Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller রক্তের রং
#1
রক্তের রং
 
লাল বাজারে মিটিং, ডেকেছেন খোদ কমিশনার সাহেব। অগত্যা সমরেশ বাবু সকাল সকাল ইস্তিরি করা পোষাক পরে হাজির। যদিও কি নিয়ে তলব সেটা অবশ্য অজানা নয়। নয় নয় করে ২৬ বছর হয়ে গেল এই চাকরি তে। ঢুকেছিলেন এসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর হয়ে। আর আজ যাদবপুর থানার ইনচার্জ। আর তলব টাও সেই জন্যই, খুনের কেস। তাও পূর্বতন সাংসদের বাড়ি। অত ভেবে যদিও লাভ নেই, কপালে যা থাকে এই ভেবে ঢুকলেন । ঢুকতেই দেখা পেলেন সঞ্জীব বাবুর, সঞ্জীব রায়… একই ব্যাচ।
-       মর্নিং সঞ্জীব
-       গুড মর্নিং সমরেশ
-       ব্যাড মর্নিং বল ভাই,
-       আরে বাবা পুলিশের জীবনে তো মার্ডার কেস নর্মাল, অত ঘাবড়াচ্ছ কেন?
-       আরে কমিশনার ডেকেছে রে ভাই।
-       আরে আমি তো মেল আর ফোন গুলো করলাম, আমি জানবোনা ?
-       ফোন গুলো মানে?
-       মানে শুধু তুমি না, আরও তাবড় তাবড় দের ডাকা হয়েছে। তাই ঘাবড়িও না, তোমার ওপর দিয়ে বেশি ঝড় যাবে না।
-       কমিশনার তো শুনেছি রাগী খুব।
-       ধুর, এসব কোথায় শোন বলত? একদম বিন্দাস লোক। তবে হ্যাঁ কালো কে কালো আর সাদা কে সাদা বলেন।
-       তাও রে ভাই, এই বয়েসে আবার ট্রান্সফার হলে চাপ।
-       আরে ভাবো কেন অত, মেয়ের খবর কি?
-       সে তো ফাইনাল ইয়ার, বলছে পড়ছি আর আমি তো দেখি খালি ফেসবুকে ছবি দিয়েই যাচ্ছে।
-       পড়ার ছবি?
-       তাহলেই হয়েছে, ওটুকু ছাড়া বাকি সবই দিচ্ছে।
-       আর বউদির খবর কি?
-       সে তো ভাই দিন দিন হাতি হচ্ছে। দু হাতে আজকাল আর আঁটছে না।
-       বাবাঃ আঁটাবার সুযোগ পাচ্ছ? নাকি এখনও বউকে চোখে হারাচ্ছ?
-       ভাই তোমার মত কপাল করে তো আসিনি, তাই হাতি হোক বা জলহস্তি গাড়ি ওখানেই গ্যারেজ করা ছাড়া উপায় নেই।
-       হাহাহাহাহাহহা ভালো বলেছ।
-       তা ভাই আজকের মিটিং হবে কোথায়?
-       কনফারেন্স রুমে, দোতলায় উঠে সোজা গিয়ে বাঁদিকে। তুমি যাও, আমি এদিকে ইটিং এর ব্যাপারটা দেখে নি।
-       গাল খাবার পর কি আর জায়গা থাকবে পেটে?
-       পুলিশের পেট তো অতল হয়, শাস্ত্রে বলে। জানোনা ?
-       বেশ যাই।
 
কনফারেন্স রুমের দরজা ঠেলে ঢুকলেন সমরেশ বাবু, ঢুকতেই দেখতে পেলেন চার জন বসে আছে তাঁর আগে থেকেই। চোখ বুলিয়ে বুঝলেন তারা তে এরা সবাই উঁচুতে।
 
