Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


মাহফুজের সাথে সাইলাইম রেস্টুরেন্টে কথা বলার পর থেকে প্রায় এক সাপ্তাহ চলে গেছে। নুসাইবা এক প্রকার ঘোরে আছে এখনো। মাহফুজের কথা থেকে এতটুকু বুঝতে পেরেছে টাকার আদান প্রদান হয়েছে সেই সাংবাদিকের সাথে তাই এত বাজে রিপোর্টিং। লজিকালি চিন্তা করলে মানুষ সাংবাদিক কে টাকা সাধবে তখনি যখন সে নিজে দোষী। দোষ ঢাকার জন্য তখন সে টাকা ঢালবে। অন্য সময় অল্প কিছুতেই মাথা গরম করে চিৎকার চেচামেচি করে চারপাশের সবাই কে অস্থির করে দেয় নুসাইবা। তবে এইবার একদম  উলটো। থম করে চুপ মেরে আছে। আসলে নুসাইবা বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে ও। ওর জীবনে সবচেয়ে বড় শক্তিশালী জায়গা ছিল ওর ম্যারেজ আর আরশাদ সেখানে ভিত্তিস্তম্ভ। আরশাদের উপর যতটা বিশ্বাস করে ও ততটা বিশ্বাস নিজের বাবা-মা ছাড়া আর কাউকে করে নি কখনো। তাই ওর কাছ থেকে এত বছর ধরে এত কথা লুকানো, গোপনে গোপনে ঘুষ খেয়ে সেই ঘুষের টাকা কে শেয়ার বাজারের লাভের টাকা বলে চালানো। সব মিলিয়ে আরশাদের যে অনেস্ট পার্সনের একটা ইমেজ এত বছর ওর মনের ভিতর ছিল সব যেন ভেংগে গেছে। কার সাথে এটা নিয়ে কথা বলবে ও? কথা বলবার মত তো কেউ নেই। দুই ভাই বিদেশ থাকে। বড় ভাই দেশে থাকলেও চাকরিতে এত ব্যস্ত নিজের বাসায় পর্যন্ত ঠিক করে সময় দেয় না। সেখানে ওর জীবনের দুঃখ শোনার সময় কই ভাইয়ার। সাফিনা ভাবী কে কি বলবে? ভাবী এত পছন্দ করে ওদের। ভাবী কে বলতে ইচ্ছা করে না। ভাবীর সামনে নিজেদের গোপন কথা গুলো আর তুলতে ইচ্ছা করে না। ওর বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল নাফিসা। সেও এখন দেশের বাইরে সেটেলড ডিভোর্সের পর। ওকে কি বলা যায়? ডিভোর্সের পর নাফিসা যখন বিয়ে ব্যাপারটা নিয়ে একদম বিরক্ত তখন বারবার নুসাইবা নিজের বিয়ের উদাহারণ দিয়ে বলেছে সব বিয়ে এক রকম না। এখন আবার আরশাদের এই কথা ওকে বললে কি করবে নাফিসা? নিশ্চয় একচোট হাসবে। মানুষের হাসির মুখোমুখি হবার ইচ্ছা আপাতত ওর নেই। তাই কাউকেই বলে না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে এই কথা চাপা পড়ে ওকে আর কষ্ট দিতে থাকে। এদিকে আরশাদ টের পায় নুসাইবা ঠিক আগের মত ব্যবহার করছে না। এক ধরণের শীতলতা আচরণে। আরশাদ বুঝে ওর সাংবাদিক সম্পর্কিত  ব্যখ্যা পুরোপুরি বিশ্বাস করে নি নুসাইবা। কারণ এই কয়দিনে নানা রকম খুটিনাটি প্রশ্ন করেছে সেই রিপোর্ট আর মিটিং নিয়ে। প্রশ্ন গুলো এত টু দ্যা পয়েন্টে সেটা এড়িয়ে যাওয়াই কঠিন। এটাক ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স। তাই আরশাদ এই বিষয়ে কথা উঠলেই রেগে গিয়ে বলছে তুমি কি আমাকে বিশ্বাস কর না। একটা ফালতু সাংবাদিক