Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )
ম্যানেজার এইবার আরশাদের দিকে তাকিয়ে বলে আপনার মনে হচ্ছে আমি আপনাকে কেন এইভাবে নিয়ে যাচ্ছে সাথে করে। কাপড় গোছাতে বলছি? আরশাদ বলে হ্যা। আরশাদ বলে ফ্লোরা ম্যাডামের ঐখানে আমি বলতে পারতাম তবে আমি চাই না বেশি লোক এইটা জানুক তাই ঐখানে কিছু বলি নি। আর আপনার আর সচেতন হওয়া উচিত। আপনাকে তো আগেই বলেছি আমাদের আজিম ভাই নির্বাচনে দাঁড়াবে। স্যার এই ব্যাপারে খুব সচেতন। কোন কিছু এই জিনিসে বাগড়া দিতে পারে সেটাই উনি মানতে রাজি না। আরশাদ বলল আমি এইখানে কি করলাম। ম্যানেজার হেসে উঠল, বলল একজন বুদ্ধিমান মানুষ হিসেবে আপনার কাছ থেকে এই প্রশ্ন আশা করি নাই। আপনি আমাদের সব ট্যাক্সের ব্যাপার জানেন। এখন এই যে ফ্লোরা হাসানের বাসায় গিয়ে রাতে থাকার পরিকল্পনা করছিলেন বউ কে ফেলে সেটা কি ঠিক? কেউ যদি এই সময় আপনাকে ধরে ফেলে তাহলে কি করত জানেন? ব্লাকমেইল। আপনাকে এমন অবস্থায় ফেলে দিত যে আপনি তাদের কে যা জানতে চাইত সব বলতেন। এই ধরেন আমাদের ব্যবসার ট্যাক্সের ফাক ফোকর গুলো। এইসময় যদি কেউ এই তথ্য পায় আর সেগুলো নিয়ে মিডিয়ার কাছে যায় তাহলে আজিম ভাইয়ের ক্লিন ইমেজ আর তার জন্য নমিনেশন পাওয়া কঠিন হবে। আপনি তো ওশন গ্রুপের কথা শুনেছেন? আরশাদ ভয়ে কোন উত্তর দেয় না। ম্যানেজার গভীর মনযোগ দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে, এরপর একটু হেসে  উঠে। বলে তাহলে ওরা আপনার কাছেও পৌছে গেছে। আরশাদ এইবার বলে উঠে না, না আমি ওদের না বলে দিয়েছি। ম্যানেজার একবার বলেছেন পরের বার আর না বলতে পারবেন না। কারণ ওরা এখন ওদের কাজের জন্য মুন্সী কে ঠিক করেছে। আরশাদ ভেবে পায় না কে এই মুন্সী। ম্যানেজার নিজেই বলে মুন্সী হল বাংলাদেশের বেস্ট ব্লাকমেইলার। মানুষ কে ভয় দেখিয়ে যে কাজ আদায় করা যায় না সেই কাজ মুন্সী ব্লাকমেইল করে আদায় করে ফেলে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্লিন মানুষের সম্পর্কেও সে এমন কোন না কোন তথ্য বের করে ফেলে সময় দিলে যাতে সেই মানুষ তার কথা মানতে বাধ্য হয়। আমাদের তো খালি আপনার সাথে ডিলিং না আর অনেকের সাথে ডিলিং আছে। ওশন গ্রুপ সেখানেও ট্রাই করেছে তাই আমরা জানতাম ওরা এমন তথ্য খুজছে যেটা মিডিয়ায় লিক করলে আমদের ক্লিন ইমেজ নষ্ট হয়। ওদের ইমেজ এমনিতেই নষ্ট তাই ওরা আমাদের টেনে ওদের কাতারে নামাতে চাইছে। তবে ওরা যে মুন্সী কে হায়ার করবে এইটা আমরা বুঝি নাই। মুন্সী হল একটা নরকের কীট। তথ্য আদায় করার জন্য হেন কিছু নাই যেটা সে করবে আপনাকে ব্লাকমেইল করার জন্য। আপনি এমনিতেও যে সব কাজ করে রেখেছেন তাতে মুন্সীর আর বেশি কিছু করা লাগবে না আপনাকে ব্লাকমেইল করতে। আমরা আমাদের অন্য লোকদের ব্যবস্থা করেছি। কার কার কাছে আসলে এমন কোন তথ্য নেই যেটা খুব বেশি কাজের। আর যাদের কাছে কাজের ইনফরমেশন আছে তাদের কে