Thread Rating:
  • 179 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )
ঠিক এই  সময় ফোন বাজতে থাকে আজিমের। আজিম বলে যেতে হবে রে দোস্ত, বউ কল দিচ্ছে। তবে এই নে তুই আমার চাকরির সময় এত উপকার করছিস। অন্য যার কাছে গেছি চার পাচ লাখের নিচে কথা বলে নায়। তুই আর চাচা মিলে কাজটা যেভাবে টাকা ছাড়া করে দিছিস সেটা আমি কখনো ভুলব না। এই বলে মাহফুজের হাতে একটা চাবি ধরিয়ে দেয়। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে এটা কিসের চাবি? আজিম বলে আমার অফিসটা চিনিস? মাহফুজ বলে একবার আসছিলাম তো। উত্তর সাইডে একটা টিনশেড আছে সেখানে না? আজিম বলে তোর স্মৃতিশক্তিও মাশাল্লাহ। সব মনে রাখিস। হ্যা, ঐখানে আমার অফিস। টিনশেডে চারটা রুম আছে পাশাপাশি। দুই এসিস্টেন্ট কিউরেটর, একজন ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্টের অফিসার আর আরেকটা রুম আমার। রুমের বাইরে নেম প্লেট আছে দেখলেই চিনবি। মাহফুজ তাও জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আজিম বলে যদি তোদের ওয়াশরুমে যাবার দরকার হয় তাহলে ঐখানে যেতে পারবি। আর যাবার সময় চাবিটা গেটে দিয়ে আমার নাম বলে যাস। আমি রাতের দিকে সিগারেট খেতে বাসার বাইরে বের হই একবার, তখন গেট থেকে নিয়ে যাব। আবার ফোন বাজতে থাকে আজিমের। যাওয়ার জন্য উলটা ঘুরে আবার ফিরে আসে, মাহফুজ কে বলে ভিতরে একটা বড় সোফা আছে কিন্তু কাজে লাগাতে পারিস। মাহফুজ হাসতে হাসতে বলে তুই শালা পাভার্ট রয়ে গেলি তাই আর মেয়েদের পাত্তা পেলি না। আজিম হাসতে হাসতে বলে সে দেখা যাবে। পরে কথা হবে দোস্ত। আপাতত যাই, দরকার হলে ফোন দিস। আর জোরে সাবরিনা কে বলে ম্যাডাম ভাল করে ঘুরে দেখুন, তাড়াহুড়ার কিছু নাই। মাহফুজ আমার বন্ধু আর আমি এখানকার সিকিউরিটি অফিসার। সাবরিনা বলে থ্যাংক্স।

মাহফুজ আর সাবরিনা ভিতরে হাটতে থাকে। একদম কেন্দ্রে কেল্লার মূল ভবন। চারপাশে মোঘল আমলের ছোট ছোট কিছু স্থাপনা। ভিতরে একদম মোঘল আমলের মত করে চৌকনা ইটের রাস্তা রাস্তা আর ভিতরে ভিতরে বাগান। হাটার জন্য খুব উপযুক্ত জায়গা। অন্য সময় দর্শনার্থীদের ভিড়ে জনাকীর্ন হয়ে থাকে। মানুষ, শব্দ। কেল্লার চারপাশে শক্ত উচু প্রাচীর মোঘল আমলের। বাইরের শব্দ খুব একটা ভিতরে আসে না। ভিতরে এখন কোন দর্শনার্থী নাই নাই। কেল্লার মূল ফটকে খালি একজন গার্ড। তাই একদম নীরব কোলাহল মুক্ত একটা জায়গা। সাবরিনা বলে থ্যাংক্স। মাহফুজ বলে কেন? সাবরিনা বলে এই জায়গাটায় আনার জন্য। আজকের দিনটা বেশি হেক্টিক ছিল। সকালে অফিসে যখন একগাদা কাজে ব্যস্ত তখন আপনি মেসেজ না পাঠালে আমার মনে পড়ত না আমাদের আজকে এই মিটিং এ আসার কথা আর একটা ফোকাস গ্রুপ ডিসকাসন করার