Thread Rating:
  • 7 Vote(s) - 3.14 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
নিষিদ্ধ দ্বীপ by fer.prog
#1
এই গল্পটি আপনাদেরকে ১০০ বছর পিছনে গিয়ে পড়তে হবে। উনিশ শতকের প্রথম দিকের কথা বলছি, যখন এই পৃথিবীতে যোগাযোগ ব্যবস্থা আজকের মত এতো আধুনিক ছিলো না। ছেলে মেয়েরাও এতো আধুনিক ছিলো না। গল্পের নায়ক একজন ব্যবসায়ী, উনার নাম বাকের। উনার ঘরে একজন সুন্দরী স্ত্রী আছে যার নাম সাবিহা, আর ওদের একমাত্র ছেলে যার নাম আহসান। বাকের সাহেবের বয়স এখন ৫১ ছুই ছুই এবং তার স্ত্রী সাবিহার বয়স ৩২। বিয়ে করেছিলেন একটু দেরিতে, কিন্তু মেয়ে ছিলো অল্প বয়সী। বিয়ের সময় সাবিহার বয়স ছিলো ১৮ আর বাকেরের ৩৭, প্রায় দিগুন বয়স। 

মা হতে দেরি হয়নি সাবিহার। বিয়ের বছর কয়েক পরেই আহসান চলে এলো ওর কোলে। বিয়ের পর থেকে বাকেরের জীবনের ভাগ্য লক্ষ্মী যেন দূরে সরে যেতে লাগলো একটু একটু করে। একের পর এক ব্যবসায় লস হতে হতে এক ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসা। আবার লস, আবারও ব্যবসা পরিবর্তন, এভাবেই চলছিলো বাকের আর সাবিহার জীবন। অসম্ভব রকম দৃঢ় মনোবলের মানুষ বাকের। শরীরেও অনেক শক্তি ধরে, মনের জোরও তুলনাহীন এবং সাথে জেদও তার ভীষণ। কোনদিন সাবিহাকে বকা বা গালাগালি দিতো না সে। ওর আচার আচরণে ভালবাসার প্রকাশ অতটা প্রকট না হলেও সাবিহা জানে যে, ওর কোন প্রকার অসুবিধা সইতে পারে না বাকের। একটা মুখে না বলা ভালোবাসার টান ওদের মধ্যে ঠিকই ছিলো।

সাবিহা ছিলো উচ্চ বংশের ভদ্র সচ্ছল ঘরের সন্তান। সুন্দরী, ভদ্র, অমায়িক আর আদরের সন্তান। জীবনে কোনদিন অভাব চোখে দেখেনি। বাকেরের সংসারে এসে ওকে হাড়-ভাঙ্গা খাটুনীর সাথে সাথে টাকা পয়সার টানাটানিও সয়ে নিতে হচ্ছে। শেষ ব্যবসায় ধরা খাবার পর বাকের স্থির করলো যে, এই দেশে ওর পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব না। ওকে এই দেশ ছেড়ে অন্য দেশে গিয়ে ব্যবসা করতে হবে, তাই সে অস্ট্রেলিয়া যাবার চিন্তা করলো। ওখানে কিছু লোক আছে যারা ওকে আশা দিলো যে, ওকে সেদেশে ব্যবসা দাঁড় করিয়ে দিতে সাহায্য করবে। কিন্তু সেই সময়ের এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমানো আজকের দিনের মত সহজ ছিলো না। সমুদ্র পথেই প্রায় ৪ মাসের পথ অস্ট্রেলিয়া। আর সমুদ্র যাত্রা ছিলো অনেক ভয়ঙ্কর। কখন যে কোন বিপদ চলে আসে সেটার কোন আন্দাজ করা সম্ভব নয়। পুরোটাই অনিশ্চিত যাত্রা, সমুদ্র পথে। সাবিহার পরিবার অনেক বুঝালো বাকেরকে। কিন্তু আগেই বলেছি, অসম্ভব রকম জেদি এই লোকটা। ওর নিজের কথা থেকে ওকে কেউ সরাতে পারবে না ও নিজে ছাড়া। বড় বড় ব্যবসায়ী আর সাহসি লোক ছাড়া কেউ এই রকম দূর সমুদ্রযাত্রা করতে পারতো না তখনকার সময়। বিপদ নানা দিক থেকে আসতে পারে। আর আজকের দিনের মত রেডিও যোগাযোগও সম্ভব ছিলো না তখন মাঝ সমুদ্রে। বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসগরে ঢুকে গেলে পুরো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কখন ঝড় আসে, কখন সমুদ্র ফুলে উঠে আর কখন দিক বিভ্রান্ত হয়ে যায় তার কোন পুর্বাভাস পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। 

চোখের জলে আত্মীয়স্বজনদের বিদায় জানিয়ে সাবিহা ওর স্বামী আর ছেলেকে নিয়ে যেই জাহাজে উঠলো সেটা বেশ বড় জাহাজই ছিলো। প্রথম মাস খানেক ওদের ভালই কাটলো জাহাজে। পথে একবার ম্যানিলা থামলো, একবার ইন্দোনেশিয়াতে থামলো জাহাজ। ইন্দোনেশিয়া থেকে যেদিন ওরা প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেবার জন্যে রওনা দিলো সেটাও বেশ রৌদ্রউজ্জ্বল দিন ছিলো। প্রশান্ত মহাসাগরে ঢুকার পরে আর একটি সপ্তাহ চলে গেলো কোনরকম অঘটন ছাড়াই। পরেরদিন রাতে ওরা এক বিশাল টাইফুন ঝড়ের মুখে পড়ে গেলো। বাকের, সাবিহা আর ওদের কিশোর ছেলে রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় শোবার পোশাক পাল্টে বিছানায় উঠতে যাওয়ার পরই ঝড় শুরু হলো। এতো বড় জাহাজকে যেন খর-কুটোর মত আছড়ে আছড়ে ভেঙ্গে ফেলতে চেষ্টা করলো সেই ঝড়। ওরা সবাই যেন তুলোর মত উড়ে যেতে লাগলো এদিক সেদিক। যখন জাহাজ ডুবতে শুরু করলো তখন বাকের ওর স্ত্রীকে নিয়ে লাইফবোট খুঁজতে লাগলো আর ভাগ্য ভালো থাকার কারনে একটা পেয়েও গেলো।

ওরা তিনজনে লাইফ বোটে উঠতে না উঠতেই আরেকটা বড় ঢেউ এসে ওদেরকে জাহাজ থেকে অনেক দূরে নিয়ে গেলো। দূর থেকেই ওরা জাহাজকে ঝড়ের আঘাতে খণ্ড বিখণ্ড হয়ে যেতে দেখলো। এদিকে ঝড়ের মাত্রা তখন সবে মাত্র শুরু, ওদের ক্ষুদ্র লাইফবোটকে প্রশান্ত মহাসাগরের টাইফুনের ঢেউ একবার যেন আকাশে তুলে ফেলে আবার এক ধাক্কায় যেন পানির নিচে তলিয়ে দেয়। নিজেদের শরীরকে দড়ির সাহায্যে লাইফবোটের সাথে বেঁধে ফেলেছিলো ওরা সবাই, তাই লাইফবোটের যা হবে ওদেরও তাই হবে।

ওদের পড়নে কাপড় বলতে রাত্রে শোওয়ার পোশাক, যেটা ভিজে যাওয়ার কারনে শরীর ঢেকে রাখার কাজ না করে বরং আরও প্রকাশিত করে দিচ্ছে। সারারাত ঝড় চললো, আর সকালে যখন ঝড় থামলো তখন লাইফবোটের তলা কিছু অংশ খুলে গেছে। শুধু চার কিনারটা কোন রকমের ওদের শরীরকে আধা অংশ পানির নিচে আর আধা অংশ পানির উপরে ধরে রেখেছে। লাইফবোটের ভিতরে থাকা সামান্য কিছু জিনিষ এখনও আছে দেখে বাকের বোটের ভিতর থেকে পানি সেচে ফেলার কাজ শুরু করলো। কিন্তু সাবিহা ওকে বাধা দিলো, যেখানে বোটের তলা অর্ধেক খুলে গেছে, সেখানে পানি সেচে কি কমানো সম্ভব?
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
পূর্বে পঠিত, প্রত্যাশা ছিল পুরো গল্পটাই পাবো।
Like Reply
#3
পাঠকদের অনুপ্রেরণা পেলে গল্প পুরোটাই পোষ্ট করা হবে।
Like Reply
#4
পুরো গল্প পিডিএফ করে পোস্ট করেন।অন্য একটা সাইটে গল্পটা একবারে দেওয়া আছে।
Like Reply
#5
(04-04-2019, 04:57 PM)rlover Wrote: পুরো গল্প পিডিএফ করে পোস্ট করেন।অন্য একটা সাইটে গল্পটা একবারে দেওয়া আছে।

সরি! পিডিএফ করে পোষ্ট করতে পারছিনা। 
 আপনারা না চাইলে গল্পটি পোস্ট করবোনা।
Like Reply
#6
তাহলে একবারে সব দেন
Like Reply
#7
(04-04-2019, 06:45 PM)rlover Wrote: তাহলে একবারে সব দেন

একবারে সবটুুক পোষ্ট করা পসিবল নয়। 
তবে চেষ্টা করবো খুুব শীঘ্রই গল্পটি শেষ করতে। 

thanks..
Like Reply
#8
সকালের সমুদ্র এখন শান্ত, মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে। কিন্তু ওদের মনে আর শরীরে এক ফোঁটা শক্তিও আর অবশিষ্ট রেখে যায়নি গতকাল রাতের সর্বনাশা সেই ঝড়। বাকের আর সাবিহার অবস্থা তো খারাপই, কিন্তু বেশি খারাপ হচ্ছে আহসানের অবস্থা। ওর চোখ দুটি ভয়ে কাঁপছে, সমুদ্রের ঠাণ্ডা পানিতে শরীর কাঁপছে। 
“মা, আমরা কি মারা যাবো এখন?” -ওর মুখ দিয়ে প্রথম কথা এটাই বের হলো কাল রাতের পর। সাবিহা ছেলের মাথায় হাত রেখে সান্তনা দিলো, “কিছু হবে না বাবা, আশেপাশ দিয়ে অনেক জাহাজ যাবে, ওরা আমাদেরকে খুঁজতে বের হবে। খুব শীঘ্রই আমরা উদ্ধার পেয়ে যাবো…” -যদিও সাবিহা জানে এটা শুধু বলার জন্যেই বলা। ওদের ভাগ্যে যে সামনে কি আছে সেটা নিশ্চিত করে বলা এখন আর কারো পক্ষে সম্ভব না।

আসলে ঝড়ের কারনে ওরা মুল জাহাজের পথ থেকে প্রায় ১৫০ কিমি দূরে সরে এসেছে, যেখান দিয়ে সাধারণত জাহাজ চলাচল করে। তাই ওখান থেকে ওদেরকে খুঁজে বের করা সত্যিই অসম্ভব, অবশ্য যদি কেউ খোঁজ করে থাকে আদৌই। তাই আশাহত মনে আশার সঞ্চার  করার জন্যেই সাবিহা এই কথাটা ছেলেকে বললো। কিন্তু ওদের একমাত্র অবলম্বন বোটটাও যে ডুবে যেতে বসেছে, এটাকে বাঁচাতে হলে এটাকে ছেড়ে সমুদ্রে নেমে যেতে হবে ওদেরকে এখনই। ওদের বিপদের শেষ হয়েও যেন হচ্ছেনা।

এই গভীর সমুদ্রে ওরা পানির মধ্যে কতক্ষন বোটের কিনার ধরে ভেসে থাকতে চেষ্টা করতে পারবে ওরা জানেনা। কাছাকাছি কোন দ্বীপ বা বসতি আছে কি ওরা জানেনা। ওদের সঙ্গে সম্বল বলে জীবন ধারনের একটি উপকরনও নেই। এই লাইফবোটের ভিতরে যদি কিছু থাকে তাহলে হয়ত বেচে থাকার সংগ্রাম করা সম্ভব হবে ওদের। চারদিকে শুধু পানি আর পানি, স্বচ্ছ জলরাশি ওদের জন্যে সৌন্দর্য নয় বরং যেন মৃত্যুরই নামান্তর মাত্র।

