Thread Rating:
  • 179 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


আজকে বুধবার। নুসাইবার কোন হিসাব মিলছে না। মংগলবার অফিস থেকে আসার পর আরশাদ বলল সেই সাংবাদিক নাকি মিটিং এর সময় রাজি হয় নি রিপোর্ট সরিয়ে নিতে। ওরা অনেক প্রমাণ দেখানোর পরেও নাকি সেই সাংবাদিক অবিচল। পরে যে সাংবাদিক মিডিয়েট করার জন্য মাঝখানে ছিল সে নাকি পরে আরশাদ আর মাহফুজ কে বলেছে এই সাংবাদিক আগেই কার কাছে টাকা খেয়ে রেখেছে। আর টাকা খেয়েই রিপোর্ট করছে। আরশাদের দাবি অফিসে ওর শত্রুদের কেউ। কিন্তু আজকে সকালে যখন পত্রিকা বাসায় আসল দুই জনেই প্রথমে পেপার এর উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল। যদিও ওরা দৈনিক নতুন সময় রাখে না কিন্তু সেই দিনের জন্য হকার কে বলে রেখেছিল। আজকেও রিপোর্টের দ্বিতীয় কিসস্তি এসেছে। তবে সেটা একদম ভিতরের পাতায়। দেশ বাংলা নামে এক সেকশনে। তবে রিপোর্ট পড়ে আরশাদ কে মনে হল না খুব একটা অখুশি। আগের দিন যখন নুসাইবা কে বলছিল যে মিটিং ব্যর্থ হয়েছে তখনো নুসাইবার মনে হচ্ছিল আরশাদ আর আগের মত চিন্তিত না। যেন সব দুশ্চিন্তা নেমে গেছে। কিন্তু আবার রিপোর্ট এসেছে পত্রিকায়। সেটাই নুসাইবা বুঝতে পারছে না। আরশাদ কে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছে কিন্তু আরশাদ সব উদ্ভুত উত্তর দিয়েছে। বলল, আমি সৎ আমি কেন ওদের ভয় পাব। যা ইচ্ছা লিখুক। তাহলে আগে কেন চিন্তা করছিল? সেই মিটিং এ এমন কি হল যাতে আরশাদের চিন্তা চলে গেল? এই রিপোর্ট পড়েও আরশাদ কেন অত চিন্তিত না। এইসব ভাবতে ভাবতে আজকে অফিসে এসেছে। অফিসে এসেই আবার আজকের রিপোর্টটা পড়তে শুরু করেছে। সকাল থেকে এই অবধি মনে হয় বিশ বারের বেশি পড়া হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে কিছু সন্দেহ মাথায় আসছে নুসাইবার। আগেরবারের রিপোর্টটাও পাশাপাশি রেখে তাই পড়ল। নুসাইবার মনে হচ্ছে ঘাপলা আছে কিছু। দুই রিপোর্টের কোয়ালিটি অনেক ফারাক। দ্বিতীয় রিপোর্ট যেন হাওয়ার উপর লেখা। আরশাদের বিরুদ্ধে অদক্ষতা, অযোগ্যতা আর দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে কিন্তু কোন প্রমাণ দেওয়া হয় নি। খালি এই শব্দ গুলি ঘুরে ফিরে লেখা হয়েছে। আগের তুলনায় এই রিপোর্ট অনেক ছোট। মাত্র ভিতরের পাতায় এক কলামের তিন ভাগের এক ভাগে শেষ। কোন স্পেসিফিক উদাহারণ বা কিছুই বলা হয় নি। একই সাংবাদিক তিন দিনের ভিতর এমন বাজে মানের রিপোর্ট কিভাবে লিখল? এখানে ভিতরে ভিতরে কিছু হয় নি ত।  