Thread Rating:
  • 16 Vote(s) - 2.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica হিরো
#1
গ্রামের ছেলে নাইম , গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে সিনেমার হিরো হওয়ার জন্য । সহজ সরল নাইম জানে না ওর জন্য এই রহস্যময় শহর নিজের আস্তিনে কত কি ম্যাজিক লুকিয়ে রেখছে । চলুন আমরাও যুক্ত হয় নাইমের এই হিরো হওয়ার সফরে ।
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
Suru korun
Like Reply
#3
সব চরিত্র কাল্পনিক , জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে সাদৃশ্য পাওয়া গেলে তা একান্ত কাকতালীয় । 


 
কি হইতে চাস ? নায়ক !    
হু
হা হা হা হা হুনছস নি কালাম ওই নাকি নায়ক হইতে চায় পাশে বসা লুঙ্গী পড়া মোটাসোটা লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলে করিম তারপর আবার সামনে দাঁড়ানো , সদ্য দাড়ি গোঁফ ওঠা লম্বা ফর্সা ছেলেটির দিকে তাকায় আর বলে
শুন নাইম , নায়ক হওয়া এতো সহজ না , তার উপর তুই এতিম পোলা আইসস গেরাম থাইকা , তরে কে নায়ক বানাইব ?
ক্যান তুমি বানাইবা , নাইম নামক ছেলেটি বলল
আমার কি হেই ক্ষমতা আছে  যে আমি তরে নায়ক বানামু , আমি হইলাম কামলা মানুষ , নায়ক নাইকাগো সামনে যাওয়ার ক্ষমতা ই আমার নাই আবার নায়ক বানামু ।
করিম এর কথা শুনে রাগে গা জ্বলে ওঠে নাইম এর কত আশা করেই না এসেছিলো এই করিম এর কাছে এসে জানতে পারছে শালা একটা জোচ্চোর গ্রামে গিয়ে কত কিছু বলে , অমুক  পরিচালকের  খুব কাছের লোক, অমুক  নায়ক ওকে ভাই ডাকে আসলে ওসব সব মিথ্যা সেটা জানতে পেরে চোখে সর্ষে ফুল দেখছে নাইম কত সখ করে এসেছিলো আসার সময় চাচার কাছে বাপের রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ও পানির দামে বিক্রি করে দিয়ে এসেছে মনে করেছে , শহরে গিয়ে সিনেমায় কাজ করে অনেক উন্নতি করবে কিন্তু কিসের কি যার উপর ভরসা করে এসেছিলো সেই হলো নাম্বার ওয়ান বাটপার
 
ক্যান তুমি না কইতা পরিচালক  মুন্না মজিদ তোমারে ছোট ভাই ডাকে , নায়ক দিলাবার খান এর বাইত তোমার আহন যাওন  ।
 
ঐ সব ভুল্লাই যাও ভাতিজা , গেরামে গিয়া মান ইজ্জত এর লইগা এইসব কইতাম । ক্যান তোমার বাপে তোমারে কয় নাই ?
 
নাইম বুঝলো আর কোন আশা নেই এই বজ্জাত করিমের কাছ থেকে , বিপদে যে পড়েছে সেটা সম্পর্কে ১০০ ভাগ নিশ্চিত। নাইমের বাবা প্রায় বলতো করিম একটা জোচ্চোর , কিন্তু নাইম বিশ্বাস করতো না । কিন্তু এই শহরে ওর এক মাত্র পরিচিত বেক্তি এই করিম তাই করিমকেই জিজ্ঞাস করলো । এহন আমি কি করমু করিম চাচা আমি তো সব কিছু বেইচ্চা চইলা আসছি  
 
কি ?  
 
হ ভিটা বাড়ি সব চাচার কাছে বেইচ্চা দিসি
 
করিম এর চোখ দুটো চক চক করে উঠলো একটা ঢোক গিলল করিম তারপর বলল
 
সব বেইচ্চা কিন্না আইসস ? তোর বাপ কই
 
বাইচা নাই , মায় ও নাই , হের লইগা সব বেইচা কিন্না চইলা আসছি
 
 টেকা কি লগে লইয়া ঘুরতাসস নাকি এমন ভাবে বলল করিম যেন নাইমের জন্য খুব চিন্তিত
 
হ ক্যান ? নাইম জিজ্ঞাস করলো
 
হায় আমার কপাল , হুনছস  নি কালাম এই পোলার কথা , এরা যে নিজেরে কি মনে করে ঢাকার শহরে বেগে টেকা লইয়া ঘুরতাসে এই কথা বলে করিম উঠে দাঁড়িয়ে নাইম এর একটা হাত ধরে অনেকটা টানতে টানতে নিয়ে চলে নিজের সাথে
 
শোন , নায়ক বানাইতে পারুম না তবে লাইনে ঢুকাইয়া দিতে পারুম হের পর নায়ক হইতে পারা না পারা তোর উপর এহন চল আমার লগে কিছু খাইসস ? চল আগে তোরে কিছু খাওয়াই লই
                                                                                       ****
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply
#4
Darun
Like Reply
#5
2

গত চারদিন যাবত একটা ঘোরের মাঝে আছে নাইম একটা মানুষ কি করে আর একটা মানুষ এর সাথে এমন করতে পারে সেটাই ভাবে সিনেমা পাড়ার গেইটে বসে বসে । একেবারে সহায় সম্বলহীন এখন নাইম । জমি আর ভিটা বিক্রি করা সত্তর হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে করিম ।  

 
চা রুটি খাইয়ে  নাইম কে নিয়ে একটা হোটেলে  ওঠায় করিম বলে যে এটা মেস বাড়ি । নাইম অবাক হয়ে করিম এর বউ ছেলে মেয়ের কথা জানতে চাইলে । করিম উদাস হয়ে বলে ।  
 
গেরামে আমারে যেমন দেহস আমি এইখানে তার উল্টা রে নাইম এই ঢাকার শহর বড় নিষ্ঠুর কয়দিন থাক তুই ও জানতে পারবি ।
 
নাইম আর কোন কথা বাঁড়ায় নি রাতে করিম দুই প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে আলনে সেটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে । পরদিন সকালে উঠে দেখে করিম আর ওর ব্যাগ হাওয়া । কিন্তু তখনো নাইম বুঝতে পারনি ওর সর্বনাশ এর কথা । বুঝতে পারলো যখন হোটেল এর ম্যানেজার ওকে প্রায় গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলো । তখন সব কিছু পানির মতো পরিষ্কার হলো নাইম এর কাছে । করিম ওর সর্বনাশ করেছে,   শহরের যে  নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে করিম ওকে বলেছিলো , নিজেই সেই নিষ্ঠুরতার সাথে নাইম কে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলো ।
 
করিম এর বাসার ঠিকানা না জানা থাকায়  নাইম প্রতদিন সিনেমা পাড়ার গেইটে বসে করিম এর অপেক্ষা করতে লাগলো কিন্তু করিমের কোন হদিস নেই , একে তাকে করিমের কথা জিজ্ঞাস করে নাইম , বেশির ভাগ চিনি না বলে কাটিয়ে যায় , বাকি দু একজন যারা চেনে তারা কোন হদিস দিতে পারে না ।  
 
