Thread Rating:
  • 20 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ভাবি যখন বউ (সম্পূর্ণ)
#41
পর্ব-০৯



কলিং বেল দেওয়ার একটু পর দরজা খুলে দিলো, অবন্তী আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।

আমি তো পুরা টাসকি খেয়ে গেলাম। কিছু বলার ভাষাই খুঁজে পাচ্ছি না।

একটু পর আম্মু রুম থেকে বের হয়ে দেখে অবন্তী আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে, আম্মু হাসতে হাসতে আমার রুমে চলে যায়। আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম।



তারপর অবন্তী আমাকে ছাড়িয়ে বলতে থাকে,,,,

অবন্তীঃ জুয়েল আমি পাশ করেছি।

আমিঃ Congratulation. এই নিন,, মিষ্টি গুলো নিয়ে যান।

অবন্তীঃ ওই আমি পাশ করছি সেজন্য আমি এতো খুশি হয়নি। খুশি হইছি এই জন্য, তুমিও ভালো পাশ করছো।

আমিঃ কিহ!

অবন্তীঃ হুম তুমিও করছো, শুধু পয়েন্ট টা একটু কম,এটা কোনো ব্যাপার না।

আমি আর কোনো কথা না বলে অবন্তীকে কোলে নিয়ে নিলাম, আসলে খুশিতে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারিনি।

ওরে কোলের কারণে ও আমার দিকে অবাক ভাবে তাকিয়ে রইলো।

আমিঃ সরি, আসলে এমন একটা খুশির খবর শুনে নিজেকেকে স্থির রাখতে পারিনি।

অবন্তীঃ ইটস ওকে। যাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।

আমি রুমে চলে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম এবার লিমাদের অফিসে যাবো। দেখি চাকরিটা হয় কিনা।

ফ্রেশ হয়ে আব্বু আম্মুর কাছে আসলাম, আব্বু আম্মু দুজনেই অনেক খুশি। বসে বসে অনেকক্ষণ গল্প করলাম। তারপর খাওয়াদাওয়া করে রুমে চলে গেলাম। অবন্তী রুমে আসার আগেই শুয়ে পড়লাম।

একটু পর সে আসলো, আমার পাশে বসলো, কিছুক্ষণ মাথায় হাত বুলিয়ে খাটে চলে গেলো। অবন্তী ঘুমিয়ে যাওয়ার পর আমি উঠলাম।

উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাইয়ার কাছে যাবো। আজকে এমন একটা দিনে ভাইয়া থাকলে হয়তো তিনি আমাদের চাইতেও বেশি খুশি হতেন।

আমি উঠে অজু করে ভাইয়ার কবরের দিকে রওনা দিলাম। কিছুক্ষণ পর আমি কবরের কাছে গেলাম। আমি জানি ভাইয়া আমাকে দেখে অনেক খুশি হবে। আমি কবরের মাথার পাশে গিয়ে বসলাম।

“” ভাইয়া কেমন আছিস? এতো রাতে তোরে ডিস্টার্ব করার জন্য সরি। জানি তুই অনেক বিরক্ত হবি কিন্তু কি করবো বল কথা গুলো তোকে না বললে যে আমার ঘুম আসবে না।

আজকে আমাদের রেজাল্ট দিয়েছে। যদিও রেজাল্ট নিয়ে আমার তেমন একটা মাথাব্যথা নেই, আমি চিন্তায় ছিলাম অবন্তী কে নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ সে পাশ করেছে। আমিও করেছি কিন্তু সেটা হয়তো তোর মনের মতো হবে না।

ভাইয়া তোর স্বপ্ন টা পূরন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তোর আর অবন্তীর ইচ্ছা ছিলো অবন্তী যেন গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করে।

আজকে সেই দিন যেটার জন্য তুই স্বপ্ন দেখতি, আজকে সবই ঠিক আছে শুধু তুই নেই আমাদের পাশে। তোর স্বপ্ন গুলো আমি নিজের জীবন দিয়ে হলেও পূরণ করবো।

জানিস ভাই আমারও অনেক।ইচ্ছা ছিলো খুব ভালো একটা রেজাল্ট করার জন্য কিন্তু কি করবো বল সেটা হয়তো আমার কপালে নাই। তারপরও যে পাশ করেছি সেটার জন্য আলহামদুলিল্লাহ।

ভাইয়া তুই যদি থাকতি হয়তো আমিও ভালো কিছু করতাম। তুই চলে যাওয়ার পর থেকে আমার পুরো পৃথিবীটাই পালটে গেছে।

এখন বুঝতে পারছি তুই কষ্ট করে আমাদের স্বপ্ন গুলো পূরণ করেছিস, এতো কষ্ট করার পরও নিজেকে সব সময় হাসিখুশি রেখেছিস।

ভাই তোর জন্যতো আমি কিছুই করতে পারিনি,সারা জীবন তুই আমাদের জন্য করে গেছিস।

জানিস ভাইয়া অবন্তী এখনো আমাকে মেনে নেয়নি, হয়তো নিবেও না। কিন্তু তাতে আমার কোনো আফসোস নেই। সে এখনো তোকে অনেক ভালোবাসে।

অবন্তীর জন্য নাহয় আমি আমার জীবনটা স্যাকরিপাইস করে দিলাম। সে যেমন থাকতে চায় তেমনই থাকুক।

ভাই আমার টাকা পয়সা কিছুর দরকার নেই শুধু তোকে দরকার। তুই আরেকবার আমাদের মাঝে ফিরে আয়, কখনো তোকে হারাতে দিবো না। প্লিজ ভাই আয় আরেকবার। “””

আর কোনো কথাই আসছে না মুখদিয়ে। বসে বসে ভাইয়ার স্মৃতি গুলো মনে করতে লাগলাম, তারপর উঠে কবর জিয়ারত করে বাসায় চলে আসলাম।

এসে দেখি অবন্তী মন খারাপ করে বসে আছে।

আমিঃ কি ব্যাপার আপনি ঘুমান নি?

অবন্তীঃ কোথায় গিয়েছিলে???

আমিঃ এই তো একটু বাইরে, ঘুম আসছেনা তাই ঘুরে এলাম।

অবন্তীঃ মিথ্যা বলো কেন? সত্যি করে বলো।

আমিঃ ভাইয়ার কবরের কাছে।

অবন্তীঃ এতো রাতে?

আমিঃ জিয়ারত করতে গেছিলাম।

অবন্তীঃ কি কি বলেছো তোমার ভাইয়াকে?

আমিঃ কিছু না, জাস্ট জিয়ারত করে চলে আসছি।

অবন্তীঃ আমি সব শুনেছি।

আমিঃ আপনি কিভাবে শুনেছেন?

অবন্তীঃ তোমার পিছনে পিছনে গিয়েছিলাম।

আমিঃ রাত অনেক হইছে ঘুমিয়ে পড়ুন। (কথা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য)

অবন্তী কিছু একটা বলতে চেয়েছিলো কিন্তু আমি গিয়ে শুয়ে পরলাম।

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কাজে যাবো এমন সময় অবন্তী সামনে আসলো….

আমিঃ কিছু বলবেন?

অবন্তীঃ হুম একটা কথা ছিলো।

আমিঃ হুম বলেন।

অবন্তীঃ আমি একটা আমাদের বাসায় যাবো, যদি দিয়ে আসতে ভালো হতো।

আমিঃ কিন্তু আমি তো কাজে যাচ্ছি, আর হঠ্যাৎ করে ওই বাসায় কেন?

অবন্তীঃ রেজাল্ট দিয়েছে আম্মু আব্বু শুনে অনেক খুশি হয়েছে, আর এমনিতেই অনেক দিন যাইনি। সকালে আম্মু কল দিয়ে তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছে।

আমিঃ আম্মু আব্বুকে বলেছেনে?

অবন্তীঃ হুম,,,

আমিঃ কি বলেছে?

অবন্তীঃ যাওয়ার জন্য বলেছে। যদি তুমিও যাও তাহলে ভালো হতো।

আমিঃ না আমি যেতে পারবো না।

অবন্তীঃ কেন, গেলে সমস্যা কোথায়?