কথা। তারপর এই জ্যাম রোদের মধ্যে আমাকে বাইকে করে এত দূর নিইয়ে এলেন। আর সন্ধ্যার সময় এই সুন্দর জায়গাটাতে নিয়ে এলেন। বাইরে কত হইহল্লা আর এর থেকে অল্প একটু দূরে এই ভিতরে একদম শান্ত সব। আপনার ফ্রেন্ড না থাকলে তো এমন নিরব পরিবেশে দেখা হত না লালবাগ কেল্লা। অন্য সময় আসলে তো বাকি দর্শনার্থীদের মত দেখতে হত। ভিতরে একটু দূরে দূরে কারুকার্য করা ল্যাম্পপোস্ট বসানো। ল্যাম্পপোস্টের সাদা আলোয় বাগান তখন উদ্ভাসিত।

হাটতে হাটতে মাহফুজ দেখাতে থাকে এটা মূল কেল্লা, এটা সৈনিকদের থাকার ব্যারাক ছিল এখন প্রত্নতত্ব বিভাগের অফিস, এটা ভিতরের মসজিদ এখন আর ব্যবহার হয় না। এটা মূল কূপ। সিপাহি বিপ্লবের সময় ইংরেজ অফিসারদের এই ঘরে বন্দী করে রেখেছিল সিপাহীরা। এখন আর চিহ্ন নেই তবে একটা জায়গা নির্দেশ করে বলল ইংরেজরা পরে যখন কেল্লা আবার দখল করল তখন এখানে ফাসির ব্যবস্থা করেছিল সিপাহীদের। অনেক সিপাহী কে কেল্লার ভিতরে এই জায়গাটায় আবার অনেক কে একটু দূরে বাহদুর শাহ পার্কে ফাসি দিয়েছিল। তখন ঐটা অবশ্য একটা  বাগান মত ছিল পরে স্বাধীনতার পর পার্ক করে বাহদুর শাহ পার্ক নাম দেওয়া হয়েছিল। সাবরিনা জিজ্ঞেস করে আপনি বুঝি এখানে  চাকরি করতেন গাইড হিসেবে? সাবরিনার সিরিয়াস মুখ দেখে প্রশ্নটাতে একটু থতমত খায় মাহফুজ। বলে, না, তা কেন হবে। সাবরিনা বলে এই যে এত কিছু জানেন। মাহফুজ খেয়াল করে দেখে সাবরিনার চোখের কোণা হাসছে। মাহফুজ এবার একটু হালকা হয়ে বলে আরে আগে অনেক খেলতে আসতাম। পিছের দেয়ালের সাথে লাগোয়া একটা কর্মচারীদের কোয়ার্টার আছে। কর্মচারীদের অনেকের ছেলেমেয়ে আমার সাথে এক স্কুলে পড়ত। তাই ওদের সাথে আসতাম। আর পিছন দিক দিয়ে ঢুকার একটা দরজা আছে, কর্মচারীরা সাধারণত ব্যবহার করে। বন্ধুদের সাথে আসতাম তখন। সামনের গেট দিয়ে ঢুকলে টাকা দেওয়া লাগে তাই বন্ধুদের সাথে পিছনের কোয়ার্টারের গেট দিয়ে ঢুকতাম। পুরান ঢাকায় এমনিতে খেলার ফাকা জায়গা কম। আমরা তাই এখানে খেলতাম। এই জায়গায় আমার অনেক স্মৃতি। জায়গাটা পুরো হাতের তালুর মত চেনা আমার।

হাটতে হাটতে একটা জায়গায় ইটে বাধানো রাস্তার পাশে ঘাসে বসে পড়ে সাবরিনা। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে টায়ার্ড? সাবরিনা বলে একটু টায়ার্ড তবে অনেকদিন ঘাসে বসা হয় না তাই  বসে পড়লাম। মাহফুজ এসে সামনে বসে। সাবরিনা একটা কলাপাতা সবুজ রঙের কামিজ পড়ে আছে সাথে ম্যাচিং কালারের সালোয়ার। সুন্দর লাগছে ল্যাম্পপোস্টের সাদা আলোয় সাবরিনা কে। যদিও সারাদিনের ক্লান্তি মুখে ভর করে আছে। চুল গুলো খানিকটা এলোমেলো। এর মাঝেও এই সাদা আলোয় দেখে মনে হয় সাবরিনার এই ক্লান্তি মাখা মুখটা যেন আলোয় ঝলমল