02-05-2020, 12:31 PM
Update
Thriller খেলাঘর
|
02-05-2020, 12:31 PM
Update
02-05-2020, 01:20 PM
I love the way you are progressing the story. Wanted to read a few updates before commenting.
02-05-2020, 02:49 PM
Love the way you building the story. Pls. update.
03-05-2020, 02:31 AM
03-05-2020, 09:39 PM
03-05-2020, 10:01 PM
(This post was last modified: 03-05-2020, 10:15 PM by Damphu-77. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দাদা ভালোই তো লিখছিলেন থামলেন কেন? কমেন্টের চিন্তা না করে লিখে যান। আমিও তো প্রথমে কি না কি গল্প বলে পড়তাম না কিন্তু কালকে পড়ে বেশ ভালো লাগলো। গল্পটা পুরো পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। প্রতিদিন বড় আপডেটের অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করি গল্পটা জমলে কমেন্টের বন্যা বয়ে যাবে। ধন্যবাদ।
05-05-2020, 11:55 PM
৮
পাহাড়ি রাস্তার আঁকে বাঁকে গাড়িটা চলেই যাচ্ছে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার মুখের সেই মিষ্টি হাসিটা কোথায় যেন উধাও। সান্ত্বনা দিতে আমি ওর পিঠ চাপড়ালাম, ‘এতো চিন্তা করোনা। নরেশের সাথে আমার কথা হয়ে গেছে। ও সব সামলে নেবে’। ‘সত্যিই নরেশ না থাকলে যে কি হত’। প্রিয়াঙ্কার কথায় আমার অন্তরটা জ্বলে যায়। কিন্তু সত্য মেনে নিতে তো দ্বিধা নেই। আমি হয়ত সত্যিই পারতাম না প্রিয়াঙ্কা কে রক্ষা করতে। বা পারলেও নিজের চাকরির বিনিময়ে। কিন্তু নরেশ কি সুন্দর ছলে বলে কৌশলে সব করে ফেলল। ‘এই ওকে একটু বল না। যদি কোন মন্দির থাকে একবার নিয়ে যেতে’। প্রিয়াঙ্কার কথায় আমিও সায় জানালাম। সাথে সাথে আন্না কে বললাম ভাইয়া কোই মান্দির হ্যায় তো লেকার চলিয়ে না’। দেখলাম আন্না মুচকি মুচকি হাসছে। ‘উধার হি যা রহে হ্যায়’ আন্নার ই মুখ থেকে জানলাম খুব জাগ্রত মন্দির। পাহাড়ি দেবীর। আশেপাশের সব আদিবাসীরা মেনে চলে। যা চাইবে তাই পাবে, যদি মন থেকে চাও। আমাদের গাড়িটা বাঁক নিতে নিতে যে জায়গায় এসে দাঁড়াল তা সত্যিই মন্দির, তবে যতটা বড় ভেবেছিলাম ততটা নয়। একটা রঙচঙে পোড় বাড়ি। তার চাতালে একটা নোংরা কাপড় পড়ে লোক বসে আছে। আর সিঁড়ির ওপরেই ফুলের ডালি। আমরা দুজন জুতো খুলে ওপরে উঠলাম। ফুলের ডালিটা নীচে রেখে হাত জড় করে প্রিয়াঙ্কা পার্থনা করবে এমন সময় নীচে বসে থাকা ওই বুড়ো চেঁচিয়ে উঠল ‘এই লেড়কি কেয়া চাহতে হো’। যাক হিন্দিতে কথা বলল তামিল নয়। তাই সামলে নেওয়া সহজ হয়ে গেলো। ‘বাবা, থোড়া প্রবলেম মে হ্যাঁয়’। ‘বাঙালি আছো?’ বাবার মুখে বাংলা শুনে আমরা দুজনেই চমকে গেলাম। পেছন থেকে আন্না বলে উঠল ‘আরে বাবা সব ল্যাঙ্গুয়েজ জানে। সব রাজ্যে ঘুরেছে’। ‘জয় মা পাহাড়ি বলে, চেঁচিয়ে বাবা বলে, বেটি যা বলার ওই কাগজে লিখে দে’। দেখলাম দূরে বেশ কিছু সাদা কাগজ আর একটা পেন। প্রিয়াঙ্কা ওটা উঠিয়ে লিখতে শুরু করল ‘বাবা, বাড়ি থেকে অনেকদূরে আটকে গেছি। ভগবান আমাদের রক্ষা করুক’। কাগজটা মুঠো করে বাবা ছুড়ে দিলো ঠাকুরের দিকে। দিয়ে জয় মা পাহাড়ি বলে জোরে জোরে চিৎকার করতে লাগলো। আমি তো বিরক্ত হচ্ছি, কিন্তু প্রিয়াঙ্কার চোখে মুখে ভক্তির আবেশ। আমি জানি যতই মডার্ন হোক, প্রিয়াঙ্কা ধর্মভীরু। কিছুক্ষন পড়ে বাবার উন্মাদনা কমে। ‘মা, যা বলল তা আমি এই কাগজে লিখে দিচ্ছি’ ‘আর শোন ঘরে গিয়ে পুজো দিয়ে তবেই এই কাগজ খুলবি। আর কাগজে কি লেখা আছে তা শুধু