Thread Rating:
  • 43 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance তোমাতে আমাতে দেখা হয়েছিল
#41
[Image: 20200704-094636.png]
(আগের পর্বের পর )


অনিল বললো : মানে? কি বলছিস তুই ! কি কেলেঙ্কারি করলি তুই? 


অভি : ও তো আমার সামনে..... আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে........ 

অভির কথার মাঝেই অনিল বললো.. 

অনিল : জানতাম জানতাম.... সেদিন তোর মুখ চোখ দেখেই বুঝেছিলাম তোমার যা হবার হয়ে গেছে..   ওরে ভুলে যা....সামলা ভাই নিজেকে... নইলে বিয়েবাড়িতে কিন্তু সবার হাতে প্রচন্ড কেলানি খাবি...   

অভি : আরে দূর ব্যাটা....  তখন থেকে জ্ঞান দিয়েই চলেছে..... পুরোটা শুনবি তো আগে নাকি? 

অনিল : বলেন.... 

অভি : বাবার যে বন্ধুর মেয়ের কাল এনগেজমেন্ট আর যার জন্য এখানে আমাদের আসা..... সে অন্য কেউ নয়...... ওই. ওই আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে. 

ফোনের ওপার থেকে চিল্লানির আওয়াজ... 

অনিল : কি !!!!!! কি বলছিস তুই !!! মানে তোর সেই.... সেই নাম না জানা ভালোবাসা আসলে তোর বাবার বন্ধুর মেয়ে? আর কালকে তারই....? 

অভি : এবারে বুঝলি কেন আমার এমন অবস্থা? 

অনিল : oh my god!  ওহ হো..... এমন কোয়েন্সিডেন্স... ভাবাই যায়না. কিন্তু ওকে তো বেহালায় দেখেছিলি? আর এখন তো তোরা সোদপুরে? 

অভি : ওদের মামারবাড়ি ওখানেই.  বেড়াতে এসেছিলো প্লাস শপিং করতে. তাই....    

অনিল : ওহ..... তাহলে তো ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস. এই প্রথম তোর কাউকে এত ভালো লাগলো আর সে কিনা....... 

অভি : আমার ভাগ্যটাই এরকম রে......... সেবার কলেজে একজনকে ভালো লাগলো কিন্তু বলতেই পারলাম না..... পরে সে আরেকজনের হয়ে গেলো..... আর এতদিন পরে আবার একজন অচেনা মানুষকে এত ভালো লাগলো.... শুধু ভালো লাগা নয়.. যেন ভালোবাসা... কিন্তু সেও.... 

অনিল : অভি প্লিস......এসব আর ভাবিস না. দেখ...... যা হবার তো হয়েই গেছে... তুই আর কি করবি বল? সত্যি..... কেমন আজব না এই পৃথিবী? একসময় তুই ভাবছিলি আবার যেন ওর সাথে দেখা হয়ে যাক... কোথাও না কোথাও..... আর আজ... 

অভি ম্লান হেসে বললো : আজ মনে হচ্ছে আমাদের আর দেখা না হলেই ভালো হতো..... অন্তত এইভাবে নয়. 

অনিল : চিন্তা করিসনা বন্ধু..... সব ঠিক হয়ে যাবে. দেখবি.... এই সময়টাও পেরিয়ে যাবে একসময়. 

অভি : হুমমম..... রাখি রে. 

অনিল : হ্যা...... শোন? প্লিস নিজেকে সামলে রাখিস....ভালো থাকিস... 

অভি : আরে তুই ওতো চিন্তা করিসনা..... আমি ঠিক আছি. রাখলাম.... 

ফোন রেখে অভি বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলো. একটু আগে গাড়ির মিররে এই ছাদেই রিমিকে এক পলকের জন্য দেখেছিল ও. 
মনে মনে তখন বলেছিলো - "একটু পরে হয়তো দেখবি সে নিজেই এসে তোকে হাই বলছে "
সেটাই যে হবে কে জানতো? তবে এই কোইন্সিডেন্স টা কি না হলেই হতোনা? এটাই হতে হলো? ওর সাথে সেদিনের একপলকের একটু দেখা আর আবার হারিয়ে যাওয়াটা মেনে নিয়েছিল অভিষেক. কিন্তু আবার এই ভাবে নতুন করে পরিচয়টা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেনা অভি. এর থেকে যেন অচেনা অজানা থাকাটাই ভালো ছিল. 

অভি বাইরে তাকিয়ে ভাবছিলো. এমন সময় পেছন থেকে একটা গলা শুনলো ও. 

কি? এখানে দাঁড়িয়ে? বসবেন না.... i mean বসবেনা... 

পেছনে তাকিয়ে দেখে রিমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে. আজকেও কি দারুন লাগছে মেয়েটাকে. ওর পাশে এসে দাঁড়ালো রিমি. 

রিমি : কি হলো? মুখটা এমন লাগছে কেন? ও.. বুজেছি... গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝামেলা হয়েছে বুঝি? ওরই ফোন ছিল. 

অভিষেক হালকা হেসে বললো : না.. না... আমার বন্ধু. আমার বেস্ট ফ্রেন্ড. আমার ওসব গার্লফ্রেইন্ড নেই. 

রিমি একবার ওর দিকে তাকিয়ে বললো : ওহ.... আমি ভাবলাম.. 

অভি হেসে : কি? আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করছিলাম. তাইতো? সেটা হওয়াটা অসম্ভব... থাকলে তবে তো হবে. 

রিমি মুচকি হাসলো. অভি তাকিয়ে রইলো ওই হাসি মুখের দিকে. সেটা রিমিও লক্ষ করলো. অভি চোখে ফিরিয়ে নিলো অন্যদিকে. 

অভি : ওহ.... বলাই হয়নি..... congratulations.... কালকের জন্য. আগেই জানিয়ে দিলাম. 

রিমি : thanks.... 

আবার নিস্তব্ধ. দুজনেই চুপ আবার. ওদিকে ঘরে দুই মহিলা শাড়ী দেখছে আর গল্প করছে. পাশে ঝিলমিল বসে. আর বারান্দায় দুজন দাঁড়িয়ে. মুখে কোনো কথা নেই. 

অভি একবার তাকালো রিমির হাতের দিকে. রিমি নখ দিয়ে অন্য নখে ঘসছে. তাকালো রিমির মুখের দিকে. রিমি বাইরে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে. 

অভি : কি? কিছু ভাবছো? 

রিমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বললো : না.... কিছুনা. চলো ভেতরে চলো. 

রিমি গিয়ে ওদের সাথে জয়েন করলো কিন্তু অভি এই মহিলাদের সাথে বসে কি করবে. তাই এদিক ওদিক হাঁটতে লাগলো. রিমির ঘরটা দেখতে লাগলো. বেশ সাজানো গোছানো ঘর. অভি হাঁটতে হাঁটতে এদিক ওদিক দেখছিলো. হঠাৎ টেবিলে রাখা একটা ছবির দিকে চোখে পড়লো ওর. রিমিরই ছবি. কোথাও বেড়াতে যাবার সময় তোলা. অভি ছবিটার কাছে এগিয়ে গেলো. হাতে তুলে নিলো ছবিটা. মা-বাবার দুই কাঁধে হাত রেখে মাঝে দাঁড়িয়ে লম্বা মেয়েটা. মুখে সরল নিষ্পাপ হাসি. এই হাসিটা যেন আরও আকর্ষণ করলো অভিকে. এই হাসিটা যেন একেবারেই রিমির মন থেকে বেরিয়ে আসা আনন্দের হাসি. কিন্তু এখন যে হাসিটা রিমির মুখে সেটাতে কোথাও যেন সেই আনন্দটা নেই. 

