08-11-2019, 04:41 AM
সত্যি কি বলবো এমন গল্প খুবি কম দেখা যায় যখন ডুবে যায় গল্পে মনে থাকে না কোথায় গিয়ে থাম্বে। সুধু জানতেই ইচ্ছে করে হবে কি তাদের মিলন? চোখের কোনে জ্বল এসে গিয়েছে তার পর ও সাধুবাদ জানাতে চাই আপনাকে।
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় (Dawn at Midnight) Written By pinuram
|
08-11-2019, 04:41 AM
সত্যি কি বলবো এমন গল্প খুবি কম দেখা যায় যখন ডুবে যায় গল্পে মনে থাকে না কোথায় গিয়ে থাম্বে। সুধু জানতেই ইচ্ছে করে হবে কি তাদের মিলন? চোখের কোনে জ্বল এসে গিয়েছে তার পর ও সাধুবাদ জানাতে চাই আপনাকে।
13-11-2019, 02:42 PM
Kono update nai ki bepar.....?
11-12-2019, 07:41 PM
Update plz..
09-01-2020, 10:20 PM
nice story **
19-01-2020, 07:42 PM
please update
19-02-2020, 12:33 AM
প্লিজ আমরা গল্পটার শেষ দেখতে চাই, পিনুরাম নিজেও গল্পের নায়কের মতোই অদৃশ্য হয়ে গেছেন আমাদের মতো পাঠকদের রহস্যে রেখে... গল্পটা মিলনান্তক বা বিয়োগান্তক যাই হোকনা কেন এর সমাপ্তি দেখতে চাই... ভালোবাসার রাজপ্রাসাদ একটা কালজয়ী উপন্যাস আর এটা তারই ধারাবাহিক, তাই অন্তিম দৃশ্য টানছে আমাদের
22-02-2020, 09:16 PM
গল্পটা পুরোটাই আমার কাছে আছে।
সবাই চাইলেই পোস্ট করব।
23-02-2020, 02:54 AM
(This post was last modified: 23-02-2020, 02:56 AM by Nectar_G. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(22-02-2020, 09:16 PM)Nefertiti Wrote: গল্পটা পুরোটাই আমার কাছে আছে। Puro ta eksathe kore din plz... Keep Reading...
23-02-2020, 11:12 AM
23-02-2020, 09:38 PM
[সাদা ঘোড়ার রুপকথা (#01, #02)]
সাদা ঘোড়ার রুপকথা (#01) সামনে গরমের ছুটি। একদিন রাতে খাওয়ার সময়ে ছোটমা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “আমি ভাবছিলাম এই গরমের ছুটিতে কোথাও বেড়াতে গেলে ভালো হয়, এই কোন পাহাড়ি জায়গায়। পরী কোথায় যেতে চাস, বল?” আমি বড় শ্বাস নিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম, “আমি কোন পাহারে ঘুরতে যেতে চাই না।” বাবু আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “কেন, তুমি ত পাহাড় ভালোবাসো, হটাত কি হল?” আমি সত্যি পাহাড় ভালোবাসি, আর সেই পাহাড় ওই আমাকে চিনিয়েছিল। সাথে যদি ভালোবাসার লোক না থাকে তাহলে পুস্প শয্যাও কণ্টকময় হয়ে ওঠে। আমি বাবুকে উত্তর দিয়েছিলাম, “আমি ভাবছিলাম গরমের ছুটিতে মায়ের কাছে যাবো।” ছোটমা মাথা নেড়ে বলেন, “ঠিক আছে এই বার না হয় তুই গ্রামের বাড়ি যা, কিন্তু পরের বছর আমরা সবাই মিলে কোন পাহাড়ে বেড়াতে যাবো, এই ধর নৈনিতাল বা কৌসানি।” আমি মনের ব্যাথা লুকিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “আমাকে কি পরের বছর তোমাদের সাথে যেতেই হবে?” আমি মজা করে বলি, “তোমাদের বয়স হয়েছে, তোমরা এখন ঘুরতে যাও একা একা।” বাবু বললেন, “তুমি এখন আমাদের একমাত্র