Thread Rating:
  • 185 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩২ )


সাবরিনা আর মাহফুজ যখন ওদের ভিতরের নিজ নিজ মানসিক দ্বন্দ্ব নিয়ে ব্যস্ত চলুন তখন আমরা নজর একটু অন্যদিকে ঘুরাই। মাহফুজ আর সিনথিয়ার সম্পর্কের জন্য বাধা খালি সাবরিনা ছিল না, সাথে সিনথিয়ার ফুফু নুসাইবা এবং মা সাফিনাও এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিল। তাই মাহফুজে-সিনথিয়ার সম্পর্ক বিয়েতে রুপ দিতে গেলে নুসাইবা আর সাফিনার সম্মতিও প্রয়োজন। সাবরিনা সম্পর্কে যত সহজে খবর যোগাড় করে একটা লিংক স্থাপন করতে পেরেছিল, নুসাইবা আর সাফিনার ক্ষেত্রে সেখানে ব্যর্থ হয়েছিল মাহফুজ। তাই মাঝখানে দুই তিন মাস সাবরিনার পিছনে ব্যয় করছিল যাতে সাবরিনা কে রাজি করানো গেলে সাবরিনার মাধ্যমে নুসাইবা আর সাফিনা কে রাজি করানো যায়। এর মাঝে যখন সাবরিনা মাহফুজের সাথে শীতল ব্যবহার শুরু করল তখন মাহফুজ একটু সন্দিহান হয়ে পড়ল সাবরিনার মাধ্যমে ঠিক কতটুকু ওর মিশনে সফল হওয়া যাবে। মাহফুজ বুদ্ধিমান কৌশলী ছেলে। একটা বাধা আসলে পরিকল্পনা ছেড়ে ব্যর্থতা মেনে নেবার পাত্র সে নয়। তাই নুসাইবা আর সাফিনার কে কীভাবে রাজি করানো যায় এটা নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু করল।


প্রথমবার ব্যর্থ হবার পর নুসাইবার গুডবুকে ঢোকার সম্পর্কে ভিন্ন এপ্রোচ নেবার কথা ভাবল মাহফুজ। প্রফেশনালি নুসাইবা করিম বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি ডাইরেক্টর। রিসার্চ উইং এ কাজ করেন। ব্যাংকিং সেক্টরে যথেষ্ট উচ্চপদস্থ ব্যক্তি বলা যায়। বাইরে থেকে নেওয়া ডিগ্রি আছে। সেই সাথে সুন্দরী, সুশ্রী এবং রুচিশীল। নুসাইবার প্রেমের বিয়ে এবং প্রচন্ড জামাই অন্তপ্রাণ। বাচ্চা হয় নি এত বছরেও তাই খালি জামাই বউ এর সংসার। দুই জনেই দুই জন কে খুব ভালবাসে। সাবরিনার দেওয়া তথ্যমতে নুসাইবা ফুফু তার জামাইয়ের বিশাল ভক্ত। অতএব সিনথিয়ার ফুফা অর্থাৎ নুসাইবার জামাই এর গুডবুকে উঠতে পারলে সহজে নুসাইবার গুডবুকে ঢুকা যাবে। সিনথিয়া আর সাবরিনার ফুফা অর্থাৎ নুসাইবার জামাইয়ের নাম আরশাদ হোসেন। ভদ্রলোক ট্যাক্স ক্যাডারের লোক। বর্তমানে ট্যাক্স কমিশনার। যথেষ্ট উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা। পাচ ফুট ছয় ইঞ্চি লম্বা ভদ্রলোক। মধ্যপ্রদেশে একটু ভুড়ি গজিয়েছে। সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মত সব সময় ফিটফাট ড্রেসে থাকেন। কথাও বলেন যথেষ্ট নরম স্বরে। সিনথিয়ার ভাষ্যমতে তার ফুফা একদম মাটির মানুষ বরং নুসাইবার বেশ রাগী। ক্ষেপাটে রাগী যাকে বলে, কোন কারণে রাগলে রাগের মাথায় অনেক কিছু করতে পারে তবে সিনথিয়া ভাষায় ফুফুর মন খুব  নরম।