অভির কি মনে হলো.... নিজের ফোনের ক্যামেরা অন করে ওই হাসিমুখের মেয়েটার ছবি নিজের ফোনে তুলে নিলো. আবার রেখে দিলো ছবিটা যথাস্থানে. 

বাড়িতে সেই ভাবে লোকজন নেই. অভি একটা সোফায় বসে পড়লো. মনটা কোনোদিন এত খারাপ হয়নি. না পাওয়ার কষ্টটা তাও মেনে নেয়া যায়..... কিন্তু পেয়েও একটুর জন্য হারানোর কষ্টটা চেপে রাখা খুব কঠিন. 

অভি ফোনে ছবিটা দেখতে লাগলো. জুম্ করলো মুখটাতে. সচ্ছল, প্রাণবন্ত হাসি. মেয়েটার মুখে এতদিন যে হাসিটা দেখে এসেছে অভি সেটাতেই ওর ওপর টান বেড়ে গেছে কিন্তু এখন এই হাসি ভরা মুখটা দেখে যেন ভালোবাসাটা আরও শতগুন বেড়ে গেলো অভির. কেন এমন হচ্ছে ওর? কেন এত টান অনুভব করছে? আচ্ছা... এটাকেই কি..........? 

আর ভাবতে চায়না অভি. কারণ সেটা ঠিক নয়. সেটা ভুল. ও তাকালো সামনে বিছানায়. মেয়েটা ঝিলিমিলের সাথে গল্প করছে. অভি আনমনেই তাকিয়ে রইল মেয়েটার দিকে. কিছুই জানেনা ও রিমির সম্বন্ধে. চেনেইনা মেয়েটাকে তবু....  কেন যেন একেই নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে. 
কেন? কেন? কেন ওর সাথে এমন হলো? কেন রিমিকে অন্য একজনের হতে হলো? আচ্ছা... সে পারবেতো এই মেয়েটাকে তার মতো ভালোবাসতে? খুশি রাখতে? জানেনা অভিষেক. খুব রাগ হচ্ছে ওই অদৃশ্য শক্তির ওপর. খুব রাগ হচ্ছে ওই ছেলেটার ওপর যে কেড়ে নেবে রিমিকে. যেন ওদের দুজনের মাঝের বাঁধা ওই ছেলেটা. 

নাকি? অভি ওদের পথে বাঁধা? কোনটা? 

ইশ..... যদি  ছেলেটার জায়গায় অভি থাকতো. যদি আজ যা ওই ছেলেটার সাথে হচ্ছে তা অভির সাথে হতো. আজ যদি রিমি ওর হতো... 

রিমির দিকে তাকিয়ে ভাবছিলো অভিষেক. এবারে রিমিও তাকালো অভির দিকে. অভি সঙ্গে সঙ্গে চোখে নামিয়ে নিলো. 

এমা ! ছি : এসব কি ভাবছে ও? এত স্বার্থপর কবে থেকে হলো ও? শুধু নিজের খুশির কথা নিজের লাভের কথা ভেবে চলেছে ও.
এরকম তো নয় অভি. এরকম হতেও চায়না ও. 

উঠে পড়লো অভি. এখানে থাকলে হয়তো আরও এসব চিন্তা আসবে. এখানে না থাকাই ভালো. নীচে গিয়ে বসাটাই ভালো. 

নেমে গেলো নীচে. ফিরে আর তাকালোনা পেছনে. 

অরিন্দম বাবু আর রঞ্জিত বাবু বসে গল্প করছে. দুই ছোটবেলার বন্ধু.... আজও সেই সরল বন্ধুত্ব একটুও নষ্ট হয়নি. দুজনেই ধনী, বড়োলোক, যাকে বলে হাই স্টেটাস. কিন্তু এখন যেন এরা শুধুই বন্ধু. পাশাপাশি বসে একজন আরেকজনের সাথে গল্পে মত্ত. অভি ওদের দেখে মুচকি হাসলো. 

নিচের বাঁ দিকের ঘর থেকে বেরিয়ে এলো অর্ক. 

অর্ক : আরে অভিদা... এখানে কি করছো? চলোনা.. আমার ঘরে. 

অভি ভাবলো সেটাই ভালো হবে. অন্তত অর্কর সাথে সময় কাটালে কিছুটা ভুলে থাকবে ও. 

অভি : হ্যা...... চলো. কোথায় তোমার ঘর? 

অর্ক : ঐতো দিদির পাশের ঘরটা. চলো. একটু আড্ডা দি.

অভিকে নিয়ে অর্ক ওর ঘরে গেলো. ছেলেদের ঘর যেমন হয়. একটু গোছানো বেশিটাই অগোছালো. এদিক ওদিক বই ছড়ানো

অর্ক সব বই সরিয়ে বললো : বসো অভিদা. 

অভি বসে পড়লো.  Ac চালিয়ে অর্কও বিছানার পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলো. 

অমনি প্যান্ট থেকে একটা সিগেরেট প্যাকেট বার করে অভির দিকে এগিয়ে দিলো অর্ক. 

অভি : না গো... থাঙ্কস.... আমি খাইনা.. 

অর্ক : ওহ..... তা আমি খেলে তোমার কোনো..... 

অভি হেসে : না... না... তুমি করোনা.... আমার কোনো প্রবলেম নেই. 

অর্ক : থাঙ্কস..... দাড়াও দরজাটা দিয়ে আসি. দিদি যদি জানতে পারে আমি আবারো স্মোক করছি.... প্রচন্ড মারবে. 

অর্ক দরজা লাগিয়ে ফেরত এসে ধরালো. 

অভি : কতদিন? 

অর্ক : কি গো? 

অভি : বলছি... কতদিন হলো এটা শুরু করেছো? 

অর্ক : ওহ... এটা? দেড় বছর. 

অভি : করছো করো..... কিন্তু বেশি খাওয়া অভ্যাস কোরোনা.... 

অর্ক : আরে নানা..    

অভি : তা...... তুমি এখন কি করছো? 

অর্ক : বিএসসি 2nd ইয়ার. 

অভি : ওহ...... ইয়ে ভালো কথা..... তোমার ইয়ে মানে..... দিদির would be কি করে? 

অর্ক : ওহ... জামাই  বাবু... মানে হবু জামাই  বাবু...উনি ***** কোম্পানিতে ভালো পজিসনে আছে.  বাবার তো খুব পছন্দ ওকে আর মায়েরও.... আমারো ভালো লাগে কিন্তু......

অভি : কিন্তু কি? 

অর্ক : মানে আমার দিদির থেকে.......  এইটুকু বলে ও হাতের ইশারায় যেটা বোঝালো তাতে অভি যা বোঝার বুঝে গেলো.  উচ্চতার পার্থক্য. 

অভি : ওহ..... তা অনেক ডিফারেন্স? 

অর্ক : অনেক নয় তবে....  দেখেই বোঝা যায়. সেদিন যখন দিদির সাথে কথা বলছিলো... তখনি লক্ষ্য করেছি আমি. কেমন অকওয়ার্ড লাগছিলো. আসলে যদিও ব্যাপারটা নরমাল তবু.... মানে.... 


এমন সময় দরজায় ঠক ঠক..   

অর্ক শিগগির বিছানা থেকে নেমে আগে হাতের সিগারেটটা বাইরে ফেলে জিজ্ঞেস করলো কে? 

রিমির গলা : আমি দরজা খোল.... এই দুপুর বেলায় দরজা দিয়ে রেখেছিস কেন? 

