Thread Rating:
  • 5 Vote(s) - 3.4 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery দীপ জ্বেলে যাই by Dipankar Ray
#1
শিখা আর পিউয়ের বন্ধুত্ব আমাদের প্রেমের থেকে অনেক পুরনো। যেদিন থেকে আমার শিখার সাথে আলাপ আমি ওর আর পিউয়ের বন্ধুত্বের কথা জানি। স্কুলের গণ্ডি ছেড়ে কলেজে এসে আলাপ হয় ওদের, এতো গভীর আর দৃঢ় বন্ধুত্ব সচরাচর মেয়েদের মধ্য দেখিনি। পিউয়ের জীবনে এমন কিছু কথা ছিলোনা যা শিখা জানত না, আমাকেও বলেছে অনেক কিছুই। আমিও পিউকে নিজে চিনেছি, দুটো মিলিয়ে আমি পিউকে বেশ বুঝতে পারি। বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে ওর সাথে। দেখা হলেও তেমন কথা হয় না, পিউয়ের কথা বার্তা আমার ভালো লাগে না। নিজের জীবনের দুঃখ নিয়ে চর্চা করা ছাড়া অন্য কোন আলোচনা করতে পারে না, এইসব মেয়েলি প্যানপ্যানানি আমার আবার সহ্য হয় না। কিন্তু শিখা ওর সব কথা আন্তরিক ভাবে শোনে, ওকে সান্ত্বনা বা পরামর্শ দেয়। যে কয়েকবার ওদের সাথে দেখা হয়েছে আমার বেশির ভাগ সময় কেটেছে পিউয়ের বর দীপের সাথে কথা বলে। দীপ বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ছেলে। সরকারি কলেজে প্রোফেসর, ইতিহাস নিয়ে পড়ায়, সেই নিয়ে চর্চা করতে ভালবাসে। দীপকে আমার বেশ পছন্দ, মিতভাষী কিন্তু বেশ হাসিখুশি ওর সাথে কথা বলে সময়টা ভালই কেটে যায়। এমনিতে চুপ করে থাকে কিন্তু যখন ইয়ার্কি মারে সেটা বেশ সরসতা পূর্ণ। পিউ আবার এর বিপরীত, অল্পতেই রেগে যায় বা চট করে অভিমান হয়ে যায়। যাই হোক, এই পার্থক্যে ওদের বিবাহ ভঙ্গ হয়নি। শিখা আর পিউয়ের চরিত্র বিভিন্ন হওয়াতেও ওদের বন্ধুত্বে কখনো কোন চিড় ধরেনি। শিখার দিক থেকে সেটা অকৃত্রিম আর গভীর ছিল। দুজনের মধ্যে ভালবাসা আর এক অদ্ভুত পারস্পরিক বোঝাপড়া ছিল যা আমার বোঝার বাইরে।

এই গল্পটা যদি আমাকে শিখা না বলত, তাহলে কোনোদিন জানতে পারতাম না। শিখা আমার সাথে নিজের জীবনের সব কথাই বলে, এমন কোন কথা নেই যা নিয়ে আমরা আলোচনা করিনা। অনেকদিন ধরেই জানতাম যে পিউ ওদের সেক্স লাইফ নিয়ে প্রচণ্ড অখুশি। ওর যেরকম প্রবল আর তেজি শারীরিক আদর দরকার দীপ সেই তুলনায় অনেক ঠাণ্ডা ছেলে। তার ওপর স্ট্রেস বা যে কোন কারণে, শিথিলতা একটা বড় সমস্যা ছিল দীপের, আর এই নিয়ে ডাক্তার দেখাবে না বলে জেদ করে ও জিনিষটা আরও ঘোরালো করে দিয়েছিল। পিউয়ের দৈহিক চাওয়াটা বেশ নর্মাল ছিল কিন্তু ওদের দাম্পত্য জীবনে সেটা সমকক্ষ ছিল না। শিখার কথায় আমি জানতাম বিয়ের আগে পিউয়ের বেশ কিছু যৌন সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর এই নৈরাশ্য থেকে অন্য সম্পর্ক ছিল কিনা সেটা পিউ কিছু বলেনি বা বললেও শিখা সেটা আমার কাছে চেপে গেছে। কয়েকবার ইয়ার্কি মেরে শিখাকে বলেছিলাম “হাজার হোক তোমার এতো ভালো বন্ধু, আমারও তো কর্তব্য আছে। বল তো আমি না হয় পিউকে সাহায্য করে দি?” এই নিয়ে আমাদের মধ্য বেশ কৌতুক-ব্যঙ্গ হতো।


ক্রমে সব অভিযোগ পেরিয়ে পিউয়ের মা না হতে পাওয়ার দুঃখটা কুল ছাপিয়ে উঠলো। ওরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে জেনেছিল যে কারুরই তেমন কোন বড় প্রব্লেম নেই। আবার কিছু ছোট খাটো শারীরিক বা মানসিক অসুবিধে ছিল সন্তান ধারণের জন্য। তার পর থেকে পিউ আরও খামখেয়ালি হয়ে উঠলো। বেশ কয়েকবার তো শিখাকেও চাপ দিতে লাগলো ওকে আদর করার জন্য, দুই মহিলার একটা দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য। শিখা এটা নিয়ে অসন্তুষ্ট হলেও বন্ধুকে কিছু বলত না, বাড়িতে আমার সাথে কথা বলে মনের অস্বস্তিটা কাটিয়ে নিত। কয়েকদিন চাপাচাপির পর পিউ ব্যাপারটা ছেড়ে দিলো। আমি ভাবলাম মাথার পোকাটা কমেছে। তখন জানতাম না এ খ্যাপামি যাওয়ার না।


“জানো, পিউ আমাকে জামাকাপড় খুলে ছবি পাঠাতে বলছে”, রাতে শুতে যাবার আগে পোশাক বদলানোর সময় বলল শিখা। আমি ওকে হা করে দেখছিলাম আর ফোনে ফটো তুলছিলাম। ওকে আমি অনেক ভাগ্য করে পেয়েছি। মানুষ হিসেবে, বৌ হিসেবে ওর কোন তুলনাই নেই। সেই সঙ্গে শিখার মতন সুন্দরী আর যৌবন প্রাচুর্যে উচ্ছ্বসিত মহিলা আমি দেখিনি। নিজের বৌ বলে বলছিনা কিন্তু ওর শরীর দেখে কোনারক মন্দিরের ভাস্কর্যর কথা মনে পড়ে। মনে হয় এই সেই আদি নারী যাকে দেখে এই মন্দিরে নারী রূপের পরিভাষা তৈরি হয়েছে। ক্ষীণ কটি, উন্নত বক্ষ, সুগোল বিশাল নিতম্ব। এই নারীকে পুরুষের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বিধাতা পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। নগ্ন হয়ে যখন আমার সামনে গর্বিতার মতন দাড়িয়ে থাকে, তখন শরীরের ভাষা যতটাই উদ্ধত চোখের ভাষাটি ততোটাই নমনীয় থাকে। মৈথুন কালে যখন চার হাত পায়ের ওপর ভর দিয়ে নিতম্বটাকে উঁচু করে নিজের সর্বস্ব দিয়ে আমাকে আহ্বান করে তখন আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পুরুষ বলে মনে হয়।

“ও তো তোমার পেছনে অনেকদিন ধরে হাওয়া দিচ্ছে, তা যদি তোমার শরীরের সৌন্দর্য দেখে ওর যৌবন জ্বালা একটু কমে, ক্ষতি কি?”

“চুপ করো তো, সবসময় ফাজলামি ভালো লাগেনা” শিখা একটু রেগেই গেলো। রাগটা কমলো না উলটে বেড়ে গেলো “বলো তো দিয়ে দি। পিউ বলছে ওর বরকে দেখাবে। যাতে উত্তেজিত হয়ে পিউকে আদর করে। কি? দেবো? এখন চুপ মেরে গেলে কেন?” সত্যি একটু থতমত খেয়ে গেছিলাম, এটা একটু নতুন কথা!

“দেখো হয়ত নিজের জন্য চাইছে, বর এর নাম করে বলছে।”

“কেন, পিউ কেন ভাববে ওর বরের নাম করে চাইলে আমি ছবি দেবো? আসল কথা হল ও সেটা ভাববে না, কিন্তু হয়ত তুমি সেটা ভাবছ!” শিখার গলা উত্তরোত্তর বাড়ছিল “অন্য লোক আমার ছবি দেখবে কেন? তোমাকে বলেছি না আমি শুধু তোমার!” মাঝে- মাঝে মেয়েরা একটা যুক্তিকে এক প্রান্ত থেক অন্য প্রান্তে নিয়ে যায়, তখন মুখ বন্ধ রাখাই শ্রেয়। তখনকার মতন ছেড়ে দিলাম বটে কিন্তু পিউ আবার কি নতুন বলে তার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলাম।
বেশিদিন অপেক্ষা করতে হল না। 

সেদিন রাতে আদর করার পর আমার বুকে মাথা রেখে শিখা গায়ে হাত বোলাচ্ছিল। “পিউ এর মাথাটা গেছে, এরকম ভাবে চলতে থাকলে ওর সাথে আর বন্ধুত্ব থাকবে না!” আমি জানতাম একটু মান-অভিমান চলছিল ওদের মধ্য। শিখা যখন বাপের বাড়ি যাবে তখন ওদের বাড়ি যাক কারণ এই দুটো বাড়ি কাছাকাছি, এটা পিউয়ের জেদ। সেই তুলনায় পিউ আমাদের এখানে আসতে চায় না। এটা নিয়ে একটু মন কষাকষি চলছিল, আমি ভাবলাম সেই ব্যাপার হবে।

“পিউরা তো অনেকদিন আসেনি, তবে ভালই হয়েছে। ও আসলে আমি একটু বিরক্ত হই।”

“না, তা না.....”

“তাহলে?”

“পিউয়ের মনে এখন বদ্ধ ধারনা যে ওর বরের যা যৌন অক্ষমতা আছে আমি সেটা ঠিক করতে পারি”, এইটুকু বলে শিখা চুপ করল। শিখার শরীরে যা যৌন আবেদন আছে তা আমি অন্য কোন নারীতে দেখিনি, এমন যৌন পটীয়সী বৌ বোধহয় ভূভারতে আর নেই। এমন কোন পুরুষত্ব নেই যা ওর কাছে এসে জাগ্রত হবেনা। ওর হাল্কা জিভের ছোঁওয়া পেলেই যে কোন পৌরুষ সজাগ হয়ে যাবে।

“তুমি ওকে বলে দাওনি কি ভাবে আদর করতে হয়? তোমার মতন এমন সুনিপুণা বান্ধবী থাকতে ওর আর কি অসুবিধে?” একটু কৌতুক করে বললাম।

“কতবার বলেছি আভাষে–ইঙ্গিতে, ইদানীং তো বেশ স্পষ্ট করে বলেছি কি কি করতে হবে – বিছানায় কি করতে হবে। পিউয়ের আবার বড্ড বেশি প্যাংচামি, এটা করব না! ওটা করতে পারব না! এটা করলে বর মাথায় চেপে বসবে!”

“ওর যখন সবকিছুতে অসুবিধে তাহলে ওকে বোলো বাইরে কোন প্রেমিক জুটিয়ে সব চাহিদা পূরণ করে নেবে।”

“সেটাও বলেছিলাম; অভিমান করে বলল আমি নাকি ওকে বেশ্যা হবার পরামর্শ দিচ্ছি!”

“সে কি? ওর তো এদিক-ওদিক বেশ সম্পর্ক ছিল!”

“হ্যাঁ, বিয়ের আগে ছিল। তাদের মধ্য দুজনের সাথে তো এখনও দেখা সাক্ষাত আছে। একজনের তো দীপের সাথে ভালো আলাপ আছে, সে এখন পিউকেই পাত্তা দেয় না। অন্যজনের আদর করার ধরনটা পিউয়ের পছন্দ কিন্তু সেখানেও নানান কারণে বিশেষ কিছু এগোয় না।”

“পরিস্থিতি তুমি ঠিক করে দেবে অথচ তোমার কথা শুনবে না, এটা কি ধরনের আবদার?”

“ওর বক্তব্য হচ্ছে আমি সব করব। আমি নাকি করলে সব ঠিক হয়ে যাবে! আমার হাত লাগলেই সব প্রব্লেম ঠিক হয়ে যাবে!”