আরশাদ হোসেন ঢাকা কর অঞ্চল-৭ এ বসেন। সেগুনবাগিচায় অফিস। ঢাকার বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এই কর অঞ্চলের মাঝে পড়ে। তাই বোঝাই যায় এই জায়গায় পোস্টিং পেয়েছেন মানে আরশাদ সাহেব বেশ ভাল কানেক্টেড। মাহফুজ কে তার বাবা সরকারী অফিসারদের সাথে ডিল করার একটা বুদ্ধি দিয়েছিল। এই কয় বছর ব্যবসা করার সময় যতবার সরকারী অফিসে কোন অফিসারের সাথে ডিল করা লেগেছে ততবার এটা ব্যবহার করেছে এবং কোনবার এটা ব্যর্থ হয় নি। মাহফুজের বাবার মনে সরকারী অফিসারদের সবচেয়ে ভাল চিনে তাদের টাইপিস্ট বা কম্পিউটার অপারেটর, অফিসের পিয়ন আর গাড়ির ড্রাইভার। অফিসের ক্ষমতার স্ট্রাকচারে এই লোকগুলোর তেমন কোন দাম নেই। পান থেকে চুন খসলেই এরা ঝাড়ির উপর থাকে, অফিসারদের মন খারাপ থাকলে এদের ঝাড়ির উপর রাখে। বউয়ের সাথে ঝগড়া হলে প্রথম রাগটা এইসব লোকদের উপর দিয়ে ঝাড়ে। এক কথায় বললে অফিসারদের চোখে এরা অদৃশ্য। এদের কাজ অফিসারদের কাজ সহজ করা, সেবা করা। ঔপনিবেশিক আমলের আমলাতন্ত্রের কাঠামোর উপর দাঁড়ানো আমাদের সরকারী অফিস গুলোতে তাই দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর এই সরকারী কর্মচারীদের কোন ভ্যালু নেই। এই যে এরা অফিসারদের চোখে তুচ্ছ এটাই আবার এদের বড় শক্তি। এদের নিজেদের মধ্যে সংঘবন্ধ, অফিসের সবখানে এদের যাতায়ত আছে। অনেক সময় অফিসারা যা জানেন না এরা তা জানে খালি নিজেদের ভিতর তথ্য আদান প্রদানের কারণে। কম্পিউটার অপারেটররা অফিসের ফাইল গুলো টাইপ করে তাই তারা জানে কাগজের হিসাবে কোথায় কি হচ্ছে, পিয়ন জানে অফিসারের রুমে কে যাচ্ছে, কখন যাচ্ছে, কতক্ষণ যাচ্ছে। এমনকি অনেক সময় ভিতরে মিটিং এ কি আলোচনা হচ্ছে এটার খবরের সবচেয়ে ভাল সোর্স হচ্ছে এই পিয়ন। আর অফিসারের ব্যক্তিগত খবর সবচেয়ে ভাল দিতে পারে ড্রাইভার। অফিয়ার কই যাই, কোথায় যায়, কার সাথে দেখা করে এসব খবর সবচেয়ে ভাল দিতে পারে ড্রাইভার। মাহফুজের বাবার পরামর্শ ছিল যে অফিসারের সাথে ডিল করবা তার পিয়ন, ড্রাইভার বা টাইপিস্ট কাউকে হাত করে ভিতরের খবর আগে বের করতে। তাহলে ডিল করা অনেক ইজি হয়ে যায়। মাহফুজ ওর ব্যবসার জন্য যখনি কোন সরকারি অফিসে যেতে হয় তখনি সেই অফিসের এই পিয়ন, ড্রাইভার, টাইপিস্টদের সাথে খাতির জমায়। এদের পিছনে অল্প বিনিয়োগে যত তথ্য পাওয়া যায় অনেক সময় একজন অফিসারের কাছ থেকে তার অর্ধেক কথা বের করতে এর শতগুণ বেশি বিনিয়োগ করা লাগে।


