Thread Rating:
  • 26 Vote(s) - 3.46 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ভালবাসার রাজপ্রাসাদ Written By Pinuram
#61
ময়ুর সিংহাসন

পর দিন, পরী অভির জন্য রঙ তুলি সব কিনে আনে। অভি জিজ্ঞেস করে, কি রকম ভাবে নিজের ছবি আকাতে চায় পরী। অভি জানত যে পরীর ছবি আঁকতে হলে বাবা মায়ের চোখের আড়াল করেই আঁকতে হবে না হলে তাঁরা একবার জেনে ফেললে সর্বনাশ হতে দেরি হবে না।

পরী বিরক্ত হয়ে ওঠে ওরা প্রশ্ন শুনে, "পেন্টার কে, তুমি না আমি? আমি কি করে জানব?"

অভি মজা করে বলে, "ঠিক আছে না একটা নুড পোট্রেট আঁকা যাবে।"

আদর করে মারতে শুরু করে দেয় অভিকে, "তুমি একটা শয়তান, কুত্তা। আমি আর কোন দিন তোমাকে ক্ষমা করব না। আমি চাই না আমার ছবি কোন নোংরা লোক আঁকুক।"

অভি ওকে জড়িয়ে ধরে দুহাতে, চোখে চোখ রেখে বলে, "সোনা পরী, আমি ত শুধু একটু মজা করছিলাম।" পরীর পেছনে হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে ওকে কোলে তুলে নেয়।

পরী জোরে বলে, "আঃ ছাড়ো ছাড়ো, আমার ছবি আকবে কি না?"

অভি ওকে ছেড়ে দেয়। পরী ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, "কি পরে আসব, কি থিম নিয়ে ছবি আঁকবে?"

অভি, "তুমি তোমার ওই গাড় নীল রঙের শাড়িটা পরে এস, ঠিক যেন ময়ুরের মতন দেখায়। কানে মুক্তোর দুল পড়বে। পেছনের ছবি আমি চিতকুলের পাহাড় আঁকবো, আর সামনে তুমি। তাড়াতাড়ি যাও, আমি ততক্ষণে আকার জিনিস পত্র ঠিক করি।"

অভি কাগজ, পেন্সিল, চারকোল ইত্যাদি বের করে তৈরি পরীর ছবি আকার জন্য। ইসেল ব্যাবহার করতে পারবেনা কেননা মাঝে মাঝে মা আসেন ওর ঘরে, আর যদি ইসেলে পরীর ছবি দেখে তাহলে কথা নেই...

এক ঘণ্টা পরে পরী একদম ময়ুরের মতন সেজে ওর ঘরে ঢোকে। জানালার পাশের চেয়ারে বসতে বলে ওকে। এক পা অন্য পায়ের ওপরে দিয়ে, বাঁ হাত মুড়ে তাঁর ওপরে থুতনি রাখতে বলে, আর অন্য হাত যেন ওর জানুর ওপরে আলতো করে পরে থাকে। পরীকে চেয়ারে বসিয়ে আঁকার জায়গায় দাঁড়িয়ে এক ভাবে দেখতে থাকে। হাতের পেন্সিল হাতে থেকে যায়, কাগজে দাগ কাটতে ভুলে যায় অভি।

পরীর অপরূপ সৌন্দর্য দেখে একবারের জন্য মন একবারের জন্য বিচলিত হয়ে ওঠে কিন্তু নিজেকে সামলে নেই অভি, এই সৌন্দর্য দেখার, শুধু নয়নে উপভোগ করার। পরনে ময়ুরের গলার নীল রঙের শাড়ি, ছোটো হাতা কাঁচুলি। মাথার চুল খোঁপা করে বাঁধা। বাঁকা ধনুকের মতন ভুরু জোড়া, চোখের কনে অল্প কাজল। ঠোঁট জোড়ায় হালকা গোলাপি রঙ করেছে। দু’কানে সোনার দুল মুক্তো বসানো, গলায় মায়ের দেওয়া সোনার হার আর লকেট টা বুকের খাঁজে ঝুলছে। কবজি তে কয়েক গাছি সোনার চুড়ি। তাও অভির কেন জানেনা মনে হল কিছু যেন নেই পরীর ওই চেহারায়।

হাঁটু গেড়ে হামাগুরি দিয়ে পরীর সামনে দাঁড়ায় অভি হাতে নীল রঙ মাখানো তুলি। পরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, "রঙ নিয়ে কি করছ?"

আদর করে নাকে নাক ঘষে উত্তর দেয়, "এই সুন্দর মুখে কিছু যেন নেই, কিছু যেন বাদ পরে গেছে।"

পরী, "কি?"

শূন্য ব্রাস দিয়ে ভুরুর মাঝে একটা টিপ এঁকে বলে, "হ্যাঁ একদম ঠিক আছে।"

পরী, "এখন শান্তি?"

ওর গালে চুমু খেয়ে বলে, "না, এখনো যেন কিছু নেই নেই বলে মনে হচ্ছে।

অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকে পরীর মুখের দিকে, মাথা চুলকায় অভি, চিন্তা করে পায়না, কি নেই।

পরী বিরক্ত হয়ে ওঠে, "আর কি করতে বল আমাকে?"

অভি ওর তর্জনী দিয়ে পরীর গালে আদর করে বলে, "তোমার ঠোঁট গুলো যেন একটু বেশি গোলাপি মনে হচ্ছে, যদি আমি একবার চেটে নেই তাহলে রংটা ঠিক হয়ে যাবে।"

আদর করে চাঁটি মেরে বলে, "ধুর, তুমি না যখন তখন শুরু হয়ে যাও। আঁকতে বসবে না আমি চলে যাবো? তুমি যে রকম ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো না, বেশিক্ষণ ওই রকম ভাবে তাকালে কিন্তু আমার কিছু একটা হয়ে যাবে। প্লিস ওই রকম ভাবে না তাকিয়ে তাড়াতাড়ি আঁকা শুরু করো।"

অভি ওর মাথার পেছনে হাত নিয়ে গিয়ে খোঁপা খুলে দেয়। পরী ককিয়ে ওঠে, "এই সোনা, কি করছ?"

অভির শ্বাস গতি নেয়, উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ধিরে ধিরে। আধা বোজা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে পরী।

অভি, "তোমাকে একটু বেশি লাস্যময়ী করে তুলছি বেবি।"

পরীর বুক ওঠা নামা করতে শুরু করে, গাল লাল হয়ে ওঠে অভির আঙ্গুলের ছোঁয়ায়। মৃদুকনে বলে, "প্লিস অভি, করো না। আমার বুকের মাঝে কিছু হচ্ছে।"

অভি, "কি হচ্ছে বুকের মাঝে, একটি বারের জন্য বল, আমি তোমার ওই সব স্বপ্ন আমি পূরণ করে দেব।"

পরী, "আমি কিন্তু এবারে রেগে যাবো, অভি। "

অভি ওর চুল খুলে ঘাড়ের ওপর দিয়ে সামনের দিকে এলিয়ে দেয়। চুলের এক গুচ্ছ তর্জনীতে নিয়ে গালের ওপরে এলিয়ে দেবার পরে পরীর চেহারা দেখে পরিতৃপ্ত হয়। মনে হয় যেন এক ময়ুর ওর সামনে এক সিংহাসনে বসে আছে। অভি দাঁতে দাঁত চেপে নিজের লোভ সংবরণ করে নেয়, পরীর চোখ, পরীর ঠোঁট যেন ওকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। শুরু করে আঁকা, সাদা কাগজে ফুটে ওঠে পরীর রুপ রেখা।

পরী ওর দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে অনেকক্ষণ, বসে বসে পা ধরে গেছে। ওকে জিজ্ঞেস করে, "এই শয়তান, তুমি আঁকছত, না শুধু শুধু আমাকে বসিয়ে রেখে আমাকে গিলে খাচ্ছো?"

স্কেচ শেষ করার পর একবার পরীর দিকে তাকায় একবার সামনে কাগজের দিকে। পরী ওর দিকে জোর গলায় বলে ওঠে, "কি হল, আঁকা কি শেষ? বসে বসে কিন্তু আমার পা ব্যাথা করছে।"

অভি ওকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকে। পরী সাদা কাগজে নিজের রুপ রেখা দেখে অবাক হয়ে যায়। অভির গলা জড়িয়ে ধরে দুহাতে। পরীর পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে অভি, মাটি থেকে ওপরে তুলে নেয় কমনীয় দেহ। পরী মৃদুকনে বলে ওঠে, "আমি সত্যি এত সুন্দরী, না তুমি আমাকে এই রকম এঁকেছো?"

পরীর গায়ের গন্ধ বুকের ভেতরে টেনে নিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে, "আমার জলপরীত এর চেয়েও সুন্দরী।"

পরী নিজের শরীর আবেগের বশে অভির বুকের ওপরে চেপে ধরে। কোমল সুগোল উন্নত বক্ষ যুগল পিষে দেয় অভির প্রসস্থ বুকের ওপরে। অভির কঠিন বাহু পাসে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। অভি ঝুঁকে পরে পরীর গোলাপি ঠোঁটের ওপরে, চেপে ধরে নিজের ঠোঁট ওই কোমল গোলাপ পাপড়ির ওপরে। চুষে নেয় পরীর ঠোঁটের মধু। পরী আবেগে দুচোখ বন্ধ করে নেয়, হাত নিয়ে আসে অভির মাথার ওপরে আর টেনে ধরে মাথা যাতে ওদের চুম্বন আরও নিবিড় হয়ে ওঠে। বুকে মাঝে উত্তাল প্রেমের ঢেউ বারে বারে এসে ধাক্কা মারে, দুজনের শ্বাস গতি নেয়।

পরী মৃদুকনে বলে, "সোনা, যখনি তুমি আমার দিকে তাকাও, আমার বুকের মাঝে উত্তাল ঢেউ খেলে বেড়ায় যেন। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা, অভি, আমি তোমাকে চাই। আমি জানিনা ভবিষ্যতে কি হবে, কি করে তুমি আমাদের স্বপ্ন পূরণ করবে। খুব ভয় করে অভি। যদি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও তাহলে আমি কিন্তু মারা যাবো, আমি নিজেকে মেরে ফেলব অভি।"

অভি ঝুঁকে পরে পরীর বক্ষ বিভাজনের ওপরে চিবুক দিয়ে আদর করে বলে, "সোনা, কখন এই রকম কথা বলবে না। আমি তোমাকে এই জায়গা থেকে অনেক অনেক দুরে নিয়ে চলে যাবো। তোমার সেই চোর, তাঁর প্রেয়সী পরীকে নিয়ে দূর উঁচু পাহারে পালিয়ে যাবে, যেখানে কেউ ওদের খুঁজে পাবেনা।"

ওর কথা শুনে পরীর চোখে জল এসে যায়। অভি জিব দিয়ে চেটে নেয় পরীর গালের ওপরে গড়ান অশ্রু। পরী ওর দিকে দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, "সোনা, আমার খিদে পেয়েছে।"

অভি, "আমাকেই খেয়ে নাও না কেন?"

