17-07-2020, 01:28 AM
(আগের পর্বের পর )
অনিল বললো : মানে? কি বলছিস তুই ! কি কেলেঙ্কারি করলি তুই?
অভি : ও তো আমার সামনে..... আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে........
অভির কথার মাঝেই অনিল বললো..
অনিল : জানতাম জানতাম.... সেদিন তোর মুখ চোখ দেখেই বুঝেছিলাম তোমার যা হবার হয়ে গেছে.. ওরে ভুলে যা....সামলা ভাই নিজেকে... নইলে বিয়েবাড়িতে কিন্তু সবার হাতে প্রচন্ড কেলানি খাবি...
অভি : আরে দূর ব্যাটা.... তখন থেকে জ্ঞান দিয়েই চলেছে..... পুরোটা শুনবি তো আগে নাকি?
অনিল : বলেন....
অভি : বাবার যে বন্ধুর মেয়ের কাল এনগেজমেন্ট আর যার জন্য এখানে আমাদের আসা..... সে অন্য কেউ নয়...... ওই. ওই আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে.
ফোনের ওপার থেকে চিল্লানির আওয়াজ...
অনিল : কি !!!!!! কি বলছিস তুই !!! মানে তোর সেই.... সেই নাম না জানা ভালোবাসা আসলে তোর বাবার বন্ধুর মেয়ে? আর কালকে তারই....?
অভি : এবারে বুঝলি কেন আমার এমন অবস্থা?
অনিল : oh my god! ওহ হো..... এমন কোয়েন্সিডেন্স... ভাবাই যায়না. কিন্তু ওকে তো বেহালায় দেখেছিলি? আর এখন তো তোরা সোদপুরে?
অভি : ওদের মামারবাড়ি ওখানেই. বেড়াতে এসেছিলো প্লাস শপিং করতে. তাই....
অনিল : ওহ..... তাহলে তো ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস. এই প্রথম তোর কাউকে এত ভালো লাগলো আর সে কিনা.......
অভি : আমার ভাগ্যটাই এরকম রে......... সেবার কলেজে একজনকে ভালো লাগলো কিন্তু বলতেই পারলাম না..... পরে সে আরেকজনের হয়ে গেলো..... আর এতদিন পরে আবার একজন অচেনা মানুষকে এত ভালো লাগলো.... শুধু ভালো লাগা নয়.. যেন ভালোবাসা... কিন্তু সেও....
অনিল : অভি প্লিস......এসব আর ভাবিস না. দেখ...... যা হবার তো হয়েই গেছে... তুই আর কি করবি বল? সত্যি..... কেমন আজব না এই পৃথিবী? একসময় তুই ভাবছিলি আবার যেন ওর সাথে দেখা হয়ে যাক... কোথাও না কোথাও..... আর আজ...
অভি ম্লান হেসে বললো : আজ মনে হচ্ছে আমাদের আর দেখা না হলেই ভালো হতো..... অন্তত এইভাবে নয়.
অনিল : চিন্তা করিসনা বন্ধু..... সব ঠিক হয়ে যাবে. দেখবি.... এই সময়টাও পেরিয়ে যাবে একসময়.
অভি : হুমমম..... রাখি রে.
অনিল : হ্যা...... শোন? প্লিস নিজেকে সামলে রাখিস....ভালো থাকিস...
অভি : আরে তুই ওতো চিন্তা করিসনা..... আমি ঠিক আছি. রাখলাম....
ফোন রেখে অভি বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলো. একটু আগে গাড়ির মিররে এই ছাদেই রিমিকে এক পলকের জন্য দেখেছিল ও.
মনে মনে তখন বলেছিলো - "একটু পরে হয়তো দেখবি সে নিজেই এসে তোকে হাই বলছে "
সেটাই যে হবে কে জানতো? তবে এই কোইন্সিডেন্স টা কি না হলেই হতোনা? এটাই হতে হলো? ওর সাথে সেদিনের একপলকের একটু দেখা আর আবার হারিয়ে যাওয়াটা মেনে নিয়েছিল অভিষেক. কিন্তু আবার এই ভাবে নতুন করে পরিচয়টা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেনা অভি. এর থেকে যেন অচেনা অজানা থাকাটাই ভালো ছিল.
অভি বাইরে তাকিয়ে ভাবছিলো. এমন সময় পেছন থেকে একটা গলা শুনলো ও.
কি? এখানে দাঁড়িয়ে? বসবেন না.... i mean বসবেনা...
পেছনে তাকিয়ে দেখে রিমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে. আজকেও কি দারুন লাগছে মেয়েটাকে. ওর পাশে এসে দাঁড়ালো রিমি.
রিমি : কি হলো? মুখটা এমন লাগছে কেন? ও.. বুজেছি... গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝামেলা হয়েছে বুঝি? ওরই ফোন ছিল.
অভিষেক হালকা হেসে বললো : না.. না... আমার বন্ধু. আমার বেস্ট ফ্রেন্ড. আমার ওসব গার্লফ্রেইন্ড নেই.
