12-05-2020, 06:48 PM
ক্রিং ক্রিং ক্রিং
যাদবপুর থানায় সমরেশ বাবুর টেবিলে ল্যান্ডলাইন টা বেজে উঠল, সমরেশ বাবু সবে একটু ঝিমোতে শুরু করেছিলেন, একটু বিরক্ত হয়েই ফোন টা তুললেন
- হ্যালো কে? …… খুব কর্কশ শোনালো
- সমরেশ আমি অরুপ, কিরে ঘুমাচ্ছিলি নাকি?
- আরে না না, বল।
- কমিশনার স্যার আর আমি এখুনি যাব স্পটে তৈরি থাকিস।
- পীযূষ বাবুও আসবে?
- হ্যাঁ রে, আর শোন মিডিয়াও থাকবে, লোক রাখিস কিন্তু।
- ঠিক আছে, তোরা কতক্ষণে আসবি?
- কমিশনার বেড়িয়ে গেছে, আমার অফিসে এলেই আমিও বেড়িয়ে পড়ব।
- ঠিক আছে, থ্যাঙ্কস বলে দেবার জন্য।
- আর ঢ্যমনামো মেরোনা।
ফোনটা রেখে টেবিলে রাখা জলের গ্লাস থেকে এক ঢোঁক জল খেলেন সমরেশ বাবু, তারপর জোরে হাঁক দিলেন
- অবনী বাবু
- হ্যাঁ স্যার।
- এখন থানায় কতজন আছে?
- তা ১০-১২ জন হবে।
- আর উপরে ঘুমাচ্ছে কতজন?
- সে তো জানিনা স্যার।
- সবাইকে ডাকুন, বলুন রেডি হয়ে নামতে ১০ মিনিটের মধ্যে।
- আচ্ছা স্যার।
- আর বলবেন সবাই যেন …… থাক নেমে আমার সাথে দেখা করতে বলুন।
- ঠিক আছে স্যার।
অবনী বাবু চলে যেতেই সমরেশ বাবু ফোন করলেন গোপাল দত্ত কে
- হ্যালো গোপাল
- হ্যাঁ স্যার
- কোথায় আছো?
- স্যার সিগারেট কিনছি
- কিনে জলদি যাও, কমিশনার স্যার আসবে স্পটে।
- ঠিক আছে স্যার।
সমরেশ নিজের মনেই বলতে লাগলেন
- কে না কে মার্ডার হবে তার জন্য আমাদের হন্যে হয়ে খুনী খুঁজতে হবে। শালা হত এখন সাধারন পাবলিক, কারো টিকি দেখা যেত না। আর যেই মন্ত্রীর মেয়ে খুন হল, ব্যাস সবাই মিলে খুজতে বেড়িয়ে গেল। আবার এই মন্ত্রী কাউকে মার্ডার করলে শালা তখন সেই মন্ত্রীকেই বাঁচিয়ে রাখো। কি জীবন শালা, হোপলেস। যাই বাথ্রুম থেকে ঘুরে আসি।
সমরেশ বাবু বেড়িয়ে বাথ্রুমের দিকে গেলেন।
******************************************
আজ আকাশ জুড়ে শুধুই বিষ
তাই কি আকাশের রং গাড় নীল
আজ আর ইচ্ছে করেনা দোয়েল হতে
আমি আজ হতে চাই গাংচিল
যেদিন আবার আকাশ কালো হবে
মনটা আমার আবার ভালো হবে
বুঝব ফিরেছি দূষণ ভরা শহরে
দেখব পানের পিকে ভরা এ পাঁচিল
আমার জানলা দিয়ে মাঠ দেখা যায় সবুজ
আশে পাশে রং বেরঙের গাঁথনি
আমি পাড়ি দিতে চাই স্বপ্নে দেখা সাগর
বন্ধ চোখে নোনা জলের ঘ্রাণ নি
হঠাত করে সন্ধ্যা নেমে আসে
ছড়িয়ে পরে কনে দেখা আলো
আড়াল থেকে শুনতে যে পাই আমি
আমি হব তোমার ঠোঁটের তিল।
- কি পড়ছেন স্যার?