আরশাদ কি ওকে কোনভাবে ধোকা দিচ্ছে। আরশাদ কে জিজ্ঞেস করে এই মূহুর্তে কিছু বের করা যাবে কিনা বুঝতে পারছে না। আরশাদ অন্য সব সময়ের থেকে ভিন্ন ব্যবহার করছে। সব সময় ওর কথায় খুব অনুগত থাকে। নরমালি খুব কম রাগারাগি হয় ওদের মাঝে। হলেও সেখানে বেশির ভাগ সময় সরব থাকে নুসাইবা। কিন্তু গত তিন চারদিনের মধ্যে বেশ কয়েকবার ঝগড়া হয়ে গেছে ওদের মাঝে। আর প্রতিবার নুসাইবার সাথে সমান তালে ঝগড়া করেছে আরশাদ। প্রথমে মনে হচ্ছিল বুঝি এই রিপোর্টের প্রেসারে এমন করছে। কিন্তু আজকের এই রিপোর্ট পড়ার পর থেকে নুসাইবার মনে সন্দেহ হচ্ছে এই রিপোর্টের ব্যাপারে প্রশ্ন করলেই কেন রেগে যাচ্ছে আরশাদ। কি আছে এই রিপোর্টের পিছনে। কতটুকু সত্য এটা? কে উত্তর দিবে এসবের। নুসাইবার মনে হয় খালি একজন ওকে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।


নুসাইবার ফোন দেখে মাহফুজ অবাক হয় না। আরশাদ আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল এমন কিছু হতে পারে। আসলে অমিত ভাইয়ের ঐখানে সব সেটিং হয়েছে। অমিত ভাই রিপোর্ট পুরো বাদ দিতে পারবে না তাহলে সম্পাদকের কাছে জবাব দিতে পারবে না। তবে যেটা করবে সেটা হল রিপোর্টের ভিতর আসল মাল মসলা কিছুই রাখবে না। হাবিজাবি অভিযোগ দিয়ে ভরিয়ে রাখবে। আর ভিতরের পাতায় যাতে খবরটা আসে সেটার ব্যবস্থা করবে। আরশাদ বলে এইটা নুসাইবা কে জানানোর দরকার নেই। ও জানুক আমি আপোষ করি নি। রিপোর্ট  বের হোক। এই রিপোর্ট বের হলে আমার আর লাভে। আগের পর্বের ব্যাপারে লোকের সন্দেহ বাড়বে। কারণ এই পর্বের ভুল ভাল দেখিয়ে বলা যাবে আগের পর্বের নিউজ ভুয়া। আর নুসাইবা জানবে আমি আপোষ করি নি। এমনিতে ভুল রিপোর্ট এসেছে। তবে নুসাইবা যেমন একগুয়ে ও ঠিক তোমাকে ফোন দিবে জানার জন্য। তুমি অস্বীকার করবে সব। মাহফুজ বলে ঠিকাছে। আরশাদ কথা দিয়েছে ওর আর সিনথিয়ার ব্যাপারটা দেখবে। এটা জন্য মাহফুজ কে মুখ বন্ধ রাখতে হবে। তাই নুসাইবার ফোন পেয়ে আরশাদ খুব একটা অস্থির হয় না। হ্যালো ফুফু বলতেই নুসাইবা বলে তুমি কই আছ? আরশাদ বলে ফুফু আমি আমার বিজনেসের একটা কাজে আছি। নুসাইবা বলে শোন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তুমি সাবলাইম রেস্টুরেন্টে চলে আস। চিন তো কোথায় এটা? মাহফুজ একবার সিনথিয়া সহ গিয়েছিল।  