রিমি একবার ওর দিকে তাকিয়ে বললো : ওহ.... আমি ভাবলাম..
অভি হেসে : কি? আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করছিলাম. তাইতো? সেটা হওয়াটা অসম্ভব... থাকলে তবে তো হবে.
রিমি মুচকি হাসলো. অভি তাকিয়ে রইলো ওই হাসি মুখের দিকে. সেটা রিমিও লক্ষ করলো. অভি চোখে ফিরিয়ে নিলো অন্যদিকে.
অভি : ওহ.... বলাই হয়নি..... congratulations.... কালকের জন্য. আগেই জানিয়ে দিলাম.
রিমি : thanks....
আবার নিস্তব্ধ. দুজনেই চুপ আবার. ওদিকে ঘরে দুই মহিলা শাড়ী দেখছে আর গল্প করছে. পাশে ঝিলমিল বসে. আর বারান্দায় দুজন দাঁড়িয়ে. মুখে কোনো কথা নেই.
অভি একবার তাকালো রিমির হাতের দিকে. রিমি নখ দিয়ে অন্য নখে ঘসছে. তাকালো রিমির মুখের দিকে. রিমি বাইরে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে.
অভি : কি? কিছু ভাবছো?
রিমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বললো : না.... কিছুনা. চলো ভেতরে চলো.
রিমি গিয়ে ওদের সাথে জয়েন করলো কিন্তু অভি এই মহিলাদের সাথে বসে কি করবে. তাই এদিক ওদিক হাঁটতে লাগলো. রিমির ঘরটা দেখতে লাগলো. বেশ সাজানো গোছানো ঘর. অভি হাঁটতে হাঁটতে এদিক ওদিক দেখছিলো. হঠাৎ টেবিলে রাখা একটা ছবির দিকে চোখে পড়লো ওর. রিমিরই ছবি. কোথাও বেড়াতে যাবার সময় তোলা. অভি ছবিটার কাছে এগিয়ে গেলো. হাতে তুলে নিলো ছবিটা. মা-বাবার দুই কাঁধে হাত রেখে মাঝে দাঁড়িয়ে লম্বা মেয়েটা. মুখে সরল নিষ্পাপ হাসি. এই হাসিটা যেন আরও আকর্ষণ করলো অভিকে. এই হাসিটা যেন একেবারেই রিমির মন থেকে বেরিয়ে আসা আনন্দের হাসি. কিন্তু এখন যে হাসিটা রিমির মুখে সেটাতে কোথাও যেন সেই আনন্দটা নেই.
অভির কি মনে হলো.... নিজের ফোনের ক্যামেরা অন করে ওই হাসিমুখের মেয়েটার ছবি নিজের ফোনে তুলে নিলো. আবার রেখে দিলো ছবিটা যথাস্থানে.
বাড়িতে সেই ভাবে লোকজন নেই. অভি একটা সোফায় বসে পড়লো. মনটা কোনোদিন এত খারাপ হয়নি. না পাওয়ার কষ্টটা তাও মেনে নেয়া যায়..... কিন্তু পেয়েও একটুর জন্য হারানোর কষ্টটা চেপে রাখা খুব কঠিন.
অভি ফোনে ছবিটা দেখতে লাগলো. জুম্ করলো মুখটাতে. সচ্ছল, প্রাণবন্ত হাসি. মেয়েটার মুখে এতদিন যে হাসিটা দেখে এসেছে অভি সেটাতেই ওর ওপর টান বেড়ে গেছে কিন্তু এখন এই হাসি ভরা মুখটা দেখে যেন ভালোবাসাটা আরও শতগুন বেড়ে গেলো অভির. কেন এমন হচ্ছে ওর? কেন এত টান অনুভব করছে? আচ্ছা... এটাকেই কি..........?
আর ভাবতে চায়না অভি. কারণ সেটা ঠিক নয়. সেটা ভুল. ও তাকালো সামনে বিছানায়. মেয়েটা ঝিলিমিলের সাথে গল্প করছে. অভি আনমনেই তাকিয়ে রইল মেয়েটার দিকে. কিছুই জানেনা ও রিমির সম্বন্ধে. চেনেইনা মেয়েটাকে তবু.... কেন যেন একেই নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে.
কেন? কেন? কেন ওর সাথে এমন হলো? কেন রিমিকে অন্য একজনের হতে হলো? আচ্ছা... সে পারবেতো এই মেয়েটাকে তার মতো ভালোবাসতে? খুশি রাখতে? জানেনা অভিষেক. খুব রাগ হচ্ছে ওই অদৃশ্য শক্তির ওপর. খুব রাগ হচ্ছে ওই ছেলেটার ওপর যে কেড়ে নেবে রিমিকে. যেন ওদের দুজনের মাঝের বাঁধা ওই ছেলেটা.
নাকি? অভি ওদের পথে বাঁধা? কোনটা?
ইশ..... যদি ছেলেটার জায়গায় অভি থাকতো. যদি আজ যা ওই ছেলেটার সাথে হচ্ছে তা অভির সাথে হতো. আজ যদি রিমি ওর হতো...
