটি মেরে হেসে উঠলো.
অভি এই হাসিমুখটাই তো দেখতে চাইছিলো. এই হাসি মুখটার প্রেমেই তো সে পড়েছিল. ওই আঁকার খাতাতেও তো এই মুখটাই আঁকা.
অভি এগিয়ে এসে রিমির মাথায় চুমু খেলো. জড়িয়ে ধরলো নিজের প্রেয়সীকে.
অভির বাবা কি একটা কাজে ওদের ঘরের কাছ দিয়েই যাচ্ছিলেন. ঘরে ছেলেকে আর হবু বৌমাকে দেখে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে গেলেন. ওদের একলা থাকাটাই উচিত এখন. অভির বাবার মুখে হাসি. কারণ ছেলের মনের ইচ্ছা আজ পূরণ হয়েছে.
হ্যা........অভির বাবা আগে থেকেই জানতো ছেলে একজনকে ভালোবাসে. বন্ধুর মেয়ের অনুষ্ঠানে যাবার দিন সকালেই যখন ছেলের ঘরে তাকে ডাকতে এসেছিলেন তখন ঘুমন্ত ছেলের বিছানায় পেন্সিল, তুলি, রঙের সাথে খোলা আঁকার খাতাটাও চোখে পড়েছিল অরিন্দম বাবুর. তাতে একটা মেয়ের ছবি আঁকা. খুব চেনা লাগছিলো ওই মুখটা. কোথাও যেন দেখেছেন এই মুখটা. হাসি মাখা মুখ, মিষ্টি দেখতে একটা মেয়ে. এর আগে কোনোদিন অভিষেক এইরকম কোনো মেয়ের ছবি আঁকেনি. তখন অতটা ধ্যান না দিয়ে উনি ছবিটা রেখে ছেলেকে ডাকতে থাকেন.
কিন্তু বন্ধুর বাড়ি গিয়ে তিনি যখন প্রথম বার রিমিকে সামনে দেখেন তখন তিনি অবাক হয়ে যান. হ্যা... সেদিন এইজন্যই তিনি প্রথমবার রিমিকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়েছিলেন. এই মুখ আর ছেলের আঁকার খাতায় অঙ্কিত মুখ একদম এক. ওনার সন্দেহ হয়. তারপরে ছেলে যখন অবাক হয়ে রিমির দিকে তাকিয়ে ছিল তখন উনি বুঝতে পারেন তার সন্দেহই সঠিক. তবে মনে হয় ছেলেও জানতোনা রিমি তার বাবার বন্ধুর মেয়ে. ছেলের অবাক হয়ে যাওয়াই সেটার প্রমান. তাছাড়া অভি আর রিমি যখন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিল তখন অরিন্দম বাবু লক্ষ করছিলেন তার অভি তাকিয়ে আছে রিমির দিকে. ছেলের ওই দৃষ্টি বুঝতে বাবার অসুবিধা হয়নি. কিন্তু তখন যে কিছু করার ছিলোনা.
এরপরে তার সেদিন যখন সন্ধেবেলায় ঘুম ভাঙে তখনো রঞ্জিত বাবু ঘুমাচ্ছিলেন. অরিন্দম বাবু ভেবেছিলেন কিছুক্ষন হাটাহাটি করে নেবেন. বাড়িতে এটা তার প্রাত্যহিক অভ্যাস. তাই তিনি ভেবেছিলেন ছাদে গিয়ে একটু হাঁটবেন. বাইরে বেরিয়ে দীপালি দেবীর সাথে দেখা হয়. উনি তখন চা করার জন্য রান্নাঘরে যাচ্ছিলেন. ওনার স্ত্রীও সেখানেই ছিল. ওখান থেকে তিনি ছাদের দিকে যেতে থাকেন. কিন্তু ছাদের ওঠার সময় দুটো গলা শুনতে পান. থেমে যান অরিন্দম বাবু. শুনতে থাকেন উনি. একটা গলা তো তিনি ভালোভাবেই চেনেন. তার ছেলের. আরেকটা মিষ্টি স্বর. একটি মেয়ের. সেটাও কার বুঝতে অসুবিধা হয়না.