-       আরে সমরেশ না?
-       হ্যাঁ
-       চিনতে পারলি না? আমি অরুপ।
-       কোন অরুপ?
-       ওরে আহাম্মক, আমি অরপ শাসমল, আশুতোষ ৯২ এর ব্যাচ।
-       মুত্রমল?
-       হারামি শালা, আমাকে ভুলে গেছিস কিন্তু ওই নামটা মনে রেখেছিস।
-       কিন্তু তুই এতো রোগা হলি কি করে?
-       সুগার ভাই সুগার, এখন তো বউয়ের থেকে ইনসুলিন কে বেশি ভালবাসি রে।
-       বলিস কি রে, তোর এতো বাজে হাল।
-       কি আর করা যাবে, তুই বল তোর খবর কি?
-       চলে যাচ্ছে, নেতা মন্ত্রীদের আশীর্বাদে।
-       তুই এতো মিইয়ে গেছিস কেন?
-       ভাই এতো বছরের চাকরিতে এই প্রথম কমিশনারের তলব,
-       আরে ধুর ধুর, ওসব ছাড় পরিচয় করিয়ে দি … এই হল সুখেন বিশ্বাস, উনি দক্ষিন পূর্ব দেখেন। এই হল রাজকুমার মজুমদার, উনি দক্ষিন পশ্চিম দেখেন। এই হল সুভাষ দত্ত, উনি স্পেশাল ব্রাঞ্চ দেখেন।
সমরেশ বাবু সবার সাথেই করমর্দন করলেন।
-       কিন্তু অরুপ তুই?
-       আমি কি? ও আমি তো তোর জায়গা দেখি রে, সাউথ সাবারবান দেখি রে, বিকাশ বাবু তো পা ভেঙ্গে পড়ে আছে।
-       ও আচ্ছা, তাহলে তো স্যার বলতে হয়।
অরুপ সমরেশের কানে কানে বলল
-       তাহলে মুখে মুতে দেব বাঁড়া।
 
বলতে বলতেই দরজা খুলে ঢুকলেন কমিশনার পীযূষ সমাদ্দার। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে স্যালুট ঠুকল। পীযূষ বাবু চেয়ারে বসলেন, তারপর বললেন,
 
-       আজকের মিটিং কেন ডাকা হয়েছে আশা করি সবাই জানেন।
 
সবাই ঘাড় নাড়ল, দেখাদেখি সমরেশ বাবুও। পীযূষ বাবু আবার বলতে শুরু করলেন
 
-       দেখুন সোজাসুজি ভাবেই বলি, অঞ্জন মিত্র হয়ত এখন আর সাংসদ নেই, তবুও ওনার দাপট কিন্তু কম নয়। এক কালে সিনেমা কাঁপিয়েছেন, তাই কানেকশন ওনার এখনও বেশ ভালই। সুতরাং তাঁর মেয়ের খুন নিয়ে জলঘোলা যে কম হবেনা সেটা আপনারা আশা করি বোঝেন। সংবাদ মাধ্যম আর উপর মহল দুদিক থেকেই চাপ দেবে আর সেটা আসবে আমাদের ওপরেই। আর তাই এই মিটিং ডেকেছি। ঘটনাস্থল যেহেতু যাদবপুর, তাই যাদবপুর থানা তো কেস টা নিয়ে ডিল করবেই, তাছাড়া একটা স্পেশাল টিম ও তৈরি করা হবে। আর এটা নিয়েই একটা প্রেস কনফারেন্স ও ডেকেছি। সেখানেই এটা উল্লেখ করবো। যাদবপুর থানার ইনচার্জ … কি যেন নাম … সমরেশ বাবু, আপনি রিপোর্ট এনেছেন তো?
-       হ্যাঁ হ্যাঁ সার, এই যে ।
-       আমাকে নয় অরুপ বাবু কে দিন। অরুপ বাবু আপনি প্রেস কনফারেন্সে এ থাকবেন আমার সাথে, সেখানে কেসের প্রেসেন্ট স্ট্যাটাস আপনি বলবেন। ওকে?
-       ওকে স্যার।
 