রিমির দিকে তাকিয়ে ভাবছিলো অভিষেক. এবারে রিমিও তাকালো অভির দিকে. অভি সঙ্গে সঙ্গে চোখে নামিয়ে নিলো.
এমা ! ছি : এসব কি ভাবছে ও? এত স্বার্থপর কবে থেকে হলো ও? শুধু নিজের খুশির কথা নিজের লাভের কথা ভেবে চলেছে ও.
এরকম তো নয় অভি. এরকম হতেও চায়না ও.
উঠে পড়লো অভি. এখানে থাকলে হয়তো আরও এসব চিন্তা আসবে. এখানে না থাকাই ভালো. নীচে গিয়ে বসাটাই ভালো.
নেমে গেলো নীচে. ফিরে আর তাকালোনা পেছনে.
অরিন্দম বাবু আর রঞ্জিত বাবু বসে গল্প করছে. দুই ছোটবেলার বন্ধু.... আজও সেই সরল বন্ধুত্ব একটুও নষ্ট হয়নি. দুজনেই ধনী, বড়োলোক, যাকে বলে হাই স্টেটাস. কিন্তু এখন যেন এরা শুধুই বন্ধু. পাশাপাশি বসে একজন আরেকজনের সাথে গল্পে মত্ত. অভি ওদের দেখে মুচকি হাসলো.
নিচের বাঁ দিকের ঘর থেকে বেরিয়ে এলো অর্ক.
অর্ক : আরে অভিদা... এখানে কি করছো? চলোনা.. আমার ঘরে.
অভি ভাবলো সেটাই ভালো হবে. অন্তত অর্কর সাথে সময় কাটালে কিছুটা ভুলে থাকবে ও.
অভি : হ্যা...... চলো. কোথায় তোমার ঘর?
অর্ক : ঐতো দিদির পাশের ঘরটা. চলো. একটু আড্ডা দি.
অভিকে নিয়ে অর্ক ওর ঘরে গেলো. ছেলেদের ঘর যেমন হয়. একটু গোছানো বেশিটাই অগোছালো. এদিক ওদিক বই ছড়ানো
অর্ক সব বই সরিয়ে বললো : বসো অভিদা.
অভি বসে পড়লো. Ac চালিয়ে অর্কও বিছানার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলো.
অমনি প্যান্ট থেকে একটা সিগেরেট প্যাকেট বার করে অভির দিকে এগিয়ে দিলো অর্ক.
অভি : না গো... থাঙ্কস.... আমি খাইনা..
অর্ক : ওহ..... তা আমি খেলে তোমার কোনো.....
অভি হেসে : না... না... তুমি করোনা.... আমার কোনো প্রবলেম নেই.
অর্ক : থাঙ্কস..... দাড়াও দরজাটা দিয়ে আসি. দিদি যদি জানতে পারে আমি আবারো স্মোক করছি.... প্রচন্ড মারবে.
অর্ক দরজা লাগিয়ে ফেরত এসে ধরালো.
অভি : কতদিন?
অর্ক : কি গো?
অভি : বলছি... কতদিন হলো এটা শুরু করেছো?
অর্ক : ওহ... এটা? দেড় বছর.
অভি : করছো করো..... কিন্তু বেশি খাওয়া অভ্যাস কোরোনা....
অর্ক : আরে নানা..
অভি : তা...... তুমি এখন কি করছো?
অর্ক : বিএসসি 2nd ইয়ার.
অভি : ওহ...... ইয়ে ভালো কথা..... তোমার ইয়ে মানে..... দিদির would be কি করে?
অর্ক : ওহ... জামাই বাবু... মানে হবু জামাই বাবু...উনি ***** কোম্পানিতে ভালো পজিসনে আছে. বাবার তো খুব পছন্দ ওকে আর মায়েরও.... আমারো ভালো লাগে কিন্তু......
অভি : কিন্তু কি?
অর্ক : মানে আমার দিদির থেকে....... এইটুকু বলে ও হাতের ইশারায় যেটা বোঝালো তাতে অভি যা বোঝার বুঝে গেলো. উচ্চতার পার্থক্য.
অভি : ওহ..... তা অনেক ডিফারেন্স?
অর্ক : অনেক নয় তবে.... দেখেই বোঝা যায়. সেদিন যখন দিদির সাথে কথা বলছিলো... তখনি লক্ষ্য করেছি আমি. কেমন অকওয়ার্ড লাগছিলো. আসলে যদিও ব্যাপারটা নরমাল তবু.... মানে....
এমন সময় দরজায় ঠক ঠক..
অর্ক শিগগির বিছানা থেকে নেমে আগে হাতের সিগারেটটা বাইরে ফেলে জিজ্ঞেস করলো কে?
রিমির গলা : আমি দরজা খোল.... এই দুপুর বেলায় দরজা দিয়ে রেখেছিস কেন?
অর্ক : না.. মানে আমরা গল্প করছিলা তো তাই.....
এই বলে দরজা খুলতে এগিয়ে গেলো অর্ক. দরজা খুলতেই ভেতরে ঢুকলো সে.
রিমি : আমরা? আমরা মানে কারা?