কোথায় কি লিখল সেই কারণে আমাকে অবিশ্বাস করছ। এত বছর ধরে চিন তুমি আমাকে। আরশাদ যতবার রেগে যাচ্ছে নুসাইবা ততবার কোন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। শান্ত চোখে সেই সময়টা ওকে পর্যবেক্ষণ করছে। এতে আর বেশি কনফিউজড হয়ে যাচ্ছে আরশাদ। নুসাইবা শান্ত হয়ে বসে থাকার মেয়ে না। এত বছর যতবার আরশাদ রাগ দেখিয়েছে ততবার আর কয়েকগুণ রাগ দেখিয়েছে নুসাইবা। নুসাইবার রাগ বেশ বিখ্যাত ওদের ফ্যামিলিতে। রেগে গেলে কি বলে আর কি করে তার কোন ঠিক ঠিকানা থাকে না। সেখানে এইবার গত কয়েকদিনে নুসাইবা আরশাদ রাগার পরেও পালটা রাগছে না কেন সেটা বুঝতে পারে না আরশাদ। এই না বুঝতে পারাটা আর বেশি অস্থির করে তুলে ওকে ভিতরে ভিতরে।


নুসাইবা নিজেই নিজের শান্ত থাকার ক্ষমতা দেখে অবাক হয়। কত তুচ্ছ ব্যাপারে চিৎকার চেচামেচি করে মাথায় তুলেছে কিন্তু এইবার কিভাবে আর কেন চুপ আছে এটার ব্যখ্যা সে নিজেও জানে না। আসলে আরশাদের ব্যাপারটা ওর জন্য এতবড় শক হয়ে এসেছে যে এর রিএকশন কিভাবে দেখাবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না নুসাইবা। একবার মনে হয় মাহফুজ কি ওকে সব ভুল বলল। আরশাদ যা বলেছে সেটা ঠিক? কিন্তু চিন্তা করলে দেখা যায় লজিক্যালি মাহফুজ যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেটাই ঠিক। হঠাত করে একটা রিপোর্টিং এর মান আগের রিপোর্টিং এর মানের চেয়ে এত খারাপ হতে পারে না। যে রিপোর্টিং নিয়ে আরশাদ রাতে ঘুমাতে পারছিল না সেই রিপোর্ট এর পরের পার্ট বের হবার পর আরশাদ এত খুশি খুশি থাকত না যদি না ব্যাপারটা আগে থেকেই ফিক্স করা হয়ে থাকে। পাতানো ম্যাচের মত। আর দোষী না হলে কখনো সাংবাদিক কে টাকা অফার করত না আরশাদ। কিন্তু এই ঘুষ আসলে কিভাবে খায় আরশাদ? টাকা কোথায় যায়? মাহফুজ কিছু কিছু ইংগিত দিয়েছে। কিন্তু নুসাইবার এত কিছুর পরেও সেটা বিশ্বাস হতে চাইছে না। জমি গুলো কি আসলেই শেয়ারের টাকায় কিনা নাকি ঘুষের টাকায়। রিয়াদ ভাই জানতে পারে কিন্তু তাকে প্রশ্ন করে লাভ নেই। বন্ধুর ব্যাপারে তার অটল আনুগত্য। মাহফুজ বলেছে আরশাদ নাকি ঢাকার কোন এক এলিট ক্লাবে জুয়া খেলে। বিশ্বাস হতে চায় না। জুয়া আর আরশাদ, মনে হয়ে দূর দূর পর্যন্ত এই এই দুইজনের মাঝে সম্পর্ক নেই। কিন্তু মাহফুজ বলেছে এই ব্যাপারে নাকি ঐ সাংবাদিকের কাছে প্রমাণ ছিল। আরশাদ বড়াবড় শান্ত, কোন এডভেঞ্চারাস কিছু নেই ওর মাঝে। বই পড়ে আর সিনেমা দেখে নুসাইবার মনে হয়েছিল জুয়াড়িরা সব পাড় মাতাল না হলে এড্রোলিন জাংকি। উত্তেজনার নেশায় ছুটে বেড়ায়। ওর চেনা পৃথিবীর বাইরের কিছুর সাথে যেন ওর মোলাকাত  হয়েছে। তাই নুসাইবা হিসাব মিলাতে পারে না। নুসাইবা তাই আবার মাহফুজ কে ফোন দেয়। আশ্চর্য হলেও সত্য এই ছেলেটাই খালি এখন নুসাইবার মনের অবস্থা কিছুটা আচ করতে পারছে, আর এই ছেলেটাই আরশাদের গোপন ব্যাপার গুলো জানে। তাই ওর সাথে কথা বলা ছাড়া মন হালকা করার আর কোন উপায় নুসাইবার কাছে নেই। কার সাথে এই মূহুর্তে কথা বলতে না পারলে পেট ফেটে মারা যাবে ও মনে হয়  নুসাইবার


