01-04-2020, 01:23 PM
জেসমিন এর জন্য দুশ্চিন্তা হচ্ছে ।
Adultery কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব
|
01-04-2020, 03:05 PM
(This post was last modified: 01-04-2020, 03:07 PM by Mr Fantastic. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
যাক যশ আর সদ্যোজাত সুস্থ আছে, কিন্তু জেসমিনের কি হল সেটা চিন্তার
02-04-2020, 07:01 PM
Apnar srijonsilota obornoniyo...
Choribeti choribeti... Egiye cholun sathe achi...
02-04-2020, 08:17 PM
[৮৫]
কলিং বেলের শব্দ হতে পরমিত উঠে দরজা খুলে দিল।মিতামাসী রান্না ঘরে ঢুকে গেল। নার্সিং হোমে গিয়ে বিল্লুর সঙ্গে দেখা করে পরমিত আজ চলে যাবে।ডাক্তার সাহেবের জন্য দুঃখ হয়।ছেলে হওয়ার খুশীর আনন্দ উপভোগ করতে পারছেনা।মনে হয় ঘুম ভাঙ্গেনি।বেসিনে গিয়ে চোখে মুখে জল দিল।মৌসী চা দিয়ে গেল।কি একটা ব্লাড টেস্ট করতে দিয়েছে সেটা ডাক্তার সাহেবের ভালো লাগেনি।ডাক্তার সাহেব বেরোতে পরমিত উঠে দাঁড়ায়। --কাল ঘুম হয়েছিল? --হ্যা।পরমিত হাসলো। --মাসী আমাকেও এখানে চা দাও।পরমিতের উল্টোদিকে বসলো। চায়ে চুমুক দিতে দিতে পরমিত বলল,বিল্লুর সঙ্গে দেখা করে আমি চলে যাবো। --ও কি জানে? --আমাকে একরাত থাকতে বলেছিল।বাই গুরুর কৃপা। যশের সঙ্গে দেখা করার জন্য পল্টুর মনে আকুলতা আবার দেখা হলে নানা প্রশ্নের সামনে দাড়াতে হবে ভেবে কেমন এক অনীহা।মিতামাসী চা নিয়ে এল।কলিং বেলের শব্দ শুনে বারান্দায় গিয়ে দেখল,দিলীপ এসেছে। --কে এল?পল্টু জিজ্ঞেস করে। --তোমার বন্ধু দিলীপ। --উপরে আসতে বলো। মিতামাসী নীচে গেল দরজা খুলতে।দরজার আড়াল থেকে দেবব্রত ডাকে,এই মিতা শোন। মিতা মাসী সেদিকে দেখতে দেবব্রত জিজ্ঞেস করে,ম্যাডাম কবে আসবে জানিস? --আমি কি করে বলব?দরজা খুলতে চলে গেল। কালকের ঘটনা সবাই জানে না।চড় মারার কথা দিলীপকেও বলেনি।এক চড়ে এত কাণ্ড হবে কে জানতো।দরজা খুলে মিতামাসী বলল,বৌদির ছেলে হয়েছে। দিলীপ উপরে উঠে সর্দারজীকে দেখে অস্বস্তি বোধ করে।পল্টূর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিল। --আয় দিলীপ,এ হচ্ছে যশের দাদা পরমিত।কাল ও না থাকলে কি যে হতো। দুজনে হাত জোড় করে নমস্কার বিনিময় করল। --বোস চা খাবি তো?মাসী--। পল্টু বলার আগেই মিতামাসী চা নিয়ে এল। --আজ অফিস নেই? --যাব,কেন কোনো দরকার থাকলে যাব না। --খালি খালি অফিস কামাই করার দরকার নেই। --আচ্ছা জেনের কি হয়েছে জানিস? আবার সেই জেনের কথা।পল্টূ বলল,কাল ডাক্তার তোকে কি বলেছিল? --এমনি কিছু বলেনি তবে খুব যত্ন নিয়ে দেখছিল।চোখের পাতা টেনে মুখের ভিতর আলো ফেলে--তোর মেয়ে শুনেই হয়তো।ব্লাড এক্সামিনের কথা বলল।তোর সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে? --ডাক্তার ছিলনা।আজ গিয়ে জানতে পারবো। পরমিত বসে বসে শুনছিল ডাক্তারসাবের কথা শুনে মনে হল কুছু গড়বড়ি।