Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
07-08-2025, 03:51 PM
(This post was last modified: 08-08-2025, 06:02 PM by gungchill. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
গ্রামের ছেলে নাইম , গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে সিনেমার হিরো হওয়ার জন্য । সহজ সরল নাইম জানে না ওর জন্য এই রহস্যময় শহর নিজের আস্তিনে কত কি ম্যাজিক লুকিয়ে রেখছে । চলুন আমরাও যুক্ত হয় নাইমের এই হিরো হওয়ার সফরে ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 383
Threads: 0
Likes Received: 149 in 143 posts
Likes Given: 221
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
•
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
সব চরিত্র কাল্পনিক , জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে সাদৃশ্য পাওয়া গেলে তা একান্ত কাকতালীয় ।
১
কি হইতে চাস ? নায়ক !
হু
হা হা হা হা হুনছস নি কালাম ওই নাকি নায়ক হইতে চায় । পাশে বসা লুঙ্গী পড়া মোটাসোটা লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলে করিম তারপর আবার সামনে দাঁড়ানো , সদ্য দাড়ি গোঁফ ওঠা লম্বা ফর্সা ছেলেটির দিকে তাকায় আর বলে
শুন নাইম , নায়ক হওয়া এতো সহজ না , তার উপর তুই এতিম পোলা আইসস গেরাম থাইকা , তরে কে নায়ক বানাইব ?
ক্যান তুমি বানাইবা , নাইম নামক ছেলেটি বলল ।
আমার কি হেই ক্ষমতা আছে যে আমি তরে নায়ক বানামু , আমি হইলাম কামলা মানুষ , নায়ক নাইকাগো সামনে যাওয়ার ক্ষমতা ই আমার নাই আবার নায়ক বানামু ।
করিম এর কথা শুনে রাগে গা জ্বলে ওঠে নাইম এর । কত আশা করেই না এসেছিলো এই করিম এর কাছে । এসে জানতে পারছে শালা একটা জোচ্চোর । গ্রামে গিয়ে কত কিছু বলে , অমুক পরিচালকের খুব কাছের লোক, অমুক নায়ক ওকে ভাই ডাকে । আসলে ওসব সব মিথ্যা সেটা জানতে পেরে চোখে সর্ষে ফুল দেখছে নাইম । কত সখ করে এসেছিলো । আসার সময় চাচার কাছে বাপের রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ও পানির দামে বিক্রি করে দিয়ে এসেছে । মনে করেছে , শহরে গিয়ে সিনেমায় কাজ করে অনেক উন্নতি করবে । কিন্তু কিসের কি যার উপর ভরসা করে এসেছিলো সেই হলো নাম্বার ওয়ান বাটপার ।
ক্যান তুমি না কইতা পরিচালক মুন্না মজিদ তোমারে ছোট ভাই ডাকে , নায়ক দিলাবার খান এর বাইত তোমার আহন যাওন ।
ঐ সব ভুল্লাই যাও ভাতিজা , গেরামে গিয়া মান ইজ্জত এর লইগা এইসব কইতাম । ক্যান তোমার বাপে তোমারে কয় নাই ?
নাইম বুঝলো আর কোন আশা নেই এই বজ্জাত করিমের কাছ থেকে , বিপদে যে পড়েছে সেটা সম্পর্কে ১০০ ভাগ নিশ্চিত। নাইমের বাবা প্রায় বলতো করিম একটা জোচ্চোর , কিন্তু নাইম বিশ্বাস করতো না । কিন্তু এই শহরে ওর এক মাত্র পরিচিত বেক্তি এই করিম তাই করিমকেই জিজ্ঞাস করলো । এহন আমি কি করমু করিম চাচা । আমি তো সব কিছু বেইচ্চা চইলা আসছি ।
কি ?