বাকের চারদিকে তাকিয়ে শুধু কি যেন খুঁজছে, কিন্তু কিছুর দেখা কি পেলো? বোটটাকে বাঁচানোর জন্যে ওদেরকে পানিতে নেমে যেতে হলো। ওরা এখন বোটের কিনার ধরে পানিতে শরীর ডুবিয়ে ভেসে আছে। কাল রাতের মত দড়ি দিয়ে নিজেদেরকে বোটের সাথে বেঁধে রেখেছে, কিন্তু শরীরের ভার ওটার উপর দেয়া সম্ভব না।

হঠাৎ চোখের দৃষ্টি আহসানের কচি মুখের উপর পড়তেই বাকের বুঝতে পারলো যে আহসান ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলের দৃষ্টি অনুসরন করে সাবিহার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো যে, ঝড়ের তাণ্ডবের কারনে সাবিহার পড়নের উপরে কামিজের সামনের দিকে সবগুলি বোতাম ছিঁড়ে গেছে। তখন শুতে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুত হচ্ছিলো সাবিহা, তাই ওর পড়নে ব্রা নেই এখন। ওর উম্মুক্ত বুক দুটির উপরে ছেলের দৃষ্টি, সেটা বুঝতে পেরে একটু গলা পরিষ্কার করার মত করে শব্দ করলো বাকের। সাবিহা ওর দিকে তাকাতেই ইঙ্গিতে সাবিহার বুকের দিকে দেখিয়ে দিলো বাকের। 

সাবিহা এতক্ষনে বুঝতে পারলো যে ওর বুকের কাছটা পুরো খুলে গেছে। আর ওর বড় বড় মাই দুটি এখন পুরো উম্মুক্ত, সেদিকেই আহসান চোখের পলক না ফেলে তাকিয়ে আছে। সাবিহা ছেলের দিকে তাকাতেই আহসান লজ্জা পেয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো। কিন্তু হাতে কিছু নেই যে সাবিহা ওর বুকের উপর দিয়ে নিজের লজ্জা সংবরণ করবে। তাই বাধ্য হয়ে সাবিহা ওর পড়নের কামিজের নিচের অংশ মাঝমাঝি ভাজ করে নিজের বুকের দিকে উঠিয়ে নিয়ে বুক ঢাকলো। জীবনের চরম বিপদের দিনেও নিজের লজ্জাস্থান ঢেকে রাখার শিক্ষা ভুলে যায়নি সে।
Like Reply
#9
বোটের কিনার ধরে ওরা ভেসে চললো পানির স্রোতের টানে, লক্ষ্যহীনভাবে, খাদ্য, পানি ও কাপড় ছাড়া। দিনটা পার হতেই যেন ওদের শরীরের শক্তি একদম নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে কতদিন কাটাবে ওরা জানেনা। মনে মনে আহসান ওর আব্বুর উপর বেশ ক্ষিপ্ত হয়েছিলো। কারণ উনার জিদের কারনেই ওদেরকে দেশ ছেড়ে জাহাজে উঠতে হয়েছে, আর এখন ওদের এই অবস্থা। ওরা কি আদৌ উদ্ধার পাবে নাকি এভাবে ভেসে ভেসে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়বে?

একটা মাছ শিকার করে খাওয়ার মত শক্তিও যেন নেই ওদের কারো শরীরে, অবশ্য কোন হাতিয়ারও নেই। সাবিহা ছিল অতন্ত ভদ্র আর বিনয়ী একজন মহিলা। খাদ্যের চেয়েও নিজের শরীর পুরো ঢেকে রাখার মত কাপড়ও যে নেই ওর কাছে এটাই যেন ওকে বেশি বিড়ম্বনা আর অস্থিরতা দিচ্ছিলো। রাতের আধার নেমে এলে সেই বিব্রত অবস্থা যেন কিছুটা কমে এলো। যদিও কাল রাতের পর থেকে কারো পেটে কোন দানা পানি না পড়াতে ওদের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়তে লাগলো সময়ের সাথে সাথে।

এভাবেই পরের দিনটিও কেটে গেলো। অনেকবার ওদের মনে হয়েছে যেন সামনে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে, সেটা মনে হয় একটা দ্বীপ। তখন ওদের শরীরে আর মনে একটা আশার সঞ্চার হয়ে যায়, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সেটা মিলিয়ে যেতেই আবার নিরাশার চোরাবালি ওদেরকে ঘিরে ধরে। ঝড়ের রাতের পরে এভাবেই তিনটি দিন ও রাত কেটে গেলো। ওদের শরীর যেন আর পানির উপরেও নিজের ভার ধরে রাখতে পারছিলো না। অধিকাংশ সময় চোখ বুজে নির্জীব হয়ে পড়ে ছিলো ওরা। লাইফবোটে কোন খাবার না থাকাতে ওদের জীবনী শক্তি ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে শুরু করেছে। 

হঠাৎই চতুর্থ দিন সকালে বাকেরের চোখে পড়লো দূরের একটা বিন্দু। সে মাথা সোজা করে ওদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো আর সাবিহাকে ডাক দিলো, “দেখো ওটা মনে হয় একটা দ্বীপ, সাবিহা উঠো…” সাবিহা চোখ মেলে স্বামীকে অনুসরণ করে দেখল একটা বিন্দু দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ওটা কি দ্বীপ নাকি গত তিনদিনের মত কোন এক আলেয়া সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলনা সে। তবুও আশার বালিতে ঘর বেঁধে সাবিহা ডেকে তুললো আহসানকে, “বাবা, উঠ; দেখ, ওটা মনে হয় একটা দ্বীপ। জোরে জোরে সাতার কাট, বাবা; আমাদেরকে ওখানে যেতে হবে…”। মায়ের মুখের কথা ছেলে কি অবিশ্বাস করতে পারে? কিন্তু  শরীরে যে শক্তি নেই তার! তারপরও সাবিহার কথায় ওরা তিনজনেই ঝাপিয়ে পরলো দ্রুত সাতার কেটে ওদিকে যাওয়ার জন্যে। 

উপরওয়ালা এইবার সত্যি সত্যি ওদেরকে একটা দ্বীপে এনে পৌছালো। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সাতরে ওরা পায়ের নিচে বালির আস্তর টের পেলো। “আমরা পেরেছি…! ওহঃ খোদাঃ… আমরা পেরেছি…!” -সাবিহা বেশি খুশি ছিলো এই আশার বালি দ্বীপে পৌঁছতে পেরে। ওর ভিতরে এখনও অনেক উচ্ছ্বাস যেন উপচে পড়ছে। যদিও ওদের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে তৃষ্ণার জলের জন্যে। সাবিহা ওর স্বামীর দিকে তাকালো, আহসানকে বেশি খুশি মনে হচ্ছেনা। 

“বেশি খুশি হতে পারছি না, সাবিহা। আমরা কাছের কোন বসতীর থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে আছি। আর এই দ্বীপটা দেখে মনে হচ্ছে, এখানে কেউ নেই। আমাদের উদ্ধার পাবার আশা খুব কম…!” -বাকের মন খারাপ করে চারদিকে চোখ বুলাতে বুলাতে বললো। “কিন্তু এই দ্বীপে আমরা খাদ্য আর পানির ব্যবস্থা হয়ত করতে পারবো, তাই না?” -সাবিহা জানতে চাইলো। “হয়ত, দেখি আমাকে আগে খাবার পানির কোন উৎস খুঁজে বের করতে হবে, যদি পানি সত্যিই থেকে থাকে এই দ্বীপে। তোমরা দুজনে রোদ থেকে সড়ে ছায়ায় এসে বসো, আমি একটু চারদিকে ঘুরে দেখি কোথায় কি পাওয়া যায়” -এই বলে বাকের চলে গেলো দ্বীপের ভিতর দিকটাতে।
Like Reply
#10
আহসান আর ওর মা আগে ওদের ভাঙ্গা বোট ও ওখানে থাকা অবশিষ্ট সামান্য কিছু মালপত্র তীরে নিরাপদ দুরত্বে টেনে আনলো। এরপরে ছায়ায় বসে চারদিকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করলো যে এই দ্বীপে কি আছে? এখানে ওরা বেঁচে থাকতে পারবে কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরছে দুজনের মনেই। কিন্তু অনেকদিন পরে বিধাতা ওদের প্রতি সত্যিই সুপ্রসন্ন ছিলো, তাই বাকের অল্প কিছু দূরে যেতেই একটা মিষ্টি পানির ঝর্না দেখতে পেলো। সেখান থেকে পানি খেয়ে শরীরে শক্তি করে নিলো, আর মনে মনে চিন্তা করলো যে এই ঝর্নার কাছেই ওদের একটা বাসস্থান তৈরি করতে হবে, কারণ বাসস্থানের জন্যে এটাই উপযুক্ত জায়গা।

কাছেই অল্প কিছু ফল গাছও পেয়ে গেলো বাকের। সেখান থেকে সে দ্রুত চলে এলো ওর স্ত্রী আর ছেলেকে সুসংবাদ দেয়ার জন্যে। সবাই মিলে পানি আর ফল খাওয়ার পর এখন চিন্তা এই দ্বীপে কি আছে, কোন মানুষ বা জনপ্রানী আছে কি না? বা এখান থেকে ওদের উদ্ধার পাওয়ার ব্যবস্থা কিভাবে হবে? পায়ের নিচে মাটির অস্তিত্ব পাওয়ার পর এখন পরবর্তী জীবনের সন্ধান। বাকের স্থির করলো যে আগে ওকে দেখতে হবে এই দ্বীপটাকে ভাল করে। এখানে জীবন ধারন খুব কঠিন হয়ে যাবে ওদের সবার জন্যে। কিন্তু সেই কঠিনের মাপকাঠি ঠিক করার জন্যে আগে পুরো দ্বীপটাকে ঘুরে দেখতে হবে।

ওদের দুজনকে বিশ্রাম করতে রেখে বাকের হাঁটতে শুরু করলো, সে দেখতে পেলো যে পুরো দ্বীপটা বেশ ঘন জঙ্গলে ভর্তি। ওখানে অনেক পশু পাখি আছে, কিন্তু ক্ষতিকর বা ভীতিকর কোন কিছু ওর নজরে এলোনা। পুরো দ্বীপটা লম্বায় ৪ কিলোমিটারের মত হবে আর চওড়ায়ও প্রায় একই সমান। দ্বীপের মাঝামাঝি জায়গায় আরও একটা বড় ঝর্না দেখতে পেলো বাকের। ঝর্নার সামনে অনেকটা পুকুরের মত পানি জমে আছে আর চারপাশে অনেক পাথর দেখতে পেলো। দ্বিপের মাঝে বেশ কয়েকটি পাহাড় আছে। এরমধ্যে দুটি ছোট ছোট আর বাকি গুলি বেশ বড় বড়, তবে মানুষ উঠার মত অনুকূল জায়গা। 

পাহাড় দেখে বাকেরের মনে আশার সঞ্চার হলো যে, এখান থেকে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যাবে আর ওদের কাছাকাছি দিয়ে কোন জাহাজ এলে তাকে এই পাহাড়ের চূড়া থেকে সঙ্কেত পাঠানো যাবে। বাকের একটা বড় পাহাড়ে উঠতে শুরু করলো, যেন উঁচু জায়গা থেকে পুরো দ্বীপটাকে আরও ভালো করে দেখে নেয়া যায়। পাহাড়ের চূড়ায় এসে বাকের একটু বিশ্রাম নিলো। চারদিকে তাকিয়ে দেখে বুঝতে পারলো যে এই দ্বীপে ওদের জীবন ধারণের জন্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ আছে, জীববৈচিত্রও এখানে বিদ্যমান।

ও যেই দিকে ওর স্ত্রী আর ছেলেকে রেখে এসেছে সেই দিক থেকে বিপরীত দিকে তাকিয়ে দ্বীপের অন্য একটা খোলা কিনার, বালুতট দেখা যায়। সেখানে কিছু বিক্ষিপ্ত কাঠের মত কিছু জিনিষ দেখতে পেলো। বাকেরের মন খুশিতে দুলে উঠলো। সে ওই কালো রেখার মত জিনিষগুলি কি সেটা বুঝার জন্যে দ্রুত পাহাড় থেকে নেমে ওই দিকে অগ্রসর হলো।