একসময় উঠে বলল,আমি স্নান সেরে নিই। --হ্যা হ্যা আমাদের বেরোতে হবে।তারপর দিলীপকে বলল,তোকে একটা ঘটনার কথা বলা হয়নি।খড়্গপুরে গেছিলাম এক বাবাজীর অপারেশন করতে--। দিলীপকে দেখে মনে হল বেশ মজা পাচ্ছে।সব কথা শুনে বলল,পল্টু তোকে জানতাম অন্যরকম শেষে তুইও এইসব বাবাজীর ফেরে পড়লি? --যা সব ঘটছে আমার সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।বাপি বলতো সাধক মানে গবেষক,গবেষণা মানে সাধনা চুল দাড়ি রেখে কপালে তিলক কেটে সাধক হয় না।তোর দেরী হয়ে যাচ্ছে,ওবেলা আসিস। দিলীপ চলে যেতে পল্টূ স্নানে ঢূকলো। দিলীপ বাসায় ফিরতে ফিরতে ভাবে পল্টূর অবস্থা যা এই সময় পাশে থাকা দরকার ছিল।ও বলল খালি খালি অফিস কামাই তারপর আর কি বলবে। পল্টু স্নান করতে হয় স্নান করে খেতে হয় তাই খায় যন্ত্রের মত একটার পর একটা কাজ সারতে থাকে।নীচে মোহনজী এসে গেছে।পরমিতকে নিয়ে ওরা মুনলাইটে পৌছে দেখল দিলীপ আগেই এসে অপেক্ষা করছে। --কিরে অফিস গেলি না? --রোজই তো অফিস করি। ওরা ভিতরে ঢুকতে একজন এগিয়ে এসে ডাক্তার কেপি মজুমদারের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল,অনকোলজিস্ট। --বসুন ড সোম। ড সোম চেয়ারে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে,রিপোর্ট এসেছে? --হুউম।ইমিডিয়েট কেমো দিতে হবে। --কেমো? --লিম্ফোমা, প্লেটলেট অনেক নীচে নেমে গেছে। ড সোমের টেবিলে কনুইয়ের ভর রেখে মাথাটা ঝুলে পড়ে। কে পি মজুমদার বললেন,সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে একজন লোক শুধু সঙ্গে গেলেই হবে। --কোথায় যেতে হবে আমি যাচ্ছি।দিলীপ বলল। --এখানে ব্যবস্থা হলে কোথাও যাবার দরকার নেই। ড সোম উঠে দাড়াল,জিজ্ঞেস করে জেসমিন কোথায়? নার্সের সঙ্গে একটা ঘরে ঢুকে দেখল একরাতেই মেয়েটার চেহারা একেবারে বদলে গেছে।সেই ছটফটানি নেই, শুয়ে শুয়েই বলল,বাপি মামী আসেনি? --মামী আসবে মা।মামীকে আনতে যাচ্ছি। বাইরে বেরিয়ে এসে ছেলে মানুষের মতো কেদে ফেলল।পরমিত জড়িয়ে ধরে বলল,সাব হিম্মত রাখিয়ে। চোখের জল মুছে বলল,ভাইসাব যশকে কিছু বলবেন না। দিলীপকে রেখে ওরা গাড়ীতে গিয়ে বসল। গাড়ী ড্যাফোডিলের কাছে পৌছাতে দোতলার ব্যালকনিতে নজর যেতেই ড সোম অবাক,যশ বাচ্চা বুকে নিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে।দোতলায় উঠে কেবিনে ঢুকে যশকে বলল,তুমি ব্যালকণিতে গেছিলে কেন? --ইধার হামার দম ঘুটতা হ্যায়।আয় এ্যাম রেডি চলো। --এখনই যাবে। --কথাবার্তা হয়ে গেছে।পেমেণ্ট ভি। ড সোম চোখ ঘুরিয়ে পরমিতকে দেখে।ডা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হতে বললেন,অসুবিধে নেই নরম্যাল ডেলিভারী সাধারণত একদিন রাখি উনি ডক্টর নো প্রবলেম। ব্যাগ পত্তর গোছানো ছিল।গাড়ীতে উঠে যশ জিজ্ঞেস করে,জেন খেয়েছে? বহুত সারারাতি। পরমিত বাইরে তাকিয়ে থাকে।