Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


বিকাল চারটা বাজে। মাহফুজ নুসাইবা আর আরশাদের বাসার দাওয়াত শেষে বের হয়ে এসেছে। খাওয়া দাওয়া খুব ভাল থাকলেও মুখের ভিতর একটা তিতা ভাব হয়ে আছে। নুসাইবা যেভাবে ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেবার জন্য এম্বুশ করল সেটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। ম্যানিপুলেটিং বিচ। আর আরশাদ লোকটা কে এতদিন অত খারাপ না লাগলেও আজকে সততার গুণগাণ শুনে একদম বিরক্তি ধরে গেছে। কারণ মাহফুজ এখন জানে ভিতরে ভিতরে কি গোপন করে রেখেছে আরশাদ। যেভাবে ওর অফিসে প্রথম খোজ  নিতে গিয়ে সবার কাছে ভাল ভাল কথা শুনছিল তখন মাহফুজ ভেবেছিল আরশাদ হয়ত বিরল সেই সরকারী অফিসারদের মধ্যে একজন যে কিনা সৎ আবার একসাথে একটা ভাল পোস্টিং ও পেয়েছে। এখন মাহফুজ অন্তত নিশ্চিত এটা ভড়ং। আর বেশি বিরক্তি লাগছে কিভাবে এতগুলো লোক আরশাদের ভড়ং এ মুগ্ধ হয়ে সততার সার্টিফিকেট দিচ্ছে। আর নুসাইবার এইসব ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড এর লেকচার শুনে মেজাজ একদম সপ্তমে চড়ে আছে । কি ভাবে নুসাইবা বাকি সবাই কে? পলিটিক্স করা সবাই গুন্ডা না আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট না থাকলে সবাই অসভ্য বর্বর না এই কথাটা কেন মাথায় ঢুকে না এই মহিলার। রাগে ভিতরে ভিতরে গজ গজ করতে থাকে মাহফুজ। মোবাইলে একটা মেসেজ এসেছে, সাবরিনার। আর বিশ মিনিটের ভিতর পৌছে যাবে। সিগনালে লালবাতিতে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মোবাইল চেক করে, আর মিনিট দশেকের মধ্যে পৌছে যাবে ও। চারুকলায় একটা প্রদর্শনী চলছে। সেখানেই দেখা হবে আজকে। অফিসিয়াল ব্যাপার স্যাপারের বাইরে এরকম ওদের প্রথম দেখা হয়েছিল দৃক গ্যালারিতে এক প্রদর্শনীতে। সেদিন কফি ওয়ার্ল্ডে আড্ডা আর পরে লালমাটিয়ার সেই অন্ধকার পার্কের ঘটনা গুলো মনে পড়ল মাহফুজের। ঐদিন সেরকম কিছু ঘটবে ভাবেই নি মাহফুজ। তারপর এর থেকেও অনেকটা সামনে এগিয়ে এসেছে ওরা। তবে ঠিক কোন জায়গায় ওদের রিলেশন এটা মাহফুজ নিজেও জানে। এই রিলেশনের ঠিক কি নাম সেটাও বলতে পারবে না। সাবরিনার প্রতি ওর একটা ফিলিংস আছে কিন্তু সেটা সিনথিয়ার মত প্রবল না। আবার সাবরিনার কাছে গেলে মাঝে মাঝে ওর মনে হয় নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। আবার সাবরিনার কাছে ওর আর সিনথিয়ার ব্যাপারটা কিভাবে বলবে সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না। ওর মনে হচ্ছে ব্যাপারটা বুঝি আর জটিল হয়ে গেছে। সিগনালের সবুজ বাতি জ্বলে  উঠেছে। মাহফুজ ভাবে আজকে দিনে নুসাইবাদের বকবকানির পর আর নতুন কোন চিন্তা মাথায় নিতে ইচ্ছা করছে না। কোন চিন্তা ছাড়া সাবরিনার সাথে উপভোগ করবার জন্য আজকের বিকাল আর সন্ধ্যাটা।