আপনার মত প্রটেকশন দিচ্ছি। তবে আপনি বেশি সেনসেটিভ। আপনি এমন কিছু জানেন যেটা মিডিয়ায় গেলে খালি ইমেজ নষ্ট না, মামলা মোকদ্দমা হয়ে ব্যবসা নষ্ট হতে পারে। তাই আপনার ব্যাপারে বড় স্যার  বেশি সচেতন। আরশাদের মাথায় কিছু ঢুকছে না, কে এই মুন্সি। ওশন গ্রুপ আর সানরাইজ গ্রুপের দ্বন্দ্বে কি ওর লাইফ হেল হতে যাচ্ছে? ম্যানেজার বলে চিন্তা করবেন না আমার লোকেরা ফ্লোরা হাসানের ব্যবস্থা করছে। উনি আগামীকাল সকালের ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়া চলে যাবে। উনার ছেলের কাছে। উনার অস্ট্রেলিয়ার ভিসা আছে। আগামী দুই মাস উনি দেশে ফিরবেন না। উনি যাতে আমাদের কথা মানেন সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরশাদ ভয়ে আর জিজ্ঞেস করে না কি ব্যবস্থা। ম্যানেজার বলে এই কারণে আপনাকে আমরা আগামী দুই মাস লুকিয়ে রাখব। এক মাসের মধ্যে নমিনেশন দেওয়া হবে আর দুই মাসের মধ্যে ইলেকশন। আপনাকে ওএসডি করে ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করেছেন স্যার। ওএসডি থাকএল আপনাকে আর অফিস যেতে  হবে না তাই আপনার চাকরি সুরক্ষিত। আপনি এই দুই মাস আমাদের তত্ত্বাবধানে আড়ালে থাকবেন। আরশাদ কাপা কাপা গলায় বলে কোথায়? ম্যানেজার বলে আপাতত আপনি যত কম জানবেন তত ভাল। আপনি এখন জানলে হয়ত আপনার বউ কে  বলে দিবেন। তাহলে উনি বিপদে পড়বেন। যত কম জানবেন আপাতত তত ভাল। আপনি ভাল ভাবে থাকবেন, ভাল খাবার দাবার পাবেন। এমনকি আপনার যে সাইড অভ্যাস গুলো আছে আমরা সেগুলোরও খেয়াল রাখব এই বলে ম্যানেজার একটা চোখ টিপ দেয়।


আরশাদ বলে আমার ওয়াইফের কি হবে? ও কি যাবে আমার সাথে? ম্যানেজার বলে না। আরশাদ বলে তাহলে কি হবে? ও তো আমার এইসব কথা জানে না। ও কি বলব? কেন যাচ্ছি এত দিনের জন্য? কই যাচ্ছি? ম্যানেজার কয়েক মূহুর্ত ভাবে। বলে আরশাদ স্যার শুনেন, মাঝে মাঝে কিছু সত্য বলতে হয় আর বড় সত্য কে লুকানোর জন্য। আপনি কিছু ইলিগাল ফেভার নিছেন আমাদের কাছ থেকে এর জন্য আরেকদল আপনাকে খুজছে এটা সত্য। এখন যেটা ব্যাপার হল আমি যদি মুন্সী কে ঠিক মত চিনে থাকি। ও আগামী চার পাচ দিনের মধ্যে আপনার আর ফ্লোরার কথা জেনে ফেলবে। তখন আপনাকে ওর জন্য ব্লাকমেইল করা ইজি। কারণ এটা নিয়ে সে যদি একটা ট্যাবলয়েড পত্রিকায় রগরগে নিউজ ছাপায় বা ফেসবুকে কোন একটা ভাইরাল পোস্ট তৈরি করে যে ট্যাক্স ক্যাডারের অফিসারে গোপন অভিসার, সাথে কিছু সত্য মিথ্যা রগরগে বর্ণনা তখন সেটা আপনার ফ্যামিলি লাইফ আর প্রফেশনাল লাইফ দুইটাই নষ্ট করবে। এখন আপনি যদি আমাদের সাথে থাকেন আর আপনাকে যতক্ষণ পর্যন্ত ট্রেস করতে না পারছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই নিউজ করে তার লাভ নেই এবং সে করবে না। এই জন্য আপনাকে আর ফ্লোরা হাসান কে আমি আলাদা আলাদা জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। আর বাকি রইল আপনার