আমিঃ কাজ আছে। কালকে এমনিতে অগ্রিম টাকা নিয়ে নিয়েছি। এখন কাজ না করলে বের করে দিবে। পরে দেখা যাবে চাকরিটাও যাবে।

অবন্তীঃ তাহলে আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে তারপর যেও, প্লিজ না করো না। একা একা ভয় করে।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে, রেড়ি হয়ে নেন।

অবন্তীঃ ওয়েট, যাবো আর আসবো।

আমি বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম, অবন্তী রেড়ি হয়ে আব্বু আম্মুকে সালাম করে বেরিয়ে গেলো।

একটা রিক্সা নিয়ে ওদের বাসার দিকে রওনা দিলাম। কালকে যেই মিষ্টি গুলো আমি কিনে নিয়ে আনলাম সেগুলো আম্মু ওর সাথে দিয়ে দিয়েছে। যারে আর ওখানে যাওয়ার সময় কিছু কেনা না লাগে।

কিছুক্ষণ পর অবন্তীদের বাসায় চলে আসলাম। ওর ব্যাগপত্র নামিয়ে দিয়ে চলে আসতে যাবো এমন সময় অবন্তী ডাক দিলো…..

অবন্তীঃ জুয়েল!

আমিঃ হুম বলেন,,,

অবন্তীঃ কিছু খেয়ে যাও।

আমিঃ এখন না, এমনিতেই দেরি হয়ে যাচ্ছে। আসি, আল্লাহ হাফেজ।

অবন্তীঃ জুয়েল!

আমিঃ আবার কি?

অবন্তীঃ রাতে আসতে পারবে?

আমিঃ রাতে এসে কি করবো?

অবন্তীঃ আম্মু তোমাকে আসতে বলেছে। রাতে এসে দেখা করে নিও, রাত থেকে পরের দিন এখান থেকে কাজে যেও।

আমিঃ চেষ্টা করবো।

এ কথা বলে আবার রওনা দিলাম। মনে মনে ভাবলাম আজকে হঠ্যাৎ করে অবন্তী এতো ভালোবাসা দেখাচ্ছে! কারন কি? মনে হয় কাল রাতে সব কিছু শুনে ফেলেছে।

ধুর এতো কিছু ভেবে লাভ নেই, ও আমাকে মেনে নিবে না। ভালো পাশ করার কারনে হয়তো কৃতজ্ঞতা দেখাচ্ছে।

অবন্তীকে ওদের বাসায় রেখে আমি কাজে চলে গেলাম। সারা দিন কাজ করলাম এর মাঝে অবন্তী বেশ কয়েকবার কল দিয়েছে। খেয়েছি কিনা, ভালো আছি কিনা, ওদের বাসায় কখন যাবো আরো অনেক কিছু বলেছে।

রাতে আমি আমাদের বাসায় চলে গেলাম।

আম্মুঃ কিরে তুই এখানে কেন?

আমিঃ মানে কি!

আম্মুঃ অবন্তী তোকে কিছু বলেনি?

আমিঃ হুম বলেছে, ওদের বাসায় যাওয়ার জন্য বলেছে।

আম্মুঃ তো যাস নি কেন?

আমিঃ আরে আজব তো, ও বললেই কি যেতে হবে?

আম্মুঃ হুম অবশ্যই। অবন্তী অনেক বার কল দিয়েছিলো তুই আসলে যেন ওদের বাসায় যেতে বলি।

আমিঃ আমি যাবো না এখন। অন্যদিন যাবো,,,,

বাবাঃ যাবি না মানে? এক্ষুনি যা,,,

আমিঃ কিন্তু বাবা!

বাবাঃ কোনো কিন্তু নয়, রেড়ি হয়ে অবন্তীর কাছে যা।

কি আর করা রেড়ি হয়ে ওদের বাসার দিকে রওনা দিলাম। প্রায় ৩০ মিনিট পর ওদের বাসার সামনে গেলাম।

কলিং বেল দেওয়ার সাথে সাথেই দরজা খুলে দিলো। কি ব্যাপার এটা কি হলো? মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দরজা খুলে গেলো। মনে হয় দরজার কাছেই কেউ ছিলো।

তাকিয়ে দেখি অবন্তী, আমাকে দেখে একটা হাসি দিয়ে বললো…

অবন্তীঃ এতো দেরি হলো যে?

আমিঃ রাস্তায় জ্যাম ছিলো।

অবন্তীঃ যাও সোফা রুমে যাও। আম্মু আব্বু ওখানে আছে।

আমি ওই রুমে গেলাম, উনাদের সালাম করলাম, অনেকক্ষণ বসে বসে গল্প করলাম। তারপর একসাথে খেয়ে আমি অবন্তীর রুমে চলে গেলাম।

রুমে গিয়ে খাটে শুয়ে রইলাম এমন সময় অবন্তী আসলো। আমি যেই উঠে যাবো, তখনই…..

অবন্তীঃ এই কই যাও?

আমিঃ আপনি ঘুমাবেন না?

অবন্তীঃ হুম ঘুমাবো তো, কিন্তু তুমি খাট থেকে নামো কেন?

আমিঃ না নামলে আপনি কোথায় ঘুমাবেন?

অবন্তীঃ সেটা তোমার জানতে হবে না। তুমি ঘুমাও,,

আমিঃ কিন্তু…

অবন্তীঃ ওই ঘুমাতে বলছিনা! ঘুমাও,,,

আমি কিছু না বলে ঘুমিয়ে গেলাম, অবন্তী রুম থেকে চলে গেলো। মনে হয় অন্য রুমে থাকবে, যাক ভালোই হইছে।

আমি অন্তত খাটে ঘুমাতে পারবো, এই ফ্লোরে থাকতে থাকতে পিটে ব্যথা হয়ে গেছে।

আর শ্বশুর বাড়ি এসে যদি নিচে থাকি আর সেটা যদি কেউ দেখে তাহলে আমার মান ইজ্জত সব শেষ।

শুয়ে শুয়ে ভাবছি অবন্তী কি আসলেই আমাকে মেনে নিবে না? আমারওতো ইচ্ছা করে বউয়ের সাথে থাকতে, ওর সাথে ভালো একটা সম্পর্ক রাখতে। মনের গহিনে যত কথা লুকিয়ে আছে সব গুলো শেয়ার করতে।

কিন্তু এমন কপাল নিয়ে দুনিয়াতে আসছি যেই কপালে সুখ নামের কোনো কিছু লেখা নেই।

ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম,,,,

রাতের বেলা মনে হলো কিছু একটা আমার মুখের উপর চাপ দিয়ে আছে, আস্তে আস্তে চোখ খুললাম তাকিয়ে দেখি অবন্তী আমার পাশেই শুয়ে আছে আর একটা হাত আমার মুখের উপরে অন্য একটা হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।

আমি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম, স্বপ্ন দেখতেছি নাতো? নাহ স্বপ্ন না আসলেই সত্যি।

কিছুক্ষণ অবন্তীর মায়ামাখা মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম, দেখে মনে হচ্ছে ছোট একটা বাচ্ছা আমার বুকে শুয়ে আছে।

তারপর আমিও ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ওর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো,,,,

অবন্তীঃ কি ব্যাপার মহারাজ, আর কতো ঘুমাবেন। কাজে যাবেন না?

আমিঃ ওহ সরি, আপনি আমাকে আরো একটু আগে ডেকে দিতেন।

অবন্তীঃ সমস্যা নেই এখনো সময় বেশি হয়নি। আমি নাস্তা রেড়ি করতেছি তুমি ফ্রেশ হয়ে হয়ে ডাইনিং রুমে আসো।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যান, আমি আসছি।

অবন্তী চলে গেলো, আমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেড়ি হয়ে ডাইনিং রুমে গেলাম। এতো গুলো নাস্তা দেখে একটু টাসকি খেলাম। আসলে অনেক দিন হইছে এতো নাস্তা একসাথে খেয়েছি যে। প্রতিদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই বাইরে গিয়ে কলা পাউরুটি খেয়ে নিতাম।

যাইহোক সবাই মিলে নাস্তা করে নিলাম, নাস্তা করে ওর আব্বু আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে আমি ওদের বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য কাজে যাবো

গেইটের বাইরে আসতেই অবন্তী ডাকলো….

