Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )

নুসাইবা মাহফুজ কে দেখা করতে বলেছে। মাহফুজ তাই মতিঝিলে শাপলা চত্বরের উলটো দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মেইন গেটের সামনে অপেক্ষা করছে। বিকাল পাচটা বেজে গেছে। ব্যাংক থেকে লোকজন  নামছে। রাস্তার ধারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকটা স্টাফ বাস দাঁড়ানো। অনেকে সেই বাসে উঠছে। মাহফুজ নিজের দিকে তাকায়। বেশ সচেতন ভাবেই আজকে বেশ সাজগোজ করে এসেছে। ক্লিন সেভড, গায়ে পারফিউম। ভাল একটা পাঞ্জাবি আর স্যান্ডেল পড়েছে। মাহফুজ জানে নুসাইবা ওকে এখানে আরশাদ কে নিয়ে আলোচনা করতে ডেকেছে কিন্তু ওর মনে হয় তাও ভাল কিছু পড়ে আসা দরকার। কেন? সেই প্রশ্নটা নিজেকে আর করছে না মাহফুজ কারণটা সে জানে। নুসাইবা পাচটা দশের দিকে গেট দিয়ে বাইরে আসে। মাহফুজ কে দেখে হাত নাড়ে। নুসাইবা আজকে সালোয়ার কামিজ পড়ে আছে। সারাদিন অফিস শেষে যদিও চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ তাও মাহফুজের মনে হয় এই ক্লান্তির ভিতর যেন এক কমনীয় সৌন্দর্য আছে। তবে মুখে কিছু বলে না। সামনে আসলে সালাম দেয়। নুসাইবা বলে চল কোথাও গিয়ে বসি। মাহফুজ বলে কোথায় যাবেন। মতিরঝিল এলাকায় বিকালের দিকে ভাল বসার মত দোকান বা পার্ক নেই। কিছুক্ষণ ভেবে নুসাইবা বলে বসার তো ঠিক ভাল জায়গা নেই। একটু নিরিবিলি জায়গা দরকার যেখানে বসে একটু শান্তিতে কথা বলা যাবে। মাহফুজ বলে একটু দূরে ফকিরাপুলে পানির ট্যাংকের কাছে একটা চাইনিজ রেস্টুর‍্যান্ট আছে। চ্যাংপাই। ভিতরের পরিবেশ ভাল। সেখানে বসে নিরিবিলি কথা বলা যাবে।


দুইজন রিক্সাতে উঠে। রিক্সা আরামবাগ হয়ে নটরডেম কলেজ কে হাতের বামে রেখে সামনে এগিয়ে যায়। মাহফুজ টের পায় রিক্সার ছোট স্পেসে নুসাইবার হিপের একটা অংশ ওর হিপের সাথে লেগে আছে। সেখান থেকে যেন একটা উষ্ণতা পায় মাহফুজ। পাজামার ভিতর শক্ত হয়ে উঠে কিছু। অফিস ছুটির সময় রাস্তায় ভীড় আছে তবে ঠিক জ্যাম নেই। তাই রিক্সা স্লো এগুচ্ছে। নটরডেম কলেজের একটু সামনে পাচ ছয়টা ছেলে জটলা করে আছে। ল্যাব ক্লাস শেষ করে কলেজের ছেলেরা দিন শেষে বাড়ি যাবে। ওদের পাশ দিয়ে রিক্সা এগুচ্ছে। ছেলে গুলো একটা চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দুই একজন সিগারেট খাচ্ছে। রিক্সা সামনের ভীড়ের জন্য ওদের সামনে এসে একটু দাড়িয়েছে। এই সময় ছেলে গুলোর একজন অন্যজন নুসাইবা কে দেখায়। নুসাইবা ফুটপাতের সাইডে বসা তাই ছেলে গুলো ভাল করে ওকে দেখছে। ওড়না সরে গিয়ে নুসাইবার সাইড বুবস ভাল করে বুঝা যাচ্ছে। তাই ছেলে গুলো একজন অন্যজন কে ইশারা দিয়ে দেখাচ্ছে। দেখ দেখ মাল। নুসাইবা কে এমনিতেও কম বয়সী মনে হয়। চল্লিশ হলেও মনে হয় বয়স সবে ত্রিশ। তার উপর ভাল সুন্দর। এর মধ্যে