“মানে?!” বেশ আশ্চর্য হলাম আমি। রেগেও গেলাম হয়ত।

“ওর কথা হচ্ছে ওর বরের এই অপদার্থ ভাব আমি একবার ঠিক করে দিলে, বাকিটা ও সামলে নেবে।”

“আচ্ছা!, তো এই অপদার্থ ভাব তুমি কি ভাবে কাটাবে? তোমাকে দেখিয়ে দিতে হবে?” ব্যাঙ্গার্থক সুর আমার।

“হ্যাঁ। ওর বরের শিথিলতা দূর করে ওকে সুদৃঢ় পুরুষ করে দিতে হবে” বেশ সম্মোহিনী ভঙ্গিতে বলল শিখা। আমি জোরে হেসে ওঠাতে কথা সেদিনের মতন বন্ধ হয়ে গেলো।

কাজের ব্যস্ততায় পরের বেশ কয়েকদিন পিউদের নিয়ে আর কোন কথা হয়নি। সেদিন শনিবার ছুটি ছিল, বিকেলের দিকে আমি আর শিখা জলখাবার খেতে-খেতে টিভি দেখছি, এমন সময় শিখার ফোনটা বেজে উঠলো। কিছুক্ষণ কথা বলেই শিখা রেখে দিলো, চোখমুখে প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা, চোখ লাল হয়ে জলে ছল্ ছল্ করছে।

“পিউ আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছ, কিছু খেয়েছে। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা উঠছে, অজ্ঞান হয়ে আছে” আর বেশি কিছু বলতে পারল না শিখা। উৎকণ্ঠা আর ভয়ে ফোনে দীপ বিশেষ কিছু বলতে পারেনি। চেনা এক ডাক্তারকে নিয়ে ওদের বাড়ি পৌঁছাতে বেশি সময় লাগলো না। ডাক্তার বলল পিউ কোন ঘুমের ওষুধ খেয়েছে, পেট পাম্প করাতে হবে। ওকে একটা প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সব করতে অনেক সময় বেরিয়ে গেলো। হাসপাতালের ডাক্তার বলল রাত না কাটলে কিছু বলা যাবে না। চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম আমরা। দীপ হাসপাতালে রয়ে গেলো। বাড়ি ফিরে পিউয়ের মা-বাবাকে আশ্বস্ত করার জন্য ফোন করল শিখা। বলল পরের দিন ওনাদের হাসপাতালে নিয়ে যাবে। যতক্ষণ কথা বলছিল শিখা ধাতস্থ ছিল। ফোনটা রেখে কান্নায় ভেঙে পড়ল। আমি হতভম্ব হয়ে ওকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দিতে লাগলাম।

“পিউ আমাকে বলেছিল ও আত্মহত্যা করবে। সেই নিয়ে ওর সাথে কথা কাটাকাটি থেকে ঝগড়া। গত দুদিন আমি রাগের চোটে ওর সাথে কথা বলিনি। আমি সত্যি বুঝতে পারিনি গো ও এতো বড় একটা পদক্ষেপ নিয়ে নেবে!” আবার ঝর-ঝর করে কেঁদে ফেললো শিখা। কাঁদছিল আর নানান কথা বলছিল যার মূল বক্তব্য হল যে ওর জন্য জন্য পিউ আজ এই অবস্থায়। কিছুক্ষণ পরে ধাতস্থ হয়ে আমাকে পুরো ব্যাপারটা বলল।

“পিউয়ের এখন যা মানসিক অবস্থা, ও যে যৌন তৃপ্তি পাবে না, সেটার সাথে ও আপোষ করে নিয়েছে। কিন্তু ওর ইচ্ছে যে ওদের একটা সন্তান হোক এবং সেটা দীপের সন্তান হোক। কিন্তু বাধা হয়েছে যে দীপ আগে যতটুকু আদর করতো এখন আর সেটুকুও করেনা। পিউ কাছে আসলে পালিয়ে যেতে চায়। রাত্রিবেলা পরীক্ষার খাতা বা পড়াশুনো করার অজুহাতে পড়ার ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকে। আর কালে ভদ্রে পিউ ওকে চেপে ধরলে তখন ওর পৌরুষ শক্ত হওয়া তো দূরের কথা আরও ছোট হয়ে যায়।”

“হ্যাঁ, পিউ যদি ওরকম ভাবে চাপ দেয় তাহলে দীপের পক্ষে আরই কিছু করা সম্ভব হবেনা...”

“সেটাই হচ্ছে” আমাকে থামিয়ে শিখা বলল “ও বলছিল যে দীপ যখন পারেনা তখন প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পিউ ওকে গালাগালি করে। বস্তির মতন খিস্তি-খেউড় করে। ওর অক্ষমতা নিয়ে কটাক্ষ করে। এমনকি একবার যখন দীপ পাল্টা বলেছিল যে তেমন হলে অন্য কোন পুরুষ খুঁজে নিতে তখন পিউও ওকে বলেছিল যে পুরুষ বিয়ে করে নিজের বৌকে সুখ দিতে পারেনা তার কর্তব্য হল দালালের মতন বউয়ের জন্য নিত্য-নতুন পুরুষ হাজির করা।”

“পিউ ভাবে এই ভাবে একজন পুরুষমানুষকে উৎসাহিত করবে?” আমার তির্যক প্রশ্ন।

“আমি জানি তুমি ওকে পছন্দ করোনা। কিন্তু দীপকে এইসব বলে ও নিজেই মরমে মরে ছিল। আর ঝামেলা করেনি ওর সাথে। আমার সাথে ফোনে প্রচুর কথা হয়েছে, যার প্রধান বক্তব্য হল আমি যদি দীপকে প্রলুব্ধ করি তাহলে ও ভেড়া থেকে পুরুষ সিংহ হয়ে যাবে! সেই নিয়ে পিউয়ের সাথে ঝগড়া। আর যখন ঝেড়ে অস্বীকার করেছিলাম তখন আমাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেছিল যে আমার এই সাহায্যে ও মা হতে পারবে এবং ওর জীবনটা শুধরে যাবে। সেই তুলনায় আমাকে যা করতে হবে সেটা নগণ্য। আমি তখন রেগে গেছিলাম গো! পিউকে বেশ কয়েক কথা শুনিয়ে ফোন কেটে দিয়েছিলাম। পরের দিন ও আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে মেসেজ পাঠিয়েছিল, আমি উত্তর দিইনি। আর আজকে এই অবস্থা!”
শিখা উদাস ভাবে চুপ করে গেলো কিছুক্ষণ। “হ্যাঁ গো। পিউ বেঁচে যাবে তো?”

“তোমার সামনেই তো ডাক্তারের সাথে কথা হল। অনেকগুলো ওষুধ খেয়েছে, কিন্তু যেহেতু চিকিৎসা তাড়াতাড়ি শুরু হয়েছে তাই ভয়টা কম। কিন্তু আজ রাতটা ভালভাবে কাটা দরকার।”

কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে, হাতজোড় করে বলল, “ঠাকুর ও যেন ভালো হয়ে ওঠে, প্রতিজ্ঞা করছি ওর সাথে আর কোনোদিন ঝগড়া করব না।”

সেই রাতটা আধঘুমেই কাটিয়ে দিলাম। সারারাত স্বপ্ন দেখলাম, শিখা রানীদের সাজে দাঁড়িয়ে আছে, একটা জোকার শিখার হাত ধরে টানাটানি করছে আর ও জোকারের হাত ছাড়িয়ে নিচ্ছে। পরেরদিন গাড়িটা শিখার ব্যবহারের জন্য রেখে আমি ট্যাক্সি করে অফিস চলে গেলাম। ওকে বলে গেলাম তেমন দরকার পড়লে আমায় ডেকো। দুপুরের আগে শিখা ফোন করে জানাল, ডাক্তার বলে গেছে পিউয়ের ফাঁড়া কেটে গেছে এবং ওকে আইসিইউ থেকে রুমে দেওয়া হবে। বিকেলে গিয়ে দেখলাম পিউয়ের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু বিশেষ কথা বলছে না, ঝিমুনি ভাবটা কাটেনি। আমি দীপকে নিয়ে হাসপাতালের সুপারের সাথে কথা বলে পুলিশ কেস এবং অন্য ঝামেলা মিটিয়ে নিলাম।

ইয়ার এন্ডিং এর চাপে কদিন মুখ তোলার অবকাশ পাইনি, তার ওপর গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহ। চব্বিশ ঘণ্টা এসিও কম পড়ছে! এর পর আরও আছে! অফিসের নতুন সেক্রেটারির পিছনে প্রচুর সময় যাচ্ছে। শুধু হাতে ধরে কাজ শেখানো নয়, তাকে সহজ করার জন্য বেশ কিছু সময় কাটাতে হচ্ছে যাতে পরবর্তীতে তাকে দিয়ে অনেক কাজই করানো যায়। তাই কয়েকদিন আর হাসপাতাল যাইনি, শিখা নিয়ম করে দুবেলাই যেত। যেদিন পিউকে বাড়িতে নিয়ে এলো, ওইদিন ওদের বাড়িতে গেলাম। সাইকোলজিস্টের পরামর্শ মতন দুপক্ষের বাবা-মা কেউ ওদের বাড়িতে রইল না, বাড়ির পরিবেশটা স্বাভাবিক রাখার জন্য। পিউয়ের সাথে কোন অঘটন ঘটেছিল সেটা মনে আসার কোন কারণ যেন না থাকে। পিউ শুধু শিখার সাথেই কথা বলছিল এবং ও সামনে না থাকলে উৎকণ্ঠা বেড়ে যাচ্ছিলো। শিখাকে যে ওদের ওখানেই থাকতে হবে সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম। এই পরিস্থিতিতে পিউয়ের অনেকটা দায়িত্বই না চাইলেও ওর কাঁধে এসেই যায়।

বসবার ঘরে চা খেতে খেতে আমাদের দুজনের কথা হচ্ছিলো, “থাকতে হবে সেই ভাবে প্রস্তুত হয়ে আসিনি, আজকের রাতটা ব্যবস্থা করে নিচ্ছি, তুমি কালকে সকালে অফিস যাবার আগে আমার জামা-কাপড় আর দরকারি কিছু জিনিষ দিয়ে যেও।”

“হ্যাঁ, আজকের রাতটা পিউয়ের জামা দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পার” ঘরে ঢুকতে-ঢুকতে দীপ বলে উঠলো। ওর চোখে মুখে স্বস্তির ছাপ। এই পরিস্থিতিতে সেটা হওয়াই স্বাভাবিক, কিন্তু মনে হল যেন একটু বেশিই খুশী হয়েছে। ওর এই উদ্গ্রিবতা দেখে হাসি পেল, শিখার সান্নিধ্যে এসে প্রায় সব পুরুষমানুষই নিজের অজান্তে একটু আহ্লাদিত হয়ে যায় । শিখার এই রূপটা আমার পরিচিত, কারুর দুঃখে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ানো, তার কি করা উচিত সেটা নিয়ে স্থিরবুদ্ধিতে মীমাংসা করে দেওয়াটাই ওর ধর্মের মধ্যে পড়ে। আমি ওঠার আগে যেসব জিনিষ আনতে হবে সেগুলোর খুঁটিনাটি লিখে একটা তালিকা ধরিয়ে দিলো।


পরের দিন সকালবেলায় সব জিনিসপত্র গুছিয়ে পৌঁছে গেলাম। শিখা যে পরিমাণে জিনিস আনতে বলেছিল তাতে মনে হল বেশ কয়েকদিন থাকতে হতে পারে, তার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। দীপকে দেখলাম পিউয়ের সাথে কথায় মগ্ন তাই শিখার খোঁজে রান্নাঘরের দিকে গিয়ে দেখি বেঢপ এক নাইটি পরে প্রাতরাশের আয়োজন করছে। পেছন থেকে কোমরটা জড়িয়ে ধরে ওর শরীরের সাথে নিজের শরীরটা মিশিয়ে দিলাম। না চমকে, না পেছনে তাকিয়ে শিখা বলল “এই ছাড়! হাত পুড়ে যাবে যে!”

“পিউ যদি বাড়িতে এই সব নিরস জামা-কাপর পরে, তাহলে আর কি করে কিছু হবে?”

“ও পোশাকের ব্যাপারে চিরকাল একটু সংরক্ষণশীল, কিন্তু বেশ ভালই সাজগোজ করে।”

“তুমি তো দেখছি, পিউয়ের ওকালতি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে। সারারাতের পরে বরকে দেখছো সেরকম কোন ভাব নেই! আর জানলেও বা কি করে এটা আমি? দীপও হতে পারত?”

“তোমার ছোঁওয়া আমি চিনব না? ঘুমিয়ে থাকলেও জানব।” ওখানেই ব্রেকফাস্ট সেরে অফিস রওনা দিলাম।

কাজের জন্য দুদিন বাইরে ছিলাম তাই ওই বাড়িতে আর যাওয়া হয়নি। ফেরত এসে দেখি পিউয়ের শরীর অনেকটা ভালো।। চোখেমুখে অবসাদ কেটে অনেকটা পরিষ্কার ভাব। পিউকে অনেক বুঝিয়ে সেদিনের মতন আমার সাথে বাড়ি এলো শিখা।

“কেমন বুঝছ পিউয়ের অবস্থা?” জিজ্ঞাসা করলাম।

“খুব একটা ভালো না। ও যে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে ভুল করেছে সেটার কোন অনুভব ওর নেই, বা তার জন্য খারাপ লাগা নেই।”

“কিন্তু ওকে দেখে তো কিছুটা ভালো মনে হল?”

“সেটা আমি ওর কাছে ছিলাম বলে। ওর ধারনা এবার আমি ওকে মা হতে সাহায্য করব।”

“মানে, তুমি কি করবে?”