অরুপ বাবু সমরেশ বাবুর কাছ থেকে ফাইল টা নিয়ে খুলে দেখতে লাগলেন।
 
এই সময় একজন ট্রে তে করে চা আর কেক নিয়ে ঢুকল।
 
-       নিন সবাই চা নিন, খেতে খেতেই আলোচনা করা যাক। … পীযূষ বাবু বললেন।
 
সবাই একে একে চায়ের কাপ গুলো নিয়ে নিলেন।
 
কেকের টুকরোয় কামড় দিয়ে পীযূষ বাবু আবার বললেন
 
-       দেখুন আমি খুব বড় টিম বানাতে চাইনা, একজন সিনিয়ার ইনস্পেক্টর, একজন এ সি পি আর একজন ইনভেস্টিগেটিং অফিসার মনে হয় যথেষ্ট। বাকি তো যাদবপুর থানাও আমাদের হেল্প করবে। আপনারা কি বলেন।
-       হ্যাঁ স্যার  এনাফ হবে। … অরুপ বাবু বললেন।
-       বেশ তাহলে আপনারাই বলুন, কে লীড করতে চান?
 
সবাই একে অপরের দিকে তাকাতে লাগলেন, কিন্তু কেউ আগ বাড়িয়ে নিজের নাম টা বললেন না। এসব দেখে পীযূষ বাবুই আবার বললেন
 
-       দেখুন নেতা মন্ত্রীর মেয়ের কেস, কেস সল্ভড হলে কিন্তু নাম, যশ সবই আছে। আবার কেস বেশী টাইম নিলে জনতা এবং জননেতা দুজনের রোষ ও আছে। এবার আপনারাই বলুন।
কিছু মিনিট নীরবতার পর সুভাষ বাবু বললেন,
-       স্যার, কেস তো যাদবপুর থানার আন্ডারে, তাহলে অরুপ ই হ্যান্ডেল করুক। ওর আন্ডারেই থাকবে তাহলে পুরোপুরি।
-       হুম, মন্দ সাজেশন না, অরুপ বাবু আপনার কি মত?
 