কাপড়ে ভাল ফ্যাশনেবল। সব মিলিয়ে চোখ আটকে যাবে। তার উপর নুসাইবার উন্নত বক্ষের এক সাইড ওড়না সরে যাওয়ায় ছেলে গুলোর কাছে দৃশ্যমান উচু পর্বতের এক অংশ। এই বয়সে ছেলেরা এমনিতেই সারাদিন হর্নি থাকে। তার উপর সারাদিন নটরডেম কলেজে স্যারদের ক্লাস, ফাদারের তাড়া খাওয়া, বিকালের ক্লান্ত ল্যাব। এর মাঝে চায়ের দোকানে হালকা আড্ডা দেবার সময় নুসাইবার সাইড বুবস এদের কাছে বড় বিনোদন। তাই একজন অন্যজন কে দেখাচ্ছে। এর মধ্যে এক ছেলে নিজেকে সালমান খান ভাবে। সে বেসুরো গলায় গেয়ে উঠল, ওহ জানে জানা, ঢুনে তুনে দিওয়ানা, স্বপনে মে রোজ আয়ে, আ জিন্দেগি মে আনা। অন্য ছেলে গুলো নুসাইবার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে আহহাআআ, আ জিন্দেগি মে আনা। মেয়েদের কখনো  বুঝতে অসুবিধা হয় না কখন তাদের দিকে ছেলেদের দৃষ্টি পড়ছে। তার উপর এই কলেজের ছোকড়ারা এমন ভাবে গান গাচ্ছে যাতে  বুঝাই যাচ্ছে ওকে উদ্দ্যেশ করে গান গাচ্ছে। লাল হয়ে যায় লজ্জায় নুসাইবা। শেষ পর্যন্ত একদল কলেজের ছেলে ওকে টিজ করছে। এই বয়সে? বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিডি নুসাইবা করিম এর দাপটে যেখানে সবাই টটস্থ থাকে সেখানে এই ছেলে গুলো তাকে টিজ করছে। নুসাইবার একবার মনে হয় রিক্সা থেকে নেমে ছেলে গুলো কে থাপ্পড় মেরে আসি। তবে পর মূহুর্তে ভাবে এমনিতেই আরশাদের ঝামেলা নিয়ে জীবন ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে সেখানে এইসব কলেজের ছোকড়ার সালমান খান সাজার ব্যর্থ প্রয়াস কে বেশি সিরিয়াস ভাবে নেওয়ার কিছু নাই। তবে যতই মন থেকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করুক ছেলে গুলো তখনো সালমান খান হবার চেষ্টায় রত। নুসাইবা খানিকটা বিরক্ত, খানিকটা বিব্রত। মাহফুজ ছেলে গুলোর কাজকর্ম শুরু থেকে দেখছিল। নটেরডেম ঢাকায় ছেলেদের জন্য বেস্ট কলেজ। নরমালি খুব ভাল ছাত্র না হলে এখানে চান্স পায় না কেউ। ছেলেরাও ভাল ডিসিপ্লিনড। তবে সতের আঠার বছর বয়সের ছেলেরা যেমন হয় তেমন এই ছেলেগুলো। এই বয়সে মেয়ে দেখলে একটু মন উতালা হবে। আর যদি নুসাইবার মত সুন্দরী হয় তাহলে আর বেশি উতলা হবে। মাহফুজ ঐ বয়সে বন্ধুদের সাথে থাকলে ঠিক হয়ত সেইম জিনিসটাই করত। তবে এই মুহূর্তে নুসাইবার চোখ মুখ লাল হয়ে যাওয়া দেখে খারাপ লাগে। এমনিতেই এই কয়দিন বেশ খারাপ অবস্থার মাঝে আছে মানসিক ভাবে নুসাইবা। মাহফুজের মনের ভিতর খানিকটা গিল্ট ফিলিংস কাজ করে কারণ এর শুরুটা পত্রিকার রিপোর্টিং দিয়ে আর রিপোর্টিংটা মাহফুজ করিয়েছে। মাহফুজ ভেবেছিল ছেলেটা দুই একবার গান গেয়ে চুপ করে যাবে অথবা সামনের হালকা জ্যাম ছুটে গিয়ে রিক্সা সামনে এগিয়ে যাবে। তবে দুইটার কোন কিছুই হল না। সামনের জ্যাম ছুটল না আর ছেলে গুলোও গান থামাচ্ছে না। মাহফুজের এবার