Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )

সাফিনার আজকের প্রোগ্রামে একদম যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না। তবে আমজাদ ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে। আমজাদ ভাই মিজবাহ এর ক্লোজ ফ্রেন্ড। উনার মেয়ে নাবিলা কে একদম ছোটবেলা থেকে দেখে আসছে সাফিনা তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। আজকাল কেন জানি মানুষজনের ভীড়ে খুব একটা যেতে ইচ্ছা করে না। সাফিনা যথেষ্ট মিশুক মানুষ তবে গত কয়েকমাস ধরে এক ধরণের অবসাদে ঘিরে ধরেছে। মানুষজনের সংগ, অহেতুক আড্ডা, গসিপ এইসব কেন জানি আর খুব একটা টানে না। সাইকোলজিস্ট এর কাছে যাচ্ছে কিছুদিন ধরে। প্রাথমিক ভাবে সাইকোলজিস্ট বলেছে ডিপ্রেশনের ফার্স্ট স্টেজে আছে সাফিনা করিম। কিছু টাস্ক দিয়েছে সাইকোলজিস্ট। নিজ থেকে অন্যদের সাথে কথা বলা। বই পড়া বা গান শোনা বা প্রিয় মানুষদের সাথে সময় কাটানো। বই পড়তে বা গান শুনতে ভাল লাগে সাফিনার। তবে কতক্ষণ বা বই পড়া বা গান শোনা যায়। প্রিয় মানুষদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ যেন কমে এসেছে। মেয়ে দুইটা এই মূহুর্তে দেশে নাই। নুসাইবা অদ্ভূত এক ঝামেলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ওকে পাওয়া সম্ভব না। আর মিজবাহ আর বেশি করে যেন অফিসের কাজে জড়িয়ে পড়ছে। বন্ধু বান্ধবরা সবাই যার যার কাজে আর পরিবারে  ব্যস্ত। ওদের পাওয়া কঠিন। সব মিলিয়ে সাইকোলজিস্ট এর পরামর্শ যে খুব একটা কাজে লাগাতে পারছে তেমন না। তবে আজকে এই বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে একদিন থেকে একটা লাভ হবে। পরিচিত অনেক কে অনেকদিন পর দেখা যাচ্ছে। সবার সাথে একটু গল্প হলে ভাল লাগবে হয়ত। সাইকোলজিস্ট এর দেওয়া টাস্ক এর একটা অন্তত পুরো করা হবে, নিজেকে নিজেই বলে নুসাইবা।


নতুন একটা জামদানি পড়ে এসেছে আজকে। একদম পাট ভাংগা শাড়ি। সাবরিনা দিয়েছে। সাবরিনা জানে ওর মায়ের শাড়ির প্রতি দূর্বলতা। তাই এত দামি একটা জামদানী কিনে দিয়েছিল। পচিশ হাজার টাকা। হালকা নীলের উপর কাল রঙের কাজ করা। সাবরিনা বলেছিল, মা তোমার ফর্সা রঙের সাথে এইটা দারুণ মানাবে।শাড়িটা পরে রুমের বড় আয়নাতে নিজেকে ঘুরে ফিরে দেখে সাফিনা। মেয়ে দুইটা কেউ ওর হাইট পায় নি, দাদা বাড়ির মেয়েদের হাইট পেয়েছে। সাফিনা পাছ ফুট ছয় ইঞ্চি। মিজবাহ পাচ আট। শাড়ি পড়ার পর হিল পড়লে আর লম্বা লাগে। সেইদিন এক অনুষ্ঠানে মিজবাহের এক মেয়ে কলিগ হাসতে হাসতে বলেছিল আপনাকে দেখলে আর স্যার কে দেখলে মনে হয় স্যার বুঝি বাল্য বিবাহ করেছিল। নাইলে বিয়ের এত বছর পর কিভাবে আপনাকে এত কম বয়স্ক আর এত সুন্দরী দেখায়। সাফিনার ঠোটের কোণায় হাসি জমে উঠে। অনেকেই এই ভুলটা করে। মিজবাহ আর ওর বয়সের অনেক তফাত ভাবে মানুষজন কিন্তু আসলে ওদের বয়সের তফাত মাত্র ছয় বছর। মিসবাহ এখন ৫২। তবে কর্পোরেটে চাকরির অনেক প্রাপ্তির একটা হল মিজবাহ এর মধ্য প্রদেশে একটা সুন্দর ভুড়ি জন্ম নিয়েছে। অবশ্য মিজবাহ কে অত খারাপ লাগে না ভূড়ির জন্য, মিজবাহর হাইট খারাপ না। ছোটখাট লোকদের ভূড়ি হলে বাজে দেখায়, মিজবাহ কে  বাজে দেখায় না বরং একটা আভিজাত্য যোগ করেছে সেই ভূড়ি। মিজবাহ মজা করে বলে বনেদী ভূড়ি। তবে খারাপ না দেখালেও ভূড়ি যেটা করেছে সেটা হল মিজবাহ এর  বয়স বেশি দেখায় এই ভূড়ির জন্য। আর তার উপর মাথায় একটা টাক পড়েছে। মিজবাহদের ফ্যামিলির ছেলেদের এইটা বৈশিষ্ট্য। ওর শ্বশুড়ের দেখেছে। ওর দেবরদের তো মিজবাহ থেকে ছোট হবার পরেও এর আগে টাক পড়েছে। সব মিলিয়ে মিজবাহ কে দেখে অনায়েসে ষাট বলে মনে হয়। অন্য দিকে সাফিনা নিজেকে আয়নায় দেখে। সবাই বলে সাফিনা কে ৩০ থেকে ৩৫ এর মাঝে কিছু একটা মনে হয়। ফলে অনেকেই ধরে নেয় মিজবাহ ওকে বুঝি ১৪/১৫ বছর বয়সে বিয়ে করেছে। হাসে সাফিনা।