ড সোম বলল,সব ঠিক আছে। ড্রাইভারের পাশে বসা পরমিত বলল,বিল্লু আমি বড় রাস্তায় নেমে যাবো। --প্রাজী চাচাজীকে বলবি বিল্লুর বেটা হয়েছে। --সবাইকে বলব,কালকেই রওনা দেব। পরমিত নেমে যেতে যশ বাচ্চাকে লক্ষ্য করে বলে,তোর বাপের পরসন্দ হয়নি। --কি সব আবোল তাবোল বলছো? --নাতো কি প্যাচার মতো বসে আছে।একবার আদর করছো? ড সোমের চোখ ভিজে যায়। বাড়ীর নীচে গাড়ী দাড়াতে যশবিন্দার ছেলে নিয়ে নেমে দ্রুত উপরে উঠে গেল।ড সোম বলল,মোহনজী আপনি চলে যান,আজ লেক ভিউতে যাবো না। মিতা মাসী দরজা খুলতেই যশ জেসমিনের খোজ করে,দেখো বেটি তোমার জন্য কি এনেছি। মিতা মাসী বলল,জেন নার্সিং হোমে। পল্টু ঢুকেই বলল,মাসী তুমি যাও ওবেলা আসবে। যশ আগুনে চোখে তাকিয়ে অঙ্গনকে দেখে বলল,ঝুটী কাহিকা। তারপর ঘরে ঢুকে বাচ্চাকে বিছানায় শুইয়ে গাড়ীর চাবি নিয়ে বেরোবার উদ্যোগ করতেই পল্টু পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।যশ ঘাড় ঘুরিয়ে বলল,তুমি আমার সঙ্গে পারবে না,ছাড় বলছি নেহিতো---। পল্টু দেখল চোখ দুটো জ্বলছে,কোমর ছেড়ে বসে পড়ে পা চেপে ধরে বলল,যশ প্লীজ? --এই পা ছাড়ো পা ছাড়ো।অঙ্গনকে দাড় করিয়ে ওর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল,আউরত কো পায়ের পাকাড়তে শরম নেহী?কি হয়েছিল ডিটেলসে আমাকে বলো। অঙ্গন ধীরে ধীরে বলতে থাকে।যশ ভাবে এত কাণ্ড হল কেউ আমাকে কিছু বলল না।প্রাজীও বেইমানি করল।খাটের উপর শুয়ে বাচ্চাটা চিৎকার করে কাদতে থাকে। যশ ক্ষেপে গিয়ে ঘরে ঢুকে বলল,এই অঙ্গন কি বাচ্চা চিল্লাতা কিউ? স্তন বের করতে গিয়ে জামাটা ছিড়ে গেল।বাচ্চার মুখে স্তন গুজে দিয়ে জিজ্ঞেস করল,লিম্ফোমা মতলব লিউকোমিয়া। স্তনদ্বয় বেশ পুষ্ট সম্ভবত দুধ এসেছে তাই।একটু আগে যা চেহারা দেখেছিল ভয় পেয়ে গেছিল। পল্টু বলল,কেমো দিচ্ছে দিলীপ আছে।বিশ্রাম করো, আমরাও যাব।খালি খালি জামাটা ছিড়লে। --শাট আপ।তুমি একটা কথা বলবে না ঝুটি।ওড়না দিয়ে চোখ মোছে। থম থম করছে যশের মুখ।পল্টু কথা না বাড়ীয়ে সোফায় বসে এলিয়ে পড়ে।কাল রাতে ঘুম হয়নি,চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। দৌড়ঝাপ চলছে দিলীপ বুঝতে পারে না ভিতরে কি হচ্ছে।কেপি মজুমদার শুনেছে এ লাইনে বেশ নাম আছে,ওনাকে বিশেষ কল করে আনা হয়েছে।এটাই ভরসা।পল্টুর উপর একের পর এক ঝামেলা হচ্ছে।যারা ভালো মানুষ ভগবান তদের কেন এত কষ্ট দেয়। চোখ মেলতে দেখল সামনে চায়ের মগ হাতে দাঁড়িয়ে যশ বিন্দার। পল্টু লাজুক হেসে বলল,ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।হাত বাড়িয়ে চায়ের মগ নিল। যশ বলল,তোমার যাওয়ার দরকার নেই।তোমার বাচ্চা সামলাও,এখন ঘুমোচ্ছে। যশ বিন্দার নীচে নেমে গেল। সন্ধ্যে হয়ে এসেছে বুঝতেই পারেনি।রান্না ঘরে শব্দ শুনে বুঝতে পারে মিতামাসী এসেছে।উঠে ঘরে গিয়ে দেখল বাচ্চাটা চিত হয়ে ঘুমোচ্ছে।