আগেই বলেছিলাম যে বিধাতা কেন জানি ওদের উপর এই মুহূর্তে খুব সন্তুষ্ট, তাই তিনি যেন ওদের এই নির্জন দ্বীপে জীবন কাটানোর কিছু উপকরণ নিজ হাতে এনে দিয়েছে। কাছে যেতেই বাকের বুঝতে পারলো যে, এইগুলি ওদের জাহাজেরই কিছু ভাঙ্গা অংশ। যার সাথে বেশ কিছু হাড়ি পাতিল, অল্প কাপড় আর জীবন ধারণের কিছু টুকিটাকি কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় জিনিষ রয়েছে। বিশেষ করে অল্প সামান্য কিছু কাপড় পেয়ে তার মন খুশিতে ভরে উঠলো। যদিও এই দুর্গম পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্যে কাপড়ের পরিমাণ অতি সামান্য। কিন্তু একদম উলঙ্গ হয়ে থাকার চেয়ে এই অল্প কিছু কাপড় দিয়ে ওদের নিজেদের লজ্জাস্থান টুকু অন্ততপক্ষে ঢাকা যাবে এটা ভেবে বাকের খুশি হলো। বাকের মাটিতে বসে পরলো খুশিতে, উপরে আকাশের দিকে তাকিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে নিজের মন থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলো। এই অল্প কিছু জিনিষ ওদের জন্যে যে কি মহামুল্যবান এই মুহূর্তে, সেটা মনে করে খুশিতে তার মনটা ভরে উঠলো। 

মনে আর শরীরে যেন নতুন করে বাঁচার লড়াইয়ে নামার একটা সাহস আর অনুপ্রেরনা পেলো সে। জাহাজের যেই ভাঙ্গা অংশ পেয়েছে সে, সেগুলি ওদের থাকার জায়গার কাছে টেনে নিয়ে যেতে পারলে কোন রকমের শোয়ার একটা জায়গা তৈরি করা সম্ভব হবে। বাকের প্রথমেই সেই ভেসে আসা জিনিষগুলিকে দ্বীপের একটু উপরে নিয়ে জড়ো করতে শুরু করলো যেখান থেকে সমুদ্রের ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। 

একা একা এই কাজে অনেক সময় ব্যয় হয়ে গেলো ওর। এরপরে যেটুকু জিনিস একেবারে হাতে করে নেয়া সম্ভব সেগুলি নিয়ে সে সাবিহা আর আহসানের কাছে রওনা দিলো। ওদেরকে গিয়ে সেই খুশির সংবাদ শুনালো সে। সাবিহা আর আহসানের সাহায্যে সে ধীরে ধীরে সব জিনিষ ওদের থাকার জায়গায় নিয়ে এলো।
Like Reply
#11
পরের বেশ কিছুদিন ওদের প্রচণ্ড পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে কেটে গেলো। বাকের এমনিতেই বেশ পরিশ্রমী মানুষ ছিলো, আর এখন এই প্রতিকুল পরিবেশে ওকে পরিশ্রমের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে হলো। নিজে যেন এক ৩০ বছরের যুবক এইভাবে সে ওদের নিজেদের জন্যে মাটির একটু উপরে কাঠ আর বাঁশ দিয়ে একটা মাচার মত ঘর আর উপরে একটা ছাউনি বানিয়ে ফেললো। মাচার সামনেই একটু নিচে আরও একটা ছোট মাচা বানাল যেন ওখানে আহসান শুতে পারে। আহসানের জন্যে শোবারর ব্যবস্থা একটু দূরে করতে চেয়েছিলো বাকের কিন্তু অজানা নির্জন দ্বীপে ছেলেকে কাছছাড়া করতে চাইলো না সাবিহা। ওদের দুজনের একমাত্র অবলম্বন যে এখন এই ছেলে, ওদের সমস্ত আশা ভরসা চিন্তা এখন আহসানকে ঘিরেই। যদিও ওদের থাকার জায়গার চারপাশে কোন বেড়া দেয়া সম্ভব হলো না, যেটা ওদের দুজনের স্বামী-স্ত্রীর একান্ত জীবনের জন্যে প্রয়োজনীয় ছিলো। কিন্তু তারপরও সাবিহা কোনভাবেই আহসানকে দূরে রাখতে চায় না।

ওদের থাকার মাচার সামনে থেকে দ্বীপের কিনার পর্যন্ত জঙ্গল সাফ করে একটা রাস্তার মত বানানো হলো, যেন মাচাতে বসেই ওরা সমুদ্র দেখতে পায়। একসময় সাবিহার খুব শখ ছিলো সমুদ্র দেখার, এই বার যেন ওর সেই শখ ষোলআনা পূর্ণ করার ব্যবস্থা করে দিলেন উপরওয়ালা। ঘরের পাশেই একটা মাটির চুলা বানানো হলো, সেখানে কুড়িয়ে পাওয়া কিছু রান্নার জিনিসপত্র দিয়ে প্রতিদিন এক বেলা রান্না করছে সাবিহা। সাবিহা নিজে খুব ভালো রান্না পারে না। তবে সে শিক্ষিত মেয়ে হওয়ায় জানে কিভাবে কোন খাবারের মাধ্যমে নিজেদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে হয়। বাকেরের ধরে আনা মাছ আর জঙ্গল থেকে তুলে আনা সবজিই এখন ওদের প্রধান খাদ্য হয়ে গেলো। ওদের হাতে উপকরন খুব সামান্যই ছিলো কিন্তু সেটা দিয়েই বাকের নিজের মেধা বুদ্ধি আর পরিশ্রম দ্বারা ওদের জীবন ধারণের জন্যে প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সেগুলির ব্যবস্থা করতে লাগলো। 

কয়েকদিনের মধ্যেই ওদের জীবন-যাপন যেন একটা রুটিনের মধ্যে চলে এলো। সকালে বাকের একদিকে আর আহসান অন্যদিকে বেরিয়ে পড়তো। কিছু মাছ আর কিছু সবজি যোগাড় করে আনতো, এর পরে সাবিহা রান্না করতো। আহসান বসে বিশ্রাম নিতো আর বাকের ওর বিভিন্ন কাজে আবার বেড়িয়ে পড়তো। দুপুরে এক কাট সবাই ঘুমাতো, এর পরে বিকালের দিকে মা ছেলে ঘুরতে বের হতো। দ্বীপটা বেশ সুন্দর ছিলো, বিকালে যখন ওরা ঘুরতে বের হতো তখন সেটাকে ওদের একটা ছুটিতে কোন এক সুন্দর দ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার মতই মনে হতো।

আহসানের মনের অবস্থা খুব খারাপ। এভাবে যে জীবন কাটানো যায়, ছোট বেলার বইতে পড়া আদিম মানুষের জীবনের মত, এই জিনিষটা ওকে কষ্ট দিচ্ছে। জনমানবহীন এই দ্বীপে কিভাবে সে সময় কাটাবে, কোথায় ওর খেলার সঙ্গী, কোথায় ওর লেখা পড়ার সরঞ্জাম, কলেজ? ওর বাকি জীবনটা কি এইভাবেই এই দ্বীপেই কাটাতে হবে? এই প্রশ্নগুলি ওর মনকে কুরে কুরে খাচ্ছে। সাবিহা কিছুটা বুঝতে পারছিলো আহসানের এই মিইয়ে পড়া মানসিক অবসথা। ছেলেকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিজে ও কেঁদে ফেলতো প্রতিদিনই। ওদের মা ছেলের মাঝে সম্পর্ক সব সময়ই খুব কাছের ছিলো, বাবার সাথে সব সময়ই একটা দূরত্ব বজায় রেখে চলতো আহসান। ওর বাবা বাকের ও একটু গম্ভীর প্রকৃতির রাসভারি জেদি মেজাজের লোক, ছেলেকে নিয়ে আদিখ্যেতা করার মানসিকতা বা সময় কোনটাই ছিলোনা ওর কোন কালেই।

আহসান বলতে গেলে ওর মায়ের একার হাতেই মানুষ। বাবাকে একটু ভয়ও করে চলতো আহসান সব সময়। কিন্তু ঝড়ের কবলে পড়ার পর থেকে বাবার উপর রাগ আর অভিমান যেন আরও বেড়ে গিয়েছিলো ওর। বাবার সাথে কথা বলা আরও কমে গিয়েছিলো এই দ্বীপে আসার পর থেকে। ওর বাবার জেদের কারনেই যে ওদের আজ এই চরম খারাপ অবস্থা সেটা মনে করে মনে মনে আহসান বার বার ফুসে উঠতো। সাবিহা ওদের বাপ ছেলের মাঝের দূরত্বটা বেশ অনুভব করছিলো। একজন যে শুধু ফুসছে আর অন্যজন শুধু এড়িয়ে চলছে, এই পরিস্থিতি মোটেই সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না ওর কাছে। কিন্তু এই মুহূর্তে বাপ-ছেলের মাঝে কোন রকম উত্তপ্ত অবস্থা তৈরি হোক সেটা সে চাইছিলো না। তাই আহসানকে ওর বাবার কাছ থেকে যতটা সম্ভব আড়াল করে রাখার চেষ্টাই করতো সে।

যদিও এই মুহূর্ত ওদের জীবন-যাপনের অবস্থা একদম খারাপ না। কিন্তু তারপরও এই দ্বীপে কয়েক মাস বা বছর কাটানোর কথা চিন্তাই করতে পারছে না সাবিহা। সাবিহা কখনই তেমন বাইরে বাইরে ঘুরা টাইপের মেয়ে ছিলো না বা যাকে বলে উড়নচণ্ডী মেয়ে, সেটা ছিলো না সে। ওর পরিবার আর্থিক দিক থেকে যথেষ্ট সচ্চল ছিলো, তাই ঘরে বসেই সে নিজের জীবনের সব চাওয়াকে পূরণ হতে দেখেছে। ছোট বেলায় খাওয়া, ঘুমানো, পড়ালেখা আর মাঝে মাঝে সামাজিক আড্ডা দেয়া সমবয়সীদের সাথে, এর বাইরে কোন জীবন ছিলো না ওর। বাকেরের সাথে সংসার করতে এসে অনেক প্রতিকুল অবস্থা ওকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। বিশেষ করে ওদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যেকার মনের মিল আর বয়সের মিল করানো নিয়ে ওকে অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। কিন্তু পারিবারিক একটা সুশিক্ষার কারনে স্বামীকে সব সময় সম্মান করে চলা, স্বামীর কথা মানা, আর স্বামীকে জিজ্ঞেস না করে কিছু না করা, এই জিনিষগুলি ছিলো সাবিহার ভিতরে। সেটা দিয়েই সে সংসার টিকিয়ে রেখেছিলো। এখন স্বামীকে সঙ্গ দিতে এসে এই নির্জন দ্বীপে মানুষ ছাড়া কিভাবে সে বাঁচবে, এই চিন্তা ওকেও কুরে কুরে খাচ্ছিলো। নিজের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনদের কথা মনে করে নিরবে চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিইবা করার আছে এখন সাবিহার।
Like Reply
#12
যাযাবর বা ভবঘুরে জীবন সাবিহার জন্যে খুব কঠিন একটা আঘাত। কিন্তু সে জানে যে এর চেয়েও বড় আঘাত এসেছে আহসানের উপরে। ওর জীবনের একটা বড় অংশ  সামনে রয়েছে, সেই অংশটা কাটানোর জন্যে যে ওর যেই সঙ্গ, শিক্ষা আর পরিবেশ প্রয়োজন। আর সেটা দিতে না পারার বেদনাতে ও চোখের পানি বের হয়ে যায় সাবিহার। কষ্টে যেন বুকটা ফেটে যেতে চায় ওর। নিজেদের জীবনতো ওরা কাটিয়ে ফেলেছে, কিন্তু ওর ছেলের ভবিষ্যৎ জীবন কিভাবে সামনে এগুবে? এটা মনে করে গুমরে গুমরে  কেদে উঠে বার বার সাবিহা। সেই কান্না সে সবার অজান্তেই লুকিয়েই করে। যেন ছেলে দেখে না ফেলে, যেন স্বামী দেখে না ফেলে। বিশেষ করে ছেলের লেখাপড়া কিভাবে হবে আর ওর ছেলের জীবন সঙ্গী কিভাবে পাওয়া যাবে, এটা ভেবেই ওর মন বেশি উথাল পাথাল করে উঠতো।