নুসাইবাও সাফিনা কে দেখলে সব সময় বলে তুমি থাকলে আমাকে কেউ আর দেখে না ভাবী। এই জন্য তোমার সাথে কোথাও যেতে ইচ্ছা করে না। যদিও নুসাইবা এইসব দুষ্টমি করে বলে তবে সাফিনা জানে ওকে প্রায় নুসাইবার থেকে কম বয়সী ভাবে অনেকে। নুসাইবা আর ওর ওজন প্রায় সমান কিন্তু নুসাইবা থেকে সাফিনা লম্বা হওয়ায় সাফিনা কে আর স্লিম দেখায়। যদিও নুসাইবাকেই তার নিজের বয়স থেকে কম দেখায় তারপরেও এইসব কারণে সাফিনা কে মনে হয় তার থেকে কম বয়সী। অন্য সময় হলে এই শাড়ি পড়ে নুসাইবা কে একটা ভিডিও কল দিত দেখানোর জন্য। এখন পরিস্থিতির কারণে দিতে পারছে না। কোথায় কিভাবে আছে কে জানে নুসাইবা। অবশ্য ফোন দিলে কি বলত জানে সাফিনা। ভাবীর সাথে মজা করার সুযোগ পেলে ছাড়ে না কখনো নুসাইবা। ফোন ধরেই বলত কি সুন্দরী নিজেকে সৌন্দর্য দিয়ে আমাকে জ্বালাতে ফোন করেছ। নুসাইবার কথা ভেবে হাসে সাফিনা। কাউকে দেখাতে ইচ্ছা করছে শাড়িটা। মিজবাহ কে বলা বেকার। ফোন থেকে মুখ তুলে একবার তাকিয়ে বলবে ফ্যান্টাসটিক। এই বলে আবার ফোন চোখ গুজে দিবে। সাবরিনা শাড়িটা দিয়েছিল তাই ওকেই ফোনটা করে।  সাবরিনা কে ভিডিও কল দিল শাড়িটা দেখানোর জন্য। ফোনে সাফিনা কে শাড়িটা পড়া দেখতেই সাবরিনা বলে উঠল মা তোমাকে একদম পরীর মত সুন্দর লাগছে। আব্বু তোমাকে কেন বিয়ে করছে আমি বুঝতে পারতেছি এখন। এই বলে একটা হাসি দিল। মেয়েরা বড় হলে অনেকটা বান্ধবীর মত হয়ে যায় তাই সাবরিনার কথায় হালকা লজ্জা পেলেও আর কিছু বলল না সাফিনা। অস্ফুট স্বরে বলল তোর বাবার আর আমাকে দেখার সময় কই। অফিস আর কাজের বাইরে মানুষটা আজকাল আর কিছু চিনে বলে মনে হয় না। সাবরিনা বলে বিলিভ মি মা, আব্বু আজকে তোমাকে দেখলে মাথা ঘুরে পড়ে যাবে। সাফিনা বলে দুষ্টমি রাখ তো। সাবরিনা বলে তুমি তো আমার কথা বিশ্বাস করবা না, দাড়াও তোমার ছোট মেয়ে কে কনফারেন্স কলে আনি। কয়েক সেকেন্ড পর সিনথিয়াও হাজির হয় কলে। সাবরিনা বলে দেখ সিনথি, শাড়িটা কেমন। সিনথিয়া বলে গর্জিয়াস মা। দারুণ, কোথা থেকে কিনেছ। আমি দেশে আসলে পড়ব। সাবরিনা ফোনে বলে আমি কিনে দিয়েছি। সিনথিয়া এইবার চোখ উলটে বলে ও আচ্ছা, এই জন্য বলি এই সাধারণ শাড়িটা এত সুন্দর লাগছে কেন, আসলে তো আমার সুন্দরী আম্মু পড়েছে দেখে এত সুন্দর লাগছে। সাবরিনা ঝাড়ি দেয় ফোনে, সাধারণ শাড়ি মানে? শাড়ি চিনিস না বুঝিস? সাফিনা মেয়েদের কথা শুনে হাসে। বড় হয়ে গেলেও এদের খুনসুটি গেল না। সিনথিয়া যেমন দূরন্ত সাবরিনা তেমন শান্ত। তবে সিনথিয়ার জানে কিভাবে বড় বোন কে রাগিয়ে দিতে হয়, সেই দুই বছর বয়স থেকেই সাবরিনা কে রাগিয়ে দেওয়া সিনথিয়ার মজার একটা খেলা। তবে সাবরিনাও ছাড়ে না। বড় বোন সুলভ ঝাড়ি দিতে। সিনথিয়া যে শাড়ির কিছু বুঝে না সেই ব্যাপারে ঝাড়া এক মিনিট লেকচার দিয়ে দেয়। সিনথিয়া ফোনে বলে মা, তোমার বড় মেয়ে কে থামাও। পুরো সেমিস্টারে আমি সব কোর্সে যে পরিমান লেকচার শুনেছি তোমার মেয়ে এক শাড়ি নিয়ে আমাকে এর থেকে বেশি লেকচার দিচ্ছে। সাফিনা অন্য সময় দুই মেয়ের এই সব ঝগড়াঝাটিতে বিরক্ত হয় তবে আজকে মনে মনে খুশি হয়। দুই মেয়ের এই স্বভাবসুলভ খুনসুটিতে মনে হয় বাড়ি যেন আগের মত সরগরম হয়ে উঠেছে। তাই কপট একটা রাগের ভংগি করে বলে এই তোরা থাম তো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা আয়নার দিকে তাক করে বলে, আমাকে এই শাড়িতে কেমন লাগছে বল তো? সিনথিয়া মুচকি হেসে ওর বাবা কে নকল করে বলে ফ্যান্টাসটিক। সাবরিনা, সাফিনা দুই জনেই হেসে দেয়। সিনথিয়া ওর বাবার যেমন প্রিয় ঠিক তেমন করে ওর বাবা কে নকল করতে পারে। সাফিনা বলে ঠিক করে বল।