অবন্তীঃ জুয়েল!

আমিঃ কিছু বলবেন?

অবন্তীঃ কাজে না গেলে হয় না?

আমিঃ আজকে বাজার করতে হবে, কাজে না গেলে কি দিয়ে বাজার করবো?

অবন্তীঃ এখানে আবার আসবে??

আমিঃ জানি না, তবে মনে হয়না।

অবন্তীঃ প্লিজ আসিও।

আমিঃ চেষ্ঠা করবো।

তারপর বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।

সোজা কাজে চলে গেলাম, কাজ করতেছি এমন সময় লিমার কথা মনে পড়লো, সে তো বলেছে রেজাল্টের পর ওর বাবার অফিসে যেতে। রেজাল্ট তো দিলো, দেখি কিছু একটা হয় কিনা। সেখানে চাকরিটা হয়ে গেলে অন্তত আর ভ্যান গাড়ি নিয়ে হেটে হেটে মাল বিক্রি করা লাগবে না।

লিমাকে কল দিলাম। কয়েকবার রিং পড়লো কিন্তু ধরলো না। আবার দিলাম, এবার ধরলো….

আমিঃ হ্যালো লিমা কেমন আছিস?

লিমাঃ জুয়েল নাকিরে?

আমিঃ হুম, ভুলে গেলি নাকি?

লিমাঃ আরে হারামি তোরে কেন ভুলবো, বল কি অবস্থা?

আমিঃ এইতো মোটামুটি। তোর কি অবস্থা? রেজাল্ট কি?

লিমাঃ বলিস না ভাই যেটা আশা করেছিলাম সেটা হয়নি। তোর কি?

আমিঃ কোনোমতে পাশ করছি। আচ্ছা একটা কথা ছিলো!

লিমাঃ হুম বল।

আমিঃ তুই যে বলেছিলি তোদের অফিসে লোক লাগবে, সেই ব্যাপারে তুই কি তোর বাবার সাথে কথা বলেছিস?

লিমাঃ কথা বলা লাগবে না, তুই তোর সব কাগজপত্র নিয়ে চলে আসিস, আমি থাকবো। ঠিকানা তোরে মেসেজ করে দিবো।

আমিঃ থেংক্স দোস্ত।

লিমাঃ থেংক্স দিয়ে কাজ হবে না। ট্রিট দিবি,,

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিবো। কাল কয়টায় আসবো?

লিমাঃ ১০ টায় আসিস।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

কলটা কেটে দিলাম। মনের মধ্যে একটু শান্তি আসলো।

বিকাল পর্যন্ত কাজ করে, বাজার করে বাসায় গেলাম। অবন্তী কয়েকবার কল দিয়েছিলো ওদের বাসায় যাওয়ার জন্য, আমি না করে দিছি।

খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম, সকালে ঘুম থেকে দেরিতে উঠলাম কারন কাজে যাবো না। ৯ টার সময় রেড়ি হয়ে আব্বু আম্মুকে সালাম করে নিলাম।

আম্মুঃ কিরে তোর আবার কি হইছে?

আমিঃ কেন সালাম করতে পারি না?

বাবাঃ আরে পারবিনা কেন, কিন্তু হঠ্যাৎ করে করতেছিস তো তাই জিজ্ঞেস করলো।

আম্মুঃ কিছু কি হয়েছে?

আমিঃ সেটা বিকালবেলা বলবো।

বাবাঃ এখন বল।

আমিঃ সারপ্রাইজ,,,

এ কথা বলে বাসা থেকে রওনা দিলাম। লিমার দেওয়া ঠিকানা মতো চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি লিমা বসে আছে।

লিমাঃ কিরে আসছিস?

আমিঃ হুম।

লিমাঃ আয় বাবার সাথে তোর পরিচয় করিয়ে দিই। আর বাবাকে তোর ব্যাপারে সব বলেছি।

আমিঃ থেংক্স দোস্ত।

লিমাঃ যা ভিতরে যা, সব কিছু দিয়ে আয়।

আমি ভিতরে গেলাম, সবার সাথে পরিচিত হয়ে কাগজপত্র সব জমা দিলাম। এরপর বাইরে এসে লিমার সাথে বসলাম।

একটুপর ম্যানেজার এসে আমাকে আর লিমাকে ডেকে নিয়ে যায়।

ভিতরে গেলাম,,, লিমার বাবা বললো….

আংকেলঃ দেখো বাবা তোমার SSC & HSC এর রেজাল্ট ভালো ছিলো কিন্তু অনার্সের রেজাল্ট খুব একটা ভালো না। আমাদের রুল অনুযায়ী চাকরিটা তুমি আসলে পাচ্ছো না।
আমিঃ…….(চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম)

আংকেলঃ কিন্তু আমার মেয়ে এতো করে বলছে যে চাকরিটা না দিয়ে পারছিনা। তুই চাইলে কালকে থেকে জয়েন করতে পারো।

আমিঃ ধন্যবাদ স্যার।

খুশিতে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেলো। আমি আর লিমা ওর বাবার রুম থেকে বের হলাম।

আমিঃ লিমা কি বলে তোকে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না।

লিমাঃ হুম, তোর বউ কেমন আছে?

আমিঃ আছে ভালোই।

লিমাঃ এখন কি ঠিক হইছে?

আমিঃ আগে থেকে একটু ঠিক হইছে। বাকিটা আগের মতোই।

লিমাঃ টেনশন করিস না, সব ঠিক হয়ে যাবে।

আমিঃ হুম। চল এখন,,,,

লিমাঃ কোথায়?

আমিঃ ট্রিট নিবি না?

লিমাঃ আজকে না, অন্যদিন।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে, আজকে যাই। বসের সাথে কিছু হিসাব আছে ওগুলো শেষ করি আসি।

লিমাঃ হুম যা, কালকে থেকে চলি আসিস।

আমিঃ ওকে আল্লাহ হাফেজ,,,

তারপর লিমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওদের অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসলাম,,,,

আয়মান কল দিলো, ওর সাথে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছি এমন সময় কিছু একটা সজোরে এসে আমাকে ধাক্কা দিলো। ধাক্কা খেয়ে অনেক দূরে গিয়ে পড়ি। তারপর আর কিছুই মনে নেই।

যখন জ্ঞান আসলো নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করলাম, তাকিয়ে দেখি অবন্তী আমার পাশে বসে আছে, আমি ওর দিকে তাকালাম, আমার তাকানো দেখেই….

চলবে…..
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
[+] 4 users Like Biddut Roy's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#42
Biddut bhai , oshadharon likhchhen .......chaliye jaan....thanks
[+] 2 users Like palu_1's post
Like Reply
#43
great going.....
[+] 1 user Likes madhorse's post
Like Reply
#44
We need more, progress nice but slow
[+] 1 user Likes kabir5khan's post
Like Reply
#45
yourock অনেক দিন পর একটা মৌলিক রোমান্টিক লেখা  পড়ছি। লেখক কে অনেক শুভকাম। ভাই, এগিয়ে যান। It’s a real great job!
[+] 1 user Likes Birohi Mon's post
Like Reply
#46
very good story, but where da fuck is "fucking"?!! its just tragedy..
[+] 2 users Like Abirkkz's post
Like Reply
#47
ata compleat holo ki kore je compleate tage pore geche??????
[+] 1 user Likes Nil199's post
Like Reply
#48
fantabulus..........waiting for next
[+] 1 user Likes nightangle's post
Like Reply
#49
পর্ব-১০



আমার তাকানো দেখে অবন্তী আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে শুরু করলো।

কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে বললো…

অবন্তীঃ এখন কেমন লাগছে?



