Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )


সাফিনা বসে ওয়েট করছে।  একটা ওয়েটিং রুমের মত জায়গা। গত কয়েক মাস ধরে মাসের জোড় সাপ্তাহের মংগলবার এখানে আসেন সাফিনা করিম। দেড় ঘন্টার সেশন হয়। ঢাকার উঠতি বড় সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলরদের একজন আদিবা রহমান। ঢাকায় সবাই সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলর বলতে ****** কে বুঝায়। উনার কাছে শিডিউল পাওয়া কঠিন। তাই আরেকটু খোজ করে আদিবা রহমানের খোজ পেয়েছেন। অপেক্ষাকৃত তরুণ। বয়স ৪০ এর আশেপাশে হবে। ওয়েটিং রুমে লাগানো বড় বোর্ডের নিচে ডিগ্রির লিস্ট দেখে বুঝা যায় মেধাবী। ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস। এরপর সাইকোলজিতে একটা ডিগ্রি। এরপর ইংল্যান্ড থেকে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির উপর মাস্টার্স। সাফিনা বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে যখন খোজ করেছিলেন তখন সবাই ***** এর কথা বলেছিল। এর বাইরে যাদের নাম খুজে পেয়েছিলেন সবাই পুরুষ। মনের কথা গুলো শেয়ার করবার জন্য একজন পুরুষ সাইকোলজিস্ট এর কাছে অস্বস্তি হত তাই সেখানে আর যান নি। এরপর নুসাইবা কে একদিন বলেছিলেন। আসলে নুসাইবার সাথে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেটা ননদ ভাবীর সম্পর্ক কে ছাপিয়ে গেছে। নুসাইবা যেমন তার জীবনের অনেক গোপন কথা শেয়ার করে ঠিক তেমনি উনিও শেয়ার করেন। নুসাইবা তখন বলেছিল ওর এক বান্ধবী ডিপ্রেশনে ভুগছে। সে ***** এর কাছে নিয়মিত শিডিউল না পেয়ে কয়েক  জন সাইকোলজিস্ট এর কাছে ঘুরে শেষ পর্যন্ত আদিবা রহমানের কাছে থিতু হয়েছে। ভদ্রমহিলা নাকি খুব মনযোগ দিয়ে কথা শুনেন। ইন্টারেপ্ট করেন না। অনেক সাইকোলজিস্ট যেমন অল্প একটু শুনে পেসেন্ট এর জন্য ব্যবস্থাপত্র তৈরি করে ফেলেন ইনি তেমন না। তাই নুসাইবার সাজেশনেই আদিবা রহমানের কাছে আসছেন গত দুই মাস ধরে। বেশ ভাল লাগছে। প্রথম প্রথম অস্বস্তি হত। এরকম অপরিচিত একটা লোকের কাছে নিজের জীবনের নানা কথা আলোচনা করতে। নিজের ক্ষোভ, রাগ, দুঃখ, হাহাকার, অপূর্ণতা, সুখ, আশা, পরিকল্পনা সব। এখন আস্তে আস্তে প্রাথমিক অস্বস্তি ভেংগে গেছে। মন খুলে কথা বলতে পারার একটা আনন্দ আছে। কোন জাজমেন্ট নেই, পরবর্তীতে এই কথা নিয়ে কেউ কিছু ভাববে কিনা সেটা ভাবার দরকার নেই।


সাইকোলজিস্ট এর কাছে আসার বুদ্ধি অবশ্য প্রথমে আতিয়া আপা দিয়েছিলেন। আতিয়া আপা কলেজে সাফিনার সহকর্মী। বয়স ৫০ এর উপরে। বেশ কয়েকটা কলেজে একসাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে দুইজনের। তাই একটা ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। সাফিনা নিজে টের পাচ্ছিল যে ওর আজকাল মন মেজাজ ভাল থাকে না প্রায় সময়। মেজাজ তীরিক্ষে থাকে। স্বামী মিজবাহ করিমের উপর দিয়ে মাঝে মধ্যে এর ঝাল যায় টের পান। পরে মেজাজ ঠান্ডা হলে মনে হয় এত রাগারাগী না করলেও পারত। আগে