সাবরিনা বলে সত্যি মা, তোমাকে আজকে ফ্যান্টাসটিক দেখাচ্ছে। সিনথিয়া স্বভাবসুলভ দুষ্টমী স্বরে বলে, আজকে বিয়ে বাড়িতে গেলে দেখবা সবাই খালি তোমাকে দেখছে। আব্বুর ঐ ফ্রেন্ডটার নাম জানি কি? তোমাকে দেখলে যে খালি ফ্লার্ট করে? সাফিনা বলে, নিজাম ভাইয়ের কথা বলছিস। সাবরিনা বলে হ্যা নিজাম আংকেল। আজকে দেখবা আর সবাই কে বাদ দিয়ে খালি তোমার সাথে কথা বলছে। সাফিনা বলে বড় দুষ্ট হইছিস। সাফিনা বলে আচ্ছা রাখ তোদের ফালতু সব কথা। ঐদিক থেকে মিজবাহর গলা শোনা যায়। রেডি হইছ? আর কত পড়ে যাবা? আর পরে রওনা হলে গিয়ে দেখবা বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ। সাফিনা  বলে রাখি এখন, তোদের বাপ তাড়া দিচ্ছে। পরে কথা হবে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৯) - by কাদের - 31-03-2024, 11:56 PM



Users browsing this thread: 19 Guest(s)