Thread Rating:
  • 179 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩১ )
আপডেট ১০




গত রাতের পর থেকে সাবরিনার মনে ঝড় চলছে। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর প্রথমে ফ্রেশ লাগছিল অনেকদিন পর। মনে হচ্ছিল শরীরের সব জড়তা বুঝি এক রাতের ঘুমেই কেটে গেছে। মন প্রাণ সব কিছুতেই একটা ফুরফুরে ভাব। তবে এই ফুরফুরে ভাবটা বেশিক্ষণ রইলো না। আজকে সকালে সাদমানের ঢাকার বাইরে যাবার কথা। ভোরেই বের হয়েছে। সাবরিনা ঘুমে দেখে হয়ত ডাকে নি। তাই ঘুম থেকে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে বসে মোবাইল স্ক্রল করতে করতে সাদমানের ফোন এল। ফ্লাইট ছাড়বে একটু পর। তার আগে কল দিয়েছে। সাবরিনা জিজ্ঞেস করল কখন বের হয়েছে। সাদমান উত্তর দিলে সকাল ছয়টার আগেই। সাবরিনা বলল জাগাও নি কেন? সাদমান বলল এত সুন্দর করে ঘুমিয়ে ছিলে দেখে আর জাগাতে ইচ্ছা করে নি। উত্তর শুনে সাবরিনা একটু থমকে গেল। এই সময় ফোনে সাদমানের ফ্লাইটের যাত্রীদের বোর্ডিঙ্গের ডাক শোনা গেল। সাদমান বলল এখন ফোন রাখি। প্লেন থেকে নামলে কল দিব। ফোন কাটার আগে শুধু বলল আই লাভ ইউ। সাদমানের আই লাভ ইউ শুনে সাবরিনার হঠাত করে সব কিছু যেন উলটে গেল। সাদমান বড় বেশি গতানুগতিক। দূরে কোথাও গেলে ফোন দিবে অথবা টেক্সট করবে সময় করে। সাদমানের গলায় আবেগ থাকে না বড় বেশি। সব কিছু প্রেডিক্টেবল। অন্য সময় যাবার সময় বলে যায় আই লাভ ইউ বা আই উইল মিস ইউ। বড় বেশি গতানুগতিক বাধাধরা যেন। স্ত্রী কে ভালবাসতে হয় বলে বাসছে। কিন্তু আজকের এই আই লাভ ইউ যেন সাবরিনার ঠিক বুকের মাঝে গিয়ে লাগল। ফোন কাটার শব্দের সাথে সাথে গতকালের রাতের কথা মনে পড়ল সাবরিনার। সংগে সংগে একটা অপরাধবোধ মনের ভিতর কাজ করা শুরু করল। নাস্তা শেষে রেডি হতে হতে যত ভাবতে লাগল তত ওর মনে হতে গিল্ট ফিলিংসটা যেন মনের ভিতর আর বাড়তে থাকল। সাদমান নিয়ে সাবরিনার অভিযোগ আছে। সাদমানের কাছে সংসার করাটাও একটা অফিস করার মত ব্যাপার। সব সময় ইমেজ সচেতন। ভালবাসার উচ্ছাস যেন কম। আই লাভ ইউ বলছে বা আই মিস ইউ বলছে কিন্তু সেখানে প্রাণটা যেন নেই। তবে এটা অস্বীকার করবার জো নেই যে সাদমান ভাল ছেলে। অন্য অনেক ছেলের মত খারাপ গুণ গুলো নেই। খালি ওয়ার্কহোলিক অবশ্য সাবরিনাও একই দোষে দুষ্ট। আর সাদমান কে তার এইসব গুণের জন্য সাবরিনা এক সময় পছন্দ করেছিল তা ও অস্বীকার করতে পারে না। মিস্টার প্রেডিক্টিবল।

