Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব-০৯
বন্দনা ফিরে যায় তার নিজের জীবনে ডিব্রুগড়ে, তার নাচের কলেজ তার পুরনো বন্ধু বান্ধবীদের কাছে। নিরুপম বেশ কয়েক বার ফোন করেছিলো কিন্তু আসেনি। বন্দনা অনেক বার করে জিজ্ঞেস করে “আমরা কবে বিয়েটা করবো?” নিরুপম প্রত্যেক বার একই উত্তর দেয় “আরে হানি, একটু দাঁড়াও আমি কয়েকটা এক্সিবিশন করে নেই তারপরে বিয়ে করে ফেলব। এতো তারা কিসের? মন থেকে তো আমরা বিয়েটা করেই ফেলেছি তাই না হানি!“
মার্চ মাসে বন্দনার বাবা রিটায়ার করেন। কৃষ্ণনগরের পুরানো বাড়ির ভাগ বিক্রি করে এপ্রিল মাসে বন্দনারা কলকাতায় চলে আসে। ওর বাবা বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে একটা তিন রুমের ফ্লাট কেনেন। পুবালির বিয়ে পরে বন্দনা প্রথম প্রথম বেশ কয়েক বার বম্বেতে ফোন করেছিলো, দিনে দিনে সেটা কমে যায়। পুবালি অনেক বার ওকে বম্বে ঘুরে যেতে বলে, কিন্তু নিজের নাচের ক্লাস ছেড়ে বন্দনার আর বম্বে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
কলকাতায় ফিরে বন্দনা ভাবে শান্তিনিকেতন অনেক কাছে, নিরুপমের সাথে দেখা করার আর তাদের মাঝে যে দূরত্বটা ছিল সেটা পুশিয়ে নেবার ভাল সময়। কলকাতায় বন্দনা মমতাশঙ্করের নাচের ট্রুপ জয়েন করে। মাঝে মাঝেই ওর প্রোগ্রাম হয় বাংলাদেশ দিল্লি বম্বে আরও নানান জায়গায়। বন্দনা শান্তিনিকেতন এবং ওর নাচ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে। মেয়ের বয়স চব্বিশ পার হতে চলে, বন্দনার বাবা মেয়ের জন্য ছেলে দেখতে শুরু করে দেন। প্রথম প্রথম বন্দনা বেশ কয়েকবার বাধা দিয়েছিলো, কিন্তু বাবা বেশি দিন দেরি করতে চাননি।
একদিন বন্দনা ফোন করে নিরুপমকে জানায় যে বাবা তার বিয়ে দিতে চাইছেন। সেই শুনে নিরুপম আবার বলে “কিছু দিন ওয়েট করো আমি কিছু একটা ব্যাবস্তা করে নেবো।“ বন্দনার একগুঁয়েমি দেখে বাবা শেষ পর্যন্ত একটা ছেলে দেখেন, ছেলেটি বিডিও, ঝারগ্রামের দিকে পোস্টিং। প্রেমে পাগল বন্দনা কারুর কথায় কান দেয়না, নিরুপম কে ওর চাই ই চাই।
প্রায় এক মাস নিরুপমের সাথে দেখা হয়নি বন্দনার। মনটা আর বাড়িতে থাকতে চাইলনা। সকাল থেকে ইলশেগুরি বৃষ্টির খেলা চলেছে, এই রকম দিনে, ভেজা ভেজা হাওয়ায় বন্দনার হৃদয়টা দুলে ওঠে, “যদি কাছে পেতাম আমি তাহলে নিজেকে উজার করে খেলায় মত্ত হতাম। ডুবিয়ে দিতাম নিজেকে নিরুপমের ভালবাসায়।“ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিজের হাত চলে যায় উন্নত বক্ষে, রক্ত গরম হয়ে ওঠে, মত্ত খেলায় কেলি করতে মন ভীষণ ভাবে উন্মুখ হয়ে পরে। কোমল বক্ষ যুগল শির শির করে কাঁপতে থাকে, হাতের তালু দিয়ে চেপে ধরে নিজের ভরাট উন্নত কুচ। বৃন্ত দুটি যেন ফেটে বেরিয়ে আসবে মনে হয়, দুই সুডৌল থাইএর মাঝে শিরশির করে ওঠে রক্ত। ঝির ঝির বারী ধারা যেমন জানালার বাইরে ঝরতে থাকে তেমনি বন্দনার নাভির নিচে বইতে থাকে নিজের ফল্গু নদী। সর্ব শক্তি দিয়ে সুন্দর মসৃণ থাই দুটি পরস্পরের সাথে ঘসতে লাগলো নিজের জ্বালা নিবারন করবার জন্য। এখনি ওর চাই নিরুপমকে না হলে ওর পিপাসা মিটবে না। নাভির নিচে, তলপেটের নিচ থেকে শিরশির করতে করতে কেমন যেন শক্তি হারিয়ে এলিয়ে পরে বিছানার ওপরে। অনেক ক্ষণ পরে চোখ মেলে তাকায় বন্দনা “না আমাকে যেতেই হবে।” পাগল হয়ে উঠেছে সে এক মত্ত হস্তিনির ন্যায়।
“আমি একটু বাইরে যাচ্ছি, কমলিকার বাড়িতে” এই বলে একটা ছোটো ব্যাগে নিজের কিছু জামা কাপড় নিয়ে বেরিয়ে যায়। একটা চিঠি লিখে রেখে যায় ড্রেসিং টেবিলের ওপরে
“আমি নিরুপমের কাছে চললাম, আমাকে খুঁজতে এসনা লাভ হবে না।”
দুর্গাপুর থেকে বাস ধরে ও অনায়াসে শান্তিনিকেতন পৌঁছে যাবে, নিরুপম কে একটা বড় সারপ্রাইস দেবে। ব্যাস চনমনে উচ্ছল তরঙ্গের ন্যায় বন্দনা বেরিয়ে পরে বাড়ি থেকে তার হৃদয়ের মোহনার সঙ্গমে।
ট্রেন থেকে নেমে দেখে চারদিকে কালো করে মেঘ জমে এসেছে, ঝড় বইছে, তুমুল বৃষ্টি। এই ঝড় মাথায় নিয়ে বেরিয়ে কি করবে বন্দনা সাত পাঁচ ভাবতে থাকে “পুবালি বাড়িতে আজ রাতটা কাটিয়ে দিলে হয়, কাল সকালের বাস ধরে যাওয়া যাবে।” বাবা মা যে চিন্তা করবেন সেই টুকুও ওর মাথায় খেলে না।
দিদির বিয়ে হয়ে যাবার পরে স্যামন্তক পরীক্ষার জন্য নিজেকে পরাশুনায় ডুবিয়ে ফেলে। মে মাসে পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবার দু দিন পরেই চলে গেছিলো দিদির কাছে বম্বেতে, বাড়িতে মন লাগছিলনা ওর। হপ্তা দুএক থাকার পরে ফিরে আসে। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবার পরে বেশ কয়েকটা কোম্পানিতে চাকরির দরখাস্ত দিয়েছে কিন্তু গ্র্যাজুয়েট না হওয়া পর্যন্ত কেউ চাকরি দেবে না। ইতি মধ্যে ও দিল্লি এবং পুনে তে গিয়ে কয়েকটা ইন্টারভিউ ও দিয়ে এসেছে।
বম্বে গিয়ে এলিফেন্তা কেভে হারিয়ে গেছিলো স্যামন্তক, দিদি জামাইবাবুর সাথে ঘুরতে ঘুরতে, কিছু না পেয়ে শেষ মেশ জেটি তে বসে থাকে কখনো তো আসবে। স্যামন্তককে খুঁজে না পেয়ে পুবালির চেয়ে সিতাভ্রর অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে গেছিলো “বউয়ের একটি মাত্র ভাই আমার একটি মাত্র শালা, তার দর অনেক বেশি।”
দুপুরের পর থেকেই আকাশে মেঘ জমে এসেছে। মাঝে মাঝে ঝড়ো হাওয়া বইছে। তার সাথে ভেসে আসছে শুকনো মাটির গন্ধ, লাল মাটি একটু পরেই ভিজে যাবে বরষার জলে। স্যামন্তকের ঐ মাটি ভেজা সোঁদা সোঁদা গন্ধটা বুক ভরে নিতে খুব ভাল লাগে। মাঝে মাঝে গুর গুর করে ওঠে আকাশের কালো মেঘ। রাস্তার পাশের বিপিন দেবদারুর গাছ গুলো হাওয়ার দলে মাথা নাড়াতে থাকে। সন্ধ্যে প্রায় ঘনিয়ে আসে। স্যামন্তক একা একা বসে ছিল সোফায়, কিছু করার নেই। কত আর টিভি দেখে কাটানো যায়। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই রকম ঝড় বৃষ্টি তো অবশ্যম্ভাবী কিছু তো করার নেই। বাবা মা, বোন জেঠু জেঠিমা সবাই মিলে বম্বে ঘুরতে গেছে দিদির বাড়িতে। সিতাভ্রদা দুই মাসের জন্য রাশিয়া গেছে কোনও ট্রেনিংএ, তাই স্যামন্তক বাড়ি পাহারা দিচ্ছে।
একবার জানালার বাইরে আকাশের দিকে তাকাল স্যামন্তক “আজকে আর আড্ডা মারতে যাওয়া হবেনা।” মাঝে মাঝে পাশের বাড়ির অনির্বাণএর সাথে সিটি সেন্টাররে গিয়ে আড্ডা মারে। কিন্তু আজ সেটা আকাশের বাদল ভাঞ্ছি দিল। দিদি দিনে তিন বার করে ফোন করবে, সকাল বেলা খাওয়া হল কিনা, দুপুরে খেয়েছিস আবার রাতে একবার করে ফোন করা চাই “কি খেলি আজ, কি রান্না করে গেছিলো কাজের মাসি।“ রোজ একই উত্তর দিতে হয় তাও ভাল লাগে। কাজের মাসি দু দিন আসবেনা, ওর ছেলের শরীর খারাপ তাই দু দিনের রান্না করে ফ্রিজে রেখে গেছে।
বৃষ্টিটা শুরু হয়ে গেলো, প্রথম প্রথম ঝিরঝিরে তার পরে দমকা এক বাতাসে মেঘ গুলো গরগর করতে শুরু করলো। করকর করাৎ করে পাশেই কোথাও বাজ পড়লো মনে হল। জানালা গুলো বন্ধ করে রান্না ঘরে ঢোকে। এক কাপ কফি খেলে ভাল হতো। কফিটা একটু করা করে বানিয়ে একটা সিগারেট জ্বালায় স্যামন্তক, বাল্কনিতে বসে বৃষ্টির আনন্দ নিতে নিতে কফির কাপে ছোটো করে চুমুক দিতে থাকে। ঘরের সব আলো নিভিয়ে দেয় আজ ওর অন্ধকারে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে। এমন সময় টেলিফোনটা বেজে ওঠে, ভাবতে থাকে কে ফোন করে ওয়ি সময় দিদি তো দুপুরে একবার ফোন করেছিলো আবার কি ফোন করবে
“এই কাক কি করছিস একা একা, দুপুরে খেয়েছিলিস ঠিক করে…”
দিদির গলা শুনে চমকে ওঠে স্যামন্তক “তুই আবার এখন ফোন করলি…”
“একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিল তোর কাছে…” গলায় একটু দুষ্টুমি মাখিয়ে পুবালি জিজ্ঞেস করে ভাইকে।
“কি বল?” প্রশ্ন করে স্যামন্তক।
–“পুনেতে যখন ইন্টার্ভিউ দিতে গেছিলি তখন শকুন্তলার সাথে দেখা করেছিলি? কেমন লাগে তোর মেয়েটাকে।”
সিতাভ্রর খুড়তুতো বোন শকুন্তলা, বিয়ের সময়ে আলাপ হয়েছিল মানে এক বার দেখা হয়েছিল। কিন্তু ওর সাথে সেই রকম ভাবে কথা হয়নি স্যামন্তকের। মেয়েটা কচি কিন্তু বেশ ডাগর দেখতে। কাঁচা বয়সের তুলনায় শরীরের গঠনটা বেশ উন্নত। পুবালি অনেক বার বলেছিল ওকে দেখা করতে কিন্তু সময়ের অভাবে ওর দেখা করে ওঠে হয় নি। সেটা ও আর জানায় নি দিদিকে।
আর তো মিথ্যে কথা বলা যায়না “না রে কাজের চাপে আর দেখা করা হয়ে ওঠে নি।”
—“ধুর তোর দারা কিছুই হবেনা, পুনের ইন্টারভিউ টা যদি হয়ে যায় তাহলে খুব ভাল হবে। তুই আমার কাছে প্রত্যেক শুক্রবার রাতে চলে আসতে পারবি আর সোমবার সকালে ফিরে যেতে পারবি।”
“তুই এই জন্যে ফোন করেছিলি? তুই ও না একটা পাগলী মেয়ে।” হাসতে হাসতে বলে স্যামন্তক “এখানে খুব ঝড় হচ্ছে, দারুন লাগছেরে। বেশ একটা কড়া করে কফি বানিয়েছি আর সাথে একটা সিগারেট।”
একটু রাগত শুরে দিদি ধমক দেয় “একা একা দিনে কটা করে সিগারেট খাওয়া হচ্ছে রে তোর?”
এই প্রশ্নের উত্তর ও দিতে চায়না “ফোন রাখ…”
একটু রেগেই ফোনটা কেটে দেয় পুবালি “মড় গে যা… যাই হোক রাতে খাওয়ার পরে ফোন করিস।”
একটু পড়ে কারেন্ট চলে যায়, স্যামন্তক দুটো মোমবাতি জ্বালিয়ে নিয়ে একটা ফ্রিজের ওপরে রাখে একটা খাবার টেবিলে রাখে। চফির কাপটা নিয়ে চুপ করে বসে পড়ে সোফায় “ধুর শালা, এই সময়ে কি কারেন্ট যায়।” একবার মনে করতে চেষ্টা করে শকুন্তলার মুখটা, বড় মিষ্টি দেখতে মেয়েটাকে, যদিও বিশেষ কিছু মনে করে উঠতে পারেনা মুখের আদল আর মিষ্টতা টাকে। এমন সময় দরজায় কেউ নক করে। “কে এলরে বাবা এই ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে।” যাই হোক নিচে তো যেতে হবে, টর্চটা হাতে নিয়ে নিচে গিয়ে দরজা খুলতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। ভিজে চুপসা হয়ে দাঁড়িয়ে একটা সাদা পায়রা থর থর করে কাঁপছে, পায়রাটার নাম বন্দনা।
চলবে....
Posts: 303
Threads: 0
Likes Received: 220 in 175 posts
Likes Given: 601
Joined: Jan 2019
Reputation:
4
darun....ak tana pora fallm....waiting for next......