 
আজো সেই গেইট এর পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে নাইম  পেন্টের পকেটে থাকা ১২০ টাকায় গত তিনদিন কলা রুটি আর প্রতি রাতের জন্য ১০ টাকা খরচ করে কাওরান বাজার একটি আড়ত এ ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছে  আজ সেই টাকা ও শেষ সকাল থেকে কিছু না খাওয়া । পেটের ভেতর ভুতের নাচন শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে । খিধে একদম সহ্য করতে পারে না নাইম । কোনদিন না খেয়ে থাকতে হয়নি ওকে । বাবা মা গরীব হলেও তিন বেলা ওর খাবার ঠিক ই জোগাড় করে দিয়েছে । কোন দিন খাবার এর চিন্তা করতে হয়নি নাইম কে ।
 
এই ক্ষুধার্ত অবস্থায় খুব মনে পড়তে লাগলো বাবা মায়ের কথা চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো অনেক কষ্টেও কান্না থামাতে পারলো না নাইম। কেউ পাছে দেখে ফেলে এই ভয়ে হাঁটুর মাঝে মাথা গুজে মুখ লুকালো ।
 
কিছুক্ষন পর নাইম একটা নারী কণ্ঠ শুনতে পায় , এই ছেলে এইখানে বইসা কাঁদো ক্যান ? কয়দিন ধইরা দেখতাসি এইখানে বইসা থাকো ? কি হইসে ?
                                                                            ******
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 5 users Like gungchill's post
Like Reply
#6


গত চারদিন যাবত নির্দয় রাজধানীর দয়ামায়াহীন আচরনে এইটুকু দরদ যেন নাইম কে আরও আবেগতারিত করে ফেললো । উত্তর দেয়ার শক্তি হারিয়ে ফেললো নাইম । কারন চোখের জল যেন থামতেই চাচ্ছে না ওর ।

 
কিরে ডলি কি হইসে, এই পোলা কে ? অন্য একটি নারী জিজ্ঞাস করে  । কোন ঝামেলা হইসে ?   
 
নারে গত তিন চাইর দিন ধইরা দেখি এইহানে বইসা থাকে ছেলেটা , আজকে দেখি কান্না করে কি হইসে জিজ্ঞাস করি কিছু বলে না
 
চল এইখনে দারাইয়া থাকিস না এমনেই আমাগো ঝামেলার শেষ নাই । বারতি ঝামেলার কি দরকার । এই বলে দ্বিতীয় নারী চলে গেলো । কিন্তু ডলি গেলো না । একটু ইসতস্তত করে ওখানেই থেকে গেলো । আসে পাশে তাকিয়ে দেখল দু একজন লোক জমা হতে শুরু করেছে । ডলির খুব মায়া হচ্ছে ছেলেটির জন্য যেদিন প্রথম দেখছিলো সেদিনি বার বার তাকিয়ে দেখছে ডলি । কচি একটি ছেলে এখনো দাড়ি গোঁফ ও ঠিক মতো ওঠেনি আর চেহারায় রাজ্যের মায়া ছেলেটিকে দেখে ডলির একজনের কথা মনে পড়ে যায় । ১৭ বছর আগে যাকে বিসর্জন দিতে হয়েছিলো ।  
 
এই ছেলে কি হইল কিছু বল না ক্যান  , ডলির কিছুতেই ছেলেটিকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না কিন্তু চারিদিকে যেমন লোক জড় হচ্ছে তাতে সমস্যা হতে পারে যদিও ডলি বড় নায়িকা না যে ওর নামে পত্রিকায় খবর ছেপে যাবে ।তার উপর ডলি * সহ * পড়া।  কিন্তু নানা রকম কথা হবে সিনেমা পারায় এতে কাজ পেতে সমস্যা হবে এমনিতেই ডলির  যা  বয়স এই বয়সে কাজের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতেই থাকে ।
 
এই তুমি উঠবা  না আমি গেলাম এই বলে ডলি আর দাড়ায় না হন হন করে হাটা ধরে । অন্য দিনের মতো আর বাসে ওঠেনা ,  হাটতেই  থাকে । যদি ছেলেটি ওর পিছু পিছু আসে এই আশায় । ডলি বোঝে না কেন ছেলেটির জন্য ওর এতো মায়া হচ্ছে । হাটতে হাটতে বার বার পেছন ফিরে তাকাচ্ছে ডলি । কিছুক্ষন পর ডলি বুঝলো ছেলেটি হয়তো আসেনি ওর পিছু পিছু । মনটা খারাপ হয়ে গেলো ডলির ইচ্ছে হলো আবার ফিরে যায় । কার না কার ছলে এমন করে রাস্তায় বসে কাঁদছে ।
 
কিন্তু ডলি আর ফিরে গেলো না পরবর্তী বাসস্টপ আসতেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো । বাসের অবস্থা দখে দম বন্ধ হয়ে এলো ডলির । ভীষণ চাপ প্যাসেঞ্জারর সবাই গাদাগাদি করে উঠছে বাসে , কে মহিলা কে পুরুষ সেদিকে কারো খেয়াল নেই । এমন নয় যে ডলির শরীর পরপুরুষ এর জন্য অস্পৃশ্য, হরদম পরপুরুষ এর হাত পড়ছে ডলির শরীরে , কেউ কাজের অসিলায় দিচ্ছে আবার কেউ কাজ দেয়ার অসিলায় । কিন্তু সিনেমা পাড়া থেকে বেরোলেই ডলি অন্য রকম হয়ে যায় ওর মাঝে একজন বাড়ির বউ এসে ভর করে ।  এই বাসের ভিরে কোন লম্পট এসে সুযোগ নিয়ে ওর শরীর এর বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেবে সেটা ভাবতেই ডলির শরীর টা কেমন জানি গুলিয়ে ওঠে ।  
 
চাইলে ডলি একটি সিএনজী  স্কুটার নিয়ে চলে যেতে পারে । কয় টাকা আর খরচ হবে ? কিন্তু ডলির মনে সায় দেয়না এতগুলি টাকা সুধু নিজের সাচ্ছন্দের জন্য খরচ করতে । একটা বড় নিশ্বাস নিয়ে ডলি  বাসের দরজার দিকে এগিয়ে যায় । কেউই খেয়াল করেনা যে ডলি মহিলা না পুরুষ এক বুন্দু ছাড় পায়না ডলি একজন মহিলা হিসেবে । কয়েকজন ঘেমো পুরুষ মানুষ এর ভেতর অনেকটা হারিয়ে যায় ডলি। কারো কনুই এসে গুঁতো দেয় ডলির নরম বুকে আবার কারো হাঁটু এসে সজোরে লাগে ডলির পাছায় । এতে করে একটুও খারাপ লাগেনা ডলির । কারন এই লোক গুলি ওকে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই নিয়েছে একজন মহিলা হিসেবে নয় ।আর আঘাত হানা কনুই, হাত আর পা গুলো ওর শরীর একজন নারীর শরীর হিসেবে ছুঁয়ে যায়নি । বরং একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আঘাত করেছে। খারাপ লাগে তখন যখন কোন লম্পট নারী লোভী নিজের কুচ্ছিত বাসনা পুরন করার জন্য নিজের কুচ্ছিত শরীর দিয়ে ডলি কে স্পর্শ করে । খারপ মনটা একটু ভালো হয়ে যায় । যাক কোন লম্পট এর পাল্লায় পড়তে হয়নি ওকে আজ ।   
 
