Thread Rating:
  • 183 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


বাবা মায়ের দেওয়া ভাল নাম মোহাম্মদ আজাদুর রহমান। মফস্বলের ছেলে। ঢাকায় এসেছিল পড়াশুনা করতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল বাংলা বিভাগে। লেখালেখির শখ ছিল স্কুল জীবন থেকেই। তার উপর ভর্তি পরীক্ষায় রেজাল্ট খুব একটা ভাল হয় নি তাই সাবজেক্ট হিসেবে বাংলা কে পারফেক্ট মনে হয়েছে। সাহিত্য পছন্দ করলেও বাংলা বিভাগে ক্লাসে কখনো নিয়মিত ছিল না আজাদুর রহমান। শুরু থেকেই স্বপ্ন ছিল ঢাকায় এসে নাম যশ করবে লেখালেখি দিয়ে। তাই লিটল ম্যাগ করা, পত্রিকায় লেখা পাঠানো ছিল নিয়মিত কাজ। উঠতি বয়সি লেখক হতে চাওয়া ছেলে মেয়েদের আড্ডায় সময় দিত সব। ক্লাসে তখন সময় দেবার সময় নেই। ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরা কিছু বললে  বলত, দেখিস একদিন আমার লেখা নিয়ে এই ডিপার্টমেন্টের স্যাররা ক্লাসে আলোচনা করবে। ঢাকায় প্রতি বছর আসা হাজার হাজার মফস্বলের ছেলের মত আজাদুর রহমান স্বপ্ন দেখেছে এবং বাকি অনেকের মত স্বপ্নটা অধরাই রয়ে গেছে। সময়ের সাথে বুঝতে পেরেছে লেখালেখির হাত খুব সাধারণ তার। লিখে খুব বড় কিছু হওয়া যাবে না। যতদিনে এটা বুঝতে পেরেছে ততদিনে অনেক সময় চলে গেছে। অনার্স পরীক্ষা শেষ মাস্টার্সের ক্লাস চলছে। রেজাল্ট অনেক খারাপ। ক্লাসের শেষ থেকে দশ জনের মধ্যে রেজাল্ট। ইংরেজিতে চিরকার দূর্বল তাই বিসিএস বা ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষায় ভাল করার চান্স কম। শুরুতে এসে স্বপ্ন দেখে সময় নষ্ট করলেও আজাদুর রহমান এমনিতে বোকা না। অবশ্য আজাদুর রহমানের নাম ততদিনে আজাদুর রহমান নাই। লেখক হতে চাওয়া আর অনেক কম বয়েসি ছোকড়াদের মত নাম চেঞ্জ করে ফেলেছে। আজাদুর রহমান তখন অমিত আজাদ। শেষের কবিতার অমিত আর আজাদুরের আজাদ। দুই মিলে অমিত আজাদ। অমিত আজাদ নামটায় একটা আভিজাত্য আছে। মফস্বলের সব গন্ধ যেন চলে যায় এই নাম উচ্চারণ করলে। তবে অমিত আজাদ যখন টের পেল সাহিত্যের বাজারে তার ভাত নাই ততদিনে পড়াশুনার বাজারে আসন গেড়ে বসবার জন্য বড় দেরি হয়ে গেছে। আর ইংরেজিতে দূর্বলতার কারণে চাকরির গাইড বই নিয়ে বসবার ইচ্ছাটাই হয় নি কখনো।


তাই আর অনেক সাহিত্যে ব্যর্থ হওয়া যুবকের মত অমিত আজাদ বেছে নেয় নেক্সট বেস্ট থিং। সাংবাদিকতা। ঢাকা শহরে সাহিত্যিক হতে চাওয়া ব্যর্থ যুবকদের একটা বড় অংশ সাংবাদিকতা কে বেছে নেয় জীবিকার জন্য। তাই ঢাকা শহরে সাংবাদিকদের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় একটা বড় অংশ জীবনের কোন একটা সময় কবি সাহিত্যিক হতে চেয়েছিল। সাহিত্যিক হতে চেয়ে ব্যর্থ হওয়া অমিত আজাদ তাই সাংবাদিকতা শুরু করে। সাংবাদিকতায় কোন পড়াশুনা বা অভিজ্ঞতা ছিল না তাই বড় কোন নিউজ হাউজে চাকরি জুটে নি। শুরু করেছিল অনলাইন পত্রিকাগুলোতে কন্ট্রিবিউটর  হিসেবে। লেখা জমা দিলে তবে টাকা। সেখান থেকে আজ অনেক দূর এসেছে অমিত আজাদ। দেশের একটা মাঝারি পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার অমিত আজাদ। চল্লিশের মত বয়স হয়েছে। গত তের চৌদ্দ বছর সাংবাদিকতার লাইনে হেটে হেটু ঝানু হয়েছে। আগেরকার মত স্বপ্নালু আর নেই। বাস্তবতা বড় কঠিন এটা জানে অমিত আজাদ। তাই সে অনুযায়ী এই শহরে স্বপ্ন ব্যাগে ভরে লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটু একটু করে পচা পানিতে গা ভিজিয়েছে। খবর সংগ্রহ করার জন্য যে কোন উপায় অমিত আজাদের কাছে অনৈতিক না। হাজার হাজার সাংবাদিকের ভিড়ে একটা ভাল নিউজ  হাউজে কাজ জোটানো সহজ নয়। নিয়মিত ভাল ভাল রিপোর্ট জোগাড় করতে না পারলে এই জায়গায় আজ আসতে পারত না। অমিতের স্পেশালিটি পলিটিক্যাল বিট। রাজনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে অমিত চৌকষ। কাকে কিভাবে পটিয়ে কথা বের করতে হবে সেই ব্যাপারে অমিতের জুড়ি নেই। আর মাহফুজের সাথে অমিতের পরিচয় পলিটিক্যাল নিউজ করতে গিয়ে।


