পর্ব ২- মানবের আবেশঃ
সত্য বাবুঃ মানবের দুই চোখ লাল! চুলগুলো উসকো খুসকো। নিজের বাড়িতে মানব বাবু এসেছেন এতে সত্যি ই অবাক হওয়ার কিছুই ছিলনা। কিন্তু মানব বাবুর এক হাত দিয়ে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আর মালতি দেবীর দিকে তাকিয়ে ক্রুর হাঁসি এ তো যেকোনো মহিলাকেই একটু হলেও ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলবে। মালতী দেবীও বা তার ব্যাতিক্রম কি করে হন। মালতী দেবীর নাকে সেই পুরনো উগ্র গন্ধটা ভেসে আসতে থাকে। নতুন ফ্ল্যাট বাড়ি ও পুরনো এই ফিলহালের বাড়িতে এই গন্ধটা প্রতি মুহূর্তেই মালতী দেবীর শরীরে ভীষণভাবে জড়িয়ে থাকে। কোনও এক অশরীরী আছে যে প্রতিটি লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে মালতী দেবীর কোমল শরীরটা জড়িয়ে ধরে। কে সেই অশরীরী? সেকি সত্যি ই কোনও অতৃপ্ত আত্মা না শুধুই এক অতৃপ্ত রমনীর মানসিক দ্বন্দ্ব। মালতী দেবীর কাছে সে অবশ্যই এক অশরীরী, সুবীর বাবুর শতবার বোঝানো সত্বেও অশরীরী। আর হয়ত ঠিক সেই কারনেই মালতী দেবী নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছিলেন না। যদি সত্যি ই কোনও অতৃপ্ত আত্মার কোপে উনি পড়ে থাকেন তো সেই আত্মা কেন মানবের রুপে ওনার সামনে আসে। এই প্রশ্নটা বোধ হয় প্রতি মুহূর্তেই ওনাকে জর্জরিত করে চলেছে। ঠিক এই মুহূর্তে ওনার সামনে কে দাঁড়িয়ে? ওনার সেই অতি পরিচিত মানব দা নাকি কোনও আত্মা। ওনার মনে যে ঝড় সেই সময় বয়ে চলেছে তা বোঝার ক্ষমতা এই ইহজগতে কারুর ই নেই। নিজের ভ্রম কে কাটিয়ে ওঠার আগেই সামনে থেকে সেই পুরনো পরিচিত কণ্ঠটা ভেসে আসে।
মানব বাবুঃ বৌদি আমায় ঘরের ভেতরে আসতে বলবে না? আমায় কি বাইরেই দাঁড় করিয়ে রাখবে?
মানব বাবুর মুখের সেই পরিচিত দুষ্টুমি ভরা হাসিটা ফুটে ওঠে। কোনও উত্তর দিতে পারেন না মালতী দেবী। চুপ করে তাকিয়ে থাকেন সামনের সেই মানুষটার দিকে। ওনার মনে তখনও একটা প্রশ্ন হয়ত থেকেই গেছে। কে এ? সত্যি ই কি মানব দা? আবার একবার মানব বাবু বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ কি বৌদি, তোমরা বোধ হয় আমাকে আর কোনোদিন ই মেনে নেবেনা। ঠিক আছে তোমরা ভালো থেকো। আমি চললাম।
কয়েকটা মিনিটের জন্য মালতী দেবীর দিকে তাকিয়ে মানব বাবু পেছন ঘুরে চলে যেতে উদ্যত হন। মালতী দেবীর মুখ থেকে আবেগ মেশানো একটা শব্দই বাইরে বেরোয় “মানব দা” দাঁড়িয়ে পড়েন মানব বাবু। মালতী দেবীর দুই চোখের দিকে তাকান, মালতী দেবীও নিজের নজর সরাতে পারেন না। কত স্মৃতি কত কষ্ট কত ভুল বোঝাবুঝি লুকিয়ে আছে এই দুজোড়া চোখের মিলনে।
মানব বাবুঃ বৌদি অনেক কিছু ভুল আমি করেছি। কিন্তু ভুল কি আমি একাই করেছি তোমরা কি কোনও ভুল করনি। আমি যাবো কোথায়? দুকূলে তো আমার কেউ ই নেই।
মানব বাবুর এই কথায় কিছুটা হলেও মালতী দেবী সঙ্কোচবোধে পড়ে যান। “ভুল কি তোমরা করনি” বলে মানব বাবু ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছেন সেই প্রশ্নই মালতী দেবীর হৃদয়কে ওলট পালট করে দিতে থাকে। তাহলে কি মানব বাবুও বুঝে গেছেন সেইরাতে নিজের কামনার কাছে হেরে গিয়েই মালতী দেবী এতো বড় একটা ভুল করে ফেলেছেন।
মানব বাবুঃ বৌদি তুমি কি সত্যি ই আমায় ভেতরে ঢুকতে দেবেনা? আমি কি এতই খারাপ?
মানব বাবুর শেষ কথাটা মালতী দেবীর হৃদয়কে সত্যি ই নাড়িয়ে দেয়। নিজেকে কোনরকমে সামলে নিয়ে মুখে একটা মিষ্টি হাসির সাথে মালতী দেবী বলে ওঠেন
মালতী দেবীঃ আরে একি বলছ মানব দা। তোমার আর তোমার বন্ধুর মধ্যে রাগারাগি হয়েছে। এতো হতেই পারে। কিন্তু তাই বলে আমি কেন রেগে থাকবো। আর এ বাড়ি কি তোমার নয়! এরপর যদি এইসব কথা কখনো শুনি তাহলে তোমার বন্ধুর মত আমিও রেগে যাবো। সুতরাং এক্ষুনি ভেতরে আসো। রাতে কিন্তু খাসির মাংস...
মালতী দেবীর কথার সাথে সাথে মানব বাবুর মুখে সেই পুরনো বাঁকা হাসিটা ফিরে আসে। মাঝপথে মালতী দেবীকে থামিয়ে দিয়ে উনি বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ আসলে আমি ভেবেছিলাম তুমিও রেগে আছো। যতই হোক আমার আর সুবীরের ঝগড়াটা তো তোমাকেই নিয়ে তাই এতকিছু ভাবছিলাম।
মানব বাবুর এই কথায় মালতী দেবি প্রায় চমকে ওঠেন। মনে মনে ভাবেন সত্যি ই কি মানব বাবু বিবেকের তাড়নায় এখানে এসেছেন নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্যও ওনার আছে। আর এইসময় যে সুবীর বাবু বাড়িতে থাকেন না তাও তো ওনার জানা। এই ভরদুপুর বেলা মদ্যপ অবস্থায় এক ভদ্রমহিলার সামনে এসে দাঁড়ানো- সেটাও তো স্বাভাবিক নয়। কিন্তু যাই হয়ে যাক, মালতী দেবীকে এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতেই হত। উনি মানব বাবুর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন
মালতী দেবীঃ হাঁ তোমার বন্ধু রাগ করে ঠিক করেছে। তুমি কি গো মানব দা, এতো ড্রিঙ্ক করা শুরু করেছ। তোমার কিসের এতো দুঃখ জীবনে। আজও...
মালতী দেবীর কথা শেষ হওয়ার আগেই কিছুটা ওনাকে পাশ কাটিয়ে মানব বাবু ভেতরে ঢুকে পড়েন। মালতী দেবী কিছু বোঝার আগেই মানব বাবু মালতী দেবীর শরীরকে টপকে দরজাটা লাগিয়ে দেয়। প্রায় হতবম্ব হয়ে যান মালতী দেবী। মানব বাবুর ৫’ ১০’’ এর লম্বা বড় শরীরটার আড়ালে উনি সত্যি ই ভীষণ অসহায়। মানবের মুখের সেই উগ্র মাদকীয় গন্ধটা আবার মালতী দেবীর শরীরে ভেসে আসে। উনি হয়ত বলতে চেয়েছিলেন “মানবদা প্লিজ এই গন্ধটা আমি একদম সহ্য করতে পারিনা। আমার শরীরে এক অদ্ভুত শিহরন হয় এই গন্ধে” কিন্তু না মালতী দেবী কথা গুলো বলতে পারেন নি। মালতী দেবীর পিঠটা বন্ধ দরজায় ঠেকানো, মানব বাবু প্রায় ওনার শরীর ঘেঁসে দাঁড়িয়ে। দরজা বন্ধ করে আবার বলে ওঠেন মানব বাবু
মানব বাবুঃ এই গন্ধটা যে আমার পরিচয় বৌদি। এই গন্ধটা ছাড়া তুমি আমায় চিনবে কি করে?
মালতী দেবীর শরীরে শিহরন শুরু হয়। এক অজানা উত্তেজনা, অজানা আশঙ্কা ওনার মনের মধ্যে দানা বাঁধতে থাকে। কি বলতে চায় মানব বাবু? মানব বাবুর সাথে কি সত্যি ই তাহলে সেই অশরীরীর কোনও সম্পর্ক আছে? নিজের মনে নিজেকেই এই প্রশ্নগুলো করে ওঠেন মালতী দেবী। মনে মনেই হয়ত বলেন “না এ হতে পারেনা” কোনরকমে অবস্থার সামাল দিয়ে উনি বলে ওঠেন
মালতী দেবীঃ মদ খেয়ে যে কি আনন্দ তুমি পাও আমি তো জানিনা বাপু। দাঁড়াও আজ তো মাছ, মাংস, ডিম কিছুই নেই। তোমায় আজ সুক্ত রান্না করে খাওয়াবো।
মানব বাবুকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যান মালতী দেবী। মানব বাবুও খুব একটা বাধা দেননা। শুধুই তাকিয়ে থাকেন নিজের স্বপ্নের সেই রানীর শরীরটার দিকে। কতরাত শুধু এই শরীরটা একবার ভোগ করার কথা ভেবে বিনিদ্র রাত্রি কাটিয়েছেন উনি। কিন্তু কোনও এক অজানা কারনেই ওনার কপালে মালতীকে ভোগ করার সেই সুবর্ণ সুযোগ আর হয়ে ওঠেনি। আজ কি সেই দিন? হয়ত সেই সময় মনে মনে ওই কথাটাই ভাবছিলেন মানব বাবু। মালতী দেবী কিছুক্ষনের মধ্যেই চোখের আড়ালে চলে যান। আজ যেন মানব বাবু এক মুহূর্তের জন্যও নিজের কামনা বাসনার সেই রমনীকে হাতছাড়া করতে চাননা। মানব বাবুও টলতে টলতে রান্নাঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। মানবের উপস্থিতি টের পেলেও মালতী দেবী তা বুঝতে দেননা। মালতী দেবীর পরনে তখন নেহাত ই একটা ছাপোষা ঘরে পড়ার সাড়ি ছিল। কিন্তু পোশাক দিয়ে কি আর রমনীর সৌন্দর্য মাপা যায়। দুচোখ মেলে মানব তাকিয়ে থাকে মালতী দেবীর দিকে। হয়ত এতটা দুরত্ব ওনার সহ্য হচ্ছিলনা, প্রায় টলতে টলতে সামনের দিকে এগিয়ে যান মানব বাবু। গা ঘেঁসে দাঁড়ান মালতী দেবীর। পুরুষ শরীরের উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ও কামনাভরা নজর কোথাও হয়ত মালতী দেবীর শরীরটাও উথাল পাতাল করে দিচ্ছিল। পেছন দিকে মাথা ঘুরিয়ে মানবের দিকে তাকান মালতী দেবী। মানবের লাল দুই চোখ যে ওনার শরীরের নৈকট্যের আবেশে বুজে এসেছে তা উনি খুব ভালোই বুঝতে পারছিলেন। কামনার আগুনে যে মানব বাবুর হৃদয় শুধু একটিবার মালতী দেবীকে স্পর্শ করার জন্য পাগল হয়ে উঠছে তা মালতী দেবী খুব ভালো করেই বুঝতে পারছিলেন। কিন্তু একি ভুল উনিও দ্বিতীয়বার করতে চান না। মানবের দিকে তাকিয়ে উনি বলে ওঠেন
মালতী দেবীঃ মানব দা তুমি বরং স্নান করে নাও। দেখবে শরীর ভালো লাগবে। কুয়োপাড়ে দেখবে গামছা টাঙ্গানো আছে।
মানব বাবুঃ তুমিও তো মনে হয় স্নান করনি। আগে তুমি স্নান করে নাও তারপর আমি স্নান করবো।
চুপ করে যান মালতী দেবী। মানবের কথার মধ্যে যে যৌনতার চরম আবেশ লুকিয়ে রয়েছে তা আর ওনার পক্ষে বুঝতে কোনও অসুবিধা থাকেনা। উত্তর দেওয়ার মত কোনও ভাষা খুঁজে না পেয়ে উনি আবার রান্নার কাজে ব্যাস্ত হয়ে যান। হয়ত ভেবেছিলেন এভাবেই উনি মানব বাবুকে এড়িয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু মানব বাবুও সস্থানেই রয়ে যান। হয়ত মানব বাবু আর মালতী দেবীর শরীর একে অপরকে স্পর্শ করছেনা, কিন্তু মদের তীব্র গন্ধ আর উত্তপ্ত নিঃশ্বাস এই দুই মালতী দেবীর শরীরে কামনার আগুন জ্বলিয়ে দেওয়ার জন্যই যথেষ্ট। মালতী দেবী হয়ত মানব বাবুকে পাশের ঘরে গিয়ে বসার জন্য বলছিলেন কিন্তু তার আগেই মানব বাবু বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ আচ্ছা বৌদি, সুবীর এতটা আমার ওপর রেগে কেন গেলো? আমি কি এতটাই বড় কোনও অপরাধ করে ফেলেছি। আর যদি করেই ফেলি তো সেই সমপরিমান অপরাধ তুমিও করেছ বৌদি। কই তোমায় তো ও কিছুই বলেনি।
প্রায় ঘাবড়ে গিয়ে মালতী দেবী ঘুরে গিয়ে মানব বাবুকে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু সেই সুযোগ উনি পেলেন না। মানব বাবুর ডান হাতটা ততক্ষনে মালতী দেবীর নরম মেদবহুল পেটে খেলা করা শুরু করে দিয়েছে। তর্জনী ও মধ্যমাকে নাভীর গভীর খাদের মধ্যে ঢুকিয়ে একবার হাতের মোচড় দেন মানব বাবু। মালতী দেবীর শরীরটা প্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মত করে কেঁপে ওঠে। মুখে একটা ক্রুর হাঁসি নিয়ে মানব বাবু বলে ওঠেন “বৌদি ওই রাতটা আমার জীবন বদলে দিয়েছে। আমি জানি তুমি জানতে ওটা সুবীর নয় আমি” মানবের হাতের প্রবল পৌরুষে ততক্ষনে মালতীর দুই চোখ আবেশে বুজে এসেছে। কিন্তু নিজের অন্যায় এভাবে ধরা পড়ার যে কি অপমান তা হয়ত এর আগে সত্যি ই মালতী দেবী জানতেন না। মুশুল বৃষ্টিতে আদ্র হয়ে ওঠা শালিক পাখির মত কাঁপতে কাঁপতে মালতী দেবী বলে ওঠেন “মানব দা তুমি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। যাও স্নান করে নাও। আমায় রান্না করতে দাও” মালতী দেবীর এই কথাগুলো যে প্রায় ইকলেজে পড়া বাচ্চার মত মানব বাবু মান্য করবেন তা ওর পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিলনা। মিষ্টি করে একবার হেঁসে মানব বাবু টলতে টলতে কুয়োপাড়ের দিকে যেতে শুরু করেন। মালতী দেবীও নিশ্চিন্ত হয়ে আবার নিজের রান্নার কাজে হাত লাগান।
কুয়োপাড় থেকে জল পড়ার ঝম ঝম শব্দ ভেসে আসতে থাকে এবং তার সাথে মালতী দেবীও সমদ্রুততায় রান্না শেষ করেন। সমস্ত খাবার ঢাকা দিয়ে উনি একটু বাইরের দিকে আসেন। বারান্দা থেকে বাইরের কুয়োপাড়টা প্রায় স্পষ্টভাবেই দেখা যায়। জলে ভেজা খালি গায়ে শুধুই একটা গামছা পড়ে দাঁড়িয়ে আছেন মানব বাবু। মানব বাবুর নজর হয়ত অন্যদিকে ছিল। কিন্তু মালতী দেবী নিজের নজর ফেরাতে পারেন না। ভিজে গামছার মধ্যে দিয়ে শক্ত হয়ে থাকা পুরুষাঙ্গ বেশ স্পষ্ট ভাবেই বোঝা যায়। পেট একটু মেদবহুল হলেও মানব বাবুর শরীরের পেশীগুলো যে এখনো প্রায় বছর ২৫ এর শক্তসামর্থ্য জোয়ানের মত তা বুঝতে কোনও অসুবিধাই থাকেনা মালতী দেবীর। কিন্তু কেন উনি নিজের নজর সরাতে পারছেন না? শুধুই কি কিছু মুহূর্ত আগের ওই স্বর্গসুখের পরশ, সেই রাতের উত্তাল যৌনলীলা নাকি উনি নিজেই চুম্বকের বিপরীত মেরুর মত মানবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রশ্নটাই মালতী দেবীর মনকে উতাল পাতাল করে দিতে থাকে। কিছুটা হয়ত অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলেন, খেয়াল করেন নি কখন মানব ওনার দিকে এগিয়ে এসেছে। বারান্দার ঠিক নিচে মালতী দেবীর মুখোমুখি দাঁড়ায় মানব বাবু।
মানব বাবুঃ আমি স্নান করে নিয়েছি। যাও বৌদি এবার তুমি স্নান করে নাও। আমরা একসাথেই খেয়ে নেবো।
মানব বাবুর কথায় হুঁশ ফিরে আসে মালতী দেবীর। মানব বাবুর দিকে তাকান মালতী দেবী। ওই দুই চোখে কি যে জাদু আছে তা হয়ত উনিও জানেন না। বারবার ওই দুই চোখের আবেশে হারিয়ে যেতে শুরু করেন মালতী দেবী। কোনোক্রমে নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন
মালতী দেবীঃ না মানব দা। তুমি আগে খেয়ে নাও তারপর আমি স্নান করে খাবো। এতো তাড়াতাড়ি তো আমি খেতে পারিনা।
মানব বাবুঃ ঠিক আছে কোনও ব্যাপার নয়। আমি জামাকাপড় পড়ে নি তারপর তোমার সাথে ভালো করে গল্প করব। কতদিন ঠিক করে গল্প হয়নি।
হয়ত কিছুটা মনের ই ভুলে মালতী দেবীও হেঁসে ওঠেন। মানব বাবু আবার কুয়োপাড়ের দিকে গিয়ে তারে মেলা নিজের কাপড় গুলো এক এক করে পেড়ে নেন। মালতী দেবী কিছুক্ষন ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে আবার ভেতরের ঘরে প্রবেশ করেন। মালতী দেবী যে এক চরম উভয় সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন সে আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ঘরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হয়ত উনি নিজেকেই প্রশ্ন করে চলেছিলেন কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল? সংসারের জন্য নিজের শরীরকে বঞ্চনা করে কি পেলাম? আর নিজের বিবেককে বর্জন করে কি পাবো? হয়ত এই দুই প্রশ্ন ওনার মনকে পাগল করে তুলছিল। কোনও একপক্ষের সমর্থনে যাওয়া এতো সহজ নয়। এর জন্য দরকার কোনও এক উদ্দীপনা। আর হয়ত সেটাই দরকার ছিল মালতী দেবীর জন্য।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানব বাবু পেছন থেকে এসে ওনার কোমরটা প্রচণ্ড জোরে জড়িয়ে ধরলেন। যে নারী শরীর বহুদিন পুরুষ শরীরের স্পর্শ পায়না তা আকস্মিক এক পুরুষের কঠিন আলিঙ্গনে যে বিভোর হয়ে যাবে এতো স্বাভাবিক। কাঁপা গলায় মালতী দেবী কোনরকমে বলে ওঠেন “প্লিস মানব দা আমায় ছেড়ে দাও। সেদিন যা হয়েছে তা দুর্ঘটনা...” আরও কিছু বলতে চেয়েছিলেন মালতী দেবী। ততক্ষনে মানব বাবুর পুরু দুই ঠোঁট ওনার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলতে শুরু করে
মানব বাবুঃ মিথ্যে কথা বোলোনা বৌদি। আমার মুখের এই মাদকীয় গন্ধ, আমার এই স্পর্শ তোমায় পাগল করে তুলছে, তোমার দুই চোখ ই তার প্রমান।
লজ্জায় ও ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকেন মালতী দেবী। মানবের ঠোঁট ততক্ষনে আলতো করে মালতীর কানের লতিতে আদ্র আদর শুরু করে দিয়েছে। আবার বলে ওঠেন মানব বাবু
মানব বাবুঃ সুবীরের সাথে নয় বৌদি, তুমি আমার সাথেই বেশি খুশি। তুমিও মন থেকে তা বিশ্বাস কর। আমি জানি তুমি তা বিশ্বাস কর।
মানবের আবেশে মালতী দেবীর নিটোল উন্নত দুই বক্ষ তখন বিশাল জোরে ওঠানামা শুরু করে দিয়েছে। কপাল দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে ঘামের বিন্দু বৃষ্টির মত দুগাল বেয়ে ঝড়ে পড়ছে। কাঁপা কাঁপা দুই ঠোঁটে কোনরকমে বলে ওঠেন মালতী দেবী “আমায় প্লিস ছেড়ে দাও মানব দা” ছেড়ে দাও- এই কথাটার মধ্যে প্রতিবাদ না মানবের আবেশের প্রতি সমর্থন কোনটা ছিল তা রীতিমত বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু মালতী দেবীকে কিছুটা অবাক করে মানব বাবু কিছুটা দূরে সরে দাঁড়ান। মালতী দেবীও কিছুটা দূরে সরে গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
মানব বাবুঃ আমার একটা আবদার তোমাকে মেটাতেই হবে। আমার দেওয়া সেই সাড়ি ও ব্লাউজে আমি তোমায় আরও একবার দেখতে চাই। ব্যাস আর কিছু নয়।
কিছুটা লজ্জা ও কিছুটা সঙ্কোচে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন মালতী দেবী।
পর্ব ৩- মালতীর আত্মসমর্পণঃ
ঘরের মধ্যে একি জায়গায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন মালতী দেবী। মালতী দেবীর এই স্থিরতা যেন মানবকে চুম্বকের মত আরও একবার টেনে আনে। সামনে এগিয়ে যান মানব বাবু। দুহাত দিয়ে মালতী দেবীর কাঁধটা চেপে ধরেন। প্রচণ্ড জোরে ওনার কাঁধে একটা চাপ দিয়ে প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে ওনাকে নিজের মুখোমুখি করে দাঁড় করান।
মালতী দেবীঃ কি করছ মানব দা প্লিস আমাকে ছেড়ে দাও। কেন এরকম করছ আমি তো আর তোমার কোনও ক্ষতি করিনি।
মানব বাবুঃ না বৌদি তুমি কোনও ক্ষতি করনি তা আমিও স্বীকার করি। কিন্তু একটা যে ভুল তুমি করে ফেলেছ।
মানবের উষ্ণ নিঃশ্বাস মালতীর কোমল দুই গালকে দগ্ধ করতে থাকে। হয়ত উনি বলতে চেয়েছিলেন “কি ভুল?” কিন্তু ওনার মুখ দিয়ে একটাও শব্দ বাইরে বেরোয় না। কারন উনি জানেন ভুল একটা উনি সত্যি ই করেছেন।
মানব বাবুঃ আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম ঠিক এই বারান্দার নিচে, আর তুমি ঠিক ওই জায়গায়। একে একে সাড়ী, ব্লাউজ সায়া সব ই তোমার শরীর থেকে নিচে পড়ে গেলো। আমার মত্ত দুই চোখের সামনে তখন তোমার নগ্ন দেহটা। হয়ত আমার তপ্ত স্বাস প্রশ্বাসের জন্যই তুমি আমার উপস্থিতি টের পেয়েছিলে। আমার দিকে ঘুরে তাকালে তুমি। বিশ্বাস কর আমি একবারের জন্য ও তোমার মুখে ঘৃণা বা বিরক্তি কিছুই দেখিনি।
নিজের মুখটা কখন যে মানব বাবু ওনার মুখের কাছে নিয়ে চলে এসেছেন তা খেয়াল ও করেন নি মালতী দেবী। আলতো করে নিজের দুই পুরু ঠোঁট দিয়ে মালতী দেবীর নরম তুলতুলে গালে নিজের সিক্ত ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দেন মানব বাবু।
“সেদিন আমি ভুল করেছিলাম। এর জন্য হাজারবার আমি মাথা কুটেছি”
হয়ত স্বপ্নেও মানব বাবু ভাবতে পারেন নি যে এতো দ্রুত মালতী দেবী নিজের ভুল স্বীকার করে নেবেন। শুধু এটাই হয়ত মানব বাবু চেয়েছিলেন। একটিবারের জন্য ওনার মুখ দিয়ে এই কথাটাই উনি শুনতে চেয়েছিলেন।
মানব বাবুঃ তুমি কোনও ভুল করনি বৌদি। এটা আমাদের ভালোবাসা। আমি তোমাদের জন্য কম করিনি। সুবীর নিজেরটা ছাড়া আর কিছুই কখনো বোঝেনি। একবারও তোমরা ভেবে দেখেছ আমি কি নিয়ে বাঁচব।
মালতী দেবিঃ সেদিনের ভুলটাকে আর মনে রেখনা মানব দা। সব ঠিক হয়ে যাবে, তোমার বন্ধু কদিন আর তোমার ওপর রেগে থাকবে। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
মানব বাবুঃ (কিছুটা গলার স্বর উঁচু করে) ভুল করলাম দুজনে আর কষ্টটা ভোগ করব আমি একা। কেন এরকম হবে? তুমি সেদিন স্বেচ্ছায় আমার কাছে এসেছিলে। তোমার সাথে যে মানুষটা বিছানায় শুয়ে আছে সে যে তোমার স্বামী নয় তা তুমি খুব ভালো করেই জানতে বৌদি। আমার চেয়ে বেশি পাপ তো তুমি করেছ।
মানব বাবুর এই ব্যাবহার সত্যি ই মালতী দেবীর পক্ষে সহ্য করা সম্ভব ছিলনা। প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে মালতী দেবী বলে ওঠেন
মালতী দেবীঃ তুমি কি চাও মানব দা। বল তুমি কি চাও?
মানব বাবু বুঝতে পারেন ওনার এভাবে চিৎকার করে কিছু বলে ওঠা সত্যি ই উচিত হয়নি। মালতী দেবীর দিকে তাকিয়ে উনি বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ আমায় তুমি আবার ভুল বুঝলে বৌদি। আমি তো কখনোই নিজেকে ভালো মানুষ ভাবিনা বৌদি। তোমার প্রতি আমার এক বিশাল লোভ ছিল। কেন জানিনা তোমাকে ছাড়া অন্য কোনও মেয়েকে আমি ভাবতেও পারতাম না। হয়ত সে কারনেই আমি বিয়ে করিনি।
মালতী দেবী কোনও উত্তর দেন না শুধুই তাকিয়ে থাকেন মানব বাবুর দিকে।
মানব বাবুঃ কিন্তু কেন এরকম করলে বৌদি। আমার শরীরে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে আবার আমাকেই তাড়িয়ে দিলে। এই যন্ত্রণা তো আরও বেশি। আমি জানি সেদিন তুমিও...
এতক্ষনে মালতী দেবীও নিজের চিরাচরিত মেজাজ হারিয়ে ফেললেন
মালতী দেবীঃ তুমি কিছুই জাননা মানব দা। তোমাদের পক্ষে কিছুই বোঝা সম্ভব নয়। আমি না থাকলে তোমার বন্ধুর এই জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হতনা। মেয়েরাও জীবনে এতো সাফল্য পেতনা। আমি কি পেলাম? সেদিন আমি যা করেছি তা নিজের কাছে হেরে গিয়ে করেছি। একে যদি পাপ বল তো সেটা সত্যি ই পাপ।
মানব বাবু নিজেকে শান্ত করেন। বাঁ হাতটা দিয়ে মালতী দেবীর কানের পাশ থেকে ঝুলে আসা চুল সরিয়ে দিয়ে ওনাকে সান্ত্বনা দিতে থাকেন।
মানব বাবুঃ বৌদি কোনও ভুল তুমি করনি। কেন নিজেকে এভাবে শেষ করে দিচ্ছ। যে মানুষটা কখনো নিজেকে ছাড়া কাউকে বুঝল না তার জন্য...
হয়ত কিছুক্ষন আগেই নিজের মনের সব কথা উগড়ে দেওয়ার জন্য হোক বা চরম লজ্জাজনক এক মুহূর্ত সামনে চলে আসার জন্য হোক, মালতী দেবী ভেঙে পড়েন। প্রচণ্ড জোরে কেঁদে উঠে মানবের বুকে নিজের মাথা গুঁজে দেন। মানব বাবু মালতী দেবীর পিঠে নিজের হাত বুলিয়ে দিয়ে ওকে সান্ত্বনা দিতে শুরু করেন।
মানব বাবুঃ আর কিছু ভেবনা বৌদি। যে কথাটা তোমায় কোনোদিন বলতে পারিনি আজ সেটাই বলব।
আলতো করে নিজের বুক থেকে মালতী দেবীর মাথাটা তুলে নিজের মুখের সামনে নিয়ে আসেন মানব বাবু।
মানব বাবুঃ আমি তোমায় প্রচুর ভালোবাসি মালতী। কোনোদিন বলতে পারিনি। আজ বললাম। আমাদের মাঝে ভগবান এক প্রাচীর বানিয়ে দিয়েছেন। আমাদের সম্পর্কটা সমাজ মানবে না। কিন্তু আমি আজ এই প্রাচীর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবো।
মালতী দেবী লজ্জায় আর মানবের দিকে তাকাতে পারলেন না, নিচের দিকেই তাকিয়ে থাকলেন।
মানব বাবুঃ বিশ্বাস কর বৌদি, তোমার সৌন্দর্যকে নয় শুধুই তোমায় ভালোবাসি আমি। আমাকে ফিরিয়ে দিয়না বৌদি। নিজের মনকে বিশ্বাস করে দেখো, তোমার মন ও এইমুহূর্তে আমাকেই চাইছে।
মালতী দেবী আর পারেন না, মানব বাবুর বুকে আবারও মাথা গুঁজে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করে দেন। আলতো করে মালতী দেবীর চুলের মধ্যে নিজের আঙুল গুলো প্রবেশ করিয়ে মানব নিজের ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দিতে শুরু করে।
মানব বাবুঃ না বৌদি আর এভাবে নয়। একফোঁটাও আর চোখের জল নয়। যাও তুমি আমার দেওয়া সাড়িটা পড়ে এখানে আসো। তুমি খুব খুব খুব ভালো বৌদি। আমি আর তোমায় কষ্ট পেতে দেখতে চাইনা।
দুহাত দিয়ে নিজের দুচোখ মুছে মালতী দেবীও ধীরে ধীরে বারান্দার দিকে যেতে শুরু করেন। প্রচণ্ড আনন্দে ও নিজের ভালবাসাকে পাওয়ার উত্তেজনায় হাসিহাসি মুখে মানব বাবুও খাটের ওপর বসেন। বেশ কিছুক্ষন পরে মালতী দেবী ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন। পরনে সেই লাল সাড়ি, নীল ব্লাউজ। মানব বাবু তাকান পায়ের পাতার দিকে, হাঁ সেই হলুদ সায়াটাই মালতী দেবী পড়ে আছেন। এখনো হয়ত নেশাটা সেভাবে কেটে যায়নি। তাই চোখের সামনে মানব বাবু সেই রাতের সমস্ত ঘটনাকেই যেন আবার একবার দেখতে পান। ঠিক এইভাবেই ওনার সামনে এসেছিলেন মালতী দেবী। হয়ত ওনার ও সমস্ত ঘটনা মনে পড়ে যায়, তাই এখনো উনি মাটির ই দিকে তাকিয়ে আছেন, একবার মুখটা তুলে তাকাতে পর্যন্ত পারছেন না।
মানব বাবুঃ একি বৌদি, এখনো কেন মুখটা ওরকম করে আছো। প্লিস একটু হাঁসো। তুমি না হাসলে আমি কিন্তু চলে যাবো। কি হোল চলে যাবো।
এবার মুখ তুলে সামনের দিকে দেখেন মানব বাবু। মালতী দেবীর মুখে সেই মিষ্টি হাসিটা আবার ফিরে এসেছে। চোখের সামনে নিজের তপস্যা পূর্ণ হতে দেখে আর নিজেকে সংবরন করতে পারেন না মানব বাবু। প্রায় ঝড়ের বেগে সামনের দিকে ছুটে যান। একটা হাত মালতী দেবীর মেদবহুল কোমরে আর আরেকটা হাত ওনার মাথার পেছনে রেখে একবার তাকান ওনার দুই চোখে। না এখনো হাঁসিটা মিলিয়ে যায়নি ওনার মুখ থেকে। হয়ত এভাবেই চেয়েছিলেন উনি মালতীকে, তাই হয়ত এতো অপেক্ষা, এতো ত্যাগস্বীকার। নিজের নাকটা একবার মালতী দেবীর নাকের ওপর ঘষে দেন মানব বাবু। কামনার আগুনে যে মালতী দেবীর শরীর ও জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। “উম্ম” করে একটা শব্দ নির্গত হয় মালতী দেবীর মুখ দিয়ে। মানব বাবু নিজের মুখটা আবার কিছুটা দূরে নিয়ে এসে তাকান মালতীর দিকে। মালতীর দুই চোখ কামনার আবেশে বুজে গেছে। ফিক করে হেঁসে ফেলেন মানব বাবু। হয়ত মনে মনে বলেন “সত্যি বৌদি তুমি এখনো সেই ২০ বছরের সদ্য যুবতীই রয়ে গেছ, এতো তাড়াতাড়ি নিজের কামনা প্রকাশ করে দিলে। এইকারনেই আমি তোমায় এতো ভালোবাসি” মানব বাবুর পক্ষেও আর নিজেকে আটকে রাখা সম্ভব ছিলনা।
নিজের দুই ঠোঁট মালতী দেবীর ঠোঁটের ওপর রেখে কিছুক্ষন অপেক্ষা করেন। হয়ত ওনার মুখের সেই মিষ্টি উগ্র গন্ধটার জন্যই মালতী দেবীর শ্বাস প্রশ্বাস অস্বাভাবিক রকম ত্বরান্বিত হয়ে যায়। চোখের সামনে নিজের প্রিয়তমাকে এভাবে কাম দহনে পুড়তে দেখে উনিও আর থাকতে পারেন না। একবার নিজের দুটো ঠোঁট একটু বড় করে ফাঁক করে নিয়ে মালতী দেবীর নীচের ঠোঁটটা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নেন। দাঁত দিয়ে অল্প একটু চাপ দিয়ে শরীরের সমস্ত পৌরুষ নিবিষ্ট করে দেন। মানবএর শরীরে তখন দানব বশ করেছে। দুহাত দিয়ে মালতীর মাথাটা চেপে ধরে নিজের মাথাটা ওপর নিচ করে মালতীর সুমিষ্ট মুখ থেকে সমস্ত রস শুষে নিতে শুরু করেন। নিজের দুহাত দিয়ে শক্ত করে মালতীও মানবের কাঁধটা জড়িয়ে ধরেন। কখন যে মালতীর মুখ দিয়ে উম উম করে শীৎকার শুরু হয়েছে তা মানব ও খেয়াল করেনি। এই শীৎকার মানবের তীব্রতাকে অনুঘটকের মতই আরও বাড়িয়ে দেয়। প্রচণ্ড তীব্রতায় কখনো মালতীর দুই ঠোঁট কখনো একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য বেরিয়ে আসা রসালো জিভ, কখনো নরম দুই গাল নিজের দুই ঠোঁট ও জিভ দিয়ে ওলট পালট করতে থাকেন। মালতীর মুখের শীৎকার ও শরীরের কম্পন দেখে ওনার মনে হয় মালতীর বোধ হয় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কয়েকটা মুহূর্তের জন্য উনি নিস্তার দেন মালতী দেবীকে।
ভালোবাসার অত্যাচার ই হোক বা তীব্রতা হোক মালতীর দুই চোখ নিষিদ্ধ এই ভালোবাসায় লাল হয়ে যায়। তাও লজ্জাকে ত্যাগ করে একবার ওপরের দিকে তাকিয়ে মানবের দুই চোখে দেখেন মালতী। মুখদিয়ে অস্ফুট কয়েকটা শব্দ বেরিয়ে আসে
মালতী দেবীঃ বন্ধুর মত তুমিও তো আমাকে একদিন ভুলে যাবে। দেখো সেদিন গলায় দড়ি দিয়ে...
কথা শেষ করতে দেয়না মানব বাবু। আবার নিমেষের মধ্যে মালতীর দুই ঠোঁটকে ফাঁক করে, নিচের রসালো পুরু ঠোঁটটা নিজের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নিন। এবার আর শুধু ঠোঁট নয় কিছুটা জোর করেই ওনার দুই ঠোঁট ফাঁক করে নিজের জিভটা ভেতরে প্রবেশ করান। এর আগে পুরুষ মানুষের জিভের স্বাদ যে কি হয় তা সত্যি ই কোনোদিন বোঝেন নি মালতী দেবী। কামের বারিধারায় সিক্ত দুই কপোত কপোতীর জিহ্বা কামনার আগুনে কর্দমাক্ত হয়ে ওঠে। এর সাথে দুজনের নাসারন্ধ্র থেকে বেরিয়ে আসা গরম নিঃশ্বাস যেন আগুনের লেলিহান শিখাকে আরও আরও বেশি করে তাতিয়ে দেয়। মুখটা কোনরকমে মানবের কবল থেকে মুক্ত করে প্রায় হাঁপাতে হাঁপাতে বলে ওঠেন মালতী দেবী
মালতী দেবীঃ আমায় স্পর্শ করে কথা দাও কখনো আমায় ছেড়ে যাবেনা। কি হোল উত্তর দিচ্ছনা যে?
নিজের দুহাত নিচু করে মালতীর বিশাল দুই মাংসল পাছাকে প্রায় অতিমানবিক ক্ষিপ্রতায় খামচে ধরে সামনের দিকে টানে মানব। মালতী দেবী ধীরে ধীরে সামনে এগোতে এগোতে একদম মানবের শরীরে প্রবেশ করে যান। দুই হাত দিয়ে বিশাল দুই পাছাকে ডোলে দিতে দিতে বলে ওঠে মানব
মানব বাবুঃ এইতো স্পর্শ করতে বললে যে, স্পর্শ করলাম তো।
মালতী দেবীঃ (কিছুটা খিল খিল করে হেঁসে উঠে) তুমি না ভীষণ অসভ্য মানব দা। আমি শরীর ছুঁয়ে বলতে বলেছিলাম।
একদম নিচ থেকে দুই নিতম্বকে ওপরের দিকে টেনে তুলে বলে ওঠেন মানব বাবু
মানব বাবুঃ কেন বৌদি এটা কি শরীরের অঙ্গ নয়। কি হোল বল।
আহ করে একটা শব্দ বেরোয় মালতী দেবীর মুখ দিয়ে। মানব জানে এটা যন্ত্রণার নয়, পুরুষ শরীর পাওয়ার আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। থেমে থাকেনা মানব, নিজের মুখটা ফর্সা কাঁধের কাছে নিয়ে গিয়ে মালতীর নরম শরীরটাকে জিভ ও ঠোঁট দিয়ে চাঁটতে শুরু করে। কামনার উত্তেজনায় মালতী দেবী প্রায় ধনুকের মত বেঁকে গিয়ে মানবের শরীরের আরও ভেতরে প্রবেশ করে যেতে শুরু করেন। মানব নিজের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়। ভালোবাসার তীব্র আদরে মালতী দেবীর মুখ দিয়ে আহ আহ করে আরও জোরে জোরে শীৎকার নির্গত হতে থাকে।
মানব বাবুঃ বৌদি একটিবার মনে কর সেদিন রাতেও তুমি ঠিক এরকম ভাবেই আমার সামনে এসেছিলে। সেদিন তোমায় যা দিতে পারিনি আজ তা ফেরত দেবো।
মালতী দেবীর শরীরটা মুহূর্তের মধ্যে পাঁজাকোলা করে মানব বাবু বিছানার দিকে এগিয়ে যান। নরম গদির ওপর শরীরটা রেখে একবার তাকান। মানবের দিকে তাকিয়ে মালতী মিষ্টি করে একবার হাসেন। দ্রুত নিজের জামার বোতামগুলো খুলতে শুরু করে দেন মানব বাবু। মালতী দেবী তাকিয়ে থাকেন সেই পুরুষ শরীরটার দিকে যা কিছুক্ষনের মধ্যেই ওনার শরীরে ঝড় ওঠাবে, এতদিনের সমস্ত কামনা বাসনার অবসান ঘটাবে।
পর্ব ৪- বাঘিনীঃ
মালতীর নজর কিছুতেই মানবের শরীর থেকে সরেনা। হয়ত ওর নিজের ই মনে মনে একটা প্রশ্নের সঞ্চার হচ্ছে “ইস আমি কি এতটাই ইতর হয়ে গেলাম?” কিন্তু সত্যি যে বিশাল কামের আগুনে মালতী এই এতোগুলো বছর ধরে জ্বলেপুড়ে মরেছে সবের যেন আজ অবসান হতে চলেছে। মানবের নজর ও মালতীর এই কামাতুর দৃষ্টি এড়িয়ে গেলনা। দুই ঠোঁটকে সামনের দিকে বেঁকিয়ে হাওয়ায় একটা ছোট্ট চুমুর ইঙ্গিতে মানব যেন বলতে চাইল “এভাবে তাকিয়ে থেকনা বৌদি, আজ তো আমি তোমার শরীরের সমস্ত যন্ত্রণার ই অবসান ঘটাব” মালতীর দুই চোখে নিজেকে হারিয়ে দিয়ে মানব মালতীর বাম হাতটা শক্ত করে ধরে নিজের বুকের ওপর রাখল। লজ্জায় মালতীর দুই চোখ বুজে এলো। মানব ও চায়না হথাত ই ওর নিজের মনের মানুষকে এভাবে বিব্রত করতে। মুখটা একটু নিচের দিকে নামিয়ে মালতীর হাতের তালুতে আলতো করে একটা চুমু খেয়ে আদিম খেলার সূচনা ঘটাল। পুরুষের ঠোঁট যে এক নারীকে ঠিক কি পরিমান আনন্দ দিতে পারে তা মালতী অনুধাবন করে চলেছে। মালতীর দুই জানুর মাঝে যে ইতিমধ্যে তরল এক পানীয়র প্রবাহ শুরু হয়ে গেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। হয়ত বয়স মালতীকে হারাতে পারেনি, অনভিপ্রেত কম যৌন মিলনের জন্যই ওর শরীরে উত্তেজনা ও সংবেদনশীলতা এখনো সেই অষ্টাদশী মেয়েটির মতই রয়ে গেছে। মালতীর দুই চোখ কামনার আগুনে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
মানব নিজেকে একটু নিচের দিকে নামিয়ে মালতীর পায়ের কাছে নিয়ে যায়। বলার অপেক্ষা রাখেনা সাড়ি তখন কিছুটা ওপরেই উঠে ছিল, তাই পায়ের গোড়ালির কাছে সেই হলুদ সায়াটা নেমে এসেছিল। মানব নিজের বাম হাতটা মুঠো করে সায়াটা টেনে ধরে। মালতীর কোমরের কাছে জোরে টান লাগে। মুখ দিয়ে শুধু “ওহ কি করছ” এই কথাটা বেরিয়ে আসে।
মানব বাবুঃ বৌদি, কেন জানিনা এই হলুদ সায়াটা দেখলেই আমার শরীরটা ভেতর থেকে গুলিয়ে ওঠে। তুমি কি পরিমান সেক্সি তা তুমিও জানো, কিন্তু এটাই জাননা যে এই সায়াটায় তোমায় কি পরিমান সেক্সি লাগে। তুমি কি জানো বৌদি উম উমম জানো বল? বল তুমি কি জানো?
নিজের কথা শেষ করার আগেই কোমর থেকে ঘুরিয়ে সাড়িটা প্রায় অনেকটাই খুলে ফেলে মানব। তারপর শুধুই একটা জোরে ঝটকা, নিজের ই দেওয়া সাড়িটা এক টানে ওর হাতে চলে আসে। ছুঁড়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে, মালতীর একটা পাকে টেনে ওপরে তোলে মানব। বুড়ো আঙ্গুলটা নিজের মুখের মধ্যে পুড়ে অল্প একটু কামড় দেয়। হাল্কা যন্ত্রণায় ককিয়ে ওঠে মালতী “আহ” করে একটা শব্দ বেরোয়। কিন্তু মানব ও তো অভিজ্ঞ এক কামাতুর মানুষ, মুহূর্তের মধ্যে নিজের জিভ দিয়ে পায়ের চেটোতে একটা লম্বা টান দেয়, সঙ্গে সঙ্গে প্রায় খিলখিল করে হেঁসে উঠে “আহ আহ কি করছ মানব দা, দুষ্টুমি করোনা” বলে নিজের শরীরটা প্রায় ধনুকের মত বেঁকিয়ে বালিশ থেকে নিচে ফেলে দেয় মালতী। মানব ও ছারার পাত্র নয়, কখনো হাল্কা কামড় দিয়ে ঈষৎ যন্ত্রণা কখনো বা জিভের নমনীয়তায় কোমল নিপীড়ন। মানব জানে মালতীর এই কোমল ও স্বল্প ব্যবহৃত শরীরে কামেত্তজনা তুলতে ও একশ শতাংশ সফল হয়েছে। কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি নিজেকে ওর কাছে সমর্পণ করলে চলবে না। মানব চায় মালতীকে পাগল করে দিতে, যেন কামের উত্তেজনায় মালতী ঝাঁপ দিয়ে ওর শরীরে পড়ে ও হিংস্র বাঘিনীর মত ওর শরীরটা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে চেষ্টা করে। আর তখন ই জমবে আসল খেলা।
নিজের দুহাত দিয়ে প্রচণ্ড জোরে একটা টান দেয় মানব। প্রায় অজান্তেই মালতী দুপা ফাঁক হয়ে মানবের কোলের ওপর গিয়ে পড়ে। ওর দুপা কে আবার একি দিকে করে সঠিকভাবে মালতীকে নিজের কোলে বসিয়ে নেয় মানব। মানব ও পুরুষ, চোখের সামনে এরকম এক লোভনীয় রমনীকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখলে বড় বড় মুনিঋষি ও তপস্যা ভঙ্গ করে ঝাঁপিয়ে পড়বে, আর মানব তো সামান্য এক মানুষ। খুব স্বাভাবিক ভাবেই মানবের বিষাক্ত কেউটে ফণা তুলে যে অনেকক্ষণ ই দাঁড়িয়ে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। নিজের কোলে মালতীকে বসানোর একটাই উদ্দেশ্য ছিল, মালতীর নরম ও বিশাল দুই নিতম্বের মাঝে নিজের বিষধর ওই সাপের অস্তিত্ব প্রমান দেওয়া। হয়ত শত চেষ্টাতেও নারীকে সেভাবে উত্তেজিত করা যায়না যা নিজের শক্তিশালী পুরুষাঙ্গের উপস্থিতি দিয়ে করা যায়। মালতীর অবস্থাও এখন ঠিক সেরকম ই। মানবের হাত অনেকক্ষণ ওর কোমরকে জড়িয়ে ধরেছে। মালতীর শরীরটা প্রায় কালীপূজোর বলি দেওয়া পাঁঠার মাথার মতই মানবের কোমরের ওপর ছটপট করতে শুরু করে।
মানব বাবুঃ কি হয়েছে বৌদি উম উম উম(মালতীর কাঁধে নিজের মুখটা গুঁজে দিয়ে) এরকম ছটপট করছ কেন? তোমায় ভালবাসব না সোনা? এরকম করলে হবে আহ উম উম(জিভটাকে সাপের লম্বা ফনার মত বার করে মালতীর সমস্ত গলা ও কাঁধে নাড়িয়ে নাড়িয়ে) কিসের এতো লজ্জা সোনা? আমার সোনা বৌদি, আসো একটু আদর করি উম উম(ভালবাসার তীব্রতা বাড়াতে বাড়াতে)
মালতীর মুখ দিয়ে কামনা জড়ানো কয়েকটা শব্দ বেরিয়ে আসে। সাধারন মানুষের পক্ষে তা সত্যি ই বোঝার জন্য খুব দুস্কর হলেও মানব বাবু বুঝে যান “আমার একটু অস্বস্তি হচ্ছে আহ আহ আহ প্লিজ মানব দা প্লিজ উম” ওহ সত্যি কামনা জড়ানো নারীর গলা বোধ হয় মধুর চেয়েও বেশি মিষ্টি হয়। মধুকুন্দ তো অনেক আগেই হাতে পেয়ে গেছে মানব, শুধুই এক ফোঁটা মধু ছলকে এসে ওর জিভের ওপর পড়ল।
মানব বাবুঃ আস্বস্তি আমি করছি সোনা? না এই দুষ্টু ছেলেটা করছে? তুমি যে এতো সুন্দর বৌদি উমমমম বৌদি(মানবের হাত কোমর ছাড়িয়ে মালতীর স্তনের একদম নিচে এসে স্পর্শ করে) আহ বৌদি এগুলো তো মাখনের মত তুলতুলে। আর তুমি আমার ওটাকে দোষ দিচ্ছ? উমম ওহ। ওর কি দোষ ও তো সোজা হয়ে দাঁড়াবেই। ওর কোনও দোষ নেই।
মালতী দেবীঃ আহ আহ আহ উম না প্লিজ এরকম অসভ্যতা করোনা। না উম উম প্লিজ আমার অস্বস্তি হচ্ছে প্লিজ, আমায় কোল থেকে উম উম আহ নামাও। আহ আহ আহ ওহ আসতে প্লিস একটু আসতে মানব দা।
মানবের হাত মালতীর কথা শেষ হওয়ার আগেই বিশাল তরমুজের মত দুই স্তনকে নিচ থেকে ঠেলে ওপরের দিকে ওঠাতে শুরু করে। মালতীর ও মুখ দিয়ে শীৎকারের পরিমান প্রচুর বেড়ে যায়। মানবের দুহাত মালতীর বিশাল দুই স্তনকে ধরার জন্য যথেষ্ট ছিলনা। যতবারই ওপরে ঠেলে মানব ধরার চেষ্টা করে ততবার ই ওর হাত ফস্কে নিচের দিকে নেমে যায়। শেষে হতাশায় মানব প্রানপনে দুহাত দিয়ে দুই স্তনকে দলাই মালাই করতে শুরু করে। প্রচণ্ড উত্তেজনায় মালতী মুখটাকে বিশাল বড় হাঁ করে আহ আহ আহ আসতে একটু আসতে মানবদা বলে চিৎকার করতে থাকে। হাঁ করে থাকা মুখের স্বাদ পাওয়ার উদ্দেশ্যে মানব নিজের মুখটা মালতীর মুখের কাছে নিয়ে যায় আর তার ই সাথে প্রচণ্ড জোরে স্তনদুটোকে দলাই মালাই করতে থাকে। হাঁ হয়ে যাওয়ার মুহূর্তেই নিজের দুই ঠোঁট ফাঁক করে লম্বা জিভ মালতীর মুখের গভীরে প্রবেশ করায়। শুক করে একটা আওয়াজ করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মালতীর মুখ থেকে যথাসম্ভব মিষ্টি রস শুষে নেয়। নিজের মুখটা কিছুটা বিকৃত করে মালতী মানবের চোখের দিকে তাকায়, মাথাটাকে দু তিনবার এদিক ওদিক করে শুধু “উম উম না” বলে একটা শব্দ করে। মানবের শরীরে তো আগুন জ্বলে গেছে, ওকি আর মালতীর এই অনুরোধ মানতে পারে। মালতীর স্তনের ওপর হামলে পড়ার সাথেসাথে নিজের জিভের গতিবেগ ও বাড়িয়ে দেয়। মালতীর ঠোঁটের দুই কোন দিয়ে লালরঙের লালারস ঝড়ে পড়তে থাকে। মানবের নজর সেদিকেও ছিল জিভটাকে একটু বাঁকিয়ে সমস্ত রস নিজের মুখে শুষে নেয়। মালতী সুযোগ পেলেই একবার করে নিজের অনুরোধ জানাতে শুরু করে
মালতী দেবীঃ ওহ আহ উম উম্ম মানব দা, আমার অস্বস্তি হচ্ছে। আহ আহ আহ আসতে একটু আসতে। আমায় কোল থেকে নামাও না প্লিজ।
বেশ কিছুক্ষন এরকম চলার পর মানব ও হয়ত বুঝতে পারে, ও নিজেকে সংবরন করতে পারছেনা। ওকে আরও বেশি ধৈর্য ধরতে হবে, এভাবে ও যদি নিজেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে তাহলে এই শাঁসালো মহিলাকে সম্পূর্ণ ভোগ করতে পারবেনা। মালতীর দুই স্তনকে ও নিজের কবল থেকে মুক্ত করে। চুমু খাওয়ার তীব্রতাকেও অনেক কমিয়ে নিয়ে আসে। মানবের দুই হাত আবার মালতীর কোমল দুই চরনের কাছে চলে যায়। পায়ের পাতায় নিজের হাত স্পর্শ করে ধীরে ধীরে হাতটা ওপরের দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে। এতক্ষন যে ভালোবাসার অত্যাচার মালতী সহ্য করছিল, হথাত ই তা কমে যাওয়ায় মালতীও একটু শান্ত হয়। কিন্তু মালতীর এই শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়না। মানবের হাতটা ওর হাঁটুর কাছে চলে যেতেই নিজের শরীরের সমস্ত জোর দিয়ে সায়ার ওপর থেকেই মালতী মানবের দুই হাত চেপে ধরে। জোরে মাথা নাড়িয়ে আর ঈষৎ হাসির সাথে বলে ওঠে “না মানবদা, না এটা হবেনা” মানব হাত হাঁটুর ওপর ই শক্ত করে রেখে নিজের মুখটা আবার মালতীর মুখের কাছে নিয়ে যায়। নাক দিয়ে বারবার করে মালতীর কানের লতিটা ঘষে দিয়ে বলতে থাকে
মানব বাবুঃ ইস তুমি না ভীষণ স্বার্থপর। উম বল ঠিক বলছি কিনা? উম বলনা বৌদি, বল প্লিজ। তুমি আমার ওটাকে অনুভব করলে, বুঝেও গেলে আমি কতটা ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়। আর আমার বুঝি দেখার ইচ্ছে করেনা তুমি কতটা ভালবেসেছ এখনো অবধি।
মালতী দেবীঃ উম না একদম না। আমার লজ্জা করছে। প্লিস না, প্লিস আহ আহ আহ প্লিস তোমার হাত।(মানবের হাত ততক্ষনে হাঁটুর অনেক ওপরে গিয়ে ওর থাই দুটোকে দলাই মালাই করতে শুরু করেছে, মালতীও আপ্রান চেষ্টা করছে হাতদুটো যেন আর ওপরে না ওঠে)
মানব বাবুঃ উম বৌদি, তুমি না ভীষণ বদমাশ। আমার অবস্থা তুমি বুঝতে পারছ, জানো আমার সাপটা কিরম ফণা তুলে দাঁড়িয়ে গেছে। সাপ ও তো ছোবল মারার আগে একবার দেখতে চায় ওর গর্ত তৈরি কিনা। প্লিস বৌদি সাপ পাগল হয়ে গেছে। উম উম কি নরমগো তোমার থাইগুলো। উম আমি যদি মাংসাশী হতাম না তাহলে তোমায় চিবিয়ে খেয়ে নিতাম আজ। উফ কি নরম তোমার শরীর। প্লিস বৌদি, সোনা আমার হাতটা সরাও। প্লিজ তোমারও ভালো লাগবে, প্লিজ বিশ্বাস কর তোমারও ভালো লাগবে। উফ আমার শরীরটা গুলিয়ে উঠছে বৌদি। আমার দিব্বি সোনা হাতটা সরাও প্লিস।
মালতী দেবীঃ উম না সরাব না। নিজের দিব্বি কেন দিলে আগে বল? দিব্বি দিলে কেন উম উম্ম? আমি হাত সরাব না। আমার লজ্জা লাগে, আমি হাত সরাবনা।
মানব বাবুঃ ভুল হয়ে গেছে সোনা। সত্যি বলছি তোমার মুখটা এতো মিষ্টি না আমি পাগল হয়ে গেছি। ওহ বৌদি তুমি রাস্তায় বেরও কি করে। ওফ পাড়ার ছেলেরা রাতে ঘুমাতে পারেনা। উম কি মিষ্টি গো তোমার কানের নিচটা। দিব্বি দিয়ে ভুল করেছি। আর কখনো দেবনা। প্লিস হাতটা সরাও। আমি তোমায় খুব খুব খুব ভালবাসব সোনা। প্লিস হাতটা সরাও।
মালতী দেবীঃ আমার লজ্জা করে। উম উম না প্লিস। আচ্ছা আগে চোখ বন্ধ কর তবে। না যত জোর ই দাও, আমি হাত সরাবনা। আমার দিকে মুখ করে চোখটা আগে বন্ধ কর তবে। আহ আহ আহ, না আগে চোখটা বন্ধ করতে হবে।
মানব বাবুঃ ঠিক আছে নাও চোখ টা বন্ধ করলাম।
মালতী দেবী উম করে একটু হেঁসে মানবের গালে আলতো করে একটু চুমু খেলেন। নিজের হাতটা আসতে আসতে থাইএর কাছ থেকে তুলে নিলেন। মানব জানে স্বর্গভ্রমনে আর বেশি দেরি নেই। দুহাত থাইএর ওপর ঘষতে ঘষতে মানব সামনের দিকে এগিয়ে যায়। মালতীর মুখ দিয়ে আহ আহ করে শব্দ বেরোয় আর উত্তেজনায় মুখটা হাঁ হয়ে যেতে থাকে, কোমল নধর পেটটা একবার ভেতরে ও একবার বাইরে বেরতে থাকে। নারী শরীরের উত্তেজনা যে কি তা সত্যি ই মানব আগে জানত না, কারন আগে যাদের সঙ্গ পেয়েছে তারা তো বহু হাত বদল হয়ে মানবের কাছে এসেছে। উত্তর কলকাতার খাঁটি দেশীয় সুন্দরীর শরীরের উত্তেজনা তো আর ওইসব মেয়েদের দিয়ে বিচার কড়া যায়না। মানবের হাতে কোঁকড়ানো চুলের রাশি এসে স্পর্শ করে আর তার সাথে মালতীর মুখ দিয়ে উম ওহ ইস বলে একটা শব্দ বেরোয়। মানব চোখটা মৃদু খুলে মালতীর দিকে তাকায়। মালতী মানবের ই মুখের দিকে তাকিয়েছিল।
মালতী দেবীঃ উমম নাহ এটা ঠিক নয়।আহ আহ আআহ তুমি কিন্তু বলেছিলে যে তুমি চোখ খুলবে না। আহ আহ মানব দা আমায় মেরে ফেলবে তুমি ওহ কি করছ, আমার যে কি হচ্ছে।
মানব বাবুঃ তোমার সোনাটা কি নরম গো। আর এতো তাড়াতাড়ি ই...