হোটেল রেডিসন গার্ডেনের সাথের একটা রেস্টুরেন্ট। খুব পশ। বড়লোকদের জায়গা। তবে ওদের স্টেক দারুণ। কন্টিনেন্টাল খাবারও দারুণ বানায়। নুসাইবা বলে ঠিক সন্ধ্যা ছয়টার সময় থাকবে কিন্তু। আর আগে গেলে আমার নামে টেবিল বুক করা থাকবে। নাম বলে বসে পড়। ঠিকাছে ছয়টার সময় দেখা হবে। মাহফুজ কে কোন কথা বলার সুযোগ  না দিয়ে ফোনটা রেখে দেয় নুসাইবা। মাহফুজ আবার টের পায় নুসাইবা হ্যাজ সাম ম্যাজিকাল পাওয়ার। এই পুরো সময় ফোনে এমন ভাবে কথা বলল যেন পুরো পরিস্থিতি ওর কন্ট্রোলে। নিজের উপর একটু মেজাজ খারাপ হল। আরেকটু শক্ত হতে হবে।


সন্ধ্যা ছয়টার পাচ মিনিট আগে সাবলাইম রেস্টুরেন্টে গিয়ে মাহফুজ দেখে নুসাইবা আগে থেকে এসে বসে আছে। হালকা মিউজিক বাজছে। একটা পশ রেস্টুরেন্ট ভাব। তবে বাংলাদেশে ডিনারের ক্রাউড আসা শুরু করে রাত আটটার পর থেকে। তাই রেস্টুরেন্ট প্রায় ফাকা। কোণার এক টেবিল দুই বিদেশি বসে আছে। মাহফুজ আন্দাজ করে সাথে লাগোয়া হোটেল রেডিসন ব্ল এর গেস্ট। টেবিলে বসতেই নুসাইবা মাহফুজের নানা খবরা খবর জিজ্ঞেস করে। মাহফুজ মনে মনে ভাবে জেবার কথা ঠিক আছে চাইলে নুসাইবা কথার যাদুতে মানুষ কে মুগ্ধ করতে পারে। এই কয়দিন আগে একবার ওকে অপমান করল, পিকনিকের সময় অহেতুক ভুল ধরে খাটিয়ে মারল, পরে আবার আফসানা কে ডেকে প্রেমে ফেলাতে চাইল। কিন্তু আজকে যখন ওর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে মাহফুজ চাইলেও সেই রাগ গুলো তুলে ধরতে পারছে না। নুসাইবার কথার সাথে সাথে সেই রাগ যেন পানি হয়ে যাচ্ছে। কথা বলতে বলতে নুসাইবা খাবারের অর্ডার দিল। মাহফুজ আর নুসাইবা যে যে যার যার পছন্দের ডিশ অর্ডার দিল। মাহফুজ স্টেক আর নুসাইবা অদ্ভুত নামের এক ফ্রেঞ্চ ডিশ। আসার পর দেখা গেল সেটা আসলে একটা মাছের গ্রেভি টাইপ  উইথ রাইস। মাছ ভাত যাকে বলে। মনে মনে হাসল মাহফুজ। বড় বড় দোকানের অদ্ভুত নাম কিন্ত আসলে খাবার সব একই পরিবেশনা যা ভিন্ন। সমাজের মানুষের মত। টাকায় মানুষের সাজসজ্জা আলাদা হয় কিন্তু ভিতরের মানূষ সব এক। বড়লোক আর গরীব, শিক্ষিত আর অশিক্ষিতদের মাঝে পার্থক্য নেয়। ষড়রিপুর তাড়নায় সবাই ছুটছে। মাহফুজ প্রস্তুত হয়ে এসেছিল রিপোর্টিং নিয়ে প্রশ্ন করলে কি উত্তর দিবে কিন্তু নুসাইবা যেন সেই বিষয়ের কথা ভুলেই গেছে। মাহফুজের ব্যবসা, রাজনীতি নিয়ে অনেক খুটিনাটি প্রশ্ন করছে। একবার মাহফুজের মনে হল, ওর আচরণে মুগ্ধ  হয়ে কি নুসাইবা সিনথিয়ার সাথে ওর সম্পর্কে রাজি হয়ে গেল। এখন বাজিয়ে দেখছে ওকে। মাহফুজ তাই আরেকটু সতর্ক