বলেই ও তাকালো খাটের দিকে.
রিমি : ওহ. বুঝেছি.
অর্ক : কি বুঝলি?
রিমি : টানছিলি... তাইতো?
অর্ক : এইরে ! ধরে ফেলেছে.... দিদিরে. সোনা দিদি আমার... মাকে বলিসনা.. স্ট্রেট বার করে দেবে বাড়ি থেকে.
রিমি : সেটাই করা উচিত তোমার সাথে...
অর্ক : দিদি..... তোর পায়ে পড়ি
রিমি : থাম... আর ন্যাকামি করতে হবেনা..... যা মা নীচে ডাকছে তোকে. আর শোন্..... আগে গিয়ে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবি....মেন্থল চুইংগাম নিশ্চই পকেটে আছে?
অর্ক হেসে বেরিয়ে গেলো. রিমি এবারে তাকালো অভিষেকের দিকে. অভির দিকে ভুরু কুঁচকে এগিয়ে এলো রিমি. যেন রেগে আছে অভির ওপরেও. অভির কাছে এসে বললো..
রিমি : তুমি স্মোক করো...
অভি : না... না..আসলে...
রিমি : তোমার মা বাবা জানে তুমি স্মোক করো?
অভি : না মানে..... আসলে
রিমি : আসলে কি? ও তাই বলি.... কেন তখন মুখটা অমন ঝিমিয়ে ছিল.. আসলে অচেনা জায়গা তাই ঠিকমতো জায়গা পাচ্ছিলে না স্মোক করার তাইনা...?
অভি : তুমি ভুল বুঝছো... আমি...
রিমি : আমি ভুল বুঝছিনা...ঠিকই বুজছি. এক স্মোকার আরেক স্মোকার কে ঠিক চিনতে পারে. তোমরাও চিনে ফেললে. তাইতো? আর অমনি ঘরে ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে টানছিলে তাইতো? ওটাতো একটা বুদ্ধু. গাধা একটা. কিন্তু তুমিতো ওর দাদার মতন.... তুমি ওকে বারণ করার বদলে......
অভি : আমার কথাটা শুনবে?
রিমি : কি? কি শুনবো?
অভি : আমি জীবনে কোনোদিন স্মোক করিনি? যা করার তোমার ভাই করছিলো.
রিমি : সত্যি? তুমি স্মোকিং করোনি?
অভি : আজ কেন? কোনোদিনই করিনি. যা করার অর্কই করছিলো.
রিমি : উফফফ বাবলুটা না....... দাড়াও ওর হচ্ছে.... কতবার বলেছি ওকে কিন্তু শোনেইনা... ওহ.. by the way.. সরি আসলে...
অভি হেসে : না না.... its ok. তোমার কোনো দোষ নেই.
রিমি হেসে বসলো ওর উল্টো দিকে.
রিমি : আসলে আমার এসব একদম পছন্দ নয়. ভাইকে কতবার বলেছি এসব না করতে... তবু
অভি : এই বয়সটাই অমন.... যেটা না বলবে.. সেটা আরও বেশি করার ইচ্ছে করবে..... আমার অনেক বন্ধুরা তো স্টাইল মারার জন্য শুরু করেছিল এখন আড্ডিক্টেড. খুব খারাপ.... আমিও ওকে বলছিলাম বেশি না করতে.
রিমি : তোমার উচিত ছিল ওর হাত থেকে পুরো সিগেরেটের প্যাকেট টা কেড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়া .
অভি হেসে : সেটা আমি কি করে করবো বলো? আমি ওর থেকে বড়ো হই ঠিকই কিন্তু পরিচিত তো নই. আমার কি সেটা করা মানায়?
রিমি : হুম.... তাইতো.... ওতো তোমার নিজের কেউ নয়.
আবার সব চুপচাপ. দুজন বসে আছে কিন্তু কোনো কথা নেই দুজনেরই মুখে. অভি নিজেকে যতটুকু সম্ভব ওর কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে. নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে. আর আরেকজন কেমন যেন নিজের কোনো চিন্তায় ডুবে আছে.
হঠাৎ নিচের থেকে ডাক এলো... বাবলি... এই বাবলি..
রিমি : আসছি মা....... আমি আসি হ্যা..
রিমি চলে গেলো. ওর চলে যাবার দিকে তাকিয়ে রইলো অভি. সত্যি ঈশ্বর কি দিয়ে বানিয়েছে ওকে. এমন রূপ ! না..... শুধু রূপ নয়.... ব্যবহারও খুব ভালো. কিন্তু একটা ব্যাপার অভিষেক বুঝলোনা. ও ভাবতে লাগলো - আচ্ছা ..... সিগারেট নিয়ে নিজের ভাইয়ের সাথে রাগারাগি করলো, ওকে বকলো, সেটা না হয় বোঝা গেলো... কিন্তু অভির সিগারেট খাওয়া নিয়ে অমন রেগে গেলো কেন? অভিষেক সিগারেট স্মোকিং করুক আর নাই করুক তাতে ওর কি? ওর কি এসে যায়?