মাহফুজ আর অমিতের সম্পর্কটা আসলে  বলা যায় উইন উইন রিলেশন। দুইজনেই এই রিলেশনে স্বার্থ আছে। খালেদ চাচার সাথে নিয়মিত ঘোরার কারণে অনেক পলিটিক্যাল স্কুপ আগেই টের পায় মাহফুজ তাই সেই গুলার আভাস পাওয়ার জন্য মাহফুজ কে দরকার অমিতের। আর পলিটিক্যাল বিটের নিউজ করার কারণে অমিতের সাথে পরিচয় আছে বহু নেতার। তাই মাহফুজ ও দরকার মত অনেক খবর বের করতে পারে অমিতের সহায়তায়। এই যেমন মাহফুজ যখন যুব সংঠনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি হল তখন অমিত ওকে হেল্প করেছিল। কমিটি হবে হবে যখন গুঞ্জন তখন এই পদের জন্য হট ক্যান্ডিডেট ছিল মাহফুজের সিনিয়র একজন। মাহফুজ সেটা জানত। তবে অমিত তখন খবর বের করে দিয়েছিল সেই হট ক্যান্ডিডেট অনেক পুরাতন একটা মার্ডার কেসের চার নাম্বার আসামী। এত বড় পদে আসতে গেলে মার্ডার কেসের আসামী হলে সমস্যা। মাহফুজ তাই জায়গামত ওর চ্যানেলে সেই মামলার খবর পৌছে দিয়েছিল। তাই সেই সিনিয়র কমিটিতে সদস্য পদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল আর মাহফুজ পেয়ে গিয়েছিল অর্গানাইজিং সেক্রেটারির পদ। সেই সিনিয়র জানতেও পারে নি কিভাবে তার এত পুরাতন একটা খবর অন্দরমহলে পৌছে গিয়েছিল। ইনফ্যাক্ট মাহফুজের সাথে এখনো সেই সিনিয়রের ভাল খাতির। এছাড়া বিভিন্ন ফেভার আদান প্রদানের বিনিময়ে নানা সময় পক্ষে বিপক্ষে নিউজ করে দেয় বিভিন্ন জনের এটাও জানে মাহফুজ। তাই সাপ মারা আর লাঠি না ভাংগা পদ্ধতির জন্য অমিত ইজ এ সেফ অপশন ফর মাহফুজ।  