গত সাত আটদিনে সাবলাইম রেস্টুরেন্টের পর তিনবার মাহফুজের সাথে নুসাইবার কথা হয়েছে ফোনে। প্রতিবার প্রায় এক ঘন্টার কাছে। কথার প্যাটার্ন এক। প্রতিবার নুসাইবা ফোন করে সেই মিটিং, আরশাদের ঘুষ খাওয়া এগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন করে মাহফুজ কে। মাহফুজ যতটা নিজেকে আড়াল করা যায় ততটা করে প্রশ্নের উত্তর দেয় যাতে সন্দেহের তীর ওর দিকে না আসে। প্রতিবার কথার শেষের দিকে নুসাইবা একদম চুপ হয়ে যায় আর ফোন রেখে দেয়। মাঝে মাঝে কথার মাঝখানে বলে জান মাহফুজ আমার একদম বিশ্বাস হচ্ছে না আরশাদ এগুলো করেছে। মাহফুজ বলে আমি জানতাম আপনি বিশ্বাস করবেন না তাই বলতে চাই নি। নুসাইবা বলে না না, আমি ভাবছি লজিক্যালি তোমার কথা ঠিক। আর এই ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলেই আরশাদ যেভাবে রিএক্ট করছে তাতে আমার সন্দেহ আর শক্ত হচ্ছে। এইবার তাই নুসাইবার ফোন দেখে মাহফুজ ভাবে একই কারণে ফোন দিয়েছে বুঝি। বার বার এক কথা বলতে একটু বিরক্ত লাগে তবে মাহফুজ জানে নুসাইবা সন্তুষ্ট রাখতে পারার উপর সিনথিয়ার সাথে ওর রিলেশন নির্ভর করছে। আর আরেকটা ব্যাপারও অবশ্য আছে। নুসাইবার সাথে কথা বলতে মাহফুজের ভাল লাগছে। নুসাইবার কথায় একটা ম্যাচিওর ব্যাপার আছে। সিনথিয়া যেখানে অনেক চাইল্ডিশ। সাবরিনা অনেক বেশি রিজার্ভড। সেখানে নুসাইবা ম্যাচিওর এবং ঠিক কথা বার্তায় অত চুপচাপ না। একটা প্রাণোচ্ছল  ব্যাপার আছে। এটা মাহফুজের ভাল লাগছে। আর গলার স্বরটা ফোনে সুন্দর শোনায়। কথায় কথায় নুসাইয়াব বলেছিল আরশাদের সাথে প্রথম কথা হয়েছিল ডিপার্টমেন্টের প্রোগ্রামের কবিতা আবৃত্তি করা নিয়ে। আরশাদদের  ব্যাচ ছিল সেবার আয়োজক  ব্যাচ। আর নুসাইবা কবিতা আবৃত্তি করতে চেয়েছিল। গলা শুনলেই বুঝা যায় এই গলা কবিতা প্রাকটিস করা। মাহফুজের ভাল লাগে। এই ব্যাপারটা অবশ্য মাহফুজ স্বীকার করতে চায় না। প্রতিবার নুসাইবার সাথে কথা বলার সময় মাহফুজের গায়ে কাটা দিয়ে উঠে। শরীরে যেন রক্ত প্রবাহের বেগ বেড়ে যায়। সিনথিয়ার ওর ফুফু কে নিয়ে বলা কথা গুলো মনে পড়ে যায়। খুব অস্বস্তি হতে থাকে আবার ভাল লাগে। দ্বৈত এই অনুভূতি মাহফুজ কে একরকম দুলাতে থাকে। এইসব ভাবতে ভাবতে ফোন রিসিভ করে। হ্যালো বলতেই নুসাইবা ঐপাশ থেকে মাহফুজ কে বলে। শোন মাহফুজ আমাকে হেল্প করতে হবে। মাহফুজ বলে জ্বী বলেন। নুসাইবা