Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )
নুসাইবা যখন পার্সপোর্ট দেখিয়ে ভিতরে ঢুকছে তখন নুসাইবার মনে একটা বড় ধরনের বোঝা নেমে গেল। মনে হল বুঝি একটা বড় বিপদ একটুর জন্য এড়িয়ে গেল। মুন্সী ম্যানেজার আর ওকে ঝামেলা করতে পারবে না। আবার মনের ভিতর একটা খচ খচ করছে। মাহফুজ। মাহফুজ কে নিয়ে ও কি করবে? মাহফুজ কে বেশ ম্যাচিওর ভাবে শক্ত গলায় সিচুয়েশন বুঝানোর চেষ্টা করলেও মাহফুজ কতটুকু বুঝেছে সেটা নিয়ে ওর মনে সন্দেহ হচ্ছে। মাহফুজ যেভাবে ওকে কিছু কথা বলল যদিও এগুলো সত্য কিন্তু সেগুলো বিপদজনক, তাতে নুসাইবার মনে হচ্ছে নির্বাচন শেষ হলেও ওর ঝামেলা বুঝি শেষ হবে না। মাহফুজের চোখে লাইনে দাঁড়ানো যে দৃষ্টি দেখেছে এটা দৃষ্টি ও চিনে। মুগ্ধ নয়নের দৃষ্টি। এটাকী ইনফেচুয়েশন নাকি প্রেম? দুইটাই বিপদজনক। নুসাইবার জন্য, মাহফুজের জন্য। আর আজকে মাইক্রোর ভিতর যে নিয়ন্ত্রনহীন উদ্যোম প্রেম এটাও নুসাইবা কে কাপিয়ে দিয়েছে। নিজেই যেন এই নুসাইবা কে চিনে না। কিন্তু এখন এইগুলা নিয়ে ভাবার সময় নেই। আপাতত আগে দেশ থেকে বের হতে হবে। এরপর বাকি সব। হাতের পার্সপোর্ট দেখিয় ভিতরে ঢুকে গেল। ভিতরেও একটা বেশ বড় লাইন। ঢুকলেই একটা স্ক্যানারে ব্যাগ স্ক্যান করে ভিতরে ঢুকতে হয়। দালালরা এখানেও জটলা পাকিয়ে রেখেছে টাকার জন্য। নুসাইবা অপেক্ষা করে সামনের বাকি লোকেরা নিজেদের ব্যাগ স্ক্যানারে দিলে ও নিজের  ব্যাগ দিবে। লোকজন স্ক্যান করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ছেলে আর মেয়েরা দুইটা ভিন্ন ভিন্ন লাইনে। সবাই কে বডি স্ক্যান করা হচ্ছে। মেয়েদের জায়গাটা একটা পার্টিশন দিয়ে আলাদা করা। নুসাইবার সামনে দিয়ে একজন মহিলা আছে। হাতে থাকা টিকেটের প্রিন্ট আউট হাত থেকে এই সময় পড়ে গেল। নিচু হয়ে তুলে উঠে দাড়াবার সময় চোখ চলে গেল পার্টিশনের পাশ দিয়ে সামনে। দুই তিনজন লোক দাড়িয়ে আছে। দুইজনের হাতে ওয়াকিটকি। গলায় এয়ারপোর্টের স্টাফদের যেমন এক্রিডেশন কার্ড ঝোলানো থাকে তেমন। অন্যজন্যের হাতে বা গলায় কিছু নেই কিন্তু এই লোকের মুখ নুসাইবার নজর কেড়ে নিল। সাইকোলজিস্ট আদিবা রহমানের রুমে দেখা সেই মুখ, যে কিনা ওকে ফলো করে সিংগারের শো রুম পর্যন্ত গিয়েছিল। নুসাইবা যেন সেখানেই জমে যায়। দাঁড়ানো আর বসার মাঝে একটা ভংগিতে তাকিয়ে থাকে লোকটার দিকে। ওরা পার্টিশনের ভিতর থেকে যে যে চেক করে বেড়োচ্ছে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। একজন বেড়োতেই লোকটা না সূচক মাথা নাড়ল। অপর দুইজন কিছু না বলে তাকিয়ে আছে। নুসাইবার মনে পড়ে মাহফুজ ওকে বলেছিল এই লোকটা সম্ভবত মুন্সীর লোক। কারণ ওকে এমনিতেই ম্যানেজারের লোকেরা প্রটেকশন দিয়ে রেখেছিল