মালতী কিছু বলতে দেয়না মানবকে বাঁ হাতটা দিয়ে মানবের মুখটা চেপে ধরে। নিজের মুখটা অন্য দিকে সরিয়ে নিয়ে আবার মানব বলে ওঠে
মানব বাবুঃ (মুখে কিছুটা মিষ্টি হাঁসি নিয়ে) এবাবা একি বৌদি হুম। কি বল ওহ বল। তুমি তো কলেজে পড়া মেয়ের চেয়েও ছোট। তুমি তো ভিজে স্নান করে গেছো। আর আমি তো ওদিকে তাকাইনি। আমার দিকে তাকাও বৌদি। আমি তোমার মুখের অভিব্যাক্তি দেখতে চাই।
মানবের দু হাত ততক্ষনে মালতীর কোমল যোনিদ্বারের সমস্ত কেশরাশিকে দুদিকে সরিয়ে দিয়ে প্রায় অভিমান করে থাকা বাচ্চার ফোলা গালের মত লাল রসালো যোনিদ্বারে স্পর্শ করা শুরু করে দিয়েছে। মানবের কোলে বসে মালতী তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া মানুষের মত ছটপট করে চলেছে। দুই হাতের মধ্যমা দিয়ে মানব অনবরত উঁচু হয়ে থাকা দুই ঠোঁটে চাপ দিতে শুরু করে। মালতীর অস্থিরতা ও তারসাথে মুখদিয়ে বেরনো শীৎকারের মাত্রা দুই ই বাড়তে থাকে। মানব নিজের মুখ মালতীর মুখের সামনে নিয়ে যায়। ঠোঁটের সাথে ঠোঁট আলতো করে স্পর্শ করে বলে ওঠে
মানব বাবুঃ আমার দিকে তাকাও বৌদি, কি হোল তাকাও। আর লজ্জা পেয়না। এতক্ষন তো আমি শুধু ইয়ার্কি করছিলাম। বৌদি আজ আমি তোমায় এতো এতো এতো ভালবাসব যে তোমার সমস্ত দুঃখ কষ্ট ঘুচে যাবে। মানব হোল মালতীর দাস। আমি যা করছি তা তোমার ভালো লাগছে। তুমি কি বৌদি উম উম্ম( মালতীর নিচের রসালো ঠোঁটটা নিজের দুই ঠোঁটের মধ্যে ঢুকিয়ে একবার চুষে নিয়ে) হুম তুমি কি গো বৌদি। জানো আমার দুটো হাত ই পুরো ভিজে চপচপে হয়ে গেছে। এতদিন তুমি ঠিক কি কষ্ট পেয়েছ আমি আজ বুঝতে পারছি। আহ আহ বৌদি (দুটো হাতের একটা করে আঙুল ক্রমান্বয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে, গোল করে বৃত্তাকারে ঘুরিয়ে আবার বার করে) ওহ কি রস গো তোমার। তুমি কি গো, একবার তো আমায় বলবে আগে, আমি আর কখনো তোমায় ছেড়ে যাবনা।
মানবের অশ্লীল কথা আর তারসাথে ক্রমাগত ওর প্রায় কুমারী শরীরকে এভাবে নিপীড়ন করে যাওয়ায় মালতীর দুই কান লাল হয়ে ওঠে। এভাবে নিসচুপ থাকা ওর পক্ষেও সম্ভব ছিলনা। শুধু ও এটাই বুঝতে পেরেছিল দুটোই উপায় এক মানবের ভালবাসার জবাব দেওয়া নয়ত ওকে দূরে সরিয়ে দেওয়া। যে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ও দ্বিতীয়বার মানবের কাছে চলে এসেছে তা ও নিজেও হারাতে চায়না। সুতরাং...
মালতী প্রায় অস্থির বদনে মানবের দিকে তাকায় দুহাত দিয়ে মানবের কাঁধটা শক্ত করে ধরে আর বলে ওঠে
মালতী দেবীঃ তুমি কখনো আমায় ছেড়ে যাবেনা তো মানব দা। আহ আহ ওমা ওমা একটু আসতে প্লিস একটু আসতে আমার লাগছে প্লিস একটু আসতে। আমি তোমায় খুব ভালোবাসি আহ আহ।
মানব বাবুঃ তোমায় ছেড়ে কে যেতে পারে বৌদি? উম্ম তুমি ই বল। তুমি জানো তোমার শরীরের বয়স হয়না। আমি যেন কোনও অষ্টাদশীর শরীরের ভেতর নিজের আঙুলগুলো ধুকিয়েছি। উফ কি পিচ্ছিল আর রসালো গো তুমি।
মালতী আর পারেনা নিজেকে ধরে রাখতে। মানবের এই অশ্লীল কথাগুলো অনুঘটকের মত কাজ করে যায়। প্রচণ্ডজোরে মানবের চুলের মুটি দুহাত দিয়ে ধরে ওর মুখটা নিজের দিকে টেনে নেয় মালতী। পাগলের মত করে মানবের সমস্ত মুখে আদর করতে শুরু করে মালতী। দাঁত দিয়ে ঠোঁটে কামড়ে পাগলের মত মানবের দুই ঠোঁটকে ওলট পালট করে দিতে থাকে। মানব বুঝতে পারে ওর বাঘিনী ধীরে ধীরে স্বমূর্তি ধারন করছে। ও চায় খেপিয়ে তুলতে নিজের বাঘিনীকে তবেই তো মজা। মালতীর ভালোবাসার তীব্রতার সাথে মানব ও নিজের দুই আঙ্গুলের তীব্রতা বৃদ্ধি করে। ওর দুহাত বেয়ে ঘন কামরস গড়িয়ে আসতে শুরু করে।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ৫- রাজু রহস্যঃ
পাগল কি আর একা মালতী হয়েছে মানবের ও তো মানুষের ই শরীর। চোখের সামনে এক সম্ভ্রান্ত ভদ্র মহিলাকে এভাবে কামের আগুনে জ্বলতে দেখে কোনও পুরুষের ই কি মাথার ঠিক থাকে! অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই মালতির শরীরটা প্রায় থরথর করে কাঁপতে শুরু করে। মানব ও নিজের আঙুল কে শান্ত করে। দুই চোখ বুজে শক্ত করে মানবের শরীরটা জাপটে ধরে ওর বুকে মাথা গুঁজে দেয় মালতী। মালতীর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মানব বলে ওঠে
মানব বাবুঃ একি বৌদি এতো তাড়াতাড়ি। এখনো তো কিছুই হয়নি। তোমার শরীরে ঠিক কি পরিমান যন্ত্রণা লুকিয়ে ছিল আজ আমি তা বুঝতে পারছি।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের ক্লান্তির জানান দেয় মালতী। আরও জোরে নিজের মাথাটা গুঁজে দেয় মানবের বুকে।
মালতী দেবীঃ আমার লজ্জা করে মানব দা এই কথাগুলো শুনলে। আমি শুধু তোমার থেকে ভালোবাসা চাই আর কিছু নয়। প্লিস আমার সাথে এরকম কথা বলনা।
মানব বাবুঃ কিসের এতো লজ্জা বৌদি। তাকাও আমার দিকে তাকাও।
কিছুটা জোর করেই মালতীর মুখটা তুলে ধরে মানব। আবার নিজের দুই ঠোঁটের মাঝে মালতীর রসালো ঠোঁটটা প্রবেশ করিয়ে পাগলের মত চুমু খেতে শুরু করে মানব। ক্ষনিকের জন্য ঠোঁটটা বাইরে বার করে বলে ওঠে “এখনো তো কিছুই ভালোবাসা তোমায় দিইনি বৌদি। এবার তো তোমায় একদম নিজের মত করে ভালবাসবো, চল বিছানায় চল” মালতীকে আবার নিজের কোলের ওপর উঠিয়ে মানব বিছানার দিকে যায়, নধর শরীরটা বিছানায় ফেলে প্রায় ঝাঁপ দিয়ে ওর ওপর পড়ে। মানবের ভারি শরীরটা ওর ওপর এসে পড়ায় মুখ দিয়ে আহ করে একটা শব্দ করে মালতী। নিজের দুপা দুদিকে ছড়িয়ে শরীরের ভারটা অনেকটাই কমিয়ে ফেলে মানব। মালতীও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে মানবের শরীরের সাথে।
মানব বাবুঃ সেদিন রাতের কথা মনে পড়ে বৌদি? তোমার মামদুটো খুব মিষ্টি। আবার একবার আমি...
মানবের কথা শেষ করতে দেয়না মালতী, মানবের মুখটা হাত দিয়ে চিপে একটু মিষ্টি হেঁসে বলে ওঠে “বললাম না অসভ্যতা করবে না” মানব ও ছাড়বার পাত্র নয় “উম্ম না” বলে ব্লাউজের ওপর দিয়েই মালতীর ডাঁসা দুটো স্তনের ওপর নিজের হাত রেখে দেয়। মালতীর কিছু বলার আগেই কয়েকটা আঙুল কিছুটা জোর করেই ব্লাউজের খাঁজের ভেতর দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। প্রায় ককিয়ে ওঠে মালতী “না প্লিজ, এরকম করোনা ছিঁড়ে যাবে ব্লাউজটা” মানব হাত গুলো ক্রমশ ভেতরের দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে। “না না প্লিজ আমার লজ্জা করছে। না না” মালতীর প্রতিবাদ আরও বাড়তে থাকে, মানবের দুই হাত শক্ত করে ধরে নেয় মালতী। মানব বোঝে সত্যি ই মালতী ওকে লোভনীয় এই দুই ফলের স্বাদ নিতে দেবেনা। মানব বিছানার দিকে তাকায়, একটা চাদর তুলে নিয়ে নিজের ওপর ঢাকা দেয়। ওদের শরীরটা প্রায় পুরো চাদরের তলায় চলে যায়। “কি সোনা আর লজ্জা লাগছে না তো? বল আর লজ্জা লাগছে না তো?” মালতী শুধুই সামান্য হাসে। এই হাসির মধ্যে যে অনুমতি রয়েছে তা বুঝতে কোনও অসুবিধা থাকেনা মানবের। চাদরের মধ্যে নিজের মুখটা ঢুকিয়ে নেয়। দুহাত আবার মালতীর উঁচু হয়ে থাকা বুকের ওপর রাখে। এক এক করে ব্লাউজের হুকগুলো খুলতে শুরু করে। যদিও “উম না অসভ্য” এইসব শব্দগুলো মালতীর মুখ থেকে আসতেই থাকে। অত্যন্ত দ্রুততার সাথে মানব ব্লাউজটা খুলে নিজের মুখটা দুই স্তনের মাঝে গুঁজে দেয়।
মানব বাবুঃ উম বৌদি, স্নান না করে তুমি খুব ভালো করেছ। আমি তোমার দুধের এই উগ্র গন্ধটা না পেলে সত্যি ই পাগল হতাম না। ওহ বৌদি তুমি আমায় পাগল করে দিয়েছ। এবার দেখো কিভাবে তোমার দুটো শক্ত মাইকে আমি চুষে চুষে শুকনো করে দি। উম উম ওহ উম।
মালতী যন্ত্রণা ও কামের আগুনে নিজের মাথাটাকে অনবরত দুপাশে করে ছটপট করতে শুরু করে। মানবের মুখে মালতীর একটা স্তনের বোঁটা, অন্য হাতে অপর স্তন। মুখটাকে বিশাল বড় করে হ্যাঁ করে যতটা সম্ভব এই বিশাল মাংশল অংশকে নিজের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নেয় মানব। আবার অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই ধীরে ধীরে মুক্ত ও করে। মুক্ত করার মুহূর্তে স্তনের বোঁটায় হাল্কা একটা কামড় দেয়। যন্ত্রণায় ওমা বলে প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে ওঠে মালতী। প্রায় নারকীয় ক্ষমতায় মালতীর স্তনকে একবার জিভ ও দাঁত দিয়ে ও একবার হাত দিয়ে ওলট পালট করতে থাকে মানব। মালতীর শরীরটা যন্ত্রণা ও আনন্দে খাটের এপাশ থেকে ওপাশে ঘুরতে থাকে। স্তনের ওপর থেকে মুখটা উঠিয়ে ঘাড়ের কাছে নিয়ে যায়, প্রথমে দাঁত দিয়ে অল্প একটা কামড় দিয়ে আবার পাগলের মত করে আদর করতে শুরু করে মানব। মালতীর কপাল থেকে বুক অবধি অংশে প্রায় আলোর গতিবেগে আদর করতে শুরু করে মানব। এই ভালোবাসার তীব্রতায় কখন যে চাদরটা শরীর থেকে সরে গেছে তা আর খেয়াল হয়না মালতীর। সত্যি ই চাদরের আর কোনও দরকার ও ছিলনা। মালতীর দুই চোখে যে কামের আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে তাকে মানব না নেভালে হয়ত মালতি ও মানবকে ছাড়বে না।
মানবের হাত অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই মালতীর সায়ার কাছে চলে যায়। সামান্য একটা টানেই সায়ার গেরোটা খুলে যায়। অদ্ভুতভাবেই মালতী সামান্য একটা প্রতিবাদ করেনা। প্রতিবাদের ভাষা যে হারিয়ে গেছে। তার বদলে ফিরে এসেছে কামনার অভিব্যাক্তি। প্রচণ্ড তীব্রতায় মানব এক টানে সায়াটা খুলে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। শরীরে চাদরটা থাকার ফলে যতটুকু লজ্জা নিবারন হয়েছিল সেটাও প্রায় চলে যায়। মালতী কোনও প্রতিবাদ করেনা ও শুধু চায় যত দ্রুত হোক মানব ওর শরীর থেকে এই যন্ত্রণার অবসান করুক। মালতীর এই নগ্ন শরীরটার দিকে অবাক দৃষ্টিতে একবার তাকায় মানব।
মানবঃ ওহ এই শরীরটাকে একবার ছোঁয়ার জন্য প্রায় ২০ বছর আমি অপেক্ষা করেছি। আজ সব অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। বৌদি আজ তোমার শরীর থেকে সমস্ত রস আমি শুষে নেবো। সামান্য কোনও অভিযোগের সুযোগটুকু আমি দেবনা।
কোনও উত্তর দিতে পারেনা মালতী। চুপ করে মানবের মুখের দিকে অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকে। নিমেষের মধ্যে মালতীর দুই পাকে টেনে ওপরের দিকে তোলে ও হাঁটুর কাছে ভাঁজ করে পেটের ওপর রাখে মানব। এভাবে পাকে ভাঁজ করে দেওয়ায় একটু পেটে টান পড়েছে হয়ত ওর একটু কষ্ট ও হচ্ছে কিন্তু তা প্রকাশ করেনা মালতী, কারন ও জানে যে সুখ ও পেতে চলেছে এখন তার জন্য হয়ত ওকে জন্ম জন্মান্তর অপেক্ষা করতে হতে পারে। ভাঁজ করা দুই পাকে আরেকটু ফাঁক করে দেয় মানব। দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে লাল চেরা রসালো যোনি দৃশ্যমান হয়। পা দুটোকে নিজের কাঁধের ওপর রেখে একটা আঙুল দিয়ে লাল চেরা দুই ঠোঁটের ওপর একটু চাপ দেয় মানব। মালতীর শরীরটা আবার প্রচণ্ড জোরে কেঁপে ওঠে।
মানব বাবুঃ বৌদি, এবার আমি যে সুখ তোমায় দেবো তা তুমি কোনোদিন ভুলতে পারবেনা। সারা জীবনের জন্য আমার দাসী হয়ে যাবে।
মালতী কোনও উত্তর দেয়না। শুধুই লজ্জা আর উত্তেজনায় দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে হাঁপাতে থাকে। মানব নিজের হাত মালতীর থাই এর ওপর থেকে সরিয়ে নেয়, মালতীর দুপা মানবের কাঁধের ওপর গিয়ে পড়ে। মানবের মুখ যতই নিচু হয়, মালতীর বুকের ওঠানামা তত বাড়তে শুরু করে। একসময় মানবের জিভ ও দুই ঠোঁট মালতীর রসালো যোনিকে স্পর্শ করে। আহ বলে প্রায় বিছানা থেকে লাফিয়ে ওঠে মালতী। জিভ দিয়ে একবার দুটো ঠোঁটকে ঘেঁটে দিয়ে লম্বালম্বি নিজের জিভটা যোনিদ্বারে রেখে তরোয়ালের মত করে জিভটা চালাতে শুরু করে। মালতীর মাথাটা উত্তেজনায় বিছানা থেকে ওপরের দিকে উঠে আসে আবার নেমে যায়। মুখটা কিছুটা ওপরের দিকে উঠিয়ে মানব বলে
মানব বাবুঃ আরে এতো কিছুই নয়। এখানের সাথে সাথে তোমার ওই বিশাল দুধগুলো চটকাতে শুরু করলে তো তোমার আনন্দ দ্বিগুন হয়ে যাবে। দেখবে?
মালতী কোনও উত্তর দেওয়ার আগেই মানব দু হাত প্রশস্ত করে মালতীর দুই বিশাল মাইকে চটকাতে শুরু করে দেয়। তার সাথে নিজের জিভকেও রসালো ওই অঙ্গের ভেতরে ও বাইরে করতে থাকে। উত্তেজনায় মালতী আহ মানব দা আহ মানব দা করতে শুরু করে। মানব বোঝে পাখি এবার খাঁচায় ঢুকেছে। মানব নিজের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়। এরফলে যে এই কথাও শুনতে হতে পারে তা মানব ভ্রুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি। মালতীর দুই চোখ কামনার আবেশে বুজে এসেছে, মুখ দিয়ে অস্পষ্টভাবে কিছু শব্দ বেরিয়ে আসছে। হয়ত এই শব্দগুলোই মানব শুনতে চায়।
“আহ মানব আরও আরও জোরে চাটো আরও জোরে চাটো আর একটু। ওহ হ্যাঁ আমার ও হচ্ছে। হুম ওহ মানব মানব আহহ আহহ”
মানব নিজের মুখটা সরিয়ে নেয়। প্রায় বমি করার ঢঙে মালতীর যোনি দিয়ে গভীর কামরস বেরিয়ে আসতে শুরু করে। নাকটা কাছে নিয়ে গিয়ে একবার গন্ধ শোকে মানব।
মানব বাবুঃ ওহ বৌদি। তোমার তো দুবার হয়ে গেলো। আমার কিন্তু একবার ও হয়নি। তুমি সত্যি আমার পুচকি সোনা।
মালতী লজ্জায় ক্লান্তিতে নিজের মাথাটা একপাশে রেখে চোখ বুজে দেয়।
মানব বাবুঃ একি বৌদি ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? আমি তো এখনো নিজের দণ্ডটাই তোমায় দেখায়নি। আসল আনন্দতো ওই দেবে।
মালতী আর কোনও কথা শোনার মত অবস্থায় ছিলনা। মাথাটাকে একপাশে রেখে দুচোখ বুজে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে মালতী। মানব আরও একবার তাকিয়ে দেখে মালতীর যোনিদ্বারের দিকে। ওখান থেকে রসপ্লাবন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মানব অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে
মানব বাবুঃ চোখ খোল বৌদি, আমি তো এখনো তোমার খেলনাটাই দিইনি। খেলা করবেনা তুমি।
মালতী চোখ খোলে না। মানব খাট থেকে নেমে নিজের বেল্টের ওপর হাত দেয়। মুহূর্তের মধ্যে নিজের বেল্ট, প্যান্ট ও জাঙিয়া খুলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে যায়। অতি সন্তর্পণে ধীরে ধীরে খাটের ওপর উঠে দু পা ফাঁক করে মালতীর ঠিক বুকের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। এতক্ষনে মালতী চোখ খোলে। চোখের সামনে মানবের বিশাল আকৃতির পুরুষাঙ্গ দেখে মালতী আবার লজ্জায় দু চোখ বুজে দেয়।
মানব বাবুঃ একি বৌদি এতো লজ্জা তোমার। এটা তো তোমার জন্য। একটু আদর করবেনা একে।
কথা শেষ করেই নিজের শরীরটা সামনের দিকে নিয়ে গিয়ে ঠাটানো বাঁড়াটা ঠিক মালতীর দুই ঠোঁটের ওপর ধরে। “উম উম না না মানব দা, আমার ঘেন্না করে” বলে প্রায় জোর করে মানবকে ঠেলে উঠে বসে মালতী।
মানব বাবুঃ ঠিক আছে, আদর করতে হবেনা। কিন্তু কথা দিতে হবে একদিন এটাকে তুমি মুখে নেবে, কি হোল কথা দাও।
কিছু বলেনা মালতী। মানব আবার মালতীর কোমরটা ধরে নিচের দিকে টেনে নেয়। মালতীর মাথাটা খাটের ওপর পড়ে আর কোমরটা ঠিক মানবের দু থাই এর মাঝে। মানব এক হাতে নিজের ঠাটানো বাঁড়াটা ধরে মালতীর পিচ্ছিল যোনিদ্বারে ঘষতে শুরু করে। আবার মালতীর মুখ দিয়ে আহ আহ আহ করে শীৎকার শুরু হয়। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই মানব একটু জোরে চাপ দেয়, টুপির মত অংশটা প্রায় পুরোটাই ভেতরে ঢুকে যায়। কিছুটা যন্ত্রণা আর কিছুটা আবেশে মুখ বিকৃত করে আহ বলে চেঁচিয়ে ওঠে মালতী। মানব নিজের শরীরটাকে সামনের দিকে ঠেলে নিয়ে গিয়ে আবার মালতীর ওপর শুয়ে পড়ে। এক হাতে বাঁদিকের দুধটা শক্ত করে ধরে এবং ডান দিকের দুধটা সম্পূর্ণ মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে চুষতে শুরু করে। নরম দুই স্তনের ওপর ভালোবাসার চিহ্ন ফিরে পেয়ে মালতীর শরীরে আবার নতুন করে উত্তেজনার জন্ম হয়। মুহূর্তের মধ্যে মানব নিজের শরীরটা কিছুটা পিছিয়ে জোরে একটা চাপ দেয়। প্রকাণ্ড বাঁড়াটা প্রায় পুরোটাই ভেতরে ঢুকে যায়। যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে মালতী। কিন্তু নিজের স্তনের ওপর মানবের ভালোবাসা অল্প কিছু সময়েই সেই জন্ত্রনাকে ভুলিয়ে দেয়। কিছুক্ষন স্থির হয়ে থাকার পর মানব নিজের শরীরটা প্রচণ্ড জোরে সামনে আর পেছনে করতে থাকে। আর তারসাথে সাথে মালতীর ও মুখ দিয়ে “আহ আহ ওহ ওমা আসতে মানব দা প্লিজ উম উম” করে শীৎকার ভেসে আসতে থাকে।
পাগল হয়ে ওঠে মালতী, মানবের সারা পিঠে নখ দিয়ে আঁচড়াতে শুরু করে, ঘাড়ে প্রায় সামনের পাটির দাঁতগুলো দিয়ে দাগ বসিয়ে দেয়। এই অত্যাচারের পরিবর্তে মানব ও ফিরিয়ে দেয় সমমানের যন্ত্রণা। প্রায় পাগলা ষাঁড়ের মত মানব নিজের শরীরটা ভেতরে বাইরে করতে থাকে। মানবের দুই অণ্ড মালতীর পাছার খাঁজে গিয়ে ছপ ছপ করে শব্দ করে। মালতীর শরীরটা বহুবার কেঁপে ওঠে। কিন্তু মানব নিজের পৌরুষকে প্রমান দেওয়ার পরীক্ষায় অনড় থাকে। প্রায় দুবার নিজের কামরস ঝরিয়ে দেওয়ার পর মালতী আর সত্যি ই পারেনা। দুহাত তুলে কাকুতি মিনতি করা শুরু করে। “প্লিজ মানব দা প্লিজ। আমার শরীর আর পারছে না” কিন্তু ততক্ষনে মানবের শরীর থেকে সেই আদিম হিংস্র পশুটি বাইরে চলে এসেছে। প্রায় ১ ঘণ্টার অমানবিক পরিশ্রমের পর মানব ও শান্ত হয়। নিজের চুপসে ছোট হয়ে যাওয়া দণ্ডটি বার করে। মালতীর হ্যাঁ করে থাকা চেরা যোনিদ্বার থেকে চুইয়ে চুইয়ে সাদা ঘন কাম বাইরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। দুচোখ বন্ধ করে বিছানায় উলঙ্গ হয়ে পড়ে থাকে মালতী। ক্লান্ত শরীরে মালতীর পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে মানব।
কখন যে ক্লান্তিতে ঘুম এসে গিয়েছিল তা খেয়াল করেনি মালতী। ঘুম ভাঙতে দেখে পাশে মানব নেই। ভাবে হয়ত নিজেকে পরিস্কার করতে কুয়োপাড়ে গেছে। শ্রান্ত শরীরে কোনরকমে উঠে নিজের কাপড় গুলো কুড়িয়ে নিতে শুরু করে। হথাত মানবের জোরে একটা চিৎকারে মালতীর হুঁশ ফেরে। মালতী যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করাতে পারছিল না। কুয়োপাড়ের কাছ থেকে মানবের ই গলায় একটা কথা ভেসে আসছিল “রাজু ওই রাজু। কোথায় মারাচ্ছিস শালা। এদিকে আয়। তোকে তো এখানে থাকতে বলেছিলাম, গাছতলায় কি করছিস”
মালতীর বুকে ছ্যাঁত করে লাগে। কোনও এক অজানা আশঙ্কায় ওর দম বন্ধ হয়ে আসে। মানব দা রাজুকে কেন ডাকছে? রাজুর সাথে মানব দার কি দরকার থাকতে পারে? কি রহস্য লুকিয়ে আছে এর মধ্যে।
কোনও রকমে শরীরে সাড়িটা জড়িয়ে মালতী উঁকি মারে। রাজু পাঁচিল ডিঙিয়ে ভেতরে আসে। মনে মনে ভাবে মালতী এতোবড় স্পর্ধা তো রাজুর কখনো হয়নি তাহলে...
পকেট থেকে একটা মোবাইল বার করে রাজু মানবের হাতে তুলে দেয়। মালতী এতো দূর থেকেও স্পষ্ট বুঝে যায় এটা মানবের ই মোবাইল। তো ওটা কেন রাজুর কাছে গেলো? রহস্য যে একটা কিছু রয়েছে তা বুঝতে মালতীর দেরি থাকল না।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ৬- মালতীর অন্তর্ধানঃ
দরজার আড়াল থেকে কিছুটা মুখ বাড়িয়ে তাকিয়ে থাকে মালতী। রাজু কেন এখানে? রাজুর সাথে মানবের পরিচয় কি করে? যে মানুষটাকে কয়েকমুহূর্ত আগে নিজের শরীর হৃদয় দুই ই উজাড় করে দিয়েছে সেই মানুষটা সত্যি ই ভালো তো? তার মনে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নেই তো? এতো দ্রুত একটা মানুষকে বিশ্বাস করে কি কোনও ভুল করে ফেলল মালতী? এরকম অজস্র প্রশ্ন মালতীর মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। আসন্ন ঝড়ের পূর্বাভাস যেমন কালো মেঘের আগমন দেখে বোঝা যায়, ঠিক সেইরকম ই রাজুর এভাবে পাঁচিল ডিঙিয়ে ভেতরে ঢোকায় মালতীর জীবনে কোনও নতুন এক বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়।
হাঁসি মুখে মানবের কাছে এগিয়ে আসে রাজু। পুরুষ মানুষের মুখের প্রতিটি হাঁসি ই ভালো করে চেনে ও জানে মালতী। ও জানে এই হাঁসিটার পেছনে এক অত্যন্ত অশ্লীল ইঙ্গিত আছে। হয়ত বা এটা মালতীর মনের ভুল। কিছুটা কাছে আসার সাথেই মানব নিজের দুই হাত ওপরের দিকে উঠিয়ে একটা গা মোড়া ভাব দেখিয়ে মুখ দিয়ে একটা হাই তোলার শব্দ করে। রাজুর মুখের সেই বিচ্ছিরি রকম হাঁসিটার তীব্রতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।
রাজুঃ কি গুরু কেমন লাগলো? সত্যি তোমায় প্রনাম গুরু।
মানব বাবুঃ উমমম শালা ডাঁসা পেয়ারা একদম। এতো রস না এখনো চুষতে ইচ্ছে হচ্ছে।
মানব দরজার দিকে পেছন করে থাকলেও রাজু ছিল দরজার মুখোমুখি। রাজুর নজরে মালতীর ওই অর্ধনগ্ন শরীরটা আসে। এর আগেও যে বহুবার ও মালতীকে নগ্ন ও অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখেছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। কিন্তু এতটা সাহস বোধ হয় ওর এর আগে কখনোই হয়নি। মালতীর মুখের দিকে তাকিয়ে দুটো ঠোঁট ফাঁক করে সসসস করে একটা শব্দ করে রাজু। রাজুর ইঙ্গিত বুঝতে পেরে মানব ও পেছন ঘুরে দেখে। পেছনে এক ঝলক মালতীকে দেখে ও রাজুর গালে আলতো করে একটা চড় মারে। রাজু প্রায় বাচ্চাদের মত হা হা করে হেঁসে ওঠে।
মানব বাবুঃ থাক আর দাঁত ক্যালাতে হবেনা। মোবাইলটা ফেরত দিয়ে আমায় উদ্ধার কর দেখি।
প্রায় হাঁসতে হাঁসতে রাজু মানবের হাতে মোবাইলটা ফেরত দিয়ে পেছন ঘুরে আবার পাঁচিলের দিকে যেতে শুরু করে। মানব একটু চেঁচিয়ে বলে ওঠে
মানব বাবুঃ রাজু, সব নিজের মোবাইলে রেখেছিস তো?
রাজু আবার একটা নোংরা ইঙ্গিতপূর্ণ হাঁসি ফেরত দিয়ে বলে ওঠে “রাখবো না মানে, রাতে ঘুমাব কি করে”
সমস্ত কথাই মালতীর কানে আসে। মালতী ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা। ব্যাপারটা যে খুব একটা স্বাভাবিক নয় তা ও বোঝে। একিভাবে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকে মালতী। পেছন ঘুরে মালতীকে দেখে মানব ঠোঁটদুটো বাঁকিয়ে একটা চুমু ছুঁড়ে দেয় মালতীর দিকে। হয়ত এই ঘটনাটা না ঘটলে মানবের এই কামুক আচরনে মালতীর শরীরটাও সায় দিত, ইচ্ছে করত ওকে জড়িয়ে ধরে ওর পুরু দুই ঠোঁটে নিজের শক্ত দাঁতের কামড় বসাতে। কিন্তু না এইমুহূর্তে মালতীর মনজুড়ে একটা ঝড় বয়ে চলেছে। মানব কি ওকে ঠকাল? মানব কি সত্যি ই শুধু ওর শরীরটা চেয়েছে? মেয়েদের শরীর তো পুরুষের চোখে একদিন ঠিক ই পুরনো হয়ে যায়, তাহলে কি মালতী অজান্তেই একটা বিশাল ভুল করে ফেলেছে? কি রয়েছে মানবের মোবাইলে? এই সমস্ত প্রশ্নগুলো মালতীর হৃদয়কে তোলপাড় করে দিতে শুরু করে। দরজার সামনে মানব এগিয়ে আসতেই মালতী ওকে জড়িয়ে ধরে।
মালতী দেবীঃ কি গো মানব দা, আমাকে ছেড়ে কখন যে উঠে গেছো তুমি বুঝিইনি। আজ তোমায় আমি ছাড়বো না...
হয়ত আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন মালতী, কিন্তু ওকে থামিয়ে মানব বলে ওঠে
মানব বাবুঃ আর তো থাকা যায়না। তোমার পতিদেবের তো আসার সময় হয়ে এসেছে। আমাদের পরকীয়া দেখলে ওর যা অবস্থা হবে? বেচারা গলায় দড়ি না দিয়ে দেয়।
নিজের গল্প কিছুক্ষনের জন্য থামিয়ে সুবীর বাবুর মুখের দিকে তাকায় সত্য বাবু। এতক্ষন লজ্জায় সুবীর বাবুর চোখ দিয়ে যে কত জল নীচে পড়েছে তার কোনও ইয়ত্তা নেই। কিন্তু মনের দুঃখ রাগে পরিনত হতে কত আর সময় লাগে? সুবীর বাবুর দৃঢ় চোয়াল বোধ হয় সেই কথাই প্রমান করছে। হয়ত আজ রাতে মালতী বাড়ি ফিরলেই উনি ওনাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাইরে বার করে দেবেন। আবার নিজের গল্প শুরু করেন সত্য বাবু।
মালতী দেবীঃ ধুস, ওই বেকার অকর্মের ঢেঁকির কথা আমার সামনে বলবে না। কি ক্ষনে যে ওরকম একটা লোকের সাথে বিয়ে হোল। সব ই কপাল আমার। মানব দা আমায় তোমার বাড়িতে নিয়ে চলনা। আমি ওই মানুষটার সাথে বিবাহবিচ্ছেদ করে একদম পাকাপাকি তোমার সাথে থাকবো।
মানব বাবুঃ আর তোমার মেয়েদের কি হবে? ওরা যদি আমাকে বাবা বলে না মানে তখন?
মালতী দেবীঃ চুলোয় যাক মেয়েরা। আমার গর্ভে তোমার সন্তান আসবে। আমরা একটা নতুন জীবন শুরু করব।
আবার নিজের গল্প বন্ধ করে সুবীর বাবুর মুখের দিকে তাকান সত্য বাবু। সুবীর বাবুর মুখের অবস্থা এটাই প্রমান করে যে উনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আর একমুহূর্তের জন্য ও মালতীর সাথে সংসার করবেন না। সত্য বাবু আবার শুরু করেন
মানব বাবুঃ জীবনটা এতো সহজ নয় মালতী। তবে তুমি যে আমার সাথে সংসার করতে চাও এব্যাপারে আমি বিশাল খুশি হয়েছি। কিন্তু আজ তো আমায় যেতেই হবে কারন সুবীরের আসার সময় হয়ে গেছে।
মালতী দেবীর আলিঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত করে সামনের দিকে এগিয়ে যান মানব বাবু। মালতী দেবী কি সত্যি ই ওর সাথে সংসার করতে চান? এর উত্তর একমাত্র মালতী দেবীই জানেন। কিন্তু এই হথাত আদিখ্যেতা দেখানো কথাগুলো যে মানবের মুখ থেকে অন্য কিছু উত্তর বার করার জন্য তা বোধ হয় আপনিও বুঝতে পারছেন সুবীর বাবু। মেয়েদের মন বড়ই অদ্ভুত, ওরা যে কি চায় তা বড় বড় মুনিঋষিরা বুঝতে পারলেন না, আমি, আপনি, মানব তো সামান্য বাচ্চা। কিছুটা গলার স্বরটা উঁচু করে আবার বলে ওঠেন মালতী দেবী
মালতী দেবীঃ আচ্ছা মানবদা, রাজুকে তুমি কি করে চিনলে? ওর হাত থেকে তোমার মোবাইলটা নিলে দেখলাম...
মানব বাবুঃ তুমি কি রাজুকে চেনো নাকি? কেমন লাগে তোমার রাজুকে? (মানবের মুখে সেই পুরনো বাঁকা হাঁসিটা আবার ফিরে আসে)
মালতী কিছুটা ঘাবড়ে যায়। ও জানে মানবের এই হাঁসির ইঙ্গিত কি। যে ভয় আর দ্বিধাদ্বন্দ্ব ওর মনে চলছে তা কোনও ভাবেই মানবকে বুঝতে দেওয়া যাবেনা। এটা খুব ভালো করেই জানে মালতী।
মালতীঃ না মানে, পাড়ার ছেলে তো, দেখেছি মাঝে মধ্যে। নাম ও শুনেছি।
“ও আচ্ছা” বলে একটু হেঁসে ওঠে মানব।
মানব বাবুঃ আসলে ও যে দোকানে কাজ করে তার মালিক আমার বন্ধু। ওদের দোকানের পাশেই একটা মোবাইল সারানোর দোকান আছে। মোবাইলটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এখানে আসার পথে ওর সাথে দেখা, ওকে বললাম নিজের মোবাইলে সব ডেটা নিয়ে মোবাইলটা সারাতে নিয়ে যেতে।
“ওহ আচ্ছা, হ্যাঁ ঠিক ই করেছ” বলে মালতী একটু হেঁসে ওঠে। মালতী খুব ভালো করেই জানে মানব মিথ্যে কথা বলছে। কিছুক্ষন আগে রাজুর মুখে যে হাঁসি ও দেখেছিল এবং পাঁচিল ডিঙিয়ে ভেতরে আসার সাহস দুই ই অন্য কিছুর ইঙ্গিত বহন করে। কিন্তু ওর নারী মন। কিছুতেই নিজের মনের উৎকণ্ঠাটা মনের মানুষকে বুঝতে দেবেনা। ওদের গুরুত্ব চাই, নাম চাই, প্রশংসা চাই এবং তার সাথে সাথে নিজের পুরুষ সঙ্গীর মাথার ঘিলুটাও চাই। কি বুঝলেন সুবীর বাবু। এযে অতীব সত্য। বন্ধু, স্ত্রী, কন্যা এই সম্পর্কগুলোর মধ্যে যে আত্মিকতা জুড়ে আছে তা যে সবার জীবনেই ঘটবে তা কে দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারে। আপনি কখনো ভেবেছিলেন আপনার ই ২০ বছরের বিবাহিত স্ত্রী আপনার প্রিয় বন্ধু মানবের সামনে আপনাকে এভাবে হেয় করবে। কখনো ভেবেছিলেন “বেকার অকর্মের ঢেঁকি” বলে সম্বোধন করবে। রাগে প্রায় ফুঁসতে থাকেন সুবীর বাবু।
সত্য বাবুঃ আরে এতো রাগ করলে চলবে? গল্পতো এখনো অনেক অনেক বাকি।
সত্য বাবুঃ কিছুক্ষনের মধ্যেই বিছানা থেকে সমস্ত জামা কাপড় তুলে, প্যান্টের বেল্টটা পড়ে তৈরি হতে থাকেন মানব বাবু। মালতীর কেন জানিনা মনে হতে থাকে ওকে পাওয়ার জন্য মানবের মনে যে অদম্য ইচ্ছে ছিল তাতে একটু ভাঁটা পড়েছে। যতই হোক এখনো তো মালতীর শরীরটা অর্ধনগ্নই আছে, একটা পাতলা সিল্কের সাড়ি দিয়ে ওই শরীরটা কি কখনো ঢেকে রাখা যায়। অথচ একবার ও মানবের ইচ্ছে হচ্ছেনা টেনে সাড়িটা খুলে ওর শরীরটা নিংড়ে নিতে। ভালোবাসার অত্যাচারে মালতীকে প্রায় কাঁদিয়ে দিতে। নিজের মনেই বলে ওঠে মালতী “আমি কি একবার বিছানায় গিয়েই পুরনো হয়ে গেলাম? না এটা হতে পারেনা। ঠিক কতটা সুন্দরী আমি তা তো আমিও জানি” নিজের মনের এই ব্যাকুলতার জন্যই হয়ত প্রায় দৌড়ে গিয়ে পেছন থেকে মানবকে জাপটে ধরে মালতী। কিন্তু মানবের শরীরে সামান্য কোনও হেলদোল নেই। কিছুক্ষন আগে যে শরীরটা প্রায় আখের কলের মত মালতীর শরীর থেকে একটু একটু করে সমস্ত রস শুষে খেয়ে নিচ্ছিল সেই শরীরটাই কেমন যেন একটা অকেজো যন্ত্র হয়ে গেছে। শান্ত গলায় উত্তর দেয় মানব।
মানবঃ মালতী, ছাড় আমায়। এবার তো যেতেই হবে। আমি কাল আবার দুপুরে চলে আসব। তোমার কাছে তো ফোন আছে, আমার সাথে ফোনে কথা বল। যখন ই সুবীর থাকবে না আমি তোমার কাছে চলে আসব। কিন্তু আজ যেতেই হবে।
মানব বাবু ধীরে ধীরে বাইরে বেরোন। কিছুটা উদাসীনভাবে মালতী ওকে অনুসরন করে মুল দরজা অবধি যান।
“দোস্ত দোস্ত না রাহা/ পেয়ার পেয়ার না রাহা/ জিন্দেগি...” পরিস্থিতির সাথে বেইমানি করে প্রচণ্ড জোরে বেজে ওঠে সুবীর বাবুর মোবাইল। প্রায় চমকে ওঠেন সুবীর বাবু, আসলে এমনভাবে উনি নিজের বউ ও বন্ধুর বেইমানি করার গল্পে মশগুল হয়ে গিয়েছিলেন যে চমকে ওঠার ই তো কথা। এর আগে বোধহয় সুবীরবাবু কখনই সত্য বাবুকে এভাবে হাঁসতে দেখেন নি। প্রায় বিকট স্বরে অট্টহাস্য করে ওঠেন সত্য বাবু। ওই যে পরিস্থিত, এটাই তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অন্য কোনও পরিস্থিতিতে এভাবে সত্য বাবু হেঁসে উথলে সুবীর বাবু একটাই কথা মন মনে বলতেন “ওহ ভুতের মত ভুতের হাঁসিও প্রচণ্ড ভয়ঙ্কর হয়” কিন্তু এই হাসিটার মধ্যে যে চরম অপমান লুকিয়ে আছে তা খুব ভালো করেই বোঝেন সুবীর বাবু।
সত্য বাবুঃ ওহ সুবীর বাবু, আপনি যদি নিজের মোবাইলের এই রিংটোন টাও শুনতেন... যাই হোক দেখুন কে আবার এই অসময়ে ফোনটা করে বসলো। নিশ্চয়ই আপনার পবিত্র, আদর্শ গৃহবধুই হবে।
নিজের হাঁসি না থামিয়ে প্রচণ্ড জোরে হেঁসে চললেন সত্য বাবু। সুবীর বাবুর শরীরটা লজ্জা, অপমান ও ঘৃণায় প্রায় গুলিয়ে উঠল। কোনও রকমে কাঁপতে কাঁপতে পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে দেখেন রূপসা ফোন করেছে।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড ভারি গলায়) হ্যাঁ বল, কি বলবি।
অপর প্রান্ত থেকে সত্য বাবু ইশারা করে কিছু বলতে থাকলেন। অনেক কষ্টে সুবীর বাবু বুঝলেন যে লাউড স্পিকারটা অন করে উনি কথা বলার ইঙ্গিত করছেন। সুবীর বাবুও ওনার কথার অমান্য করলেন না।
রূপসাঃ বাবা, আজ তিলোত্তমা আর মা আমার কাছেই হোস্টেলে থাকবে। তুমি কিন্তু একদম বকবে না ওদের। আজ একটু কষ্ট করে তোমায় হোটেলে খেয়ে নিতে হবে।
সুবীর বাবুঃ (একটু ভারি গলায়) তিলোত্তমা কোথায়?
রূপসাঃ আমার পাশেই আছে, ওকে বকবে না কিন্তু। নে বাবা কথা বলবে তোর সাথে।
তিলোত্তমাঃ হ্যালো বাবা, আজ রূপসার কাছেই থাকবো। ওর বন্ধুদের সাথে আলাপ হয়েছে, খুব ভালো সবাই। এরপর আবার কবে দেখা হবে জানিনা...
সুবীর বাবুঃ (গলাটা আরও কিছুটা জোরে করে) তোর মা কোথায়? মাকে ফোনটা দে।
সুবীর বাবু ও সত্য বাবু দুজনেই বুঝে যান তিলোত্তমা ফোনে হাত দিয়ে চাপা দিয়ে রূপসার সাথে কিছু কথা বলছে। অল্প অল্প হলেও তা ওনাদের দুজনের কাছে ভেসে আসছে। “কিরে রূপসা, বাবা টো মা কোথায় জিজ্ঞেস করছে কি বলব, আমি জানিনা বাপু তুই বল”
রূপসাঃ হ্যাঁ বাবা, মা একটু বাইরে বেড়িয়েছে মায়ের কাজ আছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ...
সত্যবাবু আবার সেই বিশ্রিরকম ভাবে হাঁসতে শুরু করলেন। রাগে, দুঃখে, অপমানে সুবীরবাবু ফোনটা কেটে দিলেন। মোবাইলটা হাতে নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে আবার একটা কাউকে ফোন করতে গেলেন।
সত্য বাবুঃ আরে সুবীর বাবু করছেন টা কি? মালতীকে কেন ফোন করে জ্বালাতন করছেন? ও এখন হয় লাংটো হয়ে মানবের খাটে মানবের প্রকাণ্ড যৌনাঙ্গটা পাগলের মত চুষে চলেছে আর নয়ত বস্তির নোংরা কোনও এক ঘরে দুই কমবয়সী ছেলের মাঝে নিজের অতৃপ্ত যৌনতাকে পুরন করতে চাইছে।
প্রচণ্ড জোরে চেঁচিয়ে উঠে বলেন সুবীর বাবু “সত্য বাবু চুপ করুন আপনি” আবার মুখে একটা মিষ্টি হাঁসি ফিরিয়ে এনে সত্য বাবু বলে ওঠেন
সত্য বাবুঃ একি এতেই এতো রেগে গেলে চলবে। আপনি কি জানেন, মালতী কোথায়? কার সাথে? কি করছে? তা সব ই আপনার দুই মেয়ে জানে। আপনার মেয়েরা সতি সাবিত্রি নয়। ওরা মায়ের সাথে প্রতিযোগিতা করে নিজেদের কামনা পুরন করে চলেছে। হ্যাঁ তবে এটা সত্যি যে আপনি সত্যি ই অকর্মের ঢেঁকি। বাবা হিসেবে বা স্বামী হিসেবে আপনি শুধু বিশ্বাস ই করে গেছেন সন্দেহ বা শাসন কোনোদিন করেন নি। একি এতো রেগে যাচ্ছেন কেন? আচ্ছা বিশ্বাস না হলে মালতীকে একটা ফোন করুন।
সুবীর বাবু মোবাইলটা হাতে নিয়ে প্রায় কাঁপতে কাঁপতে মালতীর নাম্বারে ফোন করেন। বহুবার রিং হলেও কেউ ফোন ধরেনা। একবার দুবার করে কতবার চেষ্টা করেন তার কোনও ইয়ত্তা নেই। এদিকে সত্য বাবুর হাঁসি বেড়েই চলে। রাগে কাঁপতে কাঁপতে সুবীর বাবু মোবাইলটা নীচে নামিয়ে রাখেন।
সত্য বাবুঃ ওহ সুবীর বাবু, আপনি বিশ্বাস করুন মালতী এখন মানবের কাছে নেই। মানবের এতো বড় বাড়ি, ইচ্ছে করলেই ও অন্য কোনও ঘরে গিয়ে আপনার সাথে কথা বলতে পারতো। ও আছে এখন বস্তির কোনও এক নোংরা ঘরে। একটা টিম টিম করে লন্ঠন জ্বলছে, মালতীর লাংটো শরীরটা...