সাবরিনার খারাপ লাগাটা বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। মনে হতে থাকে যেন ও যেন ওর নিজের এতদিনের সব ভ্যালুস নিজেই ছুড়ে ফেলেছে। মাস্টারবেশন করবার পর চরম মূহুর্ত কেটে গেলে একটা অবসন্নতা এসে ধরে, পাপবোধ। সেটাই যেন শতগুণে ফিরে এসে জেকে ধরেছে সাবরিনা কে। এটা খালি মাস্টারবেশন নয়। গতকাল রাতে ফ্যান্টাসিতে সাবরিনা যেন ওর মন প্রাণ সব সপে দিয়েছিল পরপুরুষের হাতে। এতদিনের ভ্যালুস, বিশ্বাস সব যেন নিজেই কুঠারাঘাতে কেটে ফেলেছে এক রাতের ফ্যান্টাসিতে। মাস্টারবেশন যে সাবরিনা করে না তা না। বিয়ের পরেও করে মাঝে মাঝে। সাদমানের কাছে সেক্সুয়াল ইন্টিমিসিও যেন খানিকটা রেগুলার রুটিন ওয়ার্ক। প্রতি সাপ্তাহে একবার। রুটিন ধরে চুমু খাও, দুধে হাত দাও, নিচে হাত দাও, পেনিট্রেশন এবং শেষে ঘুম দাও। সাবরিনা এর থেকেও বেশি চায় ওর কাছ থেকে। কিন্তু ওর এত দিনের সংস্কার ভ্যালুস ওকে এইসব নিয়ে বেশি কথা বলতে যেন দেয় না। বিয়ের আগে ও সব সময় শারীরিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলেছে। উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, ঢাকার এলিট স্কুল কলেজ পেরিয়ে বেস্ট ম্যানেজমেন্ট স্কুলে অর্নাস করেছে। যে কোন বিচারে সুন্দরী, আকর্ষনীয়। ঢাকার এলিট উচ্চ মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ভিতর দুইটা ট্রেন্ড বেশি দেখা যায়। একখানে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ভ্যালুসে গা ভাসিয়ে দেওয়া আবার আরেকদল দেশীয় মূল্যবোধ ধরে রেখে পাশ্চত্যের যা যা সুযোগ ভ্যালুস গ্রহণ করা যায় ততটুকু করা। সাবরিনাদের পরিবার দ্বিতীয় দলে। স্কুল কলেজে বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন পার্টিতে যাওয়া হালকা স্মোক বা ড্রিংক এইসব সাবরিনা করেছে। কিন্তু শারীরিক সম্পর্ক ছিল ওর আল্টিমেট ট্যাবু লাইন। এটা কখনোই ক্রস করা হয় নি। ক্রস করার ইচ্ছা যে হয় নি তা না বরং অনেকবার হয়েছে। প্রতিবার পরিবারের সম্মান, মূল্যবোধ আর সব সময় গুর্ড গার্ল থাকার যে তাড়না সেটা ওর লাইন ক্রস করার ক্ষেত্রে ওকে থামিয়েছে। আর বিয়ের আগে অনেকবার অনেক কে নিয়ে ফ্যান্টাসি করেছে তবে বিয়ের পর আসলে তেমন না। ওর বিয়ে আর চাকরি প্রায় সমসাময়িক সময়ে শুরু হয়েছে। সাবরিনা ফোকাসড, ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেড আর ওয়ার্কহোলিক। তাই এই কয় বছরে চাকরির সিড়ি বেড়ে উপরে উঠতে উঠতে এইসব আড়ালে পরে গেছে। আর যা চাহিদা হত সেটাও সাদমানের সাথে সাপ্তাহিক সংগে মিটে যেত। এরপর যা বাকি থাকত সেটা মাঝে মাঝে সাদমান ঘুমিয়ে গেলে মাস্টারবেশন বা কখনো  কখনো গোসলের সময় ফিংগারিং কাটিয়ে দিত। এটা ঠিক সাবরিনার চাওয়া ফ্যান্টাসি কিছু তেমন পূরণ হচ্ছিল না কিন্তু