পরী, "ছোট্ট রাজকুমার, তুমি ত আমার খাবার পরের পায়েস।"

পরীকে মাটিতে নামিয়ে দেয় অভি, পরী তাও ওকে ছাড়ে না, জড়িয়ে ধরে ওর বুকের ওপর মাথা রেখে দাঁড়িয়ে থাকে। পরী কিছু পরে নিজেকে অভির বাহু পাশ থেকে মুক্ত করে বলে, "সোনা আমি কিন্তু এখন তোমাকে ক্ষমা করিনি। পেন্টিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিন্তু তুমি আমার ক্ষমা পাবে না।"

খিলখিল করে হেসে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।

অভি দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে বলে, "দুষ্টু মেয়ে, আমাকে ক্ষমা না করলে কিন্তু আমি তোমাকে মেরে ফেলব।"

পরী হেসে উত্তর দেয়, "আমি সেইদিনের অপেক্ষায় থাকব।"

রাতের খাওয়ার পরে নিজের ঘরে গিয়ে অভি পরীর ছবি খুলে বসে। ড্রয়িং বোর্ডে কাগজ এঁটে টেবিল ল্যাম্পের তলায় আবার আঁকা শুরু করে। কিন্তু সামনে পরীর ছবি দেখে হাত থেমে যায়, কাগজের ওপরে পেন্সিলের দাগ, পরীর চোখ যেন ওকে দেখে হাসে। অভি রঙ মিশাতে ভুলে একমনে ছবিটা দেখে, মিষ্টি পাতলা ঠোঁট, কাজল কালো আঁখি যেন জীবন্ত মনে হয়। ঝুঁকে পরে পরীর ছবির ওই সাদা কালো ঠোঁটে চুমু খায়। ঠিক সেই সময়ে দুটি কোমল হাত পেছন থেকে ওর গলা জড়িয়ে ধরে।

পরী, "কাগজে চুমু খাচ্ছো কেন, জলজ্যান্ত পরী তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে যে।"

পরীর হাত অভির বুকের ওপরে, পেশির ওপরে আদর করে নখের আঁচর কেটে দেয়। অভি ওর হাত দুটি বুকের ওপরে চেপে ধরে। পরী ওর কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে এসে, কানের লতিতে আলতো করে দাঁত দিয়ে কেটে দেয়। সিক্ত জিবের ডগা আর মুক্তোর মতন দাঁতের পরশে অভির সারা শরীর কেঁপে ওঠে। চোখ বন্ধ করে মাথা পেছন দিকে হেলিয়ে দেয় অভি। ঘাড়ের পেছনে পরীর কোমল বক্ষ পিষে যায়, উষ্ণ নরম পরশে অভির গা গরম হয়ে ওঠে। পরী ওর কানের লতি চুষে নেয় বারবার।

কানে কানে বলে, "এবারে বুঝতে পারছো, তুমি যখন আমাকে এই সব করো তখন আমার কি হয়!"

অভিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে পরী, ঘাড়ের ওপরে জিবের ডগা আলতো করে বুলিয়ে দেয়। অভি শক্ত করে ধরে থাকে পরীর হাত, ফর্সা ত্বকে অভির আঙ্গুলের ছাপ পরে লাল হয়ে ওঠে কোমল কবজি।

পরীর আদরে অভি আর থাকতে না পেরে চাপা গোঙ্গানি করে ওঠে, "পরী ইইইইইইই..."

চেয়ার ঘুরিয়ে পরীর দিকে ফিরে বসে অভি, জোর করে কোলের ওপরে টেনে বসায় প্রেয়সীকে। ধুপ করে বসে পরে কোলের ওপরে আর তারপরে নিজেকে ঠিক করে ভালো করে বসে পরে। সুগোল নিতম্ব অভির জানুর ওপরে যেন দুই মাখনের তালের মতন লেপে যায় আর তার নিচে থাকা অভির তপ্ত সিংহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। পরীর পরনে হাতকাটা লম্বা রাত্রিবাস, তার নিচে কোন অন্তর্বাস নেই সেটা বুঝতে অভির অসুবিধে হয় না। অভির প্রশস্ত বুকের ওপরে পরীর কোমল বক্ষ যুগল পিষে যায়। দুই বক্ষ যেন এঁকে ওপরের সাথে মারামারি করে জামার ভেতরে, ঠেলে বেড়িয়ে আসার জন্য যেন উন্মুখ হয়ে আছে দুই কোমল বক্ষ। নিচে অন্তর্বাস না থাকার ফলে, পাতলা কাপড় ভেদ করে বক্ষের মাঝের কঠিন হয়ে ওঠে দুই বৃন্ত ফুটে ওঠে পরিষ্কার। অভির দিকে উঁচু হয়ে উঠে যেন ওই দুই বৃন্ত হাতছানি দিয়ে ডাকে।

পরী অভির গলা জড়িয়ে ধরে কানের লতিতে আঙুল দিয়ে আলতো করে আদর করে দেয়। কোমল তর্জনীর স্পর্শে অভির সারা শরীর কেঁপে ওঠে। অভি বাম হাতে পরীর কোমর জড়িয়ে ধরে, ওর ফুলে ওঠা বুকের ওপরে ঠোঁট বসিয়ে দেয়। উষ্ণ নরম ত্বকে ভিজে ঠোঁটের পরশে পরী চোখ বন্ধ করে নেয়। অভি ওর নরম মাংসে আলতো করে কামড় দিতে শুরু করে। দুই প্রেমঘন কপোত কপোতীর বুকে কামনার ঢেউ এসে দোলা দেয়। পরী কেঁপে ওঠে অভির দাঁতের কামরে, দাঁতে দাঁত পিষে মাথা পিছনে হেলিয়ে দেয় আর অভির প্রসস্থ বুকের পেশি খামচে ধরে। অভির ঠোঁট, ওর কাপড় ঠেলে নিচে করে বুকের বৃন্তের কাছে নিয়ে জিব দিয়ে চেটে দেয়। ঠিক ঠোঁটের নিচে পরীর কঠিন বৃন্ত খোঁচা দেয়। ডান হাত দিয়ে অভি, পরীর পেটের ওপরে নিয়ে পেটের কোমলতা নিয়ে খেলা করতে শুরু করে দেয়। বারে বারে মুঠি করে নিয়ে চেপে ধরে কোমল পেট আর পিষে দেয় নরম মাংস। পরী দুই জানু একে ওপরের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে, সারা শরীরে আলোড়ন শুরু হয়ে যায় পরীর আর তাঁর সাথে অভির সিংহ মাথা উঁচু করে জানান দেয় পরীর কোমল নিতম্বের নিচে। অভির জিব বৃন্তের চারপাশে আলতো করে ভিজিয়ে দেয়, পরীর শরীর শক্ত হয়ে ওঠে।

পরী ককিয়ে ওঠে, "সোনা আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম, সোনা, আমাকে বুকে টেনে নাও। আমি তোমার আলিঙ্গনে সর্বদা আদর খেতে চাই।"

ভাঁজ করা দুই পায়ের নিচে হাত গলিয়ে দিয়ে পাজাকোলা করে কোলে তুলে নেয় পরীকে, চেয়ার ছেড়ে উঠে বিছানায় শুইয়ে দেয় প্রেয়সীর উষ্ণ দেহ। উন্মত্ত আদরের ফলে পরীর ডান বক্ষ রাত্রিবাস থেকে বেড়িয়ে পরে আর বাম বক্ষের বৃন্তের কাছে আটকে থাকে রাত্রিবাস, যেন একটা আলতো টানে উন্মুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় ওর দিকে চেয়ে আছে। পরী ওর দিকে কামঘন চাহনি নিয়ে তাকিয়ে নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে।

মৃদুকনে চিকচিক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে, "ওই রকম করে কি দেখছ তুমি?"

অভি চাপা গলায় বলে, "আমার জলপরীকে দেখছি, তপ্ত জলপরী উষ্ণ সাগর জল ছেড়ে আমার বিছানার ওপরে বসে আমার প্রেমে ডুব দেবার জন্য।"

অভি বিছানায় উঠে ওর পাশে শুয়ে পরে ওর মাথার পেছনে হাত নিয়ে যায়। মাথা টেনে ধরে নিজের মুখের ওপরে আর ওর ওপরের ঠোঁট নিজের ঠোঁটের মাঝে নিয়ে নেয়। পরীর দু চোখ অভির মুখের ওপরে নিবদ্ধ। দুহাতে ওর মাথা নিয়ে চুলে, গালে নরম আঙুল বুলিয়ে দেয়। উষ্ণ নগ্ন বক্ষ অভির তপ্ত বুকের পেশির ওপরে চেপে ধরে, কঠিন হয়ে থাকা বৃন্ত যেন খোঁচা মারে বুকের পেশির ওপরে। অভি ওর মাথার পেছনে নখের আঁচর কাটে। ওর সারা মুখের ওপরে পরীর উষ্ণ শ্বাস ঢেউ খেলে বেড়ায়। দুজনে যেন ঠোঁট দিয়ে মারামারি শুরু করে, কে ভাল চুম্বন দিতে পারে তার প্রেমের মানুষ কে সেই প্রতিযোগিতায় যেন দুজনে একে ওপরকে হারানোর প্রানপন চেষ্টা চালায়। অভির হাত নেমে আসে পরীর কোমল গোল পেটের ওপরে নাভির চারপাশের ফুলে ওঠা পেটের ওপরে চাপ দিতে থাকে।

দুই জানু এঁকে ওপরের সাথে পিষে রাখে পরী। অভির হাতের আদরের ফলে, জানুর মাঝের সিক্ত হয়ে আসে নারী সুধায়। সারা শরীরে যেন তরল লাভা বয়ে চলেছে। হাঁটু ভাঁজ করে অভির শরীরের ওপরে উঠিয়ে আনে আর তাঁর ফলে রাত্রিবাস নিচের দিক থেকে উঠে এসে কোমরের কাছে চলে আসে। অভির হাতের সামনে পরীর উন্মুক্ত পেলব জানু। চোখের সামনে উন্মুক্ত পরীর নারীসুধার দ্বার।

অভি এই প্রথম পরীর মিলনের উন্মুখ চাহিদা টের পায়, পরী হাত নিয়ে আসে অভির কোমরের কাছে, বোতাম খুলে অভির সিংহ কে মুক্ত করার জন্য উন্মুখ পরী। পরীর নরম আঙ্গুলের ছোঁয়ায় অভির সিংহ শত গুন বেড়ে ওঠে, কেশর ফুলিয়ে নিজের অস্তিতের জানান দেয়। আলতো করে কাঁধ নাড়িয়ে কাঁধের থেকে রাত্রিবাস নামিয়ে দেয় পরী, সারা ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত। রাত্রিবাস কোমরের কাছে সরু এক বেষ্টনীর মতন জড়িয়ে। অভি বিছানায় শুয়ে পরে, পরীকে ওর ওপরে টেনে নেয়। পায়ের ফাঁকে কঠিন শলাকার পরশ পেয়ে পরী দুচোখ বন্ধ করে নেয়। অভি ওর কোমল নিতম্ব দুই হাতের মুঠিতে নিয়ে পিষে ফেলে আর ওর কোমর চেপে ধরে নিজের কোমরের ওপরে। অভির কঠিন শলাকা প্রেয়সীর সুখের দ্বারে বারে বারে ধাক্কা মারে। পরী অল্প ঠোঁট খুলে মৃদু শীৎকার করে ওঠে। অভি দুই হাতের থাবায় পরীর কোমল নিতম্ব চেপে পিষে একাকার করে দেয়। ফর্সা ত্বক লাল হয়ে ওঠে অভির কঠিন পেষণের ফলে।

ওকে জড়িয়ে ধরেই অভি ঘুরে শুয়ে যায়, পরীকে নিচে ফেলে দেয়। পরী দুই পা ফাঁক করে, জানু ভাঁজ করে অভিকে আহবান জানায় ওকে গ্রহন করার জন্য। অভির কোমর থেকে প্যান্ট নিচে ঠেলে নামিয়ে দেয়, বেড়িয়ে পরে অভির কঠিন অঙ্গ, সোজা গিয়ে স্পর্শ করে পরীর সিক্ত নারী দ্বার। ককিয়ে ওঠে তপ্ত কঠিন পরশে। অভি ওর বাহুর নিচ থেকে হাত নিয়ে গিয়ে মাথার পেছনে ধরে নিজেকে পরীর জানু মাঝে নিবিষ্ট করে। ধিরে ধিরে অভির সিংহ পরীর সিক্ত কোমল গুহার মধ্যে প্রবেশ করে। সিক্ত গুহার দেয়ালে তপ্ত শলাকার পরশে পরীর কমনীয় দেহে ধনুকের মতন বেঁকে ওঠে। ঠেলে ধরে জানুসন্ধি অভির কঠিন অঙ্গের ওপরে। সুখের শীৎকার করে ওঠে পরী। অভি যেন উমত্ত এক প্রেমিক, মত্ত খেলায় মেতেছে প্রেমিকার কোমল শরীর নিয়। বারে বারে আছড়ে পিছরে একাকার করে দেয় পরীর কোমল শরীর।