“চুপ করুন সত্য বাবু” প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে ওঠেন সুবীর বাবু।
সত্য বাবুঃ চুপ করলাম। আমার কি দরকার মশাই এতো হেঁয়ালি করার। চলুন আবার গল্পে ফিরে যাই। যে দিনের কথাটা বলছি, মানে মালতী আর মানবের নিবিড় ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, সে দিনটার কথা আপনার ও মনে থাকবে। কলেজে রামকিঙ্কর বাবু হথাত আপনাকে বলেন জামশেদপুরে কোনও এক সেমিনারে ওনার বদলে আপনাকে যেতে হবে। কি মনে পড়ছে সুবীর বাবু? সেদিন আপনি আর বাড়ি ফেরেননি। মালতীকে ফোন করে সব জানান, ও শুধু “ও আচ্ছা” বলে ফোনটা কেটে দেয়। কেন যে সেদিন আপনার মনে কোনও প্রশ্ন জাগেনি জানিনা। যাই হোক, তার ঠিক এক ঘণ্টা পরের কথা।
একটা পুরনো কাচা সাড়ীতে কোনরকমে নিজের শরীরকে ঢেকে তুলসিমঞ্চে উবুড় হয়ে প্রনাম করছিলেন মালতী দেবী। পেছন থেকে কেউ একজন এসে প্রচণ্ড জোরে মালতীর কোমরটা জড়িয়ে ধরে। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে পেছন ঘুরে দেখেন মালতী দেবী। আপনার কি মনে হয় সুবীর বাবু, কে জড়িয়ে ধরল মালতীকে?
পর্ব ৭- নিষ্ঠুর ভালোবাসাঃ
প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যায় মালতী। কে সেই বলশালী পুরুষ যে নিজের কঠিন বাহুডোরে মালতীকে সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত করেছে। আপ্রান চেষ্টা করতে থাকে মালতী একবার পেছন ঘুরে দেখার, কিন্তু কিছুতেই আর ওর পেছন ঘোরা হয়না। বারবার মালতীর মনে পড়তে থাকে নিজের পরনের পাতলা ফিনফিনে সাড়িটার কথা। এই সাড়িটার তলায় যে একটা সায়া একটা ব্লাউজ ও নেই। পেছনের সেই সুপুরুষের হাতে যে ওর বুকটা কারারুদ্ধ হয়ে পড়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল যৌনাঙ্গের ফাকে যে ওর থলথলে দুই অভিজাত নিতম্ব আটকে গেছে তা মালতী খুব ভালো করেই জানে। “কে তুমি, আমায় ছাড় নয়ত পাড়ার লোককে ডাকবো” হয়ত এই কথাটাই বলতে যাচ্ছিল মালতী, কিন্তু তার আগেই পেছনথেকে একটা মুখ এসে ওর কানের কাছে ফিসফিস করে বলতে শুরু করলো “একি বৌদি এরকম ল্যাটা মাছের মত ছটপট করছ কেন? ও বুঝেছি আমি তো গরীব ছেলে, বস্তির ছেলে তাই। কি করবে বৌদি বল সবাই তো আর মানব বাবুর মত এতো ধনী হয়না” ছেলেটা নিজের গাল মালতীর নরম গালে ঘষা শুরু করল। সদ্য গজানো দাড়ির আঁচরে মালতীর গাল ঝালাপালা হয়ে যেতে শুরু করল। মালতী জানে এই দুঃসাহসী যুবক আর কেউ নয় ওদের ই পাড়ার লম্পট ছেলে রাজু। মালতী এতটাই নিশ্চিত হয়ে পড়েছিল যে ওর মুখের দিকে না তাকিয়েই বলে উঠল “রাজু আমায় ছাড় নয়ত আমি চেঁচিয়ে পাড়ার লোক ডাকবো”
এতো সহজে যে রাজু ওকে ছেড়ে দেবে তা হয়ত ভ্রুনাক্ষরেও মালতী বুঝতে পারেনি। বেশ কিছুটা দুরত্বে নিজেকে সরিয়ে রেখে মালতী প্রচণ্ড জোরে চেঁচিয়ে বলে ওঠে
মালতীঃ তোর এতো বড় সাহস রাজু। দাঁড়া আজ আমি তোর কি অবস্থা করি দেখ। এতদিন তোর কুকর্মের কথা আমি কাউকে না জানানোয় তুই আজ এতো বড় কাণ্ডটা ঘটানোর সাহস পেলি।
রাগে প্রায় ফুঁসতে থাকে মালতী। কিন্তু মালতীকে সামান্য ও পাত্তা না দিয়ে রাজু খিল খিল করে হেঁসে ওঠে এবং মালতীর দিকে গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকে। রাজুর সাহস দেখে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে মালতী এবং তারসাথে মনে একটা আশঙ্কা “সত্যি কি মানবের মোবাইলটা অন্য কোনও কারনে নিয়েছিল রাজু” এক পা এক পা পিছিয়ে কখন যে পিঠটা দেওয়ালে ঠেকে গেছে তা মালতী দেবী খেয়াল ও করেন নি।
“রাজু আমি একজনের স্ত্রী, দুই বাচ্চার মা। আমার কোনও ক্ষতি করিস না রাজু”
নিজের দুহাত ওপরের দিকে জড়ো করে প্রায় কাকুতি মিনতি করতে শুরু করে মালতী। রাজু মুখে সেই খলনায়কসুলভ হাঁসিটা ফিরিয়ে এনে প্রায় মালতীর বুক ঘেঁসে দাঁড়ায়। রাজুর তপ্ত নিঃশ্বাস মালতীর কোমল দুই গালে পড়ে ওর শরীরকে ঘর্মাক্ত করে তুলতে থাকে।
রাজুঃ এবাবা, বৌদি তুমি এতো ভয় পাচ্ছ কেন? তোমায় তো উলঙ্গ অবস্থায় আমি, সাইদুল কতবার দেখেছি। তুমি তো ভয় কোনোদিন পাওনি। আজ হথাত ভয় পাচ্ছ কেন?
মালতীঃ রাজু, আমি তোর কোনও ক্ষতি ই করিনি। আমি ভদ্রবাড়ির বউ রাজু। প্লিস আমায় ছেড়ে দে তুই।
রাজুঃ (একটা হাত মালতীর কানের পাতার ওপর রেখে আলতো করে হাত বোলাতে বোলাতে) আরে বৌদি ছেড়েই তো দেবো তোমায়। এই বড়লোকদের বাড়িতে থাকতে যে আমারও বেশি ভালো লাগেনা। আমি তো তোমাদের ঘেন্না করি। শুধু একটা প্রশ্নের উত্তর দাও আমায়। যেদিন প্রথম বুঝলে আমি তোমার স্নান করা লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি সেদিন তোমার কেমন লেগেছিল? আর তুমি জানতে আমি দেখি, কিন্তু আবার কেন এই উঠোনেই স্নান করতে এলে? জোয়ান ছেলেদের উত্তেজিত যে তুমি খুব ভালোই করতে পারো তা আমি জানি বৌদি। কিন্তু তাই বলে এরকম?
পকেট থেকে নিজের মোবাইলটা বার করে রাজু। রাজুর কথায় যতটা ভয় ওর লেগেছিল তার সহস্রগুন ভয় ওর মনে গ্রাস করতে শুরু করে। মনে মনে নিজেকেই বলে ওঠে মালতী “তাহলে সত্যি ই মানব দা আমায় ঠকাল”
মোবাইলে কিছু একটা চালিয়ে ঠিক মালতীর মুখের সামনে ধরে রাজু। মোবাইলের দৃশ্য দেখে মাথা ঘুরতে শুরু করে মালতীর। “দু পা ফাঁক মালতীর, মানবের দুই আঙুল ক্রমাগত মালতীর যোনিকে পাগলের মত অত্যাচার করে যাচ্ছে। মালতীর বিশাল দুই স্তনের কোনও একটি প্রায় অর্ধেক মানবের মুখের মধ্যে। আহ মানব দা ওহ ওহ প্লিজ একটু আসতে প্লিজ একটু আসতে। এই শব্দটায় সম্পূর্ণ উঠোন জুড়ে এক নিষিদ্ধ যৌনতার কুহুতান শুরু হয়”
প্রায় গায়ের জোরে রাজুর হাতটা নিচের দিকে নামিয়ে মালতী হাঁপাতে থাকে।
মালতীঃ বন্ধ কর এই ভিডিওটা আমি হাত জোর করে তোমার কাছে বলছি বন্ধ কর এটা। আমি তোমার পায়ে পড়ছি রাজু।
নিচের দিকে ঝুঁকে প্রায় রাজুর পা ছোঁয়ার চেষ্টা করে মালতী, রাজু দুহাতে মালতীর বাজুকে জড়িয়ে ধরে। মালতী মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। রাজুর নজর মালতীর সারা শরীরে মধুপিপাসু মৌমাছির মত ভনভন করতে শুরু করে। বুকের সাড়িটা যে অনেকটাই নেমে গিয়ে বিশাল দুই স্তনের মাঝের খাঁজটা বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, চরম উত্তেজনায় আর ভয়ে যে মালতী দেবীর সারা শরীর ঘর্মাক্ত আর সেই ঘামের কৃপায় যে ওর বুকের ওপরে কালো সূচালো স্তনবৃন্তের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠেছে, উরুর কাছে চ্যাপচ্যাপে ঘামে যে সাদা রসালো থাইগুলো সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে তা লক্ষ্য করতে রাজুর মাত্র কয়েকটা সেকেন্ড সময় লাগে।
রাজুঃ (মালতীর মুখের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে গিয়ে) বৌদি, তুমি না হেব্বি সেক্সি মাল। আমাদের বস্তির বৌদিগুলো কেমন যেন রোগাটে আর কঙ্কালের মত। তোমাদের মত মাল কেন আমাদের বস্তিতে পাইনা বলত? উম তোমার দুধদুটো না প্রায় বেরিয়ে এসেছে শাড়ির ফাঁক দিয়ে...
আর ধৈর্য দেখাতে পারেনা মালতী, গায়ের সমস্ত জোর লাগিয়ে বাঁ হাতে কষিয়ে একটা চড় মারে রাজুকে। রাজু হয়ত কল্পনাও করেনি কোনোদিন কোনও মহিলার হাতে ঠিক এতোজোরে একটা চড় ও খেতে পারে। বাঘের পেছনে কাঠি করলে বাঘ যে ক্ষিপ্র হয়ে উঠবে এতো জানা কথা। রাজুর মনিকোঠর থেকে লাল রঙের জ্বলন্ত দুটো চোখ বাইরে বেরিয়ে আসে। প্রায় বাঘের ই ক্ষিপ্রতায় মালতীর দিকে এগিয়ে যায়। মুখ দিয়ে শুধু কয়েকটি শব্দ বাইরে আসে “শালি বেশ্যা”
দুহাতে মালতীর গালকে শক্ত করে ধরে নিজের দুই ঠোঁট রাখে মালতীর নিচের ঠোঁটটার ওপর। দুই ঠোঁট দিয়ে মালতীর মুখটা যতটা সম্ভব হ্যাঁ করে, দুপাটি দাঁতের মাঝে ফাঁসিয়ে দেয় ওর রসালো নিচের পাটির ঠোঁটটা। প্রচণ্ড জোরে নিচের ঠোঁটটা চেপে ধরে নিজের লকলকে বিড়ি খাওয়া জিভটা প্রায় মালতীর মুখের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। দেশী মদ, বিড়ির গন্ধ মেশানো লালা মালতীর লালার সাথে মিশ্রিত হয়। বস্তির নোংরা ছেলের সাথে যৌন সম্পর্ক যে ঠিক কি পরিমান মসালাদার হয় তা সত্যি ই মালতী আগে কখনোই বোঝেনি। প্রায় মিনিট দশেক পর রাজুর হাত থেকে নিস্তার পায় মালতী। নিচের ঠোঁটে বাঁ হাতের তর্জমাটা রেখে দেখে রক্তের দাগ। মালতীর দুই চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গাল বেয়ে পড়তে থাকে। প্রচণ্ড জোরে চেঁচিয়ে ওঠে রাজু
রাজুঃ ঠিক, ঠিক এইভাবে আমি কেঁদেছিলাম বহুবার। কেউ আসেনি আমার কাছে। কেউ আমার চোখের জল মুছিয়ে দেয়নি। মালতী দেবী তিলোত্তমাকে পেয়ে এই বাজে ছেলেটাই আবার বদলে যাচ্ছিল, কেন এভাবে আবার পুরনো রাজুকে ফিরিয়ে আনলেন। বলুন?
একে তো কিছুক্ষন আগেই বস্তির এক নোংরা ছেলের স্পর্শে নিজেকে সম্পূর্ণ অপবিত্র করেছে মালতী, এরপর আবার মোবাইলে ওই ভিডিওটা। ভয়ে ও আশঙ্কায় মালতীর মাথা ঘুরতে শুরু করে।
মালতীঃ আমি ভদ্রবাড়ির বউ রাজু। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে দয়া করে তুমি ওই ভিডিওটা ডিলিট করে দাও। আমি সত্যি ই তোমার পায়ে পড়ছি।
দু তিন পা পিছিয়ে আসে রাজু। মাথা নাড়িয়ে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয় যে ও ভিডিও ডিলিট করবে না।
রাজুঃ এই ভিডিও আমি স্বেচ্ছায় তুলিনি। আমার সেই সাহস ও নেই। ডিলিট করার ও অধিকার আমার নেই। আপনার যা কথা আছে সব মানব বাবুর সাথে বলুন। আমি চললাম।
প্রায় ঝড়ের ই বেগে পাঁচিল ডিঙিয়ে অন্যপারে চলে যায় রাজু। মালতী দেবী ওখানেই পাঁচিলের ধারে বসে যায়। উনি বুঝতে পারেন মানব ওকে ঠকিয়েছে। কিন্তু কেন ওর সম্মানটা মানব এভাবে একটা বস্তির ছেলের কাছে লুটিয়ে দিল? নিজেকে বারবার প্রশ্ন করে মালতী। কোনওরকমে নিজেকে শান্ত করে ঠিক করে এইমুহূর্তে একটাই উপায় মানবকে ফোন করা। প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে ঘরের ভেতর যায় মালতী। বিছানা থেকে ফোনটা উঠিয়ে মানবের নাম্বার ডায়াল করে। কিন্তু সুইচ অফ। পাগল হয়ে যায় মালতী। বারবার ফোন করতে থাকে, কিন্তু একি কথা সুইচ অফ। মনের মধ্যে একটা ধারনা বারবার করে বদ্ধমূল হতে থাকে, মানব সত্যি ওকে ঠকিয়েছে। বিছানার ওপর মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে মালতী। সঙ্গে সঙ্গে ওর ফোনটা বেজে ওঠে। ফোনের দিকে তাকিয়ে মনটা ভালো হয়ে যায় মালতীর। কারন মানব নিজেই ওকে ফোন করেছে।
মানবঃ কি ব্যাপার বৌদি, এতবার আমায় ফোন করছ? তোমার কি তেষ্টা মেটেনি এখনো? আমায় কি আবার আসতে হবে নাকি তোমার কাছে?
মালতীর মনে কেমন খটকা লাগে। মানবের মোবাইল তো সুইচ অফ বলছিল তাহলে ও কি করে বলছে যে মালতী ওকে বারবার চেষ্টা করেছে।
মালতীঃ মানব দা, তোমার মোবাইল সুইচ অফ ছিল আমি...
মানবঃ আমার মোবাইল সবসময় সুইচ অফ থাকে সোনা। এখনো আমার মোবাইল সুইচ অফ। আমার মোবাইলের আর কোনও দরকার নেই। আমি এখন যেখানে থাকি সেখানে কারুর কোনও মোবাইল নেই। আমরা সব দেখতে পাই, সব বুঝতে পারি, সব শুনতে পারি।
মালতীঃ ওহ মানব দা, প্লিজ হেঁয়ালি করোনা। আমি খুব বিপদে পড়েছি তুমি...
মানবঃ বিপদ? রাজুকে তুমি বিপদ বলছ মালতী? রাজু সুপুরুষ, আমি সুবীর আমরা তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি মালতী।
মালতীঃ কি আজেবাজে কথা বলছ মানব দা। তুমি জাননা রাজু কি করেছে। তুমি আমার...
মানবঃ তুমি আমার কথাটা কেন বিশ্বাস করছনা সোনা। এখান থেকে সব ই দেখা যায়। তুমি এখন হাল্কা গোলাপি রঙের একটা পাতলা সাড়ি পড়ে আছো। তোমার শরীরে কোনও সায়া নেই, ব্লাউজ নেই। ঠিক মাঝের ঘরের খাটের ওপর একটা পা তুলে আমার সাথে কথা বলছ, তোমার বাঁ পা থেকে সাড়িটা অনেকটা সরে গেছে, ওহ কি মিষ্টি তোমার থাইটা...
মালতীঃ (কিছুটা কাঁপা কাঁপা গলায়) আমার ভয় লাগছে মানব দা। তুমি কোথায়? আমি যে বিশাল বিপদে পড়েছি।
মানবঃ বৌদি এইমুহূর্তে তুমি মৃত্যুর সামনে হলেও আমি তোমার কাছে আসব না। কেন জানো বৌদি? কি হোল বল কেন?
মালতীঃ (মালতীর গলাটা প্রায় বুজে আসে) কেন এরকম করছ মানব দা। আমি তো তোমায় আমার শরীর মন দুই ই দিয়েছি, কেন এরকম করছ তুমি?
মানবঃ শরীর তো আমিও তোমায় দিয়েছি। বৌদি তুমি অন্তত কয়েক লক্ষ বার আমায় একটা প্রশ্ন করেছ। “আমি কেন বিয়ে করলাম না?” বৌদি আজ আমি তার ই উত্তর দেবো তোমায়। বৌদি আমি মাঝেমধ্যেই নিরুদ্দেশ হয়ে যেতাম মনে পড়ে। কেউ জানেনা আমি কোথায় যেতাম। বৌদি শরীর মানব অনেককেই দিয়েছে কিন্তু মন? উঁহু এতো সেই ক্লাস ৭ এই বর্ণালীকে দিয়ে দিয়েছিলাম। আমি এখন ওর কাছেই আছি বৌদি। ভগবানের ও ক্ষমতা নেই আমাকে ওর কাছ থেকে নিয়ে যায়। কি কষ্ট মেয়েটার জানো? একা বাথরুম এও যেতে পারেনা। কষ্টে আমার বুক ফেটে যায় বৌদি। আমার ভালো লাগেনা কিছু।
মালতীর শরীরে সমস্ত রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, শরীরটা প্রায় কুঁকড়ে আসে। “বর্ণালী? ও কোথায়?” ব্যাস মৃদুকণ্ঠে এই কয়েকটা শব্দই মালতীর মুখ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে।
একিরকম অবস্থা সুবীর বাবুর ও। প্রায় জোর করে সত্যবাবুকে থামিয়ে সুবীর বাবুও বলে ওঠেন “বর্ণালী এখনো বেঁচে আছে? ডাক্তার তো বলেছিল...”
সত্য বাবুঃ কেন এরকম করলেন সুবীর বাবু? একটা হাঁসিখুশি নিষ্পাপ মেয়ে তাকে এভাবে কষ্ট দিয়ে দিয়ে...
সুবীর বাবুঃ আমি এতটাও নিষ্ঠুর নই সত্য বাবু। আমায় বিশ্বাস করুন আপনি। এটা যে হবে আমি জানতাম না। আমার বাড়ির অবস্থা ভীষণ খারাপ ছিল তার ওপর কলেজের ফাস্ট বয়। পড়াশুনার চাপ, প্রতিবেশিদের চাপ, বাড়ির চাপ আমার পক্ষে এতোগুলো সামলানো সম্ভব হচ্ছিল না। সেইসময় এই সিদ্ধান্ত না নিলে আমার সাথে সাথে আমার পরিবার ও ভেসে যেত। আপনি ই বলুন না, আমার মত ছেলে যাদের না পৈতৃক সম্পত্তি আছে না ব্যাবসা আছে তারা পড়াশুনা না শিখলে খাবে কি। যা করেছি নিজের পরিবারের কথা ভেবে করেছি। মানবকেও ঠকাতে চাইনি আমি...
সত্য বাবুঃ মিথ্যে বলবেন না সুবীর বাবু। আপনি অনেক আগে থেকেই জানতেন মানব বর্ণালীকে পাগলের মত ভালবাসত। নিজের ফাস্ট বয়ের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে আপনি বর্ণালীকে নিজের দিকে টেনেছেন। মানবের জীবনটা পরিবর্তন হয় এই কারনেই। ওই দুর্ঘটনাটা......
প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন সুবীর বাবু। “না দয়া করে ওই দুর্ঘটনাটা আমায় মনে করাবেন না, সত্য বাবু। আমার মাথা খারাপ হয়ে যায় সব মনে পড়লে। আমি সব ভুলতে চাই সত্য বাবু”
ততোধিক জোরে চিৎকার করে সত্য বাবু বলে ওঠেন “আপনি কাপুরুষ। আপনি পালিয়ে গেছিলেন”
সুবীর বাবু প্রায় বাচ্চা ছেলের মত ডুকরে কেঁদে উঠে বলেন “আপনার পায়ে পড়ছি এই ঘটনাটা আর নয়”
সত্য বাবুঃ ঠিক আছে, আমি আর বললাম না। আপনার মত মালতীও প্রায় চমকে ওঠে। কারন বর্ণালীর ব্যাপারে সমস্ত ঘটনাই তো ও জানে। আপনার মত মালতীও এটাই বিশ্বাস করে যে বর্ণালী মৃত। কিন্তু মালতী তো আর আপনার মত বোকা নয়, তাই দ্রুত নিজেকে সামলে নেয়। ও জানে ওর সামনে ঠিক কি পরিমান বিপদ রয়েছে। আবার ফোনে বলে ওঠে
মালতীঃ আমার কথাটা প্লিস শোন তুমি। রাজু না আমাদের দুজনের সবকিছু মোবাইলে তুলে নিয়েছে। আমার খুব ভয় করছে। কি হবে মানব দা?
মানবঃ কিচ্ছু হবেনা বৌদি। তুমি একবার বস্তিতে যাও আর রাজুকে বল আমি তোমায় পাঠিয়েছি দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।
ভয়ে বুকটা কেঁপে ওঠে মালতীর। কি বলতে চাইছে মানব, আর সত্যি কিভাবে সবকিছু ও দেখতে পাচ্ছে। মালতীর মাথায় আর কিছুই আসেনা।
মালতীঃ শোননা মানব দা, আমি একটা ভদ্রবাড়ির মেয়ে হয়ে কি করে ওই নোংরা বস্তিতে যাবো বল। তুমি তো একটা ফোন করে দিলেই...
মানবঃ ওই নোংরা বস্তিতে তো মানুষ ই থাকে বৌদি। আর আমি কি করে ফোন করব বৌদি, আমার ফোন তো সুইচ অফ। এখান থেকে তো কাউকে ফোন করা যায়না। তোমায় এতো উদ্বিগ্ন দেখে ফোন টা করলাম। আর হ্যাঁ বৌদি, সুবীরকে বোল বর্ণালীও ভদ্রবাড়ির ই মেয়ে ছিল। কেন যে ও এরকম করল জানিনা। আমি খুব ভালো ফুটবল খেলতাম বৌদি। সব শেষ হয়ে গেলো। ভালোবাসা যে এতো নিষ্ঠুর কি করে বুঝি বলতো। আমি ছাড়লাম বৌদি।
“হ্যালো হ্যালো মানব দা, প্লিস শোন আমার কথাটা” বলতে বলতে লাইনটা কেটে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে মানবের নাম্বারে কল করতে সেই সুইচ অফ। হতাশা ভয়ে মালতীর মাথা ভোঁ ভোঁ করে ঘুরতে লাগলো।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ৮- বস্তির আস্তাকুড়ে (পার্ট ১)
হতাশা যখন মানুষকে গ্রাস করে তখন বোধ হয় ভগবান ও আর মুখ তুলে চায়না। ফোনটা হাতে নিয়ে বারবার মানবের নাম্বারটা ডায়াল করতে থাকে মালতী। কিন্তু বারবার সুইচ অফ। এমনিতেই মালতীর মনে হাজারো প্রশ্নের ভিড় জমে রয়েছে। কে সেই অশরীরী? যে প্রতি মুহূর্তে ওর শরীরটা স্পর্শ করত, হথাত সে মিলিয়েও বা কেন গেলো? তবে কি মানব ই সেই আত্মা? ভয়ে গা ছমছম করতে শুরু করে মালতীর। নিজের অতি পরিচিত বাড়ির প্রতিটি আসবাব, প্রতিটি বস্তুকে কেমন যেন সন্দেহ হতে শুরু করে। কেন মানব ওকে এরকম হেঁয়ালি করে উত্তর দিল? বর্ণালী তো যতদূর ও জানে মৃত, তাহলে কি বর্ণালী বেঁচে আছে? মানব যদি সত্যি ই মৃত হয়ে থাকে তাহলে রাজু কেন ওকে দেখে ভয় পাচ্ছেনা। মানবের ফোন কেন নিমেষের মধ্যেই সুইচ অফ হয়ে গেলো। বনবন করে মাথা ঘুরতে শুরু করে মালতীর।
কি সুবীর বাবু এই জায়গায় আপনি থাকলে কি করতেন? ৫ মিনিট ছাড়া একটা করে সিগারেট খেতেন, দেওয়ালে মাথা চাপড়াতেন অথবা মালতীকে সব কথা খুলে বলতেন তাই তো। আপনি যে বড্ড বোকা মানুষ সুবীর বাবু। নিজেকে বাঁচানো আর নিজের সম্মান বাঁচানো এই দুই এর লড়াই এ আপনি নিজের সম্মানকেই বেছে নিতেন। কিন্তু মালতী যে আপনার মত নয়।
মালতীর কাছে সবচেয়ে সহজ পথ ছিল মানবকে রাজী করানো কিন্তু মানব তো হেঁয়ালি করে ওকে প্রায় নাই বলে দিল। দ্বিতীয় একটা পথ ও ছিল আপনাকে সব খুলে বলা। এতে হয়ত আপনাদের সাংসারিক জীবনে ঘোর বিপত্তি নেমে আসত, আপনি মালতীকে বিশাল ভুল বুঝতেন। কিন্তু দুই মেয়ের মুখ চেয়ে হয়ত ওকে তাড়িয়েও দিতেন না। কিন্তু কোন রমনী চায় বলুন তো নিজের স্বামীর কাছে হেরে গিয়ে মাথা নিচু করে পড়ে থাকতে। আপনি হলে এটাই করতেন, কিন্তু ও যে আপনার থেকে একদম আলাদা। না মালতীর কাছে আর যে কোনও রাস্তাই ছিলনা তা নয়। আরও একটা রাস্তা ছিল, ও সেটাই বেছে নিয়েছিল। কি সুবীর বাবু গায়ে কাঁটা দিচ্ছে নাকি? এখনো তো শুরুই করলাম না। মানবের সাথে মিলনের গল্প শুনে হয়ত আপনার প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল, উত্তেজনা হয়নি কিন্তু এবার তো হবে সুবীর বাবু। শুধু ভাবুন একবার...
সুবীর বাবুঃ কি বলতে চান আপনি? আপনার কোনও কথাই আমি বুঝতে পারছিনা।
সত্য বাবুঃ বুঝবেন, বুঝবেন সব ই বুঝবেন। মালতী, আপনার বিয়ে করা ২০ বছরের অর্ধাঙ্গিনী মালতীর এই কঠোর সিদ্ধান্তটা নিতে বেশি সময় লাগলো না। নিজের সাড়িটা দ্রুত খুলে খাটের ওপর রেখে আলমারির দিকে এগিয়ে যান মালতী। যতই হোক একজন সুদর্শন যুবকের বাড়িতে যাচ্ছেন, ভালো একটা কিছু তো পড়তে হয়। আলমারি থেকে নতুন একটা কালো সায়া আর কালো ব্লাউজ বার করলেন। হয়ত ওখানে দাঁড়িয়ে এটাই ভাবছিলেন যে কালো ব্লাউজের নীচে সাদা ব্রা ভীষণভাবে ফুটে ওঠে, ভীষণভাবে বোঝা যায়। তাহলে কি অন্য কোনও রঙের ব্লাউজ পড়বেন কারন ওনার তো সাদা ছাড়া অন্য কোনও রঙের ব্রাও নেই। কিছু একটা ভেবে নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন। দ্রুত ব্রাটা দুহাত ফাঁক করে পড়ে নিয়ে একে একে কালো সায়া ও ব্লাউজ ও পড়ে নিলেন। এর সাথে লাল রঙের একটা তাঁতের সাড়ি। হয়ত মনে মনে এটাই বলেছিলেন “উফ আজ মালতীর রুপে পুরো বস্তিটাই পাগল হয়ে যাবে” সুবীর বাবু সত্যি ই পাগল করে দেওয়ার মতই রুপের ঝটা দেখিয়ে দিল আপনার বউ। উফ এই বয়সেও কি করে এরকম সাজতে পারে বলুন তো। সারা মুখে হাল্কা করে পাওডার, কপালে একটা লাল গোল টিপ, গলায় পুঁথির মালা, লাল সাড়ি, কালো ব্লাউজ। উফ এতে তো যেকোনো মানুষের ই হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে। আর যাচ্ছে কিনা একটা নোংরা বস্তিতে। সুবীর বাবু জানেন এই সন্ধেবেলা বস্তির অবস্থা কিরকম থাকে? এই দরজাটা দিয়ে বেরিয়ে দুপা হাঁটলেই একটা নর্দমা, বেশ চওড়া পাকা নর্দমা। সেই নর্দমার দুধারে বসে ছেলেরা জুয়া খেলে, ওই জায়গায় বস্তির ই মেয়েরা আসতে ভয় পায় আর এতো আপনার বিয়ে করা সম্পত্তি। হ্যাঁ বলেছিলাম না আপনার এই গল্পটায় উত্তেজনা শুরু হবে, দেখুন কি হয় এরপর। যাক আর হেঁয়ালি করবো না।
পেছনের দরজাটা খুলে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে সামনের দিকে চলতে শুরু করে মালতী। কিছুটা যাওয়ার পর ই নালীর দুপাশে চোখ পড়ে, সার দিয়ে প্রায় ৭-৮ জন ছেলে বসে। কারুর হাতে পলিথিন প্যাকেট কারুর বা হাতে মোটা সস্তার বিড়ি, ওরা তাস খেলছে, যদিও তাস শুধুই একটা অজুহাত, আসল উদ্দেশ্য জুয়া। কিছু টাকা হারানো ও কিছু টাকা পাওয়া। ঠিক ওদের জীবনের রোজ নামচার মত। বেচারারা জুয়াখেলায় এমনভাবে মশগুল যে জানেওনা কয়েকহাত দূরে এক অতীব সুন্দরী রমনী ওদেরকে দেখে থমকে দাঁড়িয়েছে। বেচারারা মাসগেলে কিছু টাকা পেলে সেই টাকা থেকে এই শ দুয়েক তুলে রাখে কিছু সস্তার বেশ্যার জন্য। আবার ওদের ই বউরা হয়ত ওদের ই অবর্তমানে নিজেদের শরীর বেচে হাতখরচা চালায়। এরকম এক সুন্দরী যে ওদের রাজ্যে পদধূলি ফেলবে তা ওরা হয়ত কল্পনাও করেনি। কল্পনাতীত কোনও জিনিষ হাতের সামনে পেলে কি অবস্থা হয় জানেন সুবীর বাবু?
বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর মালতী দেবী সোজা এগিয়ে যান। ঠিক ওদের সামনে আসার পর হথাত ই এক ছেলের চোখে পড়ে। “এই ভোলা এই, দেখ। উফ কি মাল রে। শালা বস্তিতে এতো টাকা কার আছে রে? এতো সোনারগাছির নয় এ তো শালা সেই তথাকথিত কলগার্ল রে” “ধুস কলগার্ল আবার সাড়ি পড়ে নাকি?” “হ্যাঁ রে বাঁড়া তুই সব জেনে বসে আছিস। এই তো আমাদের কাশিম ভাই...” “ধুর বাল চুপ করত দেখতে দে না। উফ শালা সাদা ব্রাটা কাঁধের কাছে পুরো বেরিয়ে এসেছে রে” “কাঁধের কাছে কি বলছিস শালা ভালো করে পেছনটা দেখ পুরো হুকটা উঁচু হয়ে আছে” “চল না বাল, জুয়ার মা... চল চল” ওরা উঠে দাঁড়ায়। মালতী ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে গেলেও ওর কানে সমস্ত কথাই এসেছে। মালতীর শরীরে তিরতির করে কম্পন শুরু হয়েছে। সুবীর দা মেয়েদের যে কি করে উত্তেজিত করতে হয় তা আমার ও জানা নেই তবে এই নোংরা ছেলেদের কথায় যে এক চোরা যৌনতা মালতী নিজের দুই উরুর খাঁজে অনুভব করতে পারছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যতই ওদের মুখের অশ্লীল কথাগুলো ওর কানে প্রতিফলিত হতে থাকে মালতী নিজের শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে নিতে থাকে। এ এক সত্যি ন্যাকামো মশাই, শাড়ির আচল ঠিক করলেই কি শরীরের খাঁজগুলো লুকিয়ে যাবে। যাই হোক প্রায় অল্প সময়ের মধ্যেই ওরা মালতীকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যায় মালতী।
“কি বৌদি কোথায় যাবেন? কাকে খুজছেন? চলুন আমরা ছেড়ে দিয়ে আসছি” আর তার সাথে সাথে পেছন থেকে “সসসসসসসস” করে শব্দ। আড়চোখে তাকিয়ে মালতী বেশ ভালোই বুঝতে পারে যে ওদের নজর সাড়ী আড় ব্লাউজের ফাঁকে বেরিয়ে আসা ওর নরম পেটের দিকে নয়ত পেছন থেকে দৃশ্যমান ব্রাএর দাগগুলোতে। কিছুটা হাঁসি হাঁসি মুখ করে বলে ওঠে “রাজু এখানেই থাকে তো? আসলে বাড়ির একটা কাজে ওকে ডাকতে এসেছিলাম...” মালতীর কথা শেষ হয়না পেছন থেকে কেউ একজন চাপাচাপা মৃদুকণ্ঠে বলে ওঠে “ওহ বৌদি, রাজু তো একটা বাচ্চা ছেলে। কি কাজ আমাদের বলনা। প্রানটাও দিতে রাজি” অবস্থার সামাল দিয়ে মালতী বলে ওঠে “তোমরা যদি একটু রাজুর বাড়িটা আমায় দেখিয়ে দাও খুব ভালো হয়” “আচ্ছা চলুন” বলে একজন সামনের দিকে চলতে থাকে। প্রায় বাকি সবাই হয় ওর পেছনে নয়ত পাশে থেকে ওকে অনুসরন করতে থাকে। ওদের মুখ থেকে বিভিন্নরকম “উহ আহ ইসসসস” শব্দগুলো এমনভাবে ভেসে আসতে থাকে যে মনে হয় কোনও অভুক্ত মানুষের সামনে এক প্লেট বিরিয়ানি রেখে দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা একটা ছোট্ট কুঁড়েঘরের সামনে এসে উপস্থিত হয়। মালতী এতক্ষন খেয়াল করেনি, একবার চারপাশে তাকিয়ে দেখে বস্তির মেয়েরা জড়ো হয়ে গেছে, ওদের মধ্যে কানাঘুষো শুরু হয়েছে। সেই কথাগুলো ও ওর কানে ভেসে আসছে। “ইস রাজুও শেষমেশ বস্তির এই মিনসেগুলোর মত মেয়েমানুষ আনতে শুরু করল। এতো কোনও ভদ্র বাড়ির বউ রে। সত্যি শালা রাজুটা বেশ বড় মাছ ধরেছে” একজন বেশ জোরে জোরে চেঁচাতে চেঁচাতে বলে ওঠে “রাজু ওই রাজু বাইরে আয়, তোকে খুঁজতে এসেছেন একজন” সঙ্গে সঙ্গে ঘরের দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসে রাজু। মালতীকে দেখে ওর মাথা খারাপ হয়ে যায়। মালতী কি ওকে ভয় দেখাতে এসেছে এখানে? এইসব ভাবতে ভাবতেই মিষ্টি করে একটু হেঁসে মালতী বলে ওঠে “কি রাজু ভেতরে ডাকবে না” কয়েকটা ঘণ্টা আগে এই ঠোঁটেই কামড়ে রক্ত বার করে দিয়েছে রাজু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে মালতীর দিকে। রাজু কিছু বলার আগে পাশ থেকে এক কমবয়সী বৌদি এগিয়ে এসে বলে “তাই বলি রাজু, আমি তো কম চেষ্টা করিনি তোকে পটাতে। তুই যে ভদ্রলোকের বাড়ির বউকে পটিয়ে বসে আছিস কি করে বুঝব। যা যা মজা কর, কেউ কিছু বলবে না। (মালতীর দিকে তাকিয়ে) যাও যাও ভেতরে যাও, কাল ভোর ভোর বেরতে হবে তো আবার” আশেপাশে জমে থাকা সবাই প্রচণ্ডজোরে হেঁসে ওঠে। লজ্জায় মালতীর দুকান লাল হয়ে যায়। রাজু প্রায় জোরে মালতীর দুহাত ধরে টেনে ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়। “ঠিক আছে তোমরা যাও, ওনার সাথে কথা আছে আমার” দরজাটা লাগিয়ে দেয় রাজু।
ঘরের ভেতর ঢুকে মালতী প্রায় চমকে ওঠে। ঘরের মধ্যে একপাশে বসে সাইদুল। মাঝে একটা মাদুর বিছানো তাতে একটা সাদা বোতল, দেখেই মনে হচ্ছে সস্তার দেশী মদ। একটা গামলার মত পাত্রতে কিছু ছোট ছোট মাংসের টুকরো, এগুলো মাংস নয় তা মালতী জানে, দূর থেকে মনে হয় খাসির যকৃত আর মেটে। গরিবের মদ্যপান এর আগে কখনোই দেখেনি মালতী। মালতীকে দেখে সাইদুলের ও অবস্থা খারাপ। যতই হোক ও রাজুর মত এতো আগ্রাসী মনভাবের নয়। কিন্তু তাই বলে যে সাজুগুজু করা মালতী ডার্লিং কে দেখে ওর যৌনাঙ্গ শিরশির করছেনা তা নয়। বারবার সেই উলঙ্গ হয়ে স্নানের দৃশ্য আর এই লাল সাড়িতে প্রায় নববধুর রুপে মালতীকে মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। এতক্ষন তো রাজুর মোবাইলে মানব আর মালতীর সেই আদিম কামরিপুর উদ্রেক ও লক্ষ্য করেছে। কতবার যে পাশের নোংরা বাথরুমটায় গিয়ে নিজেকে শান্ত করে এসেছে তার ইয়ত্তা নেই। নীরবতা ভঙ্গ করে রাজু।
রাজুঃ খুব ভালো দিনে গরিবের কুটিরে পা রাখলে বৌদি। একে তো হোলি, সকাল থেকে রঙ মেখে ভাং খেয়ে কাটিয়েছি তারপর আবার তোমার আর মানবদার ওই ইনটুমিন্টু আজকের দিনটা ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে রাখবো। আচ্ছা এই ছুটির দিনে দাদা কলেজে কি করতে গেলো বলতো। সত্যি বউকে এতো অবহেলা করলে চলে। আর তোমাকেও বলিহারি বৌদি, তোমার এতো কষ্ট তো আমাদের বলবে তো ওই বুড়ো মানব কি পারবে উম আহ বউদিওহ ওহ...