হাত মুঠী করা মাঝে ঠোট নড়ছে।হাত দিয়ে ডায়াপার পরীক্ষা করল,শুকনো আছে।ফোনের রিং শুনে পল্টু ফোন ধরতে গেল। মুন লাইটের নীচে গাড়ী থামতে দিলীপ এগিয়ে এল।সেদিকে না তাকিয়ে যশ বিন্দার ভিতরে ঢুকে গেল।একজন নার্স এগিয়ে এসে সঙ্গী হল।যে ঘরে জেসমিন ছিল সেখানে ঢুকে যশ বলল,ডার্লিং আমি এসেছি মাই লাভ কথা বলো। পিছন থেকে কে যেন বলল, শী ওণ্ট স্পীক এনিমোর ড সোম। পিছন ফিরে ড মজুমদারকে দেখে চীৎকার করে উঠল,হো-ও-ও-আ-ট? --কেমো নিতে পারেনি।ভেরি উইক হার্ট। যশ বিন্দার বেরিয়ে গাড়ীতে উঠল।দিলীপ জানলা দিয়ে উকি দিতে যশ বলল,শী ইজ নো মোর।এসো বলে গাড়ীর দরজা খুলে দিল। অঙ্গন তাকে কিছু বলেনি পাছে পেটের সন্তানের কোনো ক্ষতি হয়।সবটা নিজের মধ্যে রেখে তিলে তিলে ক্ষত বিক্ষত হয়েছে।ওর মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করেনি।ওর এখন সাহারা দরকার খুব অন্যায় হয়ে গেছে। --সকালে খেয়েছো? --খেয়ে অফিস যাব বলে বেরিয়েছিলাম। ক্লান্ত পায়ে যশ বিন্দার উপরে উঠল।দরজা খুলে দিল মৌসী।মৌসী কাদছিল বুঝতে পারে যশ।জিজ্ঞেস করল,অঙ্গন কোথায়? হাত দিয়ে ঘর দেখিয়ে বলল,ফোনে খবর পাবার পর ছোড়দার কি কান্না। উকি দিয়ে দেখল ছেলের পেটের উপর হাত রেখে অঙ্গন উপুড় হয়ে শুয়ে।যশ অন্য ঘরে গিয়ে বসল।মৌসী জিজ্ঞেস করে,বৌদি চা দেবো। --চা?দাও।দিলীপ কিছু খাবে? --না না শুধু চা হলেই চলবে। ফোন বাজতে যশ উঠে রিসিভার কানে লাগায়,না যাবে না।।...এক সপ্তাহ...ক্যান্সেল করে দিন...মিসেস সোম বলছি...ও এখন কথা বলবে না...আচ্ছা বলবো।ফোন রেখে দিল। ফিরে এসে দিলীপকে বলল,লেক ভিউ থেকে ফোন করেছিল।আচ্ছা দিলীপ বডি নিয়ে যাবার গাড়ি--। --আমি সব দেখছি তুমি কিছু চিন্তা কোরনা। --অঙ্গনের অবস্থা দেখছো আর কলকাত্তার সব চিনি না।
02-04-2020, 09:44 PM
অঙ্গন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, এখন ওর যশের সাহচর্য খুব দরকার আর যশ সেই সঙ্গে পরিস্থিতির সামাল দিতে পারবে বলেই মনে হয়
02-04-2020, 10:38 PM
Khadija mam er Sriti hisabe oi akjon I chilo takeo see porjntto God er kace pathiye dile..
Khub kharap laglo sir.
03-04-2020, 09:05 PM
(This post was last modified: 04-04-2020, 08:24 AM by Buro_Modon. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
Might be er por Poltu mentally venge porbe r nurshinhgome o chere debe r oi aurat bolte Yash kei bojhano hoyeche jar sohocharje Poltu abar swavabik hobe...
Poltu Khajida er iccha rakhte England e giye FRCS kore asbe... R ghotonakrome Yash er akta meye hobe jake "Jane" ei nam debe... Desh e fire ese Yash r Poltu akta hospital khulbe jekhane gorib der minimum cost e chikitsa hobe ... Hope this will be the conclusion....
