Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


সিনথিয়ার সাথে সেশনটা মাহফুজের মাথা একটু ঠান্ডা করলেও ভিতরে ভিতরে ওর কৌতুহলটা একদম যাচ্ছে না। খবরটা পাবলিশ হওয়ার পর নুসাইবা বা আরশাদের প্রতিক্রিয়া কি হল সেটা জানার কৌতুহল ক্রমশ বাড়ছে ওর। সিনথিয়া যেহেতু এখনো কিছু জানে না তার মানে এই খবরটা এখনো ফ্যামিলি লেভেলে আসে নি। সময় কম। আগামী রিপোর্ট বুধবার প্রকাশিত হবে। এখন রবিবার বিকালবেলা। বুধবারের আগে নুসাইবা আর আরশাদের সাথে পত্রিকার এই রিপোর্টের ব্যাপারে একটা কনটাক্ট স্থাপন করতে হবে। একমাত্র তখন ত্রাতা হিসেবে মাঠে নিজের ভূমিকা স্টাবলিশ করার একটা ভাল সুযোগ হাতে আসবে মাহফুজের। রাজনীতির মাঠের নিয়ম হচ্ছে যদি তাড়া থাকে তাহলে অনেক সময় নিজ থেকে উদ্যোগ নিতে হয়। এই যেমন মাহফুজ নিজ থেকে উদ্যোগ নিয়ে একটা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে আরশাদ আর নুসাইবার জন্য। এখন ভিতরের খবর বের করার জন্য ওকে আবার প্রোএক্টিভ হতে হবে। নিজ থেকে কোন উদ্যোগ নিতে হবে। সেই উদ্যোগের প্রথম টার্গেট সিনথিয়া কোন খবর দিতে পারল না তাই মাহফুজ ভাবছিল কি করা যায়। ঠিক তখন মনে হল এই নামটা এতক্ষণ মাথায় আসে নি কেন। পরিবারের সাথে মানুষ এইসব ব্যাপারে ডিসকাস না করলেও ঠিক বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে করবে। মাহফুজ তাই ফোনের ভিতর জেবার নাম্বার খুজতে থাকে। আরশাদ রিয়াদের সাথে অবশ্যই কথা বলবে এই ব্যাপারে। আর মাহফুজ টের পেয়েছে রিয়াদ তার অনেক গোপন কথাই জেবার সাথে শেয়ার করে।


মাহফুজ যখন জেবার নাম্বার খুজছে ফোনে ঠিক সেই মূহুর্তে জেবাও মাহফুজের কথা ভাবছিল। দুপুরে লাঞ্চ ব্রেকে ম্যানেজারের রুমে গিয়েছিল কথা বলতে। ম্যানেজারের রুমে কয়েকটা পত্রিকারর সৌজন্য কপি থাকে সব সময়। জেবা তাই প্রতিদিন একবার করে গিয়ে ম্যানেজারের সাথে কথা বলে আসে আর এই ফাকে পত্রিকা গুলো চেক করে। সরকারী চাকরির পরীক্ষার জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়তে গিয়ে অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। যদিও বাসায় একটা পত্রিকা রাখা হয় তাই ম্যানেজারের রুমে অন্য পত্রিকাগুলো হালকা চেক করে। ইন্টারেস্টিং কোন খবর পেলে বসে একটু পড়ে। অনেক সময় পড়তে না পারলে অফিস ছুটির সময় ম্যানেজারকে বলে সেই পত্রিকাটা  বাসায় নিয়ে যায়। এই নিয়ে অবশ্য ম্যানেজার বেশ হাসাহাসি করে। বলে, জেবা কি আবার বিসিএস দিচ্ছেন নাকি। জেবা অবশ্য লজ্জায় লাল হয়ে যায়। তবে ওর অনাড়ম্বর জীবনে অল্প কিছু স্বাদ আহলাদের মধ্যে এটা একটা। এমনিতেই জেবা পড়াশুনায় কখনো খুব উজ্জ্বল ছিল না। যা কিছু করেছে পড়াশুনায় তার যতটা না মেধা তার থেকে বেশি চেষ্টার বলে। বাকি পরিশ্রমী ছাত্রদের মতন জেবা ভাল রেজাল্ট করলেও তেমন একটা গূরুত্ব পায় নি বন্ধু মহলে কখনো। সবাই ভাবত এমন গরুর মত পড়লে ওরাও পারবে