অনেক কষ্টে বাসে উঠে একটু হাপ ছেড়ে দাড়াতেই জানালা দিয়ে বাইরে চোখ পড়লো ডলির । সেই ছেলেটি , এদিক অদিক তাকিয়ে কি যেন খুঁজছেঅনেক লম্বা হওয়ার কারনে ওকে দেখতে ডলির তেমন সমস্যা হয়নি । ততোক্ষণে বাস ছেড়ে দিয়েছে । লোকজনের চাপে ডলি প্রায় বাসের মাঝা মাঝি চলে এসেছিলোএখন এই ভীর ঠেলে দরজা পর্যন্ত যাওয়া ও একটা দুঃস্বপ্নের চেয়ে কম কিছু না । কিন্তু ডলি নিজের মাঝে একটা প্রচণ্ড তাগিদ বোধ করতে লাগলো । তাই ও ভুলে গেলো ওর আসে পাশে সব পুরুষ মানুষ আর ও একটা মহিলাঠেলে ঠুলে চলে এলো দারজার সামনে ।  
 
এই ছেলে কি খোঁজো  ?  ছেলেটার পিছনে দাঁড়িয়ে আচমকা জিজ্ঞাস করে ডলি
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 7 users Like gungchill's post
Like Reply
#7
Nice update
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
#8
দারুণ
[+] 1 user Likes Shorifa Alisha's post
Like Reply
#9
ধন্যবাদে শরিফা আলিশা , এবং saj890 আপনাদের কমেন্ট এর জন্য
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
Like Reply
#10



হঠাত করে পেছন থেকে ডাক শুনে একটু চমকে ওঠে নাইম তার পর ঘুরে সেই * পড়া মুখটি দেখে স্বস্তির একটা ছাপ পড়ে নাইম এর চেহারায় । মহিলাটিকে চিনতে ওর কোন অসুবিধা হয় না , গলার স্বর  শুনেই চিনে ফেলে নাইম । দারুন সুন্দর কণ্ঠ মহিলার , একদম নাইয়কা  সোনালীর মতো কণ্ঠ । কিন্তু কি বলবে ভেবে পায় না । সিনেমা পাড়ার সামনে মহিলাটির ওর প্রতি আগ্রহ দেখে মনে করেছিলো মহিলাটি ওর জন্য কিছু করবে। তাই মহিলাটি চলে যেতেই কিছুক্ষন পর নাইম মহিলাটিকে খুজতে খুজতে এই বাসস্টান্ড এ চলে আসে । কিন্তু এতো ভিরে * আর * পড়া কাউকে খুজে পাওয়া আর সাগরে হারিয়ে  যাওয়া সুঁই খোঁজা যে সমান সেটা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না নাইম এর । তাই হতাশ হয়ে এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছিল আর নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছিল । কিন্তু মহিলাটি নিজেই ওকে খুজে বার করেছে দেখে প্রচণ্ড আনন্দিত বোধ করছে নাইম । কিন্তু কি বলবে ও এই মহিলাটিকে , একজন অপরিচিত মানুষ এর কাছে কি বা চাওয়া যায় ।  
 
নাইম এর কিছু বলতে হলো না , মহিলাটি নিজেই থেকেই বলল তোমার মনেহয় কিছু খাওয়া হয়নাই ?  
 
 
নাইম কোন উত্তর দিলো না সুধু হাসল , সেই দুর্বল হাঁসি ই ওর হয়ে উত্তর দিয়ে দিলো
 
চলো তোমারে কিছু খাওয়াই , তারপর শুনবো তুমি কাঁদো ক্যান ? এতো বড় ছেলে রাস্তায় বসে বসে কাঁদে । এই বলে ডলি হাসে
 
 
হাসিটা নাইমের পরিচিত লাগে , কিন্তু ঠিক কার হাসি নাইম বুঝতে পারে না।এই নিয়ে দ্বিতীয় কেউ নাইম কে এই ঢাকা শহরে খেতে নিয়ে যাচ্ছে । প্রথম জন ওর পূর্ব পরিচিত যে ওকে নিঃস্ব করে ফেলেছে । আর দ্বিতীয়জন একজন অপরিচিত মহিলা যার চেহারাও নাইম ঠিক মতো দেখেনাই । কিন্তু এখন আর নাইম এর খোয়ানোর কিছু নেই । তাই নাইম আর দ্বিধা করলো না মহিলার পেছন পেছন চলতে লাগলো । খাবারের কথা শুনেই ওর পেট ডাকতে শুরু করে দিয়েছে ।  
 
 
নিজের জন্য চা আর ছেলেটির জন্য  রুটি গোস্ত অর্ডার করলো ডলি যদিও ডলির ইচ্ছা ছিলো তেহারি নেয়ার কারন ছেলেটাকে দেখে মনে হচ্ছে খাবার গন্ধ পেয়ে ওর খিধে আরও চাগিয়ে উঠেছে আর সহ্য করতে করতে পারছে না । কিন্তু ইচ্ছে করেই ডলি তেহারি অর্ডার করেনি সারাদিন কিছু খায়নি এখন বেশি তেলে খাবার খেলে গ্যাস হবে । ছেলেটির ক্ষুধার্ত মুখ দখে ডলির মনটা আরও নরম হয়ে গেলো । একটু কাছে ঘেঁসে বসলো ডলি । বিশ্রী ঘামের গন্ধ আসছে ছেলেটির শরীর থেকে  মনে হয় গোসলও করে না কয়দিন । নিজের আচরণে ডলি বেশ অবাক হচ্ছে , এই শহরে এরকম হাজার হাজার মানুষ আছে যারা দিনাদিন না খেয়ে ময়লায় মাখামাখি হয়ে থাকে । কিন্তু তাদের প্রতি ডলি সাধারন সহানুভূতি ছাড়া আর কিছুই ফিল করে না । তাহলে ইএ ছেলেটির জন্য কেনো হচ্ছে?
 
কি নাম তোমার ? ডলি ছেলেটিকে খাবার এর চিন্তা থেকে দূরে রাখার জন্য প্রশ্ন করলো
 
এদিকে রেস্টুরেন্ট এ ঢুকেই খাবারের গন্ধে বার বার মুখের ভেতরটা পানিতে ভরে আসতে লাগলো নাইম এর যখন মহিলাটি তৈরি থাকা তেহারি অর্ডার না করে রুটি অর্ডার করলো মনে মনে একটু বিরক্ত হলো ও । কিন্তু একজন অচেনা মহিলা ওকে যেচে পড়ে খাওয়াচ্ছে তার উপর ও কিভাবে বলে আমি রুটি নয় তেহারি খাবো । তাই অনেকটা বিমর্ষ মনে রুটির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো নাইম । বার বার পেট মোচড় দিচ্ছে । হঠাত করে সেই * পরিহিত মহিলা ওর আরও কাছে ঘেঁসে এলো । একেবারে শরীর এর সাথে লেগে বসলো । আচমকা ওই মহিলার এমন আচরনে একটু কুঁকড়ে গেলো নাইম । * পরিহিত মহিলা একদম ওর শরীর এর সাথে ঘেঁসে  নাইম এর নাম জানতে চাইলো ।
 
বিব্রত নাইম যতটা সম্ভব দূরে সরে পরার চেষ্টা করলো কিন্তু ওর দিকে আর জায়গা ছিলো না । ওর ঠিক পড়েই ছিলো দেয়াল । হঠাত করে নাইম এর মনে হলো এই মহিলা আবার অন্য ধরনের ঠগবাজ নয় তো । না হলে অপরিচিত একটা ছেলের সাথে যেচে এসে খাতির করছে কেন । যেখানে ঢাকার শহরে নিজের আপন লোক ই ফিরে তাকায় না । এই মহিলা হয়তো ওই দলের যারা কাছে এসে শরীর এর লোভ দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেবে । এদের কথা গ্রামে খুব শুনেছে নাইম । কিন্তু ওর কাছে আছেই বা কি আর এ নেবেই বা কি ? এই চিন্তা করে একটু শান্ত হলো ।
 
আমার নাম নাইম ।
 
আবেগ তাড়িত হয়ে ছেলেটির কাছে ঘেঁসে বসা যে ভুল ছিলো সেটা ডলি ছেলেটির প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পারে । চেনে না জানে না একটা মহিলা হঠাত করে এতো ঘনিষ্ঠ হতে চাচ্ছে  ব্যাপারটা একটু অন্যরকম ই বটে । তাই ডলি আবার দূরত্ব ঠিক করে বসলো । তারপর বলল
 
বাহ তোমার নামটা তো সুন্দর , সত্যি করে বলো তো তুমি গেইটে বইসা কান্না করতাসিলা কেন?
 