সাবরিনা উবারে যাচ্ছে চারুকলার দিকে। শুক্রবার ছুটির দিন বিকাল বেলা এই সময়টায় গাড়ির ভিড় হালকা বাড়তে থাকে সারাদিনের ফাকা রাস্তার পর। ছুটির দিন লাঞ্চের পর এই সময় অনেকেই বের হয় ঘুরতে। তাই রাস্তায় হালকা জ্যাম। গাড়ি সিগনাল গুলো আস্তে আস্তে পার হচ্ছে গাড়ির ভীড় ঠেলে। সাবরিনা উবারের পিছের সিটে বসে মোবাইলের ক্যামেরায় নিজেকে দেখতে থাকে। হালকা হলুদের উপর সবুজ কাজ করা শাড়ি। গলায় একটা কাঠের কাজের হার পড়েছে। এইরকম কাঠের কাজের হার গুলো চারুকলার সামনে এক দাদু বিক্রি করত আগে। তখন কিনত। আজকাল সেই দাদু কে দেখা যায় না তবে অনলাইনে অনেক দোকান সেই স্টাইল ফলো করে বিক্রি করে এরকম কাঠের হার বা দুল। সেরকম একটা অনলাইন দোকান থেকে কেনা হার গলায় শোভা পাচ্ছে। কাল রঙ্গের মাছে সাদা সাদা কাজ করা। কানে ম্যাচিং মাটির দুল। চোখে কাজল, আর ঠোটে লিপিস্টিক দিয়েছে। ফায়ারি রেড। ওর ফর্সা শরীরে ভাল মানায় রংটা। তবে আর কোন মেকাপ দেয় নি আজকে।  একদম পারফেক্ট সাজ কোন শিল্প প্রদর্শনীতে যাবার জন্য। সচেতন ভাবে এমন ভাবে সাজা হয় এইসব ক্ষেত্রে যাতে মনে হয় সাজে নি বেশি। সাবরিনাও তাই করেছে। শুক্রবার বিকালে প্রায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বের হয় সাদমান। সাবরিনা জানত সাদমান কে এইসব ছবির প্রদর্শনীত আসতে বললে নানা টাল বাহানা করবে। হয়েছেও ঠিক তাই। সাবরিনা বলতেই সাদমান বলছে আজকে একটা কাজ পড়ে গেছে। তোমার বন্ধুদের সাথে যাও না প্লিজ। সাবরিনা মনে মনে তাই চেয়েছিল। যদিও ওর খুশি হওয়ার কথা কিন্তু মনে মনে একটু বিরক্ত হয়। সাদমানের কি কোন হুশ নেই। ওর হাতের সামনে থেকে ধীরে ধীরে একটা মানুষ চুরি হয়ে যাচ্ছে কোন কিছু বুঝতেই পারছে না। এই ছুটির দিনে কই যাচ্ছে বউ, কার সাথে যাচ্ছে কিছুই জানতে চাইবে না? কেনই বা ধরে নিচ্ছে বন্ধুদের সাথে যাচ্ছি আমি? অন্য কেউ তো হতে পারে? মন থেকে সাদমানের চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে চায়। যখন মাহফুজের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে তখন অন্তত মনে সাদমান কে রাখতে চায় না। এমনিতে গত কয় মাস অপরাধবোধে মনের শান্তি কমে গেছে। আজকে অন্তত এই বিকালবেলা মন থেকে সব সংশয় দূর করে ফেলতে চায়।

চারুকলার ঠিক পাশেই একটা ছোট গেটের সামনে ভাজাপোড়া নানা জিনিস বিক্রি হয় একটা ভ্যানে বছরের বার মাস। মাহফুজ এই ভ্যানের সামনে দাঁড়িয়ে মূল গেটের দিকে নজর রাখছিল যাতে সাবরিনা আসলেই দেখতে পায়। একটা উবার কার এসে থামনে মূল ফটকের সামনে। সামনে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা রিক্সার ভিড়ে গাড়িটা পুরো দেখা যায় না। গাড়ি থেকে যাত্রী বের হয়ে সোজা হয়ে দাড়াতেই মাহফুজের চোখে হাসির ঝিলিক দিয়ে উঠে। সাবরিনা। সাবরিনা মাহফুজ কে দেখতে পায় না। গাড়ি থেকে নেমে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে এদিক ঐদিক তাকায় মাহফুজের খোজে। মাহফুজ ধীরে ধীরে সাবরিনার দিকে এগিয়ে যায়। সাবরিনা মোবাইলে কি