“পিউয়ের ধারনা আরও বদ্ধ হয়েছে যে আমি যদি দীপের সাথে প্রেম করি তাহলে ওর স্বামী আবার পুরুষত্ব ফিরে পাবে।”

“এখনো ওই চিন্তা থেকে বেরোতে পারেনি?” আমি হাসবো না রাগ করব বুঝে পেলাম না।

“না, বরং চিন্তাটা আরও দৃঢ় হয়েছে” কথাটা বলে অন্যমনস্ক হয়ে গিয়ে আবার বলতে শুরু করল শিখা। “জানো, পিউয়ের মানসিক অবস্থাটা ডাক্তাররা যা বলছেন তার থেকেও বেশি খারাপ বা জটিল। নাহলে, এই কথাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না, যে কোনো মেয়ে নিজেকে হেয় করে অন্য একটা মেয়েকে বেশি সুন্দরী দেখবে! সে তারা যতই ভালো বন্ধু হোক না কেন! এটা তো মেয়েদের স্বভাব বিরুদ্ধ। তুমি বলো ঠিক বলছি কিনা?”

“হুম, কথাটা ভুল বলোনি…”

“তবে, এই কথাটার একটা অন্য দিকও আছে। আমার মনে হয় ও কথাটা কিন্তু খুব একটা ভুল বলেনি, এই কদিন ওদের বাড়িতে থেকে বুঝলাম যে দীপ আমাকে বেশ পছন্দ করে।”

“কেন কিছু বলেছে নাকি?”

“পিউয়ের কান বাঁচিয়ে আমার রূপের স্তাবকতা করছিল। আমি যেখানে সেখানে ঘুর-ঘুর করছিল। বেশি কথা, বেশি উচ্ছ্বাস, বিগলিত হাসি। এই আর কি। আর...”

“আর কি?”

“একদিন রাতে ঘুম ভেঙে দেখি ওই ঘরে দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে...

কথাটা শুনেই ঘুমন্ত শিখার চেহারা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো। শুয়ে থাকলে ওকে ভীষণ লাস্যময়ী লাগে, জড়িয়ে ধরে আদর করতে ইচ্ছে করে। ওর রাতের নাইটিগুলো বেশ খোলামেলা, কাঁধে পাতলা ফিতে, গলায় নিচু করে কাটা লেসের কাজ আর সবকটার দৈর্ঘ্যই হাঁটুর উপরে। নিদ্রিতা শিখাকে দেখে দীপ যে বিমূঢ় হয়ে যাবে সেটা প্রত্যাশিত, তাই রাগলাম না। এমন সুন্দরী বউকে পুরুষরা দেখবে না সেটা কখনই আশা করি না কিন্তু আমার অভিলাষিণী বউকে রাতের অন্ধকারে অন্য এক পুরুষ তার নিজের বাড়িতে দেখে যৌন আখাঙ্কা করেছে এই ভাবনাটাও বিচলিত করল।

“তারপর?”
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
“আর কিছু না। আমি জেগে উঠছি বুঝতে পেরে পিউ এর কাছে এসে ওকে দেখল তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। তখন বুঝলাম পিউ ভুল বলেনি, ওর বর আমাকে হয়ত পছন্দই করে।”

“এমন সুন্দরী মহিলাকে কে পছন্দ করবেনা? অনেক পুরুষমানুষ তো তোমার সাথে আলাপ করার অভিপ্রায়ে আমার সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করে।” বলে আমি জড়িয়ে ধরলাম শিখাকে।

“বাজে বোকো না তো! আমার চিন্তা অন্য জায়গায়। পিউও এসবের কিছু লক্ষ্য করেছে এবং এখন আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে ও ঠিক এবং আমি একটু চেষ্টা করলেই ওকে বাঁচাতে পারি। এই মুহূর্তে ওর মানসিকতা যে পরিমাণে দুর্বল, আমি ওকে দৃঢ়ভাবে না করতে পারছি না।”

“বলতে দাও ওকে যা বলার, কিছুদিন পরে সব ভুলে যাবে।”

“আমিও সেটাই আশা করেছিলাম, কিন্তু আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে সেই ভাবনাটা ভন্ডুল করে দিলো। এখন আবার নতুন করে চেষ্টা শুরু করেছে।” সেদিনের মতন আর কোন কথা হল না এই নিয়ে।

এরপর বেশ কয়েকদিন থাকবে বলে শিখাকে পিউদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আমি অফিস গেলাম। শিখাকে আগেই বলেছিলাম যে আমি ওখানে রোজ যেতে পারব না। তাই দিনের মধ্য বেশ কয়েকবার ফোনে কথা হতো, তবে আমার মনে একটা প্রছন্ন চিন্তা কাজ করত। হাজার হোক সুন্দরী বৌ অন্য কারুর বাড়িতে আছে, চিন্তা তো হবেই! সেদিন কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে গেছিল, হাত-মুখ ধুয়ে ওকে ফোন করে দেখি ফোনটা বন্ধ করা, ভাবলাম ঘুমিয়ে পড়েছে। একটু অদ্ভুত লাগলো, কারণ ফোন না করুক কিন্তু একটা মেসেজ না দিয়ে শুতে যাবার মেয়ে শিখা নয়। একরাশ বিরক্তি নিয়ে শুতে গেলাম। ঘুম থেকে উঠলাম তার থেকে বেশি অস্বস্তি নিয়ে। তক্ষুনি ফোন করলাম, এবারও বন্ধ পেলাম। পুরো বিরক্তি নিয়ে অফিস রওনা হলাম কিন্তু তার সাথে জড়িয়ে ধরল একটা অজানা ভয়। বেশ কয়েকটা কাজের মধ্যে আমারও ফোন করা হলো না। তবে কিছুক্ষণেই শিখার মেসেজ এলো “অফিস পৌঁছে গেছো, ব্রেকফাস্ট করেছো?” এটা পাওয়ার পরে কিছুটা আশ্বস্ত হলাম, কিন্তু পরমুহূর্তে রাগ হয়ে গেলো, তখন উত্তর দিলাম না, হাতের কাজ শেষ করে ফোন করলাম। ফোন বন্ধ করার কারণ যা বলল তা শুনে মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেলো, আর একটু আশ্চর্যও হলাম।

“গতকাল পিউ কান্নাকাটি করে ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়েছিল। আমার হাতে কোন কাজ ছিল না, মিটিং আছে জেনে তোমায় ফোন করতে পারছিলাম না। এতদিন বাড়ি ছাড়া, দুদিন তোমায় দেখিনি এইসব মিলিয়ে মনটা ভারাক্রান্ত ছিল। বাড়ি নিঃশব্দ, পিউ অঘোরে ঘুমাচ্ছে, দীপ নিজের ঘরে কিছু কাজ করছে। আমার মনে হচ্ছিল যে অদ্ভুত একটা পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েছি, না পারি ছাড়তে না পারি কিছু করতে! এইসব এলোমেলো চিন্তা করতে করতে বারান্দায় বসেছিলাম রেড ওয়াইন নিয়ে। কিছুক্ষণ পরে দীপ ওখানে আসায় জিজ্ঞেস করলাম রাতের খাবার খেয়ে নেবে কিনা। ও পরে খাবে বলে নিজের জন্য ওয়াইন ঢেলে নিয়ে বসে পড়ল। সেই পেঁয়াজি রঙের নাইটিটা পরেছিলাম বলে একটু অস্বস্তি লাগছিল, কিন্তু কিছুই ভালো লাগছিল না তাই আলস্য করে বসেই রইলাম। বারান্দায় আলো জ্বালা ছিল না, তাই আর পাত্তা দিলাম না।”

যে নাইটির কথা বলছিল সেটা আমার বিশেষ প্রিয়। সাটিনের কাপড়ের ওপর লেসের কাজ করা, অন্য সবগুলোর মতন, তবে ওটার বিশেষত্ব হল ভীষণ পাতলা আর স্বচ্ছ। ওটা পরলে শিখার শরীরটা আলো-আঁধারির মতন উন্মোচিত হয়ে থাকে। ফোন করেনি তারপর এই সব কথা শুনে অফিসের ঠাণ্ডা ঘরে বসে একটা চাপা উৎকণ্ঠা অনুভব করলাম। না চেয়েও জিজ্ঞেস করে ফেললাম “সেকি? পিউয়ের ইচ্ছেটা পূরণ করলে নাকি?”

“না, তবে দীপের সাথে এতো গল্পও কখনো করিনি। ওকে যা ভাবতাম তার থেকেও ভালো, পিউয়ের সংবেদনহীনতা ওর জীবন আরও দুর্বিষহ করে দিয়েছে। ওর ছোটবেলার যা গল্প শুনলাম তাতে বুঝলাম দীপের মা বেশ জাঁহাবাজ মহিলা, ছেলেকে কখনো আত্মবিশ্বাসী হতে দেননি। নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছে দিয়ে ওর পুরো ব্যক্তিত্ব চেপে দিয়েছেন।আর পিউও অন্যভাবে সেই একই জিনিষ করছে।”

“দেখো আবার ওর প্রেমে পড়ে যেওনা!”

“প্রেম না, দয়া হয়।”

অফিসের কাজ আমায় সব কিছু থেকে মাঝে মাঝে দূরে নিয়ে যায়। এবারও অন্যথা হল না। মাস খানেকের জন্য দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশ গেলাম, নতুন কিছু প্রোজেক্ট আর বিজনেস ডিলস ছিল মূল উদ্দেশ্য। পুরনো কিছু কন্ট্রাক্ট রিনিউ করার জন্য পুরনো সম্পর্ক গুলোকেও ঝালিয়ে নিতে হল। অ্যানার সাথে চেনা শোনা অনেক দিনের, রাতেরও চেনা বলা যায়, তবে শিখার কোন গুনই কারুর মধ্যে পাইনা, তাই সবকিছুই শুধুমাত্র দৈহিক শখ মেটানো হয়ে থেকে যায়, মন পড়ে থাকে শিখাতেই। তাই ফেরার সময় যখন প্লেন ল্যান্ড করছিল একমাত্র শিখা ছিল সমস্ত মন প্রাণ জুড়ে। কখন বাড়ি গিয়ে ওর শরীরের ঘ্রাণ নেবো, মিশে যাবো ওর সাথে সেই ভাবনায় নিজেই উত্তেজিত হচ্ছিলাম।

ফেরত আসার কিছুদিন পরে শুনলাম পিউ অন্তঃসত্ত্বা। ওর ব্যক্তিত্বতে আমূল পরিবর্তন এলো, ওদের জীবনে মেঘ কেটে সূর্য হেসে উঠলো, সংসারে শান্তি নেমে এলো। শিখাকে কৌতুক করে জিজ্ঞেস করেছিলাম “কি গো? তুমি জাদু করলে নাকি?”

সংক্ষেপে “হতে পারে” বলে আর কিছু বলেনি শিখা। আমিও আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি।

বেশ কিছুদিন পরে শিখা নিজে থেকেই পিউ পর্বের এই গল্প আমাকে বলতে শুরু করল। একদিন সকালে বলল “বিকেলে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরো, কিছু কথা আছে তোমার সঙ্গে।” রাতে বিছানায় শুয়ে কোন রকম ভণিতা ছাড়াই কথা শুরু করল শিখা।

“তুমি যখন ছিলেনা, একদিন আমি থাকাকালীন পিউ আবার দীপের সাথে ঝগড়া করে ওর মায়ের কাছে চলে গেছিল, আমিও আমাদের বাড়িতে ফিরে এসেছিলাম। পরে পিউকে ফোনে বুঝিয়ে ফেরার জন্য রাজি করিয়েছিলাম। ওর শর্ত ছিল আমি যদি ওর বাড়ি যাই তাহলেই ও ফিরবে। পরেরদিন রবিবার ছিল, কথা মতন বিকেলে ওদের বাড়ি গিয়ে দেখলাম পিউ ফেরেনি। দীপকে জিজ্ঞেস করে বুঝলাম স্বামী-স্ত্রীতে আবার সকালে কথা কাটাকাটি হয়েছে। পিউকে ফোন করলাম ফেরত আসার জন্য কিন্তু ও এলো না, নিজের জেদ নিয়ে বসে রইলো। পিউয়ের ব্যবহারে প্রচণ্ড বিরক্তি লাগছিল তাই আর বেশি কথা বাড়ালাম না। ফোন রেখে দীপকে বললাম, ‘তুমি ওকে জোর করে বাড়িতে আনতে পার না?’