03-04-2020, 09:40 PM
হ্যাঁ এরকমই সমাপ্তি চাই, কিন্তু যা চাওয়া হয় তা তো সব সময় ঘটে না
03-04-2020, 10:09 PM
04-04-2020, 08:23 AM
04-04-2020, 12:38 PM
[৮৬]
দিলীপ এসেছিল,গাড়ী এসে গেছে ফুল দিয়ে সাজাচ্ছে।ফোন বাজতে উঠে ফোন ধরল,কেন আপনার আসতে অসুবিধে কোথায়?...ও আচ্ছা ইকবালের সঙ্গে দেখা হয়েছে...ও আসবে?...ঠিক আছে। মোহন লাল আসবে না ইকবাল নিজেই বলেছে আসবে।দিলীপকে বলেছে অঙ্গন তাকে কিছুই বলেনি।অঙ্গনকে কখনো এরকম সুপার্স্টিশাস মনে হয়নি।দেখা হলে বাবাজীর গাড়ে ঝড় ঢুকিয়ে দিত।অঙ্গন বেরিয়েছে যশ কিছু বলে না,চুপচাপ লক্ষ্য করে।বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো।কথা বলছে না,দিলীপ এল কয়েকবার ওর সঙ্গেও কোনো কথা বলেনি। --বৌদি রান্না হয়ে গেছে।মিতা এসে বলল। যশ ইঙ্গিতে বলল,তুমি জিজ্ঞেস করো খাবে কিনা। মিতামাসী বারান্দায় গিয়ে পল্টুর সঙ্গে কথা বলে ফিরে এসে বলল,ছোড়দা খাবে না। --আচ্ছা তুমি যাও।কাল সকাল সকাল এসো। --আমি এখন বাসায় যাবনা নারসিন হোমে যাব।একবার শেষ দেখা--। --এখানে আসবে,নারসিং হোমে যাবার কি দরকার? --তাহলে বাড়ী থেকে ঘুরে আমি আসছি। মৌসী নীচে গিয়ে আবার ফিরে এসে খবর দিল,কয়েকজন লোক এসেছে। যশ নীচে নেমে দেখল পাড়ার কয়েকজন।একটা ঘর খুলে দিয়ে ওদের বসতে বলল।ইকবালকে দেখে চিনতে পারে।জিজ্ঞেস করে,গাড়ী এনেছেন? --হ্যা ডাক্তার সাব কোথায়? --আপনি বসুন পাঠিয়ে দিচ্ছি। যশ উপরে উঠে ভাবে পরিচিত লোকজনের সঙ্গে কথা বললে হয়তো ওর ভালো লাগবে।অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে উদাস দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে অঙ্গনকে বলল,ইকবাল এসেছে। --ইকবাল? --আমাদের আগের ড্রাইভার। --ডাকো। --অনেকে আছে তুমি নীচে যাও। --আমি একা যাব? --ও হ্যা ক্রিমেটরিতে তুমি যাবে নাকি আমি যাব? --চলো দুজনেই যাই। --তোমার ছেলেকে কে দেখবে? --না না তাহলে আমিই যাই। নীচে শোরগোল শুনে বারান্দায় গিয়ে দেখল শব বাহন গাড়ী নীচে দাড়িয়ে।মিতাকেও দেখল ভীড়ে।যশ ছেলেকে কোলে নিয়ে নীচে নেমে দিলীপকে ডেকে এক গোছা টাকা দিয়ে বলল,যারা যাবে তাদের গাড়ী ভাড়া দিয়ে দিও। --পল্টু যাবে না? --তুমি আর অঙ্গন বাড়ীর গাড়ীতে যাবে।অঙ্গনকে দেখছো কি অবস্থা, তোমার ভরসায় ওকে পাঠাচ্ছি। শবযাত্রা করিয়ে যশ বিন্দার উপরে উঠে এল।সারা বাড়ীতে কেমন এক শূণ্যতা খা-খা করছে।আকাশের দিকে তাকিয়ে জেন বলছিল মামী পাখিদের কত সুবিধে কতদূর চলে যেতে পারে।চোখের পাতা ভিজে যায়।ড মজুমদার বলছিলেন মজ্জাতে পৌছে গেছিল বাধ্য হয়ে হাই ডোজ পুশ করতে হয়েছে।কিন্তু বেচারী দুর্বল হার্ট নিতে পারেনি।খুব দেরী হয়ে গেছে।এই শালে বাবাজীর জন্য অঙ্গন আমাকে নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল মেয়ের দিকে নজর দিতে পারেনি।