সন্তান, তোমাকে একা ছেড়ে কি করে যাই?” বাবুর কি গলা ধরে এসেছিল সেই কথা বলার সময়ে, হয়ত হ্যাঁ, ঠিক বুঝতে পারিনি আমি। বাবু, “তুমি যদি আমাদের সাথে না যেতে চাও তাহলে আমরা কোথাও যাবো না।” ডাইনিং টেবিলের আবহাওয়া কেমন ভারী হয়ে ওঠে ঘুরতে যাওয়ার কথা বার্তা নিয়ে। আমি ওকে ছাড়া পাহাড়ে ঘুরতে যাবার ইচ্ছে নেই, ওদিকে বাবু আর ছোটমা আমাকে ছাড়া ঘুরতে যাবেন না। আমি শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া সামাল দিয়ে বলি, “ঠিক আছে ছোটমা, পরের বছর আমরা সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে যাবো।” ছোটমা আমার মুখে হাসি দেখে খুশি হন। আমি ছোটমায়ের কাছে আব্দার করি, “ছোটমা আমার একটা ওয়াকম্যান চাই।” বাবু আদর করে বললেন, “ওয়াকম্যান কেন সোনা মা, ওয়াকম্যান অনেক ছোটো। তোমার গান শুনতে ইচ্ছে হলে আমি তোমাকে পরের জন্মদিনে একটা হাজার ওয়াটের সোনির একটা বড় মিউসিক সিস্টেম কিনে দেব।” আমার মনে হয়েছিল যেন বাবু কে জড়িয়ে ধরে টাকে চুমু খাই। বাবু বুঝে যান আমার মনের কথা আর হেসে ছোটমাকে বলেন, “দেখেছ আমার মেয়ে আবার হাসছে।” দিনে দিনে আমার খুশি যেন বেড়ে চলে, একদিকে ওর কাছ থেকে সংবাদ পাওয়ার আশায় একদিকে ছোটমায়ের কাছে পাওয়া ভালোবাসা আর স্বাধীনতার জন্য। দিন যায়, কিন্তু ওর কাছ থেকে কোন সংবাদ আসে না। আমি আশা ছেড়ে দেই না, বুকে আশা বেঁধে রেখেছিলাম ও যখন বলেছে তখন একদিন না একদিন কোন সংবাদ নিশ্চয় আসবে। গরমের ছুটিতে বাবু আমাকে গ্রামের বাড়িতে দিয়ে আসেন। বাবু বলেন যে অনেকদিন বাবু আমাদের গ্রামের বাড়িতে যায়নি তাই একবার মায়ের সাথে দেখা করতে চান। বাবু আমাকে খুব ভালবাসতেন কিন্তু বাবুর সাথে যেতে হবে শুনে কেমন মনে হয়, কেননা মাঝে মাঝে বেশ ভয় করতাম বাবুকে। সারা রাস্তা গাড়িতে বাবু খুব চুপচাপ ছিলেন। আমি বাবুর গম্ভীর মুখ দেখে অনুধাবন করতে চেষ্টা করি যে মনের মাঝে কি চলছে কিন্তু পেরে উঠিনা। বিকেল বেলায় আমরা গ্রামের বাড়ি পৌঁছাই। মা বাবুকে দেখে অবাক হয়ে যান, সাধারণত আমাকে ছাড়তে ছোটমা আসেন। বাবুকে দেখে মা তৎপর হয়ে ওঠেন কি করে কি করবেন। বাবুর আগমনে বাড়ি যেন মুখর হয়ে ওঠে। মৈথিলী আর মেঘনা বৌদি কি করে বাবু কে অভ্যর্থনা জানাবে ঠিক করে উঠতে পারে না। আমি ওদের তৎপরতা দেখে আনন্দ পেয়েছিলাম। আমি মাকে বলেছিলাম, “মা, এত তৎপর হয়ে উঠছ কেন, ইনি আমার বাবু, তুমি যেমন রাখবে সেই রকম থাকবেন।” মা বলেন, “না তোর বাবু অনেক বড়লোক।” আমি, “আমি জানি মা।” মা, “তোর বাবু অনেক দিন পরে আমাদের বাড়ি এসেছেন।” বাবু মা'কে দেখে বললেন, “আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।” বাবুর কথা শুনে হটাত করে আমার চেহারার রক্ত উবে যায়। আমি বাবুর দিকে কাতর চোখে তাকিয়ে বলতে চেষ্টা করি, “বাবু দয়া করে আমার জীবন নরক বানিয়ে দিও না।” আমি মায়ের হাত চেপে ধরে কানে কানে জিজ্ঞেস করি, “মা তোমরা কি নিয়ে কথা বলবে?” মা আমাকে