Thread Rating:
  • 179 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )
আপডেট ১৫



সাবরিনা অন্যমনস্ক হয়ে সামনে খোলা ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে আছে। আজকে অফিসে কাজের চাপ কম। তাই একটু আগে আসা হোয়াটসএপে একটা মেসেজ চিন্তার সাগরে সাতার কাটার সুযোগ করে দিয়েছে। মাহফুজের মেসেজ, খালি লেখা- গুড মর্নিং। ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালের সেই কনসার্টের রাত চলে গেছে আজকে চারদিন। মাহফুজের সাথে দেখা হয় নি এমনকি কথাও হয় নি কিন্তু মেসেজ চালাচালি হচ্ছে। ওদের মধ্যে যে কনসার্টের রাতে কিছু হয়েছে সেটা নিয়ে মাহফুজ কোন কথাই বলছে না। একমাত্র সেই রাতে পাঠানো একটা মেসেজ ছাড়া- আই হ্যাভ ইউর প্যান্টি এন্ড ইট স্মেলস সোয়েটি, সুইট এন্ড ডার্টি। গত চার দিনে প্রায় হাজারখানেক বারের মত মেসেজটা সাবরিনার পড়া হয়ে গেছে। যতবার পড়ছে ততবার দুইটা ভিন্ন রিএকশন হচ্ছে। কোনবার পড়ে মনে হচ্ছে একটা বিশাল পাপ করে ফেলেছে ও, সারাজীবন সততা বজায় রাখার যে লক্ষ্য ছিল সেটা বুঝি নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে সাদমান কে দেখলে এই অনুভূতি টা আর বাড়ে। আবার ঠিক এই মেসেজটা পড়লে কখনো কখনো দারুণ একটা উত্তেজনা বোধ হয়। মনে হয় হৃদস্পন্দন বেড়ে গেছে, গলার কাছে একটা চাপা অনুভূতি, মাথা যেন হালকা হয়ে আসে আর পেটের কাছে শিরশির একটা অনুভূতি। সাবরিনা এই অনুভূতিটাও চিনে এবং চিনে বলে অস্বস্তিতে ভুগে। ও জানে এর পরবর্তী ধাপে আস্তে শিরশির অনুভূতিটা আর নিচে নামবে, পেটের থেকে আর নিচে দুই উরুর মাঝখানে। মাহফুজের সাথে ওর দুইটা এনকাউন্টারের সময় এক সাথে এই দুই অনুভূতি ওর মাঝে হয়েছে। তবে ঐ দুই এনকাউন্টারের মত পাপবোধের উপর দিয়ে যেন দ্বিতীয় অনুভূতিটা প্রবল হয়ে উঠে প্রতিবার।  

মোবাইলের মেসেজের দিকে তাকিয়ে সাবরিনা ভাবে কীভাবে একটা মানুষ এত বড় একটা ঘটনার পর এই বিষয়ে কথা না বলে থাকতে পারে। সাবরিনার ধারণা ছিল এ ধরণের একটা ঘটনার পর মাহফুজ ওকে পটানোর আর চেষ্টা করবে, আর কিছু  বলবে। সাধারণত ছেলেরা এটাই করার কথা, অন্তত সাবরিনা ওর বান্ধবীদের কাছ থেকে শুনে যা ধারণা করে এসেছে এতকাল। মেয়েদের কে একবার কোন দূর্বল মূহুর্তে পেলে পটিয়ে আবার সেই এক ফায়দা তোলার চেষ্টা করে ছেলেরা। ওর এক বান্ধবী বলেছিল একবার কিস করার সুযোগ দিবি, তাহলে দিনের পর দিন ঘ্যানঘ্যান করবে আবার কিস দেবার জন্য। এরপর সুযোগ দিতে দিতে যখন কিস করা নরমাল হয়ে যাবে তারপর বুকে হাত দিতে চাইবে। তাই একবার কিছু করে ফেললেও সেটা ঘটার আর সুযোগ দেওয়া যাবে না। বান্ধবীর সে উপদেশ সাবরিনার মাথায় আছে। মাহফুজ ট্রাই করলে সেক্ষেত্রে সাবরিনা কি বলবে তার অনেক কিছুই ঠিক করে রেখেছে কিন্তু মাহফুজ যেভাবে কোন কথাই তুলছে না সেটা ওকে কনফিউজ করে দিচ্ছে।  