সব্যসাচী তাকিয়ে দেখে গোপাল দত্ত।
- আপানার সিগারেট কেনা হয়ে গেল?
- হ্যাঁ স্যার
- এত তাড়াতাড়ি?
- সমরেশ বাবু ফোন করেছিলেন, কমিশনার স্যার আসছেন এখানে।
- বুঝলাম।
- স্যার কি পড়ছিলেন বললেন না তো।
- ডায়রী, ইলোরা মিত্রের ডায়রী।
- কিছু ক্লু পেলেন?
- নাহ গোপাল বাবু, এখানে এখন কোন ক্লু পাবো বলে মনে হয়না।
- তাহলে কখন পাবেন?
- আপনার বন্ধু রাজু আসার পর।
- আপনার কি মনে হয় পিন্টু থাকবে ওর ঘরে?
- মনে তো হয় না।
- মার্ডার যদি করে থাকে তাহলে থাকবে না।
- আর না করলে থাকবে বলছেন?
- হ্যাঁ
- আর মার্ডার দেখলে?
- মার্ডার দেখলে?
- হ্যাঁ যদি মার্ডার হতে দেখে তাহলে কি থাকবে?
- থাকতেও পারে।
- কিন্তু থাকলে তো এতক্ষণে চলে আসত।
- ভয় পেলে তো স্যার আসবে না, মার্ডার দেখে হজম করা তো সোজা নয় স্যার।
- হুম তা ঠিকই বলেছেন।
- স্যার তাহলে আপনি বলছেন পিন্টু খুন করেনি?
- চান্স কম, একেবারে না বোলা যায়না।
- কেন স্যার?
- কেন …… আচ্ছা গোপাল বাবু এই গোটা ঘরে কিছু কি দেখেছেন যা দেখে আপনার মনে হয়েছে যে এটা অসম্ভব।
- না স্যার।
- কেন?
- সবকিছু তো খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে স্যার।
- কিরকম?
- দরজা খুলল, মাথায় চোট মারল, বডি পড়ে গেল, খুনিও চম্পট।
- গোপাল বাবু, ইনভেস্টিগেশন করতে হলে সবার আগে নিজেকে ফাঁকা করতে হবে।
- ফাঁকা করতে হবে মানে?
- বসুন
- এই বিছানায় বসব?
- বিন্দাস বসুন, ওতে ইলোরা মিত্র ছাড়া আর কারো ফিঙ্গার প্রিন্ট নেই।
- বলুন স্যার …… গোপাল দত্ত বিছানায় বসল।
- গোপাল বাবু ভাবুন আপনাকে আমি এক গ্লাস জল দিয়েছি, আর তারপর সেই গ্লাসেই আমি আপনাকে পেপসি ঢেলে দিলাম। কি হবে?
- যদি গ্লাসে জল ভর্তি থাকে তো উপচে পড়ে যাবে।
- একদম ঠিক। তাহলে উপায়?
- আগে জল টা খেয়ে নিতে হবে বা ফেলে দিতে হবে, তারপর ওতে পেপসি ঢালা যাবে।
- সঠিক বলেছেন। এবারে আপনি ভাবুন আপনার মাথাটাও গ্লাসের মত। আপনি অলরেডি ওটাকে ভর্তি করে রেখেছেন পিন্টু খুন করেছে ভেবে। এরপর কি আমি ওতে পেপসি ঢালতে পারব?
- তাহলে আপনি বলছেন পিন্টু খুন করেনি?
- আমি কিছুই বলিনি গোপাল বাবু, আচ্ছা আপনার মাথায় এটা কি করে এল যে পিন্টু খুন করে থাকতে পারে?
- ওই যে স্যার পিন্টুর ফোন বন্ধ।
- যদি ওর ফোনটা চুরি হয়ে যায় বা ভেঙ্গে যায়?
- কিন্তু ও তো তাড়াতাড়ি চলে গেছিল?
- অধৈর্য হয়ে চলে গেছিল, শরীর খারাপ করেছিলো বলে চলে গেছিল …… হতেই পারে। তাই না?
- তাহলে স্যার কে খুন করল ?