জেবার মত রেজাল্ট করতে। জেবা তাই সব সময় চেষ্টা করেছে নতুন নতুন কিছু করে সবার কাছে নিজের গূরুত্ব বাড়াতে। পত্রিকায় পড়া দেশ বিদেশের খবর গুলো জেবার কাছে তাই এক ধরনের চেষ্টার অংশ। অফিসের লাঞ্চের ফাকে আড্ডা বা বন্ধুদের সাথে কথা বার্তায় তাই হঠাত করে আমেরিকার নির্বাচন বা বাংলাদেশের বাজেট নিয়ে দুই একটা তাক লাগানো কথা বলে মাঝে মাঝে। পরিচিত সার্কেলে জেবার তাই বিবিসি বলে সুনাম আছে। যদিও মাঝে মাঝে বন্ধুরা টিজ করার জন্য বলে কিন্তু জেবা এটাকে এক ধরনের সম্মান হিসেবেই ধরে। এইযে ব্যাংকের নয়টা পাচটা অফিস সংসার সব করেও অন্য সবার মত ছোট্ট একটা গন্ডিতে নিজেকে বেধে ফেলে নি বরং দেশ বিদেশের সব খবর রাখে তাতে ওর নিজের মনে একটা সুক্ষ অহংকার আছে। আজকে তাই এরকম ম্যানেজারের রুমে রাখা পত্রিকা গুলো চেক করতে গিয়ে হঠাত করেই ওর চোখে পড়ে, ঢাকা কর অঞ্চল ৭- দূর্নীতির স্বর্গ রাজ্য। জেবা আরেকবার খবরটা পড়ে। নাহ ঠিক আছে ওর পড়া। পত্রিকার নামটা দেখে ভাল করে। দৈনিক নতুন সময়। নতুন বের হয়েছে এই পেপারটা কিন্তু ভাল করছে। ওদের রিপোর্টিং ভাল হয়। জেবার বুক হঠাত করে কাপতে থাকে। আজকেই ছেলের নতুন স্কুলে ক্লাস শুরু করেছে। এই দিনে কি আরেকটি ভাল খবর পাবে? জেবা দ্রুত রিপোর্টটা পড়ে। পড়া শেষ হতেই বুকের ভিতর কাপন আর বাড়ে। বিশ্বাস হতে চায় না ওর। আরেকবার রিপোর্টটা পড়ে। একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। প্রতিটা শব্দ ধরে ধরে। জেবা পড়তে পড়তে মনে মনে বলে, ঘুঘু তুমি বারবার খেয়ে যাও ধান এইবার তোমায় ধরিব পরাণ।  আরশাদ আর নুসাইবা মিলে এতদিন যে একটা পাক পবিত্র সৎ ভাব ধরে ছিল এইবার বুঝি সেটার খোলস ভেংগে পড়ল। স্বামী কে ফোন করতে গিয়েও করল না জেবা। ওর যে উত্তেজনা সেটা ও লুকাতে পারবে না এই মূহুর্তে। ওর স্বামী যে পরিমাণ আরশাদ ভক্ত তাই এই খবরে জেবার এমন উত্তেজনা দেখলে ক্ষেপে উঠবে। বলবে, সব মিথ্যা রিপোর্টিং। আর তুমি মানুষের কষ্ট দেখে আনন্দ পাচ্ছ কেন। জেবা তাই অনেক কষ্ট করে নিজেকে সামলায়। তবে এমন খবর কার সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা করছে। এমন কেউ যে ওর মনের আনন্দটা বুঝতে পারবে। জেবার তখনি মনে পড়ে মাহফুজের কথা। পারফেক্ট। মাহফুজের সাথেই এই কথা শেয়ার করা যায়। আর মাহফুজকেও তো জানানোর দরকার আছে ওকে এমন অপমান করা নুসাইবা বেটির আদরের জামাই কি জিনিস। ঠিক তখন জেবার ফোন বেজে উঠে। ফোনে নাম দেখে জেবা মনে মনে বলে ছেলেটার মনে হয় মনের কথা বুঝার ক্ষমতা আছে। নাহলে ঠিক এই মূহুর্তে কেউ ফোন করে।