বলে আমার আর প্রুফ লাগবে আরশাদের ব্যাপারে। মাহফুজ কয়েক সেকেন্ড ভাবে এরপর বলে, আংকেল ঘুষ খায় কিনা সেটা তো আসলে প্রমাণ করতে পারবে দূর্নীতি দমন কমিশন নাহলে পুলিশ। আমি তো এই দুইটার কোনটার মধ্যে না। নুসাইবা একটু দম নেয়। মাহফুজের কথায় যুক্তি আছে। তবে ভেবে বলে তুমি আমাকে আরশাদের জুয়া খেলার প্রমাণ যোগাড় করে দাও। তাহলেই হবে। জুয়া খেললে সহজেই বুঝা যাবে এই টাকা সৎ উতস থেকে আসে নি। কারণ সরকারি চাকরির বেতনে এই টাকা হবে না। মাহফুজ মুচকি হাসে। ওর প্ল্যান এভাবে রেজাল্ট আনবে সেটা মাহফুজ নিজেও ভাবে নি। মাহফুজ বলে আমাকে একটু সময় দেন ব্যবস্থা করছি। আর আপনি না বলেছিলেন আংকেল প্রতি সাপ্তাহে একবার অন্তত দুইবার আড্ডা দিতে বের হয় বন্ধুদের সাথে। আমার মনে হয় আংকেল সেদিন গুলাতে যায়। এখন আপনি আসলে কি করতে চান সেটা বলেন। নুসাইবা সংগে সংগে বলে ফলো করব ওকে আমরা। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে, আমরা? নুসাইবা বলে হ্যা তুমিও সাথে থাকবে আমার। প্লিজ। এই হেল্পটুকু কর। মাহফুজ মনে মনে ভাবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হবে। নুসাইবার এত দেমাগ আবার ভেংগে পড়তে দেখবে সামনা সামনি। খারাপ হয়
না ব্যাপারটা। তাই মাহফুজ বলে, ওকে। আপনি আমাকে তাহলে আগে থেকে জানাবেন কোন দিন আংকেল আড্ডা দিতে বের হবে।






মাহফুজের সাথে কথা বলার পর থেকেই নুসাইবা ভাবছিল কি করা যায়। তাই আরশাদ কে বলল এই শুক্রবার আমি বড় ভাইয়ার ঐখানে যাব। অনেকদিন সাফিনা ভাবীর সাথে কথা হয় না। তুমি যাবে? আরশাদ বলে তুমি যাও। ভাবীর সাথে আড্ডা দিলে মন ফ্রেশ হবে। আমিও দেখি এই শুক্রবার ভাবতেছি বন্ধুদের সাথে একটু কার্ড খেলব, আড্ডা দিব। এই কয়দিন যত প্রেসার গেল আমাদের দুইজনের আসলে একটু রিফ্রেশ হওয়া লাগবে। নুসাইবা জিজ্ঞেস করে ড্রিংক করবা তুমি বন্ধুদের সাথে। আরশাদ বলে তুমি তো জান আমি খুব বেশি ড্রিংক করি না। হালকা। সোশ্যাল ড্রিংকার যাকে বলে। খেলার সময় না করলে ঠিক আড্ডা জমে না। নুসাইবা কথা বাড়ায় না। বুঝে এই শুক্রবার আরশাদ কে ফলো করার উপযুক্ত সময়। তাই মাহফুজ কে সব জানায়। মাহফুজ বলে আপনি রেডি থাকবেন আমি সব করব। দুপুরে খাবার পর সাফিনাদের বাসায় যাবার কথা বলে নুসাইবা বের হয়ে পড়ে। আরশাদ বলে আমি আর দুই ঘন্টা পর বের হব। নুসাইবা বাসা থেকে বের হয়ে একটু দূরে অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর মাহফুজ আসে। মাহফুজ আজকে এক সিএনজি ভাড়া করে এনেছে। পরিচিত ড্রাইভার। যতক্ষণ থাকবে পরে সেই অনুযায়ী ঘন্টা হিসেবে টাকা দিবে। মাহফুজ জানে ঢাকা শহরে এই সিএনজি গুলো হল কাউকে ফলো করার সবচেয়ে ভাল বাহন। পুরো শহরে লাখে লাখে এই সবুজ সিএনজি অটো। তাই