ঈষৎ হেসে দীপ বলল ‘জোর আমি কাউকে করতে পারিনা শিখা। ও তো তোমার মতন না যে কথা শোনে। কথা না মানুক একজন মানুষকে কথা বলার সুযোগ দিতে হয়, সেটাও ওর জানা নেই।’

‘এইভাবে চলবে না দীপ, কিছুটা জোর করে হোক, তোমার কথাও ওকে মানতে হবে। তুমি যদি সেটা না পারো তবে শিখতে হবে। সবসময় চুপ করে ওর কথা মেনে নিলে চলবে না।’

তুমি বাড়ি নেই, খালি বাড়ি খাঁখাঁ করে, তাই ভাবলাম এসেছি যখন দীপের সাথে অল্পক্ষণ আড্ডা মেরে বাড়ি ফিরব। এ কথা, সে কথা করে আড্ডা জমে গেলো। ওয়াইন নিয়ে বারান্দায় বসে কথা বলছিলাম, কখন যে সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো টের পেলাম না। দীপের পেড়াপেড়িতে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম, ও দুপুরে রান্না করেছিল সেটাই আবার গরম করে খাওয়া হল।”

তারপর হঠাৎ সুর পাল্টে শিখা বলল “দীপ খুব ভালো রান্না করে, জানো বাড়িতে সব রান্না করেছিল! সেই দুপুরের খাওয়ারটা আবার গরম করে নিজের হাতে বেড়ে দিলো। এতো অনুভূতিপ্রবণ, নরম প্রকৃতির ছেলে! শিক্ষিত, বুদ্ধিমান, সৎ ওর বিয়ে পিউয়ের সাথে না হয়ে অন্য কারুর সাথে হলে ভালো হতো। যে ওকে বুঝতে পারত, ভালবাসত।”

তারপর আবার স্মৃতিতে ফেরত গিয়ে বলতে শুরু করল “খাবার পর আবার ওয়াইন আর আড্ডা চলছিল। দীপের সাথে যত কথা বলছিলাম, যত ওকে জানছিলাম, ততো ভালো লাগছিল! তাই যখন ওদের ওখানে রাতে থেকে যাবার কথা বলল তখন আর না করলাম না। দীপ বলার আগেই জানতাম আমি ওখানে থাকব, একটু বেশি ওয়াইন হয়ে গেছিল আর রাতও হয়ে গেছিল। কিন্তু সবচেয়ে বড় কারণ আমার ওখানে থাকতে ইচ্ছে করছিল, মনে হচ্ছিল আড্ডা চলতেই থাকুক, শেষ না হোক। তোমার ভালবাসাতে আমি এতো নিশ্চিন্ত যে কোন ভয় ছিল না আমার মনে। খালি একটাই অসুবিধে ছিল, ওখানে থাকব ভেবে যাইনি, একটা জিন্স আর টপ পরে গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম পিউ ফিরলে ওকে বলে চলে আসবো। একা থাকলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভাব হবার সময় পাবে ওরা, এরকম একটা আশা ছিল মনে। কিন্তু ওখানে থাকতে গেলে তো আর জিন্স পরে শোওয়া যায় না! সেটা দীপকে বলাতে ও বলল পিউয়ের নাইটি পরে নিতে। কথাটা শুনে আমার হাসি পেল।

‘তোমার বউয়ের ওই মাসীমা মার্কা জামা আমি পরবো না, দেখি কি পরা যায়।’

ওদের শোওয়ার ঘরে যখন পোশাক বদলাচ্ছিলাম তখন নিজেকে ভীষণ দুঃসাহসী মনে হচ্ছিলো। পিউয়ের আলমারি খুঁজে একটা শাড়ি বের করলাম। পিউয়ের সাইজ আমার থেকে ছোট তাই ওর ব্লাউজ পরলাম না। পিউয়ের এতদিনের ঘ্যান-ঘ্যান, ওর জেদ নিয়ে রাগ, তোমার অনুপস্থিতি, আর দীপের সাহচর্য সব মিলিয়ে একটা বেপরোয়া ভাব। মনে হচ্ছিলো এমন কিছু একটা করি যাতে পিউয়ের কথা রাখতে পারি আর সেটা করতে গিয়ে ওর বরের কাছ খেলো না হয়ে যাই। তারপর আরও দুঃসাহস দেখিয়ে ব্রা আর সায়া পরলাম না, শুধু প্যান্টিতে গুঁজে শাড়িটা পরে নিলাম।”

আমি অবাক হয়ে শিখার কথা শুনে যাচ্ছিলাম। একদিকে ভয়, উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ আমাকে গ্রাস করছিল আর অন্যদিকে নিজের বউয়ের যৌন দুঃসাহসের কথা শুনে ভালো লাগছিল। শিখার প্যান্টিগুলো সব বিকিনি কাট, যা ঢাকে তার থেকে বেশি দেখায়। শুকনো ঠোঁটটা জিভ দিয়ে ভিজিয়ে বললাম “এতদিন বলোনি কেন?”

“কি ভাবে শুরু করব সেটা বুঝতে পারছিলাম না। তার থেকেও বেশি নিজের ব্যবহারে নিজেই আশ্চর্য ছিলাম, তুমি কি ভাবে জিনিষটা নেবে সেটা নিয়েও চিন্তা ছিল। তাই একটু সময় নিয়ে বললাম।” আবার স্মৃতিচারণে ডুবে গেলো শিখা।

“আঁচলটা পুরো শরীরে জড়িয়ে নেবো না একদিকে রাখব সেটা নিয়ে কিছুটা দোনোমোনো করে, একদিকে আঁচল রেখে বারান্দায় চলে গেলাম। বসবার ঘরে একটা আলো জ্বলছিল, বারান্দায় অন্ধকার। আমি বারান্দার কাছে এসে দরজা ধরে দাঁড়ালাম। দীপ পায়ের আওয়াজ শুনে পেছন ফিরে আমায় দেখে মুগ্ধ চোখে দিকে তাকিয়ে রইল।

‘তোমার জন্য আমার এই অবস্থা। তুমি থাকতে না বললে বলে এটা হতো না। তোমার বউয়ের ব্লাউজ আমার ভারি গায়ে হয় না, ছোট হয়।’

‘অঃ’ বলে ভ্যাবলার মতন তাকিয়ে রইল।

আমি সপ্রতিভভাবে চেয়ারে বসে পড়লাম, যদিও বুক ধুকপুক করছিল। কারণে-অকারণে দুই হাত তুলে চুলের খোঁপা ঠিক করছিলাম। কয়েকবার আড়মোড়াও ভাঙলাম, দীপের নজর আমার প্রতিটি শরীরের বাঁকে। আমিই বেশি কথা বলছিলাম। নিজের এই বেপরোয়া, প্রগলভতা, প্রলুব্ধকারিনী রূপে লজ্জা পেলেও ভালো লাগছিল। ওকে এইভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতায় নিজেই অবাক হচ্ছিলাম। কয়েকবার দীপের পুরুষত্বের অবস্থা দেখার চেষ্টা করলাম, কিছু বুঝতে পারলাম না। কিন্তু এটা বুঝতে পারছিলাম, এইখানে ছেড়ে দিলে দীপের পুরুষত্বের দীপ জ্বলবে না আর আমিও এইভাবে ওদের জন্য বারবার এইসব করতে পারব না। আশা করেছিলাম দীপই আমার কাছে এগিয়ে আসবে। আর ঠিক তখন আমি ওকে পিউকে আদর করার পরামর্শ দিয়ে, দায়িত্ব মুক্ত হব। কিন্তু দীপের দিক থেকে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখে বুঝলাম আমাকেই আর একটু এগোতে হবে। কিন্তু আমি বেশি অগ্রসর হলে দীপ ভয় পেয়ে যেতে পারে আর বেশি লাজুক হয়ে চুপ করে থাকলে হয়ত দীপের দ্বারা কিছু হবেনা। তাই ভেবে চিন্তে প্রতিটি কাজ আমাকেই করতে হবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ, বেশ আদুরে গলায় বললাম ‘বাড়িতে ওর সাথে শুই, এখানে পিউয়ের সাথে শুতাম, তাহলে আজকে কি আমাকে একলা শুতে হবে?’ কপট অভিমানে ঠোঁট ফোলালাম। এই প্রথম যেন দীপের মধ্য একটা আলোড়ন দেখলাম।”

আর থাকতে না পেরে বললাম “অ্যাঁ! তুমি ওকে তোমার সাথে শুতে বললে?”

“আর কি করতাম? পিউয়ের ঘ্যানঘ্যানানি আর সহ্য হচ্ছিল না।”

আমার আত্মবিশ্বাসী বউয়ের এই আত্মরক্ষামূলক ভাব দেখে আর কিছু না বলাই শ্রেয় মনে করলাম। “আচ্ছা তারপরে বল।”

“শোন, তোমাকে এই কথাগুলো বলতে আমাকে বেশ সাহস যোগাতে হয়েছে। তুমি এরকম বাধা দিলে আমার পক্ষে বলা আরও মুশকিল হয়ে যাবে।”

“আচ্ছা, আর বাধা দিচ্ছি না...”

একটু থেমে শিখা আবার স্মৃতিচারণে ডুবে গেলো। “দীপ বেশ উৎসাহের সাথেই বেডরুমে এলো। ঘরে ঢুকে আমি খাটের ধারে ধুপ করে বসে, হাত দুটো মাথার ওপরে তুলে শুয়ে পড়লাম। যেমন ভেবেছিলাম তেমনটাই হল, বুকের একদিক থেকে আঁচল সরে গেলো। তখন যদি তুমি আমার মুখ দেখতে তাহলে তুমিও ভাবতে যেন খেয়াল করিনি! দীপ খাটের ধারে দাঁড়িয়ে রইল, স্থির দৃষ্টি আমার বুকের উপর। এই প্রথম ওর শর্টসে কিছু নড়াচড়া খেয়াল করলাম বলে মনে হল। ঐভাবে শুয়ে থাকতে থাকতে ভাবলাম, এরপরেও যদি কিছু করার চেষ্টা না করে তাহলে নিজেকে ভীষণ বোকা মনে হবে। পিউয়ের চণ্ডালের মতন রাগের কারণটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে এইবার দীপ আর বোকামি করল না।

খাবি খেতে খেতে বলল ‘মানে… বলছিলাম যে… ইয়ে… মানে তোমার আঁচলটা সরে গেছে!’

বোকা আর কাকে বলে! আমি অন্যদিকের আঁচলটা সরিয়ে, বুকের মাঝখানে রেখে, দুটো স্তনই এবার ওর চোখের সামনে খুলে দিয়ে, ন্যাকা সুরে বললাম ‘এরকম?’

তুমি তো বল আমার বুক দেখলে সব পুরুষমানুষ নাকি গলে যাবে! ভাবলাম, সেই প্রভাব যদি ওকে একটু পুরুষ শক্তি এনে দেয়। আমি ওকে চোখের ইশারায় পাশে বসতে না বললে ওখানেই বিস্ফোরিত চোখে দাঁড়িয়ে থাকত। বসা মাত্র আমি ওর একটা হাত আমার বুকে তুলে দিলাম।”

এটা শুনে আমি খাবি খেলাম, ঠোঁটগুলো শুকিয়ে গেলো, শিখা সেটা দেখে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।

তারপর যখন আবার শুরু করল তখন গলায় একটা গ্লানি পেলাম “আমি এতটা যাব নিজেও ভাবিনি। ভেবেছিলাম আমার একটু শরীর দেখে যদি ওর ভালো লাগে এবং তাতে যদি ওদের উপকার হয় তাহলে দোষটা কোথায়? কিন্তু তুমি অনেকদিন নেই, পিউয়ের আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমাকে প্রায় ব্ল্যাকমেল করা, দীপের এই বেচারা অবস্থা সব মিলিয়ে আমার মন কেমন করে দিয়েছিলো। তার ওপরে অতটা ওয়াইন, মাথাটা গুলিয়ে গেছিল। তবে তোমাকে মিথ্যা বলব না তখন নিজের এই দুঃসাহস ভালো লাগছিল, নিজেকে অঘটন পটীয়সী মনে হচ্ছিল, সব মিলিয়ে একটা উত্তেজনাময় পরিস্থিতি।”

শিখার কথাগুলো শুনতে-শুনতে চাপা উৎকণ্ঠা আর ভয়ে ভুগছিলাম। ঈর্ষা, রাগ ও হেয় হয়ে যাবার অনুভূতিগুলো মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল কিন্তু বুকের ধুকপুকুনিটা খালি এই কারণে ছিল না। নিজের মনের থই না পেয়ে বললাম “আমাকে বলেই করলে পারতে এসব, আমার জানা থাকলে এই ঈর্ষা ভাবটা থাকত না মনে।”

“তাই? কি বলতে? হ্যাঁ গিয়ে দীপকে প্রলুব্ধ কর?” ঠোঁট টিপে হাসল শিখা “তুমি যতই নারী স্বাধীনতার কথা বল না কেন, শেষমেশ তুমি কিন্তু একজন পুরুষমানুষ। নিজের বৌ অন্য কারুর সাথে কিছু করলে তখন আঁতে ঘা লাগবেই। এটা আমি আগে থেকেই জানি।”

কথাগুলো সত্যি, কলেজ জীবনে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন করার সময় অনেক জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছি নারী স্বাধীনতার আর সমাজে স্ত্রীপুরুষের সমতা নিয়ে। তারপর বুঝেছি সমতাটাই শেষ কথা না, নারীর সম্মানটা বেশি বড় কথা। এখন বিশ্বাস করি পুরুষের বহুগামিতা যদি সমাজ মেনে নিতে পারে তাহলে নারীর সময় সেটা ভিন্ন কেন? সেটাও মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু নিজের বৌ যখন বলে যে সে ব্লাউজ খুলে এক পরপুরুষের বিছানায় শুয়ে তার হাতটা নিজের বুকের ওপর তুলে দিয়েছে, তখন মাথার মধ্যে সেই কাল্পনিক ছবিটা সব চিন্তাভাবনা, সব বোঝা-জানা এলোমেলো করে দেয়। এরপরেও কিছু ঘটেছে নাকি? আমি বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম।

“আমার বুকে নরম করে হাত বোলাতে বোলাতে দীপ বলতে লাগলো যে আমাকে ওর খুব ভালো লাগে। অনেকদিন আমার কথা ভেবেছে, এইসব। আমার বুকের বৃন্তগুলো ভালোলাগায় কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। যখন তুমি আদর কর, তেমন। মনে হচ্ছিলো চোখ বন্ধ করে তোমার মুখটা দেখি আর কিছুক্ষণ আদর খাই। কিন্তু সেটা না করে বললাম-

‘তুমি তো খুব ভালো আদর করো, আমি তো ভালোলাগায় মরে যাচ্ছি। তাহলে পিউকে আদর করো না কেন?’ জোঁকের মুখে নুন পড়ার মতন অবস্থা হল। বুকের থেকে হাত সরিয়ে আমতা আমতা করতে লাগলো।

‘বিশ্বাস কর আমি পিউকে আদর করতে চাই, কিন্তু পারিনা...’