সাইদুল ভাবতেও পারেনি যে রাজু একপা একপা করে এগোতে এগোতে মালতীকে এভাবে পেছন ঘুরিয়ে জড়িয়ে ধরবে। সাইদুল বহুকষ্টে বালিশটা নিজের কোলে চাপা দেয়। রাজুর একটা হাত মালতীর কোমরকে জড়িয়ে ধরেছে, আরেকটা হাত কানের লতিতে বোলাতে বোলাতে কখন যে ঠোঁটের কাছে চলে গেছে, মালতীও বুঝতে পারেনি। তিন আঙুল দিয়ে মালতীর ঠোঁটটা ঘষতে ঘষতে রাজু বলে “উফ বৌদি আজ ইচ্ছে করছে তোমায় আগে নতুন করে সিঁদুর পড়াই তারপর উম্মম্ম...” প্রায় মুখটা হ্যাঁ করে মালতীর নিচের ঠোঁটটা জাপটে ধরে রাজু। অন্যবারের মত আর কোনও বাধা দেয়না মালতী। দুহাত আলতো করে রাজুর বুকের ওপর রাখে। হাতকাটা গেঞ্জির ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা বুকের লোমের ওপর মালতীর কোমল হাতের স্পর্শ পড়তেই পাগল হয়ে ওঠে রাজু। গায়ের জোরে মালতীর দুই নিতম্বকে খামচে ধরে নিজের শরীরে ওর কোমল নধর শরীরটা প্রায় টেনে নেয়। পাগলের মত মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালতীর দুই ঠোঁট ওলট পালট করে দিতে থাকে। জিভটাকে কিছুটা বিষাক্ত সাপের মত লম্বা করে লকলক করে মালতীর রসালো মুখগহ্বরে ঢুকিয়ে দেয়। দেশী মদের উগ্র গন্ধ মালতীর সারা মুখে ভনভন করতে থাকে। কিছুটা ঘেন্না কিছুটা উত্তেজনায় মালতীর ও মুখ দিয়ে উম উম করে শব্দ বাইরে আসতে থাকে। এদিকে সাইদুল এই দুজনের কামলীলা দেখে প্রানপনে বালিশ দিয়ে নিজের লজ্জা নিবারন করার চেষ্টা করে। ঠিক বন্ধ দরজার পেছন থেকে আহ আহ করে শব্দ ভেসে আসতে থাকে। মালতীকে আকস্মিক মুক্তি দিয়ে রাজু প্রায় ছুটতে দরজাটা খোলে, মালতীও চমকে যায়, দরজার বাইরে প্রায় জনা দশেক ছেলে দাঁড়িয়ে। “শুয়োরের বাচ্চা, তোরা যখন মজা লুটিস আমি আসি, বেরব বাইরে” সবাই ভয়ে ছুট লাগায়। আবার প্রচণ্ড জোরে দরজা বন্ধ করে দেয় রাজু। ঘটনার আকস্মিকতায় মালতী প্রায় ভেজা কাকের মত থরথর করে কাঁপতে থাকে। ততক্ষনে ভয়ে সাইদুল ও উঠে দাঁড়িয়েছে। বারমুন্দার সামনে প্রায় ত্রিভুজের মত দাঁড়িয়ে আছে ওর বিশাল যৌনাঙ্গ, মালতীর নজর সেদিকেই। লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নেয় মালতী কারন সাইদুল ওদের বাড়ির দুধওয়ালা। “যা সাইদুল ওই তাকে আবীর রাখা আছে, বৌদির সাথে আজ একটু রঙ খেলে নি আমরা। যতই হোক হোলি বলে কথা। ভালদিনে এসেছ বৌদি, আজ আমার ও বাড়িতে কেউ নেই, দাদাও মনে হয় কাল বিকেলের আগে আসবে না। কোনও অসুবিধা নেই অনেকবেলা অবধি তিনজন ল্যাংটো হয়ে ঘুমাব” লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয় মালতী। অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে “রাজু, আমি তো সব খুইয়েছি শুধু আমার ওই ভিডিওটা ডিলিট করে দাও। আমার থেকে যা চাও সব ই আমি দিতে প্রস্তুত” রাজু আবার নিজের হাতটা মালতীর ঠোঁটের কাছে নিয়ে গিয়ে সুন্দরভাবে সুড়সুড়ি দিতে দিতে বলে “চিন্তা করোনা বৌদি, আমি রাজু মানব নয়। আমি এতটাও নোংরা নই” লজ্জায় আবার মাথা নিচু করে নেয় মালতী।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ৮- বস্তির আস্তাকুড়ে (পার্ট ২)
ততক্ষনে সাইদুল হাতে আবীরের প্যাকেটটা নিয়ে চলে এসেছে। সাইদুলের দিকে তাকিয়ে রাজু বলে ওঠে “একি রে, তুই এরকম নতুন বউ এর মত লজ্জা পাচ্ছিস কেন? যা বৌদি কে আদর কর একটু। তুই তো বলছিলি ব্রা পড়া অবস্থায় যা লাগবে না বৌদিকে। এই তো বৌদি তোর জন্য সাদা ব্রা পড়ে এসেছে। যা ব্রায়ের দড়ি ধরে টানাটানি কর” লজ্জায় সাইদুল ও মালতী দুজনের ই মুখ লাল হয়ে যায়। সাইদুলের লজ্জা দেখে রাজু পরিবেশ আরও গরম করে দেয়, হথাত করে ঝুঁকে পড়ে বারমুন্দার ওপর দিয়েই সাইদুলের উন্মত্ত লিঙ্গটাকে একবার টিপে দিয়ে বলে ওঠে “যতই লজ্জা পাও, এই ভদ্রলোক কিন্তু অসভ্য হয়ে উঠেছে। আরে বাবা যা না তোকে না দিয়ে আজ অবধি কিছু খেয়েছি আমি?” সাইদুল লজ্জায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। “আচ্ছা আমি ই শুরু করি” বলে আবীরের প্যাকেট থেকে একমুঠো আবীর নিয়ে মালতীর মুখে মাখিয়ে দেয়। “চল বৌদি, মিষ্টিমুখ তো করাতে পারব না, তবে মাংস খাওয়াব তোমায় চল” পেছন থেকে প্রচন্দ জোরে মালতীর কোমরটা জড়িয়ে ধরে রাজু, মালতীও বাধা দেওয়ার মত অবস্থায় ছিলনা। রাজু ঠেলতে ঠেলতে মালতীকে নিয়ে যায় মাদুরের কাছে। মালতী বসে পড়ে মাদুরের ওপর। মালতীর একদম উল্টো দিকে বসে সাইদুল। এতক্ষনে হয়ত সাইদুলের মন থেকে লজ্জাভাবটা কিছুটা কেটে যায়। মুখ তুলে মালতীর দিকে চায় সাইদুল। সাইদুলের নজরে কিছুটা হলেও অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে মালতী। কিন্তু লজ্জার আরও অনেক বাকি ছিল। পেছন থেকে মালতীর দুহাত কিছুটা ফাঁক করে বগলের মধ্যে দিয়ে নিজের দুইহাত সামনের দিকে নিয়ে যায় রাজু। প্রচণ্ড জোরে আঁকড়ে ধরে মালতীর প্রায় কুমড়োর মত বিশাল দুই স্তন। মুখদিয়ে আঁক করে একটা আওয়াজ করে মালতী। সবচেয়ে লজ্জাজনক অবস্থায় সাইদুল, কারন ও না পারছে মালতীর দিকে নিজের হাত বাড়াতে না পারছে নিজের উদ্ধত লিঙ্গকে প্রশমিত করতে। রাজুর হাতের প্রচণ্ড চাপে প্রায় স্পঞ্জের মত মালতীর নরম দুই স্তন সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে। এই দুই স্তনকে ঢাকার জন্য কোনও ব্লাউজ ই বোধ হয় উপযুক্ত নয়, তাই হাতের চাপে ব্লাউজ কাঁধ বরাবর দুদিকে প্রসারিত হয়। সাদা ব্রা এর ফিতে দুটো দুপাশে বেরিয়ে আসে। মালতী মাটির দিকে তাকিয়ে প্রচণ্ড জোরে হাঁপাতে শুরু করে। পেছন থেকে রাজু নিজের মুখ ঠিক ব্রা এর দড়িটার ওপর রেখে জিভ দিয়ে চাঁটতে শুরু করে। “উম্মম্ম সাইদুল ভাই, আমি বলছি আর লজ্জা পাসনা, বৌদি আমাদের বউ আজ রাতের জন্য। তুই ঠিক ই বলেছিস শালা ব্রা এর ফিতেতে মুখ দেওয়ার আনন্দই আলাদা। আয় ভাই কোনও চিন্তা নেই” মালতীর মুখের দিকে একবার তাকায় সাইদুল। মালতীও কিছুটা ভয়ের সাথে সাইদুলের দিকে তাকায় ও আবার মাথা নিচু করে নেয়। আর পারেনা সাইদুল প্রায় পাগলা কুকুরের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে মালতীর ওপর। দুই হাতে মালতীর গালকে শক্ত করে ধরে নিজের দুই ঠোঁট দিয়ে মালতীর নিচের ঠোঁটটা চেপে ধরে। সাইদুলের এই আকস্মকিতায় রাজুও ঘাবড়ে যায়, মালতীর মাইগুলো আসতে আসতে টিপতে টিপতে ও সাইদুলের দিকে তাকিয়ে থাকে।
সাইদুল প্রায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে একবার নিচের ঠোঁট তো একবার ওপরের ঠোঁট, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নিজের স্থান পরিবর্তন করতে থাকে। ২ জোড়া ঠোঁটের প্রচণ্ড ঘর্ষণে চুক চুক করে আওয়াজ বাইরে বেরতে শুরু করে। সাইদুলের চেয়েও বিশ্রি অবস্থা হয় রাজুর। ওর চোখের সামনে ওর ই মধুকুন্দ থেকে চোর এসে মধু খেয়ে চলে যাচ্ছে। রাজুর দুই চোখ ঠিকরে বাইরে বেরিয়ে আসে। সাইদুল যেন এক আবেশ করেছে রাজুর শরীরে, সাইদুলের দিকে তাকানোর সাথে সাথে রাজুর শরীরে উত্তেজনা প্রচণ্ড বেড়ে যেতে থাকে। রাজু নিজের মাথা মালতীর ঘাড়ে গুঁজে দেয়। চুম্বনরত অবস্থায় সাইদুলের সাথে ওর মাথার ঘর্ষণ শুরু হয়। কিন্তু কিছুতেই হার মানতে চায়না রাজু। ও যে এই বস্তির রাজা। ওর খাবার ওর বন্ধু খেয়ে চলে যাবে তা তো হয়না। রীতিমত সাইদুলের সাথে লড়াই করে মালতীর ঘাড়, গলা জুড়ে চলতে থাকে রাজুর ভালোবাসার অত্যাচার। রাজু ও সাইদুল দুজনেই খেয়াল করে যে মালতীর দুই হাত ধীরে ধীরে সাইদুলের কাঁধকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। পা গুলো মিলে মালতীও আজ রাত ওদেরকে দেওয়ার অঙ্গীকার করে ফেলেছে। মালতীর কাঁধ থেকে মুখটা তুলে রাজু সাইদুলের দিকে তাকিয়ে বলে “ওই সাইদুল আরে শান্ত হ রে ভাই পুরো রাত তো বাকি আছে” মনে হয় সাইদুলের কানে রাজুর কথাগুলো গিয়েছিল। শান্ত হয় সাইদুল। রাজু কাঁধের ওপর দিয়ে মুখটা বাড়িয়ে মালতীর দিকে তাকায়। মালতীর ঠোঁটের কোন বেয়ে লাল তরল বয়ে আসছে। প্রচণ্ড জোরে হেঁসে দেয় রাজু। সাইদুল ও নিজের লাজুক স্বভাবটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মালতীর দিকে। মালতী আর লজ্জায় মাথা তুলতে পারেনা।
রাজুঃ আরে বৌদি, এতো লজ্জা কি তোমার। এখনো কত কি বাকি। আগে পেটে একটু তরল আর কঠিন পদার্থ ফেলা যাক। এই সাইদুল তিনটে পেগ বানা, আর চাখনায় শুধু বৌদি আর মাংস।
খিলখিল করে হেঁসে ওঠে সাইদুল। মালতী এতক্ষন এ মুখ তুলে চায়। পেছনদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাজুকে বলে “রাজু আমি মদ খাইনা। তোমরা খাও আমি বসে আছি” “এই তো তোমার বাজে জিনিষ। মানবের সাথে মদ খেতে কোনও ক্ষতি নেই আর আমরা গরীব বলে মদ খাওয়ায় ক্ষতি” একটু জোরেই বলে রাজু। মালতী মনে মনে বলে “মানব দা তোমার চেয়ে এই দুজন অনেক ভালো। তুমি সবাইকে ঠকিয়েছ” সত্যি ই তো মালতী যে কোনোদিন মদ খেয়েছে তা মানব ছাড়া আর কেউ তো জানেনা। সাইদুলের ততক্ষনে তিনটে গ্লাসে মদ ঢেলে পেগ বানানো শেষ। “বৌদি আজ তোমায় আমি নিজের হাতে খাইয়ে দেবো” মালতীর পুরু কোমরটা খামচে ধরে বলে ওঠে রাজু। মালতী জানে মদ্যপান না করে আজ ওর নিস্তার নেই। অবশ্য রাজুর ঘরে ঢোকার সময় যে হতাশা মালতীর মনে ছিল তা অনেকক্ষণ ই কোথায় উবে গেছে। দুই শক্ত সামর্থ্য জোয়ান মরদের শরীরে পিষে যাওয়ার যে কি আনন্দ তা এর আগে কখনোই বোঝেনি মালতী। তাই এই আনন্দটা কিছুটা ফুলসজ্জার ই মত। পেছন থেকে জড়িয়ে থাকা অবস্থায় ই রাজু একহাত দিয়ে একটা গ্লাস তুলে নেয়। আসতে আসতে গ্লাসটা মালতীর ঠোঁটের সামনে নিয়ে আসে। একটা মিষ্টি উগ্রগন্ধে মালতীর মাথাটা ভনভন করতে শুরু হয়। মালতীর কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে রাজু জিভ দিয়ে কানের লতিটা একবার চেটে দেয়। তারপর মিহি স্বরে বলে ওঠে “বৌদি একটু মদ পেটে না পড়লে তুমি কিছুতেই আমাদের কাছে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে না। আমরা যে ছোটলোক। অল্প অল্প করে খাও দেখবে পারবে। এই সাইদুল একটা মাংসর টুকরো বৌদির সামনে নিয়ে আয়” সাইদুল এর নজর মালতীর উত্তেজনায় ছুঁচলো হয়ে থাকা বৃন্তদ্বয়ের দিকে। রাজু আবার চেঁচিয়ে ওঠে “ওহ তোর ই তো জিনিষ চুশবি তো চোষ না, খালি একটা মাংসের টুকরো হাতে রাখ” সাইদুল দ্রুত একটা মাংসের টুকরো উঠিয়ে প্রায় লাফ দিয়ে মালতীর দুই উরুর মাঝে গিয়ে বসে। মাথাটা একটু নিচু করে ব্লাউজের ওপর দিয়েই একটা স্তনের ওপর নিজের দুই ঠোঁট রাখে। হাল্কা করে কামড় দিয়ে আবার জিভ দিয়ে চাঁটতে শুরু করে। ততক্ষনে রাজুর হাতের চাপে মালতীর মুখে প্রায় ২-৩ চুমুক মদ চলে গেছে। “খেয়ে নাও সোনা প্লিজ খেয়ে নাও তুমি” বলে রাজু নিজের নোংরা জিভটা বার করে কান থেকে সমান্তরালে ঠোঁট অবধি লম্বা রাস্তাটা ভিজিয়ে নরম করে দিতে থাকে।
কিছুটা হয়ত দ্বৈত উত্তেজনার ই বশে মালতীর পেটে আসতে আসতে মদ অনায়াসে চলে যেতে শুরু করে।
“আরে বৌদি দেখো দেখো এব্বাবা” রাজুর এই হথাত চিৎকারে মালতী, সাইদুল দুজনেই চমকে ওঠে। সাইদুল মাই এর বোঁটা ছেড়ে ওপরের দিকে দেখে। ঘোলা চোখে মালতীও পেছন ঘুরে দেখে। “দেখো সাইদুলের ঠোঁটে কি, এবাবা তোমার ব্লাউজেও লেগেছে” মালতী প্রথমে সাইদুলের দিকে ও পরে নিজের ব্লাউজের দিকে তাকায়। কিছুটা মুখ টিপে হেঁসে ওঠে মালতী(হয়ত মদ ওর শরীরে প্রভাব ফেলা শুরু করে দিয়েছে) সাইদুলের ঠোঁটে লাল হয়ে লেপটে লিপস্টিক লেগে আছে আর মালতীর কালো ব্লাউজেও লাল দাগ হয়ে খয়েরি একটা দাগ পড়ে গেছে। “বৌদি ব্লাউজটা এখানেই রেখে জেও, নয়ত দাদা বুঝে যাবে” আবার হেঁসে ওঠে মালতী। রাজু সাইদুল দুজনেই মালতীর দিকে তাকায়। ওরা জানে এটা দেশী মদ, অল্পতেই চড়ে যায়। আর এক পেগেই হয়ে যাবে। “এই সাইদুল বৌদির জন্য আরেকটা বানা, আর আমার গ্লাসটা দে” সাইদুল রাজুর হাতে গ্লাস তুলে দেয় এক ঢোকে রাজু পুরো গ্লাসটা মেরে দেয়। সাইদুলের বানাতে বানাতে রাজু আবার মালতীকে জড়িয়ে ধরে “উম তোমার ঠোঁট কি ওর একার নাকি, আসো বৌদি এখানে আসো, উম্ম আহ উম” এবার সম প্রতিধ্বনি মালতীর ও মুখ দিয়ে বেরতে থাকে। অর্থাৎ নিজের ভদ্রবাড়ির গৃহবধুর পরিচয়টা ভুলে মালতী ওদেরকে নিজের কামনা পুরনের যন্ত্র মনে করতে শুরু করে দিয়েছে।
সাইদুল নিজের গ্লাসটা একচুমুকে মেরে দিয়ে মালতীর হাতে গ্লাসটা তুলে দেয়। রাজু নিজের ঠোঁটটা সরিয়ে নিয়ে দুহাত দিয়ে আবার ময়দা মাখার মত করে মালতীর দুই স্তনকে চটকাতে শুরু করে। এতক্ষন যে কামনার আগুনকে ওদের থেকে লুকিয়ে রাখতে মালতী প্রানপনে নিজের মুখ দিয়ে একটাও অভিব্যাক্তি বার করেনি এবার সেই ভদ্রতা ও রক্ষনশীলতাই ধীরে ধীরে কর্পূরের মত উবে যেতে শুরু করে।
“উহ রাজু একটু আসতে। প্লিস একটু আসতে। আমার বয়স হয়েছে। এই বয়সের মেয়েদের বুকে আর অতো জোর থাকেনা” বলেই গ্লাসটা স্বেচ্ছায় নিজের মুখে তুলে নেয় মালতী। রাজু আর সাইদুল দুজনেই প্রায় চমকে গিয়ে একে অপরের দিকে তাকায়। রাজু চোখের একটা ইশারা করে, হয়ত এটাই বলতে চেয়েছিল “ভাই কিছু শেখ, একটা মহিলা এতো খোলাখুলি কথা বলছে আর তুই” সাইদুল রাজুর ইশারায় প্রায় তেতে ওঠে। প্রচণ্ড জোরে রাজুর হাতের ওপর দিয়েই মালতীর স্তনকে আঁকড়ে ধরে। রাজু ভদ্রতার ও বন্ধুত্বের খাতিরে নিজের হাত সরিয়ে নেয়। বিশাল জোরে টিপতে টিপতে সাইদুল বলে ওঠে “কে বলেছে তোমার বয়স হয়েছে। আমার কাছে তুমি এখনো ওই ১৮ বছরের কচিমেয়ে” খিলখিল করে হেঁসে ওঠে মালতী। মালতীর হাঁসি সাইদুলের পৌরুষে যে এভাবে আঘাত করবে তা রাজুও বুঝতে পারেনি। সাইদুল সোজা হয়ে বসে মালতীর মাথার পেছনে দুহাত দিয়ে ওর মাথাটা নিজের দিকে টেনে ধরে। রাজু ভাবেওনি এতো ক্ষিপ্রতায় সাইদুল ঝাঁপিয়ে পড়বে। রাজু শুধু চোখের সামনে কালবৈশাখীর তাণ্ডব দেখতে পাচ্ছিল। রাজুর দুই ঠোঁট, জিভ আর দুই হাত কখন কি করছে তা রাজুর পক্ষেও বোঝা সম্ভব ছিলনা। কখনো জিভ দিয়ে কখনো দাঁত কখনো বা দুই ঠোঁট দিয়ে মালতীর সম্পূর্ণ মুখমন্দলকে ওলটপালট করে দিতে থাকে সাইদুল। মালতী আর শরীরের ভার রাখতে পারেনা। আসতে আসতে মাটিতে শুয়ে পড়ে। আরও মজা পেয়ে যায় সাইদুল। প্রায় ঝাঁপ দিয়ে মালতীর শরীরের ওপর পড়ে দুহাতে দুটো দুধকে জাপটে ধরে। প্রচণ্ড জোরে দলাই মালাই করতে করতে মালতীর কপালের অপরের অংশ থেকে থুতনি হয়ে গলা অবধি উলটে পালটে ভোগ করতে থাকে। “ওমা ওমা সাইদুল ছাড়, উম ওহ ছাড় না রে প্লিজ ছেড়ে দে, ওমা আমার উম উম আসতে। উহ একটু আসতে রে” আওয়াজটা ঠিক এতো জোরে আসছিল রাজুর ভয় পেয়ে যাওয়ার ই কথা। একে বস্তি তার ওপর রাত হয়েছে। দরজার বাইরে যে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন শুনে যাচ্ছে সেব্যাপারে ও নিশ্চিত। ওর আর ভালো লাগেনা দরজা খুলে কাউকে ধমক দিতে। কিন্তু সাইদুল কে আটকাতে হবেই কারন মালতীর মুখ থেকে যে চিৎকার বেরোচ্ছে তা খুব ভুল ইঙ্গিত করছে। আরও এক পেগ মদ পেটে ঢেলে, রাজু গিয়ে মালতী আর সাইদুলের পাশে বসে। “এই সাইদুল ছাড় আবার হবে চল খেয়ে নি আমরা চল”
ধীরে ধীরে উঠে বসে সাইদুল। মালতীর চট করে ওঠার মত ক্ষমতাও নেই। সাড়িটা বুক থেকে নেমে গেছে, কালো সায়াটা অনেকটাই কোমরের কাছে বাইরে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু তার চেয়েও লক্ষণীয় দুটো জিনিষ। মালতীর সারা মুখ জুড়ে লাল সিঁদুরের দাগ। ব্লাউজটা চওড়া হয়ে ফেটে গেছে। সাদা ব্রাটা প্রায় দেখা যাচ্ছে। সাইদুল তখন ও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মালতীর দিকে। হাঁপাতে হাঁপাতে বলে ওঠে “ওহ মাধুরির ওই সিনেমাটা মনে পড়ে কি নাম রে ভারদি। শালা জ্যাকির বুকে যখন ঝুঁকে পড়েছিল সাদা ব্রাটা পুরো দেখা যাচ্ছিল পুরো ওইরকম সিন একটা। দেখ ভাই দেখ” মালতী ওদের দুজনের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। আলতো করে সাইদুলের গালে একটা চড় মেরে মালতীর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে “বৌদি প্লিস কিছু মনে করোনা। শালা বস্তির ছেলে তো মেয়ে পায়নি জীবনে” “আর শোন বৌদিকে আমরা ভালবাসবো, এটা তোর ভালোবাসা হারামি, এরকম করলে ভাগিয়ে দেবো” সাইদুল কানমুলে মালতীর দিকে তাকায়। “উঠে বস বৌদি, ভুল হয়ে গেছে”
ধরা গলায় মালতী বলে ওঠে “আমি তোমাদের তো বাধা দিইনি, যা ইচ্ছে কর তোমরা”
রাজু বোঝে মালতীর গলায় চাপা অভিমান রয়েছে। রাজু মালতীর পাশে গিয়ে বসে বলে “বৌদি ভুল হয়ে গেছে। এবার সত্যি বলছি। তোমাকে কষ্ট দেবো বলে এখানে আনিনি। তোমায় আনন্দ দেবো বলে এনেছি। বিশ্বাস কর বৌদি সত্যি বলছি” মালতী আবার অভিমানী কণ্ঠে বলে ওঠে “প্রথমে স্বামী, তারপর মানবদা আর এখন তোমরা। সবাইকি আমায় ঠকাবে খালি” রাজু জানে মালতীকে শান্ত করতে হবে। রাজু মালতীর দুহাত চেপে ধরে বলে ওঠে “বৌদি তুমি যদি বল তোমায় স্পর্শ করতে দেবেনা তো করবো না। আর মোবাইলের ওই ভিডিও তো? এই সাইদুল আমার মোবাইলটা নিয়ে আয়” সাইদুল ছুটে গিয়ে রাজুর মোবাইলটা নিয়ে আসে। “এই নাও, এক এক করে সব ডিলিট” আর তো কোনও চিন্তা নেই বৌদি। মালতী রাজুর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। রজাউ আবার বলে ওঠে “তোমায় ভালবাসবো বৌদি? তুমি কি একটু আমাদের দুজনের ভালোবাসা চাও?” মালতী ঢুলু ঢুলু চোখে তাকিয়ে থাকে রাজুর দিকে। “এই হতচ্ছারা সাইদুল তুই, বৌদিকে কষ্ট দিয়েছিস তুই আগে বৌদিকে ভালবাসবি” সাইদুল গুটি গুটি পায়ে আবার এগিয়ে যায় মালতীর দিকে।
মালতীর দুহাত ধরে বলে ওঠে “ক্ষমা করে দাও বৌদি, আর কখনো হবেনা। একটু ছোঁব তোমায়?” ওরা দুজনেই ভেবেছিল মালতী হয়ত অনেক টাল বাহানা করবে, কিন্তু মালতী শুধুই একটু মিষ্টি করে হেঁসে ওঠে। ওর হাঁসি যে আগত ভালবাসাকে স্বাগত জানানোর ই লক্ষন ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আলতো করে মালতীকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে সাইদুল। “তোমায় প্রচুর ভালবাসবো আমি। কোনও কষ্ট দেবনা। আসো সোনা আমার কোলের ওপর উঠে বস” নিজের দুহাত দিয়ে ক্রমাগত মালতীর পাছায় চাপ দিতে থাকে সাইদুল। মালতীও সেই চাপের সাথে সাথে দুপা ফাঁক করে সাইদুলের কোমরে উঠে বসে। সাইদুলের গরম নিঃশ্বাস মালতীর গাল বেয়ে ঝড়ে পড়তে থাকে। “বৌদি চল খেয়ে নি” রাজু মাংসের বাটিটা সামনে নিয়ে আসে। সাইদুল একটা মেটে উঠিয়ে মালতীর ঠোঁটের কাছে ধরে। মালতী দাঁত দিয়ে সামান্য চাপ দেয়। “বৌদি আমি কিন্তু তোমার মুখ থেকে খাবো” মালতীর শরীরটা গুলিয়ে ওঠে বিয়ের পর পর ও আর আপনি এরকমভাবে মাংস খেতেন মনে আছে। মালতীর সারা শরীর জুড়ে প্রবল কামদহন শুরু হয়ে যায়। সাইদুল মুখের অঙ্গভঙ্গি করে মালতীকে মুখ খুলে জিভটা বার করতে অনুরোধ করে। হয়ত মদের জন্যই অতি সহজে নিজের পুরো জিভটা বার করে দেয় মালতী। জিভে তখন খয়েরি মেটেটা মালতীর মুখের রসালো আঠা জড়িয়ে লেপটে রয়েছে। সাইদুল নিজের জিভটা সুতোর মত সরু করে ভেতরে ঢুকিয়ে আবার প্রসারিত করে দেয়। অনায়াসে থকথকে মেটেটার একটা বিশাল অংশ সাইদুলের জিভে আটকে যায়। সাইদুল জিভটা টেনে বাইরে বার করে নেয়। উম বলে একটা শব্দ করে মালতী। বাচ্চা ছেলের মত খিলখিল করে হেঁসে ওঠে সাইদুল। বোঝে ওর প্রিয় বৌদির খুব পছন্দ হচ্ছে এটা। এবার হাতে একটা মেটে নিয়ে নিজের দুই ঠোঁটের ফাঁকে ধরে সাইদুল, মালতীকে আর ইশারাও করতে হয়না। নিজের থেকেই মুখটা বাড়িয়ে মেটের বাইরে থাকা অংশটা চিপে ধরে মালতী। কিন্তু সাইদুল মুখটা সরাতে দেয়না, দুটো ঠোঁটকে নিজের ঠোঁটের মাঝে আটকে নেয়। কখনো মালতী কখনো বা সাইদুল মিলে মেটেটাকে চিবিয়ে নরম করে দিতে থাকে।
রাজু আর প্রিয় বন্ধুর এই সুখ সহ্য করতে পারেনা, রাজুও পেছন থেকে এসে মালতীকে জড়িয়ে ধরে। এখন সাইদুল আর রাজুর শরীরের মাঝে প্রায় পিষে যায় মালতী। রাজু নিজের মুখটা মালতীর কানের কাছে নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলে ওঠে “বৌদি সাড়ি পড়ে তোমায় আদর করতে পারছিনা, খুললাম সাড়িটা” মালতীর জিভ, ঠোঁট তখন সাইদুলের অনুগত দাস। ওর কি আর অতো হুঁশ থাকে। রাজু অল্প চেস্তাতেই মালতীর সাড়িটা খুলে পাশে রেখে দেয়। রাজুর ভাগে তখন পেছন থেকে দেখতে পাওয়া কোমর, ব্লাউজ সামান্য ছিঁড়ে যাওয়ায় ফর্সা পিঠ ব্যাস এতটুকুই। পাছাটা পুরোপুরি সাইদুলের কোলে জায়গা পায়নি। রাজুর কিছুটা অসুবিধাই হচ্ছিল। রাজু বলে ওঠে “এই সাইদুল এরকম নয় রে, বৌদিকে আমার কোলে বসতে দে তোর দিকে মুখ করে থাকুক সবার সুবিধে হবে” সাইদুল কি তখন রাজুর অনুরোধ শোনে। মালতীর লালা মেশানো মেটে খেতেই ও তখন ব্যাস্ত। রাজু আর পারেনা, মালতীর কোমরটা জাপটে ধরে ওকে পেছন দিকে টেনে নিজের কোলে বসায়, কিন্তু কি অদ্ভুত মালতী বা সাইদুল দুজনের কেউ ই একে অপরের জিভ ছারেনা। সাইদুল সামনের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে। রাজুর বিশাল লিঙ্গ মালতীর কোমল দুই নিতম্বের মাঝে ধাক্কা খেতে একটু লাফিয়ে ওঠে মালতী। রাজুর শরীরে ঈর্ষা, আর উত্তেজনার এক মিশ্রন সৃষ্টি হয়। সাইদুল একাই খেয়ে যাবে আর ও অভুক্ত থাকবে টা তো হতে পারেনা।
রাজু মদের বোতলটা তুলে আসতে আসতে মালতীর কাঁধে ঢালতে থাকে। মালতীর কাঁধ বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে মদ বুকের ওপর পড়তে থাকে। প্রায় যেভাবে আস্তাকুর থেকে রাস্তার কুকুর খাবার খুটে খুটে খায় সেভাবেই রাজু মালতীর বুকের ওপর হামলে পড়ে মদ পান করতে শুরু করে। কিন্তু মালতীর বুক এতো বড় রাজু ঠিক পেরে উথছিলনা। বুকের খাঁজ দিয়ে মদ গড়িয়ে শাখা প্রশাখার মত এদিক ওদিক বয়ে যেতে থাকে। রাগে রাজু ব্লাউজটা ধরে জোরে একটা টান দেয়। ব্লাউজ ফারফার করে আওয়াজ করে দু টুকরো হয়ে যায়। এই আওয়াজে সাইদুলের ঘুম ভাঙ্গে। সাইদুল মালতীর জিভ ছেড়ে দিয়ে সোজা সামনের দিকে তাকায়। এই দুধ এর আগেও ও দেখেছে। রাজুকে সাহায্য করার জন্যই ও ব্লাউজে আবার একটা টান দেয়, ব্লাউজটা সম্পূর্ণ দু টুকরো হয়ে পড়ে যায়। রাজু ভাবতেও পারেনি সাইদুল এতো বড় বেইমানি করবে। রাজুকে অবাক করে সাইদুল ব্রা এর ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসা গভীর উপত্যকার মত বুকের খাঁজে নিজের মুখটা গুঁজে দিয়ে জিভ দিয়ে সুড়সুড়ি দিতে শুরু করে। বেচারা রাজু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। মালতীর এতো আরাম লাগছিল যে রাজুর মাথাটা জোরে চেপে ধরে নিজের বুকের ওপর। বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর, রাজু মদের বোতলটা পুরো নিজের গলায় ঢেলে দেয়। এতটা মদ পেটে পড়লে যে রাজু সাঙ্ঘাতিক তা সাইদুল ও জানে।
রাজু বোতল টা নীচে নামিয়ে রেখে মালতীর পিঠে ব্রা এর হুকটা টেনে খুলে দেয়। মালতী একবার পেছন ফিরে রাজুর দিকে তাকিয়ে উম না বলে শব্দ করে। রাজু নিজের জিভটা দিয়ে সাথে সাথে মালতীর দুটো ঠোঁটকে ঘেঁটে দিতে দিতে মৃদু স্বরে বলে ওঠে “কি হয়েছে বৌদি, শুধু কি রূপসা আর তিলোত্তমাই খাবে? আমরা কি তোমার ওই দুটোতে একটু মুখ দেবনা” ব্রায়ের আগল হাল্কা হতেই সাইদুলের মুখে দুষ্টু হাঁসি ভেসে ওঠে। সাইদুল টেনে মালতীকে নীচে বসিয়ে দেয় আর রাজু পেছন থেকে ব্রাএর দুটো প্রান্ত সামনে নিয়ে গিয়ে ব্রাটা প্রায় সাইদুলের হাতে ছুঁড়ে দেয়। সাইদুল দুহাতে লুফে নিয়ে উম উম করে আওয়াজ করে ব্রাটার প্রথমে গন্ধ শোকে তারপর ব্রাএর দুটো ফাঁকে নিজের জিভ ঢুকিয়ে চাঁটতে থাকে। মালতী মুখ হ্যাঁ করে অবাক হয়ে সাইদুলের এই পৈশাচিক দৃশ্য দেখতে থাকে। রাজু এই সুযোগে নিজের জিভটা একবার মালতীর মুখের ফাঁকে ঢুকিয়ে ভেতরের রস শুষে নেয়। আবার মালতীর জ্ঞান ফিরে আসে। রাজু আবার মৃদু কণ্ঠে বলে ওঠে “উম বৌদি দেখেছ আমরা তোমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। না তো সুবীর না তো মানব কেউ তোমায় এতো ভালবাসেনা। তোমার ব্রা এর যে ঘেমো গন্ধটা রয়েছে সেটাকে কেউ এভাবে ভালবাসতে পারবে না” মালতী তখনও একদৃষ্টিতে সাইদুলের দিকে তাকিয়ে আছে। সাইদুল ব্রাটা পাশে ফেলে দিয়ে সোজা মালতীর দুধের দিকে তাকিয়ে হাঁপাতে থাকে। হয়ত পুরুষ মানুষের চোখে কামনার আগুন সঠিক ভাবে দেখলেই নারীর কামনার দহন শুরু হয়। মালতী সাইদুলের চোখে সেই কামনা দেখেছে। সাইদুল প্রায় চিলের মত ঝাঁপিয়ে একদিকের দুধটা নিজের মুখে কিছুটা ঢুকিয়ে নেয়। এতো বড় মাপের আর এতো শক্ত সোজা হয়ে থাকা দুধ কখনোই সম্পূর্ণ মুখের মধ্যে ঢোকানো যায়না। তাও সাইদুল পাগলের মত উম উম করে আওয়াজ করে চেষ্টা করতে থাকে। এদিকে মালতীর বুকের ওপর পেছন থেকে ঝুঁকে পড়ে নিজের থুতনি ঘষতে ঘষতে রাজু বলে ওঠে “ওহ বৌদি তোমার দুধগুলো যা টাইট না, আজ আমরাই রূপসা আর তিলোত্তমা” মালতীর নজর তখন সাইডের ভাঙা জানলায়। মালতী ধীরেধীরে বলে ওঠে “রাজু উম উম রাজু, ওই জানলা দিয়ে কে যেন দেখছে” রাজু ততক্ষনে মালতীর অপর দুধটা নিজের মুখের মধ্যে পুড়ে নিয়েছে। “আম আম উম ওহ বৌদি ওরা দেখুক না কি যায় আসে, বস্তির ভিখিরি ছেলে ওরা, এই সম্পত্তি ওরা দেখবে খালি, কিন্তু তোমাকে আমরা দুজন কাউকে দেবনা, আহ বৌদি আসো আসো উম কি মিষ্টি তোমার দুধ” এদিকে সাইদুল বলে ওঠে “বৌদি সবে তো রাত ৯টা আজ দোলযাত্রা কাল হোলি, কাল দুপুর অবধি আমরা ভালোবেসে যাবো। ওই যে বিদেশিগুলো যেভাবে মেয়েদের চেটে দেয় ওইভাবে তোমার চেটে দেবো” মালতীর দুচোখ ততক্ষনে বুজে এসেছে। দুহাত দিয়ে ওর দুই শিশুকে নিজের বুকের অপর চেপে ধরেছে। ভালো করে রাজু ও সাইদুলের মাথায় বিলি কাটতে শুরু করে আর ওরা ওদের যৌথ স্ত্রীকে নিজেদের মধ্যে অদল বদল করে ভাগ করে নিতে থাকে। কখনো সাইদুল বাঁ দিকের কখনো রাজু বাঁ দিকের এই ভাবে মালতীর স্তন বস্তির দুই ছেলের মুখ বদল হতে থাকে। আর সাক্ষী থেকে যায় বস্তির কিছু ভুভুক্ষু কামাতুর ইতর মানুষ।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ৯- বেশ্যাঃ
প্রচণ্ড জোরে দুই মরদের চুলের মুটি চেপে ধরে মালতী। মুখ দিয়ে হয়ত কিছু শব্দ বাইরে বেরিয়ে আসছিল, কিন্তু সেটা অসম্ভব কামের পীড়নে শুধুই গোঙানির রুপ ধারন করে- “উম উম রাজু উম উম সাইদুল আসতে আহ আসসসসস উফ উম রাজু” হয়ত শব্দগুলো সথিকভাবে রাজু ও সাইদুলের কানেও পৌছাচ্ছিল না। কি করেই বা কানে যাবে, অসম্ভব পিষণ ও ঠোঁট, জিভ দাঁতের পৌরুষ স্পর্শে তো মালতীর দুই তরমুজন্যায় স্তন ক্রমশ চরম অহঙ্কারে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। যেন দুই সদ্য যৌবনে পা দেওয়া যুবককে স্পর্ধার সাথে বলছে “বয়স জাতের অপর নির্ভর করে। আমি হলাম সেই অভিজাত লাস্যময়ী মহিলা, বয়স যার কাছে হার মানে। মৃত্যুর আগে অবধি পুরুষ আমাকে একটিবার স্পর্শ করার জন্য পাগল হয়ে থাকবে” রাজু বহুক্ষন ধরে চেষ্টা করছিল মালতীর দুই দুধের অপর নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে সাইদুলকে একটু পেছনে ঠেলে দিতে। সাইদুল ও বা ছাড়ে কেন ও তো ভার্জিন, নারী শরীরের স্পর্শ তো এই প্রথম, সুতরাং ওর উত্তেজনা যে রাজুর চেয়ে কয়েকশ গুন বেশি ই হবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। রাজু বোঝে যাই হয়ে যাক, সাইদুল ওকে দুধের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে।
রাজু ওখান থেকে উঠে দাঁড়ায়, বুজে যাওয়া চোখ খুলে মালতী রাজুর দিকে তাকিয়ে উম করে একটা শব্দ করে। যেন বলতে চায় “ওরে রাজু যাসনা এযে জাত জিনিষ, সাইদুল একা পারবে না” মালতীর মুখের বিরক্তি রাজুও বোঝে। মালতীর মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ে ওর ঠোঁটের কাছে নিজের লকলকে লোভাতুর জিভটা বার করে রাখে। ওদিকে রাজু হার মানায় সাইদুল একদম পাগল হয়ে যায়। দুহাতে দুটো স্তনকে চটকে ধরে, মুখটা একবার বাঁদিক একবার ডানদিক করে দুধদুটো অদল বদল করতে থাকে। মালতী চোখ দুটো নিচের দিকে নামিয়ে একবার সাইদুলের দিকে দেখে। সাইদুল মিষ্টি হেঁসে দুধদুটো নিচ থেকে একটু উঁচু করে মালতীর দিকে নিয়ে যায়। সাইদুল যে ইঙ্গিত টা করে তা মালতী খুব ভালো করেই বুঝে যায়- “ভোগ করার কোনও জাত হয়না। নাহলে কি কলকাতার এক স্বনামধন্য গবেষকের বউ এর মাইগুলো আমরা দুই এলেবেলে মিলে এভাবে ভোগ করে যেতাম” সাইদুলের ইঙ্গিতে কিছুটা ঈর্ষাবোধ করে মালতী। এদিকে রাজু জিভটা শুধু বাইরে বার করে রাখে কিন্তু স্পর্শ করায় না। মালতী রাজুর দিকে তাকায়, বোঝে রাজু ওকে জিভ বাইরে বার করে, বস্তির নোংরা ছেলের মুখের রস নিজের মুখে নিয়ে সমস্ত বিভেদকে ভেঙে দিতে বলছে। আজ তো হোলি, উৎসবের দিন, কাউকে দুঃখ দিতে নেই। মালতী নিজের অভিজাত জিভটা বার করে রাজুর নোংরা জিভের ওপর রাখে। পাগলের মত মালতীর জিভটাকে নিজের জিভ দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে রাজু। সাইদুল ওপরের দিকে তাকিয়ে এই দৃশ্য দেখে পাগল হয়ে যায়। ও দুধগুলোকে পাগলের মত করে আদর করতে থাকে। একটা হাত নাভির কাছে নিয়ে গিয়ে মালতীর নাভীর বৃত্তাকার গোলকের মধ্যে নিজের আঙুল দিয়ে খনন করতে শুরু করে। মালতীর মাথাটা দুদিকে সরল দোলগতিতে দুলতে শুরু করে।
এই উত্তাল দোলনের সাথে তাল মিলিয়ে চলা রাজুর পক্ষে সম্ভব ছিলনা, চুরুক করে একটা আওয়াজ হয়ে মালতীর জিভটা রাজুর জিভের বন্ধন থেকে বেরিয়ে আসে। হতাশ রাজু মালতীর দিকে তাকিয়ে থাকে। মালতী মুখে একটা মিষ্টি হাঁসি এনে রাজুর বুকে নিজের হাতটা রাখে। বিজয়ী সাইদুলের দিকে একবার তাকিয়ে রাজু মালতীর দুই চোখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। যেন বলতে চায় কোনও চিন্তা নেই আরও বড় সুখ অপেক্ষা করে রয়েছে তোমার জন্য।
মুহূর্তের মধ্যে ওখান থেকে উঠে রাজু সাইদুলকে অতিক্রম করে চলে যায় নিচের দিকে। আলতো করে মালতীর দুপায়ে হাত দেয়। মালতী বুঝে যায়, ধীরে ধীরে রাজুর স্পর্শ হাঁটু অতিক্রম করে নারী শরীরের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গের দিকে আসবে। লোমহীন পায়ের মাংস গুলো ডলতে ডলতে রাজু জিভ বার করে চাঁটতে শুরু করে। নতুন এক আরামের ইঙ্গিতে মালতীর শরীরে কম্পন দ্বিগুন বেড়ে যায়। রাজুর ঠোঁট উলম্বভাবে ওপরের দিকে যেতে শুরু করে। আর তারসাথে সাথে মালতীর সায়াও ক্রমশ ওপরের দিকে উঠতে থাকে। রাজুর মনে হয়ত কোনও ভয় ছিল, যে স্থানে একবার চুমু খাওয়া হয়ে যাচ্ছে যদি আর দ্বিতীয়বার স্পর্শ করার সুযোগ না পায়, যদি সাইদুল ভাগ বসায়। তাই হাঁটুর নিচ থেকে আবার মুখটা নিচের দিকে চালাতে শুরু করে। এদিকে সাইদুলের ও এবার একটু ইচ্ছে হয়, দুধ ছেড়ে শরীরের অন্য অংশগুলো একটু চেকে দেখার। সাইদুল একটু নীচে নেমে মালতীর নাভির বৃত্তাকার অংশে নিজের জিভকে চালাতে শুরু করে। নরম ল্যালল্যালে জিভটা মালতীর কাছে কোনও ধারালো ছুরির চেয়ে কম ছিলনা। এমনভাবে মালতীর শরীর কাঁপতে শুরু করে যেন কেউ ছুরি দিয়ে বারবার আঘাত করে ওর পেটটা চিরে দিচ্ছে। “আহ আহ উম সাইদুল আসতে উম উম কি বদমাশ ছেলে একটা ওহ ওহ ওমা” এই শব্দে পুরো ঘরটা ভরে যায়। একবার পাশ ফিরে ভাঙা জানলার দিকে তাকায় মালতী। ওখানে প্রত্যেকের হাত ই যে প্রচণ্ড জোরে ওঠানামা করছে তা বুঝতে দেরি হয়না মালতীর। মুচকি হেঁসে মনে মনে বলে ওঠে মালতী “নে আজ যত ইচ্ছে মজা কর, আজ তো হোলি, উৎসব তোদের। আজ তোদের এই নোংরা গলিতে আকাশ থেকে অপ্সরা নেমে এসেছে। যত ইচ্ছে বীর্যস্খলন করে নিজেদের শান্ত কর”
রাজুর মুখ হাঁটু অতিক্রম করেছে, মালতীর শরীরে তাই নতুন এক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে কিছুটা গম পেষাই করার মত করে রাজু মালতীর থাইএর মাংসল পেশিগুলোকে টিপে দিতে শুরু করে। প্রথমে যন্ত্রণা হয় তারপর জিভলেহনে নতুন আরাম। পাগল হয়ে ওঠে মালতী। এদিকে সাইদুলের কর্মকাণ্ডে প্রচন্দ রকম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, মালতীর সায়া। হাত দুটো নাভিতে রেখে দলাই মালাই করতে করতে দাঁত দিয়ে কালোসায়ার সাদা দড়িতে চাপ দেয় সাইদুল। মালতীর পেটে প্রচণ্ড জোরে লাগে, দুহাত দিয়ে রেগে সাইদুলের চুলের মুটি চেপে ধরে মালতী। সায়ার বাঁধন আলগা হতেই ওকে টেনে অনেকটা নীচে নামিয়ে দেয়। মালতীর রসালো তলপেট অনেকটাই বেরিয়ে আসে। তলপেটের ওপর ছোট ছোট লোমগুলো যেন সাইদুলের দিকে তাকিয়ে বলছে আমরা তো ঘাস, নীচে বিশাল এক জঙ্গল রয়েছে আর তার মধ্যে একটা নদী। সেই নদীতে জল নয় ক্ষির পাওয়া যায়। অম্রিত সেবনের লোভ সাইদুলকে পাগল করে তোলে। জোরে একটা টান মেরে সায়াটা অনেকটা নীচে নামিয়ে দেয়। প্রায় হাঁটুর কাছে গিয়ে রাজুর মাথাটা ঢাকা পড়ে যায়। এক অজানা গুপ্তধনকে চোখের সামনে দেখে সাইদুল হ্যাঁ করে হাঁপাতে থাকে। রাজু ভাবতেও পারেনি, সাইদুল এভাবে ওকে ঠকাবে। সায়াটা নিজের মাথা থেকে সরিয়ে উঠে বসার আগেই, সাইদুল মালতীর কালো রঙের ঘন জঙ্গলে নিজের হাতের ১০ টা আঙুলকে ঢুকিয়ে ফেলেছে। প্রচণ্ড ঈর্ষার সাথে রাজু সেদিকেই তাকিয়ে থাকে, না রাজু চেঁচিয়ে বলতে পারেনা এই নদীর অমৃত সবার আগে আমার ই পান করার কথা তোর নয়। জঙ্গলের কালো পাতাগুলোকে দুদিকে সরিয়েই সাইদুল লক্ষ্য করে লাল রঙের একটা চেরা নদী। তার মধ্যে থেকে বুদবুদ করে বেরিয়ে আসছে ঘন লাল অমৃত। সাইদুল নিজের দু আঙ্গুলকে নদীর পাড় থেকে ঝাঁপ দিয়ে ভেতরে ঢোকায়। প্রায় গুলিবিদ্ধ সিংহের মত “আহহ উম্ম” করে গর্জন করে কেঁপে ওঠে মালতীর শরীর। কাঁপবেই না কেন একে তো দুই সুপুরুষ আবার বাইরে থেকে অনুঘটকের মত ভুভুক্ষু জনতা।
হয়ত কিছুটা রাগের ই বশে সাইদুলকে প্রায় জোর করেই রাজু নিজের জায়গায় বসিয়ে দেয়। নিস্তব্ধ হয়ে এটাই বোঝায় “নে ডুব দে ওই অমৃতকুণ্ডে” রাজুর আদেশ রামভক্ত হনুমানের মত মান্য করে সাইদুল নিজের মুখটা মালতীর লাল চেরা যোনিসাগরের পাড়ে নিয়ে যায়। ৫-৬ টা আঙুল দিয়ে নদীর পাড়ের আগাছাগুলোকে দূরে সরিয়ে জিভটা একদম নীচ থেকে ওপরের দিকে লম্বালম্বি চালিয়ে দেয়। আহহহহহ অহহহহ করে শব্দ করে কিছুটা আঁকাবাঁকা সরীসৃপের মত মালতী নিজের শরীরটা দুদিকে কিলবিল করে ওঠে। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে সাইদুল। হয়ত মনে মনে বলে আমার জিভের এতো জোর। বুদবুদ করে কিছুটা ফ্যানার মত বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে থকথকে লাল অমৃত। একটা সোঁদা গন্ধে পুরো ঘরটা ভরে যায়। “রাজু মেয়েদের মালের গন্ধটা খুব সুন্দর তো” রাজু খিলখিল করে হেঁসে ওঠে। দুই নিষ্পাপ যুবকের ওর শরীর নিয়ে এই প্রবল আগ্রহে মালতীও মুখ টিপে হেঁসে ফেলে। বস্তির ভুভুক্ষু জনতাও ওদের এই হাসিতে সায় দেয়। একবার মালতীর মুখের দিকে তাকিয়ে সাইদুল আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা। মালতীর দুই জাঙের মাঝে নিজের মাথাটা প্রায় পুরোপুরি ঢুকিয়ে দিয়ে পাগলের মত নিজের মাথাটা দুদিকে ঘোরাতে শুরু করে। মালতী প্রায় বলির ছাগলের মত ছটপট করতে শুরু করে। সবচেয়ে বিপদে পড়েছে রাজু। সাইদুল আর মালতী নিজেদের মধ্যে এমনভাবে ব্যাস্ত হয়ে গেছে যে ওর মত কেউ ও যে অপেক্ষায় রয়েছে সেইদিকে কারুর নজর নেই। দুহাত দিয়ে গায়ের জোরে মালতীর যোনি থেকে মুক্ত করে সাইদুলকে। হাতের ইঙ্গিত করে সাইদুলকে নীচে শুতে বলে। সাইদুল খিলখিল করে হেঁসে ওঠে, প্র্যাক্তিকাল না করলেও বিএফ কম দেখেনি ও। সাইদুল মালতীর দু পায়ের ফাঁকে চিত হয়ে শুয়ে পড়ে। রাজু মালতীকে কিছুটা নিচের দিকে ঠেলে দেয় যাতে সাইদুলের মুখে মালতীর যোনি সম্পূর্ণ প্রবেশ করতে পারে। সবকিছু সঠিক জায়গায় হয়ে যাওয়ায় আবার শুরু হয় আহ আহ শব্দ। মালতী হয়ত কল্পনাও করেনি এরপর ঠিক কি হতে চলেছে।
রাজু উঠে দাঁড়িয়ে নিজের বারমুন্দাটা একটানে খুলে দেয়। সমস্ত উত্তেজনা কোথায় হারিয়ে গিয়ে মালতীর মনে এক অজানা ভয় ঢোকে। প্রায় একটা ফুট স্কেলের মত লম্বা রাজুর ঠাটানো বাঁড়া। ভয়ে ঠোঁটগুলো থরথর করে কাঁপতে শুরু করে। “তোমাকে আমরা এতো আনন্দ দিচ্ছি তুমি আমাদের একটু আনন্দ দেবেনা” ফিসফিস করে বলে ওঠে রাজু। সুবীর বহুবার অনুনয় বিনয় করেছে মালতীর কাছে কিন্তু মুখে লিঙ্গ নেওয়া এ তো ভদ্রবাড়ির মেয়ের কাছে পাপ। কিন্তু আজ যে ও সমস্ত রুচিবোধ, ভদ্রতা, মান মর্যাদা কে জলাঞ্জলি দিয়ে বস্তির আস্তাকুরে হোলি খেলায় মেতে উঠতে এখানে এসেছে। রাজু আসতে আসতে মালতীর মুখের দুদিকে পা ফাঁক করে দাঁড়ায়। লজ্জা ও ভয়ে মালতীর ঠোঁট এমনিতেই হ্যাঁ হয়ে যায়। আসতে আসতে মালতীর মুখের ওপর বসে নিজের বাঁড়াটা মালতীর দুই ঠোঁটের ফাঁকে রাখে। হয়ত নিম্নদেশে সাইদুলের দেওয়া ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়াতেই মালতী নিজের মুখটা হ্যাঁ করে নায়, আসতে আসতে প্রায় অর্ধেকটা বাড়াই ভেতরে ঢুকে যায়। “বৌদি জিভ, উম উম ওহ বৌদি জিভ দিয়ে চাটো” রাজুর কথামত মালতী নিজের জিভকে কুণ্ডলী পাকিয়ে রাজুর ধনের টুপির মত অংশে রাখে। প্রচণ্ড আবেশে রাজুর দুচোখ বুজে আসে। “উম উম বৌদি, আমার মিষ্টি বৌদি, ওহ তুমি একটু আনন্দ দাও তারপর দেখো আমি তোমায় কিভাবে আনন্দ দি। ভালো করে চেটে দাও বৌদি” রাজুর এই চিৎকার সারা বস্তি জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ভাঙা জানলা দিয়ে হতাশ কিছু না পাওয়া মানুষের চিৎকার ভেতরে আসে। সবাই একটি বারের জন্য মালতীকে চায়। কিন্তু স্বার্থপর রাজু ও সাইদুল নিজেদের বৌদিকে অন্য কারুর সাথে ভাগ করে নিতে চায়না।
সাইদুল ও রাজুর এই নতুন তৃপ্তি দেখে ঈর্ষায় জ্বলে যেতে থাকে। হেরে যাওয়ার কষ্টে করুনভাবে তাকিয়ে থাকে রাজুর দিকে, এবং তারসাথে রাজুর মুখ থেকে বিজয়ীর হাঁসি। পরাজয়ের গ্লানিতে সাইদুলের মন বিষিয়ে যেতে শুরু করে, মনে মনে শুধু আফসোস করে কেন আমার মাথায় এটা আসেনি। কিছুটা হতাশা কিছুটা নতুন লড়াই এর উদ্যমেই সাইদুল উঠে দাঁড়ায়। রাজু তখন ক্রমাগত নিজের শরীরকে ওপরে উঠিয়ে উঠিয়ে মালতীর মুখকে চেরা যোনী কল্পনা করে থাপ দিয়ে চলেছে। রাজুর থলথলে বিশাল দুই অণ্ডকোষ মালতীর নাকে ভারী পাথরের মত আছড়ে পড়তে শুরু করে। পুরুষ বীর্যের গন্ধ এর আগে বহুবার ই মালতী পেয়েছে কিন্তু এতো সামনে থেকে এর আগে কখনো তা গ্রহন করেনি। মালতী অনুধাবন করে মদের চেয়েও উগ্র এই পুরুষ সুধা। এর তীব্র গন্ধ এক নারীকে যে কিভাবে পাগল করে তোলে তা মালতী খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে। রাজুর এই সুখ সাইদুল আর সহ্য করতে পারেনা। মালতীর দুই পায়ের ফাঁকে বসে নিজের লিঙ্গটা মালতীর থাইএর নরম মাংসের ওপর রাখে। মালতীর শরীরটা নতুন এক উত্তেজনায় কেঁপে ওঠে। “জানলার ওপাশ থেকে উন্মত্ত জনতা চেঁচিয়ে ওঠে দাঁড়াস না সাইদুল, বৌদিকে একটু আনন্দ দে, আর কষ্ট দিস না” সাইদুল নিজের বাঁড়াটা ঘষতে ঘষতে থাই বরাবর সেই সমুদ্র কিনারে নিয়ে যেতে শুরু করে। মালতী হয়ত নিচের দিকে তাকাতে পারছে না কিন্তু এটা খুব ভালোই বুঝতে পারছে সাইদুল রাজুর থেকে পৌরুষে কোনও অংশের কম নয়। আজ যেন মালতী রেফারি আর রাজু, সাইদুল দুজন খেলোয়াড় যাদের খেলার ফলাফল মালতী ঠিক করে দেবে। রসালো যোনিদ্বারে বাঁড়ার মুখটা খুব জোরে জোরে ঘষতে থাকে সাইদুল। দুটো ঠোঁটের ফাঁকে একটা নরম মাংসল অংশ বাইরে বেরিয়ে আছে, সেখান থেকে বুদবুদ করে আবার অমৃতস্খলন শুরু হয়। রাজু অবাক হয়ে সাইদুলের দিকে তাকিয়ে থাকে, হয়ত মনে মনে এটাই বলে “আমার বাড়ি, আমার সব আর বৌদির সমুদ্রে আগে তুই মন্থন করলি সাইদুল” সাইদুল আর পারেনা, প্রচণ্ড জোরে একটা চাপ দেয়, প্রায় অর্ধেকটা বাঁড়া ভেতরে ঢুকে যায়। সাইদুল শরীরটা আসতে আসতে মালতীর উপরে রেখে ওর দুধের কাছে মাথাটা নিয়ে আসে। বন্ধ মুখ দিয়েই একটা আওয়াজ বেরিয়ে আসে “আহম্মম অম্ম অউ আহহ” মালতীর বিকৃত হয়ে যাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে দুই সহদর। সত্যি কামনার আগুনে জ্বলতে থাকা নারীর চেয়ে সুন্দরী আর কেউ নেই। কিছুটা ঈর্ষার জোরেই প্রায় উথবোস করার ঢঙে নিজের শরীরটা ওপর নিচ করতে থাকে রাজু। মালতীর মাইএর বোঁটায় মুখ ডুবিয়ে সাইদুল ও পাগলা ষাঁড়ের মত নিজের শরীরটা ওপর নীচ করতে থাকে। আর সেই অনুঘটক “আহ জোরে সাইদুল আরও জোরে” ভেসে আসতে থাকে ভাঙা জানলা দিয়ে।
নিজের শরীরের ভারসাম্য রাখতে রাজু সাইদুলের মাথাটা চেপে ধরে, এদিকে সাইদুল যে এরকম পাগল হয়ে উঠবে তা কে জানত। রাজু নিজের মাতাল চোখে শুধু দেখতে পায় ঝড়ের বেগে সাইদুলের পাছাটা ওপরে উঠছে আর নামছে প্রায় ঝড়ের বেগে। রাজুর মায়া হয় মালতীর ওপর, বেচারা হয়ত মুখ দিয়ে নিজের আনন্দ প্রকাশ করতে চাইছে কিন্তু পারছেনা। রাজু নিজের বাঁড়াটা মালতীর মুখ থেকে সরিয়ে নেয়। আর প্রায় সাথেসাথে “আহ আহ সাইদুল আরও জোরে আরও জোরে উফ উফ কি আরাম আরও জোরে ওমা ওমা বৌদিকে এতো ভালবাসিস ওহ ওহ আহ ওমা মরে গেলাম উম ম আম্ম উম আহ সাইদুল” শব্দ বেরিয়ে আসতে থাকে। আহ আহ আহ করে অপরপ্রান্ত থেকে একটা আওয়াজ ভেসে আসে। রাজু প্রচণ্ড জোরে হেঁসে ওঠে, জানে সাইদুল এবার হেরে গেছে। প্রায় অবশ হয়ে সাইদুল মালতীর বুকের অপর ছিটকে পড়ে। প্রচণ্ড বিরক্তিতে মালতী মুখটা ঘুরিয়ে নেয়। রাজু মালতীর দিকে তাকিয়ে বলে “মন খারাপ করনা বৌদি আমিতো আছি এখনো” প্রায় জোর করেই সাইদুলের কোমর ধরে ওকে অপর প্রান্তে শুইয়ে দেয় রাজু। লজ্জায় চোখ বুজে পড়ে থাকে সাইদুল, আসলে ও নিজেও ভাবেনি এতো তাড়াতাড়ি ওর মাল বেরিয়ে যাবে। অভিজ্ঞতা না থাকলে যা হয় আর কি।
মালতীকে আশ্বস্ত করে রাজু এগিয়ে যায় গুপ্তধনের দিকে। মালতীর মুখলেহনে রাজুর বাঁড়া তখন নিজের স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অনেকাংশেই বড় আকারে রয়েছে। মালতীর মুখে আবার এক মিষ্টি হাঁসি ভরে ওঠে, ক্লান্ত শরীরে সেই হাঁসির দিকে তাকায় সাইদুল। মনে মনে বলে না এতো তাড়াতাড়ি আমি হারতে পারিনা। হাতের আঙুল দিয়ে প্রায় চেঁচে চেঁচে যোনির ভেতর থেকে সাইদুলের থকথকে বীর্য টেনে বার করে দেয় রাজু। ওই গহ্বরে আজ থেকে শুধু একজনের ই বীর্য যাবে সে হোল রাজু, হয়ত রাজুর ব্যাবহারে এইরুপ দম্ভই ছিল। চেরা যোনিদ্বারে বেশ কিছুক্ষন ধরে নিজের বাঁড়াটা ঘষার পর, থপ করে একটা শব্দ হয়, ফরফর করে যোনির মুখ খুলে দিয়ে প্রকাশ করে বিশালাকার লিঙ্গ। মালতীর মুখের সেই বিকৃত রূপটা আবার ফুটে ওঠে। সাইদুল ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে সেদিকে। শুরু হয় রামথাপ। সাইদুল হয়ত ভাবতেও পারেনি রাজুর গায়ের জোর ওর চেয়ে অনেক বেশি। “আহ আহ আহ ওমা লাগছে উফ উফ লাগছে রাজু একটু আসতে প্লিজ ও ওমা” মালতীর চিৎকার যতই বাড়তে থাকে রাজুর কোমরের গতিবেগ ও ঠিক ততটাই বাড়তে থাকে। পাগলের মত নিজের মাথাকে এদিক ওদিক করতে থাকে মালতী।
ধীরে ধীরে রাজুর এই থাপের সাথে পরিচিত হয়ে ওঠে মালতী। সাইদুল মাথা নিচু করে বসে থাকে। হথাত ই সাইদুলের শরীরে বিদ্যুৎঝলক দেখা দেয়। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে মালতীর একহাত ওর নেতিয়ে পড়া বাঁড়া টা আর থলথলে বিচির ওপর ঘোরাফেরা করছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আবার ওর লিঙ্গে রক্ত প্রবাহ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে ওর লিঙ্গটা শক্ত হতে শুরু করে। প্রায় শুকনো হয়ে যাওয়া অণ্ডকোষে বিন্দুবিন্দু করে আবার বীর্য জমা হতে শুরু করে। ফিসফিস করে বলে ওঠে সাইদুল “বৌদি তোমার ই মত বউ যেন আমি পাই। দেখবে তাহলে এতো ভালোবাসব পাগল হয়ে যাবে” হয়ত মালতী এই কথার অর্থ বোঝেনি, কিন্তু রাজু বোঝে তাই ও থাপাতে থাপাতে বলে ওঠে “বৌদি আমার ও তোমার মত বউ চাই” প্রায় ১৫ মিনিট এরকম চলার পর রাজুও হেরে যায়। যদিও মালতী কিছুটা আনন্দ পেয়েছে কারন ইতিমধ্যেই ওর দুবার ত্রিপ্তিলাভ হয়েছে।
রাজু সরে আসে ওখান থেকে। সাইদুলের লিঙ্গ তখন আবার পুরনো আকার ধারন করে ফেলেছে। মালতী হ্যাঁ করে নিঃশ্বাস নিয়ে চলেছে আসলে রাজুর থেকে আরও একটু বেশি প্রত্যাশা ছিল মালতীর। প্রায় কামত্তেজনার দোরগোড়ায় এসে রাজু ওকে পরিত্যাগ করে। কিন্তু সাইদুলের নতুন করে পৌরুষ ধারন করে ওর পিচ্ছিল যোনিদ্বারের দিকে আগমনে মালতীর শরীরে নতুন করে প্রানের সঞ্চার ঘটে। দুহাতে নিজের লিঙ্গকে মালতীর রসালো যোনিতে ঠেকিয়ে প্রচণ্ড জোরে একটা চাপ দেয় সাইদুল। পচাত করে একটা শব্দ হয়, এবং সম্পূর্ণ লিঙ্গ ভেতরে প্রবেশ। প্রচণ্ড আরামে মালতী উম্ম করে একটা শব্দ করে। মালতী ছিল কামস্খলনের একদম দোরগোড়ায়। সাইদুলের দুই পাছাকে প্রচণ্ড জোরে খামচে ধরে বলে ওঠে “সাইদুল বৌদিকে এবার একটু আরাম দাও, জোরে আরও জোরে উহ আহ আহ আহ ওমা আরও আরও জোরে আহ আহ” সাইদুল ও রাজু দুজনেই প্রায় চমকে ওঠে। মালতীর মুখ দিয়ে কামত্তেজনার এই তীব্র উত্তেজনায় ওরা দুজনেই ব্যাকুল হয়ে যায়। কিছুক্ষনপর প্রচণ্ড জোরে মালতীর শরীরটা কাঁপতে শুরু করে, নিজের দুটো পা মালতী সাইদুলের কোমরকে জড়িয়ে ওপরে তুলে দেয়, দাঁত দিয়ে সাইদুলের কানের লতিকে কামড়ে ধরে। “আহ আহ আম্ম সাইদুল আমার সোনা উম উম্ম তুই যা দিলি উফ আফ ওহ আমার হচ্ছে উহ উহ না এরকম সুখ উম উম আহ” প্রায় মাছের জল থেকে লাফ দিয়ে ডাঙায় ওঠার মত মালতীর শরীরটা সাইদুলের শরীরের ওপর উঠে যায়।
ওদের উত্তেজনা দেখে রাজুও নতুন করে তৈরি হতে শুরু করে। আশেপাশের উত্তেজিত জনতা শুধু একটাই কথা মনে মনে বলে আমাদের জীবনে প্রতিবার দোল পূর্ণিমা যেন এরকম ভাবেই ফিরে আসে।
এক পাতে ভাত খাওয়ার মত কখনো রাজু কখনো সাইদুল উলটে পালটে ভোররাত অবধি মালতীকে আনন্দ দিতে থাকে। আর অপূর্ণ কামের জ্বালা মালতীও এই নোংরা বস্তির মাঝে সম্পূর্ণভাবে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায়। সূর্য ওঠার আগে অবধি যতক্ষণ না পুব আকাশ লাল হয়ে যায় জেগে থাকে পুরো বস্তি। ছেঁড়া মাদুরের ওপর দুই উলঙ্গ শরীরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকে আপনার সুরুচির ভদ্র বাড়ির বিয়ে করা বউ মালতী।
আবার সেই বিখ্যাত গান “দোস্ত দোস্ত না...” সুবীর বাবু ফোন রিসিভ করেন, রূপসার ফোন।
সুবীর বাবুঃ হ্যাঁ বল। তোরা কোথায় এখন? তিলোত্তমা কি তোর ই কাছে থাকবে?