Posts: 239
Threads: 2
Likes Received: 148 in 113 posts
Likes Given: 319
Joined: Jun 2019
Reputation:
10
এটা পুরাতন গল্প, আগেও পড়েছি। খুব ভালো লাগলো আবার পড়ে।
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব-১০
বন্দনা হাঁ করে দাঁড়িয়ে দরজায়, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা যে স্যামন্তকের সঙ্গে আবার কোনও দিন দেখা হয়ে যাবে। সত্যি পৃথিবীটা গোলই বটে। পরনের কামিজটা ভিজে গায়ের সাথে লেপটে গেছে, ঠাণ্ডাও লাগছে।
স্যামন্তক ওকে ভিতরে আসতে ইশারা করে। বন্দনার শরীরের প্রতিটি খাঁজে খাঁজে মুড়ে থাকা ভিজে কামিজটা ওর পেলব দেহ টাকে অসম্ভব ভাবে কমনীয় করে তুলেছে। সুডৌল ভরাট বুকের খাঁজ, ধিরে ধিরে পাতলা হয়ে আসা কোমর তার পরে ঢেউ খেলে ওঠে পুরুষ্টু নিতম্ব। ওকি স্বপ্ন দেখছে না সত্যি বন্দনা ওর সামনে দাঁড়িয়ে, ঠিক ভেবে পাচ্ছে না।
“তুমি এখানে?” বন্দনার প্রশ্নে যেন ঘুম ভাঙ্গে স্যামন্তকের।
“হ্যাঁ, তা তুমি এই দুর্যোগের রাতে, কি ব্যাপার কি হয়েছে? ওপরে চলো।” স্যামন্তক ওকে ওপরে উঠতে বলে।
বন্দনা ভাবতে থাকে ওকি সত্যি কথাটা জানাবে না থাক জানিয়ে কি হবে। ওপরে উঠতে উঠতে জিজ্ঞেস করে “মাসিমা মেসোমশায়, কেমন আছেন, ভাল।”
“হ্যাঁ ভাল আছেন।” সামনে বন্দনা, পেছনে স্যামন্তক সিঁড়ি চড়তে চড়তে ভেজা কাপরে ঢাকা পায়রার চলন ওর মনটাকে ও দুলিয়ে দেয়, ঠিক প্রথম যে দিন দেখা হয়েছিল, সেই রকম ভাবে। ও বলে “বাড়িতে কেউ নেই, আমি একা। জেঠু, জেঠিমা বম্বে গেছে দিদির বাড়িতে, আমি এক মাসের জন্য বাড়ি পাহারা দিচ্ছি।”
একটু খানির জন্য কেঁপে ওঠে বন্দনার বুক, “ও একা আমিও একা এই নিশুতি দুর্যোগের রাত যাই কোথায়”, ঘাড় ঘুরিয়ে একবার স্যামন্তকের মুখটা দেখার চেষ্টা করে কিন্তু অন্ধকারের জন্যে মুখের ভাব ভঙ্গি বুঝে উঠতে পারেনা। ওপরে উঠে জিজ্ঞেস করে “লাইট কখন গেছে?”
মোম বাতির আলোয় বন্দনাকে যেন এক অপূর্ব সুন্দরী অপ্সরার, ভিজে চুলের কয়েক গুচ্ছ মুখের ওপরে এসে পরেছে, নাকের ডগায় কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির জল, মুখটাও জলে ভেজা, গালে কয়েক ফোঁটা জল। সুডৌল বুকের উপরি ভাগে এক গভির খাঁজ, বুকের যেটুকু উন্মুক্ত সেখানে জলের দাগ। ওড়নাটা ডান কাঁধে একটা পাতলা দড়ির মতন হয়ে ঝুলে রয়েছে। ছোটো ছোটো চোখে ওর দিকে শত প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকে। স্যামন্তক কথা বলতে ভুলে যায়, গলাটা শুকিয়ে যায় ওর।
চশমার পেছন থেকে বড় বড় চোখ দুটি যেন ওকে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত জরিপ করছে। থেকে থেকে কেঁপে উঠছে বন্দনার বুক, নড়ছে ওর পেলব শরীরটা। কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করে “আমি কি এই রকম ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবো না আমাকে চলে যেতে হবে?”
সম্বিৎ ফিরে পায় স্যামন্তক, জোর করে মাথা নাড়ায় “না না, তুমি দিদির ঘরে যাও। ড্রেসটা চেঞ্জ করে নাও, না হলে ঠাণ্ডা লেগে যাবে। আমি এক কাপ কফি বানাই তোমার জন্যে।”
পুবালির ঘরের দিকে যেতে যেতে ভাবে “একি ডেকে আনলাম আমি নিজের জীবনে, যার কাছ থেকে দুরে যাবো ভেবেছিলাম, সেই আমার সামনে এতো দিন পরে আবার। আমি কাল সকাল হলেই চলে যাবো। আজ রাতটা কোন রকমে কাটলে হয়।”
বাথরুমে ঢুকে কাপড় পাল্টে নেয় বন্দনা, একটা ঢোলা গোলাপি হাত কাটা টিশার্ট আর একটা হাঁটু পর্যন্ত লম্বা সাদা স্কার্ট। কে জানত যে ওকে দুর্গাপুরে নামতে হবে, ওতো নিরুপমের সাথে পালিয়ে যাওয়ার জন্যে বাড়ি ছেড়েছে, তাই ও যা জামা কাপড় এনেছে সে গুলো নিরুপমের পছন্দ মতন। ঠাণ্ডা হাওয়ায় ওর খালি পাদুটি শিরশির করে ওঠে, জঙ্ঘার মাঝে এক চনমনে ভাব শুরু হয়ে যায়। বাথরুম থেকে বের হতে যেন ওর আর শক্তিতে কুলোয় না। কি করে স্যামন্তকের সামনে যাবে এই ভাবতে থাকে, মাসি মেসো থাকলে তো কোনও চিন্তা ছিলনা।
“কতক্ষণ লাগে তোমার বাথরুমে? কফি হয়ে গেছে বের হও তারাতারি” গলায় সাবলীল ভাব এনে ডাক দেয় স্যামন্তক। নিচ্ছয়ই মেয়েটা কোনও বিপদে পড়ে দুর্গাপুরে এসেছে না হলে তো ফোন করত।
“হ্যাঁ বের হচ্ছি রে বাবা। মেয়েদের বাথরুমে একটু দেরিই হয়, তোমাদের মতন না যে ঢুকলাম আর হয়ে গেলো।” বন্দনা ও বুঝতে পারে যে মন থেকে সব কিছু মুছে ফেলে একদম সাধারন ভাবে ব্যাবহার করতে হবে। না হলে এই বর্ষার রাতে……
হেসে ওঠে স্যামন্তক, একটু ভয় দেখাতে ইচ্ছে করে ওর, একটু খানি মজা—“ঠিক আছে, নাও যত সময় নিতে পারো আমি দাঁড়িয়ে রইলাম দরজার বাইরে।”
চেঁচিয়ে ওঠে ভেতর থেকে “কি তুমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে? ভাগ…” দরজা খুলে দেখে স্যামন্তক সোফায় বসে ওর দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি করে হাসছে।
যেই মাত্র বন্দনা দরজা খুলে বের হয়, হাঁ হয়ে যায় স্যামন্তকের মুখ, চঞ্চল হয়ে ওঠে রক্ত মাখা শিরা উপশিরা। এই নির্জন বরষার রাতে, মেয়েটা একটা ছোটো স্কার্ট আর টপ পড়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে। তলপেটের নিচটা মুচরে ওঠে। চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, কান দুটি গরম হয়ে যায়। কি দেখছে ও, নিজের চোখ দুটিকে বিশ্বাস করতে পারেনা। মেয়েটি আজ ওকে ঠিক করে শুতে দেবেনা, থাকতে দেবেনা এমনকি হয়তো বাঁচতেও দেবেনা।
বাঁ হাত টা বাড়িয়ে বন্দনার হাতে কফি মগ টা ধরিয়ে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করে “কেমন আছো?”
ছোটো সোফায় জড়সড় হয়ে বসে বন্দনা, কাপে একটা ছোটো চুমুক দেয়। একটু অসস্থি বোধ হয়, হাঁটুর নিচ থেকে পাটা পুরো অনাবৃত, টপ টাও হাত কাটা, দুই হাত অনাবৃত। মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয় “হ্যাঁ ভালো আছি।” ভাবতে থাকে স্যামন্তক যদি প্রশ্ন করে যে কেন এসেছ তাহলে কি উত্তর দেবে, সত্যি কথাটা কি বলে দেবে ও, শুনে কি ভাববে। যাই ভাবুক না কেন ওতো চিরদিনের মতন নিরুপমের হতে চলেছে।
স্যামন্তক জিজ্ঞেস করে “কি ব্যাপার, এতো রাতে এখানে, কিছু হয়েছে কি? এখানে আসাটা নিশ্চয়ই সাডেনলি না হলে ফোন করতে তাইতো।”
“হ্যাঁ, সাডেনলি।” একটু খানি আমতা আমতা স্বরে বলে, মোমবাতির টিম টিম আলোয় ঘরটা ভুতুরে লাগে। সামনের দেয়ালে, স্যামন্তকের ছায়াটা যেন একটা দানব। বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নেয় ঠিক যেন গভির জলে ঝাঁপ দেওয়ার আগের প্রস্তুতি “আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি।”
আস্ফুট আওয়াজ বের হয় হতোচকিত স্ত্যামন্তকের মুখ থেকে “কি?”
টি টেবিলেটার দিকে দৃষ্টি প্রক্ষেপণ করে নিচু স্বরে বলে বন্দনা “বাবা আমার জন্য ছেলে দেখেছেন, আমার বিয়ে দিয়ে দেবেন, তাই আমি পালিয়েছি।”
চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে স্যামন্তকের, এক অদ্ভুত রাগ আর বিতৃষ্ণায় ভরে ওঠে মনটা, মাথাটায় ঝিম ধরে। ভুরু কুঁচকে কড়া চাহনিতে তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টে বন্দনার আবছা আলেয়ায় মাখা কাতর বেদনা ময় মুখটির দিকে।
কাতর স্বরে বলে ওঠে বন্দনা, চোখে মাখা বেদনা “পুবালিকে জানিও না প্লিস।”
চিবিয়ে উত্তর দেয় স্যামন্তক “কেন দিদি কে জানাতে কি হয়েছে?” নিঃশ্বাস টা বন্দ করে নেয়, বুকের মাঝের আলোড়নটাকে আয়ত্তে আনতে চেষ্টা করে, স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করে স্যামন্তক।
—“এমনিতে আমি ওর চোখে অনেক পড়ে গেছি, আর নিজেকে ছোটো করতে চাইনা।”
—“তো তুমি সেটা বোঝো তাহলে।”
“হ্যাঁ” মাথা নাড়িয়ে বলে বন্দনা “আমি নিরুপমকে ছেড়ে থাকতে পারবোনা সুতরাং সেই সব কথা নিয়ে বলে তো লাভ নেই।”
“ওকে, আমি দিদিকে জানাবো না।” স্যামন্তক কফি কাপ টা এক চুমুকে শেষ করে। কথা বলার কিছু নেই, কি বলবে আর। দুই জনেই চুপ চাপ বসে থাকে।
বন্দনা জিজ্ঞেস করে “রান্না করা কি আছে না রান্না করতে হবে?”
—“রান্না করতে লাগবে না, ফ্রিজে আছে। এমনিতে কাজের মাসি দুদিন আসবেনা তাই দুদিনের রান্না করে রেখে গেছে।”
একটু হেসে বলে বন্দনা “কেনও তুমি রান্না জানোনা?”
—“আলু সিদ্ধ ভাতে ভাত সব ব্যাচেলার ছেলেরা পারে সেটাই জানি।”
—“কিছু করতে হবে কি না বল আমি করে দিচ্ছি।”
মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয় বন্দনাকে যে কিছু বানাতে হবে না। এমন সময় কারেন্ট চলে আসে। এমনিতে সব ঘরের লাইট বন্দই ছিল তাই উঠে পড়ে স্যামন্তক, এক এক করে ঘরের লাইট গুলো জ্বালাতে।
বন্দনা কি করেবে কিছু ভেবে না পেয়ে, টিভি চালিয়ে দেখতে বসে যায়। টিভি চলতে থাকে টার সাথে মনের ভেতরটা এক অজানা আশঙ্কায় ভরে ওঠে “আমি যা করতে যাচ্ছি ঠিক করছি তো? হ্যাঁ কেন নয়, নিরুপম কে একটা সারপ্রাইস ও দেওয়া হবে। কিন্তু ওকে না জানিয়ে আসা টা কি ঠিক হল? যা হবার দেখা যাবে। এক বার ফোন করবো, না ফোন করলে তো কি বলবে জানিনা। না এক বার রাতে ফোন করে নেবো দেখি কি বলে। কিন্তু যদি না বলে তাহলে বাড়ি ফিরে যেতে হবে যে? না আমি বুঝিয়ে বলবো যে আমি যদি বাড়ি ফিরে যাই তাহলে বাবা আমার বিয়ে দিয়ে দেবে।”
স্যমন্তক সব ঘরের লাইট জ্বালিয়ে, খাবার টেবিলে বসে পেছন থেকে টিভি দেখতে থাকে। বাইরে ঝড়টা অনেক কমে গেছে, ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়েই চলেছে এক নাগাড়ে, থামার নাম নেই। হয়তো মাঝ রাতে গিয়ে থামবে। ঘড়ির দিকে তাকায়, রাত ন’টা বাজে, খেয়ে দেয়ে নেওয়া উচিৎ, এমনিতে দেরিতে খায় কিন্তু আজ আর বেশিক্ষণ বসে থাকতে ইচ্ছে করছেনা ওর।
স্যামন্তক বন্দনা কে জিজ্ঞেস করে “খেয়ে নেবে কি?”
বন্দনা একটু চমকে ওঠে, এতোক্ষণ ডুবে ছিল নিজের চিন্তায়। মাথা ঘুরিয়ে উত্তর দেয় “তোমার কি খিদে পেয়েছে, তাহলে খেয়ে নিতে পারি।”
—“না মানে তুমি তো অনেক ক্ষণ খাওনি নিশ্চয়ই তাই জিজ্ঞেস করলাম।”
—“ঠিক আছে খেয়ে নেই, কাল আমাকে তারাতারি উঠতে হবে। সকাল সকাল বেরিয়ে যাবো।”
কোনও উত্তর দেয়না স্যামন্তক, ফ্রিজ থেকে খাবার গুলো বের করতে লেগে যায়। বন্দনা উঠে এসে, এক এক করে খাবার গুলো রান্না ঘরে নিয়ে গিয়ে গ্যাসে গরম করতে লেগে যায়। থালা ধুয়ে টেবিলে সজায় স্যামন্তক।
খাবার সময় চুপচাপ খেয়ে চলে দুজনে, একে অপরের দিকে মুখ তুলেও তাকায় না।
এক সময় স্যামন্তক জিজ্ঞেস করে “তুমি যে স্টেপটা নিয়েছ সেটাতে তুমি কনফিডেন্ট।”
“হ্যাঁ কেনও? তুমি কেনও এই প্রশ্ন করছও?” বন্দনা একটু রাগত সুরে জিজ্ঞেস করে ভাবে ‘কি দরকার তোমার জানা নিয়ে আমি কি করি না করি’
—“এমনি জিজ্ঞেস করলাম। কিছু না।”
খাওয়া দাওয়ার পর্ব চুকিয়ে, বম্বে ফোন করতে হবে, এমনিতে দিদি ফোন করে সাড়ে দশটার পরে, কিন্তু আজ আগে করবে কিনা ভাবছে।
বন্দনা চুপ করে পুবালির ঘরের মধ্যে ঢুকে যায়। যদি আজ স্যামন্তকের সাথে দেখা না হতো তাহলে ওর মনে এই সব দ্বিধা জাগত না, কিন্তু এখন মনের মাঝে শত প্রশ্ন জেগে ওঠে হটাৎ করে। চুপ করে শুয়ে পড়ে বিছানায়। চোখের সামনে ভেসে ওঠে ফেলে আসা ডিব্রুগড়, ছোটো বেলা থেকে বড় হয়েছে রেল কলোনিতে। বাবা ছিলেন রেলের কর্মচারী। ছোটো বেলা থেকে নাচে গানে ভালো ছিল। ফুলবাগানের ভিক্টোরিয়া গার্লস কলেজ থেকে পড়াশুনা শেষ করে বাবা কে অনেক আবদার করে শান্তিনিকেতনে নাচ শিখতে যায়। ছুটির দিনে বান্ধবীদের নিয়ে চর পড়া ব্রমহপুত্র নদিতে ঘুরতে যাওয়া, মাঝে মাঝে চরুই ভাতি করতে যাওয়া হতো সাইখুয়াতে, সেই সব দিন গুলোর কথা মনে পড়ে বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে বন্দনার। একদিকে ফেলে আসা দিন, অন্য দিকে নতুন সূর্য, নিরুপম। খুব ইচ্ছে হয় একবার নিরুপম কে ফোন করতে। রাত অনেক হয়ে গেছে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকে বন্দনা, ঘুম আর আসতে চায়না দু চোখে।
অনেকক্ষণ পড়ে জল খাবার জন্য উঠে পড়ে বন্দনা, সব ঘরের আলো নিভানো। রান্না ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখে যে খাওয়ার ঘরের ছোটো আলোটা জ্বালানো, ধুক করে ওঠে বুক টা “স্যামন্তক এখনো জেগে?” উঁকি মেরে দেখে টিভি টা চলছে, সোফায় গা এলিয়ে পড়ে আছে ছেলেটা। চুপচাপ কিছুক্ষণ ঘুমন্ত মুখটির দিকে তাকিয়ে থাকে যেন একটি ভিজে বেড়াল, মৃদু হেসে টিভি টা বন্দ করে দেয়। জল খেয়ে শুয়ে পড়ে বন্দনা।
সকাল বেলা যখন ঘুম ভাঙে ওর, তখনও ঠিক ভাবে ভোরের আলো ফুটে ওঠেনি। বাথরুমে ঢুকে নিজেকে তৈরি করে নেয় এক নতুন জীবনে পদার্পণ করার জন্য। নিজের ছোটো ব্যাগটায় জামা কাপড় গুছিয়ে নিয়ে বসার ঘরে গিয়ে দেখে স্যামন্তক তখন ঘুমোচ্ছে। “ওকে আর জাগিয়ে কি লাভ, এমনিতে চলে গেলে ভালো”
এই ভেবে একটা ছোটো কাগজে লেখে
“রাতটার জন্য ধন্যবাদ। আমি জানি, আজকের পরে কোনও দিনও তুমি আমাকে ভালো চোখে দেখবে না, কিন্তু আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে বুঝতে পারতে আমি ঠিক করছি। আমি সবার কাছ থেকে অনেক দুরে চলে যাচ্ছি, তোমার সাথে হয়তো আর কোনও দিন দেখাও হবেনা। তুমি ঘুমাচ্ছিলে তাই আর জাগালাম না, ঘুম থেকে উঠে গেলে হয়তো আমাকে যেতে দিতে না। আমি বাড়িতে চিঠি লিখে এসেছি সুতরাং বাবা মা আমাকে খুঁজবে না হয়তো। আমি নিরুপমের কাছে যেতে বদ্ধ পরিকর। আই হ্যাভ ম্যেড আপ মাই মাইন্ড। গুড বাই।”
চলবে....