মাহফুজ তাই খোজ খবর নেওয়া শুরু করল। ট্যাক্সের এক জুনিয়র অফিসারের সাথে পরিচয় হয়েছিল যে কিনা একটা তদবিরের জন্য মাসুদ চাচার কাছে এসেছিল। তাকে একদিন জিজ্ঞেস করতে বলল আরশাদ স্যার খুব ভাল মানুষ, সৎ মানুষ। আর দুই এক জায়গায় খোজ নিতেই মোটামুটি এক টেমপ্লেটের উত্তর পেল। ভাল, নিরীহ এবং সৎ মানুষ। মাহফুজ অবশ্য রাজনীতি করতে করতে একটা জিনিস এখন বুঝে গেছে যা দেখা যায় সব সময় তা সত্য নাও হতে পারে। মাহফুজের দরকার এমন কোন তথ্য যেটা সে কাজে লাগাতে পারে। অফিসের পিয়ন আর ড্রাইভারের কাছ থেকে খোজ বের করার তাই চেষ্টা করল। এইসব জিনিসে একটু সময় লাগে। সাধারণত অফিসার যদি বদমেজাজী, খারাপ লোক হয় তাহলে সহজে পিয়ন, ড্রাইভার থেকে খোজ  বের করা যায়। তবে আরশাদ সাহেবের প্রশংসা সম্ভবত সত্য তাই পিয়ন বা ড্রাইভার কার কাছ থেকে তেমন কিছু শোনা গেল না। বিশেষ করে ড্রাইভারের কাছ থেকে তো কিছুই শোনা গেল না। মাহফুজ সাধারণত এইসব কাজ সরাসরি নিজে করে না। অন্য কাউকে লাগায় তথ্য বের করার জন্য। প্রথমে কাজটা দিয়েছিল যে ছেলেটা ও বিশেষ কিছু নতুন বের করতে পারে নি। মেহেদী বলে একটা ছেলে আছে যে এইসব কথা বের করার কাজে ওস্তাদ। বিভিন্ন সরকারী অফিসে দালালি করা মেহেদীর কাজ। তাই মেহেদী কে ধরল আরশাদ সাহেবের খবর বের করে দিতে। কয়েকদিন পর মেহেদী যে খবর দিল সেটা আশাব্যঞ্জক না হতাশাজনক এটা মাহফুজ নিশ্চিত হতে পারল না। মেহেদীর তথ্য মতে আরশাদ সাহেব ভাল ব্যবহার করেন, মিষ্টিভাষী তবে একটা জায়গায় মেহেদী ডাউট দিল সেটা হল সততা। এই প্রথম মাহফুজ, আরশাদ সাহেব সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু শুনল। মাহফুজ জানতে চাইল মেহেদীর ডাউটের কারণ। মেহেদী বলল মাহফুজ ভাই আমি বহুদিন ধরে সরকারী অফিসে অফিসে দালালী করি। অফিসারদের খবর বের করে ডিল ইজি করা আমার কাজ। বিশ্বাস করেন আমার ধারণা কিছু একটা আছে। মাহফুজ সন্দহের কারণ স্পেসিফিক্যালি জানতে চাইলে মেহেদী বলল আরশাদ সাহেবের পিয়ন আর ড্রাইভার দুইটাই বড় ভক্ত তাদের বসের। তবে পিয়ন টা অত চালাক না। তার সাথে গল্প করার সময় সে যেটা বলল টাকা পয়সাওয়ালা কিছু লোকের ট্যাক্সের ফাইল নাকি কোন ঝামেলা হলে সরাসরি আরশাদ সাহেব ডিল করেন। পিয়ন বলতে চাচ্ছিল না তবে একটু চাপাচাপিতে যেমন বলল পিজিয়ন গ্রুপের লাস্ট ইয়ার কর্পোরেট ট্যাক্স আর ইনকাম ট্যাক্স দুইটাতেই কোন একটা ঝামেলা ছিল। ফাইল কল করে পিজিয়ন গ্রুপের একাউন্ট দেখার কথা হয়েছিল