জেসমিন সংকেত দিয়েছিল আমরা বুঝতে পারিনি। রাস্তাঘাট সুনসান বাতি স্তম্ভে আলোগুলো ধুকছে ক্লান্তিতে।পরণে প্যাণ্টি তার উপর হাউস কোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বারান্দায় পায়চারি করছেন যশবিন্দার।দুষ্টুটা ঘুমে কাতর।কোমরে গামছা কয়েকটা লোককে আসতে দেখে অনুমান করে ওরা ফিরছে।এদিকেই আসছে এরা কি গেছিল?বারান্দার নীচে এসে উপর দিকে তাকাতে যশ সজাগ হয়। --ম্যাডাম ডাক্তারবাবু আছেন? --উনি শ্মশানে গেছেন। ওরা নীচু গলায় পরস্পর কথা বলতে থাকে।এরা কারা? যশ জিজ্ঞেস করল,আপনারা শ্মশানে থেকে আসছেন? --চিন্তা করবেন না।দিলীপবাবুরা ঠিক নিয়ে আসবে। --এই যে শুনুন--। যশের ডাকে সাড়া না দিয়ে ওরা প্রায় দৌড়ে চলে গেল।যশ ঘড়ি দেখল রাত দুটো বাজতে চলেছে।কি করবে কাকে খবর দেবে? একটা বড় কাপড়ে বাচ্চাকে কোমরের সঙ্গে বেধে গাড়ীর চাবি নিয়ে নীচে নেমে এল।গ্যারেজ থেকে গাড়ী বের করে স্টার্ট করল।রাস্তায় কোনো লোকজন নেই।কোথায় সমসান কাকে জিজ্ঞেস করবে? মুন লাইটের কাছে এসে নেমে একজনকে জিজ্ঞেস করল,সমসানটা কোন দিকে? একজন বয় নানা ভাবে দিক নির্দেশ করে দিল। বেশ কিছুটা যাবার পর একদল শব যাত্রী দেখে আশ্বস্থ হয় ঠিক পথে চলেছে।কিছুটা গিয়ে রাস্তায় লোক দেখে জিজ্ঞেস করে,সমসানটা এদিকেই তো? --না ম্যাডাম,আপনি ছেড়ে এসেছেন।ব্যাক করে সোজা যান ঐযে লাইট পোস্ট দেখছেন ওখানে গিয়ে বা-দিকে। --কতদূর? --বেশি না মিনিট দশেকের মধ্যে পৌছে যাবেন। --থ্যাঙ্ক ইউ বলে গাড়ী ঘোরায়।বেটা জেগে গেছে একটা স্তন মুখে ভরে দিল।ঐতো গঙ্গা বাক নিয়ে গঙ্গার ধারের রাস্তা দিয়ে সতর্ক দৃষ্টি মেলে দু-পাশ দেখতে দেখতে আস্তে আস্তে গাড়ী চালায়।সারি সারি দোকান মনে হয় সারা রাত খোলা থাকে।পনেরো মিনিট হয়ে গেল দশ মিনিট বলেছিল।গাড়ী থামিয়ে নেমে পড়ল যশ।কয়েকজন দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিল যশের অদ্ভুত পোশাক দেখে কৌতুহলী চোখে তাকায়।গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়া এসে গায়ে লাগছে। --ভাইসাব সমসানটা কোথায় বলতে পারবেন? --ম্যাডাম আপনি ছেড়ে এসেছেন।পিছনে গিয়ে বা দিকে দেখবেন একটা রাস্তা সেদিকে যাবেন না সেটা পেরিয়ে একটু খানি--। যশ গঙ্গার দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে।লোকটি জিজ্ঞেস করল, শ্মশানেই যাবেন নাকি কারো বাড়ী? কথার উত্তর না দিয়ে ঝোপ ডিঙ্গিয়ে বাচ্চাকে বুকে চেপে যশ গঙ্গার দিকে ছুটল। লোকটা দেখল গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে এক ভদ্রলোক,মহিলা সেদিকে ছুটলেন।চায়ের কাপ রেখে পায়জামা গুটিয়ে লোকটিও সেদিকে ছুটল।দেখতে দেখতে গাড়ী ঘিরে ছোট একটা জটলা তৈরী হয়।সবার চোখ গঙ্গার দিকে। দিলীপ বলল,ইকবাল্ভাই গাড়ী ঘোরান,এতদূর আসা সম্ভব নয়।চলুন ঐ রাস্তাটা দেখি,এক্টু আস্তে চালাবেন। --ম্যাডামকে খবর দিলে হতোনা? আসার সময় বৌদি বলেছিল একটু দেখো দিলীপ বলল, দেবো আরেকটু দেখি।