Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )


সোলায়মান শেখ ঢাকা মেট্রো-ট-**** গাড়িটা ফলো করছে। একটু নিরাপদ দূরুত্ব বজায় রাখছে যাতে সহজেই চোখে না পড়ে যায়। আরশাদ সাহেবের বাসা যে ধানমন্ডি সোলায়মান শেখ জানে তবে গাড়ি অনেক আগেই ধানমন্ডি যাবার রাস্তা গুলো কে একে একে ক্রস করে এসেছে। বিজয় সরণি, প্রধানমন্ত্রীর অফিস ক্রস করে জাহাংগীর গেট কে হাতের বামে রেখে মহাখালী ফ্লাইওভারে উঠে পড়ে। একটু সন্ধ্যা নামায় অফিস ছুটির পর জ্যাম কিছুটা কমে এসেছে। ফ্লাইওভারে জ্যাম একদম নেই তাই সাদা গাড়িটা ছুটছে দ্রুত গতিতে। ফ্লাইওভার থেকে নেমে গাড়ি ছুটছে। বনানী পার হয়ে উত্তরার কাছাকাছি এসে একটা ডানে একটা বাক নিল। একটা গলিতে ঢুকে পড়ল। নির্জন গলি। গাড়ি আর দুই তিনটা গলি ঘুরে অবশেষে একটা বেশ বড় বাড়ির সামনে এসে থামল। সোলায়মান শেখ বাড়িটা দেখে চমকে যায়। ঢাকায় ডিবির ইন্সপেক্টর হিসেবে অনেক খোজ রাখতে হয় তার, এই বাড়িটা তার চেনা। বাড়ির সামনে দুই ধারের রাস্তায় অনেক গুলো গাড়ির লাইন দিয়ে পার্ক করা। এটার উত্তরা রেস্টহাউজ এন্ড বার। খুব কম লোক এর নাম জানে। সামনে কোন সাইনবোর্ড নেই। তবে ডিবি পুলিশে এত বছর চাকরি করার সুবাদে এই বাড়ির সুনাম দূর্নাম সব শোনার সৌভাগ্য সোলায়মানে হয়েছে। সরকারী অফিসের খাতায় এটা একটা রেস্ট হাউজ কাম বার। তবে এই বাড়ির মহিমা অন্য জায়গায়। এটা ঢাকার আন্ডারগ্রাউন্ড জুয়া-ক্যাসিনোর আড্ডা। উত্তরা রেস্ট হাউজ এন্ড বার নিজেদের কোন প্রচারণা করে না। সাধারণট এর নিয়মিত গ্রাহকদের কাছে প্রশংসা শুনে নতুন গ্রাহক আসে। এর অন্যতম বড় দিক হল এক্সক্লুসিভিটি। চাইলেও আপনি এখানে আসতে পারবেন না। পুরাতন কোন গ্রাহক আপনাকে রেফার করলে আপনি এখানে ঢুকার চান্স পাবেন। প্রতিদিন এন্ট্রি ফি দশ হাজার টাকা। ভিতরে খাওয়া ড্রিংক ফ্রি। এর ভিতরে ভিআইপি রুম আছে ঐখানে ঢুকতে হলে প্রতিদিন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হয়। সেরুমে হয় ব্ল্যাকজ্যাক আর পোকার খেলা। হাইস্টেক পোকার। যারা খালি ঐরুমে ঢুকে প্রতিদিন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে তারা কত টাকা জুয়ার টেবিলে এক রাতে উড়াতে পারে ধারণা করা যায়। সিকিউরিটির ব্যাপারে এরা বড় কড়া। নিজেদের গ্রাহকদের গোপনীয়তা রক্ষা করার ব্যাপারে সদা সচেষ্ট।

আরশাদ সাহেব এখানে আসবে সোলায়মান ভাবতে পারে নি। আরশাদ সাহেবের চেহারায় একটা ভোলাভালা ভাব আছে। সোলায়মান ভেবেছিল হয়ত অল্প বিস্তর ঘুষ খেতে পারে। অনেক সময় অনেক বড় সরকারি অফিসারের মেয়ের দোষ থাকে সেরকম কিছু থাকতে পারে। তবে এই বাড়িতে ঢুকতে দেখে আরশাদ সাহেব সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে সোলায়মান শেখ। এক খুনের কেসের