আসস্থ করে বলেন, “চিন্তা করিস না, তোর বাবু তোর ভালর জন্যই এসেছেন।” মা সুমন্তদা আর শশাঙ্কদা কে ডেকে নিয়ে ঘরে চলে যান। মেঘনা বৌদি আর মৈথিলী বাবুকে অরুনয় করে বলে, “কাল সকালেও ত কথা বলা যেতে পারত।” বাবু বলেন, “না মায়েরা। এটা আমার শ্বশুর বাড়ি, এখানে ত আমি রাত কাটাব না।” বাবুর কথায় মা একটু আহত হয়ে বলেন, “অর্জুন, ওই কথা বলো না। আমরা কাল সকালেও কথা বলতে পারি।” বাবু বললেন, “কাল সকালে আমার কিছু কাজ আছে তাই আজ রাতেই আমাকে বাড়ি ফিরে যেতে হবে।” সবাইকে নিয়ে ঘরে ঢুকে পড়েন বাবু। আমার বুকের মাঝে ঝড় শুরু হয়ে যায়। বাবু কি শেষ পর্যন্ত আমার বিয়ের কথা বলতে এসেছেন না মাকে আমাদের সম্পর্কের কথা জানাতে এসেছেন। আমি আমার ব্যাগ নিয়ে আমার ঘরে চলে যাই। বিছানার ওপরে চুপ করে বসে থাকি, জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখি সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। এমন সময়ে মৈথিলী দরজার কাছে এসে দাঁড়ায়, “আমি ভেতরে আসতে পারি?” অনেক অনেক দিন পরে মৈথিলী আমার সাথে সেই প্রথম কথা বলেছিল। আমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে ওকে ঘরের মধ্যে আসতে বলি। আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, “কেমন আছো?” মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়, “আমি ভালো আছি, তুমি তোমার খবর বল?” আমি আমার মনের ভাব লুকিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম, “আমার খবর খুব ভালো, কলেজ ভালো চলছে, পড়াশুনা ভালো চলছে।” মৈথিলী আমার পাসে বসে আমার গালে হাথ দিতে জিজ্ঞেস করে, “আমি তোমার কলেজের কথা জিজ্ঞেস করছিনা পরী।” আমি ওর মুখের দিকে তাকাই। ওর চোখে সেই পুরানো অপমানের প্রতিশোধের ছায়া ছিলনা, সেই চোখে কেমন এক মমতা মাখা ছিল। ওর চোখের চাহনি আমার সব ব্যাথা ভুলিয়ে দিয়েছিল, আমার বুক কেঁপে উঠেছিল আনমনে। আমি ওকে কম্পিত স্বরে জিজ্ঞেস করি, “কি জানতে চাও তুমি?” গালে হাত বুলিয়ে আদর করে মৈথিলী, ওর হাতের ছোঁয়ায় যেন গলে গিয়েছিলাম আমি। আমাকে জিজ্ঞেস করে, “ও কেমন আছে?” আমি ওকে উত্তর দিয়েছিলাম, “ভালোই আছে, আজকাল দিল্লীতে চাকরি করছে।” আমি উত্তর দিয়েছিলাম বটে, মন জানত যেখানেই থাক, ভালো যেন থাকে। সেই সময়ে আমি মৈথিলীর আচরনে বিশ্বাস করে উঠতে পারিনি, কি চায় ও, সেটা বুঝে উঠতে পারিনি। মৈথিলী কি আমার সাথে আবার কোন খেলা খেলছে? আমরা দুজনে অনেক গল্প করেছিলাম, প্রায় এক বছর পরে আমরা দুজনে প্রান খুলে কথা বলেছিলাম। অনেক কথা হয়েছিল, কিন্তু আমি নিজের বুকের ব্যাথা ওর সামনে মেলে ধরতে পারিনি ওর সেই পুরাতন আচরনের কথা ভেবে। কিছু পরে মা আমাকে ডাক দিয়ে বলেন যে বাবু বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আমি নিচে এসে দেখি যে বাবুর খাওয়া শেষ। বাবু আমাকে জানালেন যে গরমের ছুটির পরে ছোটমা এসে আমাকে নিয়ে যাবে। আমি বাবুকে পায় হাথ দিয়ে প্রনাম করি। আমি বাবুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “তুমি মাকে কি বলেছ?” বাবু আমার মাথায় হাত রেখে বলেন, “যা কিছু বলেছি, সেটা তোমার ভালোর জন্যে বলেছি। তোমার মা তোমাকে সব কিছু বুঝিয়ে বলে দেবে, চিন্তা করোনা।” রাতের খাওয়ার পরে মা পান নিয়ে বসেছিলেন, আমি মায়ের কাছে এসে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “মা বাবু কি বলে গেলেন?” মা পান মুখে দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “তোর বাবু তোকে খুব স্নেহ করেন তাই না?” আমি মাথা নাড়াই, “হ্যাঁ তা করেন।” মা, “অর্জুন জানতে চেয়েছিলেন যে আমাদের বাড়ির ভাগ করা হয়েছে কি না, আর সেই ভাগের মধ্যে তোর কোন ভাগ আছে কি না।” মায়ের কথা শুনে আমার মাথা গরম হয়ে যায় প্রথমে, বাবু কি চান, বাবু ত আমার বাবা নন যে আমাদের বাড়ির ভাগে আমার অংশ আছে কি না জানতে চাইবেন। আমি মনের রাগ লুকিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “বাড়ির অংশ নিয়ে বাবু কি করবেন?” মা বলেন, “অর্জুন জানাতে এসেছিলেন যে, তোর অংশ বিক্রি করে সব টাকা তোর নামে ফিক্সড ডিপসিট করে দিতে চান, যাতে ভবিষ্যতে তোর পড়াশুনা বা বিয়ের পরে তোর কাজে লেগে যায়। তোর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই অর্জুন এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভেবেছেন।” আমার বুকের ওপরে থেকে যেন একটা বিশাল পাথর সরে যায়। মাঝে মাঝে ছোটমা আর বাবুকে বুঝতে বড় কষ্ট হয় আমার, সত্যি কি দিয়ে তৈরি এই দুজন মানুষ, হয়ত সব বাবা মা তার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য ঠিক এই রকম চিন্তা করে থাকেন, কিন্তু...? আমি আমার ঘরের দিকে পা বাড়ালাম, ঠিক সেই সময়ে দুষ্টু আমার ঘরে ঢুকে পরে। আমার দিকে একটু অভিমান ভরে তাকিয়ে থাকে। আমি ওর গালে আদর করি। আমার ওপরে যেন ওর অভিমান কমেনা, আমাকে জিজ্ঞেস করে, “অভি কাকু কেন আসেনি?” আমি ওর চুলে বিলি কেটে উত্তর দিয়েছিলাম, “ও বাঃবা, সেই জন্য এত রাগ।” দুষ্টু, “হ্যাঁ আমি তোমার ওপরে রেগে আছি। আমি তোমার সাথে কথা বলব না।” আমি হেসে ওকে জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলাম, “এত রাগতে নেই। আমিও ভালো ভালো রাজা রানীর গল্প জানি।” দুষ্টু শিশুসুলভ গলায় আমাকে বলে, “রাজা রানীর গল্প আমি জানি, আমি নতুন গল্প শুনতে চাই।” আমি নিজের মনকে শান্তনা দিয়েছিলাম, আমিও যে নতুন গল্প শুনতে চাই দুষ্টু। আমি কি করে তোর অভি কাকুকে তোর কাছে নিয়ে আসি বলত, আমি নিজেই যে ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। পরদিন সকালে আমি কল্যাণীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমি কল্যাণীর কাছে সেই “অপটিক্স নোটবুক” ফিরে চেয়েছিলাম। কল্যাণী আমাকে দেখে অবাক হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে, “তুই কবে এলি বাড়িতে? তোকে দেখে অনেক আলাদা লাগছে এবারে, কি ব্যাপার অভিমন্যুর খবর পেয়েছিস নাকি?”
