Thread Rating:
  • 131 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮)
eto deri keno ???
[+] 1 user Likes rakib321's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
দাদা এই গল্পটা আবার সুরু করেন অনুরোধ রইলো
Like Reply
দাদা এই গল্পটা আবার সুরু করেন অনুরোধ রইলো
Like Reply
dada please update
waiting for your update,,
[+] 1 user Likes Tanveer's post
Like Reply
আপনি এই গল্পটা শেষ করে যতো ইচ্ছা break নিন।
আমি বুঝে পাই না xossip থেকে শুরু করে xossipy প্রত্যেক সাইটের bengali writer রা আপডেট না দিয়ে দিনের পর দিন কেন গল্প না লিখে ফেলে রাখে।
এরপর নিয়মিত update না পেয়ে যদি আবার পাঠকরা কিছু বলে তাতে আবার লেখকের রাগ. হবে তখন আবার গল্প টা অসমাপ্ত রেখে দেন।
আবার কিছু পাঠকরা নিয়মিত আপডেট না পেয়ে সেই গল্প পড়া আর rating দেওয়া ছেড়ে দেন তখন আবার লেখক পাঠকরা rating দেয়নি এই excuse দিয়ে গল্প ফেলে রাখবে।
এভাবে চলে না আমি পাঠক আর আমার মতো পাঠকদের নিয়মিত update না পেলে গল্প থেকে interest হারিয়ে যায়।
[+] 5 users Like Arkd R's post
Like Reply
আপডেট কই
Like Reply
pls can anyone write these stories in english or hindi so that other people also able to read these stories
Like Reply
(16-06-2020, 03:18 PM)mn60358 Wrote: pls can anyone write these stories in english or hindi so that other people also able to read these stories

No !!! not at all .Ei golpo uni e likhben  tate bochor ghure geleo  aamra onar opekkhay thakbo.
[+] 2 users Like mofizulazad1983's post
Like Reply
update ???
Like Reply
দাদা,আপনি সুস্থ আছেন ???
Like Reply
henry sir pls update
Like Reply
Heart 
দাদারে এত সুন্দর আর কামুক গল্পটা থেমে আছে... কষ্ট কষ্ট। আপনি কেমন আছেন হেনরি দাদু
Like Reply
Plz Phire Asooo....???
Like Reply
দাদা... খুব miss করছি গল্পটা. আপনি কবে ফিরে আসবেন সেটা কি জানাতে পারেন? আমি বুঝতে পারছি নিশ্চই কোনো সমস্যা আছে তাই দেরি হচ্ছে. কিন্তু আমাদের পাঠকদের কিছু আভাস দিন কবে ফিরে আসতে পারেন সেই ব্যাপারে. সবাই অপেক্ষায় রইছি.
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
গত সপ্তাহে আমাদের সুপ্রিয় হেনরি দাদা পরলোকগমন করেছেন। 
চৌধুরীর হেনরি মিলার ১৯৮৩-২০২০।
[+] 1 user Likes maximum duno's post
Like Reply
(26-06-2020, 04:44 PM)maximum duno Wrote: গত সপ্তাহে আমাদের সুপ্রিয় হেনরি দাদা পরলোকগমন করেছেন। 
চৌধুরীর হেনরি মিলার ১৯৮৩-২০২০।
সত্যি না ফান করছেন।
Like Reply
(26-06-2020, 04:44 PM)maximum duno Wrote: গত সপ্তাহে আমাদের সুপ্রিয় হেনরি দাদা পরলোকগমন করেছেন। 
চৌধুরীর হেনরি মিলার ১৯৮৩-২০২০।

isss ki bolchen ki...  biswas hocche na
Like Reply
অর্ক নিজের বেডরুমের দরজা বন্ধ করে শুয়ে গেল।অর্কের যখন ঘুম ভাঙল তখন সন্ধ্যে নেমে গেছে।দরজা খুলে দেখল মা রান্না ঘরে।
রান্না ঘরে গিয়ে মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল সে।সুছন্দা অর্কের গালে চুমু খেয়ে বলল---রাগ কমেছে।অর্ক কেঁদে উঠল।সূচনা ছেলেকে জড়িয়ে ধরল।বলল---সরি, বাবু।আমি তোকে খুব বকেছি।
অর্ক কেঁদে কেঁদে বলল--প্রমিস করো।তুমি ওখানে যাবে না?
সুছন্দা অর্কের চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে বলল---আচ্ছা যাবো না, খুশি তো?

অর্ক মায়ের নাইটিতে চোখ মুছতে লাগল।সুছন্দা হেসে বলল---আজ তোর জন্য মাটন স্যান্ডউইচ করেছি...

রাত্রি আটটার নাগাদ রঞ্জন ফোন করল।অর্কই গিয়ে ধরল ফোনটা।রঞ্জন বলল---দুপুরে ফোন করেছিলি কিজন্য কিছু বলবি?
অর্ক বলল---না এমনিই।
---তোর মা কোথায়?
---এই তো পাশেই আছে।
---দে, দেখি।
অর্ক মাকে ফোনটা দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।
************
এখন সুছন্দা প্রতিদিনই সন্ধ্যে ৭টার আগে বাড়ী চলে আসে।অর্কের বেশ ভালো লাগে।সন্ধ্যে বেলা মাকে সঙ্গে পায়, মা তার জন্য ভালোমন্দ রান্না করে, একদিন মা তাকে শপিং করতেও নিয়া যায়।অর্কের জন্য সুছন্দা একটা জিন্স আর টিশার্ট কেনে।বলতে বলতে রবিবার এসে উপস্থিত হয়।
অর্কের দেরীতে ঘুম ভাঙে।অর্কর ঘুম ভাঙলে তার মা বলে--জলখাবার খেয়ে রেডি হয়ে পড়।
অর্ক বিরক্ত মুখে বলল--আমি স্যারের বাড়ী যাবো না মা।
সুছন্দা হেসে বলল---না, আজকে তোর বিশাখা আন্টির বাড়ী যাবো।ওর মেয়ে তিন্নির জন্ম দিন।
অর্ক যখন ছোট ছিল বিশাখা আন্টির তখন বিয়ে হয়নি।অর্ককে খুব ভালো বাসতো বিশাখা আন্টি ও মৈনাক আংকেল।
বিশাখা সুছন্দার কলিগ ছিল।এখন ট্রান্সফার হয়ে হুগলী চলে গেছে।ওখানেই ওর শ্বশুরবাড়ি।ওদের মেয়ে তিন্নি চার বছরে পড়ল।