ওয়াইফ। উনার জন্য আমরা সিকিউরিটির ব্যবস্থা করছি। আপনাদের এপার্টমেন্টের সামনে সব সময় আমার দুই জন লোক থাকবে। উনি অফিসে গেলে আমাদের সিকিউরিটির গাড়ি ফলো করবে। এখন আপনার দ্বায়িত্ব হচ্ছে আপনার ওয়াইফ কে বুঝানো এটা  উনার জন্য ভাল। আপনাকে একটা ভাল অপশন দিচ্ছি। আপনি ফ্লোরা হাসানের ব্যাপারটা লুকিয়ে খালি বলবেন আমাদের কিছু সাহায্য করেছেন সেই জন্য আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ আপনাকে খুজছে। আর আপনার ওয়াইফের বিপদের ভয় নেই কারণ উনি আসলে তেমন কিছু জানে না। যদি কোন ভাবে আমাদের পাহারা এড়িয়ে মুন্সী আপনার ওয়াইফের কাছে পৌছেও যায় তাহলে মুন্সী এটা টের পাবে। তার উপর মুন্সীর একটা ব্যাপার হল ও মানুষ কে ফিজিক্যাল থ্রেট দেয় না, ও যেটা করে সাইকোলজিক্যাল গেম খেলে। আপনার ওয়াইফ যেহেতু কিছু জানে না তাই তার এই ক্ষেত্রে বিপদ কম। এই জন্য আমার পরামর্শ হল যতটুক্কু বললাম এর বাইরে কিছু বলবেন না। কারণ মুন্সী ঠিক তাহলে আপনার ওয়াইফ থেকে কথা বের করে নিবে।


বাসার কলিংবেল বাজতে নুসাইবা দরজা খুলে দেয়। আরশাদের সাথে আরেকজন লোক দাঁড়ানো। লোকটাকে আগে কখনো দেখে নি। পঞ্চাশের উপর বয়স হবে। মুখে এক ধরনের কাঠিন্য। আরশাদের মুখে এক ধরনের হতচকিত ভাব। কি করবে যেন বুঝে উঠতে পারছে না। নুসাইবা আরশাদ কে চিনে প্রায় বিশ বছরের উপরে। আরশাদ কে ওর পছন্দ করার অন্যতম কারণ ছিল আরশাদ সব সময় স্মার্ট, কি করতে হবে সেটা জানে। আজকে আরশাদের চোখমুখ দেখে মনে হচ্ছে যেন আরশাদ ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না ওর আশেপাশে কি হচ্ছে। নুসাইবা সরে গিয়ে ভিতরে ঢুকার জায়গা করে দেয়। তবে ওর মনে অনেক প্রশ্ন তখন। আরশাদ কি ফ্লোরার বাসায় গিয়েছিল? হঠাত করে ব্যাগ গুছাতে বলল কেন? সাথে এই লোকটা কে? আরশাদ কি আর বড় কিছু গোপন করছে? আরশাদ ভিতরে ঢুকে নুসাইবার সাথে ম্যানেজারের পরিচয় করিয়ে দিতে যায়, আরশাদ টের পায় ম্যানেজারের নাম ওর জানা নেই। তাই কি বলবে বুঝতে পারে না। ম্যানেজার নিজে থেকে তাই এগিয়ে আসে। বলে স্লামালাইকুম ভাবী। সবাই আমাকে ম্যানেজার বলে ডাকে আপনিও ডাকতে পারেন। আমি আসলে আরশাদ স্যারের একটা প্রবলেম সলভ করার জন্য আসছি। স্যার আপনাকে আর ভাল করে বিস্তারিত বলবেন। আরশাদ কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না। ম্যানেজার বলে আপনি চাইলে ভাবী কে ভিতরে নিয়ে কথা বলুন। আরশাদ নুসাইবা কে নিয়ে বেডরুমে ঢুকে। নুসাইবার মনে তখন রাগ, ক্ষোভ, প্রশ্ন সব একসাথে খেলা করছে। আরশাদ ম্যানেজারের উপদেশের কথা মনে করে। বড় সত্য লুকাতে গেলে কখনো কখনো ছোট ছোট সত্য স্বীকার করে নিতে হয়। আরশাদ বলে নুসাইবা আমি তোমার কাছে কিছু কনফেস করতে চাই। নুসাইবা অবাক হয়ে যায়। এত সহজে আরশাদ সব স্বীকার করে  নিবে? আরশাদ কি সত্য স্বীকার করে ওর কাছে ক্ষমা চাইবে? নুসাইবা কি ওকে ক্ষমা করে দিবে?