কেউ বুঝতেই পারবে না ফলো করলে। কারণ রাস্তায় হাজার  হাজার সিএনজি পাশাপাশি চলে এক সময়। আর যানযটের ভিতর দিয়েও বেশ ভাল এগুতে পারে। দুইজন ওদের বাসার উলটো দিকে সিএনজিতে অপেক্ষা করতে থাকে। নুসাইবা সিএনজির ভিতরে থাকে যাতে কেউ ওকে না চিনতে পারে। গায়ের ওড়না এমনভাবে মুখে প্যাচিয়ে রেখেছে যাতে মুখ ঢেকে থাকে। মাহফুজ দেখে ওড়না দিয়ে মুখ ঢাকতে গিয়ে বুকের কাছ থেকে ওড়না সরে গেছে। মাহফুজ চাইলেও নজর সরাতে পারে না। উদ্ধত বুক দুইটা যেন সব নজর কেড়ে নিচ্ছে। নুসাইবার মাহফুজের দিকে খেয়াল নেই। এক দৃষ্টিতে এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের গেটের দিকে তাকিয়ে আছে। বেশ কিছুক্ষণ পর আরশাদ নিচে নেমে আসে। বেশ ফিটফাট করে সেজে আছে। আড্ডা দিতে যাবার সময় এমন ফিটফাট করে ইন করে ড্রেস পড়ে না সাধারণত আরশাদ। ওর বন্ধুরা এমন করলে ক্ষেপায় ওকে। তাই নুসাইবা বুঝে আরশাদ বন্ধুদের ঐখানে যাচ্ছে না। ওদের ড্রাইভার ছুটিতে। আরশাদ তাই রাস্তায় দুই এক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে আর মোবাইল চেক করে। একটু পরে একটা কার এসে থামে সামনে। মাহফুজ বলে সম্ভবত উবার ডেকেছে। মাহফুজদের সিএনজি আরশাদের উবার কে ফলো করতে থাকে। শুক্রবার ছুটির দিন লাঞ্চের পর পর রাস্তা ফাকা থাকে। তাই গাড়ি দ্রুত বেগে চলছে। সিএনজি সমানতালে ফলো করছে। মাহফুজ টের পায় ওর শরীর নুসাইবার শরীরের সাথে লেগে যাচ্ছে। এই সিএনজি গুলো ভিতরে এমনিতেও একটু চাপা। তারপর চারপাশে এরকম একটা ঘেড় দেওয়া থাকায় আর কাছে সরে বসতে হয়। নুসাইবার শরীরের উত্তাপ টের পায় মাহফুজ। মাহফুজ টের পায় ওর প্যান্টের ভিতর যেন একটু একটু করে জাগছে কেউ। উবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস ক্রস করে সামনে যাচ্ছে। মাহফুজ জানে জুয়া খেলার জন্য আরশাদ উত্তরা রেস্টহাউজ এন্ড বারে যাবে। তাই এটাই রাস্তা হবার কথা। নুসাইবার দিকে তাকায় মাহফুজ। এক দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে আরশাদের গাড়ি কে দেখছে। যেন জীবন মরণ এর উপর নির্ভর করছে। তবে মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে নেমে একটু সামনে এগুতেই উবার রাইট টার্ন নিল। বনানীর একটা গলিতে ঢুকছে গাড়ি। মাহফুজ একটু অবাক হয়। এখানে কই যাচ্ছে? নুসাইবা জিজ্ঞেস করে এখানেই কি সেই ক্লাব। মাহফুজ বলে নাহ তো। পালটা জিজ্ঞেস করে, এখানে কি উনার কোন বন্ধু থাকে যার বাসায় আড্ডা দিবে। নুসাইবাও বলে না। দুইজনেই ভাবতে থাকে কোথায় যাচ্ছে গাড়ি। এই গলি সেই গলি ঘুরে গাড়ি অবশেষে একটা বড় এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের সামনে থামে। গাড়ি ভিতরে ঢুকে না। আরশাদ নেমে ভাড়া মেটায়। মাহফুজদের