23-02-2020, 09:39 PM
আমি খুশিতে নেচে উঠেছিলাম প্রায় আমি কি বলে ওকে আমার মনের ভাব বুঝাব সেটা ভেবে পাইনা। আমি সংবাদ পেয়েছিলাম যে ও আমার সাথে কোন ভাবে সম্পর্ক করবে। আমি ওর হাত দুটি ধরে একটু নেচে উঠে বলি, “আমি রিতিকাকে ফোন করেছিলাম। ও রিতিকাকে ফোন করে জানিয়েছে যে বাবুর কথা এক বিন্দুও বিশ্বাস করেনি। ও আমার সাথে কিছু করে হোক সম্পর্ক করবে। আমি খুব খুশি জানিস আমার খুব নাচতে ইচ্ছে করছে। ও যে আমার ওপরে বিশ্বাস হারায়নি সেটা যেনে আমি খুব আনন্দিত কল্যাণী।”
কল্যাণী আমার কথা শুনে খুব আনন্দিত হয়েছিল। ওর চোখ দুটি চকচক করে উঠেছিল। কল্যাণী, “হ্যাঁরে শয়তান মেয়ে, তুই খুব ইমসানাল। সত্যি তোর জীবন দেখে মনে হয় যেন এক বিশাল ঘূর্ণিবার্তা।” আমি ওর হাথ থেকে “অপটিক্স নোটবুক” নিয়ে বুকের ওপরে চেপে ধরেছিলাম। মনে মনে ওই পাতার প্রত্যেক অক্ষর বুকের রক্তের সাথে মিলিয়ে নিতে চেয়েছিলাম আমি। কল্যাণী আমাকে জিজ্ঞেস করে, “তুই এই ডায়রি নিয়ে কি করবি?” আমি ওকে জানাই, “আজ থেকে আমি এই ডায়রি লিখব, আমার কথা লিখব।” সেইরাত থেকে আমি আমার কথা লেখা শুরু করি। ও ইংরাজিতে ভালো, আমি বাংলায় আমার মনের কথা লিখতাম। ও চলে জোয়ার পরে আমার দিন দমদমের বাড়িতে কেমন কেটেছে সেই সব লিখতাম। কেমন আমার কলেজের দিন কেটেছে সেইসব স্মৃতি লিখেছিলাম আমি। সারা রাত জেগে আমি গত এক বছরের সব স্মৃতি লিখে ফেলি আমি। প্রত্যেক বাক্যের পরে আমি নিজেকে বলেছিলাম যে যখন আমাদের বয়স হবে তখন আমরা দুজনে মিলে এই ডায়রির পাতা একসাথে বসে পড়ব। লিখতে লিখতে আমি আমার টেবিলের অপরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে দরজায় একটা টোকা শুনে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমি চোখ খুলে দেখি যে আমি টেবিলে শুয়ে। তাড়াতাড়ি করে ডায়রি আমি লুকিয়ে ফেলেছিলাম। আমি চাইনি কেউ আমার মনের কথা জেনে ফেলুক আর আমাদের ভালোবাসার মাঝে এক নতুন বাঁধা হয়ে আসুক। পার্বতী বৌদি চলে যাবার পরে সুমন্তদা একদম অন্য মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন। খুব কম কথা বলতেন দাদা। দাদার কোন সন্তান ছিল না তাই ছোটবেলা থেকে দাদার সব ভালোবাসা দুষ্টুর ওপরে কেন্দ্রীভূত ছিল। প্রত্যেক দিন বিকেলে মাঠের থেকে ফেরার সময়ে সুমন্তদা দুষ্টুর জন্য ফল নাহয় মিষ্টি নিয়ে ফিরতেন। মাঝে মাঝে কাঁধে করে নিয়ে ঘুরে আসতেন মাঠের দিকে। একরাতে আমি আমার ঘরে বসে কলেজের পড়াশুনা করতে ব্যাস্ত ছিলাম সেই সময়ে দাদা আমার ঘরে এসে ঢোকেন। দাদার হাতে একটা কাঠের বাক্স। আমি সেই বাক্স চিনতে পেরে যাই, বড় বউদির গয়নার বাক্স। আমি দাদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “এটা কি?” দাদা আমকে বলেন, “তোর বৌদি এটা তোকে দিতে বলেছিলেন।” আমার কাছে এসে আমার মাথায় হাত রাখে দাদা, চোখের কোলে জল এসে গিয়েছিল দাদার, নজর লুকিয়ে জল মুছে আমার হাথে ওই বাক্স ধরিয়ে দেন। আমি অনাকে