হয়ে ওর ব্যবসা পলিটিক্স নিয়ে উত্তর দিতে থাকল। যত ভালভাবে দেওয়া যায়। তবে নুসাইবা যে আসলে কথার ফাদে মাহফুজ কে অন্য মনস্ক করে আসল খবর বের করতে চাইছে সেটা বুঝল একটু পর। হঠাত করে একদম কোন সংকেত ছাড়াই জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা সেদিন আরশাদ আর তুমি যে কথা বলতে গেলে সেখানে কি হল? মাহফুজ তখন নিজের ব্যবসা রাজনীতি নিয়ে ভাল ভাল কথা বলতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় কথার মাঝে এই প্রশ্ন একটু হকচকিয়ে দিল মাহফুজ কে। তবে মাহফুজ সামলিয়ে নিয়ে আরশাদের ঠিক করে দেওয়া উত্তর দিল। নুসাইবা মাহফুজের উত্তর শুনে বুঝল কিছু গড়বড় আছে। মাহফুজ আর আরশাদের উত্তর হুবুহু এক, যেন এক জায়গা থেকে মুখস্ত করে বলছে। এক ঘটনা একাধিক জনের কাছে শুনলে সব সময় ভিন্ন ভিন্ন বয়ান পাওয়া যায়। সবাই যার যার পয়েন্ট অফ ভিউ বলে। এক রকম বয়ান তখন হয় যখন সবাই এক জায়গা থেকে মুখস্ত করে। নুসাইবার এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা দরকার। আরশাদের সাথে ওর এত  বছরের সম্পর্কে এই প্রথম আরশাদ কে ওর অচেনা মনে হচ্ছে। ওর মনে হচ্ছে ওর আর আরশাদের মাঝে সিক্রেট আছে। আরশাদ সব কিছু শেয়ার করছে না। ওর মনের শান্তির জন্য জানা দরকার আসলেই কি কথা হয়েছিল? আরশাদ কি আসলেই ঘুষ খায়? পত্রিকার রিপোর্ট কি সত্য? ওরা কি রিপোর্টার কে টাকা দিয়ে আসলেই কিনে নিয়েছে? এতদিন ধরে আরশাদের যে ইমেজ মনের মাঝে ওর সেটা কি মিথ্যা? আরশাদ কে নিয়ে ওর এত গর্ব কি আসলে মরীচিকা। নুসাইবা এখন উত্তর জানার জন্য ডেসপারেট। তাই টেবিলের ওপাশ থেকে হাত বাড়িয়ে মাহফুজের ডান হাতটা দি হাতের মাঝে নিয়ে শক্ত করে ধরে। মাহফুজ চমকে উঠে নুসাইবার কাজে। এই প্রথম নুসাইবার শরীর ওর শরীর স্পর্শ করল। কি নরম কোমল একটা হাত। তবে এই নরম হাতের মাঝেও এক উষ্ণতা আছে। মাহফুজের সারা শরীরে কেমন যেন একটা শিরশিরে অনুভূতি খেলা করে। চারপাশে তাকায়। রেস্টুরেন্ট এখনো প্রায় ফাকা। ঐ বিদেশীরা চলে  গেছে। কিন্তু আরকটা টেবিলে একা একজন বসে বসে মেনু দেখছে। নুসাইবা বলে আমার দিকে তাকাও। মাহফুজ তাকায়। কি গভীর একটা চোখ। নুসাইবার চোখে তখন অনেক প্রশ্ন। মাহফুজের হাত নিজের দুই হাতের মুঠির ভিতর নিয়ে শক্ত করে আকড়ে ধরে নুসাইবা। যেন শক্ত কোন অবলম্বন ধরে উঠে দাড়াতে চাইছে। প্রশ্ন করে, সত্যি করে বল কি হয়েছিল সেদিন? ঐ মিটিং এ কি কথা হয়েছিল? প্রথম রিপোর্টে যা