যে সব জিনিসে গা করত না আজকাল সেই সব জিনিসে মেজাজ গরম হয়। আবার মাঝে মাঝে অকারণে মন খারাপ হয়। যেন আবার সেই কিশোরী বেলায় ফিরে গেছেন। যখন মন খারাপ হবার জন্য কোন কারণ লাগত না। মাঝে মাঝে এই অকারণ মন খারাপ এমন বড় হয়ে দেখা দেয় যে আর কোন কাজ করতে ইচ্ছা হয় না। ক্লাস নিতে ইচ্ছা হয় না, বাসায় কোন কাজ করতে ইচ্ছা হয় না, ঘুরতে যেতে ইচ্ছা হয় না। মাঝ বয়সী একজন মহিলার জন্য এইসব বাংলাদেশে আদিখ্যেতা। তাই কাউকে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যান নি। মিজবাহ এত ব্যস্ত থাকে যে বউয়ের এই মন খারাপ খুব একটা চোখে পড়েছে বলে মনে হয় না। অথবা চোখে পড়লেও কিছু বলে নি। মিজবাহ অনেক সময় এমন করে। সরাসরি কনফ্রনটেশনে যেতে চায় না। তাই অপেক্ষা করে সাফিনা যতক্ষণ না কিছু বলে। অন্তত গত ছাব্বিশ বছর ধরে এই ফরমুলা ভাল কাজ করেছে। আজকাল অবশ্য সাফিনার মন খারাপ হয়। লোকটা কি ওর মন খারাপ বুঝতে পারে না। পারলে কিছু বলে না কেন। নুসাইবার অবশ্য চোখে পড়েছিল। কয়েকবার জিজ্ঞেস করলেও এড়িয়ে গেছে সাফিনা। সারাজীবন নুসাইবা কে উপদেশ দিয়ে এসেছে। এখন নিজের এমন মুড সুইং এর আদিখ্যেতা নিয়ে নুসাইবার সাথে কথা বলতে লজ্জা হচ্ছিল। পরে একদিন আতিয়া আপা কলেজের টিচার্স ক্লাবে সাফিনা কে চেপে ধরলেন। আতিয়া আপার মধ্যে একটা মাতৃত্বসুলভ ব্যাপার আছে। গলায় যে স্নেহ মাখা স্বরে কথা বলেন তার পরশ যেন বুকে লাগে। আতিয়া আপার সাথে কথা বলার সময় সাফিনা যেন প্রথমবারের মত নিজের বাইরে কার কাছে নিজের অনুভূতি গুলো তুলে ধরল। নিজেও জানে না ওর হঠাত এই অনুভূতির কারণ কি। সাবরিনা বিয়ের পর থেকে নিজের বাসায় থাকে। সিনথিয়া ছিল বাসার প্রাণ। জমিয়ে রাখত বাসাটা। আজকাল সিনথিয়া বিদেশে পড়তে যাবার পর থেকে বাসাটা যেন একদম খালি পড়ে থাকে। সেই থেকে যেন বুকের ভিতর শূণ্যতার শুরু। মন খারাপ সাইকেল তখন থেকে শুরু হয়েছে। আতিয়া আপা মনযোগ দিয়ে সব শুনলেন।


আতিয়া আপা সব শুনে বললেন দেখ সাফিনা তুমি যে মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেটা নতুন কিছু না। প্রায় সব মানুষ এর মধ্যে দিয়ে যায় জীবনের একটা না একটা সময়। ছেলেদের এই সমস্যার একটা সুন্দর নাম আছে। মিড লাইফ ক্রাইসিস। আমারা মেয়েরাও যে এই সমস্যার ভিতর দিয়ে যাই সেটা কিন্তু খুব একটা শুনবে না কারণ মেয়েরা সহজে নিজেদের কথা প্রকাশ করে না। আর মানসিক অস্থিরতার কথা বললে লোকে পাগল ভাববে তাই আর গোপন করে মেয়েরা। তবে সবাই যায় কমবেশি এই অবস্থার মধ্য দিয়ে। আমিও গিয়েছি। মধ্য বয়স এমন একটা সময় যখন সব মানুষ তার চাওয়া পাওয়ার হিসাব মিলায়। খুব কম মানুষ জীবনে তার সব লক্ষ্য পূরণ করতে পারে। এই বয়সে মানুষ বুঝতে পারে তার জীবনের অনেক লক্ষ্য পূরণ হবে না। আবার পরিবারের ডায়নামিক্সেও একটা পরিবর্তন আসে। দেখ তোমার এক মেয়ে বিয়ে করে আলাদা থাকে। আরেক মেয়ে বিদেশে পড়তে গেছে। ফলে গত প্রায় পচিশ ছাব্বিশ বছরের মধ্যে এই