‘বাজে কথা বোলো না তো! আমি এখুনি বুঝলাম নিজের শরীরে... দিব্বি পারো, বেশ ভালই পারো।’

‘এটা তুমি বলে পারছি, পিউ হলে পারতাম না।’

‘কিন্তু আমি তো দেখি তুমি পিউকে মন থেকে ভালোবাসো।’ এসব কথা যখন হচ্ছে তখন আমার বুক আঁচল দিয়ে ঢাকিনি। এই প্রথমবার তুমি ছাড়া কারুর সামনে লজ্জা বিসর্জন দিয়ে এরকম উন্মোচিত হয়ে শুয়ে ছিলাম। লজ্জা আর ভালোলাগা মিলিয়ে একটা অদ্ভুত অনুভূতি।

‘হ্যাঁ, বিশ্বাস কর পিউকে আমি ভালোবাসি, কিন্তু ওর চাহিদার সামনে নিজেকে বড় ছোট মনে হয়, তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তুমি সব জানো, তোমাকে আর আলাদা করে কি বলব?’

‘আমি যা জানি পিউয়ের কথা শুনে জানি, তোমার মনে কি আছে সেটা জানিনা, তুমি বলো।’

দীপ আমাকে ওর মনের কথা বলতে শুরু করল, কি ভাবে ও বিয়ের আগে একটা নরম, মিষ্টি সম্পর্ক চেয়েছিল। ভেবেছিল ভালবাসা আর নরম আদর দিয়ে জীবন ভরে যাবে, যে ভালোবাসায় উদ্দামতা আর উন্মাদনা থাকবে কিন্তু সেটা মাঝে মধ্যে, ঝড়ের মতন। বাকি দিনগুলো মৃদু হাওয়ার মতন কাটবে। তারপর আমাকে অবাক করে ঝর ঝর করে কেঁদে ফেললো। আমি আঁচলটা টেনে নিয়ে উঠে বসলাম তারপর ওর মাথাটা আমার বুকে টেনে নিলাম।”

আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না, বাধা দিয়ে বলে উঠলাম “গেলো! তোমার ওই বুকে যখন টেনে নিয়েছো তখন তো দীপ দৃঢ় পুরুষমানুষ হয়ে তোমাকে দাবী করবে, এটাই হয়েছিল তো? এই ঘটনার শেষ আমি বুঝতে পারছি।”

“ইশ্! কিছুই জানো না!” রহস্যময় একটা হাসি ঠোঁটের কোন খেলে গেলো। “দীপ আমার বুকে মাথা রেখে কেঁদে গেলো, আর আমি ওর মাথায় বিলি কেটে দিতে লাগলাম। খুব ইচ্ছে করছিল ও আমার যে কোন বুকে মুখ রেখে আদর করুক, আমার থেকে ভালবাসা দাবী করে নিক। কিন্তু কিছুই করলো না, ঐভাবেই কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি ওর মাথাটা কোলে নিয়ে হতবাক হয়ে বসে রইলাম।”

আমাদের শোওয়ার ঘরেও নিস্তব্ধতা নেমে এলো, ও চুপ করে ছিল আর আমি হতবাক হয়ে বসে ছিলাম। যেই প্রশ্নটা আমায় কুরে কুরে খাচ্ছিল সেটা করে ফেললাম-

“তুমি কি ওর প্রেমে পড়ে গেলে?”

একটু ভেবে শিখা বলল “প্রেমটা বিরাট ব্যাপার, অত বলতে পারব না। কিন্তু ভালোলাগা নিঃসন্দেহে আছে।”

“আচ্ছা, বেশ। তারপর?” প্রশ্নটাতে বেশ শ্লেষ ছিল। নিজেরই অবাক লাগছিল যে কেন শুনতে চাইছি?! না জানা তো একদিকে ভালো কিন্তু না জেনেও থাকতে পারব না।

“অত উৎকণ্ঠিত হতে হবে না, যে কাউকেই ভালো লাগুক না কেন, আমার জীবনের প্রেমের মানুষ শুধু তুমি”, ঈষৎ হাসল ও। “কিছুক্ষণ ঐভাবে বসে থাকার পর, দীপের মাথার তলায় বালিশ রেখে আমি বারান্দায় গিয়ে বসলাম। পরের দিন তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে দীপের ঘুম ভাঙিয়ে, ওকে বলে বাড়ি চলে এলাম।”

“বাঁচা গেলো! এখানেই শেষ তো?”

“এখানে শেষ করলে তোমার ভালো লাগবে?”

“না। আমি পুরো ঘটনা জানতে চাই।”

“আমিও তোমাকে পুরো ঘটনা বলতে চাই। না বললে মনে হবে তোমাকে প্রতারণা করলাম। বললে সেটা মনে হবে না।”

মেয়েদের মন পুরুষদের বোঝার বাইরে। আমাকে যদি শিখা এই ব্যাপারটা না বলত, তাহলে আমি কোনোদিন জানতে পারতাম না। চিরদিনই অন্ধকারে বোকার মতন সুখী থেকে যেতাম। কিন্তু ও এই কথা বলার সৎসাহস রাখে, না বলে বোকা বানিয়ে আমাকে হেয় করল না। সত্যিটা যতই কটু হোক না কেন কিন্তু জানার সুযোগ তো পেলাম! সেটাই কম কিসের? আমাদের দাম্পত্যে কখনই দৈহিক শুচিতার কোন বাধ্যবাধকতা ছিলনা, মনের শুচিতার অনেক বেশি মূল্য আমাদের কাছে। আমার সুন্দরী বৌ যে একজন পুরুষমানুষকে এভাবে বিচলিত করতে পারে, সেই ভালো লাগাও ছিল কোথাও। বড়ই অদ্ভুত এই মানুষের মন, একই সময় নিরঙ্কুশ বিপরীত স্রোতের চিন্তা চলে মনে। “তাহলে তারপর বল?”

“পরের দিন বেশ কয়েকটা কাজে ব্যস্ত ছিলাম, ফোনটা ব্যাগেই ছিল, কখন বেজেছে শুনতে পাইনি। দুপুরবেলায় বের করে দেখি বেশ কয়েকটা ফোন এসেছিল, তার মধ্য বেশীরভাগই দীপের। ওকে ফোন করাতে ও এমন ভাব করল যেন পিউয়ের খোঁজ নেওয়ার জন্যই আমাকে ফোন করেছে। যেই আমি বললাম পিউয়ের এখনো রাগ কমেনি ও পরে আসবে, অমনি সঙ্গে সঙ্গে আমি আসছি কিনা জিজ্ঞেস করল। মনে মনে ভাবলাম ‘পথে এসো চাঁদু।’ মুখে বললাম ‘কিছু কাজ আছে আজকে আসা মুশকিল।’ এরপর ওর পেড়াপেড়ি শুরু হল। ওকে বললাম যে তার পরেরদিন যাব কিন্তু থাকব না। দীপ সেটা মেনে নিলো।

পরেরদিন যাওয়ার আগে পিউকে ফোন করে বাড়ি ফিরতে বললাম কিন্তু ও নিজের জেদেই আটকে রইল। ওকে আর জানালাম না যে বিকেলে ওর বাড়ি যাচ্ছি। একটু দেরি করে সন্ধ্যাবেলা করে ওদের বাড়িতে পৌঁছলাম, দেখি দীপ আগেভাগে কলেজ থেকে ফিরে রান্না করে রেখেছে।

‘আমি খাব না দীপ, খেতে গেলে বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যাবে।’

‘আজকে না হয় থেকেই গেলে, কালকে তো আমার ছুটি, আমি তোমাকে গাড়ি করে ছেড়ে আসবো।’

‘তা হয় না, আমি বললাম তো যে থাকব না?’

দীপ আর কথা না বাড়িয়ে চট করে ওয়াইন ঢেলে নিয়ে এলো। যদিও আমি একটা গ্লাস নিয়ে বসে রইলাম ও কিন্তু নিজের জন্য বেশ কয়েকবার ঢালল। আড্ডা চলছিল দুর্বার গতিতে। আমি অনেকক্ষণ পরে বললাম ‘এবার উঠি, দেরি হয়ে যাবে।’ ও আবার অনুনয় বিনয় করতে লাগলো থেকে যাওয়ার জন্য। আমি তখন প্রথমবার ঘড়ি দেখার ভান করে বললাম ‘ইশ্! অনেক দেরি হয়ে গেছে। এবার কি করে যাব?’

‘তাহলে চল আমি তোমাকে ছেড়ে দিয়ে আসি।’ দীপের সরলতায় আমার প্রায় হাসি পেয়ে গেলো। কিন্তু তোমাকে সত্যি বলছি, ওর এই নিষ্পাপ মন দেখে ওর প্রতি ভালবাসা বেড়ে গেলো।

‘না থাক! তোমাকে আর এতো ওয়াইন খাবার পর ড্রাইভ করতে হবে না।’

‘কিন্তু তোমাকেও তো একা ছাড়ব না এতো রাতে!’

‘তুমি না!’ কপট রাগে বললাম ‘আবার আমাকে শুধু শাড়ি পরিয়ে রেখে দেবে!’

‘তাহলে কি পরা যায়?’ ওর অকৃত্রিম চিন্তা দেখে মায়াতে বুক ভরে গেলো।”
Like Reply
#3
শিখার কথা শুনে আবার নানান চিন্তা ছেঁকে ধরল। মেয়েদের মায়া-মমতা এমন একটা আবেগ যেটা বোঝা বোধহয় কোন পুরুষেরই সাধ্য নয়। যেভাবে চাইনা ঘটনাটা যে সেইভাবেই শেষ হবে সেটা বুঝে গেলাম। শিখা যে আবেগপ্রবণ সেটা জেনেই ওকে বিয়ে করেছি। ওর আবেগপ্রবণতা আমার ভালো লাগে। কিন্তু সেই আবেগই যে নানাভাবে নানান দিকে কাজ করবে সেটাই তো স্বাভাবিক! আমার ইচ্ছে অনিচ্ছে সেখানে কোন ধারা বদলাতে পারবে না। শিখার কথায় এটা পরিষ্কার যে পিউয়ের আকাঙ্খা অনুযায়ী ও দীপের পুরুষত্ব মেরামত করতে কোমর বেঁধে কাজে নেমেছে এবং এই কাজ সফল করার জন্য যা দরকার সব করবে। যে অতি মেয়েলীপনাগুলো করেছে সেগুলো ওর স্বাভাবিক স্বভাব চরিত্রে পড়ে না। যা করছে সবই পিউয়ের জন্য। পিউয়ের উপর রাগে মাথাটা জ্বলে উঠলো। নিজের বরকে নিজেই ঠুকে ঠাকে দাঁড় করালে পারে! অন্য কাউকে দিয়ে কেন? আর দীপটাই কেমন ঢ্যামনা মাল? নিজের মেশিন নিজে চালু রাখতে পারে না? পরক্ষনে মনে হল দীপ তো হাবা ওর কোন রোলই নেই এইখানে। যা করছে এই দুই বান্ধবী। তারমধ্যে শিখা আত্মহত্যার হুমকিতে এইসব করছে। যত নষ্টের গোড়া ওই পিউ! ওর প্রতি রাগে মন ভরে গেলো।

“তোমার গুণধর বান্ধবী একদিকে তোমাকে এক কথা বলে আর অন্যদিকে তলে তলে আমাকে অন্য কথা বলে! আমাকে যে সব কথা বলে তাতে তো মনে হয় আমার সাথে প্রেমের খেলা খেলতে চায়। একদিন তো অফিসে ফোন করে মিস ইয়ু মার্কা কথা বলছিল। কাজে ব্যস্ত থাকায় বেশি কথা বলিনি সেদিন।”

“কই? তুমি বলোনি তো এই কথা আমাকে!”

“ও তো আমাকে তেমন কিছু সোজাসুজি বলেনি, হেঁয়ালিতে কথা বলেছে। বললেও কি বলতাম? ওর সব কথারই একটা সরল মানে বের হয় কিন্তু আবার প্রত্যেকটা কথা দুরকম অর্থ দাঁড়ায়। তোমাদের যা বন্ধুত্ব তাতে আমি মাঝখান থেকে খারাপ হয়ে যেতাম।”

“অদ্ভুত কথা বলো তুমি! পিউ যে তোমার জন্য হেদিয়ে মরে যায় সেটা আমি অনেকদিন জানি। ও আমাকে অনেকভাবে তোমার কথা বলেছে। আর শুধু পিউ কেন আমার অনেক বান্ধবীই তোমার জন্য পাগল। এইসব ডাইনীদের থেকে দূরে রাখার জন্যেই এসব কথা বলিনা তোমায়। তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে ভালবাসার মানুষ, আমার সবকিছু। তুমি যদি আমাকে সব কথা না বলো তাহলে এরা তোমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যাবে।”

কৌতুকের হাসি হেসে বললাম “তুমিও তো আমাকে বলোনি।”

“দেখো! আমার সব কথা তোমার না জানলেও চলবে কিন্তু তোমার প্রতিটা ব্যাপার আমার জানা চাই।” আদুরে গলায় এই অদ্ভুত আবদার শুনে হেসে ফেললাম।

“তাহলে পিউয়ের আসল মতলবটা কি?”