ছেলের কথা শুনতে পান. অভি বলছে - "আচ্ছা ধরো...... হঠাৎ করে তোমার একজনকে খুব ভালো লেগে গেলো...... তুমি হয়তো তাকে চেনোনা জানোনা... কিছুই জানোনা তার সম্বন্ধে.... কিন্তু তোমার মনে হতো লাগলো... এই.... এই সেই মানুষটা যাকে আমি এতদিন খুঁজেছি. আজ তাকে পেলাম. তোমার হবু স্বামীকে দেখে কি এই অনুভূতিটা তোমার মধ্যে এসেছিলো? মনে হয়েছিল একে ছাড়া থাকাটা সম্ভব নয়? সবসময় ওই মুখটা চোখের সামনে ভাসছিলো?"
অরিন্দম বাবু সেদিন sure হয়ে গেছিলেন যে তার সন্দেহ সম্পূর্ণ ঠিক. নিশ্চই রিমিকে অভি কথাও দেখেছে আর অন্তরে ভালোবাসতে শুরু করে. কিন্তু জানতোনা ওর আসল পরিচয়. অভি অজান্তেই ভালোবাসে ওকে. মনটা খারাপ হয়ে যায় অরিন্দম বাবুর. তার ছেলে একজনকে এত পছন্দ করে কিন্তু এখন যে অনেক দেরি হয়েছে গেছে. কাল রিমির এনগেজমেন্ট. অরিন্দম বাবু নিজের ছেলেকে প্রচন্ড ভালোবাসেন কিন্তু ওনার বন্ধুত্বও গভীর. ছেলের খুশির স্বার্থে তিনি কখনোই রঞ্জিতের এতদিনের বিস্বাস, বন্ধুত্ব নষ্ট হতে দেবেন না. তিনি সব শুনে চুপচাপ নেমে আসেন.
কিন্তু ঈশ্বর সেদিন পবিত্র ভালোবাসার পক্ষে ছিল তাই সেদিনই এতবড়ো খুশির খবরটা পান অরিন্দম বাবু. রিমির হবু স্বামীর সত্যতা বেরিয়ে আসে সেদিন. এই সুযোগটা আর একমুহূর্ত নষ্ট করতে চাননি অরিন্দম বাবু. ছেলের ভালোবাসার মানুষটার হাত ছেলের হাতে দিতে তিনি সেদিনই রিমির সাথে অভিষেকের বিয়ের কথা বন্ধুকে জানান. নিজের ছোটবেলার প্রিয় বন্ধুর বাড়িতে নিজের মেয়েকে বৌমা করে পাঠাতে রঞ্জিত বাবুও রাজী হয়েছে যান.
তা পাঠক বন্ধুরা এবারে নিশ্চই বুঝতে পারছেন সেদিন বিয়ের কথার সময় তিনি কেন নিজের ছেলের রাজী হওয়ার কথা নিয়ে সেইভাবে পাত্তাই দিচ্ছিলেন না. বার বার তিনি রিমির জবাবের ওপর জোর দিচ্ছিলেন. ওর উত্তর জানাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল ওনার জন্য. কারণ অভির জবাব তিনি আগে থেকেই তো জানতেন.
হ্যা...... বাবারা এরকমই হয়. বাইরে খুবই কঠোর ভাব দেখান, কিন্তু ভেতরে নিজের সন্তানকে প্রচন্ড ভালোবাসেন.
আজ অভিষেকের জন্য রিমির মতো বৌমা পেয়ে অভির মা, অভির বোন খুব খুশি. আর সব থেকে বেশি খুশি অভির বাবা. ছেলের মুখের ওই হাসিটা দেখে, আর সাথে ঝিলমিলের পর আরেক মেয়েকে কাছে পেয়ে।
অভির বাবা ফিরে গিয়ে নিজের বন্ধুর সাথে বসে গল্প করতে লাগলেন. দুই মহিলা নিজেদের মতো গল্প করছে, অর্ক আর ঝিলমিল মিলে ল্যাপটপে গেম খেলছে. আর অভির ঘর থেকে ভেসে আসছে গিটারের শব্দ আর একটা গান..... তোমাতে আমাতে দেখা হয়েছিল.......
বন্ধুরা.... শেষ হলো এই ছোট মিষ্টি ভালোবাসার গল্পটি. কেমন লাগলো? শেষবারের মতো জানাবেন. আশা করি এই এই শেষ আপডেটটি আপনাদের থেকে অনেক ভালোবাসা পাবে. তাই ভালো লাগলে শেষবারের মতো লাইক রেপস দেবেন.