আছে আশে পাশে দৌড়ে যায়নি নিশ্চয়ই। --আপনি বা দিক দেখুন আমি ডান দিক দেখছি। ড সোম গঙ্গার ওপারের দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে।যশ কোনো কথা না বলে পাশে গিয়ে দাড়ালো।যশকে দেখে চমকে উঠে বলল,তুমি এখানে? --তুমি ছেলে মানুষ নও,তোমার একটা দায়িত্ববোধ থাকবে না? --কেন আমি মুখে আগুণ দিয়েছি ওরা সব ছিল ধোয়ায় দম আটকে আসছিল তাই একটু খোলা হাওয়ায়--। --তোমার মনে হয়নি ওরা তোমাকে খুজবে? --হোয়াই এ্যাম আই নট বেবি বয়?বিইং এ ডকটর তুমি জানোনা কদিনের শিশুকে--। --একদম চুপ।মনে মনে বলে, এ্যাম আই নট বেবি বয়?বাড়ি চলো তোমার বুড়োমী দেখাচ্ছি।নিজেকে সংযত করে বলল, চলো গাড়ীতে চলো।লোকটিকে দেখে বলল,আমার হাজব্যাণ্ড সমসানে এসেছিল। এতক্ষন খেয়াল করেনি যশের কোমরে বাধা বাচ্চাটাকে দেখে লোকটির চোখ যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসার যোগাড়। দিলীপ বলল,এতো সেই শ্মশানের রাস্তায় এসে পড়লাম।দূরে একটা জটলা দেখছি ইকবাল্ভাই চলুন তো কি ব্যাপার। থামান থামান এতো বৌদির গাড়ী।গাড়ী থামতেই দিলীপ নেমে ছুটে যায়।জটলার নজর অনুসরণ করে দেখল পল্টূকে নিয়ে বৌদি আসছে। যশ কাছাকাছি এসে দিলীপকে দেখে হেসে বলল,হি ইজ নট এ্যাট অল চাইল্ড কেন তোমরা খুজচো? গাড়ীর দরজা খুলে অঙ্গনকে ঠেলে ঢুকিয়ে দিয়ে কোলে বাচ্চাকে দিয়ে অন্য দিক দিয়ে যশ উঠল।জানলা দিয়ে মুখ বের করে বলল,দিলীপ আসি। গাড়ী চালাতে চালাতে যশ আড় চোখে দেখল গভীর মনোযোগ দিয়ে বাচ্চার দিকে তাকিয়ে আছে।যশ বলল,একটু বড় হোক ওকে নিয়ে দিল্লী চলে যাব। --তুমি গেলে আমি বাচব না। --শাট আপ ঝুটি কাহিকা আমাকে দেখলেই খালি মনে পড়ে? --বিশ্বাস করো ওকে ছুয়ে বলছি গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে তোমার কথাই ভাবছিলাম। --তোমাকে বিশ্বাস কেয়া হামে বুদ্ধু লাগতা। বাচ্চার মাথা ঝুলে গেছে অঙ্গন পা ধরে আছে।যশ দেখে বলল ঠিক করে ধরো।ঘাড়ের নীচে হাত দাও। অঙ্গন বাচ্চা সামলাতে সামলাতে বলল,আমিও দিল্লী যাব। --তোমার মাম্মী রাজী হবে? --হু ইজ শী?আই উইল বি দা ওয়ান টু ডিসাইড এ্যাবাউট মি। যশের ভালো লাগে অঙ্গনের এই দৃঢ়তা।কেমন ভেঙ্গে পড়েছিল। দুটো গাড়ী প্রায় একসঙ্গে এসে থামলো।আকাশে হালকা আলোর আভাষ। যশ বলল,দিলীপ থ্যাঙ্ক ইউ গুড নাইট।ইকবালজী কাল আর সকাল তো হয়ে এল মোহনলালজীকে বলবেন আজ গাড়ী আনার দরকার নেই। পল্টূকে শ্মশানে দেখতে না পেয়ে দিলীপ ভাবছিল কি করে মুখ দেখাবে।বৌদির ব্যবহারে অবাক হয়,কথায় ভাবে কোনো ক্ষোভের কোনো আঁচ নেই।এই পাঞ্জাবী মহিলাকে খুব ভাল লাগে। অঙ্গনকে বসে থাকতে দেখে যশ বলল,বসে আছো কেন,বেরোবে না? --ওকে না ধরলে কি করে বের হবো? যশ নীচু হয়ে কোল থেকে বাচ্চাকে নিতে গেলে অঙ্গন দেখল স্তন বেরিয়ে পড়েছে।