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
(05-03-2020, 12:27 PM)Amihul007 Wrote: এটা পুরাতন গল্প, আগেও পড়েছি। খুব ভালো লাগলো আবার পড়ে।
আবার পড়ে ভালো লাগলো জেনে খুব খুশি হলাম।
আসলে এখানে আমার পোস্ট করা সব গল্পই অনেক আগের।
আশা করি গল্পের সাথেই থাকবেন।
•
Posts: 4
Threads: 0
Likes Received: 3 in 3 posts
Likes Given: 3
Joined: Feb 2019
Reputation:
0
সম্পূর্ণ গল্পটা পাবো কোথায়? অল্প অল্প করে পড়তে ভালো লাগে না। তুষ্ট হওয়া যায় না। তাই পুরো গল্পের লিংক টা যদি দিতেন একটু।
Posts: 64
Threads: 0
Likes Received: 58 in 40 posts
Likes Given: 126
Joined: Dec 2019
Reputation:
3
Awesome update. Keep it up ???
Astroner
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব-১১
প্রান্তিকে একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকে নিরুপম। দুটো ঘর, একটাতে ওর স্টুডিও একটা ওর শোবার ঘর, একটা ছোটো রান্না ঘর আছে। কিছু কিছু পেইন্টিং বিক্রি করেছে আর দিল্লি বা বাঙ্গালরে বেশ কয়েকটা জয়েন্ট এক্সজিবিসন করেছে। বাব মায়ের একমাত্র ছেলে তাই পয়সার চিন্তাটা নেই।
অনেক সকাল বেলা বেড়িয়েছে বন্দনা তাই বোলপুর পৌঁছে যায় তারাতারি। মনটা বেশ উৎফুল্ল একটা সারপ্রাইস দেবে নিরুপমকে। কি বলবে ও “আমি চলে এসেছি তোমার কাছে।” বুকের রক্ত কেমন যেন টগবগ করে ফুটছে। ছোটো ব্যাগটা বুকের কাছে আঁকড়ে ধরে থাকে, নিজেকে শান্ত করার প্রানপন চেষ্টা। বাড়ির সামনে এসে যখন রিক্সাটা দাঁড়ায় তখন চারদিকে লোকজন সবে উঠছে। ঢিপঢিপ করে চলেছে বুকের মাঝে, কড়া নাড়ে বন্দনা।
ভেতর থেকে সরু গলায় নিরুপমের আওয়াজ আসে “কে?”
উত্তর দেয় না, একটু মজা করার জন্য। আবার জিজ্ঞেস করে নিরুপম “কে?” ঘুম জড়ানো চোখে মুখে, চোখ ডলতে ডলতে দরজা খোলে নিরুপম। বন্দনা ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর ওপরে, দুই হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে, গালে একটা চুমু এঁকে দেয়। ঘুম ভেঙ্গে যায়, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে দেখে বন্দনার দিকে। অবিশ্বাস মাখানো গলায় জিজ্ঞেস করে “তুমি?”
টগবগে ফুটন্ত বন্দনা, ঘরে ঢুকে ব্যাগ টা এক কোনায় ছুঁড়ে ফেলে, তারপরে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে উৎফুল্ল স্বরে বলে ওঠে “আমি পালিয়ে এসেছি।”
এক মিনিটের জন্য থমকে যায় নিরুপম, তারপরে চোখ পরে বন্দনার পেলব কমনীয় দেহটার দিকে। কেমন যেন জলপরীর মতন পাদুটো মুড়ে, একপাস হয়ে বাঁ হাতে মাথা টাকে রেখে ওর দিকে তাকিয়ে। চোখে মাখা দুষ্টুমির আলো। নিরুপমের দিকে ডান হাত বাড়িয়ে ডাক দেয় বন্দনা “আই মিসড ইয়উ ভেরি মাচ।”
“রিয়েলি” বলেই নিরুপম ওর পাশে শুয়ে পরে, ওকে নিজের বুকের ওপরে টেনে নেয়। নিরুপমের হাতের পরশ পেয়ে বন্দনার সারা শরীর কেঁপে ওঠে। খালি বুকের ওপরে মাথা রেখে ছোটো ছোটো চুমু খায় ওর বুকে। নিরুপম জড়িয়ে ধরে বন্দনার নরম একরত্তি কোমর আর পিষে নেয় কোমল শরীরটাকে। চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দেয় বন্দনার অধর ওষ্ট, পাগল করে দেয় মেয়েটাকে। বন্দনা নিজেকে সঁপে দেয় নিরুপমের সমীপে, নিরুপম ওকে নিচে ফেলে পিষে নিঙরে আদিম খেলায় মত্ত হয়ে যায়। বারী বরিষণ শেষে দুইজনেই আঁকড়ে ধরে নিজদেরকে।
সময় যেন থমকে দাঁড়িয়ে পরে বন্দনার সামনে, ও আর নিরুপমের কোল থেকে উঠতে চায়না।
অস্ফুট স্বরে বলে “আই লাভ ইউ।”
—“হুম… দারুন সারপ্রাইস দিলে তুমি, আমি তো ভাবিনি যে তুমি আসবে।”
নাকে নাক ঘষে বন্দনা বলে “আমি বাড়ি থেকে চলে এসেছি।”
বিদ্যুতের ঝটকা লাগার মতন কেঁপে ওঠে নিরুপম “কি?”
—“বাবা আমার জন্য ছেলে দেখেছে, আমার বিয়ে তাই আমি পালিয়েছি বাড়ি থেকে।”
নিরুপম বন্দনা কে ঠেলে বুকের ওপর থেকে বিছানায় শুইয়ে দেয়। বিবসনা অনাবৃত তন্বী তরুণীটির দিকে একটা ভ্রূকুটি দৃষ্টি হেনে জিজ্ঞেস করে “বাড়ি থেকে পালিয়েছ মানে? তোমাকে কে বলেছে বাড়ি থেকে পালাতে?”
নিজের কামিজ টা টেনে নেয় বুকের ওপরে, বিছানায় উঠে বসে বন্দনা, প্রশ্ন করে—“আমি কি করতাম, বলো। তোমাকে যখনি ফোন করি তখনি তুমি বলো ওয়েট করতে, আর কত ওয়েট করবো নিরুপম?” বন্দনার দু চোখ জলে ভরে যায়।
চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে নিরুপমের, নিজেকে ঢেকে নেওয়ার কোনও তাগিদ দেখায় না। বিবসনা কামিনীর পাশ থেকে উঠে পরে। মাথার ওপরে হাত দুটি রেখে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে বন্দনার দিকে। আলতো করে হেসে বলে “আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়।” তারপরে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
বন্দনা মুখ নিচু করে বসে থাকে কি করতে চলেছে ও, আমি আমার সর্বস্ব ত্যাগ করে ওর কাছে এসেছি আর ও আমাকে ফিরিয়ে দেবে এই রুকম করে। না সেটা ও করতে পারেনা। বাঁ হাতের তালু দিয়ে চোখ মুখ মুছে বিছানা ছেড়ে উঠে পরে বন্দনা। আস্তে আস্তে বাথরুমে ঢুকে চোখে মুখে জলের ঝাপটা মারে। গায়ে তয়ালে টা জড়িয়েই বেড়িয়ে পরে নিজের জামা কাপড় পড়ার জন্য। একটা ঢোলা মাক্সি গায়ে ঝুলিয়ে আস্তে আস্তে স্টুডিয়োর দিকে পা বাড়ায়।
স্টুডিয়োর এক কোণে বেশ কয়েকটা ক্যানভাস রাখা, একটা ইজেলের ওপরে একটা ক্যানভাসে খালি চারকোলের আঁচর কাটা। নিরুপম এক কোনায় বসে একটা বিড়ি ধরিয়ে খালি ক্যানভাসের দিকে তাকিয়ে আছে, পরনে একটা বারমুডা। বন্দনা, দরজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে ওর দিকে একমনে চেয়ে থাকে। নিরুপম ওকে দেখে আলতো একটা হাসি ছুঁড়ে দেয়।
—“তুমি খুশি নও আমি এসেছি বলে।”
ঘাড়ে ডান হাত দিয়ে মালিশ করার মতন করে নিরুপম উত্তর দেয় “কথাটা ঠিক সেটা নয় বন্দনা…”
—“কি বলতে চাইছ, তুমি আমাকে ভালোবাসো না?”
নিরুপম চোখ বন্দ করে মাথা নিচু করে চুপ করে বসে থাকে। নিরুপমের মুখ দেখে, বন্দনার বুক কেঁপে ওঠে, পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যায়, সারা পৃথিবীটা ওর চারদিকে ঘুরতে থাকে। বুকের মাঝে একটা নিঙড়ানো ব্যথা জেগে ওঠে। সব কিছু যেন মিথ্যে মনে হয় ওর কাছে, এই একটু আগে এতো কাছে ডেকে প্রেম নিবেদন করার মানে ও বুঝতে পারে না।
অস্ফুট চিৎকার করে ওঠে “তুমি আমাকে শুধু কি ইউস করেছো?”
নিরুপম চুপ করে থাকে কিছু বলে না, কিছুক্ষণ পরে ওর দিকে তাকিয়ে বলে “আমার কথা শোন।”
—“কি শোনাবে তুমি আমাকে? হ্যাঁ” চিৎকার করে ওঠে বন্দনা, চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে, নিজেকে এতোটা ছোটো আর ঘৃণ্য ও মনে হচ্ছে যেটা ও কোনোদিন ভাবেনি।
নিরুপম গম্ভির গলায় উত্তর দেয় “আমি একটা এক্সজিবিশন, করছি। আমি ভেবেছিলাম তার পরে তোমাকে জানাবো।”
একটু নরম চোখে তাকায় বন্দনা, নিরুপম উঠে ওর সামনে দাঁড়ায়, আলতো হেসে বন্দনার কোমর জড়িয়ে ধরে।
এমন সময় দরজায় কেউ টোকা মারে, আওয়াজ শুনে নিরুপমের মুখের ভাব বদলে যায়। ও বন্দনাকে ঘরের মধ্যে যেতে বলে। বন্দনা ভুরু কুঁচকে তাকায় নিরুপমের দিকে “আমি কেন ভেতরে যাবো?”
“যাও পরে বলছি।” বলে দরজা খোলে নিরুপম।
ভেতরে যাবার জন্য পা বাড়ায় বন্দনা, নিরুপম দরজা খুলে আগন্তুক কে ভেতরে নিয়ে আসে। বন্দনা শোবার ঘরের ভেতরে থেকে একটা মেয়েলি আওয়াজ শুনতে পায় “কি গো আজ এই রকম দেখাচ্ছে কেন? কি হয়েছে তোমার।”
বন্দনার কান গরম হয়ে যায়, ঐ আওয়াজ শুনে, আওয়াজটা ওর খুব চেনা মনে হয়, “হ্যাঁ এটা তো দ্বীপানিতার গলার আওয়াজ, দ্বীপানিতা তো বরুণের গার্ল ফ্রেন্ড ও এখানে এই সময়ে কি করছে?“চুপিচুপি শোবার ঘরের দরজার পেছনে এসে দাঁড়ায় বন্দনা, উঁকি মেরে দেখে স্টুডিয়োটার ভেতরে।
নিরুপম মেয়েটার ঠোঁটের ওপরে আঙ্গুল রেখে চুপ করতে ইশারা করে, কানে কানে ফিস্ফিসিয়ে কিছু বলে। মেয়েটি একবার বড় বড় চোখ করে শোবার ঘরের দিকে তাকায় তারপরে মাথা নাড়ায় যেন বলছে “ঠিক আছে।” তারপরে নিচু আওয়াজে জিজ্ঞেস করে নিরুপমকে “ও এতদিন পরে এখানে এসেছে, কেন? তুমি কিছু বলোনি?”
“তুমি যাও এখন, পরে কথা বলবো।” গলার স্বরটা একটু জোরে করে যাতে বন্দনা শুনতে পায় “কাল সিটিং করা যাবে।”
মেয়েটি বেরিয়ে যাবার পড়ে বন্দনা বেরিয়ে আসে দরজার কোনা থেকে, হাজার প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকে নিরুপমের দিকে, রাগে দুঃখে বুক ফেটে যাওয়ার মতন “আমার পেছনে তুমি অন্য কাউকে… আর একটু আগে আমার সাথে শুধু খেলা করে গেলে?” পায়ের আওয়াজ শুনে নিরুপম ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় বন্দনার দিকে, কেউ যেন সারা শরীর থেকে রক্ত শুষে নিয়েছে, এমন ফ্যাকাসে চোখে তাকিয়ে থাকে।
বন্দনার চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে, দরজার পাল্লায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করে “দ্বীপানিতা কেন এসেছিলো?” কান মাথা গরম হয়ে গেছে বন্দনার।
একটা বড় নিঃশ্বাস নেয় নিরুপম, ওর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে উত্তর দেয় “আমি একটা ন্যুড সিরিজ করছি, আর সেটার জন্য ও আমার মডেল।”
ভুরু কুঁচকে তাকায় বন্দনা, চেহারায় তার অবিশ্বাস। ওর কথা ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারে না, কড়া আওয়াজে জিজ্ঞেস করে “কোথায় তোমার ন্যুড কাজ গুলো এক বার দেখি।”
“আমাকে তোমার বিশ্বাস হয় না” নিরুপম ঝাঁজিয়ে ওঠে, এক টানে স্টুডিয়োর কোনা থেকে বেশ কয়েকটা ক্যানভাস টেনে মেঝতে ফেলে দেয়। সত্যি তো ক্যানভাসে কিছু নগ্ন নারীর চিত্র, কয়েকটা চারকোলে, একটা লিথ দুটো জাপানিস ইঙ্কে। তবে কি সবটা ওর মনের ভ্রম, দ্বীপানিতা তাহলে সত্যি একটা মডেল। ছোটো ছোটো পায়ে এগিয়ে যায় বন্দনা, নিরুপমের দিকে “তুমি সত্যি বলছও।”
জোর গলায় বলে নিরুপম “হ্যাঁ আমি সত্যি বলছি, এই দেখো সব কাজ, এই গুলো কি মিথ্যে বলে মনে হচ্ছে তোমার?”