সাবরিনা পাপ পূণ্য, বিয়ে, নৈতিকতা, সম্পর্ক এইগুলা নিয়ে বড় একটা গুরুগম্ভীর ভাষণ তৈরি করে রেখেছিল কিন্তু মাহফুজের এই নিরাসক্ত আচরণ যেন সাবরিনার মনের দেয়ালে দাগ কেটে দিচ্ছে। সাবরিনার মনে হচ্ছে মাহফুজের কাছে বুঝি এটা বড় কোন ঘটনাই নয়, একটা নারীর শরীর যেন শুধু একটা শরীর। মাহফুজ কি ওকে যেমন তেমন মেয়ে ভেবছে, যে যখন তখন যাকে ইচ্ছা শরীর দিয়ে বেড়ায়? চিন্তা করে সাবরিনার মেজাজ খারাপ হতে থাকে। সাবরিনার কাছে সারাজীবন শরীর বড় পবিত্র জিনিস, অন্তত পারিবারিক ভাবে তাই শিখে এসেছে। যাকে ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা এই শরীর দেওয়া যায় না। মন হচ্ছে সেই শরীর পাওয়ার চাবিকাঠি। মনের দুয়ার খুলতে পারলে তবে শরীর পাওয়া যায়। মাহফুজ তবে কীভাবে পারল? মাহফুজ কি ওর মনের চাবি পেয়ে গেছে? নাহলে কিভাবে এত নিখুত ভাবে দক্ষ বাদকের মত বীণার ঝংকার তুলছে ওর শরীরে। সাদমান তো কখনো পারে নি? সাদমান কি তবে ওর মনের চাবি পায়নি? এইসব ছোট ছোট প্রশ্ন সাবরিনার মনে বড় বড় সংশয়ের জন্ম দিচ্ছে।

বড় হবার সময় খালি দুইবার সাবরিনা ওর পরিবারের কাছে  শরীর মন এইসব নিয়ে কোন উপদেশ পেয়েছে। আর ভাল করে বললে দুইবার ওর মা সাফিনা করিম ওকে উপদেশ দিয়েছে। প্রথমবার সাবরিনা যখন ঋতুমতী হল। প্রথম পিরিয়ডের সময় রক্ত দেখে দারুণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল সাবরিনা। ভয় পেয়ে মা কে দেখানোর পর মা অভয় দিয়ে, প্রথম ঋতুমতী মেয়ে কে যেভাবে সাহায্য করা দরকার তাই করেছিল। দুইদিন পর প্রাথমিক ভয় কাটলে সাফিনা, সাবরিনা কে নিয়ে দরজা বন্ধ করে বসেছিল। মেয়েদের পিরিয়ড কেন হয়, শারীরিক আর মানসিক ভাবে এটা মেয়েদের কি পরিবর্তন আনে, সমাজের চোখে সাবরিনার এখন কি কি করা উচতি এমন অনেক গুলো বিষয় নিয়ে উপদেশ দিয়েছিল সাফিনা। বরাবর বাধ্য অনুগত মেয়ে সাবরিনা সব শুনেছে এবং অক্ষরে অক্ষরে মেনেছে এতদিন। দ্বিতীয়বার সাফিনা করিম তার বড় মেয়ে কে এরকম উপদেশ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার পর, প্রথম সেমিস্টারে। তখন মাত্র এক বা দুইমাস হয়েছে সাবরিনা আইবিএ তে ক্লাস শুরু করেছে। দেশের সেরা বিজনেস স্কুলে চান্স পেয়ে সাবরিনা তখন আকাশে উড়ছে। এমনিতে সুন্দরী তারপর আইবিএতে সুন্দর প্লাস মেধা কে কিভাবে গ্ল্যামারাস ভাবে প্রেজেন্টেশন করতে হয় সেটার শিক্ষা পেতে শুরু করেছে। কলেজ জীবনে যত কড়া বাধা নিষেধ ছিল ফ্যামিলিতে সেগুলো একটু একটু করে হালকা হতে শুরু করেছে। কলেজ পর্যন্ত ক্লাস শেষ হলেই ঘন্টায় ঘন্টায় বাবা বা মায়ের ফোন। স্যারের কাছে ব্যাচে পড়ত যাও বা বান্ধবীর  বাসায় যাও। সেই কড়াকড়ি এখন কমে আসতে শুরু করেছে, খালি সন্ধ্যার আগে বাসায় না আসলে ফোন আসে এখন। ঠিক সেই সময় সাফিনা করিম মেয়ে কে নিয়ে বসলেন একদিন। বুঝালেন দেখ, মা আমাদের