আমিঃ ভালো।

অবন্তীঃ টেনশন এর দরকার নাই, খুব বেশি কিছু হয়নি, ডাক্তার বলেছে ২-১ দিনের মধ্যেই বাসায় চলে যেতে পারবে।

আমিঃ হুম।

অবন্তীঃ আমি তোমার আব্বু আম্মু কে কল দিয়ে আসতে বলেছি।

বুঝলাম না অবন্তী হঠ্যাৎ করে আমার আব্বু আম্মু বলছে কেন? তারওতো আব্বু আম্মু। কিছু না বলে চুপ করে রইলাম।

অবন্তীঃ উনারা আসছে, তুই শুয়ে থাকো।

আমিঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

অবন্তীঃ আমার একটু কাজ আছে।

আমার এই অবস্থায় অবন্তী আমার পাশে থাকবে সেটা না করে বলতেছে তার নাকি কাজ আছে।

আমিঃ বাবা মা আসা পর্যন্ত থাকুন।

অবন্তীঃ না দেরি হয়ে যাবে, অন্য কোনো দিন দেখে যাবো।

অবন্তী উঠে চলে গেলো, আমি শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম হঠ্যাৎ করে অবন্তীর কি এমন হলো যে এতো কাজ আমাকেও জানাচ্ছে না।

আম্মু আব্বু আসলো, এসে আমাকে ধরে কান্না করতে লাগলো। আমু শান্তনা দিলাম যে আমি ঠিক আছি। শুধু মাথায় একটু আঘাত লাগছে।

আম্মুঃ অবন্তী কই?

আমিঃ এই তো একটু আগে গেছে। ওর নাকি খুব একটা জরুরী কাজ আছে!

বাবাঃ কি এমন জরুরী কাজ যে তোর পাশে থাকতে পারছেনা।

আমিঃ বাদ দাও, আবার চলে আসবে।

আরো কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম, সেদিন হাসপাতালে থেকে গেলাম। আব্বু আম্মুও থেকে গেলো।

পরেরদিন হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে গেলাম। কিন্তু এই ২ দিনে অবন্তী একবারও আসেন এবং একটা কলও দেয়নি।

আমিও আর নিজে থেকে দিই নি।

এক সপ্তাহ পর মোটামুটি সুস্থ, তাই চিন্তা করলাম নতুন অফিসে জয়েন করে ফেলি, বসে থাকা ঠিক হবে না।

তারি রেড়ি হয়ে সকালবেলা বের হচ্ছি আম্মু সামনে আসলো….

আম্মুঃ কোথাও যাচ্ছিস?

আমিঃ হুম, নতুন চাকরী পেয়েছি, বেতনও আগে থেকে ভালো। কষ্টও কম তাই চিন্তা করলাম আজ থেকে শুরু করে দিই।

আম্মুঃ সে কিরে, তুই তো আমাদের একবারও বলিস নি। কখন ফেলি???

আমিঃ যেদিন এক্সিডেন্ট করেছিলাম সেদিন।

আম্মু বাবা কে ডেকে বললো, বাবাও অনেক খুশি, দুজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হবো এমন সময় আবার দাঁড়িয়ে গেলাম….

বাবাঃ কিছু বলবি?

আমিঃ অবন্তীকে কেউ কিছু বলবে না, বলার দরকার নেই।

আম্মুঃ কেন রে এমন একটা খুশির খবর মেয়েটাকে না দিয়ে পারি।

আমিঃ না দেওয়ার দরকার নেই। সময় হলে জানবে, এখন নিজে থেকে কেউ কিছু বলবে না।

বাবাঃ আচ্ছা ঠিক আছে বলবো না।

আমি আর কিছু না বলে রওনা দিলাম। ৩০ মিনিট পর অফিসে গেলাম। ম্যানেজারকে সালাম দিলাম। উনি সব কিছু ঠিকঠাক করে দিলো।

আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আমার ডেস্ক দেখিয়ে দিলো। এবং কাজ বুঝিয়ে দিলো।

নতুন অফিস নতুন কাজ ভালোই লাগছে, কিন্তু বার বার অবন্তীর কথা মনে পড়তে লাগলো। আজকে এতো দিন অবন্তী একবারও একটা কল দেয়নি কারনি কি?

অবন্তী কি নতুন কারো সাথে!! না এটা হতে পারেনা।

বসে বসে ওর কথা ভাবতেছি এমন লিমা এসে একটা টোকা দিলো,,,,

লিমাঃ কি ব্যাপার স্যার, ম্যাম এর কথা খুব মনে পড়ছে বুঝি?

আমিঃ আরে না, তুই কখন আসলি?

লিমাঃ আসছি তো অনেক আগে, এসে দেখলাম তুই বসে বসে কি নিয়ে চিন্তা করতেছি।

আমিঃ না তেমন কিছু না।

লিমাঃ নতুন অফিস কেমন লাগছে?

আমিঃ ভালোই।

লিমাঃ কোনো প্রবলেম হলে ম্যানেজারকে বলিস।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

লিমাঃ তুই থাক আমি বাবার সাথে দেখা করে আসি।

আমিঃ ওকে যা।

তারপর আবার কাজ করতে লাগলাম। কিন্তু বার বার অবন্তীর কথাই মাথায় ঘুরতে লাগলো।

বিকালবেলা অফিস শেষ করে আয়মানকে কল দিয়ে আসতে বললাম…

আয়মান আসলো, দুজনে একটা রেস্টুরেন্ট এ গেলাম, কিছু খাওয়ার অর্ডার দিলাম।

আয়মানঃ কিরে তুই তো পুরাই চেইঞ্জ, চাকরি পাইছিস?

আমিঃ হুম।

আয়মানঃ শালা একবারও বললি না।

আমিঃ তোর জন্য সারপ্রাইজ ছিলো। এখন তো বলে দিলাম।

আয়মানঃ হুম, তা আজকে কয়দিন?

আমিঃ আজকেই জয়েন করলাম। লিমাদের অফিসে,,,

আয়মানঃ কোন লিমা?

আমিঃ আরে আমাদের কলেজ ফ্রেন্ড লিমা।

আয়মানঃ ও আচ্ছা ভালো। আমার জন্যও একটা দেখ।

আমিঃ তুই চাকরি করলে তোর বাবার টাকা কে খাবে???

আয়মানঃ আরে না আগের মতো টাকা দেয়না। আব্বা কি পরিমাণ কিপটে তুই সেটা ভালো করেই জানিস।

আমিঃ আচ্ছা দেখবো।

আয়মানঃ তোর ভাবি বউ কেমন আছে?

আমিঃ ভাবি বউ মানে?

আয়মানঃ আগে ছিলো ভাবি এখন হইছে বউ, দুইটা মিলে ভাবি বউ।

আমিঃ তুই কোনো দিন ঠিক হবি না।

আয়মানঃ তো কি অবস্থা উনার, এবার তো অনেক খুশিতে থাকবে তাই না?

আমিঃ ওরে কিছু জানাই নি।

আয়মানঃ কেন?

আমিঃ…….(সব কিছু বললাম)

আয়মানঃ জুয়েল, দোস্ত! তোরে আমি আগে যেই কথাটা বলছি এখনও সেম কথাই বলতেছি। ওই মেয়েটার মধ্যে কোনো ঘাবলা আছে।

আমিঃ যেমন…

আয়মানঃ প্রথমত তোর ভাই মারা যাওয়ার পর অবন্তী যদি তোদের বাসা থেকে চলে যেতো খুব ভালো বিয়ে করতে পারতো না। ওর ভাগ্য ভালো যে তুই ওরে আবার বিয়ে করেছিস।

দ্বিতীয়ত তোর বাবা মা অবন্তীকে যে পরিমাণ ভালোবাসে, আদর করে আমার মনে হয়না পৃথিবীর অন্য কোথাও এমন আদর পাবে।

সব কিছু থাকা স্বত্বেও অবন্তী তোর সাথে একই খাটে থাকে না, একসাথে মিশে না। এই থেকেই তো বুঝা যায় ওর মাঝে কোনো ঘাবলা আছে।

আমিঃ কিন্তু আমি তো ওরে কোনো অভাব দেখাইনি। ওর সব গুলো স্বপ্নই পূরণ করেছি।

আয়মানঃ আমার মনে হয় ওর কোনো পুরোনো বয়ফ্রেন্ড আছে।

আমিঃ আরে না, এটা হয়না।

আয়মানঃ এটাই হবে, গরিবের কথা বাসি হলেও মিষ্টি হয়।

আমিঃ কি করবো বল, আম্মু আব্বুর দিকে তাকিয়ে ওরে কিছু বলতেও পারছি না।

আয়মানঃ ও এখন কোথায়?

