Thread Rating:
  • 4 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL বন্দিনী
#1
বন্দিনী 

কিছুদিন আগে একটা গল্প ড্রাফট করে রেখেছিলাম,  আজ তার কিছু অংশ পোষ্ট করলাম,  আপনাদের ভালো লাগার উপরে এর বাকি অংশ লিখবো,  ভাল লাগলে সবাই একটু লাইক আর কমেন্ট করবেন। 




বৌভাতের পরের সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গেলো মৌমিতার।  আজ সাত আটদিন হয়ে গেলো ফাল্গুন মাস পড়ে গেছে।  শীত প্রায় বিদায় নিয়ে নিলেও সকালে আর রাতে হালকা ঠান্ডা ভাবটা বাতাসে রয়ে গেছে।  রাতে একটা পাতলা কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়েছিলো ও।  পরনে পাটভাঙা শাড়ী,  গলায় হাতে কানে ভারী ভারী সোনার অলঙ্কার গুলো ঝক ঝক করছে।  শাঁখা পলা আর সোনার চুড়ির মাঝে নিজের সেই চেনা হাত কোথায় যেনো খুঁজে পাচ্ছে না ও।  রক্তিম দের বাড়ি থেকে সোনা দিতে কোন কার্পণ্য করে নি,  করবেই বা কেনো,  বাড়ির ছোট বৌ বলে কথা,  আর টাকা পয়াসায় তো কোন অভাব এদের নেই।  পারলে সোনার থালায় ভাত খায় এরা।  বরং এতো সোনার গহনার মাঝে নিজেকে বড় অচেনা লাগছে ওর।
গায়ের কম্বল সরিয়ে উঠে বসে মৌ।  পাশে তাকায়।  পাটভাঙা নতুন চাদর সমান।  কেউ ছিলো না কাল ওর পাশে।  সুন্দর করে সাজানো খাট, নামী ডেকরেটর কে দিয়ে সাজানো।  কিন্তু সবই শুধু লোক দেখানো।  একমাত্র মৌ ছাড়া সবাই জানতো যে এই ঘরে আজ রক্তিম থাকবে না, শুধু একা মৌ থাকবে।  একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে মৌ এর।  কত স্বপ্ন ছিলো এই রাতটা নিয়ে।  বান্ধবীদের কাছে অনেক গল্প শুনেছে ফুলসয্যার রাতের।  ভেবেছিলো সারারাত ঘুমাবে না, রক্তিম কে নিয়ে পাগল হয়ে যাবে..... উত্তাল সুখের সমুদ্রে ভেসে হারিয়ে যাবে।  একটু একটু করে নিজেকে উন্মচিত করবে রক্তিমের সামনে।  জীবনে প্রথম কোন নগ্ন পুরুষ ওর নারীত্বের অহঙ্কারে স্পর্শ করে ওর কুমারীত্ব ঘোঁচাবে। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর গত দুই মাস যাবৎ নিজেকে তিলে তিলে তৈরী করেছিলো এই সুন্দর রাতটার জন্য।  জীবনে প্রথমবার নিজে নির্লোম হয়েছে,  শরীরের কোনা-কাঞ্চির প্রতি যত্ন নিয়েছে যাতে প্রথম উন্মোচনেই রক্তিম অভিভূত হয়ে যায়...... কিন্তু কাল ভাত কাপড়ের পর সব কিছুর যবনিকা পাত হয় যখন ওর ননদ ওকে আড়ালে ডেকে নিয়ে যায়।
" একটা কথা আছে বৌদি..... তোমার হয়তো খারাপ লাগবে কিন্তু কিছু করার নেই, এটাই আমাদের বাড়ির নিয়ম। "
মৌ একটু অবাক হলেও হেসে বলে,  " কি এমন কথা বোন?  "
মৌ এর ননদ কোনো ভনিতা না করেই বলে,  " দেখো তোমাদের ফুল শয্যা আজ হবে না..... সেটার দেরী আছে। "
" মানে? ...... মৌ এর মাথায় কিছু ঢোকে না,  ' কিছু বুঝলাম না। "
রিমঝিম চাপা স্বরে বলে,  " মানে..... নতুন বৌকে বাড়ির কিছু নিয়ম পালন করতে হয়,  তার মধ্যে প্রধান হলো গৃহলক্ষ্মীর পুজা..... তার পুজা না সেরে বাড়ির নতুন বৌ তার কুমারীত্ব বিসর্জন দিতে পারবে না...... আমাদের বংশ পরম্পরায় এই নিয়ম চলে আসছে,  তাই যতদিন না পূজা সম্পন্ন হচ্ছে ততদিন ছোড়দা তোমার সাথে থাকতে পারবে না। "
মৌ এর মাথাটা একটু ঘুরে ওঠে।  কেউ যেনো লহমায় অনেক কিছু কেড়ে নিয়ে গেলো ওর জীবন থেকে।  কিন্তু কিছুই করার নেই।  বনেদী পরিবারের কত না জানা নিয়ম,  না মেনে উপায় নেই।  মুখটা কালো হয়ে আসে মৌ এর। কোনোমতে ঘাড় নেড়ে বলে,  " তাতে কি আছে,  নিয়ম যেটা সেটা করতেই হবে। "
ননদ খুশী হয়ে ওকে আবার টেনে নিয়ে যায় সবার মাঝে। 
মৌ এর বাপের বাড়ির অবস্থা কোনকালেই ভালো না।  বাবা কাঁকিনাড়া জুট মিলে চাকরী করতেন।  মিল বন্ধ হয়ে গেলে বাড়িতে বসে যান।  পারিবারিক সূত্রে পাওয়া একটা বাড়ি ছিলো নৈহাটিতে।  তাই গাছতলায় বসতে হয় নি,  কিন্তু সংসারে অভাব অনটন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়।  মৌ আর ওর ভাই পল্লব দুই বছরের ছোট বড়ো।  বাবার চাকরী যাওয়ার সময় মৌ সবে কলেজের ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।  তখন থেকেই পড়াশোনার সাথে সাথে ও পার্ট টাইম কাজ করতে থাকে।  বাবা ছোটখাটো ব্যাবসা করে দু পয়সা আয়ের চেষ্টা করতেন কিন্তু সেভাবে সংসার চলতো না।  দেখতে দেখতে ব্যাংকের জমানো টাকা শেষ হওয়ার সময় আসে।  ওর বাবা মায়ের বড় চিন্তা ছিলো মৌএর বিয়ে কিভাবে দেবে। 
তবে অভাব অনটন যতই দিক একটা জিনিস দুহাত ভরে ঢেলে দিয়েছিল ভগবান মৌকে।  সেটা ওর রূপ।  ৫' ৩" র মৌ ছিলো অসামান্য রুপসী। কাঁচা সোনার মত গায়ের রঙ,  নাক চোখ একেবারে কাটা কাটা, তার উপরে একেবারে নিঁখুঁত শরীর,  উত্তল বুক যেনো দম্ভ নিয়ে একেবারে খাড়া হয়ে আছে,  ব্রা না পরলেও সেভাবে ঝোলে না,  আর ৩০ এর কোমরের নীচে সুগোল ভারী নিতম্ব। এই একটা কারণে ওলে দেখতে আসা প্রতিটা ছেলেই এক দেখাতেই পছন্দ করে ফেলতো ওকে।  কিন্তু বাবা মা চাইছিলো ধনী পরিবারে ওর বিয়ে দিতে যাতে বাকী জীবন অভাব সইতে সইতে জীবন না কাটে। তখনই রক্তিমের সম্বন্ধটা আসে। 
ওর এক পিসেমসাই নিয়ে এসেছিলেন প্রথম এই সম্বন্ধ,  ওদের বাড়িতে চা খেতে খেতে পিসেমসাই মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,  " মৌ এর কপালে রানী হওয়া লেখা আছে গো বৌদি....চন্দন নগরের বনেদী পরিবার,  পারিবারিক ব্যাবসা সোনার,  হুগলী,  নদীয়া আর কাঁচড়াপাড়ায় তিনটে বিরাট দোকান আছে জুয়েলারী শপ..... মেয়ে আমাদের পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকবে। "
বাবা একটূ দোনামোনা করেন,  " অত বড় পরিবারে দেওয়া থোয়া কি আমরা পারবো অসীমদা?  "
পিসেমসাই মাছি তাড়াবার মত হাত নাড়েন,  " ওসব তোমায় ভাবতে হবে না,  এক কাপড়ে মেয়ে নেবে ওরা..... আসলে বনেদী পরিবার তো, এখনকার সব মেয়ে সেখানে মানিয়ে গুছিয়ে থাকতে পারবে না,  তাই ওরা চায় সুশীলা,  সুলক্ষ্ণণা আর নম্র মেয়ে..... একান্নবর্তী পরিবারে যে মানিয়ে থাকতে পারবে। "
মার মুখ ভবিষ্যতে মেয়ের রানী হওয়ার কল্পনায় উজ্জ্বল,  মা হাসি মুখে বলে,  " তা জামাইবাবু,  ছেলে দেখতে শুনতে কেমন?  মানে বয়স টয়স...... বেশী? "
" আরে না গো বৌদি..... ছেলে একেবারে রাজপুত্র..... এই তো খুব বেশী হলে ২৬ বছর বয়স,  বাচ্চা ছেলে.... বাবার ব্যাবসায় পুরোদমে ঢুকে গেছে তাই বাড়ি থেকে আর দেরী করতে চাইছে না.....এসব পরিবারে ৩০ এর আগেই বিয়ে হয় ছেলেদের। "
মা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।  বাবা কিছু না বলে খবরের কাজে মন দেয়। "
" তাহলে ওদের একদিন আসতে বলি?  " পিসেমসাই জানতে চায়।
বাবা কিছু বলার আগেই মা বলে,  " হ্যাঁ.... বলে দেন জামাইবাবু..... বেশী দেরী করে লাভ নেই। "
সাতদিন পরে এক রবিবারে রক্তিমদের গোটা পরিবার একটা বড়ো গাড়ি চেপে ওদের নোনাঝরা দেওয়ালের বাড়ির সামনে দাঁড়ায়।  শ্বশুর,  শ্বাশুড়ী,  ননদ,  বড়দা,  জা আর সাথে রক্তিম।  রক্তিমকে দেখেই বুকের রক্ত ছলাৎ করে ওঠে মৌএর।  যেনো কোনো সিরিয়ালের নায়ক।  লম্বা ফর্সা, টাইট গেঞ্জীর ভিতর থেকে মাসল ফুটে বেরচ্ছে,  ক্লীন শেভ রক্তিমের চোখে একটা রিমলেস চশমা ওকে আরো হ্যান্ডাসাম করে তুলেছে।  ওরা যেনো সব ঠিক করেই এসেছে বিয়ের,  এতো অমায়িক ব্যাবহার সবার যে ওর মা বাবা গলে জল। কোটি কোটি টাকার মালিক রক্তিমের বাবা যখম ওদের মোড়ের মাথার ঘনা কাকার দোকানের সিঙাড়া আর রসগোল্লা খেয়ে প্রসংশায় ভরিয়ে দিলো তখন মৌ এর বাবা যেনো গলে জল হয়ে গড়িয়ে চলে যায় এমন অবস্থা।
মৌ এলে ওকে দু একটা প্রশ্ন করে রক্তিমের বৌদি বলে,  চল ভাই,  তোমার ঘরে যাই,  বড়োরা এখানে গল্প করুক কেমন?  "
শাশুড়ী তাড়াতাড়ি বলেন," হ্যাঁ সেই ভালো যাও তোমরা.... "
মৌ এর লজ্জা লাগছিলো এতো বড়ো বাড়ির বৌ ওদের এই নোনা ঝরা প্লাস্টার চটা ঘরের আর কি দেখবে?  কিন্তু বৌদি সেসব দিকে তাকালোই না,  ঘরে এসে খাটে বসে ওকে বললো, " দেখো ভাই,  একটা কথা পরিষ্কার করে বলবে,  তোমার কারো সাথে এর আগে সম্পর্ক থাকলে ক্ষতি নেই,  কিন্তু তুমি পিওর ভার্জিন তো?  এটা না হলে কিন্তু পরে সমস্যায় পড়বে.... আমাকেও এটা বলা হয়েছিলো। "
লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নাড়ায় মৌ,  ও পিওর ভার্জিন,  সেক্স তো দূর কাউকে চুমুও খায় নি ও।  বৌদি খুশী হয়ে বলে,  " এবার তাহলে ঠাকুর পো কে ডাকি,  তোমরা কথা বলে নাও। "
রক্তিম আসে ভিতরে।  বনেদী পরিবারের সুদর্শন ছেলে রক্তিম।  কথাবার্তা সপ্রতীভ। কিন্তু মৌ কোথাও একটু সঙ্কোচে ভুগছিলো।  এতো বড়ো পরিবারের ছেলে ওকে নিজের জীবন্সঙ্গী করে নিয়ে যেতে চায়?  সেটা যেনো অবিশ্বাস্য ব্যাপার।  যদিও রূপে অনন্যা মৌ.... তবুও স্টেটাসে ওদের ত্রিসীমার মধ্যে দিয়েও যায় না মৌএর পরিবার।  সেদি রক্তিমের প্রশ্নের জবাবে শুধু হ্যাঁ না বলা ছাড়া আর কথা এগোয় নি।
আসার সময় রক্তিম ওর হাত স্পর্শ করে,  সেই একটু ছোঁয়েতে শিহরিত হয়ে ওঠে মৌ। 
দুই মাস পরে বিয়ের ডেট ঠিক হয়।  দেনা পাওনা কিছুই চায় না ওরা,  উলটে মৌদের বাড়ির অনুষ্ঠান একটা ভবনে করার কথা বলে,  সব খরচ ওদের।
মৌ এর বাবা না না করেন, " আমার একটাই মাত্র মেয়ে,  তার বিয়ের খরচ যা করতে পারি আমিই করবো। "
রক্তিমের বাবা মৌ এর বাবার হাত চেপে ধরে,  " এই তো বেয়াই মশাই,  প্রথমেই পর করে দিলেন,  ছেলে মেয়ে দুটোই আমাদের...... এখানে আপনার আমার বলে কি আছে?  "
অগত্যা রাজী হয়ে যায় ওরা।  বিয়ের ছাদনা তলা থেকে খাওয়ার মেনু সব ঠিক হয় সেন বাড়ির তত্বাবধানে।  এমনকি বিয়ের আগেই গাদা গাদা সোনার গয়না এসে যায়,  এতো গয়না ওরা সাত জন্মেও দেখে নি...... মৌ এর কেমন যেনো সব অবিশ্বাস্য লাগছিলো।
রক্তিম ব্যাস্ত থাকে সারাদিন নিজের কাজ নিয়ে।  তবুও তার ফাঁকে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো।  প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছিলো মৌ খুব তাড়াতাড়ি।  দুজনে একসাথে সিনেমায় যায় একবার।  মাল্টিপ্লেক্স এ।  খুব ভয় করছিলো মৌ এর,  ইশ যদি জড়িয়ে ধরে বা চুমু খেতে চায়?  ভয়ের মাঝেও একটা রোমাঞ্চ আসছিলো।  কিন্তু সেসব কিছুই হয় না।  পাশাপাশি বসে নির্বিঘ্নে সিনেমা দেখেই বাড়ি ফেরে।  রক্তিম নিজে এসে বাড়ি পৌছে দিয়ে যায়।  সিনেমা হলে পাশাপাশি বসে রক্তিমের শরীর যখন স্পর্শ করছিলো তাতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিলো মৌ এর।