ফ্যামিলিতে একটা ভ্যালুস আছে, আমাদের সম্মান আছে সমাজে। তোমার বাবা কর্পোরেটের  বড় অফিসার, আমি সকারি কলেজের এসোসিয়েট প্রফেসর। তোমার চাচারা সবাই দেশের বাইরে প্রতিষ্ঠিত। তোমার ফুফু বড় ব্যাংকার। আমাদের অন্য আত্মীয় স্বজনদের দেখ সবাই সমাজে কোন না কোন ভাবে প্রতিষ্ঠিত। তুমি সুন্দরী এবং মেধাবী। ছেলেরা সবসময় তোমার মত মেয়ের প্রেমে পড়বে। সব সময় ছেলেরা তোমাকে আকর্ষিত করতে চাইবে। এই সময় টা এমন যে তোমার মনে হবে তুমি জগতের রাণী। তোমার চোখের ইশারায় অনেকেই দাঁড়িয়ে থাকবে, তোমার হাতের ইশারায় অনেকে ছুটে আসবে। তবে মনে রেখ মা যাই কর আমাদের ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ভুলো না। এই সময় প্রেম হবে এটা স্বাভাবিক তবে এমন কার প্রেমে পড়ো না যে আমাদের ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে যায় না। আর আরেকটা কথা মনে রাখবে, বড়লোক, গরীব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত যাই হোক সব ছেলের মধ্যে একটা মিল আছে। সবাই খালি একটা জিনিস চায় শেষ পর্যন্ত মেয়েদের কাছে। মেয়েদের শরীর। মায়ের মুখে এমন কথা শুনে একটু চমকে গিয়েছিল সাবরিনা। বিয়ের আগে এমন কিছু করো না যাতে সমাজের কাছে আমাদের ছোট হতে হয়। সাফিনার কথা শুনে নীরবে মাথা নাড়ায় সাবরিনা। সাফিনার কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছে সাবরিনা। ভার্সিটি লাইফে যে প্রেম হয়েছিল কিছুদিনের জন্য সেই ছেলেটার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ওদের সাথে মানানসই। বাবা বড় ব্যবসায়ী। কিন্তু প্রেমটা টিকল না সাফিনার  উপদেশের জন্য আসলে। ছেলেটা প্রেমের সাথে সাথে আর কিছু চেয়েছিল কিন্তু সাবরিনা বিয়ের আগে এক পা বাড়াতে রাজি ছিল না। তাই আর টিকে নি প্রেমটা। এরপর যতবার প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছে ততবার সাফিনার দেওয়া উপদেশ মনে পড়েছে, ছেলেরা একটা জিনিস চায় মেয়েদের কাছ থেকে, শরীর এবং বিয়ের আগে এমন কিছু যেন না করি যাতে দূর্নাম হয় ফ্যামিলির। ক্লিয়ার কাট ইন্সট্রাকশন। এতসব শর্ত মেনে কি আর প্রেম হয়। তাই সাবরিনার আর প্রেম হয় নি। এমনকি বিয়ের সময় পর্যন্ত মায়ের দেয়া উপদেশ মেনে ছেলে বেছেছে। ভাল ফ্যামিলি, ভাল চাকরি করে, ভাল ছেলে। এত কিছুর পরেও আজকাল কেন জানি সাবরিনার মনে হয় ওর মায়ের উপদেশে ঘাটতি ছিল। সাবরিনার মনে হয় এত হিসাব মিলাতে গেলে মনের হিসাব টা গড়মিল হয়ে যায় গূরুত্বপূর্ণ এই কথাটাই মা তাকে বলে নি।