মাহফুজ ফোন দিয়ে বরাবরের মত কুশল বিনিময় করে। জেবা কেমন আছে, রিয়াদ ভাই কেমন আছে, বাসায় বাচ্চারা কেমন আছে। মাহফুজের কাছে মনে হয় ফোনে জেবা বুঝি আজকে একটু বেশি খুশি। আজকে ছেলের নতুন স্কুলের প্রথম দিন হয়ত তাই এমন খুশি  বুঝি। ছেলের কথা উঠতেই মাহফুজ কে ধন্যবাদ দেয় জেবা। এত চেষ্টা করেও যা হচ্ছিল না সেই কাজটা এত সহজে করে দেবার জন্য জেবা বারবার থ্যাংক্স বলে। মাহফুজ ভদ্রতা বশত বলে আরে এতে এত থ্যাংক্স বলার কিছু নেই আমি ছোট একটা হেল্প করেছি মাত্র। আপনাদের মত ভাল মানুষদের একটু হেল্প করতে পারলে আমার নিজের কাছেই ভাল লাগে। মাহফুজ তাড়াতাড়ি এই ভদ্রতাসূচক কথাগুলো শেষ করে আসল কথায় যেতে চাচ্ছিল। তবে মাহফুজ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই জেবা বলল মাহফুজ ভাই আপনি ফোন দেবার আগে আপনার কথাই ভাবছিলাম। মাহফুজ হেসে বলে তাই নাকি। জেবা বলে হ্যা। মাহফুজ বলে যাক এই পৃথিবীতে কেউ অন্তত আমার কথা ভাবে। জেবা একটু থতমত খায়। জেবা সাধারণত এমন কথা শুনে অভ্যস্ত না। জেবা দেখতে সুশ্রী তবে নজর কাড়া সুন্দরী না। তাই উপর ড্রেস এর ব্যাপারে সব সময় বেশ কনজারভেটিভ ছিল জেবা। শরীর যাতে বোঝা না যায়। এছাড়া স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে সব সময় পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। এই হিসাবে জেবা হল ক্লাসের সেই সব ছাত্রছাত্রীদের দলে যারা মাঝারি থেকে একটু ভাল রেজাল্ট করে সব সময় কিন্তু সারাদিন পড়াশুনা নিয়ে থাকে। সিরিয়াস স্টুডেন্ট তকমা ওর কপালে তাই শুরু থেকে লেগে ছিল। ফলে ছেলেরা নরমালি যেমন ক্লাসমেটদের সাথে ফ্লার্ট করে জেবা সেটা পায় নি কখনো। আর অফিসেও জেবা খুব সিরিয়াস কাজকর্মে তাই অন্য কলিগরাও তেমন একটা ফ্লার্ট করার চেষ্টা করে না। তাই মাহফুজের হালকা ফ্লার্টে জেবা একটু ইতস্তত বোধ করে কারণ এর উত্তর কিভাবে দিতে হবে সেটা ওর জানা নেই। মাহফুজ বলে জেবা আপা কি মাইন্ড করলেন নাকি, ছোটভাইরা কি একটু হাসি ঠাট্টাও করতে পারবে না। জেবা যেন এবার কথা খুজে পায়। বলে, আরে না, না। কিছু মনে করি নি। আপনি ভাল মানুষ। আপনি এইসব ঠাট্টা করলে ঠিকাছে। মাহফুজ বলে তা কি কারণে ভাবছিলেন আমার কথা। জেবা বলে বিশ্বাস করবেন না একটা খবর। পত্রিকায় খবরটা পড়ার পর থেকেই আপনাকে বলব বলব ভাবছিলাম। মাহফুজ মনে মনে ভাবে, বাহ ভাগ্য দেখি সুপ্রসন্ন। আকার ইংগিতে কথা বলার আগেই তো মনে হচ্ছে জেবা খবরটা দেখে ফেলেছে। মাহফুজ তাও না বুঝার ভান করে বলে কি খবর আপা? আরে বিশ্বাস করবেন না আজকে কি দেখছি পত্রিকায়। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কোন পত্রিকায় আপা? দৈনিক নতুন সময়। প্রথম পাতায় দেখেন কি লিখেছে। মাহফুজ পত্রিকাটা হাতে ধরে আছে তবু বলে আমি তো দৈনিক নতুন সময় পড়ি না। বাসায় রাখা হয় না এই পত্রিকা। দেখতে গেলে বাইরে গিয়ে কিনতে হবে। অনেক সময় লাগবে। জেবা আর উত্তেজনা ধরে রাখতে পারে না। মাহফুজ কবে পত্রিকা কিনবে, কবে সেই পত্রিকা পড়বে আর কবে এই নিউজ নিয়ে দুইজন আলোচনা করবে সেটার জন্য অপেক্ষা করতে জেবা আর রাজি নয়। অনেক দিন নুসাইবা আর আরশাদ সারা জগতের চোখে মাথা উচু করে ঘুড়ে বেড়িয়েছে। ওদের জন্য ফ্রেন্ড