নাইম একটু চুপসে যায় । ও চিন্তা করে পায়না অপরিচিত একজন এর কাছে নিজের কথা বলা ঠিক হবে কিনা । কিন্তু পরক্ষনেই ভাবে কি হবে আর বললে । অন্তত এই মহিলা তো ওকে আদর করে খেতে দিয়েছে ।
 
আমি গেরাম থেইকা আসছি আমার এক গেরাম সম্পর্কের চাচা করিম এর কাছে । চাচা বলছিলো ওনার নাকি সিনেমা পাড়ায় অনেক নাম ডাক । আমি ওনার কাছে নায়ক হওয়ার লইগা আসছিলাম । এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ফেলে নাইম এর মাঝে রুটি গোস্ত চলে আসলে নাইম এর আর কথার দিকে মনোযোগ থাকে না । ও গোগ্রাসে খাওয়া শুরু করে ।
 
না চাইতেও ডলির হাসি চলে এলো , যে সে হাসি নয় একেবারে শব্দ করে খিলখিল হাসি । আসে পাসে বসা বাকি লোকজন অবাক আর বিরক্তি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে ডলির দিকে। আগা গোরা *ে ঢাকা এক মহিলা এমন করে হাসছে , দৃশ্যটা দৃষ্টি কটুই লাগার কথা । অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামালো ডলি ।  নাইম এর খাওয়া দেখে ডলির খুব মায়া হয় সাথে সাথে এক ধরনের তৃপ্তি ও অনুভব করে  অভুক্ত ছেলেটিকে খাওয়াতে পেরে । নাইম এর খাওয়ায় আর ডিস্টার্ব না করে নিজের চায়ে চুমুক দেয় ডলি । খাওয়া দাওয়া শেষে ডলি নাইম কে জিজ্ঞাস করে
 
তোমার মনেহয় ঢাকা শহরে যাওয়ার কোন জায়গা নাই তুমি কি আমার সাথে জাইবা ? যদিও একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে , অচেনা একটি ছেলে কে নিজের এক রুমের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওঠানো মানুষ কি চোখে দেখবে সেটা ডলি ভালো করে ই জানে । কিন্তু এটুকু বাড়াবাড়ি করতে ডলির ইচ্ছে হচ্ছে খুব ।

আপনের কোন সমস্যা হইবনা আমারে নিয়ে গেলে ? আহত মনে প্রশ্ন করে নাইম , কারন মহিলার প্রস্তাবটি ওর কাছে এই মুহূর্তে সাগরে ভাসতে থাকা ওই মানুষটির মতো যে এই মাত্র একটি কাঠের তক্তা খুজে পেয়েছে । কিন্তু ও জানে ওকে বাড়ি নিয়ে গেলে এই মহিলাকে নানা প্রশ্নের সমুখিন হতে হবে আর নিজের সাহায্যকারী কে কোন সমস্যায় ফেলতে চায়না নাইম ।

 
আমার কি সমস্যা ! তুমি ভয় পাইবা নাকি সেইটা বলো । ডলি হেঁসে উত্তর দেয় , এই হাঁসি হয়ত ছেলেটিকে একটু নর্মাল হতে সাহায্য করবে।
 
আমি ক্যান ভয় পামু , আমার ভয় পাওয়ার কি আসে । যার কিছু থাকে ভয় সে পায় । নাইম মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলে , কারন মহিলার এমন সদয় আচরনে ওর  চোখে পানি চলে এসেছে ।
 
কথা তো ভালো সিখসো , তোমার যেমন কিছু নাই আমারো কিছু নাই , তাই আমারো কোন সমস্যা নাই তোমারে নিয়া গেলে । ওই একটা সি এন জী যায় । চলো উইঠা পরি , তোমার শরিলে যে গন্ধ উঠতে দিবে কিনা কে জানে?  
                                                                             *****

কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply
#11


অনেক গুলো টাকা খরচ হয়ে গেলো ডলির যদিও । কিন্তু ডলির তেমন মন খারপ হলো না মনে হল ওর জমানো টাকা এতদিনে কোন কাজে এসেছে টাকা গুলি খরচ করতেও ওর মন তৃপ্ত হয়েছে ।  
 
এইজে আমার ঘর ।  লম্বা লম্বি অনেকগুলা টিনশেড ঘর এর একটির তালা বদ্ধ দরজা দেখিয়ে বলল ডলি । তারপর তালা খুলে ঘোরের ভেতরের লাইট জালালো ও । কমদামি সব ফার্নিচার দিয়ে সাজানো ঘরটা কিন্তু বেশ ছিমছাম । ঘরের একপাশে একটা কাঠের খাট তার উপর ফুলতোলা চাদর । একটা বেতের সেলফ একটা আলনা । একটা খাবার রাখার সেলফ আর কিছু পাতিল ।
 
আপনার বাড়ির অন্য লোকজন কই ? প্রশ্ন করলো নাইম  
 
ঘরে ঢুকে মুখের * খুলে হাসতে হাসতে ডলি বলল  আর লোকজন কই পাবো ? আমি একলাই থাকি ।
 
মুখের * খুলে ফেলতেই নাইম চিনে ফেললো মহিলাকে । বাংলা সিনেমায় প্রচুর কাজকরা সাইড অভিনেত্রী । দশবারটা ছবিতে দ্বিতীয় নাইকার কাজ ও করেছে এক সময় । এখন ছোটখাটো এক দুই মিনিট এর  রোল করে যেসব রোল শেষ পর্যন্ত রেপ হয়  । এছারাও ভিলেন দের বান্ধবির রোল ও করে যারা ছোট ছোট কাপড় পড়ে ভিলেনদের আসে পাশে থাকে সব সময় ।  
 
ও আল্লা আপনে ডলি ম্যাডাম না ?
 
চিন্না ফেলসো তাহলে ?
 