তাহলে আর কেউ ওকে ফলো করলে সেটা মুন্সীর লোক হবার চান্স বেশি। মুন্সীর নাম মাথায় আসতেই নুসাইবার শরীরের যেন সব শক্তি হারিয়ে ফেলল। এতদূর এসে মুন্সীর হাতে কোন ভাবেই পড়া যাবে না। মুন্সী যেভাবে যবার সময় একটা কুৎসিত হাসি দিয়ে বলছিল এরপর আবার দেখা হবে আর দেখা হলে বাকিটা উসুল করে নিবে সেইটা ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠল নুসাইবার। মনে হল এয়ারপোর্টের মাটিতেই বমি করে দিবে। লোকটাকে দেখেই ওর মনে হল মুন্সীর হাত যেন ওর শরীরে হাত দিচ্ছে। নুসাইবা মনের ভিতর সব শক্তি এক করে দাড়ানোর চেষ্টা করে। ক্যাপ্টেন অফ মাই সোল, মাস্টার অফ মাই ফেট।

নুসাইবার সামনের মহিলা পারটিশনের ভিতর ঢুকেছে স্ক্যান করেছে। এরপর ওর পালা। নুসাইবা তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেয়। এখন আর সামনে যাওয়া যাবে না। স্ক্যান করানো হলেই ঐদিক দিয়ে বের হতে হবে। আর বের হলেই ঐ লোকের সামনে পড়তে হবে। নুসাইবার মনে কোন সন্দেহ নাই ঐ লোক মুন্সীর লোক। এত কোনইন্সিডেন্স হতে পারে না। সব জায়গায় এই লোক থাকতে পারে না। নুসাইবা পিছনের মহিলা কে  বলে আপনি আগে যান। মহিলা জিজ্ঞেস করে আপনি যাবেন না। নুসাইবা বলে আমি একটা জিনিস ফেলে আসছি বাইরে। আগে ঐটা গিয়ে  নিয়ে আসছি। নুসাইবা হন্তদন্ত হয়ে বের হয়ে যেতে থাকে। গেটের কাছে একজন জিজ্ঞেস করে কই যান। এদিক দিয়ে বের হওয়া যাবে না। নুসাইবা বলে আমি একটা ব্যাগ ফেলে এসেছি। লোকটা বলে সাথে করে পার্সপোর্ট নিয়ে বের হন। আবার ঢোকার সময় লাগবে। নুসাইবা থ্যাংকিউ বলে বের হয়ে আসে। নুসাইবার হাত পা কাপছে। কই যাবে? ওর কাছে ফোন নেই। মাহফুজ কে কিভাবে খুজে বের করবে? বার বার ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকাচ্ছে। দরজা দিয়ে কেউ বের হবে কিনা। নুসাইবার মাথায় কিছু ঢুকছে না। কি করবে এখন।


মাহফুজ ঠিক এই মূহুর্তে কি করা যায় ভাবছিল। ওর আসল ফোন বাসায় রেখে এসেছে সোলায়মান শেখের নির্দেশে। যাতে পরে কেউ চাইলেও ওকে এই ঘটনার সাথে ফোন ট্রেস করে কানেক্ট করতে না পারে। ফলে এখন ওর কাছে কার নাম্বার নাই। ওর পরিচিত কয়েকজন লোক এয়ারপোর্ট আছে কিন্তু নাম্বার না থাকলে এইখানে এত দ্রুত কাউকে খুজে বের করা অসম্ভব। ও কয়েকবার ভিতরে ঢুকার চেষ্টা করল কিন্তু পাসপোর্ট না থাকলে হবে না। টাকা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। মাঝে মাঝে বেশি কড়াকড়ি হয়। আজকে সম্ভবত এমন কিছু হচ্ছে। মাহফুজ এইবার অন্য বুদ্ধি বের করল। মাঝে অনেক দালাল আছে কোন ছুতোয় মানুষের কাছ থেকে টাকা বের করার ধান্দা। যদিও প্যাসেঞ্জারের সাথে আসা লোকেদের ভিতরে ঢুকতে দেয় না সহজে কিন্তু এই দালালরা অবলীলায় আসছে যাচ্ছে। এদের