তদন্ত করতে গিয়ে এই গোপন ক্যাসিনো সম্পর্কে জানতে পারে সোলায়মান। এইখানের এক কর্মচারী কে নিজের সোর্স হিসেবে কাজে লাগিয়েছিল সোলায়মান। সেই কর্মচারীর মাধ্যমে ভিতরের অনেক খবর জেনেছিল। এখানে যারা আসে তারা এক রাতে লাখ টাকা উড়ানো খুব কমন ব্যাপার। এক রাতে এক কোটি টাকা ক্যাশ উড়িয়ে দিচ্ছে জুয়ার টেবিলে এটাও নাকি প্রায় দেখা যায়। অতএব যে এই ক্যাসিনোতে আসবে তার অবশ্যই ভাল পরিমান টাকা আছে। আর একজন সরকারি অফিসারের এই পরিমাণ টাকা থাকার একটাই উপায় সেটা হল ঘুষ খাওয়া, খালি ঘুষ খাওয়া না ভাল পরিমাণে ঘুষ খাওয়া।

তবে সোলায়মান জানে তাকে এখন কোন খবর বের করতে হলে সাবধান হতে হবে। কোন ভাবেই কাউকে জানতে দেওয়া যাবে না যে সে এখানকার কোন গ্রাহকের খবর বের করতে চাইছে। এর আগে যখন কেস তদন্ত করছিল তখন তাকে ঢাকা পুলিশের এক বড় কর্তা ডেকে নিয়ে গিয়ে বলেছিল কোন ভাবে যেন মামলার তদন্ত রিপোর্টে উত্তরা রেস্ট হাউজের নাম না আসে। না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যের কোন পুলিশ ফাড়িতে তার পোস্টিং হবে। সোলায়মান সে দিন বুঝে গিয়েছিল যারা এটা চালায় তাদের ক্ষমতার দৌড় কতটুকু। পরে বিভিন্ন সময় অল্প বিস্তর কিছু খবর জেনেছে অন্যদের সূত্রে, কখনো গুজবে। রেস্টহাউজের ভিতরের খবর বাইরে যাওয়া একদম পছন্দ করে না এর মালিক পক্ষ। তার মত ইন্সপেক্টর স্রেফ একটা মশা এই মালিক পক্ষের কাছে। তার খবর নেওয়ার কথা শুনলে স্রেফ পিষে ফেলবে তাকে। তবে সোলায়মান শেখ এত বছর ডিবিতে টিকে আছে ঘাস খেয়ে নয়। একটা কাজের দ্বায়িত্ব নিলে সেটা মাঝপথে ছেড়ে আসাও তার স্টাইল না। সোলায়মান তাই মোটরসাইকেল একটু দূরে পার্ক করে। নিজের মোবাইলের ফোন বুকে নাম গুলোতে একটা পরিচিত নাম খুজতে থাকে। আকবর। অনেক আগে এই ছেলেটা এই ক্যাসিনোতে ব্ল্যাকজ্যাকের টেবিলে কার্ড সার্ভার হিসেবে কাজ করত। এখনো কাজ করে কি না দেখতে হবে। ফোন বুকে নামটা খুজে পায়। আকবর, উত্তরা। সোলায়মান অবশ্য কল দেয় না সংগে সংগে। সে জানে ভিতরে যারা কাজ করে তাদের ফোন একটা লকারে রেখে যেতে হয় কাজের আগে, তাই এখন ফোন দিলেও লাভ নেই। মটরসাইকেল ঘুরিয়ে বাসার দিকে তাই রওনা দেয় সোলায়মান শেখ। আরশাদ সাহেব একটা ইন্টারেস্টিং কেস হিসেবে দাড়াচ্ছে। সোলায়মান একটু হাসে, ইন্টারেস্টিং সাবেজেক্ট পেলে কেসে মজাই আলাদা।



সাবরিনা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। মাহফুজ মেসেজে পাঠিয়েছে আজকে বিকালের প্রোগ্রামের জন্য কয়টার দিকে আসবে। সাবরিনা ভুলেই গিয়েছিল। পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আজকে বিকালে কথা বলার কথা। আর এক মাস আগে প্ল্যান করা। আসলে আজকে ইসলামপুর বাজার মালিক সমিতির মিটিং আছে। সেখানে অনেকেই আসবে ব্যবসায়ীরা তাই এই