গ্রাজুতেশন শেষ করে একটা ব্যাংকে টেম্পরারী জব করতো মৌ।  সেখানে রেজিগনেশন দেওয়ার দিন ওর এতো বড়ো বাড়িতে বিয়ের কথা শুনে সবাই খুব খুশী।  শুধু রাহুল ছাড়া।  মৌ এর বিয়ের কথা শুনেই মুখটা কেমন থমথমে হয়ে যায় ওর।  জোর করে মুখে হাসি এনে ওকে কঙ্গ্রাজুলেশন জানায়।  রাহুলের সাথে মৌ এর সম্পর্ক প্রায় তিন বছরের।  কলেজ থেকেই।  সাধারন নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে রাহুলের পরিবারের অবস্থা মৌ এর মতই,  নুন আনতে পান্তা ফুরায়।  রাহুল যখন এই ব্যাংকে কাজে ঢোকে তখন অনেক চেষ্টা করে মৌ কেও ঢুকিয়ে দেয়।  এর জন্য রাহুলের প্রতি ওর কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।  শ্যামলা রোগাটে গড়ন রাহুলের চেহারা রক্তিমের মত না হলেও বেশ ভালো।  একমাথা ঝাঁকড়া চুল,  গালে হালকা দাড়ি আর চোখে মুখে সরলতা যে কাউকেই আকৃষ্ট করে সহজে।  মৌ এর বেস্ট ফ্রেন্ড বলতে যদি পৃথিবীতে কেউ থাকে সেটা রাহুল অবশ্যই। 
শেষবার অফিস ছেড়ে আসার সময় ও রাহুলের সাথে কাছেই একটা ক্যাফেতে যায়।  দুটো কফি আর সামান্য স্নাক্স নিয়ে বসে দুজনে।
" কিরে আমার বিয়েতে আসবি তো?  প্রচুর কাজ আছে কিন্তু। " মৌ কফিতে চুমুক মেরে বলে।
রাহুল স্মিত হাসে,  " বাবা,  তোর বরের যা টাকা তাতে কাজ কিছু থাকবে বলে তো মনে হয় না,  গরীবের বিয়ে হলে সেটা আলাদা কথা ছিলো। "
কথাটা শুনে একটু রাগ হয় মৌএর,  " বাবা,  এতো খোঁটা দিচ্ছিস কেনো?  আমার বাবার তো আর টাকা নেই..... এখানে কাজ থকতে পারে না?  "
" না তুই তো বললি বিয়ের ফিনের সব কিছুও তোর বরই করছে। " রাহুল কফিতে চুমুক মেরে বলে।
" তো..... তুই তাই বলে থাকবি না?  " মৌ রেগে যায়।
" সেটা কবে বল্ললাম ভাই? ..... তবে গরীবের ছেলে তো,  নিজের কাজ শেষ করে টাইম পাবো তবে তো আনন্দ অনুষ্ঠান,  তাই না?  " রাহুল বাঁকা চোখে তাকায়।
মৌ এর মাথায় আগুন ধরে যায়।  ও বুঝতে পারছে যে মৌ এর বিয়েটা রাহুল সহজ ভাবে নিচ্ছে না।  ও যে মৌ এর প্রতি আসক্ত সেটা তো কখনো বলে নি,  আর জীবন আবেগ দিয়ে চলে না..... রাহুলের সাথে ভালোবাসা বা বিয়ে করার ইচ্ছা কখনোই জাগে নি মৌ এর।  যদিও ছেলে হিসাবে ওকে পছন্দ করাই যায়,  কিন্তু সেটাই তো সব না। 
" ঠিক আছে,  ইচ্ছা হলে আসিস,  না হলে আসিস না..... " মৌ উঠে দাঁড়িয়ে গটগট করে বেরিয়ে আসে কফি শপ থেকে।  রাহুল একবারও ওকে ডাকে না।  মৌও আর পিছনে তাকায় না। 
শেষ পর্যন্ত আসে নি রাহুল।  ব্যাংকের সবাই আসলেও রাহুল অনুপস্থিত ছিলো।  বাবার নাকি শরীর খারাপ সেটা বলেছে বাকিদের।  একবারও মৌকে ফোন করেও উইশ করে নি।  বিয়ের এতো আনন্দ উৎসবের মাঝেও রাহুলের এই ব্যাবহার কষ্ট দিয়েছিলো মৌকে। 
মৌ এর থাকার ঘর বিশাল বড়ো।  ওদের বাড়ির দুটো ঘরের সমান।  মেঝেতে দামী টাইলস,  ইন্টেরিওর ডেকরেটার দিয়ে সাজানো ঘরের প্রতিটী জিনিস।  যদিও ঘরে একটা খাট,  বিশাল ওয়ারড্রোব আলমারী আর একটা বিশাল ড্রেসিং টেবিল ছাড়া আর তেমন কোন আসবাব নেই।  দামী ফুলদানী,  দেওয়ালে ফটোফ্রেম শোভা পাচ্ছে। 
ঘরের সাথেই বিশাল এটাচ বাথরুম। মৌ বাথরুমে যাবে ভাবছিলো।  তখনি দরজায় টোকা পড়লো।  মৌ এগিয়ে গিয়ে দরজার ছিটকিনি খুলে দেখে বাইরে ননদ সুলগ্না দাঁড়িয়ে আছে।
" মা তোমায় ডাকছে ছোট বৌদি.... " সুলগ্না ভারী গলায় বলে।
" আমি এখনো ফ্রেশ হই নি..... " মৌ একটু থমকে গিয়ে বলে।
সুলগ্না একটু ভেবে বলে,  " আচ্ছা.... ফ্রেশ হয়ে এসো তাড়াতাড়ী, ...... মার ঘরে আসবে। "
মৌ মাথা নাড়তেই সুলগ্না চলে যায়।  ননদ চলে গেলে মৌ বাথরুমে ঢোকে।  এদের বাথরুমগুলোও এক একটা ঘরের মাপের।  কি নেই সেখানে,  শাওয়ার,  গীজার,  বিশাল আয়না,  শোকেশ,  স্নানের আলাদা কাঁচ ঘেরা জায়গা,  একপাশে কমোড।  মৌ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নেয়।  তারপর একটা দামী তাঁতের শাড়ী পরে বাইরে আসে।
ওর ঘর দোতলায়,......শুধু ওর না দোতলায় বড়ো ভাইও থাকে,  আর মাঝে মা বাবা,  ননদ থাকে তিনতলায়।  একতলা পুরোটাই বসার ঘর ,  ডায়েনিং আর কিচেন,  এছাড়া বাড়িতে একটা অফিস আছে।  মৌ এর মনে হয় এমন বাড়ি ও শুধু সিনেমাতেই দেখেছে। 
এতো সকালে বাইরে কেউ নেই।  দুজন কাজের লোক ঝাড়পোঁছ করছে।  মৌ সোজা শাশুড়ির ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায়।  দরজা বন্ধ। ও দরজায় টোকা দিতেই ভিতর থেকে শাশুড়ী বলে,  " কে?  "
" মা..... আমি, আপনি আমায় ডেকেছেন " মৌ যতটা সম্ভব গলা নামিয়ে নরম সুরে বলে।
দরজা খুলে যায়।  সামনে বড়বৌ মোহনা। মৌ এর দিকে ভালো করে দেখে মোহনা দরজা ছেড়ে দাঁড়ায়,  " এসো ভাই..... "
মৌ ভিতরে আসে।  শাশড়ী আর মোহনা ছাড়াও সেখানে ননদ সুলগ্না আর পুরানো কাজের লোক গীতা আছে। মৌ ঢুকতেই দরজায় ছিটকিনি তুলে দেয় মোহনা। 
শাশড়ী খাটে বসে ছিলেন,  মৌ এর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন,  " বোসো বৌমা...... কাল রাতে ভালো ঘুম হয়েছে?  "
মৌ মাথা নাড়ে। 
শাশড়ী এবার মোহনার দিকে তাকিয়ে ইশারা করেন কিছু।  মোহনা এগিয়ে আসে। 
" তোমার শাড়ী ব্লাউজটা একটু খোল মৌ। "
মানে?  চমকে ওঠে মৌ।  যাদিও এরা সবাই মেয়ে তবুও এতো গুলো মানুষের সামনে ও শাড়ী কেনো খুলবে?  মৌ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।
" ভয় নেই,  তোমার কুমারীত্ব পরীক্ষা করবে মা " ননদ বলে ওঠে৷ 
লজ্জায় লাল হয়ে যায় মৌ।  এটা কি ধরনের অভব্যতা?  নতুন বৌকে সবার সামনে নগ্ন হয়ে দাঁড়াতে হবে?  কিন্তু প্রতিবাদ করার উপায় আছে কি?  সবার চোখ ওর দিকে।  মৌ অসহায়ের মত তাকায় এদিক ওদিক....।
" একটু তাড়াতাড়ি করো মা,  আরো অনেক কাজ আছে। " এবার গীতা বলে ওঠে৷
মৌ অসহায়ের মত উঠে দাঁড়িয়ে একে একে শাড়ী, ব্লাউজ,  ব্রা তারপর প্যান্টি খুলে দাঁড়ায়।  সবাই ওর নগ্ন চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে।  ওর শেভ করা নির্লোম যোনী প্রদেশ কারো নজড় এড়ায় না।
" একি তুমি ওখানে শেভ করেছ কেনো?  " মোহনা যেনো আঁতকে ওঠে।
মৌ অবাক হয়ে তাকায়। এটা তার প্রাইভেট পার্ট।  সেখানে শেভ করবে কিনা সেটা কি এদের কাছে পারমিশন নিতে হবে নাকি?  কই বিয়ের আগে তো কেউ বলে যায় নি।  কিন্তু মনের কথা মুখে আসে না। ও মাথা নীচু করে।
" যা করেছ করেছ...... আর একাজ করবে না,  কেমন?  " শাশুড়ি প্রায় ধমকের সুরে বলেন।
" যাও তো মা,  খাটে উঠে দুই পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ো। "
মৌ এর গায়ের মধ্যে কাঁপছিলো।  ও খু ধীরে খাটে উঠে শুয়ে পড়ে দুই দিকে দুই পা ছড়িয়ে।  গীতা ওর প্রায় যোনীর কাছে এসে দুই আঙুলে সেটা ফাঁকা করে।  কান্না পাচ্ছিলো মৌ এর।  কে বলবে এরা একবিংশ শতকে বাস করে? 
সবাই ঝুঁকে পড়ে ওর যোনীর উপর।  ভালো করে দেখে হাসি ফোঁটে গীতার মুখে,  " একেবারে টাটকা কুমারী মেয়ে গো কত্তামা...... নাও তোমাদের চিন্তা দূর হলো। "
এরপর ওর স্তন পেট ভালো করে দেখে বলে,  " নাও মা..... এবার কাপড় পরে নাও। "
কাপড় পরতে পরতে মৌ এর চোখে জল চলে আসে।  এটা কি ধরনের পরীক্ষা?  এরা কি জানে না যে মেয়েদের সতীচ্ছদ্দ সঙ্গম ছাড়াও আরো অনেক ভাবে ছেদ হতে পারে?  আজ যদি মৌএর সতিচ্ছদ্দ আগে থেকেই ছেদ থাকতো তাহলে কি এরা তাকে দুশ্চরিত্রা আখ্যা দিতো?  লজ্জায় ভয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে মৌ।  এ কোথায় এসে পড়লো ও?  এর থেকে তো কোন এক মধ্যবিত্ত পরিবারে বৌ হয়ে গেলেই ভালো হতো।
মৌ শাড়ী পরে নিতেই শাশুড়ী বলেন,  " বড়বৌমা তুমি তোমার ঘরে নিয়ে গিয়ে ওকে সব বুঝিয়ে দাও...... এই বাড়ি সব রিতী নীতি "
মোহনা ওকে হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসে।  শাশুড়ির ঘরের পাশে বড়ো বৌদির ঘর।  মৌকে সাথে করে সেখানে ঢোকে মোহনা।  এতোক্ষণ শাষুড়ীর সামনে মোহনার ব্যাবহার গম্ভীর ছিলো।  কিন্তু নিজের ঘরে ঢুকতেই সে পালটে যায়। দরজা বন্ধ করে লাফ দিয়ে খাটে বসে,  তারপর মৌকে টেনে বসায়।
" খারাপ লেগেছে? ....... অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক,  আমারো লেগেছিলো,  সবার সামনে এভাবে উলঙ্গ হতে..... এটা তো সবে শুরু,  আরো কত আছে সেটা জানো না ভাই। " মোহনা করুন দৃষ্টিতে তাকায়।
" আরো কি আছে?  " মৌ চমকে ওঠে। 
মোহনা ওর হাতে হাত রেখে বলে,  " তোর মত আমিও গরীব বাড়ির মেয়ে,  আমাকেও এরা এখানে বৌ করে এনেছে একেবারে বিনা পয়সায়...... আসলে বড়লোক বাড়ির মেয়ে এদের এইসব অনাচার মেনে নেবে না,  আমাদের তো যাওয়ার জায়গা নেই,  বাবা মা বড় মুখ করে বনেদী বাড়িতে পাঠিয়েছে,  এখন চলে গেলে তাদের সম্মানহানী হবে না? 
" আর কি করতে হবে গো দিদি?  " মৌ করুন সুরে বলে।
" ছাড় ওসব,  বেশী না ভেবে যা বলবে করে যাবি,  লজ্জা পেলে হবে না...... শোন নতুন বৌ আসলে এই বাড়িতে গৃহলক্ষীর পূজা হয়,  আর সেই পুজা করতে আসেন এদের কূল গুরু,  কূল গুরুর তুষ্টি আর সম্মতি ছাড়া নতুন বৌ স্বামী সহবাস করতে পারবে না এই কথাটা তোকে কেউ বলে নি । "
" তার সন্তুষ্টি ?..... মানে?  " মৌ বিস্ময়ের সাথে বলে।
মোহনা ওর দিকে স্থির ভাবে তাকিয়ে বলে,  " সব কিছু আমার মুখ থেকে বের করিস না,  নিজেই বুঝে যাবি...... তবে বললাম, নিজেকে নানা অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির জন্য তৈরী করে রাখবি.... আমি কিন্তু সবার সামনে তোকে সমর্থন করতে পারবো না। " 
ঝর ঝর করে কেঁদে দেয় মৌ,  " এরা কোন যুগে বাস করে দিদি?  "
মোহনা ওর মাথায় হাত বুলায়,  " কু সংস্কারে আছন্ন এরা বুঝলি?  ভাবে,  এইসব নিয়মের ব্যাতিক্রম হলেই পারিবারিক ব্যাবসা শেষ হয়ে যাবে.....কিছু করার নেই রে বোন, চল এখন বাকি কাজ-কর্ম বুঝিয়ে দি তোকে। "
মৌ এর মাথা কাজ করছিল না।  মা বাবা আর সেই নোনা ধরা বাড়ির কথা খুব খুব মনে পড়ছিলো। এখন এদের এই বিসাল বহুল প্রাসাদ দৈত্যপুরী মনে হচ্ছে,  যেনো হাঁ করে মৌকে গিলে খেতে আসছে।  চারদিকে ঝাঁ চকচকে আধুকিকতার আড়ালে লুকানো এক মধ্যযুগীয় বর্বরতা। 