কেউ পাসপোর্ট চেক করছে বলে মনে হয় না। এরা যেন অদৃশ্য সিস্টেমের রাডারে। মাহফুজ এমন একজন কে ধরল। তাকে খুব ভালভাবে বুঝাল কাতার এয়ারওয়জের লাইনে গিয়ে নুসাইবা করিম নামে একজন কে খুজে বের করতে হবে, যাকে গিয়ে একটা কাগজ দিতে হবে। মাহফুজ একটা কাগজে খালি লিখে দিয়েছে মুন্সী নোজ, কাম ব্যাক আউটসাইড। সাইন করেছে খালি একটা এম লিখে। মাহফুজ আশা করছে এই কাগজ দেখলে নুসাইবা বুঝতে পারবে। আর এই লোককে অলরেডি পাচশ টাকার একটা নোট দিয়েছে , কাজ করে দিতে পারলে আর দুই হাজার টাকা দিবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এই লোক যদি এই পাচশ টাকা নিয়ে হাওয়া হয়ে যায় কিছু করার নেই তবে মাহফুজ এখন ডেসপারেট। যে কোন কিছু ট্রাই করে দেখতে হবে। কারণ যদি মুন্সীর লোকেদের হাতে নুসাইবা পড়ে তাহলে সেখান থেকে ওকে উদ্ধার করা মাহফুজের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। অন্তত কিছু শক্ত পলিটিক্যাল ব্যাকিং না পেলে। যেটা এই মূহুর্তে অসম্ভব মনে হচ্ছে। লোকটা মাহফুজ কে বলল সে ঝড়ের বেগে যাবে আর ম্যাডাম কে খুজে বের করে আনবে। মাহফুজ একটু উদভ্রান্তের মত ভিড়ের মাঝে হাটছে আর দরজার দিকে তাকাচ্ছে। হঠাত করে মনে হল লোকটার ফোন নাম্বার নিয়ে রাখা হয় নি। ফোন দিয়ে কথা বলা যেত নুসাইবা কে পেল কি পেল না। নিজের উপর রাগ হল মাহফুজের। নরমালি এমন ভুল করে না মাহফুজ। সদা সতর্ক। কিন্তু অনেক সময় বিপদ মাথার স্বাভাবিক চিন্তাধারা উলটে দেয়। মাহফুজ যখন নিজেকে নিজে গালিগালজ করছে মনে মনে ঠিক তখন কেউ একজন পিছন থেকে ওর কাধ ধরে ঝাকি দিল। মাহফুজ বিরক্ত হয়ে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকিয়ে দেখে নুসাইবা। হাফাচ্ছে। চোখ  গুলো বড় বড়। কপালে ঘামের চিহ্ন। হঠাত করে মাহফুজের মনে হল ওর সারা শরীরে থেকে যেন কয়েক মন ওজন নেমে গেল। মাহফুজ হঠাত করে নুসাইবা কে জড়িয়ে ধরল। ঢাকা শহরের অন্যখানে হলে লোকে চেয়ে দেখত একজন ছেলে একজন মেয়ে কে জড়িয়ে ধরলে। এয়ারপোর্ট এইটা নরমাল ব্যাপার। বিদায় নেবার সময় সবাই সবাই কে জড়িয়ে ধরে। অন্য সময় যেখানে জামাই পাশাপাশি দাঁড়ায় না সেখানে এয়ারপোর্টে বিদায়বেলায় পরিবারের সবার সামনে একে অন্যেক জড়িয়ে ধরে। তাই নুসাইবা মাহফুজের দিকে কেউ তাকায় না। হাজার বিদায় দিতে আসা কাপলের মত ওদের কে আরেকজোড়া কাপল ভেবে নেয় আশেপাশের সবাই। মাহফুজ নুসাইবা কে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় টের পায় নুসাইবা ওকে বলছে মাহফুজ ছাড়। বিপদ হয়ে গেছে। মুন্সী টের পেয়ে গেছে।