অর্ক : না.. মানে আমরা গল্প করছিলা তো তাই..... 

এই বলে দরজা খুলতে এগিয়ে গেলো অর্ক. দরজা খুলতেই ভেতরে ঢুকলো সে. 

রিমি : আমরা? আমরা মানে কারা?  

বলেই ও তাকালো খাটের দিকে. 

রিমি : ওহ. বুঝেছি. 

অর্ক : কি বুঝলি? 

রিমি : টানছিলি... তাইতো? 

অর্ক : এইরে ! ধরে ফেলেছে....   দিদিরে.  সোনা দিদি আমার... মাকে বলিসনা..   স্ট্রেট বার করে দেবে বাড়ি থেকে. 

রিমি : সেটাই করা উচিত তোমার সাথে... 

অর্ক : দিদি..... তোর পায়ে পড়ি 

রিমি : থাম...  আর ন্যাকামি করতে হবেনা..... যা মা নীচে ডাকছে তোকে. আর শোন্..... আগে গিয়ে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবি....মেন্থল চুইংগাম নিশ্চই পকেটে আছে? 

অর্ক হেসে বেরিয়ে গেলো. রিমি এবারে তাকালো অভিষেকের দিকে. অভির দিকে ভুরু কুঁচকে এগিয়ে এলো রিমি. যেন রেগে আছে অভির ওপরেও.  অভির কাছে এসে বললো.. 

রিমি : তুমি স্মোক করো... 

অভি : না... না..আসলে... 

রিমি : তোমার মা বাবা জানে তুমি স্মোক করো? 

অভি : না মানে..... আসলে 

রিমি : আসলে কি? ও তাই বলি.... কেন তখন মুখটা অমন ঝিমিয়ে ছিল..   আসলে অচেনা জায়গা তাই ঠিকমতো জায়গা পাচ্ছিলে না স্মোক করার তাইনা...? 

অভি : তুমি ভুল বুঝছো... আমি... 

রিমি : আমি ভুল বুঝছিনা...ঠিকই বুজছি. এক স্মোকার আরেক স্মোকার কে ঠিক চিনতে পারে. তোমরাও চিনে ফেললে. তাইতো? আর অমনি ঘরে ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে টানছিলে তাইতো? ওটাতো একটা বুদ্ধু. গাধা একটা.    কিন্তু তুমিতো ওর দাদার মতন.... তুমি ওকে বারণ করার বদলে......  

অভি : আমার কথাটা শুনবে? 

রিমি : কি? কি শুনবো? 

অভি : আমি জীবনে কোনোদিন স্মোক করিনি? যা করার তোমার ভাই করছিলো. 

রিমি : সত্যি? তুমি স্মোকিং করোনি? 

অভি : আজ কেন? কোনোদিনই করিনি. যা করার অর্কই করছিলো. 

রিমি : উফফফ বাবলুটা না....... দাড়াও ওর হচ্ছে.... কতবার বলেছি ওকে কিন্তু শোনেইনা...  ওহ.. by the way.. সরি আসলে... 

অভি হেসে : না না.... its ok. তোমার কোনো দোষ নেই. 

রিমি হেসে বসলো ওর উল্টো দিকে. 

রিমি : আসলে আমার এসব একদম পছন্দ নয়. ভাইকে কতবার বলেছি এসব না করতে... তবু 

অভি : এই বয়সটাই অমন.... যেটা না বলবে.. সেটা আরও বেশি করার ইচ্ছে করবে..... আমার অনেক বন্ধুরা তো স্টাইল মারার জন্য শুরু করেছিল এখন আড্ডিক্টেড. খুব খারাপ.... আমিও ওকে বলছিলাম বেশি না করতে. 

রিমি : তোমার উচিত ছিল ওর হাত থেকে পুরো সিগেরেটের প্যাকেট টা কেড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়া . 

অভি হেসে : সেটা আমি কি করে করবো বলো? আমি ওর থেকে বড়ো হই ঠিকই কিন্তু পরিচিত তো নই. আমার কি সেটা করা মানায়?

রিমি  : হুম.... তাইতো.... ওতো তোমার নিজের কেউ নয়. 

আবার সব চুপচাপ. দুজন বসে আছে কিন্তু কোনো কথা নেই দুজনেরই মুখে. অভি নিজেকে যতটুকু সম্ভব ওর কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে. নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে. আর আরেকজন কেমন যেন নিজের কোনো চিন্তায় ডুবে আছে. 

হঠাৎ নিচের থেকে ডাক এলো... বাবলি... এই বাবলি.. 

রিমি : আসছি মা....... আমি আসি হ্যা.. 

রিমি চলে গেলো. ওর চলে যাবার দিকে তাকিয়ে রইলো অভি. সত্যি ঈশ্বর কি দিয়ে বানিয়েছে ওকে. এমন রূপ ! না..... শুধু রূপ নয়.... ব্যবহারও খুব ভালো. কিন্তু একটা ব্যাপার অভিষেক  বুঝলোনা.  ও ভাবতে লাগলো - আচ্ছা ..... সিগারেট নিয়ে নিজের ভাইয়ের সাথে রাগারাগি করলো,  ওকে বকলো,  সেটা না হয় বোঝা গেলো... কিন্তু অভির সিগারেট খাওয়া নিয়ে অমন রেগে গেলো কেন? অভিষেক সিগারেট স্মোকিং করুক আর নাই করুক তাতে ওর কি? ওর কি এসে যায়? 


চলবে....   

[Image: 20200711-015546.png]
কেমন লাগছে বন্ধুরা? জানাবেন. 
ভালো লাগলে লাইক, রেপস দিতে পারেন. ধন্যবাদ. 
[+] 8 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
হমম কিছু একটা চলছে রিমির মনেও। কালই তো এনগেজমেন্ট, তার আগে চিড়ে ভিজবে?
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
#43
Ba darun update .... Kub sundor cholche
[+] 2 users Like dreampriya's post
Like Reply
#44
খুব সুন্দর হচ্ছে গল্পটা. অভিষেকের মনের অবস্থাটা, নানা রকম চিন্তা গুলো খুব স্পষ্ট ভাবে ফুটিয়ে তুলছেন আপনি.
ওদিকে রিমিকে নিয়েও একটা confusion তৈরী হচ্ছে. এবারে কি হয় জানতে হবে.
Reps added
[+] 3 users Like Avishek's post
Like Reply
#45
ধন্যবাদ -Mr Fantastic, dreampriya, Avishek❤️
গল্পটি আপনাদের ভালো লাগছে জেনে খুব ভালো লাগছে আমার.
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#46
আজ সন্ধেবেলায় নতুন আপডেট আসবে
Like Reply
#47
[Image: 20200704-094648.png]


দুপুরে দারুন খাওয়া দাওয়া হলো. রিমির মায়ের রান্নার হাত অসাধারণ. কিন্তু অভি বেশি কিছু নিচ্ছিলোনা. ওর মাও অবাক হলো. ছেলে তো এমনিতে এর থেকে বেশি খায়. হয়তো অন্য জায়গা বলে হয়তো. 


দীপালি দেবী বললেন : একি অভি.... তুমি তো নিচ্ছই না কিছু.... আরেকটা মাছ দি? 

অভি হেসে বলল : না কাকিমা.... ঠিক আছে... 

উনি হেসে বললেন : আরে লজ্জা পেয়েওনা তো... নিজের বাড়ি মনে করো. বাবলি.... ওকে মাংস দেতো. 