যেন করছে। মাহফুজের পকেটে ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠতেই মাহফুজ টের পায় সাবরিনা ওকে কল দিচ্ছে খোজার জন্য। মাহফুজ ফোন না ধরে এগিয়ে যায়। একদম কাছে গিয়ে বলে, হ্যালো সাবরিনা। চমকে উঠে সাবরিনা। এইভাবে এত কাছে দাঁড়িয়ে কে ওর নাম ধরে ডাকছে এটা বুঝতে কয়েক সেকেন্ড লাগে সাবরিনার। তাকিয়ে মাহফুজ কে দেখে। সাবরিনার চোখে হাসি ঝলক দিয়ে উঠে। সাবরিনা চারদিকে একবার তাকায়। এই ক্যাম্পাসে সাবরিনা পড়াশুনা করেছে চার বছর। বের হয়েছে বছর তিনেক। এখনো এই ক্যাম্পাসে ওর পরিচিত লোক আছে। আর ছুটির দিন বিকাল বেলা অনেকেই তাদের পুরাতন ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে। তাই আর পরিচিত লোক থাকতে পারে আজ আশেপাশে। তাই ভিতরের উচ্ছাস আটকে মাহফুজ কে জিজ্ঞেস করে, কখন আসলেন? মাহফুজ বলে এই তো বেশি না। মিনিট দশেক হবে। সাবরিনা আবার আশেপাশে তাকায়। মাহফুজ লক্ষ্য করে। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কিছু হয়েছে। সাবরিনা মাথা নাড়ে।  বলে চলুন ভিতরে যাই। মাহফুজ বুঝে সাবরিনা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে চাচ্ছে না। এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর লোকজন আসা যাওয়া করে। সাবরিনা পরিচিত কার সামনে পড়তে চাচ্ছে না। মাহফুজের ভিতরে বিরক্তিটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। সিনথিয়া বলেছিল ওদের ফ্যামিলির লোকজন খুব ইমেজ সচেতন। লোকে কি বলবে সেটা নিয়ে বড় বেশি চিন্তিত তারা। সাবরিনার আচরণে টের পাচ্ছে মাহফুজ। এমন নয় যে মাহফুজ ডেকে নিয়ে এসেছে।  বরং মাহফুজ বেশ ব্যস্ত ছিল এই কয়দিন। নিজের ব্যবসা, পলিটিক্স আর আরশাদের খোজ গুলো বের করা। এরমাঝে সাবরিনাই বরং নিজে থেকে মেসেজ পাঠিয়েছে দেখা করবার জন্য। আর এখন এমন একটা ভাব করছে যেন চোরের সাথে দেখা করতে এসেছে। একটু আগে নুসাইবা আর এখন সাবরিনার আচরণ মাহফুজের গায়ে লাগে। কি মনে করে এরা নিজেদের। একজন মনে করে যেমন তেমন ভাবে মাহফুজ কে বুঝ দেওয়া যাবে। ম্যানিপুলেটিং  বিচ। আরেকজন এমন ভাবে আশেপাশে তাকাচ্ছে যেন চোরের সাথে দেখা করছে। হাইক্লাস বিচ।


মাহফুজ কথা বাড়ায় না। বলে চলুন ভিতরে চলুন। সাবরিনা টের পায় মাহফুজের গলায় হঠাত রাগের আভাস। সাবরিনা জিজ্ঞেস করে কিছু হয়েছে। মাহফুজ বলে, না, ভিতরে চলুন। প্রদর্শনী দেখি। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ তুমি থেকে আপনি তে চলে গেছে। সাবরিনা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে না চিন্তিত হবে বুঝতে পারে না। আজকে দেখা করার কথা ঘোরের মাথায় বলা। কয়েক সাপ্তাহ মাহফুজের সাথে দেখা না হওয়ায় ভিতরের অপরাধবোধ কমে গিয়ে সেই জায়গাটা দখল করে নিয়েছিল তীব্র একটা আকর্ষণ। মাহফুজের কথা ভাবলেই কেমন জানি বুকের কাছে ধুকপুক করে, গলা শুকিয়ে যায়। মাহফুজের সাথে কাটানো সময় গুলো ভাবলে