আমিঃ ওর বাবার বাসায়। আমার এক্সিডেন্ট এর আগে গেছে এখনো আসেনি।

আয়মানঃ একবারও আসেনি?

আমিঃ না, কল করে জিজ্ঞেসও করেনি আমি বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি।

আয়মানঃ তাইলে সিউর থাক ওর অন্য কোথাও রিলেশন চলতেছে।

আমিঃ দোস্ত ওরে ফলো করতে পারবি?

আয়মানঃ ওকে করলাম, সমস্যা কোথায়। কিন্তু এটা সিউর যে অবন্তী তোর কাছে থাকবে না। আগে হোক আর পরে হোক ওরে ডিভোর্স দিতে হবেই, তুই না দিলেও সে তোকে দিবে।

আমিঃ আচ্ছা তুই শুধু ফলো কর।

আয়মানঃ ওকে।

আরো কিছু কথা বলে বাসায় চলে আসলাম।

এসে ফ্রেশ হলাম। আম্মু রুমে আসলো….

আমিঃ কিছু বলবে?

আম্মুঃ হুম।

আমিঃ বলো। আব্বু কোথায়???

আম্মুঃ বাইরে গেছে।

আমিঃ ও কি বলবা বলো।

আম্মুঃ মেয়েটা অনেকদিন বাসায় নেই। বাসাটা কেমন খালি খালি লাগছে, যা না বাপ ওরে নিয়ে আয়।

আমিঃ কাকে?

আম্মুঃ অবন্তীকে। ওরে অনেক মিস করছি, তোর আব্বু বলেছিলো বিকালবেলা যাবে কিন্তু আমি দিই নি। আমি বলেছি তুই গিয়ে নিয়ে আসবি।

আমিঃ ও নিজে থেকে আসবে,আমি নিয়ে আসতে পারবো না।

আম্মুঃ এটা কেমন কথা, একা একটা মেয়ে কি করে আসবে।

আমিঃ আরে আজব এতো রাতে ওরে কেমনে নিয়ে আসবো। সকাল হোক আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিবো, ও চলে আসবে।

আম্মুঃ না তুই এখন যা, ওরে নিয়ে আয়।

আমিঃ মানে কি এখন নিয়ে আসবো মানে? এই রাতের বেলা,,,,

আম্মুঃ তোরে কি বলছি আজকে রাতেই নিয়ে আসতে হবে, আমি বলছি তুই এখন যাবি রাতটা ওখানে থাকবি কালকে সকালে ওরে নিয়ে আসিস।

আমিঃ পারবো না।

আম্মুঃ ঠিক আছে আমিই যাচ্ছি।

আমিঃ পাগল হইছো! এতো রাতে ওদের বাসায় যাবা মানে?

আম্মুঃ হুম যাবোই তো, তুই যেহেতু যাবি না আমি নিজেই গিয়ে আমার মেয়েকে নিয়ে আসবো।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি।

কি আর করা ইচ্ছা না থাকা স্বত্তেও রেড়ি হয়ে অবন্তীদের বাসার দিকে রওনা দিলাম।

৪০ মিনিট পর ওই বাসায় গেলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯.০০ টা বাজে। কলিং বেল দিলাম কিছুক্ষণ পর অবন্তীর মা এসে দরজা খুলে দেয়।

আমি সালাম দিলাম ভিতরে গেলাম, উনি বললো অবন্তী রুমে আছে। আমি অবন্তীর রুমে গেলাম গিয়ে দেখি অবন্তী কার সাথে হেসে হেসে মোবাইলে কথা বলতেছে, আমাকে দেখে এক রকম চোরের মতো হয়ে গেলো।

অবন্তীঃ তু তু তুমি এখানে?

আমিঃ কোনো প্রবলেম?

অবন্তীঃ প্রবলেম না, কিন্তু আসতে তো পারমিশন লাগে।

নিজের বউয়ের রুমে আসবো সেখানেও পারমিশন!!!

আমিঃ সরি।

অবন্তীঃ কেন আসছো?

অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।

আমিঃ আম্মু আব্বু আপনাকে অনেক মিস করতেছে। এখানে আসলেন যে তো অনেক দিন হইছে, এবার বাসায় চলেন।

অবন্তীঃ দেখো তোমাকে অনেক দিন ধরে একটা কথা বলবো ভাবতেছি কিন্তু বলা হয়নি।

আমিঃ এখন বলেন।

অবন্তীঃ দেখো আমারও তো ইচ্ছা আছে আমি চাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে।

আমিঃ মানে?

অবন্তীঃ মানে আমি মাস্টার্স করবো তারপর একটা ভালো জব করবো।

আমিঃ আপনাকে আগেও বলেছি এখনও বলছি আমি চাইনা আপনি চাকরি করেন।

অবন্তীঃ তোমার চাওয়া না চাওয়ায় আমার কিছু যায় আসে না।

আমিঃ আপনি এগুলো কি বলতেছেন?

অবন্তীঃ তুমি আমার জন্য অনেক করছো, তোমার ফ্যামিলিতে থাকা মানে তোমার করুণায় থাকা। কিন্তু আমি কারো করুণা নিয়ে থাকতে চাই না।

আমিঃ করুণা করছি মানে? স্বামী হিসেবে এগুলো আমার দায়িত্ব।

অবন্তীঃ কিন্তু আমি তোমাকে কখনো স্বামী হিসেবে মানতে পারবো না।

আমিঃ আপনি এতো দিন পর এগুলো কি বলতেছেন?

অবন্তীঃ আমারওতো একটা ভবিষ্যৎ আছে,,,

আমিঃ আপনি কি বলতে চাইছেন ক্লিয়ার করে বলেন।

অবন্তীঃ দেখো জুয়েল, আমি তোমার সাথে এইভাবে থাকতে পারবো না।

আমিঃ আব্বু আম্মুকে কি বলে বুঝাবেন? উনারা কি আপনাকে নিজের মেয়ের চেয়ে কম কিছু করেছে?

আমিঃ দেখো আমি এতো কিছু বুঝি না, আমি জাস্ট মুক্তি চাই। তোমার সাথে আমার যায়না।

আমিঃ যায়না মানে?

অবন্তীঃ মানে তোমার এই টানাটানির সংসারে আমি থাকতে পারবো না। যে টাকা বেতন পাও তা দিয়ে কিছুই হবে না।

আমিঃ টাকাই কি সব?

অবন্তীঃ হুম টাকাই সব, কয়টা ইচ্ছা পূরণ করেছো আমার? কয় টাকা হাত খরচ দাও আমাকে, কয়বার শপিংয়ে নিয়ে গেছো আমাকে? বিয়ের পর থেকেই তো এইভাবে রাখছো লজ্জা করেনা আবার নিজেকে স্বামী বলে দাবি করতে।

আমিঃ আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আর কি করবো?

অবন্তীঃ আমি এতো কিছু বুঝি না।

আমিঃ তারমানে আপনি যাবেন না এইতো?

অবন্তীঃ হুম,,,,

আমি আর কোনো কথাই বললাম না, অবন্তীদের বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। কাওকে কিছু বললাম না। এতো রাতে বাসায় যাওয়াও ঠিক হবে না। আব্বু আম্মুকে যদি জানাই তাহকে উনারা অনেক কষ্ট পাবে। আর কিছুদিন দেখি পরে না হয় সময় করে সব উনাদের জানিয়ে দিবো।

আয়মানকে কল দিলাম, আজ রাত তার সাথেই থাকতে হবে। তারপরেই……


চলবে……
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
[+] 3 users Like Biddut Roy's post
Like Reply
#50
thanks for update...waiting for next
[+] 1 user Likes nightangle's post
Like Reply
#51
Ektu beshi change hoye gelona strory ta hotath kore..   :-/
[+] 2 users Like Mot lulu's post
Like Reply
#52
kemon jeno khap chara lagse ei update pore!!
[+] 1 user Likes pokeu77's post
Like Reply
#53
Ajke update pabo naki vai?opekhai achi.
[+] 1 user Likes Sanjay12's post
Like Reply
#54
omg la joab... ami mukdho ami mukdho... buke kapon dhorlo amr
[+] 1 user Likes Nomanjada123's post
Like Reply
#55
Update er opekkay aci
[+] 2 users Like nil akash's post
Like Reply
#56
(04-02-2020, 05:52 PM)pokeu77 Wrote: kemon jeno khap chara lagse ei update pore!!