Deep's story
[+] 6 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
(21-11-2025, 04:54 PM)sarkardibyendu Wrote:
বন্দিনী 

কিছুদিন আগে একটা গল্প ড্রাফট করে রেখেছিলাম,  আজ তার কিছু অংশ পোষ্ট করলাম,  আপনাদের ভালো লাগার উপরে এর বাকি অংশ লিখবো,  ভাল লাগলে সবাই একটু লাইক আর কমেন্ট করবেন। 




বৌভাতের পরের সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গেলো মৌমিতার।  আজ সাত আটদিন হয়ে গেলো ফাল্গুন মাস পড়ে গেছে।  শীত প্রায় বিদায় নিয়ে নিলেও সকালে আর রাতে হালকা ঠান্ডা ভাবটা বাতাসে রয়ে গেছে।  রাতে একটা পাতলা কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়েছিলো ও।  পরনে পাটভাঙা শাড়ী,  গলায় হাতে কানে ভারী ভারী সোনার অলঙ্কার গুলো ঝক ঝক করছে।  শাঁখা পলা আর সোনার চুড়ির মাঝে নিজের সেই চেনা হাত কোথায় যেনো খুঁজে পাচ্ছে না ও।  রক্তিম দের বাড়ি থেকে সোনা দিতে কোন কার্পণ্য করে নি,  করবেই বা কেনো,  বাড়ির ছোট বৌ বলে কথা,  আর টাকা পয়াসায় তো কোন অভাব এদের নেই।  পারলে সোনার থালায় ভাত খায় এরা।  বরং এতো সোনার গহনার মাঝে নিজেকে বড় অচেনা লাগছে ওর।
গায়ের কম্বল সরিয়ে উঠে বসে মৌ।  পাশে তাকায়।  পাটভাঙা নতুন চাদর সমান।  কেউ ছিলো না কাল ওর পাশে।  সুন্দর করে সাজানো খাট, নামী ডেকরেটর কে দিয়ে সাজানো।  কিন্তু সবই শুধু লোক দেখানো।  একমাত্র মৌ ছাড়া সবাই জানতো যে এই ঘরে আজ রক্তিম থাকবে না, শুধু একা মৌ থাকবে।  একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে মৌ এর।  কত স্বপ্ন ছিলো এই রাতটা নিয়ে।  বান্ধবীদের কাছে অনেক গল্প শুনেছে ফুলসয্যার রাতের।  ভেবেছিলো সারারাত ঘুমাবে না, রক্তিম কে নিয়ে পাগল হয়ে যাবে..... উত্তাল সুখের সমুদ্রে ভেসে হারিয়ে যাবে।  একটু একটু করে নিজেকে উন্মচিত করবে রক্তিমের সামনে।  জীবনে প্রথম কোন নগ্ন পুরুষ ওর নারীত্বের অহঙ্কারে স্পর্শ করে ওর কুমারীত্ব ঘোঁচাবে। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর গত দুই মাস যাবৎ নিজেকে তিলে তিলে তৈরী করেছিলো এই সুন্দর রাতটার জন্য।  জীবনে প্রথমবার নিজে নির্লোম হয়েছে,  শরীরের কোনা-কাঞ্চির প্রতি যত্ন নিয়েছে যাতে প্রথম উন্মোচনেই রক্তিম অভিভূত হয়ে যায়...... কিন্তু কাল ভাত কাপড়ের পর সব কিছুর যবনিকা পাত হয় যখন ওর ননদ ওকে আড়ালে ডেকে নিয়ে যায়।
" একটা কথা আছে বৌদি..... তোমার হয়তো খারাপ লাগবে কিন্তু কিছু করার নেই, এটাই আমাদের বাড়ির নিয়ম। "
মৌ একটু অবাক হলেও হেসে বলে,  " কি এমন কথা বোন?  "
মৌ এর ননদ কোনো ভনিতা না করেই বলে,  " দেখো তোমাদের ফুল শয্যা আজ হবে না..... সেটার দেরী আছে। "
" মানে? ...... মৌ এর মাথায় কিছু ঢোকে না,  ' কিছু বুঝলাম না। "
রিমঝিম চাপা স্বরে বলে,  " মানে..... নতুন বৌকে বাড়ির কিছু নিয়ম পালন করতে হয়,  তার মধ্যে প্রধান হলো গৃহলক্ষ্মীর পুজা..... তার পুজা না সেরে বাড়ির নতুন বৌ তার কুমারীত্ব বিসর্জন দিতে পারবে না...... আমাদের বংশ পরম্পরায় এই নিয়ম চলে আসছে,  তাই যতদিন না পূজা সম্পন্ন হচ্ছে ততদিন ছোড়দা তোমার সাথে থাকতে পারবে না। "
মৌ এর মাথাটা একটু ঘুরে ওঠে।  কেউ যেনো লহমায় অনেক কিছু কেড়ে নিয়ে গেলো ওর জীবন থেকে।  কিন্তু কিছুই করার নেই।  বনেদী পরিবারের কত না জানা নিয়ম,  না মেনে উপায় নেই।  মুখটা কালো হয়ে আসে মৌ এর। কোনোমতে ঘাড় নেড়ে বলে,  " তাতে কি আছে,  নিয়ম যেটা সেটা করতেই হবে। "
ননদ খুশী হয়ে ওকে আবার টেনে নিয়ে যায় সবার মাঝে। 
মৌ এর বাপের বাড়ির অবস্থা কোনকালেই ভালো না।  বাবা কাঁকিনাড়া জুট মিলে চাকরী করতেন।  মিল বন্ধ হয়ে গেলে বাড়িতে বসে যান।  পারিবারিক সূত্রে পাওয়া একটা বাড়ি ছিলো নৈহাটিতে।  তাই গাছতলায় বসতে হয় নি,  কিন্তু সংসারে অভাব অনটন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়।  মৌ আর ওর ভাই পল্লব দুই বছরের ছোট বড়ো।  বাবার চাকরী যাওয়ার সময় মৌ সবে কলেজের ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।  তখন থেকেই পড়াশোনার সাথে সাথে ও পার্ট টাইম কাজ করতে থাকে।  বাবা ছোটখাটো ব্যাবসা করে দু পয়সা আয়ের চেষ্টা করতেন কিন্তু সেভাবে সংসার চলতো না।  দেখতে দেখতে ব্যাংকের জমানো টাকা শেষ হওয়ার সময় আসে।  ওর বাবা মায়ের বড় চিন্তা ছিলো মৌএর বিয়ে কিভাবে দেবে। 
তবে অভাব অনটন যতই দিক একটা জিনিস দুহাত ভরে ঢেলে দিয়েছিল ভগবান মৌকে।  সেটা ওর রূপ।  ৫' ৩" র মৌ ছিলো অসামান্য রুপসী। কাঁচা সোনার মত গায়ের রঙ,  নাক চোখ একেবারে কাটা কাটা, তার উপরে একেবারে নিঁখুঁত শরীর,  উত্তল বুক যেনো দম্ভ নিয়ে একেবারে খাড়া হয়ে আছে,  ব্রা না পরলেও সেভাবে ঝোলে না,  আর ৩০ এর কোমরের নীচে সুগোল ভারী নিতম্ব। এই একটা কারণে ওলে দেখতে আসা প্রতিটা ছেলেই এক দেখাতেই পছন্দ করে ফেলতো ওকে।  কিন্তু বাবা মা চাইছিলো ধনী পরিবারে ওর বিয়ে দিতে যাতে বাকী জীবন অভাব সইতে সইতে জীবন না কাটে। তখনই রক্তিমের সম্বন্ধটা আসে। 
ওর এক পিসেমসাই নিয়ে এসেছিলেন প্রথম এই সম্বন্ধ,  ওদের বাড়িতে চা খেতে খেতে পিসেমসাই মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,  " মৌ এর কপালে রানী হওয়া লেখা আছে গো বৌদি....চন্দন নগরের বনেদী পরিবার,  পারিবারিক ব্যাবসা সোনার,  হুগলী,  নদীয়া আর কাঁচড়াপাড়ায় তিনটে বিরাট দোকান আছে জুয়েলারী শপ..... মেয়ে আমাদের পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকবে। "
বাবা একটূ দোনামোনা করেন,  " অত বড় পরিবারে দেওয়া থোয়া কি আমরা পারবো অসীমদা?  "
পিসেমসাই মাছি তাড়াবার মত হাত নাড়েন,  " ওসব তোমায় ভাবতে হবে না,  এক কাপড়ে মেয়ে নেবে ওরা..... আসলে বনেদী পরিবার তো, এখনকার সব মেয়ে সেখানে মানিয়ে গুছিয়ে থাকতে পারবে না,  তাই ওরা চায় সুশীলা,  সুলক্ষ্ণণা আর নম্র মেয়ে..... একান্নবর্তী পরিবারে যে মানিয়ে থাকতে পারবে। "
মার মুখ ভবিষ্যতে মেয়ের রানী হওয়ার কল্পনায় উজ্জ্বল,  মা হাসি মুখে বলে,  " তা জামাইবাবু,  ছেলে দেখতে শুনতে কেমন?  মানে বয়স টয়স...... বেশী? "
" আরে না গো বৌদি..... ছেলে একেবারে রাজপুত্র..... এই তো খুব বেশী হলে ২৬ বছর বয়স,  বাচ্চা ছেলে.... বাবার ব্যাবসায় পুরোদমে ঢুকে গেছে তাই বাড়ি থেকে আর দেরী করতে চাইছে না.....এসব পরিবারে ৩০ এর আগেই বিয়ে হয় ছেলেদের। "
মা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।  বাবা কিছু না বলে খবরের কাজে মন দেয়। "
" তাহলে ওদের একদিন আসতে বলি?  " পিসেমসাই জানতে চায়।
বাবা কিছু বলার আগেই মা বলে,  " হ্যাঁ.... বলে দেন জামাইবাবু..... বেশী দেরী করে লাভ নেই। "