রূপসাঃ হ্যাঁ বাবা তিলোত্তমা আজ আমার ই হোস্টেলে থাকবে। আর মা ফোন করেছিল আমাকে, মা মায়ের এক পুরনো বান্ধবীর বাড়িতে আজ রাতটা থাকবে।
মাথাটা বনবন করে ঘুরতে থাকে সুবীর বাবুর। চোখের সামনে ভেসে ওঠে সত্য বাবুর হাঁসি আর এতক্ষন ওই নোংরা বস্তিতে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা। হয়ত এই ভাষা সত্যি ই সুবীর বাবুর মুখ দিয়ে বেরতনা কিন্তু সময় যে বড় প্রতিকুল।
সুবীর বাবুঃ তোর মা একটা বেশ্যা। বেশ্যা বুঝিস তো, যারা বাজারে বসে নিজেকে বিক্রি করে। মাকে ফোন করে বল আজ থেকে এই বাড়ি ওর জন্য চিরকালের জন্য বন্ধ।
কোনও উত্তর আসেনা রূপসার তরফ থেকে। সত্য বাবুর হাঁসির তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ১০- মানবের পরিনামঃ
সত্য বাবুঃ একি সুবীর বাবু নিজের ই কন্যাকে নিজের স্ত্রী বেশ্যা এটা জানিয়ে দিলেন? আপনি কি উন্মাদ হয়ে পড়েছেন।
সুবীর বাবু কোনও উত্তর ই দেন না, শুধু মাথা নিচু করে বসে থাকেন। সত্য বাবু বুঝতে পারেন সুবীর বাবু ঠিক কতটা ভেঙে পড়েছেন।
সত্য বাবুঃ আসলে যা হয়েছে তার জন্য কেউ দায়ী নয়। আপনাকে তো আগেই বলেছি যা ঘটছে তা শুধুই এই ডায়েরীর অভিশাপের জন্য। যদি ডায়েরিটা আপনার হাতে না...
সুবীর বাবুঃ এই ডায়েরীর অভিশাপ আমার ই ওপরে কেন সত্য বাবু? বর্ণালীর ব্যাপারে যা ঘটেছে তা যে অনিচ্ছাকৃত এতো স্বয়ং ভগবান ও জানেন। আর আমি যে জমিদারবাড়ির দূরসম্পর্কের বংশধর সে ব্যাপারে আমিও নিশ্চিত নই। বাবা দাদুদের থেকে আমি কিছুই শুনিনি কোনোদিন। আর এতোবছর পর এই অভিশাপ আমার ই ওপর এসে কেন পড়ল?
সুবীর বাবুর গলার তীব্রতা দেখে সত্য বাবু খুব সহজেই অনুমান করতে পারেন যে সুবীর বাবুর মানসিক অবস্থা আর গল্প শোনার অনুকুল নয়।
সুবীর বাবুঃ বর্ণালীর ব্যাপারে জানেন, আমাদের এতো পুরনো সব ঘটনা জানেন তারমানে এটাও নিশ্চয়ই জানেন যে আমরা কলকাতার আদি মানুষ নই। আমাদের আদি বাড়ি মেদিনীপুরে। মানব বা বর্ণালীর সাথে পরিচয় হয় কলেজে।
সত্য বাবুঃ আহ সুবীর বাবু আমি সব ই জানি। এগুলো বলে অযথা সময় নষ্ট করার কি দরকার। হ্যাঁ তবে এটা খুব ই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যে কেন আপনি ই এই অভিশাপের কবলে পড়লেন। কেন অন্য কেউ নয় মানে আপনার কোনও পূর্বপুরুষ নয়? কিন্তু এটা বললে তো আমার গল্পের সমস্ত আকর্ষণ ই নষ্ট হয়ে যাবে। আর আকর্ষণহীন গল্প আমি লোককে কি করে বলি বলুন তো? আচ্ছা ঠিক আছে আপনার যা মানসিক অবস্থা তাতে আসল রহস্যটা আপনার কাছে ফাঁস না করে কোনও উপায় নেই দেখছি।
আচ্ছা সুবীর বাবু আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে আপনি জমিদার বাড়িতে এসেছিলেন রবিবার। ঠিক তার আগেরদিন অর্থাৎ শনিবার রাতে জমিদার বাড়িতে এক ঘটনা ঘটেছিল। যার কথা এই ইহজগতে প্রায় কেউ ই জানেনা।
সুবীর বাবুঃ এ আবার নতুন কি রহস্য? আমার আর ভালো লাগছে না সত্য বাবু। আপনি আমায় মুক্ত করুন আর ডায়েরিটা নিজের সাথেই নিয়ে চলে যান। আমার সত্যি ই ভালো লাগছে না। যা ঘটে গেছে আমার জীবনে তা আমি মেনে নিলাম কিন্তু আর আমার ভালো লাগছে না।
সত্য বাবুঃ আহ সুবীর বাবু এতো অধৈর্য হলে চলবে? এই রহস্যটা আপনার কাছে ফাঁস করে দিলে আপনি অনেক প্রশ্নের ই উত্তর পেয়ে যাবেন। কি হোল শুনবেন তো?
সুবীর বাবু কোনও উত্তর দেন না শুধুই চোখ বন্ধ করে বসে থাকেন।
সত্য বাবুঃ (কিছুটা গম্ভীর হয়ে) জমিদার বাড়িতে অযাচিত ব্যাক্তির আগমন আমরা পছন্দ করিনা সুবীর বাবু। আপনি এসেছিলেন সেটা হয়ত আগে থেকেই ঠিক ছিল, কিন্তু অকারনে কোনও ব্যাক্তি জমিদারবাড়িতে আসবেন তা আমাদের খুব একটা পছন্দ নয়। আশেপাশের লোকজনকে একটু জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন, জমিদার বাড়ি থেকে খুব কম মানুষ ই বেঁচে ফিরতে পেরেছেন, তার মধ্যে আপনি একজন।
এতক্ষন হুঁশ ফেরে সুবীর বাবুর। সুতানুটিতে পৌঁছানোর পর থেকেই তো সুবীর বাবু একের পর এক রটনা শুনেছেন। মনে পড়ে যায় কারখানা গেট থেকে কিছুটা দুরের সেই চা দোকানের কথা। ওই চাওয়ালা যে আসলে ভুত তা ওর সাথে কথা বলার সময় একবারও মনে হয়নি সুবীর বাবুর। প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে যখন উনি জমিদার বাড়ি থেকে বাইরে এলেন অজস্র লোকের ভিড়, একটি মৃতদেহ ও সামনে গিয়ে দেখা সেটা ওই চাওয়ালার। সবাই বলে উনি নাকি আগের দিন রাতে জমিদার বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই মারা যান। সত্যি সেই রবিবার ছিল সুবীর বাবুর জীবনের সবচেয়ে বাজে দিন। ভুতে বিশ্বাস কোনোদিন ই সুবীর বাবু করতেন না, কিন্তু হয়ত এই ক্রমিক ঘটনাগুলোর পর ওনার ও মনে ভুতের অস্তিত্ব বদ্ধমূল হয়ে যায়।
সত্য বাবুঃ কি হোল কি ভাবছেন সুবীর বাবু?
সুবীর বাবুঃ চাওয়ালা। আমি সেদিন প্রথম ভুত চা দোকানেই দেখেছিলাম।
সত্য বাবুঃ আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেলো সুবীর বাবু। কি চাওয়ালা? কে চাওয়ালা? আরে না না ওসব কিছুই নয়। আপনি শুনুন মন দিয়ে।
কিকরে মানব বাবু জানলেন যে পরদিন আপনি জমিদার বাড়িতে যাবেন জানিনা। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যে নাগাদ জমিদার বাড়িতে মানব এসে উপস্থিত। প্রথমে উনি জমিদার বাড়ির বাইরে অর্থাৎ ওই বাগান অঞ্চলটায় অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করলেন, কিছু একটা খুঁজছিলেন। প্রথম ওর কাছে আমি ই যাই।
সত্য বাবুঃ একি এই সন্ধ্যে বেলা আপনি এখানে কি করছেন? আর এভাবে কি খুঁজছেন? আর আপনাকে তো আগে এখানে কখনো দেখিনি।
আমায় দেখে প্রায় থতমত খেয়ে যান মানব বাবু। আমতা আমতা করে বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ আজ্ঞে, আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার কাজে এখানে এসেছি। আমার এক বন্ধু সুবীর, সুবীর সেন আমাকে এখানে পাঠিয়েছে।
সুবীর, সুবীর সেন এই নামটা শুনে আমি প্রায় চমকেই উঠি। কারন ডায়েরিতে একদম শেষ পৃষ্ঠায় ঠিক এই নামটাই উল্লেখ ছিল। তার আগে অবধি আমরা কেউ ই প্রায় জানতাম না যে এই সুবীর সেন আসলে আমাদের ই বংশধর, সেন পদবী দেখে আমরা বুঝে যাই, আপনি ই সেই যে আমাদের অভিশাপকে বহন করে চলবেন।
আমি কিছু বলার আগেই মানব বাবু নিজের হাতের সুটকেসটা সামনে নিয়ে আসেন। আমি অবাক হয়ে যাই। কিছু বোঝার আগেই মানব বাবু সুটকেসটা আমার সামনেই খুলে দেন। ভেতরে প্রচুর টাকার বান্ডিল। আমি বুঝে গেছিলাম এই লোকটার নিশ্চয়ই কোনও কুমতলব আছে। কিন্তু মনে মনে প্রচণ্ড হাঁসিও পাচ্ছিল কারন মানব বাবু তখন ও জানতেন না যে আমরা সকলেই মৃত, ঠিক যার যার সাথে ও মিলিত হবে তাদের প্রত্যেকেই মৃত। আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে মানব বাবু বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ দাদা, আপনার অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছে যে অর্থনৈতিক অবস্থা আর আগের মত নেই। এই সুটকেস এ ১ লক্ষ টাকা আছে। পরে আরও পাবেন। শুধু আমার একটা উপকার করতে হবে আপনাকে।
আমি অবাক হয়ে তাকাই ওনার দিকে। আমার এই অবস্থা দেখে মানব বাবু বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ দাদা, কোনও চিন্তা নেই, আপনি কোনও বিপদে পড়বেন না। যা হবে সব আমি সামলে নেবো। কাল সকালে এখানে একটা শিকার করব। একটা পাগলা কুকুর বড্ড বার বেড়েছে।
কথাটা শেষ করেই কোমরে গোঁজা পিস্তলটা আমায় দেখালেন মানব বাবু।
প্রায় চিৎকার করে ওঠেন সুবীর বাবু।
সুবীর বাবুঃ কি বলছেন আপনি, মানব আমায় প্রানে মারতে চেয়েছিল। এতদিনের বন্ধুত্ব এভাবে ও শেষ করে দিতে চেয়েছিল।
সত্য বাবুঃ হ্যাঁ সুবীর বাবু এটা সত্যি। প্রতিহিংসা আর যৌন আকাঙ্খায় মানুষ সব ই পারে। সেদিন আপনার বাড়িতে মত্ত অবস্থায় মালতীর শরীরের স্বাদ পাওয়ার পর মানব জানোয়ার হয়ে গিয়েছিল। মানবের মনে এই ধারনা বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল যে মালতী অভুক্ত মালতীও মানবকে চায় সজ্জাসঙ্গী হিসেবে। অবশ্য এরসাথে যোগ হয়েছিল আরও একটি জিনিষ। তা হোল পুরনো রাগের প্রতিহিংসা। বর্ণালীকে যে মানব ও ভালোবাসতো। বর্ণালীর সাথে আপনি যা করেছেন তা তো মানবের পক্ষে কোনওকালেই মেনে নেওয়া সম্ভব ছিলনা।
কিন্তু সুবীর বাবু মানব ও তো মানুষ তাই ও একটাই ভুল করে ফেলেছিল। কি বলুন তো?
সুবীর বাবু কোনও উত্তর দেন না, চুপ করে বসে থাকেন।
সত্য বাবুঃ (কিছুটা গম্ভীর হয়ে) ডায়েরীর কারনহেতু অন্য কোনও কারনে জমিদার বাড়িতে কেউ এলে সে বেঁচে ফেরেনা সুবীর বাবু।
সুবীর বাবু প্রায় চমকে ওঠেন। সত্য বাবুর কথা উনি নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলেন না।
সুবীর বাবুঃ কি বলছেন আপনি। মানব কি...
সত্য বাবুঃ হ্যাঁ সুবীর বাবু আপনি ঠিক ই ধরেছেন আপনার প্রিয় বন্ধু মানব মৃত। জমিদার বাড়িতে অতৃপ্ত আত্মাদের হাতে উনি মৃত।
দুহাতে নিজের মুখ ঢেকে দেন সুবীর বাবু। যা ক্ষতি ই করুক মানব ওর সবচেয়ে পুরনো বন্ধু। মানবের এই মৃত্যু কিছুতেই ওর পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
সুবীর বাবুঃ তাহলে কি মানবের আত্মা এতসব করল?
সত্য বাবুঃ একদম ঠিক ধরেছেন আপনি। অতৃপ্ত আত্মা যে ভয়ঙ্কর হয় সুবীর বাবু। যতক্ষণ না নিজের শেষ আঁশটুকু পুরন হচ্ছে এরা কিছুতেই শান্তি পায়না। মালতীর দেহটা ভোগ করতে না পারলে যে মানবের আত্মা কখনো শান্তি পেতনা। আর রাজু ও সাইদুলের মত দুই নরকের কীটের হাতে আপনার স্ত্রীকে তুলে দিয়ে মানব আপনার প্রতি যে প্রতিহিংসা মনে পুষে রেখেছিল তাও চরিতার্থ করে নিল।
সুবীর দুচোখ বন্ধ করে বসে থাকেন। নিজের এই পরিনতির চেয়েও বেশি কষ্ট ওনার মানবের জন্য। জীবনে বহুবার ওনাদের দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে কিন্তু তার পরিনতি এই? সুবীরবাবুর দুচোখ বেয়ে জলের ধারা বইতে শুরু করে। অবাক হয়ে যান সত্য বাবুও।
সত্য বাবুঃ আপনি প্রকৃতই ভালো মানুষ। নয়ত যে মানুষটা আপনার এতো বড় সর্বনাশ করল আপনি কিনা তার ই জন্যে নিজের চোখের জল ফেলছেন। সত্যি ই আপনার এই পরিনতির জন্য আমার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে সুবীর বাবু। কিন্তু আমায় তো আমার গল্প শেষ করতেই হবে।
হথাত ফোনটা বেজে ওঠে সুবীর বাবুর। ফোনের এই রিং ভীষণভাবে চমকে দেয় সুবীরবাবুকে। হাতে ফোনটা উঠিয়ে দেখেন রূপসার ফোন এসেছে। দুচোখ ভালো করে মুছে ফোনটা রিসিভ করেন
সুবীর বাবুঃ হ্যাঁ রূপসা বল। কি বলবি বল?
রূপসাঃ (রূপসার গলা ভেজা ভেজা) বাবা তোমার কি হয়েছে? কেন তুমি ওরকম বললে আমায়? মা এতো ভালো, আমাদের জন্য এতো করেছে, কেন এরকম বললে বাবা?
সুবীর বাবুঃ আমায় ক্ষমা করে দে মা। তোদেরকে কিছুই বোঝাতে পারব না কেন আমি এরকম বললাম।
রূপসাঃ বাবা, প্লিস আমার কথাটা শোন তুমি। মা সত্যি ই নিজের বান্ধবীর কাছে গেছে। আমি নিজে মাকে ছেড়ে দিয়ে এসেছি। শেষ কয়েকদিন ধরে তোমার আর মায়ের মধ্যে কিসের যে এতো ঝগড়া জানিনা। সেই কারনেই হয়ত মা তোমায় বলেনি যে মায়ের এক ছোটবেলার বান্ধবী হাওড়াতে নতুন বাড়ি করেছে। কেন এতো ভুল বুঝছ বাবা? মা ওরকম নয় তুমি যা ভাবছ।
সুবীর বাবুঃ আমায় ক্ষমা কর মা। কিন্তু এই কয়েকটা মাসে আমাদের সংসারটা ওলট পালট হয়ে গেছে মা। এমন অনেককিছুই ঘটে চলেছে যা আমরা কেউ ই জানতাম না। তোরা মন দিয়ে পড়াশুনা কর মানুষের মত মানুষ হ ব্যাস এটাই চাই আমি।
রূপসাঃ বাবা তুমি মাথা ঠাণ্ডা রাখো সব ঠিক হয়ে যাবে।
সুবীর বাবুঃ কিছুই ঠিক হবেনা রে মা। সব ওলট পালট হয়ে গেছে। আমি ফোনটা রাখলাম।
সুবীর বাবু ফোনটা কেটে দিলেন। সত্য বাবু হয়ত কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু সুবীর বাবুই বলে উঠলেন
সুবীর বাবুঃ মানবের মৃতদেহটা কোথায় সত্য বাবু? আমি ওর সৎকার করতে চাই। আমি চাই ওর আত্মা শান্তি পাক। ও আমার যতই ক্ষতি করে থাক ও আমার ছোটবেলার বন্ধু।
সত্য বাবুঃ আপনাকে যতই দেখছি মুগ্ধ হচ্ছি। আপনি সত্যি অসাধারন এক মানুষ। হ্যাঁ মানবের দেহ জমিদার বাড়ির পেছনে পুঁতে দেওয়া হয়েছে। কাকপক্ষীতেও টের পায়নি। আপনি ওর সৎকারের ব্যাবস্থা করুন।
সুবীর বাবু চুপ করে অন্যমনস্ক হয়ে থাকেন।
সত্য বাবুঃ গল্প আর বেশিদুর নয়। তার আগে বলি তিলোত্তমা সত্যই ভালো মেয়ে, হয়ত প্রনয়ঘটিত কারনেই রাজুর বদসঙ্গে পড়েছে। কিন্তু যে মেয়ের সাথে আপনি এতক্ষন কথা বললেন তার গল্প শোনার পর আপনার মনে হবে এই ইহজগতে আপন বলে কেউ নয়।
রূপসা আর সাইদুলের প্রেম ও হৃদয়ের আদানপ্রদানের গল্প তো আপনাকে অনেক আগেই শুনিয়েছি। আচ্ছা সুবীর বাবু আজকের দিনে কি প্রেম বলে কোনও বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে? জানি আপনার ও সেই বিশ্বাস চলে গেছে। প্রেম না শরীরের সুখ কোন বস্তুটা মানুষকে বেশি আকর্ষণ করে। ওহ ভুল করলাম মানুষ নয় নারীকে প্রেম না শরীরের আকর্ষণ কোনটা বেশি টানে। এতো ভাবতে হবেনা সুবীর বাবু। এর উত্তর নিয়েই শুরু হবে রূপসা আর সাইদুলের সেই গল্প যা তৃতীয় খণ্ডে অসমাপ্ত ছিল।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ১১- রহস্যময়ীঃ
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু ভেবে দেখুন সাইদুলের জবানবন্দিতে কিছু পুরনো ঘটনা শুনতে শুনতেই আমরা সুপ্রতীকের গল্পে চলে গিয়েছিলাম। কেনই বা সুপ্রতীক, মালা, বংশী, সিলিং সাহেব এই গল্পের মাঝে হথাত করেই উদয় হয়ে গেলেন তা একদম শেষে আপনাকে আমি বুঝিয়ে বলব, কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা চলে যাবো সাইদুলের সেই ভাবনায়। রূপসার কলেজ থেকে ফিরে এসে সাইদুল ও রাজুর মধ্যে কিছু উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় এবং কিছু আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আসলে যতই কামুক হোক যতই নষ্ট ছেলে হোক ওরা, আসলে তো আপনার গল্পে খলনায়ক ওরা ছিলনা, খলনায়ক একজন ই তিনি আর কেউ নয় স্বয়ং মানব বাবু। একটা কথা প্রচণ্ড সত্যি রাজুর তিলোত্তমার প্রতি যে ভালোবাসা বিন্দু বিন্দু আকারে হৃদয়ে সঞ্চিত হয়েছিল তার মধ্যে সামান্য কোনও ভেজাল ছিলনা। রাজুর মত এক পাষণ্ডের পাষাণ হৃদয়ে ভালোবাসার সঞ্চার তো তিলোত্তমা করেই দিয়েছিল, কিন্তু সেই হৃদয়কে ভেঙে খান খান শুধু আপনি ই করেছেন। যাই হোক সত্যি হয়ত রাজুর আপনার ওপর কোনও ক্রোধ ই ছিলনা। কিন্তু এটাও সত্যি রাজুর হৃদয় থেকে ভালোবাসা হারিয়ে গিয়ে জন্ম নেয় এক শত্রুতার, আপনার পরিবারের কিছু ক্ষতি করার জিঘাংসার। আর সেই জিঘাংসায় আগুন জ্বালিয়ে দেন আপনি নিজেই, আর সাথে কিছুটা মানবের উসকানি। যাই হোক আমরা চলে যাই আবার সাইদুলের কাছে।
সাইদুলের আম্মির পরের দিন দেশের বাড়ি যাওয়ার কথা, এদিকে ও আবার রূপসাকেও নিজের বাড়িতে আমন্ত্রন জানিয়ে ফেলেছে। ও জানে রূপসা ঠিক ই আসবে, কারন ওর ই মত রূপসাও ওকে প্রচুর ভালোবাসে। কিন্তু মনের মানুষকে নিজের দরিদ্র রাজপ্রাসাদে দেখতে পাওয়ার আনন্দকেও ছাপিয়ে যায় কিছু আশঙ্কা। যে আশঙ্কাগুলো সাইদুলের বুকে ধারালো তরোয়ালের মত বিদ্ধ হচ্ছিল। মালতী দেবীকে রাজুর আর সাইদুলের একসাথে ভোগ করা, সাইদুলের পরিবার ও রূপসার পরিবারের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থার চরম বৈষম্য, রাজুর সম্পূর্ণ বিরোধিতা করা এবং আরও অনেককিছু। মালতী দেবী কি ওদের সম্পর্কের ব্যাপারে জানতে পারলে রূপসাকে কিছুই বলবেন না? রূপসা কি মালতী দেবীর সমস্ত কথা বিশ্বাস করবে? রাজু কি এতো সহজে ওকে ছেড়ে দেবে, কারন তিলোত্তমার হৃদয় না পাওয়ার জ্বালা ওকে প্রতি মুহূর্তে কুড়ে কুড়ে খায়? হাজারো প্রশ্ন সাইদুলের মস্তিস্কে কিলবিল করতে শুরু করে। বিছানায় শুয়ে থাকলেও ঘুম কিছুতেই আসেনা। পাশে পড়ে থাকা মোবাইলটা তুলে নিয়ে দেখে প্রায় ১ টা বেজে গেছে। জোর করে চোখটা বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করে কারন কাল ওকে অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। হথাত ওকে অবাক করে দিয়ে ফোনটা বেজে ওঠে। আবার ফোনটা হাতে নিয়ে সাইদুল দেখে এটা রূপসার ফোন। এতো রাতে রূপসার ফোন কেন এই ভাবতে ভাবতেই সাইদুল ফোনটা রিসিভ করে।
সাইদুলঃ হ্যালো, রূপসা কি হয়েছে ঘুম আসছেনা বুঝি?
রুপসাঃ না ঘুম আসছেনা। তোমার সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে। একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করব তোমায়?
সাইদুলঃ হ্যাঁ হ্যাঁ বলই না কি বলবে।
রূপসাঃ আচ্ছা তোমার বন্ধু রাজু ও কেমন গো? অনেকবার তো তোমায় আর রাজুকে একসাথেই দেখেছি। ছেলেটার বডিটা খুব্ব সুন্দর। উম সাইদুল তুমি আবার রাগ করছ না তো তোমাকে তোমার বন্ধুর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছি এতো সুখ্যাতি করছি সেজন্য।
কিছুক্ষন চুপ করে থাকে সাইদুল। রূপসা যে ওকে হথাত রাজুর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে তা ভ্রুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি সাইদুল। সাইদুলের কিছুটা ভয় লাগতে শুরু করে। রাজুর তো এই পাড়ায় খুব বদনাম, রূপসা আবার বাজে কিছু শোনেনি তো রাজুর ব্যাপারে। মনে মনে বলে “শালা কি করতে যে এরকম একটা ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করেছিলাম, একের পর এক প্রবলেম” সাইদুল কিছু বলে ওঠার আগেই অপরপ্রান্ত থেকে রূপসা বলে ওঠে
রূপসাঃ তখন আমারা কলেজে পড়তাম। আমার এক বান্ধবী ছিল রিয়া। ওই প্রথম আমাকে রাজুদাকে দেখায়। একটা লাল টিশার্ট পড়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল কলেজের পাস দিয়ে। কলেজের মেয়েরা তো ওকে দেখার জন্য প্রায় হুড়োহুড়ি করতে শুরু করে দিয়েছিল। আমি ওদের দেখাদেখি পেছন পেছন গেছিলাম। সত্যি যেকোনো মেয়েই পাগল হয়ে যাবে ওকে দেখে। উফ কি বডি। তুমি তো ওর বন্ধু তুমি কি ওর মত একটু বডি বানাতে পারনা। রোগাটে গড়ন আমার একদম পছন্দ নয়।
সাইদুলের মাথায় এমনিতেই দুশ্চিন্তার শেষ ছিলনা তার ওপর রূপসার এই অদ্ভুত ধরনের আচরন। হথাত করেই সাইদুলের মাথাটা গরম হয়ে যায়।
সাইদুলঃ রাজু আমার খুব ভালো বন্ধু, আমরা একে অপরকে ছাড়া থাকিনা। কিন্তু ওর এতো ভালো বন্ধু হয়েও বলছি, ও ভালো শুধুই বন্ধু হিসেবে। মেয়েদেরকে ও কি চোখে দেখে তা শুধু আমি ই জানি। আর আমিও সত্যি বুঝে পাইনা মেয়েরা কেন এই ধরনের ছেলেকে বেশি পছন্দ করে। ভালো ছেলে পৃথিবীতে কত আছে অথচ...
রূপসাঃ এবাবা সাইদুল তুমি এরকম বাচ্চাদের মত রাগ করছ কেন সোনা। শোন না প্লিস আমার কথাটা, আমি যা বলেছি তুমি তা বুঝতে পারনি। আমার না ঘুম আসছে না, তুমি কিছু বুঝতে পারছ না শোনা। জানো কাল তোমার বাড়িতে আসব আমার শরীরে এখন থেকেই উত্তেজনা হচ্ছে। সাইদুল তোমার ঠোঁটদুটো বিশাল মিষ্টি, তুমি জানো আমি না একটা রাক্ষসী, কখনো পুরুষের স্পর্শ পাইনি। তুমি আমায় রক্তের স্বাদ দিয়েছ। আমি তো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, কিন্তু একটা পচা স্বপ্ন দেখে আমার ঘুম ভেঙে গেলো। এই বিচ্ছিরি স্বপ্নটা আমি কলেজেও দেখেছিলাম। তাই তো রাজুর কথা বললাম।
সাইদুলঃ স্বপ্ন? কি স্বপ্ন? আর হথাত করে আমায় রাজুর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছ কেন? রাজু আমার বন্ধু। কিন্তু ও বস্তির ছেলে, ভীষণ বাজে একটা ছেলে আমি ওকে তোমার সামনে আনব না। ও একটা নোংরা ইতর ছেলে।
রূপসাঃ তুমিও তো বস্তির ছেলে, কিন্তু তুমি কত ভালো। রাজুও ভালো তুমি ওকে ভুল ভেবেছ।
সাইদুলঃ দেখো রূপসা, আমি তোমায় স্পষ্টভাবে বলছি, আজ আমার আর রাজুর খুব ঝগড়া হয়েছে। তুমি আমার জীবনে এসেছ আমি সব অতীতের ঘটনাকে এমনকি রাজুকেও ভুলতে চাই। এই বস্তিতে আমি থাকতে চাইনা। প্রচুর পরিশ্রম করব টাকা জমাবো আর তোমাদের মত পাকা বাড়িতে থাকবো। তারপর আমাদের বিয়ে হবে। আমি তোমার সাথে ঘর বেঁধে সুখি হতে চাই রূপসা।
রূপসাঃ আমিও তো তাই চাই সাইদুল। আমায় ভুল বুঝনা আমি রাজুর নাম তোমার সামনে ওভাবে বলতে চাইনি। আসলে একটা পুরনো দুষ্টু স্বপ্ন কেমন করে কিজানি আমার জীবনে আবার ফিরে এলো। আর তোমায় না বললে কাকে বলব সোনা। তুমি ই তো আমার সব। আসলে রাজুর জন্য ক্লাসের বাকি মেয়েরা পাগল ছিল, ওদের কথা শুনতে শুনতে আমার ও কেমন একটা রাজুর ব্যাপারে আগ্রহ জন্মায়। ব্যাস এতটুকুই।
অনেকক্ষণ নিজের ধৈর্য পরীক্ষা দিয়েছে সাইদুল। আর পারেনা নিজেকে ঠিক রাখতে।
সাইদুলঃ দেখো রূপসা, তোমার যদি রাজুর মত ছেলেদের পছন্দ হয় তাহলে এটা খুব সত্যি যে আমাকে তোমার কখনোই পছন্দ হবেনা আর আমাকে ভালো ও বাসতে পারবে না তুমি। তুমি ভালো থেকো আমি ফোনটা রাখি।
মুহূর্তের মধ্যে ফোনটা কেটে দেয় সাইদুল। সাইদুলের কপাল দিয়ে তিরতির করে ঘাম ঝরে পড়তে থাকে। এ কোন রূপসা, যাকে কয়েকটা মুহূর্ত আগে নিজের হৃদয় উজাড় করে দিয়ে এসেছিল সেই রূপসা? সেই রূপসা তো এরকম হতে পারেনা। রূপসাই তো ওকে বলেছে যে সাইদুলের জন্য ও নিজের প্রাণটাও দিতে পারে। নিজের ই মনে তৈরি হওয়া বিপরীতমুখী একের পর এক প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে যেতে থাকে সাইদুল। কেন বারবার রূপসা রাজুর নাম ওর কাছে করছিল। ওর কথার মধ্যে কি কোনও যৌন ইঙ্গিত রয়েছে নাকি শুধুই ওর সাথে নেহাত ই ইয়ার্কি করার জন্য এরকম বলল। একটার পর একটা মিনিট অতিক্রান্ত হয়। সাইদুল ও শান্ত হয় ধীরে ধীরে। যতই হোক ভালোবাসা বলে কথা। মনে মনে বলে সাইদুল ওর এভাবে সত্যি ই ফোন টা কেটে দেওয়া উচিত হয়নি। কিন্তু এখনো কেন রূপসার কোনও ফোন এলনা? এবার সাইদুলের চিন্তা হতে শুরু করে। তাহলে কি রূপসা ওর সাথে মশকরা করছিল? সাইদুলের এভাবে রেগে যাওয়ায় কি রূপসা কষ্ট পেলো?
ফোনটা হাতে নিয়ে রূপসার নাম্বারে আবার ডায়াল করে সাইদুল, কিন্তু নাম্বার ব্যাস্ত। এতরাতে কারসাথে কথা বলছে রূপসা? সাইদুল জানে এতো রাতে নিশ্চয়ই রূপসা নিজের বাবা মার সাথে কথা বলবে না, কোনও বান্ধবীর সাথে কথা বলছে হয়ত। ২-৩ মিনিট অপেক্ষা করে আবার ফোন করে রূপসাকে। আবার নাম্বার ব্যস্ত। রূপসা কার সাথে কথা বলছে এই ভাবতে ভাবতে সাইদুলের চিন্তায় মনটা উথাল পাথাল হয়ে যেতে থাকে। প্রায় ১-২ মিনিট ছাড়া ছাড়াই চেষ্টা করে যায় সাইদুল কিন্তু প্রতিবার একি কথা ব্যাস্ত। হাজারো দুশ্চিন্তায় সাইদুলের মাথা ধরে যায়, আসলে সারাদিনে ধকল তো কম যায়নি। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে তা নিজেও খেয়াল করেনি। ঘুম ভাঙ্গে ফোনের আওয়াজে। হাতে ফোনটা নিয়ে দেখে রূপসার ফোন, রাত প্রায় দেড়টা বেজে গেছে। চরম ক্লান্তির সাথে সাইদুল ফোন টা রিসিভ করে।
সাইদুলঃ এতক্ষন কার সাথে কথা বলছিলে? কখন থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি। তোমার এই ব্যাবহারটা আমার একদম ভালো লাগলো না রূপসা। তুমি জাননা আজ সারাদিনে থিক কি পরিমান কষ্ট আমার হয়েছে?
রূপসাঃ (কিছুটা ধরা ধরা গলায়) তুমি ভীষণ পচা ছেলে। তুমি কিছুই বুঝলে না কেন হথাত এই মাঝ রাতে আমি তোমায় ফোন করতে গেলাম। তুমি কি ভাবলে আমি অন্য ছেলের... না থাক, আমার আর আজ কথা বলতে ইচ্ছে করছে না সাইদুল। গুড নাইট।
হথাত ফোনটা কেটে দিলো রূপসা। রূপসার কান্নাভেজা কণ্ঠ তখনও সাইদুলের কানে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। বারবার নিজেকে দোষারোপ করে সাইদুল। মনের মানুষকে কাঁদিয়ে দেওয়া, কষ্ট দেওয়া এযে এক প্রেমিকের কাছে ঠিক কতবড় শাস্তি তা শুধু একজন পুরুষ ই বোঝেন। মনে মনে একবার বলে ওঠে সাইদুল “শালা সত্যি ই আমি বস্তির ছেলে মাথায় সবসময় আজেবাজে চিন্তা ঘোরে, ও হয়ত কিছু অন্য বলতে যাচ্ছিল বুঝলাম আলাদা কিছু, শালা সত্যি বদ ছেলেগুলোর সাথে মিশে মিশে আমার ও মাথা খারাপ হয়ে গেছে”
হাতে মোবাইলটা নিয়ে রূপসার নাম্বারে ডায়াল করে সাইদুল। একবার রিং হওয়ার পর ই রূপসা কেটে দেয়। সাইদুলের মাথা খারাপ হয়ে যায়। মনে মনে বলে “শালা বিশাল ভুল করে ফেলেছি, ইস কেন যে বললাম এরকম, আমি সত্যি ই ফালতু একটা ছেলে” বারবার চেষ্টা করতে থাকে সাইদুল কিন্তু ফলাফল ওই একি। একবার রিং হওয়ার পর ই ফোনটা কেটে দেয় রূপসা। হাতের আঙুলগুলো মুখে পুড়ে কামরাতে থাকে সাইদুল, বিড়বিড় করে বলে ওঠে “আরে রূপসা প্লিস প্লিস প্লিস একটিবার আমায় কিছু একটা বলার সুযোগ দাও” প্রায় ১০ মিনিট লাগাতার সাইদুল রূপসার মোবাইলে চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু রূপসা বারবার ফোনটা কেটে দেয়। হতাশায় ক্লান্তিতে চোখদুটো বুজে নেয় সাইদুল। হথাত ই মোবাইলটা বেজে ওঠে, কোনওকিছু না বুঝেই সাইদুল ফোনটা রিসিভ করে বলে ওঠে
“আমায় ক্ষমা করে দাও রূপসা, আমি তোমায় ভুল বুঝিনি। আসলে সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম হয়ত তাই এরকম উল্টোপাল্টা বলে ফেলেছি, প্লিস একটু আমার কথাটা শোন তুমি, প্লিস ফোনটা কেটোনা”
“কিরে বাল কি আলবাল কথা বলে যাচ্ছিস। ঘুমিয়ে গেছিস কিনা দেখার জন্য ফোন করলাম। একবার বাইরে আয়না একটু কথা বলব। একটাবার আয় আজ তোর সাথে এতো ঝগড়া করলাম তাই আমারও ঘুম আসছেনা”
ঠিক এই কথাটা এই মুহূর্তে সাইদুল শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলনা। এই মুহূর্তেই একবার রূপসার সাথে কথা বলা খুব দরকার, অথচ রাজুর ফোন, না বলেও উপায় নেই। সাইদুল মৃদুকণ্ঠে জবাব দেয় “ঠিক আছে বাইরে দাঁড়া আমি আসছি” ধীরে ধীরে উঠে দরজাটা খুলে বাইরে বেরোয় সাইদুল। কিছুটা দুরেই রাজু দাঁড়িয়ে ছিল। বাইরের চাতানটায় গিয়ে বসে সাইদুল, রাজুও ওর দিকে এগিয়ে আসে। “নে বিড়ি খা” সাইদুলের দিকে একটা বিড়ি বাড়িয়ে দেয় রাজু। দুজনেই দুটো বিড়ি জ্বালিয়ে চুপ করে বসে থাকে। প্রায় ১ টা মিনিট কারুর মুখ দিয়ে কোনও কথা নেই। নীরবতাটা রাজুই ভাঙে।
রাজুঃ এতো রাতে তোকে ডাকতাম না রে! (সাইদুলের দিকে আরও কিছুটা সরে এসে, সাইদুলকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রাজু) আমায় ক্ষমা করে দে ভাই। আমি বিশাল ভুল করেছি। তুই তোর ভালোবাসা পেয়েছিস আমি মাঝে আসার কে? আমি তোর সাথে আছি রে সাইদুল। তোকে বোঝাতে পারব না রে সাইদুল আমি ঠিক কতটা খুশি হয়েছি।
রাজুর এভাবে ওর পাশে দাঁড়ানো, আবার পুরনো বন্ধুকে এভাবে কাছে টেনে নেওয়া এতে যে সাইদুল ও ভীষণভাবে খুশি তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। কিন্তু এই মুহূর্তে ওর মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরঘুর করছে কি করে রূপসার রাগ ভাঙানো যায়। ওকে জড়িয়ে থাকা অবস্থায় ই রাজু বলে ওঠে
রাজুঃ কিরে সাইদুল? ভাই তুই এখনো আমার ওপর রেগে আছিস না রে? তুই তো জানিস রে ভাই আমি কিরকম মাথাগরম পাবলিক। আবার রাগ নেমে গেলেও যে আমি সেই পুরনো রাজু তাও তো তুই জানিস রে।
সাইদুলঃ ধুর বোকা, আমি কি মেয়ে নাকি যে রাগ করে থাকবো। আমি জানতাম একদিন তুই আমার পাশে ঠিক ই থাকবি। আসলে জানিস তো কিছুক্ষন আগেই না রূপসার সাথে খুব ঝামেলা হয়ে গেছে। শালা সারাদিন খাটাখাটনির পর কার ই বা মাথার ঠিক থাকে বল তো? খুব বাজে ব্যাবহার করে দিয়েছি রে। খুব রেগে আছে আমার ওপর।
রাজুঃ ধুর বাল। শুধু এই কারনে তুই এরকম মাগির মত মুখ করে বসে...
রাজুর কথাটা শেষ হওয়ার আগেই সাইদুলের ফোনটা বেজে ওঠে। হ্যাঁ এটা রূপসার ই ফোন। সাইদুলের মুখে সেই পুরনো হাঁসিটা আবার ফিরে আসে। রাজু হাত নেড়ে ইশারা করে ওকে ভেতরে গিয়ে কথা বলতে বলে। সাইদুল ফোনটা রিসিভ করেই ভেতরে চলে যায়।
রূপসাঃ আমার দিব্যি করে আগে বল যে আর কোনোদিন আমায় এভাবে ভুল বুঝবে না। আগে বল তবে কথা বলব নয়ত নয়।
সাইদুলঃ আমার ভুল হয়ে গেছে রূপসা আর কখনো এরকম হবেনা। আমায় তুমি ক্ষমা করে দাও।
বেশ কিছুক্ষন উভয়পক্ষই চুপচাপ। “হুম ঠিক আছে” রূপসার কণ্ঠ থেকে একটা মিষ্টি আওয়াজ বেরিয়ে আসে।
রূপসাঃ কি পড়ে আছো এখন? আর বলতো আমি কি পড়ে আছি? (খিলখিল করে হেঁসে ওঠে রূপসা, রূপসার এই হাঁসি এক পুরুষকে অনেক কিছু ইঙ্গিত ই দিতে পারে। সেই ইঙ্গিত বুঝতে সাইদুলের ও দেরি হয়না)
সাইদুলঃ আমি না খালি গায়ে আছি, শুধু একটা বারমুন্দা পড়ে আছি। আর তুমি একটা সাদা রঙের ম্যাক্সি পড়ে আছো। কি গো ঠিক বললাম তো।
রূপসাঃ (আবার সেই খিল খিল করে দুষ্টুমি ভরা হাসিটার সাথে) মোটেও ঠিক বলনি। তুমি যদি এখন আমার রুমে থাকতে না... উম। সাইদুল তুমি আমায় পাগল করে দেবে তো বিয়ের পর?(ফোনের দুই প্রান্তেই তপ্ত নিঃশ্বাসের টাইফুন শুরু হয়ে যায়) ওহ সাইদুল আমি তোমায় খুব ভালোবাসি। আমার খুব লজ্জা করছে বলতে। আমি না কিছুই পড়ে নেই। শুধু একটা পাতলা হলুদ চাদর আমার শরীরে ঢাকা দেওয়া। তুমি যদি থাকতে এখানে...উফ। জানো তোমায় তখন কেন উল্টোপাল্টা কথা বলছিলাম। মেয়েদের ও না তোমাদের মত...(আবার খিলখিল করে সেই হাঁসিটা, এদিকে সাইদুলের নিম্নদেশে বারমুন্দার ওপর ইতিমধ্যেই সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ তৈরি হয়ে গেছে, একটা সাপ ফোঁসফোঁস করতে শুরু করে দিয়েছে) আমি না খুব অসভ্য জানো তো। কিন্তু তোমার সাথেই তো অসভ্যতামি করব কি গো বল। একটা কাজ করবে? কাল একটু যদি বাড়ি থেকে আম্মিকে অন্য কোথাও পাঠাতে পারো না, তাহলে এই বদমাশ রূপসা তোমায় নিজের সব ভালোবাসা উজাড় করে দেবে। কাল আমি তোমার সামনে আসব নতুন বউ এর বেশে, তোমায় পাগল করে দেবো আমি। আমাকে এবার পুজায় বাবা একটা হলুদ সাড়ি দিয়েছে। ওটা পড়ে একদম তোমার বউ সেজে তোমার বাড়িতে আসব। কি গো কিছু বল তুমি?
সাইদুলঃ তুমি আমার যা অবস্থা করেছ, উফ শরীরটা আনচান করছে, মনে হচ্ছে এক্ষুনি... রূপসা আমার শোনা কাল আমার বাড়িতে কেউ থাকছে না। কাল পরশু দুদিন ই আমার বাড়ি ফাঁকা। আমিও সেই হলুদ সাড়িতে আমার বউকে দেখতে চাই। আজ রাতে আমি আর ঘুমাতে পারব না রূপসা। আমি কি আসব তোমার হোস্টেলে।
রূপসাঃ ধুর অসভ্য, যা হওয়ার কাল ই হবে। এখন শুয়ে পড়ো, আমাদের আবার স্বপ্নের মধ্যে দেখা হবে। ওখানে একে অপরকে আদর করব, কেমন। কিন্তু প্র্যাক্তিকাল ক্লাস কাল। কাল কিন্তু ঠিক ৮ টায় আমি হাওড়া চলে আসছি। ওকে বাই উম্মম্মম্মম (ফোন কিস)।
ফোন রেখে দেয় রূপসা। কালকের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে সাইদুল।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ১২- রাজুর হেঁয়ালিঃ
“কিরে সাইদুল ওঠ, বেলা হয়ে গেলো তো। ওঠ বাবা, অনেকদুর যেতে হবে তো আমাদের”
আম্মির ডাক শুনে ধড়ফড় করে উঠে পড়ে সাইদুল। পাশে রাখা মোবাইলটা তুলে দেখে সকাল ৭ টা ১০ বেজে গেছে। মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হয় সাইদুলের। রূপসার তো ৮ টায় হাওড়া পৌঁছে যাওয়ার কথা। মনে মনে ভাবে শালা কাল রাতে এমন হোল অ্যালার্ম দিতেই ভুলে গেছিলাম। ওদের দেশের বাড়ি বসিরহাটে। ঠিক ছিল সাড়ে ছটার বসিরহাট লোকালে আম্মিকে তুলে দিয়ে ও সোজা হাওড়া চলে যাবে। সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে গেলো। আম্মির সামনে রূপসাকে আনাও সম্ভব নয়। তাড়াতাড়ি ব্রাশ করতে শুরু করে সাইদুল। হথাত ফোনটা বেজে ওঠে ওর। সাইদুল খুব ভালো করেই জানে যে এটা রূপসার ই ফোন।
রূপসাঃ কোথায় আছো সাইদুল? আমি কিন্তু বাসে উঠে গেছি আর আধ ঘণ্টার মধ্যেই হাওড়া পৌঁছে যাবো।
সাইদুলঃ আরে রূপসা একটা অসুবিধা হয়ে গেছে। মাকে শিয়ালদায় বসিরহাট লোকালে উঠিয়ে দিতে যাচ্ছি। হাওড়া পৌছাতে দেড় ঘণ্টা মত লাগবে। তুমি কি কোনও বন্ধুর বাড়িতে...
রূপসাঃ তোমার না কিচ্ছু ঠিক নেই। আম্মিকে শিয়ালদা ছাড়তে যেতে হবে তো আমায় জানালে না কেন কাল রাতে? আমি তোমায় জিজ্ঞেস করে বাড়ি থেকে বেরতাম। এখন আমি কোথায় যাবো?
চিন্তায় সাইদুল ও পড়ে যায়। আম্মিকে তো দেশের বাড়ি আজ যেতেই হবে, আবার রূপসাকেও দাঁড় করিয়ে রাখা যায়না। এইসব চিন্তার মধ্যেই সাইদুলের পিঠে কেউ একটা হাত রাখে। পেছন ফিরে সাইদুল দেখে রাজু দাঁড়িয়ে আছে। হাতের ইশারা করে বলছে “আমি নিয়ে আসব কোনও চিন্তা করিস না তুই” সাইদুলের কাছে অন্য কোনও উপায় ও ছিলনা। রূপসা তখন ও ফোনের অপর প্রান্তে ছিল।
সাইদুলঃ রূপসা, আমায় তো আম্মিকে স্টেশন এ ছাড়তে যেতেই হবে। এককাজ কর আমি রাজুকে পাঠাচ্ছি। রাজু তোমায় আমার বাড়িতে নিয়ে আসবে। কিছুক্ষন অপেক্ষা কর আমি চলে আসব।
রূপসাঃ(গলাটা কিছুটা উঁচু করে) কেন রাজু কি আম্মিকে স্টেশনে ছেড়ে আসতে পারেনা। তুমি আমায় নিয়ে আসবে তাহলে।
সাইদুলঃ তুমি বুঝছ না রূপসা, আমি সাথে না গেলে আম্মি বেরোবে না। বুঝতেই তো পারছ সেকেলে মানুষ একটু। কোনও চিন্তা নেই, আমি অল্প সময়ের মধ্যেই চলে আসব।
রূপসাঃ তুমি কি গো আমাকে একা রাজুর সাথে ছেড়ে দিচ্ছ? তোমার কি কোনও চিন্তাও হয়না।
কাল রাতের রূপসার হেঁয়ালিগুলো সাইদুলের মাথা থেকে এখনো নেমে যায়নি, রূপসার আবার এই কথায় সাইদুলের শরীরে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। পেছনঘুরে একবার রাজুর মুখের দিকে তাকায় সাইদুল। রাজুর মুখে একটা অচেনা হাঁসি, সেই হাঁসির মধ্যে যেন কত রহস্য লুকিয়ে আছে। নিজের মনেই বলে ওঠে সাইদুল “ধুস আবার উল্টো পাল্টা ভাবছি আমি”
সাইদুলঃ আরে কোনও চিন্তা নেই। তুমি রাজুর সাথে চলে আসো। আমি অল্প সময়ের মধ্যেই চলে আসব।
ফোন টা রেখে দেয় সাইদুল। রাজু হয়ত সব ই বুঝতে পেরেছে তাও ওকে আরও একবার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সাইদুল বলে
সাইদুলঃ ভাই রাজু খুব বিপদে পড়েছি রে। রূপসা কিছুক্ষনের মধ্যেই হাওড়াতে এসে যাবে। আমি আবার আম্মিকে নিয়ে যাবো শিয়ালদা। তুই যদি...