প্রথম তুমি সন্তান ছাড়া একা থাকছ। সন্তানদের প্রতি দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মায়েদের জীবনে যে একটা রুটিন তৈরি হয় সেই রুটিন থেকে তুমি মুক্ত। তবে এই নতুন পাওয়া সময় কে কিভাবে ইউজ করতে হবে বেশির ভাগ সময় আমরা সেটা জানি না। আমার সন্তান দূরে যাওয়ায় যে হাহাকার সেটাকেও মোকাবেলা করা কঠিন। তোমার স্বামী আর বেশি কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে আগের মত সময় দিতে পারছে না। এই ব্যাপারটা আগে অত তোমার চোখে পড়ত না কারণ তখন তোমার মেয়েদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হত। এখন সেই ব্যাপারটা নেই। সব মিলিয়ে তোমার জীবনের যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে সেটা নিয়ে তোমার মনে একটা বিষাদ তৈরি হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। তার উপর এই বয়সটা মেয়েদের জন্য গূরুত্বপূর্ণ। এই মধ্য চল্লিশে মেয়েদের শরীরে আবার হরমোনাল পরিবর্তন গুলো শুরু হয়। সেটাও একটা কারণ হতে পারে। সব মিলিয়ে তোমার আসলে একটা প্রপার ডায়াগনসিস দরকার। আমার মনে হয় তুমি খানিকটা ডিপ্রেসড। আমাদের সমাজে কেউ ডিপ্রেশন কে ভাল ভাবে নেয় না। হাসি ঠাট্টার ব্যাপার মনে করে। ভাবে বড়লোকের অসুখ। তবে তুমি হেলাফেলা করো না। একজন সাইকোলজিস্ট কার কাছে যাও। দরকার হলে কাউন্সিলিং করতে পার। আতিয়া আপার সাথে কথার পর সাফিনা প্রথমবারের মত সিরিয়াসলি সাইকোলজিস্ট এর হেল্প এর কথা ভেবেছে। পরে নুসাইবার হেল্পে এই এখানে কাউন্সিলিং এ আসছে।


আজকে যে সময়ে কাউন্সিলিং তার প্রায় এক ঘন্টা আগে থেকে এখানে চলে এসেছে। এসে গত দশ মিনিট ধরে ওয়েট করছে। আগে আসার একটা কারণ আছে। নুসাইবা আজকে দুপুরে ফোন করে বলেছে যে ভাবী তোমার আজকে প্রোগ্রাম কি। নুসাইবা ছাড়া ফ্যামিলির আর কেউ জানে না সাফিনা কাউন্সিলিং করে। তাই নুসাইবার কাছে লুকানোর কিছু নেই। সাফিনা বলল বিকাল চারটার দিকে ওর কাউন্সিলিং এর সেশন আছে। নুসাইবা কয়েক সেকেন্ড ভেবে বলল তুমি কি এক ঘন্টা আগে ঐখানে যেতে পারবা? তোমার সাথে একটু কথা ছিল। এমন একটা জায়গায় কথা বলতে চাওয়ায় অবাক হল সাফিনা। বলল তোর কোন দরকার থাকলে বল, আজকে কাউন্সিলিং সেশন বাদ দিয়ে তোর কাছে যাই অথবা তুই আমাদের বাসায় আয়। নুসাইবা জোর করে। আর কোথাও না। ঐখানেই দেখা করবে। আর যেন কাউকে ওর সাথে  দেখা হবার কথা না বলে। কিছুদিন আগে আরশাদের সম্পর্কে কিছু কথা জানানোর পর থেকে নুসাইবার আচরণে খানিকটা পরিবর্তন এসেছে। অন্যমনস্ক থাকে, কিছুটা সিক্রেটিভ। সাফিনা ভেবে বলে ওকে, তুই যদি চাস তাহলে যাচ্ছি আজকে এক ঘন্টা আগে। এমনিতেও আজকে আমার ক্লাস সকাল সকাল শেষ। আর কিছু নেই। সেই জন্য গত দশ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছে সাফিনা।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৬) - by কাদের - 18-12-2023, 04:35 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)