কোন নারীর কাছেই খোলসা করিস। কখনো ভুল করে কোন পুরুষ কে নয়। মনে রাখিস তোর মাথায় শনি আছে’। অত্যন্ত ভক্তি ভরে প্রিয়াঙ্কাও ওর কাগজটা শাড়ীর আঁচলে বেঁধে ফেলল। কলকাতায় থাকতেও প্রিয়াঙ্কা কে দেখেছি, একবার এরম কোন সাধু বা কেউ ওকে কিছু বললে সেই কথা থেকে ওকে সরানোর ক্ষমতা কারুর নেই। কিছুক্ষন বাদে আমরা বাড়ি ফিরে এলাম। যথারীতি প্রিয়াঙ্কা, পুজোর প্রস্তুতি শুরু করল। নরেশের বাড়িতে ওপর তলায় একটা ছোট্ট ঠাকুর ঘর আছে। যদিও সেই দেবদেবী আমাদের অজানা। কিছুটা এই উপজাতি আর আদিবাসী দের আরাধ্য দেবদেবীতেই ভর্তি। ঈশ্বর অজানা হোক না তবুও তো ঈশ্বর। পরম ভক্তিভরে প্রিয়াঙ্কা পুজো করতে শুরু করল। ভেতরের ঘরে বসে বসে আমি বোর হচ্ছিলাম। হথাত দেখি, প্রিয়াঙ্কা খুব খিলখিল করে হেঁসে উঠল। কি হয়েছে বোঝার জন্য আমি সেদিকে গেলাম। হাতে মুঠো করে মোড়া সেই কাগজটা। মাথায় হাত চাপড়ে চাপড়ে হেঁসেই চলেছে প্রিয়াঙ্কা। ও হয়ত খেয়াল করেনি আমি ওদিকে। ‘বাবার মাথা খারাপ’। ঠাকুর ঘরেই রয়েছে অনেকগুলো ছোট ছোট কৌটো, তারই মধ্যে একটায় সজত্নে ভাঁজ করে ধুকিয়ে রাখল। আমি জানি প্রিয়াঙ্কা আমায় দেখাবে না। তাই আবার সন্তর্পণে ঘরে ঢুকে গেলাম যাতে ও বুঝতেও না পারে আমি এসেছিলাম। দেখলাম প্রিয়াঙ্কার গায়ে শুধুই ওই লাল শাড়িটা। ব্লাউজ নেই। পেছন থেকে পাছার অবয়ব দেখে বুঝলাম, সায়াও নেই। ওর হাতে প্রদীপ সারা ঘর জুড়ে প্রদিপ দিয়ে সন্ধ্যে দিচ্ছে। এই ঘরটা হওয়ার পর যেই নীচে গেলো, আমিও সেই তালেই ছিলাম। সোজা গেলাম ঠাকুর ঘরে। কৌটোটাও খুব সহজে পেয়ে গেলাম। কাগজটা যখন পড়ছি, আমার কপাল দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছে। এতো অল্প সময়ের মধ্যে নরেশ এতো বড় প্ল্যান কি করে করে ফেলল। ‘শোন মা তোর মাথায় শনি রাহু কেতু গ্রাস করেছে। রোজ পাহাড়ি মাকে পুজো দিস। তোর কপালে খুব দ্রুত দ্বিতীয় বিবাহ আছে। তবে তা প্রজাপতি বিবাহ না ভীল বিবাহ। এই মন্দিরেই তো ভিসুকা উপাসনা করত। স্থানীয়রা মনে করে প্রতি বছর ভিসুকা অর্জুন আর দ্রৌপদি ফিরে আসে। তুইই এবারের দ্রৌপদি রে মা। রোজ আসিস’। প্রিয়াঙ্কার মতন আমিও হেঁসে ফেললাম। হ্যাঁ এগুলো আমিও পড়েছি। আমাদের মহাভারতের মতন ভিল, মুণ্ডাদের ও একটা মহাভারত আছে। গল্পের বর্ণনা অনেকটাই আলাদা। সেখানে অজস্র যৌন ব্যাভিচারের ও গল্প আছে। এরম ই একটা গল্প, ইন্টারনেট সার্চ করলেও পাওয়া যায়। প্রচণ্ড ভয়ঙ্কর রাক্ষস, ভিসুকার নজর পড়ে জঙ্গলে স্বেছা নির্বাসনে থাকা দ্রৌপদির ওপর। এরপর কিভাবে অর্জুন কে শাস্তি দিয়ে রোজ রাতে দ্রৌপদিকে ভোগ করত ভিসুকা, সেই নিয়েই মুলত গল্পটা। অনেকক্ষণ আমাদের বেডরুম এ ফিরে এসেছি আর ভাবছি। নরেশ এর তৈরি করা গল্পটা কাঁচা হলেও ওর প্ল্যানটা দুর্বল ভাবা উচিত না। ও প্রিয়াঙ্কা কে বিয়ে করতে চায়! কিন্তু কিকরে সম্ভব। এতটুকু জানি সজ্ঞানে প্রিয়াঙ্কা কখনোই সায় দেবেনা আর জোর করার ক্ষমতাও নরেশের নেই। তাহলে? কখন যে প্রিয়াঙ্কা ঘরে ঢুকেছে খেয়াল নেই! ‘হ্যাঁ গো ভিল বিবাহ আবার কি। তোমার তো এইসব পুরাণ নিয়ে একটু ইনটারেস্ট আছে তা জানি’। বুঝলাম আমার মতন না ভাবলেও প্রিয়াঙ্কার ও মাথায় কিছুটা চিন্তা তো এসেছে। আসলে ও প্রচণ্ড ধর্মভীরু, যতই বাবা পাগল বলুক, আমি জানি কাল ও যাবেই পুজো দিতে। বলতে ইচ্ছে করছিল না তাও বললাম। ‘দেখো, ভীল রাও প্রজাপতি বিবাহই করে। শুধুই আচার অনুষ্ঠানে যা একটু পার্থক্য। আর এই ভিল বিবাহ বলতে ভিল দের বিবাহ বোঝায় না। মহাভারতের একটা ভিল ভার্সন ও আছে। তাতে একটা অতিকথিত গল্প আছে। সমুদ্রের মধ্যের এক বিষধর সাপ ভিসুকা খবর পায় ভিল দের দেশে দ্রৌপদি এক অতি সুন্দরী বিবাহিত মহিলা তার স্বামী অর্জুনের সাথে রয়েছে। এরপর কিছুটা ভয় দেখিয়ে ভিসুকা অর্জুনের সামনেই...’ আমার কথাটা সম্পূর্ণ হয়না। তার আগেই প্রিয়াঙ্কা কিছুটা ভয় পেয়ে বলে ওঠে, ‘এরম কোন বিয়ে কি আজকাল হয়?’ কি উত্তর দেবো! হাল্কা ভাবে নিলে প্রিয়াঙ্কা প্রস্তুত হতে পারবে না। আর খুব গম্ভীর ভাবে নিলে, প্রিয়াঙ্কা আতঙ্কিত হবে। তাই মাঝামাঝি একটা উত্তর দিলাম। ‘দেখো আমাদের তথাকথিত সভ্য সমাজে এই রীতি আর নেই। কিন্তু এতো বড় দেশ। এতো কালচার। কোথাও না কোথাও এই রীতি রয়েই গেছে’। দেখলাম প্রিয়াঙ্কা প্রচণ্ড গম্ভীর হয়ে গেলো। কিছুটা খারাপ ই লাগছিল। নরেশ মোক্ষম চাল দিয়েছে। প্রিয়াঙ্কা যে একটু অতিরিক্ত ধর্ম ভীরু, এটা প্রকাশ্যে না আনলেই ভালো হত। যে নরেশ কে এতো হাল্কা ভাবে নিচ্ছিলাম। তাকে যে আর কোনমতেই হাল্কা ভাবে নেওয়া সম্ভব না। তা হাড়ে হাড়ে বুঝলাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছরিয়ে থাকা এই কুসংস্কার বুজরুকি এসবের সামনে প্রশাসন সরকার সবাই বাচ্চা। যদি সত্যিই এখানের কালচারে ভীল বিবাহ থাকে, খুব সহজেই নরেশ তার ফায়দা ওঠাবে। আর এই ফাঁদে একবার পা দিলে জানিনা কিকরে আমরা বেরবো! কিন্তু উপায় নিজেকেই বাতালাতে হবে। প্রথম কাজ, প্রিয়াঙ্কা আর বর্ণালী দি কে একা ছেড়ে দেওয়া, অন্তত নরেশ এর পেট থেকে আসল রহস্য বার করার জন্য। ওপরের ঘরে গেছি দেখি প্রিয়াঙ্কা মোবাইল টা হাতে বসে আছে, কিন্তু কেমন যেন ইতস্তত করছে। আসলে যতই হোক, বর্ণালী দিই তো বলেছিল অভিক জেগে থাকলে ম্যাসেজ না করতে। অর্থাৎ অভিককে ঘুমিয়ে পড়তে হবে। ‘প্রিয়াঙ্কা খুব টায়ারড লাগছে। আমি একটু ঘুমালাম নীচের ঘরে গিয়ে’। আমার কথা শুনে প্রিয়াঙ্কা একটু আশ্চর্য হওয়ার ভান করলেও আসলে জানি ও খুব খুশি। যতই হোক, এক তো সেই বাবা বলেছিল সমস্ত কিছু এক নারীর সাথেই শেয়ার করতে আর সচরাচর এসব কথা প্রিয়াঙ্কা কোন নারীর সাথেই শেয়ার করে। নীচের ঘরে এসে জাদু ফোন টা বার করেছি। সাথে প্রিয়াঙ্কার ম্যাসেজ। ‘দিদি, অভিক শুয়ে পড়েছে! ফ্রি আছো কি কথা বলতাম’। আমিও জানি নরেশ ও অপেক্ষা করছিল। সাথে সাথে ম্যাসেজ। ‘আরে হ্যাঁ বল, আর কিছু হোল। রাতে নরেশ কে নিয়ে একবার ট্রাই কর না!’ ‘দিদি, এসব ছাড়ো। আমায় বলো তো। ভিল বিবাহ বলে কিছু হয় কি। কি ভিসাকা অর্জুন দ্রৌপদি ...’ ‘এবাবা তুই শুনিস নি? সেকিরে। ছত্রিশগড় হয়ে সাউথ এর প্রতিটা গ্রামেই এই রীতির চল আছে। প্রতি বছর গ্রামের কোন না কোন বিবাহিত মহিলাকে দ্রৌপদি আখ্যা দিয়ে পুজা করা হয়। আর গ্রামেরই কোন প্রভাবশালী ব্যাক্তি, এই জমিদার মোড়ল টাইপ এর এরম লোকের সাথে সেই বিবাহিত মহিলার বিবাহ দেওয়া হয়। এর পেছনে অনেক কূটনীতি অনেক রটনা আছে। কেউ কেউ বলে জমিদারের লালসা কে রক্ষা করতে এই রীতি। কিন্তু অদ্ভুতভাবে স্থানীয়রা বলে, এর পেছনে আসলে সেই জমিদার বা মোড়লের প্রতি সেই নারীর গুপ্ত যৌন লালসা। আর সেই কারনেই বছরের পর বছর এই রীতি চলে আসছে। মহিলার আসল স্বামী কে সব মেনে নিতে হয়। আর একি মহিলা একি ছাদের নীচে পরবর্তী জীবন টা দুই স্বামীর সাথে ঘর করে। সাধারনত প্রচুর টাকা খাবারদাবার উপহার দিতে হয় মন্দিরকে। তাই কখনোই সাধারন ছাপোষা পুরুষ ভিসাকা হতে পারেনা’। অনেকক্ষণ প্রিয়াঙ্কার রিপ্লাই নেই। ওর মতো আমিও