সুছন্দা পরেছে বেগুনি সিল্ক শাড়ি আর বেগুনি সিল্কের ম্যাচ করা ব্লাউজ।অর্ক লাল টি শার্ট আর জিন্স পরেছে।বিশাখা এসে বলল---অর্ক! তুই এত্ত বড় হয়ে গেছিস?কোন ক্লাস হল যেন?
---নাইন।
মৈনাক হেসে বলল---সুছন্দা দি ছেলে কিন্তু লম্বায় তোমাকে ছুঁয়ে ফেলল।আর ক'টা দিন পর পেরিয়ে যাবে।


তিন্নির সাথে আন্টি পরিচয় করিয়ে দিল অর্ককে।তিন্নি বলল--অক্ক দাদা!
সকলে হেসে উঠল।
অনুষ্ঠানে বেশ ভিড়, হইচই।অর্কের ভালো লাগছিল অনেকদিন পর তাদের একা মনে হচ্ছে না।কেবল বাপিকে সে মিস করছিল।সন্ধ্যের ট্রেনে তারা ফিরে এলো।

এসেই বাপিকে ফোন করে সব জানাল।রঞ্জন হেসে বলল---তাহলে মা-ছেলে দুজনে তো বেশ মজায় আছিস তোরা।আর আমার এখানে ইয়ার এন্ডিংয়ের চাপ! নতুন অফিস! মা কোথায় দে।

সুছন্দা বলল---বলো?
---কি হে, আমার সুন্দরী বউ কি একা একা বোর ফিল করছ।
সুছন্দাও হেসে বলল---বোর ফিল করার সময় কোথায়, অফিসের ঝামেলা আমার কম না জানো!এই আজ একটু ফাঁকা পেলাম, বাবুকে নিয়ে ঘুরে এলাম।বিশাখা ফোনে নেমন্তন্ন করেছিল।
---বিশাখার মেয়ে কত বড় হল?
---এই তো চারে পা দিল।ওদের তো বেবি হচ্ছিল না হচ্ছিল না, অবশেষে যাহোক।তোমার কথা জিজ্ঞেস করছিল।মৈনাক একটা কি লোনের ব্যাপারে জানতে চায়, ওকে তোমার ফোন নম্বর দিয়েছি।
----মৈনাক কি এখনো প্রেসের ব্যবসাই করছে?
---বিশাখা বলল, ও নাকি একটা গাড়ী শো রুম করতে চায়....
রঞ্জন বলল---ও বুঝেছি, ব্যবসায়িদের লোনের কীর্তি...যা হোক আমি তো যেতে পারছি না এখন...অর্কের জন্য ল্যাপটপটা পার্সেল করে দিয়েছি।

---ওমা! এত দামী জিনিস পার্সেল করে দিলে???
রঞ্জন হেসে বলল---পোস্টা অফিসের স্টাফ হয়ে যদি তুমি পার্সেলে ভয় পাও..!

অর্ক শুনতে পেল, তার ল্যাপটপ আসছে।সে খুব খুশি হল।পড়ে পড়ে তার গেমস ডিস্কগুলো নষ্ট হচ্ছিল।
---
সুছন্দা অফিস থেকে ফিরলে অর্ক প্রতিদিনই মায়ের কাছে খবর নেই ল্যাপটপ এলো কিনা।বাড়ীর অ্যাড্রেসে না এলে মায়ের অফিসের অ্যাড্রেসে আসতে পারে।
সুছন্দা প্রতিদিনই জানায় না আসেনি।অর্কর ভালোলাগেনা।তবু সুছন্দা অফিস থেকে তাড়াতাড়ি আসায় খুশি হয় সে।

অর্কর রাতে ঘুম আসছিল না।পাশের ঘরে গিয়ে মায়ের পাশে শুয়ে পড়ল।সুছন্দা হেসে বলল---কি রে? ভয় করছে?
অর্ক কিছু না বলে মাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে গেল।
ঘন্টা খানেকের মধ্যে ঘুম ভেঙে গেল অর্কের।পাশ ফিরে দেখল মা নেই।গোটা ঘর অন্ধকার।কেবল ড্রয়িং রুমে ডিম লাইটটা জ্বলছে।অর্ক উঠে পড়ল।ড্রয়িং রুমে যেতেই তার মনে হল নীচ তলায় কিছু শব্দ হচ্ছে।দুস্টু বেড়ালটা প্রায়ই ঢুকে পড়ে।অর্ক সিঁড়ির কাছে আসতেই চমকে গেল মা কারোর সাথে ফিসফিস করে কথা বলছে।
অর্ক বুঝতে পারছে নীচতলায় সিঁড়ির নীচ থেকেই শব্দটা আসছে।দুটো ছায়া দেখতে পাচ্ছে অর্ক।পা ফেলে ফেলে নেমে গেল।আড়াল থেকে দেখে লোকটাযে কানু চিনতে ভুল করল না।
লম্বা ঢ্যাঙা লোকটা সুছন্দাকে জড়িয়ে ধরেছে বেশ শক্ত করে।অর্ক শুনতে পাচ্ছে তার মা বারবার ফিসফিস করে বলছে---কি করছ কি কানু দা? এত রাতে আঃ ছাড়ো! এতো রাতে কেউ আসে! জানাজানি হলে! উফঃ প্লিজ ছাড়ো, লাগছে!
অর্ক দেখল তার ছায়াটা গিয়ে পড়ছে।তাই সে আড়াল হয়ে গেল।আর কিছু দেখতে পাচ্ছে না সে।কিন্তু শুনতে পাচ্ছে তার মায়ের কাকুতি।