এর মানে এই নয় যে সাবরিনা বাইরে কোথাও বিকল্প খুজছিল। সাবরিনার খালি মনে হয় সাদমান যদি আরেকটু এগ্রেসিভ হত, আরেকটু প্রোএক্টিভ হত ওদের লাভ মেকিং এর সময় তাহলে বুঝি বাকি হতাশা কেটে যেত। বাইরে যতই স্ট্রং হোক সাবরিনা ভিতরে ওর একটা নরম মন আছে। ও চায় ওকে একটু প্যাম্পার করুক, কখনো শাসন করুক ছোট খুকির মত। এমন কার  হাতে ও নিজেকে ছেড়ে দিয়ে নির্ভার হতে চায় যেখানে ওর প্রতিটা ডিসিশন নিয়ে চিন্তা করতে হবে। কখনো কখনো অন্য কার উপর সব ছেড়ে নির্ভার হতে মন চায়। তাই বাইরে যতই ডমিনেটিং হোক বেডরুমে সাবরিনা চায় কর্তৃত্বটা পার্টনার করুক। কিন্তু সাদমান টু মাচ অফ এ জেন্টেলম্যান এবং এরজন্য যতটুকু প্যাশন দরকার সেটাই বুঝি ওর নেই।






মাহফুজের মন বিকাল থেকেই খারাপ। গত কয়দিনে সাবরিনার সাথে অফিসের কাজে হেল্প করার জন্য বেশ কয়বার ঘোরাঘুরি করতে হয়েছে। এর মাঝে মনে হচ্ছিল আস্তে আস্তে সবারিনা কে যেন বুঝতে পারছে। অফিসের কোল্ড বিচ, সিনথিয়ার বলা রাগী সব যেন মনে হচ্ছিল ভুল। প্রথম দেখায় মনে হবে এইসব তবে মিশলে বুঝা যায় এইসব বুঝি ভুল। টুকটাক অনেক কথাই হচ্ছিল এই কয়দিন। মাহফুজের মনে হচ্ছিল একটা ওপেনিং বুঝি পাওয়া যাচ্ছে। আর সিনথিয়ার সাথে মাহফুজের সম্পর্কের ব্যাপারটা যেহেতু নির্ভর করছে ওর ইমেজের উপর তাই সেই দিকটায় নজর ছিল। বই তেমন না পড়লেই মুভি দেখে প্রচুর আর সিনথিয়া থেকে জানে যে সাবরিনাও সিনেমা দেখতে ভালবাসে। একদিন সিনেমা নিয়ে পর্যন্ত কথা হল। সাবরিনা কে ইম্প্রেস করার জন্য ভারী ভারী সব সিনেমার নাম বলল। মনে হল সাবরিনা কিছুটা অবাক হয়েছে। মাহফুজ জানে সাবরিনা পলিটিক্স করা ছেলেদের ভাল চোখে দেখে না, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। সেখানে ও এমন সিনেমা দেখে যেনে একটু অবাক হবে সেটাই স্বাভাবিক। আর নানা কাজে হেল্প করে ইমেজও বাড়িয়ে নিচ্ছিল। তাই আজকের ব্যবহারটায় মাহফুজ বেশ অবাক হয়েছে।


বিকালের দিকে সাবরিনাদের অফিসে গেছিল একটা কাজে। ভাবল এসেছি যখন সাবরিনার সাথে দেখা করে যাই। সাবরিনার টেবিলের সামনে গিয়ে হাই করতে একটা শীতল অভ্যর্থনা পেল। যেন দেখতে পায় নি এমন ভাবে উত্তর দিল হ্যালো। খুব কাট কাট উত্তর। মাহফুজ থমকে গেল। কোন ভুল করল কিনা ভেবে দেখল কিছুক্ষণ। কিছুই পেল না। কাজের কথা তুলতে সাবরিনা একটু স্বাভাবিক হল তবে কথা এর বাইরে নিতে গেলেই একদম কাট কাট উত্তর। কাজের কথাও ল্যাপটপে টাইপ করতে করতে এমন ভাবে লিখছে যেন সামনে কোন মানুষ নেই। মাহফুজের একটু অপমান বোধ হল। সরকারী দলের যুব সংগঠনের ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও, সারাদিন