তলপেটে পরিচিত শিরশিরানি অনুভূতি। হাতের আংগুল বা সাদমান কেউ যেন তলপেটের শিরশিরানি আর বুকের ধুকপুক কমাতে পারছিল না। সাবরিনার কলেজ লাইফের এক ফ্রেন্ড ড্রাগ নিত। ও বলেছিল কয়েক দিন ড্রাগ ছাড়া না থাকলে নাকি ঘুম হয় না, বুকের কাছে ধুকপুক করে, সারাদিন ড্রাগের কথা মাথায় ঘুরে। সাবরিনার মনে হচ্ছিল ওর বুঝি সেরকম অবস্থা। তবে ওর ড্রাগ একটা মানুষ। মাহফুজ। হিউম্যান ড্রাগ। আজকে আসার সময় তাই সচেতন ভাবেই না সেজেই যতটুকু সাজা যায় ততটুকু সেজে এসেছে। আয়নায় নিজেকে দেখে বুঝেছে ওর কিলার লুক এটা। সিম্পল বাট গর্জিয়াস। সাদমান বাসায় থাকলে হয়ত বরাবরের মত বলত ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস। কিন্তু আবেগ দেখিয়ে জড়িয়ে ধরে শারীরিক সৌন্দর্যের প্রশংসা করবার মত প্যাশন নেই সাদমানের। তবে আসার সময় উবারের ড্রাইভারের ব্যাক ভিউ মিররে বার বার চোরা চাহনি বুঝিয়ে দিয়েছে, আজকে ওর লুকটা কিলার লুক। সাবরিনা ভেবেছিল আজকে ওর লুক দেখে মাহফুজ কিছু বলবে। মাহফুজ আবেগ প্রকাশে সাদমানের মত কৃপণ না। মনের ভিতরের কথা গুলো যেভাবে সাহস করে বলে ফেলে, অনেক সময় সবার সামনে সেটা সাবরিনা কে অস্বস্তিতে ফেললেও এই গুণটা সাবরিনা মনে মনে পছন্দ করে। এমন গুণ তো সাবরিনা চেয়েছিল ওর পার্টনারের মাঝে। শুরুতে হ্যালো সবারিনা বলার সময় সেই আবেগের আগুণ ছিল গলায়। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড কি হল? মাহফুজ কেমন যেন শীতল ব্যবহার করছে। সাবরিনা টের পায় ওর বুকের ভিতর ধুকপুক আর গলা শুকিয়ে আসছে। মাহফুজের গলায় শীতলতা কেন ওর ভিতরে এত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। ওর মত সুন্দরী আংগুলের ইশারা করলে লাইনে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডসাম ছেলেরা নাচবে। তবু মাহফুজের এই শীতল প্রতিক্রিয়া যেন সাবরিনার সহ্য হয় না। ভিতরে ভিতরে বুক কাপে। কিছু ভুল করল কি সাবরিনা? এইসব ভাবতে ভাবতে দুইজনে চারুকলার ভিতর গ্যালারি এসে দাঁড়ায়। সাধারণত এই সব প্রদর্শনীতে মানুষ সব সময় কম হয় যদি না কোন বড় শিল্পীর প্রদর্শনী না হয়। আজকে ছুটির দিন বলে তাও একটু মানুষ আছে। এমনিতে বেশির ভাগ সময় বাইরের গরম থেকে বাচতে ভিতরে ফ্যানের বাতাসের খোজে ঘুরে বেড়ানো মানুষেরা প্রদর্শনীর ছবি বা ভাস্কর্যের সামনে লোক সমাগম বাড়ায়।


ছুটির দিন  বলে আজকে ভিতরে একটু মানুষ থাকলেও তা খুব বেশি না। বেশ ফাকা ফাকা। মাহফুজ তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কয়জন আসলে ছবি দেখতে এসেছে, কয়জন ফ্যানের বাতাস খেতে আর কয়জন ওর মত মেয়েদের নজরে জাতে উঠতে। দুইজনে আস্তে আস্তে করে ছবি গুলোর সামনে ঘুরতে থাকে। সাবরিনা কয়েকটা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে। মাহফুজ পোস্ট-মর্ডান আর্ট বুঝার চেষ্টা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে। তাই সেই চেষ্টা আর