দিন ঠিক করা ছিল, যাতে একসাথে অনেক কে পাওয়া যায়। ইসলামপুর হল পুরান ঢাকার সবচেয়ে কাপড় আর বিভিন্ন প্রসাধনী জিনিসের মার্কেট। সারাদেশ থেকে লোক আসে এখানে তাদের দোকানের জন্য খুচরা ক্রয় করতে। ফলে মার্কেটের ট্রেন্ড এই ব্যবসায়ীদের থেকে ভাল কেউ বুঝে না। সাবরিনার প্ল্যান ছিল এখান থেকে ফিডব্যাক নিয়ে এমন কোন সিস্টেম দাড় করানো যায় কিনা যেটা দিয়ে আগেই বাজারের ডিমান্ড সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়মিত পাওয়া যায়। মাঝখানে এই কয়দিন সাবরিনা এত অনমন্যস্ক ছিল যে ভুলেই গিয়েছিল এই মিটিং এর কথা। মাহফুজের মেসেজ দেখে মনে পড়ল।

সাবরিনার একবার মনে হল মিটিংটা বাতিল করি। কিন্তু আবার সাবরিনা জানে ওর রিপোর্ট ফাইনাল করার আগে এই মিটিং টা করা জরুরী। কারণ অফিসে ও যখন প্ল্যান অফ একশন দিয়েছিল সেখানে এই মিটিং এর কথা ছিল এবং ওর বস এই মিটিং এর ধারণা টা কে প্রশংসা করেছিল। অতএব এই মিটিং ছাড়া রিপোর্ট দিলে সেটা বসের চোখে পড়বে এবং এটা নিয়ে ঝাড়ি খেতে হবে। নরমালি এইসব মিটিং এ যাবার সময় অফিসের গাড়ি নিয়ে যায় সাবরিনা। এই জন্য আগে থেকে গাড়ির রিকুইজিশন এর অর্ডার দিতে হয়। সেটাও করা  হয় নি। সব মিলিয়ে হঠাত করে সাবরিনা একটা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গেল। ট্রান্সপোর্টেশন সেকশনে ফোন করে আর্জেন্ট ভিত্তিতে গাড়ি হবে কিনা জানতে চাইল। ভাগ্য খারাপ, গাড়ি পুলে কোন গাড়ি আজকে খালি নাই। মিটিং বিকাল তিনটা থেকে। ওর অফিস থেকে বের হয়ে দুপুরের জ্যাম ঠেলে পৌছাতে দেড় দুই ঘন্টা লাগবে। তার মানে তিনটার মিটিং ধরতে গেলে মিনিমাম দুপুর একটায় বের হওয়া উচিত যাতে সময় মত পৌছানো যায়। ট্রান্সপোর্টেশন ডিপার্টমেন্ট কোন ভাবেই বিকালের আগে কোন গাড়ি দিতে পারবে না। পুরান ঢাকার এই অলিগলিতে একা একা নিজে যেতে ওর একটা ভয় হয় বিশেষ করে সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে, পুরান ঢাকা কে নিয়ে। তাই গাড়ি ছাড়া একা যেতে এক ধরণের অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। এর সলুউশন একটা। মাহফুজ কে অনুরোধ করা ওকে অফিস থেকে নিয়ে যাবার জন্য। আবার এতেও অস্বস্তি হচ্ছে। মাহফুজের সাথে মাঝখানের দু’টো ঘটনা এক ধরণের সংশয় তৈরি করেছে সাবরিনার মনে। আবার এটাও ঠিক সোয়ারিঘাটের সেই রাতে মাহফুজ না বাচালে সাবরিনার কি হত সাবরিনা নিজেও জানে না। শেষ পর্যন্ত এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে মাহফুজ জয়ী হল। সাবরিনার মনে হল একা একা পুরান ঢাকার গলি ঘুপচি তে ঠিকানা খুজে বের করার চাইতে মাহফুজের কাছে সাহায্য চাওয়া ভাল।