সাতদিন পরে এক রবিবারে রক্তিমদের গোটা পরিবার একটা বড়ো গাড়ি চেপে ওদের নোনাঝরা দেওয়ালের বাড়ির সামনে দাঁড়ায়।  শ্বশুর,  শ্বাশুড়ী,  ননদ,  বড়দা,  জা আর সাথে রক্তিম।  রক্তিমকে দেখেই বুকের রক্ত ছলাৎ করে ওঠে মৌএর।  যেনো কোনো সিরিয়ালের নায়ক।  লম্বা ফর্সা, টাইট গেঞ্জীর ভিতর থেকে মাসল ফুটে বেরচ্ছে,  ক্লীন শেভ রক্তিমের চোখে একটা রিমলেস চশমা ওকে আরো হ্যান্ডাসাম করে তুলেছে।  ওরা যেনো সব ঠিক করেই এসেছে বিয়ের,  এতো অমায়িক ব্যাবহার সবার যে ওর মা বাবা গলে জল। কোটি কোটি টাকার মালিক রক্তিমের বাবা যখম ওদের মোড়ের মাথার ঘনা কাকার দোকানের সিঙাড়া আর রসগোল্লা খেয়ে প্রসংশায় ভরিয়ে দিলো তখন মৌ এর বাবা যেনো গলে জল হয়ে গড়িয়ে চলে যায় এমন অবস্থা।
মৌ এলে ওকে দু একটা প্রশ্ন করে রক্তিমের বৌদি বলে,  চল ভাই,  তোমার ঘরে যাই,  বড়োরা এখানে গল্প করুক কেমন?  "
শাশুড়ী তাড়াতাড়ি বলেন," হ্যাঁ সেই ভালো যাও তোমরা.... "
মৌ এর লজ্জা লাগছিলো এতো বড়ো বাড়ির বৌ ওদের এই নোনা ঝরা প্লাস্টার চটা ঘরের আর কি দেখবে?  কিন্তু বৌদি সেসব দিকে তাকালোই না,  ঘরে এসে খাটে বসে ওকে বললো, " দেখো ভাই,  একটা কথা পরিষ্কার করে বলবে,  তোমার কারো সাথে এর আগে সম্পর্ক থাকলে ক্ষতি নেই,  কিন্তু তুমি পিওর ভার্জিন তো?  এটা না হলে কিন্তু পরে সমস্যায় পড়বে.... আমাকেও এটা বলা হয়েছিলো। "
লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নাড়ায় মৌ,  ও পিওর ভার্জিন,  সেক্স তো দূর কাউকে চুমুও খায় নি ও।  বৌদি খুশী হয়ে বলে,  " এবার তাহলে ঠাকুর পো কে ডাকি,  তোমরা কথা বলে নাও। "
রক্তিম আসে ভিতরে।  বনেদী পরিবারের সুদর্শন ছেলে রক্তিম।  কথাবার্তা সপ্রতীভ। কিন্তু মৌ কোথাও একটু সঙ্কোচে ভুগছিলো।  এতো বড়ো পরিবারের ছেলে ওকে নিজের জীবন্সঙ্গী করে নিয়ে যেতে চায়?  সেটা যেনো অবিশ্বাস্য ব্যাপার।  যদিও রূপে অনন্যা মৌ.... তবুও স্টেটাসে ওদের ত্রিসীমার মধ্যে দিয়েও যায় না মৌএর পরিবার।  সেদি রক্তিমের প্রশ্নের জবাবে শুধু হ্যাঁ না বলা ছাড়া আর কথা এগোয় নি।
আসার সময় রক্তিম ওর হাত স্পর্শ করে,  সেই একটু ছোঁয়েতে শিহরিত হয়ে ওঠে মৌ। 
দুই মাস পরে বিয়ের ডেট ঠিক হয়।  দেনা পাওনা কিছুই চায় না ওরা,  উলটে মৌদের বাড়ির অনুষ্ঠান একটা ভবনে করার কথা বলে,  সব খরচ ওদের।
মৌ এর বাবা না না করেন, " আমার একটাই মাত্র মেয়ে,  তার বিয়ের খরচ যা করতে পারি আমিই করবো। "
রক্তিমের বাবা মৌ এর বাবার হাত চেপে ধরে,  " এই তো বেয়াই মশাই,  প্রথমেই পর করে দিলেন,  ছেলে মেয়ে দুটোই আমাদের...... এখানে আপনার আমার বলে কি আছে?  "
অগত্যা রাজী হয়ে যায় ওরা।  বিয়ের ছাদনা তলা থেকে খাওয়ার মেনু সব ঠিক হয় সেন বাড়ির তত্বাবধানে।  এমনকি বিয়ের আগেই গাদা গাদা সোনার গয়না এসে যায়,  এতো গয়না ওরা সাত জন্মেও দেখে নি...... মৌ এর কেমন যেনো সব অবিশ্বাস্য লাগছিলো।
রক্তিম ব্যাস্ত থাকে সারাদিন নিজের কাজ নিয়ে।  তবুও তার ফাঁকে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো।  প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছিলো মৌ খুব তাড়াতাড়ি।  দুজনে একসাথে সিনেমায় যায় একবার।  মাল্টিপ্লেক্স এ।  খুব ভয় করছিলো মৌ এর,  ইশ যদি জড়িয়ে ধরে বা চুমু খেতে চায়?  ভয়ের মাঝেও একটা রোমাঞ্চ আসছিলো।  কিন্তু সেসব কিছুই হয় না।  পাশাপাশি বসে নির্বিঘ্নে সিনেমা দেখেই বাড়ি ফেরে।  রক্তিম নিজে এসে বাড়ি পৌছে দিয়ে যায়।  সিনেমা হলে পাশাপাশি বসে রক্তিমের শরীর যখন স্পর্শ করছিলো তাতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিলো মৌ এর।
গ্রাজুতেশন শেষ করে একটা ব্যাংকে টেম্পরারী জব করতো মৌ।  সেখানে রেজিগনেশন দেওয়ার দিন ওর এতো বড়ো বাড়িতে বিয়ের কথা শুনে সবাই খুব খুশী।  শুধু রাহুল ছাড়া।  মৌ এর বিয়ের কথা শুনেই মুখটা কেমন থমথমে হয়ে যায় ওর।  জোর করে মুখে হাসি এনে ওকে কঙ্গ্রাজুলেশন জানায়।  রাহুলের সাথে মৌ এর সম্পর্ক প্রায় তিন বছরের।  কলেজ থেকেই।  সাধারন নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে রাহুলের পরিবারের অবস্থা মৌ এর মতই,  নুন আনতে পান্তা ফুরায়।  রাহুল যখন এই ব্যাংকে কাজে ঢোকে তখন অনেক চেষ্টা করে মৌ কেও ঢুকিয়ে দেয়।  এর জন্য রাহুলের প্রতি ওর কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।  শ্যামলা রোগাটে গড়ন রাহুলের চেহারা রক্তিমের মত না হলেও বেশ ভালো।  একমাথা ঝাঁকড়া চুল,  গালে হালকা দাড়ি আর চোখে মুখে সরলতা যে কাউকেই আকৃষ্ট করে সহজে।  মৌ এর বেস্ট ফ্রেন্ড বলতে যদি পৃথিবীতে কেউ থাকে সেটা রাহুল অবশ্যই। 
শেষবার অফিস ছেড়ে আসার সময় ও রাহুলের সাথে কাছেই একটা ক্যাফেতে যায়।  দুটো কফি আর সামান্য স্নাক্স নিয়ে বসে দুজনে।
" কিরে আমার বিয়েতে আসবি তো?  প্রচুর কাজ আছে কিন্তু। " মৌ কফিতে চুমুক মেরে বলে।
রাহুল স্মিত হাসে,  " বাবা,  তোর বরের যা টাকা তাতে কাজ কিছু থাকবে বলে তো মনে হয় না,  গরীবের বিয়ে হলে সেটা আলাদা কথা ছিলো। "
কথাটা শুনে একটু রাগ হয় মৌএর,  " বাবা,  এতো খোঁটা দিচ্ছিস কেনো?  আমার বাবার তো আর টাকা নেই..... এখানে কাজ থকতে পারে না?  "
" না তুই তো বললি বিয়ের ফিনের সব কিছুও তোর বরই করছে। " রাহুল কফিতে চুমুক মেরে বলে।
" তো..... তুই তাই বলে থাকবি না?  " মৌ রেগে যায়।
" সেটা কবে বল্ললাম ভাই? ..... তবে গরীবের ছেলে তো,  নিজের কাজ শেষ করে টাইম পাবো তবে তো আনন্দ অনুষ্ঠান,  তাই না?  " রাহুল বাঁকা চোখে তাকায়।
মৌ এর মাথায় আগুন ধরে যায়।  ও বুঝতে পারছে যে মৌ এর বিয়েটা রাহুল সহজ ভাবে নিচ্ছে না।  ও যে মৌ এর প্রতি আসক্ত সেটা তো কখনো বলে নি,  আর জীবন আবেগ দিয়ে চলে না..... রাহুলের সাথে ভালোবাসা বা বিয়ে করার ইচ্ছা কখনোই জাগে নি মৌ এর।  যদিও ছেলে হিসাবে ওকে পছন্দ করাই যায়,  কিন্তু সেটাই তো সব না। 
" ঠিক আছে,  ইচ্ছা হলে আসিস,  না হলে আসিস না..... " মৌ উঠে দাঁড়িয়ে গটগট করে বেরিয়ে আসে কফি শপ থেকে।  রাহুল একবারও ওকে ডাকে না।  মৌও আর পিছনে তাকায় না। 
শেষ পর্যন্ত আসে নি রাহুল।  ব্যাংকের সবাই আসলেও রাহুল অনুপস্থিত ছিলো।  বাবার নাকি শরীর খারাপ সেটা বলেছে বাকিদের।  একবারও মৌকে ফোন করেও উইশ করে নি।  বিয়ের এতো আনন্দ উৎসবের মাঝেও রাহুলের এই ব্যাবহার কষ্ট দিয়েছিলো মৌকে। 
মৌ এর থাকার ঘর বিশাল বড়ো।  ওদের বাড়ির দুটো ঘরের সমান।  মেঝেতে দামী টাইলস,  ইন্টেরিওর ডেকরেটার দিয়ে সাজানো ঘরের প্রতিটী জিনিস।  যদিও ঘরে একটা খাট,  বিশাল ওয়ারড্রোব আলমারী আর একটা বিশাল ড্রেসিং টেবিল ছাড়া আর তেমন কোন আসবাব নেই।  দামী ফুলদানী,  দেওয়ালে ফটোফ্রেম শোভা পাচ্ছে। 
ঘরের সাথেই বিশাল এটাচ বাথরুম। মৌ বাথরুমে যাবে ভাবছিলো।  তখনি দরজায় টোকা পড়লো।  মৌ এগিয়ে গিয়ে দরজার ছিটকিনি খুলে দেখে বাইরে ননদ সুলগ্না দাঁড়িয়ে আছে।