মত্ত খেলার চুরান্ত সময়ে পরী ওর পিঠের ওপরে উত্তেজনায় দশ নখ বসিয়ে দেয়, আঁচর কেটে রক্ত বার হয়ে যায়। অভির লাভা সিক্ত করে দেয় পরীর গহ্বর। অভি ওর ঘাড় কামড়ে ধরে, দাঁতের দাগ বসে যায় পরীর নরম ফর্সা ত্বকের ওপরে। উন্মত্ত প্রায় প্রেমের খেলার ফলে দুই কপোত কপোতীর সারা শরীরে সহস্র আঁচর কামরের দাগ পরে যায়। খেলা শেষে দুজনে হাঁপিয়ে ওঠে, অভি চুপ করে পরীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকে। পরী ওর বুকের ওপরে হাত ভাঁজ করে চিবুক রেখে ওর আধবোঝা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। একে ওপরে নগ্ন দেহের উত্তাপ নেয়।

পরী ওর দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হেসে বলে, "আমার মিষ্টি শয়তান আজ যেন একটু বেশি উত্তেজিত ছিল। সবসময়ে যেন একটু বেশি বেশি রকমের উত্তেজিত থাকে। এবারে আমার ছোটো রাজকুমার তার পরীকে নিয়ে থাকতে পারবে বলে মনে হচ্ছে।"

অভি, "আগে কি তোমার মনে কোন সংশয় ছিল নাকি?"

মাথা দোলায় পরী, "না না, আমার সোনা কখন উদ্দাম হয়ে ওঠে আবার কখন শান্তি মনে প্রেম করে।"

অভির সারা শরীর উদ্দাম খেলার বসে অবস হয়ে আসে, চোখ বুজিয়ে দুই হাতে চেপে ধরে পরীর কোমর।

পরী ওর কানে কানে ফিসফিস করে বলে, "সোনা এবারে আমাকে যেতে হবে, আমার ঘুম পাচ্ছে।" বুকের ওপরে চুমু খেয়ে উঠে পরে পরী, "বাকি টুকু কাল রাতে হবে, অভি। কাল যখন তুমি কাগজে রঙ করতে শুরু করবে, তারপরে।"

চোখ বন্ধ করে নেয় অভি, কখন যেন ঘুমিয়ে পরে।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#62
Part Omega

বুকভাঙ্গা অশ্রু (#01)

জীবন বড় বেদনাদায়ক, ঠিক যেন দাবার ৬৪ ছকে বাঁধা, একটা ছোটো ভুল কত বড় রুপ নিয়ে দাঁড়ায় সেটা কি আর কেউ জানত? অভির আর পরীর জীবনে এই রকম একটা ছোটো ভুল পদক্ষেপ ওদের জীবন তছনছ করে দেয়।

সকাল বেলা, প্রায় দশটা সাড়ে দশটা নাগাদ, অভি বসার ঘরে বসে চায়ের কাপে আরাম করে চুমুক দিচ্ছিল। পরী রান্না ঘরের কাজে ব্যাস্ত ছিল। আকাশ সকাল থেকে মেঘলা, কোলকাতার বৃষ্টির ঠিক ঠিকানা নেই কখন কি ভাবে এসে পরে। মা সেইদিন আর কলেজে যাননি, তাঁর আগের দিন, মায়ের শরীর একটু খারাপ ছিল। এমন সময়ে ওপরে নিজের ঘর থেকে মায়ের গলা শুনতে পেল অভি, মনে হয় অভির ঘরে বিছানার চাদর বদল করছিলেন।

মা নিচে নেমে অভির দিকে রক্তাক্ত চোখে তাকিয়ে পরীকে ডাক দিলেন, "পরী এদিকে আয়।"

মায়ের হাতে বালিশের কভার।

পরী ওর ছোটমায়ের গোল এত গম্ভির হতে পারে, ভাবতে পারেনি। হন্তদন্ত হয়ে রান্না ঘর থেকে ছুটে এসে মাকে জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছে ছোটমা?"

মা ওকে জিজ্ঞেস করলেন, "তুই সকাল থেকে তোর মুক্তোর কানের দুল খুজছিলিস, পেয়েছিস সেটা?"

পরী অভির দিকে হাঁ করে তাকিয়ে, অভি জানেনা যে পরী ওর কানের দুল হারিয়েছে। মাকে উত্তর দেয়, "না ছোটমা, এখন খুঁজে পাইনি।"

মা বালিশের কভার থেকে কানের দুল বের করে পরীর সামনে ধরে জিজ্ঞেস করলেন, "এটা কি তোর কানের দুল?"

মায়ের হাতে পরীর মুক্তোর কানের দুল দেখে, অভির গলা শুকিয়ে যায়, বুকের মাঝে এক ভয় ঢুকে খাঁ খাঁ করে দেয়, সারা শরীরের রক্ত যেন মুখের ওপরে এসে জমা হয়ে যায়। ওর মাথায় যেন কেউ গরম তেল ঢেলে দিয়েছে। পরীর কান মুখ লাল, ভয়ে মৃদু কাঁপছে পরী। কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মায়ের দিকে তাকিয়ে।

মা অভির দিকে তাকিয়ে হিম শিতল কণ্ঠে বলেন, "পরীর কানের দুল, তোর বালিশের কভারে, কেন? এর কি ব্যাখা আছে শুনি?"

বড় নিঃশ্বাস নেয় অভি, "পরী হয়ত আমার ঘরে কোন কাজ করতে গেছিল সেই সময়ে ওর কানের দুল হয়ত পরে গেছে। আমি কি করে জানব, কখন পড়েছে।"

মা দাঁতে দাঁত পিষে অভির দিকে তাকিয়ে বলেন, "কাল রাতে খাওয়ার সময়ে ওর কানে আমি দুল দেখেছিলাম আর আজ সকালে সেই দুলের একটা তোর বিছানায়।"

মা পরীর দিকে দু পা এগিয়ে, ঘাড়ের কাছ থেকে চুল সরিয়ে দেখে যে ঘাড়ে অভির দাঁতের লাল দাগ। মায়ের চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে, "তোর ঘাড়ে এই লাল দাগ কিসের?"

পরী দুচোখ বন্ধ করে নেয়, দাঁতে দাঁত পিষে বুকের মাঝের ভয় টাকে সংবরণ করতে প্রবল চেষ্টা করে। ভয়ে গা হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যায় পরীর। মা পরীর মুখের দিকে তাকিয়ে ঠাণ্ডা গলায় গর্জে ওঠেন, "তাহলে ব্যাপার এত সঙ্গিন যে, তোর কাঁধে দাঁতের দাগ। হ্যাঁ?"

অভি মাথা নিচু করে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, চোখে জল, কান গরম হয়ে গেছে অভির, গলা শুকিয়ে এসেছে। মা সপাটে এক থাপ্পর কষিয়ে দেন অভির গালে আর রাগে চিৎকার করে ওঠেন, "আমার নাকের নিচে থেকে এই কান্ড?"

রাগে কাঁপতে কাঁপতে মা সোফায় বসে পড়েন। মাথায় হাত দিয়ে বলেন অভিকে বলেন, "আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে তুই ওর সাথে এই রকম করবি।"

পরী মায়ের কাছে এসে কিছু বলতে চেষ্টা করে, কিন্তু মায়ের লাল চোখ দেখে সাহসে কুলায় না পরীর, চুপ করে পাথরের মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে থাকে মায়ের পাসে।

মা পরীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন, "এটা কি পরী, তুই ওর চেয়ে বড়, আর তুই... সম্পর্কে তুই ওর মাসি।"

পরী মায়ের পায়ের কাছে বসে পরে, মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকে এক ভাবে। অভি পরীর হাঁটু গেড়ে থাকা দৃশ্য সহ্য করতে পারেনা, বুক ফেটে যায় ওর।

মা অভির দিকে রোষ কষিত নয়নে দেখে বলেন, "তোর একবারের জন্যেও মনে হল না যে পরী তোর মাসি আর তুই পাপ করছিস? এই সব শুধু তোর লালসার কারন, তোর গায়ের গরম রক্তের জন্যে তুই মেয়েটার জীবন অপবিত্র করে দিলি?"

পরীর চোখের জল মায়ের পায়ের কাছে, মেঝেতে টপ টপ করে পরে। কারুর মুখে কোন কথা নেই কিন্তু মনে হল যেন ওই চোখের জলের বুক ফাটা শব্ধ ওদের নিস্তব্ধতা খানখান করে দিচ্ছে। পরীর বুক কেঁপে ওঠে থেকে থেকে ডুকরে কেঁদে ওঠে। মা অভির দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠেন, "কুলাঙ্গার তুই, আমাদের মুখে মুখে কালি দিয়ে দিলি। এই সব কিছু তোর পাপের ফল।"

আর থাকতে না পেরে অভি জোর গলায় উত্তর দেয়, "আমি পরীকে ভালোবাসি।"

মা বিশ্বাস করতে পারেন না, জোর গলায় জিজ্ঞেস করেন, "কি? তুই শেষ পর্যন্ত এই দিলি আমাকে আর ওকে? তুই ভালোভাবে জানিস যে পরী তোর চেয়ে বয়সে বড়, সম্পর্কে তোর মাসি হয়। আমার সম্পর্কে বোন আর তোর দিদার মেয়ে।"

অভি মাকে বুঝানোর চেষ্টা করে, "মা, পরী আমার মাসি নয়, মা। ও তোমার বোন হতে পারে, কিন্তু আমার মাসি নয়। ও তোমার অনেক দূর সম্পর্কের বোন মা সেটা তুমি ভালো করে জানো মা। মা আমাদের মাঝে রক্তের কোন সম্পর্ক নেই মা। ও আমার মাসি নয়, আমি ওকে ভালোবাসি।"

মা মাথা নাড়ান, "না না না, এ হতে দিতে পারি না আমি।"

মা পরীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন, "তোর মাথায় কি চলছিল, যখন অভি তোর সাথে এই সব করছিল? তোর একবারের জন্য কিছু মনে হয় নি, পরী? বল, পরী, তুই কি অভিকে ভালবাসিস?"