সোলায়মান শেখ কে কাজে লাগানোর আগে থেকেই মাহফুজের মাথায় অমিতের নামটা ছিল। তবে অমিত কে কাজে লাগানোর জন্য যে মাল মসলা লাগবে সেটা হাতে ছিল না। সোলায়মান শেখ যখন নিশ্চিত করল আরশাদের জুয়ার অভ্যাস আছে তখন অমিতের সাথে প্রথম এই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলেছিল। কথা বলার সময় অবশ্য মাহফুজ একটা হাইপোথেটিক্যাল সিনারিও দিয়েছিল, আরশাদের নাম পরিচয় গোপন করে। সাকুরা বারের ভিতরে টিম টিম আলোতে ড্রিংক করতে করতে অমিত বলেছিল দেখ মাহফুজ আমি তো মেইনলি পলিটিক্যাল বিটের নিউজ করি তবে তুমি বললে আমি এইটা নিয়ে নিউজ করতে পারি তবে তোমার খুব একটা কাজ হবে বলে মনে হয় না। মাহফুজ জিজ্ঞেস করল কেন? অমিত বলল, তুমি খালি বলছ যার কথা উনি জুয়া খেলে তুমি এটা শিওর তবে এর কোন প্রমাণ বা ছবি তোমার কাছে নাই। তার উপর জুয়া খেলা মোরালি খারাপ কিন্তু এর জন্য তুমি একজন সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে পত্রিকায় রিপোর্ট করতে পারবা না। আমার সম্পাদক অন্তত এই রিপোর্ট সরাসরি ছাপাতে দিবে না। এর থেকে অনেক গূরুত্বপূর্ণ খবর আমাদের প্রতিদিন ফেলে দিতে হয় পত্রিকায় জায়গা দিতে না পেরে। তাই তোমার আর কংক্রিট প্রমাণ সহ কিছু লাগবে। সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় রিপোর্টের সবচেয়ে ভাল উপায় হল তাদের দূর্নীতির বা কাজে অদক্ষতার কোন প্রমাণ যোগাড় করা। এগুলা পাবলিক পড়ে বেশি, সম্পাদক দেখলে কোন প্রশ্ন না করেই রিপোর্টটা ছেড়ে দিবে। সেদিন সাকুরা বারে কথা বলতে বলতে মাহফুজ তার পুরো প্ল্যানের খুটিনাটি ছক কষে ফেলেছিল অমিতের সাথে। মাহফুজের দ্বায়িত্ব আরশাদের দূর্নীতির লিংক বা অদক্ষতার কোন প্রমাণ বের করা। এই খবর টা তখন অমিত ছাপানোর ব্যবস্থা করবে তবে আর কিছু ইনভেস্টিগেট করে। তবে আসল ব্যাপার সেখানে না। মাহফুজের লক্ষ্য খালি আরশাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা না। এই রিপোর্ট হলে যে হইচই হবে সেটা থেকে আরশাদ কে উদ্ধার করা। সেটাও অমিতের সাথে কথায় কথায় ঠিক হয়েছে। অমিত রিপোর্ট করে, রিপোর্টের শেষে লিখবে এই ব্যাপারে পত্রিকা আর অনুসন্ধান জারি রেখেছে। এইসব ক্ষেত্রে যা হয় আরশাদ তখন নিশ্চিত ভাবে পত্রিকায় যোগাযোগ করে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করবে। সেখানেই মাহফুজ এন্ট্রি নিবে। মাহফুজ কে কোন ভাবে আরশাদ নুসাইবার কানে খোজ দিতে হবে যে ওর সাংবাদিক মহলে ভাল যোগাযোগ আছে এবং এই ব্যাপারে হেল্প করতে পারবে। তখন অমিতের সাথে একটা মিটিং ফিক্স করিয়ে আরশাদের সাথে একটা মিমাংসার ভান করতে হবে। যাতে অমিতের কিছু অর্থকড়ি যোগ হবে আরশাদের পকেট থেকে। এতে অমিত খুশি। আর আরশাদ খুশি হবে  পরের রিপোর্ট বন্ধ করতে পেরে। অমিত প্ল্যানটা শুনে রাজি হয়ে যায়। মাহফুজ চালাক ছেলে এটা অমিত আগে থেকেই জানত। আজকে কথা বলতে বলতে মনে মনে ভাবে মাহফুজ সম্পর্কে যে শোনা যায় কাউকে টার্গেট করলে একদম রুথলেস ভাবে তার পিছনে লাগে সেটা তাহলে মিথ্যা না। ভবিষ্যতে মাহফুজের সাথে কোন রকম ঝামেলা এড়িয়ে যাওয়া ভাল হবে সেটা মনে মনে ভাবে অমিত। আর এই প্ল্যানেও অমিত খুশি। কারণ কোন ঝামেলা ছাড়াই রিপোর্ট টা করা যাবে। মাহফুজ সব খবর যোগাড় করে দিবে। অমিতের দ্বায়িত্ব হবে খালি একটু যাচাই করা যে ভুলভাল কিছু না আবার ছাপিয়ে ফেলে। আর ছাপানো হলে এরপর টার্গেট আরশাদের কাছ থেকে টাকা নিতেও অমিতের বাধবে না। কারণ অমিত জানে এই সাংবাদিকতার জগতে যারাই টাকা কামাই করেছে তারা লিখে টাকা কামাই করে নি বরং না লেখার জন্য তারা আর বেশি টাকা কামাই করেছে। আর সস্তা মোরালিটি যেদিন থেকে সাহিত্য করার বাসনা ছেড়েছে সেদিন থেকে বাক্সবন্দী করে রেখেছে। এই সাংবাদিকতা করে ঢাকা শহরে ছেলে মেয়েকে নিয়ে ভালভাবে বেচে থাকা সম্ভব না যদি না মাঝে মাঝে দুই একটা করে বড় দাও না মারা যায়। অমিত আর মাহফুজ তাই দুইজনেই নিজেদের ভবিষ্যত স্বার্থউদ্ধারের শুভকামনা জানিয়ে চিয়ার্স করল।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ২০) - by কাদের - 19-07-2023, 01:51 PM



Users browsing this thread: HeartBeat, 19 Guest(s)