" মা তোমায় ডাকছে ছোট বৌদি.... " সুলগ্না ভারী গলায় বলে।
" আমি এখনো ফ্রেশ হই নি..... " মৌ একটু থমকে গিয়ে বলে।
সুলগ্না একটু ভেবে বলে,  " আচ্ছা.... ফ্রেশ হয়ে এসো তাড়াতাড়ী, ...... মার ঘরে আসবে। "
মৌ মাথা নাড়তেই সুলগ্না চলে যায়।  ননদ চলে গেলে মৌ বাথরুমে ঢোকে।  এদের বাথরুমগুলোও এক একটা ঘরের মাপের।  কি নেই সেখানে,  শাওয়ার,  গীজার,  বিশাল আয়না,  শোকেশ,  স্নানের আলাদা কাঁচ ঘেরা জায়গা,  একপাশে কমোড।  মৌ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নেয়।  তারপর একটা দামী তাঁতের শাড়ী পরে বাইরে আসে।
ওর ঘর দোতলায়,......শুধু ওর না দোতলায় বড়ো ভাইও থাকে,  আর মাঝে মা বাবা,  ননদ থাকে তিনতলায়।  একতলা পুরোটাই বসার ঘর ,  ডায়েনিং আর কিচেন,  এছাড়া বাড়িতে একটা অফিস আছে।  মৌ এর মনে হয় এমন বাড়ি ও শুধু সিনেমাতেই দেখেছে। 
এতো সকালে বাইরে কেউ নেই।  দুজন কাজের লোক ঝাড়পোঁছ করছে।  মৌ সোজা শাশুড়ির ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায়।  দরজা বন্ধ। ও দরজায় টোকা দিতেই ভিতর থেকে শাশুড়ী বলে,  " কে?  "
" মা..... আমি, আপনি আমায় ডেকেছেন " মৌ যতটা সম্ভব গলা নামিয়ে নরম সুরে বলে।
দরজা খুলে যায়।  সামনে বড়বৌ মোহনা। মৌ এর দিকে ভালো করে দেখে মোহনা দরজা ছেড়ে দাঁড়ায়,  " এসো ভাই..... "
মৌ ভিতরে আসে।  শাশড়ী আর মোহনা ছাড়াও সেখানে ননদ সুলগ্না আর পুরানো কাজের লোক গীতা আছে। মৌ ঢুকতেই দরজায় ছিটকিনি তুলে দেয় মোহনা। 
শাশড়ী খাটে বসে ছিলেন,  মৌ এর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন,  " বোসো বৌমা...... কাল রাতে ভালো ঘুম হয়েছে?  "
মৌ মাথা নাড়ে। 
শাশড়ী এবার মোহনার দিকে তাকিয়ে ইশারা করেন কিছু।  মোহনা এগিয়ে আসে। 
" তোমার শাড়ী ব্লাউজটা একটু খোল মৌ। "
মানে?  চমকে ওঠে মৌ।  যাদিও এরা সবাই মেয়ে তবুও এতো গুলো মানুষের সামনে ও শাড়ী কেনো খুলবে?  মৌ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।
" ভয় নেই,  তোমার কুমারীত্ব পরীক্ষা করবে মা " ননদ বলে ওঠে৷ 
লজ্জায় লাল হয়ে যায় মৌ।  এটা কি ধরনের অভব্যতা?  নতুন বৌকে সবার সামনে নগ্ন হয়ে দাঁড়াতে হবে?  কিন্তু প্রতিবাদ করার উপায় আছে কি?  সবার চোখ ওর দিকে।  মৌ অসহায়ের মত তাকায় এদিক ওদিক....।
" একটু তাড়াতাড়ি করো মা,  আরো অনেক কাজ আছে। " এবার গীতা বলে ওঠে৷
মৌ অসহায়ের মত উঠে দাঁড়িয়ে একে একে শাড়ী, ব্লাউজ,  ব্রা তারপর প্যান্টি খুলে দাঁড়ায়।  সবাই ওর নগ্ন চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে।  ওর শেভ করা নির্লোম যোনী প্রদেশ কারো নজড় এড়ায় না।
" একি তুমি ওখানে শেভ করেছ কেনো?  " মোহনা যেনো আঁতকে ওঠে।
মৌ অবাক হয়ে তাকায়। এটা তার প্রাইভেট পার্ট।  সেখানে শেভ করবে কিনা সেটা কি এদের কাছে পারমিশন নিতে হবে নাকি?  কই বিয়ের আগে তো কেউ বলে যায় নি।  কিন্তু মনের কথা মুখে আসে না। ও মাথা নীচু করে।
" যা করেছ করেছ...... আর একাজ করবে না,  কেমন?  " শাশুড়ি প্রায় ধমকের সুরে বলেন।
" যাও তো মা,  খাটে উঠে দুই পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ো। "
মৌ এর গায়ের মধ্যে কাঁপছিলো।  ও খু ধীরে খাটে উঠে শুয়ে পড়ে দুই দিকে দুই পা ছড়িয়ে।  গীতা ওর প্রায় যোনীর কাছে এসে দুই আঙুলে সেটা ফাঁকা করে।  কান্না পাচ্ছিলো মৌ এর।  কে বলবে এরা একবিংশ শতকে বাস করে? 
সবাই ঝুঁকে পড়ে ওর যোনীর উপর।  ভালো করে দেখে হাসি ফোঁটে গীতার মুখে,  " একেবারে টাটকা কুমারী মেয়ে গো কত্তামা...... নাও তোমাদের চিন্তা দূর হলো। "
এরপর ওর স্তন পেট ভালো করে দেখে বলে,  " নাও মা..... এবার কাপড় পরে নাও। "
কাপড় পরতে পরতে মৌ এর চোখে জল চলে আসে।  এটা কি ধরনের পরীক্ষা?  এরা কি জানে না যে মেয়েদের সতীচ্ছদ্দ সঙ্গম ছাড়াও আরো অনেক ভাবে ছেদ হতে পারে?  আজ যদি মৌএর সতিচ্ছদ্দ আগে থেকেই ছেদ থাকতো তাহলে কি এরা তাকে দুশ্চরিত্রা আখ্যা দিতো?  লজ্জায় ভয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে মৌ।  এ কোথায় এসে পড়লো ও?  এর থেকে তো কোন এক মধ্যবিত্ত পরিবারে বৌ হয়ে গেলেই ভালো হতো।
মৌ শাড়ী পরে নিতেই শাশুড়ী বলেন,  " বড়বৌমা তুমি তোমার ঘরে নিয়ে গিয়ে ওকে সব বুঝিয়ে দাও...... এই বাড়ি সব রিতী নীতি "
মোহনা ওকে হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসে।  শাশুড়ির ঘরের পাশে বড়ো বৌদির ঘর।  মৌকে সাথে করে সেখানে ঢোকে মোহনা।  এতোক্ষণ শাষুড়ীর সামনে মোহনার ব্যাবহার গম্ভীর ছিলো।  কিন্তু নিজের ঘরে ঢুকতেই সে পালটে যায়। দরজা বন্ধ করে লাফ দিয়ে খাটে বসে,  তারপর মৌকে টেনে বসায়।
" খারাপ লেগেছে? ....... অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক,  আমারো লেগেছিলো,  সবার সামনে এভাবে উলঙ্গ হতে..... এটা তো সবে শুরু,  আরো কত আছে সেটা জানো না ভাই। " মোহনা করুন দৃষ্টিতে তাকায়।
" আরো কি আছে?  " মৌ চমকে ওঠে। 
মোহনা ওর হাতে হাত রেখে বলে,  " তোর মত আমিও গরীব বাড়ির মেয়ে,  আমাকেও এরা এখানে বৌ করে এনেছে একেবারে বিনা পয়সায়...... আসলে বড়লোক বাড়ির মেয়ে এদের এইসব অনাচার মেনে নেবে না,  আমাদের তো যাওয়ার জায়গা নেই,  বাবা মা বড় মুখ করে বনেদী বাড়িতে পাঠিয়েছে,  এখন চলে গেলে তাদের সম্মানহানী হবে না? 
" আর কি করতে হবে গো দিদি?  " মৌ করুন সুরে বলে।
" ছাড় ওসব,  বেশী না ভেবে যা বলবে করে যাবি,  লজ্জা পেলে হবে না...... শোন নতুন বৌ আসলে এই বাড়িতে গৃহলক্ষীর পূজা হয়।  আর সেই প্রতিমা হবে তোর মাপে,  তোকেই তার পূজা সম্পন্ন করতে হবে। "
" আমার মাপে?..... মানে?  " মৌ বিস্ময়ের সাথে বলে।
মোহনা ওর দিকে স্থির ভাবে তাকিয়ে বলে,  " এই বাড়ির গৃহলক্ষীর প্রতিমা একজন বিশেষ শিল্পী বংশ পরম্পরায় বানায়, তিনি এখানে আসবেন,  তারপর তোকে তার সামনে উলঙ্গ হয়ে দাঁড়াতে হবে, ...... ভয় নেই,  তার চোখ বাঁধা থাকবে...... তিনি তোর শরীর স্পর্শ করে হাতে ছুঁয়ে মাপ নেবেন আর সেই মাপে তৈরী হবে একেবারে তোর মতই প্রতিমা..... বুঝলি?  "
ঝর ঝর করে কেঁদে দেয় মৌ,  " এরা কোন যুগে বাস করে দিদি?  "
মোহনা ওর মাথায় হাত বুলায়,  " কু সংস্কারে আছন্ন এরা বুঝলি?  ভাবে,  এইসব নিয়মের ব্যাতিক্রম হলেই পারিবারিক ব্যাবসা শেষ হয়ে যাবে.....কিছু করার নেই রে বোন, চল এখন বাকি কাজ-কর্ম বুঝিয়ে দি তোকে। "
মৌ এর মাথা কাজ করছিল না।  মা বাবা আর সেই নোনা ধরা বাড়ির কথা খুব খুব মনে পড়ছিলো। এখন এদের এই বিসাল বহুল প্রাসাদ দৈত্যপুরী মনে হচ্ছে,  যেনো হাঁ করে মৌকে গিলে খেতে আসছে।  চারদিকে ঝাঁ চকচকে আধুকিকতার আড়ালে লুকানো এক মধ্যযুগীয় বর্বরতা। 