“তুমি যদি আগে বলতে যখন ও আমায় আত্মহত্যার কথা বলছিল তখন চেপে ধরতে পারতাম। অবশ্য এটাও হতে পারে ও চায় তুমি ওকে মা হতে সাহায্য করো। আমি ওর বরকে সাহায্য করছি না দেখে হয়ত তোমার শরণাপন্ন হবার চেষ্টা করছিল।”

“কিন্তু তুমি তো বলেছিলে পরপুরুষের কথা বললে ওর নিজেকে বেশ্যার মতন লাগে।”

“সেটা অন্য পুরুষমানুষ। তোমার কাছে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই আসবে।”

“বাজে বকা বন্ধ কর।”

“যা বলছি সেটাই সত্যি। মেয়ে হলে বুঝতে পারতে।”

“তাহলে আমার কাছে আসতে দাওনি কেন? তোমার এতো ভালো বান্ধবী! তার জন্য তুমি এতো কিছু করেছ! তা না করে আমার কাছে আসতে দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত!”

“একবার আসার চেষ্টা করেই দেখুক না! চোখ উপড়ে নেবো। তুমি খালি আমার!”

এই অদ্ভুত যুক্তিগুলোই কি মেয়েদের অনন্ত ভালবাসা! যা কিনা বিধাতারও অজানা?

একদিনের জন্য দিল্লী গিয়েছিলাম এবং অন্যান্য কাজের চাপে পরের দুদিন আর কথা হল না। সপ্তাহান্তে দুদিন ছুটি ছিল, সকালে প্রাতঃরাশ সারার পর শিখাকে চেপে ধরলাম “তোমার কথা তো শেষ করলে না, বললে না তারপর কি হল দীপের ওখানে?”

“তুমি সত্যি শুনতে চাও সোনা?”

“যা শুরু হয়েছে, সেটা শেষ তো হতেই হবে।”

“তোমার অবস্থা আমি বুঝতে পারছি। বউকে অবাধ স্বাধীনতা আর উজাড় করা ভালবাসা দিয়েছো। মেয়ে হয়েও যে আমি যে কোন অংশে কম নই আমার সে আস্থার ডানার জোর তুমি। মেয়েরা সমাজে সব কিছু করতে পারে, পুরুষের আর নারী যে সমান সেই বিশ্বাসের প্রেরণা তুমি। এতো আধুনিক ভাবধারা থেকেও কিছু সংকীর্ণ চিন্তা-ভাবনার আবেগ থেকে বেরোতে পারিনি। আমি সব কিছু করতে পারি, কিন্তু তুমি অন্য মেয়েকে ছুঁলে সেটা আমি মেনে নিতে পারব না! নিজেরই এই দুরকমের চিন্তায় আমি মরমে মরে আছি। পিউ তোমাকে ফোন করে প্রস্তাব দিয়ে যদি ভুল করে থাকে তাহলে আমি দীপের সাথে যা করেছি সেটা কি বলব? কিন্তু আমি যা করেছি সেটাতে কোন দোষ দেখি না। এটাই তুমি করলে মেনে নিতে পারব না সেটা আমি জানি। আর এই জানাটাই গ্লানির।”

“হ্যাঁ পারো, তোমার যা ইচ্ছে করতে পারো। সেটা ছিল এবং থাকবে। কিন্তু খুলে না বললে তো কিছুই বুঝতে পারব না।”

“আচ্ছা বলছি, কিন্তু কোথায় ছিলাম সেটাই তো মনে করতে পারছি না!”

“ওয়াইনের টোয়াইন খেয়ে, ব্লাউজ ছাড়াই, খালি শাড়ি পরে ওখানে আবার থাকার চেষ্টা করছিলে… মানে আড্ডা মারার জন্য আর কি!”

আমার তির্যক মন্তব্য উপেক্ষা করে, শিখা সেদিনের কথা আবার বলতে শুরু করল।

“যাই হোক, ওকে চিন্তাগ্রস্ত রেখে আমি শাড়ি পরতে গেলাম। যখন নিজেকে নগ্ন করে পোশাক বদলাচ্ছিলাম তখন নিজের এই অভিসারিণীর রূপে নিজেই মুগ্ধ হচ্ছিলাম। তোমার ছোঁওয়া, গন্ধ আমার মনকে আবিষ্ট করে রেখেছিল। নিজের মনই নিজেকে প্রতারণা করছিল, মনে হচ্ছিল তোমার কাছে নতুন করে যাচ্ছি। কিন্তু মাথায় ছিল যে দীপের কাছে যাচ্ছি। ওর সব গুণই আমাকে ওর দিকে টানছিল, আমায় পাওয়ার জন্য গত কদিন বারবার ফোন করেছে কিন্তু আমি পছন্দ করছি না মনে করে কোন চাপ সৃষ্টি করেনি। এদিকে এমন একজন মানুষকে পিউ কেন পিষে রাখতে চায়? একথার উত্তর পাইনি। এ কদিনে দীপের সাথে কথা বলে আমি বুঝেছি একই ঘটনা দুজন দুভাবে ব্যাখ্যা করে আর সেটাই বোধহয় পিউয়ের বোঝার সীমাবদ্ধতা! মনে হল, পিউয়ের মনের এমন অনেক অন্ধকার কোণাই আমার অচেনা। দীপের কাছে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি সেটা নিয়ে মনে কিন্তু কোন দ্বন্ধ ছিল না, উলটে ভালোলাগা ছিল। সেদিন যেন শাড়ীটা আরও মোহিনী রূপে পরছিলাম, শরীরটাকে রহস্যময়ী করে তুলেছিলাম কিন্তু ইচ্ছে ছিল দীপ মনটাকে দেখুক।

বারান্দায় এসে দেখি দীপ ওয়াইনের বোতল অনেকটাই শেষ করেছে। ওর হাত থেকে গ্লাসটা রেখে বললাম ‘অনেক হয়েছে, আর না। আমাকে এখানে ধরে রেখে তুমি ঘুমিয়ে পড়বে সেটা চলবে না মশাই!”

‘তোমাকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধরে রাখতে চাইনি, বিশ্বাস করো’ কথাগুলো হাল্কা জড়ানো ছিল।

‘আমার ইচ্ছে বলে আর কিছু নেই বোধহয়। তুমি আমায় এমন করে আমার সত্ত্বাকে অধিগ্রহণ করেছো যে আমি তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চাইলেও যেতে পারব না।’ কথাটা শুনে আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আমি ওকে খাবার টেবিলে নিয়ে গেলাম। খাবার খেয়ে ওয়াইনের প্রভাব একটু কমলো। ওকে শোবার ঘরে যেতে বলে আমি তোমার সাথে ফোনে কথা সেরে ওর কাছে গেলাম। দীপ বোধহয় উন্মুখ হয়ে ছিল। আমি ঘরে ঢুকতেই আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে–গলায় চুমু দিয়ে ভরিয়ে আমাকে ব্যতিব্যস্ত করে দিলো। তারপর আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিলো। আমি শুয়ে পড়লাম ও আমার পেটে হাত দিলো, নাভির ওপর।

‘তোমায় ভালোবাসি শিখা।’

‘আমিও তোমাকে ভালোবাসি । আমি পিউকেও ভালবাসি, হয়তো তোমার থেকেও বেশি ভালবাসি ওকে।’

এক মুহূর্ত চুপ থেকে বলল ‘সেটা আমি কিছুটা জানি, আর কোথায় যেন এটা মনে হয় তুমি ওর জন্যই সব করছো। কেন মনে হয় জানিনা, কিন্তু হয়।’

আমি অবাক হয়ে সত্যি কথাই বললাম ‘তোমার বউয়ের ইচ্ছে আমি তোমাকে সবরকম ভাবে দাঁড়াতে সাহায্য করি।’

‘আমাদের সব কথা পিউ তোমাকে বলেছে?’

‘তোমাদের কথা আমি পিউয়ের কাছে শুনেছি, কিন্তু তাই বলে আমার বন্ধুর সব কথা আমি সমর্থন করিনা। ও অনেক কিছু ভুল করে।’

‘তোমাকে আমার কাছে পিউ আসতে বলেছে?’ ওর হাতের ছোঁওয়ায় মনের দ্বিধাগ্রস্ত ভাবটা অনুভব করলাম।

‘এক সময় বলেছিল, আমি না করে দিয়েছিলাম। ও চাইতো আমি ওর কাজটা করে দি। তারপর তোমাকে চিনলাম... এখন আমি তোমার কাছে আছি। সেটা না পিউ জানে, না আমার বর...’

‘তাহলে এখন নিজের জন্য এসেছো?’

‘সেটাও না, আমি আছি কারণ তোমাকে ভালো লাগে বলে।’

এবার কিছুটা স্বছন্দে আমার বুকের আঁচলটা পুরো সরিয়ে আমার দুই স্তন নিজের হাতের চেটোয় অধিকার করল ‘সত্যি বলছো?’

‘হ্যাঁ।’

যখন দীপের সাথে পরকীয়া শুরু করেছিলাম তখন মনে হয়েছিল যে আর যাই করি না কেন ওকে ঠোঁটে চুমু খাব না, জানি অদ্ভুত এই শুচিতার বিশ্লেষণ, বাকি সব কিছু করে চুমু না খাওয়া! কিন্তু আমি কখনোই ভাবিনি সব কিছু হবে। হাত আর চোখ দিয়ে যতটা আদর হয় অতটাই হবে এমন একটা চিন্তা ছিল। কিন্তু দীপ যখন বুকের থেকে হাত সরিয়ে আমাকে অল্প তুলে দুইহাতে জড়িয়ে আমার বুকের ওপর শুয়ে ওর ঠোঁটগুলো আমার কাছে নিয়ে এলো, তখন সেই ভঙ্গীটা এতো চেনা লাগলো যে ওটা তুমি না দীপ সেই চিন্তাটা মাথার মধ্য গুলিয়ে একাকার হয়ে গেলো। আমি চোখ বন্ধ করে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলাম। অচিরেই আমার ঠোঁটগুলো দাবি করল ও। আমিও আমার ঠোঁট খুলে ওর দাবি স্বীকার করলাম। আমার মাথার মধ্য যেন হাজার রঙিন আলো জ্বলে উঠল।”

নিজের বউয়ের কথা শুনে অনেকক্ষণ ধরে একটা অস্বস্তি আমাকে গ্রাস করছিল, থাকতে না পেরে বলে উঠলাম “সেকি, তুমি ওকে কিস করলে? তার মানে তো বেশ ভালোবাসো!”

“সেদিন আমি তোমাকে ভালবেসে দীপকে চেয়েছি না দীপের প্রতি অনুরাগে তোমাকে চেয়েছি, সেটা নিজেই জানি না!”

“তোমারা মেয়েরা সব ব্যাপারটা এমন কমপ্লেক্স করে দাও যে আমরা পুরুষরা বুঝে উঠতে পারিনা। মোদ্দা কথা যেটা জানতে চাই তুমি কি ওকে আমার মতনই ভালোবাসো?”

“তোমার থেকে উঁচুতে কেউ নেই আমার জীবনে। তোমার থেকে বেশি কাউকেই আমি ভালবাসতে পারব না। তুমিই শুরু, তুমিই শেষ।”

“হুম!”

“তুমি, নিজেকে এদের সাথে তুলনায় দাঁড় করিও না। আমার জীবনের এই ঘটনাটা বলছি কারণ তুমি আমার সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা, আমার স্বামী। সেখানে এদের কোন যায়গাই নেই।”

কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার শুরু করল শিখা।
“চুম্বন মুক্ত হলেও, আলিঙ্গন মুক্ত করল না। আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখে আদর করতে থাকল কখনো খুব হাল্কা করে হাত বোলায় কখনো একটু জোরে ঘষে দেয়, আমার পুরো শরীরে ওর দামাল হাতটা ঘুরছিল। হাতের সাথে ওর চোখগুলো আমাকে মুগ্ধভাবে দেখছিল আর আমি সেই মুগ্ধতা দেখছিলাম। যখন ওর ঠোঁটটা দৃঢ়ভাবে আমার স্তনবৃন্তকে ঘিরে ধরল, তখন আমার শরীরটা কেঁপে উঠে নিজের অজান্তে ভালোলাগার নিদর্শন দিলো। আমি ওকে পিঠে হাত বুলিয়ে উৎসাহ দিতে লাগলাম। যখন ও নিশ্বাস নেবার জন্য উঠলো তখন আমি ওর জামাটা খুলতে ইঙ্গিত করলাম। জামাটা খুলে আমাকে দেখছিল চুপ করে বসে। আমার অন্য স্তনটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললাম-
‘এইটা কি দোষ করল, এটাকে আদর করবে না?’