অরুপ বাবু খুশি না হলেও খুশি হবার ভান করে বললেন
-       হ্যাঁ স্যার নো প্রবলেম।
-       না হলেই ভালো, এ যত তাড়াতাড়ি শেষ হয় ততই ভালো।
-       হ্যাঁ স্যার, আর আমরা তো আছি সাপোর্টের জন্য। … সুখেন বাবু বললেন
-       বেশ, তাহলে সিনিয়ার ইনস্পেক্টর আর ইনভেস্টিগাটিং অফিসার কে কে হবে?
-       স্যার আমি একজনের নাম সাজেস্ট করতে পারি, করব? …… সুভাষ বাবূ বললেন।
-       বলুন, I am all ears.
-       নতুন অফিসার,তিনবছর আগের জয়েনিং। স্পেশাল ব্রাঞ্চেই ছিল প্রথমে, চটপটে, চোখ কান খোলা রাখার বদভ্যাস আছে। ট্রেনিং স্কুলে ভালো শ্যুটার ছিল, এখনও নিয়মিত শনিবার করে শ্যুটিং প্রাক্টিসে যায়। ইন্টেরোগেশন এও অনেক সিনিয়ার কে লজ্জায় ফেলতে পারে। নাম সব্যসাচী সান্যাল।
-        এ কি আপনার জামাই নাকি? সার্টিফিকেটের তো বন্যা বইয়ে দিলেন সুভাষ বাবু। হা হা হা হা করে হেসে বললেন পীযূষ বাবু।
-       স্যার এরা জামাই হবার জন্য নয়, এদের ক্রিমিনালের গুলিতে মরার কথা।
-       বটে? আপনি এতো ভরসা করেন? একবার তো বাজিয়ে দেখতে হচ্ছে।
-       লালবাজারেই তো আছে স্যার ৬ মাস ধরে, সারভেলেন্স টিমে।
-       তাই নাকি ? ওকে ……
বেল বাজিয়ে বাইরে দাঁড়ান এক কনস্টেবল কে ডাকলেন, সে ভিতরে আসতেই পীযূষ বাবু বললেন
-       সঞ্জীব বাবু কে গিয়ে বলুন সারভেলেন্সের সব্যাসাচী সান্যাল কে ডাকছি, আর্জেন্ট।
কনস্টেবল স্যালুট ঠুকে চলে গেল। পীযূষ বাবু আবার বলে উঠলেন
-       এ তো গেল ইনভেস্টিগেটিং অফিসার, সিনিয়ার ইনস্পেক্টর কে হবে? সুভাষ বাবু এনি মোর সাজেশনস?
-       স্যার সব্যসাচীকে আগে বাজিয়ে দেখে নিন, মনে হয় না আর কোন সিনিয়রা লাগবে।
-       কেন?
-       খাটিয়ে ছেলে স্যার, ২৪ ঘন্টাই ফিল্ডে থাকতে পারে যদি লাগে।
-       আপনি তো দরাজ হাতে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন মশাই। অরুপ বাবু আপনি শুনেছেন এরকম সব্যসাচীর কথা?
-       আমি তো শুনিনি স্যার …… অরুপ বাবু বললেন।
-       সুখেন বাবু, রাজকুমার বাবু আপনারা চেনেন নাকি?
-       সুভাষ বাবু, এটা কি বেলুড় কেসের সেই সব্যসাচী? …… সুখেন বাবু বললেন।
-       হ্যাঁ সুখেন বাবু, সেই ।
-       সুখেন বাবু আপনি চেনেন? …… পীযূষ বাবু জিজ্ঞেস করলেন।
-       চিনিনা কিন্তু নাম শুনেছি, খুবই এফেক্টিভ্লি ২০ ঘন্টার মধ্যে একটা মার্ডার কেস সল্ভ করেছিলো। প্রায় ২ সপ্তাহ কিচ্ছু কিনারা করা যায়নি। স্পেশাল ব্রাঞ্চ ইনভল্ভ হয়েছিল শেষমেশ। পলিটিকাল মার্ডার ছিল, রুলিং পার্টির সুপারি কিলারের কাজ করত অভিযুক্ত। রুলিং পার্টি আন্ডারগ্রাউন্ডে রেখেছিলো। এই সব্যসাচী ট্রেস করে, বড়বাজারের মত জায়গায় পায়ে শুট করে এরেস্ট করে।
-       তা এরকম একজনকে সারভেলেন্সে কেন?
-       রাজার সঙ্গে বিবাদ করে কি রাজ্যে থাকা যায় স্যার? …… সুভাষ বাবু বলে উঠলেন।
-       সুভাষ বাবু, আপনি কিন্তু ভালো নেতা হবেন। দারুন বললেন কিন্তু।
এমন সময় কনফারেন্স রুমের দরজা ঠেলে একটি কনস্টেবল ঢুকে এসে বলল
-       স্যার, সব্যসাচী সান্যাল এসেছে, ভিতরে পাঠাবো?
-       হ্যাঁ হ্যাঁ পাঠাও …… পীযূষ বাবু বললেন।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
দুর্ধর্ষ শিকারী যুদ্ধংদেহী ভাবাপন্ন
[+] 2 users Like kunalabc's post
Like Reply