ওমা চিনুম না ক্যান , আপনে কি একটা দুইটা ছবি করসেন কত ছবিতে আপনেরে দেখি । নাইম এর গলায় কাপন , উত্তেজনার কাপন , নায়ক বা নাইকা না হোক অন্তত সিনেমায় কাজ করে এমন একজন এর সাথে তো দেখা হয়েছে ওর ।  গত চার দিনের দুঃখ আর টাকা হারানোর শোক যেন বুহুদিন আগে শুকিয়ে জাওয়া ক্ষতর মতো মনে হচ্ছে নাইম এর কাছে এখন ।
 
হু অগুলারে কি অভিনয় বলে , ক্যারেক্টারের নাম ও থাকে না বেশিরভাগ সময় , আর সব তো অই দুই তিন মিনিট এর রোল ।  একটু লজ্জা পেয়ে বলে ডলি । অবশ্য লজ্জা পাওয়ার কারন আছে , আজকাল যে সব রোল ডলি পায় , সেগুলির বেশিরভাগ হয় রেপ হওয়ার সিন , নয়ত ছোট পোশাক পরা ভিনেলের প্রেমিকা হওয়ার রোল ।  যাদের কাজ হচ্ছে ছোট ছোট পোশাক পরে ভিলেনের কোলে বসে থাকা । আর ভিলেন কে মদ ঢেলে দেয়া ।
 
তুমি এইখানে বসো আমি গিয়া দেইখা আসি বাথ রুম খালি নাকি , তোমার এখন সাবান দিয়া ভালো মতন গোসল দিতে হইবো ।
 
ডলির কথায় নিজের কাপড়ের দিকে নজর যায় নাইমের , আসলেই ভুসভুস করে ঘামের গন্ধ বের হচ্ছে । এবার লজ্জা পাওয়ার পালা নাইমের , লজ্জায় ওর ফর্সা চেহারা লালচে হয়ে যায় ।
ডলি এই ব্যাপারটা লক্ষ করে , কেমন লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে ছেলেটি । বুকটা কেমন হু হু করে ওঠে ওর । ১৭ বছর আগের নিজের জীবনের  সেই কালো অধ্যায় মনে পরে যায় । ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে সেদিন নিজের কলিজার টুকরা কে বিসর্জন দিতে হয়েছিলো। কি সুন্দর হয়েছিলো দেখতে টুকটুকে ফর্সা , আজ হয়ত এই ছেলেটির সমান ই হতো । একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় ডলি ।
                                                                                    ****
 
অনেক বেলা করে ঘুম ভাঙ্গে নাইমের , দেয়ালে টানানো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় সোয়া দশটা বাজে । আড়মোড়া ভেঙ্গে বিছানা থেকে নামে নাইম । ঘর খালি , ডলি  কে কোথাও দেখতে পেলো না ও । ধিরে ধিরে বিছানা থেকে নামলো নাইম । গত রাতে ঘড়টি ভালভাবে দেখা হয়নি উত্তেজনার কারনে । সিনেমায় কাজ করে এমন কারো সাথে পরিচয় হওয়া তার বাসায় আসা , এর চেয়ে উত্তেজনাকর বিষয় আর কি হতে পারে নাইমের মতো সিনেমা পাগল ছেলের জন্য ।
 
নাইম ঘরের চারদিকে একবার তাকালো । ছিমছাম গছানো ঘর , আসবাব একেবারে নেই বললেই চলে , একটি সিঙ্গেল খাট যা গত রাতে নাইম দখল করেছে । শত অনুরধ ও কাজে আসেনি ডলি কিছুতেই নাইম কে নিচে শুতে দেয়নি , বরং নিজেই কাথা বিছিয়ে নিচে শুয়েছে । একপাশে একটি আলমারি তাতে গোটা কয়েক সাড়ি পেটিকোট ,আর কিছু সালোয়ার কামিজ । একটি ট্রাংক একটি সেলফ যার নিচের দুই তাক দখল করে আছে হাড়ি পাতিল , আর উপরের তাক প্রসাধনি আর একটি ছোটো আয়না । সব মিলিয়ে এই হচ্ছে ঘরের আসবাব , নাইম এতো অনাড়ম্বর জীবন জাপন দেখে অবাক হলো । সিনেমায় কাজ করা মানুষদের জীবন সম্পর্কে অন্য রকম ধারনা ছিলো নাইম এর । কিন্তু এই ডলি কে দেখে ওর ধারনা এক রাতেই অনেকটা পাল্টে গেছে । নাইম আবার ঘরময় চোখ বুলালো , এবার ট্রাংক এর উপর রাখা দুটো প্লেট ওর নজর কারলো একটি প্লেট দিয়ে অন্যটি ঢাকা , ক্ষুধা জানান দিলো নাইম এর পেট । বিছানা থেকে উঠে উপরের প্লেট তুলতেই দেখা গেলো একটি  পলিথিনে কিছু ভাজি আর পত্রিকায় মোড়ানো কিছু একটা , নিশ্চয়ই পোরটা হবে । দ্রুত কল পার চলে গেলো নাইম চোখে মুখে পানি দিতে ।
 
এই পোলা তুমি ডলির কি হও । কল পারে বসা এক মহিলা জিজ্ঞাস করলো নাইম কে । কি উত্তর দেবে ভেবে পেলো না নাইম , কি বলবে ? বলার মতো কেউ তো না ও , আত্মীয় লাগি , কোনোরকমে বলল নাইম । তবে মহিলার মুখ টিপে হাসা দেখে নাইম বুঝতে পারল উত্তরটা মনপুত হয়নি ঐ মহিলার । মনটা খারাপ হয়ে গেলো নাইম এর , নাইম চায় না ওর জন্য ডলির কোন সমস্যা হোক । এই আপনহীন শহরে এই মহিলা ওকে আদর করে নিজের কাছে আস্রয় দিয়েছে । এখন ওর জন্য যদি মহিলার বদনাম হয় সেটা নাইম মেনে নিতে পারবে না ।
 
পত্রিকার কাগজে মুড়ে রাখা পরটা  দুটো আর পলিথিনে রাখা ভাজি কিছুই নাইম এর মুখে ভালো লাগলো না । একটা তেত স্বাদে ভরে গেছে মুখটা । এই আস্রয় ছেড়ে ওকে চলে যেতে হবে , সেটা বুঝতে পারার  পর থেকে মনটা কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না । সিদ্ধান্ত নিলো ঘর থেকে বের হবে না । একটা সিনেমার ম্যাগাজিন নিয়ে পড়তে লাগলো শুয়ে শুয়ে ।
                                                                                     *****
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 3 users Like gungchill's post
Like Reply
#12

 

সকাল বেলায় ছেলেটাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে একদম ইচ্ছে হয়নি ডলির , কেমন শান্তিতে ঘুমাচ্ছিলো ছেলেটা । মুখটা একটু হাঁ করা ছিলো , খুব মায়া হয়েছিলো ডলির । তাই ট্রাঙ্কের উপর নাস্তা ঢেকে রেখে চলে এসেছে । বাসে উঠেই মনে হয়েছে কি ভুল করে ফেলেছে , পরটা  দুটো নিশ্চয়ই ঠাণ্ডা হয়ে যাবে । দকানের পরটা  গরম অবস্থায়ই যা একটু খাওয়া যায় , ঠাণ্ডা হয়ে গেলে একদম অখাদ্য । কিন্তু কিছু করার ছিলো না ডলির , সকাল নয়টার মাঝে থাকতে হবে ডলি কে সিনেমা পাড়ায় । একটা কাজ এসেছে লিয়াকত ভাই খবর দিয়েছে । বেশ বড় রোল , সিনেমার কমেডিয়ান এর বউয়ের  রোল । সব মিলিয়ে প্রায় ১৫-২০ মিনিট দেখানো হবে রোলটি । বেশ কিছু ডায়লগ ও আছে , নায়ক এর সাথেও কিছু সিন আছে । দেরি করে গেলে হয়ত অন্য কেউ পেয়ে যাবে রোলটা । এই মন্দার বাজারে এমন একটা রোল হাত ছাড়া হওয়া চাট্টি খানি কথা না ।
 
