Thread Rating:
  • 179 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )


মাহফুজ গত আধাঘন্টা ধরে সিনথিয়া কে হোয়াটএপে বিজি পাচ্ছে। সাবরিনার সাথে সিনথিয়ার কি কথা হল জানতে খুব আগ্রহ হচ্ছে মাহফুজের। তবে টের পাচ্ছে এখনো সাবরিনা সিনথিয়ার কথা শেষ হয় নি। সাবরিনা-সিনথিয়ার মাঝে এই ব্যাপারটা খুব মজার। দুইজনে পিঠাপিঠি বোন। সিনথিয়ার সাথে প্রেমের শুরু থেকেই মাহফুজ টের পেয়েছে সাবরিনার প্রতি সিনথিয়ার হালকা একটা জেলাসি আছে। সাবরিনা ওদের বাড়ির সবচেয়ে বড় সন্তান, এমনকি কাজিনদের মধ্যেও সবচেয়ে বড়। তাই আত্মীয় স্বজনদের একটা আলাদা স্নেহ আছে সাবরিনার প্রতি। এরপর সারাজীবন ভাল ছাত্রী প্লাস বাবা-মায়ের অনুগত বাধ্য মেয়ে হওয়ায় বাবা-মায়ের কাছেও আলাদা একটা কদর আছে সাবরিনার। সিনথিয়া সাবরিনার তুলনায় একটু বিদ্রোহী গোছের তাই কিছু করলেই সব সময় কথা শুনে এসেছে, সাবরিনা কে দেখে শিখ, বড় বোনের মত হওয়ার চেষ্টা কর। এইসব কারণে সিনথিয়ার মনের ভিতর বোন কে নিয়ে হালকা জেলাসি আছে, পিঠাপিঠি ভাইবোন হলে এটা থাকাই স্বাভাবিক। আবার বোনের প্রতি একটা গভীর টান আছে এটাও খেয়াল করেছে মাহফুজ। সাবরিনার যে কোন অর্জন নিয়ে সিনথিয়া যে প্রাউড ফিল করে এটা বুঝাই যায়। মাহফুজের ধারণা সিনথিয়ার সাথে ওর সেক্স টকে সাবরিনার প্রসংগ আসলে যে সিনথিয়া উত্তেজিত হয়ে পড়ে এটার সাথে সাবরিনার প্রতি সিনথিয়ার দ্বৈত যে অনুভূতি সেটা দায়ী। বোনের প্রতি ভালবাসা আর জেলাসি। একবার সিনথিয়া স্বীকার করেছে সাবরিনা যেরকম কনজারভেটিভ আর সতর্ক এবং সাথে সাদমান যেরকম রসকষহীন তাতে মনে হয় সাদমান আর সাবরিনার সেক্স লাইফ বুঝি অনেকটা ম্যানুয়াল পড়ে সেক্স করার মত কিছু হবে। যেখানে প্রাণ নাই, উত্তেজনা নাই। তাই ওর আফসোস হয় যে ও মাহফুজের সাথে যা করছে এমন আনন্দ উত্তেজনা থেকে সাবরিনা বঞ্চিত হচ্ছে। আবার জেলাসি থেকে এটাও ওর মনে হয় সাবরিনার যে সবার থেকে ভাল এরকম একটা আচরণ সেটা ভাংগা দরকার। কার হাতে পড়ে সাবরিনার যৌনতার চরমে পৌছালে কি হয় সেটা তাই নাকি সিনথিয়ার খুব শখ। অন্যদিকে সাবরিনা একবার কথা প্রসংগে বলেছিল ওর এক ছোট বোন আছে, বিলাতে পড়াশুনা করে, দারুণ মেধাবী। বোঝা যাচ্ছিল সিনথিয়া কে নিয়েও সাবরিনা দারুণ প্রাউড ফিল করে। মাহফুজের খালি মনে হচ্ছিল একবার সিনথিয়ার সামনে যদি সাবরিনার ভিতরের স্বত্তাটাকে বের করে আনা যায়, যেখানে সাবরিনা গুড গার্লের মত মাহফুজের কথা মানবে তখন দুই বোনের প্রতিক্রিয়া কি হবে?

