Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )
আপডেট ৩১


সাবরিনা গত প্রায় তিন মাস ধরে দেশের বাইরে। দেশের সাথে ওর যোগাযোগ বলতে ফোনে ওর মা বাবা আর সাদমানের সাথে কথা বলা। সাদমান শুরুতে ওর সাথে এসেছিল একবার আর গতমাসে একবার। প্রথমবার সাত দিন ছিল। গত বার খালি উইকন্ডের দুই দিন। হংকং এ ওদের প্রতিষ্ঠানের এশিয়ান হেডকোয়ার্টার। সেখানে দেশের টপ পারফরমার হিসেবে তিন মাসের একটা এসাইনমেন্ট কাম ট্রেনিং এ আছে। আর তিন সাপ্তাহের মাঝে শেষ হয়ে যাবে। এরপর দেশে ফেরত যেতে হবে। এই সময় টা সাবরিনার জন্য বড় একটা দোলাচালের সময়। প্রফেশনাল এন্ড পার্সনাল লাইফে। এইটা একটা বড় সুযোগ প্রফেশনালি ওর জন্য। সারা ওয়ার্ল্ড থেকে ওদের প্রতিষ্ঠান বছরে তরুণ দশজন কে নিয়ে আসে হেডকোয়ার্টারে। তিন মাসের জন্য ট্রেইনিং দেয়, গ্রুমিং করে ফিউচার লিডারশিপ পজিশনের জন্য। বাংলাদেশ থেকে গত দশ বছরে মাত্র দুই জন এই প্রোগ্রামে আসতে পেরেছে। সাবরিনা সেকেন্ড জন। এই ট্রেইনিং এর কারণে ওর প্রমোশনের রাস্তা খুলে যাবে সামনে। আর নতুন আসার পর যে সব পলিটিক্সে পড়তে হয়েছিল সেগুলো কে এখন সহজে এড়ানো যাবে। আর পার্সনাল লাইফেও এই তিন মাস ওকে একটু স্থিরতা দিয়েছে। দেশ থেকে আসার আগের দুই মাস ওর জন্য একটা উথাল পাতাল সময় গেছে। এই সময়টাকে কিভাবে বর্ণনা করবে সেটার ভাষা ওর জানা নাই। এই দুই মাসের সাবরিনা কে ঠিক বর্ণনা করতে পারছে না সাবরিনা নিজেই। ওর ভিতরে লুকিয়ে থাকা অন্য এক মানুষ যেন বের হয়ে এসেছিল। সাবরিনার বাইরের ঠান্ডা শীতল  ব্যক্তিত্বের বর্ম ভেদ করে কৌতুহলী, এডভেঞ্চারাস এক সাবরিনা বের হয়ে এসেছিল। ইংরেজিতে বিভিন্ন চিজি রোমান্টিক নভেল পড়ার সময় ইরোটিক দৃশ্যে নিজেকে কল্পনা করলেও ওর সাহস সেই কল্পনা করা বা কোন কোন রাতে সেই কল্পনার সাহায্যে নিজের উত্তেজনার পারদ নামানো। এই টুকুই ছিল ওর দৌড়। কিন্তু মাহফুজ যেন ওর ভিতরের একটা অচেনা জায়গা উন্মোচন করে দিয়েছে। মাহফুজ নামটা মাথায় আসতেই কেমন যেন একটা  উত্তেজনার স্রোত বেয়ে যায় শরীর জুড়ে। অল্প কয়েক মাস আগেও এই নামে কেউ ছিল না সাবরিনার জগতে। আর অল্প কয়েকদিনের মাঝে সাবরিনার জগতটা উলটা পালটা করে দিয়েছে এই নাম।


গল্পে উপন্যাসে ফ্লিং বা ক্ষণিকের প্রেম নিয়ে বহু কিছু পড়েছে। কলেজ লাইফ না ভার্সিটির শুরুর দিকে ইংরেজি চিজি উপন্যাসগুলো পড়ত। সেখানের বইয়ের পাতায় টল ডার্ক হ্যান্ডসাম ছেলে গুলো কিভাবে যেন সুন্দরী বুদ্ধিমান নায়িকা গুলো কে প্রেমের এক নিষিদ্ধ জগতে নিয়ে ফেলত। যেখানে শুধু মন নয় শরীরও কথা বলে। এই সফট ইরোটিকা গুলো পড়ার সময় সাবরিনা একটা গোপন আনন্দ পেত নিজেকে ঐ নায়িকা গুলোর জায়গায় ভেবে। আবার পড়া শেষ হয়ে গেলে বান্ধবীদের সাথে সেই সব নায়িকাদের নিয়ে হাসত তাদের এমন প্রেমের জন্য যেখানে শরীর মন কে নিয়ন্ত্রণ করে। এত বছর পর সাবরিনার মনে হচ্ছে ও যেন সেই ইংরেজি চিজি উপন্যাস গুলোর নায়িকা আর মাহফুজ সেই টল ডার্ক হ্যান্ডসাম নায়ক। সাদমান ভাল ছেলে তবে ওর ভিতরে থাকা চাহিদাটা সাদমান কখনো ধরতে পারে নি। সেক্সে যে প্যাশন এগ্রেসিভনেস ও মনে মনে পার্টনারের কাছ থেকে আশা করে সাদমান কখনো সেটা ধরতে পারে নি। সাবরিনা আকার ইংগিত দিলেও সারাজীবন শিখে আসা নিয়ম কানুনের কারণে সেটা সরাসরি বলতে পারে নি বিয়ের এই কয় বছরে। আর মাহফুজ যেন ওর মাইন্ড রিড করতে পারে। অদম্য। যেভাবেই ফিরিয়ে দিক না কেন সাবরিনা আবার ঘুরেফিরে চলে আসে, সাবরিনা কে ঠিক আয়ত্ত্বে নিয়ে নেয়। সেক্সের সময় মাহফুজের প্যাশন, এগ্রেসিভনেস যেন সাবরিনার ভিতরে আর বরফ গলিয়ে দেয়। প্রতিবার যখন মাহফুজ থেকে দূরে সরে আসতে চায় ঠিক তখন মাহফুজের এই এগ্রেসিভনেস, প্যাশন ওকে উসকানি দেয় আরেকবার। মাত্র আরেকবার। প্রতিবার ওর মনে হয় আর মাত্র আরেকবার তারপর আর না। নিজেকে এমন একটা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কথা ভাবতেই পারে না সাবরিনা। ওর স্বপ্নের সেই এগ্রেসিভ পুরুষ হবার কথা ছিল সাদমানের। তবে সাদমানের রাখা শূণ্যস্থান নিয়ে মনে একটা অভিযোগ থাকলেও সেটা অন্য কোন পুরুষ কে দিয়ে পূরণ করার কথা কখনো ভাবে নি সাবরিনা। ওর মা বলে ভাল একটা সংসার মানে জামাই বউ দুইজনকেই কম্প্রোমাইজ করতে হয় ছোট বড় নানা বিষয়ে। সাবরিনা ভেবেছিল এটা এমন একটা কম্প্রোমাইজ। পেলে ভাল হত কিন্তু না পাওয়ার জন্য সম্পর্কের বাইরে পা বাড়াবে না কখনো। বিয়ে বা প্রেমের সম্পর্ক থাকার পরেও যারা বাইরে সান্নিধ্য খুজে তাদের এক প্রকার করুণার চোখে দেখত সাবরিনা। এরা সম্পর্কের মূল্য বুঝে না। নৈতিকতার দিক থেকে অনেক নীচুতে স্থান এদের। আয়নায় তাকিয়ে এখন সাবরিনা যেন নিজেকে সেই নৈতিকতার স্খলনের মাঝে দেখতে পায়। কিন্তু মাহফুজ যেন ওর জন্য ড্রাগ। সব মাদকে আশক্ত মানুষের মত ওর মনে হত এইবার খালি করে দেখি এরপর না। বুঝতে পারছিল প্রতিটা সংগম ওকে আর বেশি করে আশক্ত করে তুলছিল। তাই ওর দরকার ছিল একটা ক্লিন ব্রেক। যেখানে মাহফুজ ওকে সামনা সামনি এসে প্রলোভিত করতে পারবে না। এইজন্য মাহফুজের কামনায় যখন জ্বলছে সাবরিনা ঠিক সেই সময়ে অফিসের এই ট্রেইনিং ফেলোশিপের জন্য প্রতিযোগিতা করছিল। কারণ ওর দরকার ছিল দূরে যাওয়া যাতে এই ড্রাগের আশক্তি সাময়িক ভাবে কমে। অফিস কলিগ কাম বন্ধু সামিরা ওকে বলেছিল মাঝে মাঝে কোন কোন পুরুষের প্রতি প্রচন্ড আকর্ষণবোধ করে ও। এটা অনেক সময় আকর্ষণের যে সুস্থ মাত্রা আছে তার বাইরে। সাবরিনা জিজ্ঞেস করেছিল তখন এর থেকে বের হস কিভাবে? সামিরা বলেছিল সময়। সময়ের সাথে সাথে এই আকর্ষণের মাত্রাটা কমে আসে। এইজন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। সাবরিনা জানে সামিরা বিয়ে করে নি, বহুগামী। সামিরার নৈতিকতার  