দাদা এক কথায় অসাধারণ । একটা মিষ্টি ভালবাসার গল্প ,আশা রাখি আরো মিষ্টি প্রেমের কাহীনি নিয়ে তাড়াতাড়ি ফিরবেন
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 72
Threads: 0
Likes Received: 23 in 22 posts
Likes Given: 2
Joined: Jun 2019
Reputation:
0
খুব সুন্দর ছোট গল্প। অল্প পরিসরে নিটোল সম্পূর্ণ সার্থক গল্পা।
বিয়ের পর অভি ও রিমি ফুলশয্যায় আর হানিমুনে কি করল লেখক কি আমাদের জানাবেন?
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(05-08-2020, 07:03 AM)byomkesh11 Wrote: খুব সুন্দর ছোট গল্প। অল্প পরিসরে নিটোল সম্পূর্ণ সার্থক গল্পা।
বিয়ের পর অভি ও রিমি ফুলশয্যায় আর হানিমুনে কি করল লেখক কি আমাদের জানাবেন?
Rimir sab kichu agei hoye gache .
Tai karo kono tension nei
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
পাঠক বন্ধুরা যারা ভালোবাসার গল্প পড়তে ভালোবাসেন তারা পড়তে পারেন আমার এই গল্পটি. আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের ❤️
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
প্রথম আপডেট পড়লাম এবং সেই নিয়েই কিছু কথা বলার আছে। এমনিতে গল্পের শুরুটা বেশ ভালো, সেই নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। পড়তে পড়তে কয়েক জায়গায় একটু বাধা পেলাম, এটা বাংলা গল্প কিন্তু ইংরেজি শব্দের ব্যাবহার প্রচুর, কথোপকথনে ইংরেজি শব্দ থাকলে অতটা কানে লাগে না কারণ আজকাল আমরা বাংলা কম বলি এবং কথা বলতে ইংরেজি শব্দ বেশি ব্যাবহার করি, কিন্তু সাধারন বাক্যে ইংরেজি শব্দ বড্ড বাজে লাগে, এই যেমন "বিজনেস জয়েন করেছে" সেখানে অনায়াসে "ব্যাবসায় নিযুক্ত হয়েছে" লেখা যায়, "জেন্টস সেক্সান" সেখানে "ছেলেদের দিক" লিখলে ভালো হয়, এমন প্রচুর ইংরেজি শব্দকে বাংলায় লিখলে ভালো হয়। এটা যদিও আমার একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত, লেখক এবং অন্য পাঠকের সাথে আমার মতামতের মিল নাও থাকতে পারে !!!!!!!
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
27-09-2020, 01:22 PM
(This post was last modified: 27-09-2020, 01:34 PM by Baban. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(27-09-2020, 01:17 PM)pinuram Wrote: প্রথম আপডেট পড়লাম এবং সেই নিয়েই কিছু কথা বলার আছে। এমনিতে গল্পের শুরুটা বেশ ভালো, সেই নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। পড়তে পড়তে কয়েক জায়গায় একটু বাধা পেলাম, এটা বাংলা গল্প কিন্তু ইংরেজি শব্দের ব্যাবহার প্রচুর, কথোপকথনে ইংরেজি শব্দ থাকলে অতটা কানে লাগে না কারণ আজকাল আমরা বাংলা কম বলি এবং কথা বলতে ইংরেজি শব্দ বেশি ব্যাবহার করি, কিন্তু সাধারন বাক্যে ইংরেজি শব্দ বড্ড বাজে লাগে, এই যেমন "বিজনেস জয়েন করেছে" সেখানে অনায়াসে "ব্যাবসায় নিযুক্ত হয়েছে" লেখা যায়, "জেন্টস সেক্সান" সেখানে "ছেলেদের দিক" লিখলে ভালো হয়, এমন প্রচুর ইংরেজি শব্দকে বাংলায় লিখলে ভালো হয়। এটা যদিও আমার একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত, লেখক এবং অন্য পাঠকের সাথে আমার মতামতের মিল নাও থাকতে পারে !!!!!!!
না না দাদা... আপনি আপনার মতামত অবশ্যই দিন, যা মনে হবে খুলে বলুন
আমি বাংলাতেই লিখতাম কিন্তু আমি গল্পটা আজকের মডার্ন দিনের গল্প বলার স্টাইলে লিখতে চাইছিলাম তাই এই ভাষা প্রয়োগ করেছি...... যদিও পরের দিকে সবই বাংলায়. একটা দুটো জায়গায় হিন্দি গানের লাইন আছে।
শেষ পর্যন্ত পড়ে আবারো মতামত দেবেন আশা করি. আপনার comments and suggestion আমার ভবিষ্যতের লেখার কাজে অনেক সাহায্যে করবে.