অঙ্গন গাড়ী থেকে নেমে বলল,এই পোশাকে তুমি বাইরে বেরিয়েছিলে? যশ হাউস কোট টেনে বুক ঢেকে বলল,আমার তখন মাথার ঠিক ছিল? যশের মনে পড়ল "আয় এ্যাম নট বেবি বয়।" বেবি বয়ের নজর সব দিকে। সকাল হয়ে এসেছে প্রায়।বাচ্চাটা ঘুমিয়ে পড়েছে।খালি খাওয়া আর ঘুম,ডায়াপার বদলে শুইয়ে দিল।মৌসীর আসতে দেরী আছে।রান্না ঘরে চা করতে গেল যশ।অঙ্গনের একটু বদল হয়েছে।একদম চুপচাপ ছিল এখন দু-একটা কথা বলছে। দু গেলাস চা নিয়ে অঙ্গনের কাছে দাড়ালো।হেসে চায়ের গেলাসটা নিতে নিতে বলল,কদিন যেন ঝড় বয়ে গেল। যশের মনে পড়ল বাবাজীর কথা।জিজ্ঞেস করে কিসের ঝড়? চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,বাবাজীর কথা শুনে ভয় পেয়েছিলাম অঞ্জনার মত তোমাকে না হারাতে হয়,গুড গড ঝড় দিক পরিবর্তন করেছে। --তুমি একজন রেপুটেড ডকটর।এইসব বুজ্রুকিতে বিশ্বাস করো? অঙ্গন থতমত খেয়ে যায় বলে,বিশ্বাসের কথা নয় কথাটা মিলে তো গেল। --মিলে যায়নি তুমি মিলিয়ে দিয়েছো। চায়ের গেলাস নামিয়ে রেখে অঙ্গন বলল,তুমি বলতে চাইছো জেনের মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী? --ওহ গড আমি সেকথা বলিনি।বাবাজী বলেছিল ঝড় হয়েছিল নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি তুমিই ধরে নিয়েছো অঞ্জনা ম্যামের কথা। --তাহলে কার কথা ধরব? --আমি মৌসীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তোমার জীবনে ঝড় হয়েছিল?মৌসী বলল,জরুর।ডাক্তারবাবু না থাকলে তার জামাই বাঁচতো না। --হ্যা বাপি ওর জামাইয়ের চিকিৎসা করেছিল। --তুমি যাকে জিজ্ঞেস করবে সেই বলবে তার জীবনে ঝড় উঠেছিল।এটাই বাবাজীদের ট্যাকটিশ। অঙ্গন চুপ করে কি যেন ভাবে।যশ বলল,বাবাজীর এতই যদি ক্ষমতা তাহলে তোমাকে কেন ডেকে নিয়ে গেছিল? --তুমি তো এসব কথা আগে আমাকে বলোনি? --আমার কি বাবাজীর মত ক্ষমতা তোমার মুখ দেখে বুঝে যাব?তুমি তোমার মাম্মীকে বলেছো দিলীপকে বলেছো আমাকে বলেছো কখনো? অঙ্গন লজ্জিত গলায় বলল,আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিলনা--। --জানি।মাম্মিকে দিলীপের জন্য চিন্তা ছিলনা তুমি আমাকে নিয়েই চিন্তিত ছিলে ভেবেছো যদি ভয় পেয়ে যাই? অঙ্গন বলল,এসো আমার কাছে। --আমার ওজন রাখতে পারবে? --তোমার ওজন বেশী বলিনি।বলেছি অর্ধেক মাংস তোমার--পাছা দেখিয়ে বলল,এখানে। যশ কোলে বসে গলা জড়িয়ে বলল,তুমি বহুত নটখটি--।আরো কিছু করার আগে কলিং বেল বেজে ওঠে।যশ উঠে দাঁড়িয়ে বলল,মৌসী এসেছে।
04-04-2020, 01:20 PM
04-04-2020, 01:58 PM
পল্টু পাড়া ছেড়ে দিল্লি চলে গেলে খুব খারাপ লাগবে ।
04-04-2020, 06:59 PM
(This post was last modified: 04-04-2020, 07:04 PM by Abirkkz. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(01-04-2020, 11:59 AM)kumdev Wrote: MITA MOUSIR SHASTI CHAI....
04-04-2020, 09:00 PM
05-04-2020, 11:12 AM
|
« Next Oldest | Next Newest »
|