সাবরিনার এই গত দুই তিন দিনের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাহফুজের কাছ থেকে পাওয়া কনসার্টের রাতের সেই এসএমএস। অনেকবার এই কয়দিনে মেসেজটা খুলে ডিলিট বাটন চাপার জন্য আংগুল নিয়েও ডিলিট করতে পারে নি। মাহফুজের এই এসএমএসটা যেন সাবরিনার ভিতরের দ্বন্দ্বটা চমতকার ভাবে ধরে ফেলছে। এক সাথে নোংরা, অশ্লীল, ভালগার আবার সেই সাথে সাহসী, বোল্ড। কোন দ্বিধা ছাড়া মনের কথাটা বলে ফেলছে এই একটা মেসেজ। সারাজীবন আশেপাশের কে কি ভাববে সেই জন্য কোন কথা বলবা্র আগে দশবার ভেবেছে, এত ভাবতে গিয়ে বেশির ভাগ সময় মনের কথাটাই আর বলা হয় নি। অনেক সময় শেষ পর্যন্ত পরিমার্জন করে যে কথাটা বলেছে সেটা আসলে মনের আসল ভাব প্রকাশ করে না। সে জায়গায় কী অবলীলায় সেক্স নিয়ে মনের কথাটা বলে ফেলেছে মাহফুজ। সাবরিনা জানে কোন ভদ্রছেলে এভাবে কথা বলে না কিন্তু এতদিন ভদ্র ছেলেদের আদর্শ মানলেও সাবরিনার মনে যেন সেটা নিয়ে আস্তে আস্তে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। সেখানে সাদমানের মত ভাল ছেলের যতটা অবদান তার থেকে বেশি অবদান মাহফুজের মত ডেভিলের। মাহফুজের জন্য আসলে হ্যান্ডসাম ডেভিল শব্দটা বেশি যায়। ডেভিলের যেমন রূপ বোঝা যায় না, মাহফুজের তেমন তল পাওয়া ভার। প্রথম যখন অফিসে কাজের জন্য পলিটিক্যাল লোকদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে শুনেছিল সেদিন একটু বিরক্তিতে নাক কুচকেছিল। অফিস পার্টিতে মাহফুজকে প্রথম দেখে এতদিনের ভাবনা একটু ধাক্কা খেয়েছিল সাবরিনার। সারাজীবন এক ধরনের প্রটেক্টিভ লাইফে থাকায় নিজেদের সার্কেলের বাইরে খুব বেশি মানুষের সাথে মেশার সুযোগ হয় নি। আর ওদের উচ্চবিত্ত ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি সার্কেলে রাজনীতি নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মূলক আলোচনায় ওর ধারণা হয়েছিল পলিটেশিয়ান মানে ভুড়িওয়ালা, ফ্যাশনসেন্স হীন, কথাবার্তায় এক ধরণের অসংস্কৃত মানুষ, যারা ক্ষমতার জন্য যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। মাহফুজ ওর সেই ধারণায় একটা বড় আঘাত  হয়ে এসেছিল। মাহফুজ হচ্ছে সেই ধরনের সুন্দর ছেলে যাকে দেখলে মেয়েরা একবার হলেও ফিরে তাকাবে। ঠিক লাল্টু মার্কা সুন্দর না বরং এক ধরণের রাফ সুন্দর। এরপর কাজের জন্য মিশতে গিয়ে দেখে এই ছেলে আর অনেক চমকের খনি। মাথা শার্প, যে কোন পরিস্থিতিতে যে কোন ঘটনা বুঝে কি সমাধান হবে সেটা দ্রুত করে ফেলতে পারে, হালকা পাতলা বই পড়েছে, ভাল পরিমাণ মুভি দেখে, ফটোগ্রাফি নিয়ে ধারণা আছে। সাথে আছে মাহফুজের ব্যক্তিত্ব। কনফিডেন্ট এন্ড অলওয়েজ স্মাইলিং। কথা দিয়ে যেন উত্তর মেরুর সমস্ত বরফ গলিয়ে ফেলতে পারবে মাহফুজ। এইসব কারণে মাহফুজ সাবরিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিল সহজে। তবে সুন্দরী মেয়েরা আমাদের দেশে সহজে তাদের মনের কথা বুঝতে দেয় না, সাবরিনা এর ব্যতিক্রম না। তবে সাবরিনা যতই ওর আকর্ষণ গোপন রাখুক ওর স্বপ্নে ঠিক ডেভিলের মত হাজির হচ্ছিল মাহফুজ। সাবরিনা তাই যখন যোগাযোগ কমিয়ে দিল নিজের মনের উপর আবার কন্ট্রোল ফিরিয়ে আনতে তখন যেন আবার নতুন করে হাজির হল মাহফুজ। শয়তান কে তুমি যত দূরে তাড়িয়ে দাও ঠিক কোন না কোন উপায়ে ফেরত সে আসবেই। সোয়ারিঘাটের সে রাতে মাহফুজ যেন উদ্ধারকারী ডেভিল। মাহফুজের সেই রাতে সাহস আর পরে যেভাবে পুরো ঘটনা সামাল দিয়েছিল তাতে যেন আর বেশি মুগ্ধতা বেড়ে গেল সাবরিনার। এত মুগ্ধতায় সাবরিনা যখন ওর মনের সতর্কতার দেয়াল একটু নিচু করল ঠিক তখন যেন ডেভিল তার স্বরুপে ফেরত গেল। সেই শুক্রবার ধানমন্ডি আর লালমাটিয়ায় মাহফুজে মুগ্ধ সাবরিনা যখন একটু একটু করে ওর জীবনের নানা দিক, মনের গোপন কথা শেয়ার করছিল ঠিক তখন যেন একটা মোক্ষম দান দিল শয়তান। মাহফুজ যেভাবে ঐদিন অন্ধকার মাঠে ওকে বীণার মত বাজাচ্ছিল সেটা চিন্তা করে সাবরিনার এখনো শরীরের রোম খাড়া হয়ে যায়, গা শিরশির করে উঠে। আর কনসার্টের মাঠে? সাবরিনার মনে হয় এটা যেন পারফেক্ট ডেভিল এক্ট। শয়তানের শ্রেষ্ঠ দান। ডেভিল কখনো কোন সুযোগ এর স্বদব্যবহার করতে ছাড়ে না। সাবরিনার টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন টা একদম আকস্মিক। কিন্তু মাহফুজ যেভাবে সেই সুযোগ এর ব্যবহার করল তাতে সাবরিনা রেগে যাবে নাকি মাহফুজের সুযোগের ব্যবহারের ক্ষমতা দেখে অবাক হবে সাবরিনা নিজেই বুঝে উঠতে পারে না।

সাবরিনার মনে হয় এভাবে প্রতিবার ওকে কীভাবে একদম অবশ করে দেয় মাহফুজ? সাবরিনা জানে না। ওর কাছে মনে হয় এ বুঝি ডেভিলস ট্রিক। ওর সমস্ত মানসিক শক্তি যেন ঐ মূহুর্তগুলোতে মাহফুজের দখলে চলে যায়।




মাহফুজ জানে সে কী করছে। কলেজে লাইফে প্রথম প্রেম করার সময় মাহফুজ একটা জিনিস আবিষ্কার করেছিল। মেয়েরা পারিবারিক শিক্ষার কারণে অনাত্মীয় ছেলেদের একটু সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে সব সময়। তাই মেয়েদের প্রতিরক্ষা বর্ম প্রথম দূর্বল করে দিতে হয় চার্ম দিয়ে। ভাল ব্যবহার, কমপ্লিমেন্ট কিন্তু কোন কিছুতেই খুব বাড়াবাড়ি করা যাবে না। একটু একটু করে যখন মেয়ের আস্থার জায়গায় আসা যায় তখন অল্প অল্প করে অগ্রসর হতে হয়, হিন্টস দিতে হয়। সেই সব হিন্টস হতে হবে খুব সুক্ষ যাতে মেয়ে বুঝতে পারে কিন্তু আবার শিওর হতে না পারে যে ছেলে আসলে যা বলছে তা কী মিন করছে কিনা। এই সংশয় সৃষ্টি করাটা মেয়েদের মন জয়ের একটা বড় উপায়। মেয়েরা রহস্য ভালবাসে তাই তখন এই রহস্য ভেদ করার জন্য মেয়েরা নিজে থেকে সামনে আসবে। ইয়ুথ কনসার্টের পর মাহফুজ অনেকবার সাবরিনা কে নিয়ে ভেবেছে। সাবরিনার প্রতি ওর এই এট্রাকশন সিনথিয়ার সাথে ওর সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলবে ভেবেছে। মাহফুজ নিশ্চিত সিনথিয়ার প্রতি ওর ভালবাসায় একটু ঘাটতি নেই সেখানে সাবরিনার প্রতি ওর অন্য রকম এক ভালবাসার জন্ম হয়েছে, অজানা আকর্ষণ। সিনথিয়া ওর লাইফে গুড ফোর্স। মাহফুজ জানে সিনথিয়া আসার আগে ও ছিল পলিটিক্যালি উচ্চভিলাষী