হ ভিটা বাড়ি সব চাচার কাছে বেইচ্চা দিসি ।
করিম এর চোখ দুটো চক চক করে উঠলো । একটা ঢোক গিলল করিম । তারপর বলল
সব বেইচ্চা কিন্না আইসস ? তোর বাপ কই
বাইচা নাই , মায় ও নাই , হের লইগা সব বেইচা কিন্না চইলা আসছি ।
টেকা কি লগে লইয়া ঘুরতাসস নাকি । এমন ভাবে বলল করিম যেন নাইমের জন্য খুব চিন্তিত
হ ক্যান ? নাইম জিজ্ঞাস করলো
হায় আমার কপাল , হুনছস নি কালাম এই পোলার কথা , এরা যে নিজেরে কি মনে করে ঢাকার শহরে বেগে টেকা লইয়া ঘুরতাসে । এই কথা বলে করিম উঠে দাঁড়িয়ে নাইম এর একটা হাত ধরে অনেকটা টানতে টানতে নিয়ে চলে নিজের সাথে ।
শোন , নায়ক বানাইতে পারুম না তবে লাইনে ঢুকাইয়া দিতে পারুম । হের পর নায়ক হইতে পারা না পারা তোর উপর । এহন চল আমার লগে । কিছু খাইসস ? চল আগে তোরে কিছু খাওয়াই লই ।
****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 383
Threads: 0
Likes Received: 149 in 143 posts
Likes Given: 221
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
•
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
2
গত চারদিন যাবত একটা ঘোরের মাঝে আছে নাইম । একটা মানুষ কি করে আর একটা মানুষ এর সাথে এমন করতে পারে সেটাই ভাবে সিনেমা পাড়ার গেইটে বসে বসে । একেবারে সহায় সম্বলহীন এখন নাইম । জমি আর ভিটা বিক্রি করা সত্তর হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে করিম ।
চা রুটি খাইয়ে নাইম কে নিয়ে একটা হোটেলে ওঠায় করিম । বলে যে এটা মেস বাড়ি । নাইম অবাক হয়ে করিম এর বউ ছেলে মেয়ের কথা জানতে চাইলে । করিম উদাস হয়ে বলে ।
গেরামে আমারে যেমন দেহস আমি এইখানে তার উল্টা রে নাইম । এই ঢাকার শহর বড় নিষ্ঠুর কয়দিন থাক তুই ও জানতে পারবি ।
নাইম আর কোন কথা বাঁড়ায় নি । রাতে করিম দুই প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে আলনে সেটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে । পরদিন সকালে উঠে দেখে করিম আর ওর ব্যাগ হাওয়া । কিন্তু তখনো নাইম বুঝতে পারনি ওর সর্বনাশ এর কথা । বুঝতে পারলো যখন হোটেল এর ম্যানেজার ওকে প্রায় গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলো । তখন সব কিছু পানির মতো পরিষ্কার হলো নাইম এর কাছে । করিম ওর সর্বনাশ করেছে, শহরের যে নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে করিম ওকে বলেছিলো , নিজেই সেই নিষ্ঠুরতার সাথে নাইম কে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলো ।
করিম এর বাসার ঠিকানা না জানা থাকায় নাইম প্রতদিন সিনেমা পাড়ার গেইটে বসে করিম এর অপেক্ষা করতে লাগলো । কিন্তু করিমের কোন হদিস নেই , একে তাকে করিমের কথা জিজ্ঞাস করে নাইম , বেশির ভাগ চিনি না বলে কাটিয়ে যায় , বাকি দু একজন যারা চেনে তারা কোন হদিস দিতে পারে না ।
আজো সেই গেইট এর পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে নাইম । পেন্টের পকেটে থাকা ১২০ টাকায় গত তিনদিন কলা রুটি আর প্রতি রাতের জন্য ১০ টাকা খরচ করে কাওরান বাজার একটি আড়ত এ ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছে। আজ সেই টাকা ও শেষ । সকাল থেকে কিছু না খাওয়া । পেটের ভেতর ভুতের নাচন শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে । খিধে একদম সহ্য করতে পারে না নাইম । কোনদিন না খেয়ে থাকতে হয়নি ওকে । বাবা মা গরীব হলেও তিন বেলা ওর খাবার ঠিক ই জোগাড় করে দিয়েছে । কোন দিন খাবার এর চিন্তা করতে হয়নি নাইম কে ।
এই ক্ষুধার্ত অবস্থায় খুব মনে পড়তে লাগলো বাবা মায়ের কথা । চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো অনেক কষ্টেও কান্না থামাতে পারলো না নাইম। কেউ পাছে দেখে ফেলে এই ভয়ে হাঁটুর মাঝে মাথা গুজে মুখ লুকালো ।
কিছুক্ষন পর নাইম একটা নারী কণ্ঠ শুনতে পায় , এই ছেলে এইখানে বইসা কাঁদো ক্যান ? কয়দিন ধইরা দেখতাসি এইখানে বইসা থাকো ? কি হইসে ?