দীপ বীরবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ল। ওকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে দৃঢ় করার জন্য আমি যা যা করছিলাম সেটা আমার নিজের কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য হবে বলে ভাবিনি, কিন্তু সেই রাতে নিজের নির্লজ্জ ব্যবহার আমার ভালো লাগছিল। লজ্জা, রোমাঞ্চ মিলিয়ে সে এক অদ্ভুত অনুভূতি। সারা শরীরে যেন তোমার হাতের ছোঁওয়া। ওর শরীরের গন্ধ, তোমার ছোঁওয়ার অনুভূতি মিলিয়ে আমি এক রঙিন দুনিয়ায় ভেসে যাচ্ছিলাম। আমি দু জন পুরুষকে একসাথে কামনা করছি? না কি তোমার সাথে প্রথমবারের অনুভূতি আবার পুনর্জীবিত করছিলাম? কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এটা যতটা আমার কাছে পুনরায় প্রাপ্তি ছিল, ততোটাই নতুন এক অনুভূতি। দুই বিপরীত আবেগে আমি জর্জরিত হচ্ছিলাম। থাকতে না পেরে এক চকিতে উঠে ওকে দাঁড় করিয়ে ওর লাউঞ্জ প্যান্টটা খুলে দিলাম। এক সুন্দর বিস্ময় আমার জন্য অপেক্ষা করছিল, দীপের পুরুষ সত্বা নিজের অস্তিত্ব জানিয়ে, সব ভয়-দ্বিধা কাটিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তোমার মতন অতো শক্ত না কিন্তু আর একটু শক্ত হলেই যে কোন নারীর যোনি দ্বার ভেদ করতে পারবে। খুব ইচ্ছে করছিল হাতে নিয়ে আরও শক্ত করে দিতে। কিন্তু আমার এই অরক্ষনশীল পদক্ষেপে যদি উগ্রতা মনে করে আবার ভয় পেয়ে কচ্ছপের মতন হারিয়ে যায়! সেটা ভেবে কিছু করলাম না। কিন্তু এখানে থেমে গেলে চলবে না, ওকে সাহস দিতে হবে মনে করে ওর সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসলাম। মুখ দিয়ে করাটা যে এক ধাপে যেকোনো পুরুষের পুরুষত্ব বাড়িয়ে দেয় সেটা তুমি আমাকে বলেছ। যে সীমা ভেবে এইসব শুরু করেছিলাম সেগুলো নিজেই সব অতিক্রম করেছি তাই মুখ দিয়ে আদর করাটা কোন বাধা বলে মনে হল না। তোমার যেমন একটা পুরুষালি বুনো গন্ধ আছে, দীপের গন্ধটা সেরকম না। ওর গায়ের গন্ধটা মিষ্টি আর এমনিতেও হাতে-পায়ে পরিষ্কার মানুষ তাই আমার কোন ঘেন্না হলো না। আমি সামনে বসাতেই দীপ যেন আরও একটু শক্ত হল। নিজেকে বলছিলাম এটা হলেই শেষ, দীপকে দাঁড় করিয়ে আমি সরে যাবো। ও যে পারে সেটা আমি দেখিয়ে দিয়েছি বাকি ওরা নিজেরা ঠিক করে নেবে, কিন্তু মন যেন আরও কিছু চাইছিল। এই চাহিদার জন্য সেই মুহূর্তে আমার মনে কোন গ্লানি ছি্লোনা।
এই আবেগের ধারা চলতেই থাকতো যদি তক্ষুনি পিউয়ের ফোন না আসতো।”

সম্মোহিতের মতন শিখার কথা শুনছিলাম। একদিকে প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা, কারণ আমি জানি কি হতে যাচ্ছে। অন্যদিকে বউয়ের জন্য গর্ব যে ও এরকম দৃঢ়ভাবে একজন পুরুষমানুষকে চালনা করে তাকে উৎসাহ দিচ্ছে। কিন্তু মনের কোথাও যেন এই প্রশ্নটাও ছিল যে শিখার যৌনতার আর এক ধাপ অতিক্রমে আমাদের জীবনের মোড় আরও ভালো দিকে নিয়ে যাবে না ধ্বংসের দিকে?
Like Reply
#4
“সেদিন রাতে ওদের বারান্দায় এইভাবে দাঁড়িয়েছিলাম। দীপকে হাত ধরে নিয়ে গেছিলাম ..."

সে দিন পর্যন্ত আমরা পরস্পরকে যতটা চিনতাম এক রাতে তার অনেক বেশি চেনা হয়েছিল। যেন এক জীবনের চেনা এক রাতে। শিখাকে চেনার সাথে নিজের মনের গভীর অতলের সন্ধান পেয়েছিলাম। চিন্তার যে এই বিপুল গভীরতা আছে তার মাত্র এক অংশের আভাষ পেয়েছিলাম। তাই জড়িয়ে ধরে কথা না বলে চুপ করে থাকতে কোন অসুবিধে হয়নি। মনে হয়নি অস্বস্তি কাটানোর জন্য সময় এর ফাঁকটাকে কোন কথা দিয়ে পূর্ণ করা দরকার। পরস্পরের সান্ন্যিদ্ধে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। ভোরের প্রথম আলোর সাথে চোখ খুলে দেখি শিখা আমার পাশে বসে আমাকে দেখছে। ওর চোখের প্রগাঢ় ভালবাসা ভোরের আলোর সাথে মিশে আমার চারিধারে এক স্ফটিক গোলকের মতন ঘিরে রেখেছিল। জীবনে কিছু মুহূর্ত আসে যেখানে ভালবাসার চাউনি আর কোন সন্দেহের অবকাশ রাখে না। আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার মুখ চুমায় ভরিয়ে দিয়ে বলল “ছুটি আছে। চল কোথায় বেড়িয়ে আসি।” যা বলা সেই কাজ। খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমরা। পুরনো গাড়িটা বেচে একটা নতুন বড় গাড়ি কিনেছিলাম। এসইউভি নিয়ে সবসময় বেড়ানোর ইচ্ছে থাকত আর নতুন একটা জায়গায় গিয়ে শিখাকে নতুন করে পাবার ইচ্ছে হল। কোথায় যাচ্ছি জিজ্ঞেস করাতে বললাম “গেলেই দেখবে, সারপ্রাইজ!”

ঘণ্টা চারেকের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম বড়ন্তি, পুরুলিয়াতে লাল মাটির একটা গ্রাম। আসানসোলের পরে মুরাডি স্টেশন, সেখান থেকে কিছুদূরে এই গ্রাম। কয়েকদিন আগে এক সহকর্মীর কাছে শুনেছিলাম এই জায়গার কথা। উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিল, এসে দেখলাম ভুল বলেনি। রিসর্টের দিকে না গিয়ে সোজা চলে গেলাম জলাশয়ের দিকে। বড়ন্তি গ্রামের কিছুটা অদূরেই মুরাডি হ্রদ, বিশাল এই জলাশয়য়ের বুকে তার পাশে সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা টিলাটি ছায়া ফেলেছে। চারিদিকে শাল, শিশু, পলাশের জঙ্গল, থেকে থেকে পাখিদের ডাক কয়েক ঘণ্টার মধ্য অন্য এক জগতে পৌঁছে গেছি মনে হল। সেই গভীর বিশালতার সামনে দাঁড়িয়ে এই ক্ষুদ্র জীবনের চাওয়া পাওয়া বড়ই অর্থহীন মনে হল। আমায় জড়িয়ে, কাঁধে মাথা রেখে দাঁড়িয়ে থাকা শিখার জন্য এই বিশালতার এক অংশ চেয়ে নিলাম।
বন্ধুর থেকে পাওয়া রিসর্ট ম্যানেজারের নম্বরে ফোন করেছিলাম আসার পথে, পৌঁছে দেখি সে নিজেই দাঁড়িয়ে আছে অভ্যর্থনার জন্য, উনি নিজেই এলেন আমাদের ঘর অবধি পৌঁছে দিতে, তারপর কিছুক্ষণ খেজুরে আলাপ করে বিদায় নিলেন। বেশ সুসংবদ্ধ ভাবে তৈরি রিসর্টটি, আমাদের যে ঘরটা দিলো সেটা সুসজ্জিত এবং অন্যদের তুলনায় খাস আর একটু নিরিবিলিতে। দরজা বন্ধ করা মাত্রই শিখা আমার গলা জড়িয়ে ঝুলে পড়ল।

“উফফ! কি লোকরে বাবা! আমি ভাবছিলাম আর যাবে না, এখানে দাঁড়িয়েই আড্ডা মারবে। কি সুন্দর জায়গা গো! তুমি জানলে কি করে?”

“এরকম সারপ্রাইজ মাঝে মাঝেই দিতে হয়, না হলে সুন্দরী বউয়ের স্তাবকদের কাছে হেরে যেতে হবে যে।”

“কোন স্তাবকই তোমার ধারে কাছে পৌছতে পারবে না!” কপট রাগ দেখিয়ে ক্ষান্ত হলো না। এলোপাথাড়ি ভাবে আমাদের জামাকাপড় খুলতে খুলতে প্রায় ধাক্কা মেরে আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো। চোখে প্রচণ্ড পাওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে আমার ওপর বসে নিজেকে বিদ্ধ করে আদিম সেই খেলা শুরু করল। ভালোবাসার আর চাওয়ার আবেগে বয়ে গেলাম আমরা। চরম মুহূর্তে পৌঁছানোর আগে আমার দিকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল “তুমি শুধু আমার।” পুরো ভালবাসা ঢেলে বললাম “আর কারুর না।”

মুরাডির বুকে সূর্যাস্ত দেখে ফেরার পর শিখা গা ধুয়ে এসে খালি গয়না পরে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল। আমাদের কটেজটা একপেশে তাই একদম নিরিবিলি। বিয়ের কিছু বছর পর থেকে আমরা সাহস করে প্রকাশ্যে এই নগ্নতার খেলা খেলেছি। কখনো আলো আঁধারির আর কখনো নির্জনতার সুযোগ নিয়ে। তাই আশ্চর্য হলাম না, কিন্তু আশ্চর্য হওয়ার পালা এলো ওর পরের কথা শুনে।

“সেদিন রাতে ওদের বারান্দায় এইভাবে দাঁড়িয়েছিলাম। দীপকে হাত ধরে নিয়ে গেছিলাম, যাতে আমাকে দেখতে পারে।”

“সে কি? আমাকে বলোনি তো!”

“পুরো কথা তো বলাই হলোনা গতকাল, যাই হোক এটা পরের ঘটনা আমি কালকে যেখানে শেষ করেছিলাম সেখান থেকে শুরু করি।”

ঘটনাটার প্রথম থেকেই মনের কোণায় একটা ইচ্ছে ছিল যে এর পরে আর যেন কিছু না থাকে। কিন্তু এটাও জানতাম যে ব্যাপারটা এতো সহজে শেষ হওয়ার না, গতকালের বলা ঘটনার পরেও গড়িয়েছে। আর শেষ অবধি জানার কৌতূহল ছিল প্রচণ্ড।

“পিউয়ের ফোন আসতেই দীপের শিথিলতা শুরু হল। ফোন তুলতেই ওর ঝাঁঝালো সুরে, কড়া গলায় কথা শুনতে পারলাম। পিউ কোন ভণিতা না করেই দীপের সাথে ঝগড়া শুরু করল। ঝগড়া ঠিক বলা যায় না, কারণ ও পেরে উঠছিল না পিউয়ের বাক্যবাণের জ্বালায়। আর আমি হতাশা নিয়ে দেখতে লাগলাম যে দীপ শিথিল হয়ে কুঁকড়ে একদম ছোট হয়ে গেলো। পিউয়ের ওপর রাগে আমার সর্বাঙ্গ জ্বলে যাচ্ছিলো। তখন প্রায় কেঁদে ফেলার মতন অবস্থা আমার, এ কদিনের সব পরিশ্রম এক ধাক্কায় ধূলিসাৎ করে দিলো। রাগ আর কান্না মিলিয়ে মাথা খারাপ হওয়ার উপক্রম, তোমার ওপরও রাগ হচ্ছিলো। যত বাজে কথা আমি নাকি সবচেয়ে সুন্দরী, আর এদিকে পিউয়ের মতন একজন কেউ একটা ফোনে আমার সব আবেদন উড়িয়ে দিলো। এই সব ছাপিয়ে দীপকে না পাওয়ার কষ্ট ছিল যেটা আমাকে তখনও লজ্জা দিয়েছিলো আর এখন বলতেও লজ্জা লাগছে। ওদের ফোনে কথোপকথন শেষ হতে হতে দীপের পৌরুষ গুটিয়ে প্রায় হারিয়ে গেছিল। ও ফোন রেখে খাটের উপর দু পা চিপে বসে রইল। তখন রাগে আমার দুচোখ জ্বলছিল, নিঃশ্বাসটা গরম লাগছিল। তখন আমি আমার ব্যাগ থেকে তোমার কিনে দেওয়া পায়ের মল দুটো আর গয়না পরে নিলাম। দীপ মুখ নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে ছিল। মল পরে হেঁটে গেলাম ওর দিকে, আওয়াজ শুনে চকিতে মুখ তুলে তাকাল। আমি ধীর গতিতে শাড়ীটা খুলে এক গা গয়না আর প্যান্টি পরে ওর সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম। ওর চোখে মুখে এইবার আত্মপ্রত্যয়ের একটা ছায়া দেখলাম। অভিভূত হয়ে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষণ ওইভাবে দাঁড়িয়ে ওর মুগ্ধতা উপভোগ করে, হাত ধরে নিয়ে গেলাম বারান্দার দিকে। দীপ অবাক চোখে আমাকে অনুসরণ করল। রাস্তার আলো, বারান্দায় আলো আঁধারির খেলা খেলছিল। বারান্দার দরজার কাছে আসতেই দীপ ভয় পেয়ে আমার হাত ছাড়িয়ে নিলো। আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমার প্যান্টি খুলে ফেলে সম্পূর্ণ নির্বস্ত্র অবস্থায় বারান্দার রেলিং এর কাছে দাঁড়ালাম। রাস্তার দিকে মুখ করে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি ও ওখানেই দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ভয়, বিস্ময় আর কামনা মেশানো দৃষ্টিতে।”

“তোমার কুহকিনী রূপের জৌলুশে ও বেচারা তো কিছু ভাবার সুযোগ পায়নি!” না হেসে পারলাম না।

“সেটা তো তোমার ভালোলাগার জায়গা, গর্বের জায়গা; তাই না?”