করছে। এরকম আলোয় দীপ্ত কার মুখ দেখলে যে কেউ মায়ায় পড়ে যাবে। সাবরিনা পা থেকে স্যান্ডেল খুলে ঘাসে পা বুলায়, হাত দিয়ে ঘাস ধরে। সব সময় সাবরিনা কে অফিসিয়াল সেটিং এ দেখা মাহফুজের মনে হয় সাবরিনার ভিতর যে অন্য একটা মানুষ থাকে ধানমন্ডির ঐবিকাল বেলা আর আজকের এই সন্ধ্যা প্রমাণ করে দিচ্ছে। অফিসিয়াল সেটিং এ অনেক রিজিড মানুষটাকে এখন দেখে মনে হয় অনেক স্বতস্ফূর্ত। মাহফুজ কিছু না বলে খালি দেখে যায়। সাবরিনার ঘাসে হাত পা বোলাতে বোলাতে মনে হয় এই কয় মাসের প্রজেক্টের ক্লান্তি, গত কিছুদিনের মনের ভিতর সংশয় সব যেন শুষে নিচ্ছে এই ঘাস। ঠিক চারপাশের কোলাহল যেমন এই কেল্লার দেয়ালের ভিতর এসে চুপ করে যায় ঠিক তেমন করে মনের ভিতর ক্লান্তি, সংশয় সব যেন চুপ হয়ে গেছে এখানে ঘাসের স্পর্শে। মেডিটেশন করলে মন যেমন শান্ত হয়ে আসে, মনের ভিতর থাকা সব কঠিন প্রশ্ন কে সহজে মোকাবেলা করা যায় সাবরিনার মনে হয় ঠিক তেমন একটা অবস্থা বুঝি ওর মনের ভিতর এখন।

সাবরিনা বলে সোয়ারিঘাটের রাতের বেলার জন্য আপনাকে কখনো প্রপারলি ধন্যবাদ দেওয়া হয় নি। ঐ রাতে আপনি না আসলে আমাকে খুন করে ফেলে গেলেও কেউ জানতে পারত না। মাহফুজ কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারে না। সাবরিনা নিজে থেকে বলে চলছে। এরপরে আপনি যেভাবে আপনি ঘটনা সামলালেন তাতে আমি আর বেশি অবাক হয়েছিলাম। আমাদের দেশে এরকম একটা ঘটনা ঘটলে যাই হোক দিন শেষে মেয়েকে সবচেয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। হাজারটা গসিপ তৈরি হয়। সংসারে অশান্তি। আপনি যেভাবে পুরো ঘটনাটা হাওয়া করে দিলেন, যেন ঘটনা টা ঘটেই নি। আমিও তখন সেই ঘটনা টা একটা দূর্ঘটনা ভেবে ভুলে থাকতে চেয়েছি। আমি ভুলে থাকতে পেরেছি কেননা আপনি পুরো ঘটনা হাওয়া করে দিয়েছিলেন। আমি জানি ঐ পশু গুলো আমার ছবি তুলেছিল সেই অবস্থায়। আপনার কাছে সেই মোবাইল আছে আমি জানি। অন্য কেউ হলে হয়ত পরে সেই ছবি দিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করত কিন্তু আপনি ভুলেও কোনদিন সেই প্রসংগ তুলেন নি। সেই কারণে আপনার প্রতি আমার একটা মুগ্ধতা তৈরি হয়েছে। আপনার সাথে যেদিন দৃক গ্যালারিতে প্রদর্শনী দেখতে গেলাম সেদিন আপনার ব্যবহার যেন আমাকে একটু অপ্রস্তুত করে ফেলেছিল। এক সাথে কনফিডেন্ট, চার্মিং কিন্তু ফানি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিক থেকে এক ধরণের শূণ্যতা তৈরি হয়েছিল আমাদের বন্ধু মহলে। বিয়ে, বিদেশে পড়তে যাওয়া, চাকরি সব মিলিয়ে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছি একেকখানে। চাকরিতে সেভাবে বন্ধু তৈরি হয় নি যার সাথে আমার গল্প করার টপিক মিলবে। আপনি সেদিন আমাকে