রিমি নিজেই এবারে ওর পাতে তিন পিস মাংস দিলো. আর প্রায় আদেশের সুরে বললো : খাও. 

অভি আর না বলতে পারলোনা. খেতে লাগলো. ঠিক ওর উল্টোদিকেই সে বসে আছে আর কাকিমা মানে অভির মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে খাচ্ছে. 

মজার ব্যাপার হলো যে খাবোনা.. খাবোনা বলছিলো.... সে আরও অনেকটা খেয়ে ফেললো. 

এবারে একটু ঘুমোনোর পালা. এমনিতে কে কোথায় সবে সব ঠিক হয়ে গেছে. অভিষেক শোবে অর্কর ঘরে, ঝিলমিল তো রিমি দিদিকে ছাড়বেই না. খুব বন্ধুত্ব হয়ে গেছে ওর সাথে. তাই রিমি ওকে ওর ঘরে নিয়ে গেলো. আর দুজনেরই বাবা নিচের গেস্ট রুমে শোবে আর ওদের মায়েরা আর অন্যান্য মহিলারা আর শোবেনা. গল্প করেই দুপুরটা কাটাবে. ওরা নিচেই ড্রয়িং রুমে গল্প করতে লাগলো. 

অভি আর অর্ক শুয়ে পড়েছে. আগেই জামা পাল্টে ও অন্য জামা প্যান্ট পরে নিয়েছে. চুপচাপ শুয়ে রইলো অভি. অর্ক মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে. কিন্তু অভির চোখে ঘুম নেই. অভি ভাবছে এখান থেকে চলে যাই.... আর থাকতে ইচ্ছে করছেনা.. .  কেন এলো এখানে? না আসলেই তো ভালো ছিল. ধুর..... এ কেমন সিচুয়েশন রে বাবা? না পারছে এগোতে না পারছে পিছোতে. 

সত্যি..  একদিনেই যেভাবে রিমি অভির বাবা মাকে, ওর ছোট বোনকে আপন করে নিলো, খুব ভালো মেয়েটা. এমনকি অভিষেকের ওপরেও যেভাবে অধিকার ফলিয়ে জোর করে তখন মাংস খেতে বললো, ওর ওপর সিগারেটের ব্যাপার নিয়ে রেগে গেলো. আশ্চর্য....ওরা তো চেনেনা একে অপরকে.... তাহলে এই অধিকার কেন? 

সত্যি..... কিশোর কুমার ঠিকই গেয়ে গেছিলেন. নারী চরিত্র বেজায় জটিল, কিছুই বুঝতে পারবেনা, এরা লোন ল মানে না..... তাই ওদের নাম ললনা .

কিন্তু গানের একটা লাইন হঠাৎ ওর মাথায় এলো  "তোমার ওপর যখন ওরা ভীষণ রকম রাগ করে... বুঝবে ভালোবাসার লক্ষণ"

তাহলে কি............ ধুর ! যত্তসব.... কি সব যে ভাবছে অভি. ওটা একটা গান. শুধুই গান. হাসি পেয়েও গেলো অভির. চোখে বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করলো অভি. একসময় ঘুমিয়ে পড়লো সে. 

 ৬ টা নাগাদ ঘুম ভাঙলো ওর. বেশ অন্ধকার অন্ধকার হয়ে এসেছে. অভি পাশে ফিরে দেখলো. অর্ক ঘুমিয়ে. ওকে না জাগিয়ে আস্তে করে উঠলো অভিষেক. হাতে মোবাইলটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো আস্তে করে দরজা খুলে. পাশের ঘরের দরজা দেওয়া. এক পলক ওই দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো অভি. তারপরে ভাবলো একটু অনিলের সাথে কথা বলা যাক. সেই ভেবে ও দেখলো সিঁড়ির দরজা খোলা. ও ভাবলো ছাদে গিয়ে কিছুক্ষন একান্তে সময় কাটাবে. সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলো অভি. ছাদের দরজার সামনে এসেই চমকে উঠলো অভি. ছাদের মাঝখানে রাখা দোলনায় বসে দুলছে রিমি. মুখ অন্যদিকে তাই অভিকে দেখতে পায়নি ও. 

অভিষেক ভাবলো আর দাড়াবেনা চলে যাবে. সেই ভেবে নামার জন্য পা বাড়িয়েছে এমন সময় পেছন থেকে ডাকলো রিমি. 

রিমি : উঠে পড়েছো? 

পেছন ফিরে তাকালো অভি. অপ্রস্তুত ভাবটা কাটিয়ে হেসে বললো : হ্যা.....তুমিও উঠে পড়েছো. 

রিমি কোনো জবাব দিলোনা. শুধু একটু হাসলো. ওকে ভেতরে আসতে বললো. অভি কি আর করবে. যেতেই হলো ছাদে. অভি এদিক ওদিক হাঁটতে লাগলো. ছাদটা বেশ সুন্দর. গাছ ফুলে ভর্তি. সেগুলোই দেখছে. বা বলা যেতে পারে ছাদের ওই মাঝখানটায় তাকাবেনা বলেই এদিক ওদিক দেখার অভিনয় করছে. 

অভি : বাহ্..... খুব সুন্দর সাজিয়েছে ছাদটা. কে করেছে? 

রিমি : আমি আর বাবা. 

অভি : ওহ... বাহ্... খুব সুন্দর. 

রিমি : এসো.... বসনা...  

অভি : ও.... ও... ওখানে? 

রিমি অভির ওই ঘাবড়ে যাওয়া মুখ দেখে হেসে বললো : হ্যা... এই দোলনায়... কেন... ভয় লাগে নাকি? 

অভি হেসে : না না ভয়.... ভয় কিসের...  

রিমি : তাহলে বসো. 

অভিষেক এগিয়ে গিয়ে বসলো দোলনায়. কিন্তু যতটা সম্ভব রিমির থেকে দূরে. একেবারে ওপাশে সেটে. রিমি ওকে এইভাবে দেখে মুচকি হেসে বললো : রিলাক্স হয়ে বসো. 

অভি : না... ঠিকাছে.  অভি আসলে এড়িয়ে যেতে চাইছে ওকে. এটাই হয়তো ওর এখন একমাত্র উপায়. 

রিমি আবার দুলতে লাগলো. খুবই নিচু স্বরে ও একটা গান গাইছে. অভির মনে হলো রবীন্দ্রসংগীত. 

কিছুক্ষন দুজনের মধ্যে কোনো কথা নেই. হঠাৎ করে রিমি বললো : আমি ঘুমোই নি. 

অভি : হ্যা.... কি? 

রিমি হেসে : তখন আমায় জিজ্ঞেস করলেনা... উঠে পড়েছি কিনা.... আমি উঠেই ছিলাম. ঘুম আসছিলোনা.... তাই ভাবলাম এখানে এসে বসি. 

অভি : ওহ..... (তারপরে কিছুক্ষন থেমে ও বললো ) আমিও ঘুমোয়নি.... মানে.... ঘুম আসছিলোনা. 

রিমি ওর দিকে না তাকিয়েই হেসে বললো : তোমার আর আমার ঘুম না আসার কারণ কিন্তু ভিন্ন. 

অভি : তাই? কেমন শুনি? 