---আঃ কানু দা! আঃ আঃ আঃ
অর্ক এবার বুঝতে পারছে মায়ের গলা থেমে গেছে।কেবল ফোঁস ফোঁস শ্বাস-প্রশ্বাস শব্দ! অর্ক বুঝতে পারছে না সিঁড়ির নিচে কি হচ্ছে।কিছু বুঝে ওঠার আগে হঠাৎ দ্রুত ঠাপ! ঠাপ! ঠাপ! শব্দ হতে লাগল!
অর্ক ঝুঁকে পড়ে দেখতে লাগল।সুছন্দা সিঁড়ির তলায় ইলেকট্রিক বক্সের পাশে দেওয়াল ধরে পিছন ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে।মায়ের কোমরে কাপড় তোলা।লম্বা লোকটা ঝুঁকে পড়ে ধাক্কা মেরে যাচ্ছে মায়ের কাপড় তোলা পাছায়।লোকটার প্যান্ট হাঁটুর নিচে নামানো।
অর্ক বুঝতে পারছে আসলে তার মা আর এই কানু কি করছে।নিজের চোখের সামনে সে সেক্স দেখছে।লোকটার হাতে মায়ের দুদু দুটো ধরা।ব্লাউজ থেকে মায়ের ফর্সা দুদু দুটো বেরিয়ে আছে।সুছন্দার স্তন স্ফীত।কানু স্তন দুটো দুই হাতে যতটা সম্ভব আঁকড়ে ধরে বেদম ধাক্কা দিচ্ছে।

অর্কের মায়ের কেবল শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়া আর কিছু শোনা যাচ্ছে না।অর্ক ভাবতে পারছে না এই নোংরা লোকটা এত রাতে তার বাড়ীতে এসে তার মায়ের সাথে সেক্স করছে।
অর্কর মাথা ঝিমঝিম করছে।তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।সে দেখতে পাচ্ছে ঋদ্ধির মা আর তার মা আলাদা কিছু করছে না।অর্ক আর থাকল না।ছাদে গিয়ে চুপ করে শুয়ে পড়ল।মিনিট দশেক পরে বাথরুমের লাইট জ্বলে ওঠায় সে বুঝতে পারল মা উঠে এসছে।

বাথরুম থেকে বেরিয়ে সুছন্দা অর্কের পাশে শুয়ে পড়ল।অর্ক টের পেল মৃদু সেই ঝাঁঝালো ঘামের নোংরা গন্ধটা।

সকালে অর্কের যখন ঘুম ভাঙল প্রথমে তার মনে ছিল না আগের রাতের কথা।সে ব্রাশ করে বেরোতে দেখল মা কিচেনে।মাকে দেখেই আগের রাতের সিঁড়ির তলার দৃশ্য তার মনে এলো।মনের মধ্যে মায়ের প্রতি তীব্র ঘৃণা এলো তার।

স্কুলে গিয়ে ক্লাসে মন বসাতে পারছিল না।টিফিনের সময় স্কুলের বাথরুমে গিয়ে একা একা কাঁদতে লাগল।মিহির অর্কের শুকনো মুখ দেখে বলল---কি তোর ফিভার নাকি?
অর্ক কিছু না বলে ব্যাগ থেকে মায়ের দেওয়া টিফিন বক্সটা খুলল।

স্কুল থেকে বাড়ী ফিরে সে দেখল বাড়ীর দরজা ভেতর থেকে লাগানো।অর্ক বুঝল বাড়ীতে তবে মা আছে।বেল বাজাতেই সুছন্দা এসে দরজা খুলল।অর্ক মাকে দেখে বলল---মা আজকে অফিস যাওনি?
---গেছিলাম তো, তাড়াতাড়ি চলে এসছি।
অর্ক ঘরের ভেতরে ঢুকে প্রথমেই নাকে পেল সে পুরুষালী ঝাঁঝালো ঘাম গন্ধ, যেটা ওই কানুর গায়ে মেলে।লোকটা কি তবে তার বাড়ী এসছিল আবার? মা কি আজ অফিস যায়নি?

অর্কর কেমন সন্দেহ হতে লাগল।টিফিন করে উঠে সে টিভি চালিয়ে বসল।
সুছন্দা সোফায় বসে ছেলের হাত থেকে রিমোটটা নিয়ে বলল---স্যার আসবেন পড়াতে...
অর্কের মনে পড়ল অংকের স্যার টিউশন পড়াতে আসার ডেট আজ।বই খাতা খুলে বসল সে।স্যার টিউশন ছাড়লেন আটটার সময়।
অর্ক স্যারকে নিচে পৌঁছে দিতে গেল।ফিরবার সময় সিঁড়ির তলায় চোখ পড়ল তার।এখানেই তার মা আর লোকটা...

