Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )


আরশাদ যখন ম্যানেজারের তাড়ায় কয়েক ঘন্টার নোটিশে ঢাকা ছাড়ে তখন জরুরী যে কয়েকটা কাজ করেছিল তার একটা হল মাহফুজের সাথে কথা বলা। ম্যানেজার সতর্ক করেছিল ওয়াইফ ছাড়া কাউকে যেন না বলে যে আরশাদ ঢাকা ছাড়ছে। আর ওয়াইফ কে ঢাকা ছাড়ার কথা বললেও ঠিক কোথায় যাচ্ছে সেটা যেন না বলে। নুসাইবার সেফটির জন্য এটাই ভাল  উপায় ম্যানেজার সেটা ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছিল। অবশ্য আরশাদ চাইলেও নুসাইবা কে বলতে পারত না ঠিক কই যাচ্ছে ও, কারণ ম্যানেজার নিরাপত্তার খাতিরে তখন পর্যন্ত সেটা আরশাদ কে বলে নি। আরশাদ এর মাঝে বাথরুমে ঢুকে মাহফুজের সাথে পাচ মিনিট কথা বলেছিল। আরশাদ বাইরে যেখানে যা করুক সত্যিকার অর্থে নুসাইবার প্রতি ভালবাসা সব সময় ছিল। এইভাবে নুসাইবা কে ফেলে যেতে আরশাদের ইচ্ছা ছিল না। তবে ম্যানেজার বুঝিয়েছে ওকে যে আরশাদ কে নিরাপত্তার খাতিরে জায়গা বদল করে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হবে যেখানে হয়ত কোন মেয়েকে নিয়ে যাওয়া খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এছাড়া ইচ্ছা করেই আরশাদ কে ওএসডি করা হয়েছিল যাতে আরশাদ এই এক বা দুই মাস না থাকলেও সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন না করে। কিন্তু এখন ঠিক এই মূহুর্তে নুসাইবার জন্য সেরকম কিছু করা সম্ভব না। তাই নুসাইবা কে নিয়ে গেলে নুসাইবার চাকরির জায়গায় প্রশ্ন উঠবে। কেন নুসাইবা অফিসে আসছে না, বা জলজ্যান্ত একটা মানুষ কোথায় হাওয়া হয়ে গেল। ম্যানেজার আরশাদ কে এই আশ্বাস দিল যে যদি খুব দরকার হয় তবে নুসাইবা কে সরিয়ে ওর কাছে আনার ব্যবস্থা করে দিবে। এইসব বলে ম্যানেজার আশ্বাস দিলেও আরশাদ খুব একটা ভরসা রাখতে পারল না। আরশাদ টের পেয়ে গেছে ও একটা গুটি এখন। নিজেদের খাতিরে ওকে সরিয়ে নিচ্ছে ঢাকা থেকে তবে এরপর কি হবে সেটা ওর জানা নেই। আর না গিয়েও উপায় নেই। এই সময় কাকে দেখে রাখতে বলবে নুসাইবা কে। নুসাইবার দুই ভাই দেশের বাইরে। বড় ভাই দেশে থাকলেও উনাকে জানালে লাভের থেকে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি। একে তো নুসাইবা এবং আরশাদ কেউ ওদের জীবনের লাস্ট এই এক দুই মাসের ঘটে যাওয়া সব কাহিনী গোপন করে রেখেছে। সেখানে নতুন করে এইসব শেয়ার করা মানে উনাদের কে প্রেসারে ফেলা। তার উপর অল্প কিছুক্ষণের ফোনালাপে সেগুলো বুঝিয়ে বলা কঠিন। এরপর ম্যানেজারের সতর্কবাণী মাথায় আসছে যে অন্য কাউকে জানানো মানে সেই লোককেও বিপদে ফেলা। নুসাইবার ভাই কর্পোরেটে ভাল