সে জানে একজন পুরুষের জীবনে নারীর কি ভুমিকা। ও যদি বাকেরের পাশে না থাকতো তাহলে বাকের যে ওর এই জীবনটা কিভাবে কাটাতো, সেই চিন্তা থেকেই সে বুঝতে পারে যে ওর ছেলের এই কিশোর থেকে যৌবনের দিকে যাওয়ার এই বয়সে ভালবাসা, প্রেম, নারী এই সবের অনেক প্রয়োজন। কিন্তু তারও আগে ওর দরকার শিক্ষা, যেটাকে শুরু হতে না হতেই বন্ধ করে দিতে হলো ওদের এই পরিস্থিতিতে পড়ার কারনে। স্বামীর একার সিদ্ধান্তে এই বিদেশ যাত্রা নিয়ে এটাই হচ্ছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি পরিতাপের জায়গা সাবিহার মনে। এই জন্যে সেও মনে মনে বাকেরের একগুয়েমিকে দোষী মনে করে। ছেলের চিন্তায় মনে অস্থিরতা অনুভব করলেও সেই কথা কাউকে বলে মন হাল্কা করারও যে উপায় নেই ওর। আবার স্বামী ওদের এই বেঁচে থাকার জন্যে যে পরিশ্রম করছে, সেটাকেও খাটো করে দেখতে চায় না সে। বাকের সারাদিন কাটাচ্ছে মাছ ধরা আর খাবারও ওদের বসবাসকে সুবিধাজনক করার কাজে। সাবিহা আর আহসান একসাথে ওদের সময়ের বেশিরভাগ পার করছে। অন্য ১০টা মা-ছেলের চেয়ে ওদের মাঝের সম্পর্ক আগেও অনেক বেশি নিকটে ছিলো, এখন সেটা যেন আরও বেশি গভীর হচ্ছে দিন দিন। একজন অন্যজনের চোখের ভাষাও যেন পড়তে পারছে আজকাল।

এই দ্বীপে এসেছে ওরা প্রায় ২ মাস হতে চললো। সামাজিক মেলামেশা ও শিক্ষা থেকে আহসান যে দূরে রয়েছে, এই চিন্তাই সাবিহার ভিতরে কাজ করছে সব সময়। সাবিহা ভাবছে ওরা যদি এখান থেকে উদ্ধার পায় তাহলেও আহসানের এই দ্বীপে কাটানো একাকি সময়গুলি ওকে হয়ত অন্য সবার সাথে স্বাভাবিক হতে দিবেনা। বয়সের তুলনায় এখনও অনেক বেশি কাচা যে ওর ছেলেটা। আরও দু বছর আগে থেকেই আহসানের শরীরের পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে, এই সময়ে ওদের শরীরে প্রবাহিত হরমোনের কারনে ওদের ভিতরে চিন্তার পরিবর্তন ঘটে। সেই জন্যে ছেলের কথা চিন্তা করে সাবিহা প্রথমে বিদেশে যেতেই চায়নি। সে বাকেরকে  বলেছিলো যেন সে একা গিয়ে ১/২ বছর একা একা চেষ্টা করে দেখে। আর সেই সময়টা সাবিহা ছেলেকে নিয়ে ওর বাবার বাড়িতে থাকবে, এমন প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু বাকেরের জেদের কাছে ওকে নতি স্বীকার করতেই হলো। বিশেষ করে স্ত্রী আর ছেলেকে কিছুতেই নিজের কাছছাড়া করতে রাজি ছিলো না বাকের। আর এর পরিনাম এখন এই যে, ওরা ৩ টা মানুষ একা এই একাকি দ্বীপে আটকা পড়েছে। যার থেকে ওদের উদ্ধার পাবার আশা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। আদিম মানুষের মত জীবন কাটাতে হচ্ছে ওদের। যেখানে শুধু খাওয়া আর ঘুমানো ছাড়া আর কোন কাজ ছিলো না মানুষের।

শেষ কয়েক বছর থেকেই সাবিহা ওর বিবাহিত জীবনের মোহ থেকে নিজেকে অনেকটাই মুক্ত করে নিয়েছিলো। বাকেরে সাথে বয়সের তফাত দূর করতে এবং বাকের যেই চোখে এই পৃথিবীকে দেখে, সেটা দেখতে বার বার ব্যর্থ হয়েছে সাবিহা। এতদিন গল্প উপন্যাসে যেই প্রেম ভালোবাসা পড়ে এসেছে সাবিহা, সেটা ওর জীবনে সে কোনদিন অনুভব করেছে কি না মনে করতে পারে না। বাধ্য স্ত্রীর মত সব সময় বাকেরের সিদ্ধান্তের উপরই ওকে নির্ভর করতে হয়েছে। যদিও বাকের কখনও ওকে অসম্মান করতোনা বা অবহেলা দেখাতো না। কিন্তু তারপরও মনে মনে অনেকবারই সাবিহা চিন্তা করেছিলো ওর বিবাহিত জীবনকে ভেঙ্গে ফেলার কথা। কিন্তু ছেলের কথা চিন্তা করে, বিশেষ করে ওদের পরিবারের কথা চিন্তা করে সেই সাহস দেখানো থেকে বার বারই পিছিয়ে এসেছে সে। যদিও নিজেকে সে বলতো যে সে বাকেরকে ভালবাসে। কিন্তু শুধুমাত্র মা হওয়া ছাড়া আর কখনও সেই ভালবাসার আকার, প্রকৃতি বা উপস্থিতি ওর জীবনে দারুন দারুন কিছু মুহূর্তে এনে দিয়েছে, এই রকম একটা ঘটনাও সে মনে করতে পারছে না।

সাবিহা বরাবরই ওর সমবয়সী মেয়েদের চেয়ে বেশি লম্বা আর দেখতে বেশি সুশ্রী ও আকর্ষণীয়া ছিলো। শরীরের আকৃতির দিক থেকেও সে ছিলো অত্যন্ত কামনাময়ী, আবেদনময়ী। যে কোন ছেলের আকর্ষণের কেন্দ্রবস্তু, সব সময়। ওর স্তনদুটি ওর বয়সী মেয়েদের তুলনায় সব সময় বড় আর ভারী ছিলো, ব্রা ছাড়াও সব সময় উপরের বা সামনের দিকে তাকিয়ে থাকতো সে দুটি। এই কারণে ওকে খুব ঈর্ষা করতো ওর বান্ধবীরা। লম্বা চুল আর বড় কালো টানা টানা চোখ সাবিহার। শরীরের রঙ শ্যামলা ছেড়ে অনেকটাই ফর্সার দিকে। কিশোরী বয়সে সাবিহার ইচ্ছে ছিলো নাটক বা সিনেমায় অভিনয় করার, কিন্তু পারিবারিক বিধি নিষেধের কারনে সেই পথে যাওয়া হয়ে উঠেনি। কিন্তু ওর চোখে মুখে নাটকের অভিনেত্রীদের মত একটা দুষ্ট চমকানো কাছে টানার মত চমক ছিলো। এখন এই মাঝ বয়সে এসেও সাবিহা শরীরের গঠন ও আকার আকৃতির দিক থেকে ওর বয়সের অন্য ১০০০ টা মেয়ের চেয়ে আলাদা। ভিড়ের মাঝে আলাদা করে চিনে নিতে ভুল হবেনা কারো যে কে সাবিহা।
Like Reply
#13
ভালো গল্প!!
Heart    lets chat    Heart
Like Reply
#14
(05-04-2019, 08:38 AM)thyroid Wrote: ভালো গল্প!!

thanks bro..
Like Reply
#15
বাকের যখন ওকে বললো যে ভেসে আসা শিপের সঙ্গে কিছু কাপড়ও আছে, তখন সাবিহা খুব আশা করেছিলো যে ওর নিজের অল্প কিছু কাপড় হয়তো পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু মেয়েদের পড়ার মত কোন কাপড় ছিলো না সেখানে, যেগুলি ছিলো তা ওই জাহাজের এক পুরুষ রাধুনির কাপড় ছিলো। আর কাপড় বলতে শুধু ওই ব্যাটার পড়নের কিছু জাঙ্গিয়া, একটা চাদরের মত লম্বা বড় কাপড়ের টুকরা আর ওই ব্যাটার কিছু পাতলা রাতে ঘুমানোর গেঞ্জি। তবে আরও কয়েকটা চাদরের টুকরা আর শার্ট পাওয়া গিয়েছিলো, যেগুলিকে অনেকটা লুঙ্গির মত করে আহসান আর বাকের পড়ে দিন কাটাচ্ছে এখন। ওই লোকটা ছিল প্রচণ্ড রকম মোটা, ফলে ওর কাপড় পড়লে সেগুলি এতো ঢোলা আর বেঢপ হয়ে ফুলে থাকে যে সাবিহার পড়তে খুব অস্বস্তি হয়। মেয়েদের গায়ের একটা পোশাকও ছিলো না ওর কাছে, শুধু ঝড়ের রাতে পড়ে থাকা পোশাকটাই হচ্ছে ওর পড়নের একমাত্র মেয়েলী পোশাক।

একদিন ওই পোশাক আর অন্যদিন ওই রাধুনির পড়নের জাঙ্গিয়া আর গেঞ্জি পড়ে এখন দিন কাটাচ্ছে সাবিহা। পুরুষ মানুষের জাঙ্গিয়া কিভাবে একজন মেয়ে মানুষ পড়ে সেটা ভেবে প্রথম প্রথম লজ্জা পাচ্ছিলো সাবিহা। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে পড়ে ওর পুরো উরু দেখিয়ে শুধু গুদের কাছে ঢাকা ওই জাঙ্গিয়া পড়েই দিন কাটাতে হয় ওকে। যার কারনে সাবিহার শরীর অনেকটাই খোলামেলা থাকে এখন। কারণ ওই মেয়েলী পোশাকটারও সামনের দিকের সব বোতাম ছেঁড়া, সেটাকে সামনের দিকে একটা দড়ির মত জিনিষ দিয়ে যদিও আটকে রাখার চেষ্টা করে সে।। মাঝে মাঝে সে বাকের আর আহসানের পড়নের শার্টগুলিও পড়ে, তবে সব গুলিরই কিছু কিছু বোতাম ছিঁড়া।

কিন্তু একটা জিনিষের অভাব ওকে খুব পিড়া দিচ্ছে আর অস্বস্তির মধ্যে রাখছে, সেটা হলো অন্তর্বাস। ওর স্তনের বোঁটা দুটি খুব স্পর্শকাতর জিনিষ। খালি শার্ট বা পাতলা গেঞ্জি যখন বোঁটাতে লাগে আর সমুদ্রের বাতাস এসে যখন সেই কাপড়কে স্তনের বোঁটার সাথে ঘষা খাওয়ায়, তখন ও দুটি ফুলে শক্ত হয়ে যায়। যার কারনে শার্টের উপর দিয়ে ও দুটি বাইরের দিকে উকি মেরে থাকে। আবার যখন বাতাসের বিপরীতে হাঁটে বা চলে সে, তখন পড়নের ঢোলা সেই গেঞ্জি এমন উৎকট দৃষ্টিকটুভাবে ওর বড় বড় বিশাল মাই দুটিকে আঁকড়ে ধরে যে সেদিকে আহসানের চোখের দৃষ্টি যাবেই। সেই জন্যে আহসানের সামনে বেশ সতর্ক থাকার চেষ্টা করে সাবিহা, যদিও ওরা যখন বোটের কিনার ধরে পানিতে ভেসে ছিলো তখন ওর স্তন দুটিকে স্বামীর সামনেই আহসান দেখে ফেলেছিলো। সেই লজ্জা, অস্বস্তি ওর এখনও যায় নি। আহসানের দিকে তাকালেই সেই কথা মনে পড়ে যায় সাবিহার। 