Ekdom thik...  Onek beshi ghure gelo story ta hotath kore.
[+] 1 user Likes Mot lulu's post
Like Reply
#57
Byapok twist ...........
[+] 1 user Likes palu_1's post
Like Reply
#58
পর্ব-১১



আয়মানকে কল দিলাম, আজ রাত ওর সাথেই থাকতে হবে। কারন এতো রাতে বাসায় যাওয়া ঠিক হবে না। আয়মান বললো ওদের বাসায় যাওয়ার জন্য।

যেতে ভাবতে লাগলাম অবন্তীর জন্য আমি এতো কিছু করলাম অথচ সে এক মুহূর্তেই সব ভুলে গেলো। তাহলে ২ রাতে যে আমার সাথে ঘুমাইছে, ওটা কেন করলো???

আমি আব্বু আম্মুকে কি বলবো উনারা তো অবন্তীকে না ফেলে মারাই যাবে, অবন্তী এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা করবে আমি তো কোনো দিন কল্পনাও করিনি।



ভাবতে ভাবতে আয়মানদের বাসায় চলে গেলাম, কলিং বেল দিলাম কিছুক্ষণ পর আয়মান বেরিয়ে আসলো……

আয়মানঃ জুয়েল আসছিস?

আমিঃ হুম।

আয়মানঃ আয় ভিতরে আয়।

আমি ভিতরে গেলাম, ওর আম্মুকে দেখে সালাম দিলাম।

আন্টিঃ আরে জুয়েল যে, কতো দিন পর আসছো। কেমন আছো বাবা?

আমিঃ জি আন্টি আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন????

আন্টিঃ আছি বাবা! বয়স হয়ে গেলে যা হয় আরকি। জুয়েল তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে?

আমিঃ জি আন্টি সবাই ভালো।

আর কিছু কথা বলে আয়মানের রুমে চলে গেলাম, রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মাত্র বসলাম আন্টি এসে ডেকে নিয়ে গেলো খাওয়ার জন্য।

খাওয়াদাওয়া শেষে আবার আয়মানের রুমে গেলাম,খাটে আমি আর আয়মান পাশাপাশি শুয়ে আছি এমন সময় আয়মান বললো…..

আয়মানঃ জুয়েল! এই জুয়েল”

আমিঃ হুম বল।

আয়মানঃ কি হয়েছে এবার বল।

আমিঃ…….(অবন্তীর কথা গুলো বললাম)

আয়মানঃ তোরে আমি আগেই বলেছি এই মেয়েটার মধ্যে কোনো ঘাবলা আছে।

আমিঃ দোস্ত আমার মাথায় কিছু আসছে না, অবন্তী আমার সাথে এমন করবে আমি ভাবতেই পারিনি।

আয়মানঃ দেখ জুয়েল! তোরে আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি ওই মেটার সাথে তোর হবে না। তুই ওরে ডিভোর্স দিয়ে দে।

আমিঃ ধুর তোর কাছে এই কথা ছাড়া অন্য কোনো কথা নেই? সারা দিন শুধু ডিভোর্স ডিভোর্স করস। ওরে ডিভোর্স দিলে আব্বু আম্মুকে কি বলে বুঝাবো,আমি নিজে কিভাবে থাকবো?

আয়মানঃ দেখ জুয়েল আবেগ দিয়ে তো আর জীবন চলে না, আবেগ আর বাস্তবতা এক না।

আমিঃ আবেগ দিয়ে জীবন চলবে যদি চালাতে পারিস।

আয়মানঃ কিন্তু ওতো তোকে এখনো মেনেই নিচ্ছে না, ফ্লোরে ঘুমাতে হয় তোকে।

আমিঃ দেখ ফ্লোরে ঘুমালে সমস্যা নাই, আমি চাই অবন্তী আমার সাথেই থাকুক, আব্বু আম্মুর মেয়ে হয়ে থাকুক।

আয়মানঃ কিন্তু জুয়েল! অবন্তী তো তোরে ভালোই বাসেনা।

আমিঃ ও না বাসুক, আমি তো অবন্তীকে ভালোবাসি। অবন্তী কেন আমাকে ভালোবাসে না সেটাও আমি জানি।

আয়মানঃ কেন?

আমিঃ কারন অবন্তী ভাইয়াকে কি পরিমাণ ভালোবাসতো তোরে বলে বুঝাতে পারবো না। ভাইয়ার সাথে বিয়ের পরে অবন্তী আমাকে ভাইয়ের মতোই দেখেছে। সো হুট করে আমাকে বিয়ে করে তো আর স্বামীর মর্যাদা দিয়ে দিতে পারবে না। সেটা অবন্তী কেন পৃথিবীর কোনো মেয়েই পারবে না।

ভাইয়া মারা যাওয়ার পর থেকে অবন্তী ঠিক মতো খেতো না, ঘুমাতো না, শরীরের প্রতি কোনো কেয়ার ছিলো না। কারন অবন্তীর মনটা পাথর হয়ে গেছে। যেদিন ওই পাথরে ফুল ফুটবে সেদিন অবন্তী জুয়েলকে মেনে নিবে। আমিও সেই দিনের অপেক্ষায় বসে আছি।

আমি কোনো দিনও অবন্তীকে কোনো ব্যাপারে জোর করিনি আর এখনও করবো না।

আয়মানঃ কিন্তু অবন্তী তো আজকে বলে দিছে তোকে মেনে নিবে না।

আমিঃ সেটাই তো বুঝতেছিনা হঠ্যাৎ করে অবন্তীর কি হলো? হাসপাতালে গিয়েও আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেছিলো। তারপর কিছু একটা চিন্তা করে ছেড়ে দিয়েছে।

আয়মানঃ আচ্ছা দোস্ত কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম।

আমিঃ হুম বল, মনে করার কি আছে?

আয়মানঃ অবন্তীর কি কারো সাথে রিলেশন আছে বা ছিলো?

আমিঃ আমার জানামতে নাই, কারন অবন্তীর আম্মু বলেছিলো অবন্তীর নাকি কোনো ছেলে ফ্রেন্ডও নাই। সে জায়াগায় বয়ফ্রেন্ড আসার তো প্রশ্নই আসেনা।

আয়মানঃ তো তুই এখন কি করবি? তোর আব্বু আম্মুকে বলে দিবি ওর ব্যাপারে?

আমিঃ এখন না, আরো কিছু দিন দেখি। এখন বলে দিলে উনারা অনেক কষ্ট পাবে।

আয়মানঃ জুয়েল আমার মাথা ঘুরতেছে। তুই তোর আব্বু আম্মুকেও বলবি না, নিজেও করবি না। তাহলে কি করবি?

আমিঃ আমার মনে হয় এখানে বিশাল একটা রহস্য আছে যেটা আমি জানি না।

আয়মানঃ তো কি করবি এখন?

আমিঃ দোস্ত তোকে একটু কষ্ট করতে হবে।

আয়মানঃ কি?