ব্যাপারে ওর অভিযোগ থাকলেও এই ব্যাপারে ওর থেকে যে সামিরা অভিজ্ঞ সেটা সাবরিনা জানে। তাই সাবরিনাও সময় ক্ষেপণের স্ট্রাটেজি  নিয়েছিল। তবে ও নিজের উপর আস্থা ছিল না। দেশে সামনা সামনি থাকলে মাহফুজের প্রতি ওর আকর্ষণ না কমে বরং আর বাড়তে পারে অথবা যতদিনে কমবে ততদিনে কোন বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই এই ট্রেইনিং ছিল ওর জন্য একটা গোল্ডেন অপরচুনিটি।


মাহফুজের সাথে নিজের সম্পর্কটা নিয়ে এই কয়মাস অনেক ভেবেছে সবারিনা। কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারে নি। কি নাম দিবে এর? কামের সম্পর্ক? কিন্তু মাহফুজ খালি সিনেমা বা চিজি বইয়ের সেই কাম সর্বস্ব নায়ক নয়। যে খালি দৌহিক সৌন্দর্য আর বিছানায় দক্ষতা দিয়ে মেয়েদের জয় করে চলে। মাহফুজের ভিতর আর অনেক কিছু আছে। পলিটিক্যাল লোকজনের প্রতি হাই মিডলক্লাস সোসাইটির বাকিদের মত ওর এক ধরণের অবজ্ঞা মিশানো দৃষ্টিভংগী ছিল। মাহফুজ যেন ওর কল্পনার চোখে দেখা এভারেজ পলিটিক্যাল লোকদের থেকে আলাদা। সৌন্দর্য মানুষ জন্ম থেকে পায় তাই সেটাতে হয়ত মাহফুজের বেশি কোন কৃতিত্ব নেই কিন্তু বাকিসব? ছেলেটা ছবি তুলতে জানে, শুধু শুধু মেয়ে পটানোর জন্য একটা ডিএসএলয়ার কিনে ঘুরে বেড়ানো না প্রপার ফটোগ্রাফি। ক্যামেরার এংগেল, আলোছায়া এইসব নিয়ে রীতিমত পড়াশুনা করেছে। বই পড়ে। ওর মত অত না হলেও এভারেজ থেকে অনেক বেশি। মুভি আর সিরিয়ালের রুচি রীতিমত প্রশংসনীয়। যে কোন সমস্যায় পড়লে ঠান্ডা মাথায় এর একটা সল্যুশন বের করে। দেশের সেরা ম্যানেজমেন্ট স্কুল আইবিএতে পড়া সাবরিনা এতদিন ভাবত স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং এ সে নিজে দূর্দান্ত। কিন্তু স্বপ্নেও কখনো ভাবে নি এই বিষয়ে কোন রকম পড়াশুনা না করা কেউ কিভাবে কমনসেন্স দিয়ে সমস্যার সঠিক সমাধান খুজে বের করছে। ওর অফিস পলিটিক্স  নিয়ে ওকে যা যা পরামর্শ দিয়েছে সেগুলো দারুণ কাজ করেছে ওর জন্য। আবার অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন ছেলে কে ও দেখেছে মেয়েদের অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে আর নিজেকে উচ্চমার্গীয় কিছু একটা ভাবে। মাহফুজের মধ্যে সেটাও নেই। মাহফুজ  বরং ওর সাথে কথা বলার সময় মনযোগ দিয়ে শুনে, জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয় না। এইসব ভাবতে ভাবতে সাবরিনার মনে হয় ও কি মাহফুজের প্রেমে পড়ে আছে? একটু আতকে উঠে সাবরিনা। কামের চাইতে এইসব পরিস্থিতিতে প্রেম ভয়ংকর। কমনসেন্সে এইটা বুঝে সাবরিনা। কাম একদিন মরে যায়, প্রেমে বেচে থাকে বহুকাল। এমন কি মরে গেলেও গভীর চিহ্ন রেখে যায় জীবনে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩০ (১)) - by কাদের - 17-04-2024, 04:22 PM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)