তখন নাকি পিজিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান এসে দুইদিন মিটীং করল দরজা বন্ধ করে তখন সব ভুল ঠিক হয়ে গেল আর কোন ফাইল কল করতে হয় নায়। এরকম মিটিং মাঝে মাঝে হয় তবে খুব কম এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই মিটিং যারা করে তারা টাকাওয়ালা লোকজন। খালি কোটিপতি না শত কোটি টাকার মালিক এমন লোকজন। মাহফুজ বলল এইটা দিয়ে কি বুঝা যায় তাহলে। মেহেদী বলল মাহফুজ ভাই আমার একটা থিউরি আছে এই ব্যাপারে। আপনি সরকারি অফিসে বেশিরভাগ সময় দুই রকম ঘুষখোর পাবেন। ছোটলোক ঘুষখোর যে পারলে দশটাকা পর্যন্ত ঘুষখাবে, আর নরমাল ঘুষখোর যারা একটা নির্দিষ্ট রেটে ঘুষ খায় এবং সাবধানতা অবলম্বন করে যাতে তাদের ঘুষের গল্প বেশিদূর না গড়ায়। এর বাইরে একদল আছে রেয়ার গ্রুপ, এরা সবচেয়ে চালাক দল। সাধারণত বেশ হাই র‍্যাংকিং অফিসারদের মধ্যে এদের পাবেন। এরা ঘুষ খায় বছরে এক দুইবার তাও খায় এমন কার কাছ থেকে যে থাকে অনেক মোটা অংকের টাকা দিতে পারবে যাতে একদানে অনেকদিন চলে। অনেক সময় সরাসরি ঘুষও নেয় না এই অফিসাররা বিদেশ ভ্রমণ বা কম দামে ফ্লাট, জমি কেনার সুযোগ নেয়। এইসব কারণে এদের পেপার ট্রেইল নায়। খুব কম ঘুষ খায় এবং সফশটিকেট ভাবে খায় বলে অন্যরা প্রায় জানে না। এছাড়া অন্য আর সব ক্ষেত্রে এরা সৎ, দক্ষ। ফলে কমন পারসেপশন এদের ভাল অফিসার ভাবে। আমার ধারণা এই আরশাদ সাহেব এই ধরণের রেয়ার মাল। তবে এর বাইরে আর কোন খবর বের করতে পারলাম না।


মেহেদীর কথা শুনে মাহফুজ একটু দোটানায় পড়ে গেল। আরশাদ সাহেব সম্পর্কে এর আগে যত তথ্য যোগাড় করেছে এই তথ্য তার থেকে ভিন্ন, খালি ভিন্ন নয় বলা যায় উলটো। তবে এই তথ্য ওর মূল উদ্দ্যেশ সাধনে কি কাজে লাগবে ও বুঝে উঠতে পারছে না। মেহেদী প্রতি কাজের জন্য একটা ফি নেয়। এই ফি দিয়ে বাড়ির পথে আগালো মাহফুজ। যাওয়ার পথে রাস্তায় ভাবতে থাকল এই ইনফরমেশন কি কাজে দিবে। কেননা তথ্যটা অসম্পূর্ণ। শুধুমাত্র মেহেদীর একটা থিওরী, অনুমান। তবে এও ঠিক অফিসিয়াল ইনফরমেশন কালেক্ট করার জন্য মেহেদি ঢাকা শহরের সেরা লোক। সচিবালয় থেকে মেয়র অফিস সবখানে তথ্য বের করতে মেহেদীর জুড়ি মেলা ভার। ওর অভিজ্ঞতা এই লাইনে কম না। তাই মেহেদীর থিউরী টা পুরো উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এই তথ্য নিয়ে কোন কাজেও নামা যাবে না। সিনথিয়া কে বললে হেসে উড়িয়ে দিবে বলবে প্রমাণ কই। আরশাদ সাহেবের কাছেও এই তথ্য দিয়ে কোন লেভারেজ পাওয়া যাবে না যতক্ষণ না প্রমাণ আছে। ওর