নুসাইবা তখন ভিতর থেকে বাইরে বের হয়ে আতংকে হাফাচ্ছে। মুন্সীর হাতে কোনভাবে পড়া যাবে না। আবার এয়ারপোর্ট থেকে কিভাবে বের হবে বুঝতে পারছে না। যেভাবেই হোক একটা কিছু করতে হবে। নুসাইবা হঠাত টের পায় ওর হ্যান্ড লাগেছ রয়ে গেছে ভিতরে স্ক্যানার মেশিনে উঠিয়ে দিয়েছিল। বডি স্ক্যান করার পর নিজের ব্যাগ কালেক্ট করতে দেয়। ব্যাগ ফেলেই মুন্সীর লোকের ভয়ে বাইরে  বের হয়ে এসেছে। তবে ভাগ্য ভাল ওর হাত  ব্যাগ ওর সাথে আছে। এখানে ডলার আর পাউন্ড আছে  বেশ কিছু। অল্প কিছু দেশী টাকা থাকতে পারে। যদি মাহফুজ চলে যায় তাহলে এখান থেকে কোন সিএনজি বা ক্যাব ভাড়া করে যেতে হবে। কই যাবে? নিজের বাসা? প্রশ্ন উঠে না। ভাইয়ার বাসা? ভাইয়াদের বিপদে ফেলা হবে? আর কোথায় যাওয়া যায়? নুসাইবার মাথায় ঢুকছে না কিছু। সময় যাচ্ছে দ্রুত। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নাহলে বলা যায় না মুন্সীর লোকেরা বাইরে চলে আসতে পারে ওর খোজে। এই সময় হঠাত একটা পরিচিত মুখ দেখল ভীড়ের মাঝে। ইতস্তত ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। একপ্রকার ছুটে গেল নুসাইবা ভীড় ঠেলে। দুইবার ডাকল মাহফুজ, মাহফুজ। চারদিকের শব্দে শুনল বলে মনে হয় না। কাধ ধরে ঝাকি দিতেই মাহফুজ উলটা ঘুরে তাকাল। চোখেমুখে রাজ্যের বিরক্তি। নুসাইবা কে দেখে সেইখানে প্রথমে বিস্ময় আর এরপর একটা দারুণ হাফছেড়ে বাচার ভংগী উঠে আসল। নুসাইবা যখন মাহফুজের মুখ ভংগী ডিকোড করছে তখন কিছু বুঝে উঠার আগেই মাহফুজ ওকে জড়িয়ে ধরল। কি শুরু করল ছেলেটা? মনে মনে ভাবে নুসাইবা। কামের তাড়নায় কি একবারে পাগল হয়ে গেল? এইভাবে সবার সামনে ওকে জড়িয়ে ধরার মানে কি। আর অনেক দরকারী কাজ বাকী। মুন্সী খুজে পেলে ওদের জীবন নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। তাই নুসাইবা বলে মাহফুজ ছাড়। বিপদ হয়ে গেছে। মুন্সী টের পেয়ে গেছে।


মুন্সীর নাম মাহফুজ কে আবার সচেতন করে তুলে। বেশি সময় নেই। এখনি এখান থেকে বের হওয়া দরকার। মাহফুজ নুসাইবা কে বলে তাড়াতাড়ি চুলুন, এই বলে গাড়ির দিকে দুইজন হাটা দেয়। নুসাইবার হাত মাহফুজের হাতে। নুসাইবা কিছু বলে না। এই ভীড়ের মাঝে মাহফুজ ভীড় ঠেলে এগুচ্ছে আর নুসাইবার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। গাড়িতে উঠার সময় জিজ্ঞেস করল আপনার ব্যাগ? নুসাইবা বলল ভিতরে রয়ে গেছে। মাহফুজ বলল আর আনার সময় নেই। চলুন। পরে বাকি সব ব্যবস্থা করা যাবে। নুসাইবা মাহফুজের গাড়ি যখন এয়ারপোর্টের র‍্যাম্প থেকে নিচে নামছে ঠিক তখন মুন্সীর গাড়ি এসেছে থেমেছে এয়ারপোর্টে। দাবার বোর্ডের শক্তিশালী দুই ঘুটির একটুর জন্য দেখা হল না।



(বাকি অংশ পরের পৃষ্ঠায়) 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৭) - by কাদের - 05-01-2024, 12:56 AM



Users browsing this thread: BlackNus, 14 Guest(s)