কতশত ছেলে তার সাথে একটু কথা বলার অপেক্ষায় থাকে। এমনকি বড় নেতা এমপিরাও ডেকে কাছে  বসায়, ভাল করে কথা বলে। এভাবে হাওয়ার মত উড়িয়ে দেয় না। অফিস পার্টিতে শোনা কথা গুলা মাথায় আসে, কাছে টানবে তবে ঘেষতে দিবে না। কোল্ড বিচ। সিনথিয়ার কথাও মাথায় আসে। সিনথিয়া ওর বোন কে ভালবাসে নো ডাউট কিন্তু সাবরিনা কে নিয়ে একটা ক্ষোভ ওর ভিতরে আছে। বাবা মায়ের আদর্শ সন্তান সাবরিনা। একদম ছোটবেলা থেকেই সব সময় সাবরিনার সাথে তুলনা দেখে দেখে বড় হয়েছে সিনথিয়া। অন্য যে কোন পরিবারে আদর্শ সন্তান হতে পারত সিনথিয়া কিন্তু ওদের পরিবারে আছে সাবরিনা। এই ব্যাপারে আমি অবশ্য যতটা সাবরিনা কে দোষ দেই তার থেকে অনেক বেশি দোষ সাবরিনা-সিনথিয়ার মা-বাবার। ভাল মেয়ে, ভাল ছাত্রী হওয়ার পরেও সব সময় আর ভাল হওয়ার একটা তাড়া থাকত সিনথিয়ার পিছনে ওর বাবা-মায়ের কাছ থেকে। আর সাবরিনা ছোটকাল থেকেই পরিবারের মনযোগের কেন্দ্রবিন্দু থাকতে থাকতে ওর ভিতর একটা এনটাইটেলমেন্ট গড়ে উঠছিল। এই এনটাইলমেন্টের সাথে সাথে গড়ে উঠেছিল একটা মুড সুইং টেন্ডেন্সি। মন মেজাজের  উপর নির্ভর করে মানুষের সাথে ব্যবহার করা বিশেষ করে যারা সাবরিনার থেকে নিচে। বিশেষ করে সিনথিয়া এই মুড সুইং ব্যবহারের বড় শিকার হত। সিনথিয়া ওর বাবা-মা বা বড় কার সাথে এই ব্যবহার এড়িয়ে যেত তাই সিনথিয়ার অভিযোগ এই ব্যাপারে কোন পাত্তা পেত না। তাই ভালবাসার সাথে সাথে বোনের উপর সিনথিয়ার একটা ক্ষোভ ছিল। মাহফুজ কে এইসব ব্যাপারে বললে মাহফুজ প্রায়ই এইসব কে দুই বোনের মাঝে জেলাসি বলে ভাবত। আজকের এই  ব্যাপারের পর মাহফুজের মনে হচ্ছে সিনথিয়ার কথা বুঝি সত্যি। কোল্ড এরোগেন্ট বিচ।




সাবরিনার মনের ভিতরের দন্দ্বটা আর বাড়ছে। মাস্টারবেশনের পরের গিল্ট থেকে যে দ্বন্দ্বের শুরু এখন সেখানে আর নানা প্রশ্ন এসে ভীড় করেছে। সাবরিনা নিজেই সিউর না নিজের প্রতিক্রিয়া নিয়ে। আজকে অফিসে বিকাল বেলা মাহফুজ সাহেব যখন আসল তখন যেন সাবরিনার ভিতরের দ্বন্দ্বটাই বের হয়ে আসল। ল্যাপটপে কাজ করার সময় চোখ তুলে তাকাতেই দেখল মাহফুজ হেটে আসছে। লাল পাঞ্জাবী আর জিন্স। লম্বা শরীরে মানিয়ে গেছে। চোখ ফেরাতে কয়েক সেকেন্ড লাগল। আসার পথে অন্য আরেক কলিগের সাথে কুশল বিনিময় যখন করছে তখন আবার আড়চোখে তাকিয়ে থাকল সাবরিনা। ছেলেটার মধ্যে কিছু একটা ব্যাপার আছে। দারুণ কনফিডেন্স। এই অফিসে আসছে মাত্র কয়েক সাপ্তাহ এমনকি এই অফিসে চাকরি করে এমনও না কিন্তু হাটা, কথা বলায় এমন একটা কনফিডেন্স যেন এখানেই আসছে বছরের পর বছর। কি সুন্দর করে হাসতে হাসতে কথা বলছে