#3
বাঃ প্রথম updateএ এক দুর্দান্ত thrillerর গন্ধ।
ভালো, চালিয়ে যান।
[+] 1 user Likes Amihul007's post
Like Reply
#4
ফাটাফাটি শুরু ।
চালিয়ে যান গুরু।
সাথে আছি ।
চলতে থাকুক ।
রেপু দিলাম ।
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
#5
লাভলি... অনেকদিন বাদে মন দিয়ে মিনিট চারেক পড়লাম।
[+] 2 users Like ALFANSO F's post
Like Reply
#6
সুন্দর শুরু। চালিয়ে যান।
[+] 3 users Like Damphu-77's post
Like Reply
#7
সত্যিকারের থ্রিলার, চালিয়ে যান।
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
#8
Dada, asadharon hoyeche,asha korbo golpo sompurno korben
[+] 1 user Likes Camun kumar's post
Like Reply
#9
কনস্টেবল বেড়িয়ে যেতেই ঘরের ভিতর ঢুকল বছর ২৫-২৬ এর এক যুবক, ইউনিফর্ম ছাড়া।
-       মর্নিং স্যার
-       মর্নিং, সব্যসাচী সান্যাল তুমি? তুমি বললাম বয়েসে অনেক ছোট আমার থেকে…… আপত্তি ঙেই তো?
-       না স্যার
-       বস
সব্যসাচী চেয়ার টেনে বসল।
-       কি জন্য ডাকা হয়েছে জানো ?
-       আন্দাজ করতে পারি।
-       তাই? বেশ শুনি কি আন্দাজ করেছো।
-       যাদবপুর মার্ডার কেস।
-       আন্দাজ সঠিক, কিভাবে করলে জানতে পারি?
-       যাদবপুর থানার ইনচার্জ কে নিয়ে মার্ডার কেসের পরের দিন সকালেই মিটিং, তাই বললাম।
-       তুমি যাদবপুর থানার ইনচার্জ কে চেন?
-       না স্যার,
-       তাহলে কিকরে বললে ?
-       সঞ্জীব বাবুর কাছে জানলাম কাদের নিয়ে মিটিং, সেখান থেকেই জানলাম।
-       আর তোমাকে ডাকলাম কেন?
-       আপনি স্পেশাল টিম তৈরি করছেন, তাই আমাকে হয়ত ইনক্লুড করবেন। সুভাষ বাবু আছেন, উনি হয়ত রেকমেন্ড করেছেন।  
-       সুভাষ বাবু রেকমেন্ড কেন করবেন?
-       উনি আমাকে খুব স্নেহ করেন, ওনার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। আর তাছাড়া আমার নাম বাকিরা তো কেউ জানেনা।
-       তোমার অনুমান ক্ষমতার প্রশংসা করি। কিন্তু স্পেশাল টিমের অনুমান কিভাবে করলে?
-       মন্ত্রী একটু আগেই ঘোষণা করেছেন যে তিনি একটি স্পেশাল টিমকে দিয়ে এই ইনভেস্টিগেশন করাতে চান।
-       সুভাষ বাবু, এই ছেলেকে ছাড়লেন কেন?
-       কর্তার ইচ্ছায় তো কর্ম আমাদের, আপনি তো সবই জানেন।  … সুভাষ বাবু বললেন।
-       হুম, তাহলে সব্যসাচী তুমি ডিপার্টমেন্টে যাও, চার্জ হ্যান্ডওভার করে এসো। আমি অফিস অর্ডার পাঠাতে বলছি। আর আজকেই তুমি অরুপ বাবুর কাছে সাউথ সাবারবানে রিপোর্ট করবে। উনি এই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের লীড। আর তোমাকে ফিল্ড ইনচার্জ করছি, তোমাকে সাপোর্ট দেবেন সমরেশ বাবু। ওকে?
-       স্যার একটা ছোট মুখে বড় কথা বলব?
-       সাজেশন দিতে চাও? ও সুভাষ বাবু এটাও কি আপনার থেকেই শিখেছে নাকি?
সুভাষ বাবু মৃদু হাসলেন, কিছু বললেন না। পীযূষ বাবুই বললেন
-       বল কি বলতে চাও।
-       স্যার অফিসিয়ালি আপনি টিম লীড করুন।
-       কেন? তাতে কি লাভ?
-       স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে যদি বলেন যে আপনি নিজে এটাকে দেখছেন, তাহলে তাদের ওপর থেকে কিছুটা চাপ সরবে। আর তারজন্য আমাদেরকেও বেশি ঘাটাবেনা।
-       শুধু এর জন্য?