লিখেছে ঐ সাংবাদিক তা কি সত্যি? মাহফুজ আবার সেই সাজানো উত্তর দিতে শুরু করে। নুসাইবা যেন এবার একটু ক্ষেপে উঠে। মাহফুজের হাত আর শক্ত করে দুই মুঠির মধ্যে চেপে ধরে। নুসাইবার হাত থেকে উষ্ণতা মাহফুজের শরীরে যেন বইতে থাকে। নুসাইবা বলে দেখ ছেলে আমি জানি তুমি বানানো কথা বলছ। আরশাদ ঠিক এক কথা বলেছে। সাজানো কথা না হলে দুই জনের বর্ণনা এত মিল হয় না। আমি তোমার উপর ভরসা করে আছি। মাহফুজ নুসাইবার চোখের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে। ওর মাথার ভিতর নানা হিসাব নিকেশ চলছে। নুসাইবা যে ওদের মিথ্যা ধরে ফেলেছে সেটা টের পেয়েছে তবে এখন এর থেকে বের হবার উপায় কি ভাবছে মাহফুজ। আরশাদ কথা দিয়েছে সিনথিয়ার ব্যাপারটা দেখবে তাই সরাসরি স্বীকার করতে পারছে না। আবার যদি স্বীকার না করে তাহলে নুসাইবা কখনোই মাহফুজ কে ক্ষমা করবে না। ফলে সিনথিয়ার সাথে রিলেশনে সব সময় উনি কাটা হয়ে থাকবেন। ড্যাম। এতো উভয় সংকট। যেকোন ভাবেই সিনথিয়ার সাথে ওর রিলেশনের জন্য এটা একটা বাধা। নুসাইবা মাহফুজের দিকে তাকিয়ে ওর চোখে দ্বিধা দেখতে পায়। আরশাদ কি কোন ভাবে মাহফুজ কে  হাত করেছে? আরশাদ বুদ্ধিমান সেটা নিয়ে কোন কালেই সন্দেহ ছিল না নুসাইবার। তবে সব সময় ও ভাবত আরশাদের বুদ্ধির ধার বুঝি অন্যরা টের পাচ্ছে। ওর সাথে আরশাদ সব সময় খুব শান্ত শিষ্ট, সব কিছু ওর সাথে কনসাল্ট করছে। ভুল কিছু করলে স্বীকার করে স্যরি বলছে। এই কয়দিন ধরে নুসাইবার মনে হচ্ছে আরশাদের এগুলো সব বুদ্ধির খেল না তো। বাসায় নুসাইবার সব কথা মেনে নিয়ে বাইরে এইসব করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু নুসাইবাদের তো এমন নয় টাকার অভাব। দুইজনের ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ভাল। ভাল ইনকাম করে দুইজন মিলে। তাহলে আরশাদের কেন এত টাকার দরকার? নুসাইবার মনে হয় এই এপার্টমেন্ট ঢাকায় বিভিন্নখানে জমি, বিদেশ ট্যুর সব কি এই ঘুষের টাকায় কেনা? ওর এগুলো জানা দরকার। অন্তত নিজের সাথে বোঝাপড়ার জন্য হলেও দরকার। মাহফুজ আসলে কি চায় সেটা নুসাইবা জানে। তাই নুসাইবা তার আসল চাল দেয়। নুসাইবা মাহফুজের হাত আকড়ে ধরে বলে, দেখ তুমি সিনথিয়া কে  পছন্দ কর আমি জানি। তুমি যদি আজকে সত্য কথা বল তাহলে আমি সিনথিয়া আর তোমার ব্যাপারে বাধা হয়ে দাড়াব না যদি সিনথিয়াও তোমাকে চায়।