পরী মাথা দোলায়, হ্যাঁ অভিকে ও ভালবাসে।

ওই কথা জানার পরে মায়ের দুচোখে জল চলে আসে। দুঃখে বা ভালবাসায় নয়, রাগে আর ঘৃণায় চোখে জল আসে মায়ের। পরীর চিবুকে আঙুল দিয়ে পরীর মুখ উঁচু করে নিজের দিকে ফেরায়। পরী দুচোখ শক্ত করে বন্ধ করে রাখে। মা ওকে জিজ্ঞেস করেন, "একবারের জন্যেও তোর আমার কথা, তোর মায়ের কথা মনে পরেনি? একবারের জন্যেও না? আমি যে তোদের দুজনকে একসাথে বড় করেছি রে।"

পরীর বুক ফাটা আর্তনাদ যেন শুধু একা অভি শুনতে পায়। দুচোখে অবিরাম স্রাবনের ধারা বয়ে চলে। অভির বুকের মাঝে যেন এক বিশাল রেল গাড়ি ঝম ঝম করে দৌড়ে চলে যায়।

মাকে আবার একবার বুঝানোর চেষ্টা করে অভি, "মা, পরী, তোমার মায়ের মামার ছোটো মেয়ের ছোটো মেয়ে, মা। দেখতে গেলে আমাদের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই মা। হ্যাঁ আমার চেয়ে বড় হতে পারে পরী, কিন্তু মা আমি ওকে ভালোবাসি আর বয়সের ব্যাবধান কোন বাধা নয় মা।"

মা ওর দিকে তাকিয়ে গর্জে ওঠেন, "তুই চুপ কর। তুই সত্যি আমাদের জন্য এক কলঙ্ক। সেই ছোটো বেলা থেকে তুই কোন দিন আমাদের কথা শুনিস নি, নিজের কথা মত সবসময়ে কাজ করিস।"

মায়ের কথা আর সহ্য করতে পারেনা অভি, সব সময়ে শুধু একই কথা যে ও কুলের নাম ডুবিয়েছে।

মায়ের দিকে চিৎকার করে ওঠে অভি, "আমি তোমার ছেলে হয়েও কেন তোমার ভালোবাসা পেলাম না মা, কেন?"

অভির কানে সেই প্রথম অকাঠ সত্য কথা প্রবেশ করে। মা ওর দিকে তাকিয়ে উত্তর দেন, "আমি আর তোর বাবা, কোনদিন ছেলে চাই নি, কিন্তু ভগবান বিরূপ। সেই আমাকে ছেলেই দিল। আমাদের শারীরিক কিছু কারনে আর আমার কোন সন্তান হল না। আমি ছেলে চাই নি।"

হাতের মুঠি শক্ত করে নেয় অভি, একি শুনছে, "আমার জন্মে আমার কি দোষ মা। আমি সারা জীবন শুধু দুঃখ পেয়ে গেলাম তোমাদের কাছে। আমার যা কিছু ভালো লাগে তাই তোমরা কেড়ে নিয়েছ। আমার মনের শান্তি, আমার পেন্টিং আরও অনেক কিছু। মা দয়া করে পরীকে আমার কাছে থেকে কেড়ে নিও না মা। আমি মরে যাবো, পরী বাঁচবে না মা।"

সারা ঘর নিস্তব্ধতায় ডুবে যায়। বাইরের আকাশ যেন আরও কালো হয়ে আসে। থেকে থেকে মেঘ গর্জন করে ওঠে। ঘরের পরিবেশ মেঘের সাথে সাথে, কালো হয়ে আসে। পরী বুকের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে মায়ের হাতে হাত রেখে ম্যের দিকে তাকায়।

মা পরীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, "তোর কি বলার আছে?"

পরী কাঁদো কাঁদো গলায় বলে, "ছোটমা, অভিকে আমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দিও না ছোটমা, আমি বাঁচবও না ছোটমা।"

মা দাঁতে দাঁত পিষে মাথা নাড়ান, "না না, আমি বেঁচে থাকতে এ পাপ হতে দিতে পারিনা। সমাজ কি বলবে? আমাদের আত্মীয় সজ্জন কি বলবে?"

অভি চিৎকার করে ওঠে, "কোথায় ছিল তোমার সমাজ যখন দাদু মারা যান? কোথায় ছিল তোমার আত্মীয় যখন পরীর মুখে দুধ জটেনি? কেউ আসে নি ওকে দেখতে। তুমি ওকে দুধ খাইয়েছিলে মা, তুমি ওকে বড় করেছিলে। আমি সমাজের কথা জানিনা মা, আমি আত্মীয় সজ্জনদের কথাও শুনি না। তুমি কি ভাব সেটা বল, মা।"