[+] 3 users Like Suryadeb's post
Like Reply
#3
Nice start
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
#4
সুন্দর , নিয়ম গুলো যেন একটু ইউনিক হয়। প্রথমে শ্বশুর এর সাথে শুতে হবে। পরে ভাসুরের সাথে তারপর ননদের বরের সাথে। তারপর নিজের বরের কাছে। নিয়মিত সবার চোদা খেতে হবে। প্রতিদিন সবার কাছে একবার করে। প্রথমেই বরের বাচ্চা নেয়া যাবে না
[+] 2 users Like Jamjam's post
Like Reply
#5
Valo laglo
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply
#6
আপনার লেখা রূপকথার গল্প আমি খুব এঞ্জয় করেছিলাম । আশায় ছিলাম কখন নতুন গল্প আনবেন । খুব ভালো লাগলো নতুন গল্প দেখে । আশা করি এই গল্প ও আগের গল্পের মত এঞ্জয়্যেবল হবে ।
কিছু প্রশ্নের উত্তর নেই,
তবু প্রশ্নগুলো বেঁচে থাকে,
ঠিক আমার মতো —
অর্ধেক জেগে, অর্ধেক নিঃশব্দ।


[+] 1 user Likes gungchill's post
Like Reply
#7
বন্দিনী
পর্ব-২



মোহনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের ঘরে আসে মৌ।  বিশাল ফাঁকা ঘরটা যেনো ওকে কামড়াতে আসছে।  বৌভাতের অনুষ্ঠানের পর আর রক্তিম ওর কাছে আসে নি।  আজ সকালে কোথাও বেরিয়ে গেছে।  মৌ এর সব থেকে কাছের মানুষ রক্তিম।  কিন্তু এখানে আসার পর মনে হচ্ছে ওই সব থেকে দুরের.... একবারের জন্যেও খোঁজ নিয়ে গেলোনা যে মৌএর প্রথম রাত একাকী কেমন কাটলো।  ও নিজে মুখে তো একবার সান্তনা দিতে পারতো?  বলতে পারতো দুটো মিষ্টী কথা ওর পাশে বসে? চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসছে ওর।  যে শরীর একান্তে রক্তিমের উন্মোচন করার কথা সেই শরীর আজ অপরের সামনে খুলে ধরতে হলো?  রক্তিম এই যুগের ছেলে হয়ে এইসব অন্ধ প্রথায় সমর্থন করে এটাও চরম আশ্চর্য্যের।

মৌ শুনেছে আজও ভারতের কোথাও কোথাও নতুন বৌ এর বিছানায় ফুলসজ্যার পরের দিন রক্তের দাগ খোঁজা হয়,  পেলে ভালো আর না পেলে তার কপালে জোটে কুলটার অপবাদ।  কিন্তু এই বাংলার বুকে যে এমন আছে সেটা জানতো না ও।  আর সেটা ওর কপালেই এসে জুটলো।  এখন আর এইসব ঐশ্বর্য্য,  রক্তিমের রূপ কিছুই মনে ধরছে না..... ভালো ছিলো সেই আধপেটা খেয়ে থাকা দিনগুলো।

শব্দ করে ফোনটা বেজে উঠলো।  বিছানার এক কোণে রাখা ফোনের ডিস্প্লেতে চোখ রাখে মৌ....' স্নিগ্ধা' কলিং।

তুলতে ইচ্ছা না থাকলেও শেষে তুলে নেয়।  স্নিগ্ধা ওর ছীট বেলার বান্ধবী।  শ্বশুর বাড়ি এসে প্রথম দিন থেকেই ফোন না ধরলে ভাববে বড়লোকের বাড়ি গিয়ে অহঙ্কার হয়েছে। 

" হ্যাঁ..... বল" মৌ যতটা সম্ভব স্বাভাবিক গলায় বলে।

" বাব্বা...... এতো নিরস কেনো রে?  কাল রাতে ঠিকঠাক হয় নি অরগ্যাজম?  " ওপাশে খিল খিল করে হেসে ওঠে স্নিগ্ধা।

" উফ.... তুইও না। " মৌ বলে।  ভালো লাগছে না ওর এসব তবুও বলতে হবে।  বান্ধবীরা তো এসব কৌতুহল থাকবেই।  ওদের বোঝাবে কি করে।