নিজেকে কেমন পাপী মনে হয়, ও কেন কিছু না বুঝেই অবিশ্বাস করতে গেলো নিরুপম কে। সেই মাত্র ওর মনে এর এক প্রশ্ন জাগল, যদি দ্বীপানিতা মডেলিং করতে এসেইছিল তাহলে নিরুপম ওকে পাঠিয়ে দিল কেন? “তোমার যদি কাজই করতে হতো তাহলে তুমি ওকে পাঠিয়ে দিলে কেন?” জিজ্ঞেস করে বন্দনা, গলায় আবার অবিশ্বাসের সুর।
হেসে উত্তর দেয় নিরুপম “আরে তুমি অনেক দিন বাদে এসেছ তাই ভাবলাম আজ কাজ থাক, আজ শুধু আমি আর তুমি।“
ভালবাসার হাসি দেখে বন্দনা আবার গলে যায় “সত্যি তোমাকে আমি বুঝতে পারছি না আজ।” বলতে বলতে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে নিরুপম কে “আমি জানি তুমি আমার ওপরে রাগ করে আছো।”
নিরুপম ঘুরে দাঁড়িয়ে বন্দনার অধর ওষ্ঠে একটা গভীর চুম্বন এঁকে নিচু স্বরে বলে “আজ বিকেলে তোমার সব রাগ দুঃখ ঘুচিয়ে দেবো, হানি। তুমি আর কোনদিন আমাকে কিছু বলবে না আজকের পরে।” নিরুপমের সারা মুখে একটা অদ্ভুত দুষ্টুমির হাসি, বন্দনা লজ্জায় পরে যায় ঐ হাসি দেখে ভাবতে থাকে “কে জানে কি লুকিয়ে আছে ঐ হাসিটার পেছনে।”
—“এবারে কিছু কাজ করা যাক কি বলও, অনেক সকালে বেরিয়েছ নিশ্চয়ই। আমি বাজার থেকে আসছি তুমি ঘরে বস। আর হ্যাঁ বিকেলে আমার কিছু বন্ধুবান্ধব আসবে মানে যাদের সাথে মিলে এই এক্সজিবিসনটা করছি তারা।”
বন্দনার মনের ভেতরে যত দুশ্চিন্তা ছিল সব উড়ে চলে গেলো, সারা শরীরে এক নতুন জীবনের যাত্রা করার আমেজ নিয়ে ঘরে ঢুকে পরে। রান্না ঘরে গিয়ে চায়ের জল বসাতে বসাতে জিজ্ঞেস করে “দুপুরে কি খেতে চাও?”
—“মাটেন নিয়ে আসবো?”
—“ওকে ঠিক আছে, ক’জনা আসবে?”
—“হুম এস অফ নাউ, তিনজন, আমার দুই পার্টনার আর দ্বীপানিতা।”
—“ওকে, তোমার কাজের লোকটা এখনো আসে না, ছাড়িয়ে দিয়েছ?”
—“আজ আসবেনা। এমনিতে সকালের দিকে আসতে বারন করেছিলাম কেননা আমি স্কেচিংএ বিজি থাকতাম তাই।”
—“তারাতারি এসো আমি ততক্ষণে স্নানটা সেরে নেই।”
নিরুপম বেরিয়ে যাওয়ার পরে ঘরটা ঘুরে দেখতে থাকে, প্রায় দু’বছরের ওপরে হয়ে গেছে ও এখানে এসেছে। ঘর দুটি ওর বেশ পরিষ্কার পরিছন্ন মনে হল, আগে তো ও এতোটা পরিষ্কার ছিলোনা, হটাৎ অনেক বদলে গেছে না ও অনেক দিন পরে এসেছে বলে সব কিছু কেমন নতুন লাগছে ওর চোখে।
স্নান সেরে বেরিয়ে এসে দেখে যে নিরুপম তখনও বাজার থেকে ফেরেনি। ভিজে তোয়ালেটা একপাসে ফেলে দিয়ে নিজেকে আয়নার সামনে মেলে ধরে। নিরুপমের চোখে ও যেন এক স্বপ্ন রাজ্যের রাজকুমারি, উন্নত বক্ষ মাঝে ফুটে ওঠা কালচে গোলাপি বৃন্ত দুটি নুড়ি পাথরের ন্যায় শোভা পাচ্ছে। ভিজে চুল গুলো কিছুটা সামনে এসে ওর বক্ষের কিছু অংশকে ঢেকে দিয়েছে। আস্তে আস্তে হাতের তালু দিয়ে নিজের উন্মত্ত যৌবনের ডালিকে অনুভব করে। আস্তে আস্তে হাত দুটি নিজের সমতল পেট ওর নাভির চারদিকে বোলাতে থাকে। সদ্য স্নাত বন্দনার শিরায় নিজের তালুর তপ্ত পরশে স্ফুলিঙ্গরে আবির্ভাব হয়। তন্বী নারীর দেহে ধিমে লয়ে জ্বলে ওঠে কামনার আগুন। পেলব জঙ্ঘাদ্বয় একে অপরের সাথে মৃদু ঘর্ষণ করতে থাকে, প্রজ্বলিত হয় জানুমাঝের আগ্নেয়গিরি। শিরশির করে ওঠে নাভির নিচে নরম তুলতুলে মাংস, থর থর করে কেঁপে ওঠে পা দুটি, শক্তি হারাতে থাকে বন্দনা। নিজের শরীর এবং মনের ওপরে ওর আর আয়ত্ত থাকেনা। বাঁ হাথে চেপে ধরে একটি বক্ষ, পিষে ফেলে সর্ব শক্তি দিয়ে, অন্য হাতটি পৌঁছে যায় জানুমাঝে নারীত্বের গহ্বরে। চোখ দুটি বন্দ করে চেপে ধরে নিজের হাত নিজের জঙ্ঘা মাঝে। আর থাকতে না পেরে লুটিয়ে পড়ে মেঝেতে বন্দনা, নিজের সাথে প্রবল মারামারি করে নিজের জৈবক্ষুধা মেটাতে। অবশেষে ফল্গু নদীর বাঁধ ভাঙে, বয়ে চলে বারিধারা। নিস্তেজ বন্দনা এক অনাবিল আনন্দের ঢেউ খেলানো সমুদ্র তটে নিজেকে লুটিয়ে দেয়। ছোটো ছোটো নিঃশ্বাসের ফলে ওর নিরাভরণ বক্ষদ্বয় সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় ওঠানামা করে। সারা শরীরে বয়ে চলে এক অনাবিল আনন্দের তরঙ্গিণী।
কিছুক্ষণ পড়ে নিজের ক্ষুধার্ত অবস্তা দেখে নিজেরই লজ্জা পেয়ে যায়, একটা হাত কাটা টপ আর একটা হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট পড়ে নেয়। ঘরে যখন থাকে ওর অন্তরবাস পরিধান করতে ভালো লাগেনা এবং সেটা নিরুপম ও চায়না। নিরুপম সবসময় যেন ওর দেহটাকে উন্মুক্ত করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
স্টুডিয়োতে ঢুকে ক্যানভাস গুলো উল্টেপাল্টে দেখে। আর্টিস্টদের ন্যুড আঁকা একটা সাবজেক্ট সেটা ও ভালো ভাবে জানে এবং তাই নিয়ে ওর কোনদিনও কোনও বিরূপ ছিলোনা যে নিরুপম একটি উলঙ্গ মেয়ের সামনে দাঁড়িয়ে সেই নারীর দেহ টাকে নিজের ক্যানভাসে তুলে ধরছে। নিরুপম যখন ন্যুড স্টাডি করত সেই কটা দিন বন্দনা ওর বাড়িতে যেতনা, পারতপক্ষে এক বিবসনা নারীর সামনে দাঁড়াতে ওর ইচ্ছে করত না। এমন ও সময় গেছে যে নিরুপম ওকে মডেল বানিয়ে ওর ন্যুড স্টাডি করেছে তবে সেই রেখা চিত্র গুলোতে ও নিজের মুখের আবয়াব কে প্রচ্ছন্নে না রাখতে অনুরোধ করতো। নিজের প্রেমির সামনে নিজেকে তুলে ধরা এক আর সেই উলঙ্গ দেহটাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা আর এক। নিজেকে ও কারুর সামনে তুলে ধরতে লজ্জা পেত। প্রেমের শুরুর দিকে নিরুপম কয়েক বার ওকে অনুরোধ করেছিলো ওর বন্ধুদের সামনে একটা মডেলিং করতে, সেই নিয়ে দুজনের মধ্যে তুমুল কথা কাটাকাটি হয়, সেটা বছর তিনেক আগের ঘটনা, তারপরে কোনও দিন নিরুপম ওকে সেই রকম অনুরোধ করেনি আর। নিরুপম ওর শরীর টাকে নিয়ে খেলতে বেশ ভালবাসে, ন্যুড স্টাডি করার সময়ও বন্দনার শরীর নিয়ে অনেকক্ষণ খেলার পড়ে ক্যানভাসে আঁচর দিত, এমন ও দিন গেছে যে ওর সারা দিন ঘর থেকে বেরই হয়নি, সারা দিন দু’জনে একে ওপরের সাথে নিরবস্ত্র হয়ে কাটিয়ে গেছে। মনে পড়ে যায় সেই সব দিনের কথা, সাথে সাথে রক্ত কনিকা গুলো সারা শরীরে আলোড়ন শুরু করে দেয়।
নিরুপম কিছুক্ষণ পড়ে মাংস আর আলু পেয়াজ নিয়ে ঘরে ঢোকে। ঢুকে দেখে বন্দনা এক মনে ওর ক্যানভাস গুলো নড়িয়ে চড়িয়ে দেখছে। বেশির ভাগ ন্যুড কাজ গুলো দ্বীপানিতার। পায়ের আওয়াজ শুনে মুখ তুলে তাকায় বন্দনা, দরজায় দাঁড়িয়ে নিরুপম ওকে নিরীক্ষণ করে চলেছে। চোখে এক অবিশ্বাসের ছোঁয়া।
বন্দনা হেসে জিজ্ঞেস করে “কি হল ঐ রকম করে দেখছ কেনও বলতও? আমি তোমার স্কেচ গুলো দেখতে পারিনা নাকি?”
মাথা নাড়ায় নিরুপম ধরা পড়ে গেছে, কিন্তু সেটা তার চেহারায় আনা যাবেনা তাই একগাল হেসে উত্তর দেয় “আরে না না, সেটা নয় তুমিই তো দেখবে। যাও এবারে রান্না টা সেরে ফেলওতো খুব খিদে পেয়েছে। আমি ততক্ষণে স্নানটা সেরে ফেলি।”
বন্দনার হাতে বাজারের থলেটা ধরাতে গিয়ে বুকের দিকে নজর পড়ে নিরুপমের, স্তনবৃন্ত নুড়ি পাথরের মতন টপ ভেদ করে ওর দিকে চেয়ে রয়েছে যেন। নিরুপম আলতো করে বন্দনার পশ্চাৎ গোলায় একটা ছোটো চাঁটি মেরে বলে “আজ বিকেলে তুমি সবাইকে পাগল করে দেবে মনে হচ্ছে হানি।”
ভুরু কুঁচকে তাকায় বন্দনা, জিজ্ঞেস করে “মানে?”
নিরুপমের বাঁ হাতটা বন্দনার স্কার্টের নিচে কোমল নিতম্বের ওপরে বিচরন করতে থাকে, আলতো করে চেপে ধরে দেয়ালের সাথে বন্দনাকে “তুমি আল্টিমেট সেক্সি হানি।”
মর্দন ঘর্ষণে তিরতির করে কেঁপে ওঠে বন্দনা “কি করছও ছাড়ো এখন, ধুর বাবা, যাও স্নানটা সেরে নাও।”
নিরুপম ছাড়ে না বন্দনাকে, দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে ওর ঘাড়ের ওপরে মুখ নামিয়ে কাঁধে একটা কামর দেয়। ডান পাটা বন্দনার জঙ্ঘার মাঝে সঞ্চালিত করে ওপর দিকে ঠেলে ধরে। বন্দনা নিরুপমের মাথাটা খামচে ধরে উঠিয়ে নিয়ে একটু রাগত স্বরে বলে “গা থেকে বোটকা গন্ধ বের হচ্ছে, তাড়াতাড়ি স্নানে যাও নাহলে রাতে পাশে শুতে দেব না।” এই বলে এক জোরে চাঁটি মারে নিরুপমের পেটের নিচে।
“উম…” চলে যেতে যেতে একটা ক্রুর হাসি হেসে বলে “আজ রাতে দেখা যাবে খানে। আর হ্যাঁ তোমায় বলতে ভুলে গেলাম, রাতে পাঁচ জন আসছে, দ্বীপানিতা, দেবমাল্য এদের কে তো চেনই, আর আমার দুই পার্টনার একজন বাঙ্গালরের নাম কারতিকেয়ন, একজন দিল্লির নাম সুজন আর সুজনের গার্লফ্রেন্ড রিতিকা। একটা ছোটো করে গেট টুগেদার আর কি।“
চোখ দুটি বড় হয়ে যায় বন্দনার “এতো গুলো লোক? কি খাওয়াবে?”
—“আরে না, খাবে কি, সেটা তো অর্ডার দেওয়া যাবে।”
অভিমানী সুরে বলে বন্দনা “তুমি ঠিক করে তো আমার কথাই শুনলে না” মুখটা একটু কালো হয়ে যায় ওর। নিরুপম ওকে আসস্থ সুরে উত্তর দেয় “হানি, আই এম ওল ইরাস ফর ইউ।” চোখ টিপে ঢুকে পড়ে স্নান করতে।
বন্দনা মনের মধ্যে একটা রবিন্দ্র সঙ্গিত গুনগুন করতে করতে রান্না ঘরে ঢুকে পড়ে “চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে উছলে পড়ে আলো, ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধ সুধা ঢালও………” মনটা আজ ওর বেশ উৎফুল্ল, যা চেয়েছে তা হতে চলেছে ওর জীবনে।
বন্দনা ব্যাস্ত হয়ে পড়ে মাংস রান্না করতে, মাঝে মাঝে একটু করে হেলে দোলে, নেচে ওঠে মন তার সাথে নেচে ওঠে কোমল বুক দুটি। একটু পড়ে ঘাড়ে একটা গরম নিঃশ্বাসের ছোঁয়া পায়, কোমরে হাত দিয়ে আলতো করে জড়িয়ে ধরে নিরুপম, ঘাড়ে মাথার পেছনে নাক ঘসতে থাকে। থেকে থেকে নিজের তলপেটটা ওর ওপরে চেপে ধরে, বন্দনার সুডৌল নিতম্বের খাঁজে গেঁথে দেয় ওর কামোত্থিত ধ্বজা। কানের কাছে নিচু স্বরে বলে “ইউ আর ড্যাম সেক্সি বেবি। আই উইল গো ম্যাড এনি ডে।”
মাথা দিয়ে পেছনে একটা ছোটো ধাক্কা মারে বন্দনা, সোজা গিয়ে লাগে নিরুপমের নাকে “দুষ্টুমিটা কি সব সময় করতে হয় তোমাকে? খেয়ে নাও আগে নাহলে কাঁচা মাংসই খেতে দেবো কিন্তু।”
“ওকে ডিয়ার, তুমি রান্না করো, আর বলও তোমার কথা।” নিরুপম ওকে ছেড়ে দিয়ে রান্না ঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়।
“তুমি তো কখনও আমার কথা ঠিক করে শুনতে চাওনা।” অভিমানি সুর ওর গলায়।
—“শুনছি তো”
—“আচ্ছা একটা কথা বলও, এতো দিনে তুমি কেন একবার ও কোলকাতা এলেনা?”
