Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


বৃহস্পতিবার সকালে উঠেই আরশাদের মনটা ফুরফুরা। গত দুই দিন ধরে নুসাইবার সাথে কথা বলে মনে হচ্ছে নুসাইবা কিছু একটা নিয়ে ক্ষেপে আছে। পত্রিকায় ওর বিরুদ্ধে রিপোর্ট আসার পর শুরুর দিকে নুসাইবা যতটা সাপোর্টিভ ছিল আস্তে আস্তে সেই সাপোর্টিভ ভাবটা কমছে সেটা আরশাদ টের পাচ্ছে। আরশাদের মনে হচ্ছে এত বছর ধরে চোখের সামনে যে পর্দা ধরে রেখেছিল সেটা বুঝি আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। তবে আজকে বৃহস্পতিবার। ঢাকা যাবে আজকে। যদিও আজকে বাসায় যাবে না নুসাইবার কাছে। তবু কালকে দেখা হবে নুসাইবার সাথে। দুই দিন সময় আছে শুক্রবার আর শনিবার, নুসাইবার অভিমান ভাংগানোর। এত দিন ধরে নুসাইবা কে হ্যান্ডেল করে আরশাদের মনে একটা কনফিডেন্স আছে যেভাবেই হোক নুসাইবা কে ও ম্যানেজ করতে পারবে। সবার সামনে নুসাইবা যতই একটা ডমিনেটিং ভাব নিক ওর কাছে যে নুসাইবা ভালবাসার কাংগাল এটা আরশাদ ভাল করে জানে। এটা ভাল করে জানে বলেই আরশাদ এত বছর চোখের সামনে পর্দাটা ধরে রাখতে পেরেছে। ফলে এই উইকএন্ডে নুসাইবার রাগ ভাঙ্গানোর একটা ভাল সময়। আরেকটা জিনিস আছে যেটার জন্য আরশাদের মন ফুরফুরে। ফ্লোরার সাথে একটা রাত কাটাবে। আজকে ঢাকা গিয়ে ফ্লোরার ফ্ল্যাটে উঠবে। এরপর আগামীকাল সকালে বাসায় যাবে এমন ভাবে যাতে মনে হয় ও শুক্রবার সকালে ফ্লাইট ধরে ঢাকা এসেছে। এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাকে বলে।

তবে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইলেও যে ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে যে দুইটা ঢিল আসবে সেটা কল্পনাও করেনি আরশাদ। প্রথম ঢিলটা খেল অফিসে ঢুকেই। আজকে বিকালে ঢাকা যাবার জন্য আগে অফিস থেকে বের হয়ে যাবে তাই সকালে অফিস টাইমের আধাঘন্টা আগেই অফিসে ঢুকল আরশাদ। অফিসে আসতেই ওর অফিস সহকারী একটা ফ্যাক্স এগিয়ে দিল। গতকাল অফিসের শেষ আওয়ারে এসেছিল ফ্যাক্সটা ঢাকা থেকে, তার একটু আগে বের হয়ে যাওয়ায় আর দেখা হয় নি। ওর বদলীর আদেশ। রাজশাহীতে এসেছে মোটে একমাস হয়েছে। রাজশাহীতে অনেকটা ওকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে তাই ঢাকা ফেরার চেষ্টা তদবির করছিল। যাকেই তদবির করেছে সে বলেছে ছয়মাস অন্তত দেখতে এরপর আবার ঢাকায় ফিরিয়ে আনবে। এরমধ্যে বদলির আদেশ তাই আরশাদ কে অবাক করে দিল। তবে আর অবাক হল কোথায় বদলী করা হল সেটা দেখে। আরশাদ কে ওএসডি করা হয়েছে। ওএসডি মানে কাগজে কলমে অফিসার ইন স্পেশাল ডিউটি তবে এর মানে আসলে দপ্তরবিহীন করে রেখে ক্ষমতাশূণ্য করে দেওয়া। নরমালি সরকারের বিরোধী রাজনৈতিক মতবাদের হলে বা কোন বড় রকমের স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়লে ওএসডি হতে হয়। আরশাদ তাই খানিকটা শকের মধ্যে পড়ে গেল। সরকারবিরোধী মতবাদে ও জড়িত না তাহলে একটা পত্রিকার রিপোর্ট থেকে কিভাবে এত কিছু হতে পারে সেটাও মাথায় ঢুকছে না। তার উপর রিপোর্ট বের হয়েছে এক মাসের বেশি, সব কিছু ঠান্ডা হয়ে এসেছে। আরশাদ তাই জলদি তার দুই শুভাকাংখী সিনিয়র কে ফোন দিল। তারাও সব শুনে অবাক এবং বলল খোজ নিয়ে জানাচ্ছে ওকে। তবে সেই ফ্যাক্সে আরেকটা নির্দেশনা ছিল। আজকে বিকালের আগেই রাজশাহী অফিসের সব কাজ ওর সেকেন্ড ম্যান কে বুঝিয়ে রাজশাহী থেকে রিলিজ নিয়ে আসতে বলেছে। আরশাদ খানিকটা হতভম্ব। ঢাকায় ফিরতে চেয়েছিল রাজার বেশে তবে এইভাবে ক্ষমতাশূণ্য হয়ে নয়।