মেসেজ পাঠানোর দশ মিনিট পর মোবাইলের স্ক্রিনে সাবরিনার নাম ভেসে উঠতে দেখে মাহফুজ একটু অবাক হল। মাহফুজের ধারণা ছিল সাবরিনা উত্তর মেসেজে দিবে। মাহফুজ জানে এই মিটিং টা সাবরিনার ওভারওল রিপোর্টের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাইলেও সাবরিনা এই মিটিং ক্যান্সেল করবে না। আসলে আজকে মেসেজ টা পাঠিয়েছে সাবরিনা কে খানিকটা জ্বালানোর জন্য। মাহফুজ জানে সাবরিনা এখনো সরাসরি মিট করতে চাইছে না কিন্তু আবার এই মিটিং ক্যান্সেল করতে পারবে না। সাবরিনা বড় বেশি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে, নিয়ম মানে। তাই ইচ্ছা না থাকলেও মিটিং এ আসতে হবে, মাহফুজের সাথে সরাসরি কথা বলতে হবে। সাবরিনা কে সুক্ষ ভাবে জ্বালানোর জন্য তাই মেসেজ পাঠানো। তবে সাবরিনা সরাসরি ফোন দিবে এটা ভাবে নি। তাই একটু বিস্ময়ের সাথে ফোন রিসিভ করে মাহফুজ বলল, হ্যালো।
হ্যালো, মাহফুজ সাহেব। আমি গাড়ি রিকুইজিশন দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি কি আমার অফিস থেকে আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন।
হ্যা, সাবরিনা কোন সমস্যা নেই। আমি বারটার দিকে অফিসে আসব।
(মাহফুজ ভাবছে সাবরিনা কে তুমি বলে ভুল করল কিনা কারণ সাবরিনা আপনি আপনি বলে যাচ্ছে)
থ্যাংকিউ, তাহলে বারটার সময় দেখা হবে।
মাহফুজ উত্তর দিল
আমার কিন্তু কোন গাড়ি নেই
আমরা নাহয় সিএনজি নিয়ে চলে যাব
মাহফুজ এখানে অকস্মাৎ একটা সুযোগ দেখল। সুযোগের স্দব্যবহার করাই ডেভিলের কাজ।
আসলে আমি এখন বাইরে বের হয়ে গেছি আর আমার বাইকটা সাথে আছে। বাইক কোথায় রেখে আসতে পারব না আসলে। তাই আসতে হলে বাইক নিয়ে আসতে হবে।
মাহফুজের উত্তর সাবরিনা কে কনফিউজ করে দিল। মাহফুজের সাথে বাইকে যাওয়া মানে বাইকে উঠতে হবে। সাবরিনা ভার্সিটি লাইফে ফ্রেন্ডদের বাইকে দুইএকবার উঠেছে। তবে মাহফুজের সাথে বাইকে উঠা ঠিক হবে কিনা সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। এদিকে মাহফুজ আবার তাড়া দয়েয়।
বাইকে উঠতে ভয় পাচ্ছ নাকি
না, না ভয় কিসের। আমি বাইকে আগেও উঠেছি।
তাহলে তো হয়েই গেল। আমি বারটার দিকে আসছি। তুমি রেডি থেকে। আমি কল দিলে নিচে নেমে এস।
মাহফুজের এই তুমি তুমি সাবরিনার গায়ে রাগ ধরিয়ে দিচ্ছে। কি ভাবছে লোকটা। কিন্তু লাস্ট দুইটা এনকাউন্টারের পর মনের ভিতর যে অস্বস্তি সেটা সরাসরি কনফ্রন্টেশনে যেতে বাধা দিচ্ছে। পরে সুযোগ বুঝে লোকটা কে ধরতে হবে।
ঠিক আছে। দেখা হবে বারটায়
ওকে, বাই।