এইসব ভাবতে ভাবতে সিনথিয়ার ফোন আসল। সিনথিয়া বলল আপুর সাথে কথায় ব্যস্ত ছিলাম, গত দুই সাপ্তাহে আসলে তেমন কথা হয় নি কয়েকবার মেসেজ চালাচালি ছাড়া। আর তোমার কথা ঠিক, আপু কে একটু আনমনা মনে হল। মাহফুজ জিজ্ঞেস করল কিছু হয়েছে নাকি? সিনথিয়া বলল তেমন কিছু না, অফিসের কি নাকি একটা ব্যাপার। তুমি তো জান আপু কেমন নীতিবাগীশ, সব সময় নিয়ম মেনে চলা। অফিসে নাকি নতুন কে এসেছে যে নিয়মের তেমন তোয়াক্কা করে না কিন্তু কাজ ভাল পারে। আপু এখন ভাবছে সেই লোকের সাথে কাজ করবে কিনা। এই লোকের সাথে কাজ করলে ভাল ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা আবার নিয়ম ভাংগতে হবে সেক্ষেত্রে। এই জন্য দোমনা করছে। মাহফুজ বুঝল সাবরিনা আসলে একটু রূপক ব্যবহার করে ওর আর সাবরিনার ব্যাপারটাই বুঝি বুঝিয়েছে। মাহফুজ বলল তুমি কি বললে তোমার আপু কে?  সিনথিয়া বলল আমি আপু কে মাথা ক্লিয়ার করতে বললাম। তুমি তো জান আমি কিছু নিয়ে চিন্তিত থাকলে মাথা ক্লিয়ার করি, একা একা ঘুরি, খাই, মুভি দেখি, গান শুনি এইসব আরকি। মাহফুজ একটু হেসে বলল কেন আরেকটা জিনিস বললে না। সিনথিয়া বলল কোন জিনিসটা? মাহফুজ বলল কেন সেক্স যে তোমার মাথা সবচেয়ে ক্লিয়ার করে সে কথাটা বললা না, চিন্তা হলেই যে আমার কাছে আস আর আমি যে তোমার ঔষুধ হয়ে চিন্তা কমাই সেটা ভুলে গেলে। সিনথিয়া হাসতে হাসতে উত্তর দিল ইউ ডার্টি ডগ, খালি মাথায় এইসব চিন্তা। তবে এটা কিন্তু সত্য সেক্সের পর মাথা একদম হালকা হয়ে যায়। তবে আপু কে আর এইসব বলা যায়। আর বললেও কি লাভ হত বল। সাদমান ভাই যে রকম রসকষহীন মনে হয় না তোমার মত ক্রিয়েটিভ ভাবে মাথার চিন্তা কমাতে পারবে। মাহফুজ বলে এত প্রবলেম কি, তোমার আপু কে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও। সিনথিয়া বলে খুব আপু কে খাওয়ার শখ তাই না। আমাকে খেয়ে শখ মিটে নি। এখন আপু কে খাওয়ার খুব ইচ্ছা হয়েছে তাই না। মাহফুজ উত্তর  না দিয়ে হাসতে থাকে। সিনথিয়া বলে আপু কে আসলেই একবার তোমার কাছে নিয়ে আসা দরকার তাহলে আপু যদি একটু রসকষ ফিরে পায় জীবনে। মাহফুজ বলে তা তোমার আপু কি তোমার পরামর্শ মানল শেষ পর্যন্ত নাকি অফিসের কাজেই ঢুবে আছে এখনো? সিনথিয়া উত্তর দিল, নাহ আপু বলল ও আজকে তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বের হবে। সাড়ে তিনটার দিকেই নাকি বের হয়ে যাবে অফিস থেকে। মাহফুজ টের পায় সাবরিনা ওকে এড়ানোর জন্য অফিস থেকে আগে বের হয়ে যেতে চাইছে। সিনথিয়া বলে আপুর নৌকা খুব ভাল লাগে। তোমার আসল পরিচয় তো দেওয়া যাচ্ছে না। দেওয়া গেলে বলতাম আপু কে একটু আশুলিয়া ঘুরিয়ে আন, আপুর মন টা ভাল হয়ে যেত। মাহফুজের মনে হয় সিনথিয়া একটা ভাল বুদ্ধি দিয়েছে। এরপর নানা কথা শেষে সিনথিয়া ফোন রেখে দেয়, একটু পর ওর ক্লাস আছে তাই। সিনথিয়া ফোন রাখার পর মাহফুজ মাথার ভিতর প্ল্যান ঠিক করতে থাকে। সাবরিনা ওকে এড়ানোর চেষ্টা করছে এটা মাহফুজ নিশ্চিত এখন তবে সাবরিনা এখনো জানে না ডেভিলস অলওয়েজ উইন দ্যা গেম।