করে না। বরং সাবরিনা থেকে কয়েক পা পিছনে দাঁড়িয়ে সাবরিনা কে পর্যবেক্ষণ করে। মেজাজ সাবরিনার চোর চোর ভাবের কারণে তীরিক্ষে হয়ে থাকলেও স্বীকার করতে বাধে না সাবরিনার একটা মাদকতা আছে। হলুদ শাড়িতে সাবরিনা কে দেখে মনে হচ্ছে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরি। সবার সামনে ঘাড়ে চুমু খাই। আর কানের কাছে ফিস ফিস করে মনের গোপন ইচ্ছা গুলো বলি। ফাক দ্যা ওয়ার্ল্ড। এমন সুন্দরী কে সবার সামনে জড়িয়ে ধরতে না পারলে সাথে ঘুরে কি লাভ। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ ওকে পিছন থেকে দেখছে। মেয়েদের এই একটা সিক্সথ সেন্স অনেক ভাল। চারপাশে মানুষের অনেক রকম দৃষ্টি থেকে নিজেদের বাচিয়ে চলতে চলতে মেয়েরা একসময় টের পায় কেউ তিন সেকেন্ডের বেশি ওদের দিকে তাকিয়ে থাকলে সাবরিনা টের পায় এবার ওর বুকের ধুকপুকের সাথে সাথে তলপেটের শিরশিরানি ফেরত এসেছে। কি অস্বস্তিকর। নিজে কে বাজে মেয়ে মানুষ মনে হয়। এভাবে এত লোকের মাঝে খালি দৃষ্টি দিয়েই মাহফুজ যেন ওর তলপেটে জলের গর্জন শোনাচ্ছে। সাবরিনা ওর অস্বস্তি দূর করার জন্য মাহফুজের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে বলে, কেমন লাগছে ছবিটা। মাহফুজ, ঘাড় উচু করে হুম করে একটা শব্দ করে। সাবরিনা হুম শব্দের পাঠোদ্ধার করতে পারে না। মাহফুজ কি কোন কারণে এখনো রেগে আছে। আবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। মাহফুজ এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। সাবরিনা আশেপাশে তাকায়। দুই ছবি পরেই এক মাঝবয়সী লোক থুতনিতে আংগুল দিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে ছবি দেখছে। পিছনে কোণায় একটা মেয়ে এবস্ট্রাক্ট পেইন্টিং এর সামনে পোজ দিয়ে আছে। সাথের ছেলেটা ছবি তুলে দিচ্ছে। হয়ত আজকে রাতে ইন্টারনেট ঘেটে বের করা কোন জীবন সম্পর্কিত ভূয়োদর্শনের বাণী সহ ছবিটা ইন্সটাগ্রামে ঝুলবে। এর মাজে মাহফুজ ওকে এক দৃষ্টিতে দেখছে। ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিতে যেমন দেখায়, আড়াল থেকে বাঘের দৃষ্টি টের পেয়ে হরিণের ঘাড়ের কাছের লোম গুলো খাড়া হয়ে যায়। সাবরিনার ঘাড়ের কাছের লোম গুলো সেভাবে খাড়া হয়ে গেছে। কি বেপরোয়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লোকটা। চোখের দৃষ্টিতে যেন লুটপাট করে নিবে সব। সাদমানের কাছে কতদিন এমন দৃষ্টি খুজেছে। বেপোরায়, অসভ্য কিন্তু সত্য। ভিতরের আবেগ প্রকাশে যে কোন লুকাছাপা করে না। মাহফুজ যেন সেই বেপোরোয়া, অসভ্য কিন্তু সত্য দৃষ্টিতে সাবরিনার ভিতরে আগুন জ্বালছে।