আমিঃ দেখ আমি তো অফিসে চলে যাবো, সারা দিন ওখানেই থাকতে হবে। তুই তো ফ্রি আছিস, তুই যদি অবন্তীকে ফলো করতি ও কি করে, কার সাথে যায়। তোর বাইক আছে সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে আমি তোরে তেলের টাকা দিয়ে দিবো।

আয়মানঃ এই হারামি তুই পাগল হইছিস, তোর কাছে থেকে আমি টাকা নিবো? তুই আমার বেস্টফ্রেন্ড, তোর জন্য আমি সব করতে রাজি আছি।

আমিঃ থেংক্স দোস্ত। তাহলে কালকে থেকে ওরে ফলো করা শুরু কর, আমি তোরে অবন্তীদের বাসা দেখিয়ে দিবো।

আয়মানঃ আচ্ছা ঠিক আছে। এখন ঘুমা।

তারপর একপাশ হয়ে শুয়ে গেলাম। ঘুম আসছে না। বার বার অবন্তীর কথাই মনে পড়তে লাগলো।

ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে আয়মান আর আমি বাইক নিয়ে বের হলাম। আয়মানকে অবন্তীদের বাসা দেখিয়ে আমি অফিসে চলে গেলাম।

কাজ করতে লাগলাম আর আয়মানকে বার বার কল দিয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম কিন্তু কোনো খবরাখবর নাই।

অফিস শেষ করে বাসায় গেলাম। আব্বু আম্মু আমার উপর ফায়ার হয়ে আছে…..

আব্বুঃ কিরে তুই একা কেন? আমার মেয়ে কোথায়?

আমিঃ আসেনি।

আম্মুঃ আসেনি, তুই কালকে ওর সাথে ঝগড়া করে চলে আসছিস কেন?

আমিঃ কিহ! তোমাদের এসব কথা কে বলেছে?

আব্বুঃ তুই কি ভাবছিস অবন্তীর সাথে আমাদের কথা হয়না? অবন্তীই আমাদের বলেছে।

আমিঃ।……..(কি বলবো বুঝতেছিনা)

আম্মুঃ কালকে কোথায় ছিলি?

আমিঃ আয়মানদের বাসায় (মাথা নিচু করে)

আম্মুঃ অবন্তী তোরে কি বলেছে?

আমিঃ আরো কিছুদিন ওখানে থাকবে (মিথ্যা বললাম)

আম্মুঃ যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়।

যাহ বাবা বেঁচে গেলাম, মনে হচ্ছে আমাকে রিমান্ডে দিয়েছে। শালা অবন্তী আব্বু আম্মুকে কি বুঝিয়েছে কে জানে! আমার সাথে একরকম করলো আর আব্বু আম্মুর সাথে অন্যরকম। বুঝলাম না।

যাইহোক খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। পরেরদিন ঘুম থেমে উঠে রেড়ি হয়ে অফিসে চলে গেলাম।

এভাবে ২ দিন গেলো, অবন্তীর সাথে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি। সেও আমাকে কোনো কল বা মেসেজ দেয়নি।

একদিন অফিসে কাজ করতেছি। ১০.৩০ বাজে এমন সময় আয়মান কল দিলো।

আয়মানঃ হ্যালো জুয়েল!

আমিঃ হুম বল।

আয়মানঃ তুই কই?

আমিঃ অফিসে। তুই কোথায়???

আয়মানঃ আমিতো অবন্তীদের বাসার সামনে।

আমিঃ কোনো খবর পাইছিস?

আয়মানঃ এইমাত্র একটা গাড়ি অবন্তীদের বাসার সামনে আসলো আর অবন্তী সেটাতে উঠে চলে যাচ্ছে।

আমিঃ গাড়িতে কে দেখছিস???

আয়মানঃ না দেখা যাচ্ছে না।

আমিঃ আচ্ছা দোস্ত তুই গাড়িটা ফলো কর, কি হয় আমাকে জানা।

আয়মানঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

কলটা কেটে দিলো, আমি একটু টেনশনে পড়ে গেলাম। অবন্তী কার সাথে ঘুরতেছে।

১১.২০ এ আয়মান আবার কল দিলো।

আয়মানঃ জুয়েল!

আমিঃ হুম বল।

আয়মানঃ ঘটনা তো কিছুই বুঝলাম না।

আমিঃ কেন কি হইছে?

আয়মানঃ তোর অবন্তী তো লিমার সাথে।

আমিঃ কোন লিমা???

আয়মানঃ আরে বেটা আমাদের ফ্রেন্ড, তোর বসের মেয়ে।

আমিঃ অবন্তী তো লিমার কথাই শুনতে পারেনা।

আয়মানঃ জানি তোর বিশ্বাস হবে না। আমি ছবি পাঠাচ্ছি তুই দেখ।

আমিঃ আমার কাছে নরমাল মোবাইল।

আয়মানঃ আচ্ছা বিকালবেলা দেখা করিস।

আমিঃ ঠিক আছে। আজকে অবন্তী লিমার সাথে কি করে?

আয়মানঃ আমি কেমনে বলমু? তুই লিমারে জিজ্ঞেস করিস।

আমিঃ আচ্ছা তুই আরেকটু ফলো কর।

আয়মানঃ ওকে।

আমিঃ হুম আমি বিকালে তোর সাথে দেখা করবো।

আয়মানঃ ওকে।

কল কেটে দিলো। কাজ শেষ করে বিকালবেলা আয়মানের সাথে দেখা করলাম। আয়মান ওর মোবাইলে তোলা ছবি গুলো আমাকে দেখাতে লাগলো, আসলেই তো এটা যে লিমা।

কিন্তু অবন্তী লিমার নামও শুনতে পারে না। আমাকে কয়েকবার হুমকি দিয়েছে যাতে লিমার সাথে দেখা না করি কিন্তু এখন দেখছি সে নিজেই লিমার সাথে হাত ধরাধরি করে হাটছে।

কাহিনী তো একটা আছে। যেটা আমি জানি না। কিন্তু আমাকে এভাবে বসে থাকলে চলবে না, এই কাহিনী টা কি সেটা বের করতে হবে।

আয়মানঃ এই জুয়েল কি ভাবতেছিস?

আমিঃ দুজন একসাথে কি করে সেটা।

আয়মানঃ লিমাকে জিজ্ঞেস কর তাহলে কাহিনী বুঝে যাবি।

আমিঃ কিন্তু লিমা কি আমাকে বলবে?

আয়মানঃ বলবে না কেন, অবশ্যই বলবে।

আমিঃ নারে লিমার পেট থেকে সহজে কথা বের হয়না।

আয়মানঃ ওরে ইমোশনাল করে বের করতে হবে।

আমিঃ কিন্তু কিভাবে?

আয়মানঃ কিছু একটা চিন্তা কর।

আমিঃ হুম দেখি। আচ্ছা এখন কল দিবো?

আয়মানঃ তুই পাগল হইছিস,এখন দিলে ভুলেও বলবে না। তোর সাথে যখন দেখা হবে তখন সিস্টেমে জিজ্ঞেস করে নিবি।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে গেলাম। খাওয়াদাওয়া করে বসে বসে ভাবতে লাগলাম আসলে অবন্তী কি করতে চাচ্ছে।

২ দিন পর আমি অফিসে কাজ করতেছি এমন সময় লিমা আমার ডেস্কে আসলো….

লিমাঃ কিরে জুয়েল কি খবর?

আমিঃ ভালো না রে।

লিমাঃ কেন বউয়ের জন্য খারাপ লাগছে বুঝি?

এইতো ফকিন্নি মুখ দিয়ে আসল কথা বের করে দিছে, বাকি কথা গুলো বের করে নিই।

আমিঃ নারে দোস্ত বউয়ের জন্য না।

লিমাঃ তাহলে?

আমিঃ আমি আর বেশি বাঁচবো নারে।

লিমাঃ তুই এগুলো কি বলিস, পাগল হলি নাকি?

আমিঃ সত্যিই বলছি। ডাক্তার বলেছে আর বেশি দিন নাই।

লিমাঃ এই তোর শরীর ঠিক আছে তো।

আমিঃ দোস্ত আমি তো চলে যাবো, যাওয়ার আগে একটা রিকুয়েস্ট রাখবি প্লিজ,, (একেবারে নরম গলায়)

লিমাঃ তুই কি বলতেছিস এগুলো,আমার মাথা ঘুরতেছে। তোকে তো দেখে ভালোই মনে হচ্ছে।

আমিঃ নারে, বল আমার রিকুয়েস্ট টা রাখবি?