সাবিহা ছোট বেলা থেকেই একটু বেশি যৌনসংবেদনশীল নারী। আর এখন ৩২ বছর বয়সে এসে ওর যৌনতার আকাঙ্খা একদম চুড়ায় এসে পৌঁছে গেছে। ও জানে, ও যদি বাকেরের কাছে বেশি বেশি করে চাওয়া শুরু করে তাহলে বাকের একদম নিঃশেষ হয়ে যাবে। কারন বাকেরের বয়স ৫০ পার হয়ে গেছে। যৌনতাকে যেভাবে সাবিহা উপভোগ করতে চায়, ঠিক সেই রকম আকাঙ্খা নেই এখন বাকেরের ভিতরে। আর সাবিহা বেশ আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, এই রকম প্রতিকুল বিপদসঙ্কুল অবস্থার পড়েও ওর যৌন চাহিদা একটুও কমে যায়নি। সাবিহা জানে যে ওর বয়সটা এখন এমন যে, ওর যৌন চাহিদা সর্বোচ্চই হওয়ার কথা। ওর ভিতরে ভিতরে একটা আগুন, একটা তিব্র আকাঙ্খা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই দ্বীপে আসার পর থেকে সে বেশ কয়েকবারই বাকেরকে ইঙ্গিত করেছে যে ওর সেক্স প্রয়োজন। বেশ কয়েকবারই বাকেরের ভিতরে সে যৌন ক্ষুধা জাগানোর চেষ্টা করছে কিন্তু বাকের ওর কথা বা আচরনকে মোটেই আমল দেয়নি। এটা ওর ভিতরে আরও বেশি হতাসার সৃষ্টি করেছে। আসলে এই দ্বীপে আসার পর এই ২ মাসেরও বেশি সময় ধরেই শুধু নয়, নিজেদের দেশ থেকে রওনা দেয়ার পর থেকে জাহাজে যে একটি মাস কাটিয়েছে ওরা, সেখানেও ওদের কাছাকাছি আসা বা সেক্স করা সম্ভব হয়নি। কারন জাহাজে এক রুমের কামড়াটিতে ওদের তিনজনকেই এক সাথে ঘুমাতে হয়েছে।

আর ছেলের সামনে স্ত্রীর শরীরের উপর চেপে বসাতে ঘোর আপত্তি আছে বাকেরের। কিন্তু সাবিহা ওর নিজের ভিতরের এই আকাঙ্খাকে কিভাবে তৃপ্ত করে, ওর শরীরে যেই আগুন জ্বলছে সেটাকে কিভাবে নিভায়? কিন্তু নিজের মাথা থেকে যৌনতার এই ভুতকে সাবিহা তাড়ায় এই বলে যে, ওর এখন নিজের চেয়ে ওদের ছেলের দিকে বেশি খেয়াল করা উচিত। ছেলের সামনে কিছু করে ফেললে ছেলে হয়ত বুঝবে না, তাই ছেলের কথা চিন্তা করতে হবে ওদেরকে। ছেলের সামনে সাবধানে চলাফেরা করা আর সতর্কতার সহিত কথা বলা উচিত। তবে এগুলি যে শুধুই নিজেকে মিছে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা সেটাও সে জানে। যেহেতু আহসান একজন সুস্থ কিশোর, তাই সাবিহা জানে যে ইদানীং এই দ্বীপে আসার পর থেকে ওকে বেশ তীক্ষ্ণ নজরে পর্যবেক্ষণের চোখে দেখতে শুরু করেছে ওর ছেলে। কারন ওর শরীরে এখন পরিবর্তনের জোয়ার বইছে। ওর উত্তেজনা, আবেগ, ক্রোধ, রাগ, উচ্ছ্বাস সব কিছুকেই ওর শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রন করছে এখন। ওর যেকোন প্রতিক্রিয়া এখন খুব তীব্র ধরনের হবে।

মেয়ে মানুষ যে ভিন্ন একটা জিনিষ সেটা বুঝতে শুরু করেছে সে। এবং মেয়েদের শরীরের গঠন আকার আকৃতিও যে ভিন্ন সেটাও বুঝে যাচ্ছে সে। এই জন্যেই এই দ্বিপের একমাত্র নারী শরীরকে সে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করে, যদিও সব কিছুই খুব সাবধানে আর সন্তর্পণে করে আহসান। কিন্তু সাবিহা টের পেয়ে যায়, কখন আহসান ওর দিকে ওই রকম দৃষ্টিতে তাকায়। হাজার হলেও মা তো সে, তাই যতটুকু সম্ভব নিজের শরীর ঢেকে রাখতেই চেষ্টা করে সাবিহা। সব সময় সতর্ক থাকে যেন ছেলে কিছু বুঝে না ফেলে, যদিও ওর মনের ভিতরে যৌন আকাঙ্খা দিনে দিনে প্রচণ্ড রুপ ধারন করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত সাবিহা কাজ করার সময় বেশ কয়েকবার পিছলে পড়ে গিয়েছিল, তখনও ওর শরীরের অনেক কিছুই আহসান দেখে ফেলেছে।
Like Reply
#16
আর প্রতিবারই আহসানকে উত্তেজিত হয়ে যেতে দেখেছে সাবিহা। এমনকি আহসানের চোখ মুখের দিকে তাকালেও সাবিহা বুঝতে পারে যে ছেলে কখন উত্তেজিত। কিন্তু একটা কথা নিজের মনে একটুও স্বীকার করেনা সাবিহা যে, ছেলের এই উত্তেজিত হওয়া বা চোরা চোখে ওর দিকে তাকানো যে সাবিহার নিজের শরীরের ভিতরে কি রকম ঝড় তুলে দেয়, কেমন এক যৌনতার উত্তেজনা এনে দেয়। কিন্তু এটাকে অস্বীকার করার মানে এই না যে এমন কিছু বাস্তবে ঘটেনা, এটাও সাবিহা জানে।

এই দ্বীপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশা ধীরে ধীরে কমতে লাগলো বাকের আর সাবিহার মনে। দিন থেকে সপ্তাহ, এর পরে মাস, অন্য আরেকটি মাস চলে যাচ্ছে। প্রায় ৫০ দিন হয়ে গেছে ওরা এই দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছে। সাবিহা প্রতিটি দিন গুনে রাখছে। ওদের ভিতরের হতাশা ওরা নিজেদের ভিতরে লুকিয়ে রাখলো যেন আহসান বুঝতে না পারে। আহসানের সামনে ওরা সব সময় বলতো যে, ওরা জানে ওদের কে খুঁজতে অনেক লোক বের হয়ে গেছে। কিন্তু যেহেতু ওরা অনেক দূরে চলে এসেছে তাই খুঁজে পেতে ওদের দেরি হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই ওরা এই দ্বীপের খোঁজ করে ওদের এখান থেকে বের করে ফেলবে। এই সব আশাব্যাঞ্জক কথা। সাবিহা আর বাকের জানেনা যে আহসান ওদের এই সব কথা বিশ্বাস করে কি না, কারন আহসান খুব বুদ্ধিমান ছেলে আর এই দ্বীপে ওরা যেই অবস্থায় এসে পৌঁছেছে সেই অবস্থা আর পরিস্থিত সম্পর্কে বুঝতে শিখে গেছে এখনই সে।

যতই সময় গড়াতে লাগলো সাবিহার পক্ষে ওর এই আশাব্যাঞ্জক কথা চালিয়ে যাওয়া এবং ওরা আবার কোনদিন লোকালয়ে ফেরত যেতে পারবে এমন একটা ব্যবহার দেখানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ওর মন মেজাজ সব সময় তিরিক্ষি হয়ে যাচ্ছে। বাকেরের সামনে মাঝে মাঝেই ওর এই বিরক্তি প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছিলো, যেটাকে বাকেরও একটু ভয় পেতো। সাবিহার সবচেয়ে বেশি চিন্তার কারন ছিলো আহসান, ওর ছেলে। ছেলের মুখের দিকে তাকালেই একটা অব্যক্ত ব্যথা আর উপচে পড়া দুঃখের অনুভুতি যেন ওর গলা চেপে ধরতো। এই বয়সের একটা ছেলে যেভাবে নিজের জীবন কাটায় সেটা থেকে ওকে বঞ্চিত করে এই রুক্ষ আদিম জীবনে ওরা ওকে কিভাবে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে! ও কলেজে যেতে পারবে না, বন্ধুদের সাথে মিশে সময় কাটাতে, গল্প করতে, সিনেমা দেখতে, মজার মজার খাবার খেতে, কিছুই করতে পারবে না। এমনকি একটা মেয়েকেও পাবে না যাকে সে বিয়ে করতে পারে, নিজের মনের ভালোবাসা উজার করে দিতে পারে, সেই মেয়ের ভালোবাসা নিজের মনে অনুভব করতে পারে। সভ্য সমাজের আচার আচরন, কায়দা কানুন, কথা বলা, ভদ্রতা দেখানো, কারো উপকার করা, খারাপ মানুষ চিনা, কোন কিছুই ওর পক্ষে সম্ভব হবে না। তাছাড়া ডাক্তার, ঔষূধ, হাসপাতাল ছাড়া এই আদিম পরিবেশে ওর জীবন দৈর্ঘ্যেও ছোট হয়ে যাবে। এসব কথা চিন্তা করলেই মন ভারী হয়ে উঠে, চোখের পানি আপনাতেই বেড়িয়ে যায়।

আশার কথা শুনানোর পাশাপাশি সাবিহা খেয়াল রাখছিলো যেন আহসান লেখাপড়া ভুলে না যায় আর নতুন নতুন কিছু শিখতে পারে। সাবিহা নিজে যেহেতু শিক্ষিত, সে কলেজ পর্যন্ত পড়েছে তাই সে নিজের হাতেই উঠিয়ে নিলো ছেলের লেখাপড়ার দায়িত্ব। কিছু বইয়ের জ্ঞানের সাথে সাথে সামাজিক আচার, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, অঙ্ক, এসবও শিখার প্রয়োজন ওর। বাকের ওর স্ত্রীর এই সব কাজে মোটেই উৎসাহ দেয় না, ও মনে করে সাবিহা শুধু শুধু ওর সময় নষ্ট করছে। ওদের ছেলের এখন উচিত কিভাবে এই বন্য পরিবেশে একাকি দ্বীপে জীবন টিকিয়ে রাখা যায়, সেই শিক্ষা হাতে কলমে। কিভাবে মাছ ধরা যায়, কিভাবে ঘর বানানো যায়, কিভাবে শত্রুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায় এসব শিখা ওর জন্যে জরুরি। কারন এই প্রাকৃতিক বন্য বিপদসঙ্কুল পরিবেশে ছোট একটা ভুলই মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে, তাই জীবন বাঁচিয়ে চলার শিক্ষাই ওর জন্যে বেশি দরকার। বাকের চায় না যে ওর ছেলে বোকা, মেয়েলী দুর্বল ধরনের হয়ে বেড়ে উঠুক। কিন্তু দু:খের বিষয় এই যে, এই দ্বীপে আসার পর থেকে ছেলেকে সে সব সময় ওর মায়ের আঁচল ধরে পিছনে পিছনে চলতেই দেখেছে সে। এটা দেখে বাকের ধরেই নিয়েছে যে সাবিহা শুধু শুধু ওর সময় নষ্ট করছে। 