মাহফুজ বারটার একটু আগে সাবরিনার অফিসের আসল, বাইক নিচে পার্ক করে উপরে উঠে আসল সাবরিনার ফ্লোরে। ইচ্ছা করেই মাহফুজ আজকে সেজেগুজে এসেছে। জিন্স, নতুন পোলো শার্ট আর কেডস। সাবরিনার ফ্লোরে ঢুকতেই সামিরার সাথে দেখা হয়ে গেল। সামিরা বলল কি মাহফুজ ভাই বেশ কিছুদিন দেখা নায়। মাহফুজ উত্তর দিল, একটু বিজি ছিলাম। সামিরা প্রশ্ন করল, সাবরিনার কাছে এসেছেন নিশ্চয়। মাহফুজ একটা হাসি দিল। সামিরা  বলল মাঝে মধ্যে আমার টেবিলেও একটু আসবেন। মাহফুজ হেসে বলল আসব নিশ্চয়। সামিরা বলল আজকে একদম সেজেগুজে এসেছেন দেখি। মাহফুজ বলল আমি যতই সাজি আপনার ধারে কাছে কি আর পাত্তা পাব। শুনেই সামিরা হাসতে থাকলে। মাহফুজের গায়ে হালকা করে একটা ধাক্কা দিয়ে বলল, আপনি ভাল ফ্লার্ট আছেন। সুযোগ পেলেই মেয়েদের প্রশংসা। মাহফুজ উত্তর দিল, কই সবাই কে তো করি না। মাঝে মধ্যে আপনাকে করি। সামিরা আবার হাসতে  হাসতে মাহফুজ কে একটা ধাক্কা দিল। বলল, ইউ ফ্লার্ট।
সাবরিনা ওর টেবিল থেকেই মাহফুজ কে আসতে দেখল ওর দিকে। সাবরিনা দ্রুত কাজে ব্যস্ত এমন ভংগিতে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকল। এক মিনিট পরেও যখন মাহফুজ টেবিলের সামনে দাড়াল না তখন মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে দূরে সামিরা মাহফুজের সাথে কথা বলছে। মাহফুজ কে দেখলেই সামিরা দৌড়ে আসবে, কথা বলার চেষ্টা করবে না হয় চোখ দিয়ে গিলে ফেলতে চাইবে। যদিও অফিসে ওর একমাত্র ফ্রেন্ডলি পার্সন তবু সামিরার এত ছোক ছোক ভাল লাগে না। কিছু একটা নিয়ে সামিরা মাহফুজ হাসছে। সাবরিনার বিরক্ত লাগে। কি এত কথা সামিরার সাথে। সাবরিনা আড় চোখে সামিরা মাহফুজ কে দেখে আর ল্যাপটপে কাজের ভান করে। একটু পরে মাহফুজ আসে। হাই হ্যালো করে। সাবরিনা সংক্ষেপে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। মাহফুজ বলে এখন আমাদের বের হয়ে পড়া ভাল, রাস্তায় জ্যাম আছে। সাবরিনা বলে একটু অপেক্ষা করুন আমি একটু ওয়াশরুম হয়ে আসি। মাহফুজ মুচকি হাসে। মাহফুজ বলে হ্যা, হ্যা যান ঘুরে আসুন। ঢাকার রাস্তায় খুব বেশি ওয়াশরুম নেই দরকার হলেও যেতে পারবেন না। লজ্জায় লাল হয়ে সাবরিনা। কনসার্টের রাতের কথা মনে হয়। পেটের কাছে আবার একটা সুরসুরি অনুভূতি কাজ করতে থাকে। কিছু না বলে সাবরিনা ওয়াশরুমের দিকে যায়।

ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে হাত ধোয়ার সময় সাবরিনা দেখে সামিরা এসে হাজির হয়েছে। সাবরিনা কে দেখে বলে আজকে তো দিনটা ভাল যাবে তোর। সাবরিনা জিজ্ঞাসু ভংগীতে তাকায়। সামিরা উত্তর দেয় মাহফুজ সাহেব কে দেখছিস আজকে। কি হ্যান্ডসাম লাগছিল। মনে হচ্ছিল ধরে খেয়ে ফেলি। হাফ হাতা পোলো শার্টে কেমন একটা ড্যাশিং লুক। সাবরিনা সামিরার কথার উত্তর না দিয়ে হাত ধুতে থাকে। সামিরা  বলে আজকে যে ড্যাশিং লাগছে আমার মনে হচ্ছিল জড়িয়ে ধরি। শোন, আমার সাথে ফ্লার্টিং ও করছিল। লোকটা কথাও জানে। সাবরিনা মনে মনে একমত হয় কথা জানে বটে মাহফুজ। এত হ্যান্ডসাম কাউকে দেখলেই আমার ওয়াশরুমে আসতে ইচ্ছা করে। সামিরার কথার ইংগিতে সাবরিনার চোখ কপালে উঠে। সামিরা ওর মুখ ভংগী দেখে বলে সত্যি। এমন  হ্যান্ডসাম কেউ আমার সাথে