আরশাদ অবাক হয়ে যখন এইসব ভাবছে তখন ওর এক সিনিয়র ফোন দিল। বলল খোজ নিয়েছেন উনি, একদম উপর থেকে নির্দেশ আসছে। দুই জন মন্ত্রীর কথায়  নাকি এই আদেশ, কিন্তু মন্ত্রীরা কেন এই নির্দেশ দিল সেটা কেউ জানে না। সেই সিনিয়র পরামর্শ দিল দ্রুত দ্বায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ঢাকায় এসে পারলে আজকে বিকালের আগেই যেন ওএসডি হিসেবে জয়েন করে ফেলে। ঢাকা আসলে অন্তত এইসব নিয়ে খোজ রাখা আর দৌড়াদৌড়ি করা সহজ হবে। আরশাদ বুদ্ধিমান লোক। ওএসডি হওয়াতে যতই অপমান লাগুক এখন অন্তত কিছু করার নেই সেটা বুঝে ফেলেছে। আর ঢাকা গেলে তদবির করা আর সহজ হবে। তাই সিনিয়রের কথা অনুযায়ী ফ্যাক্সের নির্দেশমত দুপুর এগারটার মধ্যে মধ্যে দ্বায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে রিলিজ পেপারে সাইন করিয়ে নিল। রাজশাহীতে অল্প কয়েকদিন হল এসেছে তাই কোন বাসা নেয় নি এখনো। ডিপার্টমেন্টের গেস্টহাউজে থাকত। একটা সুটকেসে ওর যাবতীয় জিনিস। তাই সব গুছিয়ে বের হয়ে পড়তে মাত্র আধা ঘন্টা লাগল। দেড়টার ফ্লাইট ধরে তাই আড়াইটার মধ্যেই ঢাকা। ঢাকায় নেমে দ্রুত গাড়ি নিয়ে হেড অফিসে আসতে আসতে এক ঘন্টা লাগল। এরপর তাড়াহুড়া করে বিকাল পাচটার মধ্যে জয়েনিং। এই তাড়াহুড়ার মাঝেই কিছু জিনিস খেয়াল করল আরশাদ যা দেখে ওর ভিতর ক্ষোভ জমা হতে থাকল। আরশাদ ওদের ব্যাচের স্টার অফিসার। চাকরি জীবনের বেশিরভাগ সময় ঢাকায় ভাল ভাল পোস্টিং পেয়ে এসেছে। সব সময় ওয়েল কানেক্টেড। তাই যখন হেড অফিসে এসেছে তখনি সবার কাছে সমাদর পেয়েছে। আজকে যেন হেডঅফিসে সবার অন্য চেহারা। কেউ যেন ওকে দেখে চিনছে না, কেউ কথারচ্ছলে খোচা দিচ্ছে, কার চোখে সহানুভূতির দৃষ্টি। অন্য সময় যারা ওকে সমাদর করত তাদের চোখে আজকে ও ফলেন স্টার। ওর ভিতরে ভিতরে একটা ক্ষোভ জমে উঠে। দুই জন সিনিয়র মন্ত্রী কেন ওকে ওএসডি করার জন্য সরাসরি কল দিল সেই কথাটাও জানা গেল না। চারিদিকে এক রকম কুয়াশা। একমাত্র পত্রিকার রিপোর্ট কিভাবে এত বড় ঝামেলা তৈরি করল সেটাই এখনো বুঝে উঠতে পারছে না। সেই রিপোর্টের পর থেকে দিন দিন নুসাইবার সাথে সম্পর্ক শীতল হচ্ছে, অফিসের এক সময়ের রাইজিং স্টার এক মাসের মধ্যেই এখন ফলেন স্টার। আরশাদের মনে হয় এই সময় ওর একটা ডিসট্রাকশন দরকার আর ফ্লোরার থেকে ভাল ডিস্ট্রাকশন আর কেউ হতে পারে না এই মূহুর্তে। তবে আরশাদ ভাবতে পারে নি সেখানে ওর জন্য অপেক্ষা করছে দিনের দ্বিতীয় চমক।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৪) - by কাদের - 05-10-2023, 12:47 PM



Users browsing this thread: bokachaley, 11 Guest(s)