বাকহারা। কিছুক্ষন পর ম্যাসেজ ‘দি একি সত্যিই হয়! আমরা যেখানে আছি, সেখানে কি এরম রীতি আছে’। ‘দাঁড়া, আমি একটু খুঁজে আর পড়ে জানাচ্ছি তোকে। (বেশ কিছুক্ষন পর ম্যাসেজ আসে)। হ্যাঁ রে। তোরা যেখানে আছিস তার চেয়ে ৪ ৫ কিমি দূরে একটা মন্দির আছে। পাহাড়ি মায়ের মন্দির। চরম জাগ্রত। আর সেই মন্দিরের উপাসক নির্বাচিত হয়ে আসে চরম গুপ্ত জ্ঞানের অধিকারী কোন পুরোহিত। সে যা বলে অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়’। অন্তত ৫ মিনিট কোন উত্তর নেই। প্রিয়াঙ্কার চেয়েও বেশী টেনসনে যে আমি সেই নিয়ে কোন দ্বিধা দ্বন্দ্ব নেই। আমি জানতাম প্রিয়াঙ্কা সমস্ত কথা নরেশ তথা বর্ণালী দি কে বলবে। এবং যথারীতি বলেও। আমি অপেক্ষা করছিলাম এর উত্তরে নরেশ কি ফন্দি আঁটে। ‘আমি জানি অভিক সেরম ঈশ্বরে বিশ্বাস করেনা। কিন্তু জানিস তো আমি করি। আর এইসব গ্রাম্য জঙ্গল পাহাড়ে ঘেরা এলাকায় যে প্রকৃত সিদ্ধি লাভ করা সাধুরা থাকে তা আমি সিওর। তুই ই ভেবে দেখ না, কখনো ভাবতে পারিস এই জঙ্গলের মধ্যে তুই বাংলা বলা এক সাধু পাবি। প্রিয়াঙ্কা আমি তোকে বারবার করে বলছি। বাবার কথা হাল্কা ভাবে নিস না। কাল সকালে বাবার কাছে যা। কি বলে দেখ’ বুঝলাম নরেশ এর উদ্দেশ্য ছিল, ধর্ম ভীরু প্রিয়াঙ্কার মনে ভয়টা ধরিয়ে দেওয়া যাতে ও ১০০% সফল। আমার পক্ষেও আমার পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়ে গেলো। যেভাবে হোক আমাদের কলকাতা ফিরতেই হবে। আর তাতে যতটা রিস্ক নেওয়া যায়, নেবো। ‘আমি হাল্কা ভাবে নিইনি দিদি। আমি শুধু তোমার পরামর্শ চাই। কিকরে এই জট থেকে মুক্তি পাবো আমি। আর যদি এটা সত্যি হয় তাহলে কে? কে হবে সেই...’ ওর কথা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই নরেশ এর উত্তর, ‘মিস্টার মৈত্র’। প্রিয়াঙ্কার মতন আমিও ভীষণ ঘাবড়ে গেলাম। চোখের সামনে ভেসে উঠল, মাথায় টোপর পড়া মাঝ বয়সী মিস্টার মিত্র আর পানপাতায় মুখ ঢাকা আমার ছেলের মা তার কনে। ‘না দি এটা মানা সম্ভব না! দিদি তুমি আমায় বাঁচাও। তুমি বল কি করে আমি বাঁচব এই জটিলতা থেকে’ ‘দেখ, আমি এটা বলতে চাইনি। তুই বললি না যে যদি এরম হয়। আজ দুপুরেও তো তোরা মিস্টার মৈত্র কে নিয়ে এসব করলি। দেখ আমার একটা আইডিয়া শুনবি? এসব রীতিতে প্রচুর টাকা পয়সা লাগে। যদি নরেশ হয়?’ ‘দি তুমি তো আমায় চেনো। অভিক ছাড়া আর কারুর সাথে... দিদি তুমি খালি এটা বলও যদি এরম কিছু কোনভাবে সত্যি হয়ে যায়। কিকরে রক্ষা পাবো’। ‘দেখ, প্রিয়াঙ্কা কিছু মনে করিস না। এর উত্তর তো ওই বাবাই দিতে পারে। তুই এতো চিন্তা করিস না। সব ভালোই হবে। সত্যিই ভালো হবে। ঈশ্বর যা করেন তা ভালোর জন্য। তুই একবার আমার এই কথাটা ভাব। নরেশ না মৈত্র। কার থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ। ভালো করে ভাব। আমরা নারী। ছলে বলে কৌশলে সেই যুগ যুগ ধরে আমরা কতই না কি হাসিল করেছি। তুই শুধু বল নরেশ না মৈত্র’। ‘দিদি, অবশ্যই নরেশ। কিন্তু দিদি তুমি তো জানো। নরেশেরও আমার ওপর...’ প্রিয়াঙ্কার ম্যাসেজ শেষ হয়না। আবার নরেশ এর ম্যাসেজ ‘তুই সত্যিই বুদ্ধু। তোর কাজ কলকাতা ফিরে যাওয়া। আর তার জন্য নরেশ এর এই দুর্বলতাটাই তো তোর বল রে। শোন নরেশ প্রভাবশালী, বিত্তবান। ও পারলেই তোকে ওইভাবে বিয়ে করতে পারে। আর ওকে নিজের ছলে বলে ফাঁসিয়ে শুধু কলকাতা যাওয়ার একটা প্ল্যান বানানো ব্যাস। দেখ আমি যতটুকু বুঝেছি, নরেশ মৈত্রর মতন নয়। ও ভালো। ও তোকে যেতে দেবে। চিন্তা করিস না।