মা খানিক ক্ষণ চুপ করে থেকে উত্তর দেন, "আমি আর তোর বাবা এই সমাজের এক সনামধন্য ব্যাক্তি। আত্মীয় সজ্জন, পরিবার পরিজন মিলে সমাজ তৈরি। আমি বেঁচে থাকতে এই পাপ হতে দিতে পারিনা। অভি, তুই পরীর ধারে কাছে থাকতে পারবি না। তোরা দুজনে একসাথে থাকতে পারিস না। আমি চাই না তুই পরীর হাজার মাইলের মধ্যে আয়। আজই তোকে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে।" মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে অভি, মা কি বলছেন? মা ওকে বাড়ি ছাড়া হতে বলছেন? মা বলে চলেন, "আমি মাসিমা কে, পরীর মাকে কথা দিয়েছি যে আমি ওকে দেখব। যত দুঃখ কষ্ট হোক, আমি আমার কথা রাখব। আজ থেকে তেইশ বছর আগে, আমি এই বুক কেটে দু ভাগ করে পরীকে বড় করেছিলাম যাতে ও বেঁচে থাকে। আজ আবার আমি সেই বুক কাটতে রাজি, যাতে ওর স্বপ্ন পূরণ হয় আর ও বড় হতে পারে।"
Like Reply
#63
বুকভাঙ্গা অশ্রু (#02)
পরী দুঃখে ককিয়ে ওঠে, বেদনায় চিৎকার করে ওঠে গলা ফাটিয়ে, "ছোটমা, আমি মাস্টার্স করতে চাই না, আমি কিছু চাই না, শুধু অভিকে আমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দিও না ছোটমা। কে কি বলে আমি তার ধার ধারিনা ছোটমা, শুধু ওকে আমার কাছ থেকে দুরে করে দিও না, ছোটমা, আমি বাঁচবও না।"
মায়ের কানে পরীর কান্না ভেজা আর্তনাদ প্রবেশ করে না, চুপ করে বসে থাকেন।
অভি মায়ের দিকে তাকিয়ে রেগে যায়, চিৎকার করে ওঠে, "তুমি তোমার আত্মসন্মান আর স্বভিমান নিয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকলে। আমি যদি এই বাড়ি থেকে চলে যাই তাহলে আমি পরীকে সাথে নিয়ে যাবো।"
মা, "না, কারুর ক্ষমতা নেই, ওকে আমার কাছ থেকে আলাদা করে নেওয়ার। পরীর মাথায় হাত রেখে তোকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে তুই কোনদিন কোলকাতা আসবি না, তুই কোনদিন ওর সামনে আসবি না।"
মায়ের আদেশ শুনে অভি পাথরের মূর্তির মতন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। মা ওর হাত টেনে ধরে পরীর মাথায় রাখে, অভির বুক ফেটে যায় হাতের ওপরে পরীর চুলের পরশ পেয়ে। এক ভীষণ ভুমিকম্প এসে যেন ওদের জীবন টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দিয়ে চলে যায়। পরী ঠোঁট কামড়ে চোখ বন্ধ কয়রে ফেলে, মাথায় অভির হাত। মরমে যেন মরে যায় পরী।
চাপা ককিয়ে ওঠে, "না......"
মায়ের কোলে মাথা গুঁজে কেঁদে ফেলে। মা ওর দিকে তাকায় না।
মা পরীকে বলেন, "তোর মাকে আমি কথা দিয়েছিলাম, যে তোকে আমি আগলে রাখবো। আমার মান সন্মান আজ সমাজের কাঠগোরায় দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর সেই জন্যেই অভিকে বাড়ি ছাড়তে হবে, এমনকি কোলকাতা ছেড়ে চলে যেতে হবে ওকে। আমি চাই না ওর ছায়া পর্যন্ত তোর কাছে আসুক।"
মা অভির দিকে তাকিয়ে আদেশ দিলেন, "দাঁড়িয়ে আছিস কেন, নিজের ঘরে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নে। আমি তোর বাবা কে এখুনি ফোন করে কাল সকালের দিল্লীর জন্যে প্লেনের টিকিট কাটতে বলে দিচ্ছি। আর এক দিনের জন্যেও তুই এই ছাদের তলায় থাকতে পারবি না। কথা দে, আমি যত দিন না বলব, তত দিন তুই কোলকাতা আসবিনা আর আমাদের বাড়িতে ফোন করবি না। যদি আমার কথা না রাখিস তাহলে তুই পরীর মরা মুখ দেখবি।"
মায়ের কথা শুনে অভির যেন দুই পা কেউ মেঝের সাথে পেরেক দিয়ে গেঁথে দিয়েছে, নড়ার শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলে অভি। পরী মুখ নিচু করে কাঁদে, বুকের মাঝে এক বিশাল আগ্নেয়গিরি ফেটে পড়েছে ওর। শক্ত করে হাত চেপে ধরে পরী, হাতের সরু সোনার চুড়ি বেঁকে গিয়ে কবজিতে ফুটে যায় আর রক্ত বের হতে শুরু করে, কিন্তু সেই বেদনা যে মনের বেদনার কাছে খুব কম। অভির চোখের সামনে সারা পৃথিবী বন বন করে ঘুরতে শুরু করে দেয়।
অভিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মা চিৎকার করে ওঠেন, "দূর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে, আমি তোর মুখ দেখতে চাই না।"
কোনোরকমে টলতে টলতে অভি নিজের ঘরে ঢোকে। জানেনা, পরীর কি হবে বা বাবাকে মা কি বলবেন। বাকি সারাদিন নিজেকে নিজের ঘরে বন্ধ করে রাখে। শেষ পর্যন্ত মৈথিলীর অভিশাপের কথা মনে পরে যায়, মৈথিলী যেন ওর দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে, "জীবন যুদ্ধে তুমি শেষ পর্যন্ত হেরে গেলে, অভিমন্যু।"
বিকেলে বাবা ওর ঘরে আসেন। হাতে একটা খাম আর দিল্লীর টিকিট দিয়ে বলেন, "আমরা তোর বাবা মা, আমরা তোর ভালোই চাইব। যতদিন তুই চাকরি না পাস, তত দিনের জন্য আমি সুপ্রতিমের আকাউন্টে কিছু টাকা পাঠিয়ে দেব।"
বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়, আকাশ যেন সেদিন জলের বদলে রক্তের বৃষ্টি করে। পরীর আর অভির বুকের রক্ত যেন আকাশ কেঁদে কেঁদে জল করে সারা জায়গায় ছড়িয়ে দেয়, কিন্তু কেউ সেই কান্না শুনতে পায় না।
রাত একটা নাগাদ, জামা কাপড় পরে, ব্যাগ হাতে নিচে নেমে আসে অভি। আসার আগে নিজের ঘরে সেই ডায়রি খোঁজে, কিন্তু পায় না, ভাবে হয়ত পরীর কাছে থাকবে।
শেষ বারের মতন বাড়ি থেকে অরুনাকে ফোন করে। অরুনা অত রাতে ফোন ধরে জিজ্ঞেস করে, "কিরে, কি হয়েছে? এত রাতে ফোন করেছিস কেন?"
অভি, "আমি কোলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছি, সকালের ফ্লাইট। আমার সাথে পারলে এয়ারপোর্টে দেখা করিস।"
চাপা চিৎকার করে ওঠে অরুনা, "কি হয়েছে?"
অভি, "ফোনে বলতে পারছিনা, সকালে এয়ারপোর্টে বলব।"
শেষ বারের মতন বাড়ির ফোনে কথা বলে রিসিভার রেখে দেয়।
সারা রাত বসার ঘরে চুপ করে বসে থাকে অভি। মায়ের ঘরে মা জেগে, পরীর ঘরে পরী দরজা বন্ধ করে কাঁদে। শেষ বারের মতন পরীর সাথে দেখা করার অবকাশ টুকু পায় না অভি, বুকের মাঝে হুহু করে কেঁদে ওঠে যখন পরীর বন্ধ দরজার দিকে চোখ যায়।
সকাল চারটে নাগাদ মায়ের দরজায় টোকা মারে অভি, জানায় যে এবারে ও চলে যাবে। মা কোন উত্তর দেন না। বাবা বেড়িয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন, "প্লেন তো সাত টায়, এখুনি বের হবি কেন?"
বুকের পাঁজর ভেঙ্গে যায় অভির তাও উত্তর দেয় বাবাকে, "এই বাড়িতে আমার থাকার সময় শেষ হয়ে এসেছে।"
মাথা নিচু করে বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করে অভি, শেষ বারের জন্য মেঝে ছুঁয়ে মাকে শেষ প্রনাম জানায়। ব্যাগ হাতে নিয়ে বেড়িয়ে যায় দরজা দিয়ে। বাবা বাইরের গেট পর্যন্ত ওর সাথে আসেন। গেট থেকে বেড়িয়ে যাবার আগে, শেষ বারের জন্য বাড়ির দিকে তাকায় অভি। দুতলার বসার ঘরের জানালার পর্দা হালকা নড়ে ওঠে। তাকিয়ে দেখে যে পরী জল ভরা চোখে জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে। কাজল কালো চোখ দুটি রক্ত জবার মতন লাল হয়ে উঠেছে। বুক ফেটে কান্নার সুর অভির কানে এসে বাজে। পরীর বুকের পাঁজর ওর কাছ থেকে দুরে চলে যাচ্ছে, পরী বাঁচবে কি নিয়ে।
অভি নিচু হয়ে বাগানের একটু মাটি তুলে নিয়ে পরীর সেই সিল্কের রুমালে বেঁধে নেয়। ট্যাক্সি তে ওঠার আগে জানালার দিকে শেষ বারের মতন তাকায় অভি। ওর দিকে তর্জনী উঠিয়ে ইশারায় জানায় "আই", ইশারা দেখে পরী নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে। তারপরে তর্জনী আর বুড়ো আঙুল মেলে ধরে ইশারা করে, "এল", পরীর বুকে কেঁপে ওঠে, প্রানপন নিজেকে থামাতে চেষ্টা করে। তারাপরে অভি, মধ্যমা আর অনামিকে মেলে ধরে ওর দিকে ইশারা করে, "ইউ"
পরী জানালার গ্রিল শক্ত করে ধরে থাকে, প্রানপন চেষ্টা করে সেই লোহার গ্রিল ভেঙ্গে অভির কাছে ঝাঁপিয়ে চলে যাওয়ার, কিন্তু লোহার গ্রিল আর সমাজের কঠিন বন্ধন পরীকে ঝাঁপ দিতে দেয় না। পরী আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা, সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। এক বার আগেও পরী সংজ্ঞা হারিয়ে লুটিয়ে পড়েছিল, তখন অভিকে সবাই ডেকে ছিল, কিন্তু সেই সময় আর আজকের সময় অনেক ভিন্ন। সেদিন চেয়েও অভি দৌড়ে পরীর কাছে গিয়ে ওর মাথা নিজের কোলে তুলে নিতে পারে না।
জল ভরা চোখ, ভাঙ্গা বুক নিয়ে অভি ট্যাক্সি চাপে। মনে মনে ভগবানের কাছে প্রার্থনা জানায় যে, পরীকে যেন শান্তি দেয় ওকে যেন সুখে রাখে, নিজের জীবনে ত কিছুই পেলনা শেষ পর্যন্ত। পরীর কাছে হয়ত ওর একমাত্র চিনহ স্বরুপ পর ডায়রি থেকে যাবে আর অভির কাছে ওর রুমাল, তার সাথে পরীর এক বিন্দু রক্ত ওর শিরা উপশিরায় মিশে।
21শে জুলাই, 2001, শনিবার। সকাল চারটে নাগাদ এয়ারপোর্টে পৌঁছে লক্ষ্য করে যে অরুনা আর সমুদ্রনীল উপস্থিত। অরুনা অভির কাছে দৌড়ে এসে কলার ধরে জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছে তোর বাড়িতে? তুই কেন কোলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছিস? শুচিদির কি হবে?"
অভি, "আমি চিরদিনের জন্য কোলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছি।"
চাপা চিৎকার করে ওঠে অরুনা, "কেন?"
অভি পুরো ঘটনা জানায় অরুনাকে।
সব শুনে অরুনা কেঁদে ফেলে, "আমাকে আগে কেন জানাস নি তুই?"
অভি, "কি করে জানাতাম রে। সবকিছু কেমন ঝড়ের বেগে এসে আমাদের জীবন তছনছ করে দিয়ে চলে গেল। মা জেগে বসে আমি কি করে তোকে জানাই এই সব কথা।"
অরুনা যেন বিশ্বাস করতে পারছিলনা যে অভিমন্যু কোলকাতা ছেড়ে চলে যাবে। অভির দিকে তাকিয়ে সমানে কেঁদে চলে অরুনা, পেছনে সমুদ্রনীল দাঁড়িয়ে, যেন কিছু বলার ভাষা খুঁজতে চেষ্টা করে।
অরুনা, "আমি কাকিমার সাথে কথা বলব, তুই যাস না।"
অভি, "সেই পথ বন্ধ অরুনা। মা এত খনে ভালভাবে বুঝতে পেরে গেছেন যে তুই আগে থেকে আমার আর পরীর ভালবাসার কথা জানতিস, তাই আমার মা হয়ত তোকে আমাদের বাড়ি ঢুকতে পর্যন্ত দেবে না। পরীর মাথায় হাত রেখে আমাকে প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছে যে আমি কোনদিন পরীর সাথে দেখা করতে পারবোনা বা কোনদিন কোলকাতা ফিরতে পারবোনা। আমি মরে যাবো কিন্তু পরীর গায়ে কোন আঁচড় আসুক আমি চাই না, অরুনা।"
অরুনা অভিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে। বুকের জামা ভিজে যায় অরুনার চোখের জলে। অভির বুক ফেটে যায় পরীর দুঃখে আর অরুনার কান্না দেখে। দুহাতে শেষ বারের মতন অরুনাকে জড়িয়ে ধরে অভি, মাথার ওপরে ঠোঁট চেপে সমুদ্রনীলের দিকে ঝাপসা চোখ নিয়ে তাকায়।
কাঁপা গলায় বলে সমুদ্রনীলকে, "আমি চেক ইন করার আগে অরুনাকে নিয়ে চলে যা।"
সমুদ্রনীল উত্তর দেয়, "তুই ওকে ভালো ভাবে চিনিস, অভি। ওই বোর্ডে যতক্ষণ না লেখা ফুটবে যে আই সি 264 Departed. ততক্ষণ অরুনা এখান থেকে নড়বে না। আমি জানি না রে অভি, তুই যাবার পরে অরুনার কি হবে। ও শুচিদিকে খুব ভালবাসত রে।"
অভি, "আমাকে কথা দে, তুই ওকে দেখবি, দয়া করে ওর চোখে জল আনিস না রে। আমার হয়ে, পরীর হয়ে ওকে ভালবাসিস তুই, আমি পুবালিকে কথা দিয়েছিলাম, সেই কথা আমি ত আর রাখতে পারলাম না, তুই রাখিস।"
কোনোরকমে জোর করে অরুনাকে ছাড়িয়ে ওর হাত সমুদ্রনীলের হাতে তুলে দেয়। অরুনা কিছুতেই অভিকে ছাড়তে চায় না, প্রাণপণে জামার কলার আঁকড়ে ধরে থাকে। শেষ পর্যন্ত বহু কষ্টে বুকের পাঁজর ভেঙ্গে দিয়ে অভি পেছনে সরে আসে আর জামার একটা বোতাম ছিঁড়ে অরুনার হাতে থেকে যায়। অভি পেছনে না তাকিয়ে সোজা, চেক ইন করার দিকে হাতা দেয়।
পেছন থেকে অরুনা ডুকরে কেঁদে ওঠে, "আজ আমি আমার জীবনের সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি অভি।"
সিকুরিটি চেক করার আগে শেষবারের মতন অরুনার জল ভরা চোখের দিকে তাকায়। চোখের মণি, প্রিয় বান্ধবী অরুন্ধতি ব্যানারজির জল ভরা চোখ ওর দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে।
প্লেন রানওয়ে দিয়ে দৌড়তে শুরু করে। অভি দাঁতে দাঁত পিষে চোখ বন্ধ করে বসে থাকে। প্লেনের ঝন ঝন আওয়াজ যেন ওর বুকের পাঁজরের ভাঙ্গা আওয়াজ মনে হয়। একটা একটা করে ভাঙ্গে ওর শরীরের হাড়। বারে বারে মাথা পেটায় সিটের পেছনে। আগে এক বার এই প্লেন অভিকে নিয়ে উড়েছিল পরীর সাথে অজানার পানে ভ্রমনে। সেই একই প্লেনে করে উড়ে ও ফিরে পেয়েছিল প্রানের বান্ধবীকে। কিন্তু সেইদিনের উড়ান বাকি দিনের উড়ানের চেয়ে অনেক অনেক আলাদা, এবারে ওকে সবকিছু ছেড়ে যেতে হবে, সাধের প্রান প্রেয়সী আর চোখের মনি দেবী অরুন্ধুতি।