অফিসে ঢুকতেই মনটা বিমর্ষ হয়ে গেলো ডলির , ১০-১২ জন বসে আছে এই রোলের জন্য । এর মাঝে একজন আবার ডলির পরিচিত সেফালি । ডলি ওকে সেফালি বুবু বলে ডাকে । ডলি জানে এই কাজটা সেফালির অনেক দরকার , ওর ছেলে ভর্তি আছে হাসপাতালে  । টাকা খরচ হচ্ছে দেদারসে , শিল্পী সমতি থেকে যা পাওয়া গেছে তা প্রয়জনের তুলনায় খুবি সামান্য । দিন রাত খাটে সেফালি , কিন্তু সেই পরিমান কাজ তো থাকতে হবে ? কাজ কই ।
 
 কি গো সেফালি বু রতনের খবর কি ? সেফালির পাশে বসে জিজ্ঞাস করে ডলি ।
ঐ এক রকম আছে , টেকা নাই তো চিকিৎসা নাই , এতো টেকা পামু কই ? করুন স্বরে বলে সেফালি । তারপর আবার জিজ্ঞাস করে তুই ও এই কাজের জন্য আইসস ?
 
হ্যা বলতে একটু লজ্জা লাগে ডলির । তাই উত্তর একটু ঘুরিয়ে দেয় , তুমি ই পাইবা কাজ টা দেইখো । তারপর মুখ সেফালির কানের কাছে নিয়ে ফিস্ফিস করে বলে , তুমি নাকি “পালা শয়তান” ছবিতে কাম নিসো ।  
 
হু নিসি, বড় একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে উত্তর দেয় সেফালি । ডলি আর কিছু বলে না , কি বলবে সুধু এতুকু জানে সেফালি যে কাজ নিয়েছে সেই কাজে একবার যে নামে সারাজিবন তাকে ঐ ধরনের কাজ ই করতে হয় । মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় ডলির , ইচ্ছে হয় ইন্টার্ভিউ না দিয়ে বেড়িয়ে যায়। কিন্তু সেটা সম্ভব না , নাম খারাপ হবে কেউ আর ডাকবে না । কিছুক্ষন পর ডাক পরে ডলির । সেফালির হাতে আলতো একটা চাপ দিয়ে উঠে পরে ডলি ।   
 
আমাকে চিনতে পারসেন ? কাস্টিং ঘরে ঢুকতেই জিজ্ঞাস করে কাস্টিং ম্যানেজার । একটু থতমত খেয়ে যায় ডলি । আজকাল আর কেউ আপনি করে সম্বোধন করে না , তুমি করেই বলে সবাই । ডলি ভালো করে কাস্টিং ম্যানেজারের দিকে তাকালো , মাথায় টাক বেশ বড়সড় ভুরি আর পান খাওয়া ঠোট । একটা মাঝারি গোঁফ নাকের নিচে । ডলি ঠিক চিনতে পারলো না 
 
জিনা আপনারে ঠিক চিনতে পারলাম না । ডলি নিচু স্বরে জবাব দিলো ।
 
না চিনার ই কথা , সময় তো কম হয় নাই । ১৮-১৯ বছর হইবো , আপনার প্রথম ছবিতে আমি প্রডাকশন বয় আসিলাম ।
 
নিচের ঠোট কামড়ে ধরলো ডলি , লজ্জায় একেবারে মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর । লজ্জা হচ্ছে আজকে নিজের অবস্থানের জন্য । প্রথম ছবিতে ডলি ছিলো সেকেন্ড লিড , আর এই কাস্টিং ম্যানেজার ছিলো প্রডাকশন বয় । আজ ডলি এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে সেফালি না থাকলে হয়ত এই রোলের জন্য এই কাস্টিং ম্যানেজারের বিছানা পর্যন্ত যেতে রাজি হতো ও ।
 
মাঝে সুবির দার লগে কলকাতা গেসিলাম গা , ঐখানে কাজ করসি , উনি ই আমারে হাতে ধইরা আজকার যায়গায় নিয়া আসছে । প্রডাকশন বয় থাইকা কাস্টিং ম্যানেজার হইসি । এই বলে লোকটা একটু থামল , তারপর আবার বলতে শুরু করলো ।  আপনের হিস্টোরি আমি শুনছি। এই বলে জিভ দিয়ে চুক চুক করে একটা শব্দ করলো কাস্টিং ম্যানেজার তারপর বলল, বড় দুঃখের কাহিনী । আপনের এখন কই থাকনের কথা আর কই আসেন ।  
 
চোরা চোখে একবার কাস্টিং ম্যানেজারের দিকে তাকালো ডলি , লোকটার দৃষ্টি ওর শরীরের একটি বিশেষ অংশে দেখতে পেয়ে লজ্জা আরও দিগুন বেড়ে গেলো ওর , সাথে সাথে মাথা আবার নিচু করে ফেলল ।
 
আপনে যখন সিনেমায় আইলেন তখন পুরা সিনেমা পাড়ায় আপনের কথাই হইত। আপনের মতন ফিগার আর সুন্দরী ঐ সময় কেউ আসিলো না  । সবাই কইত আপনে অনেকদিন এক নাম্বার হিরোইন হিসাবে থাকবেন । সত্যি কথা কইলে আমি তো আপনের প্রেমে পইড়া গেসিলাম  হো হো হো  
 
লোকটার এমন ভুরি নাচিয়ে বিশ্রী করে হাঁসা ডলির শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে । এমন কেন হচ্ছে ডলি ঠিক বুঝতে পারছে না এর চেয়ে অনেক খারাপ কাস্টিং ফেস করেছে ডলি । অনেক কাস্টিং ম্যানেজার তো সরাসরি শরীরে হাত দেয় কাস্টিং এর সময় । সেই তুলনায় এই লোক তো ফেরেস্তা ।
 
খালি আমি ক্যান , এই সিনেমা পাড়ায় এমুন কোন জোয়ান পোলা আসিলো না যে আপনের প্রেমে পরে নাই । বুড়া গো কথা বাদ দিলাম , এই বলে আবার এক প্রস্ত ভুরি নাচানো হাঁসি হাসল লোকটা । তারপর আবার বলল , আলতাফের কাছে আপনের ছবি দেইখা আমি তখনি ঠিক কইরা ফেলসি আপনেরে আমি এই রোলে নিমু , এই ইন্টারভিউ খালি লোক দেখানো , বুঝতেই তো পারেন সব কিছুর একটা নিয়ম আছে । কত নিবেন ? তিরিশ হাজার চলবো , যদিও আমারে পঁচিশ এর বাজেট দিসিলো , কিন্তু কি করি কন পুরানা প্রেম বইলা কথা । এই বলে আবার সেই বিটকেলে হাঁসি ।
 
কাজটা আমি করবো না , এই বলে উঠে দাঁড়ালো ডলি । কাস্টিং ম্যানেজারের হাঁসি থেমে গেছে , লালচে গোল গোল চোখ জোড়া আর গোল হয়ে গেছে । ভীষণ অবাক হয়েছে লোকটা আর লোকটাকে মুখের উপর না করতে পেরে দারুন একটা ভালো লাগা অনুভব করছে ডলি নিজের মাঝে ।
 