‘ প্রিয়াঙ্কার কোন রিপ্লাই নেই। বুঝলাম নরেশ আবার চেষ্টা করবে। ‘আরে তুই এতো ভাবছিস কেন। তুই যেমন আছিস তেমন ই। একবার যদি কলকাতা চলে যেতে পারিস ব্যাস কেল্লাফতে। শোন নরেশ কে হাতে রাখ। দেখবি সব ঠিক। আর ভগবানে বিশ্বাস রাখ। ভাব তো নরেশ ছাড়া অন্য কেউ যদি...’ বেশ কিছুক্ষন পর প্রিয়াঙ্কার রিপ্লাই, ‘হ্যাঁ, দিদি নরেশকে মনে হয় সামলাতে পারবো। তবে আমি খুব চিন্তায় আছি। কাল যাবো বাবার সাথে দেখা করতে, পুজা দিতে’। ‘হ্যাঁ, ভগবানে ভরসা রাখ। সব ঠিক হয়ে যাবে’। বেশ কিছুক্ষন দুই তরফ থেকেই রিপ্লাই নেই। আমিও মিনিট দুই তিন পর ওপরে গেলাম। ঘরের মধ্যে ও নেই। কিছুটা দূরে ঠাকুর ঘরে নজর গেলো। দেখলাম দুই হাত জড় করে প্রিয়াঙ্কা কিসব বিড়বিড় করছে। পা টিপে টিপে সেদিকে গেলাম। কিন্তু কিছুই বুঝলাম না। খালি বার ২ ৩ নরেশ শব্দটা শুনতে পেলাম। আবার একি সন্তর্পণে আমি ওপর থেকে নেমে এলাম। সিঁড়ি দিয়ে নামছি, ফোনটা বেজে উঠল। দেখি মা কল করেছে। ‘অভি খোকার খুব জ্বর। (আমরা আমাদের ছেলেকে বাবান বলে ডাকি। আর বাবা মা খোকা বলে)’ মনটা আমারও খুব খারাপ হয়ে গেলো। দু একটা পরামর্শ দিলাম। তবুও নিজের ছেলে তো, মনটা কেমন কেমন করে। প্রিয়াঙ্কাকে ফোনটা ধরিয়ে দিলাম। ঠিক এতটা যে ওর ওপরে এফেক্ট পড়বে বুঝিনি। চোখগুলো ছলছল করে উঠল। ও একটাও কথা বলল না। শুধুই শুনল। ওর অবস্থা দেখে আমিই ফোন টা নিয়ে মাকে বাকি কথাগুলো বলে ফোন টা রেখে দিলাম। খারাপ আমারও লেগেছে। তবে বাচ্চা ছেলে। কলকাতায় ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। সিজিন চেঞ্জ এর সময়। হতেই পারে। আর জানিও একটা প্যারাসিটামল খেলে ঠিক ও হয়ে যাবে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার মানসিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারন আলাদা। ও সেই বাবার কথাগুলোর সাথে রিলেট করে ফেলেছে। প্রিয়াঙ্কার ইতস্তত অবস্থা দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিল, আমিই ওকে নিজের থেকে সুযোগ করে দিলাম। নীচে চলে গেলাম। এবারে আর অভিক ঘুমিয়ে গেছে বা ও নেই এভাবে নয়, ডিরেক্ত স্টার্ট হোল ‘দি, বাবানের খুব জ্বর। আমার সত্যি খুব ভয় করছে। বাবা বলেছিল আমার শনির দশা চলছে। দি আমি কি একবার বাবার সাথে দেখা করব’ বর্ণালী দি টাইপিং আবার বন্ধ আবার টাইপিং। বুঝলাম নরেশ ঠিক কি লিখবে বুঝতে পারছে না। অবশেষে ওর ম্যাসেজ এলো ‘দেখ, প্রি এতো চিন্তা করিস না। সামান্য জ্বর তো। সিজন চেঞ্জ হচ্ছে তাই হবে হয়ত।‘ প্রিয়াঙ্কার মতন আমিও স্বীকার করি, নরেশের যতই হোক একটা মানবিক দিক আছে। আমারও ভালো লাগলো ওর উত্তর টায়। কিন্তু আমি জানি ধর্ম ভীরু প্রিয়াঙ্কা নাছোড় বান্দা। দি, আমি না একবার বাবার সাথে দেখা করতে চাই। ওনার পরামর্শ চাই। আমি ভুল করেছি। বাবাকে অবজ্ঞা করেছি। বাবার কথা মানিনি। ভেবেছি বাবা পাগল’। ওপাশ থেকে কোন উত্তর আসেনা। মাথাটা আমারও ভনভন করে ঘুরছিল। প্রায় সন্ধে সাড়ে সাতটা বাজে। এই অসময়ে! জাদু ফোন টা হাতে নিয়েই বাইরে বেরলাম। হ্যাঁ, সাদা গাড়িটা এখনো আছে। যাক আন্না কে তো পাওয়া যাবে। নরেশ এর কোন ম্যাসেজ আসেনা। প্রিয়াঙ্কার শেষ ম্যাসেজ ‘দি আমি বেরলাম’ .............................. বিকেলের দিকে রাস্তা যতই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের হোক, এখন শুধুই ধুধু অন্ধকার। দূর দূর অবধি শুধু কালো অন্ধকার। যদিও চাঁদের খুব ম্রিয়মাণ আলো রয়েছে। তবে তাতে গাড়ি চালানো