একটু হেসে কথা বললে তুই জানিস আমার কি হয়, আমার বুক কাপে, পেটে শিরশির হয় আর নিচের টা ভিজে যায়। একটা হাস্কি ভয়েজে  বলে সাবরিনা। তুই কিভাবে এই লোকের সাথে থাকিস এত। আমি থাকলে তো কবেই জোর করে লোকটাকে আদর করে ফেলতাম। সাবরিনা বলে, সামিরা তুই কি সব বলিস। খালি বাজে কথা। সামিরা বলে আরে বাজে কথা কি, সত্যি কথা। কয়দিন রাতে আমি মাহফুজের কথা ভেবে নিচে হাত দিয়েছি জানিস। সাবরিনা জানে এইসব ব্যাপারে কথা বলে লাভ নেই তাতে সামিরা আর বলবে। সামিরা বলে তুই যে কিভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করিস জানি না। আমি হলে কবেই  কোলে উঠে বসে থাকতাম। তোর মত সতী সাধ্যি নারী বলেই মাহফুজের মত এমন হ্যান্ডসাম হাংক কে অগ্রাহ্য করতে পারছিস। সাবরিনা কথা বাড়ায় না, ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে। খালি মাথায় ঘুরে আসলেই কি অগ্রাহ্য করতে পারছে নাকি এক পা এক পা করে মাহফুজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

মোটরসাইকেলে উঠার সময় মাহফুজ সাবরিনা কে বলল দুই সাইডে পা দিয়ে বসতে কারণ সেটাই সেফ। সাবরিনার তখন ভাবছে মাহফুজ বুঝি ওকে পিছনে বসিয়ে ব্রেক মেরে ফিল নিতে চাইছে তাই দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসতে বলছে। সাবরিনা না করে দিল। বলল আগেও আমি বাইকে চড়েছি, সব সময় এক সাইডে পা রেখে বসেছি সমস্যা হয় নি, আজকেও হবে না। মাহফুজ বুঝল তর্ক করে লাভ নেই। খালি বলল, ওড়না টা সাবধানে যাতে আবার চাকার সাথে প্যাচিয়ে না যায়। সাবরিনা কাধের ওড়না তাই সতর্ক হয়ে পড়ল যাতে বিপদ না হয়। রাস্তায় সেদিন অসহ্য গরম। একটু পর পর জ্যাম। বাইক জ্যাম ঠেলে কষ্টে এগুচ্ছে। সাবরিনা ওড়না মাথার উপর দিল এই রোদ থেকে বাচতে। ঘামে গা ভিজে যাচ্ছে। কপালে জমা ঘাম চোখের পাশ দিয়ে আস্তে করে গাল বেয়ে নিচে নামছে। পিঠে ঘাম জমে কুট কুট করছে কিন্তু পিঠ চুলকানোর উপায় নেই। এক হাত মাহফুজের কাধে দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করছে অন্য হাত এভাবে এক সাইড হয়ে বসার কারণে পিঠে দেওয়ার উপায় নেই, তাহলে উলটে পড়ে যাবে। মাহফুজ হেলমেট পড়ে আছে, হেলমেটের ফাক দিয়ে দর দর করে ঘাম ঘাড় বেয়ে নামছে। মাহফুজের জামাও ঘামে ভিজে উঠছে সাবরিনা লক্ষ্য করছে। লোকটা আসলে অত খারাপ না। এই যে ওকে এই জ্যামের মধ্যে নিতে আসল। কোন দরকার ছিল না। না করলে সাবরিনার কিছু করার ছিল না। এই জ্যামে পুরান ঢাকার অপরিচিত গলিতে ঠিকানা খুজতে হত একাই। এইসব ভাবতে ভাবতে একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে সাবরিনা।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ১৪) - by কাদের - 08-05-2023, 12:34 PM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)