সাবরিনা ঠিক করে ফেলে আজকে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বের হয়ে যাবে। সাড়ে তিনটার দিকে বের হয়ে কই যাবে সেটা এখনো ঠিক করতে পারে না। সাদমান কে একটা ফোন দেয় আজকে পাচটার পর কোথাও যাওয়া যায় নাকি, সাদমান বলে আজকে অফিস থেকে বের হতে ওর দেরি হবে। সাবরিনার একটু রাগ হয়। ও কখনো সাধারণত অফিস থেকে আগে বের হয় না, তাই অফিস থেকে আগে বের হওয়ার কথা যখন বলছে তখন সাদমান কোন কৌতুহল দেখাল না। সাবরিনার মনে হয় সাদমান বুঝি ওর কোন কিছু তেমন লক্ষ্য করে না, লক্ষ্য করলে সাবরিনা আজকে অফিস থেকে আগে বের হবার কথা বলছে সেটা সাদমানের মাথায় আসত। অফিস থেকে বের না হতে পারলে অন্তত জিজ্ঞেস করত তখন কোন সমস্যা হয়েছে কিনা। সাদমানের এই নির্লিপ্ততার কারণে মাহফুজ যেন আর জেকে বসছে ওর মনের ভিতর। তাই মাহফুজের সাথে মানসিক লড়াই করতে গিয়ে আজকাল প্রায় সাদমানের উপর রেগে যাচ্ছে সাবরিনা। সাদমান প্রেমিকের দ্বায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে মাহফুজ কোন ভাবেই ওর মনের দূর্গে হানা দিতে পারত না। যাই হোক সাবরিনা ঠিক করে আজকে কোন প্ল্যান ছাড়াই বের হয়ে পড়বে। সিনথিয়ার কথা মত কোন প্ল্যান আর রুটিনহীন একটা বিকাল কাটাবে। এরপর কি হবে সেটা পরে ভেবে দেখা যাবে। আজকে নাহয় খানিকটা সিনথিয়ার মত সাহসী আর লাগামছাড়াই হবে। সিনথিয়া কে প্রায় বকাঝকা করলেও ওর এই লাগামছাড়া স্বভাবের জন্য মনে মনে সিনথিয়ার এই গুণটাকে প্রশংসা করে সাবরিনা। সিনথিয়া অনেক বেশি স্বতস্ফূর্ত এই কারণে। আজকে নাহয় সিনথিয়ার রোলটাই পালন করবে ও। তবে সাবরিনার অবশ্য জানা নেই সিনথিয়ার রোল পালন করার ইচ্ছাটাই ভিন্নভাবে পূরণ হতে পারে আজকে।



সাবরিনা অফিস থেকে নিচে নেমে আসে। সাড়ে তিনটা বাজে। পাচটার সময় নিচে নামলে অফিসের গাড়িতে চলে যায়। অফিসের গাড়ি না নিলে উবার ডাকে। আজকে সেরকম কিছুই করল না। আজকে সব নিয়ম ভাংগার দিন। অফিস থেকে নেমে ডান দিকে কিছুদূর হেটে গেলে একটা রিক্সা রিক্সা স্ট্যান্ড আছে। কড়া রোদে চারদিক ঝা ঝা করছে। এই সময়টায় রাস্তা কিছুটা খালি থাকে। পাচটায় অফিস ছুটি হয়। লাঞ্চে বের হওয়া মানুষ এই সময় অফিসে ফেরত যায় আবার ছুটিওর সময় ঠিক না তাই রাস্তায় তুলনামূলক লোক কম। এত রোদে বেশি হাটা সম্ভব না তাই সাবরিনা রিক্সা স্ট্যান্ডের সামনে গিয়ে একটা রিক্সা নিবে ঠিক করে। একটা রিক্সায় উঠে বসে। রিক্সাওয়ালা জিজ্ঞেস করে কই যাবেন আপা। সাবরিনা ঠিক জানে না কই যেতে চায়। তাই বলে চাচা চালান সামনের দিকে। আজকে গন্তব্যহীন যাত্রা করতে মন চাচ্ছে। রিক্সাওয়ালা কে বলে চাচা ঘন্টা হিসেবে রিক্সা নিব আপনি আপনার মত চালান। রিক্সাওয়ালা একটু অবাক হয়। ঘন্টা হিসেবে সাধারণত রিক্সা নেয় কাপলেরা। এরা জোড়ায় জোড়ায় আসে। রিক্সায় সময় কাটায় আর অনেক কিছু করে কিন্তু এই আপা তো একা। তবে রিক্সাওয়ালা কিছু বলে না কারণ ঘন্টা হিসেবে রিক্সা চালানো লাভজনক। আর বড়লোক কেউ যদি একা একা টাকা উড়াতে চায় তাহলে তার কি। সাবরিনা ভাবে আজকে আর কোন