কিন্তু বাকের ওদের এই পরস্পরের সাথে কথা বলা ও সময় কাটানোকে মেনে নিয়েছে। কারন এর ফলে হয়ত ওরা এই নির্জন দ্বীপে এই বন্য রুক্ষ কষ্টকর পরিবেশের কথা ভুলে যাবে, যার ফলে এখানে টিকে থাকার সংগ্রামে ওরা বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে পারবে। নয়ত মনের কষ্টে ওদের ভিতরে টিকে থাকার ইচ্ছেটাই হয়ত মরে যাবে। এছাড়া মা-ছেলে একসাথে গল্প করে সময় কাটালে ওদের মনের কষ্টটাও দুর হবে। সাবিহার সাথে ওর মনের একটা দূরত্ব তো আছেই, তাই ইচ্ছে করেই ওদেরকে বাধা দেয়না সে। তবে সাবিহা বুঝতে পারে বাকেরের মনের কথা। তারপরও সে বাকেরকে রাজি করালো যে, দিনের মাঝের বেশ কয়েক ঘণ্টা সাবিহা আর বাকের একা সময় কাটাবে প্রতিদিন। সাবিহা ওকে লেখা পড়া শিখাবে, সেই সময়ে বাকের ওদেরকে মোটেই বিরক্ত করবে না। এছাড়া বাকি সময়টা বাকের ছেলেকে নিয়ে কাজে ব্যাস্ত থাকতে পারে।
Like Reply
#17
বাকের এই কথা শুনে খুশি হয়নি, কিন্তু স্ত্রীর কথার বিপক্ষে তর্ক করে পরিবেশটাকে খারাপ করে দিতেও ওর ইচ্ছে নেই। এতদিন সাবিহা বলতো বাকের নাকি বেশি জেদি। তবে এই দ্বীপে আসার পর থেকেই সাবিহাও যেন জেদি হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। নিজের কথার বিপক্ষে কোন যুক্তি শুনতে চায় না সে বাকেরের মুখ থেকে। যেটুকু সময় বাকের ছেলেকে পায়, তখন মাছ ধরা, জীব জন্তু, পাখি শিকার করা, এইগুলি শিখাতে লাগলো। আহসান খুব তাড়াতাড়ি শিখে নেয় যেকোন কিছুই, কিন্তু ওর চোখ মুখ দেখে বাকের বলে দিতে পারে যে এই সব কাজ ওর মোটেই পছন্দনা। এর চেয়ে বরং ওর মায়ের সাথে বসে লেখাপড়া করা বা কবিতা আবৃতি করতে পারলেই আহসান খুশি হবে। সাবিহা চায় যেন ছেলের সাথে কাটানো সময় গুলিতে ওকে বাকের একদম বিরক্ত না করে। আর ওদের মাঝে নির্জনতা থাকুক, সে জ্ঞান খাটিয়ে কি কি শিখানো হবে আহসানকে সেটা ঠিক করলো। দ্বীপের যেই ঝর্ণার কাছে ওদের বাড়ি, এর থেকে একটু দূরে অন্য আরেকটি বড় ঝর্না আছে, যার কথা আগেই বলা হয়েছে। প্রায় ১ মাইলের মত দূরে অবস্থিত ঝর্ণাটি, ঝর্ণার সামনের জায়গাটা অনেকটা পুকুরের মত। চারপাশে পাথর, তিনদিক থেকে ঘেরা, শুধু সামনে সমুদ্রের দিকে খোলা। ওই জায়গাটাকেই সাবিহা বেছে নিলো ওদের প্রতিদিনের শিক্ষার কাজের জন্যে। বাকেরকে সেই কথা জানিয়ে দেয়া হলো যেন ওই পথ দিয়ে ওই সময়ে সে না যায়। মাঝের এই বিরতিতে অঙ্ক, ইংরেজি আর পড়তে শিখার জ্ঞান ভুলে গেছে কি না আহসান, সেটা যাচাই করে নিতে লাগলো সাবিহা আগে। ওদের ভাগ্য ভালো যে, ওই দ্বীপে ভেসে আসা জাহাজের সাথে কিছু বই পত্রও ছিলো। সেগুলিই এখন সাবিহা পড়াবে ছেলেকে। আর লেখার জন্যে বালুতটের চেয়ে সুন্দর জায়গা আর কোথায় পাবে ওরা।

ওই সব বই ছাড়াও ইতিহাস, জীবন, মানুষ, কবিতা, উপন্যাস, জীব বিচিত্র এই সব নিয়েও কথা বলতো সাবিহা। অঙ্কও করাতো সে, তবে সব অঙ্ককে আগে নিজে মনে মনে সমাধান করে তবেই ছেলেকে শিখাতো। এমনকি মাঝে মাঝে ছেলেকে কিছু বাড়ির কাজও দিয়ে দিতো সে, যেটা ছেলে নিজে নিজে করে এনে দেখাবে মাকে। লেখাপড়ার বাইরে ওদের এই মা ছেলের একত্র নির্জন সময় কাটানো মুহূর্ত গুলিকে ওরা দুজনেই ভালবাসতে শুরু করে দিয়েছে। মাঝে মাঝে ওর মায়ের পিছনে গিয়ে আহসান ওর মায়ের মাথার চুলে বিলি কেটে দিতো। আর সাবিহা সামনে প্রবাহমান সমুদ্রের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতো মিনিটের পর মিনিট, ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কত কথা যে ওদের মনে উদয় হতো সেই সময়টুকুতে, সেটা আমি হয়ত আপনাদেরকে বুঝাতে পারবো না। দুজনে মিলে সুর করে একত্রে কবিতা পড়তে বা গানের কলি ভাঁজতেও পছন্দ করে। এছাড়া ধর্ম, সাহিত্য, রাজনীতি, সবকিছু নিয়েই ওরা আলোচনা করতো! শুধু একটা ব্যতিক্রম ছিলো সেটা হলো সেক্স। এটা নিয়ে সাবিহা মোটেই মুখ খুলতো না ছেলের কাছে। কখনও যদি ওদের কথার ভিতরে ওটা চলে আসতো তাহলেও সাবিহা খুব চালাকির সাথে কথাকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতো। একটা বাড়ন্ত কিশোর ছেলের সাথে যৌনতা বা সেক্স নিয়ে কিভাবে সে আলাপ করবে, এটা ওর মাথায় আসতো না। কিন্তু সে জানে যে ওদের কথা ওদিকেই যাবেই কোন না কোনদিন। ও নিজে কাউকে সেক্স বা যৌনতা নিয়ে জ্ঞান দিচ্ছে, এটা বলার মত যোগ্যতা ওর নেই বলেই মনে করে সে। সাবিহা চাইতো যে এইসব ব্যাপারে ছেলেকে ওর বাবাই জ্ঞান দিক। সে বাকেরকে কয়েকবার বলেছেও, কিন্তু বাকের রাজি না ছেলের সাথে এইসব নিয়ে কথা বলতে।

হঠাতই একদিন যৌনতার প্রশ্ন এসে গেলো ওর কাছে আচমকা, কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই। আহসান ওর মায়ের মাথার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছিলো মায়ের পিছনে বসে একটা পাথরের উপরে, সাবিহা নিচে বালুর উপরে। “মা, আমি তোমাদেরকে কাল রাতে দেখেছি…” “আমদেরকে দেখেছো?” -সাবিহা জানতে চাইলো। “হুম, তোমাকে আর বাবাকে বিছানার উপরে…” সাবিহার গাল চোখে মুখ লালাভ হয়ে উঠলো, লজ্জায় ওর মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিলো না। ওর শরীর যেন কাঁপছিলো, ছেলে কি নিয়ে কথা বলছে সেটা বুঝতে পারলো সে। অবশেষে অনেকদিন পড়ে গতকাল রাতে ওদের দুজনের মধ্যে সেক্স হয়েছে, যদিও খুব বেশি একাকী সময় পায়নি ওরা। বিশেষ করে অনেকদিন পড়ে বাকেরের ছোঁয়া পেয়ে যেন পাগল হয়ে উঠেছিলো সাবিহা, ছেলে দেখে ফেলেছে সেটা! “আমদেরকে লুকিয়ে দেখা তোমার উচিত না আহসান? কেন এমন করলে তুমি?” -সাবিহা বেশ রেগে গেলো ছেলের উপর যদিও রাগার মত কোন কাজই সে করেনি। “আমি লুকিয়ে দেখি নি তোমাদেরকে, তোমাদের বিছানা আর আমার বিছানা তো পাশেই, আমি ইচ্ছে করে দেখি নি…” -আহসান ওর পক্ষে যুক্তি দিলো।

সাবিহা জানে যে ছেলে সত্য কথা বলছে, ও আর বাকেরও জানতো যে এটা খুব রিস্ক হয়ে যাচ্ছে ওদের জন্যে, কিন্তু সাবিহা ওর শরীরের ক্ষিধেকে কোনভাবেই সামলাতে পারছিলো না। সাবিহা কি বলবে ভেবে পাচ্ছিলো না, চুপ করে রইলো সে। তখনই ছেলের পরের কথাতে সে আরও বেশি অবাক হলো। “আমি কি কোনদিন এই রকম কোন মেয়ের সাথে করতে পারবো, মা?” -আহসানের চোখের দৃষ্টি ও সমুদ্রের দিকে। “মানে, আমি কোনদিন কোন মেয়েকে ছুয়েও দেখি নি, কাউকে চুমু খাই নি, কিভাবে কি করে, কিছুই জানি না… আমি...  আমি…” -বাকি কথাগুলি আর বের হলোনা আহসানের মুখ দিয়ে ওর চোখের কোনে চিকচিকে অশ্রুর কনা দেখা দিলো। সাবিহা মাথা ঘুরিয়ে ছেলের দিকে তাকালো, ছেলের কথা ওর মনেও যেন কষ্টের এক পাথর নিক্ষেপ করলো। ওর নিজের চোখটাও কেন যে সব সময় ভিজে উঠে অল্পতেই, জানেনা সে। 

“অবশ্যই তুই করবি বাবা, কারন আমরা এখান থেকে উদ্ধার পাবো বাবা, উদ্ধার পাবো…” -এক বুক কষ্ট নিয়েও ছেলেকে মিথ্যে আশা দিতে ভুললো না সাবিহা। কোনভাবেই ছেলের আশাকে সে মরে যেতে দিতে পারেনা। “কেন মিথ্যে বলছো মা? এইরকম হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, কেউ আমাদেরকে খুঁজতে আসবে না। আমরা চিরদিনের জন্যেই এখানে আটকা পড়েছি, আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত, কোন আশা নেই.. আমরা পুরো একাকী, এভাবেই একাকী বাকি জীবনটা পার করতে হবে আমাদেরকে”। একটু থেমে আহসান আবার বললো, “কিন্তু বাবার জন্যে তো তুমি আছো, আমার জন্যে কেউ নেই…”  -আহসানের চোখের পাশ দিয়ে পানির ফোঁটাকে গড়িয়ে পড়তে দেখলো সাবিহা। ওর কাছে মনে হলো, কেউ যেন হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি দিয়ে ওর বুকের পাঁজরগুলিকে একটি একটি করে ভাঙছে ওর চোখের সামনে। সোজা হয়ে দাড়িয়ে আহসানকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো সাবিহা, “আমি খুব দুঃখিত বাবা। আমি জানি, এই কঠিন সময়টা আমার আর তোর বাবার জন্যে যতটা না কঠিন, তোর জন্যে আরও অনেক বেশি কঠিন। কিন্তু আমরা তো আশা ছাড়তে পারি না সোনা, আমাদের উদ্ধার পাবার আশা করতেই হবে। আমাদেরকে যে ভবিষ্যতের আশা করতেই হবে রে, সোনা…” -সাবিহার গলাও ধরে এলো।

“কিসের ভবিষ্যৎ?” -যেন ধনুকের চিল্কা থেকে একটা তীর সজোরে বের হয়ে গেলো। লাফ দিয়ে দাড়িয়ে মাটিতে থুথু নিক্ষেপ করে রাগী স্বরে বলে উঠলো আহসান, “কোন কচুর ভবিষ্যৎ? আমাদের কোন ভবিষ্যৎ নেই মা, আর এই জন্যে দায়ী আব্বু, আমি উনাকে ঘৃণা করি” -এই বলে ওর মায়ের দিকে পিছন দিয়ে আহসান সমুদ্রের দিকে ঘুরে গেলো, রাগে ওর শরীর কাঁপছে। পিছন থেকে সাবিহা ওকে জরিয়ে ধরলো আবারও। কিছুক্ষন দুজনেই চুপ করে থাকলো আহসান চেষ্টা করছিলো ওর ভিতরের রাগকে কমাতে, ওর আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে। সে ছোট হলেও বুঝতে পারে যে, এই বিদেশ যাত্রা ওর আম্মুর ইচ্ছাতেই হয়নি। ওর আম্মুর সায়ও ছিলোনা, শুধু ওর আব্বুর জেদ আর উনার নিজের উন্নতির জন্যে ওদেরকে দেশ ছেড়ে আপন মানুষদের ছেড়ে বিদেশ যাওয়ার জন্যে পথে নামতে হয়েছে, আর এখন? এখন কোথায় ওরা?
Like Reply
#18
আহসান ওর গলা নরম করলো আর মৃদু স্বরে বললো, “আমি দুঃখিত মা, আমার তোমাকে দোষ দেয়া উচিত না। আমি বাবাকেও ঘৃণা না করার জন্যে চেষ্টা করি। কিন্তু… কিন্তু আমি বড় হচ্ছি, আর আমার ভিতরে আবেগ আমাকে একেক সময় এমন পাগল করে তুলে। মনে হয় আমার জীবন যেন সমুদের পানিতে ধীরে ধীরে ধুয়ে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, আমি এক অন্ধকারের মধ্যে ডুবে যাচ্ছি…”। “আমি জানি সোনা, আমি জানি… আমি বুঝি…” -সাবিহা পিছন থেকেই ছেলের গালে হাত বুলাতে বুলাতে বললো।

“আমার শুধু… আবেগ… মানে ভিতরে একটা অনুভুতি আমাকে চেপে ধরে। আমার ভিতরের কোন একটা অনুভুতি… আমি জানিনা আমি কি করবো। আমার শরীর পরিবর্তন হচ্ছে, আমি শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করছি আমার ভিতরে, আমার মনে হয় আমি পিছিয়ে পড়ছি বার বার। ওই অনুভূতিগুলি এলেই আমি আমার মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি, অন্য কথা ভাবা চেষ্টা করি… কিন্তু কাল রাতে তোমাকে আর আব্বুকে দেখে আমার যে কেমন লাগছিলো আমি বলতে পারবো না। 

আমার ইচ্ছে হচ্ছিলো আমি যেন সাগরে গিয়ে ঝাঁপ দেই। আমি জানি তোমরা সেক্স করছিলে, কিন্তু ওই শব্দটা ছাড়া আমি ওই ব্যাপারে আর কিছুই জানি না। তাই আমি আব্বুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, জানতে চেয়েছিলাম সকালে। উনি শুধু আমার উপর রেগে গিয়ে চিল্লাতে শুরু করলো এই বলে যে, আমার এখন শুধু কিভাবে বেঁচে থাকা যায়, সেই চিন্তা করা উচিত। অন্য কোন কথা চিন্তা করা উচিত না… কিন্তু শুধু বেঁচে থেকে কি করবো আমি, আমার তো কোন ভবিষ্যতই নেই… কোন কারনে বাঁচবো আমি, বলো?”

ছেলে কি বুঝাতে চাইছে, সেটা সাবিহা বুঝতে পারে। ও ভিতরে ভিতরে খুব সঙ্কুচিত হয়ে থাকে এই ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে। “আমার কারনে বাঁচবি তুই, আমার কারনে। এই দ্বীপে তোকে হারালে যে আমি নিজেই আর একটি মুহূর্তও বেঁচে থাকবোনা রে সোনা। তবে… আসলে, আমি জানিনা এই সব নিয়ে কিভাবে কথা বলতে হয়। বাবা, আমি সত্যিই জানি না,” -সাবিহার গলা খুব দুর্বল শুনাচ্ছিলো। “তোর আব্বুই আমার জীবনের একমাত্র যৌন সঙ্গী। আর আমি যখন বড় হয়েছি কেউ আমাকে কোনদিন এই ব্যাপারে কিছু শিখায় নি, বা আমার অনুভুতি নিয়েও আমি কারো সাথে কথা বলতে পারিনি। এর আগেই আমার বিয়ে হয়ে গেছে।”

“বাবা, আমার কথার উত্তর দিবে না, তুমিও আমার সাথে এটা নিয়ে কথা বলবেনা, তাহলে আমি কার কাছে জানতে চাইবো? এই পাখিদের কাছে, নাকি সমুদ্রের মাছেদের কাছে?” -আহসানের গলায় স্পষ্ট অভিমান। আর ওর অভিমান যে কত তীব্র সেটা ওর মায়ের চেয়ে ভালো আর কে জানে। সাবিহা জানে যে আহসান সব দিক দিয়েই ওর মতো। শুধু এই একটা দিক সে পেয়ে গেছে ওর বাবার থেকে। আর সেটা হলো রাগ, জেদ, অভিমান। সাবিহা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো, ও বুঝতে পারছে যে ওর কোন উপায় নেই। ছেলের কথার উত্তর ওকেই দিতে হবে, ওকেই শিখাতে হবে ছেলেকে এই সম্পর্কে। যদিও আহসান সেক্স সম্পর্কে যতটুকু জানে, ও এর চেয়ে কিছু বেশিই জানে। কিন্তু সাবিহা নিজেও আসলে সেক্সকে নিয়ে বেশি কিছু জানেনা। বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকার পড়ে সাবিহা মুখ খুললো, “ঠিক আছে বাবা, আমি শিখাবো তোকে। আমি তোর প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো, কিন্তু তোকে মনে রাখতে হবে যে আমি নিজেও এই ব্যাপারে খুব একটা দক্ষ নই।” 

আহসান, “তুমি আমার চেয়ে তো বেশি জানোই, তাই না?” উত্তরে তার মা বলল, “আমার যখন ১৮ বছর বয়স তখন তোর বাবার সাথে আমার বিয়ে হয়ে যায়, আর বিয়ের আগেও আমার কোন যৌন সঙ্গী বা প্রেমিক ছিলোনা। আমাদের দুজনের পরিবারই আমাদের বিয়ের কথা স্থির করেছে। অনেক দিক দিয়ে আমিও অনেকটা তোর মতই। আমার মতের তোয়াক্কা না করেই আমাকে বিয়ে দেয়া হয় একজন অচেনা লোকের সাথে। আমার কৈশোর আর যৌবনের প্রথম দিনগুলি আমিও ঠিকভাবে উপভোগ করতে পারি নি…”

“তুমি আব্বুকে ভালোবাসো?” -আহসানের প্রশ্ন যেন কাপিয়ে দিলো সাবিহার অন্তরকে, ওর চোখ মুখ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো। আহসান এমন প্রশ্ন করতে পারে ভাবেনি সাবিহা। বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো সাবিহা, ওদের মাঝে একটা পিন পতন নিরবতা বিরাজ করছিলো। এর পরে ধীরে ধীরে বললো সে, “আমি বাসি… মানে, আমার ভালোবাসা উচিত..”। আহসান, “তুমি আব্বুর সাথে সেক্স করো, এর মানে তুমি নিশ্চয় উনাকে ভালোবাসো?” সাবিহা, “বিবাহিত লোকেরা এটা করে বাবা… সে ভালোবাসা থাকুক বা না থাকুক…” 

আহসান, “কেন করে?” সাবিহা, “হুম, মনে হয়… মনে হয়, নিজেদের ভিতর থেকে নতুন মানুষ তৈরি করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে, সেই জন্যে করে…”। আহসান, “কিভাবে মানুষ তৈরি করে?” সাবিহা, “বাচ্চা তৈরি করার মাধ্যমে, বেবি…”। আহসান, “ওহঃ”। সাবিহা, “নিজেদের প্রজাতির বংশবৃদ্ধি করে নিজেদের পরিবারের নাম বজায় রাখার জন্যে করে থাকে। সমস্ত পশু-পাখি, জীবের মধ্যেই এটা আছে, এমনকি মানুষের মধ্যেও। নিজেদের প্রজাতির বংশবৃদ্ধি করা… না করলে তো, আমাদের পরিবার আমাদের বংশ শেষ হয়ে যাবে এই পৃথিবী থেকে"। 

আহসান, “তাহলে তুমি আর আব্বুও বাচ্চা তৈরি করো, তাহলে আমিও আমার সাথে আরও কিছু ভাই বোন পাবো, যাদেরকে নিয়ে আমি আমার সময়টা ভালো করে কাটাতে পারবো এই দ্বীপে…” -একটা মুচকি হাসি চলে এলো আহসানের ঠোঁটের কোনে কথাটা বলতে গিয়ে। আর এই কথার মধ্য দিয়ে সাবিহাও বুঝতে পারলো যে কি রকম বুদ্ধিমান হয়ে উঠছে দিন দিন ওর ছেলেটা।
Like Reply
#19
সাবিহা ছেলের হাসিকে ফিরিয়ে দিলো না। “আমরা অনেক বছর ধরেই বাচ্চা নেয়ার চেষ্টা করেছি বাবা, কিন্তু কোন লাভ হয় নি। আসলে তোমার আব্বুর পক্ষে আর বাচ্চা তৈরি করা সম্ভব না। তোমার আব্বুর বয়স আমার চেয়ে অনেক বেশি, আর বয়স বাড়লে মানুষের বাচ্চা তৈরি করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। আর তাছাড়া, তুই জন্ম হওয়ার কিছুদিন পড়েই তোর আব্বুর গলগণ্ড রোগ হয়েছিলো, হয়ত ওই রোগের কারনেই তোর আব্বুর ভিতরে বাচ্চা তৈরি করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে…”। “কিন্তু আমি তোমাদেরকে সেক্স করতে দেখলাম, আব্বু যদি বাচ্চা তৈরি না করতেই পারে, তাহলে তোমরা এসব করো কেন?” -আহসানের চোখে মুখে উদ্বিগ্ন বিষণ্ণতা। সাবিহা আবার দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো, “কারন এটা করতে ভাললাগে। সৃষ্টিকর্তা মানুষের ভিতরে মানে পুরুষ আর নারীর ভিতরে এটার প্রতি একটা আকর্ষণ তৈরি করে দিয়েছেন, যেন ওরা এটা করে নিজেদের প্রজাতিকে রক্ষা করতে পারে।”

আহসান যেন বুঝতে পারছে না, ও দ্বিধার মধ্যে আছে।  “আচ্ছা, তোকে এবারে বুঝাচ্ছি, যৌনতার আকাঙ্ক্ষা বা সেক্স করার ইচ্ছা মানুষের জীবনের একটা প্রাকৃতিক ব্যাপার। এতে সমস্ত প্রজাতির মধ্যে প্রেরনা তৈরি হয়, উৎসাহ তৈরি হয়। এখন এই বয়সে তোর মনে যেই নতুন নতুন আবেগ, অনুভুতি তৈরি হচ্ছে এটা কোন ক্ষতিকর জিনিষ না, এটা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। এই বয়সেই মানুষের ভিতরে যৌনতার আগ্রহ তৈরি হয়, কারো কারো আরও আগেও তৈরি হয়ে যায়। সমস্ত প্রাণীর ভিতরে বিশেষ করে মানুষের ভিতরেও একটা বয়স হলে সেক্স করার ইচ্ছা জাগে, সেই ইচ্ছাকে পূরণ করতেই মানুষ সেক্স করে, ভালোবাসা করে, আর এর ফলে মানুষের বাচ্চাও হয়।” -সাবিহা ওর ক্ষুদ্র জ্ঞান নিয়ে যথা সাধ্য চেষ্টা করছিলো ছেলেকে বুঝানোর জন্যে। “ওকে, তাহলে সেক্স করা বা যৌনতার প্রধান উদ্দেশ্য কি বাচ্চা তৈরি করা নাকি আনন্দ নেয়া, ভাললাগা উপভোগ করা?” -আহসান জানতে চাইলো। সাবিহা, “দুটোই বাবা, দুটোই”।