******
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
৩
গত চারদিন যাবত নির্দয় রাজধানীর দয়ামায়াহীন আচরনে এইটুকু দরদ যেন নাইম কে আরও আবেগতারিত করে ফেললো । উত্তর দেয়ার শক্তি হারিয়ে ফেললো নাইম । কারন চোখের জল যেন থামতেই চাচ্ছে না ওর ।
কিরে ডলি কি হইসে, এই পোলা কে ? অন্য একটি নারী জিজ্ঞাস করে । কোন ঝামেলা হইসে ?
নারে গত তিন চাইর দিন ধইরা দেখি এইহানে বইসা থাকে ছেলেটা , আজকে দেখি কান্না করে । কি হইসে জিজ্ঞাস করি কিছু বলে না ।
চল এইখনে দারাইয়া থাকিস না এমনেই আমাগো ঝামেলার শেষ নাই । বারতি ঝামেলার কি দরকার । এই বলে দ্বিতীয় নারী চলে গেলো । কিন্তু ডলি গেলো না । একটু ইসতস্তত করে ওখানেই থেকে গেলো । আসে পাশে তাকিয়ে দেখল দু একজন লোক জমা হতে শুরু করেছে । ডলির খুব মায়া হচ্ছে ছেলেটির জন্য । যেদিন প্রথম দেখছিলো সেদিনি বার বার তাকিয়ে দেখছে ডলি । কচি একটি ছেলে এখনো দাড়ি গোঁফ ও ঠিক মতো ওঠেনি আর চেহারায় রাজ্যের মায়া। ছেলেটিকে দেখে ডলির একজনের কথা মনে পড়ে যায় । ১৭ বছর আগে যাকে বিসর্জন দিতে হয়েছিলো ।
এই ছেলে কি হইল কিছু বল না ক্যান , ডলির কিছুতেই ছেলেটিকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না কিন্তু চারিদিকে যেমন লোক জড় হচ্ছে তাতে সমস্যা হতে পারে । যদিও ডলি বড় নায়িকা না যে ওর নামে পত্রিকায় খবর ছেপে যাবে ।তার উপর ডলি * সহ * পড়া। কিন্তু নানা রকম কথা হবে সিনেমা পারায় এতে কাজ পেতে সমস্যা হবে এমনিতেই ডলির যা বয়স এই বয়সে কাজের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতেই থাকে ।
এই তুমি উঠবা না আমি গেলাম । এই বলে ডলি আর দাড়ায় না হন হন করে হাটা ধরে । অন্য দিনের মতো আর বাসে ওঠেনা , হাটতেই থাকে । যদি ছেলেটি ওর পিছু পিছু আসে এই আশায় । ডলি বোঝে না কেন ছেলেটির জন্য ওর এতো মায়া হচ্ছে । হাটতে হাটতে বার বার পেছন ফিরে তাকাচ্ছে ডলি । কিছুক্ষন পর ডলি বুঝলো ছেলেটি হয়তো আসেনি ওর পিছু পিছু । মনটা খারাপ হয়ে গেলো ডলির ইচ্ছে হলো আবার ফিরে যায় । কার না কার ছলে এমন করে রাস্তায় বসে কাঁদছে ।
কিন্তু ডলি আর ফিরে গেলো না । পরবর্তী বাসস্টপ আসতেই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো । বাসের অবস্থা দখে দম বন্ধ হয়ে এলো ডলির । ভীষণ চাপ প্যাসেঞ্জারর সবাই গাদাগাদি করে উঠছে বাসে , কে মহিলা কে পুরুষ সেদিকে কারো খেয়াল নেই । এমন নয় যে ডলির শরীর পরপুরুষ এর জন্য অস্পৃশ্য, হরদম পরপুরুষ এর হাত পড়ছে ডলির শরীরে , কেউ কাজের অসিলায় দিচ্ছে আবার কেউ কাজ দেয়ার অসিলায় । কিন্তু সিনেমা পাড়া থেকে বেরোলেই ডলি অন্য রকম হয়ে যায় ওর মাঝে একজন বাড়ির বউ এসে ভর করে । এই বাসের ভিরে কোন লম্পট এসে সুযোগ নিয়ে ওর শরীর এর বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেবে সেটা ভাবতেই ডলির শরীর টা কেমন জানি গুলিয়ে ওঠে ।