—“এই দেখো মেয়ের রাগ, আরে আমার যে অনেক কাজ থাকে, তুমি একটুও বোঝোনা।”
—“কাজ না কাঁচ কলা, তুমি আমাকে একদম আগের মতন ভালোবাসো না।”
একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দেয় ওর দিকে নিরুপম “আরে কন্যের রাগ দেখো, আরে বাবা আমি তোমাকে ঠিক সেই রকমই ভালবাসি।”
—“সত্যি বলছও?”
—“হ্যাঁ রে বাবা সত্যি, বলছি।”
—“তাহলে আজকেই কেন গেটটুগেদার করার ছিল? আজকে শুধু আমি আর তুমি থাকতাম।”
—“আরে না না, ব্যাপারটা কিছুদিন ধরেই প্লান ছিল। এমনিতে দ্বীপানিতা কে ট্রিট দিতে হতো কেননা ও আমার অনেক হেল্প করেছে মডেলিংএ আর কারতিকেয়ান আর সুজন হচ্ছে আমার পার্টনার।”
—“দেবমাল্য কেন আসছে তাহলে, আর বরুন কোথায়?”
—“আরে বাবা, দেবমাল্যর হোটেলে ওরা উঠেছে তাই ওকে ডেকেছি। আর কি যে বলি তোমাকে, দ্বীপানিতার আর বরুনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে মাস ছয়েক আগে?”
—“কেনও?”
—“আমি অত শত জিজ্ঞেস করে দেখিনি, আসলে তুমি নাহয় জিজ্ঞেস করে নিও।”
—“আচ্ছা বাবা, তা তোমাদের এক্সজিবিশন টা কোথায় হচ্ছে?”
—“আমাদের কাজ গুলো জার্মানি যাবে।”
—“বাপরে অনেক বড় পেনটার হয়ে গেছো তাহলে।”
—“না, তোমাকে ছেড়ে আমি একদম শুকিয়ে গেছিলাম।”
রান্না করা হাত নিয়ে নিরুপমের গলা জড়িয়ে ধরে বন্দনা “এইতো আমি এসে গেছি, আর ছেড়ে যাচ্ছিনা।”
—“রাতে একটু ড্রিংকস থাকবে, তুমি খাবে তো?”
—“তুমি জানো আমি খাইনা ঐ সব।”
—“আচ্ছা সেটা না হয় রাতে দেখা যাবে।”
—“ওকে এবারে যাও, রান্না টা প্রায় শেষ। কখন আসছে তোমার বন্ধুরা?”
—“এই ধর সাতটায় কি আটটায় আসবে। একটু সেক্সি ড্রেস করো কিন্তু, বেশ মজা হবে।”
—“মানে? আমি বেশি কিছু ড্রেস আনিনি যে।”
—“তোমার সেই হাতকাটা পিঙ্ক কালারের ছোটো ফ্রকটা এনেছো কি?”
—“উম তুমি না একদম দুষ্টু ছেলে, যাঃ ওটা আমি ওদের সামনে পড়তে যাবো কেন?”
—“যাঃ বাবা, ওটা পড়লে বেশ সেক্সি লাগে যে তোমাকে। দুটো মেয়ে তো একদম ধিনচ্যাক ড্রেস পড়ে আসবে, আর তুমি সাদা ম্যাটা আমার গার্লফ্রেন্ড হয়ে? সেটা কেমন লাগবে বলও তো।”
—“ওকে বাবা, ওটাই পরবো আমি। আমি জানতাম তাই ওটা আমি এনেছি।”
দুপুরের খাওয়া খেয়ে উঠতে ওদের প্রায় তিনটে বেজে যায়, খাওয়ার পরে বন্দনা বলল “আমি একটু রেস্ট নেবো, তুমি আমারে পাশে শুয়ে পড় না কেন?”
মাথা চুলকিয়ে নিরুপম বলে “না গো, একটু কাজ আছে আমাকে একটু বাইরে যেতে হবে।”
বিছানায় গা এলিয়ে আদর করে জিজ্ঞেস করে “কি কাজ?”
“এই গিয়ে একটু খাবারের অর্ডারটা দিয়ে আসি আর হুইস্কি আর রাম নিয়ে আসছি।” বলতে বলতে নিরুপম বন্দনার শায়িত শরীরের ওপরে ঝুঁকে ওর গোলাপি ঠোঁটে আলত করে একটা চুমু খায় “তুমি ঘুমোয়।”
গায়ের ওপরে একটা চাদর টেনে, বন্দনা চোখ বন্দ করে শুয়ে পরে, অনেক সকাল বেলা বেড়িয়েছে রাতেও ঠিক করে ঘুম হয়নি ওর, ভয় একটা ছিল মনের মধ্যে কেননা স্যামন্তক আর ও বাড়িতে একা একা ছিল।
চলবে...
Posts: 303
Threads: 0
Likes Received: 220 in 175 posts
Likes Given: 601
Joined: Jan 2019
Reputation:
4
khub bhalo hoyacha,,,,, waiting for next
Posts: 43
Threads: 0
Likes Received: 54 in 34 posts
Likes Given: 45
Joined: Oct 2019
Reputation:
3
Dada eta to copy paste korchen pls ektu honesty dekhiye original writer r name ta likhe din nijer name chalano ta thik na
Posts: 64
Threads: 0
Likes Received: 58 in 40 posts
Likes Given: 126
Joined: Dec 2019
Reputation:
3
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব-১২
ঘুমটা যখন ভাঙে বন্দনার, তখনও নিরুপম ফেরেনি। ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখে, বিকেল সাড়ে পাঁচটা বাজে, ছেলেটা এখনো এলো না, এতোক্ষণে তো চলে আসা উচিৎ। বিছানা ছেড়ে উঠে পরে। জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখে, আকাশে কালো মেঘ জমেছে, বৃষ্টি এলো বলে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হবেনা তো কখন হবে। চুলটা জড়িয়ে একটা ছোটো হাত খোঁপা বেঁধে ঘর দুয়ার ঠিকঠাক করতে থাকে, বিকেলে আবার এক গাদা বন্ধু বান্ধব নিয়ে পার্টি করবে নিরুপম। বারবার ঘড়িটার দিকে তাকায়, সময় যেন আর কাটতে চায়না, কেন যে ছেলেটা এখন আসেনা বলে গেলো তাড়াতাড়ি আসবে এতো দিন পরে ও ফিরে এসেছে, আজ ও চেয়েছিল নিরুপমের সাথে পুরদিনটা কাটাতে।
কিছুক্ষণের মধ্যে ঝড় ওঠে, ধুলো উড়তে থাকে বাইরে, লালমাটির ধুলো, তার সাথে সাথে দু’এক ফোঁটা বৃষ্টিও শুরু হয়ে যায়। না এবারে ও নিজেকে একটু তৈরি করে নিক, এসে যাবে হয়তো, বন্ধুদের সাথেই এক বারে ঘরে ঢুকবে। ব্যাগ থেকে গোলাপি হাতকাটা হাঁটু পর্যন্ত লম্বা ফ্রকটা আর গাড় লাল রঙের অন্তর্বাস দুটি হাতে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায়। চোখে মুখে জল দিয়ে, গামছাটা ভিজিয়ে গা হাত পা মুছে নেয়। মনটা আজ বেশ উৎফুল্ল গুনগুন করে গান গেয়ে ওঠে “শুনরে পবন, পবন পুরবইয়া, ম্যেয় হু অকেলি ওর তু ভি হ্যায় অকেলা, বনযা সাথিয়া……”
ড্রেসটা পরে বাইরে বেরিয়ে নিজের প্রসাধনিতে লেগে যায়, মনের মানুষটার আবদার মতন একটু সেক্সি সাজতে হবে, যেন একটা প্রাইজড পসেসান নিরুপমের। ঝড়টা কমে গিয়ে এখন বাইরে ঝিরঝির করে অবিরাম ধারায় বৃষ্টি পরে চলেছে। এমন সময় দরজায় কেউ টোকা দেয়। বন্দনা লাফিয়ে ওঠে, নিশ্চয় নিরুপম এসেছে। দৌড়ে গিয়ে দরজা খোলে, সারা মুখে একটা ভালোবাসার হাসি মাখা।
থমকে দাঁড়িয়ে পরে বন্দনা, দরজায় দাঁড়িয়ে দেবমাল্য আর তার সাথে এক অচেনা ভদ্রলোক। দেবমাল্য বন্দনা কে দেখে ঠিক ভুত দেখার মতন তাকিয়ে থাকে।
আশ্চর্য চকিত স্বরে দেবমাল্য জিজ্ঞেস করে বন্দনা কে “তুমি এখানে? কখন এসেছ?”
বন্দনা দরজা ছেড়ে দাঁড়িয়ে ওদের ঘরের মধ্যে ঢুকতে আহ্বান জানায় “ভেতরে এসো। আমি আজ সকালে এসেছি।”
লোকটা হতচকিতের ন্যায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে তারপর দেবমাল্যর কানে কানে কিছু বলে, তারপরে হেসে বন্দনার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে “আই এম কারতিকেয়ান, ইউ মাস্ট হ্যাভ হার্ড এবাউট মি ফ্রম নিরুপম।”
হাতটা একটু আলতো ছুঁয়ে, একটা মিষ্টি হাসি হেসে বলে “ইয়াহ আই হ্যাভ হার্ড, সো ইউ আর ডুইং সাম এক্সিবিশণ?”
মাথা নাড়ায় কারতিকেয়ান “ইয়াহ। ইন জার্মানি” আমতা আমতা করে বলে “ইট ইস আ ন্যুড সিরিজ।”
বন্দনা ওর লজ্জা দেখে হেসে ফেলে “ডোন্ট বি নার্ভাস আই এম আ পেনটারস গার্লফ্রেন্ড সো আই এম আক্যাস্তটমড টু অল দোয।”
—“ইউ আর প্রিটি ব্রিলিয়ান্ট লেডি।”
বন্দনার গালে গোলাপি আভা দেখা দেয়, প্রশ্ন করে “সো নিরুপম হ্যায নট বিন উইথ ইউ?”
—“নো ডিয়ার, উই আর আলসো লুকিং ফর দ্যাট ফেলাহ।”
দেবমাল্য ওর বাজুতে একটু টান মারে, চোখের ইশারা করে বলে “একটু ঘরের মধ্যে চলোতো কথা আছে।” তারপরে কারতিকেয়ান দিকে ফিরে বলে “বি কম্ফরটেবেল আই এম কামিং।”
ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে দেবমাল্যকে “কি ব্যাপার বলতও, নিরুপম এখনো এলনা তোমরা চলে এলে?”
—“আজ তো আমাদের দেখা হয়নি, প্লানটা তো আগের। যাই হোক, আসবে একটু পরে হয়তো, কিন্তু তোমার সাথে আমার একটু কথা আছে ভেতরে চলো।”
ভেতরের ঘরে যেতে যেতে বন্দনা প্রশ্ন করে দেবমাল্য কে “কি?”
ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষণ বন্দনার মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে “তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে নিরুপম কিছু বলেনি তোমাকে।”
বুকের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় বন্দনার “কি হয়েছে একটু খোলসা করে বলতও।” জিজ্ঞেস করে দেবমাল্যকে।
ভেবে পায় না কোথা থেকে শুরু করবে বা কি বলবে, মাথা চুল্কাতে চুল্কাতে দেবমাল্য উত্তর দেয় “কি করে যে বলি তোমাকে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা, দ্বীপানিতার ব্যাপারে কিছু জানো না?”
বুকের মাঝে হটাৎ করে একটা বিশাল ঢেউ আছড়ে পরে, হাতের মুঠি শক্ত হয়ে যায়, মাথার রক্ত গরম হয়ে যায়, চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসে বন্দনার, তিরতির করে কেঁপে ওঠে লাল দুটি ঠোঁট। অস্ফুট চিৎকার করে ওঠে “কি বলছও তুমি নিরুপমের ব্যাপারে, জানো সেটা। দ্বিপানিতা তো ওর মডেল।”
একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বন্দনার জলভরা চোখের দিকে তাকিয়ে বলে দেবমাল্য “হুম শুধু ন্যুড সিরিজের কথাই বলেছে তাহলে, আমার শোনা কথা যে এর পেছনে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে।”
কান দুটি ঢেকে অস্ফুট স্বরে চেঁচিয়ে ওঠে বন্দনা “না আমি বিশ্বাস করিনা, তাই যদি সত্যি হয় তাহলে আজ পার্টিতে দ্বীপানিতাকে কেন ডাকা? বলও উত্তর দাও। তুমি মিথ্যে বলছও তাই না। বলও মিথ্যে বলছও, বল আমার সাথে একটু মজা করছও তাইতো।” গলা ধরে আসে বন্দনার, পা কাঁপতে থাকে, দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলেছে ও, ধুপ করে বসে পরে বিছানায়।
দেবমাল্য কি করবে, কি বলবে কিছু ভেবে পায়না “আমি কি সত্যি কি মিথ্যে জানিনা, তবে শোনা কথা এই যা। দ্বীপানিতার সাথে বরুনের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে……”
ভেজা চোখে, কাঁপা ঠোঁটে উত্তর দেয় বন্দনা “জানি, ছ মাস আগে ওদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে, নিরুপম আমায় বলেছে সেটা।”
মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করে দেবমাল্য এমন সময় দরজার আওয়াজে ওদের মুখের কথা মুখেই থেকে যায়।
নিরুপম ঢোকে বাড়িতে, সাথে সুজন আর রিতিকা। ভেতরের ঘর থেকে বন্দনা নিরুপমের গলার আওয়াজ পেয়ে কান্না ভেজা চাহনি নিয়ে তাকায় দেবমাল্যর দিকে “যদি মিথ্যে হয় তোমার কথা……” বলে চোখ মুছে মুখে একটা সুন্দর হাসি মেখে বেরিয়ে দেখে নিরুপম ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
পেছন পেছন দেবমাল্য বেরিয়ে আসে ঘর থেকে। ওদের দু’জন কে দেখে নিরুপমের মুখের রঙটা একটু বদলে যায়, নিজেকে সামলে উৎফুল্ল স্বরে বলে ওঠে “কিরে তোরা কখন এসেছিস?”