অর্ক ফিরে এলো নিজের রুমে।সুছন্দা ডাকল---অর্ক তোর বাপি ফোন করেছে দেখ দেখি।
ল্যান্ড ফোনটা বাজছে এতক্ষণ অর্ক শুনতে পায়নি।অর্ক বসে রইল।সুছন্দা কিচেন থেকে আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বলল---কি হল বাবু শোনা যায় না? ফোনটা কতক্ষন হল বাজছে।সুছন্দা ফোনটা তুলল।
মা বাপির সঙ্গে হেসে কথা বলছে।অর্ক অবাক হয়ে শুনছে।বুঝতে পারছে তার মা যে তার বাপিকে ঠকাচ্ছে কেউ বুঝতে পারবে না।

প্রায় আধঘন্টা পর অর্ক ডিনার সারল।ডিনার সেরে টিভিতে ম্যান ইউ আর আর্সেনালের একটা খেলা দেখতে লাগল।যদিও খেলাটা পুরোনো তবুও দেখতে লাগল।সুছন্দা এসে বলল---কি রে বাবু ঘুমাবি না?
---ঘুম আসছে না মা।ঘুম এলে শুয়ে যাবো।
---ওঠ, শুবি চল।কাল সকালে টিউশন আছে।না ঘুমালে শরীর খারাপ করবে।
অর্ক মনে মনে ভাবল আজ রাতেও কি কানু আসবে নাকি।সে ঠিক করল আজ রাতে জেগে রইবে।চুপচাপ পড়ে রইল বিছানায়।কখন যে ঘুমিয়ে গেছে খেয়াল নেই।ঘুম ভাঙতেই সে ভাবল লোকটা এসছে নাকি।ধীর পায়ে মায়ের ঘরে গিয়ে দেখল মা ঘুমোচ্ছে।এসে শুয়ে পড়ল সে।তার ঘুম আসছে না।সে কি বাপিকে সব বলে দেবে?বাপি যদি তার কথা বিশ্বাস না করে? এতসব ভাবছিল সে।

পরদিন সারপ্রাইজটা ঘটল খুব সকালে।অর্ক প্রথমে ভাবল স্বপ্ন দেখছে।কানের কাছে যেন বাপির গলা।অর্কর ঘুম ভাঙতে দেখল বাপি দাঁড়িয়ে!
রঞ্জন হেসে ছেলেকে বলল---গুড মর্নিং!
অর্ক বলল---বাপি তুমি!!
সুছন্দা রান্না ঘর থেকে চা নিয়ে এসে বলল---এইবার তোমার সারপ্রাইজটা দেখাও।
রঞ্জন বলল---তোর পড়ার টেবিলে দেখ।

অর্ক দেখল নতুন ল্যাপটপ।অর্ক লাফিয়ে উঠে ল্যাপটপ খুলে ফেলল।সুছন্দা বলল--এই এখন না, দাঁত ব্রাশ করে ব্রেকফাস্ট কর তারপর।
রঞ্জন রাতের ফ্লাইটেই এসেছে সাতদিনের ছুটি নিয়ে।
অর্ক ব্রাশ করে ল্যাপটপ নিয়ে না বসতে বসতেই আর্টসের টিউশন স্যার পৌঁছে গেল।
অর্ক ঠিক করল স্কুল থেকে ফিরে সে ল্যাপটপ নিয়ে বসবে।
স্কুলে গিয়ে শান্তনু আর মিহিরকে জানালো তার নতুন ল্যাপটপের কথা।শান্তনু বলল--তাহলে কবে যাবো তোর বাড়ী বল?
অর্ক বলল---এখন না, বাপি এসছে, কাল আমরা বেড়াতে যাবো।
মিহির বলল---কাল স্কুল আসবি না? কোথায় যাবি বেড়াতে?
অর্ক বলল---দীঘা!
শান্তনু বলল--ওয়াও দারুন, আমরা গতবছর গেছিলাম।
মিহির বলল--এদিকে শুনেছিস একটা কথা?
শান্তনু আর অর্ক দুজনেই চাওয়াচাওয়ি করল।মিহির বলল---ঋদ্ধির বাবা-মা আলাদা হয়ে গেছে।
শান্তনু বলল---কেন?
---ওর বাবা ওর মায়ের অ্যাফেয়ারের ব্যাপারে জানতে পেরে গেছে।ওর বাবা নাকি ওর মাকে তাড়িয়ে দিয়েছে বাড়ী থেকে।আর ওই মাস্টারকেও তাড়িয়ে দিয়েছে।
---তুই কি করে জানলি? অর্ক জিজ্ঞেস করল।
---কাল বাবা-মা আলোচনা করছিল।এখন তো গোটা পাড়া জানাজানি হয়ে গেছে।বেচারা ঋদ্ধি।

শান্তনু বলল---এবার কি হবে ঋতমের?
মিহির বলল--কি হবে? শুনছি ওর ঠাকুমা বলছে ঋদ্ধির বাবার নাকি আবার বিয়ে দেবে, আর ঋদ্ধিকে হোস্টেলে পাঠিয়ে দেবে।

অর্কর মনটা ঋদ্ধির জন্য কেঁদে উঠল।সেই সঙ্গে নিজের মনে ভয় দেখা দিল।বাপি যদি মায়ের ব্যাপারটা জানতে পারে! তবে মাকে বাপি তাড়িয়ে দেবে? তারপর তার কি হবে!