আরশাদ বলতে থাকে। আমার নামে পত্রিকায় যা রিপোর্ট হয়েছিল সেটা আসলে পুরো মিথ্যা না। নুসাইবা উত্তর না দিয়ে চুপচাপ শুনতে থাকে। আরশাদ বলে গত দশ বছরে আমি আসলে কিছু লোক কে ফেভার দিয়েছি তার বদলে তারাও আমাকে কিছু ফেভার দিয়েছে। আমাদের এই ফ্ল্যাট, বিদেশ ট্যুর। ঢাকার আশেপাশের কিছু জমি সব এইসব টাকায় কেনা। নুসাইবা কোন কথা বলে না তবে ওর চোখে বিশ্বাস ভংগের ছবি ফুটে উঠে। আরশাদের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠে। যদিও নুসাইবা কে বললে হয়ত বিশ্বাস করবে না তবে আরশাদের বুকের ভিতর নুসাইবার জন্য ভালবাসাটা রিয়েল। এক জীবনে সব কিছু চাই এই আদর্শের কারণে হয়ত ভুল পথে গিয়ে অনেক ভুল করে ফেলেছে তবে নুসাইবা ওর প্রকৃত ভালবাসা। আরশাদ সেটা বলে তবে  নুসাইবা এখনো চুপ করে থাকে। সাধারণত নুসাইবা খুব অল্প কিছুতে প্রচন্ড রেগে তুলকালাম করে তবে আজকে এত বড় স্বীকারোক্তির পরেও নুসাইবা চুপ করে থাকা, ওর দৃষ্টিতে বিশ্বাস ভংগের চিহ্ন যেন আরশাদের বুকটা ভেংগে দেয়। অনেক সময় ভাংগনের আগে মানুষ বুঝতে পারে না ভাংগনের কষ্ট কি। আরশাদ যেন এখন একদম ভাংগনের দোড়গোড়ায়। আরশাদ বলে বিশ্বাস কর আমি চাকচিক্যের মোহে পড়ে এই কাজ করেছি। এমন না যে আমি প্রতিনিয়ত হরেদরে সবার কাছ থেকে ফেভার নিয়েছি। নুসাইবা এই প্রথম কথা বলে। বল, আরশাদ তুমি যেটাকে ফেভার বলছ এটার খাটি বাংলা নাম ঘুষ। আমি এতদিন তোমার জন্য সবার কাছে কত মুখ উচু করে বলেছি আমার হাজব্যান্ড ঘুষ খায় না। আরশাদ মাথা নিচু করে। নুসাইবা বলে এই ঘুষের চক্করে তুমি আর কি কি করেছ? আরশাদ বলে আর কিছু না। নুসাইবার আর সহ্য হয় না। বলে ফ্লোরা হাসান। এটাও কি ঘুষের চক্কর নাকি তোমার ভালবাসা। আরশাদের মাথায় যেন এইবার আকাশ ভেংগে পড়ে। নুসাইবা কিভাবে জানল। নুসাইবার চোখে মুখে তখন অগ্নি স্ফুলিংগ খেলা করছে। আরশাদ বুঝে নুসাইবার কাছে আর কিছু লুকিয়ে লাভ নেই। ম্যানেজারের বলা সেই মুন্সী কি আগেই নুসাইবার কাছে পৌছে গেছে? আরশাদ বলে তুমি কিভাবে জানলে? নুসাইবা এইবার একটু থমকে যায়। কিভাবে ব্যখ্যা করবে সে ফ্লোরা কে কিভাবে জানে? যদি মাহফুজের সাথে ওর ব্যপারটা আরশাদ জেনে যায়? নুসাইবা তাই ধমকে বলে সেটা ব্যাপার না। তুমি বল ফ্লোরা  হাসানের সাথে তোমার কি সম্পর্ক? আরশাদ মাথা নিচু করে, বলে বিশ্বাস কর আমি এটাতে জড়াতে চাই নি। কিভাবে জড়িয়ে গেছি বুঝতে পারি নি। আর একবার জড়ানোর পর বের হতে পারছিলাম না। বিশ্বাস কর। আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি এই ফাদ থেকে বের হতে চাইছিলাম। আরশাদ ফাদ শব্দটা ব্যবহার করে দোষ ফ্লোরার উপর চাপিয়ে দেয় খানিকটা। ওর মনে আশা ফ্লোরার সাথে নুসাইবার সরাসরি কখনো দেখা বা কথা হবে না। বিশ্বাস কর এখন আমি এর থেকে অনেক বড় বিপদে আছি। জীবন মরণ বিপদ। সামান্য একটু ভুল হলে আমাকে শেষ করে দিবে।

নুসাইবার ভিতরের ভালবাসা এইবার মাথা তুলে তাকায়। নুসাইবা প্রশ্ন করে কে শেষ করে দিবে কেন শেষ করে দিবে। আরশাদ বলে তোমাকে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না তোমার সেফটির জন্য। আমাকে দুই মাস লুকিয়ে থাকতে হবে। তুমি কোন চিন্তা কর না। আমার সব খবরা খবর তোমার কাছে নিয়মিত পৌছে দিবে ম্যানেজারের লোকজন। তোমাকে কেউ যদি তাই এসে জিজ্ঞেস করে আমি কোথায় তোমাকে মিথ্যা বলতে হবে না কারণ তুমি জান না আমি কোথায়। নুসাইবা যেন ইমোশনাল রোলার কোস্টারে চড়ছে। এত দিনের মিথ্যা এত গুলো মিথ্যার জন্য আরশাদের উপর রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা। আবার আরশাদের চোখে মুখে যে ভয় খেলা করছে সেটাও দেখছে সামনে। আসলেই কি কেউ আরশাদের পিছনে লেগেছে। ওর ক্ষতি করতে চাইছে। লাস্ট এক মাসে সত্য মিথ্যার এত পরিবর্তন হয়েছে ওর জীবনে তাই এখন সব কিছুতেই ওর সন্দেহ। কোন নাটক করছে না তো আরশাদ? যাতে ওর সহানুভূতি পেতে পারে। প্রায় এক ঘন্টা ধরে তাই আরশাদ আর নুসাইবার মধ্যে বাক্য বিনিময় চলে। আরশাট টের পায় ওর অবস্থা এখন রাখাল বালকের মত। ওর এত দিনের দেওয়া ধোকা গুলো নুসাইবার মাথায় এমন ভাবে বাসা গেড়ে বসেছে যে এখন প্রকৃত বিপদের সময় নুসাইবা বিশ্বাস করতে চাইছে না এটা সত্য কি মিথ্যা। নুসাইবার আরশাদ কে আর কখনো এতটা আতংকিত দেখে নি। তবে আবার গত এক মাসে এত গুলো মিথ্যা ধরা পড়েছে আরশাদের যে এই আতংকটা অভিনয় কিনা সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না। ওর ভিতরের জিদ বলছে এটা মিথ্যা আর ভালবাসা বলছে আরশাদ সত্য বলছে। ওদিকে বাইরের ঘরে ম্যানেজার এই এক ঘন্টা ধরে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছে। ম্যানেজার জানে এত বড় একটা সংবাদ কতটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে একটা ফ্যামিলি লাইফে। তবে হাতে সময় কম। আর বেশি সময় দেওয়া যাবে না এই দুই জন কে। আজকে রাতের মধ্যেই আড়াল করতে হবে আরশাদ কে। তাই নিজে থেকে হেটে নুসাইবা আরশাদের বেডরুমের দরজায় দাঁড়ায়। গলা খাকরি দেয়। বেডরুমের দরজায় ম্যানেজার কে দেখে নুসাইবা আরশাদ দুই জনেই হতচকিত হয়ে যায়।