পজিশনে আছে তবে এই সমস্যা সমাধানের মত জোর উনার নেই। ক্ষমতা, অর্থ আর অন্ধকার জগতের এই সম্মেলনে নুসাইবার ভাই নেহাত শিশু। নিজের ফ্যামিলির কাউকেই ঠিক একই কারণে বলতে চাচ্ছে না আরশাদ। ওর মাথায় তখন একটাই নাম এসেছে সেটা মাহফুজ। মাহফুজ নিতান্ত কম বয়েসী। সানরাইজ গ্রুপ আর ওশন গ্রুপের ক্ষমতার কাছে পিপড়া সমতুল্য। তবে মাহফুজের মধ্যে কোন কাজ যে কোন উপায়ে আদায় করার একটা ইচ্ছাশক্তি আর বুদ্ধির সম্মিলন আরশাদ খেয়াল করেছে। আর সিনথিয়া কে বিয়ে করবার জন্য যেমন মরিয়া ছেলেটা তাই ওকে হেল্প করতে না করার কথা না। এত বড় দুইটা ক্ষমতাধর শক্তির বিরুদ্ধে মাহফুজ কতটুকু টিকতে পারবে সেটা নিয়ে আরশাদের সন্দেহ আছে তবে এও ঠিক ওর পরিচিত জনদের মাঝে যাদের কে বিশ্বাস করা যায় তাদের মাঝে একমাত্র মাহফুজের কানেকশন আছে অন্ধকার জগতের সাথে। তাই নুসাইবা কে ও না থাকা অবস্থায় বিপদের মাঝে যদি কেউ হেল্প করতে পারে সেটা একমাত্র মাহফুজ পাড়বে। আর ম্যানেজার বলেছিল কাউকে এই ইনফরমেশন শেয়ার করা মানে বিপদে ফেলা সেটা মাথায় রাখলেও মাহফুজ ওর বা নুসাইবার কার রক্ত সম্পর্কের নয় তাই বিপদে ফেলা সম্পর্কিত খুত খুত টা মনে সবচেয়ে কম কাজ করবে মাহফুজের জন্য। সেই জন্যই মাহফুজ কে ফোন দিয়েছিল আরশাদ।


ফ্লোরার দোকান থেকে আসার পর থেকে নুসাইবার সাথে মাহফুজের কোন কানেকশন ছিল না। মাহফুজ ইচ্ছা করেই কোন ফোন করছিল না। কারণ নুসাইবার প্রতি ওর আকর্ষণ ক্রমশ বাড়ছে সেটা ও টের পাচ্ছে আবার নুসাইবা যেমন করে প্রতিটা ঘটনার পর ওর উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে সেটাও ওর কাছে প্রচন্ড মেজাজ খারাপ করা ব্যাপার মনে হচ্ছে। নিজের উপর কন্ট্রোল রাখার জন্য তাই নুসাইবার সাথে সব রকম কন্টাক্ট  বন্ধ রাখার সিদ্ধান নিয়েছে মাহফুজ। এর মাঝে দুই তিন দিন গিয়েছে। মনের ভিতর অনেকবার নুসাইবা কে ফোন দেবার ইচ্ছা হলেও নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছে। সেদিন বৃহস্পতিবার। কালকে ছুটির দিন। বৃহস্পতিবার এক বন্ধুর বাসায় ওদের মাঝে মাঝে আড্ডা বসে। রাতের বেলা খাওয়া দাওয়া, লাল পানি সব কিছুর ব্যবস্থা থাকে। এই সাপ্তাহে এতসব ঝামেলার পর সেখানেই যাবে বলে ঠিক করে রেখেছে। বন্ধুর বাসায় যখন আড্ডা দিচ্ছে সবার সাথে তখন হঠাত করে আরশাদের নাম্বার দেখে একটু অবাক হল মাহফুজ। আরশাদের নাম দেখে মাহফুজের মনের ভিতরে একটা অপরাধবোধ জেগে উঠল। আরশাদের যত বদ অভ্যাস থাকুক সমাজের নিয়মে নুসাইবার হাজব্যান্ড আরশাদ। আর নুসাইবা যে আরশাদ কে ভালবাসে সেটাতেও ওর সন্দেহ নাই। নুসাইবার সাথে ওর শেষ দুইটা এনকাউন্টারের