রাত্রে মা ব্যাগ গোছাচ্ছিল।অর্করা নিজেদের গাড়িতে যাবে।রঞ্জন দু বছর আগে একটা হুন্ডা সিটি গাড়ী কিনেছিল।গাড়িটা চালানোর থেকে যত্ন করে বেশি।গাড়ী গ্যারেজে থেকে থেকেই কাটে।

অর্কর কালকে বেড়াতে যাবার আনন্দে মনটা ভালো হয়ে গেছে।আবার বাপি-মাকে সে একসঙ্গে পাচ্ছে।

রাত থাকতে থাকতে ওরা বেরিয়ে পড়ল।রঞ্জনই ড্রাইভ করছিল।পাশের সিটে সুছন্দা।পেছনের সিটে অর্ক বসেছে।ওরা ভোর চারটে নাগাদ বেরিয়ে ছিল।সাতটার আগে এসে পৌঁছল দীঘায়।
হোটেলে রুম বুক করে তিনজনে হাঁটা দিল সমুদ্র ধারে।সি ডাইক থেকে দাঁড়িয়ে কয়েকটা ছবি তুলল রঞ্জন।
অর্ক বলল---বাপি আমরা স্নান করব না?
রঞ্জন বলল---বেলা হোক আসব।কি সুছন্দা তুমিও নামবে তো জলে?
---না, ওসব তোমরাই করো।আর সাবধানে, দেখছো কি বড় বড় ঢেউ।
রঞ্জন বলল---ভাইজাগে এর চেয়ে বড় বড় ঢেউ দেখা যায়।পুজোর সময় চলো দেখাবো।

ব্রেকফাস্ট সেরে দুপুরে রঞ্জন একটা ট্রাউজার আর স্যান্ডো, অর্ক হাফপ্যান্ট আর গেঞ্জি পরে রেডি হয়ে পড়ল জলে নামবার জন্য।সুছন্দা ওদের জামা কাপড় নিয়ে বসে রইল পাথরের উপর।
যাবার সময় সুছন্দা অর্ককে বলল---বেশি দূর যাসনা বাবু, তুমি খেয়াল রেখো।

রঞ্জন বলল-ডোন্ট ওরি, সুছন্দা।

বাপ-ছেলে চলে এলো ঢেউয়ে।ঢেউ ভেঙে ভেঙে দুজনে জলে নামাল।অর্কের বেশ মজা হল।দুজনে প্রায় এক ঘন্টা জলে পড়ে থাকল।ওরা ফিরল যখন সুছন্দা বিরক্ত হয়ে বলল---এতক্ষণ জলে পড়ে থাকলে? ঠান্ডা লেগে গেলে?
---আরে কিছু হবে না, রঞ্জন সভয় দিয়ে বলল।
ওরা লাঞ্চ সেরে বেরোলো দীঘার সমুদ্র তীরবর্তী দোকানগুলি ঘুরে দেখতে।কেটে গেল সময়।অর্ক বেশ খুশি।ওরা যখন ফিরে রাত্রি ন'টা।এখানে হোটেল বন্ধ হয়ে যায় দশটার মধ্যে।