যায়না। আন্না যে কত বড় ড্রাইভার তা আমি আগে জানতাম না। পোড় মন্দিরটার সামনে যখন দাঁড়ালাম, না শুনশান তো মোটেই না। মন্দির চত্তরে ভিড় করে আছে হাজারো মহিলা। কপালের সিঁদুর আর মঙ্গলসূত্র দেখে বোঝা যায় এরা প্রত্যেকেই বিবাহিত। সিঁড়ির সামনে জুতো জোড়া খুলে আমরা ওপরে উঠে এলাম। এক ঝলক বাবা আমাদের দিকে চেয়ে আবার ওদের দিকে মনোনিবেশ করল। আমি আর প্রিয়াঙ্কা ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকলাম। আমি জানতাম বাবা আমার সাথে নয় শুধুই প্রিয়াঙ্কার সাথে কথা বলবে। তাই খুঁজছিলাম কোন লুকিয়ে কথা শোনার জায়গা। মন্দিরের ঠিক ডান দিক টায় উঁচু একটা পাঁচিল আর সেটা টপকালেই সোজা মন্দিরের ভেতরে, ভেতরে মানে একদম ভেতরে, এই চাতালে নয়। দেখলাম সেই জায়গায় একটা মোবাইল, কিছু বাক্স, টাকা পয়সা আর গয়না রাখা। বুঝলাম এইসব ই এই বাবার সম্পত্তি। ফিসফিস করে প্রিয়াঙ্কাকে বললাম, ‘আমার এসবে বিশ্বাস নেই। তুমি ই কথা বল’। মন্দিরের পেছন বরাবর এগিয়ে চললাম। পাঁচিল টা যতটা উঁচু ভেবেছিলাম ততটাও নয়। একটু দুহাত দিয়ে জোর লাগাতেই সোজা উঠে গেলাম। খুব সন্তর্পণে একটা ঝাঁপ দিলাম। বাইরের চাতালে সবাই তখন ব্যস্ত, কেউ খেয়াল ও করল না। বস মা, ওদের পাশে বস’। দেখলাম প্রিয়াঙ্কা বসে গেলো, ওই মেয়েদের পাশে। দেখে প্রত্যেককেই গ্রামের বা আদিবাসী ই মনে হয়। বাবার মোবাইল টায় দ্রুত নিজের নাম্বার টা ডায়াল করে ছেড়ে দিলাম। কল হিস্ট্রি থেকে ডিলিট ও করলাম। তামিল ভাষা অল্প অল্প আমিও বুঝি। তাই ওদের কথাগুলো অল্প হলেও বুঝতে পারছিলাম, একজন যেমন বলল, ‘বাবা, আমি পাহাড়ি মায়ের আরাধনা করছি, দশ বছর হোল, আমিই চাই এবারে দ্রৌপদি হতে (তামিল ভাষায়)। আমিও বুঝলাম পুরোটাই যে নরেশ এর সাজানো তা না, কিছুটা এদের রীতি তেও আছে। ম্রিদু হেঁসে বাবা অবজ্ঞা প্রকাশ করে ও তাকায় প্রিয়াঙ্কার দিকে। ‘একিরে মা এতো বিমর্ষ কেন? পাহাড়ি মায়ের মন্দিরে এরম করে থাকতে নেই’। প্রিয়াঙ্কার চোখ দুটো ছলছল করে ওঠে। বাবার দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয় ‘বাবা আমায় বাঁচান। আমার ছেলের শরীর ভালো নেই। আমি বাড়ি ফিরতে চাই। আমি চাইনা এই জঘন্য প্রথায় অংশ নিতে’। রেগে গেলে সাধুদের চোখ যে এতটা লাল হয়ে যায় তা আগে জানতাম না। ‘কি বললি তুই? জঘন্য? তামিল ভাষায় বলে ওঠে ‘কে কে দ্রৌপদি হতে চাও হাত ওঠাও। (সাথে সাথে প্রত্যেকেই হাত উঠিয়ে দেয়)। হিন্দি মে বোল’ সবাই হয়ত হিন্দি বঝেনা বা বলতেও পারেনা এক দুজন বলল ‘ম্যায়’। দেখলাম প্রিয়াঙ্কার ও মুখাবয়ব একটু চেঞ্জ হোল। বাবারও। যেন রাগটা কোথায় গলে গেলো। প্রিয়াঙ্কার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল, ‘তুই চরম আস্তিক। তাই তুই এই সুযোগ পেয়েছিস। এই বোকারা ভাবে আমি বোধ হয় ওদের পাঞ্চালি বানিয়ে দেবো। গাধা। সব পাহাড়ি মায়ের ইচ্ছে। আমি কে? পাহাড়ি মা আমায় স্বপ্নে বলেছে। প্রিয়াঙ্কা বলে কেউ আসবে। তুই পুণ্যবতী মা। আর তোর এই নতুন স্বামী মহা শক্তিশালী, রাক্ষস কেন দেবতারাও শক্তিতে পেড়ে উঠবে না’ অনেকক্ষণ নীচের দিকে চেয়ে থাকে প্রিয়াঙ্কা। ‘বাবা আমি আমার স্বামীকে ঠকাই নি কখনো’ ‘তুই এখনো ঠকাস না। স্ত্রী এর দায়িত্ব বুঝিস। সেই দায়িত্ব এবার তোকে দুই পুরুষের জন্য সমানভাবে পালন করতে হবে! একদম সমান। তুই পারবি। তাই তো পাহাড়ি মা তোকে বেছে নিয়েছে। তোর ছেলে আজ রাতেই ঠিক হয়ে যাবে। যা বাড়ি যা আমি আশীর্বাদ করলাম’। প্রিয়াঙ্কা তাও ঠাই ওখানে বসে থাকলো। ‘বিশ্বাস কর মা। এ ভবিতব্য। আগামী তরশু আজ থেকে ৩ দিন পর অমাবস্যা। সেদিন ই তোর বিয়ে। এই সারা গ্রামবাসীর সামনে ধুমধাম করে তোর বিয়ে’। প্রিয়াঙ্কা এক দৃষ্টিতে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে। বাবার মুখটা দেখে মনে হয় মায়া লাগে। প্রিয়াঙ্কার মাথায় খুব করে হাত বোলায় বাবা। ‘দেখ মা, এ বিধাতার সৃষ্টি। স্বামী ছাড়া তোর যার প্রতি আকর্ষণ আছে ঠিক সেই এই স্বয়ংবর সভায় হাজির হবে। তুই মিলিয়ে নিস মা। মিলিয়ে নিস আমার কথা। পাহাড়ি মা খুব জাগ্রত রে। দেখিস দুই স্বামীর মধ্যে কোন ভেদাভেদ করিস নে কখনো, অনাসৃষ্টি হয়ে যাবে। এই সভায় অংশ নিতে হলে আগে থেকে নাম লেখাতে হয়। গত পরশু জানিয়ে দেবো, আমার পাঞ্চালি কে পেয়ে গেছি। তুই যা মা তোর সেই প্রেমিক যার প্রতি তোর এই টান তোকে টেনে এনেছে এতদুরে তার কাছে যা’। মুখ শুকনো করে প্রিয়াঙ্কা ওখান থেকে বেরিয়ে আসে। আমি চেষ্টা করি ওর সাথে কথা বলতে। কিন্তু না, ও একদম নিসচুপ। ওপরে উঠে চুপচাপ খাটের ওপর শুয়ে যায়। আমিও ওকে আর ডিস্টার্ব করিনা। কিছুক্ষন পর বর্ণালী দির ম্যাসেজ ‘কিরে কি হোল? কিছু ভাবলি?’ ছোট্ট করে উত্তর দেয় প্রিয়াঙ্কা, ‘দিদি, আমায় কিছুক্ষন একা ছেড়ে দাও। আমায় একটু নিজের মতন ভাবতে দাও’। আমি বুঝলাম গভীর চিন্তায় প্রিয়াঙ্কা। আর আমার হাতে রয়েছে ৩ টে দিন। এরমধ্যে আমায় যেভাবে হোক কলকাতা ফিরতে হবে। আর জানি নিজের শহরে একবার পৌঁছালে এই সব বুজরুকি আমি নিমেষে বার করে দেবো। প্রিয়াঙ্কার দেরী হবে জেনে আমিই রান্নায় হাত দিলাম। রাত প্রায় এগারোটা। দেখলাম প্রিয়াঙ্কার ম্যাসেজ। আমার বুকটা কেঁপে উঠল। ‘দি আমি অনেক ভেবেছি, অনেক। পাহাড়ি মার যা ইচ্ছে তা বদলানো অসম্ভব। আমার দ্বিতীয় স্বামী যেই হোক, তাকেই আমি মেনে নেবো। সে যেই হোক। বাবার সাথে কথা বলে মনে হোল, আমারও একটা ইচ্ছে আছে। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব নরেশ কে আমার দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে গ্রহন করতে। আমি নরেশ কে পাওয়ার জন্য আজ পাহাড়ি মা কে ডেকেছি। জানি খুব কঠিন মেনে নেওয়া। অভিককে ঠিক কি করে বোঝাবো জানিনা। কিন্তু আমি জানি ও আমায় বিশ্বাস করে বোঝে। ও ঠিক মেনে নেবে। আর এটা তো সত্যিই যে নরেশ এর প্রতি একটা ইনফাচুয়েসন আমার আছেই, নরেশকে হয়ত আমার ভালো লাগে। বিবাহিত বলে সেভাবে চোখে পড়েনি’। না আমি প্রিয়াঙ্কার ওপর রাগ করিনি। কেনই বা করব! ও তো পরিস্থিতির স্বীকার। আর জানি এইসবই সাময়িক। ঠিক পালটে যাবে। শুধু কলকাতা যাওয়ার অপেক্ষা। দেখছি সিঁড়ি দিয়ে নামছে প্রিয়াঙ্কা, গম্ভীর হলেও মুখে সেই পুরনো মিষ্টি হাসিটা রয়েই গেছে। আমি দেরী করলাম না, তেবিলের ওপর দুজনের খাবার বাড়লাম। প্রিয়াঙ্কা খুব খুশি অনেকদিন পর ওকে আমি রান্না করে খাওয়াচ্ছি। হথাত আমার ফোন টা বেজে উঠল। টেবিলের ওপর রাখা ছিল, তাই প্রিয়াঙ্কাও দেখতে পেলো। মায়ের ফোন। প্রিয়াঙ্কার চোখটা ছলছল করে উঠল। ‘অভি, খোকা একদম ঠিক। ওই একটা প্যারাসিটামল খাইয়েছিলাম। একদম জ্বর নেই’। প্রিয়াঙ্কা কে শেষ কবে এরম প্রান খুলে হাঁসতে দেখেছিলাম মনে নেই আর এটাও মনে নেই শেষ কবে আমার জীবনে এরম কোইন্সিদেন্স হয়েছিল। দেখলাম প্রিয়াঙ্কা খাচ্ছেনা। মানে হাত মুঠো করে ভাত টা নিয়েও থালায় রেখে দিলো। ‘তুমি খেয়ে নাও অভি। আমি পরে খাবো’। এমনিতেই সারাদিনের একের পর এক টুইস্ট এ আমার মাথা ঘুরছিল