সিএনজি একটু সেফ দূরুত্বে দাঁড়ায় যাতে বুঝা না যায়। আরশাদ ভিতরে ঢুকে পড়ে। মাহফুজরা বাইরে অপেক্ষা করে। এক ঘন্টা যায় আরশাদের বের হবার কোন নাম নেই। মাহফুজ একবার এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের গেটের কাছে গিয়ে দারোয়ানদের কে জিজ্ঞেস করে আরশাদের কথা কিন্তু তারা কোন ইনফরমেশন দিতে অস্বীকার করে। মাহফুজ আবার ফেরত আসে সিএনজিতে। নুসাইবা জিজ্ঞেস করে কি ব্যাপার? মাহফুজ  বলে কোন খবর বের করতে পারে নি। দুইজনেই বসে থাকে। সময় গড়ায়। দুই ঘন্টা। তিন ঘন্টা। চার ঘন্টা। মাহফুজ এবার বলে চলুন চলে যাই, উনি মনে হয় আর থাকবে। কিন্তু নুসাইবা বলে নাহ আজকে দরকার হলে সারা রাত ফলো করব। নুসাইবা আজ জানবেই কি করছে ওর অজান্তে আরশাদ। মাহফুজ চুপ করে যায়। ফোনে ফেসবুক ঘাটে। মাঝে পরিচিত দুই একজনের সাথে কিছু দরকারি কথা সারে ফোনে। পুরোটা সময় নুসাইবা সিএনজিতে বসে এক দৃষ্টিতে এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের গেটের দিকে তাকিয়ে থাকে। মাহফুজ নুসাইবা কে দেখে। নুসাইবার সৌন্দর্য নিয়ে কখনো কোন প্রশ্ন ছিল না। এত কাছে নুসাইবার শরীর এখন মাহফুজের মনের উপর তাই প্রভাব বিস্তার করে। সিএনজিতে অনেকক্ষণ বসে বসে কামিজ গায়ে একদম সেটে গেছে। পাছাটা সাইড থেকে ভাল করে দেখলে বুঝা যাচ্ছে। এইসব ভাবতে ভাবতেই আরশাদ বের হয়ে আসল চার ঘন্টা পর। দুই এক মিনিটের মধ্যে আরেকটা উবার এসে হাজির। এবার মাহফুজরা আবার ফলো করতে থাকল। উবার আবার মেইন রাস্তায় উঠে এসে উত্তরার দিকে যেতে থাকে। নুসাইবা জিজ্ঞেস করে এটাই কি সেই ক্লাবের রাস্তা। মাহফুজ হ্যা বলে। নুসাইবা মাহফুজের হাটু খামচে ধরে সামনে তাকিয়ে থাকে। নুসাইবা এখন ঘোরে। বনানীর এই ফ্লাট বাড়িতে কি করছিল এতক্ষণ আরশাদ? আর এখন কি সত্যি সত্যি জুয়ার আড্ডায় যাচ্ছে? কিছুক্ষণ পর উবার আবার একটা গলিতে ঢুকল মেইন রাস্তা থেকে। মাহফুজ জানে এটা পরিচিত রাস্তা। এই গলি কোথায় নিয়ে যাবে। তাই নুসাইবা কে বলে এই গলিতেই একটু পর উত্তরা রেস্টহাউজ এন্ড বার। নুসাইবা মাহফুজের হাটুর উপর ধরে রাখা হাতটা চাপ বাড়ায়। মাহফুজ কিছু বলে না কিন্তু প্যান্টের ভিতর উষ্ণতা টের পায়। এক সময় উবার উত্তরা রেস্টহাউজের সামনে থামে। ভাড়া চুকিয়ে ভিতরে ঢুকে যায় আরশাদ। নুসাইবার মনে হয় ওর সারা পৃথিবী যেন ভেংগে পড়েছে। এতদিনের জানা আরশাদ বুঝি সত্যিকারের আরশাদ না। এতদিন ধরে মনের ভিতর চেপে রাখা আবেগ যেন আর ধরে রাখতে পারে না। ঝরঝর করে কেদে দেয় সিএনজির ভিতর। সিএনজিওয়াল পিছন ফিরে তাকায় কিছু বলে না। মাহফুজ বলে চাচা উলটা ঘুরান। যেখান থেকে প্রথম ম্যাডাম কে তুলছিলেন সেখানে চলেন। সিএনজি আবার ঢাকার রাস্তা ধরে ফিরে চলে। সন্ধ্যা