অর্ক খেয়ে দেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ল।বেশ ক্লান্ত লাগছিল তার।রঞ্জনের ইচ্ছে ছিল দুটো রুম নেবে।কিন্তু সুছন্দা বলল-কি দরকার একটা দিনই তো।
ছেলে ঘুমিয়ে যেতে রঞ্জন হাল্কা আলোয় সুছন্দার মুখের কাছে গিয়ে বলল---হোটেলের ছাদটা বড় সুন্দর, যাবে?
সুছন্দা বলল---তুমি যাও।
রঞ্জন জোরাজুরি করে বলল---চলো না।
সুছন্দা বাধ্য হয়ে এলো।ঝাউবনের সামুদ্রিক বাতাস হু হু করে বইছে।সুছন্দাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে রঞ্জন।বলল---খুব ইচ্ছে হচ্ছে...আরেকটা রুম নিলে ভালো হত।
সুছন্দা রঞ্জনের পেটে গুঁতো মেরে বলল---যা করার বাড়ী গিয়ে করো।
রঞ্জন বলল---এই তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
সুছন্দা বলল---বলো? তুমি কি সত্যিই কানু দা'কে চিনতে না?
সুছন্দা চমকে উঠল! বলল---কে কানু?
---সুখেন? তোমার প্রেমিক!
---মানে?
---আলিপুরদুয়ার...ভুলে গেলে?
সুছন্দা বলল--ওঃ ওই যে আমার ছবি...
---লুকোও না সুছন্দা...আমি জানি তুমি চিনতে....
সুছন্দা রঞ্জনের কাছ থেকে সরে এসে বলল---এদ্দিন পরে সেসব জেনেই বা কি লাভ?
রঞ্জন বলল---কিভাবে আলাপ হয়েছিল তোমার সাথে?
---আমার সাথে কখনো আলাপ হয়নি।আমি যখন দাদুর বাড়ী যেতাম।তখন দাদু বলতেন ওঁর কথা।খুব নাকি ইন্টেলেকচুয়াল, ভালো কবিতা লেখে....তোমাদের বাড়ীর পাহারাদার বটুককার ছেলে...আমি দাদুর বাড়ী এলে তুমি দেখা করতে আসতে বিকেলে।সেদিন তোর্সার পাড় হয়ে ফিরছিলাম।তুমি আমাকে চিলাপাতার ছোট বাঁকটায় পৌঁছে দিয়ে চলে যেতে।সেদিনও তুমি যাবার পর হঠাৎ দেখি একটা খাম এসে পড়ল আমার দিকে।আবছা অন্ধকারে দেখতে পেলাম না কাউকে।কোনো নাম লেখা ছিল না চিঠিতে।তারপর প্রায়শই উড়ো চিঠি আসত।সব খামগুলোই ছিল হলুদ।চিঠিগুলো খুব অসাধারণ লেখনীর।এমনিতেই আমি জানো সাহিত্য পড়তে ভালোবাসি...চিঠিগুলোর প্রেমে পড়ে গেলাম।কিন্তু অদ্ভুত চিঠিগুলো পড়লে যে রোমান্টিকতা তৈরি হত সেটা তোমার জন্যই...একদিন চিঠির শেষে লেখা নাম সুখেন।তখনও কানু দা'কে চোখে দেখিনি।শুধু দাদু বলতেন।তোমাকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম।কানুদার ব্যাপারে, তুমি বললে খুব ছোট বয়সে তাঁকে দেখেছ।একের পর এক চিঠি আসতে লাগল।এবার সব নাম দিয়েই।তখন তোমার সঙ্গে আমার বিয়ের দিন গোনা চলছে।একদিন দাদুর বাড়ীতে সন্ধ্যে বেলা একটা লম্বা ছেলে হাজির।তখন কানু দা বত্রিশ--তেত্রিশ বছরের।পরনে একটা পাঞ্জাবি আর পাজামা।কাঁধে ঝোলা।বেশ লম্বা, মুখে হাল্কা দাড়ি, ময়লা রঙ।কানু দাকে দেখতে মোটেই ভালো না, কিন্তু কানুদার চোখ দুটিতে একটা মাদকতা আছে ...আমি বুঝতে পারলাম এই'ই সুখেন।দাদু কানু'দার সাথে আলাপ করিয়ে দিল।এমন লম্বা চওড়া ছেলে, যে এত রোমান্টিক চিঠি লেখে সে কেমন লাজুক লাজুক ভাবে কথা বলছিল।ফিরবার সময় কানু দা আমাকে একা পেয়ে বলল 'সুছন্দা তুমি আমার চিঠির উত্তর দাও না কেন' আমি বললাম আমি তাঁকে ভালোবাসি না।কানু দা যেন কেমন হিংস্র হয়ে উঠল।আমার হাতটা এক ঝটকায় টেনে ধরে শাসানি দিয়ে বলল---তুমি যদি বড়সাহেবের ছেলেকে বিয়ে করো, আমি তোমাকে খুন করে ফেলব।খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম, সেদিন দাদুকে জানিয়ে দিই সব।দাদু বোধ হয় তোমার বাবাকে সব বলেছিলেন।দাদু বলেছিলেন আমি যেন তোমাকে এ বিষয়ে কিছু না বলি।তারপর আমাদের বিয়ে হয়ে যায়।আমি কখনো কানু দা'কে দেখিনি আর।কতদিন ভুলেই গেছিলাম।আলিপুর দুয়ারের বাড়ীতে ছবি দেখে চমকে গেছিলাম।হঠাৎ করে কানু দা'র কথা মনে পড়ে যায়।
রঞ্জন বলল---যতদূর মনে হয় কানু দা'র তোমার দেওয়া আঘাত সহ্য করতে পারেনি।
সুছন্দা বলল---আমার কি দোষ?
---না সুছন্দা তোমার দোষ নয়।আসলে কানু দা খুব হতভাগ্য।ছোটবেলা থেকেই প্রতিভাবান।কিন্তু সব সময় ভাগ্য তার সঙ্গী হয়নি।ছোট জাত বলে আমাদের বাড়ীর পুরোহিত তাকে চোর অপবাদ দেয়।আমার বাবা তাকে স্নেহ করতেন সেই বড়সাহেবই তাকে বিশ্বাস না করে মারধর করে, তার নিজের বাবা বটুকাকা সব জেনেও প্রতিবাদ করেনি।কানু দা'র তাই সবার উপর থেকে ভালোবাস উঠে গেছিল।তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিল অত্যধিক বেশি।কিন্তু তুমি যখন ওকে ভালোবাসলে না ও নিজেকে নষ্ট করে দেয়।শুনেছি ও নাকি নেশাভাঙ করে।নিজের প্রতিভাটা সম্পুর্ন জলাঞ্জলি দিয়েছে।
সুছন্দা অবাক হয়ে বলল---তুমি এতসব জানলে কোত্থেকে? তুমি তো সেই কবে ছোটবেলায় দেখেছো?
---আমি এইবার আলিপুরদুয়ার গিয়ে বটুকাকা আর পার্থ দা'র কাছে শুনেছি।পার্থ দা কানু দা'র ক্লাসমেট ছিল।বটুকাকা বুড়ো হয়েছে, ছেলের জন্য দুঃখ করে।সেদিন আসবার সময় আমার হাত ধরে বলল কানু দা' যদি একবার বটু কাকার ওখানে যায়।আসলে তোমার দাদু মৃত্যুর আগে কানু দা'কে থাকতে দেবার পর কানু দা মাঝে মধ্যেই যেত, কিন্তু শেষবার যখন আলিপুরদুয়ার গেলাম বটুকাকা বলল কানু দা নাকি মাস তিনেক আসেনি।

সুছন্দা বলল---তুমি আমাকে এসব বলোনি তো?
রঞ্জন হেসে বলল---এসেই তো ট্রান্সফারের ঝামেলায় পড়লাম।মাঝে একবার কানু দা'র খোঁজে গেছিলাম, কানুদার বাসায়।দেখা পাইনি।
সুছন্দা বলল---তুমি কানু দা'র বাসাতেও গেছিলে!!!
রঞ্জন সুছন্দার কাঁধে হাত রেখে বলল---লোকটা আর কি দোষ করেছিল? ভালোই তো বেসেছিল তোমাকে।আমি ভাবছি আবার একবার যাবো।যদি কানু দা'কে পরিবর্তন করা যায়।তুমি যাবে আমার সাথে?
---আমি? না না।সুছন্দা বলল।
---দেখো সুছন্দা যেহেতু কানু দা' তোমাকে ভালোবাসত।হয়ত তোমার কথা শুনে বুড়ো বাপের কাছে যাবে।নিজেকেও বদলে নিতে পারে।

সুছন্দা বলল---গেলে তুমি যাও।আমি এসবে নেই।
রঞ্জন সুছন্দার কাঁধে চিবুক রেখে বলল---আমার সুন্দরী বউটার হৃদয় এখনো কত নিষ্ঠুর।
সুছন্দার পেটের মাংসতে হাত বোলাতে বোলাতে রঞ্জন পুনর্বার বলল---শুধু সুন্দরী নয় আমার বউটা সেক্সিও।
সুছন্দা হেসে বলল---অনেক হয়েছে, কি মতলব তোমার বুঝতে পারছি।এখানে কিছু মিলবে না।সব বাড়ী গেলে।