অভি : ও তো আমার সামনে..... আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে........
অভির কথার মাঝেই অনিল বললো..
অনিল : জানতাম জানতাম.... সেদিন তোর মুখ চোখ দেখেই বুঝেছিলাম তোমার যা হবার হয়ে গেছে.. ওরে ভুলে যা....সামলা ভাই নিজেকে... নইলে বিয়েবাড়িতে কিন্তু সবার হাতে প্রচন্ড কেলানি খাবি...
অভি : আরে দূর ব্যাটা.... তখন থেকে জ্ঞান দিয়েই চলেছে..... পুরোটা শুনবি তো আগে নাকি?
অনিল : বলেন....
অভি : বাবার যে বন্ধুর মেয়ের কাল এনগেজমেন্ট আর যার জন্য এখানে আমাদের আসা..... সে অন্য কেউ নয়...... ওই. ওই আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে.
ফোনের ওপার থেকে চিল্লানির আওয়াজ...
অনিল : কি !!!!!! কি বলছিস তুই !!! মানে তোর সেই.... সেই নাম না জানা ভালোবাসা আসলে তোর বাবার বন্ধুর মেয়ে? আর কালকে তারই....?
অভি : এবারে বুঝলি কেন আমার এমন অবস্থা?
অনিল : oh my god! ওহ হো..... এমন কোয়েন্সিডেন্স... ভাবাই যায়না. কিন্তু ওকে তো বেহালায় দেখেছিলি? আর এখন তো তোরা সোদপুরে?
অভি : ওদের মামারবাড়ি ওখানেই. বেড়াতে এসেছিলো প্লাস শপিং করতে. তাই....
অনিল : ওহ..... তাহলে তো ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস. এই প্রথম তোর কাউকে এত ভালো লাগলো আর সে কিনা.......
অভি : আমার ভাগ্যটাই এরকম রে......... সেবার কলেজে একজনকে ভালো লাগলো কিন্তু বলতেই পারলাম না..... পরে সে আরেকজনের হয়ে গেলো..... আর এতদিন পরে আবার একজন অচেনা মানুষকে এত ভালো লাগলো.... শুধু ভালো লাগা নয়.. যেন ভালোবাসা... কিন্তু সেও....
অনিল : অভি প্লিস......এসব আর ভাবিস না. দেখ...... যা হবার তো হয়েই গেছে... তুই আর কি করবি বল? সত্যি..... কেমন আজব না এই পৃথিবী? একসময় তুই ভাবছিলি আবার যেন ওর সাথে দেখা হয়ে যাক... কোথাও না কোথাও..... আর আজ...
অভি ম্লান হেসে বললো : আজ মনে হচ্ছে আমাদের আর দেখা না হলেই ভালো হতো..... অন্তত এইভাবে নয়.
অনিল : চিন্তা করিসনা বন্ধু..... সব ঠিক হয়ে যাবে. দেখবি.... এই সময়টাও পেরিয়ে যাবে একসময়.
অভি : হুমমম..... রাখি রে.
অনিল : হ্যা...... শোন? প্লিস নিজেকে সামলে রাখিস....ভালো থাকিস...
অভি : আরে তুই ওতো চিন্তা করিসনা..... আমি ঠিক আছি. রাখলাম....
ফোন রেখে অভি বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলো. একটু আগে গাড়ির মিররে এই ছাদেই রিমিকে এক পলকের জন্য দেখেছিল ও.
মনে মনে তখন বলেছিলো - "একটু পরে হয়তো দেখবি সে নিজেই এসে তোকে হাই বলছে "
সেটাই যে হবে কে জানতো? তবে এই কোইন্সিডেন্স টা কি না হলেই হতোনা? এটাই হতে হলো? ওর সাথে সেদিনের একপলকের একটু দেখা আর আবার হারিয়ে যাওয়াটা মেনে নিয়েছিল অভিষেক. কিন্তু আবার এই ভাবে নতুন করে পরিচয়টা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেনা অভি. এর থেকে যেন অচেনা অজানা থাকাটাই ভালো ছিল.
অভি বাইরে তাকিয়ে ভাবছিলো. এমন সময় পেছন থেকে একটা গলা শুনলো ও.
কি? এখানে দাঁড়িয়ে? বসবেন না.... i mean বসবেনা...
পেছনে তাকিয়ে দেখে রিমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে. আজকেও কি দারুন লাগছে মেয়েটাকে. ওর পাশে এসে দাঁড়ালো রিমি.
রিমি : কি হলো? মুখটা এমন লাগছে কেন? ও.. বুজেছি... গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝামেলা হয়েছে বুঝি? ওরই ফোন ছিল.
অভিষেক হালকা হেসে বললো : না.. না... আমার বন্ধু. আমার বেস্ট ফ্রেন্ড. আমার ওসব গার্লফ্রেইন্ড নেই.
রিমি একবার ওর দিকে তাকিয়ে বললো : ওহ.... আমি ভাবলাম..
অভি হেসে : কি? আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করছিলাম. তাইতো? সেটা হওয়াটা অসম্ভব... থাকলে তবে তো হবে.