বিরক্ত লাগে। নুসাইবার চেহারায় এক সাথে বিরক্তির ছাপ আর গাল লাল হয়ে আছে। মাহফুজ হঠাত করে ইন্সটিংকট বসে রিক্সা থেকে নেমে দাড়াল। নুসাইবা বা ছেলে গুলো কিছু বুঝার আগে তিন চার পা হেটে ছেলে গুলোর সামনে দাঁড়ায়। যে ছেলেটা গান গাচ্ছিল সেই ছেলেটাকে শক্ত গলায় বলে শোন ছেলে, গান থামাও। ছেলে গুলো একটু থমকে যায়। এরকম করে হঠাত করে কেউ এসে চার্জ করবে বুঝে উঠতে পারে নি। তবে সতের আঠার বছর বয়সী ছেলেদের মাঝে অনেক সময় এক ধরনের সাহসিকতা কাজ করে যেখানে তারা আশে পাশের পরিস্থিতি ঠিক মত না বুঝে সাহস দেখায়। এই ছেলে গুলোও ঠিক সেই কাজটাই করল ঠিক সেই সময়। মাহফুজের প্রথম কথায় চুপ করে গেলেও কয়েক সেকেন্ড বিরতি দিয়ে নিজেরা নিজেদের দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি শুরু করল। আর জোরে জোরে বলা শুরু করল হিরো, হিরো। মাহফুজ রিক্সায় ফিরে যাবার জন্য উলটা ঘুরেছিল। তবে এই হিরো, হিরো হল্লা শুনে মেজাজ এইবার চরম খারাপ হল। ছেলে গুলো কিছু বুঝার আগেই উলটা ঘুরেই মূল যে ছেলেটা গান গাচ্ছিল সেই ছেলেটাকে এক রাম থাপ্পড় মারল। ছেলেটা একটা টুলে বসা ছিল থাপ্পড় খেয়ে সেই ছেলেটা মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেল। মাহফুজ জানে এইসব ক্ষেত্রে বেশি সময় দিতে হয় না। তাই সংগে সংগে পাশ ফিরে আরেকটা ছেলে কে মাথার চুল ধরে কষে দুইটা থাপ্পড় মারল। মাহফুজ এমনিতেই অনেক লম্বা চওড়া, তাই ওর কাছে দুইটা পরপর থাপ্পড় খেয়ে দাঁড়ানো ছেলেটা মাটিতে বসে পড়ল গাল ধরে। বাকি ছেলে গুলো ওকে কিছু বলার জায়গায় দুই পা পিছিয়ে গেল। এরা নটরডেম কলেজের ভাল ছাত্র টাইপ ছেলে। রাস্তায় মেয়েদের দেখে গান গাওয়া বা দুই একটা কমেন্ট ছুড়ে দেবার সাহস থাকলেও মারামারি করা টাইপ এরা না। তাই মাহফুজের এই আক্রমণাত্মক অগ্নিমূর্তি এদের ভড়কে দিয়েছে। মাহফুজ হয়ত বাকি ছেলে গুলো কেও দুই একটা চড় দিত। তবে এর মাঝে নুসাইবা তাড়াতাড়ি রিক্সা থেকে নেমে ওর হাত ধরে রিক্সার দিকে টেনে নিয়ে গেল। রিক্সায় উঠতে উঠতে সামনে জ্যাম ছুটে গেছে। দুইজনে রিক্সায় বসে পড়ল। কোন কথা ছাড়াই চ্যাংপাই চাইনিজ রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত পৌছে গেল দুইজন।


চাইনিজ রেস্টুরেন্ট গুলো যেমন হয় এটার ভিতরটাও তেমন। এসির বাতাস, আলো আধারি খানিকটা। কাউন্টারের পাশে একটা একুরিয়ামে কিছু মাছ খেলা করছে। ভিতরে বসে অর্ডার দিল ওরা। অংথং আর থাই সুপ। অর্ডারের অপেক্ষা করতে করতে নুসাইবা বলল ছেলে গুলো কে এইভাবে মার না দিলেও পারতে। মাহফুজ জানে কথাটা সত্য। তবে নিজেকে ডিফেন্ড করে বলল, মানা করার পরেও এইভাবে গান গাওয়া ওদের ঠিক হয় নি। মেয়েদের কিভাবে সম্মান করতে হয় সেটা এই বয়সে না শিখলে পরে সব লুচ্চা বদমাশ হবে। নুসাইবার খায়রুল সাহেবের কথা মনে