পরদিন অর্করা ফিরে এলো কলকাতা।রঞ্জন মাত্র এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েসছে সে ঠিক করল আজ বিকেলেই একবার যাবে কানু দা'র বাসায়।

সুছন্দা অফিস গেছে, অর্ক স্কুলে বিকেল চারটে নাগাদ বেরিয়ে পড়ল রঞ্জন।বড় রাস্তার মোড়টা থেকে হাঁটা দিল সে।সে লগার চায়ের দোকানটা বন্ধ দেখল।

কানু দা'র বাড়ীতে এসে রঞ্জন দেখল সেই টিনের দরজাটা বন্ধ।ভেতরে হাত গলিয়ে খুলে দেওয়া যায়।রঞ্জন খুলে ফেলল দরজাটা।
কাঠের দরজায় নক করল রঞ্জন।বুঝতে পারল ভেতরে কেউ আছে।রঞ্জন আবার নক করতে যাবে দরজাটা খুলে গেল।
একটা লম্বা ঢ্যাঙা লোক দাঁড়িয়ে আছে, শ্যামলা ঘর্মাক্ত মুখে যত্রতত্র জমতে থাকা এলোমেলো দাড়ি, চুল গুলো উষ্কখুস্ক লালচে, হাতে রঙের ব্রাশ।রঞ্জনের এত বছর পরে কাঁই দা'কে চিনবার কথা নয়।হাতে ব্রাশ দেখেই বুঝল এই হল কানু তথা সুখেন সর্দার।

---কাকে চাই? লোকটা গম্ভীর ভাবে বলল।
সুখেন হেসে বলল---আপনি সুখেন সর্দার মানে কানু দা?
লোকটা একবার রঞ্জনকে পা থেকে মাথা পর্য্ন্ত দেখল।বলল---আসুন।
রঞ্জন ভেতরে ঢুকে অগোছাল ইটের ঘরের ভ্যাপসা গরম।এমনিতেই বাইরে ভীষন রোদ।গরমের দিনে লোকটা থাকে কি করে?
লোকটার পিছু পিছু যে ঘরটায় এলো সে ঘরটায় একটা অর্ধেক আঁকা ইলাস্ট্রেশন।রঞ্জন বলল---আপনি কি এটা কোনো আর্ট গ্যালারির জন্য আঁকছেন?
লোকটা ব্যাঙ্গাত্বকভাবে হাসল।বলল--আর্ট গ্যালারি! ওসব সৌখিন শিল্পে আমি নেই।
---তবে?
---এক বড়লোকের ড্রয়িং রুমে থাকবে।তার অর্ডার।তা আপনি কে? চিনলাম না তো?
---আমি রঞ্জন মৈত্র...
কিছু বলবার আগেই কানু ছবি আঁকতে আঁকতে বলল---থাক থাক বুঝেছি, জলদাপাড়া ফরেস্টের একদা বড়সাহেব বিমল মৈত্রের ছেলে।
---কানু দা তোমার মনে আছে? রঞ্জন অবাক হল।
কানু ঘুরে পড়ে বলল---কেন মনে থাকবে না? শালা যার নমক খেলাম, যার হাতে ধোলাই খেলাম তাকে মনে রাখব না।
রঞ্জন বলল---ওটা একটা ভুল ছিল!
---কোনটা বে? চুরির কেস? ওসব এখন পোস্টমডার্ন যুগের বাবু হয়েছিস তুই বলবি।তোর জমিদার রক্তের ব্রাহ্মণ বাপ-দাদা বলবে না।
---তোমার কি এখনো রাগ হয়?
---কার ওপর?
---আমার বাবার ওপর, তোমার বাবার অর্থাৎ বটুকাকার ওপর?
---কেন রাগ হবে? তোর বাপ মরে ভূত, আর বটুক বুড়োও যেতে বসছে, কি বালটা ছিঁড়বে আমার?
---তুমি নিজের বাবার সম্পর্কে....
কানু হেসে উঠল।তুই এজন্য এসেছিস? ফরেস্ট অফিসের বড় বাবুদের জোতদারি মৈত্র বাড়ীর কুকুর বটুকবুড়োর জন্য?
চমকে গেল রঞ্জন! কানু দা জানল কি করে? নাকি নিছকই সন্দেহের বশে ধরে ফেলল?
---হ্যা কানু দা এসছি।বটুকাকা তোমাকে এখনও ভালোবাসে।আর এ বয়সে লোকটাকে কষ্ট না দিয়ে তোমার যাওয়া উচিত।