রিমি মুচকি হাসলো. অভি তাকিয়ে রইলো ওই হাসি মুখের দিকে. সেটা রিমিও লক্ষ করলো. অভি চোখে ফিরিয়ে নিলো অন্যদিকে.
অভি : ওহ.... বলাই হয়নি..... congratulations.... কালকের জন্য. আগেই জানিয়ে দিলাম.
রিমি : thanks....
আবার নিস্তব্ধ. দুজনেই চুপ আবার. ওদিকে ঘরে দুই মহিলা শাড়ী দেখছে আর গল্প করছে. পাশে ঝিলমিল বসে. আর বারান্দায় দুজন দাঁড়িয়ে. মুখে কোনো কথা নেই.
অভি একবার তাকালো রিমির হাতের দিকে. রিমি নখ দিয়ে অন্য নখে ঘসছে. তাকালো রিমির মুখের দিকে. রিমি বাইরে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে.
অভি : কি? কিছু ভাবছো?
রিমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বললো : না.... কিছুনা. চলো ভেতরে চলো.
রিমি গিয়ে ওদের সাথে জয়েন করলো কিন্তু অভি এই মহিলাদের সাথে বসে কি করবে. তাই এদিক ওদিক হাঁটতে লাগলো. রিমির ঘরটা দেখতে লাগলো. বেশ সাজানো গোছানো ঘর. অভি হাঁটতে হাঁটতে এদিক ওদিক দেখছিলো. হঠাৎ টেবিলে রাখা একটা ছবির দিকে চোখে পড়লো ওর. রিমিরই ছবি. কোথাও বেড়াতে যাবার সময় তোলা. অভি ছবিটার কাছে এগিয়ে গেলো. হাতে তুলে নিলো ছবিটা. মা-বাবার দুই কাঁধে হাত রেখে মাঝে দাঁড়িয়ে লম্বা মেয়েটা. মুখে সরল নিষ্পাপ হাসি. এই হাসিটা যেন আরও আকর্ষণ করলো অভিকে. এই হাসিটা যেন একেবারেই রিমির মন থেকে বেরিয়ে আসা আনন্দের হাসি. কিন্তু এখন যে হাসিটা রিমির মুখে সেটাতে কোথাও যেন সেই আনন্দটা নেই.
অভির কি মনে হলো.... নিজের ফোনের ক্যামেরা অন করে ওই হাসিমুখের মেয়েটার ছবি নিজের ফোনে তুলে নিলো. আবার রেখে দিলো ছবিটা যথাস্থানে.
বাড়িতে সেই ভাবে লোকজন নেই. অভি একটা সোফায় বসে পড়লো. মনটা কোনোদিন এত খারাপ হয়নি. না পাওয়ার কষ্টটা তাও মেনে নেয়া যায়..... কিন্তু পেয়েও একটুর জন্য হারানোর কষ্টটা চেপে রাখা খুব কঠিন.
অভি ফোনে ছবিটা দেখতে লাগলো. জুম্ করলো মুখটাতে. সচ্ছল, প্রাণবন্ত হাসি. মেয়েটার মুখে এতদিন যে হাসিটা দেখে এসেছে অভি সেটাতেই ওর ওপর টান বেড়ে গেছে কিন্তু এখন এই হাসি ভরা মুখটা দেখে যেন ভালোবাসাটা আরও শতগুন বেড়ে গেলো অভির. কেন এমন হচ্ছে ওর? কেন এত টান অনুভব করছে? আচ্ছা... এটাকেই কি..........?
আর ভাবতে চায়না অভি. কারণ সেটা ঠিক নয়. সেটা ভুল. ও তাকালো সামনে বিছানায়. মেয়েটা ঝিলিমিলের সাথে গল্প করছে. অভি আনমনেই তাকিয়ে রইল মেয়েটার দিকে. কিছুই জানেনা ও রিমির সম্বন্ধে. চেনেইনা মেয়েটাকে তবু.... কেন যেন একেই নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে.
কেন? কেন? কেন ওর সাথে এমন হলো? কেন রিমিকে অন্য একজনের হতে হলো? আচ্ছা... সে পারবেতো এই মেয়েটাকে তার মতো ভালোবাসতে? খুশি রাখতে? জানেনা অভিষেক. খুব রাগ হচ্ছে ওই অদৃশ্য শক্তির ওপর. খুব রাগ হচ্ছে ওই ছেলেটার ওপর যে কেড়ে নেবে রিমিকে. যেন ওদের দুজনের মাঝের বাঁধা ওই ছেলেটা.
নাকি? অভি ওদের পথে বাঁধা? কোনটা?
ইশ..... যদি ছেলেটার জায়গায় অভি থাকতো. যদি আজ যা ওই ছেলেটার সাথে হচ্ছে তা অভির সাথে হতো. আজ যদি রিমি ওর হতো...
রিমির দিকে তাকিয়ে ভাবছিলো অভিষেক. এবারে রিমিও তাকালো অভির দিকে. অভি সঙ্গে সঙ্গে চোখে নামিয়ে নিলো.