-       না স্যার, দ্বিতীয় কারণ – আপনি লীড করলে প্রেস কনফারেন্সে শুধু আপনাকে পেলেই মিডিয়া শান্ত হয়ে যাবে। আমাদেরকে সামনে আসতে হবে না, আড়ালে থেকে তদন্ত করে যেতে পারব।
-       তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তুমি বলতে চাইছ এই তদন্তে সময় লাগবে।
-       হ্যাঁ স্যার।
-       কেন? তুমি তো এখনো স্পটে যাও নি, রিপোর্ট দেখনি, কি করে বলছ দেরি লাগবে?
-       টিভিতে দেখে যা বুঝলাম তার থেকেই বলছি স্যার। ফ্ল্যাটের মধ্যে লাশ। মেয়েটি দুদিন ধরে ছিলোনা। যে রাতে মেয়েটি এল, সেই রাতেই তাঁর লাশ পাওয়া গেল। অবাক ব্যাপার মেয়েটি কখন এল কেউ জানেনা। ওয়াচম্যান ও জানেনা। তার মানে ভিক্টিমের ঘরে কেউ লুকিয়ে ছিল বা তক্কে তক্কে ছিল কখন ভিক্টিম আসবে তার জন্য। পুলিশ স্পটে পৌঁছাবার সাথে সাথেই মিডিয়াও পৌঁছে গেল, তাও অত রাতে। তাদের কে খবর দিল সেটাও অজানা। যেখানে এতো প্ল্যানিং হয়েছে, সেটার জট ছাড়াতে সময় তো লাগবেই স্যার।   
-       অরুপ বাবু কি বলেন?
-       স্পটে না গিয়ে তো কিছু বলা উচিত হবে না স্যার। ওরকম টিভিতে দেখে তো তদন্ত হয়না স্যার। আমি বলছি না সব্যসাচী ভুল বলছে বা ঠিক, কিন্তু আমি তো আগে স্পটে গিয়ে দেখে তবে কিছু কমেন্ট করতে চাই।
-       হুম, বুঝলাম। ঠিক আছে, মিটিং এখানেই শেষ করা যাক। সব্যাসাচী তুমি ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ততক্ষণ চার্জ হ্যান্ডওভার কর, তারপর আমার অফিসে এসে দেখা করো। অরুপ বাবু, আপনি সঞ্জীব বাবু কে প্রেস কনফারেন্স এরেঞ্জ করতে বলুন। সমরেশ বাবু, আপনি স্পটে পৌঁছে যান, সব্যসাচী আপনাকে ওখানে মীট করবে। সুভাষ বাবু, আপনি আমার অফিসে একটু আসুন।
এই বলে পীযূষ বাবু কনফারেন্স রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। তারপর বাকিরাও বেড়িয়ে নিচে গেলেন। সুভাষ বাবু গেলেন কমিশনারের রুমের দিকে। তারপর রুমের দরজায় টোকা মেরে বললেন
-       আস্তে পারি স্যার?
-       কে? সুভাষ বাবু, আসুন আসুন। বসুন।
সুভাষ বাবু ভিতরে ঢুকে চেয়ারে বসলেন। পীযূষ বাবু বলতে শুরু করলেন
-       সুভাষ বাবু, আপনার ওপর আমার ভরসা বেড়ে গেল।
-       কেন স্যার, আগে কম ছিল?
-       হা হা হা হা আরে না না , তা নয়। আসলে আমি আপনাকে একটা অন্য কাজের দায়িত্ব দিতে চাই। অবশ্যই আপনি যদি রাজী থাকেন তবেই।
-       বলুন স্যার কি দায়িত্ব?
-       বলব, তার আগে বলি কেন দিতে চাই। আমি এই প্রথম কোন অফিসার কে দেখলাম যে নিজের জুনিয়ার কে এগিয়ে যেতে দিতে চাইল। আমি সত্যি এরকম প্রথম দেখলাম।
-       সে যে যোগ্য তাই তাকে রেকমেন্ড করলাম স্যার।
-       অবশ্যই, তার যোগ্যতার আমি যা পরিচয় পেলাম, তাতে আমার মনে আর কোন সন্দেহ নেই। আর তাই তো আমি আপনাকেই এই দায়িত্ব দিতে চাই। আমি আপনাকে স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে সরিয়ে ট্রেনিং স্কুলের হেড বানাতে চাই। আপনি ঝাড়াই বাছাই করে পাথরের মধ্যে থেকে হিরে খুঁজে দিন আমাকে।
-       কিন্তু তা করতে হলে আমাকে যে কিছু রদ বদল করতে হবে স্যার।
-       আপনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। আপনি যদি আমাকে বছরে ৫ টা করেও সব্যসাচী দিতে পারেন তাহলে অন্তত এই পোশাকটার মর্যাদা রক্ষা করতে পারব। এই ক্রীড়নক থাকতে আর যে মন সায় দেয় না।   
-       কিন্তু উপায় কি বলুন।