" অবশ্য প্রথম দিনে কি আর সবাই ছক্কা হাঁকাতে পারে?  হবে হবে..... চাপ নেই। " স্নিগ্ধা আবার বলে।

" তোর আর কোন কথা নেই?  " মৌ বিরক্তি প্রকাশ করে।

" ফুলসজ্যার পরের দিন এর থেকে আর কি কথা থাকবে রে?  তোর শাশুড়ী ননদ জায়ের হাড়জ্বলানী শোনার জন্য তো সারা জীবন পড়ে আছে। "

" তুইও না..... পারিয়া বটে। " মৌ বলে।

" এই..... শোন না,  ব্যাথা নেই তো? ..... পুরোটা ঢুকেছিলো? ।.......রক্ত বেরিয়েছে?  " স্নিগ্ধা এক ধারসে বলে যায়।

" আর কিছু?  " মৌ বলে।

" বল না বাবা...... নায়কের মত বর পেয়েছিস, আমার বরের মত ভুঁড়িওয়ালা তো না, ...... তা কত বড়ো তোর বরেরটা?  " খিল খিল করে হেসে ওঠে স্নিগ্ধা।

" আমি মাপি নি রে। " মৌ কাট ছাট জবাব দেয়।

" তোর ওখানে...... মানে গুদে মুখ দিয়েছে?  "

" ইশ..... কি ভাষার ছিরি.... মারবো এক চড়। "  মৌ কপট রাগ দেখায়। 

" ওমা..... আমি বাবা সাধু ভাষা জানি না,  আমার বরতো চাটতে ভালোবাসে...... তবে আমাকেও চুষতে হয় ওরটা....। " স্নিগ্ধা বলে।

" অন্য কথা থাকলে বল..... এসব কথা থামা এবার। " মৌ আর পারছিলো না।

" তুই তো জানিস,  আমার কৌতুহল,  তাই তো সকাল সকাল ফোন করলাম....... আর শোননা,  একবার ডগী স্টাইলটা করে দেখবি,  দারুণ লাগে..... উফফ... দেখ তোকে বলতে বলতে আমারটা ভিজে যাচ্ছে....কি করি বল " স্নিগ্ধা কৃত্তিম করুন সুরে বলে।

" সমীরদাকে টেনে নিয়ে খাটে চলে যা...." মৌ হাসে।

" ধুর..... সেতো ব্যাবসার কাজে বাইরে,  এখন আঙুল ঢোকানো ছাড়া আর উপায় নেই..... " স্নিগ্ধা হেসে গড়িয়ে পড়ে।

" আর নিতে পারছি না রে..... আবার বিকালে করিস,  স্নান করতে হবে এখন। " মৌ বাধ্য হয়ে বলে।

" আচ্ছা বাবা, রাখছি...... পারলে দুপুরেও একবার করে নিস.... নতুন তো " ওপাশে স্নিগ্ধার হাসিতে ফেটে পড়া শোনা যায়।


বাথরুমে ঢোকে মৌ।  বিরাট বড়ো বাথরুমের একপাশে বিশাল আয়না।  তাতে গোটা শরীরের প্রতিচ্ছবি ধরা পড়ছে।  কারো বাথরুমে এতো বড়ো আয়না থাকা  সেটা আগে জানতো না। ও একে একে শাড়ী ব্লাউজ অন্তর্বাস সব খুলে নগ্ন হয়।  আয়নার ওর নগ্ন প্রতিচ্ছবি ধরা পড়ছে।  ঘাড় ঘুরিয়ে পাশ থেকে তাকায় নিজের ছায়ার দিকে।  খোলা স্তন একটুও ঝুলে নেই,  এই ২২ শেও একি রকম উন্নত।  মাথায় ছোট হালকা বাদামী বোঁটা।  কোমর বেঁকিয়ে নিজের পাছার দিকে তাকায় ও।  ফর্সা নিটোল গোল ভারী পাছায় একটাও দাগ নেই। একেবারে ঝকঝকে।  সামনে ঘুরতেই  ' v' আকারের শেপের মাঝে চেড়া দাগ. …...চারদিন আগে শেভ করা যোনীতে গুটি গুটি চুল বেরোতে শুরু করেছে,  তাই একটু কুটকুট করছে। স্নান করার জন্য কাঁচের ঘেরা জায়গায় ঢোকে ও।  এখানে গরম ঠান্ডা দুটো জলের ব্যাবস্থাই আছে। ও গরম জলে নিজেকে ভিজিয়ে স্নান করে।  দামী বিদেশী বডি শ্যাম্পু দিয়ে গা ধোয়..... প্রায় দশ মিনিট ধরে নিজেকে পরিষ্কার করে বেরিয়ে আসে।  শুকনো হয়ে কাপড় পরে নিজেকে সিঁদুর আর গয়নায় সাজিয়ে নেয়।


এই বাড়িতে কাজের লোকের অভাব নেই।  রান্না থেকে বাজার ঝাড়পোঁছ থেকে কাচাকুচি সব কিছুর জন্য লোক আছে।  সেদিকে দেখতে গেলে কোন কাজই নেই মৌ এর।  তবুও সারাদিন ঘরে বসে থাকা বারণ। বাড়ির পুরুষেরা এখন সবাই কাজে।  দুপুরে এখানে কেউ একসাথে খায় না,  খায় রাতে। রাতে সবাই ৯ টার মধ্যে বাড়িতে চলে আসে তারপর একসাথে খাওয়া দাওয়া করা হয়। 


বাইরে বসার ঘরে সবাই ছিলো।  সেখানে আসতেই শাশুড়ী বলেন,  " বোসো ছোট বৌমা। "

শাশুড়ীর নাম সনকা সেন।  বিয়ের কার্ডে দেখেছিলো মৌ।  বয়স ৫৫ বছর হলেও নিজের যত্ন করেন বেশ ভালোই।  মেদহীন সুঠাম শরীর।  গায়ের রঙ এই আবদ্ধ বাড়িতে থাকতে থাকতে আরো উজ্জ্বল হয়ে গেছে।  খুব কাছ থেকে দেখলে সামান্য বোঝা গেলেও দূর থেকে পঁয়তাল্লিশ ছেচল্লিশের বেশী মনে হয় না।  সব সময় দামী শাড়ী আর ব্লাউজ পরেন..... শুধু রাতে খাওয়ার পর হাউজকোট পরেন। এখন বসার ঘরে সোফায় পায়ের উপর পা তুলে  বসে আছেন।  ওর সামনে মোহনা.... সুলগ্নাকে কোথাও দেখা গেলো না।

মৌ মোহনার দিকে তাকিয়ে সোফায় বসে একটু জড়ো সড়ো হয়ে।

সনকা একটু চেয়ে থেকে বলে,  " শোনো..... আগামী পূর্নিমাতে গুরুদেব এই বাড়িতে আসবেন,  তখনই গৃহলক্ষ্ণীর পূজা সম্পন্ন হবে,  গুরুদেব প্রায় সাতদিন এখানে থাকবেন,....... সেই কদিন তিনি  আর কারো সেবা নেবেন না,  তোমাকে একা হাতে তাকে সেবা করতে হবে। "

মৌ চুপ করে মাথা নাড়ে।  কি কি কাজ সেবার মধ্যে পড়ে সেটা জিজ্ঞেস করতে সাহস হয় না।  

সনকা আবার বলেন, " তোমার পিরিয়ডের তারিখ কবে?  "

" সাতদিন আগেই শেষ হয়েছে মা "

সনকা মনে মনে হিসাব করে বলেন,  " ঠিক আছে,  সঠিক সময়েই পড়েছে। "

ওদের কথার মাঝেই সুলগ্না সেখানে এসে পড়ে।  সুলগ্নাও যথেষ্ট সুন্দরী।  বয়সে প্রায় মৌ এর সমান,  এখন ওর পরনে ফিটিংস জিন্স আর স্লিভ লেস টপ,  চোখে সানগ্লাস,  সিল্কি চুল যত্ন করে কালার আর কাটিং করা।  বনেদী বাড়ির মেয়ে হয়েও পোষাক যথেষ্ট আধুনিক।  তাহলে চিন্তাধারা গুলো এমন কেনো এদের?  

" মা..... আমি বেরোচ্ছি,  ফিরতে সন্ধ্যা হবে,  " বলেই মৌ আর মোহনার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বেরিয়ে যায়।  একটু পরে বাইরে থেকে গাড়ীর আওয়াজ আসে।  এই বাড়িতে প্রায় ৫ / ৬ টা গাড়ী।  আলাদা আলাদা ড্রাইভার।  যার যখন প্রয়োজন গাড়ী নিয়ে যায়।  


রাতে রক্তিম আসে ওর সাথে দেখা করতে।  মৌ তখন চুপচাপ বসে ছিলো।  রক্তিমকে দেখেই একটা প্রবল অভিমান ওকে চেপে ধরে।  ও কিছু না বলে মাথা নীচু করে রাখে।  ভেবেছিলো ওর প্রতিক্রিয়া দেখে রক্তিম ওকে কাছে টেনে নিয়ে দুটো ভালো কথা বলবে।  কিন্তু সেসব কিছুই হয় না।  রক্তিম ওর সামনে বসে কিন্তু ওর মানসিক অবস্থা নিয়ে একটাও কথা বলে না।

" মা বৌদির কাছে সব বুঝে নিয়েছো তো?  শোন এই বাড়ির নিয়ম কানুনের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করবে না কখনো..... আর হ্যাঁ,  বাপের বাড়িটা যত কম যাওয়া যায় সেটাই ভালো...... গেলে গাড়ি নিয়ে গিয়ে দেখা করে আবার ফিরে আসবে। " রক্তিম গলার স্বর গম্ভীর করে বলে কথাগুলো।

অবাক হয়ে ওর দিকে তাকায় মৌ।  নতুন বৌ কে মানসিক ভাবে সান্তনা তো দূর,  এতো সামান্য সৌজন্যতা টুকুও দেখালো না।  ভালোবাসা অনেক দুরের জিনিস।  যেনো এই কটা কথা বলতেই এখানে আসা।  কথা শেষ করে উঠে আঁড়ায় রক্তিম,  

" আমি খাওয়ার টেবিলে যাচ্ছি,  তুমিও এসো। "

মৌ এর হতভম্ব দৃষ্টির সামনে দিয়ে উঠে চলে যায় রক্তিম।  খাবার টেবিলে নানা টপিক নিয়ে আলোচনা হয় ওদের।  সেখানে প্রায় নিশ্চুপ হয়ে খাওয়া শেষ করে মৌ।  


রাতে বিছানায় শুয়ে কিছুতেই ঘুম আসে না মৌ এর।  এপাশ ওপাশ করে শুধু।  মাথায় শুধু নানা চিন্তাওভাবনা জট পাকিয়ে যাচ্ছে।  অসহ্য লাগছিলো ওর।