সার্কেল, ডিপার্টমেন্ট এলমনাই এসোশিয়েশন, কোন বন্ধুদের বাসায় দাওয়াত। জেবা আর জেবার জামাই ভাল চাকরি করার পরেও সব জায়গায় নুসাইবা আর আরশাদ সবচেয়ে বেশি গূরুত্ব পায়। জেবার তাই মনে হয় এইটাই একটা সুযোগ পরিচিত মহলে প্রেসটিজের দিক দিয়ে এক নাম্বার কাপল হবার। আর এত বড় একটা খবর কার সাথে শেয়ার করতে না পারলে পেট ফেটে মারা যাবে মনে হয় জেবার। আর মাহফুজের থেকে ভাল কে  হতে পারে এই ব্যাপারে। যেভাবে পিকনিক আয়োজনের সময় ছোটখাট প্রত্যেকটা ব্যাপারে ভুল ধরেছে আর খেলার মাঠে সামান্য লেমনেড নিয়ে অপমান করেছে তাতে মাহফুজের ভিতরে যে প্রচন্ড রাগ জমেছে এটা জেবা মাহফুজের সাথে কথাতে বুঝেছে। চারপাশে সবাই যখন  নুসাইবায় মুগ্ধ তখন এই একমাত্র ব্যক্তি যে নুসাইবার সৌন্দর্য আর ব্যক্তিত্ব ভেদ করে দেমাগী নুসাইবার আসল রূপ বুঝছে। ফলে মাহফুজ এই ব্যাপারে ওর উপযুক্ত বিচিং পার্টনার। দুইজনে মিলে গসিপ করার জন্য আজকের পত্রিকার থেকে ভাল আর কি হতে পারে।


জেবা বলে আমি আপনাকে ওয়াটসএপে দুইটা ছবি পাঠাচ্ছি। আপনি পড়েন। পড়ে দশ মিনিট পর আমাকে ফোন দেন। এরপর কথা বলি। মাহফুজ তাড়াতাড়ি কথা শুরু করতে চায় তাই সে বলে আপা আপনি বলেন না। আমি শুনি, পড়া লাগবে না। জেবা বলে আরে পড়েন তাহলে কথা বলতে আর মজা হবে। আর আমি এখন অফিসে আছি। একটু বাইরে বের হচ্ছি আমি কয়েক মিনিট পর ম্যানেজার কে বলে তাহলে অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারব। এখানে কাঠের পার্টিশান সবার কথা সবাই শুনে। এই বলে দৈনিক আজকের সময়ের প্রথম পাতার নিচের অংশ আর সেই খবরের ভিতরের পাতায় বাকী অংশের ছবি তুলে মাহফুজ কে পাঠাল। মাহফুজ অলরেডি এই খবর কয়েকশত বার পড়ে ফেলেছে। তবে সংগে সংগে জেবা কে ফোন করল না। জেবা ভাবুক মাহফুজ এই প্রথমবারের মত খবরটা পড়ছে। এদিকে জেবা অফিস থেকে কাজের কথা বলে আধা ঘন্টার জন্য বাইরে এসেছে। ওদের অফিসের থেকে দুই মিনিট দূরে একটা ছোট পার্ক আছে। সেখানে এসে একটা বেঞ্চে বসেছে। এখনো রোদের তেজ আছে আশেপাশে।  বিকালবেলা হাটতে আসা মানুষের ভীড় শুরু হয় নি এখনো। একটু দূরে কলেজ পালানো কিছু ছেলেমেয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। অন্যদিকে এক ঝালমুড়িওয়ালা অলস বসে আছে খদ্দরের অভাবে। জেবার তর সইছে না মাহফুজের সাথে কথা বলার জন্য। জেবা ঘড়ি দেখে পনের মিনিটের  বেশি হয়ে গেছে। এতক্ষণ লাগে এই খবরটা পড়তে? জেবা ভাবে মাহফুজ বুঝি ওর মত দুই তিনবার পড়ছে খবরটা। আসলেই অবিশ্বাস্য। রিয়াদের কাছ থেকে ওর অফিসের সাথে আরশাদের ডিল থেকে বুঝেছিল কিছু গড়বড় আছে তবে সেটা এভাবে একটা ন্যাশনাল নিউজ পেপারে এসে যাবে এটা স্বপ্নেও ভাবে নি জেবা। এবার দেখা যাবে এত মানসম্মান, গর্ব কই যায় নুসাইবার।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২১) - by কাদের - 03-08-2023, 10:52 PM



Users browsing this thread: 17 Guest(s)