পর এখন নুসাইবার হাজব্যান্ডের ফোন দেখে ওর অস্বস্তি হতে থাকে। ফোন টা ধরে না। তবে কেটে যাবার পর আবার ফোন বাজতে থাকে। মাহফুজ ধরবে না ধরবে না করেও ধরে ফোন টা কৌতুহলের কারণে। কি কারণে ফোন দিচ্ছে আরশাদ। ফোন ধরে সালাম দিতেই আরশাদ ওকে জিজ্ঞেস করে কেমন আছে। মাহফুজ উত্তর দেয়। আরশাদের গলায় ব্যস্ততা টের পায় মাহফুজ। আরশাদ বলে মাহফুজ শোন আমি একটা কাজে কিছুদিন ঢাকার বাইরে থাকব। এই সময় যদি তোমার নুসাইবা ফুফুর কোন সাহায্য দরকার হয় তাহলে একটু হেল্প করো। মাহফুজ অবাক হয়। পুরো ঢাকা শহর জুড়ে নুসাইবাদের আত্মীয়স্বজন। সেখানে ঢাকার বাইরে কোন কাজে যদি আরশাদ যায় তাহলে হেল্প করার জন্য কেন মাহফুজের দরকার পড়বে। মাহফুজ এইসব ভাবার মাঝেই আরশাদ প্রশ্ন করে পারবে তো হেল্প করতে? মাহফুজ অভ্যাসবসত উত্তর দেয় জ্বী জ্বী। আরশাদের গলায় একটা স্বস্তির আভাস পায় মাহফুজ। আরশাদ বলে থ্যাংক্স। আমি ঢাকা ফিরে এসে তোমার আর সিনথিয়ার ব্যাপারটা দেখব। মাহফুজ এবার আবার অবাক হয়। ঢাকার বাইরে অল্প কয়েক দিনের জন্য যাচ্ছে সেখানে কেন হেল্পার দরকার আর এমন কি হেল্প দরকার যেটার জন্য এত বড় জিনিসে রাজি হয়ে যাচ্ছে অবলীলায় আরশাদ। কোন উত্তর না দিয়েই ফোন রেখে দেয় আরশাদ। আরশাদের ফোনের পর মাহফুজের মনের ভিতর কৌতুহল জেগে উঠে। নুসাইবা কে ফোন করবার জন্য মনের ভিতর যে অংশটা আনচান করছিল সেই অংশটা যেন একটা অযুহাত পায়। তবে অন্য অংশটা বাধা দেয়। নুসাইবা নামটা যেন মাহফুজের ভিতরে কোন কিছু কে ঠিক স্থির হতে দিতে চায় না।


এদিকে আরশাদ ঢাকা ছাড়ার আগে নুসাইবার সাথে একান্তে কথা বলতে চায়। ম্যানেজার তাই বলে আমি নিচে গিয়ে দাড়াচ্ছি আপনি ব্যাগটা নিয়ে দশ মিনিটের মধ্যে নিচে নামুন। আরশাদ বলে দেখ নুসাইবা আমি জানি আমার উপর তোমার অনেক রাগ আছে প্রশ্ন আছে। সব কিছু যৌক্তিক, আমি তোমার কাছে অনেক কিছু লুকিয়েছি। তবে এই বার এই ঘটনা সামাল দিতে পারলে আমি ঠিক সব কিছু থেকে ফিরে আসব। তুমি ঠিক যেভাবে চাও সেইভাবে। নুসাইবার মনে আরশাদের প্রতি রাগ ক্ষোভ সব জমা হয়েছে ঠিক তবে হঠাত করে ঘটনার আকস্মিকতায় একদম চমকে গেছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। আরশাদ বলে যাচ্ছে বিশ্বাস কর কিভাবে কোথা থেকে কি হল আমি জানি না। তবে যেভাবেই হোক আমি এইসবের ভীড়ে জড়িয়ে পড়েছি। তবে এইবার একবার বের হতে পারলে আমি আর কখনো এইসব জড়াব না। নুসাইবা উত্তর দেয় না। আরশাদ বলে বিশ্বাস কর আর যাই করি তোমার প্রতি আমার ভালবাসা কখনো কমে নি, আমি সব সময় তোমাকে সমান ভালবেসে গেছি। এই কথাটা নুসাইবার ভিতরের বারুদে যেন আগুন