রাজুঃ কি যে বলিস ভাই। এতে এতো আমতা আমতা করছিস কেন। বাসস্টপের কাছে যেতে হবে তো? আমি এক্ষুনি চলে যাচ্ছি।
সাইদুলঃ আরে শোন! ঘরের চাবি আমিনা বৌদির কাছে থাকবে, নিয়ে নিস।
সাইদুল ভেতরে ঢোকে, আম্মি ততক্ষনে তৈরি হয়ে গিয়েছিল। দ্রুত জামাকাপড় পড়ে সাইদুল ও তৈরি হয়ে যায়। আম্মিকে নিয়ে বাইরে বেরোয়। রাজু ও ঠিক সেইসময় ই বেরতে যাচ্ছিল। রাজুকে বাইরে দেখে, সাইদুল ঘরের দরজা লক করে ওর হাতে চাবি দিয়ে দেয়। সাইদুল নিজের আম্মিকে নিয়ে বাস ধরতে রওনা দেয় আর এদিকে রাজুও হাওড়ার দিকে যেতে শুরু করে।
প্রায় ৪০ মিনিট বাদে সাইদুল আম্মিকে নিয়ে শিয়ালদা স্টেশনে পৌছায়। দ্রুত টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকে দেখে ট্রেন আসতে আরও ৫ মিনিট দেরি। সাইদুলের আম্মি কিছুটা আমতা আমতা করে বলে ওঠে “বাবা সাইদুল আমাকে একটু বসিরহাট অবধি ছেড়ে দিয়ে আসবি? এই লাইনে যা ভিড়” সাইদুল পড়ে মহা ফাঁপরে, একে তো এতক্ষনে রূপসার ওর বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার কথা, বস্তির মধ্যে কি করে যে মেয়েটা রয়েছে একা এই ভেবে ওর অবস্থা খারাপ তার ওপর আম্মির নতুন বায়না। সাইদুল আম্মিকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আম্মি নিজের জেদেই অনড় থাকে। অবশেষে বাধ্য হয়ে সাইদুলকে আবার ফোন করতে হয়।
সাইদুলঃ রূপসা, একটা প্রবলেম হয়ে গেছে। আম্মি একা যেতে ভয় পাচ্ছে। তুমি প্লিস একটু অপেক্ষা কর। আমি রাজুকে বলে দিচ্ছি তোমার দেখাশুনা করতে। প্লিস ৩ টে ঘণ্টা আমায় সময় দাও।
রূপসাঃ তুমি কি পাগল। এক তো আমায় নিতে আসলে না, তার ওপর আবার বলছ...
রূপসার কথা শেষ হওয়ার আগেই ওপাশ থেকে কেউ একটা বলে ওঠে “ঠিক আছে কোনও ব্যাপার নয়। ও আম্মিকে ছেড়ে দিয়ে আসুক না, আমি তো আছি” সাইদুলের গায়ে কাঁটা দিতে শুরু করে। এটা তো রাজুর গলা। এই ৩ টে ঘণ্টায় রাজু কি ওর সাথে ওখানেই থাকবে। রাজু যদি কোনও অসভ্যতা করে ওর সাথে। তিলোত্তমাকে না পাওয়ার ঈর্ষা যে রাজুর প্রতিটি রন্ধ্রে বিদ্যমান তা সাইদুল খুব ভালো করেই জানে। কিছুটা অস্পষ্ট ভাবে আবার একটা কথা ভেসে আসে “না আমি কি একা থাকবো নাকি” সাইদুল জানে ফোনটা হাত দিয়ে চেপে রূপসাই রাজুকে এই কথাটা বলল। রূপসা তো রাজুর সাথে কখনো কথা বলেনি, তাহলে এই অল্প এতো সময়ের মধ্যে এতো আপন কি করে বানিয়ে নিল। “আরে কিচ্ছু হবেনা আমি আছি তো” “ধুস ভালো লাগেনা”
রূপসাঃ তোমার যখন ইচ্ছে তুমি তখন ই ফিরবে, আমার কথা ভাবতে হবেনা, আমি ফোন রাখলাম।
রূপসা ফোনটা রেখে দেয়। সাইদুলের মাথায় একের পর এক দুশ্চিন্তা আসতে শুরু করে। কাল রাতে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে রূপসা কার সাথে কথা বলল। পেছন থেকে আম্মি বলে ওঠে “আয় বাবা, ট্রেনের সময় হয়ে গেছে” সাইদুল কোনরকমে নিজেকে সংবরন করে প্ল্যাটফর্ম এর দিকে এগিয়ে যায়।
জানলার ধারে বসে সাইদুল দেখতে থাকে একের পর এক স্টেশন পেছনদিকে চলে যাচ্ছে, মানুষের ভিড়ে প্রান ওষ্ঠাগত তার ওপর আম্মির একের পর কথা “আমিনার বাড়িতেই খেয়ে নিবি, নিজে রান্না করতে যাস না” “তাড়াতাড়ি বাড়ির সব কাজ সেরে নিবি” সাইদুলের মাথায় কিছু ঢোকে না। ও শুধু ভাবতে থাকে কখন বসিরহাট স্টেশন আসবে, আম্মিকে ছেড়ে দিয়ে ও রূপসাকে একটা ফোন করতে পারবে। এক একটা করে মিনিট অতিক্রান্ত হয় আর তারসাথে সাইদুলের ও দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে। রাজুকে যে ও ভীষণ ভালোভাবেই চেনে। ওর ভয় করতে থাকে রাজু রূপসার সাথে জোর করছে না তো। এইসব হাজারো দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়েই ওরা বসিরহাট স্টেশনে পৌছায়। দ্রুত স্টেশন থেকে বেরিয়ে আম্মিকে একটা রিক্সায় চড়িয়ে ও ফিরে আসে। শিয়ালদার দিকে যাওয়ার ট্রেন আরও আধ ঘণ্টা বাদে, তাই স্টেশন চত্তরটাও কয়েক মিনিটের মধ্যে একদম ফাঁকা হয়ে যায়। এতক্ষনে সাইদুলের রূপসাকে ফোন করার সুযোগ হয়। পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে রূপসাকে ফোন লাগিয়ে দেয়। কিন্তু সুইচ অফ। মাথা খারাপ হয়ে যায় সাইদুলের। বারবার চেষ্টা করে চলে তাও একি- সুইচ অফ। সাইদুল ভাবে নিশ্চয়ই রূপসার কোনও বিপদ হয়েছে, এই মুহূর্তেই একবার রাজুকে ফোনটা করা দরকার।
সাইদুল দ্রুত রাজুর নাম্বারে ডায়াল করে কিন্তু দুবার রিং হওয়ার পর ই রাজু ফোনটা কেটে দেয়। সাইদুলের বিশ্বাস হয়না রাজু ওর ফোন কেটে দিলো বলে। মনে মনে ভাবে নিশ্চয়ই নেটওয়ার্কের প্রবলেম তাই হয়ত ফোনটা কেটে গেলো। আবার রাজুর নাম্বার ডায়াল করে, কিন্তু এবার ও সেই একি ফলাফল, দুবার রিং হওয়ার পর ই ফোনটা কেটে যায়। সাইদুলের মাথা এবার সত্যি ই খারাপ হতে শুরু করে, পাগলের মত বারবার করে রাজুকে ফোন করতে থাকে কিন্তু রাজু প্রতিবার ই ওর ফোনটা কেটে দেয়। সাইদুলের মাথায় একের পর প্রশ্ন ও তার উত্তর জমা হতে শুরু হয়। কাল রাতে রূপসা কার সাথে এতক্ষন ধরে কথা বলছিল? সন্ধ্যেবেলা রূপসা নিজেই বলল যে লাল সাড়ি পড়বে, সাইদুল সেইভেবে একটা লাল সাড়ি বাজার থেকে কিনেও নিয়ে এলো। হথাত কি হয়ে গেলো? কার সাথে কথা বলে ওর ওই হলুদ সাড়িটা পড়ার ইচ্ছে জাগল। রূপসা কি মালতী দেবী ও ওদের দুজনের উগ্র যৌনাচারের ব্যাপারে কিছু জানে? রূপসাও কি সেই কারনেই রাজুর এতো সুখ্যাতি করে। সাইদুলকে ছাড়াই তো বহুবার দুপুরের দিকে রাজু মালতী দেবীর বাড়ি গিয়ে ওনাকে ভোগ করে এসেছে, তাহলে কি রূপসা কিছু জেনে গেছে। কাল রাতে রূপসা যে কথাগুলো বলল তা কি তাহলে...? নিজের মনেই বলে ওঠে সাইদুল না না এ হতে পারেনা, রূপসা আমাকে এতো ভালোবাসে, আমরা দুজনে নতুন সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখেছি, হথাত করেই তা ভেঙে যেতে পারেনা। সাইদুলের কানে কানে কে যেন বলে ওঠে “আরে বোকা, রূপসার মত একটা অতো শিক্ষিত উঁচু সমাজের মেয়ে কি সত্যি ই তোর প্রেমে পড়েছে? ও তো মায়ের মত তোর আর রাজুর একসাথে সহবাসের আনন্দ পেতে চায় তাই তো এতো আদিখ্যেতা। আরে ও তো মালতীর ই মেয়ে রে” পাগলে হয়ে যায় সাইদুল। বারবার নিজেকে বোঝাতে শুরু করে না রূপসা আমার সাথে কখনো এরকম করবেনা।
আবার পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে সাইদুল। রাজুর নাম্বারে ফোন করে। এবার আর রাজু কেটে দেয়না, বারবার রিং হতে থাকে, কিন্তু রাজু ফোন ধরেনা। সাইদুল আবার ফোন করে অনেকক্ষণ রিং হওয়ার পর ফোনটা রিসিভ করে রাজু। সাইদুলের শরীরে যেন নতুন করে প্রানের সঞ্চার হয়। ঝড়ের গতিতে বলতে শুরু করে সাইদুল।
সাইদুলঃ আরে রাজু তুই কোথায়? রূপসার ফোনে চেষ্টা করে যাচ্ছি কিছুতেই পাচ্ছিনা। সুইচ অফ বলছে। এই মাকে ছাড়লাম। এখনো বসিরহাটেই রয়েছি। ট্রেন আসতে আরও ১০ মিনিট। একটু রূপসার কাছে গিয়ে ওকে ফোনটা দে তো। কিজানি কি মনে করছে এতক্ষন কথা বলিনি।
অপর প্রান্ত থেকে কোনও উত্তর আসেনা, শুধুই দীর্ঘ নিঃশ্বাসের কিছু শব্দ। এই নিঃশ্বাস যে কেবল একজনের নয় তা সাইদুল বুঝতে পারে। সাইদুলের হৃৎপিণ্ডটা যেন উত্তেজনায় বাইরে বেরিয়ে আসবে। “ তাহলে কি রূপসা? ওফ ভগবান আমার ই প্রেমিকা আমার প্রিয় বন্ধুর সাথে উলঙ্গ হয়ে... না হতে পারেনা এটা”
সাইদুলঃ রাজু তুই কোথায়? আমার কথার জবাব দে। কোথায় তুই?
রাজুঃ উম্ম ওহ উপচ আমচ প্লিস আরেকটু। “আহ আহ ওমা” সাইদুল, আর ফোন করার সময় পেলিনা। এতো রূপসা রূপসা করিস না। ও খুব ভালো আছে সুখে আছে। উম্মম্ম সোনা আরেকটু, উম।
ফোনটা কেটে দেয় রাজু। সাইদুলের হৃৎপিণ্ডের সাথেসাথে ওর নিম্নাঙ্গেও ঝড় উঠতে শুরু করে। প্ল্যাটফর্ম এর ওপর ধিম গতিতে শিয়ালদামুখী লোকাল ট্রেন এগিয়ে আসছে, কিন্তু ওর নজরে ট্রেন নয় রাজুর মসৃণ পিঠ আর তার তলায় চেপ্টে বসে যাওয়া রূপসার অপক্ক শক্ত দুধগুলো। রূপসা বলছে “ওহ রাজু, শুধু শুধু তোমার ই হাতে নিজেকে মেয়ে থেকে নারী বানাবো বলে এতদিন অপেক্ষা করেছি। মা, তিলোত্তমা সবার মুখ থেকে তোমার কত প্রশংসা শুনেছি। এই কারনেই তো সাইদুলের সাথে এই প্রেমের অভিনয়”
“আরে ও দাদা, ট্রেনে না উথলে সরে যান আমাদের উঠতে দিন। কোথা থেকে সব এসে যায় এগুলো”
হুঁশ ফেরে সাইদুলের। ট্রেনে উঠে পড়ে, একদম জানলার ধারে সীটে গিয়ে বসে। আশেপাশের নারকোল গাছ, ঘরবাড়ি একেক করে সব পেছন দিকে দৌড়াচ্ছে কিন্তু সাইদুলের চোখে একটা নীল রঙের সিনেমা, রূপসার উলঙ্গ দেহটা খুটে খুটে খাচ্ছে ওর ই প্রিয় বন্ধু রাজু। “আমি হেরে গেলাম, ঈশ্বর আমায় তুমি হারিয়ে দিলে” মনে মনে বলে ওঠে সাইদুল। দুচোখ বুজে দেয়, যে দুই নয়নে কয়েকটা মুহূর্ত আগেই নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিল সেই দুই নয়ন বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে জল ঝরতে থাকে, আর হৃদয়- সেখানে তো ইতিমধ্যেই রক্তক্ষরন শুরু হয়ে গেছে। শ্রান্ত শরীরে চোখ খুলে বাইরের দিকে তাকায় সাইদুল। না কোনও ঘরবাড়ি, গাছপালা কিছুই নয় শুধুই নোংরা একটা হাসিমাখা রাজুর মুখ, আর ওর কাঁধের ওপর মুখ দিয়ে রূপসার লাজুক দৃষ্টি এই ফিরে আসতে থাকে সাইদুলের নজরে।
ট্রেন যে কখন শিয়ালদায় পৌঁছে গেছে খেয়াল নেই সাইদুলের। প্রায় জাত মাতালের মত টলতে টলতে বাইরে বেরোয় সাইদুল। বাসে উঠে বসে, জানে বাসটা ওর ঘরের কাছেই যাবে, আর যদি নাই যায় কি বা যায় আসে। “একটা রাত, রূপসাকে আধ ঘণ্টা ফোনে কথা বলেই তুই আমার থেকে আলাদা করে নিলি রাজু। যে ভালোবাসা এতো কষ্টে আমার হৃদয়ে বিন্দুবিন্দু করে জমা করেছিলাম তা তুই মুহূর্তের মধ্যে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিলি। তুই যোগ্যতম, মেনে নিলাম তুই যোগ্যতম। তোর কাছে হেরে গেলাম রাজু” বিড়বিড় করে বলে ওঠে সাইদুল।
“আরে ও ভাই, কি বকবক করছ। বড়বাজার এসে গেছে, নেমে যাও”
ক্লান্ত শরীরটাকে কোনরকমে টানতে টানতে বাস থেকে নেমে পড়ে সাইদুল। রাস্তা ওর অতি পরিচিত, লোকজন ও অতি পরিচিত, কিন্তু সাইদুলের বারবার করে ইচ্ছে হচ্ছে চলে যেতে এখান থেকে। কোনরকমে শ্রান্ত শরীরে বস্তির রাস্তায় হেঁটে যেতে থাকে পরাজিত বিধ্বস্ত সৈনিক। প্রায় মিনিট দশেক হাঁটার পর ই বস্তির একদম মাঝে গিয়ে ওঠে সাইদুল, চোখের সামনেই নিজের ই ঘরের ভেজানো দরজাটা। “মনে মনে বলে আমার শরীরে এতো জোর নেই যে ওর ভেতরে উলঙ্গ রাজু ও রূপসাকে আমি দেখতে পারব, কিন্ত কতক্ষন এভাবে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবো। পরাজয়ের গ্লানি নিয়েই আমাকে ওদের সামনে দাঁড়াতে হবে” দরজাটা প্রচণ্ড জোরে ঠেলে দেয় সাইদুল। সামনেই বসার ঘর। হনহন করে বাইরে বেরিয়ে আসে রূপসা।
“আমি যাচ্ছি এখান থেকে। আমার আর ভালো লাগছে না। এখন বাজে ১ টা। মানে ৫ ঘণ্টা টানা আমি এখানে বসে আছি। তোমার মত একটা ছেলেকে ভালোবেসে আমি বিশাল ভুল করেছি। আমার পক্ষে আর...”
রূপসার কথাগুলো সাইদুলের কানে ঢুকল কিনা সেব্যাপারে সন্দেহ থাকবেই। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে ওঠে সাইদুল “চুপ কর তুমি। কাল রাতে কার সাথে কথা বলছিলে? রাজু কই? কি করছিলে এতক্ষন ধরে?”
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রূপসা। কিছুটা আমতা আমতা করে বলে ওঠে রূপসা “আমি তো কাল আমার কলেজের এক বান্ধবীর সাথে কথা বলছিলাম। আর রাজুদা তো সেই সকালে আমায় এখানে বসিয়ে দিয়ে আর আসেনি”
সাইদুল ঠিক এক মরা মানুষের ধরে প্রান ফিরে আসার মত উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। “ঠিক বলছ তুমি, রাজু আসেনি এখানে! আমি তোমায় আর কখনো ভুল বুঝব না” প্রায় দৌড়ে গিয়ে রূপসাকে জড়িয়ে ধরে সাইদুল। “ছাড় আর ন্যাকামো করোনা, বিয়ের পর ও এমনি করেই আমায় কষ্ট দেবে তুমি। আমি জানি এরকম ই ভাবে আমায় কষ্ট দেবে তুমি। একবার ও বললে না এই হলুদ সাড়িতে আমায় কেমন লাগছে। জানো আমার এক বান্ধবী কাল ই বলল প্রথমবার ওর বাড়ি যাচ্ছিস হলুদ সাড়ি পড়ে যা, লাল তো বিয়ের দিন পড়ে। তাই লাল সাড়িটা আর পড়লাম না, আচ্ছা তুমি কি সত্যি ই লাল সাড়ি কিনেছ আমার জন্য” রূপসার মিষ্টি এই শব্দগুলো সাইদুলের হৃদয়ে যে ক্ষতটা সৃষ্টি হয়েছিল তাতে প্রায় সম্পূর্ণভাবেই প্রলেপ লাগিয়ে দেয়। দুহাতে রূপসার দুই গালকে জড়িয়ে ধরে নিজের ঠোঁটের ফাঁকে রূপসার নিচের ঠোঁটটা ঢুকিয়ে নেয় সাইদুল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের জন্যই তা স্থায়িত্ব পায়। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই রূপসা নিজের মুখটা সরিয়ে নেয় “ছাড় আমার এখন ভালো লাগছে না। আমি আগে স্নান করব” সাইদুল ইচ্ছে না হলেও রূপসাকে ছেড়ে দেয়।
সাইদুলঃ তোমার একটু অসুবিধা হবে কিন্তু। আসলে আমাদের বাথরুমটা ভাঙাচোরা আছে একটু।
রূপসাঃ (সাইদুলের গালে খুব জোরে খিমচে দিয়ে) না মশাই, শ্বশুরবাড়ি মেয়েদের কাছে সবসময় ই স্বর্গ হয়, বুঝলেন?
পাশেই দড়িতে একটা গামছা ঝোলানো ছিল, ওটাকে কাঁধের ওপর দিয়ে রূপসা ভেতরে যেতে শুরু করল আর সাইদুলের দিকে পেছন ফিরে তাকিয়ে বলে উঠল “ কোনও দুষ্টুমি করবে না কিন্তু, আমি তোমার বউ এখনো হইনি, যখন হব তখন, কেমন” মুচকি একটা হেঁসে রূপসা ভেতরের দিকে চলে গেলো। সাইদুল আর ওখানে না দাঁড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। পকেটে হাত দিয়ে দেখে একটাও বিড়ি নেই। ওদের বাড়ির ঠিক পেছনেই বিড়ির দোকান। পাশের সরু গলিটা দিয়ে সাইদুল সামনের দিকে এগোতে লাগলো। কিন্তু সাইদুল পারলো না। কিছুটা যাওয়ার পর ই রাজু। বারমুন্দাটা টেনে হাঁটুর কাছে নামিয়ে দিয়েছে হাতে দীর্ঘকায় লিঙ্গটা মুঠি করে ধরা। সাইদুলের বাড়ির ভাঙা পাঁচিলটার কাছে উঁকি মেরে ভেতরে তাকিয়ে আছে। সাইদুলের শরীরে আবার রক্তক্ষরন শুরু হোল। রাজুর কিছুক্ষন আগে করা হেঁয়ালিটা ও প্রায় ভুলতেই বসেছিল। প্রচণ্ড জোরে জোরে রাজুর লিঙ্গ সঞ্চালন দেখে সাইদুলের আবার মাথা খারাপ হয়ে যায়। হয়ত কিছুটা ভয়ের ই বশে রাজু, পেছন থেকে কেউ আসছে কিনা দেখার জন্য তাকায়, আর সাইদুলের সাথে নজর মেলে। দ্রুত নিজের প্যান্টটা ঠিক করে নিয়ে একটা মুচকি হেঁসে সাইদুলের দিকে এগিয়ে আসে রাজু।
রাজুঃ কিরে সাইদুল। এই ফিরলি। ওহ এতো সুন্দরী একটা মেয়েকে বস্তির মধ্যে রাখা যে কি চাপ। কখনো ঝুঁকে পড়ছে তো ব্লাউজের খাঁজ দিয়ে দুধ বেরিয়ে যাচ্ছে কখনো কোমরের অনেকটা বাইরে বেরিয়ে আসছে। খুব চাপ রে, বস্তির ছেলেদের একপ্রকার চমকেই আমি দূরে সরিয়ে রেখেছি।
সাইদুল যে এতটা রুদ্রমূর্তি ধারন করতে পারে রাজু তা হয়ত ভ্রুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি। দুহাতে রাজুর কলারটা চেপে ধরে বলে ওঠে সাইদুল
সাইদুলঃ তুই ওখানে কি করছিলি তা কি আমি বুঝিনি ভাবছিস। আমি রূপসাকে ভালোবাসি। আর একটাও বাজে কথা শুনতে চাইনা।
রাজুঃ এমা এতো রাগ করছিস কেন। আমি তো কিছুই করিনি রে। তখন তো একটা বিএফ এর ভিডিও চালিয়ে তোকে শোনালাম তাতেই তোর যা অবস্থা হয়ে গেছিল। আচ্ছা ছাড় আমায় কথা দিলাম আমি আর বাজে বাজে কথা বলব না। যতই হোক রূপসা আমার বৌদি আর বৌদি হোল গিয়ে মায়ের মত।
সাইদুল ওকে ছেড়ে দিয়ে আবার বাড়ির দিকে যেতে শুরু করে, রাজুও ওর পিছু নেয়।
রাজুঃ যাই বল মা বা বোনকেও ছাড়িয়ে গেছে রূপসা। যা দেখলাম না এখন কি বলব।
সাইদুল আবার ঘুরে ওর দিকে দেখে। এবার রাজুও কিছুটা নিজের পরিচিত ভঙ্গীতে
রাজুঃ আমায় মেজাজ দেখাস না সাইদুল। কিছুই হয়নি এখনো। তোর প্রেমিকাও কিন্তু রাজুদা রাজুদা বলে কম আদিখ্যেতা দেখায়নি। আমি ভেতরে ছিলাম ১০ মিনিট, বেরিয়ে আসার আগে কিন্তু বারবার বলছিল “রাজুদা একটু বস একা একা আমার ভালো লাগবে না” (সেই নোংরা হাসিটার সাথে) ভেবে দেখ সাইদুল, মেয়ের মনে কিন্তু ইচ্ছে আছে। মালতী ছিল একদম বুড়ি একটা। একে কিন্তু...
রাজুকে কথা শেষ করতে দেয়না সাইদুল প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। হনহন করে নিজের ঘরের দিকে যেতে শুরু করে। প্রচণ্ড জোরে হেঁসে বলে ওঠে রাজু “সাইদুল মেয়েদের আমি তোর চেয়ে অনেক ভালো করে চিনি, ভেবে দেখ একবার। আমিও খুশ তোরা দুজন ও খুশ”
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
Posts: 1,976
Threads: 56
Likes Received: 1,969 in 955 posts
Likes Given: 228
Joined: Jan 2019
Reputation:
125
Khub bhalo hochchhe.
Galper shesh ta ki bhabe hobe apekshay aachhi.
Repped you.
•
পর্ব ১৩- সাইদুলের ভুলঃ
ভেতরে ঢুকে দরজাটা প্রচণ্ড জোরে বন্ধ করে চোখ বন্ধ করে হাঁপাতে থাকে সাইদুল। দরজার ওপর ই ওর পিঠটা স্পর্শ করে আছে, আর কানে রাজুর সেই কথাগুলো এমনভাবে বিদ্ধ হচ্ছে যেন রাজু ঠিক দরজার ই পেছনে দাঁড়িয়ে ওকে ক্রমাগত বলে চলেছে “সাইদুল সসসসস পাঁচিলের ওপাশ থেকে দেখছিলাম, শালা এতদিন সত্যি ই বুঝিনি, এতো মা বোনকেও ছাপিয়ে যাবেরে একদম বুনো মুরগি, এর টেস্ট এ আলাদা” সাইদুল খেয়াল ও করেনি প্যান্টের ওপর দিয়ে ওর লিঙ্গ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, কোনও রকমে নিজের নিম্নদেশে হাত দিয়ে স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করে। কিন্তু পারেনা। কারন ওর নজর সোজা ভেজানো দরজার ফাঁকের দিকে। সাদা মসৃণ পিঠটা তখন বিন্দু বিন্দু জলে চিকচিক করছে। কোমরে একটা লালচে সায়া আছে বটে, কিন্তু কোমল ছোট নিতম্বগুলো যথেষ্ট দৃশ্যমান। সাইদুলের মনে তখন রূপসার এই অর্ধনগ্ন অবয়ব নয়, রাজুর সেই পাঁচিলের ওপর ঝুঁকে ভেতরের দিকে দেখাই বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে। সাইদুল রাজুকে চেনে, রাজু কিছুতেই হার মানেনা, তাহলে কি ও রাজুর কাছে রূপসাকে হারাবে। রাজু এখন কোথায়? ওকি এখনো পাঁচিলের ওপর ঝুঁকে রূপসার শরীরের প্রতিটি খাঁজকে নিজের মনের মতন করে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে এবং তার ই সমান্তরালে কি রাজুর শক্ত অতিকায় লিঙ্গটা ওপর নীচে ওঠানামা করে চলেছে? একের পর এক প্রশ্ন সাইদুলের হৃদয়কে জর্জরিত করে তোলে।
সাইদুল আর পারেনা, কিছুতেই নিজের প্রিয়তমাকে রাজুর নোংরা নজরের সামনে আসতে ও দেবেনা। প্রায় দৌড়ে গিয়ে ভেজানো দরজাটা ঠেলে খুলে দেয় সাইদুল। রূপসার পরনে তখন শুধুই একটা লালচে সায়া, দুহাতে নিজের বুককে চাপা দিয়ে পেছন ঘুরেই থাকে রূপসা। সাইদুল আর নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা, দ্রুত ওর পেছনে গিয়ে গা ঘেঁসে দাঁড়ায়। “অসভ্য কোথাকার! আমি কি এতই সুন্দরী যে এরকমভাবে আমাকে পাওয়ার জন্য...” রূপসাকে নিজের কথা সম্পূর্ণ করতে দেয়না সাইদুল। পেছন থেকেই ওর কোমরটা জড়িয়ে ধরে ওকে শুন্যে তুলে ধরে। “এই এই কি করছ, এই এখন কোনও অসভ্যতামি নয়, আমাদের বিয়ে হয়নি এখনো” সাইদুলের মুখ দিয়ে কোনও উত্তর আসেনা, ওকে ওই অবস্থায় ই জড়িয়ে ধরে সাইদুল ভেতরের ঘরে নিয়ে আসে। পেছনদিকে হাত দিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দেয়। লজ্জায় রূপসার দুই কান লাল হয়ে ওঠে, মাথা নিচু করে সাইদুলের দিকে পেছন করে দাঁড়িয়ে থাকে রূপসা।
সাইদুলঃ (রূপসার কাঁধে নিজের হাতটা রেখে) রূপসা তুমি সত্যি ই আমায় ভালোবাসতো? আমায় কোনোদিন ঠকাবে না তো?
রূপসার মুখ দিয়ে কোনও উত্তর আসেনা, শুধুই দুহাতে নিজের বুক ঢাকা দিয়ে কাঁপতে থাকে। সাইদুল নিজের দুহাত দিয়ে রূপসার কাঁধে একটা মোচড় দেয়, প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে রূপসা সাইদুলের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়। দুই হাতের ফাঁকদিয়ে রূপসার বুকের সম্পূর্ণ আকারটা এতক্ষনে বোঝা যায়। তিলোত্তমার গড়ন কিছুটা মালতীর মত হলেও রূপসা অন্তত স্তনের আকারে তিলোত্তমাকে টেক্কা দিয়েছে। একদম মালতীর ই মত, ঠিক গলার কিছুটা নিচ থেকেই বুকের খাঁজ শুরু হয়েছে। সাইদুল জানে মায়ের ই মত ওর ও বোঁটাগুলো বৃত্তাকার পরিধিতে অনেকটা প্রশস্ত। প্রচণ্ড জোরে রূপসার দুহাত চেপে ধরে সাইদুল। মুখটা ওপর দিকে তুলে এতক্ষনে রূপসা বলে ওঠে
রূপসাঃ এরকম কেন করছে সাইদুল। তুমি তো এরকম আমার সাথে কোনোদিন করনি। আমার তোমাকে খুব ভয় করছে। আমি তো তোমার হাতে নিজেকে অর্পণ করতেই এসেছি।
সাইদুলঃ কাল রাতে তুমি আমাকে রাগানোর জন্য বারবার রাজুর নামটা বলছিলে না? আমি সব ই বুঝি সোনা সব ই বুঝি। উম্মম আহ উফ কি নরম তোমার শরীরটা।
রূপসার দুহাত দুদিকে প্রশস্ত করে সাইদুল রূপসাকে নিজের বুকে টেনে নেয়। নরম ও সূচালো দুইস্তন সাইদুলের তপ্ত পুরুষবক্ষে গিয়ে আঘাত করে। রূপসার শরীরে ধিকিধিকি করে আগুন জ্বলতে শুরু করে। প্রচণ্ড জোরে নিজের দুই হাত দিয়ে সাইদুলের পিঠটা জড়িয়ে ধরে রুপ্সা। লজ্জা নিবারন ও পুরুষ শরীরের আগুন এ নিজের ঠাণ্ডা শরীরকে উত্তপ্ত করে নেওয়া কোনটা যে রূপসার উদ্দেশ্য ছিল তা স্বয়ং ভগবান ও বুঝবেন না।
সাইদুলঃ এবার বল কে বেশি বলবান আমি না রাজু। কই বল (প্রচন্ড জোরে রূপসাকে নিজের শরীরের ভেতর চাপ দিয়ে) কি হোল বল, রাজু কি এতো জোরে তোমায় ভালবাসতে পারবে? কি হোল উত্তর দাও।
খিলখিল করে হেঁসে ওঠে রূপসা “রাজু, রাজু, রাজু। ওই বেশি সুন্দর। তুমি একটা পচা ছেলে। মোটেও তুমি পারবেনা। রাজুরাই জানে কি করে মেয়েদের...”
রূপসাকে আবার নিজের কথা শেষ করতে দেয়না সাইদুল। কোমরের কাছে হাত দিয়ে ওপরের দিকে তোলে, এতক্ষন রূপসার মাথাটা রাজুর বুকের উচ্চতায় ছিল, কিন্তু এখন দুজন সমানে সমানে। সাইদুলের তপ্ত নিঃশ্বাস রূপসার মুখের ওপর পড়তে থাকে, ইচ্ছে করেই মুখটা সরিয়ে নিতে চেষ্টা করে রূপসা। কিন্তু সাইদুল এখন বাঘ, বাঘ না বলে রাজুর চেয়েও হিংস্র বাঘ বলাই ভালো। রূপসাও কম বুদ্ধিমান নয়। খিলখিল করে হেঁসে উঠে বলে “আমি জানি তুমি রাজুকে হিংসা কর” সাইদুল আর পারেনা, নিজের মুখটা দিয়ে রূপসার কপাল থেকে থুতনি অবধি সব জায়গায় পাগলের মত চুমু খেতে থাকে। অস্থিরতায় রূপসার দুই কান লাল হয়ে যায়, উগ্র যৌনতার হাতছানিতে চোখদুটো লাল হয়ে যায়।
“উফ সাইদুল, তুমি পারবেনা, তুমি কখনো রাজু হতে পারবে না। ওর জন্য এখনো পাড়ার মেয়েরা পাগল”
সাইদুল নিজের মুখটা সরিয়ে একবার রূপসার দিকে তাকায়। আবার রূপসা খিলখিল করে হেঁসে ওঠে। সাইদুলের উত্তেজনা এতো বেড়ে গেছে যে ও মুখটা সম্পূর্ণভাবে হ্যাঁ না করে নিঃশ্বাস ও নিতে পারছেনা। ওর এই অবস্থা দেখে রূপসা প্রচণ্ড জোরে হেঁসে ওঠে। পেছন থেকে প্রতিবিম্বর মত ভেসে আসে রাজুরে সেই কথাগুলো “চলনা আজ দুজন মিলে...” প্রায় পাগলের মত রূপসার শরীরটা খাটের ওপর ছুঁড়ে ফেলে সাইদুল। হিংস্র বাঘের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর ওপর। দুহাত দিয়ে রূপসার মুখটা চেপে ধরে নিজের ঠোঁটদুটোর মধ্যে রূপসার পাতলা নিচের রসালো ঠোঁটটা গুঁজে দেয়। গায়ের সমস্ত জোর একত্রিত করে রূপসার মুখ থেকে সমস্ত রস শুষে নেয়। “উম উম আম আম” করে রূপসার গোঙানি শুরু হয়।
“উহ আহ আহ ওমা, তুমি যতই চেষ্টা কর তুমি পারবে না। উম অম উউ আ পারবে না ওর মত পারবে না”
“তুমি দেখো রূপসা, আজকের পর তুমি শুধু আমাকে একবার বিয়ে করার জন্য কাঁদতে থাকবে”
“তাই নাকি? আমিও রূপসা। আমাকে পেতে গেলে তোমায় লড়তে হবে। আমি কখনো কাদিনা সাইদুল”
আজকের দিনটা যেন সাইদুলের কাছে পরাজয়ের দিন। এতো চেষ্টা করছে, নিজের অন্তর থেকে হিংস্র বাঘটা বার করে নিয়ে আসছে তাও ওর বাঘিনী কিছুতেই হার মানছে না। রূপসার কোমরটা ধরে নিচের দিকে টান মারে সাইদুল। রূপসার অর্ধেকটা শরীর সাইদুলের তলদেশের ভেতরে ঢুকে যায়। এবার রূপসা সত্যি ই অসহায়, শুধু মাত্র দুহাত দিয়ে ও সাইদুলের সাথে লড়তে পারবে না। রূপসার দুহাত দুপাশে জোরে চিপে রেখে সাইদুল ওর কপাল থেকে চুমু খাওয়া শুরু করে। নিজের জিভটা চুল আর কপালের মাঝের অংশে ভালো করে বোলাতে শুরু করে।
“এই না জিভ নয়। আমার ঘেন্না লাগে। জিভ নয় সাইদুল”
সাইদুল বোঝে ওর পৌরুষের কাছে হার মেনেছে রূপসা। নিজের জিভটা প্রায় ঝাড়ুর মত কপাল থেকে চেটে চেটে দুই কাজলহরিন নয়নের দিকে নিয়ে আসতে শুরু করে। রূপসা প্রচণ্ড জোরে নিজের মাথাটা একবার এদিক একবার ওদিক করে। সাইদুল বোঝে ওর বাঘিনী এখনো হার মানেনি তাই আরও জোরে ওর দুই হাতকে টেনে দুপাশে করে দেয়। রূপসা জানে শরীরের জোরে ও আর কিছুতেই পেরে উঠবে না। কিন্তু ও যে রূপসা, একগুঁয়ে, জেদি, বদমাশ মেয়ে রূপসা, শরীর দিয়ে না পারলে কি হবে মুখের কথাগুলোই সাইদুলকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। “এখনো তুমি নিজেকে প্রমান করতে পারনি, রাজুর মত...” সাইদুল আর পারেনা, প্রায় ওর ওপর ই চড়ে যায়, সমস্ত শরীরটায় জিভ আর ঠোঁট দিয়ে নিজের ভালোবাসার প্রমান দিতে শুরু করে। দ্রুত নিজের শরীরটা নিচু করে রূপসার একদিকের স্তনকে সম্পূর্ণ নিজের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়। জিভ দিয়ে বোঁটার চারপাশের ঘন বাদামী বৃত্তাকার অংশে নিজের সিক্ত ভালোবাসা জানিয়ে দিতে শুরু করে। নিজের স্তনের ওপর সাইদুলের এই ভালোবাসায় রূপসার শরীরটায় মোচড় দিতে শুরু করে। ওর মুখের কথাগুলো জড়িয়ে যেতে শুরু করে। তাহলেও একটাই শব্দ বারবার করে ওর কানে আসছিল তা হোল “রাজু”।
আজ সারাদিন কম পরিশ্রম হয়নি সাইদুলের। একমুঠো ভাত ও পেটে পড়েনি। তারওপর রূপসার শরীরটা নিয়ে এই পাশবিক লড়াই- চোখের সামনে অন্ধকার দেখতে শুরু করে সাইদুল। আর সেই অন্ধকার ভেদ করে এগিয়ে আসে এক সুপুরুষ। এতো ওর অতি পরিচিত, ওর ই বাল্যবন্ধু রাজু। সাইদুলের শরীরের তলা থেকে ও জোরে রূপসাকে টেনে বার করে নিচ্ছে। না এটা হতে পারেনা, ও রূপসাকে নিয়ে যাওয়ার আগেই রূপসার শরীরের মধ্যে নিজের ভালোবাসার চিহ্নকে প্রবেশ করাতে হবে। রূপসার দুই হাত ছেড়ে দিয়ে ওর ভিজে সায়াটা একটানে কোমরের ওপর তুলে দেয় সাইদুল। অন্য সময় হলে নিজের প্রেয়সীর এই শরীরটা উলটে পালটে অনেক আয়েশ করে ভোগ করত সাইদুল। কিন্তু ওর কাছে সময় ধৈর্য কোনটাই নেই। কি যেন একটা তাড়া আর ভয় ওকে ভেতর থেকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। রূপসা কাতর কণ্ঠে বলে ওঠে “ন সাইদুল এখন নয় প্লিস, এখন নয় বিয়ের পর” ততক্ষনে সাইদুলের নিজের প্যান্টটা খুলে প্রায় গোড়ালির কাছে পাঠানো হয়ে গেছে। রূপসা ভয়ার্ত চোখে একবার নিচের দিকে তাকায়। কালো কুচকুচে একটা লম্বা মোটা লিঙ্গ ওর কুমারিত্ব হরন করতে ওর দুই জাঙ এর মাঝে ঘোরাফেরা করছে। রূপসা জানে ওর পক্ষে এই যুদ্ধে আর জেতা সম্ভব নয়। ভয়ে ও আশঙ্কায় দুচোখ বন্ধ করে দেয় রূপসা। এদিকে রাজুকে হারানোর আনন্দে সাইদুল প্রচণ্ড জোরে নিজের উদ্ধত যৌবনকে এক থাপে রূপসার শক্ত উত্তপ্ত যোনির অন্তরে প্রবেশ করায়।
“ওমা ওহ ওহ মা মাগো। আ আ আ না ওমা ওমা আআ মা”
প্রচণ্ড জোরে চেঁচিয়ে ওঠে রূপসা। সাইদুলের কানে তখন রূপসার আর্তনাদ নয় রাজুর সেই উক্তি “চল না দুজন মিলে...” আর মনে রাজুকে হারানোর আনন্দ। কিন্তু সাইদুল এই কথাটা ভুলে গিয়েছিল যে সঙ্গম কালে কখনো নিজেকে হারিয়ে ফেলতে নেই। আর যা হওয়ার তাই হোল। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে রূপসার বুকের ওপর নেতিয়ে পড়ে যায় সাইদুল। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে রূপসাও তার সাথে মুখে একরাশ বিরক্তিও। যতই কষ্ট হোক মনের মানুষের সাথে প্রথম মিলনকে প্রত্যেকেই স্মরণীয় করে রাখতে চায়। আর তার বদলে সাইদুল যা করল তা কিছুটা হাস্যস্পদ আর কিছুটা বিরক্তিকর। ক্লান্ত শরীরে নিজের নেতিয়ে যাওয়া লিঙ্গটা টেনে বার করে সাইদুল। ভিজে নরম হয়ে যাওয়া লিঙ্গটার দিকে তাকিয়ে দেখে ওটা লাল রক্তে ভিজে গেছে। কোনরকমে টলতে টলতে সাইদুল বিছানা থেকে ওঠে। দ্রুত বাইরের দিকে গিয়ে একটা ভেজা গামছা নিয়ে আসে।
“রূপসা একটু পাটা ফাঁক কর। রক্ত বেরোচ্ছে তোমার ওখান দিয়ে। প্লিস একটু পাটা ফাঁক কর”
চোখ বোজা অবস্থায় ই রূপসা দুপা ফাঁক করে। সাইদুল ভিজে গামছাটা দিয়ে রক্তে ভিজে যাওয়া যোনিটা আসতে আসতে মুছে দিতে থাকে। এতক্ষনে হুঁশ ফেরে সাইদুলের। মনে মনে বুঝতে পারে বিশাল একটা ভুল করে দিয়েছে। “আমায় ক্ষমা কর রূপসা, কি যে হয়ে গেছিল আমার জানিনা” মুখ বাঁকিয়ে চরম অবজ্ঞার স্বরে রূপসা উত্তর দেয় “আর ন্যাকামো করতে হবেনা। তোমার দ্বারা কিছুই হবেনা” রূপসা যন্ত্রণা ও ক্লান্তিতে চোখ দুটো বুজে নেয়। সাইদুল ও যথেষ্ট ক্লান্ত ছিল। রূপসার একপাশে সাইদুল ও আসতে করে নিজের শরীরটা ফেলে দেয়। কখন যে ঘুম এসে গেছিল ও জানেনা। যখন ঘুম ভাঙে দেখে পাশে রূপসা নেই। কিছুটা ধরে যাওয়া গলায় সাইদুল চেঁচিয়ে ওঠে “রূপসা, কোথায় তুমি” বাইরে থেকে আওয়াজ আসে “আমি এখানে” সাইদুল উঠে বসে। ওদের দুজনের তো কিছুই খাওয়া হয়নি। সমস্ত ঘটনা মনে পড়তে শুরু করে সাইদুলের। কি করে ও রূপসার সামনে মুখ দেখাবে তাই ভেবে মাথা খারাপ হয়ে যেতে শুরু করে। তাও কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে এগিয়ে যায়, বাইরের দিকে। রূপসা তখন সাড়িটা সবে গায়ে জড়াচ্ছে। সাইদুলের মুখে সেই মিষ্টি হাঁসিটা আবার ফিরে আসে কারন এই লাল শাড়িটা তো সাইদুল ওর জন্যই কিনেছিল।
সাইদুলঃ রূপসা, সাড়িটা কোথায় পেলে, আমি তো তোমায় দেবো বলে তুলে রেখেছিলাম। তুমি পেলে কি করে?
রূপসা কোনও উত্তর দেয়না। সাইদুলের প্রচণ্ড খারাপ লাগে, ও জানে রূপসা দুপুরের ঘটনাটা কিছুতেই ভুলতে পারছেনা। কিন্তু সাইদুলকে যেভাবে হোক রূপসার মন আবার জয় করতে হবে। সাইদুল আসতে আসতে রূপসার দিকে এগিয়ে গিয়ে পেছন থেকে ওর কোমরটা জড়িয়ে ধরে।
রূপসাঃ আর ন্যাকামো করোনা সাইদুল। তুমি যদি আমায় ভালবাসতে তাহলে এরকম কখনো করতে না। আকমি কত স্বপ্ন দেখেছিলাম, আমাদের প্রথম রাতে কতকিছু ভেবে রেখেছিলাম। কাল সারারাত এই ভেবে ঘুমায়নি। তুমি সব মাটি করে দিলে। আমি আবার হোস্টেলে ফিরে যাবো। এখানে আমার ভালো লাগছেনা।
সাইদুলঃ (রূপসার কাঁধে নিজের মুখটা রেখে) আমায় ক্ষমা কর সোনা। তুমি আমায় ক্ষমা না করে দিলে আমার কি হবে বল। আমার আজ একদম মন ভালো ছিলনা। সত্যি বলছি আজ কি যে হয়েছিল আমি নিজেও জানিনা। তুমি আমায় ক্ষমা না করলে না আমি মরেই যাবো।
রূপসা পেছন ঘুরে সাইদুলের দুই ঠোঁটকে নিজের বাঁ হাত দিয়ে চাপা দেয়। সাইদুল স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রূপসার দিকে।
রূপসাঃ এরকম কথা আর একবার বললে না সত্যি মার খাবে। আরে আমি কি সত্যি সত্যি চলে যাচ্ছি নাকি। আমি খুব খুশি হয়েছি সাইদুল। সত্যি তুমি আনকোরা। তুমি যে কখনো কোনও মেয়ের দিকে চোখ তুলেও তাকাওনি আমি সত্যি আজ ই প্রথমবার তা বুঝতে পেরেছি।
সাইদুলঃ (সাইদুল, রূপসাকে জড়িয়ে ধরে) কিন্তু সোনা আমি তোমার ওপর সত্যি ই অভিমান করেছি।
রূপসাঃ জানি কেন করেছ। বারবার রাজু রাজু বলছিলাম বলে তাই তো? আরে বাবা আমি তো ইয়ার্কি করছিলাম। কাল রাতেও আমি ইয়ার্কি ই করেছি। আর রাজু তো আমার দাদার মত। সকালে ওর সাথে কথা বলা হয়নি ঠিক করে, ওকে বিকেলে ডেকো একবার কথা বলব ওর সাথে ভালো করে।
সাইদুলের মুখটা আবার ফ্যাকাসে হয়ে যায়। রুপ্সা সেটা বেশ ভালো ভাবে বুঝতেও পারে।
রূপসাঃ আবার রাগ করছ। আরে আমি তোমায় তো প্রথম দিন ই বলেছি যে আমি একটা দস্যি মেয়ে। আমার সাথে তুমি যত থাকবে একদম গা পিত্তি জ্বলে যাবে তোমার। বল থাকবে আমার সাথে? কি হোল বল।
সাইদুল শুধুই হাসে কোনও উত্তর দেয়না।
রূপসাঃ ঠিক আছে এই তোমায় ছুঁয়ে আমি কথা দিলাম আমি আর কোনোদিন ভালোবাসার সময় রাজুর নাম মুখেও নেবো না। ওহ যা আমি তো বলতেই ভুলে গেছি আজ জানতো আমি তোমার জন্য রান্না করেছি। সেরকম কিছুই ছিলনা বাড়িতে ভাত, ডাল, আলুভাতে আর বাঁধাকপি। সত্যি পেটে ছুঁচো দউরাচ্ছে। চলনা প্লিস আগে খেয়ে নি। আরও তো দুটো দিন থাকবো। আজকের না পাওয়াটা কিন্তু একদম সুদে আসলে আমি পুষিয়ে নেবো।
সাইদুলঃ নিশ্চয়ই সোনা। আজ রাতেই দেখনা তোমায় ঠিক কিকরে ভালবাসতে হবে তা শেখাবো।
রূপসা মুচকি হেঁসে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো আর সাইদুল খাটের ওপর উঠে বসে পড়ল। কিছুক্ষনের মধ্যেই দরজায় একটা ঠক ঠক করে শব্দ। সাইদুল কিছুটা চমকেই যায়। কারন ঘরে যে মেয়ে এনে তুলেছে এটা বেশি কেউ না জানলেই ভালো। সাইদুল রান্নাঘরে রূপসার দিকে ইশারা করে বলে “তুমি বেরোবে না এখন” রূপসাও মাথা নেড়ে সায় জানায়।
দরজাটা অল্প খুলে সাইদুল দেখে বিমল বাবু। সন্ধ্যেবেলা সাইদুল বিমলবাবুর দোকানে বসে। কিন্তু আজ তো ও আগে থেকেই ছুটি নিয়েছিল তাহলে...
বিমল বাবুঃ বাবা সাইদুল, বউটার খুব শরীর খারাপ রে। ছুটির দিনে তোকে বিরক্ত করতাম না। কিন্তু একটা মাল ডেলিভারির ব্যাপার আছে, তুই প্লিস একটু ১ ঘণ্টার জন্য দোকানে গিয়ে বস।
কিন্তু কিন্তু করেও সাইদুল বিমল বাবুকে না বলতে পারলো না। ভেতরে রূপসা সব ই শুনছিল। বিমল বাবু চলে যান। দরজা বন্ধ করে সাইদুল আবার ভেতরে ফিরে আসে।
রূপসাঃ তুমি কোনও চিন্তা করোনা, আমি একটা ঘণ্টা কাটিয়ে দেবো। কিন্তু কাজে ফাঁকি দিয়না। তোমাকে নিজের পায়ে তাড়াতাড়ি দাঁড়াতে হবে সাইদুল। নয়ত পরে প্রবলেম হবে। তুমি যাও।
সাইদুল কোনও উত্তর দেয়না, চুপ করে খেতে বসে যায়। যে ভয়টা ওর মনে একসময় ঢুকেছিল সেটা তো অনেকটাই কেটে গেছে। আর সারারাত তো পরে আছে। আজ ও যেভাবে হোক রূপসাকে নতুন বউ এর মত করে আদর করবে।
সাইদুলঃ রূপসা ওই নীল সাড়িটা পড়ে তুমি তৈরি হয়ে থাকবে। আজ আমাদের ফুলসজ্জা। আমি ফেরার পথে বাজার থেকে ফুল নিয়ে আসব। আগে আমরা ভালো করে বিছানাটা সাজাবো তারপর...
রূপসা হাতটা মুঠো করে সাইদুলকে কিল মারতে যায়। সাইদুল ও জানে ওর এই প্ল্যানে রূপসা মনে মনে খুব আনন্দ পেয়েছে।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ১৪- পরাজিত সৈনিকঃ
দোকানে মাল ডেলিভারি করতে করতে প্রায় রাত ৮ টা বেজে যায়। এতো যে দেরি হবে তা সত্যি ই সাইদুল ভাবতে পারেনি। মনে মনে বলে ১ ঘণ্টা বলেছিলাম তার বদলে ৩ ঘণ্টা লেগেছে, কিন্তু রূপসার ও নিশ্চয়ই সেরকম কোনও অসুবিধা হয়নি। তারকারন রূপসার তো কোনও ফোন ই আসেনি। দোকানের শাটার টা জোরে নামিয়ে লক করে বাজারের মধ্যে দিয়ে সামনে এগোতে থাকে সাইদুল। কিছুটা গেলেই বাজারের মাঝে দুদিকে সার দিয়ে ফুলওয়ালিরা বসে। বেশ কিছু রজনীগন্ধার ও গোলাপের মালা কিনে নেয় সাইদুল। আর একটা কাজ পড়ে থাকে তা হোল বাজার করা। বাড়িতে প্রায় কিছুই পড়ে নেই। সবজি বাজারে গিয়ে রাতের রান্নার জন্য দরকারি সবজি কিনে নিয়ে বেরিয়ে আসে সাইদুল। হাসিহাসি মুখে বস্তির রাস্তার দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করে। দুপুরের সব ঘটনা ওর মনে পড়ে যেতে শুরু করে। হাতের আঙ্গুলটায় একটা কামড় দিয়ে বলে ওঠে “ধুস শালা, কেন যে এতো উত্তেজিত হয়ে গেছিলাম। প্রথম বারেই ক্লিন বোল্ড। আর রূপসাটাও ভীষণ বদমাশ। বারবার রাজুর নাম বলে আমায় রাগিয়ে দিচ্ছিল। আজ আর আমি ওর কোনও ফাঁদেই পা দেবনা” এইসব বিড়বিড় করতে করতে কখন যে সাইদুল নিজের বাড়ির সামনেই চলে এসেছে তা ওর খেয়াল ও নেই। দরজাটা ভেজানো আছে। সাইদুল একটু জোরে থেলা দেয়।
প্রায় ঘাবড়ে গিয়ে রূপসা খাটের ওপর থেকে দৌড়ে বাইরের উঠোনের দিকে চলে যায়। সাইদুল কিছুটা অবাক ই হয়ে যায়। হথাত রুপ্সা এতো ভয় কেন পেয়ে গেলো?
“রূপসা আমি সাইদুল, এতো ভয় কেন পেয়ে গেলে”
আবার উঠোন থেকে সামনের দিকে এগিয়ে আসে রূপসা। রূপসার মুখের সেই পুরনো দুষ্টু হাঁসিটা নেই। কালো মেঘের মত গুরুগম্ভীর ওই মুখটার দিকে তাকাতে সাইদুলের খুব ভয় করে। সাইদুল খুব অবাক হয়ে যায়, রূপসার হয়েছে টা কি।
সাইদুলঃ কি হয়েছে রূপসা? আমি দেরি করে এলাম বলে রাগ করেছ? আরে বলনা যে পার্টিকে মাল ডেলিভারি করার কথা তারা এতো দেরি করে এলো। সত্যি সময়জ্ঞান যদি মানুষের একটু থাকতো তো...
রূপসাঃ ঘরে তো শাকসবজি কিছুই নেই। রান্না করতে হবে তো? বাজার থেকে কিছু এনেছ তুমি?