কথাটা ঠিক, শিখা আমার চোখে অদ্বিতীয়া নারী, ওর সৌন্দর্যের মায়াজাল কাটিয়ে যেতে পারবে এরকম পুরুষ তৈরি হয়নি। তাই ছোট্ট করে “হ্যাঁ” বললাম। কিন্তু এই সম্মতির মধ্যে এতটা ঈর্ষা লুকিয়ে থাকবে জানতাম না। সেটা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরে শিখা ঈষৎ হাসল, কিন্তু সেই হাসিটা চোখের সমবেদনা লুকিয়ে রাখতে পারল না। ও স্যুইটের শোবার ঘরের দিকে পা বাড়াল, আমিও অনুসরণ করলাম। নিবিড় ভাবে আমাকে জড়িয়ে, বিছানায় শুয়ে আবার শুরু করল।

“বুঝতে পারছিলাম, এইভাবে ঝুঁকি নিয়ে আমার নির্বস্ত্র হয়ে বারান্দায় দাঁড়ানোতে উত্তেজনা থাকলেও ভয়টা বেশি ছিল দীপের মনে। ওর শিথিলতা আগের থেকে কম হলেও, বীর বিক্রমে পুরুষ সিংহ হয়ে উঠতে পারেনি।

আবার ঘরে এসে ওকে জড়িয়ে বললাম ‘আমার ঘাড়ে আর গলায় একটু জিভ দিয়ে আদর করোনা গো’ বলে ওকে হাল্কা ইশারা করলাম আমায় বিছানায় নিয়ে যেতে। আমার ওপর শুয়ে আমার ঘাড়ে, গলায়, বুকে চুমু খেয়ে, জিভ দিয়ে চেটে আমায় ব্যতিব্যস্ত করে দিলো। বিনা বলাতেই ওর হাতগুলো নিশ্চল ছিল না, আমার সারা শরীরে দৌরাত্ম করে বেড়াচ্ছিল। ওর ভালোবাসার ছোঁওয়ায় আমি ভিজে যাচ্ছিলাম। মন বলছিল আজ যা হবার হয়ে যাক। আমি ওর পুরুষাঙ্গে হাল্কা করে হাত দিলাম, আমাকে পুরোপুরি বিদ্ধ করে ভরিয়ে দেবার মতন শক্ত হয়নি কিন্তু কিছুক্ষণ আগের তুলনায় অনেক বেশি জীবনীশক্তি ছিল। ও একটু থতমত খেয়ে নিশ্চল হয়ে গেলো, কিন্তু সরে গেলো না। বেশ কিছুক্ষণ হাত দিয়ে আদর করেও সেই শক্তি বাড়ল না বরং কিছুটা যেন দমে গেলো। এরপর কি করতে হবে ভেবে ওকে আমি চিত করে শুয়ে ওর পৌরুষের দিকে মুখ নিয়ে গেলাম, আমার গরম নিশ্বাস পড়ে ওর লিঙ্গটা কেঁপে উঠলো। ওর শরীরের মিষ্টি গন্ধে ভেবেছিলাম মুখে নিতে পারব, কিন্তু যেই মুহূর্তে মুখ খুলে ওর লিঙ্গটা মুখে নিতে গেলাম তখন আমার গা পাকিয়ে বমি উঠে আসল, চোখে জল ভরে গেলো। মনে প্রচুর সাহস সঞ্চয় করে আমার খোলা মুখে ওর পুরুষাঙ্গ ঢুকিয়ে নিলাম।”
একটু থেমে ধাতস্থ হল শিখা, হয়ত মন থেকে সেই ঘেন্না পাওয়ার স্মৃতি মোছার চেষ্টা করল।

“যাই হোক, মুখ দিয়ে আদর করাতে কাজ হল। চড়চড় করে বাড়তে লাগলো দীপ। আর আমি এক পরপুরুষ, আমার বান্ধবীর বরের লিঙ্গ মুখে নিয়ে মনের দুইরকম ভিন্নধর্মী চিন্তায় বিভক্ত হয়ে গেলাম। দীপকে শক্ত করে দাঁড় করানো আমার প্রধান উদ্দেশ্য সফল হয়েছে, আমার উচিত এখানে থেমে ওকে বোঝানো যে শক্ত না হতে পারা অনেকটাই ওর মনের ব্যাপার। ওকে এর পর থেকে পিউয়ের সামনে আত্মপ্রত্যয়ের সাথে দাঁড়াতে হবে এবং পিউকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, সে একজন বিরাট পুরুষ। কিন্তু অন্যদিকে এইখানে থেমে যাবার কোন ইচ্ছেই ছিলনা।“

একবার আমার মুখটা তন্ন তন্ন করে চোখ দিয়ে খুঁজে নিয়ে শিখা বলল “যখন এইভাবে নিজের মনে দ্বন্দ্ব চলছে, তক্ষুনি আবার ফোনটা বেজে উঠলো। এবং সেই মুহূর্তে উপলব্ধি করলাম দীপের কাঠিন্য কিছুটা কমলো। এইবার কিন্তু আমার ফোনটা বেজে উঠেছিল। আমি হাত বাড়িয়ে ফোন তুলে দেখি তুমি ফোন করেছো। দীপের লিঙ্গটা মুখ থেকে মুক্ত করে তোমার ফোনটা নিলাম। হাত থেকে ছাড়লাম না ওকে।”

“শিট্! হ্যাঁ মনে আছে আমি একদিন লাঞ্চ খেয়ে তোমাকে ফোন করেছিলাম। অন্যদিনের তুলনায় বেশি দেরিতে আমার ওখানে তখন ভর দুপুর আর তোমার মাঝ রাত্রি। হঠাৎ তোমাকে মিস্ করছিলাম বলে করে ফেলেছিলাম। তখন জানতাম না এখানে এই অবস্থা” আমার নিজের ওপর রাগ হতে লাগলো সেদিন ফোন করার জন্য। দরকার কি ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে শিখার জীবনে আবির্ভাবের? যদিও রাগের কোন মাথা-মুণ্ডু নেই, কিন্তু হলো।

কৌতুকের হাসি হেসে শিখা বলল “তুমি কিরকম গো? তোমার বৌ এইসব করছে তাতে রাগ নেই, কিন্তু মশাই নিজে ফোন করেছে বলে নিজের ওপর রাগ! লাভ ইউ ডার্লিং” বলে চুমু খেতে লাগলো আমায়। হাসে আর চুমু খায়। আজব মেয়ে বটে!

“যাই হোক কথা শেষ করতে দাও। দীপ যেই মুহূর্তে বুঝল যে ফোনটা তোমার আমাকে অবাক করে আবার শক্ত হয়ে গেলো শয়তানটা। ওই সরল লোকের পেটে এতো শয়তানি বুদ্ধি কে জানত! যতই হোক পুরুষমানুষ তো অন্যের বউকে নিজের বিছানায় পেয়েছে সেটাই বিরাট সার্থকতা। তবে ও একা শয়তান না, আমিও এতো ছলাকলা করে ওর এই অহংয়ে হাওয়া দিয়ে এসেছি।”

আমিও হেসে ফেললাম, সত্যি বড্ড ঠুনকো এই পুরুষের অহং। অনেকেই মনে করে নিজেই সব কিছু করছে, এমন কোন কাজ নেই সে পারবেনা। কিন্তু তাদের অজান্তে আর বোঝার অনেক ওপরে প্রকৃতি যে কোন লীলাখেলা খেলে যায়, সেটা ধরতেও পারেনা। “তুমি যে মনের খবর এবং দেহতত্ব ব্যাপারে পটীয়সী সেটা জানতাম।। কিন্তু ছলাকলাতে নিপুণা সেটা জানতাম না।”

“যাহ! বাজে কথা বোলো না তো। তবে সত্যি কথা বলতে আমার নিজের এই মায়াবিনী রূপ আমার ভালো লাগছিল। অন্যকে প্রভাবিত করার গুণে নিজেকে প্রগাঢ় ক্ষমতাশালী মনে হচ্ছিলো।”

“হুম! বুঝতে পারছি সেটা, তারপর কি হলো?”

“তখন তুমি আমার সাথে কথা বলছিলে। তোমার গলার আওয়াজ শুনে তুমি না থাকার দুঃখ, তোমাকে না পাবার জ্বালায় আমি কাতর হয়ে গেছিলাম। কথা বলতে বলতে আমি চার হাতপায়ে ভর দিয়ে দীপের দিকে পেছনে করে আমার নিতম্বটা ওর দিকে উঁচিয়ে দিলাম। ও হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। আমি সেইভাবে তোমার সাথে কথা বলছিলাম। তুমি তখন আমাকে বলছ যে ফেরত এসে তুমি আমার শরীর নিয়ে কিভাবে খেলা করবে, ঠিক কি ভাবে আদর করবে। আমি আর পারছিলাম না সেই ভঙ্গিতেই দীপের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে তোমাকে ফোনে বললাম ‘আমি আর পারছি না, তুমি তাড়াতাড়ি এসো আমার ভেতরে, আমাকে ভরিয়ে দাও’ বলে মাথা হাল্কা নেড়ে দীপকে ইশারা করলাম। ওকে আর বিশেষ কিছু বলতে হল না, ও এসে আমার শরীরটা অধিকার করল। তারপরে আর তোমার সাথে বেশি কথা বলতে পারিনি, ফোনটা রেখে দিয়েছিলাম।”

“তারপর?”

“তার আর পর নেই, অত বিস্তারিত ভাবে খুঁটিনাটি বলতে পারব না। তুমি বোঝো না কিছু! না? বড় রস হয়েছে বউয়ের পরকীয়ার কথা শোনার!”

“সে কি? তুমি তো কন্ডমের কথা কিছু বললে না!”

“কন্ডম ব্যবহার করিনি তো কি বলব? পরেরদিন ওষুধ খেয়ে নিয়েছিলাম।”

“এটাই কি একবার না আরও আছে?”

“উউহু! কত সখ আমার বরের, এটাই প্রথম এবং শেষ।”

“আচ্ছা। আর একটা...”

“আর একটাও প্রশ্নের জবাব দেবো না” বেশ কপট ঝাঁজিয়ে বলল শিখা।

অগত্যা আমিও চুপ করে গেলাম। মজা করে ছুটি কাটিয়ে বাড়ি ফিরে বেশ কিছুদিন পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ও কি দীপকে ভালোবেসে ফেলেছে? তাতে বেশ মেয়েলি ভঙ্গী করে বলেছিল-

“বলব কেন? বলব না। তুমি একটু এই প্রশ্ন নিয়ে চিন্তায় থাক তো! কিছু না হোক বৌ পালানোর ভয়ে অন্য মেয়েগুলোদের সাথে ফষ্টি নস্টি করবে না। আর হ্যাঁ, আরও যদি ফ্যামিলি প্লানিংয়ের বুলি কপচেছো তাহলে মনে রেখো আমি সোজা দীপকে দিয়ে কাজ সারিয়ে নেবো। ও তো পিউকে দিয়ে নিজের পৌরুষের নিদর্শন দিয়ে দিলো।”

এই বলে একটা ফাজিল হাসি হেসে আমার গালে এক বিরাশি সিক্কার চুমু দিয়ে চলে গেলো। আমি অবাক হয়ে বসে রইলাম। আমরা তো কোন ছাড়, নারী মনের কথা বিধাতাও বোঝেন না।

কিন্তু সে কি নিজেই বোঝে?

--- সমাপ্ত ---
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply
#5
Oshadharon lekhoni.
Like Reply
#6
Emotional golpo, tobe khub valo likhechen. Sexer bornona ta chaichilam aro, tobe prekkhapote ta manato na. Good one.
Like Reply
#7
অসাধার৷ ছিলো পুরো ঘটোনা সাজিয়ে লিখেছেন ভালোবাসা জিলাসি হারানোর ভয় সবি ছিলো এই কাহিনীতে দাদা। লাস্টের দিকে আরেক্টু বিস্তারিত দিতেন দীপের সাথে শারীরিক সম্পর্কের বিবরণ তাহলে আরো জমে উঠতো। যাই হোক এক কথায় অসাধারণ গল্প ছিলো দারুণ সমাপ্তি।
Like Reply
#8
This story was there in xossip but never drew my attention, don't know why. Read now and my heartfelt salute to women and their selfless contributions. Amra purush ra kintu konodin Erokom parbo na.
Like Reply
#9
Dada perverted Bengali mother or oi type er kono story apnar collection e takle plss post korben
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)