—“বেশ খানিকক্ষণ আগে, তা তুই নেই দেখে তোর বউয়ের সাথে একটু গল্প করছিলাম।”
হা হা করে একটা খোলা হাসি হাসে নিরুপম, তারপরে সুজন আর রিতিকার সাথে আলাপ করিয়ে দেয় বন্দনার।
বন্দনা নিরুপমকে জিজ্ঞেস করে “কি গো, দ্বীপানিতা এলোনা, তোমার সাধের মডেল।” গলায় একটু তিরস্কারের ছোঁয়া।
বন্দনা কে আশ্বস্ত করার জন্য উত্তর দেয় “আরে বাবা এই হটাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো যে, হয়তো আসবে পরে। এইতো সবে সাতটা বাজে।”
রিতিকা একটা গাড় নীল রঙের টপ পরে, চাপা বস্ত্রটি ওর সৌন্দর্যটাকে ঢেকে রাখার জন্য বেশ পরিশ্রম করছে। সুডৌল উধ্বত বুকের ওপরে চেপে বসা টপ, গায়ের ফর্সা রঙের সাথে বেশ মানিয়ে গেছে।ছোটো চুলে একটি পনিটেল বাঁধা।ঠোঁট দুটিতে লিপস্টিক তকতকে লাল যেন রক্ত চুম্বন করে ফিরছে রমণী। নিচে চাপা সাদা স্লাক্স পরা, কোমরের নিচের অংশের ওপরে যেন রঙের লেপ লাগানো। পাতলা কটির পরে ঢেউ খেলে ফুলে উঠেছে পুরুষ্টু থলথলে নিতম্বদ্বয়, দেখেই বোঝা যায় যে স্লাক্সের নিচে কিছু পরেনি মেয়েটা। কদলি কাণ্ডের ন্যায় পেলব মসৃণ জঙ্ঘা। স্লাক্সটা হাঁটু পর্যন্ত নেমে শেষ হয়ে গেছে, পায়ের গুচ্ছ বেশ মাংসল। মেয়েটিকে দেখে বেশ বড় লোকের বাড়ির মেয়ে বলে মনে হয় বন্দনার।
বন্দনা রিতিকার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি হাসে “তুমি বেশ তো দেখতে?”
রিতিকা কিছু বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে বন্দনাকে “ক্যা?”
সুজন আর বাকি সবাই হেসে ফেলে “আরে ও ইউ.পি. মেয়ে ও বাংলা জানেনা।”
বন্দনা ও হেসে ফেলে, “ইউ আর ওয়েলকাম।”
—“ইউ আর রিয়ালি আ বিউটিফুল লেডি, আই আস্কড নিরুপম মেনি টাইমস টু টেক ইউ টু ডেলহি…”
আস্তে আস্তে সবাই গল্প গুজব হাসি ঠাট্টায় মেতে ওঠে। মাঝে মাঝে বন্দনা এক বার করে দেবমাল্যর দিকে প্রশ্নবাচক চাহনি নিয়ে তাকায়। দেবমাল্য চোখের ইশারায় জানিয়ে দেয় “জানিনা তবে আমি দেখছি।”
রাত বাড়তে থাকে, নিরুপম মদের বোতল খোলে, সবার গেলাসে মদ ঢালতে ঢালতে বলে “এটা হছে আমাদের নিউ লাইফ আর নিউ এক্সজিবিশণ এর জন্য।” তারপরে বন্দনার কাঁধে হাত রেখে বলে “মাই হ্যাপিএস্ট ডে টুডে।” একটা গভির চুম্বন এঁকে দেয় বন্দনার গোলাপি নরম ঠোঁটে।
সুরার গেলাস আর থামেনা, একের পর এক খালি হয়, বন্দনা প্রথম প্রথম একটু না না করে কিন্তু রিতিকাকে খেতে দেখে ও এক গেলাস নিয়ে ঠোঁটে ছোঁয়ায়। নিরুপম আড় চোখে দেখে আর হেসে বলে “এই তো আমার রমণী, এবারে ফিল্ডে নামছে। এসো ডার্লিং।”
দেবমাল্য আর কারতিকেয়ন এক দিকে বসে নিজের মনে একের পর এক গেলাস খালি করছে। সুজন রিতিকাকে কোলের ওপরে বসিয়ে আদর করতে করতে মদ পান করে চলেছে।
নিরুপম বন্দনাকে নিজের কোলে টেনে নেয়, গালে গাল ঘষে বলে “আরেকটু খাবে না, গ্লাস তো খালি হয়ে গেছে।” এই বলে গ্লাসটা আবার ভরে দেয়। তিন গ্লাস হুইস্কি গলায় ঢালার পরে বন্দনার মাথা একটু ঝিম ঝিম করতে শুরু করে দেয়।
বন্দনা অর্ধ নিমিলিত চোখে নিরুপমের দিকে তাকায় “তোমার প্রেমের রমণী, ডার্লিং মডেল দ্বীপানিতা কোথায়।”
বন্দনার সুডৌল পুরুষ্টু বুকের ওপরে হাত বোলাতে বোলাতে কানে কানে বলে “এত তাড়া কিসের সোনা, রাত তো পরে আছে। তুমি আমি আর……”
কথাটা শুনে একটু কড়া চোখে তাকায় নিরুপমের দিকে। নিরুপম আলতো হেসে বলে “আর একটু খাও, প্লিস আমার জন্য” বলে নিজের গ্লাসটা বন্দনার ঠোঁটের সাথে ধরে, পুরো গ্লাসটা গলায় ঢেলে দেয়।
নরম বুকের ওপরে নিরুপমের কঠিন আঙ্গুলগুলি বন্দনার মদ্যপ শিরায় আগুন জ্বালিয়ে দেয়। রাত বাড়তে থাকে, বাইরে ঝড়টা একটু ধরে আসে। নিরুপম ডান হাতটা বন্দনার ডান জঙ্ঘার ওপরে বোলাতে শুরু করে, ধিরে ধিরে ফ্রকের নিচ দিয়ে বন্দনার জানু মাঝে পৌঁছে যায়। শিরশির করে ওঠে সারা শরীর, কেঁপে ওঠে বন্দনা। শিরা উপশিরায় সুরার ছোঁয়ায় লেগেছে আগুন, তার সাথে ঘি ঢালছে নিরুপমের আদর। নিরুপমের আঙ্গুল ওর নারীত্বের কাছে গিয়ে আদর করতে শুরু করে। বন্দনা নিরুপমের মাথাটা চেপে ধরে নিজের বুকের ওপরে। মুখ ঘুরিয়ে তাকায় সুজন আর রিতিকার দিকে, দু’জনে অনেকটাই গলায় ঢেলেছে, ধিরে ধিরে ঐ দুই প্রেমিক প্রেমিকা, যুগলবন্দির খেলায় রত।
কারতিকেয়নের চোখ দুটি লাল হয়ে গেছে মদের নেশায়, একটু একটু করে টলছে ও, দেবমাল্য নিজেকে সামলে মদ খেয়ে ছিল তাই ও নিরুপম কে বলে “এই অনেক রাত হয়ে গেছে, আমরা চললাম বুঝলি।” তার পরে সুজনের দিকে তাকিয়ে বলে “বোকাচোদা ছেলে, নিজের রুমে গিয়ে বউয়ের গাঁড় মার, সবার সামনে থাকলে শালা আমিও মেরে দেবো।” রিতিকার কোনও হুঁশ নেই, ওর কি অবস্থা।
দেবমাল্যর আওয়াজ শুনে শৃঙ্গার রত নিরুপম একটু থমকে যায়, হাতটা টেনে বের করে নেয় বন্দনার জঙ্ঘার মাঝ থেকে। আধবোজা চোখে তাকিয়ে বলে “তোরা কি যাচ্ছিস?”
“হ্যাঁ আমারা চললাম, অনেক রাত হয়ে গেছে শালা। এবারে কিছু করতে হলে বিছানা আছে, বাঁড়া ওখানে নিয়ে কর।” তারপরে সুজনের দিকে তাকিয়ে বলে “তোমার মালটা তো বেহুঁশ, দেখি বাইরে বেরিয়ে কোন রিক্সা পাওয়া যায় কিনা।” নিজের মনে বলতে থাকে বিড়বিড় করে “বাণচোত গুলো সময় কাল দেখে না।”
বন্দনা ঝিম ধরা মাথায় ওর একটু সম্বিৎ জ্যান্ত থাকে, ও দেবমাল্যর কথা শুনে একটু হাসার চেষ্টা করে।
“ঠিক আছে আমরা আসছি।” বলে দেবমাল্য সবাইকে চলে যায়। বাইরে ঝড়টা অনেক কমে গেছে, বৃষ্টিটাও ধরে এসেছে, ইলশেগুড়ি ধারায় ঝরে চলেছে অবিরান্ত।
ঘর ফাঁকা হয়ে যাওয়ার পরক্ষণই নিরুপম পাঁজাকোলা করে বন্দনাকে শোবার ঘরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে বিছানায় আছড়ে ফেলে। নিস্তেজ মদ্যপ বন্দনার শরীরে হাত পা নাড়ানোর মতনও শক্তি নেই, আধোবোঝা চোখে চেয়ে থাকে নিরুপমের দিকে, দৃষ্টি ভাসা ভাসা চোখের সামনে সব কিছু ধোঁয়াশে হয়ে আসে। হাতদুটি শরীরের দু পাশে ছড়ানো, মাথার চুল খোলা, পরনের ম্যাক্সিটা অবিন্যস্ত, কোমরের ওপরে উঠে গেছে। নিস্তেজ বন্দনা কিছু বলার চেষ্টা করে, ঠোঁট দুটি তিরতির করে কেঁপে ওঠে কিন্তু গলা দিয়ে আওয়াজ বের হয়না। নিরুপম একটা গ্লাসে অন্য কিছু পানিয় ওর ঠোঁটের মাঝে ঢেলে দেয়। নিরুপম ওর মদ্যপ নিস্তেজ দেহের দিকে লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে।
বন্দনার চোখের সামনে আবছা আর একটি অবয়াব ভেসে ওঠে, ছেলে না মেয়ে ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা। নিরুপম ওর শরীরের ওপরে ঝুঁকে পরনের বস্ত্রটিকে এক ঝটকায় খুলে ফেলে। পরপর করে ছিঁড়ে যায় পাতলা মাক্সিটা। শুধু অন্তর্বাস পরিহিত নিস্তেজ বন্দনা বাধা দেওয়ার শক্তিটুকু জুটিয়ে উঠতে পারেনা। চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে, আপনা হতেই চোখ দুটি বন্দ হয়ে যায়। নিরুপম ওর পা দুটি টেনে ফাঁক করে, একটানে ছিঁড়ে ফেলে কটিবন্ধনী, এক চিলতে কাপড় ওর নারীত্বকে ঢেকে রেখেছিলো সেটাও গেলো। ক্ষুধার্ত হায়নার মতন ঝাঁপিয়ে পরে নিরুপম, বন্দনার কমনীয় বিমোহিত নিস্তেজ দেহটির ওপরে। নিঙরে কামড়ে আঁচরে আছড়ে উল্টে পাল্টে শুষে নেয় বন্দনার শরীর।
অর্ধ চেতন অবস্থায় মাঝে মাঝে চোখ খুলে দেখতে চেষ্টা করে বন্দনা, কি হচ্ছে ওর দেহটার সাথে। বুঝতে পারে যে ওর শরীর নিয়ে এক জঘন্য খেলায় মেতেছে নিরুপম। মাথাটা খাটের থেকে বাইরে নিচের দিকে ঝুলছে, চোখের সামনে সারা পৃথিবীটা কাঁপছে। শিরা উপশিরায় সুরার তরঙ্গে, শরীরে ব্যাথা বেদনাও ঠিক মতন ঠাহর পায়না। অস্ফুট স্বরে বাধা দিতেও চেষ্টা চালায় মাঝে মাঝে, কিন্তু নিরুপমের শক্তির সামনে ওর বাধা হার মেনে যায়।
কিছুক্ষণ না অনেকক্ষণ জানেনা বন্দনা, একটু পরে মাথার পেছনে কেউ কিছু দিয়ে জোরে আঘাত করে। চোখে সামনে অন্ধকার চেতনা হারিয়ে বিছানায় লুটিয়ে পরে বন্দনা।
চলবে....
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
(08-03-2020, 12:19 AM)kingaru06 Wrote: Dada eta to copy paste korchen pls ektu honesty dekhiye original writer r name ta likhe din nijer name chalano ta thik na
হে.হে.হে...। আপনি দাদা গল্প পড়তে এসেছেন নাকি গল্পের লেখকের নাম জানতে এসেছেন?
আপনি হয়তো খেয়াল করেননি ১ম পর্বেই গল্পের নাম আর লেখকের নাম দিয়েই আপডেট দেওয়া শুরু করেছি।
নেটে অনেক সাইট আছে। আর অনেক গল্পই একাধিক বার পোস্ট হয়। তাই গল্পের আসল লেখক কে সেটা আমি নিজেই জানি না।
•
Posts: 303
Threads: 0
Likes Received: 220 in 175 posts
Likes Given: 601
Joined: Jan 2019
Reputation:
4
superb but ato tuku ta mon bhrlo na..... aro chai......waiting for next
Posts: 12
Threads: 0
Likes Received: 8 in 5 posts
Likes Given: 9
Joined: Oct 2019
Reputation:
1
(08-03-2020, 12:19 AM)kingaru06 Wrote: Dada eta to copy paste korchen pls ektu honesty dekhiye original writer r name ta likhe din nijer name chalano ta thik na
Yes. Onekdin age Xossip e beriyechhilo.
Posts: 298
Threads: 13
Likes Received: 118 in 85 posts
Likes Given: 193
Joined: Jan 2019
Reputation:
31
Original story was posted by aarushi1977....
গল্পটার নাম ছিল - লুকিয়ে ছিলে এতদিন
All the contents posted by me have been downloaded from the internet. Credit goes to the original uploaders. Anyone having any issues with pictures posted, please message for removal.
Posts: 298
Threads: 13
Likes Received: 118 in 85 posts
Likes Given: 193
Joined: Jan 2019
Reputation:
31
লেখিকা গল্পটা সম্পূর্ণ করেননি, যত দূর আমার মনে আছে
All the contents posted by me have been downloaded from the internet. Credit goes to the original uploaders. Anyone having any issues with pictures posted, please message for removal.
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব-১৩
আমার ভালোবাসার খেলাঘরে
শ্বেতপাথরে রক্ত ঝরে
বিবসনা লুটিয়ে আমি একা,
কাঁদছে ভাঙা বুকের পাঁজর
নিশুত রাতে বইছে যে ঝড়
খেলাঘরের রাজার যে নাই দেখা।
কোপাই তীরে ভাঙছে যে ঢেউ
রাজা ছিলো, না অন্য সে কেউ
বোঝার মতন সময় নাহি ছিল,
যখন দেখি চোখটি মেলে
পালিয়ে গেছে আমায় ফেলে
বুকের মাঝে এঁকে রক্ত রেখা।।
আজও বৃষ্টি পড়ছে বাইরে, এই বৃষ্টি থামার নয়। রাতে খাবার পরে দিদির সাথে ফোনে কথা হয় স্যামন্তকের। সকাল বেলা থেকেই মনটা একটু খিঁচরে, মেয়েটা যাবার আগে একটু ভদ্রতা পর্যন্ত দেখাতে পারলোনা? একটা চিঠি লিখে চলে গেলো। খুব রাগ হয় ওর, বন্দনার ওপরে। একবার ভাবে দিদিকে সব বলে দেবে, যে বন্দনা বাড়ি থেকে পালিয়ে নিরুপমের কাছে চলে গেছে। রাগের চোটে দিদির সাথে ঠিক করে কথা পর্যন্ত বলতে পারেনি স্যামন্তক। সব দোষ যেন দিদির, কেননা বন্দনা তো দিদির বান্ধবী, তাও রাগটা সংযমে রেখে দিদির সাথে কথা বলে।
পুবালি ওর গলার আওয়াজে বুঝতে পারে যে ভাইয়ের কিছু একটা হয়েছে, তাই সবাই ঘুমিয়ে পরার পরে রাত বারোটা নাগাদ আবার ফোন করে জিজ্ঞেস করে “কিরে কি হয়েছে তোর আজ?”