সাইদুলঃ (সাইদুল গুটি গুটি পায়ে রূপসার দিকে এগিয়ে যায়, দুহাতে রূপসার মুখকে চেপে ধরে) কি হয়েছে সোনা। আমার ওপর রাগ করেছ না? আরে আমি কি করব...
রূপসা কোনও কথা না বলে রাজুর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে ভেতরের দিকে যেতে শুরু করে। সাইদুলের ও মেজাজ কিছুটা বিগড়ে যায়।
সাইদুলঃ আরে এতে এতো রাগ করার কি আছে? আমি তো তোমায় বলে গেছিলাম। আর যদি একা থাকতে খারাপ ই লাগত তাহলে আমায় একবার ফোন করতে পারতে। আমি দোকানে কাউকে বসিয়ে চলে আসতাম।
রূপসা কোনও উত্তর দেয়না। হতাশ সাইদুল ও চুপ করে খাটের ওপর বসে যায়। প্রেমে তো পড়ে গেছে, প্রেমিকার মন ও জয় করেছে কিন্তু সাইদুল এটা বোঝেনা মেয়ে সামলানো এর চেয়ে অনেক অনেক কঠিন। প্রথম পরিচয়ের সেই আবেগগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে আর টার বদলে ক্ষনে ক্ষনে শুধুই ভুল বোঝাবুঝির ঘনঘটা। মনে মনে ভাবে সাইদুল, একবার রূপসার কাছে যাই ওকে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে। মুখ তুলে ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখে রূপসা ওর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। হয়ত কিছু বলতে যাচ্ছিল সাইদুল। কিন্তু শুকনো মুখে রূপসা বলে ওঠে
রূপসাঃ তুমি কাকে ভালোবাসো সাইদুল? মানুষ রূপসাকে? নাকি সুন্দর দেহের অধিকারী সদ্য অষ্টাদশী রূপসাকে?
কিছুটা অপ্রস্তুত অবস্থার মধ্যে পড়ে যায় সাইদুল। ক্লাস ৮ পর্যন্ত পড়াশুনা শেখা এক ছেলে এতো কঠিন এক প্রশ্নের কি জবাব দেবে? কিন্তু এটাও সত্যি যে ভালবাসতে গেলে স্বাক্ষর হতে হয়না। হয়ত উত্তরটা সাইদুল নয় সাইদুলের হৃদয় ই দিয়েছিল।
সাইদুলঃ তুমি এতো সুন্দরী না হলেও আমি তোমায় ই ভালবাসতাম। তুমি আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা রূপসা। তোমায় আমি কখনোই ভুলতে পারবোনা।
নিজের দুহাত দিয়ে আলতো করে সাইদুলের দুগাল কে স্পর্শ করে রূপসা। রূপসার দুই নয়নে যেন হাজারো যন্ত্রণা কষ্ট ঠিকরে বেরিয়ে আসে।
রূপসাঃ তুমি সত্যি বলছ সাইদুল? আমার এই শরীরটা যদি কোনও ভুল করে তাহলে তুমি শরীরটাকে ক্ষমা করে দেবে তো? এটা বিশ্বাস করবে তো যে এই পাপটা আমার মন করেনি, শরীর করেছে।
অশিক্ষিত সাইদুল এর অর্থ কি বুঝল তা ওই জানে। কিন্তু ওর দুদিকে মাথা নাড়ানো যে রূপসার প্রশ্নের উত্তর তা রূপসা খুব ভালো করেই বুঝতে পারে।
রুপ্সাঃ (মুখে আবার সেই পুরনো হাঁসিটা ফিরিয়ে এনে) তুমি সত্যি ই আমায় ভালোবাসো সাইদুল। দাঁড়াও আজ আমি তোমায় আলুপোস্ত করে খাওয়াবো। জানতো বাবাকে যতবার আমি আলুপোস্ত রেঁধে খাওয়াই বাবা ততবার ই আমায় একটা চকলেট গিফট করে।
সাইদুলঃ (প্রচণ্ড তৃপ্তিতে হেঁসে উঠে) আমি না বাজার থেকে ফুল আর ফুলের মালা এনেছি।
রূপসাঃ (কিছুটা ভেংচি কেটে) ওহ ছেলের ন্যাকামো দেখলে গা জ্বলে যায়। ওসব হবেনা। আগে বিয়ে হোক তারপর।
হাঁসতে হাঁসতে রূপসা আবার রান্নাঘরের দিকে যেতে শুরু করে। হথাত সাইদুল বলে ওঠে “রূপসা তোমার ঘাড়ে ওটা কিসের দাগ?” রূপসা থমকে দাঁড়ায়, মুখে সেই কালো মেঘের ঘনঘটাটা আবার ফিরে আসে। সাইদুল সামনে এগিয়ে যায়। “এটা তো কোনও পোকায় বা জন্তুতে কামড়ানোর ক্ষত। কি হয়েছে রূপসা”
রূপসাঃ আর বলনা, তোমার বাড়িতে যা ইঁদুরের উপদ্রব। বাথরুম এ গেছিলাম বুঝতেই পারিনি। হথাত একটা ইঁদুর কোথা থেকে কিজানি আমার ঘাড়ে এসে উঠল।
সাইদুলঃ ওষুধ লাগাতে হবে তো। আর একটা ইঞ্জেক্সান ও নিতে হবে।
রূপসাঃ ও কাল সকালে দেখা যাবে। আজ আগে রান্না করি।
সাইদুল ও আর বাধা দেয়না। রূপসার রান্না করতে বেশ কিছুক্ষন সময় লাগবে বলে সাইদুল বাইরে বেরোয়। রূপসার ভয়ে সেই কোন সকাল থেকে একটা বিড়িও মুখে দেওয়া হয়নি। হাসিহাসি মুখে বস্তির ভেতর দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। রাস্তাতেই আব্দুল চাচার সাথে দেখা। আব্দুল চাচা ওর আব্বার পুরনো বন্ধু। দেখা হলেই আম্মির ব্যাপারে সংসারের ব্যাপারে হাজার গণ্ডা প্রশ্ন শুরু করে দেন। কিন্তু সাইদুল কখনো ওনাকে উপেক্ষা করতে পারেনা। যতই হোক ওর পরিবারের শুভাকাঙ্ক্ষী বলে কথা। আজও পারলনা প্রায় ১০ টা মিনিট সময় আব্দুল চাচাই নিয়ে নিল। আব্দুল চাচা চলে যাওয়ার পর দোকানের কাছে গিয়ে একটা সিগারেট নিয়ে মুখে দেয় সাইদুল। ভালো করে শেষ টান টা অবধি আয়েশ করে টেনে আবার বাড়ির দিকে চলতে শুরু করে।
বাড়ির কাছে এসে দেখে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ। সাইদুল তো কিছুটা অবাক ই হয়ে যায়। এতটুকু সময়ের জন্য ও বাইরে গেলো আর রূপসা দরজাটা লাগিয়ে দিলো? সাইদুল দু তিনবার দরজায় টোকা দেয় কিন্তু ভেতর থেকে কোনও শব্দ আসেনা। জোরে চেঁচাতেও ভয় লাগে ওর, কারন তাহলে বস্তির সবার নজরে পড়ে যাবে। এবার বেশ ৩-৪ বার জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা মারে সাইদুল। তাও ভেতর থেকে কোনও উত্তর আসেনা। ১ মিনিট মত অপেক্ষা করে আবার ধাক্কা দিতে যায় সাইদুল কিন্তু তার আগেই ভেতর থেকে দরজাটা খুলে যায়। ওকে প্রায় অবাক করে দিয়ে দরজার সামনে দাঁড়ায় রাজু।
হ্যাঁ করে কিছুটা আশঙ্কা ও কিছুটা রাগে রাজুর মুখের দিকে তাকায় সাইদুল।
রাজুঃ কি রে সাইদুল, এভাবে দরজা খুলে রেখে কেউ চলে যায়। বস্তিতে যদি জানাজানি হয়ে যায় কম কেলেঙ্কারি হবে বল তো।
সাইদুল কোনও উত্তর দেয়না, হনহন করে ভেতরে ঢুকে যায়। খাটের কাছে গিয়ে রান্নাঘরের দিকে তাকায়। ওখানে নিরুত্তাপের সাথে রূপসা দাঁড়িয়ে রান্না করে চলেছে।
রাজুঃ আর কখনো এভাবে দরজা খুলে বাইরে চলে যাবিনা, ভাগ্যিস আমি দেখতে এসেছিলাম তোকে। রূপসা আমি চলি গো অনেক কাজ পড়ে আছে।
রূপসাঃ না একটু দাঁড়িয়েই যাও রাজুদা, আমি চা বসিয়েছি। চা খেয়ে যেও।
কথাটা বলার জন্য রূপসা অনেকটাই বাইরে বেরিয়ে এসে, রূপসার নজর সাইদুলের সাথে মেলে। কিন্তু রূপসা নিজের নজর সরিয়ে নেয়। মনেমনে বলতে থাকে সাইদুল কেন রূপসা নিজের নজর সরিয়ে নিল, ওর মুখটা কেন আবার আগের মত বিষণ্ণ হয়ে গেছে? রাজু এতক্ষন এখানে এসেছে, অথচ আমি ৪-৫ বার দরজায় ধাক্কা দিয়েছি ও খুলল না কেন? হাজারো প্রশ্ন সাইদুলের মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। এর উত্তর হয়ত সঠিক সময়েই সাইদুল পেয়ে যাবে।
রাজুঃ কিরে আম্মিকে ছেড়ে দিয়ে এলি। আম্মি ঠিকথাক পৌঁছেছে কিনা একবারও খোঁজ নিয়েছিস? জানি নিসনি। তোকে আমি চিনিনা আবার।
সাইদুলের পক্ষে আর ধৈর্য পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব ছিলনা। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে বলে ওঠে সাইদুল “তুই এক্ষুনি আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যা”
ততক্ষনে রূপসাও সামনে এগিয়ে এসেছে। ক্ষোভে অপমানে রাজু থরথর করে কাঁপতে শুরু করে দেয়। সাইদুলকে প্রচণ্ড অবাক করে রূপসা বলে ওঠে
রূপসাঃ না রাজুদা, আমি চা বানিয়েছি তুমি চা খেয়েই তারপর যেও।
প্রচণ্ড ক্রোধে সাইদুল রূপসার দিকে তাকায়। কিন্তু এবার আর আগের বারের মত রূপসা নিজের নজর সরিয়ে নেয়না। রূপসার দৃপ্ত চোখের দিকে সাইদুল তাকাতে পারেনা। লজ্জায় ও পরাজয়ের গ্লানিতে কিছুটা দৌড়েই নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। দৌড়াতে দৌড়াতে আবার সেই সিগারেট দোকানের সামনেই এসে পৌছায়। নতুন একটা সিগারেট- ৫ টা মিনিট সময়, ৫ টা টাকা দুটোই অপচয় হয়। কিন্তু মাথাটাও ঠাণ্ডা হয় সাইদুলের। “রূপসা হয়ত ভদ্রতার খাতিরেই এইরকম ব্যাবহার করেছিল” আবার নিজের বাড়ির দিকে চলতে শুরু করে সাইদুল। মনের মধ্যে আবার একটা হতাশা গ্রাস করে সাইদুলকে। বারবার ভাবতে থাকে এরকম না করলেই ভালো হত। রূপসা হয়ত আমাকে খারাপ ই ভেবেছে। আর ওই নোংরা ছেলেটার কাছে রূপসাকে ছেড়ে চলে আসা সত্যি ই আমার উচিত হয়নি। হন্তদন্ত করে নিজের বাড়ির দিকে ছুটে যায় সাইদুল। দরজাটা ভেজানোই ছিল। ভেতরে ঢুকে দেখে রূপসা চুপ করে খাটের ওপর বসে আছে। সাইদুল প্রথমে নিজের মাথাটা নিচু করে বেশ কিছুক্ষনের জন্য। তারপর রূপসার দিকে আবার তাকায়, রূপসার করুন মুখটা দেখে ওর খুব মায়া হয়। ধীরেধীরে সামনে এগিয়ে রূপসার পায়ের কাছে বসে পরে।
সাইদুলঃ রূপসা, তুমি রাগ করেছ আমার ওপর না? বিশ্বাস কর সোনা, আমি এরকম করতে চাইনি। কেন যে মাথাটা...
রূপসাঃ (মাঝপথে সাইদুলের কথা আটকে, মুখে কিছুটা স্ফীত হাঁসি নিয়ে এসে) তুমি কোনও ভুল করনি সোনা। তোমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও হয়ত এটাই করত। কিন্তু কি করবে, মানুষকে তো নিজের ভবিতব্য মেনেই নিতে হবে।
রূপসার এই কথার মধ্যে যে কি ভয়ঙ্কর রহস্য লুকিয়ে আছে, তা সত্যি সাইদুলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। রূপসার দুগালে স্নেহের স্পর্শ দিয়ে সাইদুল হথাত ই ওর নিচের রসালো ঠোঁটটা নিজের মুখের মধ্যে পুরে নেয়। কিন্তু রূপসার একটা নিস্প্রীহ ভাব সাইদুলকে অবাক করে। যেন কোনও মৃতদেহের সাথে ও চুম্বন করছে। দ্রুত নিজের দুই ঠোঁট বার করে বলে ওঠে “কি হয়েছে রূপসা? তুমি কি এখনো আমার ওপর রেগে আছে। সাইদুলের দুকাঁধ শক্ত করে ধরে ওর দুটি অসহায় চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে রূপসা। সাইদুল পারেনা ওই দুই নয়নে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে। এ রূপসা একদম অচেনা, মুখের সেই মিষ্টতা, দুষ্টুমি কোথায় যেন হারিয়ে গেছে, তার বদলে পরিনত শান্ত এক নারী।
রূপসাঃ সাইদুল তোমার কি এখনো আমায় আদর করতে ইচ্ছে করে। আমার মুখটা কি এখনো আগের মত মিষ্টি? একবার ও মনে হোলনা এই রূপসা সেই রূপসা নয়, যাকে তুমি ভালোবেসেছিলে? আমায় কি এখনো তুমি ভালবাসতে পারবে সাইদুল? আমি তো হেরে গেছি, নিজের শরীরের লোভের কাছে পরাজিত হয়ে নিজেই নিজেকে হারিয়ে দিয়েছি।
সাইদুলের বুকটা কেঁপে ওঠে। এ কোন কথা বলছে রূপসা? কিসের এই বিরহ? সাইদুল কিছুই বোঝেনা, শুধু আবেগের বশে নিজের মুখটা আবার রূপসার দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে। “না সাইদুল, আগে আমার প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। রূপসা কি এখনো তোমার কাছে সেই আগের ই মত?” কিছুই বুঝতে পারেনা সাইদুল শুধু বোকার মত হুম বলে একটা শব্দ করে। “ওহ সাইদুল, আমার সাইদুল” বলে রূপসা জড়িয়ে ধরে সাইদুলকে। নিজের নিচের ঠোঁটটা সাইদুলের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। এই ১০ টা মিনিটের চরম মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে সাইদুল ও পাগলের মত রূপসার ঠোঁটকে আস্বাদন করতে শুরু করে।
রূপসার ঠোঁটের কনা বেয়ে গড়িয়ে পড়ে মিষ্টি রস, সাইদুলের জিভ, ঠোঁট দুই ই পাগলের মত সেই মিষ্টি মধুকে আস্বাদন করতে শুরু করে। নিজের নাকটা দিয়ে রূপসার নাককে ভালো করে ঘষে দিয়ে সাইদুল গাল বরাবর চুমু খেতে খেতে গলায় নেমে আসে।
রূপসাঃ না সাইদুল এখন ই নয়। আজ যে আমাদের ফুলশয্যা এতো সহজে আমি নিজের স্মৃতিকে নষ্ট করে দিতে চাইনা। আগে খাওয়া দাওয়া হোক তুমি তোমার মনের মত করে বিছানাটা সাজাও তারপর আমি একদম নতুন বউ এর মত তোমার কাছে আসব।
সাইদুলঃ (মনের আনন্দে হেঁসে ওঠে সাইদুল) ঠিক আছে সোনা ঠিক আছে। আমি ফুল দিয়ে এমনভাবে বিছানাটা সাজিয়ে দেবো যে তুমি পাগল হয়ে যাবে।
রূপসা মুচকি হাঁসতে হাঁসতে আবার রান্নাঘরের দিকে চলে যায়। সাইদুল বিছানার চাদরটা পালটে নতুন চাদর পেতে দেয়। বালিশের ওয়াড় পালটে নতুন ওয়াড় পড়িয়ে দেয়। প্যাকেট থেকে মুঠো করে ফুল বার করে বিছানায় ছড়িয়ে দেয়। আর রয়ে যায় একটা রজনিগন্ধার মালা। ওটা হাতে নিয়ে চুপিসারে রান্নাঘরের দিকে গিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে রূপসাকে। রূপসা হয়ত বুঝতেও পারেনি সাইদুল এভাবে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরবে। রূপসার ঘাড়ে মুখ গুঁজে হয়ত সাইদুল এটাই বলতে যাচ্ছিল “সোনা এই মালাটা তোমার জন্য” কিন্তু তার আগেই যন্ত্রণায় ককিয়ে ওঠে রূপসা। সাইদুল কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে লক্ষ্য করে সেই ক্ষতটায় ও মুখ দিয়ে দিয়েছে। রূপসার দুচোখ বেয়ে জল টপটপ করে বেয়ে চলেছে।
সাইদুলঃ সরি রূপসা, আমি আসলে বুঝতে পারিনি। কাল ই তোমায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো সোনা।
পেছনঘুরে প্রচণ্ড করুনভাবে সাইদুলের দিকে তাকায় রূপসা। সাইদুলের বুকটা হথাত ই যন্ত্রণায় টুকরো টুকরো হয়ে যেতে থাকে। কোনও এক অশুভ ঘটনা যে ঘটতে চলেছে তা সাইদুল খুব ভালোভাবেই বুঝে যায়। সাইদুলের দুহাত শক্ত করে চেপে ধরে রূপসা। ওর দুচোখ বেয়ে জল পড়েই চলেছে।
রূপসাঃ আমি তোমায় কখনো ভালবাসিনি সাইদুল। সত্যি কখনো ভালবাসিনি। আমাদের মধ্যে কখনো সম্পর্ক হতেই পারেনা। আমরা যে দুই ভিন্ন মেরুর। একটা মেয়ে এতো সহজে কাউকে নিজের হৃদয় দেয়না। এক রাতের মধ্যে যে আমি তোমার বাড়িতে এসে উথেছি এটাও আমার ভালোবাসা নয় সাইদুল। আজ সত্যি আমার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমি সত্যি ই তোমায় কখনো একমুহূর্তের জন্য ও ভালবাসিনি।
নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারেনা সাইদুল। হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকে রূপসার মুখের দিকে। অস্পষ্টভাবে সাইদুলের মুখ দিয়ে কয়েকটা শব্দ বেরিয়ে আসে “কি বলছ তুমি? তুমি আমার ওপর রাগ করেছ? আমি তো অনেক স্বপ্ন দেখে ফেলেছি রূপসা” সাইদুলের কথাগুলো রূপসার কানে পৌঁছেছে কিনা জানিনা। তবে রূপসার পরবর্তী কথাগুলো সাইদুলের কানে ভীষণভাবে পৌঁছে যায়।
রূপসাঃ এটা গত মঙ্গলবারের কথা। আমি যে কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছি তা মা জানত না। কি কারনে জানিনা মা, বাইরের দরজাটা বন্ধ করতে ভুলে গেছিল। আমি ভেতরে ঢুকে যাই। ঘরের মধ্যে থেকে অদ্ভুত কিছু শব্দ আসছিল। জানলা ফাঁক করে অত্যন্ত আপত্তিকর অবস্থায় মা ও রাজুদাকে দেখে ফেলেছিলাম। রাগে অপমানে আমার মাথা ঘোরাচ্ছিল, মনে হয়েছিল বাবাকে তক্ষুনি ফোন করে সব বলি। আমি পাশের ঘরেই লুকিয়ে থাকি। কিছুক্ষন বাদে রাজু বেরিয়ে যায়। আমি মায়ের সামনে যাই। মা আমায় দেখে ভেঙে পড়ে। মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম “তুমি কেন এরকম করলে?” মায়ের উত্তর ছিল “রাজুর শরীরে জাদু আছে” সেদিন মায়ের ওই উত্তর আমার জীবনটাই পালটে দেয়। বাথরুমে স্নান করতে গিয়ে, রাতে বিছানায় প্রায় প্রতি মুহূর্তে আমি রাজুর ওই নগ্ন শরীরটা কল্পনা করতাম। রাজু ঠিক চুম্বকের মত আমায় তোমার কাছে টেনে আনল। সাইদুল, আমার পিঠের এই ক্ষতটা রাজুর ই দাঁতে সৃষ্টি হয়েছে।
সাইদুলের হাত কিছুতেই রূপসার ওই নরম গালে আছড়ে পড়তে পারলো না। ক্ষনিকের জন্য ও ওর মনে হয়েছিল রূপসার ওই নোংরা মুখটায় সজোরে একটা চড় মারতে। কিন্তু পারলনা, ও যে রূপসাকে ভালবেসেছিল। সাইদুল রূপসার কাঁধে মাথা দিয়ে নিজের কষ্টগুলো ভুলতে চেয়েছিল। কিন্তু বেচারা ছেলেটা জানত না, ভালোবাসা বিত্ত, জাত, ধর্মের ঘেরাটোপ ছাড়া কখনো বাইরে বেরোয় না। ভালোবাসা মাটির কুঁড়ে ঘরে কখনোই আসেনা। ভালোবাসা বড়লোকের প্রসাধনী সামগ্রী।
পরাজিত সৈনিক, অলস পদচালনায় টলতে টলতে ঘরের বাইরে বেরিয়ে যায়। রূপসা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সাইদুলের দিকে।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ১৫- প্রথম টুইস্টঃ
কোনরকমে দুহাত দিয়ে দরজাটা ঠেলে বাইরে বেরিয়ে যায় সাইদুল। দরজার বাইরেই রাজু, মুখে সেই বিশ্রী রকম হাঁসিটা। একবার রাজুর দিকে তাকায় সাইদুল, কিন্তু পারেনা সেই বিজয়ীর উল্লাস মেনে নিতে। মাথা নিচু করে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলে সাইদুল।
রাজুঃ শোন সাইদুল, তুই আমায় ভুল ভেবেছিস। প্লিস যাসনা আমার কথাটা মন দিয়ে শোন তুই।
কোনও উত্তর দেয়না সাইদুল, চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে।
রাজুঃ তোকে কখনো বলিনি। কিন্তু এটা সত্যি সাইকেল নিয়ে যতবার রাস্তায় রূপসার সাথে আমি মুখোমুখি হয়েছি, রূপসা ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো। আমি জানতাম ও কি চায়। আমি কমবছর হলনা মেয়ে চড়াচ্ছি। আমি মেয়েদের...
রাজুর কথা সম্পূর্ণ হয়না, সাইদুল ফুঁপিয়ে ওঠে। রাজু হয়ত আশাও করেনি যে সাইদুল এতটা ভেঙে পড়বে।
সাইদুলঃ কেন এরকম করলি আমার সাথে রাজু। আমি তো রূপসাকে সত্যি ই ভালোবেসে ফেলেছিলাম।
রাজুঃ এক রাতে কি কখনো কেউ কাউকে ভালোবাসে রে! জীবনটা সত্যি ই হিন্দি সিনেমা নয় রে। রোমান্স ওখানেই হয়। আরে পাগল তুই, জীবনে মেয়ে দেখিস নি তাই এতো তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়লি। এটা কিছু নয়রে মানুষের ২০ বছরের বিয়ে করা বউ পালিয়ে যায়।
চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সাইদুল। চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়তে থাকে।
রাজুঃ সাইদুল, আমি যতই খারাপ হইনা কেন, আমি কখনো নিজের থেকে রূপসার কাছে যেতাম না। রূপসাই তুই দোকানে চলে যাওয়ার পর আমার ঘরে এসেছিল, আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল...
রাজুর কথা শেষ হওয়ার আগেই সাইদুল পেছনঘুরে প্রচণ্ড জোরে একটা চড় মারে রাজুকে। এর আগেও ওদের মধ্যে বহুবার লড়াই হয়েছে, গায়ের জোরে হয়ত সাইদুলের চেয়ে রাজু অনেক অনেক এগিয়ে। কিন্তু আজ সত্যি ই এই পরাজিত প্রেমিকের কাছে রাজু নেহাত ই বাচ্চা। প্রায় ঝড়ের বেগে নিজের ডান পা টা দিয়ে রাজুর পেটে কষে একটা লাথি মারে সাইদুল। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে রাজু মাটিতে গোঙাতে শুরু করে। সাইদুল কোথাও যায়না, ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। কোনরকমে উঠে দাঁড়ায় রাজু। আজ আর নিজের প্রিয় বন্ধুর ওপর হাত ওঠানোর কোনও ইচ্ছেই ওর নেই। প্রায় আকুতি মিনতি করার মত করে সাইদলুকে বলে
রাজুঃ শোন ভাই, আমি এতটাও খারাপ নই। একটা সুন্দরী মেয়ে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে আমি কি করতে পারি বল। আমিও তো মানুষ রে। আমারও শরীরে উত্তেজনা রয়েছে। তুই যাসনা সাইদুল। আমার কথাটা শোন। আমি তোকে কাল রাতেই বোঝাতে চেয়েছিলাম যে এই সম্পর্ক হয়না। তুই একটা বস্তির ছেলে আর ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী। হয়না সাইদুল এটা। এর আগে একবার ও কোনও মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ালে হয়ত তোর এতটা কষ্ট হতনা। আমার কথা শোন সাইদুল। আয় আজ দুজনে মিলে...
রাজুর পুরো কথা সাইদুল শুনেছিল কিনা জানা নেই। কারন তার আগেই সাইদুল হনহন করে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছিল। ওর গন্তব্য কোথায়? কোথায় আবার এই সময় বস্তির আর ১০ টা ছেলে যেখানে যায় সেখানেই। বস্তির স্বর্গ অর্থাৎ চুল্লুখানা এখন ওটাই তো সাইদুলের ঠিকানা।
সেই বিখ্যাত রিংটোনের সাথে সুবীর বাবুর ফোন আবার বেজে ওঠে। গল্পের মাঝে এই ধরনের বাধা সত্যি ই অস্বস্তিকর। অপ্রিয় এই গল্পের মধ্যে সুবীর বাবুও প্রায় নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন। নিজের ই এক মেয়ের এই লম্পট কীর্তি শুনে ঠিক কত জল ওনার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়েছে তার কোনও ইয়ত্তা নেই। হাতে মোবাইলটা নিয়ে দেখেন “রূপসা” হয়ত তীব্র এক যন্ত্রণা ও ঘৃণায় ওনার গা গুলিয়ে উঠেছিল। যাই হোক সুবীর বাবু বহুকষ্টে ফোনটা রিসিভ করেন। হ্যালো বলার মত মানসিক অবস্থায় উনি ছিলেন না। তাই ওপাশ থেকে প্রথমে রূপসার ই গলাটা ভেসে আসে। গলাটা প্রচণ্ড ধরা, অনেকক্ষণ ধরে কান্নাকাটি করলে গলার অবস্থা যেমন হয় ঠিক তেমন।
রূপসাঃ হ্যালো, বাবা প্লিস আমার কথাটা মন দিয়ে শোন। তোমার পাশে কে আছে এখন? আমি কারুর একটা গলা পেয়েছিলাম ফোন করার সময়। কে আছে বাবা? বাবা প্লিস উত্তর দাও। কি হোল বাবা উত্তর দাও।
কোনও উত্তর দিতে পারেন না সুবীর বাবু। ডায়েরীর অভিশাপ যে এভাবে ওনার জীবনে আসবে তা উনি ভাবতেও পারেননি। দুই মেয়েকে ছোট থেকে নীতি আদর্শের শিক্ষা দিয়েছেন উনি আর সেই মেয়েরাই কিনা... ভাবতেও পারেননা সুবীর বাবু, কথা বলা তো অনেক দুরের ব্যাপার।
রূপসাঃ বাবা, মন দিয়ে আমার কথা শোন। মা, পাগল হয়ে গেছে। উল্টোপাল্টা কথা বলছে। আমার কিছুই মাথায় ঢুকছেনা। এই কথাগুলো মা যে কি করে বলে ছি ছি... বাবা আমার আর তিলোত্তমার লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। তিলোত্তমা প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছে।
ওপাশ থেকে ফিসফিস করে বলে ওঠে সত্য বাবু। “মালতী ভয় পেয়েছে সুবীর বাবু। এবার মেয়েদের দিয়ে নিজেকে বাঁচাতে চাইছে”
সুবীর বাবুর মাথায় হয়ত সত্য বাবু বা রূপসা কারুর ই কোনও কথাই আর প্রবেশ করছিল না।
রূপসাঃ বাবা, তুমি কি বুঝতে পারছ কেউ একটা চাইছে তোমায় আর মাকে আলাদা করে দিতে, বাবা বিশাল বড় একটা চক্রান্ত হচ্ছে। হ্যালো হ্যালো হ্যালো বাবা, তুমি উত্তর দাও বাবা।
বেশ কিছুক্ষন দুপাশ ই নিস্তব্ধ। একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে ওঠেন সুবীর বাবু।
সুবীর বাবুঃ তোদের বাবা মারা গেছে। আর বাবা বলে ডাকিস না আমায়।
ফোনটা কেটে দেন সুবীর বাবু। দুচোখ বেয়ে তখন ও জল পড়ে চলেছে ওনার।
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু শান্ত হন। ডায়েরীর নাম হয়ত অভিশপ্ত ডায়েরী। কিন্তু এটা মানুষের জীবনের না জানা সত্যগুলোকেই শুধু প্রকাশ করে। ডায়েরীর জন্য অভিশাপ নেমে আসেনা। যে সাংসারিক কলহের মুখ আপনি দেখলেন তা হয়ত আজ নয় তো কাল হওয়ার ই ছিল। আমাকে গল্পটা শেষ করতে দিন দেখবেন সবকিছু আপনি নিজে থেকেই বুঝে যাবেন।
সুবীর বাবুঃ হ্যাঁ সত্য বাবু, আপনি আপনার গল্প চালিয়ে যান। আমিও নিজের জীবনের অন্তরালের সত্যকে জানতে চাই।
সত্য বাবুঃ দেশী মদের সত্যি ই দম আছে। প্রতিটা বিন্দুতে যেন মাদকতার ছোঁয়া। এক একটা বিন্দু সাইদুলের পাকস্থলিতে যায় ও তার সাথে সাথে কাম, অপমান, লজ্জা জীবনের প্রতিটি রিপুই ভীষণভাবে উত্তেজিত হতে থাকে। বারবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে রূপসার ঘাড়ের সেই ক্ষতটা। আর সেই ক্ষতর সৃষ্টিকর্তা নিজের অপকর্মের কাহিনী বারবার করে সাইদুলের চোখের সামনে মরীচিকার মত ফুটিয়ে তোলে। ঝাপসা হয়ে ওঠে সাইদুলের চোখ। চোখের সামনেই এক হিংস্র বাঘ ও ততোধিক হিংস্র এক বাঘিনী। নিজেদের মধ্যে কামড়া কামড়ি করে একে অপরকে নিয়ন্ত্রন করার অব্যর্থ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। একি সেই রূপসা যার দুচোখে একদিন সাইদুল হারিয়ে যেতে চেয়েছিল, যার কাঁধে মাথা রেখে একটিবার বলতে চেয়েছিল “রূপসা আমিও হয়ত জীবনে কিছু করতে পারতাম। যদি একটু অর্থ থাকতো আর আব্বুটা এতো কমবয়সে মারা না যেত” হয়ত কাঁদতে কাঁদতে বলতে চেয়েছিল “রূপসা অনেক অনেক ভুল করেছি জীবনে, জানিনা এর শাস্তি কবে পাবো। কিন্তু আমি তোমার সাথে সবভুলে নতুন এক পৃথিবী গড়তে চাই। রূপসা বস্তির এই নোংরা অন্ধকারের জীবন থেকে আমার মুক্তি চাই”
না এই কথাগুলো আর বলা হলনা সাইদুলের। আদর্শবান বাবার মেধাবী কন্যা সমস্ত স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে ওকে শেষ করে দিলো। চোখের সামনে দেখতে পায় সাইদুল এক নতুন কামুকি রূপসাকে। বিছানার ওপর বসে, পায়ের সাড়ি সায়া প্রায় ঠাই পেরিয়ে জাঙের কাছাকাছি, বুকের ওপর নীল রঙের একটা ফিনফিনে সাড়ি, লম্বা সূচালো বোঁটাগুলো সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ঠোঁটে ঘন লাল রঙের লিপস্টিক। কেউ হয়ত নিজের নোংরা আঙুল দিয়ে ওগুলোকে ঘেঁটে দিয়েছে বেশ করে। কামনার দংশনে মাঝেমধ্যেই লকলকে জিভটা দুই ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসছে। নাকের উত্তপ্ত নিঃশ্বাস কিছুটা আবেশক্রিয়ার মত নিজের বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করে চলেছে। দরজার ঠিক কাছে দাঁড়িয়ে খালি গায়ে ওই ছেলেটি কে? ও তো রাজু। হয়ত ওই সুপুরুষটির জন্যই অপেক্ষা করে আছে রূপসা।
আর পারেনা সাইদুল। প্রচণ্ডভাবে গা টা গুলিয়ে ওঠে। চুল্লুখানার জানলার কাছে গিয়ে কোনরকমে মুখটা বাড়িয়ে বের করে দেয় সমস্ত বিষ। আসলে মদ নয় বাইরে এলো মানুষ হয়ে জন্মানোর তীব্র দ্বেষ ও যন্ত্রণা। কেউ একজন বলে ওঠে “আরে ওটা সাইদুল না, শালা ও তো মদ খেত না, কি হয়েছে বল তো?” ফিসফিস করে অপরজন উত্তর দেয় “আরে একটা মাগীকে কোথা থেকে নিয়ে এসেছে। বিকেলে দেখলাম ও বাড়িতে নেই আর রাজু ঢুকছে” সবাই প্রচণ্ড জোরে হেঁসে ওঠে। “সে আর বলতে। মদ তো খাবেই রে। শালা ওই হারামি রাজুর নজর যার ওপর পড়ে তাকে কি কখনো রাজু ছাড়ে” প্রচণ্ড জোরে অট্টহাস্যে ফেটে পড়ে ওখানে উপস্থিত সকলে। কোনরকমে টলতে টলতে বাইরে বেরোয় সাইদুল। শরীর মন দুই ই যেন অবশ হয়ে এসেছে। হৃদয়ে আর এক বিন্দু ভালোবাসাও মজুত নেই। মনে মনে পন করে সাইদুল “ঘরে ধুকেই চুলের মুটি ধরে সবার আগে রূপসাকে বার করবে। সোজা টানতে টানতে রাজুর ঘরে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসবে। ও গরীব, অতো হাইফাই মেয়ে ওর চাইনা। আম্মি একটা সাধারন মেয়ে দেখে ঠিক ই বিয়ে দিয়ে দেবে”
সারা শরীর দিয়ে ঘামের দুর্গন্ধ আর মুখ দিয়ে তীব্র মদের দুর্গন্ধ- এ ওর থেকে ১০ হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকেও জানান দেয় “ওই দেখ আজ সাইদুল মদ খেয়ে ঘরে ঢুকছে। ওর আম্মির কত বড় বড় কথা ছিল, দেখ কি অবস্থা ওর” দুপাশে তাকায় সাইদুল, সবাই ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে। লজ্জায় অপমানে ওর মাথা নিচু হয়ে যায়। মনে মনে বলে ওঠে “সব হয়েছে ওই বেশ্যাটার জন্য। আজ ই ওকে ঘর থেকে তাড়াবো”
বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যায় সাইদুল। বুকের মধ্যে তখন আগুন জ্বলছে। দরজাটার সামনে দাঁড়িয়ে আগে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে নেয়। মনে মনে পন করে “অনেক হয়েছে ভালোমানুষি আর নয়। এই শেষ। এবার ওই বেশ্যাটাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করব” প্রচণ্ড জোরে দরজায় ধাক্কা দেয় সাইদুল। দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ ছিলনা, শুধুই ভেজানো ছিল। বিকট একটা আওয়াজ হয়ে দরজাটা খুলে যায়। ভেতরের দৃশ্য সাইদুলের ভেতরের সমস্ত রাগ আক্রোশকে শতগুন বাড়িয়ে দিলেও এক অদ্ভুত বিস্ময় ওকে গ্রাস করে।
একটা নীল সাড়ি পড়ে রূপসা। খাটের ওপর চারপাশে ফুল ছড়ানো। মালাগুলো ছিঁড়ে বিছানার ওপর ই পড়ে আছে। হয়ত কিছুক্ষণ আগে এগুলোই রূপসার চুলের খোঁপায় শোভা পাচ্ছিল। আবার সাইদুলের হৃদয়টা ব্যাকুল হয়ে যায়, ঠিক এইভাবেই আজ রাতে ও রূপসার সাথে ফুলশয্যা করতে চেয়েছিল। রূপসাকে নিজের বুকের সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে পাগল করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এই বাসর শয্যায় ওর কোনও স্থান নেই। ওর জায়গায় রয়েছে রাজু। রূপসার কোমরকে পেছন থেকে এক হাতে জড়িয়ে, ওর মুখকে নিজের দিকে করে ঠোঁটের লিপস্টিক গুলো প্রায় রাবারের মত করে মুছে দিয়ে নিজের মুখে লাগিয়ে নিয়েছে রাজু। দরজাটা খোলার আগের মুহূর্ত অবধি যে রূপসার রসালো ঠোঁটটা রাজুর ই মুখের মধ্যে ছিল তা সাইদুলের বুঝতে কোনও অসুবিধা থাকেনা। সাইদুলকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায় রূপসা, কিন্তু সামান্য বিচলিত না হয়ে রাজু বলে ওঠে
রাজুঃ তোর জন্যই দরজাটা বন্ধ করিনি রে। তুই দরজাটা বন্ধ করে চলে আয়। আজ আমাদের তিনজনের ফুলশয্যা।
রাজুর কথায় হয়ত সাইদুল এতটাও রাগ করেনি, যতটা রাগ ওর হয় রাজুর কথার প্রত্যুত্তরে রূপসার ওই অদ্ভুত হাঁসিটায়। অবাক দৃষ্টিতে সাইদুল তাকিয়ে থাকে রূপসার দিকে। রূপসা একবার সাইদুলের দিকে তাকায়, কিন্তু পরক্ষনেই আবার রাজুর ঘাড়ের ওপর নিজের দুহাত ছড়িয়ে দিয়ে ওর মুখের দিকে অগ্রসর হয়। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলনা সাইদুল। প্রচণ্ড উত্তেজনা ও তীব্রতার সাথে রাজু ও রূপসা দুজন দুজনকে কিস করতে শুরু করে। এই তীব্রতায় হয়ত মাঝে মধ্যেই রূপসার ঠোঁটটা ফস্কে যাচ্ছিল রাজুর মুখের ভেতর থেকে, কিন্তু রূপসাই আবার স্বেচ্ছায় নিজের ঠোঁট রাজুর মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। দুজনের ই মুখের ভেতর থেকে উম উম্ম করে শব্দ বাইরে বেরিয়ে আসতে শুরু হয়। রাজু দুহাত দিয়ে রূপসাকে বিছানার ওপর ফেলে দেয়। প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর ওপর, কাঁধের দুদিকে হাত দিয়ে নীল ব্লাউজটায় দুপাশ থেকে একটা চাপ দেয়। সাইদুলের ছখেরে ই সামনে ওর প্রেয়সীর ব্লাউজটা দুপাশ থেকে ছিঁড়ে ফেটে যায়। নিজেকে আর শান্ত রাখতে পারেনা সাইদুল। কিকরেই বা রাখবে। প্রেম তো অনেক আগেই ফুড়ুৎ করে উড়ে গেছে। কিন্তু মাতাল চোখের সামনে যে সুস্বাদু নারীর শরীরটা দেখতে পাচ্ছে তা তো আর অস্বীকার করা যায়না। জিভটা লকলক করে ওঠে সাইদুলের। নিজের অজান্তেই বিড়বিড় করে ওঠে সাইদুল “তুই একা খাবিনা রাজু আমিও খাবো। ওই বেশ্যাটা আমায় অনেক কাঁদিয়েছে, ওকে আমিও খাবো” দ্রুত নিজের জামাটা খুলে ছুঁড়ে ফেলে সাইদুল। রাজু রূপসার গলা থেকে নিজের মুখটা তুলে সাইদুলের দিকে তাকিয়ে হেঁসে ফেলে। দুই ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে জিভটা বার করে সাইদুলকে অঙ্গভঙ্গি করে। যেন এটাই বলতে চায় যে “উম হেবি খেতে রে তোর বউকে” রাজুর এই ইঙ্গিতকেও ছাপিয়ে যায় যখন রূপসা পেছন থেকে উঠে এসে জিভটা বার করে রাজুর বুকটা চাঁটতে শুরু করে। সাইদুলের ভেতর থেকে কে একটা বলে ওঠে “জেগে ওঠ সাইদুল। চোখের সামনে যে খাবার পাচ্ছিস তাকে আর ফেরত দিস না”
রুদ্ধশ্বাসে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাইদুল.................................
প্রায় সাইক্লোনের বেগে একটা ভারী হাত নেমে আসে, ঠিক সুবীর বাবু আর সত্য বাবুর মাঝে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সত্য বাবুর গালে অন্তত একনাগাড়ে ৪-৫ টা চড়। হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যান সত্য বাবু। কোনরকমে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে দেখেন। ঠিক যেভাবে কোনও মাছকে জল থেকে ডাঙায় তুললে ছটপট করতে শুরু করে ঠিক সেরকম ই পাগলের মত ছটপট করতে শুরু করে দেয় সত্য বাবু। গলা কাঁপতে শুরু করে, মুখ দিয়ে বিড়বিড় করে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিলেন কিন্তু তা সুবীর বাবুর কান অবধি পৌছায় না। চোখদুটো প্রায় ওপরের দিকে উঠে যায়। হথাত সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতেই লুটিয়ে পড়েন সত্যবাবু।
“যা শালা মালটা কি টেঁসে গেলো নাকি? শালা এই মালটা পটল তুললে তো সব বিগড়ে যাবে”
চোখের সামনে যেন একটা উচ্চপ্রযুক্তির হলিউড ফিল্ম দেখলেন সুবীরবাবু। কিছুতেই ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। কে যে এই কাণ্ডটা ঘটিয়ে দিলো তাও একবার চোখ তুলে দেখার সাহস হলনা।
“হ্যাঁ রে সুবীর, তোর বাড়িতে দড়ি আছে। মালটাকে ভালো করে দড়ি দিয়ে বাঁধি। এই তো কুয়োর দড়িতে কিন্তু ব্যাপক হবে, আরে এতো শালা তোর আসল গুপ্তধন রে। ভালো করে সামলে রাখ একে”
চোখের সামনে যে মানুষটা সুবীর বাবু দেখলেন তাকে দেখে সত্যি ওনার ও হার্টফেল হওয়ার ই কথা। অ্যাঁ করে ভয়ে প্রচণ্ড জোরে চেঁচিয়ে উঠলেন সুবীর বাবু।
“আরে তুই কাকে ভয় পাচ্ছিস সুবীর? আমি তো তোর বাল্যবন্ধু মানব”
হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকেন সুবীর বাবু।
মানবঃ তুই কবে থেকে ভুতে বিশ্বাস করতে শুরু করলি রে? আচ্ছা বাবা এই দেখ। (সত্য বাবুর মুখটা এক হাতে কিছুটা ওপরে তুলে) আচ্ছা ভুতের ঠোঁট ফেটে কি রক্ত পড়ে?
এতক্ষনে শান্ত হন সুবীর বাবু। “কিন্তু তুই...”
মানবঃ শোন সুবীর, হাতে একদম সময় নেই। একটা বিশাল চক্রান্ত হয়েছে শেষ কয়েকমাস ধরে...
মানব বাবুর কথা শেষ হয়না। তার আগেই সুবীর বাবু কিছুটা উত্তেজিত হয়েই বলে ওঠেন
সুবীর বাবুঃ জানি রে। বর্ণালীর আমি কোনও ক্ষতি করতে চাইনি। ওটা শুধুই একটা ভুল ছিল। কিন্তু তার বদলে তুই আমার যা ক্ষতি করলি...
মানব বাবুঃ বিশ্বাস কর সুবীর আমি তোর কোনও ক্ষতি ই করিনি। করেছে অন্য একজন। বিশাল এক চক্রান্ত হয়েছে তোর সাথে। তুই মাথা ঠাণ্ডা রাখ, যেকোনো সময় পুলিশ বাড়িতে আসবে, তোর হাতে একটাই প্রমান তা হোল সত্য বাবু। আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোন তবেই তুই বাঁচবি নয়ত নিজেকে কিছুতেই মুক্ত করতে পারবি না তুই।
সুবীর বাবুর মাথা প্রায় খারাপ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে মানব বাবুর দিকে।
সুবীর বাবুঃ তাহলে কি সত্য বাবু শুধু এতো চালাকি করে আমায় মিথ্যে কথা বলে গেলেন। আর আমি সব সত্য ভেবে বিশ্বাস করে গেলাম।
মানব বাবুঃ না সত্য বাবু সব মিথ্যে কথা বলেন নি, অনেকটাই ধ্রুব সত্য। শোন সুবীর তুই নিজেকে শান্ত কর, বিশাল একটা চক্রান্ত হয়েছে তোর সাথে। তোকে আমি ছাড়া কেউ ই এই মায়াজাল থেকে বার করতে পারবে না।
চুপ করে মাথা নিচু করে বসে থাকেন সুবীর বাবু।
মানব বাবুঃ সত্য বাবু তোকে এপ্রিল ফুল বানায়নি সুবীর। ওর গল্পে অধিকাংশই সত্য। কিন্তু তোর মেয়েরা। ছি ছি সুবীর, তুই তো আমার চেয়েও অধম রে। ওই দুটো নিষ্পাপ ফুলের কুঁড়ির সম্বন্ধে এতো নোংরা কথা বাবা হয়ে শুনতে পারলি তুই? ছি ছি, আমার ই লজ্জা করছে। তোর মেয়েরা কোনও অন্যায় করেনি। বিশাল একটা চক্রান্ত হয়েছে তোর সাথে।
মাথা নিচু করে থাকে সুবীর বাবু। বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকে মানব।
মানব বাবুঃ হ্যাঁ, তুই ভালো মানুষ তাই হয়ত এই ফাঁদগুলো বুঝতে পারিস নি। আসলে আমি তো সত্য বাবুর আসল পরিচয় জানি তাই... হয়ত। যাই হোক, তোর সম্পূর্ণ ব্যাপারটা বিশ্বাস করার একটাই কারন ওই চাওয়ালা। তুই সত্যি ই ভুত দেখেছিস সুবীর। আর তার ওপর একের পর এক টুইস্ট। কখনো বংশী ভিলেন, কখনো বংশী আবার সম্পূর্ণ পালটি খেয়ে হিরো। একের পর এক টুইস্ট, লোকটা যতই বদ হোক, সাইকোলজি সাবজেক্ট টা প্রচণ্ড ভালোই বোঝে।
কিন্তু সুবীর ডায়েরীর আসল টুইস্ট তো এবার থেকে আমি দেবো রে। আজ হোল প্রথম টুইস্ট। এরপর একের পর এক টুইস্ট আসবে আর তোর চোখের সামনে সব পরিস্কার হবে।
সুবীর বাবুঃ ডায়েরীটা কি সত্যি ই অভিশপ্ত?
মানব বাবুঃ (প্রচণ্ড জোরে হেঁসে) এই ডায়েরীটা আমি ই কিনেছিলাম রে, পাড়ার দোকান থেকে। ২০ টাকা দাম নিয়েছিল। কিন্তু সত্যি ই কি অভিশপ্ত ডায়েরী বলে কিছু আছে? জমিদারবাড়ির অভিশাপ কি ভুয়ো? এর উত্তর তো অভিশপ্ত ডায়েরী শেষ হলেই পাবো। আপাতত ডায়েরীর গল্প বলার দায়িত্ব আমি নিলাম। দেখ কেমন একের পর এক টুইস্ট দি।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
পর্ব ১৬- দ্বিতীয় টুইস্টঃ
সুবীর বাবুঃ অনুরাধা, দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র, মৃত্যুঞ্জয় অর্থাৎ ঠাকুর ডাকাত, সুপ্রতীক, বংশী, মালা আরও কত চরিত্র। এদের কি কোনও অস্তিত্বই নেই? হথাত এদের কথা আমায় জানিয়ে কি লাভ মানব?
মানব বাবুঃ লাভ ক্ষতি আমিও জানিনা। কিন্তু এই গল্পটা একেবারে সত্যি। ডায়েরীর দুটো খণ্ড অর্থাৎ সুপ্রতীকের গল্প ও সত্যেন্দ্রের গল্প এটা হুবহু এক। কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে এতটা সত্য এক ঘটনা এই লোকটা বলল বা কি করে। যতক্ষণ না মালটার হুঁশ ফিরছে ততক্ষন সত্যি এই রহস্যটা কিছুতেই ফাঁস হবেনা। যদিও এই গল্পের মধ্যে হাজারো ত্রুটি ছিল। যেমন ধর, কলকাতা শহরে কি আবার কোনও নীলকুঠি ছিল নাকি। নীলের চাষ তো হত জেলা অঞ্চলে। তো গল্পে এই নীলকুঠীর অস্তিত্ব এটা সত্যি ই সত্যবাবুর নিজমনে তৈরি। আবার ধর, জঙ্গল ও ডাকাত। ১৬০০ সালের দিকে কলকাতার আশেপাশে কোনও জঙ্গল ও ছিলনা ডাকাত ও ছিলনা।
সুবীর বাবুঃ হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছিস তুই। আমি ইতিহাসের লোক হয়েই বুঝতে পারলাম না। সত্যি কিকরে যে এরকম হোল?
মানব বাবুঃ সব তুই বিশ্বাস করেছিস তার কারন একটাই। ওই চাওয়ালার ভূত। ওই ভূতটাই এই গল্পের একমাত্র ভূত...
সুবীর বাবুঃ না রে আরও কতগুলো ভূত আমি দেখেছি। জমিদার বাড়িতে আমি নিজের চোখে অনুরাধা, সত্যেন্দ্র এদের আত্মা দেখেছি। যখন ভেতরে ঢুকেছিলাম বাড়িটা ছিল সম্পূর্ণ নিস্তব্ধ। হথাত দেখি প্রচুর দাসী ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমনকি এই সত্য বাবুও যে ভূত তাও আমি বিশ্বাস করেছিলাম কারন...
মানব বাবুঃ (প্রচণ্ড জোরে হেঁসে উঠে) আরে পাগল, ভুতেদের কি কাজ নেই তোর মত একটা গোবেচারা লোকের ক্ষতি করবে। যদি কোনও ভুতকে সামনে কখনো দেখিস, মনে রাখিস সে হয় তোর ওপর বদলা নিতে নয় তোকে উপকার করতেই এসেছে। এই যেমন ওই চাওয়ালার ভূতটাই ধর। তুই চা খেলি, চলে যাওয়ার সময় উনি কি বললেন “দাদা ওখানে যাবেন না, জমিদারবাড়ি থেকে কেউ বেঁচে ফেরেনা” (একদম ওই চাওয়ালার মতই গলার স্বরে) কেন বলেছিল তুই এখন কিছু বুঝলি?
সুবীর বাবু কিছুটা চমকেই যান। মানব যে এতো ভালো অন্যের গলা নকল করতে পারে তা সত্যি ই ওনার জানা ছিলনা।
সুবীর বাবুঃ তুই এতো কিছু কিকরে জানলি রে মানব?