জানিনা, অপেক্ষা করছি রাজুর ফোনের। দেখি কি খবর পাই।
যাদবপুর থানায় সমরেশ বাবুর টেবিলে ল্যান্ডলাইন টা বেজে উঠল, সমরেশ বাবু সবে একটু ঝিমোতে শুরু করেছিলেন, একটু বিরক্ত হয়েই ফোন টা তুললেন
- হ্যালো কে? …… খুব কর্কশ শোনালো
- সমরেশ আমি অরুপ, কিরে ঘুমাচ্ছিলি নাকি?
- আরে না না, বল।
- কমিশনার স্যার আর আমি এখুনি যাব স্পটে তৈরি থাকিস।
- পীযূষ বাবুও আসবে?
- হ্যাঁ রে, আর শোন মিডিয়াও থাকবে, লোক রাখিস কিন্তু।
- ঠিক আছে, তোরা কতক্ষণে আসবি?
- কমিশনার বেড়িয়ে গেছে, আমার অফিসে এলেই আমিও বেড়িয়ে পড়ব।
- ঠিক আছে, থ্যাঙ্কস বলে দেবার জন্য।
- আর ঢ্যমনামো মেরোনা।
ফোনটা রেখে টেবিলে রাখা জলের গ্লাস থেকে এক ঢোঁক জল খেলেন সমরেশ বাবু, তারপর জোরে হাঁক দিলেন
- অবনী বাবু
- হ্যাঁ স্যার।
- এখন থানায় কতজন আছে?
- তা ১০-১২ জন হবে।
- আর উপরে ঘুমাচ্ছে কতজন?
- সে তো জানিনা স্যার।
- সবাইকে ডাকুন, বলুন রেডি হয়ে নামতে ১০ মিনিটের মধ্যে।
- আচ্ছা স্যার।
- আর বলবেন সবাই যেন …… থাক নেমে আমার সাথে দেখা করতে বলুন।
- ঠিক আছে স্যার।
অবনী বাবু চলে যেতেই সমরেশ বাবু ফোন করলেন গোপাল দত্ত কে
- হ্যালো গোপাল
- হ্যাঁ স্যার
- কোথায় আছো?
- স্যার সিগারেট কিনছি
- কিনে জলদি যাও, কমিশনার স্যার আসবে স্পটে।
- ঠিক আছে স্যার।
সমরেশ নিজের মনেই বলতে লাগলেন
- কে না কে মার্ডার হবে তার জন্য আমাদের হন্যে হয়ে খুনী খুঁজতে হবে। শালা হত এখন সাধারন পাবলিক, কারো টিকি দেখা যেত না। আর যেই মন্ত্রীর মেয়ে খুন হল, ব্যাস সবাই মিলে খুজতে বেড়িয়ে গেল। আবার এই মন্ত্রী কাউকে মার্ডার করলে শালা তখন সেই মন্ত্রীকেই বাঁচিয়ে রাখো। কি জীবন শালা, হোপলেস। যাই বাথ্রুম থেকে ঘুরে আসি।
সমরেশ বাবু বেড়িয়ে বাথ্রুমের দিকে গেলেন।
******************************************
আজ আকাশ জুড়ে শুধুই বিষ
তাই কি আকাশের রং গাড় নীল
আজ আর ইচ্ছে করেনা দোয়েল হতে
আমি আজ হতে চাই গাংচিল
যেদিন আবার আকাশ কালো হবে
মনটা আমার আবার ভালো হবে
বুঝব ফিরেছি দূষণ ভরা শহরে
দেখব পানের পিকে ভরা এ পাঁচিল
আমার জানলা দিয়ে মাঠ দেখা যায় সবুজ
আশে পাশে রং বেরঙের গাঁথনি
আমি পাড়ি দিতে চাই স্বপ্নে দেখা সাগর
বন্ধ চোখে নোনা জলের ঘ্রাণ নি
হঠাত করে সন্ধ্যা নেমে আসে
ছড়িয়ে পরে কনে দেখা আলো
আড়াল থেকে শুনতে যে পাই আমি
আমি হব তোমার ঠোঁটের তিল।
- কি পড়ছেন স্যার?