এতটাই নির্ভার করে দিয়েছিলেন যে আমি আমার মনের দরজা খুলে দিয়েছিলাম। গড়গড় করে জমানো অনেক কথা বলে ফেলেছিলাম। আমার ফ্যামিলি, হাজবেন্ড, চাকরি সব নিয়ে। কোন ছেলের সাথে এত কিছু আগে কখনো শেয়ার করি নি। এমনকি আমার  হাজব্যান্ডের সাথেও না। মনে হচ্ছিল মানুষের আত্মার যে একটা সংগী দরকার আপনি সেই বন্ধু। এরপর? এরপর আসলে যা ঘটছে আমি শিওর না সেটা কে আমি কীভাবে দেখব। লালমাটিয়ার মাঠে আপনি যখন প্রথম আমাকে স্পর্শ করলেন আমি তখন অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সারা জীবন মেনে চলা নীতি নৈতিকতার কতটা বিরোধী এই স্পর্শ। সংগে সংগে আমার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল আমি করতে পারি নি। আপনার প্রতিটা স্পর্শ যেন আমাকে আর অসাড় করে দিচ্ছিল। আবার একসাথে ভিতরে ঘুমন্ত কিছু কে জাগিয়ে তুলছিল। পরে আমি অনেক ভেবেছি আমার ঐ রকম প্রতিক্রিয়ার কারণ কি? কেন আমি কিছু না বলে দেখে গেলাম। কিভাবে আপনি আমার ভিতরের অন্য কিছু জাগিয়ে তুললেন। ভেবে ভেবে আমি দুইটা কারণ বের করেছি। আমি সারাজীবন আমার চারপাশে একটা অদৃশ্য দেয়াল তুলে রেখেছি। অন্তত ছেলেদের জন্য। বাংলাদেশে আমাদের মেয়েদের সামাজিক  বাস্তবতায় খুব কার্যকরী একটা জিনিস। অনেকে আমাকে মুডি, বিচ অনেক কিছু বলে আড়ালে কিন্তু অযথা অহেতুক ছেলেদের ছ্যাবলামি শুরুতে থামিয়ে দেওয়ার এর থেকে ভাল কোন উপায় নেই। খালি দুই জনের জন্য আমি এই দেয়াল নামিয়ে নিয়েছি। এক আমার হাজব্যান্ড সাদমান আর দুই আপনি। আবার আমি আপনার সাথে এমন কথা শেয়ার করেছি যেটা আমার করা উচিত হয় নি। আমি আমার জীবনের অপূর্নণতা, প্রাপ্তি সব নিয়ে গল্প করেছি। বিবাহিত জীবনে বিপরীত লিংগের কাউকে এই ধরণের তথ্য দেওয়া ভুল। আমার ভুল। আপনি এটার স্বদব্যবহার করেছেন। আপনাকে আমি বলে ফেলেছি আমার স্বপ্ন ছিল আমার হাজব্যান্ড কেয়ারিং সাথে সাথে ডেয়ারিং হবে। কনফিডেন্ট বাট নট এরোগেন্ট। আপনি জাস্ট এই তথ্য গুলো ইউজ করেছেন। আমার ভিতরে চাপা থাকা আবেগ সেই আগুনে জ্বলেছে। একটা মানুষের গোপন তথ্য নিয়ে সেটা ইউজ করলে তাকে কি বলা যায়? আপনাকে আমি কি বলব? যখন মনে হয়েছে আপনি ট্রাস্টে ভেংগেছেন তখন আমার আবার মনে হয়েছে আপনি আগুন জ্বালালেও আমি নিভাই নি। আবার চাইলে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারতেন তাও করেন নি। আপনি আসলে গত কিছুদিন আমার সব লজিক গুলিয়ে দিয়েছেন। আর কনসার্টের দিন? আমার মনে হয়েছে আপনি কীভাবে আমার সব ভার্নারেবল মূহুর্তে উপস্থিত থাকেন? সব কি আপনার প্ল্যান করা? কিন্তু কনসার্টে আমার ঐ অবস্থা তো কোন ভাবেই আপনার প্ল্যান করতে পারার কথা না। আপনি যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে আমাকে সেদিন হেল্প করার চেষ্টা করলেন সেটা তো মিথ্যা না। আবার ঠিক পরের মূহুর্তে যেভাবে আমার দূর্বল মূহুর্তে আমার ভিতর আগুন জ্বালালেন সেটা কী ঠিক হল? আমার মনে হয়েছে আপনি বুঝি জানেন ঠিক কোন মূহুর্তে কি বলতে হবে, কোথায় স্পর্শ করতে হবে। আমি যেন নিজে কে নিজেই সিনেমার ক্যারেক্টারের মত দেখছিলাম। আপনি জানেন গত কয়েকদিন ধরে আপনি আমাকে তুমি করে সম্বোধন করছেন সেটা আমি খেয়াল করেছি। এর আগে আমার পারমিশন ছাড়া সরাসরি আমাকে তুমি কে  বলেছে আমি মনে করতে পারছি না। কিন্তু তারপরেও আমি কিছু বলি নি। কারণ আমি জানতাম এই বিষয়ে কথা বললে আর সব উঠে আসবে। আমি নিজেই সে সব মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আপনি আসলে আমার কাছে একটা রহস্যময় ক্যারেকটার। সারাজীবন পলিটিক্স করা লোকদের আমি যেরকম ভেবে এসেছি আপনি সেরকম নন মোটেই। আপনার ভিতর একটা সফট দিক আছে আবার একটা টাফ, ডেয়ারিং সাইড আছে আমি যেটা প্রশংসা করি। আবার আপনি আমার সব দূর্বল জায়গা জানেন। কোন কোন বার সবার কাছ থেকে সে দূর্বল জায়গা লুকাচ্ছেন আবার কোন কোন বার নিজেই সে দূর্বল জায়গায় হাত দিয়ে আগুন জ্বলাচ্ছেন। যে আগুন অনৈতিক। আমি আসলেই জানি না আপনাকে আমার কীভাবে দেখা উচিত। তবে আজকে আমাদের প্রজেক্টের ফিল্ডের শেষ দিন। হয়ত আপনার সাথে এরপর এভাবে আর কথা হবে না। এই কথা গুলো না বলতে পারলে আমি ভিতরে ভিতরে গুমড়ে গুমড়ে কষ্ট পেতাম। আজকের এই কোলাহলের মাঝে নীরব এই চত্ত্বর আমার ভিতরের সব কথা বের করে এনেছে।

মাহফুজ চুপচাপ সাবরিনার কথা শুনে কিছু বলে না। সাবরিনা কথা শেষ করে চুপ করে থাকে। কেউ কোন কথা বলে না। ঝি ঝি পোকা ডাকে পাশের কোন ঝোপ থেকে। কোটি মানুষের শহরে নীরব চত্বরে ঝি ঝি পোকার ডাক যেন অলৌকিক। ল্যাম্পপোস্টের সাদা আলোয় দুইটা মানুষ মুখোমুখি। অনেক কথা তাদের মনে তবে মাঝখানে শুধু অদ্ভুত নীরবতা। সারাদিনের গুমোট গরমের পর সন্ধ্যা থেকে হালকা বাতাস। একটু দূরেই বুড়িগংগা নদী। সময়ের সাথে সাথে সেই  বাতাস বাড়ছে আর নদী থেকে শীতল পরশ বয়ে আনছে। দূর আকাশে হঠাত হঠাত আলোকিত হচ্ছে। দূরে কোথাও বজ্রপাত হচ্চে তবে এখানে কোন শব্দ নেই। খালি হঠাত হঠাত চমকে উঠা আলো  আকাশ আলোকিত করে দূরাগত ঝড়ের সংকেত দিচ্ছে। কালবৈশাখির মৌসুম এটা। তবে সামনা সামনি বসে থাকা এই দুই মানব মানবীর সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। মাহফুজ কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না, মনের ভিতর কথা গোছাচ্ছে। সাবরিনার খোলা চুল হাওয়ায় উড়ছে। সাবরিনা মাহফুজের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর মনের ভিতর একটা ঝড় বইছে। ভেবেছিল জমে থাকা কথা গুলো বলে ফেললে সেই ঝড় থেমে যাবে কিন্তু  উলটো এখন সেই ঝড় আর বড় হয়ে মাহফুজের উত্তরের প্রতীক্ষা করছে।