আহসান কিছুক্ষন চুপ হয়ে রইলো, “আসলে আম্মু, আমি খুব বোকা। আমি জানি না যে বাচ্চা কিভাবে তৈরি হয়। মানে তুমি যা বললে, সেটা কিছুটা মনে হয় বুঝলাম। কিন্তু, পুরোটা বুঝলাম না যে, সেক্স করলে বাচ্চা কিভাবে তৈরি হয়? তুমি আমাকে লেখাপড়া শিখানোর সময়ে কখনও এই বিষয়ে কিছু বলো নাই!” সাবিহা বুঝতে পারলো যে ওর গাল লাল হয়ে গেছে লজ্জায়। তারপরও ছেলেকে আশাহত করতে ইচ্ছে হলো না ওর, সে যতটুকু জানে ওটাকেই বুঝানোর চেষ্টা করলো। “আসলে আমি চাইছিলাম যে তুই আরও বড় হ, তাহলে তুই হয়ত নিজে থেকেই শিখে যাবি যে কিভাবে বাচ্চা হয়। আর তোর লেখাপড়ার মাঝে এটা তোকে না শিখানোর কারন, আসলে আমি লজ্জা পাই এটা নিয়ে কথা বলতে। তারপরও আমি খুব সহজ ভাষায় বলছি, তুই বুঝে নে, যখন পুরুষ মানুষ উত্তেজিত হয়, তখন ওর লিঙ্গ শক্ত হয়ে যায়। তখন সে ওর লিঙ্গকে কোন মেয়ের শরীরে ঢুকায়, এর পরে সামনে পিছনে করে ঢুকাতে আর বের করতে থাকে। কিছুক্ষন পড়ে পুরুষের শরীরের থেকে একটা বীজ বের হয়ে নারীর শরীরে ঢুকে যায়, এই বীজকেই বলে বীর্য। এই বীর্য নারীর শরীর বেয়ে উপড়ে উঠতে শুরু করে আর মেয়েদের শরীরে ডিম থাকে। বীর্যের কাজ হলো সেই ডিমকে নিষিক্ত করা, আর নতুন মানুষ তৈরির জন্যে ভ্রুন তৈরি করা। তখনই মেয়েরা গর্ভবতী হয়, মানে ওদের পেটে বাচ্চা তৈরি হওয়া শুরু হয়ে যায়, আর নয় মাস পড়ে সেই বাচ্চা নারীর শরীর থেকে এই পৃথিবীতে বেরিয়ে আসে, মানুষের জন্ম হয়। এই হচ্ছে মোটামুটি সারমর্ম…" -সাবিহা এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বলে যেন হাপাচ্ছিলো, “তবে এর ভিতরেও অনেক জটিল অনেক কিছু আছে। আমার কথা কি তোর বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে"? "কিছুটা মনে হয় বুঝতে পারছি, তার মানে তয়াম্র আর আব্বুর সেক্স করার ইচ্ছে জাগে। সেই জন্যে তোমরা সেক্স করো, এমন না যে সব সময় বাচ্চা তৈরি করতে হবে আর আব্বুর পক্ষে বাচ্চা তৈরি করা সম্ভব না… এই তো?” -আহসান ওর বোঝার সাথে ওর আম্মুর বোঝানো মিলিয়ে নিলো। “হ্যাঁ, সেটাই, যদিও একজন মানুষের ভিতরে অঙ্কে স্পারম থাকে। তাহলেও এমন না যে সব সময় বাচ্চা তৈরি হবে সেদিন তুই আর আমি সাগরের কচ্ছপের বাচ্চা দেখলাম না, যেগুলি সমুদ্রের দিকে দৌরে যাচ্ছিলো, মনে আছে?” -সাবিহা জানতে চাইলো। আহসান, “হ্যাঁ, মনে আছে”। “ওর মধ্যে অনেকগুলিই কিন্তু সাগরের পানিতে পড়েই মরে যাবে, আর বাকি গুলির কিছুকে ওদের থেকে বড় মাছেরা খেয়ে ফেলবে। তবে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী যেটা থাকবে সে হয়ত বেঁচে থাকবে। এর পরে হয়তো সে যখন বড় হবে ওর ভিতরেও নিজের বাচ্চা তৈরিই করার ইচ্ছে জাগবে, তখন সে অন্য কচ্ছপের সাথে মিলিত হবে। আর এভাবেই প্রজাতিরা বংশরক্ষা করে চলবে। 

পুরুষ মানুষের বীর্যও তেমনই। ওরা সবাই মেয়েদের গর্ভের দিকে দৌড়ে যেতে শুরু করে, অনেকে পথে মারা যায়। মেয়েদের ভিতরে এক ধরনের পিচ্ছিল পদার্থ থাকে, যেটা ওই স্পারমগুলিকে সাতার কাটতে সাহায্য করে। এরপরে খুব অল্প কিছু স্পারম মেয়েদের একদম গভীরে ঢুকে যেতে পারে, এর পরে একটি বা কখনও কখনও দুটি শক্তিশালী স্পারম মেয়েদের ভিতরের ডিমকে নিষিক্ত করতে পারে…” -সাবিহা ওর ভিতরের সব জ্ঞান উজার করে দিচ্ছে ছেলের সামনে।
Like Reply
#20
আহসান ওর মায়ের সব কথাকে সারমর্ম করে নিলো আর ওর মাকে বললো যেন উনি বুঝতে পারেন যে, ছেলে সব ঠিক মত বুঝেছে কি না। “তাহলে আমাদের ভিতরে সেক্স করার ইচ্ছে তৈরি হয়, আর এটা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ব্যাপার। তুমি আর আব্বুও সেই কারনেই সেক্স করো। আব্বু যেহেতু বাচ্চা তৈরি করতে পারবে না, তাই তোমাদের শুধু সেক্স করার ইচ্ছেটার তৃপ্তি হয়, অন্য কিছু হবে না, তাই তো?” 

"হুম, একদম ঠিক বুঝেছিস। আর সেক্সের মাধ্যমে একজন অন্যজনের প্রতি নিজের ভালোবাসাও প্রকাশ করে।” -এইসব আলাপে সাবিহা ভিতরে ভিতরে উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলো, ওর মাইয়ের বোঁটা দুটি শক্ত হয়ে গেলো। ওর পড়নে সেই রাঁধুনির জাঙ্গিয়া যেটা এতো ঢোলা যে ওর ফাক দিয়ে বাতাস যে ওর গুদের ঠোঁটগুলিকে ছুয়ে দিয়ে যাচ্ছে, সেটাও সে টের পাচ্ছে। “কিন্তু তুমি আর আমিও তো আমাদেরকে ভালোবাসি, কিন্তু আমরা সেক্স করি না!” -আহসানের মুখে একটা দুষ্ট হাসি ফিরে এলো, সে ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো। সাবিহার গাল আবারও লাল হয়ে গেলো, “এটা ভিন্ন ব্যাপার বাবা, আমরা তো মা ছেলে। মা ছেলে সেক্স তো নিষিদ্ধ বাবা…”

আহসান ওর মায়ের কথা শুনলো আর এর পরে কিছুক্ষন চুপ করে সাগরের দিকে তাকিয়ে রইলো। কিছু পরে দুঃখী গলায় বললো, “মা, আমরা যদি সাড়া জীবন এই দ্বীপেই আটকে থাকি, তাহলে আমি কোনদিনও কোন মেয়ের সাথে সেক্স করতে পারবো না। আমার শরীর আর মনের এই প্রাকৃতিক চাহিদা কখনোই পূরণ করতে পারবো না…”। হঠাৎ করেই ওদের কথা বলার পরিবেশটা যেন পাল্টে গেলো। আবারও সাবিহার মনটা যেন ভেঙ্গে যেতে শুরু করলো। সে জানে ছেলে যা বলছে সেটা একদম সত্যি, আর এই ব্যাপারে ওর দিক থেকে কিছুই করার নেই বা কিছু বলারও নেই। যেন আহসান একটু ভালো বোধ করে, ওর মন খারাপটা একটু কমে তাই সে বলল “আমরা উদ্ধার পাবোই রে, এভাবে তো আমাদের জীবনটা শেষ হয়ে যেতে পারে না। তবে পাখি আর মৌমাছি নিয়ে কথা অনেক হয়েছে, এইবার আমাদের ফিরতে হবে… চল…” -সাবিহা তাড়া দিলো ছেলেকে। “কি? পাখি আর মৌমাছি? আমরা তো এতক্ষন মানুষের সেক্স করা নিয়ে কথা বলছিলাম, তাই না আম্মু?” -আহসান ওর মায়ের কথা বুঝতে পারলেও কৌতুক করার সুযোগ হাতছাড়া করলো না। “বেয়াদপি করিস নে ছেলে!” -সাবিহা কপট রাগের ভঙ্গী করে বললো আর হাত বাড়িয়ে ছেলেকে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো। সে জানে ওর ছেলের খুব বেশি সুড়সুড়ি। আহসান হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরে গেলো বালুর উপরে, আর ওর আম্মু ওর উপরে উঠে ওকে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসাতে লাগলো। আহসান হাসতে হাসতেই ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরে সাবিহাকে ফেলে দিলো বালুর উপরে আর নিজে ওর আম্মুর শরীরের উপরে উঠে পাল্টা সুড়সুড়ি দেয়ার চেষ্টা করলো। 

হঠাতই ওদের দুজনের হাসি বন্ধ হয়ে গেলো। কারন পুরুষ মানুষ সেক্স করার সময় ঠিক যেই আসনে থাকে, ওরা দুজনে এখন সেই চিরায়ত মিশনারি আসনে আছে। সাবিহা বুঝতে পারলো যে ওই আসনে ওর স্বামী ওর সাথে সেক্স করে আর আহসান বুঝতে পারলো যে গত রাতে ওর আব্বুকে সে ঠিক এইভাবে ওর আম্মুর শরীরের উপর দেখেছে। আর এইসব কথার মধ্যেই আহসানের লিঙ্গ ঠাঠিয়ে গিয়েছিলো। সেটা এখন ঠিক সাবিহার যৌনাঙ্গের উপরে আছে। সাবিয়াহ অনুভব করছিলো যে আহসানের লিঙ্গটা কি ভীষণভাবে শক্ত হয়ে ওর যৌনাঙ্গের উপর চাপ দিচ্ছে। দুজনেই দুজনের দিকে কিছুক্ষন হতবিহবল চোখে তাকিয়ে রইলো, সাবিহা বুঝতে পারছিলো না যে কি বলবে সে। তবে আহসানই মুখ খুললো, “তুমি আর আব্বু ঠিক এই ভাবেই সেক্স করছিলে গত রাতে, তাই না আম্মু? এভাবেই কি সেক্স করে আম্মু?” -এই বলে আহসান ওর কোমর অনেকটা ঠাপের মত ভঙ্গী করে ওর আম্মুর যৌনাঙ্গের উপর উঠা নামা করাতে লাগলো। “আহসান, এই মুহূর্তে আমার উপর থেক সড়ে যা, এটা খুব বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে…” -সাবিহার গলায় স্পষ্টই রাগ আর সাথে সাথে সে নিজেই আহসানক ওর শরীরের উপর থেকে ধাক্কা দেয়ার মত করে সরিয়ে দিলো। আর নিজে সোজা উঠে পড়লো বালির উপর থেকে আর সোজা হাঁটা দিলো ওদের ঘরের উদ্দেশ্যে জোর পায়ে। ওর ভিতরে বেশ কিছুটা রাগ কাজ করছিলো।

আহসান বুঝতে পারলো না যে, ও কি অন্যায়টা করেছে। ওর আম্মু এভাবে রাগ করে ওকে ফেলে চলে যাচ্ছে কেন? সে তো ওর আম্মুকে কষ্ট দিতে চায় না, বা ওর আম্মুর সাথে সত্যিকারর সেক্সও করতে চায় নি। তাহলে ওর আম্মু এভাবে রাগ করে ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চলে যাচ্ছে কেন? ও বুঝতে পারছিলো না। ও ধীরে ধীরে ওর আম্মুর পিছনে পিছনে চলতে লাগলো, কিন্তু ওর আম্মুকে ধরে ফেলার চেষ্টা করলো না। নিজেদের ঘরের কাছে যেয়ে আহসান দেখতে পেলো যে ওর আম্মু রান্নার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছে। সে চোখে পানি নিয়ে ওর আম্মুর কাছে গিয়ে আম্মুর পিছনে দাড়িয়ে ধরা গলায় ডাক দিলো, “আম্মু, আমাকে ক্ষমা কর দয়া করে। আমি তোমাকে রাগিয়ে দিত চাই নি। আমি খুব দুঃখিত, আম্মু…”। সাবিহা ঘুরে দাঁড়ালো, ও আসলে ছেলেকে একটু বকা দিতে চাইছিলো, কিন্তু ছেলের চোখে পানি দেখে ওর হৃদয় যেন গলে গেলো। সে টান দিয়ে ছেলেকে নিজের বুকের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো আর ফিসফিস করে ছেলের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো, “আমি জানি বাবা, আমি জানি…”। অনেকটা সময় সে ছেলেকে নিজের বুকের সাথে জরিয়ে ধরে দাড়িয়ে রইলো। এটা যেন ওদের ভিতরে এক ধরনের বোঝাপড়া তৈরি করে দিচ্ছিলো।
[+] 1 user Likes saddam052's post
Like Reply




Users browsing this thread: