Thread Rating:
  • 179 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )
আপডেট ১৩



সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর থেকে আজকাল সাবরিনা একটু অস্থিরতায় ভুগছে, কোন কিছুতেই ঠিকমত মনযোগ দিতে পারে না। রাস্তায় লোকের ভীড় দেখলে আতংক লাগে, মনে হয় এই বুঝি খারাপ কিছু ঘটছে। একধরনের ট্রমা তৈরি হয়েছে সাবরিনার মনে। মানুষ যখন বড় কোন দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে যায় তখন তার একটা রিলিজ ম্যাকানিজমের দরকার হয় যেখানে সে এই ঘটনার কারণে তৈরি হওয়া নেতিবাচক অনুভূতি গুলো থেকে মুক্তি পেতে পারে। সাধরণত মানুষ তার কাছের মানুষদের সাথে অনুভূতি শেয়ার করে হালকা হয় অনেক সময় সাইকোলজিস্টদের কাছে যায় যদি মেডিকেল ট্রিটমেন্টের দরকার হয়। সাবরিনা এই দুইটার কোনটাই করতে পারছিল না। সোয়ারিঘাটের ঘটনা টা সাবরিনা সাদমান বা তার পরিবারের আর কার সাথে শেয়ার করতে পারছিল না কেননা কীভাবে সেই কন্সট্রাকশন সাইটের আলো আধারিতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সে পরিবারের সাথে শেয়ার করবে এটাই বুঝতে পারছিল না। বাকি সব হায়ার মিডলক্লাস কনজারভেটিভ ফ্যামিলির মত ওর পরিবারেও যৌনতার আলোচনা ট্যাবু। তাই এই ঘটনা শেয়ার করার জন্য মনের ভিতর এতদিনে সংস্কারের কারণে যে মেন্টাল ব্লক তৈরি হয়েছে সেটা অতিক্রম করার সাহস অর্জন করে উঠতে পারছিল না সাবরিনা। আবার সাদমান ওর হাজব্যান্ড, ভাল মানুষ কিন্তু সাদমানের সাথেও শেয়ার করে উঠতে পারছিল না। নিজেকে অনেকটা অসূচি মনে হচ্ছিল ঐ জানোয়ার গুলোর স্পর্শের কারণে। সাবরিনার ভাবছিল সাদমান কে ঘটনা টা শেয়ার করলে সাদমান ঠিক কীভাবে নিতে পারে। ওদের এতদিনের নিস্তরংগ প্ল্যানড লাইফে যে একটা ঝড় উঠতে পারে এই শংকা টা সাবরিনা কে বাধা দিচ্ছিল ঘটনা শেয়ার করতে। বাংগালী পুরুষ যত শিক্ষিত বা উদারমনা হোক না কেন তার বউয়ের শরীরে পরপুরুষ হাত দিলে সেটা যতই জোর করে হোক না কেন সেটা মেনে নিতে পারে না। তাই সাবরিনা সাদমানের সাথেও ঘটনা শেয়ার করতে পারছিল না।


অন্যদিকে অফিসে ছিল অন্য অবস্থা। সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর অফিসে সাবরিনা ছোটখাট হিরো হয়ে গিয়েছিল। গোডাউনের কর্মচারীদের মাধ্যমে নানা কান  হয়ে ঘটনা যখন সাবরিনাদের অফিসে পৌছে তখন তার বর্ণনা দাঁড়ায় অনেকটা এরকম যে, সাবরিনা নিজে পলিটিক্যাল ছেলেদের সামলেছে আর নিজের পরিচিত বড় নেতাদের ফোন করে ঘটনার মিটমাট করেছে। ফলে সাবরিনা কে বেকায়দায় ফেলতে কাজটা করা হলেও সাবরিনা ম্যানেজমেন্টের চোখে একটা প্লাস পয়েন্ট অর্জন করে ফেলেল। অফিসের এত প্রশংসার ভীড়ে কেউ অবশ্য জানল না সেই রাতের গোপন একটা অংশ। সাবরিনা, টিপু আর নাদিমের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা টা তাই সবার অগোচরে রয়ে গেল। অফিসে সামিরা ছাড়া বাকি কার সাথে সাবরিনার খুব একটা খাতির নেই কিন্তু সামিরাকেও ঘটনাটা পুরোটা বলত পারল না সাবরিনা। সামিরার নানা প্রশ্নের জবাবে খালি এইটুকু বলতে পারল সেই রাতে অনেক ভয় পেয়েছিল সাবরিনা এবং এখন লোকেদের ভীড় দেখলেই ওর আতংকবোধ হয় এই বুঝি আবার একটা সংঘর্ষ শুরু হবে। সামিরা সহানুভূতিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাল, বলল তুই দেখে এইটা সামলাতে পেরেছিস আমি হলে তো ভয়েই ওখানে থেকে পালিয়ে আসতাম। সাবরিনার মনের ভিতর চাপা কষ্ট আর বাড়তে থাকে। প্রতিবার যখন লোকে ওকে  হিরো ভেবে প্রশংসা করতে থাকে ওর মনে হতে থাকে টিপু নাদিম কীভাবে ওর শরীর নিয়ে খেলছিল আর প্রতিরোধহীন ভাবে কীভাবে সাবরিনা একটু একটু করে পরাজয় বরণ করে নিচ্ছিল। ভাগ্যিস সেদিন মাহফুজ এসেছিল। যতবার মাহফুজের কথা মনে পড়ছে সেইদিনের পর থেকে ততবার কৃতজ্ঞতায় মনটা ভরে যাচ্ছে। ঐদিনের আগের দুই সাপ্তাহ যে শীতল ব্যবহার করেছিল সে জন্য নিজেই লজ্জিত হয়ে পড়ছে নিজের কাছে। নিজের মনের ভিতর এখন যেন দুইটা স্বর কথা বলছে। একটা মাহফুজের প্রতি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়ছে আবার আরেকটা স্বর ভয় দেখাচ্ছে। এর আগের বার কোন কিছু ছাড়াই সাবরিনার স্বপ্নে আস্তানা গেড়েছিল মাহফুজ এইবার যদি একটু ছাড় পায় তাহলে কি হবে? ভয় দেখায় দ্বিতীয় স্বর। মাহফুজ কে অগ্রাহ্য করতে পারবে? বেশি কাছে আসতে দিলে নিজের ভিতরের সব বাধ ভেংগে যাবে না? কিন্তু প্রথম স্বরটা যেন দ্বিতীয় স্বর কে ছাপিয়ে জোরালো হয়ে উঠে। সাবরিনার মনে হয়ে ঠিক ঐ মূহুর্তে মাহফুজের উপস্থিতি যেন ঐশ্বরিক আদেশ, ঐশ্বরিক আদেশ কে উপেক্ষা করার শক্তি যে সাবরিনার নেই।


তাই মাহফুজের প্রতি সাবরিনার আচরণ বদলে যাচ্ছিল। মাঝখানের শীতল সময় টা বাদ দিয়ে মাহফুজের প্রতি সাবরিনার আচরণ আবার আগের মত নরমাল হয়ে দাড়াল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবরিনা যেন মাহফুজের প্রতি এক ধরনের মুগ্ধতা নিজের ভিতর আবিষ্কার করতে শুরু করল। এই মুগ্ধতা আগেও ছিল তবে সুক্ষ ভাবে তবে এখন যেন দিন কে দিন এটা বাড়ছে। এই মুগ্ধতা দেখে সাবরিনার ভিতরের একটা অংশ ওকে সতর্ক করতে থাকল, আগের বার যেমন মাহফুজের জন্য মনের সকল দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সেরকম করতে বলল। তবে মনের অন্য অংশটা এবার অনেক বেশি শক্তিশালী। এত বড় বিপদ থেকে বাচানোর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মনের নেতিবাচক অংশটাকে কোন জায়গা দখল করতে দিল না মাহফুজের সাপোর্টার অংশটা। সাবরিনার এই পরিবর্তন খালি যে সাবরিনা টের পাচ্ছিল তা না সামিরাও টের পেল একদিন। মাহফুজ আজকাল খালি অফিসে সাবরিনার কাজের জন্য আসে না, আর বেশ কয়েকজনের কিছু কাজের হেলপ করে ও। বিশেষ করে ডিস্ট্রিবিউশনের লোকদের সারাদেশের পলিটিক্যাল লিংক আপের কাজে সাহায্যের জন্য আসে। তাই সাপ্তাহে আজকাল দুই তিন সাবরিনারদের অফিসে মাহফুজের আসা হয় এবং আসলে অন্তত একবার সাবরিনার ফ্লোরে ঢু মেরে যায়। এরকম একদিন সাবরিনার ফ্লোরে আসার পর ঠিক হল নিচে সাবরিনারদের অফিস বিল্ডিং এর ঠিক অপজিটে একটা আইসক্রিম পার্লার আছে সেখানে এই গরমেে আইসক্রিম খাওয়া হবে। সামিরা সাথে ছিল তাই সেও সংগী হল দুই জনের। আইসক্রিম খাওয়ার সময় নানা বিষয়ে কথাবার্তা হল, হাসাহাসি হল। সাবরিনা খেয়াল করল মাহফুজের সেন্স অফ হিউমার ভাল। সামিরা যথেষ্ট কথায় দক্ষ, ওর সাথে কথায় টক্কর দিচ্ছে অনায়েসে। সাধারণ একটা ব্যাপার থেকে মজার  পর্যবেক্ষণ বের করছে। সাবরিনা এই কথায় যতটা না অংশ নিল তার থেকে বেশি দেখল, সামিরা আর মাহফুজের কথার টক্কর।  আইসক্রিম খাওয়া শেষে মাহফুজ ফিরে গেলে, সামিরা আর সাবরিনা অফিসের লিফটে যখন একা তখন সামিরা প্রশ্ন করল সাবরিনা, মাহফুজের সাথে তোর ব্যাপারটা কী? সাবরিনা বলল কিসের ব্যাপার? তুই জানিস ও আমাকে একটা প্রজেক্টে হেল্প করছে এই যা। সামিরা উত্তর দিল তুই যেভাবে আজকে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলি এটা একদম কলেজ গার্লরা তাদের স্যারের উপর ক্রাশ খেলে যেভাবে তাকিয়ে থাকে সেরকম। সাবরিনা অস্বীকার করল। সামিরা বলল যত তুই অস্বীকার করিস না কেন কিছু একটা আছে, সেটা যদি তুই টের না পাস তাহলে ভাল করে দেখ। এই রাস্তা কিন্তু ডেঞ্জারাস। তুই এতদিন যেভাবে চলেছিস, যা মেনেছিস সব কিছুর উলটা। আমি হলে এই ডেঞ্জারাস লাইফ হয়ত পছন্দ করতাম বিকজ আই লাইক টু লিভ ডেঞ্জারাসলি। কিন্তু তুই প্রথাগত জীবন ভালবাসিস। তাই যা করিস বুঝে করিস। সাবরিনা উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইল। সাবরিনা টের পাচ্ছে ওর ভিতর লিভিং ডেঞ্জারসলি অংশটা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। একদিকে কৃতজ্ঞতা আর অন্যদিকে মনের ভিতর অনেক দিনের লুকিয়ে রাখা গোপন বাসনা গুলো সব একসাথে হয়ে মাহফুজের প্রতি সাবরিনার দূর্বলতা যেন আর বাড়িয়ে দিচ্ছিল। সাবরিনার ভাল মেয়ের মত জীবন যাপন করলেও অনেকের মত এডভেঞ্জারের প্রতি, কনফিডেন্ট, চার্মিং লাইফ পার্টনারের জন্য একটা আকর্যণ সব সময় ছিল। বিয়ের আগে সব সময় নিজেকে সান্তনা দিয়েছে যে বিয়ের পর লাইফ পার্টনারের সাথে সব করবে। ওর লাইফ পার্টনার হবে ডমেনেটিং আবার একসাথে চার্মিং। অনেক টা ফিফটি শেডস অফ গ্রে এর ক্রিস্টিয়ানের মত। বাসার বাধায় জীবনে যা যা করা হয় নি সব করবে ওর হবু বরের সাথে।

তবে বিয়ের পর সাবরিনার সেই স্বপ্নে একটা ধাক্কা খায়। সাদমান যেন ওর আগের লাইফের একটা এক্সটেনশন। ভাল ছেলে, প্রমিজিং ক্যারিয়ার কিন্তু বড় বেশি প্রেডিক্টেবল। নিয়মের বাইরে কিছু করবার সাহস নেই। তাই মনের ভিতর থাকা সব গোপন বাসানা সাবরিনা যেন আবদ্ধ করে রেখেছিল মনের গহীনে। সেখানে মাহফুজ যেন একটা দমকা বাতাস। যেই বাতাসে সাবরিনা উড়ে যাবে সেটা যেন সাবরিনা নিজেই টের পেয়েছিল, তাই মনের দরজা বন্ধ করে রেখেছিল যাতে দমকা বাতাস ওকে উড়িয়ে  নিতে না পারে। সেখানে সোয়ারিঘাটের ঘটনায় সেই দরজা যেন আপনা আপনি খুলে গেছে, কৃতজ্ঞতায় যে দরজা খুলে দিয়েছিল সেই খোলা দরজা দিয়ে আসা বাতাস যেন আজকাল মনের ভিতর আবদ্ধ বাসনাদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সাবরিনা নিজেও জানে না এর পরিণতি কি। সাবরিনা জানে শি ইজ ওয়ান্স ইন হার লাইফ, ওয়ান্টস টু লিভ ডেঞ্জারাসলি। কোন কিছুর পরিণতি না ভেবে একবার খোলা হাওয়ায় ভাসতে চায় সাবরিনা আর মাহফুজ যেন সেই খোলা  হাওয়ার প্রতিনিধি।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (আপডেট ১২) - by কাদের - 25-04-2023, 11:48 AM



Users browsing this thread: Damphu-77, djikstra1991, rizu sopno, SecretLifeOf1122, 31 Guest(s)