পড়ে। আরশাদ কিভাবে অফিসের সুবিধার জন্য চুপ করে ছিল এত বড় ঘটনার পর। আর মাহফুজ এই অল্প জিনিসে যে রিএকশন দেখিয়েছে সেটা একদিক দিয়ে ভাল লাগছে। ছেলেটা জানে মেয়েদের কিভাবে রেসপেক্ট দিতে হয়। অংথং সুপ আসতে আসতে নুসাইবা কথা শুরু করল। নুয়াইবা জানে এই ব্যাপারে কথা বলা কতটা কঠিন কিন্তু বলতে হবে তাই যতটা নরমালি বলা যায় ততটা নরমালি বলা শুরু করল। ল্যাপটপ সার্চ করে কিভাবে গোপন ইমেইল এড্রেস পেল। সেই এড্রেসে কিভাবে জুয়ার রিসিট পেল সেইসব বলল। পর্ন সাইট পাওয়ার কথা চেপে গেল। ঘুষ, জুয়ার মত বড় জিনিস বলতে পারলেও নিজের জামাই যে পর্ন দেখা পাভার্ট সেটা যেন স্বীকার করতে কষ্ট হচ্ছে ওর। মাহফুজ অবাক হল না। কারণ এইসব জিনিস আগে থেকে জানা ছিল মাহফুজের। এখন এই রিসিট দেখে শতভাগ নিশ্চিত হল নুসাইবা। তবে এর পরের ব্যাপারটা কিভাবে বলবে বুঝে পাচ্ছিল না নুসাইবা। মাহফুজ বুজে নি এরপরেও কিছু আছে। নুসাইবা উসখুস করতে থাকে। মাহফুজ ভাবে হয়ত নুসাইবা ওর কাছে বনানীর আপডেট জানতে চাচ্ছে। মাহফুজ সোলায়মান শেখ কে আর দুইবার নক দিয়েছে। সোলায়মান শেখ একটা হাই প্রোফাইল কেসে এখন ব্যস্ত। বলেছে চার পাচ দিন পর আবার চেক করবে কি খোজ বের করতে পারে। তবে এত বড় এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে কোন স্পেসিফিক এপার্টমেন্ট এই ইনফরমেশন না দিলে খুজে বের করা একটু কঠিন। যখন তার উপর এমন ভাবে খোজ বের করতে হবে যাতে কেউ টের না পায় তার পিছনে খোজ করা হচ্ছে। মাহফুজ তাই নিজ থেকে উদ্যোগ নিয়ে বলতে থাকে যে মাহফুজ খোজের চেষ্টা করছে। তবে যে লোক খোজ বের করে দেয় সেই লোক অন্য একটা কাজে ব্যস্ত। তাই আর সাত আটদিনের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। মাহফুজ অংথং এ কামড় দিয়ে সুপে চুমুক দেয়। নুসাইবা চামচ দিয়ে সুপ নাড়াচাড়া করে তবে খায় না। মাহফুজ খেয়াল করে। মাহফুজ বলে ফুফু চিন্তা করবেন না। আমার এই লোক দারূন কাজের। ঠিক খোজ বের করবে। নুসাইবা আসলে মাহফুজ কে কিভাবে বলবে ক্লাউড নাইনের কথা সেটা ভাবছে। মাহফুজ কে না বলে আর কাউকে বলার নাই। তাই অন্তত মাহফুজের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছে। ওর মনের ভিতর আরশাদ কে নিয়ে যে প্ল্যানটা ঘুরছে সেটাও মাহফুজ কে দিয়ে যাচাই করিয়ে নিতে চাচ্ছে। মাহফুজ তাই কি বলছে সেদিকে নুসাইবার তেমন খেয়াল নেই। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে ফুফু শরীর ঠিক আছে আপনার। নুসাইবা মাথা নারে। তাহলে কিছু কি হয়েছে। নুসাইবা মাথা নাড়ে। মাহফুজ বুঝে কিছু একটা হয়েছে। মাহফুজ মনে মনে ভাবে আরশাদ যে ভিতরে ভিতরে এত বড় চাল্লু মাল সেটা শুরুর দিকে সে নিজেও বুঝে নি। তাই নুসাইবা যে আর বড় শকে থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। মাহফুজ সুপ শেষ করে ফেলে। নুসাইবা তখনো সুপ নাড়াচাড়া করে যাচ্ছে। চুপচাপ বসে থাকে দুইজন। মাহফুজ কি বলবে ভেবে পায় না। চাইনিজ রেস্টুরেন্টের আলোতে নুসাইবা কে আর সুন্দর লাগছে। মাহফুজ বার বার আড় চোখে তাকাচ্ছে। নিজের কাছে নিজের উদ্ভুত লাগে। ফুফু বলে ডাকছে আবার নুসাইবার সৌন্দর্য দেখছে চুরি করে।