পরিকল্পনা করবে না, নিয়তির উপর ছেড়ে দিবে সব। রিক্সাওয়ালা যেথায় নিতে চায় নিক। রিক্সাওয়ালা সিটে বসে রিক্সায় প্যাডেল চালানোর আগে হঠাত করে কেউ একজন হঠাত করে সাবরিনার পাশে এসে বসে। সাবরিনা চমকে তাকায়। রিক্সাওয়ালা ভাবে এ আবার কে। রিক্সাওয়ালা বলে ভাইজান আপনি কে? মাহফুজ তখন এত চমকে আছে যে ওর মুখ দিয়ে কথা বের হয় না। মাহফুজ বলে চাচা আমরা একসাথে। আপনি চালান ইচ্ছামত। সাবরিনার দিকে তাকিয়ে মাহফুজ উত্তর দেয় আমাকে ফেলেই চলে যাচ্ছ। আমি বলেছিলাম না আমি আজকে তোমার জন্য অপেক্ষা করব। চল আজকে একসাথে ঘুরি দুইজন। সাবরিনার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হয় না। সাবরিনা ভাবে কয়েক মূহুর্ত আগে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছিল ওর আজকের নিয়তি আর ভাগ্য যেন ওকে এনে মাহফুজের কোলে ফেলে দিল একবারে। এটা কী নিয়তি নাকি অন্য কিছু?

সিনথিয়ার কাছ থেকে সাবরিনার খোজ বের করার পর দ্রুত মাহফুজ ওর পরের স্টেপ গুলা ঠিক করে ফেলল। পরিকল্পনার প্রথম ধাপ ছিল সাবরিনা কে অফিস থেকে বের হবার পর পাকড়াও করা। মাহফুজ অফিসের সামনেই অপেক্ষা করছিল। সাবরিনা কে তাই অফিস থেকে বের হওয়ার সময় দেখতে মাহফুজের একটুও কষ্ট হয় নি। তার উপর সিনথিয়ার কাছ থেকে জেনে গিয়েছিল সাবরিনা সাড়ে তিনটার সময় বের হবে। আর সাবরিনা যেমন নিয়ম মেনে চলা মানুষ তার পক্ষে সাড়ে তিনটার আশেপাশে বের হওয়া স্বাভাবিক। মাহফুজ তাও সতর্কতার জন্য তিনটা থেকে বাইরে অপেক্ষা করছিল। সাবরিনা যেহেতু বাইরে মাহফুজ কে আশা করে নি তাই বাহির হওয়ার সময় তেমন একটা আশেপাশে খেয়াল করে নি, খেয়াল করলে ঠিক দেখতে পেত জিন্স পোলো শার্ট আর মাথায় ক্যাপ দিয়ে একজন অপেক্ষা করছে। মাহফুজ প্রথমেই সাবরিনার সামনে পড়তে চায় নি, দেখতে চেয়েছে সাবরিনা আসলে কি করে। ওর থেকে দশ গজ পিছনে হেটে হেটে ফলো করছিল। রোদের কারণে নিচের দিকে তাকিয়ে হাটছিল সাবরিনা তাই ওর পক্ষেও বুঝা সম্ভব ছিল না পিছনে কেউ ওকে ফলো করছে। সাবরিনা যখন রিক্সাওয়ালার সাথে দরদাম করছিল ঘন্টা হিসাবে রিক্সা নেওয়ার জন্য তখন মাহফুজ বেশ অবাক হয়েছিল। কি করছে সাবরিনা। সাধারণত প্রেমিক জুটিরা রিক্সায় প্রেম করবার জন্য এভাবে রিক্সা ভাড়া নেয়। মাহফুজের ইচ্ছা ছিল অফিসের সামনে সাবরিনার সামনে দাঁড়িয়ে চমকে দিবে কিন্তু সাবরিনা কি করে সেই কৌতুহলে আর সেটা করা হয় নি। এখন সাবরিনা একা একা ঘন্টা প্রতি রিক্সা ভাড়া করছে দেখে প্রথমে চমকে ভাবল ওকে কি খেয়াল করেছে সাবরিনা। সেই জন্যই কি ঘন্টা প্রতি রিক্সা ভাড়া করছে। রিক্সাওয়ালা যখন প্যাডেল মেরে রিক্সা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন মাহফুজ ঠিক করল আর দেরি করা ঠিক হবে না। যে কোন সময় রিক্সা প্যাডেল মেরে বের হয়ে যাবে। তাই ঝট করে সাবরিনার পাশে এসে বসল রিক্সায়। সাবরিনার বিস্মিত মুখ দেখে মাহফুজ সিওর হল ওকে এতক্ষণ খেয়াল করে নি। বিস্মিত সাবরিনা কে তাই মাহফুজ প্রশ্ন করে আরেকটু অবাক করে দেওয়ার জন্য, আমাকে ফেলেই চলে যাচ্ছ?


সাবরিনার তখন বজ্রাহত। মুখ দিয়ে ওর কোন কথা বের হচ্ছে না। মাহফুজ সকাল বেলা বলেছিল ওর জন্য সারাদিন অপেক্ষা করবে তখন ওর মনে হয়েছিল এটা বুঝি কথার কথা। বড়জোর ওর অফিস ছুটির সময় হয়ত এসে নিচে অপেক্ষা করবে। তাই তো মাহফুজ কে এড়ানোর জন্য অফিস ছুটির দেড়ঘন্টা আগে অফিস থেকে বের হয়ে গেছে কিন্তু তারপরেও যে মাহফুজের সাথে দেখা হবে আর এভাবে মাহফুজ রিক্সায় এসে বসবে এটা স্বপ্নেও সাবরিনার মাথায় আসে নি। মাহফুজ কি আসলেই সারাদিন ওর জন্য অপেক্ষা করেছে অফিসের নিচে? স্কুল কলেজে প্রেমিকেরা এইসব করে, এই বয়সে কি আসলেই কেউ এত পাগলামী করতে পারে? সুন্দরী হলেও সাবরিনার কড়া মেজাজী মেয়ে বলে একটা ইমেজ ছিল। যেসব প্রেমের প্রস্তাব আসত সেগুলোর অনেক গুলো হত ভীতু প্রেমিকের দলের, ভয়ে ভয়ে প্রেম নিবেদন করত। আরেকদল সাহসী উজবুক ছিল প্রেম নিবেদন করত যাদের কথা শুনে মনে হত প্রেম নিবেদন করে যেন সাবরিনা কে তারা ধন্য করছে। তাই কখনোই এইসব প্রেম নিবেদন সাবরিনার মনের দুয়ার খুলতে পারে নি। বাসার কড়া শাসনের ভয়ে আর নিয়ম নীতি মানার কারণে কখনো ঠিকমত প্রেম করা হয়ে উঠে নি তবে প্রেমের ইচ্ছা মনের ভিতর ছিল। সাবরিনার ইচ্ছা ছিল কোন প্রেমিক ওকে উথাল পাথাল প্রেমের জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। স্কুল, কলেজ বা ভার্সিটিতে তেমন কোন উথাল পাথাল পাগল প্রেমিকের সন্ধান না পেলে ভেবেছিল বিয়ের পর হাজব্যান্ড বুঝি সেই জায়গাটা নিবে। তবে সাদমানের নিস্প্রিহ মন সেই শূণ্যতা পূরণ করতে পারে নি। মাহফুজের আজকের এই সারাদিন ওয়েট করে ওর দেখা পাওয়া তাই একটা বড় ধাক্কা ওর জন্য। মনে হচ্ছে মনের গোপন ইচ্ছার সেই রাজপুরুষ বুঝি হঠাত করে মাহফুজের ছদ্মবেশ ধরে ওর সামনে হাজির হবে। একের পর এক মাহফুজ যেভাবে চমকে দিচ্ছে ওকে তাতে সাবরিনার মনে হচ্ছে সত্যি বুঝি ওর মনের গোপন ইচ্ছা বাস্তবে এখন মাহফুজের রূপ ধরে হাজির হয়েছে।


দুপুরের এই সময়টায় রোদের তেজ গায়ে জ্বালা ধরায়। রিক্সাওয়ালা আস্তে আস্তে প্যাডেল মারছে, ঘন্টা হিসাবের রিক্সায় যাত্রীরা দ্রুত কোথাও পৌছাতে চায় না এটা রিক্সাওয়ালার জানা। এইসব যাত্রীদের মটো হল এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হত। সাবরিনা মাহফুজ দুইজনেই কোন কথা বলছে না। বিস্ময়ে হতবাক সাবরিনা তখনো কথা বলার শক্তি ফেরত পায় নি আর মাহফুজ ঠিক কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। রোদের তেজ গায়ে লাগায় মাহফুজ রিক্সাওয়ালা কে বলে রিক্সার হুড তুলে দিতে। রিক্সা রাস্তার সাইডে দাড় করিয়ে রিক্সাওয়ালা হুড তুলে দেয়। সাবরিনা কিছু বলে না। হুড তুলে দেওয়ায় মাহফুজ সাবরিনা রিক্সার ভিতর একটু জড়োসড়ো হয়ে গায়ে