এমা ! ছি : এসব কি ভাবছে ও? এত স্বার্থপর কবে থেকে হলো ও? শুধু নিজের খুশির কথা নিজের লাভের কথা ভেবে চলেছে ও.
এরকম তো নয় অভি. এরকম হতেও চায়না ও.
উঠে পড়লো অভি. এখানে থাকলে হয়তো আরও এসব চিন্তা আসবে. এখানে না থাকাই ভালো. নীচে গিয়ে বসাটাই ভালো.
নেমে গেলো নীচে. ফিরে আর তাকালোনা পেছনে.
অরিন্দম বাবু আর রঞ্জিত বাবু বসে গল্প করছে. দুই ছোটবেলার বন্ধু.... আজও সেই সরল বন্ধুত্ব একটুও নষ্ট হয়নি. দুজনেই ধনী, বড়োলোক, যাকে বলে হাই স্টেটাস. কিন্তু এখন যেন এরা শুধুই বন্ধু. পাশাপাশি বসে একজন আরেকজনের সাথে গল্পে মত্ত. অভি ওদের দেখে মুচকি হাসলো.
নিচের বাঁ দিকের ঘর থেকে বেরিয়ে এলো অর্ক.
অর্ক : আরে অভিদা... এখানে কি করছো? চলোনা.. আমার ঘরে.
অভি ভাবলো সেটাই ভালো হবে. অন্তত অর্কর সাথে সময় কাটালে কিছুটা ভুলে থাকবে ও.
অভি : হ্যা...... চলো. কোথায় তোমার ঘর?
অর্ক : ঐতো দিদির পাশের ঘরটা. চলো. একটু আড্ডা দি.
অভিকে নিয়ে অর্ক ওর ঘরে গেলো. ছেলেদের ঘর যেমন হয়. একটু গোছানো বেশিটাই অগোছালো. এদিক ওদিক বই ছড়ানো
অর্ক সব বই সরিয়ে বললো : বসো অভিদা.
অভি বসে পড়লো. Ac চালিয়ে অর্কও বিছানার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলো.
অমনি প্যান্ট থেকে একটা সিগেরেট প্যাকেট বার করে অভির দিকে এগিয়ে দিলো অর্ক.
অভি : না গো... থাঙ্কস.... আমি খাইনা..
অর্ক : ওহ..... তা আমি খেলে তোমার কোনো.....
অভি হেসে : না... না... তুমি করোনা.... আমার কোনো প্রবলেম নেই.
অর্ক : থাঙ্কস..... দাড়াও দরজাটা দিয়ে আসি. দিদি যদি জানতে পারে আমি আবারো স্মোক করছি.... প্রচন্ড মারবে.
অর্ক দরজা লাগিয়ে ফেরত এসে ধরালো.
অভি : কতদিন?
অর্ক : কি গো?
অভি : বলছি... কতদিন হলো এটা শুরু করেছো?
অর্ক : ওহ... এটা? দেড় বছর.
অভি : করছো করো..... কিন্তু বেশি খাওয়া অভ্যাস কোরোনা....
অর্ক : আরে নানা..
অভি : তা...... তুমি এখন কি করছো?
অর্ক : বিএসসি 2nd ইয়ার.
অভি : ওহ...... ইয়ে ভালো কথা..... তোমার ইয়ে মানে..... দিদির would be কি করে?
অর্ক : ওহ... জামাই বাবু... মানে হবু জামাই বাবু...উনি ***** কোম্পানিতে ভালো পজিসনে আছে. বাবার তো খুব পছন্দ ওকে আর মায়েরও.... আমারো ভালো লাগে কিন্তু......
অভি : কিন্তু কি?
অর্ক : মানে আমার দিদির থেকে....... এইটুকু বলে ও হাতের ইশারায় যেটা বোঝালো তাতে অভি যা বোঝার বুঝে গেলো. উচ্চতার পার্থক্য.
অভি : ওহ..... তা অনেক ডিফারেন্স?
অর্ক : অনেক নয় তবে.... দেখেই বোঝা যায়. সেদিন যখন দিদির সাথে কথা বলছিলো... তখনি লক্ষ্য করেছি আমি. কেমন অকওয়ার্ড লাগছিলো. আসলে যদিও ব্যাপারটা নরমাল তবু.... মানে....
এমন সময় দরজায় ঠক ঠক..
অর্ক শিগগির বিছানা থেকে নেমে আগে হাতের সিগারেটটা বাইরে ফেলে জিজ্ঞেস করলো কে?
রিমির গলা : আমি দরজা খোল.... এই দুপুর বেলায় দরজা দিয়ে রেখেছিস কেন?
অর্ক : না.. মানে আমরা গল্প করছিলা তো তাই.....
এই বলে দরজা খুলতে এগিয়ে গেলো অর্ক. দরজা খুলতেই ভেতরে ঢুকলো সে.
রিমি : আমরা? আমরা মানে কারা?
বলেই ও তাকালো খাটের দিকে.
রিমি : ওহ. বুঝেছি.
অর্ক : কি বুঝলি?