কানু হেসে উঠল রঙের ব্রাশ রেখে ছেঁড়া একটা কাপড়ে হাত মুছে বিড়ি ধরালো।বলল--আমাকে কেউ ভালোবাসলে আমি কি করব? আমি তো একজনকেই ভালোবাসি।তোর বউকে...
রঞ্জনের কাঁধ চাপড়ে হেসে বলল---রাগ করলি? আলিপুরদুয়ার গিয়েতো সব জানলি যে তোর বউর জন্য আমি...
রঞ্জন হেসে মিথ্যে করে বলল---সুছন্দা কিন্তু তোমার কথা বলে..
---আচ্ছা! তাহলে এলো না কেন?
--এলে কি তুমি ওর কথা শুনবে?
---শুনে কি করব? বটুক বুড়োকে গিয়ে বলব বাপ বাপ আমি এসছি?
---আচ্ছা কানু দা, এত ভালো ছবি আঁকো, ইচ্ছে করে না তোমার নাম ডাক হোক?
---আমার রক্তে তোদের জমিদারির রক্ত নেই।নামডাকের ইচ্ছা আমার নেই।নিজের মত থাকি, মদ-গাঁজা খাই, রেন্ডি পাড়ায় যাই...
---তাবলে নিজেকে এমন শেষ করে দেবে।সুছন্দা বলছিল তুমি নাকি ওর দাদুর খুব স্নেহের ছিলে।ছবিও নাকি তোমার অসাধারণ।
---ফনি বাবুর কথা আলাদা।লোকটা বড় সৎ ছিল।
---ফনি বাবু চাইতেন তুমি বড় শিল্পী হও।লোকের ড্রয়িং রুমে না থেকে, একটা আর্ট গ্যালারি হোক।
---এই বাঁড়া! এবার শুরু করলি তোদের জমিন্দারি কথা, সবসময় সভ্যতার উপর ডমিনেশন চাস।বাঁড়া এই যে ঘর দেখছিস না এ এক বারাণসীর রেন্ডির ঘর।হীরা তার নাম।শালীর খুব খাঁই ছিল।ষাট বছর বয়সেও আমাকে দিয়ে পোকা মারাতো।আমার যৌবন খেয়েছে হীরা রেন্ডি।বিনিময়ে এই ঘরটা দিয়ে গেছে।আর এই ঘরেরও শালা নানা ফ্যাকড়া... বাঞ্চোদ একটা প্রোমোটার নাকি কোত্থেকে দলিল বের করেছে এর অর্ধেক নাকি হীরার বরের...এখন শালা হীরার যে কোনো বর ছিল কোনোদিন শুনিনি।হেব্বি কেলো চলছে।শালা ঘরটার জন্য গচ্চা গেল টাকা, মদ খাওয়া শালা ছেড়েই দিতে হল গাঞ্জা আর বিড়িতেই চলছে।এ ঘরে থাকাই এখন বিপদ...প্রোমোটার রীতেশ যাদব চাইছে রাতের অন্ধকারে আমাকে কুপিয়ে দিতে পারলেই হল।
---তাহলে তো খুব বিপদে আছো কানু দা?
কানু হেসে বলল---রঞ্জন আমার জীবনটা এরকমই, কোথায় থাকিনি বল দেখি, প্রেসিডেন্সিতে পড়তাম।তখন সোনাগাছি গিয়ে ধরা খাই।অবশ্য লাগাতে যাওয়াই আমার উদ্দেশ্য ছিল না তার সাথে রেন্ডিদের ছবি আঁকার নেশা ছিল।পুলিশ ধরলে হীরা ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।তুই ভাবতে পারবি না রঞ্জন এই হীরা আমাকে ইউজ করেছে ঠিকই ঠাঁইও দিয়েছে।হীরা তার বুকে আমাকে চেপে রাখত।হীরার বুকে দুধ ছিল।ওর যে কেন এত বয়সেও বুকে দুধ ছিল জিজ্ঞেস করলে বলত ওটা নাকি রামলালার জন্য আছে।আর সে রামলালা নাকি আমি।ওর বুকের দুধ খাওয়াটা আমার নেশা ছিল।তখন মদের নেশা ছিল না।হীরাই গাঁজা বানিয়ে দিত।টানতাম দুজনে।হীরা মরে যাবার পর দুধের জায়গায় মদের নেশা হল...আর এখন কিসের নেশা জানিস?
রঞ্জনের আর শুনতে ভালো লাগছিল না।বলল---তুমি ক'টা দিন আমার বাড়ীতে থাকতে পারো।আমাদের নীচ তলাটা ভাড়া দেওয়ার জন্য ভেবেছিলাম।কিন্তু শেষ পর্য্ন্ত দেওয়া হয়নি।তোমাকে ভাড়া দিতে হবে না।তুমি নিজের মত থাকবে।

কানু হেসে বলল---দয়া করছিস? বড় সাহেবের রক্ত যে...
---এমনটা ভেবো না কানু দা।তোমার সঙ্গে আমার যেটুকু শৈশব আছে সেটা খুব আনন্দের।তুমি ছোটভাইর মত মনে কর আমাকে।

--তোর বউ সুছন্দা আবার আপত্তি করবে না তো?
--ও কে আমি বুঝিয়ে বলব।

মনে মনে রঞ্জন ভাবছিল এমন একটা খ্যাপাটে নেশাখোর লোককে বাড়ীর নীচ তলায় থাকতে দিলে সুছন্দা মোটেই রাজি হবে না।সুছন্দাকে রাজি করতেই হবে।কানু দা হয়ত তাতে বদলে যেতে পারে।এতক্ষণ কানুদার কথায় তো কোনো অসংলগ্নতা পেল না রঞ্জন, একটু ঠোঁটকাটা ভাষা যা বলে থাকে।রঞ্জন মনে মনে ভাবল লোকটার খুব সম্ভাবনা আছে
নতুন করে নিজেকে গড়ে নিতে পারে।

যাওয়ার সময় রঞ্জন বলল---কানু দা, কাল সন্ধ্যেতে আসুন আমাদের বাড়ী।চা খেতে খেতে কথা বলা যাবে।

কানু হেসে বলল--রঞ্জন আমাকে নিয়ে খামোখা ভাবছিস! আমার কি কোনো ঠিক ঠিকানা আছে!
(চলবে)


--মৃত হেনরির ভূত।
Like Reply
যাক ফিরে এসেছেন দেখে ভাল লাগল।নিশ্চই কোনো বাধা বিপত্তির মধ্যে ছিলেন। আশা করবো এবার গল্প নিজের ছন্দে এগিয়ে যাবে।
[+] 1 user Likes aamitomarbandhu's post
Like Reply
(মৃত হেনরির ভূত)- সত্যি আপনি গ্রেট
রেপস
[+] 1 user Likes kunalabc's post
Like Reply




Users browsing this thread: 19 Guest(s)