জিজ্ঞেস করি, “তুমি খুব ক্লান্ত দাদা, তুমি এখন কি করবে?” দাদা মাথার ওপরে ঘুরন্ত পাখার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলেন, “জানিনা এখন তবে একটা কিছু ভেবে রেখেছি, তোর বিয়ের জন্য অপেক্ষা করছি তারপরে দেখি কি করি।” আমি দাঁতে পেন ধরে দাদার দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করি যে দাদা কি করবেন, বাঁ কি ভেবে রেখেছেন নিজের জন্য। দিন যায়, প্রায় প্রত্যেক দিন মা আমাকে ওর কথা জিজ্ঞেস করে। একদিন আমি আর থাকতে না পেরে মাকে জিজ্ঞেস করি মা এত কেন বিচলিত ওকে নিয়ে। মা উত্তর দিয়েছিলেন, “কেন আমি ওর জন্য চিন্তা করতে পারি না? আমার নাতি হয়। কিন্তু একটা কথা আমি বুঝতে পারছিনা, যত বার আমি ওর কথা তোকে জিজ্ঞেস করি ততবার তুই আমার প্রশ্ন এড়িয়ে যাস, কেন বলত? সত্যি করে বল, অভি কোথায় আছে?” আমি মায়ের দিকে থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম, “ও এখন দিল্লীতে চাকরি করে।” আমি খুব বিরক্ত বোধ করতাম যখন কেউ আমাকে বারে বারে ওর কথা জিজ্ঞেস করত। আমি কি করে জানব আমার ভালোবাসা কোথায়, আমি নিজেই ওকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াই আমার চারপাশে। মা আমকে বললেন, “অনেক দিন ছেলেটার গলার আওয়াজ শুনিনি, মন কেমন করে ওঠে আমার। একবার ফোন করে দেখ না ওকে, আমি একটু কথা বলব?” আমি ধন্ধে পরে গিয়েছিলাম, কি বলব মাকে, ধিরে ধিরে মায়ের দিকে জল ভরা চোখে তাকাই। মায়ের তীক্ষ্ণ নজর আমার হৃদয় ভেদ করে দেয়। আমি মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে উত্তর দিয়েছিলাম, “আসলে, মা, ও এখন দেশের বাইরে।” আমার বিচলিত চোখমুখ দেখে মা আমার গালে হাত দিয়ে বলেন, “তুই সত্যি বলছিস না আমার কাছে কিছু লুকিয়ে রাখছিস।” আমি প্রায় কেঁদে ফেলি, কিন্তু মন শক্ত করে নিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম, “না মা, আমি সত্যি কথা বলছি। পরের বার আমাকে যখন ফোন করবে আমি ওকে জানিয়ে দেব তোমাকে ফোন করতে।” আমি সেইদিন জানতাম না, যে আদৌ ও আমার সাথে আর কোনদিন কথা বলবে কি না। আমি জানতাম না কি করে আমার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চলেছে। আমার সব থেকে বড় ভয় মায়ের প্রতিক্রিয়া কি হবে যখন মা জানতে পারবেন আমাদের ভালোবাসার সংবাদ, আমার মা কি আমাদের সম্পর্ক মেনে নেবেন না ছোটমায়ের মতন আমার ভালোবাসা প্রত্যাখান করে দুরে সরিয়ে দেবেন। এই সময়ে ও যদি আমার কাছে থাকত, তাহলে নিশ্চয় কিছু না কিছু উপায় ভেবে আমাকে সাহায্য করত, কিন্তু বিধি যে বাম, ও যখন আমার পাশে নেই তখন আমাকেই ওর মতন ভেবে কাজ করতে হবে। আমার প্রশ্ন একটু ঘুরিয়ে করতে হবে যাতে আমি মায়ের মনের ভাব বুঝতে পারি। বুকের মাঝে দুকদুক করতে শুরু করে, আমি মাকে জড়িয়ে ধরি দুহাতে। মা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “কিরে তুই কি আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে চাস?” আমি মাথা নাড়িয়ে বলেছিলাম, “হ্যাঁ মা।” মা আমার মুখের পানে চেয়ে জিজ্ঞেস করেন, “তোর বাবুর সাথে অভিমন্যুর কি কোন কথা কাটাকাটি হয়েছে?” মায়ের মুখে সেই প্রশ্ন শুনে আমি থমকে যাই, সত্যি তাহলে কি বাবু মাকে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছে? বুকের মাঝে হৃদপিণ্ড যেন থমকে দাঁড়িয়ে পরে, আমি মাকে জিজ্ঞেস করি, “এই রকম প্রশ্ন কেন জিজ্ঞেস করছ?” মা, “অর্জুন কে আমি অভিমন্যুর কথা জিজ্ঞেস করাতে, তোর বাবু আমাকে ঠিক করে উত্তর দিল না। শুধু মাত্র আমাকে বলে যে অভি দিল্লীতে চাকরি করতে গেছে।” আমি শ্বাস রুদ্ধ করে মায়ের কথা শুনি, কান লাল হয়ে ওঠে আমার। মনের উত্তাল তরঙ্গ কোন রকমে চেপে আমি মায়ের প্রশ্নের উত্তর দেই, “না মা, বাবুর সাথে ওর কোন ঝগড়া হয়নি। গ্রাজুয়েশানের পরে দিল্লীতে চাকরি খুঁজতে চলে গেছে।” মুখে পান নিয়ে মা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “কিন্তু কোলকাতায় চাকরি করতে পারত, দিল্লী কেন যেতে গেল?” আমি মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলেছিলাম, “ওসব তুমি বুঝবে না মা। কোলকাতায় কোন আইটি কম্পানি নেই তাই দিল্লী গেছে চাকরি খুঁজতে।” আমার গালে হাত বুলিয়ে মা জিজ্ঞেস করেন, “তুই আমাকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করবি বলছিলি?” আমি ভুলে গিয়েছিলাম আমি কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলাম, আমি এমনি মাকে জিজ্ঞেস করি, “মা ও তোমাকে শেষের দিনে কি বলে গেছিল?” মা ভুরু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন, “সে কথা তুই জেনে কি করবি?” আমি মাথা নিচু করে নিয়েছিলাম, বুকের মাঝে ধুকধুক করে ওঠে প্রবল ভাবে। মা আমার চিবুকে হাত রেখে মাথা উঁচু করে ধরেন নিজের দিকে, আমি নিজের চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলাম, চোখের পাতা জলে ভিজে গিয়েছিল। মা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “সত্যি করে বলত আমায়, অভি শুধু মাত্র চাকরির খোঁজে দিল্লী চলে যায়নি তাই তো।”
23-02-2020, 09:41 PM
ভাল লাগলে পরের পর্বটা দিব।
সাদা ঘোড়ার রুপকথা (#02)
23-02-2020, 10:46 PM
এরকম ইন্টারেস্টিং উপন্যাস না পড়ে থাকা যায়না, রেপুটেশন দিয়েছি, পরের পর্ব পোস্ট করবেন প্লিজ... আমি সিওর বাকিদেরও ভালো লাগবে যদি ভালোবাসার রাজপ্রাসাদ গল্পটা পড়ে থাকেন তারা
23-02-2020, 11:55 PM
Ohhh wow
25-02-2020, 10:30 AM
Please post next part, it's been while since no update
25-02-2020, 07:31 PM
অসাধারণ আপডেট। নিয়মিত আপডেট চাই দাদা।
26-02-2020, 11:51 AM
আপডেট দিন প্লিজ, এই গল্পটা অনেক খুঁজেছি কোথাও পাইনি, এভাবে অসম্পূর্ণ রাখলে অস্বস্তি হয়
26-02-2020, 02:15 PM
27-02-2020, 01:48 PM
দাদা সব একসাথে দিয়ে দেন না । ধৈর্য্য রাখা মুষকিল ।
27-02-2020, 06:39 PM
|
« Next Oldest | Next Newest »
|