রিমি : টানছিলি... তাইতো?
অর্ক : এইরে ! ধরে ফেলেছে.... দিদিরে. সোনা দিদি আমার... মাকে বলিসনা.. স্ট্রেট বার করে দেবে বাড়ি থেকে.
রিমি : সেটাই করা উচিত তোমার সাথে...
অর্ক : দিদি..... তোর পায়ে পড়ি
রিমি : থাম... আর ন্যাকামি করতে হবেনা..... যা মা নীচে ডাকছে তোকে. আর শোন্..... আগে গিয়ে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবি....মেন্থল চুইংগাম নিশ্চই পকেটে আছে?
অর্ক হেসে বেরিয়ে গেলো. রিমি এবারে তাকালো অভিষেকের দিকে. অভির দিকে ভুরু কুঁচকে এগিয়ে এলো রিমি. যেন রেগে আছে অভির ওপরেও. অভির কাছে এসে বললো..
রিমি : তুমি স্মোক করো...
অভি : না... না..আসলে...
রিমি : তোমার মা বাবা জানে তুমি স্মোক করো?
অভি : না মানে..... আসলে
রিমি : আসলে কি? ও তাই বলি.... কেন তখন মুখটা অমন ঝিমিয়ে ছিল.. আসলে অচেনা জায়গা তাই ঠিকমতো জায়গা পাচ্ছিলে না স্মোক করার তাইনা...?
অভি : তুমি ভুল বুঝছো... আমি...
রিমি : আমি ভুল বুঝছিনা...ঠিকই বুজছি. এক স্মোকার আরেক স্মোকার কে ঠিক চিনতে পারে. তোমরাও চিনে ফেললে. তাইতো? আর অমনি ঘরে ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে টানছিলে তাইতো? ওটাতো একটা বুদ্ধু. গাধা একটা. কিন্তু তুমিতো ওর দাদার মতন.... তুমি ওকে বারণ করার বদলে......
অভি : আমার কথাটা শুনবে?
রিমি : কি? কি শুনবো?
অভি : আমি জীবনে কোনোদিন স্মোক করিনি? যা করার তোমার ভাই করছিলো.
রিমি : সত্যি? তুমি স্মোকিং করোনি?
অভি : আজ কেন? কোনোদিনই করিনি. যা করার অর্কই করছিলো.
রিমি : উফফফ বাবলুটা না....... দাড়াও ওর হচ্ছে.... কতবার বলেছি ওকে কিন্তু শোনেইনা... ওহ.. by the way.. সরি আসলে...
অভি হেসে : না না.... its ok. তোমার কোনো দোষ নেই.
রিমি হেসে বসলো ওর উল্টো দিকে.
রিমি : আসলে আমার এসব একদম পছন্দ নয়. ভাইকে কতবার বলেছি এসব না করতে... তবু
অভি : এই বয়সটাই অমন.... যেটা না বলবে.. সেটা আরও বেশি করার ইচ্ছে করবে..... আমার অনেক বন্ধুরা তো স্টাইল মারার জন্য শুরু করেছিল এখন আড্ডিক্টেড. খুব খারাপ.... আমিও ওকে বলছিলাম বেশি না করতে.
রিমি : তোমার উচিত ছিল ওর হাত থেকে পুরো সিগেরেটের প্যাকেট টা কেড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়া .
অভি হেসে : সেটা আমি কি করে করবো বলো? আমি ওর থেকে বড়ো হই ঠিকই কিন্তু পরিচিত তো নই. আমার কি সেটা করা মানায়?
রিমি : হুম.... তাইতো.... ওতো তোমার নিজের কেউ নয়.
আবার সব চুপচাপ. দুজন বসে আছে কিন্তু কোনো কথা নেই দুজনেরই মুখে. অভি নিজেকে যতটুকু সম্ভব ওর কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে. নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে. আর আরেকজন কেমন যেন নিজের কোনো চিন্তায় ডুবে আছে.
হঠাৎ নিচের থেকে ডাক এলো... বাবলি... এই বাবলি..
রিমি : আসছি মা....... আমি আসি হ্যা..
রিমি চলে গেলো. ওর চলে যাবার দিকে তাকিয়ে রইলো অভি. সত্যি ঈশ্বর কি দিয়ে বানিয়েছে ওকে. এমন রূপ ! না..... শুধু রূপ নয়.... ব্যবহারও খুব ভালো. কিন্তু একটা ব্যাপার অভিষেক বুঝলোনা. ও ভাবতে লাগলো - আচ্ছা ..... সিগারেট নিয়ে নিজের ভাইয়ের সাথে রাগারাগি করলো, ওকে বকলো, সেটা না হয় বোঝা গেলো... কিন্তু অভির সিগারেট খাওয়া নিয়ে অমন রেগে গেলো কেন? অভিষেক সিগারেট স্মোকিং করুক আর নাই করুক তাতে ওর কি? ওর কি এসে যায়?
চলবে....
কেমন লাগছে বন্ধুরা? জানাবেন.
ভালো লাগলে লাইক, রেপস দিতে পারেন. ধন্যবাদ.