নুসাইবা সব সাহস এক করে বলে, মাহফুজ ওই ইমেইল এড্রেসে আর একটা জিনিস পেয়েছি। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কি ফুফু। নুসাইবা সুপ নাড়তে থাকে। মাহফুজের দিকে তাকাতে পারে না। যে আরশাদের এত সুনাম করে বেড়িয়েছে সারাজীবন কেমন করে অন্য কাউকে বলবে আরশাদ সম্পর্কে এই কথা। মাহফুজ হবে প্রথম ব্যক্তি যার সাথে ও এই কথা শেয়ার করছে। মাহফুজ কিছু বলে না কারণ জানে নুসাইবা এমনিতে চাপে আছে। নিজে থেকেই বলুক। বলবে বলেই তো ওকে ডেকে এনেছে এখানে। নুসাইবা বলে ঐ ইমেইলে কিছু মেইল আছে। কার একজনের সাথে মেইল চালাচালি করে নিয়মিত আরশাদ। কোন নাম নেই। ইমেইল এড্রেসটার নাম ক্লাউড নাইন জিমেইল ডট কম। মাহফুজ বলে কি আছে সেইসব মেইলে? নুসাইবা কিভাবে বলবে বুঝে না। বলতে চায় কিন্তু মনের ভিতর এতদিনের ইগো যেন আটকে দিচ্ছে সব। মাহফুজ আবার জিজ্ঞেস করে কি আছে সেই সব ইমেইলে? নুসাইবা বলে এই ক্লাউড নাইন সম্ভবত কোন মেয়ে। মাহফুজ কয়েক সেকেন্ড বিরতি নেয়। এতো নতুন টুইস্ট। মাহফুজ নিজেও ভাবে নি। অবশ্য বনানীর সেই বাসা নিয়ে একটু সন্দেহ মাথায় ছিল। তবে এতো নতুন টুইস্ট। জিজ্ঞেস করে, ফুফু আপনি শিওর? নুসাইবা মাথা তুলে তাকায়। কথা বলে না তবে হ্যা সূচক মাথা নাড়ায়। মাহফুজ বলে কিভাবে শিওর হলেন। নুসাইবা ভাবে কিভাবে বলবে সেই কথাটা। আরশাদ যে ক্লাউড নাইন কে লিখেছিল, আই নেভার টাচ এনি বুবস লাইকস ইউরস। কিভাবে বলা সম্ভব সিনথিয়ার বন্ধু কে এই কথা। নুসাইবা তাই বলে আমি তোমাকে বলতে পারব না কিন্তু আমাকে ট্রাস্ট কর আই সি সাম থিং দেট আই কেন নট টেল ইউ। তুমি সিনথিয়ার বন্ধু। মাহফুজ বুঝে তাই আর জোর করে না।


নুসাইবার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। এরকম হিউমিলেশন হওয়া লাগবে কখনো ভাবে নি আগে। ভাতিজির বন্ধুর কাছে নিজের কষ্টের কথা বলতে হচ্ছে। যে স্বামী কে নিয়ে এত গর্ব করে সেই স্বামীর পিছনে স্পাই থ্রিলারের মত সিএনজি করে ঘুরতে হয়। যে স্বামী কে এত ভালবাসে সেই স্বামীর পরকীয়ার কথা মাহফুজের সাথে শেয়ার করতে হচ্ছে। নুসাইবার চোখের পানি পড়ছে। মাহফুজ বুঝে নুসাইবার মনের সংগীন অবস্থা। নুসাইবার মত প্রাউড, ইগোইস্টিক মানুষ যখন ওর সামনে নিজের স্বামীর পরকীয়ার কথা স্বীকার করছে সেটা কঠিন হবার কথা। আরশাদ আসলেই একের পর এক শক দিয়ে চলছে সবাই কে। মাহফুজ হাত বাড়িয়ে নুসাইবার হাত ধরে। দুই হাতের মুঠোয় নুসাইবার হাত নিয়ে বলে ফুফু আমি আছি। সব ঠিক হয়ে যাবে। যদিও বলছে সব