গা লাগিয়ে বসতে হয়। মাহফুজের বাহু সাবরিনার বাহু স্পর্শ করে, মাহফুজের উরু সাবরিনার উরু স্পর্শ করে থাকে। গরমে হালকা  হালকা ঘামতে থাকে দুইজন। দুইজনেই টের পায় অন্যজনের শরীরের উত্তাপ। সাবরিনার মনে তখন হিসাব নিকাশের অংক চলছে আর মাহফুজের মনে চলছে কিভাবে সাবরিনার মনের তল পাওয়া যায় তার হিসাব। ঢাকায় ভাংগা চোড়া রাস্তার অভাব নেই। রিক্সা আস্তে আস্তে এমন এক ভাংগা রাস্তায় ঢুকে পড়ে। হঠাত হঠাত রাস্তার ভাংগা অংশে চাকা পড়ে রিক্সা দুলে উঠে, হুড তোলা রিক্সার সংকীর্ণ জায়গায় দুইটা শরীরের স্পর্শ তাই আর বাড়ে। শরীরের উত্তাপ আস্তে আস্তে মনে ছড়িয়ে পড়ে। সাবরিনা এতদিন বান্ধবীদের কাছে রিক্সা ডেটের কথা শুনেছে আজকে যেন নিজেকে সেরকম এক রিক্সা ডেটের চরিত্র বলে মনে হচ্ছে। মাহফুজ রিক্সার ঝাকুনি সামলাতে হাত দিয়ে রিক্সার হুড ধরে তাল সামলানোর চেষ্টা করে তবে খুব একটা সফল হয় না। প্রতিটা ঝাকুনিতে আর বেশি করে সাবরিনার গায়ে হেলে পড়ছে যেন। সাবরিনারও তখন এক অবস্থা। প্রতিবার ঝাকুনি আর বেশি করে মাহফুজের গায়ে ঠেলে দিচ্ছে ওকে। সাবরিনার খালি মনে হচ্ছে মাহফুজের সাথে দেখা হওয়া, হঠাত এই রিক্সা ভ্রমণ সব যেন নিয়তির খেলা। একে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। সাবরিনার মনের ভিতর যুক্তিবাদী অংশটা যেন আস্তে আস্তে কোণাঠাসা হয়ে যাচ্ছে। মনের ভিতর থাকা রোমান্টিক, ফ্যান্টাসি প্রিয় অংশটা যেন অনেক বছর পর স্বাধীনতা পেয়েছে আর সেই স্বাধীনতার ঘোষক মাহফুজ। বড় একটা ঝাকুনিতে সাবরিনার মাহফুজের হাটুর কাছে পা ধরে তাল সামলায়। তাল সামলে যখন হাত তুলে নিতে যাবে তখন মাহফুজের হাত নেমে আসে সাবরিনার হাতের উপর। ওর হাত কে নিজের হাটুর উপর চেপে রাখে মাহফুজ। মাহফুজের মনে হয় এই স্পর্শের বড় দরকার ওর আজকে। সাবরিনার হাতের উপর হাত রেখে মাহফুজের সাহস যেন বেড়ে যায়। এতক্ষণ নিশ্চুপ রিক্সায় কথা শুরু করে মাহফুজ। জিজ্ঞেস করে, আজকে তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বের হলে? সাবরিনা কি উত্তর দিবে বুঝতে পারে না। সত্য বলবে নাকি মিথ্যা? তাই মাঝামাঝি একটা উত্তর বেছে নেয়। বলে, আসলে আজকে একটু ঘোরাঘুরি করতে ইচ্ছা করছিল তাই আগেই  বের হয়ে গেলাম। পালটা প্রশ্ন করে সাবরিনা, আপনি অফিসের সামনে কি করছিলেন? মাহফুজ একবার ওর হাটুর উপর থাকা সাবরিনার হাতের দিকে তাকায়, মাহফুজের হাতের বাধনে বাধা সেই হাত। সাবরিনা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তাই সাহস করে বলে, তোমার জন্য। বলেছিলাম না তোমার জন্য অপেক্ষা করব আজকে যত দেরি হোক। মাহফুজের কথা যেন সাবরিনার শরীরে শিহরণ জাগায়। ওর জন্য অপেক্ষা করে আছে কেউ সারাটা দিন। এই রোদের