রিমি : তোমার ঘুম না আসার কারণ নতুন জায়গা, নতুন লোকজন, নতুন ঘর, বিছানা বালিশ....... আর আমার ঘুম না আসার কারণ আমার পুরোনো এই বাড়ি, ঘর, বিছানা বালিশ, লোকজন সবাইকে ছেড়ে একেবারে অন্য একটা জায়গায় চলে যেতে হবে কিছুদিন পর. সেখানে আবার নতুন জায়গা, নতুন লোকজন, নতুন বিছানা, বালিশ.....   এইগুলো ভেবেই কেমন একটা ভয় ভয় লাগছে. তখন তো আমি আর চাইলেই আর এই ছাদে চলে আসতে পারবোনা.... পারবোনা এই ফুলগুলোতে জল দিতে, পারবোনা ওদের গন্ধ শুকতে. পারবোনা বাবা মাকে দেখতে. 

অভিষেক : তা কেন..... সেতো তুমি ভিডিও কল করেই কথা বলতে পারবে ওদের সাথে. 

রিমি : হ্যা..   দেখতে হয়তো পাবো.... কিন্তু ছুঁতে কি পারবো? পারবো মায়ের হাত ধরতে? বাবার কাঁধে মাথা রাখতে? ভাইয়ের কান ধরতে? পারবোনা....

অভি এবারে সোজা তাকালো রিমির মুখের দিকে. এ এক নতুন রিমিকে দেখছে অভি. এই রিমি কে অভি চেনেনা. খুব ইচ্ছে করছে রিমির হাতে হাত রাখতে কিন্তু নিজেকে আটকে নিলো অভি. 

রিমি মুচকি হেসে বললো : জানি এসব ছেলেমানুষি...... এখন এসব মনে হচ্ছে... আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে....... কিন্তু.....  কিন্তু আমি যা ভাবছি... সেগুলো ভুল তো কিছু নয়. 

অভিষেক : না...... একটুও নয়. বাবা মা সন্তানের কাছে কি সেটা বলে বোঝানো যায়না... আমরা হয়তো বাবা মায়ের সাথে সবসময় থাকি বলে বুঝতে পারিনা ওদের ভালোবাসা. কখনো ঝগড়া হলে তাদের ওপর রেগে যাই...    কিন্তু....   কিন্তু ওদের থেকে কখনো দূরে গেলে বুঝতে পারি বাবার মায়ের টান কি. তুমি মোটেও ছেলেমানুষি করছোনা রিমি..... এটাই ন্যাচারাল. 

রিমি তাকালো অভির দিকে. সেই দৃষ্টি যেন সামনে বসে থাকা ছেলেটার মুখ দেখে কিছু পড়ার চেষ্টা করছে. ওই চোখে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারলোনা অভিষেক. মুখ ঘুরিয়ে নিলো সামনে. 

অভি : তা..... কতদিনের পরিচয় তোমাদের? মানে কতবার দেখা করেছো তোমরা? 

রিমি : এক 

অভি : কি? মাত্র একবার? 

রিমি : ওর কাজের নাকি খুব চাপ.....  দেখা করার সময় হচ্ছেনা.... 

অভি : মাত্র একদিনের দেখাতে তুমি কি বুঝলে ওর সম্বন্ধে? 

রিমি : কি আবার? ভালো... ভদ্র শিক্ষিত একটা ছেলে. 

অভি : ওহ..... একবারের আলাপেই তুমি বুঝে গেলে সে খুবই ভদ্র, ভালো ছেলে তাইতো? একবারের আলাপেই বুঝি বোঝা যায় কে কেমন? 

রিমি হেসে : না তা অবশ্যই নয়...  কিন্তু ওকে যতটা দেখলাম, কথা বললাম তাতে বুঝেছি ও খারাপ নয়.... আর যাই হোক.... হটাত করে একজনকে নিয়ে খারাপ কিছু ভাবা কি ঠিক? এই যে আমি তোমাকে দেখলাম. তা আমার কি উচিত তোমার সম্বন্ধে প্রথমেই খারাপ কিছু ভেবে নেয়া? তাছাড়া মেসোমশাই দের পরিচিত. বাবার মায়ের দুজনেরই ওকে অনেক ভালো লাগলো. ভাইয়েরও ওকে ভালো লাগলো.. 

অভি ওর কথার মাঝেই রিমিকে জিজ্ঞেস করলো : আর তোমার?

রিমি এবারে তাকালো অভিষেকের দিকে. অভিষেক সোজা তাকিয়ে রিমির দিকে. মুখটা কঠোর. এবারে রিমি পারলোনা ওই চোখে তাকিয়ে থাকতে. এবারে ও মুখ সরিয়ে নিলো. 

নিচ থেকে ডাক শুনলো ওরা. 

বাবলি চা খবিতো? 

হ্যা মা.... করো আসছি..  

আচ্ছা... 

রিমি বললো  : চলো.... নীচে যাই.. 

অভিষেক : আমি আমার জবাবটা কিন্তু পেলাম না. 

রিমি এড়িয়ে যাবে ভেবেছিলো কিন্তু অভিকে এড়াতে পারলোনা ও. অভি এখনও তাকিয়ে ওর দিকে. 

রিমি হেসে বললো : ভা... ভা ভালোই তো.  খুব ভালো লাগলো ওকে. 

অভিষেক : তাই? সত্যি? তোমার মুখ দেখে কিন্তু তা মনে হচ্ছেনা... . 

রিমি : কি... কি বলছো? ধ্যাৎ চলো নীচে. 

অভি : রিমি..... হ্যা আমরা আজই হয়তো একে ওপরের  সাথে পরিচিত হলাম, হয়তো আজই চিনলাম একে ওপরের সাথে. কিন্তু তোমার একজন বন্ধু হিসেবেই জিজ্ঞেস করছি.....  তুমি খুশি তো? 
দেখো বিয়েটা তোমার...  সারা জীবন তুমি কাটাবে তার সাথে. আমি কখনোই বলছিনা যে অপরিচিত মানেই সে খারাপ মানুষ. হতে পারে তাকেও তোমাকে ভালো লেগেছে, হতে পারে সে তোমাকে ভালোবাসে, সারা জীবন খুশি রাখবে... . হতে পারে সেও তোমাকে প্রথমবার দেখে আমার মতো....   

এইটুকু বলেই নিজেকে সামলে নিলো অভিষেক. 

রিমি : কি? কি বললে? 

অভি : না... কিছুনা...  ছাড়ো...  চলো 

রিমি : দাড়াও...... কি বলছিলে বলো. 

অভিষেক আবার তাকালো ওর দিকে. রিমি জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে ওর দিকে. অভির বুকটা আবার ধুক ধুক করছে... আবার বুকে একটা চাপ অনুভব করছে ও. 

অভি বললো : আচ্ছা ধরো...... হঠাৎ করে তোমার একজনকে খুব ভালো লেগে গেলো...... তুমি হয়তো তাকে চেনোনা জানোনা... কিছুই জানোনা তার সম্বন্ধে.... কিন্তু তোমার মনে হতো লাগলো... এই....  এই সেই মানুষটা যাকে আমি এতদিন খুঁজেছি. আজ তাকে পেলাম. তোমার হবু স্বামীকে দেখে কি এই অনুভূতিটা তোমার মধ্যে এসেছিলো? মনে হয়েছিল একে ছাড়া থাকাটা সম্ভব নয়? সবসময় ওই মুখটা চোখের সামনে ভাসছিলো? মনে হচ্ছিলো বুকের বাঁ দিকটা কেমন ব্যাথা হচ্ছে? 

অভি খুব কাছে চলে এসেছে রিমির. রিমি অভিষেকের চোখে তাকিয়ে সব শুনছে. 

অভি : বলোনা? এর একটাও মনে হয়েছে? মনে হয়েছে একে পেলে নিজের সব  কিছু দিয়ে ভালোবাসবো..... কোনোদিন কোনো ক্ষতি হতে দেবোনা ওর....  বলোনা? মনে হয়েছে? 