-       উপায় আছে সুভাষ বাবু, উপায় আছে। যাক আপনি রাজী তো দায়িত্ব নিতে?
-       রাজী।
-       বেশ, বেশ ……
এরকম সময় দরজা ঠেলে সব্যসাচী মুখ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল
-       মে আই কাম ইন স্যার?
-       এসো এসো সব্যসাচী, এসো বস।
-       থ্যাঙ্ক ইয়ু স্যার।
-       কংগ্রাচুলেশনস সব্যসাচী,
-       কেন স্যার আমি কি করলাম?
-       তুমি কিছু করনি, কিন্তু তোমার ডিটেকশন আমাকে মুগ্ধ করেছে। তোমার ওপর তদন্তের ভার দেওয়া হয়নি, অথচ তুমি ভেবেছ সেটা নিয়ে। স্পটে যাও নি অথচ তোমার কাছে এখনই বুলেট পয়েন্টস রেডি আছে। অসাধারন। সুভাষ বাবু আমাকে বলেছিলেন যে তোমাকে দায়িত্ব দিলে সঙ্গে অন্য কোন সিনিয়ার অফিসার না দিলেও হবে। সঠিক বলেছেন উনি।
-       স্যার আর একটা ছোট মুখে বড় কথা বলব ?
-       বল বল……
-       আপনি প্লিজ অরুপ বাবু কে দায়িত্ব থেকে সরাবেন না, হিতে বিপরীত হতে পারে।
সব্যসাচীর কথা শুনে পীযূষ বাবু হতভম্বের মত তাকিয়ে থাকলেন কয়েক সেকেন্ড, তারপর বললেন
-       কেন?
-       স্যার উনি অলরেডি আমাকে থ্রেট ভাবছেন।
-       সুভাষ বাবু, ছেলেটা কে সামলে রাখবেন। ও ভয়ঙ্কর। আমি সত্যি ভাবছিলাম যে অরুপ বাবুকে দায়িত্ব না দিয়ে ডিরেক্ট সব্যসাচীকে বলব আমায় রিপোর্ট করতে। ও তো থট রীড করে ফেলল মশাই। শাবাশ।
-       স্যার তাছাড়াও সমরেশ বাবু আর অরুপ বাবু বন্ধু, তাই ওদের দুজনকে আলাদা না রাখাই ভালো। … সুভাষ বাবু বল্লেন।
-       ওকে, তাহলে যেমন আছে থাক। সব্যসাচী তুমি কি আর কিছু বলবে?
-       না স্যার।
-       ওকে তুমি তাহলে বেড়িয়ে পড়। বেস্ট অফ লাক।
-       থ্যাংক ইয়ু স্যার, সুভাষ বাবু এলাম
[+] 8 users Like bicitrobirjo's post
Like Reply
#10
শুরুটা ভালোই বেশ। keep going.
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
#11
ভালো লাগল
বহুদিন পর একটা থ্রিলার পেলাম
[+] 1 user Likes রাজা রাম's post
Like Reply
#12
আপনার লেখার বাঁধুনি খুব সুন্দর।
সাথে আছি।
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
#13
দারুন লেখ‌ে
[+] 2 users Like mat129's post
Like Reply
#14
অনবদ্য!
[+] 2 users Like ALFANSO F's post
Like Reply
#15
আপডেটের অপেক্ষায় আছি।
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
#16
দারুন শুরু। চালিয়ে যান সাথে থাকব।
আসুন আমরা সবাই চটি গল্প উপভোগ করি।
[+] 2 users Like Mr.Wafer's post
Like Reply
#17
Ei rokom golpo jodi atke rakhen tahole kintu lekhok er o murder hoye jete pare amader hathe ha ha ha ha sorry jokes apart theme thakben na pls eirokom golpo to raat jege porte raji achi aapni pls thamben na
[+] 1 user Likes kingaru06's post
Like Reply
#18
খুব ভালো শুরু হয়েছে। Update একটু তাড়াতাড়ি দিলে পড়তে ভালো লাগে, যেহেতু এটা thriller story।
[+] 1 user Likes Lusti's post
Like Reply
#19
Wow .... A to durdanto akta thriller golpo pabo mone hocche .... Kub sundor hocche dada .....Next update taratari din
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
#20
আপডেটের অপেক্ষায় বসে আছি।
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)