লিমাঃ কি রিকুয়েস্ট বল।

এই তো লাইনে আসছে,,,,

আমিঃ অবন্তীর সাথে কি চলতেছে বলবি, মরার আগে যানতে চাই।

লিমাঃ……. (চুপ করে আছে)

আমিঃ কি হলো বল।

লিমাঃ তুই কিভাবে জানিস?

আমিঃ তোকে আর অবন্তীকে আমি একসাথে দেখেছি। প্লিজ বল,,,

লিমাঃ তোর সাথে যখন আমি মাহির বিয়েতে হেসে হেসে কথা বলেছিলাম তখন অবন্তী এসে আমার হাত ধরে কান্না করতে লাগলো আর বললো যাতে তোর সাথে না মিশি।

আমিঃ তো তুই কি বললি?

লিমাঃ আমি বলেছি তুই আর আমি জাস্ট ফ্রেন্ড আর কোনো সম্পর্ক নেই। অবন্তীকে রাগানোর জন্যই আমরা বিয়েতে এমন করেছি। এরপর থেকে আমার আর অবন্তীর মাঝে ভালো একটা ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যায়। আমরা এখন একে অন্যকে তুই করে ডাকি।

আমিঃ তো আমাকে বলিস নি কেন?

লিমাঃ অবন্তী বলতে নিষেধ করেছে। তোরে নাকি শাস্তি দিবে।

আমিঃ কি শাস্তি?

লিমাঃ তুই যাতে অন্য মেয়ের সাথে আর জীবনে কথা না বলিস।

আমিঃ আমি যে এখানে চাকরি পেয়েছি সেটাও কি বলে দিয়েছিস?

লিমাঃ হুম, তুই জয়েন করতে আসার আগেই ওরে বলে দিয়েছি। আর সে তোর আব্বু আম্মুকে জানিয়ে দিয়েছে।

আমিঃ তারমানে আমি বলার আগেই আব্বু আম্মু আর অবন্তী জেনে গেছে?

লিমাঃ হুম।

আমিঃ আচ্ছা এখন আমাদের মধ্যে একটু ঝামেলা চলতেছে তুই সেটা জানিস?

লিমাঃ জানবো না কেন, আমার বুদ্ধি দিয়েই তো অবন্তী এগুলো করতেছে।

আমিঃ তারমানে এসবের মধ্যে তুইও আছিস।

লিমাঃ হুম রে দোস্ত আমি অনেকবার না করেছি কিন্তু অবন্তী আমাকে কিছুতেই ছাড়েনি। তাই করতে বাধ্য হলাম,,, কিন্তু আসল কথা কি জানিস?

আমিঃ কি?

লিমাঃ অবন্তী তোকে অনেক ভালোবাসে।

আমিঃ কচু বাসে। ও জীবনেও আমাকে মেনে নিবে না।

লিমাঃ নিবে দেখিস। আচ্ছা এবার বল তোর কি হয়েছে?

আমিঃ আমার আবার কি হবে???

লিমাঃ তুই না একটু আগে বললি তুই আর বেশি দিন নেই।

আমিঃ আরে ফকিন্নি এটা মিথ্যা ছিলো, তোর পেট থেকে আসল কথা বের করার জন্যই এমন করেছি।

লিমাঃ কিহ! তুই এটা করতে পারলি?

আমিঃ তুই যদি পারিস আমি কেন পারবো না?

লিমাঃ দাঁড়া আমি অবন্তীকে সব বলে দিবো।

আমিঃ বলে দে, তাতে তুই বাঁশ খাবি। আমার কি?

লিমাঃ ধুর আমি তোদের কারো সাথে নাই।

আমিঃ মনু মাইনক্যা ছিপায় আটকাইছো, বের হওয়ার সুযোগ নেই। বেশি চালাকি করলে এই অবস্থাই হবে।

লিমাঃ আমি আর এসবের মধ্যে নেই।

আমিঃ তুই আগে ছিলি, এখনো আছস এন্ড আগামীতেও থাকবি। শোন,,,

লিমাঃ আবার কি? আমি আর তোকে কোনো ইনফরমেশন দিবো না। তুই এতো হারামী আগে জানতাম না,,,

আমিঃ আরে আগে কথা শোন।

লিমাঃ হুম বল।

আমিঃ আমি যে সব কিছু জেনে গেছি অবন্তী যাতে না জানে।

লিমাঃ আমি ওরে বলে দিবো।

আমিঃ ওকে বলিস, আমি অবন্তীকে বলবো লিমা নিজেই এসে আমাকে সত্যি কথা বলে দিছে। তখন অবন্তীর পক্ষ থেকে খুব সুন্দর আর সাজানো একটা বাঁশ খাবি। সো অবন্তীকে কিছু বলবি না।

লিমাঃ আচ্ছা।

লিমা চলে গেলো, আমি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলাম। এবার একটু শান্তি আসলো, শালার অবন্তী জীবনটা শেষ করে দিলো।

কোথায় এসে আমার সাথে রোমান্স করবে সেটা না উলটো আমাকে বাঁশ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

বালিকা তুমি চলো ডালে ডালে আর আমি চলি পাতায় পাতায়। জুয়েল কি জিনিষ এবার ভালো করে টের পাবা।

আয়মাইন্না হারামিরে কল দিয়ে আসার জন্য বললাম। দেখা করবো, সন্ধ্যার সময় আসলো।

আয়মানকে সব কিছু বললাম, আয়মান তো পুরা টাসকি খেয়ে বসে আছে।

আয়মানঃ আরে কি বলিস?

আমিঃ হুম সত্যিই।

আয়মানঃ অবন্তীর দিকে তাকালে তো মনে হয় নিষ্পাপ একটা মেয়ে কিছু জানে না। বাজা মাছ উলটে খেতে জানে না। কিন্তু ওর ভিতর এতো প্যাছ?

আমিঃ দাঁড়া আমি ওর প্যাচ বের করছি।

আয়মানঃ একটা জিনিষ আমার মাথায় আসছে না।

আমিঃ কি?

আয়মানঃ অবন্তী তোরে হঠ্যাৎ শাস্তি দিতে যাবে কেন?

আমিঃ আমি জানি না, সেখানেও হয়তো কোনো রহস্য আছে।

আয়মানঃ দেখ এবার কি হয়।

আমিঃ দোস্ত আমি যাই, কালকে দেখা করবো।

আয়মানঃ কোথায় যাবি?

আমিঃ এখন বাসায় যাবো। রেড়ি হয়ে অবন্তীদের বাসায় যাবো।

আয়মানঃ অবন্তীদের বাসায় কেন?

আমিঃ তুই এখনো ছোট, বুঝবি না কিছু। আরো বড় হয়ে নে তারপর নিজে নিজে বুঝে যাবি।

আয়মান আবুলের মতো তাকিয়ে রইলো, আমি বাসায় চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে আব্বুর কাছে আসলাম।

বাবাঃ কোথাও যাবি নাকি?

আমিঃ হুম।

বাবাঃ কোথায়?

আমিঃ তোমার বেয়াই মশায়ের বাসায়।

বাবাঃ এতো রাতে ওখানে কেন?

আমিঃ কেন যেতে পারি না?

বাবাঃ পারবি না কেন, শ্বশুর বাড়ি মধুর হাড়ি। যখন ভালো লাগে তখন যাবি। এখন কি অবন্তীর কথা খুব মনে পরছে?

আমিঃ আরে এগুলো কি বলো, ধুর যাবোই না।

বাবা বসে বসে হাসতেছে। আমি রান্না ঘরে গেলাম। আম্মুকে বলে বেরিয়ে গেলাম।

৩০ মিনিট পর অবন্তীদের বাসায় গেলাম। কলিং বেল চাপ দিলাম। কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে দেয়। আমাকে দেখেই………

চলবে…….
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
[+] 5 users Like Biddut Roy's post
Like Reply
#59
Jak twist ta bhanglo.....waiting for next
[+] 1 user Likes nightangle's post
Like Reply
#60
oh bachalen vai..... dom bondho hoye jacchilo
[+] 2 users Like Nomanjada123's post
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)