ডলি জানে এই সিদ্ধান্ত ডলি কে ভোগাবে বেশ , কিন্তু ডলি কিছুতেই এই কাজ করবে না । এর প্রধান করন হচ্ছে লোকটা ডলি কে বিছানায় নিয়ে যাবে । বিছানায় যেতে ডলির সমস্যা নেই , এর আগে অনেকবার গিয়েছে , কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই লোক নিজের পুরনো ফ্যান্টাসি পুরন করবে ডলিকে নিয়ে , আর ওখানেই ডলির আপত্তি , নিজের পুরনো ক্ষতে ডলি কিছুতেই এই লোক কে লবন লাগাতে দেবে না ।  
 
কাস্টিং অফিসের বাইরে এসে আলতাফের সাথে একচোট হলো ডলির , আর কোনদিন ডলিকে ডাকবে না বলে শাসিয়ে দিলো আলতাফ । সব কিছুই ডলি মাথা নিচু করে শুনে গেলো । আলতাফের সাথে কোন ঝগড়ায় জড়াতে চায় না ডলি । এই এক লোক যে সিনেমা পাড়ায় অদ্বিতীয় , নিজের পাঁচ  পারসেন্ট ছাড়া বাড়তি কিছুই চায় না কখনো ।
 
ডলিদের মত থার্ড গ্রেড অভিনেত্রী না অনেক নতুন উদীয়মান কাম বয়সী মেয়েরাও আলতাফের সাথে বিছানায় যেতে রাজি । কিন্তু আলতাফ এসবে নেই । ৫% কমিশন দাও , কাজ নাও এই নীতিতে বিশ্বাসী সে । আলতাফের রাগ যখন একটু কমে আসলো তখন ডলি শেফালীর কথা তুলল । কিন্তু আলতাফ কিছুই করতে পারবে না বলে দিলো । বলল সেফালি যে লাইনে গেছে তারপর আর এমন রোলে ওর কাস্টিং হবে না ।
 
দিনের অর্ধেকটা সময় ডলি সিনেমা পাড়ায় ঘুরঘুর করলো । তারপর বাড়ির পথ ধরলো । আজকে কোন কাজ ছিলো না । তবে একটা গানের শুটিঙে নাইকার সখি হওয়ার কাজের ডাক পেয়েছিলো । কিন্তু ডলি যায়নি , মন ভালো ছিলো না । গেলে ৫০০ টাকা আর লাঞ্চ পাওয়া যেত ।
 
ঘরের দরজা খোলাই ছিলো , নাইম নামের ছেলেটা একটা ম্যাগাজিন খুলে দেখছে বিছানায় বসে । কি নায়ক সাহেব , কি করেন ? হাসিমুখে জিজ্ঞাস করে ডলি । ছেলেটাকে দেখে সারাদিনের মন খারাপ কিছুটা কমে । আসার সময় দুই প্যাকেট তেহারি কিনে এনেছে ডলি । গতকাল ছেলেটাকে তেহারি খাওয়াতে পারেনি বলে আজ মনে হলো নিয়ে যাই ।
 
খেতে খেতে ডলি ভাবে এই অপরিচিত ছেলেটার জন্য এতো মায়া হচ্ছে কেনো ওর । এমন মায়া হওয়া তো ভালো না । এমন মায়া শেষ পর্যন্ত দুঃখ ডেকে আনে ।
 
শুনো ছেলে কাল থাইকা আমার সাথে সিনেমা পাড়ায় যাইবা বুঝছো । নায়ক হইতে চাও যেহেতু ঘরে বইসা ম্যাগাজিন দেখলে হইবো না ।
 
মাথা কাত করে সায় দেয় নায়িম । ডলির দিকে সয়ারাসরি তাকাতে লজ্জা হচ্ছে । আজ ডলি ঘরে না থাকার সময় এমন এক কাণ্ড করেছে যে এখন লজ্জায় ডলির দিকে তাকাতে পারছে না । মন বলছে যে মহিলা এমন আদর করে ঘরে তুলল তার সাথে এমন বেয়াদবি করা ঠিক হয়নি । কিন্তু কাজটা আজ নতুন নয় , নাইম আগেও এ কাজ করেছে । তখন এমন গিল্টি ফিল হয়নি । তবে ডলিকে সামনা সামনি দেখে ,আর ওর প্রতি ডলির দরদ দেখে গিল্টি ফিল হচ্ছে । মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় নায়িম এমন কাজ আর করবে না , অতিতে যা করার করেছে।
 
 
                                                                                               *****
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply
#13
Darun
Like Reply
#14
৭ 



প্রায় সপ্তা খানেক হলো , নাইম সিনেমা পাড়া আসছে । কত পরিচিত মুখ দেখছে , উত্তেজনায় এক সপ্তা কোন দিক থেকে গিয়েছে নিজেও বলতে পারবে না । নায়ক দিলবার খানের শুটিং দেখছে , নাইকা জেরিনের নাচ দেখছে । তবে একটা জিনিস নাইমের মন খারাপ করে দিয়েছে , নায়ক দিলবার খানের চুল নেই, মাথায় টাক , পরচুলা পরে অভিনয় করে । দেখতেও ভালো না বেশ বয়স্ক লাগে  , অথচ সিনেমার পর্দায় কেমন সুদর্শন লাগে ।  
 
আজো বসে আছে নাইম ডলির সাথে । একটু পরে ডলির একটা কাজে যেতে হবে । তাই ডলি নাইম কে বুঝিয়ে দিচ্ছে যেন এদিক সেদিক বেশি ঘোরাঘুরি না করে । শোনো ছেলে , এদিক সেদিক বেশি জাইও না । সিনেমায় সবারে ভালো মানুষ দেখাইলেও বাস্তবে সবাই অমন না বুঝছো?
 
এতদিন হয়ে গেলো তবুও ডলি নাইম কে ছেলে অথবা নায়ক বলেই ডাকে , ডাকার দরকার হলে , “এই ছেলে” “নায়ক সাহেব” এইসব বলে সম্বোধন করে । ব্যাপারটা নাইমের ভালোই লাগে , এই রসকষ হীন ডাকেও যে স্নেহ টুইটূম্বুর সেটা আত্মীয় পরিজনহিন নাইমের বুঝতে অসুবিধা হয় না ।
 
ঘাড় নাড়িয়ে নাইম বলে দেয় সে বুঝতে পেরেছে । কিন্তু ডলি চোখের আড়াল হতেই এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি শুরু করে দেয় । একে ওকে জিজ্ঞাস করে জেরিনের শুটিং কোথায় চলছে । জেরিন হচ্ছে ওর বর্তমানের সপ্নের নাইকা । নাইম সপ্ন দেখে একদিন জেরিনের সাথে অভিনয় করবে , দুজনে মিলে রোম্যান্টিক গান করবে । চুমুর সিন করবে , বাঁশর ঘরের  সিন করবে । ভাবতে ভাবতেই নাইমের কান লাল হয়ে ওঠে ।
 
হিট নাইকা জেরিনের কথা ভাবতে ভাবতে এদিক ওদিক আনমনে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত করেই একজনের সাথে ধাক্কা লাগে ওর । হ্যাংলা পাতলা নাইম পরেই যাচ্ছিলো প্রায় । কোন রকমে নিজেকে সামলে নেয় ও , তারপর ই কথা গুলো এসে ওকে ধাক্কা দেয় । যা শারীরিক ধাক্কার চেও প্রবল , এই শূয়রের বাচ্চা দেখে চলতে পারিস না ।  
 
নায়িম গালি দেয়া লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখে , লোকটাকে ও চিনতে পারে । মাঝে মাঝে সাইড ভিলেনের কাজ করে । তেমন বড় কেউ না , নায়কের হাতে মার খাওয়াই এদের কাজ । নাইমের খুব রাগ হয় , বলে … গালি দেন ক্যান?
 