ধন্যবাদ
•
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
অজস্র ভুল ত্রুটি, খামখেয়ালি, বিদ্বেষ, অপমান, বাঁধা ও নীরবতার মাঝেই কোথাও লুকিয়ে থাকে সেই গুপ্তধন যা সবচেয়ে মূল্যবান.. অথচ তা দিয়ে হয়তো কিছু কেনা যায়না, শুধু অনুভব করা যায় সেই রত্নকে যা বুকের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে. তাকে ওতো সহজে খুঁজেও পাওয়া যায়না যতক্ষণ না সেই মানুষটি আপনার সম্মুখে আসে সিন্দুকের চাবি হয়ে. সেই মানুষটির উপস্থিতিতেই অনুভব করা যায় সেই গুপ্তধনকে যাকে সবাই বলে ভালোবাসা.
- বাবান
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
কারোর কাছে ভালোবাসা শুধুই ছলনা, time pass.
সেই মানুষগুলো জানেইনা ভালোবাসা কি.....আরে সেই মানুষটাকে জিজ্ঞেস করুন যে একটু ভালোবাসা পাবার জন্য অপেক্ষায় থাকে অথচ অপেক্ষাই করে যায়..... সেই অপেক্ষাই যেন তার চিরদিনের সঙ্গী.... অথচ ওই মানুষগুলি প্রকৃত ভালোবাসা পেয়েও তার মর্ম বোঝেনা.
এবারে বলুন... কে বেশি অসহায়?
- বাবান
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
Well said
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
(29-09-2020, 02:10 PM)Mr Fantastic Wrote: Well said
Thanks
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
জীবন ভারী অদ্ভুত.... এই জীবন আনন্দের সুখ দেয় তো আবার দেয় দুঃখের কান্নাও. ছোট থেকে বড়ো হয়ে গেলেও থেকে যায় নানারকম বায়নাও. ছোটবেলার নিষ্পাপ চাহিদা বড়ো হয়ে বদলে যায় লোভে. অনেক গুণী মানুষজন নিজের কাছের পিতা মাতাকেও পুরাতন ভাবতে শুরু করেন. আর রিপুর দোষ তো আছেই. এর থেকে মুক্তি পাওয়া ওতো সোজা নয়.
কিন্তু তাও আজও বেঁচে আছে পবিত্র ভালোবাসা. তা সে যেরকমই হোকনা কেন. মা বাবার প্রতি, সন্তানের প্রতি, ভাইবোনের প্রতি, প্রেমিক প্রেমিকার প্রতি. কেউ যদি জীবন যুদ্ধে হেরেও যেতে শুরু করে সত্যিকারের ভালোবাসা তার হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে যায় সম্মুখে. নতুন করে জীবনের লড়াই শুরু করতে. ❤
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(08-07-2020, 02:00 AM)Baban Wrote: পরীর কথা.....
হ্যা? পরী? সেটা আবার কে?
অভির হুশ ফিরে এলো. সে বললো : কিছুনা... তুই কি করতে এলি সেটা বল?
এখানেও অভি আর পরী, হাহাহাহাহা !!!!!
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(11-07-2020, 12:03 PM)Baban Wrote: ঠিক তখনি হঠাৎ খুব কাছে "হাই অভিষেক" শুনে অভি মুখ তুলে তাকালো সামনের দিকে. আর সেই যে তাকালো... তাকিয়েই রইলো. জীবনের সবচেয়ে বড়ো শকটা পেলেন অভি বাবু. হয়তো বিদ্যুতের শকের মতোই প্রবল.
এ কি দেখছে সে !! এ কে দাঁড়িয়ে তার সামনে?!!! এ সত্যি? নাকি এটাও কল্পনা?
দুর্দান্ত শক মাইরি, এমন শক সবার জীবনে একবার অন্তত আসেই আসে !!!!!!
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(19-07-2020, 06:08 PM)Baban Wrote:
অভি : রিমি..... হ্যা আমরা আজই হয়তো একে ওপরের সাথে পরিচিত হলাম, হয়তো আজই চিনলাম একে ওপরের সাথে. কিন্তু তোমার একজন বন্ধু হিসেবেই জিজ্ঞেস করছি..... তুমি খুশি তো?
দেখো বিয়েটা তোমার... সারা জীবন তুমি কাটাবে তার সাথে. আমি কখনোই বলছিনা যে অপরিচিত মানেই সে খারাপ মানুষ. হতে পারে তাকেও তোমাকে ভালো লেগেছে, হতে পারে সে তোমাকে ভালোবাসে, সারা জীবন খুশি রাখবে... . হতে পারে সেও তোমাকে প্রথমবার দেখে আমার মতো....