দেয়। নুসাইবা হিস হিস করে বলে উঠে আমাকে ভালবাস বলে কি ঐ ফ্লোরা হাসানের বাসায় গিয়ে বসে থাক? আরশাদ কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না। আজকে দিনে একের পর এক চমক পেয়ে গেছে ও। তবে এটার থেকে বড় কিছু যেন নেই। নুসাইবা কে সত্যি সে ভালবাসে তবে এর বাইরেও ওর মনের ভিতর লোভ লালসা আছে। টাকা, ক্যাসিনো বা ফ্লোরা সব এইসবের কারণে। তবে এইসব ছাড়িয়েও ওর জীবনে সবচেয়ে বড় ধ্রুব সত্য নুসাইবা। তাই সব সময় ওর সব মন্দ দিক সযতনে নুসাইবা থেকে আড়াল করে রেখেছে। ফ্লোরার কথা জানল কিভাবে? পকেটে ফোন বাজছে। ম্যানেজার কল দিচ্ছে। নুসাইবা বলে আমাকে এইসব শান্তনা দিয়ে ফ্লোরার বাসায় গিয়ে বসেছিলে তাই না? এতটাই বিস্মিত হয়েছে আরশাদ যে উত্তর দেবার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে। বিপদ যখন আসে সব দিক থেকে আসে সেটাই যেন সত্য মনে হচ্ছে ওর। আরশাদ বলে প্লিজ নুসাইবা আমি ফিরে আসলে তোমাকে সব বুঝিয়ে বলব। আরশাদ মাথার ভিতর ভাবতে থাকে কিভাবে এইসবের ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। নুসাইবার চোখের ভাষা তখন আরশাদের অচেনা। নুসাইবা ওর সব আস্থা বিশ্বাস গুলিয়ে ফেলেছে অলরেডি। একদিকে হঠাত করে বাসায় একটা অচেনা লোক আরশাদের সাথে এসে বলছে সামনে আরশাদের বড় বিপদ। আবার নুসাইবা ওর অভিযোগের মুখে আরশাদের হতভম্ভ চোখ দেখে বুঝেছে একটু আগে ফ্লোরার ঐখানে ছিল আরশাদ। এই বিপদের সময় স্ত্রীর কাছে প্রথমে না এসে ঐ ডাইনীটার কাছে গেছে। কাকে ভালবাসে আসলে আরশাদ? তবে এতদিনের ভালবাসার কারণে আরশাদের বিপদ কে অগ্রাহ্য করতে পারে না। তাই একদম ফেটে পড়ে না ক্ষোভে। নিজেকে কিছুটা সামলে নেয়। আরশাদ একের পর এক ওর ভালবাসার কথা বলতে থাকে। ফোন বেজে চলছে আরশাদ রিসিভ করে না। তাই ম্যানেজার উপরে এসে দরজায় নক করে। আরশাদ বুঝে ওর সময় কম। নুসাইবা ওর উপর প্রচন্ড ক্ষিপ্ত তবে নুসাইবার বিপদের সম্ভাবনা আছে সেইটা ওকে বুঝাতেই পারছে না। তাই শেষমেষ বলে, প্লিজ যদি কোন বিপদে পড় তাহলে মাহফুজের সাথে কথা বলো। আমি ওকে বলে রেখেছি। যদি দরকার হয় তাহলে কয়েকদিন তাহলে বাসায় না থাকা ভাল হবে। তখন মাহফুজের সাথে পরামর্শ করে নিও। আর কিছু বলার আগে ম্যানেজার এক প্রকার জোর করে আরশাদ কে নিয়ে যায়। আরশাদ আর নুসাইবা দুইজনের মনের ভিতর থাকা প্রশ্ন, ক্ষোভ আর আবেগ সব যেন তাই চাপা পড়ে গেল ঘটনার তোড়ে। আর খোলা রেখে গেল অনেক সম্ভাবনার দুয়ার।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৫) - by কাদের - 17-11-2023, 03:22 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)