তার ওপর নতুন এই আদিখ্যেতা। আর কথা বাড়ালাম না। প্রিয়াঙ্কা নিজের থালাটা রান্নাঘরে গিয়ে রেখে এলো। দেখলাম মুখে মিষ্টি হাসি, গালে হাত দিয়ে টেবিলের ওপর বসে আছে। সে হাসি কার জন্য আমি জানি। ওপরে চলে গেলাম। কিছুক্ষন পর দেখি প্রিয়াঙ্কাও এলো। ঘুমিয়ে পড়ার ভান করলাম। প্রিয়াঙ্কা অনেকক্ষণ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমায় লক্ষ্য করল। হয়ত ভাবল আমি শুয়ে পড়েছি। আমার বালিশ এর তলা থেকে একটা চিরকুট বার করল। আর সাথে দরজায় ঝোলানো একটা ম্যাক্সি, ওটা ঠিক ম্যাক্সি না ওটা টপ। অনেকক্ষণ ধরে ওইদিকে তাকিয়ে থাকলো। প্রিয়াঙ্কার শরীরটা যেন কাঁপছে। চিরকুট টা হাতে মুঠো করে দেখলাম ঠাকুর ঘরের দিকে যাচ্ছে। বুঝলাম ওটার স্থান ও আগেরটার ই জায়গায় হবে। যথারীতি ও নীচে চলে যাওয়ার পর আমি ওটা খুলে দেখলাম। ‘তুই নিশ্চিত থাক মা, তোর স্বামী ছাড়া আর যে তোর নগ্ন শরীর দেখেছে সেই তোর দ্বিতীয় স্বামী হবে তাকে খুশি রাখ। তুই ভাগ্যবতী’। আমার হাত পা কাঁপছিল। কিন্তু আমি শেষ অবধি প্রিয়াঙ্কার পাশেই থাকবো। যাই হয়ে যাক।
06-05-2020, 06:22 AM
দারুণ, দারুন আপনার লেখা। অনেক ভাল লাগলো আপডেটেড টা। চালিয়ে যান সাথে আছি। রেপু রইল।
আসুন আমরা সবাই চটি গল্প উপভোগ করি।
06-05-2020, 06:27 AM
সুন্দর আপডেট দিলেন দাদা। চালিয়ে যান। রেগুলার এই রকম সুন্দর আপডেট দিন। ধন্যবাদ
06-05-2020, 12:34 PM
06-05-2020, 02:42 PM
Osadaron hocce dada,,
keep writing,, Reps added,,,,
06-05-2020, 03:48 PM
দেখা যাক এর পরে কি হয়।
ভালো লাগছে
06-05-2020, 09:13 PM
Good Story Boss.. Let's Continue.. Waiting For Priyanka's Honeymoon..
07-05-2020, 01:36 AM
অসাধারণ গল্প
09-05-2020, 10:56 PM
(This post was last modified: 09-05-2020, 11:00 PM by Damphu-77. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
দাদা লিখতে লিখতে থেমে গেলেন কেন? আপডেটতো ভালোই রেগুলার দিচ্ছিলেন। হঠাৎ কি হল যে আপডেট দেওয়া বন্ধ করে দিলেন।
09-05-2020, 11:44 PM
(This post was last modified: 09-05-2020, 11:47 PM by Mr Fantastic. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কেরালাতে corona বাজে ভাবে ছড়িয়েছে, আর সেখানে তিনি ঘরের মধ্যে থেকে বউকে দুবেলা আচ্ছা করে না চুদে বেকার মন্দিরে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। ফলে যা হওয়ার তাই হল। sad vai
10-05-2020, 12:33 AM
11-05-2020, 03:23 PM
Update?
16-05-2020, 04:39 AM
দাদা, আপনি দারুণ লেখেন. এককথায় অসাধারণ. আপনি যেই genre-এ লিখুন না কেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনার লেখা ততটাই মনোগ্রাহী হবে.
প্রত্যেকদিন এসে একবার ঢু মেরে যাই আপনার এই thread-এ, নতুন update-এর আশায়. আজ weekend চালু হয়ে গেছে বলে, comment করার সুযোগ ও সময় পেলাম. আপনার লেখার কয়েকটি মনকাড়া দিক হলো, ভাষার সাথে গল্পের গতি. অযথা ফেনানো নয়. ঘটনা-বিন্যাস আর মনস্তত্ত্বের সুন্দর উপস্থাপন. নিঃসন্দেহে xossipy-তে এখনো পর্যন্ত যতগুলো নতুন গল্প লেখা হয়েছে তার মধ্যে পড়া সব চেয়ে সেরা গল্প, আমি পূর্বতন xossip-কে বাইরে রেখে বলছি. আপনার update-এর অপেক্ষায় রইলাম. আর যতটা পেরেছি, repu দেওয়ার চেষ্টা করেছি.
16-05-2020, 07:39 PM
কোথায় হারিয়ে গেলেন দাদা?এদিকে যে আর তর সইছেনা।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|