মাহফুজ সাবরিনার ঘাড় আর গলার সংযোগ স্থলের দিকে তাকায়। কি মসৃণ জায়গাটা। জিহবা দিয়ে জায়গাটা ছুয়ে দেখতে ইচ্ছা করছে। আসলেই কি এত মসৃণ। তাকিয়ে থাকতে থাকতে মাহফুজ যেন টের পায় সাবরিনার ঘাড়ের লোম গুলো দাঁড়িয়ে পড়ছে। হাত দিয়ে ছুয়ে দিতে ইচ্ছা করছে। মাহফুজ ভাবে হাত দিয়ে লোম গুলো ছুয়ে দিলেই কি সাবরিনা কেপে উঠবে। সাবরিনার  শরীরটা মাহফুজের চেনা। মাহফুজ জানে কোথায় টোকা দিলে গিটারের ঝংকার উঠে কোথায় চাপ দিলে হারমনিয়ামের মত মিহি সুর। তবু হলুদ শাড়িতে ঢাকা শরীরটা যেন রহস্যের খনি। এই শাড়ির ভিতর রহস্য খনির জন্য যে কোন এডভেঞ্চারে যাওয়া যায়। এইসব ভাবতে ভাবতেই মাহফুজের ফোন বেজে উঠে। গ্যালারির ভিতর ফোন সাইলেন্ট করে রাখার একটা নির্দেশ ঝোলানো ছিল। মাহফুজ মানে নি। এখন জোরে ফোন বেজে উঠতেই সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কে সেই শিল্প সাহিত্যের অসমঝদার লোক। মাহফুজ প্যান্টের পকেটে হাত ফোনের রিংটোন অফ করার চেষ্টা করে। সাবরিনা ওর দিকে তাকায়। এইভাবে গ্যালারিতে ফোন বেজে উঠায় সাবরিনা যেন বিব্রত। সাবরিনার কে ফোন বেজে উঠতে বিব্রত হতে দেখে মাহফুজের ভিতরের বিরক্তিটা যেন আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। হোয়াট ইজ শি থিংকিং। পকেটে হাত ঢুকিয়ে যখন রিংটোন অফ করতে ব্যস্ত তখন মাহফুজের চোখ গভীর ভাবে সাবরিনা কে পর্যবেক্ষণ করে। সাবরিনা একটু অপ্রস্তুত ভাবে চারিদিকে তাকাচ্ছে। ড্যাম বিচ ইজ আনকমফোর্টেবল। পকেট থেকে হাতটা বের করে দেখে অমিতের ফোন। ফোনটা ধরা জরুরী। ফোনটা রিসিভ করেই অমিত গ্যালারির বাইরে এসে দাঁড়ায়।


ফোন ধরতেই অমিত বলে, মাহফুজ আই এম রেডি। তোমার দেওয়া লিংক গুলা চেক করা হয়েছে। মোস্ট অফ দেম আর চেকড আউট। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে আপনি কখন বের করতে চান। অমিত বলে চাইলে আজ রাতেই বের করা যায়। মাহফুজ বলে আজকে না। অমিত বলে কেন? রিপোর্টটা পড়ে দেখতে চাও নাকি। মাহফুজ বলে, আপনি লিখলে সেখানে আমার দেখার কিছু নেই। তবে আজকে শুক্রবার কালকে শনিবার। দুই দিন সরকারি অফিস ছুটি। আজকে রাতে বের করলে কালকে ছুটির দিন শকটা ভালভাবে লাগবে না। শনিবার রাতের বেলা বের করেন, রোববার অফিসে ফার্স্ট আওয়ারে চোখে পড়লে শকটা একদম ভালভাবে লাগবে। অমিত হাসি দিয়ে বলে, তুমি এইসব খেলা আসলেই ভাল বুঝ। অনেক ঝানু পলিটিশিয়ানের থেকেও ভাল বুঝ কখন সুযোগ কাজে লাগাতে হয়। মাহফুজ বলে আমি এতদূর আসার জন্য আপনার অবদান আছে অমিত ভাই। অমিত বলে তুমিও আমাকে কম স্কুপ দাও নি নিউজের। এখন ছাড় এসব কথা। আমাদের ডিল ঠিক আছে? মাহফুজ বলে আপনি আমাকে চিনেন। এখনো পর্যন্ত কথা দিলে আমি কথা রাখি নি এমন হয়েছে? অমিত বলে না। মাহফুজ বলে আপনি খালি আমার কথা শুনবেন। দেখেন লাভের গুড় হেটে হেটে আপনার পকেটে হাজির হবে। আর যদি না হয় তাহলে আমি গ্যারেন্টার। অমিত বলে মনে রেখ, দশ লাখ। মাহফুজ বলে, চাইলে বার লাখ চাইতে পারেন। হেসে উঠে অমিত। বলে ওকে, পরে কথা হবে। রাখি এখন।
[+] 13 users Like কাদের's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২০) - by কাদের - 19-07-2023, 01:56 PM



Users browsing this thread: xnazgames, 16 Guest(s)