এক থাপ্পরে দাত ফালায়া দিবো খানকির পুত ,  কথা বলেই সুধু খান্ত হয় না একটা থাপ্পর বসিয়েও দেয় , নাইমের ফর্সা গালে আঙ্গুলের ছাপ গুলো স্পট ফুটে ওঠে । এরি মাঝে আশেপাশের লোকজন জর হতে শুরু করে । একেক জন এসে সাইড ভিলেন নাসির কে জিজ্ঞাস করেত থাকে কি হইসে নাসির ভাই , এইটা কে?
 
লজ্জায় নায়িমের চোখে পানি চলে আসে , ইচ্ছে হয় দৌরে পালিয়ে যেতে । থাপ্পর টা ওর শরীরে যতটা না আঘাত করেছে তারচেয়ে বেশি অহংবোধে । নিজে একদিন এই সিনেমা পাড়ার সেরা নায়ক হবে । তখন নিশ্চয়ই এই কথাটা সবাই মনে রাখবে । সবাই চুপি চুপি বলবে ওই দেখো নায়ক নায়িম যায় , একদিন এক জুনিওর আর্টিস্টের কাছে থাপ্পর খেয়েছিলো । আর ঐ নাসির লোকটাও কি কম বলবে এই কথা , যার তার কাছে বলে বেড়াবে ।
 
লজ্জায় অপমানে নায়িমের চোখে পানি চলে আসে , অনেক কষ্টে কান্না থামায় নায়িম । কান্নার বেগে ঠোঁট দুটো ফুলে ফুলে ওঠে ।
 
কি জানি কই থাইকা যে এই আবাল ছাবাল আহে , আমারে ধাক্কা দিলো, আরবার তেজ ও দেখায় , নিজেরে নায়ক ভাবে । নায়িম ওর ব্যাপারে নাসির কে বলতে শুনল । আশপাশ থেকে কয়েক জন নাসিরের কথায় মৃদু শ্বায় দিলো , বাকিরা হেসে উঠলো । লজ্জায় আরও লাল হয়ে উঠলো নায়িম , ও বুঝতে পারছে ওর এখন উচিৎ এখান থেকে চলে যাওয়া , কিন্তু নড়তে পারছে না একদম । ঢাকা শহর এসে অনেক রং দেখছে নায়িম , কিন্তু কেউ কোনদিন ওর সাথে এমন আচরন করেনি , না খেয়ে থেকেছে , রাস্তায় ঘুমিয়েছে । কিন্তু বাপ মা তুলে গালি দেয়া ,
 
এমন সময় কেউ একজন বলে উঠলো । এই ভাই এই রাস্তা ছাড়েন , রাস্তা ছাড়েন । হয়ত বড় কেউ এসেছে । দ্রুত রাস্তা পরিস্কার হয়ে গেলো , নায়িম তখনো নিচের দিকে তাকিয়ে থাকায় কে এসেছে সেটা দেখতে পেলো না , দেখার ইচ্ছাও নাই । এই অপমানিত মুখ কাউকে দেখাতে চায় না ও ।
 
যে এসেছে তাকে সবাই সালাম দিতে লাগলো , ওস্তাদজি বলে সম্বোধন করছে সবাই । এমন কি নাসির ও লোকটাকে সালাম দিলো।
 
এই এখানে কি হয়েছে ? তোমরা জটলা করছো কেনো? একটা পুরুষ কণ্ঠ শুনতে পেলো নায়িম , যদিও পুরুষ তারপর ও কেমন জানি মেয়েলী ভাব আছে কণ্ঠে ।
 
আর বইলেন না ওস্তাদজি , আজে বাজে লোকে ভইরা গেছে পাড়া , দেখেন নায়ক একজন , আমারে ধাক্কা দিলো , আমি বললাম ধাক্কা দিলা ক্যান , আমারে লাল চোখ দেখায় ।
 
বল কি নাসির , এইটুকু ছেলে , ওস্তাদজি নামের লোকটা এখন নাইমের দিকেই তাকিয়ে আছে , নায়িম একবার চোখ তুলে দেখে নিয়েছে লোকটাকে , ঘিয়ে রঙের দামি পাঞ্জাবি পাজামা পরে আছেন , চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমা । একটু বেঁটে আর কালো দেখতে , মাথায় চুল ও বেশ কম। বেশ বয়স লোকটার , যত টুকু দেখায় তারচেয়ে বয়স বেশি ই হবে ।
 
এই ছেলে তোমার নাম কি ? ওস্তাদজি জিজ্ঞাস করে , যদিও এই লোকটার কণ্ঠ বেশ নরম আর তাচ্ছিল্যের উপস্থিতি নেই । তারপর ও উত্তর দেয় না নাইম । লজ্জায় ওর মুখ দিয়ে শব্দ বের হয় না ।
 
দেখসেন নাকি ওস্তাদজি কেমন ফাজিল , আপনের প্রশ্নের উত্তর দেয় না । নাসির রাগত স্বরে বলে , তারপর নাইমের দিকে তাকিয়ে হুংকার ছেড়ে বলে , ওই কথা কস না ক্যান বান্দিরপুত , থাবড়া দিয়া কানাপট্টি গরম কইরা দিমু ।
 
আহা নাসির থামো তো , ওস্তাদজি বিরক্ত হয়ে বাধা দেয় , তারপর নাইমের দিকে এগিয়ে যায় । মাথায় হাত রাখে , লোকটার হাতের স্পর্শ নাইম কে অনেকটা শান্ত করে । কি নাম তোমার , এখানে কি করো ?
 
এবার নাইম ফুঁপিয়ে ওঠে , নায়কোচিত কাঠিন্য আর ধরে রাখতে পারে না । সেটা দেখে ওস্তাদজি বলেন । আহা কাদছো কেন ? তারপর জমা হওয়া লোকজন কে তাড়িয়ে দেন । নাসির যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে কি যেন বলতে বলতে যায় ।
 
তুমি আসো আমার সাথে ,ওস্তাদজি নাইম কে সাথে নিয়ে নিজের গন্তব্যের দিকে হাটা দেয় ।
 
                                                                                     *****
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
[+] 2 users Like gungchill's post
Like Reply
#15
yourock yourock
[+] 1 user Likes Abirkkz's post
Like Reply
#16
Darun
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
#17
Valo laglo
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply
#18
Update din
[+] 1 user Likes Momcuc's post
Like Reply
#19
সুন্দর শুরু।।
[+] 1 user Likes incboy29's post
Like Reply
#20
(11-08-2025, 04:43 PM)Abirkkz Wrote:
yourock yourock

(11-08-2025, 06:25 PM)Saj890 Wrote: Darun

(11-08-2025, 07:22 PM)chndnds Wrote: Valo laglo

(12-08-2025, 02:27 AM)Momcuc Wrote: Update din

(12-08-2025, 09:44 AM)incboy29 Wrote: সুন্দর শুরু।।

সবাইকে ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য  Namaskar
কেউ কথা রাখে না 
আসবো বলেও আসে না। 
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব , 
কখনো ছেড়ে যায় না।
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)