মাহফুজ দ্বিধায় পড়ে যায়। যে উদ্দ্যেশের জন্য এত প্ল্যান। এত কর্মজজ্ঞ সব কি এত সহজে হাতে ধরা দিবে?  নুসাইবা কি এত সহজে রাজি হয়ে যাবে? আর যদি নুসাইবা রাজি হয় তাহলে মাহফুজ এখন কি করবে? আরশাদ কে দেওয়া কথা কি ভাঙ্গবে? মাহফুজের মাথার জোর হিসাব নিকেশ চলছে তখন। রাজনীতিতে থেকে থেকে একটা জিনিস শিখেছে মাহফুজ। মাঝে মাঝে পালটি দিতে হয়। তবে সেটা সব সময় করলে মানুষের কাছে আর আস্থাভাজন হওয়া যায় না। সারাজীবনে এই কাজ করতে হয় একবার বা বড়জোর দুইবার। এমন সময় করতে হয় যাতে লাভের পরিমাণটা হয় সর্বোচ্চ। মাহফুজের মনে হয় নুসাইবার অফারটা সেরকম একটা ব্যাপার। মাহফুজ ভিতরে ভিতরে ঠিক করে কি বলবে। নুসাইবা কে  বলে ফুফু আমি বলব কি কথা হয়েছে সেদিন কিন্তু আপনি আমাকে কথা দিতে হবে আপনি এই ব্যাপারে আরশাদ আংকেল কে কিছু বলবেন না। কারণ আপনি বললে উনি বুঝে ফেলবে আমি বলেছি আপনাকে। কারণ আপনার পরিচিত আর আমি ছিলাম সেদিন মিটিং এ। আপনি যদি আমার কথা শুনে উনার সাথে কথা বলতে চান তাহলে এমন ভাবে বলবেন যাতে আপনি এই ইনফরমেশন কিভাবে পেয়েছেন সেটা উনি না বুঝেন। বুঝলে সমস্যা হবে আমার। উনি বড় সরকারি চাকরি করে, পাওয়ারফুল লোক। আমি উনার শত্রু লিস্টে নিজের নাম উঠাতে চাই না। নুসাইবা মাথা নাড়ে। বলে, তুমি আমাকে বল সব। একদম ডিটেইলে। তোমার নাম যাতে না উঠে বা তোমার কোন সমস্যা না হয় আমি সেটা দেখব। মাহফুজ এবার একটু একটু করে  বলতে থাকে। মিটিং এ কিভাবে সলুউশন হল। কত টাকার আদান প্রদান হয়েছে। কেন পত্রিকার রিপোর্টিং বন্ধ হল না টাকা দেওয়ার পরেও। কেন সেকেন্ড রিপোর্ট এত বাজে ভাবে লেখা হল। আরশাদ পত্রিকায় খবর বের হবার পরেও কেন এত খুশি। প্রায় পনের মনিট ধরে মাহফুজ পুরো মিটিং এর ব্যাপারটা বলল, আসলে যতটুকু বলা যায় আরকি। ওর সাথে অমিত ভাইয়ের আগের যোগাযোগ গোপন রেখে ততটুকু বলল। মাঝে মাঝে নুসাইবা প্রশ্ন করে নানা বিষয়ে আর শিওউর হল। সব বলা শেষে নুসাইবার দিকে তাকাল মাহফুজ। নুসাইবার মুখের ভাষা পড়া যাচ্ছে না। অনুভূতিহীন হয়ে আছে মুখটা। কয়েক মিনিট চুপচাপ বসে থাকল দুইজন। নুসাইবা বিল মিটিয়ে উঠে পড়ল একটু পর। যাওয়ার সময় মাহফুজ কে খালি বলল আসি আজকে। পরে কথা হবে। মাহফুজ দেখল নুসাইবার চেহারায় তখন ঘোরগ্রস্ত দৃষ্টি যেন আশেপাশে কি হচ্ছে তার কোন খেয়াল নেই।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২১) - by কাদের - 03-08-2023, 10:55 PM



Users browsing this thread: ashikur, Daddybangla, evergreen_830, rpsanam, 33 Guest(s)