“কই কিছু হয়নি তো।“ গলাটা স্বাভাবিক করে উত্তর দেয় পুবালিকে।
“জানিস আমি তোর দিদি, তুই হাঁ করার আগে আমি বুঝতে পারি তোর জ্বর হয়েছে না কাশি হয়েছে, সুতরাং সত্যি কথাটা বলে ফেল” একটু রেগেই প্রশ্ন করে পুবালি।
দিদিকে সত্যি কথাটা বলতে মন চায়না, কেননা ও বন্দনাকে কথা দিয়েছে। কিছুত টান ওর মধ্যে আছে মেয়েটার জন্য “নারে, আজ বন্ধুদের সাথে একটু টাকা পয়সা নিয়ে ঝগড়া হয়ে গেছিলো তাই মুডটা খিঁচরে আছে।”
—“সত্যি বলছিস তো?”
“হ্যাঁ বাবা তোকে কেন মিথ্যে বলতে যাবো, সত্যি কথাই বলছি” কিন্তু দিদিকে সত্যি কথাটা জানায় না, খুব খারাপ লাগে ওর।
“ওকে গুড নাইট শুয়ে পর।” পুবালি ফোন রেখে দেয়।
জল খেয়ে, মাথার পেছনে জলের ঝাপটা মেরে শুতে যায় স্যামন্তক। রাত প্রায় বারোটা, বৃষ্টিটা অনেক ধরে এসেছে। চারদিক নিস্তব্ধ, বুকের ধুকপুকও কান পাতলে শোনা যায়। এমন সময় রাতের নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে ফোনটা আবার বেজে ওঠে।
ফোন উঠিয়েই ঝাঁজিয়ে প্রশ্ন করে স্যামন্তক “তোকে একবার বললাম আমি ঠিক আছি তুই কিছুতেই কি বিশ্বাস করবিনা, কি হয়েছে তোর বলতো।”
অন্য দিকের মানুষটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে প্রশ্ন করে “হ্যালো এটা কি পুবালির বাড়ি?”
এতো রাতে একজন মানুষ ফোনে দিদির খোঁজ করছে, আওয়াজ শুনে আশ্চর্য হয়ে উলটো প্রশ্ন করে স্যামন্তক “আপনি কে বলছেন?”
একটু আমতা আমতা করে লোকটি বলে “আমি দেবমাল্য, পুবালির বন্ধু। পুবালিকে একটু ফোনটা দেবেন।”
—“দিদি বাড়িতে নেই, কি দরকার দিদির সাথে?”
কাঁপা গলায় উত্তর দেয় অচেনা আওয়াজ “খুবই জরুরি ব্যাপার, আচ্ছা আপনি কে? আপনি কি স্যামন্তক?”
অজানা অচেনা একজন মধ্যরাত্রে ওর নাম নিয়ে ফোনে কথা বলছে, একটু ঘাবড়ে যায় স্যামন্তক “হ্যাঁ, কি দরকার আমাকে, বলুনতো?”
—“বন্দনার খুব খারাপ অবস্থা, ও শুধু পুবালির নামটা বলতে পেরেছে আর আপনাকে একটা ফোন করতে বলেছে।”
ফোনের রিসিভার টাকে শক্ত করে ধরে নিজের মুঠোর মধ্যে, এক ঝটকায় যেন এক গাদা রক্ত ওর সারা মুখে ছড়িয়ে পরে, বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। তোলপাড় টিকে সংযত রেখে জিজ্ঞেস করে “কি হয়েছে ওর?”
—“আপনি এলে বলবো। আপনি কাল সকাল বেলা শান্তিনিকেতন আসতে পারেন কি? আমি বোলপুরে থাকি।”
চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, বুকের ভেতর থেকে কেউ ফিসফিস করে বলে ‘দাঁড়িয়ে কেন ওর আজ তোকে দরকার।’ একটু ধরা গলায় স্যামন্তক বলে “আমি আসছি, এই কয় ঘণ্টা শুধু ওকে বাঁচিয়ে রাখুন, আমি এখুনি বের হচ্ছি।”
—“আচ্ছা আমি বোলপুর স্টেশানের কাছে দাঁড়িয়ে থাকবে, যত রাত হোক।”
—“ও.কে. আপনি শুধু বন্দনাকে বাঁচিয়ে রাখুন।”
ফোন রেখেই অনির্বাণ কে ফোন লাগায় “হ্যালো, ঘুমিয়ে পরেছিস কি তুই?”
—“বাল, এখন তো সবে সন্ধ্যে, গান্ডু রাত বারোটা বেজে গেছে সেটা খেয়াল আছে তোর। কি হয়েছে বল, কোন মেয়ের রেপ করেছিস তুই?”
—“আমি সিরিয়াস, আমাকে এখুনি শান্তিনিকেতন যেতে হবে, গাড়ির ব্যাবস্থা করতে পারিস তুই, প্লিস।”
—“এতো রাতে? কি ব্যাপার বলতো?”
—“তুই একটা গাড়ির ব্যাবস্থা করনা প্লিস, পরে সব বলবো।”
—“আচ্ছা দেখছি আক্রাম কে বলে ওর এম্বাসেডর পাওয়া যায় কিনা।”
ফোনটা রেখে কুল কিনারা পায় না স্যামন্তক, হন্তদন্ত হয়ে একটা জামা গায়ে গলায়। মাথার মধ্যে রক্ত টগবগ করে ফুটছে, কি হল মেয়েটার, এতো রাতে এক অজানা অচেনা মানুষ ফোন করলো ওকে। একবার ভাবতে থাকে এটা কোনও বাজে লোকের কাজ নয় তো? হাজার চিন্তা মাথার মধ্যে ভিড় করে। একবার পার্সটা খুলে দেখল কত টাকা আছে, না হাজার দুই আছে, হয়ে যাবে না হলে কাল ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেবে। দরজায় তালা মেরে নিচে নেমে গেটের বাইরে পায়চারি করতে থাকে। আকাশের ঝড় তো কেটে গেছে, ভেতরের ঝড় টাকে কে সামলায়।
পনেরো মিনিট যেন পনেরো বছর, অনির্বাণ হন্তদন্ত হয়ে ওর দিকে দৌড়ে আসে, হাঁপাতে হাঁপাতে বলে “আক্রাম এর গাড়ি পাওয়া গেছে। চল আমিও যাবো, আক্রাম ও সাথে আছে।”
দুজন বন্ধুকে পাশে পেয়ে একটু আসস্থ হয় স্যামন্তক, খরা বালুচরে যেন একটি মরুদ্যান “চল বেরিয়ে পড়ি।”
আক্রাম ঝরের বেগে গাড়ি চালায়, রাতের নিস্তব্ধতা খান খান করে গাড়ি দৌড়ায় শান্তিনিকেতনের পথে। যেতে যেতে স্যামন্তক জানায় “দিদির এক বান্ধবীর খুব শরীর খারাপ, আমি এক জনের ফোন পেলাম এই রাতে, মনে হয় খুব খারাপ অবস্থা।”
ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে অনির্বাণ “দিদির বান্ধবী তো তোর এতো মাথাব্যাথা কেনও, সেটা তো বুঝলামনা, একটু ঝেড়ে কাশ তো বোকাচোদা ছেলে?”
—“মেয়েটির নাম বন্দনা।”
—“হুম তাই বলি, কি হয়েছে বন্দনার?”
—“জানিনা রে।”
গাড়ি যখন বোলপুর স্টেশানে পৌঁছায় রাত তখন প্রায় তিনটে বাজে। সারা স্টেশান খাঁখাঁ করছে, জনমানব শূন্য কেউ কোথাও নেই, দু একটা কুকুর এদিক ওদিক ঘরাফেরা করছে। গাড়িটা ধিমে করে স্টেশানের সামনে দাঁড় করায় আক্রাম।
অনির্বাণ জিজ্ঞেস করে “বাড়ি চিনিস তুই?”
মাথা নাড়ায় স্যামন্তক “না, তবে বলেছিল কেউ একজন থাকবে এখানে।”
রাস্তার পাশে একজন লোক একটা বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে। ওদের দেখে একটু ইতস্তত্ত করে এগিয়ে আসে গাড়ির দিকে। লোকটা অপরিচিত, তিন জনেই গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়।
অচেনা লোকটি ওদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে “আপনারা কি দুর্গাপুর থেকে আসছেন?”
গলার আওয়াজ শুনে বুঝতে পারে স্যামন্তক যে ফোনে যার সাথে কথা বলেছিল সেই লোকটি “আপনি দেবমাল্য? আপনি আমাকে ফোন করেছিলেন?”
মাথা নাড়ায় দেবমাল্য “হ্যাঁ, আমিই, আপনাকে ফোন করেছিলাম। চলুন এই পাশেই আমার বাড়ি।”
ও একবার অনির্বাণের দিকে তাকায় একবার আক্রামের দিকে তাকায়। দেবমাল্য ওদের ইতস্তত ভাবটা বুঝতে পারে। একটি ম্লান হাসি হেসে বলে “ভয় নেই আপনার, আমি মিথ্যে কথা বলছিনা, আমি পুবালির বন্ধু।”
স্যামন্তক পাল্টা প্রশ্ন করে “দিদির তো বিয়ে হয়ে গেছে, আপনাকে তো দেখিনি?”
—“তাই নাকি? কবে? যাই হোক ও যখন এখানে নাচ শিখতো তখন আমাদের চেনাজানা ছিল। এখন তো চলুন, বন্দনার খুবই খারাপ অবস্থা।”
—“কি হয়েছে ওর।”
—“আমার মনে হয়, অ্যাটেম্পট মার্ডার। তবে বেঁচে যাবে মেয়েটা।”
অস্ফুট চিৎকার করে ওঠে স্যামন্তক, নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারেনা “কি? কে করেছে?”
—“বাড়ি চলুন সব বলছি। আপনারা গাড়ি তে আমার পেছন পেছন আসুন”
দু’হাতে মাথাটা চেপে ধরে স্যামন্তক, চোয়াল শক্ত করে গর্জে ওঠে “কে করেছে আমি জানি, আপনি শুধু নিরুপমের বাড়িটা আমাকে দেখিয়ে দিন।”
আক্রাম ওর পিঠে হাত রেখে শান্ত হতে বলে “চল আগে মেয়েটাকে দেখি তারপরে ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে। আর বেশি কিছু হলে ডি.ভি.সির জলে কেটে ভাসিয়ে দেবো।”
দেবমাল্য বলে স্যামন্তককে “আমি বোলপুরের ছেলে, কালকের সকাল ও দেখবেনা এটা নিয়ে চিন্তা করবেননা। চলুন বাড়িতে।”
স্যামন্তকের গা হাত পা রাগে চিড়বিড় করতে থাকে, দাঁত কিড়মিড় করতে করতে গাড়িতে ওঠে। দেবমাল্য বাইক নিয়ে আগে, আক্রাম গাড়ি নিয়ে পেছনে। মিনিট দশেক পরে দেবমাল্যর বাড়ির সামনে গাড়ি দাঁড়ায়। বাড়ির বারান্দায় একজন ভদ্রমহিলা ওদের জন্য অপেক্ষা করছেন।
দেবমাল্য ওদের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার সময় ভদ্রমহিলার সাথে ওদের পরিচয় করিয়ে দেয় “আমার মা।”
স্যামন্তক এবং বাকিরা হাত জোড় করে নমশকার জানায়। দেবমাল্যর মা স্যামন্তকদের জিজ্ঞেস করে “স্যামন্তক কে?”
স্যামন্তক বলে “আমি।”
“ও তুমি। যাও ভেতরে।” গলা ধরে আসে ভদ্রমহিলার “শকুনের মতন ছিঁড়ে খেয়েছে মেয়েটাকে তারপরে ফেলে গেছে কোপাইয়ে।” বলতে বলতে চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসে ভদ্রমহিলার।
কথাটা শুনে, রিরি করে জ্বলে ওঠে স্যামন্তক, চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসে, নাকের পাটা ফুলে ওঠে। পর্দা সরিয়ে ঘরে ঢুকে দেখে, একরত্তি মেয়েটা একটা চাদরে ঢাকা শুয়ে আছে বিছানায়।
স্যামন্তক পাশে বসেবন্দনার মুখের দিকে তাকায়, মুখটা ফুলে লাল হয়ে গেছে, কপালের ডান দিকটা ফুলে কালচে হয়ে আচে, চোখের কোণে একটু রক্ত জমে, চুলগুলি এলোমেলো। কপালে আলতো করে হাত বোলায়, গাটা একটু গরম। গালের আঁচড়ের দাগের ওপরে আঙ্গুল বোলায়। একটু খানি ঝুঁকে পরে ওর শরীরের ওপর, কপালে একটা ছোটো চুমু খায় স্যামন্তক, ধরা গলায় বলে “তোমাকে এই অবস্থায় দেখতে হবে আমি ভাবিনি।”
“জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষণ আগে, এখন ঘুমোচ্ছে।” পেছন ফিরে তাকায় স্যামন্তক, দেখে দেবমাল্যর পাশে দাঁড়িয়ে আরেক জন ভদ্রলোক। হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডসেক করে বলেন “আমি দেবমাল্যর দাদা, ডাক্তার। ডোন্ট ওরি, সি ইজ আউট অফ ডেঞ্জার। মাথার পেছনে কিছু একটা ভারী জিনিস দিয়ে মারা হয়, তাতে অজ্ঞান হয়ে যায়। তিনটে স্টিচ করতে হয়েছে, তবে বেশি রক্ত ক্ষরণ হয়নি।”
স্যামন্তক দেবমাল্যর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে “হয়েছিলটা কি? কোথায় পেলেন আপনি একে? আজ সকালে বাড়ি থেকে বলে বের হয় যে নিরুপমের কাছে যাচ্ছে। তো এর মাঝে একি হল?” স্যামন্তক আলতো করে বন্দনার গালে মাথায় হাত বোলাতে থাকে। অঘোরে ঘুমোচ্ছে মেয়েটা, কোন হুঁশ নেই। নিঃশ্বাস ধিমে লয় নিচ্ছে, যেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ওর।
দেবমাল্য মাকে একটু চা করতে বলে, তারপরে ওর দিকে তাকিয়ে বলে “আপনাকে কি যে বলি।” দেবমাল্য পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে। ওর মা, কিছুক্ষণ পরে ওদের চা দিয়ে যায়। অনির্বাণ আর আক্রাম একবার ঘরে ঢুকে দেখে যায়।
অনির্বাণ জিজ্ঞেস করে “কি অবস্থা রে?”
দেবমাল্যর দাদা উত্তর দেন “ভয়ের চিন্তাটা নেই, তবে মানসিক অবস্থা কোন দিকে যাবে সেটা ঘুম ভাঙ্গলে বোঝা যাবে। আপনার বাইরের ঘরে বসুননা, একটু রেস্ট নিয়ে নিন।”
স্যামন্তক কৃতজ্ঞতা ভরা চোখে অনির্বাণ আর আক্রামের দিকে তাকায়, মাথাটা দুপাশে একটু নাড়িয়ে বলে “মেনি থ্যাকন্স, ম্যান।”
আক্রাম বলে “ছাড় ওসব কথা। কখন বের হবি ওকে নিয়ে?”
স্যামন্তক দেবমাল্যর দিকে তাকিয়ে বলে “আমি নিয়ে যেতে চাই ওকে, একটু পরে।”
দেবমাল্যর দাদা বলেন “ঘুমোচ্ছে তো এখন আর অনেক রাত এখন। সকালের দিকে বেরিয়ে পরবেন না হয়।”
স্যামন্তক দেবমাল্যকে জিজ্ঞেস করে “হয়েছিল কি ঘটনাটা, একটু বলুন তো?”