মাহফুজ জানে এইটা মেক ইট অর ব্রেক ইট মোমেন্ট। প্রতিটা খেলায় একটা খেলা ঘোরানোর সুযোগ পাওয়া যায়, সেই সুযোগ মিস করলে খেলায় অবধারিত হারতে হয়। সাবরিনার এই মন খুলে কথা বলা সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কাজে না লাগাতে পারলে আর এই চান্স পাওয়া যাবে না। কিন্তু সাবরিনা কে কতটুকু বলবে? সবটুকু? কেন আসলে সাবরিনার কাছে এসেছিল প্রথমে? সিনথিয়ার কথা বলবে? মাহফুজের ভিতর প্রতিদ্বন্দ্বী সত্তা জেগে উঠে, যে কোন মূল্যে জয়ী হবার ইচ্ছা। সিনথিয়া, প্রথম কেন এসেছিল সেই কথা গুলো না বলার সিদ্ধান্ত নেয় দ্রুত। মাহফুজ নিজে কে নিজেই যুক্তি দেয় ও কোন মিথ্যা বলছে না খালি ওর পুরো গল্পের একটা অংশ আপাতত বলছে না। মাহফুজ বলতে থাকে আসলে তোমাকে প্রথম আমি যখন দেখি তখন আমার মনের ভিতর তোমার কে নিয়ে কোন অনুভূতি ছিল না। আমি খালি আমার কাজে এসেছিলাম। প্রথম প্রথম যখন তোমার অফিসে আসতাম তখন অনেকেই আমাকে আড়ালে আবডালে বলেছিল তোমার সম্পর্কে তুমি খুব মুডি, কোল্ড বিচ। সহজে কার সাথে মিশ না। খুব নাকি দেমাগ তোমার। ফ্যামিলি স্ট্যাটাস, তোমার এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড এসব নিয়ে। আমি নিজেও সেসব সত্যি ভেবেছি। কিন্তু তোমার সাথে যত মিশেছি তত কিভাবে কিভাবে যেন একটা মায়ায় পড়ে গেছি। আমার মনে হয়েছে মানুষ গুলো তোমাকে হয় বুঝতে পারে নি নাহয় ওরা জেলাস। তোমার ভিতর আরেকটা মানুষ আছে যেটা কেয়ারিং, হাসিখুশি, বুদ্ধিমান। আমি জানতাম তোমার কাছে আমার কোন পাত্তা পাবার জো নেই। কিন্তু মনে তো লজিক মেনে চলে না। আমি সময়ের সাথে সাথে খালি ডুবেছি, উঠার উপায় নেই জেনেও ডুবেছি। মাঝখানে তুমি আমার সাথে কথা কমিয়ে দিয়েছিলে। হয়ত তোমার কোন লজিক ছিল কিন্তু সেই সময় টা আমার ভেতরে একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল অন্যদের কাছে সব শোনা কথা বুঝি সত্যি। রাগ হয়েছিল তখন খুব। তবে সোয়ারিঘাটের দিন তোমার অফিসের ড্রাইভার যখন আমাকে ফোন দিয়েছিল তখন আমি আসলে আমার অনুভূতির গভীরতাটা বুঝতে পেরেছিলাম। সব কাজ ফেলে বাতাসের বেগে ঢাকার জ্যাম, ভীড় ঠেলে ছুটে এসেছিলাম। তোমাকে ঐভাবে বাধা দেখে আমার ভিতর কি রাগটা  হয়েছিল বলে বুঝাতে পারব না, যদি লাশ গুম করে ফেলার উপায় থাকত আমার কাছে তাহলে সেই খানেই মেরে পুতে ফেলতাম ঐ বদমাশ দুইটাকে। তুমি জিজ্ঞেস করেছিলে আমি কেন ব্লাকমেইল করি নি তোমায় কারণ আমি তোমাকে চেয়েছি তবে যতটুকু তুমি দিতে চাও ততটুকু জোর করে না। মাহফুজের এই স্বীকারোক্তিতে কেপে উঠে সাবরিনার বুক। মাহফুজ বলে চলে আজকে যেহেতু সত্য বলার রাত তাই কোন কিছু গোপন করব না তোমার কাছে। সেই রাতে তোমাকে ঐরকম বাধা দেখার ছবিটা আমার মাথার ভিতর গেথে গেছে। কতবার আমি সেই মোবাইল দুইটা নষ্ট করার কথা ভেবেছি কিন্তু করতে পারে নি। মোবাইল গুলো নষ্ট করিনি তোমাকে ব্লাকমেইল করবার জন্য না। আমি জানি তোমাকে পাওয়ার সুযোগ আমার খুব সামান্য। তাই সেই মোবাইলে উঠানো তোমার ছবি গুলো আমি প্রতিরাতে দেখি। আমার বুকে যখন অসহ্য জ্বালা হয় ঐ ছবি গুলা তখন আমাকে মুক্তি দেয়। তোমার হাত বাধা, মুখের উপর কাপড়। তাই তোমাকে চেনা যায় না কিন্তু আমি জানি ঐ ছবিতে ওটা তুমি। একসাথে ভার্নারেবল আর সৌন্দর্যের এক মিশ্রণ। ঐ ছবি থেকে আমার মুক্তি নেই। কত রাত আমি খালি ঐ ছবি দেখে কাটিয়েছি। সাবরিনার গলার কাছে শ্বাস আটকে আসে মাহফুজের কথায়। বুকের খাচা ভেঙ্গে যেন হৃদপিন্ড বের হয়ে আসবে। মাহফুজ বলে তোমার প্যান্টি সেই রাতে আমি উদ্ধার করেছিলাম তোমার মুখ থেকে। তোমার ঘাম, তোমার লালা আর তোমার গায়ের গন্ধ সব লেগে আছে সেই প্যান্টিতে। আমি ফেলে দেই নি। বরং প্রতিরাতে তোমার সেই ছবি আর প্যান্টি আমাকে মুক্তি দিয়েছে। কতবার আমি মাস্টারবেশন করেছি সেই ছবি দেখে তোমার গন্ধ শুকে এর ঠিক নেই। এটা খালি কাম না ভালবাসা। এক প্রেমিকের অপূর্ণ ভালবাস। প্রেমিকার রঙ, রূপ, গন্ধ সব যেন আমার ভিতরে সব দরজা খুলে দিয়েছে। কাম ছাড়া কি প্রেম হয় নাকি প্রেম ছাড়া কাম শুধু একটা শারীরিক ক্রিয়া। তাই প্রতিরাতে প্রতিটা মাস্টারবেশন সেশন তোমার প্রতি আমার ভালবাসার অর্ঘ্য।

সাবরিনা যেন প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে। কত ইজিলি কনফিডেন্টলি মাস্টারবেশনের কথা বলল মাহফুজ, যেন এটাই স্বাভাবিক এটাই নিয়ম। সাবরিনার মনে থাকা গোপন সেই পুরুষ যে কনফিডেন্টলি তার ভালবাসা প্রকাশ করবে মাহফুজ যেন সেই পুরুষ। সাবরিনা যেন বুঝতে পারে ঠিক এই কারণে ও বুঝি একবারো মাহফুজের সামনে কোন প্রতিরোধের দেয়াল তুলতে পারে না। বাতাস বাড়ছে চারপাশে। আকাশে আলোর ঝলকানি বেড়েছে। এতক্ষণ দূর আকাশে নিঃশব্দ আলোর ঝলকানি যেন একটু একটু করে এগিয়ে আসছে। হালকা হালকা বাজ পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে। বৃষ্টি আসার আগে  বাতাস যেমন ঠান্ডা হয়ে যায় সেই ঠান্ডা বাতাস আশেপাশে। তবে সেদিকে মাহফুজ সাবরিনার কার খেয়াল নেই। মাহফুজ ওর মনের কথা বলতে ব্যস্ত আর সাবরিনা শুনতে। এত সাহস নিয়ে কেউ সাবরিনা কে আগে মনের কথা বলে নি। মাস্টারবেশনের মত নোংরা শব্দটা দিয়ে যে ভালবাসা বুঝানো যায় সেটা মাহফুজ বলার আগে সাবরিনার জানা ছিল না। মাহফুজ বলে চলে, তুমি প্রশ্ন করেছিলে না লালমাটিয়ার সেই সন্ধ্যায় আমি তোমার বিশ্বাস ভংগ করেছিলাম কিনা? না, আমি কোন বিশ্বাস ভংগ করি নি। সেই রাতে আমি নিজেই ছিলাম ভংগুর। তুমি যেভাবে তোমাকে আমার কাছে মেলে দিয়েছিলে তখন আমি ছিলাম সবচেয়ে ভংগুর। নিজের উপর আমার কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এত দিনের ভালবাসার মানুষ এত কাছে পেয়ে আমি এড়াতে পারি নি নিজেকে। তোমাকে প্রথম স্পর্শ করার পর তাই আমার নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আমি খালি যন্ত্রের মত কাজ করে গেছি। তোমাকে দেখাতে চেয়েছি আমার ভালবাসায় কি আছে, তোমার মন আর শরীর দুইয়ের সাথে আমার মন আর শরীর এক করতে চেয়েছি। আর কনসার্টের দিন? সেদিনে ঘটনার পর আমার বিশ্বাস জন্মেছে আসলে তোমার আমার মিলন ঘটানোর জন্য কাজ করছে অদৃশ্য শক্তি। নাহলে তোমার টয়লেটে যাবার তাড়া, ঠিক সেই মূহুর্তে ভিআইপি টয়লেটের গেট বন্ধ হওয়া এছাড়া এর কি ব্যাখ্যা হতে পারে। আর সেই তাবুর ভিতর যখন তোমাকে আমি দেখি এরপর থেকে আমার নিজের উপর নিজের যেন কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তোমার সেই ভংগুর অবস্থায় তোমার সৌন্দর্যের কোন তুলনা ছিল না। আমার মনে হয়েছিল তোমাকে আমার জয় করতে হবেই। মন, দেহ সব। এরপর আমি খালি দম দেওয়া পুতুলের মত কাজ করে গেছি। আর তোমাকে আমি কেন তুমি করে বলি? আমাদের মাঝে এত কিছু ঘটে যাবার পর আর তুমি করে বলা টা কি একটা প্রহসন না? আমি যতবার তোমার শরীর স্পর্শ করেছি ততবার তোমার শরীর সাড়া দিয়েছে। তোমার ভিতরের এতদিনের সংস্কার তোমাকে বাধা দিচ্ছে কিন্তু আমার মত করে কেউ তোমাকে চাইবে না। এত প্রবল ভাবে, এত ভংকর ভাবে কেউ ভালবাসবে না। সাবরিনার ঠান্ডা বাতাসের মাঝেও গরম লাগছে যেন। আকাশে ঘন ঘন আলোর ঝলকানি যেন ওর মনের কথা বলছে। এত ভালবাস, এত প্রবল ভালবাসা আগে কখনো পায় নি সাবরিনা। কীভাবে একে পায়ে ঠেলে দেয়? আবার সাদমানের কি হবে? সাদমান কে ও অস্বীকার করত পারে না, ফেলে দিতে পারে না। তাহলে ওর এত বছরের সব তো মিথ্যা হয়ে যাবে। মাহফুজ যেন ওর মনের কথা পড়তে পারে। বলে আমি খালি তোমার ভালবাসা চাইছি প্রতিদানে তোমাকে ভালবাস দিব। তোমার জীবন তছনছ করার কোন ইচ্ছাই আমার নেই। সাদমান তোমার জীবনে যে জায়গায় আছে সে জায়গায় থাকবে। আমি খালি তোমার শূণ্যস্থানটা পূরণ করতে চাই। আমি খালি তোমার জীবনে স্থান চাই। দ্বিতীয় পুরুষ হলেও। আমি নাহয় তোমার গোপন প্রেমিক হয়ে থাকব, কোন স্বীকৃতি ছাড়া। আমার খালি তোমার ভালবাসা চাই।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ১৪) - by কাদের - 08-05-2023, 12:36 PM



Users browsing this thread: ashikur, evergreen_830, papersolution, rpsanam, s@000, Shuhasini22, রূপকথার বালক016, 29 Guest(s)