এইসময় সোলায়মান শেখ বলে এক লোকের কথা। ভদ্রলোক ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর। ঢাকায় পোস্টিং। মাসুদ চাচার খুব খাস লোক। মাসুদ চাচা ঢাকা মহানগর দক্ষিণে পার্টি সেক্রেটারি খালি পলিটিক্স করে হন নাই, উনি জানেন কখন কোন চাল দিতে হবে। আর সঠিক সময়জ্ঞান এর কারণ উনার কাছে সঠিক ইনফরমেশন বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক বেশি আছে। চাচার সাথে ঘুরে ঘুরে এই কয়দিনে একটা জিনিস বুঝেছে সঠিক ইনফরমেশনের গুরুত্ব কত বেশি। মাসুদ চাচার ইনফো বের করার অনেক লোক আছে, টেকনিক আছে। এরকম একজন হল এই সোলায়মান শেখ। সোলায়মান শেখ ডিভির ইন্সপেক্টর এবং দক্ষ ইন্সপেক্টর। চাচার যখন কোন ব্যক্তি সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত তথ্য যোগাড়ের দরকার হয় তখন এই সোলায়মান শেখের ডাক পড়ে। পুলিশে শেখা সব টেকনিক দিয়ে এই লোক এমন সব তথ্য বের করে আনে যেটা হয়ত আর বাকি দশজনের চোখেই পড়ে নি। তাছাড়া পুলিশে থাকার কারণে এমন সব জিনিসে এই লোকের এক্সেস থাকে যেগুলা অন্যদের থাকে না ফলে সেখানেও এই লোকের এডভান্টেজ থাকে।

সোলায়মান শেখের সাথে তার পরের দিন ঘটনাক্রমে মাসুদ চাচার বাসায় দেখা হয়ে গেল। মাহফুজ কে দেখে বলল কি মাহফুজ ভাই কি খবর? মাহফুজ বলল এই যে ভাই আছি ভাল তবে একটা সাহায্য দরকার। সোলায়মান শেখ বলল, বলেন আপনার কি খেদমত করতে পারি। মাহফুজ বলল ভাই লজ্জা দিয়েন না, তবে আসলেই একটা সাহায্য দরকার। এরপর মাহফুজ বুঝিয়ে বলল আরশাদ সাহেব ঘুষ খান কিনা বা খেলে সেই টাকা কি করেন এই তথ্য ওর দরকার। সব শুনে সোলায়মান শেখ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল, এরপর প্রশ্ন করল আপনার এই তথ্য দিয়ে কি দরকার। মাহফুজ বলল একটা ব্যবসার কাজ আছে ঐ অফিসে, উনার উইক পয়েন্ট জানা থাকলে ভাল। উত্তর শুনে সোলায়মান শেখ আবার কিছুক্ষণ ভাবল। বলল আমি দশ মিনিট পর এখান থেকে বের হব এরপর পাশের গলিতে একটা ছোট ভাতের হোটেল আছে আমি ঐখানে যাব। আপনি আমি বের হবার পাচ মিনিট পর বের হবেন। এরপর ঐ হোটেলে আসবেন। এরপর মাহফুজ কে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সোলায়মান শেখ সামনে থেকে সরে গেল। ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী একটু পর ঐ ভাতের হোটেলের ভিতর ঢুকে দেখে একদম শেষ মাথায় একটা টেবিলে  বসে আছে সোলায়মান শেখ। দোকানের কাউন্টারে ক্যাশিয়ার বসে আছে, বিকালের দিকে এই সময় ভাতের হোটেলে কাস্টমার থাকে না। দোকানের সার্ভাররা বসে একটা টেবিলে বিশ্রাম নিচ্ছে সন্ধায়র পর যে ভীড় শুরু হতে তার আগে। অল্প জায়গায় বেশ অনেকগুলা টেবিল সেট করা। মাহফুজ গিয়ে সোলায়মান শেখের টেবিলে বসতেই সোলায়মান শেখ বলল এই হোটেল টা বিকালের এই সময় ফ্রি থাকে তাই এখানে আসতে বললাম, নিরিবিলিতে কথা বলা যাবে। এইবার ডিটেইলস বলেন। মাহফুজ বলল ওর ব্যবসার একটা কাজ আছে এই অফিসে ট্যাক্স নিয়ে, আর ফাইলটা দেখবে আরশাদ সাহেব তাই তার আরশাদ সাহেব সম্পর্কে খোজ দরকার। তাই আরশাদ সাহেব ঘুষ খায় কিনা আর খেলেও এছারা এমন কিছু করে কিনা যেটা জানলে সুবিধা হতে পারে। সোলায়মান শেখ কথা শুনতে শুনতে চুলে আংগুল দিয়ে চিড়ুনির মত আচড়াচ্ছিল। মাহফুজ চুপ করলে বলল দেখেন আমি যারতার কাজ করি না। বিশ্বস্ততার একটা ব্যাপার আছে। আপনি মাসুদ ভাইয়ের সাথে কাজ করেন আর সবচেয়ে বড় কথা একসময় আমি যখন পুলিশে নতুন ঢুকছি তখন আপনার নানা আমাকে একটা তদবিরে হেল্প করছিল তাই আমি এই কাজটা করব তবে এর খরচ আছে। আপনাকে দুই লক্ষ টাকা মিনিমাম দিতে হবে যদি পরে আর খরচ হয় তাহলে আর দিতে হবে। এই কাজে দুই লক্ষ লাগবে শুনে মাহফুজ একটু চমকে গেল। সোলায়মান শেখের অভিজ্ঞ চোখে এটা এড়াল না, বলল দেখেন এইসব কাজ রিস্কি। সরকারি ফার্স্ট ক্লাস একজন অফিসার, ট্যাক্সের কমিশনার তার পিছনে আপনি লোক লাগাবেন খোজ বের করার জন্য এর খরচ তো  হবেই, তার উপর খোজ বের করার জন্য কয়েক জায়গায় মালপানি ঢালতে হইতে পারে তার খরচ আছে। আর আমার রিস্কের একটা ব্যাপার আছে। আপনি খালি আপনার নানার জন্য ডিসকাউন্ট পাচ্ছেন। মাহফুজ কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করল। খোজ বের করার জন্য মাহফুজের সার্কেলে সোলায়মান শেখ সবচেয়ে উপযুক্ত লোক। দুই লক্ষ টাকা অনেক টাকা তবে যদি কোন দরকারী ইনফরমেশন পাওয়া যায় তাহলে ভাল নাহলে ধরে নিতে হবে যে এটা একটা ব্যবসার লস এডভেঞ্চার। মাঝে মাঝে রিস্ক না নিলে দাও মারা যায় না। তাই মাহফুজ বলল ওকে, আমি রাজি। সোলায়মান শেখ বলল আমাকে দুই, তিন সাপ্তাহ সময় দেন দেখি কি ইনফরমেশন বের করতে পারি। তবে যা দিব সব সলিড খবর দিব এইটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন। মাহফুজ মনে মনে খালি দোয়া করল দুই লক্ষ টাকা যেন মাঠে মারা না পরে। অবশ্য মাহফুজের তখনো জানার কথা না এই দুই লক্ষ টাকার ইনভেস্টমেন্ট ওর জীবনের সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ হয়ে উঠতে যাচ্ছে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট) - by কাদের - 16-04-2023, 11:21 AM



Users browsing this thread: 7 Guest(s)