শেষ পর্যন্ত প্লেনের চাকা উঠে গেল প্লেনের দেহে। অভির শরীর যেন এক বিশাল ধাক্কা খেল, যেন এক লোহার শেকল ছিঁড়ে গেছে অবশেষে। মাথার মধ্যে সেই লোহার শেকলের শত সহস্র টুকরো ছড়িয়ে পড়েছে। এতদিন যা যা প্রতিজ্ঞা করেছিল অভি, সব যেন ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেল প্লেনের ওড়ার সাথে সাথে।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে ওর প্রেয়সীর জন্য একটা কুঠির বানিয়ে দেবে।
অভির সুটকেসে ভাঁজ করে রাখা প্রেয়সীর ছবি যেটা শেষ করতে পারেনি।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে বুড়ো হলে ওরা দুজনে মিলে একসাথে বসে ওর ডায়রি পড়বে।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে প্রেয়সীর সাথে দোলনায় বসে বিকেলের চা খাবে সেই পাহাড়ের কুঠিরের সামনে।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে বয়স কালে ওরা কি বৃদ্ধাশ্রমে একসাথে থাকবে।
অভির সব প্রতিজ্ঞা সেইদিন ভেঙ্গে যায়।
ঝাপসা চোখের সামনে তিন খানি চেহারা ভেসে ওঠে।
পরীর জল ভরা লাল চোখ, দু গাল বেয়ে টপ টপ করে জল পড়ছে, হৃদয় ভেঙ্গে সহস্র টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেছে পরীর।
অরুন্ধুতির হৃদয় বিদারক কান্নার আর সেই ডাক।
মায়ের ক্রোধিত নয়ন।
.
..
...
....
.....
......
.......
.........
..........
বিদায় শুচিস্মিতা, বিদায় অরুন্ধতি, বিদায় কোলকাতা।
পরী দুঃখে ককিয়ে ওঠে, বেদনায় চিৎকার করে ওঠে গলা ফাটিয়ে, "ছোটমা, আমি মাস্টার্স করতে চাই না, আমি কিছু চাই না, শুধু অভিকে আমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দিও না ছোটমা। কে কি বলে আমি তার ধার ধারিনা ছোটমা, শুধু ওকে আমার কাছ থেকে দুরে করে দিও না, ছোটমা, আমি বাঁচবও না।"
মায়ের কানে পরীর কান্না ভেজা আর্তনাদ প্রবেশ করে না, চুপ করে বসে থাকেন।
অভি মায়ের দিকে তাকিয়ে রেগে যায়, চিৎকার করে ওঠে, "তুমি তোমার আত্মসন্মান আর স্বভিমান নিয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকলে। আমি যদি এই বাড়ি থেকে চলে যাই তাহলে আমি পরীকে সাথে নিয়ে যাবো।"
মা, "না, কারুর ক্ষমতা নেই, ওকে আমার কাছ থেকে আলাদা করে নেওয়ার। পরীর মাথায় হাত রেখে তোকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে তুই কোনদিন কোলকাতা আসবি না, তুই কোনদিন ওর সামনে আসবি না।"
মায়ের আদেশ শুনে অভি পাথরের মূর্তির মতন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। মা ওর হাত টেনে ধরে পরীর মাথায় রাখে, অভির বুক ফেটে যায় হাতের ওপরে পরীর চুলের পরশ পেয়ে। এক ভীষণ ভুমিকম্প এসে যেন ওদের জীবন টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দিয়ে চলে যায়। পরী ঠোঁট কামড়ে চোখ বন্ধ কয়রে ফেলে, মাথায় অভির হাত। মরমে যেন মরে যায় পরী।
চাপা ককিয়ে ওঠে, "না......"
মায়ের কোলে মাথা গুঁজে কেঁদে ফেলে। মা ওর দিকে তাকায় না।
মা পরীকে বলেন, "তোর মাকে আমি কথা দিয়েছিলাম, যে তোকে আমি আগলে রাখবো। আমার মান সন্মান আজ সমাজের কাঠগোরায় দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর সেই জন্যেই অভিকে বাড়ি ছাড়তে হবে, এমনকি কোলকাতা ছেড়ে চলে যেতে হবে ওকে। আমি চাই না ওর ছায়া পর্যন্ত তোর কাছে আসুক।"
মা অভির দিকে তাকিয়ে আদেশ দিলেন, "দাঁড়িয়ে আছিস কেন, নিজের ঘরে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নে। আমি তোর বাবা কে এখুনি ফোন করে কাল সকালের দিল্লীর জন্যে প্লেনের টিকিট কাটতে বলে দিচ্ছি। আর এক দিনের জন্যেও তুই এই ছাদের তলায় থাকতে পারবি না। কথা দে, আমি যত দিন না বলব, তত দিন তুই কোলকাতা আসবিনা আর আমাদের বাড়িতে ফোন করবি না। যদি আমার কথা না রাখিস তাহলে তুই পরীর মরা মুখ দেখবি।"
মায়ের কথা শুনে অভির যেন দুই পা কেউ মেঝের সাথে পেরেক দিয়ে গেঁথে দিয়েছে, নড়ার শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলে অভি। পরী মুখ নিচু করে কাঁদে, বুকের মাঝে এক বিশাল আগ্নেয়গিরি ফেটে পড়েছে ওর। শক্ত করে হাত চেপে ধরে পরী, হাতের সরু সোনার চুড়ি বেঁকে গিয়ে কবজিতে ফুটে যায় আর রক্ত বের হতে শুরু করে, কিন্তু সেই বেদনা যে মনের বেদনার কাছে খুব কম। অভির চোখের সামনে সারা পৃথিবী বন বন করে ঘুরতে শুরু করে দেয়।
অভিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মা চিৎকার করে ওঠেন, "দূর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে, আমি তোর মুখ দেখতে চাই না।"
কোনোরকমে টলতে টলতে অভি নিজের ঘরে ঢোকে। জানেনা, পরীর কি হবে বা বাবাকে মা কি বলবেন। বাকি সারাদিন নিজেকে নিজের ঘরে বন্ধ করে রাখে। শেষ পর্যন্ত মৈথিলীর অভিশাপের কথা মনে পরে যায়, মৈথিলী যেন ওর দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে, "জীবন যুদ্ধে তুমি শেষ পর্যন্ত হেরে গেলে, অভিমন্যু।"
বিকেলে বাবা ওর ঘরে আসেন। হাতে একটা খাম আর দিল্লীর টিকিট দিয়ে বলেন, "আমরা তোর বাবা মা, আমরা তোর ভালোই চাইব। যতদিন তুই চাকরি না পাস, তত দিনের জন্য আমি সুপ্রতিমের আকাউন্টে কিছু টাকা পাঠিয়ে দেব।"
বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়, আকাশ যেন সেদিন জলের বদলে রক্তের বৃষ্টি করে। পরীর আর অভির বুকের রক্ত যেন আকাশ কেঁদে কেঁদে জল করে সারা জায়গায় ছড়িয়ে দেয়, কিন্তু কেউ সেই কান্না শুনতে পায় না।
রাত একটা নাগাদ, জামা কাপড় পরে, ব্যাগ হাতে নিচে নেমে আসে অভি। আসার আগে নিজের ঘরে সেই ডায়রি খোঁজে, কিন্তু পায় না, ভাবে হয়ত পরীর কাছে থাকবে।
শেষ বারের মতন বাড়ি থেকে অরুনাকে ফোন করে। অরুনা অত রাতে ফোন ধরে জিজ্ঞেস করে, "কিরে, কি হয়েছে? এত রাতে ফোন করেছিস কেন?"
অভি, "আমি কোলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছি, সকালের ফ্লাইট। আমার সাথে পারলে এয়ারপোর্টে দেখা করিস।"
চাপা চিৎকার করে ওঠে অরুনা, "কি হয়েছে?"
অভি, "ফোনে বলতে পারছিনা, সকালে এয়ারপোর্টে বলব।"
শেষ বারের মতন বাড়ির ফোনে কথা বলে রিসিভার রেখে দেয়।
সারা রাত বসার ঘরে চুপ করে বসে থাকে অভি। মায়ের ঘরে মা জেগে, পরীর ঘরে পরী দরজা বন্ধ করে কাঁদে। শেষ বারের মতন পরীর সাথে দেখা করার অবকাশ টুকু পায় না অভি, বুকের মাঝে হুহু করে কেঁদে ওঠে যখন পরীর বন্ধ দরজার দিকে চোখ যায়।
সকাল চারটে নাগাদ মায়ের দরজায় টোকা মারে অভি, জানায় যে এবারে ও চলে যাবে। মা কোন উত্তর দেন না। বাবা বেড়িয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন, "প্লেন তো সাত টায়, এখুনি বের হবি কেন?"
বুকের পাঁজর ভেঙ্গে যায় অভির তাও উত্তর দেয় বাবাকে, "এই বাড়িতে আমার থাকার সময় শেষ হয়ে এসেছে।"
মাথা নিচু করে বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করে অভি, শেষ বারের জন্য মেঝে ছুঁয়ে মাকে শেষ প্রনাম জানায়। ব্যাগ হাতে নিয়ে বেড়িয়ে যায় দরজা দিয়ে। বাবা বাইরের গেট পর্যন্ত ওর সাথে আসেন। গেট থেকে বেড়িয়ে যাবার আগে, শেষ বারের জন্য বাড়ির দিকে তাকায় অভি। দুতলার বসার ঘরের জানালার পর্দা হালকা নড়ে ওঠে। তাকিয়ে দেখে যে পরী জল ভরা চোখে জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে। কাজল কালো চোখ দুটি রক্ত জবার মতন লাল হয়ে উঠেছে। বুক ফেটে কান্নার সুর অভির কানে এসে বাজে। পরীর বুকের পাঁজর ওর কাছ থেকে দুরে চলে যাচ্ছে, পরী বাঁচবে কি নিয়ে।
অভি নিচু হয়ে বাগানের একটু মাটি তুলে নিয়ে পরীর সেই সিল্কের রুমালে বেঁধে নেয়। ট্যাক্সি তে ওঠার আগে জানালার দিকে শেষ বারের মতন তাকায় অভি। ওর দিকে তর্জনী উঠিয়ে ইশারায় জানায় "আই", ইশারা দেখে পরী নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে। তারপরে তর্জনী আর বুড়ো আঙুল মেলে ধরে ইশারা করে, "এল", পরীর বুকে কেঁপে ওঠে, প্রানপন নিজেকে থামাতে চেষ্টা করে। তারাপরে অভি, মধ্যমা আর অনামিকে মেলে ধরে ওর দিকে ইশারা করে, "ইউ"
পরী জানালার গ্রিল শক্ত করে ধরে থাকে, প্রানপন চেষ্টা করে সেই লোহার গ্রিল ভেঙ্গে অভির কাছে ঝাঁপিয়ে চলে যাওয়ার, কিন্তু লোহার গ্রিল আর সমাজের কঠিন বন্ধন পরীকে ঝাঁপ দিতে দেয় না। পরী আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা, সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। এক বার আগেও পরী সংজ্ঞা হারিয়ে লুটিয়ে পড়েছিল, তখন অভিকে সবাই ডেকে ছিল, কিন্তু সেই সময় আর আজকের সময় অনেক ভিন্ন। সেদিন চেয়েও অভি দৌড়ে পরীর কাছে গিয়ে ওর মাথা নিজের কোলে তুলে নিতে পারে না।
জল ভরা চোখ, ভাঙ্গা বুক নিয়ে অভি ট্যাক্সি চাপে। মনে মনে ভগবানের কাছে প্রার্থনা জানায় যে, পরীকে যেন শান্তি দেয় ওকে যেন সুখে রাখে, নিজের জীবনে ত কিছুই পেলনা শেষ পর্যন্ত। পরীর কাছে হয়ত ওর একমাত্র চিনহ স্বরুপ পর ডায়রি থেকে যাবে আর অভির কাছে ওর রুমাল, তার সাথে পরীর এক বিন্দু রক্ত ওর শিরা উপশিরায় মিশে।
21শে জুলাই, 2001, শনিবার। সকাল চারটে নাগাদ এয়ারপোর্টে পৌঁছে লক্ষ্য করে যে অরুনা আর সমুদ্রনীল উপস্থিত। অরুনা অভির কাছে দৌড়ে এসে কলার ধরে জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছে তোর বাড়িতে? তুই কেন কোলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছিস? শুচিদির কি হবে?"
অভি, "আমি চিরদিনের জন্য কোলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছি।"
চাপা চিৎকার করে ওঠে অরুনা, "কেন?"
অভি পুরো ঘটনা জানায় অরুনাকে।
সব শুনে অরুনা কেঁদে ফেলে, "আমাকে আগে কেন জানাস নি তুই?"
অভি, "কি করে জানাতাম রে। সবকিছু কেমন ঝড়ের বেগে এসে আমাদের জীবন তছনছ করে দিয়ে চলে গেল। মা জেগে বসে আমি কি করে তোকে জানাই এই সব কথা।"
অরুনা যেন বিশ্বাস করতে পারছিলনা যে অভিমন্যু কোলকাতা ছেড়ে চলে যাবে। অভির দিকে তাকিয়ে সমানে কেঁদে চলে অরুনা, পেছনে সমুদ্রনীল দাঁড়িয়ে, যেন কিছু বলার ভাষা খুঁজতে চেষ্টা করে।
অরুনা, "আমি কাকিমার সাথে কথা বলব, তুই যাস না।"
অভি, "সেই পথ বন্ধ অরুনা। মা এত খনে ভালভাবে বুঝতে পেরে গেছেন যে তুই আগে থেকে আমার আর পরীর ভালবাসার কথা জানতিস, তাই আমার মা হয়ত তোকে আমাদের বাড়ি ঢুকতে পর্যন্ত দেবে না। পরীর মাথায় হাত রেখে আমাকে প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছে যে আমি কোনদিন পরীর সাথে দেখা করতে পারবোনা বা কোনদিন কোলকাতা ফিরতে পারবোনা। আমি মরে যাবো কিন্তু পরীর গায়ে কোন আঁচড় আসুক আমি চাই না, অরুনা।"
অরুনা অভিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে। বুকের জামা ভিজে যায় অরুনার চোখের জলে। অভির বুক ফেটে যায় পরীর দুঃখে আর অরুনার কান্না দেখে। দুহাতে শেষ বারের মতন অরুনাকে জড়িয়ে ধরে অভি, মাথার ওপরে ঠোঁট চেপে সমুদ্রনীলের দিকে ঝাপসা চোখ নিয়ে তাকায়।
কাঁপা গলায় বলে সমুদ্রনীলকে, "আমি চেক ইন করার আগে অরুনাকে নিয়ে চলে যা।"
সমুদ্রনীল উত্তর দেয়, "তুই ওকে ভালো ভাবে চিনিস, অভি। ওই বোর্ডে যতক্ষণ না লেখা ফুটবে যে আই সি 264 Departed. ততক্ষণ অরুনা এখান থেকে নড়বে না। আমি জানি না রে অভি, তুই যাবার পরে অরুনার কি হবে। ও শুচিদিকে খুব ভালবাসত রে।"
অভি, "আমাকে কথা দে, তুই ওকে দেখবি, দয়া করে ওর চোখে জল আনিস না রে। আমার হয়ে, পরীর হয়ে ওকে ভালবাসিস তুই, আমি পুবালিকে কথা দিয়েছিলাম, সেই কথা আমি ত আর রাখতে পারলাম না, তুই রাখিস।"
কোনোরকমে জোর করে অরুনাকে ছাড়িয়ে ওর হাত সমুদ্রনীলের হাতে তুলে দেয়। অরুনা কিছুতেই অভিকে ছাড়তে চায় না, প্রাণপণে জামার কলার আঁকড়ে ধরে থাকে। শেষ পর্যন্ত বহু কষ্টে বুকের পাঁজর ভেঙ্গে দিয়ে অভি পেছনে সরে আসে আর জামার একটা বোতাম ছিঁড়ে অরুনার হাতে থেকে যায়। অভি পেছনে না তাকিয়ে সোজা, চেক ইন করার দিকে হাতা দেয়।