দেবমাল্য শুরু করে “আজ নিরুপমের বাড়িতে বিকেল বেলা একটা গেটটুগেদার ছিল, এমনি আমার এমন কিছু বন্ধু নয় তাসত্তেও আমায় যেতে বলেছিল কেননা, আমাদের হোটেলে ওর পার্টনাররা স্টে করেছে, তাই। যাই হোক, মদ ফদ খেয়ে সবাই আউট হয়ে যায় কিছুক্ষণ পরে, আমার সবাই বেরিয়ে আসি, এই ধরুন দশটা কি সওয়া দশটা নাগাদ।
আমরা বের হওয়া পর্যন্ত, নিরুপমের নতুন গার্লফ্রেন্ড দ্বীপানিতা, তখন এসে পৌঁছয়নি। আমি আগেই বন্দনাকে সাবধান করে দিয়েছিলাম দ্বীপানিতার ব্যাপারে, তবে ঘটনাটা যে এতো তাড়াতাড়ি ঘটে যাবে সেটা বুঝতে পারিনি। আমি নিরুপম আর দ্বীপানিতার ব্যাপারটা বেশি ভালো করে জানতামনা তাই বিশেষ কিছু খোলতাই করে জানাতে পারিনি ওকে। হ্যাঁ যা বলছিলাম, বেরিয়ে দেখি আমার এক বন্ধুর গাড়ি, ওটাতে বাকি সবাই কে চড়িয়ে দিয়ে বন্ধুটাকে বললাম আমার হোটেলে পৌঁছে দিতে। ঐ প্রান্তিকেই পিছনের দিকে একটা নতুন জায়গায় রেসর্ট তৈরি হচ্ছে আমাদের, তো আমি সেখানে যাই একবার দেখতে। এমনিতে কিছু লোক ওখানেই থাকে রাতে, কেননা অনেকটা তৈরি হয়ে গেছে, বেশ কিছু মালপত্রও আছে।“
স্যামন্তক মন দিয়ে শোনে আর একবার করে বন্দনার দিকে তাকায়।
“আধ ঘণ্টা কি এক ঘণ্টা পরে, এই ধরুন রাত তখন সাড়ে এগারোটা বাজে, আমি ঐ রাস্তা দিয়েই ফেরার সময় দেখি দ্বীপানিতা আর নিরুপম ওদের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে। আমি যেহেতু অন্ধকারে ছিলাম তাই ওরা আমাকে দেখতে পায়না। আমি দাঁড়িয়ে ওদেরকে লক্ষ্য করি, দ্বীপানিতা বেশ উত্তেজিত আর নিরুপম ওকে কিছু বোঝাচ্ছে। আমার একটা ফিল হয় যে কিছু একটা ঘটনা ঘটেছে। তার কিছুক্ষণ পরে ওরা দুজনে ঘরের মধ্যে ঢুকে কাপড়ে পেঁচানো কিছু একটা নিয়ে রেল লাইনের দিকে এগোয়। আমার একটু সন্দেহ হয়। ওদের পেছন ফলো করি। কিছু দুর যাবার পর মনে হল একবার সাইটে গিয়ে আর কয়েক জনকে ডেকে নিয়ে আসি তাই দৌড়ে আমাদের সাইটে গিয়ে দুটো লোক নিয়ে ওদের ফলো করতে যাই। কিন্তু তত্তক্ষণে ওরা ঐ জায়গা থেকে চলে গিয়েছে তাই ওদের আর দেখতে পাইনা। আমরা রেল লাইন ধরে এগিয়ে গিয়ে কোপাই ব্রিজে পৌঁছই। বৃষ্টির জন্য চারদিকে জল আর কাদা। আমি একজন কে নিচে নেমে দেখতে বলি সাথে সাথে আমি নিচে নেমে যাই। ঠিক ব্রিজের নিচে জলের ধারে একটা চাদরে ঢাকা কিছু দেখতে পেয়ে ছুটে যাই। চাদর সরিয়ে দেখি, এই যে, বন্দনা। নাকের কাছে আঙ্গুল নিয়ে ফিল করলাম যে নিঃশ্বাস আছে তখন। আমার মাথায় তখন যেন বাজ পড়লো, আমি কি করবো কিছু ভেবে পেলাম না। চোখে মুখে একটু জলের ঝাপটা মারতে অনেক কষ্টে মেয়েটা চোখ খুলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল “পুবালির বাড়িতে ওর ভাই স্যামন্তক আছে, তাকে একটা ফোন করো।” ব্যাস এই বলে আবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে। আমার সাথে যে দুজন ছিল, তাদের একজন কে সাইট থেকে ভ্যান নিয়ে আসতে বলি আর একজনের সাথে মিলে আমি বন্দনাকে ওপরে নিয়ে বাড়ি নিয়ে আসি। বাড়িতে দাদা ছিলেন তাই বাঁচোয়া।“
পুরো ঘটনাটা শুনে স্যামন্তকের ভেতরটা বিষিয়ে যায়, এমন একটা মানুষ হতে পারে যে একটি মেয়েকে হত্যা করতে পারে? পাশে ঘুমিয়ে বন্দনা নিস্তেজ, অসাড় হয়ত জানেনা কোথায় আছে, জানেইনা হয়তো যে ঠিক কি হয়েছিলো ওর সাথে। সুন্দর মুখটিতে কিছু আঁচর, কিছু কাটা। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে থাকে বন্দনার মুখের দিকে।
স্যামন্তক একটু ম্লান হেসে দেবমাল্যকে জিজ্ঞেস করে “আপনার তো দিদির সাথে অনেক দিন কনট্যাক্ট নেই, ফোন নাম্বারটা পেলেন কোথা থেকে?”
দেবমাল্য হেসে বলে “আরে কন্ট্যাক্ট নেই তাই বলে কি ফোন নাম্বার থাকবে না। যাই হোক একটু রেস্ট নিয়ে নিন।”
ঘড়ির দিকে তাকায় স্যামন্তক, সাড়ে পাঁচটা বাজে, এবারে উঠতে হয়। দেবমাল্য ওকে জিজ্ঞেস করে “আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি কি আপনাকে, যদিও খুব পেরসোনাল প্রশ্ন।”
স্যামন্তক বুঝতে পারে যে প্রশ্নটা কি তাই হেসে বলে “আপনি যা ভাবছেন সেটা নয়। পরশু রাতে দুর্গাপুরে এসেছিলো আর দিদি আর ও খুব ভালো বন্ধু তাই। যাই হোক আমাদের এবারে উঠতে হবে, দশটার আগে আমাকে বাড়ি ঢুকতে হবে।”
“তাহলে আর বেশি দেরি করবেন না। দেখি দাদা কে ডেকে দেই যদি কিছু বলার থাকে দাদার তাহলে” এই বলে দেবমাল্য ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
দেবমাল্য ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার পরেই, স্যামন্তক বন্দনার পাশে গিয়ে বসে গালে হাত রাখে আলতো করে। ধিরে ধিরে চোখ খুলে তাকায় বন্দনা, একটু আবছা লাগে ওর মুখটা, তারপরে মাথাটা একটু নাড়ায়, মাথার পেছনের ব্যাথাটা অনুভব করে। ঠোঁট দুটি কেঁপে ওঠে, চোখে জল চলে আসে যখন বুঝতে পারে যে সামনে স্যামন্তক বসে আছে। বুকের মাঝের খালি জায়গাটা ভরে যায়, একটু খানি মাথা উঠাবার চেষ্টা করে বন্দনা। স্যামন্তক বাধা দিয়ে বলে “শুয়ে থাকো, একটু পরে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।“
চোখে জল, কাঁপা গলায় বন্দনা নিচু স্বরে বলে “তুমি এসেছ?”
হেসে বলে স্যামন্তক “না যমরাজ এসেছে তোমাকে নিতে, বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।”
ঠিক সেই সময়ে দেবমাল্য ঘরের মধ্যে ঢোকে পেছন পেছন ওর দাদা ঢোকেন। বন্দনার ঘুম ভেঙে গেছে দেখে দেবমাল্যর দাদার মুখে একটি স্বস্তির হাসি। নাড়ী দেখে জ্বর দেখে স্যামন্তকের দিকে তাকিয়ে বলেন “নিয়ে যেতে পারেন, একটু সাবধানে রাখবেন। আমি কিছু ওষুধের নাম লিখে দিচ্ছি, আর ওর ড্রেসিং টা নিয়মিত করে নিতে হবে।”
স্যামন্তক কি ভাবে ওদেরকে ধন্যবাদ জানাবে বুঝে উঠতে পারছিল না, হ্যান্ডসেক করতে গিয়ে হাত কেঁপে ওঠে স্যামন্তকের। দেবমাল্য ওকে বলে “আপনি যান ওকে নিয়ে এদিক কার টা আমরা দেখে নেবো।”
বন্দনার পরনে কোন কাপড় ছিলোনা তাই দেবমাল্যর মা ওকে একটি শাড়ী পড়িয়ে দিলো। শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে দেখে বাইরে অনির্বাণ আর আক্রাম তৈরি। স্যামন্তককে দেখে জিজ্ঞেস করে “কিরে যাওয়া যাক নাকি?”
স্যামন্তক বন্দনা এক রকম পাঁজাকোলা করে তুলে গাড়িতে ওঠালো। দেবমাল্যর দাদা স্যামন্তক কে বললেন “কিছু অসুবিধা হলে ফোন করবেন এমনিতে সি.টি. সেন্টারে এক জন ভালো ডাক্তার আছেন তাকে বলে দেবো খানে, বিকেলের দিকে একবার এসে দেখে যাবে।”
গাড়ি যখন বোলপুর ছাড়ে তখন বাজে সাড়ে পাঁচটা, ওদিকে আক্রামের তাড়া আছে যে বাড়ি তাড়াতাড়ি পৌঁছতে হবে। বন্দনা স্যামন্তকের কোলে মাথা দিয়ে চুপ করে শুয়ে পরে। স্যামন্তক এক মনে ওর মুখের দিকে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ তার পরে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে।
বন্দনা চোখ বন্দ করে ভাবতে থাকে “কি হল এটা আমার সাথে? আমি এতো ভালবাসতাম নিরুপমকে আর সে কিনা আমাকে এই ভাবে প্রতারণা করলো? এর চেয়ে একবার বলে দিলে ওর কি ক্ষতি ছিল? আমাকে এতো আঘাত? কেন?” চোখের কোণে জলের ধারা বয়ে চলে অবিরাম। সারা শরীরে ব্যাথা তার চেয়ে যেটা বেশি সেটা তার ভাঙা হৃদয়ের। তিন বছর আগের কথা সব মনে পরে যায় ওর, বনেরপুকুরডাঙা প্রথম চুম্বন আর আলিঙ্গন, প্রান্তিকের অলিগলিতে হাত ধরে ঘোরা, আম্রকুঞ্জতে বসে গল্প করা, রতনপল্লীতে বসে সব বন্ধু বান্ধবীদের সাথে আড্ডা মারা আর চা খাওয়া। কত সখ ছিল ওর, দেশে বিদেশে নিরুপমের আঁকা চিত্রের প্রদর্শনী হবে, ওর সাথে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াবে। অনেক স্বপ্ন ছিল ওর মনে, ঠিক করেছিলো যে বিয়ের পরে নাচ ছেড়ে দেবে, নিরুপম ওকে যেরকম ভাবে রাখবে সেই রকম ভাবেই থাকতে চেয়েছিল। কিছুই পেলনা, তার বদলে যেটা দিলো তা মৃত্যুর চেয়ে বড়। এই ভাঙ্গা হৃদয় নিয়ে কি করে বাকি জীবনটা কাটাবে। এই সব ভাবতে ভাবতে চোখের জল থামতে চায় না।
অনেক সকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ছিল, রাস্তায় বিশেষ গাড়ি ঘোড়া ছিলোনা তাই দুর্গাপুর পৌঁছাতে বিশেষ দেরি হয়না। বাড়ি পৌঁছে স্যামন্তক অনির্বাণ কে বলে “ভাই তোরা অনেক করেছিস, বিকেলে আসিস আমি গাড়ির ভাড়াটা দিয়ে দেবো।”
ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে আক্রাম “মানে?”
—“মানে তেল খরচ তো হয়েছে রে”
—“ও সে দেখা যাবে খানে। তুই এখন ওকে সামলা, এখনো তো ঘুমোচ্ছে।”
স্যামন্তক গাড়ির পেছনের সিটে শুয়ে থাকা সাধের রমণীর দিকে একবার তাকায় তারপর ওদের কে বলে “আমি নিয়ে যাচ্ছি ওপরে” তারপরে পকেট থেকে মানিব্যাগটা বের করে ওর হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে বলে “একটু দুধ আর কিছু কিনে দিয়ে যেতে পারিস? আমি ওকে নিয়ে ওপরে যাচ্ছি।”
দরজা খুলে, বন্দনার গায়ে হাত দিয়ে আলতো করে ঠেলা দেয়, বন্দনা চোখ খুলে দেখে স্যামন্তককে। স্যামন্তক ওকে বলে “একটু ওঠ বাড়ি এসে গেছে।” তারপরে বাঁ হাত ওর ঘাড়ের নিচে দিয়ে ওকে উঠিয়ে বসায়, ডান হাত ওর হাঁটুর নিচে দিয়ে গলিয়ে কোলে নিয়ে গাড়ি থেকে বার হয়। বন্দনা নিরুপায় হয়ে ওর দিকে চেয়ে বলে “আমি হাঁটতে পারবো।” স্যামন্তক বলে “হ্যাঁ তা জানি অনেক হেঁটে এসেছ তুমি।” বন্দনা ওর গলা জড়িয়ে ধরে নিজেকে সামলানোর জন্য।
সিঁড়ি দিয়ে চড়ার সময় বন্দনা ওর মুখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে, পলক যেন পড়তে চায়না। ভাবতে থাকে মনে মনে, কে এই ছেলেটা আর কেনই বা ওর দরকার ছিল আমার জন্যে এতো করতে? কেন আমি জ্ঞান ফিরে ওর নাম নিলাম? স্যামুন্তকের বুকের ধুকপুকানি ওর ভেতরের ব্যাথাটা আর বেশি করে চাড়া দিয়ে ওঠে। বন্দনা ওর ডান হাতটা একটু জোর করে জড়িয়ে দেয় স্যামন্তকের ঘাড়ে। স্যামন্তক আলতো হেসে বলে কানে কানে “ওরকম ভাবে দেখছ কেন? দিদি এখনো কিছু জানে না, একটু পরে ফোন করবে আমাকে, বুঝলে।”
কেঁপে ওঠে বন্দনা শরীরে কোন শক্তি নেই, গলার আওয়াজ তাই ক্ষীণ “আমাকে মরতে দিলে না তোমরা।” চোখের কোণে এক ফোঁটা জল।
চলবে.....
Posts: 45
Threads: 0
Likes Received: 48 in 33 posts
Likes Given: 12
Joined: Jun 2019
Reputation:
2
10-03-2020, 09:58 AM
(This post was last modified: 10-03-2020, 10:04 AM by Jholokbd1999. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দাদা,,, কিছু মনে করবেন না। গল্প অসাধারণ। কিন্তু যখন পড়ার মধ্যে থেমে যেতে হয় তখন খুব খারাপ লাগে। exbi/xossipy এর ভালো গল্পগুলোর মধ্যে আপনার গুলো অন্যতম। তাই আপডেট টা বড় করা যায়না??
এই গল্পের শেষের অপেক্ষায় রইলাম এবং আবার ও নতুন কিছু নিয়ে আসবেন সেই আশায় ও থাকবো।
Posts: 66
Threads: 0
Likes Received: 26 in 24 posts
Likes Given: 147
Joined: Oct 2019
Reputation:
0
খুব সুন্দরভাবে এগোচ্ছে.... চালিয়ে যান
|