এক ছাত্র নেতা। সিনথিয়া ওর লাইফে এমন কিছু পরিবর্তন আনতে সাহায্য করেছে যেখানে ও জানে কিভাবে ওর লক্ষ্য গুলো ডিসিপ্লিনড ওয়েতে অর্জন করা যায়। আর সাবরিনা যেন সিনথিয়ার অন্য রূপ তবে সিনথিয়া নয়। সাথে সিনথিয়ার ওর আপু কে নিয়ে  ডার্টি টক। সব মিলিয়ে মাহফুজ নিজেকে বুঝ দেয় হোয়াট হি ইজ ডুইং, ইজ নাথিং রঙ। সিনথিয়া ওর জীবনে ধ্রুব সত্য আর সাবরিনা একটা হতে পারে আরেকটি গূরুত্বপূর্ণ সংযোজন।


কনসার্টের পর সেই রাতে ডার্টি মেসেজ পাঠানো এবং এরপর থেকে কিছুই হয় নি এমন ভাবে মেসেজে নরমাল কথাবার্তা চলানো সব মাহফুজের অনেকদিনের প্র্যাকটিস করা কৌশলের পুনঃপ্রয়োগ। মাহফুজ জানে এতে করে সাবরিনা একটা ধন্দ্বে পড়ে যাবে। মাহফুজ কি করতে চায়, কি বলতে চায় এইসব ভেবে। যত সংশয় বাড়বে মাহফুজের জন্য তত লাভ। কারণ সাবরিনার সাথে কিছুদিন মিশে এবং সিনথিয়ার কাছ থেকে শোনা সাবরিনার বর্ণনা থেকে মাহফুজের ধারণা সাবরিনা তার ভিতরে থাকা নীতি নৈতিকতার বারুদ নিয়ে ওর উপর ঝাপিয়ে পড়বে পরের সাক্ষাতেই। এখন তাই ওকে বেশি বেশি কনফিউজ করার চেষ্টা যাতে সাবরিনার ভিতরের এই মোরাল পুলিশ বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারে। মাহফুজ ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে দেখে, প্রথমে চার্ম দিয়ে মুগ্ধ করা এবং এরপর কনফিউজ করা এই দুই ধাপের প্রথম টা অবচেতন ভাবেই কিছুদিন ধরে মাহফুজ করে আসছিল। এখন তাই সচেতন ভাবেই কনফিউজ করছে। মাহফুজ জানে মাছের জন্য এই টোপ ফেলা হলে মাছ ঠোকর দিবেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ঠোকর দেবার পর মাহফুজ মাছকে খেলিয়ে বড়শিতে তুলতে পারে কি না।


সাধারণ মেসেজ চালাচালির আরেকটা কারণ হচ্ছে লাইন অফ কমিউনিকেশন খোলা রাখা। মাহফুজ জানে সাবরিনার সংস্কার, নীতিবোধ এসব কারণে ঠিক এই মূহুর্তে মাহফুজের সাথে সরাসরি দেখা করা বা কথা বলা সাবরিনার জন্য কঠিন। এসএমএস বা হোয়াটএপের চ্যাটে একটা আড়াল থাকে। সাবরিনার সাথে কমিউনিকেশন বজায় রাখার জন্য এই আড়ালটার দরকার আছে। তাই শুভ সকাল থেকে এই মূহুর্তে কি করছে এইসব নানা ছোটখাট মেসেজ দিচ্ছে মাহফুজ। আশার ব্যাপার হল সাবরিনা উত্তর দিচ্ছে। অল্প কথায়, বেশির ভাগ সময় হ্যা বা না দিয় কিন্তু উত্তর দিচ্ছে সাবরিনা। মাহফুজ জানে এভাবে চললে আর দুই তিন দিন পর আর ইজি হবে সাবরিনা। মাহফুজের উপর থাকা সংশয় নিয়ে নিজের মধ্যে আর গাড় সংশয়ের উদ্ভব হবে সাবরিনার। আর মাহফুজ জানে মেয়েদের মন জয় করবার জন্য সংশয়ের থেকে বড় অস্ত্র কিছু নেই।
[+] 10 users Like কাদের's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ১৪) - by কাদের - 08-05-2023, 12:32 PM



Users browsing this thread: ashikur, evergreen_830, papersolution, rpsanam, s@000, Shuhasini22, রূপকথার বালক016, 29 Guest(s)