চাইলে ডলি একটি সিএনজী স্কুটার নিয়ে চলে যেতে পারে । কয় টাকা আর খরচ হবে ? কিন্তু ডলির মনে সায় দেয়না এতগুলি টাকা সুধু নিজের সাচ্ছন্দের জন্য খরচ করতে । একটা বড় নিশ্বাস নিয়ে ডলি বাসের দরজার দিকে এগিয়ে যায় । কেউই খেয়াল করেনা যে ডলি মহিলা না পুরুষ এক বুন্দু ছাড় পায়না ডলি একজন মহিলা হিসেবে । কয়েকজন ঘেমো পুরুষ মানুষ এর ভেতর অনেকটা হারিয়ে যায় ডলি। কারো কনুই এসে গুঁতো দেয় ডলির নরম বুকে আবার কারো হাঁটু এসে সজোরে লাগে ডলির পাছায় । এতে করে একটুও খারাপ লাগেনা ডলির । কারন এই লোক গুলি ওকে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই নিয়েছে একজন মহিলা হিসেবে নয় ।আর আঘাত হানা কনুই, হাত আর পা গুলো ওর শরীর একজন নারীর শরীর হিসেবে ছুঁয়ে যায়নি । বরং একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আঘাত করেছে। খারাপ লাগে তখন যখন কোন লম্পট নারী লোভী নিজের কুচ্ছিত বাসনা পুরন করার জন্য নিজের কুচ্ছিত শরীর দিয়ে ডলি কে স্পর্শ করে । খারপ মনটা একটু ভালো হয়ে যায় । যাক কোন লম্পট এর পাল্লায় পড়তে হয়নি ওকে আজ ।
অনেক কষ্টে বাসে উঠে একটু হাপ ছেড়ে দাড়াতেই জানালা দিয়ে বাইরে চোখ পড়লো ডলির । সেই ছেলেটি , এদিক অদিক তাকিয়ে কি যেন খুঁজছে । অনেক লম্বা হওয়ার কারনে ওকে দেখতে ডলির তেমন সমস্যা হয়নি । ততোক্ষণে বাস ছেড়ে দিয়েছে । লোকজনের চাপে ডলি প্রায় বাসের মাঝা মাঝি চলে এসেছিলো । এখন এই ভীর ঠেলে দরজা পর্যন্ত যাওয়া ও একটা দুঃস্বপ্নের চেয়ে কম কিছু না । কিন্তু ডলি নিজের মাঝে একটা প্রচণ্ড তাগিদ বোধ করতে লাগলো । তাই ও ভুলে গেলো ওর আসে পাশে সব পুরুষ মানুষ আর ও একটা মহিলা । ঠেলে ঠুলে চলে এলো দারজার সামনে ।
এই ছেলে কি খোঁজো ? ছেলেটার পিছনে দাঁড়িয়ে আচমকা জিজ্ঞাস করে ডলি ।
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 383
Threads: 0
Likes Received: 149 in 143 posts
Likes Given: 221
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
Posts: 242
Threads: 0
Likes Received: 100 in 71 posts
Likes Given: 2,008
Joined: Oct 2023
Reputation:
1
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
ধন্যবাদে শরিফা আলিশা , এবং saj890 আপনাদের কমেন্ট এর জন্য
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
10-08-2025, 02:23 PM
(This post was last modified: 10-08-2025, 02:24 PM by gungchill. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
৪