মাঝে সব উপেক্ষা করে থাকা মানুষটার জন্য মনের ভিতর মায়া, প্রেম সব যেন জেগে উঠে। এতদিন যে মনের দুয়ার বন্ধ করে উপযুক্ত মানুষের খোজে বসে ছিল মাহফুজ যেন প্রেমের বাণীতে সেই দরজায় করাঘাত করছে। এই আকুল আহবান ফেরাবার রাস্তা নেই সাবরিনার। সাবরিনার তাও বিশ্বাস হতে মন চায় না, মনে হয় সব বুঝি কল্পনা। তাই জিজ্ঞেস করে, আপনি সত্য বলছেন? মাহফুজ সাবরিনার হাতের উপর চাপ দেয়, বলে আমাকে এই সময় দেখেও বুঝি বিশ্বাস হচ্ছে না। সাবরিনার মনের ভিতর যুক্তিবাদী অংশটাকে তখন প্রেমিকা অংশ চুপ করিয়ে দেয়। সাবরিনা কোন উত্তর দেয় না। মাহফুজ এবার বলে আমাকে আপনি করে বলছ কেন? আমাদের মধ্যে এত কিছু ঘটে যাবার পর আপনি করে ডাকার আর কি মানে আছে বল? মাহফুজের কথার ইংগিত স্পষ্ট। তাই সাবরিনার ঘামে ভেজা মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে যায়। এক এক করে লালমাটিয়ার মাঠ, কনসার্টের তাবু আর লালবাগ কেল্লার সেই বৃষ্টি ভেজা রাত সব মনে পড়ে যায়। লোকটার মুখে কি কিছুই আটকায় না? আবার ভাল লাগে একসাথে কি অবলীলায় মনের কথা বলছে। মাহফুজ আবার বলে আমাদের অন্তত নিজেদের মাঝে তুমিতে নেমে আসা উচিত। এইটুকু ইন্টিমেসি মনে হয় আমাদের হয়েছে। সাবরিনার উত্তর না পেয়ে মাহফুজ সাবরিনার হাতের উপর আলতো করে চাপ দেয়। সাবরিনা উত্তরে মাহফুজের উরুর উপর রাখা হাত দিয়ে আলতো করে পালটা চাপ দেয়। শরীরের ভাষা বিনিময়ে সাবরিনা যেন নিজের উত্তর দেয়, হ্যা। মাহফুজ তাও নিশ্চিত হতে চায় সাবরিনার উত্তরের। তাই অন্য পন্থা নেয়।

অনেককাল এমন কিছু করা হয় নি। ভার্সিটির শুরুর দিক পর্যন্ত মেয়েদের সাথে ডেটিং এ রিক্সা ডেট করত। এরপর আস্তে আস্তে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এইসব বন্ধ হয়ে গেছে। ওর নিজস্ব রুমের ব্যবস্থা হয়ে যাবার পর কে আর রুম ডেট ছেড়ে রিক্সা ডেটে আসতে চায়। রিক্সা ডেটের একটা প্রথম নিয়ম ছিল মেয়ের সম্মতি যাচাই করা। আর সেটা যাচাই করার সবচেয়ে সেফ উপায় ছিল হাতের কনুই দিয়ে হালকা করে মেয়ের দুধ টাচ করে দেখা মেয়ের প্রতিক্রিয়া কি হয়। অবশ্য সাবরিনার সাথে ওর এপর্যন্ত যা যা হয়ে গেছে তাতে এটা করার আর দরকার পড়ার কথা না, অন্য কেউ হলে এটা করত না। কিন্তু সাবরিনা ওর ব্যক্তিত্বের এমন একটা দেয়াল তুলে রাখে যাতে মাহফুজ প্রতিবার নিশ্চিত হতে পারে না  সাবরিনা নামের দূর্গ কি আসলেই পতন হয়েছে কিনা। আর প্রতিবার সাবরিনার সাথে ওর ঘটনা গুলো এত আকস্মিক যে সাবরিনার প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক সময়ের প্রতিক্রিয়া কিনা সেটাও মাহফুজ নিশ্চিত না। তার উপর এর আগের সব বার ওদের যত এনকাউন্টার হয়েছে সেগুলো রাতের বেলা। লালমাটিয়া, কনসার্ট, লালবাগ কেল্লা। দিনের আলোতে মাহফুজ যেন তাই আবার নিশ্চিত হয়ে নিতে চাইছে। পুরানো নিয়ম অনুযায়ী মাহফুজ ওর হাতের কনুইটা বাকা করে ৪৫ ডিগ্রি এংগেলে। রিক্সার অটোসাটো পরিসরে হাতের কনুই হালকা বাকাতেই তাই সাবরিনার দুধের একটা সাইডের স্পর্শ পায় হালকা করে। সাবরিনা আজকে হালকা বেগুণী কালারের একটা কামিজ আর সাদা সালোয়ার পড়া। ওড়না যথারীতি কাধের এক সাইডে দেওয়া। সাবরিনার উদ্ধত্ব বুক যেন দেমাগে দাঁড়িয়ে আছে। মাহফুজের আলতো স্পর্শে সবারিনার কোন প্রতিক্রিয়া না দেখে আরেকটু আগায় মাহফুজ। কনুই এবার আরেকটু বাকা করে স্পর্শ করতে থাকে সাবরিনার উদ্ধত বুক। নরম তুল তুলে এক বল যেন। কনুই দিয়ে দুধের শেপ বরাবর স্পর্শ করতে থাকে। সাবরিনা এবার সচেতন হয়ে উঠে মাহফুজের কনুই এর কাজে। বুকে কনুই এর খোচা খায় নি এমন নারী বাংলাদেশে আছে কিনা সন্দেহ। সাবরিনাও এরকম খোচা খেয়েছে মাঝে মাঝে তবে সব সময় ভিড়ের মাঝে। এমন রিক্সার মাঝে এই প্রথম। বান্ধবীদের কাছে শোনা রিক্সা ডেটের গল্প যেন নিজের সাথেই ঘটছে। তবে কিছুই বলছে না সাবরিনা। আজকে যেন দেখতে চাইছে রাশ ছেড়ে দিলে কি কি হতে পারে। কনুই দিয়ে হাত বোলাতে বোলাতে মাহফুজ কথা শুরু করে। আজকে খুব গরম। সাবরিনা উত্তর দেয়, হ্যা। একটা শুনশান আবাসিক এলাকার রাস্তা দিয়ে রিক্সা চলছে। মাঝে মধ্যে দুই একটা গাড়ি হুশহাস করে বের হয়ে যাচ্ছে পাশ দিয়ে। কখনো কখনো টুংটাং শব্দে দুই একটা রিক্সা বিপরীত দিক থেকে ওদের অতিক্রম করছে। মাহফুজ সাবরিনার বুকে কনুই দিয়ে স্পর্শ করে যাচ্ছে আর হালকা চালে নানা কথা বলে যাচ্ছে। সাবরিনা অল্প কথায় উত্তর দিচ্ছে তবে খুব অস্বস্তি হচ্ছে ওর। সামনের রিক্সাওয়ালা চাচা সাইডে লাগানো সাইড মিরর দিয়ে ওদের দেখছে টের পাচ্ছে সাবরিনা। মাহফুজ ওর হাটুর উপর থাকা সাবরিনার হাতের উপর থেকে নিজের হাত সরিয়ে আনে। সাবরিনার দিকে তাকিয়ে বলে রিক্সার ঝাকুনিতে বসা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সাবরিনা একটু অবাক হয় কারণ রিক্সা এখন যে রাস্তায় সেটা যথেষ্ট মসৃণ, কোন খানাখন্দ নেই। সাবরিনা কে মাহফুজ বলে ঠিক করে না ধরে বসলে পড়ে যেতে পার এই বল হাতটা সাবরিনার ঘাড়ের পিছ দিয়ে নিয়ে ওর কোমড়ে রাখে। আগেই দেখেছে সাবরিনার কোমড়ে হালকা মেদ আছে। কোমড় থেকে বগল পর্যন্ত হাত হালকা করে উঠা নামা করে মাহফুজ সেই মেদের পরশ নেয়। নরম একটা শরীর। সাবরিনার শরীরে শিহরণ বয়ে যায়। তবে সাবরিনা কিছু বলে না। সিনথিয়ার উপদেশ মনে পড়ে ওর, মাঝে মাঝে হাওয়ায় গা ভাসাতে হয়।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ১৫) - by কাদের - 25-05-2023, 12:05 AM



Users browsing this thread: s@000, 26 Guest(s)