মামুন ভাইয়ের সাথে। যেন প্রতিদিন দেখা হয় কথা হয়। সাবরিনার হিংসা হয়। সবাই ওকে ভাবে অনেক কনফিডেন্ট কিন্তু সাবরিনা জানে ওর ভিতর একটা ইনসিকিওর মন আছে। কনফিডেন্স কিভাবে ফেক করতে হয় এটা এত বছরে সাবরিনা শিখে ফেলেছে। তাই সহজে কেউ ধরতে পারে না। তবে মাহফুজের স্ট্যান্স দেখলেই বোঝা যায় এটা ফেক কনফিডেন্স না। সহজাত একটা ব্যাপার। কোন কোন হিংসার ভিতর একটা আকর্ষণ আছে। মাহফুজের এই কনফিডেন্সটা যেমন। এত সহজাত সপ্রতিভ মানুষ দেখলে হিংসা হয় আবার তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা হয়। দেখতে দেখতে ভিতরে একটা মুগদ্ধতা জাগে। তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাত করে মনে হয় কে যেন ওকে খেয়াল করছে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতেই দেখে সামিরা ওর ডেস্ক থেকে সাবরিনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে। সাবরিনা লাল হয়ে উঠে। নিচে তাকিয়ে ল্যাপটপে কাজ করতে থাকে। এর মাঝে মাহফুজ সাহেব এসে সামনে বসে টুকিটাকি কথা বলতে থাকে। ঠিক সেই সময় মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। স্ক্রিনে সামিরার  নাম। মেসেজ পাঠিয়েছে- I see you. সাবরিনার এক সাথে অস্বস্তি, রাগ, লজ্জা সব ভর করে। এইসময় মাহফুজে প্রশ্ন করে আজকে দিনটা কেমন গেল ম্যাডাম। উত্তর দেওয়ার জন্য ঘাড় তুলে তাকাতেই সামনে সামিরার মুচকি হাসি দেখতে পেল সাবরিনা। রাগ যেন আর বেড়ে গেল। আর কোথাও যাওয়ার যায়গা না পেয়ে রাগটা যেন মাহফুজের উপর উগলে দিতে ইচ্ছা হল। রাগ চেপে সাবরিনা বলল এই তো চলছে। এর পর একের পর এক অর্থহীন প্রশ্ন করে চলছে। এর মধ্যে টুং করে আবার মেসেজের শব্দ। মোবাইল চেক করতেই সামিরার আরেকটা মেসজ- খুব আলাপ হচ্ছে দেখি। সাবরিনার ভিতরের রাগটা যেন ফেটে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। মাহফুজের প্রশ্ন গুলার উত্তর হ্যা হু দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাগ চেপে। স্ক্রিনের দিকে অর্থহীন ভাবে তাকিয়ে আছে। কোন কাজ হচ্ছে না। এক সময় থাকতে না পেরে সাবরিনা বলল ঠিকাছে মাহফুজ সাহেব, তিন দিন পর আমাদের যে ভিজিট আছে তখন দেখা হবে। সাবরিনার এমন উত্তরে মাহফুজের মত কনফিডেন্ট মানুষও যে অপ্রস্তুত হয়ে গেছে সেটা সাবরিনা টের পায়। মুখ টা যেন একটু লাল হয় মাহফুজের। ওকে দেখা হবে বলে উঠে পড়ে মাহফুজ। প্রথমে একটু শান্তি লাগে। এরপর যেন আবার রাগ আসতে থাকে। কার রাগ কার উপর দেখাল সাবরিনা। সামিরার দিকে তাকায়। ল্যাপটপে কি যেন একটা কাজ মনযোগ দিয়ে করছে সামিরা। আমার কাজ নষ্ট করে এখন নিজের কাজ করা হচ্ছে। রাগ হয় সাবরিনার। মাহফুজের উপর একটু মায়াও হয়। ঠিক সে সময় গতকাল রাতের দৃশ্য গুলো মাথায় আবার উঠে আসে। দারুণ একটা অস্বস্তি আবার ভর করে সাবরিনার উপর। সকালে সাদমানের মেসেজের পর যে গিল্ট ফিলিংস্টা হয়েছিল সেটা যেন আবার ফিরে আসে। সাবরিনার জগতে সাদাকাল ভাগ করা ইজি। ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের কাছে শিখেছে খারাপ সব সময় খারাপ আর ভাল সব সময় ভাল। অনেক খারাপ জিনিসের প্রলোভন থেকে  নিজেকে বাচিয়ে রেখেছে সব সময়। হালকা দুই একটা মিথ্যা বলা বা বন্ধুদের সাথে দুই একবার ড্রিংক করা বাদ দিলে সাবরিনার জীবনের ফাইলটা প্রায় ক্লিন। এই নিয়ে নিজের উপর অনেক গর্ব নিজের। সবাই যে বলে সাবরিনা অন্যদের দিকে একটু নিচু চোখে তাকায় সেটার উৎস বংশ পরিচয়, শিক্ষা বা অন্য কিছু না। সাবরিনা জানে অন্যদের সাথে মিশার কিছুদিনের মাঝেই সে তাদের ভিতরের কাল অংশটা দেখতে পারে। হয়ত লোক টা খারাপ না কিন্তু এই যে মন্দ জিনিসের প্রলোভনে পরাজিত হওয়া মানুষ এদের দেখলে সাবরিনার সব সময় নিজেকে সুপিরিয় মনে হয়। আজকে ওর নিজের এই ধারণাটা নিয়ে নিজেই বড় ধাক্কা খেয়েছে সাবরিনা। ফ্যান্টাসি আগেও করেছে। বিয়ের আগে। বিয়ের পর এই প্রথম।

সাবরিনা অফিস শেষে বাসায় এসেও সেই একই দ্বন্দে অস্থির হতে থাকে। অন্যদিন হলে বাসায় সাদমান থাকে আজকে অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে। অফিসের কাজের ব্যস্ততা অন্য সব ঝামেলা এইসব নিয়ে চিন্তা একটু দূর হয় সাদমান বাসায় থাকলে। দুইজনে মিলে নেটফ্লিক্স বা প্রাইমে কোন সিরিজ দেখা হয়। খাওয়ার সময় দুইজনের অফিস কাজ নিয়ে টুকটাক কথা হয়। আজকে এইসব কিছুই নেই। অলস সময়ে তাই দুনিয়ার সব চিন্তা মাথায় ঘুর ঘুর করতে থাকে। মাহফুজে কে নিয়ে গতকাল রাতের ফ্যান্টাসিও চিন্তার মাঝে চলে আসে। সাবরিনা ওর জীবনে ভালমন্দের সব সময় একটা ব্যবধান রেখেছে। এই প্রথমবার যেন ওর মনে হচ্ছে ও একটা নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে পড়ছে। অবিবাহিত থাকার সময় ক্লাসের কম বয়সী লেকচারার কে নিয়ে ফ্যান্টাসি করা বা সিনেমার কোন নায়ক কে ভেবে মাস্টারবেশন করা এক জিনিস। মাহফুজ কে নিয়ে ফ্যান্টাসি মাস্টারবেশন অন্য জিনিস। মাহফুজ রক্ত মাংসের মানুষ যে কিনা ওর এতদিনের দুই জনের সংসারে যেন হঠাত হাজির হয়েছে তৃতীয় মানব হিসেবে। নিজেকে সব সময় খুব ইথিক্যাল একজন মানুষ হিসেবে ভেবে এসেছে সাবরিনা। গতরাতে মাহফুজ যেন সেই ভাবনার দেয়াল ফুটো করে দিয়েছে।