হয়েছে। ছুটির দিন সন্ধ্যায় ভীড় বাড়ে। সিএনজি তাই সিগনালের জ্যাম গুলো ঠেলে ধীরে ধীরে এগুয়। নুসাইবা অঝোরে কেদেই যাচ্ছে। কাদতে কাদতে হেচকি উঠে যাচ্ছে ওর। কি করবে বুঝতে পারে না মাহফুজ। কি করা উচিত ওর। কান্নারত কাউকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দিতে হয়। মাহফুজ তাই পিঠের পিছ দিয়ে হাত নিয়ে নুসাইবা কে জড়িয়ে ধরে। আরেক হাত মাথায় রেখে বলতে থাকে কাদবেন না, সব ঠিক হয়ে যাবে। এতদিন আবেগ ভিতরে চেপে রেখে নুসাইবা এমনিতেও পাগল হয়ে যাচ্চিল। আজ কেদে কেদে আবেগ হালকা করছে এইসময় মানুষের স্পর্শ, সহানুভূতির কথা যেন আর দূর্বল করে দেয় নুসাইবা কে। মাহফুজের কাধে মাথা হেলিয়ে দেয়। এক হাত দিয়ে মাহফুজ কে ধরে আর জোরে কাদতে থাকে। সব দুঃখ আজকে চোখের জলে ভাসিয়ে দিতে চায়। ওর চেনা পৃথিবী যেন কয়েক ঘন্টায় অনেক বদলে গেছে। এতদিন সন্দেহ করেছে আজকে চোখে দেখে যেন চেনা পৃথিবী ভেংগে পড়েছে। তাই মাহফুজ কে জড়িয়ে ধরে কেদে কেদে নিজের ভিতরটা শান্ত করতে চায়। মাহফুজ টের পায়  নুসাইবার শরীরের উত্তাপ যেন আর ভাল করে ওর শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। নিজের জীবনের দুখের কারণে ভেংগে পড়া একজন নারীর শরীরের ব্যাপারে অশ্লীল কোন চিন্তা করতে মাহফুজের বাধে কিন্তু মনের ভিতর থাকা দুষ্ট চিন্তা গুলো যেন আস্তে আস্তে জয়ী হতে থাকে। নুসাইবার চোখের পানিতে মাহফুজের শার্টে ঘাড়ের কাছে ভিজে যাচ্ছে। মাহফুজ নুসাইবার পিঠের উপর সান্তনার জন্য হাত বুলায়। পিঠের উপর ব্রায়ের স্ট্রাপ টের পায়। ওর প্যান্টের ভিতর নতুন একটা অস্তিত্ব যেন জানান দিচ্ছে। মাহফুজ পিঠে হাত বুলায় আর টের পায় ওকে জড়িয়ে ধরার কারণে নুসাইবার নরম বুক গুলো এক সাইডে ওর শরীরে একদম পিশে যাচ্ছে। নুসাইবা তখন খালি আশ্রয় চায়, সহানুভূতি চায়। ওর মনে আর কিছু নেই। কিন্তু মাহফুজের মনে সব দুষ্ট চিন্তা ঘুরছে। নুসাইবার নরম শরীর ওর মনে আগুন ধরাচ্ছে। মাহফুজের মনের ভিতর যেন সিনথিয়া বলে উঠে ইউ ফাকিং বাস্টার্ড। নুসাইবা ফুফুকেও তুমি ছাড়বে না দেখছি। মাহফুজ যতই মনকে কন্ট্রোল করতে চায়, শরীর তত জয়ী হয়ে যায় যেন। মাহফুজ যেন নতুন এক সম্ভাবনা দেখতে পায়। নুসাইবার কাছে যেখানে চেনা পৃথিবী ভেংগে পড়ছে মাহফুজের কাছে সেখানে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার হাতছানি দিচ্ছে। ঢাকার রাস্তায় সবুজ সিএনজি যানযট ঠেলে এগুতে এগুতে যেন দুইজন ভিন্ন ভিন্ন মানুষকে এক গন্তব্যের দিকে এগিয়ে  নিয়ে যেতে থাকে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২১) - by কাদের - 03-08-2023, 10:59 PM



Users browsing this thread: asad7818, papersolution, Sadko, 14 Guest(s)