রিমি : আম... আমি.... আ... আ ... আমি মানে...... 

কি অদ্ভুত তাইনা? যে ছেলেটা মেয়েদের সামনে কথা বলতে ভয় পেতো, তোতলাতে..... আজ সে একটানে এতগুলো কথা বলে ফেললো আর আজ এই প্রথমবার সামনের মানুষটার মুখে কোনো উত্তর নেই. 

 এমন কিছু প্রশ্ন থাকে যার উত্তর জানা যায়না.... বা জানলেও অনেক সময় উত্তর দেওয়া যায়না. রিমির কাছে কোনো জবাব ছিলোনা অভিষেকের প্রশ্নের. বা হয়তো ছিল কিন্তু পারছিলোনা উত্তর দিতে. এমন সময় নিচ থেকে আওয়াজ এলো... 

আয়.... চা নিয়ে যা... আর ভাইকে ডাক... উঠতে বল ওকে. অভিকে চা দিয়ে আয়. 

রিমি : আমি.... আমি যাই... মা ডাকছে. (বলেই চলে যাচ্ছিলো ও.)

অভি : আমার উত্তরটা? 

রিমি যেতে যেতে থামলো. অভির দিকে না ঘুরেই বললো : সব প্রশ্নের উত্তর হয়না অভিষেক. 

রিমি আর দাড়ালোনা. নেমে গেলো সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে. অভিষেক মনে মনে হাসলো আর পেছন ফিরে ওই বাগানের ফুল গুলো দেখে  নিজেকে নিজেই বললো : আবার সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রয়োজন হয়না..... বুঝে নিতে হয়.......... বুঝে নিয়েছি.

অভির চোখে জল চলে এলো. উত্তরের অপেক্ষায় নাকি পেয়েও হারিয়ে ফেলার দুঃখে.... তা জানেনা ও. 



চলবে.....  

[Image: 20200711-015546.png]
[+] 11 users Like Baban's post
Like Reply
#48
রিমির ভিতর মিশ্র অনুভূতির সঞ্চার ঘটছে
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
#49
Darun .... Kub sundor hocche...
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
#50
দারুণ বাবান দাদা !
আপডেটের শেষের দিকের দুজনের কথোপকথনটা দারুণ.
যে ছেলেটা মেয়েদের সাথে কথা বলতে লজ্জা পেতো আজ সে এতগুলো দারুণ কথা একটানা বলে গেলো. একেই হয়তো বলে সত্যিকারের ভালোবাসার টান.

" সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রয়োজন হয়না, বুঝে নিতে হয় "--লাইনটা দারুণ.
[+] 1 user Likes Avishek's post
Like Reply
#51
বহু কিছু মনে করিয়ে দিচ্ছেন দাদা...অপূর্ব লাগছে গল্পটা..
[+] 1 user Likes SAM2303's post
Like Reply
#52
ধন্যবাদ -Mr Fantastical, dreampriya, Avishek, SAM2303 এবং বাকি বন্ধুরা ❤️
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#53
Dada update kokhon asbe ?
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
#54
কালকেই তো দিলাম.... আবার শীঘ্রই আসবে. আমি আগে থেকে জানিয়ে দেবো
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
#55
sad part is going now. when the happy part will start.
Like Reply
#56
[Image: 20200721-013605.jpg]
Like Reply
#57
[Image: 20200717-223145.png]

সবাই বসে চা খাচ্ছে. দুই বন্ধু আয়েশ করে মাটিতে বসে চা খাচ্ছে. দুই বৌ আর বাড়ির অন্যরা হেসে গল্প করছে. ঝিলমিল আর অর্কর মধ্যেও বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গেছে. ওরা মোবাইল নিয়ে কিছু দেখছে. শুধু দুই যুবক যুবতী চুপচাপ বসে আছে. যে যার মতো চা খাচ্ছে. কিন্তু কেউ কারোর দিকে তাকাচ্ছে না. এখনও সেইভাবে কেউ আসেনি. তাই বাড়ি ফাঁকাই. কাল সবাই আসবে এক এক করে. 


কিন্তু কে জানতো কিছু সময় পরেই এমন একটা ব্যাপার ঘটবে  যেটা  একেবারেই অপ্রত্তাশিত. জীবনে কত কিছুই তো ঘটে.... এটাও না হয় তারই আরেকটা উদাহরণ. 

তবে তার আগের সময় টুকু ছিল আরও অদ্ভুত. চা খাওয়া হয়ে গেলে পর অভি ভাবলো একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসা যাক. ঘরে থাকতে ইচ্ছে করছেনা. ঘরে থাকলেই ওর মুখোমুখি হতে হবে. ও আর সেটা চাইছেনা. কি হবে আর ওই অপ্সরার কথা ভেবে যে কালকে অন্য কারোর হয়ে যাবে? এই অল্প পরিচিতি বা আজকে কাটানো ওই সময়ের তো কোনো ভবিষ্যত নেই. তাহলে কেন বেকার নিজেকে নিজে এইভাবে কষ্ট দেবে অভিষেক? তার থেকে ভালো হবে ওকে এড়িয়ে চলা. 

অভি কিছুক্ষন পরে রেডি হয়ে বাইরে এলো. ওকে দেখে ওর বাবা বললো... 

অরিন্দম বাবু : কিরে? কোথায় যাচ্ছিস? 

অভি : একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি...... সবার জন্য একটু ice cream নিয়ে আসি. 

অরিন্দম বাবু : কি দরকার......থাক না ঘরে. 

রঞ্জিত বাবু : আহা... যাক না ঘুরে আসুক..... নতুন জায়গা.... একা একা লাগছে হয়তো.... ওকে ওর মতো থাকতে দে তো... তুমি যাও বাবা... ঘুরে এসো. 

এমন সময় রিমির মা বললো : ওহ অভি... বাবা তুই যখন বেরোচ্ছিস তখন একটা কাজ করবি বাবা? 

অভিষেক : হ্যা.. নিশ্চই... বলুন না..   

দীপালি দেবী হঠাৎ রিমিকে ডাকলো : বাবলি...... এই বাবলি.... 

রিমি : হ্যা... মা? কি? 

দীপালি দেবী : একবার নীচে আয় তো.... 

অভি ভাবলো.... এই রে.... আবার ওকে ডাকে কেন? 

রিমি ওপর থেকে নেমে এলো. 

রিমি : হ্যা মা.... কি হয়েছে? ডাকলে কেন? 

রিমির মা : তোর ওই দুলটা আর আংটিটা তো আনার কথা আজ......ওদের অর্ডার দেয়া ছিল.  তোর বাবা পুরো ভুলে মেরেছে. তোকে নিয়ে যাবার কথা তো আজ. 

হঠাৎ রঞ্জিত বাবু বললেন :এইরে... তাইতো.... এসব কাজের ঠেলায় পুরো ভুলেই মেরে দিয়েছি. 

অরিন্দম বাবু বললেন : না ভাই.... এটা তোমার বরাবরের দোষ. আগেও ভুলে যেতিস.... এখনও তাই. 

দীপালি দেবী : যা বলেছেন দাদা..... 

রিমি : হ্যা তো কি? 

রিমির মা : তা বলছিলাম তুই যা না অভির সাথে. ও তো বাইরেই যাচ্ছে. দুজনে গাড়ি নিয়ে চলেযা....আবার ফিরে আয়. 

রঞ্জিত বাবু : হ্যা..... সেই তো.... তুই চলে যা অভির সাথে. ওর সাথে গিয়ে ওগুলো নিয়ে আয়. ওখান থেকে কিছু খেয়েও আসবি.  

রিমি একবার অভির দিকে তাকালো. কিন্তু অভি অন্যদিকে তাকিয়ে. রিমি অভিকে এক পলক দেখে নিয়ে বললো : আচ্ছা..... বেশ. আমি রেডি হয়ে আসছি. 

ঝিলমিল বলে উঠলো আমিও যাবো দাদার সাথে. এগরোল খাবো. অভি বাইরে গেলো গাড়ির কাছে. ভেতরে বসে চুপচাপ অপেক্ষা করতে লাগলো. মনটা ভালো লাগছেনা. একটু একটু করে যত সময় যাচ্ছে ওর মনে হচ্ছে ততো রিমি ওর কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে. ও আটকাতে পারছেনা, আটকানোর অধিকার ওর নেই. একটু পরে দেখলো ঝিলমিল  রিমির সাথে গেট দিয়ে বেরিয়ে ওর গাড়ির কাছেই আসছে. অভি দরজা খুলে দিলো. ভেবেছিলো ঝিলমিল ওর পাশে বসবে কিন্তু ঝিলমিল নিজেই দরজার কাছে এসে বললো - দিদি..... তুমি সামনে বসো... আমি পেছনে যাচ্ছি. 

উফফফ.... মেয়েটা যে কি করেনা. রাগ হলো অভির ঝিলমিলের ওপর. ঝিলমিল পেছনে চলে গেলো. অভিষেকের পাশের সিটে এসে বসলো রিমি. অভি এক নজর তাকালো ওর দিকে. হলুদ একটা সালোয়ার কামিজ আর হলুদ ওড়না জড়ানো গলায়. অপূর্ব লাগছে ওকে. গা থেকে সুন্দর সেন্টের গন্ধ বেরিয়ে আসছে. 

অভি নিজেকে কোনোরকমে সামলে নিয়ে একটু কঠোর গলায় বললো : সিট্ বেল্ট টা.... 

রিমি : হ্যা? 

অভি ইশারায় বুঝিয়ে দিলো সিট্ বেল্ট লাগিয়ে  নিতে. 

অভির মুখটা একটু কঠোর দেখে রিমি অবাক হলো. ছেলেটা  হঠাৎ এমন  চুপচাপ হয়ে গেলো কেন? ওর দিকে তাকাচ্ছে না কেন? সকালে যে ছেলেটাকে দেখেছিলো আর এখন যাকে দেখছে দুজন যেন আলাদা মানুষ. 

অভি সামনে তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলো : কোথায় যাবো? 

রিমি : চলো.... আমি বলছি. 

অভি গাড়ি স্টার্ট দিলো. 

গাড়ি চলছে.....  ট্রাফিক এড়িয়ে অভিষেক গাড়ি এগিয়ে নিয়ে চলেছে. এর মধ্যে একবারও পাশে তাকায়নি ও. কিন্তু ওর পাশে বসে থাকা মানুষটা বার বার তাকাচ্ছে অভির দিকে. অভিষেক সেটা হয়তো নিজেও বুঝতে পারছে কিন্তু ও চুপচাপ গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে. ও নিজেকে পাশের মানুষটার থেকে লুকিয়ে রাখতে চাইছে. 

কি অদ্ভুত দুটো ব্যাপার . একদিন যাকে দেখে অভিষেক নিজের হৃদয় হারিয়ে ফেলেছিলো আজ সেই মেয়েটি স্বয়ং ওর গাড়িতেই, ওর পাশেই বসে কিন্তু অভির মুখে আনন্দ একটুও নেই. 

আর দ্বিতীয় হলো একদিন অভি বার বার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলো পরীকে আর সে একবারও সেই ভাবে তাকায়নি অভির দিকে. আর আজ সেই পরীই বার বার তাকাচ্ছে অভির দিকে. কিন্তু আজ অভিষেক আর তাকাচ্ছেনা. 

অভিকে রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে এলো রিমি. একটা দোকানের সামনে এসেছল ওকে থামতে বললো রিমি. 

অভি বললো ওদের যেতে. ও বাইরেই অপেক্ষা করবে. কিন্তু রিমি ওকে এই প্রথম জোর করে নিয়ে গেলো ভেতরে. দোকানের মালিক রিমিকে আগে থেকেই চেনে. হাসি মুখে ওদের বসালেন উনি. অর্ডার দেওয়া জিনিস গুলো এসেছে কিন্তু জিজ্ঞেস করতে উনি বললেন.. 

দোকানদার : কাল রাতেই এসেছে গেছে. আজ সকালে আপনারা এলেন না দেখে চিন্তা হচ্ছিলো. এই নিন দেখে নিন. 

ঝিলমিল রিমির পাশেই বসে ছিল. ওরা দুজন দেখতে লাগলো দুল দুটো. অভিষেক পাশে বসে মোবাইল ঘাঁটছে. 

ঝিলমিল ওগুলো দেখে বললো : বাহ্... দিদি খুব সুন্দর. একবার কানে দিয়ে দেখাওনা.... 

রিমি হেসে ওই দুটো নিজের কানের কাছে এনে ঝিলমিলকে দেখালো. 

রিমি : কি.... কেমন লাগছে? 

ঝিলমিল : দারুন রিমি দি..... কিরে দাদা.... তাইনা? 

বোনের কথায় অভিষেক তাকালো বোনের দিকে. 

অভি : কি? কি বললি? 

ঝিলমিল : বললাম রিমিদিকে কি সুন্দর লাগছে বল... কালকে এই দুল দুটো পড়লে যা মানাবে না তোমায়.... কি বলিস দাদা? 

অভি তাকালো রিমির দিকে. অসাধারণ লাগছে সামনে বসে থাকা মেয়েটাকে. কিন্তু অভি মুখে কিছুই প্রকাশ না করে সামান্য হেসে বললো : হ্যা সত্যি.. খুব ভালো লাগছে. 

বলেই আবার মোবাইল ঘাঁটতে লাগলো. ওটা যে পাশে বসে থাকা মানুষটাকে এড়িয়ে চলার একটা বাহানা সেটা বলাই বাহুল্য. 

দোকানদার : আর এই যে আংটিটা. 

অভি আড় চোখে তাকালো ওটার দিকে. রিমি আংটিটা হাতে নিয়ে দেখছে. হঠাৎ ও তাকালো অভির দিকে. অমনি অভি চোখ নামিয়ে নিলো. 

সব শেষে ওরা বেরিয়ে এলো দোকান থেকে. এদিকটা বেশ জমজমাট এলাকা. চারিদিকে দোকান. ভিড় ভালোই. অভি বললো : তাহলে আমরা ফিরি? 

ঝিলমিল : দাঁড়া..... আমি এগরোল খাবো. 

অভিষেক : কি দরকার? বাইরের খাবার ওতো খেতে হবেনা. 

ঝিলমিল : না আমি খাবো.... দিদি খাবেতো তুমি? 

রিমি হেসে বললো : তোর দাদা যদি খাওয়াতে রাজী হয় তো খেতে পারি. জিজ্ঞেস কর.... খাওয়াবে? 

ঝিলমিল চোখ নাচিয়ে : কিরে দাদা?  

অভি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো : চল.... 