এইটুকু বলেই নিজেকে সামলে নিলো অভিষেক.
রিমি : কি? কি বললে?
অভি : না... কিছুনা... ছাড়ো... চলো
রিমি : দাড়াও...... কি বলছিলে বলো.
অভিষেক আবার তাকালো ওর দিকে. রিমি জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে ওর দিকে. অভির বুকটা আবার ধুক ধুক করছে... আবার বুকে একটা চাপ অনুভব করছে ও.
অভি বললো : আচ্ছা ধরো...... হঠাৎ করে তোমার একজনকে খুব ভালো লেগে গেলো...... তুমি হয়তো তাকে চেনোনা জানোনা... কিছুই জানোনা তার সম্বন্ধে.... কিন্তু তোমার মনে হতো লাগলো... এই.... এই সেই মানুষটা যাকে আমি এতদিন খুঁজেছি. আজ তাকে পেলাম. তোমার হবু স্বামীকে দেখে কি এই অনুভূতিটা তোমার মধ্যে এসেছিলো? মনে হয়েছিল একে ছাড়া থাকাটা সম্ভব নয়? সবসময় ওই মুখটা চোখের সামনে ভাসছিলো? মনে হচ্ছিলো বুকের বাঁ দিকটা কেমন ব্যাথা হচ্ছে?
===========================================
অভি : আমার উত্তরটা?
রিমি যেতে যেতে থামলো. অভির দিকে না ঘুরেই বললো : সব প্রশ্নের উত্তর হয়না অভিষেক.
উফফফফ দারুন ব্যাপার, পুরো একটা মুভির মতন মনে হচ্ছে !!!!!!
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(29-07-2020, 02:26 AM)Baban Wrote:
বলো অভি......? আমি আগে তোমার মতামত জানতে চাই. তুমি কি চাও ওরা আমাদের নিয়ে যেটা ভাবছে সেটা নিয়ে আমাদের এগোনো উচিত ? কি হলো বলো? চাও?
অভি এইবার ভুরু কুঁচকে রিমির চোখে চোখ রেখে বললো : না...... আমি চাইনা.
ধ্যাত, একি বাল ছেঁড়া পাব্লিক মাইরি, যাকে দেখে মনের মধ্যে গোলাপ ফোটে এখন বলছে চাই না! পাছার চামড়া তুলে দেওয়া উচিত ব্যাটার !!!!!!!
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(02-08-2020, 02:27 AM)Baban Wrote:
রিমি : এত ভালোবাসো আমায়?
অভি : কেন? তুমি বাসনা?
রিমি : বাসি..... খুব.... (চোখে জল এসে গেছে রিমির.তবে এই জল দুঃখের নয়. আনন্দের.)
অভি : ব্যাস তাহলে no কান্না only হাসি.... হাসো.. নইলে কাতুকুতু দোবো কিন্তু....
সব তো বুঝলাম, কিন্তু বিয়ের খাওয়া বিয়ের সাজ আর সব থেকে প্রধান, সেই ফুলশয্যার রাত কই? এমন হলে খেলবো না! একদম যা তা মাইরি, রিমি একদম পরীর মতন সাজবে একটু লাজুক একটু দুষ্টু, কোথায় সেই রিমি? ফুলশয্যার রাতে একটু দুষ্টু মিষ্টি আচরন না হলে কি আর মজা হয়! তুমি মশায় মহা শয়তান! না একদম ভালো করনি কাজটা !!!!!!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(13-12-2020, 04:14 PM)pinuram Wrote: সব তো বুঝলাম, কিন্তু বিয়ের খাওয়া বিয়ের সাজ আর সব থেকে প্রধান, সেই ফুলশয্যার রাত কই? এমন হলে খেলবো না! একদম যা তা মাইরি, রিমি একদম পরীর মতন সাজবে একটু লাজুক একটু দুষ্টু, কোথায় সেই রিমি? ফুলশয্যার রাতে একটু দুষ্টু মিষ্টি আচরন না হলে কি আর মজা হয়! তুমি মশায় মহা শয়তান! না একদম ভালো করনি কাজটা !!!!!!
এগজ্যাক্টলি তাই, আমরাও বলেছিলাম এটা ! কিন্তু বাবান দা তো নিরামিষ প্রেম দেখালো !!
•
|