মানবের থেকে সমস্ত কিছু ধীরে ধীরে বুঝতে পেরে সুবীর বাবুও নিজের সেই পুরনো মেজাজটা ধীরে ধীরে ফিরে পাচ্ছিলেন।
মানব বাবুঃ এটা তো একটা টুইস্ট বন্ধু। বললাম না একের পর এক টুইস্ট দেবো। সবার আগে তোকে বলি সত্য বাবু আসলে কে? ও না তার আগে তোকে একটা গল্প বলি, তুই অনেককিছুই বুঝে যাবি তাহলে।
সুবীর বাবু চুপ করে মানবের কথা শুনতে থাকেন।
মানব বাবুঃ ছোটবেলায় বাবার থেকে গল্প শুনেছিলাম সিনিয়ার পিসি সরকার নাকি তাজমহলকেই ভ্যানিস করে দিয়েছিলেন। আচ্ছা সুবীর আদৌ কি তাজমহলের মত এক অট্টালিকাকে ভ্যানিস করা যায়? উত্তরটা হোল না করা যায়না। তাহলে? উনি আসলে একটা কেমিক্যাল ব্যাবহার করেছিলেন। সবাই চোখের সামনে একটা ইলুশন দেখেছিল। এটাই ওনার ম্যাজিকের ভাষায় ভ্যানিশ। আর সাইকোলজিতে একেই বলে মাইন্ড ক্যাপচারিং। সত্য বাবুর কাছে অন্তত ৩টে ডায়েরী ছিল, প্রত্যেকটায় অনেক আগে থেকেই গল্প লেখা ছিল। আর গল্প গুলো তৈরি হয়েছিল মোট তিনজন মানুষের মতামত নিয়ে তাদের মধ্যে আমি একজন। যদিও তোর জীবনের ঘটনাগুলো গল্প হলেও জমিদার বাড়ির কথাগুলো একেবারেই গল্প নয়। কিন্তু কিকরে এতটা সত্য উনি লিখে ফেললেন এটাই একটা টুইস্ট।
সুবীর বাবুঃ আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। আমার সবকিছু কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। আমাকে বুঝিয়ে বল ভালো করে।
মানব বাবুঃ নিশ্চয়ই বলব বন্ধু। তুই সত্য বাবুকে খুব ভালো করে চিনিস। ওর নাম কলেজে বেশ কয়েকবার শুনেছিস। এমনকি একটি বইতেও পড়েছিস ওর ব্যাপারে। সত্য বাবুর আসল নাম সত্যব্রত দত্ত, কুখ্যাত...
“the brain study of a serial killer” আরে মানব এভাবে আমি ক্লিন বোল্ড হয়ে গেলাম। তাহলে কি সবকিছুর পেছনে আসলে...
সুবীর বাবু প্রচণ্ড উত্তেজনায় প্রায় ঝড়ের বেগে সমস্ত কথা বলে ফেললেন। কিন্তু ওনাকে নিজের কথা সম্পূর্ণ করতে দিলেন না মানব বাবু।
মানব বাবুঃ না বন্ধু, কোনও সন্দেহের বশে নাম প্রকাশ করে আমার টুইস্টগুলো নষ্ট করা চলবে না। এখনো অনেক অনেক টুইস্ট বাকি রয়েছে বন্ধু। অপেক্ষায় থাকো। তবে তুই কিছুটা ঠিক ই অনুমান করেছিস। যাই হোক। এই সেই কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার সত্যব্রত দত্ত। আমেরিকার এক বিখ্যাত ইউনিভার্সিটির পিএইচডি স্কলার, সেখানেই নিজের গাইড এর স্ত্রীর সাথে প্রনয়ে জড়িয়ে পড়া। তারপর সাইকোলজিরই একের পর এক কনসেপ্ট লাগিয়ে গাইড, তার বাড়ির চাকর এমনকি বলতে লজ্জা হচ্ছে তাও ছোট্ট মেয়েটাকেও হত্যা করে। এমন ভয়ঙ্কর খুনির অপরাধ গোটা পৃথিবীর কেউ প্রমান করতে পারেনি। লোকের চোখে ধুলো দেওয়াই যে এর কাজ। সত্যি লোকটা জিনিয়াস। কিন্তু এইসব করতে গিয়ে একদিন সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। আর তারপর ই সেই বিখ্যাত প্রোজেক্ট “the brain study of a serial killer” কি অদ্ভুত না! বিজ্ঞান আর আইন একে অপরের বিপরীত হয়ে যায়। না লোকটা বেকসুর খালাস হয়ে যায়। কোনও শাস্তি ই পায়নি। তা এরকম এক লোক তোকে বোকা বানাবে না তো কাকে বানাবে?
জানি কিছুটা মাথায় ঢুকলেও এখনো পুরোটা তুই বুঝতে পারিসনি। আসতে আসতে হবে। কম জটিল ব্যাপার তো নয় এটা। একের পর এক টুইস্ট আসবে।
সুবীর বাবুঃ কিন্তু এই সত্য বাবু, হথাত আমার পেছনেই বা লাগতে গেলো কেন। আর আমার বাড়িতে ঘটে যাওয়া এতোগুলো ঘটনাও বা জানল কি করে। যেমন ধর মালতীকে সত্যি ই কোনও এক অশরীরী উত্তক্ত করত, সেকথা আমায় ও বলেওছিল। আর ধর, বর্ণালীর ব্যাপারটা। এটা তো আমি তুই আর মালতী ছাড়া আর কেউ জানেনা।
মানব বাবুঃ বর্ণালীর ঘটনাটা সত্য বাবুকে আমিই বলেছিলাম। আরে এই প্ল্যানটার সাথে আমিও তো জড়িয়ে ছিলাম রে। কিন্তু শালা... থাক। আর অশরীরীটার সৃষ্টিকর্তা কে? এটা এক বিশাল বড় টুইস্ট। সব বলব আগে বলে দি বর্ণালীর ব্যাপারটা। বর্ণালীকে কেন অতটা কষ্ট দিয়েছিলি সুবীর? আমিও তো ওকে ভালবাসতাম, কোনোদিন বলতে পারিনি। তারওপর ক্লাসের ফাস্ট বয়ের সাথে প্রেম বলে কথা। মেয়েটা ট্রেনের নীচে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও বেঁচে গেলো। ওইভাবে না বাঁচলেই ভালো হত। কি অসুবিধে ছিল তোর?
লজ্জায় মাথা নিচু করে নেন সুবীর বাবু।
সুবীর বাবুঃ বাড়িতে জানাজানি হয়ে যায়। একদম নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে ছিলাম। বাবা প্রচণ্ড অশান্তি করেছিলেন। ভেবেছিলাম, জীবনে কিছু হয়ে যাই তারপর ওকে আবার নতুন করে সব বলব। শুধু এটাই বলেছিলাম “বর্ণালী আমি আর সম্পর্ক রাখতে পারব না। আমার পড়াশুনায় প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে” কিন্তু ভাবিনি এর জন্য...
মানব বাবুঃ তুই ভালবাসতে জানিস না সুবীর। আর ঠিক সেই কারনেই তুই ও প্রকৃত ভালোবাসা পেলিনা। তোর আমি কোনও ক্ষতি করতে চাইনি। বর্ণালী শেষ দিন অবধি আমার কাছেই ছিল। আমি ওকে দগ্ধে দগ্ধে মরতে দেখেছি রে। হয়ত সেই কারনেই আমার ও আর জীবনে কিছুই ছিলনা, শুধুই একটা প্রতিশোধ চেয়েছিলাম। কিন্তু আমিও পারলাম না। আসলে কি জানিস তো আমরা না নিজের না অন্যের ভাগ্য লিখে দিতে পারি। সব ই ওপরওয়ালার খেল। আমি শেষদিন অবধি বর্ণালীকে বলে গেছি আমি ওকে বিয়ে করতে চাই, কিন্তু মেয়েটা তোকে ছাড়া কাউকেই... আমারও সংসার হলনা, বর্ণালীর হলনা তোর ও হলনা। মানুষ নিজের পাপের ফল ঠিক ই পায়রে।
মাথা নিচু করে নেয় সুবীর বাবু। চোখ দিয়ে টপ টপ করে ফোঁটা ফোঁটা জল নীচে পড়তে থাকে।
মানব বাবুঃ আমি তোকে একদম শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম। তোর সর্বনাশ দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই... যাই হোক। তোর সাথে যা হয়েছে তাতে হয়ত একটা ছোট্ট ভুমিকা আমার আছে। কিন্তু আসল মাথা অন্য কেউ। তুই ও তা আসতে আসতে বুঝতে পারছিস।
এই গুরুগম্ভীর অবস্থাকে ভঙ্গ করে আবার সুবীর বাবুর মোবাইলটা বেজে ওঠে। হথাত মানব বাবু ইশারায় ওনাকে বিরত করেন। সুবীর বাবু বোঝেন মানব ওকে ফোনটা রিসিভ করতে নিষেধ করছে। তাও একবার ফোনটা হাতে নিয়ে সুবীর বাবু দেখেন এটা রূপসার ফোন।
মানব বাবুঃ সুবীর, আর হাতে সময় নেই। হয়ত এতক্ষনে পুলিশের বিশাল বাহিনী তোর বাড়ির দিকে রওনা হয়ে গেছে। আর সামান্য কোনও ভুল করা চলবে না। তুই এই মুহূর্তে খুনের আসামী। তোর কাছে কোনও প্রমান নেই। ডায়েরীর গল্পটা কেন ঠিক আজকেই তোকে বলা হোল তা তুই কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারবি। তুই বেশকিছু ভুল করে ফেলেছিস। তার মধ্যে অন্যতম, রূপসার কাছে বৌদিকে বেশ্যা বলা। রূপসাকে তুই নিজে ফোন কর, আর ও কিছু বলার আগেই ওকে বল যে বৌদিকে এরকম বলে তুই ঠিক করিস নি। আসলে একজন লোক বৌদির নামে কিছু কথা বানিয়ে বলেছে তাই তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছিল। এবং তুই রাগের মাথায় ওই কথা বলে ফেলেছিস। যা বললাম ঠিক তাই কর নয়ত তোর বিপদ আরও বাড়বে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তুই একটা বিশাল রহস্য বুঝতে পারবি।
সুবীর বাবু অসহায়ের মতন মানব বাবুর কথা শুনে গেলেন। রূপসার কলটা ততক্ষনে কেটে গেছে। সুবীর বাবু নিজেই আবার রূপসার মোবাইলে কল করেন। রূপসা কিছু বলার আগেই উনি বলে ওঠেন
সুবীর বাবুঃ মা রূপসা, বিশাল ভুল হয়ে গেছে। আসলে একটা বদ লোক তোর মায়ের নামে বানিয়ে বানিয়ে কিছু কথা বলল তাই আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছিল। কি করে যে এতো বাজে কথা আমার মুখ দিয়ে বেরোল আমি নিজেই জানিনা।
ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে রূপসার কান্নার আওয়াজ আসতে থাকে। সুবীর বাবু যথেষ্ট বিচলিত হয়ে পড়েন।
সুবীর বাবুঃ কি হয়েছে মা, তুই কাঁদছিস কেন। আর তিলোত্তমা কই।
ফোনটা তিলোত্তমা রূপসার হাত থেকে নিয়ে নেয়।
তিলোত্তমাঃ বাবা, মা যে এরকম করবে আমরা কখনো ভাবিনি। অথচ কিছুক্ষন আগে তোমাকেই আমরা কি কি ভেবে বসেছি। জানো মা আমাদের তোমার সম্বন্ধে কি বলেছে? তুমি সন্দেহবাতিক, তুমি মানসিক রুগী, তুমি...
ফোনটা রূপসা কেড়ে নেয় তিলোত্তমার থেকে।
রূপসাঃ বাবা, এক্ষুনি একবার টিভিটা খোল। তুমি সব বুঝে যাবে। মা কেন এরকম করল বাবা। মা তো তোমায় প্রচুর ভালোবাসতো। তুমি চিন্তা করোনা বাবা, আমরা দুবোন তোমার পাশেই আছি। মায়ের পাশে নয়।
ফোনটা কেটে দেয় সুবীর বাবু। ওনার সামনে সত্যি ই যে বিশাল এক বিপদ তা এবার উনি খুব ভালো করেই বুঝতে পারেন। মানব বাবু ওনার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ সুবীর যা হচ্ছে, তা মেনে নিবি। ঘাবড়ে যাবি না। কারন দুটো মেয়ের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে তোর ওপর। চল টিভিটা খোল। এবার তুই সম্পূর্ণ ব্যাপারটাই প্রায় বুঝে যাবি।
মানব বাবু ও সুবীর বাবু দুজনেই টিভির ঘরের দিকে যেতে শুরু করেন।
সুবীর বাবু সাধারনত নিউজ ই দেখতে ভালবাসেন তাই টিভি তে নিউজের চ্যানেলটাই অন ছিল। টিভি অন হওয়া মাত্র নিউজ চ্যানেল ও সাথেসাথে প্রায় পাগল করে দেওয়া এক দৃশ্য। মানবের আগমন, সত্য বাবুর চাতুরি প্রকাশ পাওয়া এ যেন সুবীর বাবুর হৃদয়ে এক নতুন রক্ত সঞ্চালন ঘটিয়েছিল। যে স্ত্রীর জন্য উনি গর্ব বোধ করেন, সহকর্মীদের কাছে যার নামে এতো বড়াই করেন সে আর যাই হোক বেশ্যা নয়। মানুষের হৃদয় ও কি অদ্ভুত। ভাঙাগড়ার এক অদ্ভুত সমুদ্রে বারবার হারিয়ে যায়।
“ম্যাডাম, আপনি জানেন আপনি ঠিক কতবড় অভিযোগ করছেন? আপনার কাছে কোনও প্রমান আছে এর? আর কেন এতদিন পরে আপনি পুলিশে ডায়েরী করলেন। আপনি যদি সন্দেহ করেই থাকেন তো ৩ মাস আগে কেন পুলিশের কাছে এলেন না”
টিভির ক্যামেরা তখন তরুন সাংবাদিকের দিকে। অপর প্রান্তে কে বসে আছে তার অনুমান হয়ত মানব ও সুবীর বাবুর হুবহু এক। তরুন সাংবাদিক একের পর এক প্রশ্নবানে জর্জরিত করে চলেছেন কোনও এক অজানা মহিলাকে। ধীরেধীরে ক্যামেরার মুখ অন্যদিকে ঘোরে। সুবীর বাবুর আশঙ্কা যে এভাবে সত্যি হবে তা উনি কল্পনাও করতে পারেন নি। টিভি ক্যামেরায় ভেসে ওঠে ওনার ২০ বছরের বিবাহিত স্ত্রী মালতী দেবী।
মালতী দেবীঃ আপনারা কেন বুঝতে পারছেন না, আমার মানসিক অবস্থা একদম ভালো নয়। (শাড়ির আঁচল দিয়ে নিজের চোখটা মুছতে মুছতে) আমি অনেকদিন আগেই বুঝে গেছিলাম। কিন্তু ওনাকে খুব ভয় করে। উনি মানসিকভাবে সুস্থ নন, সবসময় কি এক অভিশপ্ত ডায়েরীর কথা বলে যান। কিসব জমিদার বাড়ির কথা বলেন। যতবার জিজ্ঞেস করি মানব দা কই, উত্তর দেন ওর ওপর ডায়েরীর অভিশাপ রয়েছে। আজ ৩ মাস হয়ে গেলো মানবদার কোনও খোঁজ নেই।
সাংবাদিকঃ তার মানে আপনি বলতে চান আপনার স্বামী, মানসিক উন্মাদ? এর আগে কখনো এটা আপনার মনে হয়নি? মানে শেষ কবে থেকে মনে হচ্ছে?
মালতী দেবীঃ (শাড়ির আঁচলে চোখের জল মুছতে মুছতে) দেখুন, আমি নিজের স্বামীকে দোষারোপ করতে থানায় যাইনি। আমি তো শুধু মানবদাকে পাওয়া যাচ্ছেনা সেই অভিযোগ করতেই থানায় গিয়েছিলাম। এরপর যা হয়েছে তা তো পুলিশ ই করেছে। আমি শুধু ওনাদের বলেছি একটা প্রোজেক্ট এর কাজে জমিদার বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই আমার স্বামীর মাথায় গণ্ডগোল শুরু হয়েছে। কখনো মানব দা কখনো বা পাড়ার ছেলেদের সাথে আমার অবৈধ সম্পর্ক চলছে বলে দাবী করে। আমার পাশে কেউ নেই, আমার মেয়েরাও আমার পাশে নেই। আমি একা মহিলা। আমায় যেতে দিন।
“ওকে ওকে ম্যাডাম। আর আপনাকে বিরক্ত করব না। আপনি এবার আসতে পারেন। এতক্ষন আপনারা দেখছিলেন বিখ্যাত গবেষক সুবীর সেনের স্ত্রী মালতী দেবী ঠিক কি ভয়ঙ্কর অভিযোগ এনেছেন নিজের স্বামীর নামে। পুলিশ ১ ঘণ্টার তল্লাশির পর ই জমিদারবাড়ির পেছনের মাঠ থেকে মাটি চাপা দেওয়া এক পচাগলা মৃতদেহ আবিস্কার করেছে। পরনের পোশাক দেখে মনে করা হচ্ছে, এই মৃতদেহ মানব বাবুর। এবং সন্দেহের বশে এই খুন......”
শেষ কয়েকটা কথা আর সত্যি ই সুবীর বাবুর মাথায় ঢুকল না। ভুতের ভয় ঠিক কি জিনিষ এর আগে সত্য বাবুর আবির্ভাবে উনি বুঝেছেন, কিন্তু ওনার গায়ের এই কাঁটা দেওয়া এটাই প্রমান করে যে উনি এতোবড় একটা টুইস্ট এর জন্য সত্যি ই প্রস্তুত ছিলেন না। একটা বরফের মত ঠাণ্ডা হাত সুবীর বাবুর কাঁধে এসে স্পর্শ করে। মনে সাহসের সঞ্চার করে কোনওরকমে সুবীর বাবু পেছন ফিরে তাকান। পেছনের দৃশ্য যেকোনো সাধারন মানুষের হার্টফেল করিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু ভুতের অভিজ্ঞতা তো সুবীর বাবুর কম হলনা। তাই উনি শুধুই আঁতকে উঠলেন।
ওনার পেছনে দাঁড়িয়ে একটা পচা গলা মৃতদেহ। চোখ বলে কিছুই নেই, শুধু দুটো গহ্বর। ভয়ে দুচোখ বন্ধ করে নেন সুবীর বাবু। ওনার কানে ভেসে আসে একটা ভারী গলা “ভূত দেখলে মানুষ ভয় পাবেই রে। আর ভূত মানুষের কাছে মোট দুটো কারনে আসে। হয় উপকার করতে নয় ক্ষতি করতে। তোর জন্য আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেছে। তাও আমি তোকে বাঁচাতে চাই, কারন তুই আমার বাল্যবন্ধু। চোখ খোল সুবীর, দেখ যাকে এতো ঘেন্না করতিস আজ সেই তোর জন্য এখানে উপস্থিত”
চোখ খোলেন সুবীর বাবু। মানব নিজের পুরনো রূপটা আবার ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সুবীর বাবু নিজেকে কোনরকমে নিয়ন্ত্রন করেন। কিন্তু আবারও একটা চোখ ধাঁধানো জিনিষ। মানবের হাতে লাল রঙের অতি পুরনো একটা ডায়েরী। সুবীর বাবুর চোখ একদম সেই ডায়েরীর ই দিকে। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন সুবীর বাবু।
মানব বাবুঃ (মুচকি হেঁসে) হ্যাঁ রে সুবীর, অভিশপ্ত ডায়েরী সত্যি ই আছে। জমিদারবাড়ির নবীনতম সদস্য আমি। যাওয়ার আগে তোর সাথে বংশী, সুপ্রতীক, মালা, অনুরাধা, মৃত্যুঞ্জয় সবার পরিচয় করিয়ে দেবো। এখন থেকে তো ডায়েরীর গল্পটা বলার দায়িত্ব আমার ওপর। আমি যে নবীনতম। এরপর কোন সুখী দম্পতির জীবনে এই ডায়েরীর অভিশাপ নেমে আসে কি জানি।
হ্যাঁ করে মানবের কথা শুনতে থাকেন সুবীর বাবু।
মানব বাবুঃ অবৈধ সম্পর্ক, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বা তোদের মত শিক্ষিত লোকের ভাষায় adultery relation যতদিন থাকবে, মালতীরা যতদিন সুবীরদের ছেড়ে নতুন এক সঙ্গীর দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাবে ততদিন এই ডায়েরী থাকবে।
সুবীর বাবুঃ কে সে?
মানব বাবুঃ একসাথে এতো টুইস্ট। সব এক এক করে বলব। ডায়েরীটা নিয়ে এখানে আসার কথা ছিল আমার। কিন্তু শালা সত্য বাবু নিজেই কেন কিভেবে যে এখানে চলে এলো। ঠিক আছে কোনও ব্যাপার নয়, পরের টুইস্ট গুলো তো আরও ভয়ঙ্কর। কিন্তু বন্ধু একটা কথা মনে রেখো ভগবানের ও সাধ্য নেই মানুষের ইতিহাস লেখা। তাই ডায়েরী তোর জীবন থেকেই লেখা হয়, ডায়েরী মেনে তোর জীবন নয়। তাই এটা অভিশপ্ত কিনা সেটা তো একেবারেই তোদের মত গবেষকদের ব্যাপার। (ডায়েরীটার একদম শেষদিকে পাতা উলটে) এই দেখ, পর্ব ১৬- দ্বিতীয় টুইস্ট লেখা হয়ে গেছে কিন্তু পর্ব ১৭ এর কোনও উল্লেখ নেই। আমার গল্প শেষ হবে আর ডায়েরী ও লেখা হয়ে যাবে।
The following 2 users Like manas's post:2 users Like manas's post
• kapil1989, suktara
শেষ পর্বঃ জীবন (সবচেয়ে বড় টুইস্ট) পার্ট ১
“the brain study of a serial killer” সত্যি নামটার মধ্যেই কেমন একটা টুইস্ট এর গন্ধ রয়েছে। সত্যি ই একটা টুইস্ট হয়েছিল, ঠিক আজ থেকে ১০ বছর আগে। কোনও এক পিএইচডি স্কলার তার গাইডের কাছে একটা পেপার ডাউনলোড করে নিয়ে যায় ও বলে “স্যার অসাধারন একটা কাজ ইউরোপে শুরু হয়েছে। আমি এর ওপরেই গবেষণা করতে চাই” প্রথমে তো গাইড প্রচণ্ড বকাবকি করেন নিজের সবচেয়ে প্রিয় ছাত্রটিকে, কিন্তু পরবর্তীকালে সেই ছাত্রের একগুঁয়েমির কাছে শিক্ষক হার মানেন। সব ই তো ঠিক ছিল, মুশকিল ছিল একটা জায়গায়। এতো নতুন একটা কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে তার যথাযোগ্য গিনিপিগ চাই। গিনিপিগ, অর্থাৎ যার ওপর এই পরীক্ষা চলবে। এতো কঠিন একটা কাজ তো আর ২-৩ বছরে হয়না। ধীরে ধীরে একটার পর একটা পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন কিছু তথ্য খুঁজে পাওয়া। সত্যব্রত দত্তই হোল সেই গিনিপিগ। আমেরিকায় সবকিছু খুইয়ে সেই এই পোড়াদেশেই ওকে ফিরে আসতে হত। কিন্তু ফিরে এসে যে এইভাবে গিনিপিগ হতে হবে তা হয়ত ওর জানা ছিলনা।
গবেষকের বয়স তখন এই ২৫। সেই বয়সেই সত্যব্রত বাবুর মত এক ঘোড়েল মালকে কিকরে যে কব্জা করে নিলেন তা সত্যি ই আশ্চর্যজনক। বিজ্ঞান এর আগে বহুবার বহু গিনিপিগ তৈরি করেছে। কিন্তু এভাবে বোধ হয় নিজের গিনিপিগকে কেউ ই ব্যাবহার করেনি। সত্যি ওনার থেকে এই জিনিষটা প্রতিটি গবেষকের ই শেখার আছে। কি সুবীর আর কিছু বলতে হবে?
সুবীর বাবুঃ সুব্রতকে তো আমি নিজের ভাইএর মত স্নেহ করতাম। এই মুহূর্তে ওর মত ব্রিলিয়ানট গবেষক আর একজন ও নেই। আর ওই কিনা...
মানব বাবুঃ কেন রে তুই কি মালতী দেবীকেও কম ভালবাসতিস নাকি? এগুলো হয়রে। সত্যি হয়। কেন হয় তার কোনও কারন নেই।
সুবীর বাবুঃ আমি সত্যি নিজেকে এখনো বিশ্বাস করাতে পারছিনা। সুব্রত... আমার কলেজের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহকর্মী, যাকে আমি মেয়েদের কাছে গুরুর মর্যাদা দিলাম, সেই সুব্রত। আর মালতী কি করে এটা করল? সুব্রত যে আমার ছোট ভাইএর মত...
মানব বাবুঃ তোর সব প্রশ্নের উত্তর আমি হয়ত দিতে পারব না। কিন্তু বেশ কিছু রহস্য এবার আসতে আসতে সামনে আসবে। মনে কর সেইদিনের কথা, আমি তোদের বাড়ি থেকে অপমানিত হয়ে সবে মাত্র বেরিয়ে আসছি। আর ঠিক তার কয়েকঘণ্টা পর তোর একটা ফোন, “মানব ১৫ লাখ টাকা তোর বাড়ির...” সমস্ত রহস্য লুকিয়ে আছে এই কয়েকটা ঘণ্টার অন্তরালে।
সেদিনের তোর ওই অপমান আমি সত্যি ই ভালোভাবে নিইনি। তুই কি জানিস সত্যি ই বৌদি সেদিন আমার সাথে শুতে চেয়েছিল। আমি যখন লুকিয়ে বৌদির সাড়ি পড়া দেখছিলাম তখন পেছন ঘুরে বৌদি আমার দিকে তাকিয়েছিল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমাদের নজর মেলে। আমি ওখান থেকে চলে আসি। তার কিছুক্ষন পর ই দেখি বৌদি হাঁসতে হাঁসতে আমার কাছে আসে। এমনকি রাতে শোয়ার সময় ও বৌদি খুব ভালো করেই বুঝেছিল তোর ঘরে আমি আর আমার ঘরে তুই। সেদিন কোনও কামনার বশে পড়ে বৌদি আসেনি। এটা ছিল একটা চক্রান্ত। আসতে আসতে সব ই বুঝবি।
সেদিন তুই আমায় ওভাবে অপমান করলি, আমার চোখের সামনে বর্ণালীর সেই মৃত্যু যন্ত্রণাটা ভেসে উঠেছিল। ওফ, কি কষ্ট পেয়ে মেয়েটা মরেছিল। বর্ণালী চলে যাওয়ার পর মদ ছাড়া আমার জীবনে আর কিছুই ছিলনা। কিন্তু সত্যি বলছি সুবীর, সেদিনের অপমানটার আগে অবধি আমি তোকে ক্ষমাই করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পুরনো ক্ষতটায় আবার নতুন করে নুনের ছিটে দিয়ে তুই আমাকে আবার জাগিয়ে দিলি।
তোর বাড়ি থেকে বেরোনোর পর শরীরটা কিছুতেই সামনের দিকে এগচ্ছিল না। বারবার মনে হচ্ছিল ফিরে যাই, তোর গালে একটা চড় মারি আর বলি, “তুই ও বা কোন সাধুপুরুষ শুনি, তুই ও তো একটা নিষ্পাপ মেয়ের জীবন নষ্ট করেছিস। আর তোর বউ ও কম যায়না” হথাত পেছন থেকে আমার কাঁধে কেউ একটা হাত রাখে। আমি চমকে গিয়ে পেছন ফিরে দেখি সুব্রত বাবু।
সুব্রত বাবুঃ কি বন্ধু, খুব চিন্তায় লাগছে আপনাকে। বন্ধু বলছি কেন জানেন, আমি আড়াল থেকে সব ই শুনেছি। আমরা বন্ধু না হলে কারা বন্ধু হবে।
আমিঃ কেন হথাত আমরা কেন বন্ধু হতে যাবো? আর আপনার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।
সুব্রত বাবুঃ পারবেন পারবেন সব পারবেন। আমি বর্ণালীর ব্যাপারেও জানি আবার কালরাতে আপনার আর মালতীর ব্যাপারেও জানি। আমি সব ই জানি আমার কাছে কিছুই লুকানোর নেই।
আমিঃ না এব্যাপারে আমি আপনার সাথে কেন আলোচনা করতে যাবো। আমি আপনাকে চিনিনা, জানিনা।
সুব্রত বাবুঃ আচ্ছা ৫টা মিনিট দাঁড়িয়ে কথা তো বলতে পারেন। একটা সিগারেট তো খেতে পারেন। এতে আর ক্ষতি কি। নিন একটা সিগারেট খান।
তখনও বুঝিনি আসলে গিনিপিগটা আমি, অন্য কেউ নয়। সিগারেট হাতে নিয়ে আমরা দুজনে একটু নিরিবিলি এক স্থানে গিয়ে দাঁড়াই। সুখটান দিতে দিতে সুব্রত বাবু বলেন
সুব্রত বাবুঃ আপনাকে একবার বন্ধু যখন বলে ফেলেছি, তখন আর কিছুই লুকাবনা। মালতী, উফ কি ফিগার। দু তিন বার স্নানরত অবস্থায় আমি দেখেছি। দাদা চলুন আমরা দুজনেই ভাগাভাগি করে নি।
আমি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। এতো ভদ্র শিক্ষিত মার্জিত এক মানুষ হথাত আমার মত অচেনা এক লোককে কিকরে এই কথা বলে ফেলে। আমি কিছু বলার আগেই সুব্রত বাবু বলেন
সুব্রত বাবুঃ সুবীর সেনকে আপনি হয়ত এখনো ভালোই মনে করছেন। ও এক নম্বরের বিষমাল। কলেজে আমার রেপুটেশন খারাপ করার জন্য অনেক চেষ্টা ও করেছে। অনেক কিছু করেছে। প্রোমোশন আটকে দিয়েছে, আরও কতকিছু।
সত্যি বলছি সুবীর, রক্ত গরম ছিল তাই হয়ত আমার মত রাজনীতিক ও ক্লিন বোল্ড হয়ে গেলো। সত্যি বলতে সুব্রতর প্ল্যানটা যে কি ছিল তা আমি জানতাম না, আমায় শুধু এটাই বলা হয়েছিল যে কোনও এক রবিবার তোর জমিদারবাড়িতে গবেষণার জন্য যাওয়ার কথা। একটা ডায়েরী ওখানে রেখে দেওয়া হবে, সেই ডায়েরীটা দিয়ে তোকে এমনভাবে ভয় দেখানো হবে যে তুই মানসিক উন্মাদ হয়ে যাবি। এই কাজের দায়িত্বে থাকবে সত্য বাবু। আমি কিছু না বুঝলেও, একটা জিনিষ ই বুঝেছিলাম বৌদিকে ভোগ করার ও তোর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছেটা আমার মত সুব্রতর ও আছে। তাই ও হয়ে গেলো আমার সহজাত বন্ধু। এরপর শনিবার অর্থাৎ তোর জমিদার বাড়িতে যাওয়ার আগের দিন আমি আর সত্যবাবু ওখানে যাই, ভেতরে একটা ডায়েরী রেখে আসার জন্য। আমি ছিলাম সামনে, সত্য বাবু পেছনে। তখন আমরা মুল দরজা ঠেলে অনেকটাই প্রবেশ করেছি। পিঠের ওপর প্রচণ্ড জোরে একটা আঘাত, কিছু বোঝার আগেই দেখি পেট চিরে একটা ভোজালি সামনের দিকে বেরিয়ে আসছে। আমার শরীরের সমস্ত জোর আসতে আসতে শেষ হয়ে আসছিল। এভাবে যে কতবার ভোজালিটা ঢোকাল আর বার করল খেয়াল নেই। আসতে আসতে চোখ দুটো বুজে আসছিল, দেখি কিছুটা দূর থেকে সুব্রত বাবু এগিয়ে আসছে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম আমি। সত্য বাবু কিছুক্ষন পর আমার বুকে হাত দিয়ে পরখ করে নিল আমি বেঁচে আছি কিনা। না ততক্ষনে আমার দেহটা মৃত। কিন্তু আত্মা তো আর মরেনা, ওটা বেঁচেই ছিল। আমি দেখতে পাচ্ছিলাম সুব্রত বাবু পকেট থেকে মোবাইলটা বার করলেন কাউকে ফোন করলেন। জায়গাটা জনশূন্য, তাই ফোনের ওপাশের আওয়াজটাও স্পষ্ট ভাবে আসছিল। সুব্রত বাবু বললেন “কাজ হয়ে গেছে” ওপাশ থেকে আমার অতি পরিচিত এক মহিলার কণ্ঠ ভেসে এলো “সুব্রত দেখো কোনও বিপদ হবেনা তো আমাদের” নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না, গলাটা ছিল বৌদির। আমার প্রচণ্ড আফসোস হচ্ছিল, আমার একটা সামান্য ভুলে আমার সাথে সাথে তুই ও শেষ হয়ে গেলি। কিন্তু আমিও পন করেছিলাম তোকে বাঁচাবই। যদিও সুব্রতর কুকীর্তির এখানেই শেষ নয়। হথাত চেঁচিয়ে ওঠে “কে? কে ওখানে?”
ওরা দুজনেই প্রানপন দৌড়ায়। এক চাওয়ালা হয়ত কোনও বিশেষ কাজে জমিদারবাড়ির ভেতরে এসেছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওকে ধরে ফেলে। সামান্য ধ্বস্তাধস্তি ও গলায় জোরে কিছুক্ষন চাপ দেওয়া। ব্যাস আরেকটা জীবন ও শেষ। সুবীর, ওই চাওয়ালাই তোর জীবনে দেখা প্রথম ভূত। ও তোকে সত্যি জমিদারবাড়িতে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিল। আমি জানতাম ডায়েরী একটা লেখা হয়েছে, এবং তার লেখক ৩ জন আমি, সত্য বাবু ও সুব্রত বাবু। কিন্তু ভুল, ডায়েরীর লেখক আসলে ৪ জন আমি, বৌদি, সত্য বাবু ও সুব্রত বাবু। সবচেয়ে মজার ব্যাপার ভূত হওয়ার পর কখনোই আমি বৌদিকে স্পর্শ করার চেষ্টা করিনি। ওই যে অশরীরীর কথা বৌদি তোকে বলেছিল ওটা শুধুই ডায়েরীর গল্পকে প্রমান করার জন্য। সুব্রত বাবু এরকম করতেই পারেন, কিন্তু বৌদি... আমি আজও মানতে পারিনা এটা। যাই হোক হাতে সময় খুব কম। তোকে আরও একটা গল্প শুনতে হবে তবেই তুই নিজেকে প্রমান করতে সক্ষম হবি। ধরে নে আমি আসিনি, সত্য বাবু গল্প বললেন ও বেরিয়ে চলে গেলেন তাহলে কি হত? একটু ভেবে দেখ কি হত?
সত্য বাবু বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ এসে উপস্থিত হত। প্রথম প্রশ্ন হত “মানব বাবুকে কেন খুন করলেন?” তোর উত্তর হত “আমি তো খুন করিনি, খুন করেছে সত্য বাবু” “সত্য বাবু কে?” “সত্য বাবু হলেন সত্যেন্দ্র” “সত্যেন্দ্র কে?” “জমিদারবাড়ি, ডায়েরী এইসব থেকে আমি সত্য বাবুকে জেনেছি” হয়ত বা নিজের স্ত্রী, মেয়েদের বেশ্যা বলতিস সর্বসমক্ষে।
ব্যাস ওদের পরিকল্পনা সফল। তোকে আদালতে তোলা হত। মহামান্য আদালত রায় দিত “সুবীর বাবু, মানসিক উন্মাদ। শুধু নিজের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহে নিজের ই প্রিয় বন্ধু মানবকে হত্যা করেছে” তুই হয় জেল নয় মানসিক হসপিটালে। প্রথমে রূপসা ও তিলোত্তমা কিছুতেই মেনে নিতে পারতো না কিন্তু তারপর ঠিক ই মনে করে নিত ওদের বাবা একজন উন্মাদ। তারপর মায়ের ই সুখের জন্য সুব্রত ও মালতীর নতুন করে ঘর বাঁধা- এটাও হয়ত মেনে নিত।
সুবীর বাবুঃ মালতী কেন এরকম করল? আমাকে ডিভোর্স চাইলে আমি ই স্বেচ্ছায় ওকে দিয়ে দিতাম। ও এতো বড় একটা অপরাধ কেন করল?
মানব বাবুঃ আমিও জানিনা রে। হয়ত এর উত্তর আমি কিছুটা ভেবে নিজের যুক্তি তক্ক দিয়ে বলতে পারতাম। কিন্তু সত্যি একটা টুইস্ট রয়েছে জানিস সেটা কি? সেটা হোল জীবন। জীবনের চেয়ে বড় টুইস্ট বোধ হয় আর কিছুই হয়না। সত্যি রে সুবীর বৌদির ঠিক কিসের অভাব ছিল? সুব্রতকে শুধু ভালো লেগে গেলো, তোকে আর ভালো লাগছিলনা, মেয়েদের কাছেও অপরাধী সাজা যায়না, অতএব এতো বড় একটা অপরাধ করা, এটাই কি। মনে হয় নয়, কারন জীবন সত্যি ই একটা টুইস্ট। এর উত্তর আমার ও জানা নেই।
The following 1 user Likes manas's post:1 user Likes manas's post
• suktara
শেষ পর্বঃ জীবন (সবচেয়ে বড় টুইস্ট) পার্ট ২
“এর উত্তর আমরা দেবো”
অবাক হয়ে পেছন ঘুরে দেখেন সুবীর বাবু। প্রায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু মানুষ, না এদের পোশাক আর রুপ দেখে ততক্ষনে সুবীর বাবু বুঝে গেছেন এরা মানুষ নয়।
“নমস্কার সুবীর বাবু, আমি ই হলাম সেই বংশী। যাকে নিয়ে ডায়েরী তে এতো বিতর্ক। আর ইনি হলেন মালা”
হাঁসতে হাঁসতে এক সুন্দরী মহিলা সামনে এগিয়ে আসেন। “সুবীর বাবু, যে মানুষটা একদিন আমার শরীরটাকে ভোগ করার জন্য পাগল ছিল, জীবনযুদ্ধে সব খুইয়ে সত্যি ই সে আমায় মা বলেই ডেকেছিল”
“হ্যাঁ সুবীর বাবু, সেদিন আমার কি হয়েছিল জানিনা, তবে রানীমাই ছিলেন ওই সময়ের একমাত্র নিষ্পাপ চরিত্র। সত্যি ই আমি ওনার মধ্যে নিজের মাকে দেখতে পেয়েছিলাম। সত্যি ই এর উত্তর আমি জানিনা, কেন এটা হোল আমি জানিনা”
মানব বাবুঃ এর উত্তর আমি দিচ্ছি। সুবীর, আমাদের হৃদয়ে অনেকগুলো স্তর আছে। প্রত্যেকটা স্তরে আমরা একেক ধরনের। কখনো অন্যকে কাঁদাই, কখনো নিজেই কাঁদি, কখনো অন্যকে হাঁসাই, কখনো নিজেই হাঁসি। হয়ত বিজ্ঞানের পক্ষে মানুষের মনকে কোনোদিন বিশ্লেশন করা সম্ভব নয়। বৌদি কেন এরকম করল? হয়ত বৌদির মনে ঠিক বংশীর উল্টো কোনও স্তর থেকে সবকিছু হয়েছে। ছাড় সত্যি ই মন খুব জটিল। তাই তোর জীবনের এই টুইস্টটা আন্সল্ভড ই থাকুক। সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজাও উচিত নয়।
এতক্ষন নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রেখেছিলেন সুবীর বাবু। হথাত ওনার ভেতর থেকে চাপা একটা কান্না বাইরে বেরিয়ে আসে। “আমি কি করব রে মানব? কাকে নিজের মনের কথা বলব। আমি তো এই পৃথিবীতে একা হয়ে গেলাম রে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে তো এক কাপ চাও পাবনা রে? আমি কি করব রে মানব। সমাজের কাছে কি মুখ দেখাবো। কি বলব আমার বউ আমায় বিপদে ফেলার জন্য খুনের ষড়যন্ত্র করেছে। প্রতিবেশীরা তো কথা শুনিয়ে শুনিয়েই আমায় শেষ করে দেবে। আমি আর বাঁচতে চাইনা মানব” দুহাতে নিজের মুখটা চাপা দিয়ে মাটিতেই বসে পড়েন সুবীর বাবু। মানব বাবু সত্যি ই ওনাকে স্বান্তনা দেওয়ার কোনও ভাষা খুঁজে পাননা। ভুতেদের মধ্যে থেকে একজন আবার সামনে এগিয়ে আসেন।
“নমস্কার সুবীর বাবু। আমি মৃত্যুঞ্জয় অর্থাৎ আমি ই সেই ঠাকুর ডাকাত। আপনি নিজের মন শক্ত করুন। আমরা কিছু কথা বলতে চাই। অভিশপ্ত ডায়েরী কেন? কিসের অভিশাপ? কোথাকার অভিশাপ সব আপনাকে শুনতে হবে। মাথা তুলুন সুবীর বাবু” কোনরকমে নিজের চোখের জল মুছে মাথা তুলে তাকান সুবীর বাবু।
মৃত্যুঞ্জয়ঃ মশাই, ভূত হয়ে যাওয়ার পর এক অদ্ভুত বিরক্তিকর জীবন বটে। প্রথম প্রথম অন্যদের ভয় দেখিয়ে ফিরতাম। কিন্তু কলকাতা শহরে যা দূষণ আর যা লোকের ভিড় আমাদের ই ভয় লেগে যেত। সারাদিন ওই পোড়োবাড়িতে বসে থেকে আমাদের অদৃশ্য শরীরে একদম মরচে ধরে গেছিল। আমরা ঠিক করলাম এমন একটা কিছু করা যাক যাতে আমাদের থেকে মানে এই ভুতেদের থেকে সমাজ কিছু শেখে। তো অনেক ভাবনা চিন্তা গবেষণার পর আমরা বুঝলাম, এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা হোল সম্পর্কে সঙ্কট। তো আমরা ঠিক করে ফেললাম যখন কোনও মানুষ তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে হারিয়ে ফেলেন তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো তাদের শেখাবো জীবন আর কিছুই নয় শুধুই একটা টুইস্ট। সবকিছুই মেনে নিতে হয়। আবার নতুন করে লড়াই করতে হয়। আসলে জীবন শুধুই একটা লড়াই আর কিছুই নয়।
মানব বাবুঃ একদম হক কথা! তুই কাল থেকে পাড়ার চা দোকানেই চা খাবি। কথা বলার ইচ্ছে হলে কোনও বন্ধুকে ফোন করবি। একা লাগলে রূপসা তিলোত্তমাদের কলেজে চলে যাবি। কিন্তু কখনো এই প্রশ্নটা মনেও আনবি না যে কেন মালতী আমায় ছেড়ে চলে গেলো? জীবনের এই টুইস্টটা তুই আন্সল্ভড ই রেখে দে। কারন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টুইস্ট তো জীবন নিজেই। কক্ষনো আর মালতীকে চিন্তাও করবি না।
মৃত্যুঞ্জয়ঃ হ্যাঁ সুবীর বাবু, আপনি শক্ত হন। সেই কারনেই আমাদের এখানে আসা। আর এই ডায়েরী লেখা। না সত্য বাবুর ডায়েরিটা আসল নয়। আপনি বা মানব বাবুর আসার অনেক আগেই উনি এসেছিলেন ও ডায়েরী পড়া শুরু করেছিলেন। হয়ত যে স্থানে কুকর্মটা করবেন তা একটিবার দেখার জন্যই এসেছিলেন। কিছুই পাননি শুধু এই ডায়েরীটা ছাড়া। উনি জানতেন ও না যে এই ডায়েরীটা শুধুই কোনও ইতিহাসের গল্প নয়, এর নাম অভিশপ্ত ডায়েরী। তারপর উনি নিজের মত করে, মালতী দেবীর, মানব বাবুর ও সুব্রত বাবুর কথা মিলিয়ে একটা চক্রান্ত করে নিজে একটা ডায়েরী লিখে ফেললেন। এবার বলি কেন অভিশপ্ত? আরে মশাই, ডায়েরী তো ক্ষুদ্র জিনিষ, ভগবানের ও ক্ষমতা নেই কারুর জীবনকে অভিশপ্ত করে তোলার। এই ডায়েরী সেদিন থেকে লেখা শুরু হয়েছে যেদিন থেকে সুব্রতকে মালতীর মনে ধরে। কিছু ভুল আপনার ও আছে, আপনিও নিজের স্ত্রীকে যথেষ্ট সময় দেননি। আপনারাই নিজেদের জীবনে অভিশাপ নিয়ে এসেছেন ডায়েরীটা নয়। তবে মেয়েদের কথা ভেবে আপনাকে শক্ত হতে হবে।
মানব বাবুঃ সুবীর, টিম অভিশপ্ত ডায়েরীর কাজ তো সমাপ্ত। আর হ্যাঁ গুপ্তধন? সত্য বাবুই তোর গুপ্তধন, ওই তোকে বাঁচাবে ওই একমাত্র প্রমান। ভালো থাকিস সুবীর। ওই দেখ পুলিশের ভ্যানের শব্দ। আর তো আমরা এখানে থাকবো না। ডায়েরীর চতুর্থ খণ্ড শেষ, জানিনা আবার কোন অভাগা বা অভাগিনীর জীবন নিয়ে ডায়েরী লেখা শুরু হবে। তবে যাওয়ার আগে টিম অভিশপ্ত ডায়েরী একসাথে নিজেদের স্লোগান দিয়েই তবে ভ্যানিস হবে।
সবাই একসাথে “যতদিন সমাজে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকবে ততদিন অভিশপ্ত ডায়েরী ও থাকবে”
ভ্যানিস! হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকে সুবীর বাবু। ওর চোখের সামনে সবাই হথাত ই অদৃশ্য হয়ে যায়। কিন্তু এতকিছুর পরেও সুবীর বাবুর মুখে দৃপ্ত একটা হাঁসি, ওকে যে লড়তে হবে, গবেষণা করতে হবে, নিজের মেয়েদের জন্য বাঁচতে হবে।
The following 1 user Likes manas's post:1 user Likes manas's post
• suktara
এবং অবশিষ্ট সমাজ-
১০ বছর পরঃ “আরে গুরু আজ একটু তাড়াতাড়ি চলে এলি মনে হয়। কি হয়েছে রাজু বলনা, প্লিস বলনা কি হয়েছে। মুখটা এতো শুকনো লাগছে কেন তোর?”
রাজুঃ (বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর) শালা আজ সত্যি সত্যি তিলোত্তমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে রে। আমি মনে হয় সত্যি ই মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। নয়ত এতো মুড অফ কেন হবে বলত।
সাইদুলঃ আরে ইয়ার একটা চেষ্টা তো করতে পারতিস। আমার ও মনে হত ওর ও না তোর ওপর কিছু একটা রয়েছে।
রাজুঃ নারে ভাই পারলাম না। যার মা এভাবে দুই মেয়ের সাথে বেইমানি করে, এতো কষ্ট দেয়... ভাবতো যখন ও ভাবে যে ওর মা জেলে আছে কেমন লাগে? আর ওর মত একটা ডাক্তার কি এই বস্তিতে থাকবে নাকি? ভালো হয়েছে চেষ্টা করিনি। দেখবি মেয়েটা খুব সুখী হবে।
সাইদুলঃ ঠিক বলেছিস রাজু, শালা ভালোবাসা হেব্বি ফালতু জিনিষ। শালা আমাদের জন্য নয় এগুলো। আরে শালা সুবীর বাবুর মত ভালো লোক ই সুখী হলনা আর আমরা কোন বাল। বলনা রাজু তোর কষ্ট হচ্ছে বলনা?
রাজুঃ বালের কষ্ট। শালা সকাল থেকে টিফিন করা হয়না। ১২ টায় দোকান বন্ধ করার সময় পেটে ছুঁচো দৌড়ায়। বারবার মনে হয় সেই তো আমাকেই আবার গিয়ে রান্নাটা করতে হবে। সময় কোথায় ভাই, পুরনো প্রেমের কথা ভেবে কষ্ট পাওয়ার।
সাইদুলঃ শোন না গুরু, জম্পেস একখান বৌদি এসেছে। উফ কি সাইজ মাইরি। আজ রিক্সা থেকে নাবছিল, শালা টান লেগে সাড়িটা হাঁটুর ওপরে উঠে যায়। উফ কি থাই রে, সসসসস আহ...
রাজুঃ শালা, কোথায় রে? কার বাড়িতে? বল শালা নয়ত আজ ফাটাবো তোর।
সাইদুলঃ আরে ওই মিত্ররা বাড়ি বিক্রি করল না। নতুন লোক কিনেছে। লোকটার নাম মৃন্ময় গুপ্ত। আর বৌদি হোল সুমনা, সুমনা বৌদি। উফ আমি তো বস আগেই ওদের বাড়িতে দুধ দেওয়ার কথা বলে চলে এসেছি।
রাজুঃ সাইদুল ওই সাইদুল, হবে নাকি আবার...
সেলিমতলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে সুতানুটি জমিদারবাড়িতেঃ
“নমস্কার মৃন্ময় বাবু। কতটা পড়লেন? ওরে বাবা আপনি তো একদম দেবেন্দ্রর পর্বে প্রবেশ করে গেছেন। না আর একা একা ডায়েরী পড়া নয়, এবার ডায়েরীর গল্প বলার দায়িত্ব আমি নিজেই নিলাম”
“আপনি? আপনি কে? আমি তো যখন এখানে এলাম কাউকে দেখিনি? পুরো ফাঁকা ছিল”
“আপনি তো মৃন্ময়, মৃন্ময় গুপ্ত। সেলিমতলায় নতুন এসেছেন। জানেন প্রায় ১০ বছর আগে আমিও ওখানে যেতাম। ওহ নিজের পরিচয় ই দেওয়া হয়নি। আমি মানব। এই জমিদারবাড়ির সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য”
“নমস্কার মানব বাবু! আসলে বলতে লজ্জা লাগছে, তাও বলছি। আমার না আবার ওই একটু অ্যাডভেঞ্চারের রোগ আছে। বহুদিন আগে শুনেছিলাম এই জমিদারবাড়িতে নাকি গুপ্তধন আছে। আর লোভ সামলাতে না পেরে, রবিবার দেখে আজ ই চলে এলাম। (একটু ফিসফিস করে) আচ্ছা সত্যি ই কি গুপ্তধন আছে?
মানব বাবুঃ আছে বইকি। এই ডায়েরীটাই হোল আসল গুপ্তধন। এটা পড়লে আপনি এমন এক গুপ্তধনের সন্ধান পাবেন যা আপনি জীবনে কখনো ভুলবেন না।
মৃন্ময় বাবুঃ সত্যি তাই নাকি! তাহলে মশাই আপনার মুখ থেকে পুরো গল্পটা না শুনে আমি কোথাও জাচ্ছিনা।
মানব বাবুঃ মৃন্ময় বাবু, ডায়েরীতে মোট ৪টে খণ্ড রয়েছে। প্রথম খণ্ড জমিদারবাড়িতে আসার আগে আপনার ও সুমনা দেবীর গল্প(যথারীতি যথেষ্ট ঘাবড়ে যান মৃন্ময় বাবু) দ্বিতীয় খণ্ড এই ১৬০০ সালের সময়কার এই জমিদারবাড়ির কিছু চরিত্র যেমন দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র, ম্রিত্তুঞ্জয়দের গল্প, তৃতীয় খণ্ড সিপাহী বিদ্রোহের সময়কালের জমিদারবাড়ির কিছু চরিত্র যেমন সুপ্রতীক, মালা, বংশী এদের গল্প আর চতুর্থ খণ্ড হোল ডায়েরী পড়ার পর আপনার অবশিষ্ট জীবন। তাহলে শুরু করা যাক আমাদের ডায়েরী পর্ব।
লেখকের অতিচর্চিত, অতিসমালোচিত ও অতিনিন্দিত তত্বকথা(বকবক)-
আসলে লড়াইটা একটা রুটির জন্য
একটা রুটি সমান করে মাঝ বরাবর
অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি
এই রুটির লড়াই দৈনিক আট ঘণ্টার মজুরি
আসলে ওটা রুটি নয়, আমার রক্তবমি
মজুরি তো তুমিও কর মানসী
কখনো রান্নাঘরে কখনো বা মাঝরাতে
নগ্ন শরীরের যৌনতায় আমায় শ্রান্ত করে
তুমিও মজুর আমিও মজুর
প্রিয়তমা তাহলে কিসের এতো লোভ
কি পেলে সোনার থালায় মুখ দিয়ে
জানিনা সত্যি কিছুই জানিনা।
প্রিয়তমা, আসলে প্রেম সত্যিই একখানা রুটি
একটা রুটি সমান করে মাঝ বরাবর
অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি।
আসলে জীবন সত্যি ই একখানা রুটি
অর্ধেক তুমি, আর অর্ধেক আমি।
অবৈধ সম্পর্ক বা adultery ;.,ের চেয়েও ঘৃণ্য। নিজের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মধ্যে ঠিক যতটাই খুঁত থাকুক না কেন, তাকে নিজের মত করে ভালবাসুন। কারন জীবন সত্যি ই একখানা রুটি/ অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি।
সমাপ্ত
|