সন্তর্পনে দরজা খুলে বাইরে আসে মৌ।  বিশাল বাড়ি এখন খাঁ খাঁ করছে।  ড্রয়িং রুমের বিরাট ঘড়িতে পৌনে একটা বাজে৷ এই বাড়ির ছাদে এখনো যায় নি ও।  সবাই এখন ঘুমিয়ে।  একবার কি ছাদে খোলা হাওয়ায় আঁড়ালে অস্বস্তি কাটবে?  মৌ পা টিপে টিপে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে যায়। তারপর সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসে তিনতলায়।  তিনতলায় অনেক গুলো ঘর।  এর মধ্যে একটা ওর ননদ সুলগ্নার।  মৌ একটু দাঁড়িয়ে তাকায় সুলগ্নার ঘরের দিকে।  ওর ঘরের দরজা একটু ফাঁক হয়ে আছে,  ভিতরে আলো জ্বলছে। এই ফ্লোর এ আর কেউ থাকে না।  মৌ এগোতে যাবে ঠিক তখনি সুলগ্নার ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে রক্তিম।  খালি গায়ে একটা পাজামা পরা,  মৌ তাড়াতাড়ি আড়ালে লুকিয়ে যায়। কে জানে ওকে এতো রাতে ছাদে যেতে দেখে যদি নিষেধ করে।

রক্তিম কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা নীচে নেমে যায়।  অদ্ভুত!  এতো রাতে রক্তিম সুলগ্নার ঘরে কি করছিলো?  মৌ এর কেমন ধোঁয়াশা লাগে ব্যাপারটা।  পরক্ষণেই আবার ভাবে,  সারাদিন ভাইবোনে দেখা হয় না,  হয়তো কোন গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিলো যেটা নিয়ে আলোচনা করছিলো।  


মৌ সোজা ছাদে চলে আসে।  বিশাল বড়ো ছাদ।  যেনো একটা ছোটখাটো প্লে গ্রাউন্ড।  দারুন সুন্দর সাজানো গোছানো।  একপাশে ছাদের বাগান,  দোলনা, ..... পুরোটাই দামী মার্বেল পাথরে বাঁধানো। এতো উপরে ছাদে সুন্দর হাওয়া দিচ্ছে।  শরীর একটু ভালো লাগছে ওর।  মৌ একটু এগিয়ে যায়,  কিন্তু একটু এগোতেই কানে একটা শব্দ আসে.... কে যেনো জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে,  মনে হচ্ছে হাঁফাচ্ছে....... ভালো করে খেয়াল করলে বোঝা যায়,  একটা নয় দুটো আওয়াজ।

ব্যাপারটা কি দেখার জন্য এগিয়ে যায় মৌ।  সামনে একটা বেশ ঝাঁকড়া কমলালেবুর গাছ,  সেটা পার করে তাকাতেই চক্ষু চড়কগাছ ওর......ওর একটু দূরে মাটিতে শুয়ে দুটো নগ্ন শরীর। একটা মেয়ে আর একটা ছেলে।  মেয়েটা চিৎ হয়ে  শুয়ে দুই পা ছড়িয়ে শুন্যে তুলে আছে,  আর ওর দুই পায়ের মাঝে একটা পুরুষ শরীর ওঠানামা করছে।  দুজনের গায়ে একটা সুতোও নেই।  ছাদে কোথাও জোরালো আলাও নেই।  তাই ভালো করে বুঝতে পারছে না এরা কে। মেয়েটার হাত ছেলেটার কাঁধ খামচে ধরেছে।  আবছা আলোতেও ছেলেটার পিঠের ঘাম চকচক করছে।  ওর ওঠানামার সাথে সাথে একটা হালকা থপ থপ আওয়াজ আসছে,  আর আসছে ওর মুখ থেকে জোরে শ্বাস ফেলার শব্দ। মেয়টার মুখ থেকে শিশের মত শীৎকাত ব্ব্রিয়ে আসছে।

আজ পর্যন্ত নিজের সামনে কখনো কাউকে সঙ্গম করতে দেখে নি মৌ। এই ঘটনায় ও বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।  চুম্বকের মত ওর চোখ আটকে আছে ওদের দিকে।  এবার ছেলেটা একহাতে ভর দিয়ে অন্যহাতে মেয়েটার স্তন চাপতে থাকে।  মেয়েটার শীৎকার আরো বেড়ে যায়।  ও দুই পা দিয়ে ছেলেটার কোমর জড়িয়ে ধরে।  


ছেলেটা এবার পা ভাঁজ করে বসে,  ওর লিঙ্গ বোধহয় বের করে নিয়েছে যোনী থেকে,  হাঁটু গেড়ে মেয়েটার পা ভাঁজ করে ওর যোনীতে আবার নিজের পুরুষাঙ্গ ঢোকায়।  

মেয়েটা " আহহ..... আসতে,  " বলে ওঠে।  

ছেলেটা আবার প্রবল বেগে কোমর নাড়াতে থাকে।  সেই সাথে মেয়েটার মুখ থেকে ছন্দবদ্ধ সুরে,  " আহহ.... আহহ..... আহহহ.... উহহ.... উহহহ " আওয়াজ বেরোচ্ছে।  

মেয়েটা নিজেই দুই হাতে নিজের স্তন চটকাচ্ছে।  যত সময় এগোচ্ছে ওদের সমবেত শিৎকার ক্রমশই বেড়ে চলেছে।  

প্রায় মিনিট দশ পরে ছেলেটা মেয়েটার যোনীতে নিজেকে ঠেলে ধরে থেমে যায়।  মেয়েটাও দুই হাত ছড়িয়ে আগেই শান্ত হয়ে গেছে।  মনে হয় ওদের শেষ হয়ে গেছে।  মৌ তাড়াতাড়ি সেখান থেকে সরে আসতে গিয়ে একটা টবের সাথে ধাক্কা খায়।  সেই শব্দে ওরা লাফিয়ে ওঠে। ঘুরে তাকিয়েই মৌকে দেখতে পায়।

এতোক্ষণ ওদেরকে চিনতে পারে নি মৌ।  এবার দেখে এরা এই বাড়ির ড্রাইভার নয়ন আর কাজের মেয়ে সুমিতা।  দুজনারী বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। ধরা পড়ে গিয়ে ওরা স্টাচু হয়ে গেছে।  মৌ তাকিয়ে দেখে নয়নের কালো মাঝারী লিঙ্গ থেকে এখনো একফোঁটা বীর্য্য ঝরে পড়ে।

ওরা দুজনেই ত্বড়াতাড়ি নিজেদের পোষাক দিয়ে লজ্জা ঢাকে।  কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে পারে না।  মৌ গম্ভীর স্বরে বলে, " আমি কাউকে কিছু বলবো না,  চিন্তা নেই। "

ও পা চালিয়ে নীচে এসে নিজের ঘরে বিছানায় শুয়ে পড়ে।  


পরের দিন সকালে সবার আগে উঠে রেডী হয়ে বাইরে আসে মৌ। ওর জায়ের ঘর এখনো বন্ধ।  কি করবে ভেবে পায় না।  দেখে সুমিতা চা হাতে সিঁড়ি দিয়ে উঠছে।  সামনে মৌকে দেখে ওর মুখ কালো হয়ে যায়।  

" কিগো কার চা এটা?  " মৌ প্রশ্ন করে।

সুমিতা মাথা নীচু করে বলে দিদির হার্বাল চা..... সকালে এটাই খায় দিদি।

দিদি মানে ওর ননদ সুলগ্নার।  মৌ সুমিতার হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে বলে,  " যাও.... আমি দিয়ে আসছি। "

সুমিতা মাথা নেড়ে চলে গেলে মৌ কাপ হাতে তিনতলায় উঠে আসে।  সুলগ্নার বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নরম সুরে ডাকে, " ঠাকুরঝী। "

ভিতরে ঘুম জড়ানো গলায় বলে,  " কে?  দরজা খোলা,  ঠেলে ভিতরে আসো। "

মৌ চায়ের কাপ হাতে দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকেই অবাক হয়ে যায়।  বিশাল বড় সাদা খাটে সম্পূর্ণ উলঙ্গ সুলগ্না ঘুমাচ্ছে,  উপুড় হয়ে শুয়ে আছে,  বুকের তলায় বালিস রেখে সেটাকে জড়িয়ে ধরেছে।  ওর ৩২ সাইজের স্তন চাপে একপাশে ফুলে উঠেছে।  একটা পা সোজা আর একটা ভাঁজ করা। সুলগ্নার নিতম্ব বেশ বড়ো,  উপুড় হয়ে থাকায় সেটা আরো বড়ো লাগছে।  থাই এর মাঝখান দিয়ে ওর যোনী কিছুটা দেখা য্বচ্ছে।

মৌ চরম অস্বস্তিতে পড়ে।  এই অবস্থায় যে মৌকে দেখবে সেটা ভাবে নি।  এখন কি করবে?  বেরিয়ে যাবে?  নাকি ডাকবে?  

ওর ভাবনার মাঝেই উঠে বসে সুলগ্না।  ওকে দেখে বলে,  " একি তুমি?  সুমিতা কই?  "

মৌ চাটা নামিয়ে রেখে অন্যদিকে তাকিয়ে বলে,  আমিই বললাম যে,  দাও আমি দিয়ে আসি।  কাজ তো কিছুই নেই।

সুলগ্না নিজেকে ঢাকার কোন চেষ্টাই করে না। সেই অবস্থাতেই চায়ের কাপ তুলে নিয়ে বলে,  " ভালো করেছো,  বসো...... "

মৌ পাশে বসতেই বলে,  " আসলে জামা কাপড় পড়ে শুতে আমার ভালো লাগে না,  সুমিতা জানে যে আমি এভাবেই ঘুমাই..... তাই ও নির্দ্বিধায় ঢুকে পড়ে।  "

মৌ দেখে সুলগ্নার নাভির বেশ নীচে একটা ট্যাটু করা।  যৌনকেশ থাকলেও সেটা সুন্দর করে ছাঁটা। মৌ এর সামনে এভাবে নিজেকে প্রদর্শন করতে ও বিন্দুমাত্র বিব্রত বোধ করছে না।

সুলগ্নার স্তন সামান্য বড়ো আর ঝুলে গেছে সামান্য।  বোঁটাগুলো গাঢ় বাদামী,  চারিদিকে হালকা বাদামী সার্কেল।

চাটা শেষ করে উঠে দাঁড়ায় সুলগ্না...." তুমি বসো,  আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসি। " নিজের পোষাক নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায় সুলগ্না।  
Deep's story
[+] 6 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply
#8
(22-11-2025, 12:25 PM)gungchill Wrote: আপনার লেখা রূপকথার গল্প আমি খুব এঞ্জয় করেছিলাম । আশায় ছিলাম কখন নতুন গল্প আনবেন । খুব ভালো লাগলো নতুন গল্প দেখে । আশা করি এই গল্প ও আগের গল্পের মত এঞ্জয়্যেবল হবে ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Deep's story
[+] 1 user Likes sarkardibyendu's post
Like Reply
#9
(22-11-2025, 04:44 PM)sarkardibyendu Wrote:
SUPERB , CHALIE JAO GURU
Like Reply
#10
Darun
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
#11
Have been waiting for a story with a plot just like this for a long time. This is fantastic. Can't wait to read what's next!
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)