পেছন থেকে অরুনা ডুকরে কেঁদে ওঠে, "আজ আমি আমার জীবনের সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি অভি।"
সিকুরিটি চেক করার আগে শেষবারের মতন অরুনার জল ভরা চোখের দিকে তাকায়। চোখের মণি, প্রিয় বান্ধবী অরুন্ধতি ব্যানারজির জল ভরা চোখ ওর দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে।
প্লেন রানওয়ে দিয়ে দৌড়তে শুরু করে। অভি দাঁতে দাঁত পিষে চোখ বন্ধ করে বসে থাকে। প্লেনের ঝন ঝন আওয়াজ যেন ওর বুকের পাঁজরের ভাঙ্গা আওয়াজ মনে হয়। একটা একটা করে ভাঙ্গে ওর শরীরের হাড়। বারে বারে মাথা পেটায় সিটের পেছনে। আগে এক বার এই প্লেন অভিকে নিয়ে উড়েছিল পরীর সাথে অজানার পানে ভ্রমনে। সেই একই প্লেনে করে উড়ে ও ফিরে পেয়েছিল প্রানের বান্ধবীকে। কিন্তু সেইদিনের উড়ান বাকি দিনের উড়ানের চেয়ে অনেক অনেক আলাদা, এবারে ওকে সবকিছু ছেড়ে যেতে হবে, সাধের প্রান প্রেয়সী আর চোখের মনি দেবী অরুন্ধুতি।
শেষ পর্যন্ত প্লেনের চাকা উঠে গেল প্লেনের দেহে। অভির শরীর যেন এক বিশাল ধাক্কা খেল, যেন এক লোহার শেকল ছিঁড়ে গেছে অবশেষে। মাথার মধ্যে সেই লোহার শেকলের শত সহস্র টুকরো ছড়িয়ে পড়েছে। এতদিন যা যা প্রতিজ্ঞা করেছিল অভি, সব যেন ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেল প্লেনের ওড়ার সাথে সাথে।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে ওর প্রেয়সীর জন্য একটা কুঠির বানিয়ে দেবে।
অভির সুটকেসে ভাঁজ করে রাখা প্রেয়সীর ছবি যেটা শেষ করতে পারেনি।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে বুড়ো হলে ওরা দুজনে মিলে একসাথে বসে ওর ডায়রি পড়বে।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে প্রেয়সীর সাথে দোলনায় বসে বিকেলের চা খাবে সেই পাহাড়ের কুঠিরের সামনে।
অভি প্রতিজ্ঞা করেছিল যে বয়স কালে ওরা কি বৃদ্ধাশ্রমে একসাথে থাকবে।
অভির সব প্রতিজ্ঞা সেইদিন ভেঙ্গে যায়।
ঝাপসা চোখের সামনে তিন খানি চেহারা ভেসে ওঠে।
পরীর জল ভরা লাল চোখ, দু গাল বেয়ে টপ টপ করে জল পড়ছে, হৃদয় ভেঙ্গে সহস্র টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেছে পরীর।
অরুন্ধুতির হৃদয় বিদারক কান্নার আর সেই ডাক।
মায়ের ক্রোধিত নয়ন।
.
..
...
....
.....
......
.......
.........
..........
বিদায় শুচিস্মিতা, বিদায় অরুন্ধতি, বিদায় কোলকাতা।
Like Reply
#64
দেখি নাই ফিরে
সুপ্রতিমদা ওকে চাকরি পেতে সাহায্য করে আর দিল্লীর একটা বড় আই টি কম্পানি তে চাকরি পেয়ে যায়। অভি নিজেকে কাজে আর মদে ডুবিয়ে ফেলে। ভালোবাসা শব্দটি ওর জীবনের খাতা থেকে মুছে ফেলে।
একদিন অভি রিতিকাকে বাড়িতে ফোন করতে বলে। রিতিকা কোলকাতায় অভির বাড়ি ফোন করে, ফোন স্পিকারে দেওয়া ছিল যাতে সবাই কথা শুনতে পারে।
বাবা, "কে বলছেন?"
রিতিকা, "আমি রিতিকা, শুচিস্মিতার বান্ধবী। ওর সাথে কি একটু কথা বলা যাবে?"
বাবা, "কোথা থেকে বলছ?"
রিতিকা, "দিল্লী থেকে বলছি আমি।"
বাবা ওপাসে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পরে ঠাণ্ডা স্বরে উত্তর দেন, "শুচিস্মিতা এখানে আর থাকে না। কিছু কারনে শুচিস্মিতা এ বাড়ি থেকে চলে গেছে।"
বাবা হয়ত অনুধাবন করে ফেলেছিলেন যে রিতিকার ফোনের পেছনে অভি দাঁড়িয়ে। হয়ত পরী বাবার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল, কিন্তু সেই সত্য কোনদিন অভি জানতে পারেনা। সেই রাতে একা একা কাঁদে অভি, দুখের সাথি এক বোতল মদ।
কয়েক মাস পরে রিতিকা আর সুপ্রতিমদার বিয়ে হয়ে যায় আর ওরা ব্যাঙ্গালর চলে যায়। তারপরে অভির সাথে তাদের বিশেষ কোন যোগাযোগ থাকেনা।
প্রতি রাতে পরী অভির স্বপ্নে এসে দেখা দিত। পরী এক বিশাল নৌকায় চেপে সাগর পাড়ি দেয়, আর সেই নৌকার মাস্তুল দিগন্তের কোলে ধিরে ধিরে লুকিয়ে যায়। শত চেষ্টা করেও অভি সেই নৌকার দিকে সাঁতরে যেতে পারে না। রোজ রাতে পরীর সেই সিল্কের রুমাল খানি মুখের ওপরে মেলে ধরত আর সকাল বেলা সেটা আবার মানি ব্যাগের পকেটে গুছিয়ে রেখে দিত। প্রত্যেক রাতে সেই রুমাল থেকে পরীর গায়ের জুঁই ফুলের গন্ধ নেবার জন্য আপ্রান চেষ্টা করত অভি, কিন্তু হায়, সিল্কের রুমাল, গন্ধ ত অনেক দিন আগেই হারিয়ে গেছে, যে গন্ধের আভাস টুকু বেঁচে থাকে সেটা অভির ভাঙ্গা হৃদয়ের এককনে বেঁচে থাকে।
অরুনার সাথে অনেক দিন পর্যন্ত অভির যোগাযোগ ছিল। মাকে দেওয়া প্রতিজ্ঞার ফলে অরুনার বিয়ের সময়ে কোলকাতা আসতে পারেনি অভি।
জুলাই 2009, এক শনিবারের সকালে অভির সেলফোন বেজে ওঠে, অন্যদিকে সমুদ্রনীল।
সমুদ্রনীল, "হ্যাঁরে, তুই মামা হয়ে গেছিস। এই মাত্র একটি মেয়ে হয়েছে আমাদের। কথা বলবি অরুনার সাথে?"
অভি, "উফফফফ দারুন খবর শোনালি তুই, কুত্তা টা একটা রাজকুমারীর মা হয়ে গেছে দেখছি যে। দে দে তাড়াতাড়ি ফোন দে।"
অরুনার সেই পুরানো মিষ্টি গালাগালি, "কিরে শুয়োর, কুত্তা, হারগিলে, কেমন আছিস?"
অভি, "আমি ভালো আছি রে, কাক, হারগিলে। শেষ পর্যন্ত আমার চোখের মনি মা হয়ে গেল আর আমি চোখের দেখা পর্যন্ত দেখতে পারলাম না।"
অভির গলা ধরে এসেছিল কথা বলার সময়ে।
কিছু থেমে অরুনা অভিকে ধরা গলায় উত্তর দেয়, "হ্যাঁ রে, কুত্তা। আমরা ওর নাম রেখেছি শুচিস্মিতা, ডাক নাম পরী।"
অভি ফোন চেপে ধরে কেঁদে ফেলে।
ছোট্ট পরী জন্মাবার কয়েক মাস পরে অরুন্ধতি আর সমুদ্রনীল অস্ট্রেলিয়া চলে যায় আর তাদের সাথে অভির শেষ বন্ধন টুকুও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
দশটি বছর কেটে যায়। এপ্রিল 2011, শীতকাল, রাত প্রায় সাড়ে এগারটা। অভি দিল্লীর T-3 টারমিনালের আন্তরজাতিক জায়গায় প্লেনের জন্য অপেক্ষা করছিল। অফিসের কাজে অভি কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া যাচ্ছে। হাতের ট্যাবলেটে মেইল দেখছিল অভি আর অপেক্ষা করছিল কখন প্লেনে ওঠার ডাক আসে।
ঠিক সেইসময়ে ওই খানে কেউ ওর নামে ধরে ডাক দেয় তাও বাঙ্গালয়। ভদ্রমহিলার আওয়াজ, "অভিমন্যু ওই রকম দৌড়ায় না সোনা, পরে যাবে।"
অত রাতে, দিল্লীর টারমিনালে দাঁড়িয়ে অভি নিজের নাম শুনে চমকে ওঠে অভি। মাথা উঁচু করে খুঁজতে চেষ্টা করে সেই ভদ্রমহিলাকে। আবার সেই ভদ্রমহিলার আওয়াজ কানে আসে, "অভি, ওখানে যায় না সোনা।"
কেঁপে ওঠে অভি, এই মিষ্টি সুর তার খুব চেনা, এই স্বর অনেক অনেক দিন আগেই ওর হৃদয় কেড়ে নিয়েছিল। বুকের মাঝে ধুকপুকানি শত গুন বেড়ে যায়, সত্যি কি সামনে, কি করে হতে পারে যার কথা চিন্তা করছে অভি?
ঠিক সেই সময়ে প্লেনের গেটের কাছের মহিলা ওকে প্লেনে ওঠার জন্য অনুরোধ করে। অভি ওর দিকে হাত নাড়িয়ে বলে, "এক মিনিট ম্যাডাম।"
মাথা ঘুরিয়ে আসেপাসে দেখে অভি, শেষ পর্যন্ত সেই সুরেলা কন্ঠস্বরের ভদ্রমহিলা কে খুঁজে পায়। বেশি দুরে দাঁড়িয়ে নয় সেই ভদ্রমহিলা, ওর দিকে পেছন ফিরে সামনে এক ছোটো বাচ্চা কে ডাক দেয়। ছোট্ট শাবক, খিল খিল করে হেসে উঠে সেই ভদ্রমহিলার থেকে দুরে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
সেই ভদ্রমহিলা একটি নীল রঙের জিন্স পরে আর গায়ে সাদা কোট। মাথার চুল ঘাড়ের একটু নিচ পর্যন্ত নেমে এসে চওড়া পিঠের ওপরে দুলছে। অভির দিকে পেছন ফিরে থাকার জন্য অভি অনার মুখ ঠিক ভাবে দেখতে পারে না। কিন্তু পাশ থেকে বুঝতে পারে যে চোখে সোনালি চশমা। মাথার চুল একটু বাদামি রঙের, ভদ্রমহিলা সম্ভবত তিরিশের মাঝামাঝি বয়স। বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবারের দেখে মনে হল কেননা গায়ের কোট অনেক দামী। ভদ্রমহিলার শরীরের অবয়াব বেশ সুন্দর। বাম হাতের কব্জিতে দামী ওমেগা ঘড়ি, আর অনামিকায় একটা হীরের আঙটি জ্বল জ্বল করছে।
ভদ্রমহিলা সেই ছোট্ট শাবক কে দুহাত বাড়িয়ে কাছে ডাকে। ডাক শুনে সেই ছোট্ট শাবক খিলখিল করে হেসে দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পরে ভদ্রমহিলার কোলে। সেই ছোট্ট শাবকের মুখ খানি নিস্পাপ ফুলের মতন আর খুব মিষ্টি। যে ভাবে সেই বাচ্চাটা ভদ্রমহিলাকে আঁকড়ে ধরে তাতে অভির মনে হল যে ভদ্রমহিলা সেই বাচ্চার মা। ব্যাগের ভেতরে ট্যাবলেট রেখে বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে হাসে অভি। অভির হাসি দেখে সেই ছোট্ট ছানা হেসে ফেলে। অভি সেই ছোট্ট ছানার দিকে একটা চুমু ছুঁড়ে দেয়। মায়ের কোল থেকে সেই ছোট্ট ছানা, ওর দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ায়।
হাতে ব্যাগ নিয়ে অভি দাঁড়িয়ে পরে, প্লেনের দিকে যাবার জন্য পা বাড়ায়, কিন্তু চোখ থেকে যায় সেই মায়ের কোলে বাচ্চাটার দিকে। ভদ্রমহিলা কোলের ছানাকে কানে কানে কিছু জিজ্ঞেস করেন, আর সেই ছোট্ট বাচ্চা ওর দিকে আঙুল দিয়ে দেখায়।
ভদ্রমহিলা ঘুরে দাঁড়ান দেখার জন্য যে কে ওর হৃদয়ের পাঁজরের দিকে হাত নাড়ায় এই অজানা ভুমিতে।
ভদ্রমুহিলার চোখে চোখ মেলে অভির। পা বাড়াতে ভুলে যায়, শ্বাস নিতে ভুলে যায় অভিমন্যু, ভুলে যায় যে অফিসের কাজে ওকে কোথাও যেতে হবে, ভুলে যায় যে ওর জন্য প্লেন দাঁড়িয়ে আছে। বুকের মাঝে যেন সহস্র ঘোড়া একসাথে টগবগ করে দৌড়াতে শুরু করে দেয়। সারা শরীরের সব শিরা উপসিরা একসাথে ওর বুকের মাঝে রক্ত ঢালতে শুরু করে। বুকের মাঝে দামামা বেজে ওঠে অভিমন্যুর।
চোখের সামনে সেই মাতৃ মূর্তি ওর দিকে তাকিয়ে পাথরের ন্যায় দাঁড়িয়ে পরে। কোলের সেই ছোট্ট শাবক তাঁর মায়ের মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। সেই মাতৃ মূর্তি বাচ্চাকে প্রাণপণে জড়িয়ে ধরে বুকের কাছে। ঠোঁট জোড়া কেঁপে ওঠে ওর, চোখের সামনে অভিমন্যু কে দেখে। সেই পুরানো স্মৃতি ভরে আসে দু নয়নে, নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে নিজেকে কান্না সামলানোর জন্য। ফর্সা নাকের ডগা, গোলাপি হয়ে ওঠে। বুক কেঁপে ওঠে ওর কোন এক অভূতপূর্ব বেদনায়।
প্রশান্ত মহাসাগরের তলে ডুবে থাকা মহা-দ্বীপে যেন ভাঙ্গন ধরে, চোখের সামনে সেই পুরানো স্মৃতি ফুটে ওঠে সেই ফাটলের ভেতর থেকে।
সোনার চশমার পেছনে থাকা সেই চোখ দুটিকে অভি মনে পরে, সেই টোল পরা গোলাপি গালের দৃশ্য, সেই চুলের এক গুচ্ছ, গালের ওপরে দোলা খায়, না অভিমন্যু কিছুই ভলেনি তার প্রাণ প্রেয়সীর রুপ। আজ পর্যন্ত প্রতি রাতে ওই কাজল কালো চোখ ওকে জাগিয়ে রাখে।
কোটের পকেটে রাখা মানি ব্যাগের দিকে হাত বাড়ায় অভিমন্যু, সেই পকেটে এখন সেই সিল্কের রুমাল রাখা। একবার বার করতে চেষ্টা করে সেই রুমাল, কিন্তু অনামিকায় জ্বলজ্বল করে হীরের আঙটি। সেই দেখে অভিমন্যু আর সেই রুমাল বের করে না, থমকে দাঁড়িয়ে পরে।
প্লেনের দরজায় দাঁড়ান সেই মহিলা আবার অভিমন্যুকে ডাক দেয়, "স্যার, প্লিস বোর্ড দা প্লেন।"
প্লেনের দিকে পা বাড়ানোর আগে শেষবারের মতন সেই মাতৃ ময়ি মূর্তির জল ভরা চোখের দিকে তাকায় অভিমন্যু।
সামনে দাঁড়িয়ে তার প্রেয়সী, দশ বছর আগে সেই প্রেয়সীর গালে চুম্বন এঁকে দিয়েছিল।
কিন্তু সামনে দাঁড়িয়ে তার প্রেয়সী আজ এক মমতা ময়ি মাতৃ মূর্তি, কোলে তার প্রানের ধন, চোখের মনি, তার শাবক - যাকে সে "অভিমন্যু" নামে ডাকছিল।
কোন প্লেনে চেপে, কোন দেশে পাড়ি দেবে সে কথা এই দাঁড়িয়ে থাকা অভিমন্যু জানেনা। জানে শুধু একটা কথা, আজও তাঁর বুকের মাঝে খুঁজে বেড়ায় সেই পুরানো পরীকে।
সামনে দাঁড়িয়ে সেই মমতাময়ী মাতৃ মূর্তি এখন মিসেস শুচিস্মিতা......... অভিমন্যু তালুকদার তাঁর পদবি জানে না।
====== সমাপ্ত ======
Like Reply
#65
গল্পটি পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ। পরের পর্ব গুলি কি আপনার কাছে আছে? থাকলে পোস্ট করবেন please...
291
Keep Reading... Namaskar
Like Reply
#66
(16-07-2019, 11:41 AM)Nectar_G Wrote: গল্পটি পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ। পরের পর্ব গুলি কি আপনার কাছে আছে? থাকলে পোস্ট করবেন please...