ঠিক হয়ে যাবে তবে মাহফুজের মাথায় কোন আইডিয়া নাই কিভাবে আরশাদের এই পরকীয়া কে ডিল করা যায়। তবে মাহফুজের হাতের ভিতর থাকা নুসাইবার নরম হাত যেন আরশাদ কে একটা ধন্যবাদ দেয় গোপনে গোপনে। আরশাদ এত কীর্তি না করলে কি এই নরম হাতের এত কাছে আসতে পারত। মাহফুজ বলে আমাদের এখন কোন একটা প্ল্যান বের করতে হবে। আমি শিউর খুজলে বের হবে বনানীর সেই এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে থাকে আমাদের ক্লাউড নাইন। মাহফুজের কথাটাই এই কয়দিন ভাবছে নুসাইবা। ক্লাউড নাইনের সাথেই কি দেখা করতে যায় আরশাদ বনানীতে। এই কয়দিনে তাই ভেবে ভেবে বের করা প্ল্যানটা আরশাদের সাথে। জেনিফারের কাহিনী প্রথমে শেয়ার করে অবশ্য জেনাফেরে নাম বলে না। বলে আমার এক বান্ধবীর আর তার হাজব্যান্ডের কাহিনী। মাহফুজ মনযোগ দিয়ে কাহিনী শুনে বুঝার চেষ্টা করে নুসাইবা কি প্ল্যানের কথা বলে। নুসাইবা মাহফুজের মুখ দেখে বুঝতে পারে ওর প্ল্যানটা ঠিক করে বুঝে উঠতে পারছে না মাহফুজ। নুসাইবা বলে আমার বান্ধবীর হাজব্যান্ড কেন ফেরত এসেছিল? মাহফুজ একটু ভাবে। তারপর বলে জেলাসি? নুসাইবা বলে হ্যা আমার বান্ধবীও সেটাই ভাবে। তবে আমি এই কয়দিনে অনেকবার ভেবেছি। আমার বান্ধবীর জামাই আর  বান্ধবী কে আমি অনেক  বছর ধরে চিনি। ঠিক সেই ভাবে আরশাদ কে চিনি অনেক বছর। আমাদের মাঝে মিল কি জান? মাহফুজ মাথা নাড়ায়। নুসাইবা বলে আমার বান্ধবীর জামাই বা আরশাদ এরা দুই জন খালি বাইরের মেয়েদের সাথে রিলেশনে জড়ায় নি। এরা দুই জনেই ভিতরে ভিতরে বউ কে অনেক ভালবাসে। মাহফুজ  বুঝে নুসাইবা এখনো আরশাদ কে আকড়ে ধরে থাকতে চাইছে। খালি জেলাসির জন্য কোন জামাই ফিরে আসবে না। সেখানে ভালবাসা থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস আরশাদের মধ্যে সেই ভালবাসা আছে। তাই আমি যদি বান্ধবীর মত কিছু করি তাহলে ঠিক আরশাদ আমার কাছে ফিরে আসবে। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে তারপরেও যদি ফিরে না আসে? নুসাইবা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, বলে তাহলে বুঝতে হবে এত দিনের সব ভালবাসা কোথায় মরে পড়ে আছে। আর এইভাবেই সেই চাইনিজ রেস্টুরেন্টে জন্ম নিল আরশাদ কে অজানা ফোন নাম্বার দিয়ে কিভাবে নুসাইবার কাল্পনিক রিলেশনের কথা বলে জেলাস করা যাবে সেই প্ল্যান। নুসাইবার মনে হল এটাই একমাত্র উপায় আরশাদের ভিতরে ওর জন্য থাকা ভালবাসা আর শক্ত করার। আর মাহফুজের সন্দেহ হয় ঠিক কতটা কাজ করবে এই প্ল্যান তবে আর বাধা দেয় না কারণ অন্তত এই প্ল্যান বাস্তবায়ন করার জন্য হলেও নুসাইবার কাছাকাছি থাকার আর সুযোগ পাবে মাহফুজ।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২৩) - by কাদের - 14-08-2023, 10:58 AM



Users browsing this thread: raax42, unknown_007, 10 Guest(s)