সব্যসাচী তাকিয়ে দেখে গোপাল দত্ত।
- আপানার সিগারেট কেনা হয়ে গেল?
- হ্যাঁ স্যার
- এত তাড়াতাড়ি?
- সমরেশ বাবু ফোন করেছিলেন, কমিশনার স্যার আসছেন এখানে।
- বুঝলাম।
- স্যার কি পড়ছিলেন বললেন না তো।
- ডায়রী, ইলোরা মিত্রের ডায়রী।
- কিছু ক্লু পেলেন?
- নাহ গোপাল বাবু, এখানে এখন কোন ক্লু পাবো বলে মনে হয়না।
- তাহলে কখন পাবেন?
- আপনার বন্ধু রাজু আসার পর।
- আপনার কি মনে হয় পিন্টু থাকবে ওর ঘরে?
- মনে তো হয় না।
- মার্ডার যদি করে থাকে তাহলে থাকবে না।
- আর না করলে থাকবে বলছেন?
- হ্যাঁ
- আর মার্ডার দেখলে?
- মার্ডার দেখলে?
- হ্যাঁ যদি মার্ডার হতে দেখে তাহলে কি থাকবে?
- থাকতেও পারে।
- কিন্তু থাকলে তো এতক্ষণে চলে আসত।
- ভয় পেলে তো স্যার আসবে না, মার্ডার দেখে হজম করা তো সোজা নয় স্যার।
- হুম তা ঠিকই বলেছেন।
- স্যার তাহলে আপনি বলছেন পিন্টু খুন করেনি?
- চান্স কম, একেবারে না বোলা যায়না।
- কেন স্যার?
- কেন …… আচ্ছা গোপাল বাবু এই গোটা ঘরে কিছু কি দেখেছেন যা দেখে আপনার মনে হয়েছে যে এটা অসম্ভব।
- না স্যার।
- কেন?
- সবকিছু তো খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে স্যার।
- কিরকম?
- দরজা খুলল, মাথায় চোট মারল, বডি পড়ে গেল, খুনিও চম্পট।
- গোপাল বাবু, ইনভেস্টিগেশন করতে হলে সবার আগে নিজেকে ফাঁকা করতে হবে।
- ফাঁকা করতে হবে মানে?
- বসুন
- এই বিছানায় বসব?
- বিন্দাস বসুন, ওতে ইলোরা মিত্র ছাড়া আর কারো ফিঙ্গার প্রিন্ট নেই।
- বলুন স্যার …… গোপাল দত্ত বিছানায় বসল।
- গোপাল বাবু ভাবুন আপনাকে আমি এক গ্লাস জল দিয়েছি, আর তারপর সেই গ্লাসেই আমি আপনাকে পেপসি ঢেলে দিলাম। কি হবে?
- যদি গ্লাসে জল ভর্তি থাকে তো উপচে পড়ে যাবে।
- একদম ঠিক। তাহলে উপায়?
- আগে জল টা খেয়ে নিতে হবে বা ফেলে দিতে হবে, তারপর ওতে পেপসি ঢালা যাবে।
- সঠিক বলেছেন। এবারে আপনি ভাবুন আপনার মাথাটাও গ্লাসের মত। আপনি অলরেডি ওটাকে ভর্তি করে রেখেছেন পিন্টু খুন করেছে ভেবে। এরপর কি আমি ওতে পেপসি ঢালতে পারব?
- তাহলে আপনি বলছেন পিন্টু খুন করেনি?
- আমি কিছুই বলিনি গোপাল বাবু, আচ্ছা আপনার মাথায় এটা কি করে এল যে পিন্টু খুন করে থাকতে পারে?
- ওই যে স্যার পিন্টুর ফোন বন্ধ।
- যদি ওর ফোনটা চুরি হয়ে যায় বা ভেঙ্গে যায়?
- কিন্তু ও তো তাড়াতাড়ি চলে গেছিল?
- অধৈর্য হয়ে চলে গেছিল, শরীর খারাপ করেছিলো বলে চলে গেছিল …… হতেই পারে। তাই না?
- তাহলে স্যার কে খুন করল ?
জানিনা, অপেক্ষা করছি রাজুর ফোনের। দেখি কি খবর পাই।