 গল্প তো শেষ আর  পর্ব নাই ভাই
Like Reply
#67
Ei golpe ki ma cheler sex ache ? Thakle which page?
Like Reply
#68
(28-07-2019, 08:31 PM)sorbobhuk Wrote:  গল্প তো শেষ আর  পর্ব নাই ভাই

পিনুরামদা এরপর ইংরেজি তে "Dawn of Midnight" বাাংলাতে সম্ভবত "মধ্যরাতের সূর্যদয়" নামে এই গল্পএর দ্বিতীয় খন্ড লিখেছেন।
291
Keep Reading... Namaskar
Like Reply
#69
(09-10-2019, 12:56 AM)rexrex Wrote: Ei golpe ki ma cheler sex ache ? Thakle which page?

vai pinuram dadar ashwim trishna chhara tar lekha ar kono golpe ma cheler sex story nai
Like Reply
#70
(10-10-2019, 08:11 PM)Nectar_G Wrote: পিনুরামদা এরপর ইংরেজি তে "Dawn of Midnight" বাাংলাতে সম্ভবত "মধ্যরাতের সূর্যদয়" নামে এই গল্পএর দ্বিতীয় খন্ড লিখেছেন।

ভাই তিনি গল্পের অনুবাদ টা সম্পুর্ন করেন নি মনে হয়। তবে গল্পটার পিডিএফ ফেসবুকের গ্রুপে দেওয়া আছে
Like Reply
#71
(11-10-2019, 04:56 PM)sorbobhuk Wrote: ভাই তিনি গল্পের অনুবাদ টা সম্পুর্ন করেন নি মনে হয়। তবে গল্পটার পিডিএফ ফেসবুকের গ্রুপে দেওয়া আছে

Na dada uni Xossip e bangla golpo tao sesh korechilen... Jai hok apnake dhonyobad... Subho Bijoya.
291
Keep Reading... Namaskar
[+] 1 user Likes Nectar_G's post
Like Reply
#72
Ashim trisnar moto ar kono long storir link ki deya jabe ..karo kache ki ache...?
Like Reply
#73
ম্যাডাম উলুপিদির ভারি মাংসল মাতৃ পোদটা একটু চড়ালে ভাল হত না?
Like Reply
#74
Sorbobhuk দাদা যদি ফেসবুক গ্রুপ এর লিংকটি দিতেন  ভাল হতো
Like Reply
#75
(11-10-2019, 06:21 PM)Nectar_G Wrote: Na dada uni Xossip e bangla golpo tao sesh korechilen... Jai hok apnake dhonyobad... Subho Bijoya.
উনি গল্পটি বাংলায় শেষ করেননি।আপনি ভুল দেখেছেন।এজন্য পিনুরাম কে অনেকেই অনুরোধ করেছিল কিন্তু তিনি করতে পারেন নি।
Like Reply
#76
Guru it's one of the best story I have ever read. Thanks for such a great story...?
Like Reply
#77
good story
Like Reply
#78
এটা ইরোটিক সাহিত্য জগতের শ্রেষ্ঠ কাহিনী। পিনুরামের তুলনা উনি নিজেই। দুঃখের ব্যাপার এই যে " মধ্যরাতে সূর্যোদয় " ( এই গল্পের sequel ) উপন্যাসটা উনি english-এ শেষ করেছেন কিন্তু বাংলায় অনুবাদটা সম্পূর্ণ করেন নি। তারপর হঠাৎ করে লেখালেখি বন্ধ করে দিলেন।
Like Reply
#79
(21-10-2019, 12:28 AM)Dark Side Wrote: Sorbobhuk দাদা যদি ফেসবুক গ্রুপ এর লিংকটি দিতেন  ভাল হতো

কিছু মনেের কথা
Like Reply
#80
Heart 
সেই প্রথম বার যেদিন পড়েছিলাম সেদিনই ভক্ত হয়ে গেছিলাম. আজও পড়লে বুকের বাঁ পাশটা কেমন করে. কিছু ভালোবাসার সমাপ্তি বোধহয় সুখের হয়না.... নাকি কিছু বাকি থেকে যায়? আমরা সেটিকে সমাপ্ত ভেবে ভুল করি? এর উত্তর সেই জানে যে ওপরে বসে সবার গল্প লেখে। 

[Image: 20200923-233844.jpg]

পিনুরাম দাদার উদ্দেশ্যে...... Heart
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)