তিনজনে গাড়ির কাছে ফিরে এসে রোল খাচ্ছে. যদিও অভির খাওয়ার ইচ্ছে ছিলোনা কিন্তু একজন তাকে বললো তাকেও খেতে হবে. আবার জোর করলো সে. অভিও আর না রাজী হয়ে থাকতে পারলোনা. নিতেই হলো. বেশ ভালোই বানিয়েছে. ওরা দুজন খেতে খেতে গল্প করছে. এই একদিনেরও কম সময় দুই জনে বেশ ভাব হয়েছে গেছে. অভি ওদের থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে রোল খাচ্ছে. খাওয়া হয়ে গেলে রিমি ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো অভিষেকের কাছে. ওরও ততক্ষনে খাওয়া হয়ে গেছিলো. অভি ওদের শেষ হবারই অপেক্ষা করছিলো. 

রিমি এসে বললো : চলো যাই? 

অভি : হ্যা.. চলো.

রিমি : একমিনিট....

অভি আবার ঘুরে দাঁড়ালো ওর দিকে. রিমি অভিকে ইশারায় দেখালো যে ওর ঠোঁটের কাছে এখনও কিছুটা খাবারের গুঁড়ো লেগে রয়েছে. অভি নিজে একবার হাত বুলালো ঠোঁটের কাছে কিন্তু আসল জায়গাটাই মিস করে গেলো. 

রিমি ইশারায় বোঝালো এখনও লেগে আছে. অভি আবার হাত বোলালো... হায়রে ! ব্যাটা রোলটা তো আচ্ছা নাছোড়বান্দা ! তাও লেগে রইলো যেখানে ছিল সেখানেই. 

অভি মুখ মুছে জিজ্ঞেস করলো : গেছে? 

রিমি মুচকি হেসে এবারে নিজেই ওর হাত দিয়ে অভির ঠোঁটের কাছটা মুছে দিলো. অভি শুধু চেয়ে রইলো রিমির দিকে. রিমিও হঠাৎ কি ভেবে হাতটা সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে একটু দূরে সরে গেলো. অভির দিকে না তাকিয়েই বললো : যাওয়া যাক? 

অভি : হুম... চলো. 

অভি গাড়ির দরজা খুলেছে এমন সময় রিমির ফোন বেজে উঠলো. রিমি দেখলো বাবার ফোন. 

রিমি : হ্যালো বাবা.. ওগুলো নিয়ে নিয়েছি... ফিরবো এবারে. 

এইটুকু বলেই রিমি থেমে গেলো. ওর মুখে কেমন একটা চিন্তার ভাব ফুটে উঠলো. অভিষেকও সেটা লক্ষ করলো. রিমি আবার বললো : কেন বাবা? কিছু হয়েছে? তোমার গলাটা অমন শোনাচ্ছে কেন?..... সত্যি করে বলোতো কি হয়েছে? 

অভি রিমির দিকে তাকিয়ে ছিল. এমন সময় ওর ফোনটাও বেজে উঠলো. অভি দেখলো বাবা ফোন করেছে. রিসিভ করলো ফোনটা. 

অভি : হ্যা বাবা বলো... 

বাবা : কোথায় তোরা? 

অভি : এইতো ফিরবো এবারে 

বাবা : হুম.... তাড়াতাড়ি ফিরে আয়. 

একি? বাবার গলাটাও কেমন গম্ভীর শোনাচ্ছে. 

অভি : কেন বাবা কি হয়েছে? 

বাবা : আঃ.... যা বললাম কর. তাড়াতাড়ি ফিরে আয়. 

দুজনেই প্রায় একি সাথে ফোন রাখলো. দুজনেই একে ওপরের দিকে তাকালো. দুজনেরই মুখে চিন্তার ছাপ. ঝিলমিল কিছুই বুঝলোনা. ও জিজ্ঞেস করলো কি দাদাকে কি হয়েছে কিন্তু দাদার কাছেও যে জবাব নেই. ওরা তাড়াতাড়ি করে গাড়িতে বসে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো. 

বাড়ি পৌঁছে যে খবরটা ওরা পেলো তাতে ওরা তিনজনেই হতভম্ব হয়ে গেলো. এনগেজমেন্ট ক্যানসেল. এ সম্পর্ক আর এগোবেনা.

হঠাৎ করে এমন একটা কথা শুনে মুহূর্তের জন্য অভিষেক অবাক হয়ে গেলেও একটু পরে নিজেকে সামলে নিলো. এ কি শুনছে ও? এ বিয়ে হবেনা? এনগেজমেন্ট ক্যানসেল? সত্যি? উফফফফফ ভাবতেই পারছেনা ফিরে এসে এমন অসাধারণ একটা খবর পাবে ও. সবার মুখে গম্ভীর ভাব. সবাই দুঃখ দুঃখ মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে. শুধু একজন কোনোরকমে নিজের আনন্দকে কন্ট্রোল করছে. এতক্ষন সত্যিই অভির মুখ সিরিয়াস ছিল কিন্তু এই খবর পাবার পর অভিকে সিরিয়াস হবার নাটক করতে হচ্ছে. 

জানা গেলো ওই ছেলে টাকা পয়সা ও শিক্ষার দিক দিয়ে খুবই ভালো হলেও চরিত্রের দিক দিয়ে ঠিক তার উল্টো. অফিসেরই এক জুনিয়ারের সাথে সম্পর্ক হয় তার আর সেই সম্পর্ক চরম পর্যায় পৌঁছে যায়. মেয়েটি আজ ওর সন্তানের মা হতে চলেছে. অনেক ঝামেলা হচ্ছে ওই ছেলের বাড়িতে. ছেলেটা জোর করে আলাদা হবার চেষ্টা করেছিল, বাচ্চাটাকে নষ্ট করার কথা বলেছিলো কিন্তু মেয়েটি রাজী হয়নি. স্বার্থপরের মতো মা হয়ে নিজের সন্তানের হত্যা করতে রাজী হয়নি. ছেলের বাবা মা কিছুই জানতোনা. আজ ওই মেয়েটির পরিবার ওই ছেলের বাড়িতে গিয়ে সব জানায়. বেশ ঝামেলা হয়. শেষমেশ ঠিক হয় ওই মেয়েই হবে পুত্রবধূ. ছেলের বাবা একটু আগে নিজে ফোন করে সব রঞ্জিত বাবুকে জানিয়েছেন আর বার বার ক্ষমা চেয়েছেন. 


রিমি কোনো প্রশ্ন করলোনা কাউকে, কিচ্ছু বল্লোনা কাউকে. চুপচাপ সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে গেলো. রিমির পেছনে পেছনে অভিষেকের মা আর রিমির মাও গেলো. ঝিলমিলও গেলো ওদের সাথে. 

অভির তো নাচতে ইচ্ছে করছে. উফফফ.... ভাবা যায়না কি ভাগ্য মাইরি. ঠাকুরের নাম কীর্তন করতে ইচ্ছে করছিলো ওর. আনন্দে হাসি পাচ্ছে কিন্তু বেচারা হাসতেও পারছেনা. সামনেই বাবা কাকু আর অনেকেই দাঁড়িয়ে. 



চলবে.....  

[Image: 20200711-015546.png]
কেমন লাগলো বন্ধুরা?  জানাবেন. 
ভালো লাগলে লাইক, রেপস দিতে পারেন. 
[+] 14 users Like Baban's post
Like Reply
#58
Wow .... Darun dada... Superb update .... Emon bristi badol dine apnar ai update ta pore darun laglo ....
[+] 2 users Like dreampriya's post
Like Reply
#59
জাস্ট চালিয়ে যান দাদা, দারুন হচ্ছে। সাথে আছি ।।
[+] 1 user Likes shovank's post
Like Reply
#60
ওয়ে বাল্লে বাল্লে ! এ তো মেঘ না চাইতেই জল।
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)