ম্যানেজার বলে আপনার এতক্ষণ যা বলছেন সব বাইরের রুমে শোনা যাচ্ছিল তাই না এসে পাড়লাম না। আরশাদ আর নুসাইবা দুই জনেই টের পায় কখন যে তাদের গলা উচ্চস্বরে পৌছে গেছে আবেগের তাড়নায় সেটা খেয়াল ছিল না। ম্যানেজার বলে আপনারা এখন সারারাত এটা নিয়ে তর্ক করতে পারেন অথবা পরে সময় মত এটার সমাধান করতে পারেন। আজকে রাতের ভিতর আরশাদ স্যার কে এখান থেকে সরাতে না পারলে উনি অনেকের জন্য লায়াবিলিটি হয়ে যাবেন। তখন উনার ফিজিক্যাল সেফটির গ্যারান্টি দেওয়া কঠিন। আরশাদ টের পায় ম্যানেজার ঠান্ডা মাথায় হুমকি দিচ্ছে। আর নুসাইবা এতক্ষণ আরশাদের যে কথা গুলো বিশ্বাস করতে পারছিল না ম্যানেজারের ঠান্ডা মাথায় বলা কথা গুলো যেন সেটা বিশ্বাসযোগ্য করে তুলল। ম্যানেজারের কথায় এবং চলনে এমন একটা শীতলতা আছে যেটা নুসাইবা কে বুঝিয়ে দিয়েছে ফালতু কথার লোক ম্যানেজার না। আর আরশাদ লায়াবিলিটি হলে ফিজক্যাল সেফটির কোন গ্যারান্টি নেই কথাটা যেভাবে বলল সেটা নুসাইবার মেরুদন্ড বরাবর একটা শীতল স্রোত নামিয়ে দিল। নুসাইবা আর কথা বাড়াল না। আরশাদের কাপড় গোছাতে সাহায্য করল। এর মধ্যে ম্যানেজার নুসাইবা কে বাকি সব বুঝিয়ে দিল। আরশাদ যখন থাকবে না তখন দিন রাত ২৪ ঘন্টা  দুই জন লোক নজর রাখবে এপার্টমেন্টের উপর যাতে কেউ বিরক্ত করতে না পারে। তার পরেও যদি কেউ এসে যায় এবং কিছু জিজ্ঞাসা করে তাহলে বলতে হবে অফিস ট্যুরে আরশাদ বাইরে গেছে। এর বেশি কিছু যেহেতু নুসাইবা জানে না তাই চাইলেও বলতে পারবে না। যাওয়ার আগে দিয়ে আরশাদের সাথে কয়েক মিনিট একান্তে কাটানোর সুযোগ দিল নুসাইবা কে ম্যানেজার। আরশাদ তখন বলল শুন আমি ওদের সাথে যেতে বাধ্য, আর যারা আমাকে খুজছে তারাও ডেঞ্জারাস। ফলে আমার কিছু করার নেই। আমি তোমাকে এর সব কিছু থেকে বাইরে রাখতে চাই। তোমার ইমেইলে আমি মেইল করব। আর আমি মাহফুজের সাথে কথা বলব। যদি খুব দরকার হয় ওর সাথে কথা বলবে। ভাল ছেলে হেল্প করবে। মাহফুজের নাম শুনেই নুসাইবার চেহারা লাল হয়ে গেল। আরশাদ বলল মাহফুজ অলরেডি আমাদের অনেক কিছু জানে তাই ওর কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া ভাল। আর ছেলেটা বিশ্বস্ত। আরশাদ নুসাইবা পরষ্পর থেকে বিদায় নেবার সময় দুই জনেই অজানা ভবিষ্যতের চিন্তায় মগ্ন। দুই জনের জানা নেই ভবিষ্যত ওদের কোথায় নিয়ে ফেলে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৪) - by কাদের - 05-10-2023, 12:51 PM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)