সাবরিনার নিজের উপর নিজের রাগ হচ্ছে। এতদিন ও দেখে এসেছে ওর বান্ধবীরা এক সম্পর্কে থাকা অবস্থায় অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছে। বিবাহিত অবস্থায় গোপন প্রেমিক রেখেছে। যাকেই বোঝানোর চেষ্টা করেছে সেই উত্তর দিয়েছে এর একটা মজা আছে। নিষিদ্ধ জিনিসের মজা। এই যে লুকিয়ে প্রেম এর থেকে উত্তেজনার কি হতে পারে। কেউ উত্তর দিয়েছে বর্তমান সম্পর্কের মিসিং জিনিসটাই খুজছে সে এই গোপন প্রেমে। তার কোন ইচ্ছাই নেই স্বামী বা আসল প্রেমিক কে ছেড়ে যাবার খালি মিসিং জিনিসটার ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া। কার জন্য মিসিং জিনিসটা বাড়তি মনযোগ, কার জন্য সেটা ভাল একজন সংগী আর কার জন্য সেটা শুধুই সেক্স, আদি অকৃত্রিম যৌনতা। এইসব উত্তর শুনে বান্ধবীদের প্রতি একটা করুণা হয়েছে সাবরিনার। এই যে সম্পর্কে থেকেও বাইরে ভিন্ন ভিন্ন চাহিদার খোজ। নিজেকে সব সময় মনে হয়েছে এইসব জিনিসের উর্ধে। হ্যা, সাদমানের সাথে ওর সম্পর্কেও খামতি আছে কিন্তু সেটার জন্য বাইরে যাওয়ার কোন চেষ্টাই সে করে নি। আর যৌনতা কে সাবরিনার সব সময় মনে হয়েছে সেকেন্ডারি জিনিস সম্পর্কে। তাই সেক্সের ক্ষেত্রে সাদমানের রুটিন মানা আচরণটা নিয়ে অভিযোগ থাকলেও সেটা মেনে নিয়েছে। সবার কিছু না কিছু খামতি থাকে। সাদমানের দৃষ্টিতেও হয়ত ওর কোন খামতি আছে কিন্তু সেটা নিয়ে এই কয় বছরে কখনো কোন অভিযোগ করে নি সাদমান। সাবরিনাও তাই এড়িয়ে গেছে। মাঝে মাঝে হিন্টস দিয়েছে হয়ত ওর চাহিদার। সাদমান বুঝে নি। সব সময়ের মত প্রতিবার রুটিন মানা সেক্স। ইনোভেশন নেই। এগ্রেসিভনেস নেই। সাবরিনা কে বোঝার চেষ্টা নেই। সাবরিনা কে বশ মানানোর চেষ্টা নেই। ভাবতে ভাবতে সাদমানের উপর অহেতুক রেগে উঠে সাবরিনা। আজকেই বুঝি বাইরে যেতে হল। আর কেন সাদমান আরেকটু আগ্রাসী হয় না বিছানায়। এই আগ্রাসী না হওয়ার জায়গাটায় তো তাই রাতের আধারে মাহফুজ কনফিডেন্টলি ঢুকে পড়ে। যেভাবে সবখানে সাবলীল সপ্রতিভ ভাবে ঢুকে পড়ে সেভাবে গতকাল রাতে তাই সাবরিনা সাদমানের বিছানায় ওদের মাঝে যেন মাহফুজ ঢুকে পড়ে। সাবরিনা ভাবে আজকে ওর নিরবিচ্ছিন্ন গভীর ঘুম দরকার। যেই ঘুমে কোন অনাহূত আগুন্তুক কনফিডেন্টলি ঢুকে পড়বে না, স্বপ্নে যে আগুন্তুক ওকে বশ করবে না, ওর সমস্ত শরীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিবে না। দুইটা ঘুমের ঔষুধ খেয়ে নেয় সাবরিনা। আজকে সব কিছু থেকে দূরে থাকতে চায় ও ঘুমের মাঝে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অঘটনঘটন পটিয়সী - by কাদের - 27-03-2023, 01:44 AM



Users browsing this thread: Daddybangla, Jitjfgiz, Jotil, Lajuklata, 27 Guest(s)