হঠাত করে পেছন থেকে ডাক শুনে একটু চমকে ওঠে নাইম । তার পর ঘুরে সেই * পড়া মুখটি দেখে স্বস্তির একটা ছাপ পড়ে নাইম এর চেহারায় । মহিলাটিকে চিনতে ওর কোন অসুবিধা হয় না , গলার স্বর শুনেই চিনে ফেলে নাইম । দারুন সুন্দর কণ্ঠ মহিলার , একদম নাইয়কা সোনালীর মতো কণ্ঠ । কিন্তু কি বলবে ভেবে পায় না । সিনেমা পাড়ার সামনে মহিলাটির ওর প্রতি আগ্রহ দেখে মনে করেছিলো মহিলাটি ওর জন্য কিছু করবে। তাই মহিলাটি চলে যেতেই কিছুক্ষন পর নাইম মহিলাটিকে খুজতে খুজতে এই বাসস্টান্ড এ চলে আসে । কিন্তু এতো ভিরে * আর * পড়া কাউকে খুজে পাওয়া আর সাগরে হারিয়ে যাওয়া সুঁই খোঁজা যে সমান সেটা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না নাইম এর । তাই হতাশ হয়ে এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছিল আর নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছিল । কিন্তু মহিলাটি নিজেই ওকে খুজে বার করেছে দেখে প্রচণ্ড আনন্দিত বোধ করছে নাইম । কিন্তু কি বলবে ও এই মহিলাটিকে , একজন অপরিচিত মানুষ এর কাছে কি বা চাওয়া যায় ।
নাইম এর কিছু বলতে হলো না , মহিলাটি নিজেই থেকেই বলল তোমার মনেহয় কিছু খাওয়া হয়নাই ?
নাইম কোন উত্তর দিলো না সুধু হাসল , সেই দুর্বল হাঁসি ই ওর হয়ে উত্তর দিয়ে দিলো ।
চলো তোমারে কিছু খাওয়াই , তারপর শুনবো তুমি কাঁদো ক্যান ? এতো বড় ছেলে রাস্তায় বসে বসে কাঁদে । এই বলে ডলি হাসে
হাসিটা নাইমের পরিচিত লাগে , কিন্তু ঠিক কার হাসি নাইম বুঝতে পারে না।এই নিয়ে দ্বিতীয় কেউ নাইম কে এই ঢাকা শহরে খেতে নিয়ে যাচ্ছে । প্রথম জন ওর পূর্ব পরিচিত যে ওকে নিঃস্ব করে ফেলেছে । আর দ্বিতীয়জন একজন অপরিচিত মহিলা যার চেহারাও নাইম ঠিক মতো দেখেনাই । কিন্তু এখন আর নাইম এর খোয়ানোর কিছু নেই । তাই নাইম আর দ্বিধা করলো না মহিলার পেছন পেছন চলতে লাগলো । খাবারের কথা শুনেই ওর পেট ডাকতে শুরু করে দিয়েছে ।
নিজের জন্য চা আর ছেলেটির জন্য রুটি গোস্ত অর্ডার করলো ডলি । যদিও ডলির ইচ্ছা ছিলো তেহারি নেয়ার কারন ছেলেটাকে দেখে মনে হচ্ছে খাবার গন্ধ পেয়ে ওর খিধে আরও চাগিয়ে উঠেছে আর সহ্য করতে করতে পারছে না । কিন্তু ইচ্ছে করেই ডলি তেহারি অর্ডার করেনি সারাদিন কিছু খায়নি এখন বেশি তেলে খাবার খেলে গ্যাস হবে । ছেলেটির ক্ষুধার্ত মুখ দখে ডলির মনটা আরও নরম হয়ে গেলো । একটু কাছে ঘেঁসে বসলো ডলি । বিশ্রী ঘামের গন্ধ আসছে ছেলেটির শরীর থেকে মনে হয় গোসলও করে না কয়দিন । নিজের আচরণে ডলি বেশ অবাক হচ্ছে , এই শহরে এরকম হাজার হাজার মানুষ আছে যারা দিনাদিন না খেয়ে ময়লায় মাখামাখি হয়ে থাকে । কিন্তু তাদের প্রতি ডলি সাধারন সহানুভূতি ছাড়া আর কিছুই ফিল করে না । তাহলে ইএ ছেলেটির জন্য কেনো হচ্ছে?
কি নাম তোমার ? ডলি ছেলেটিকে খাবার এর চিন্তা থেকে দূরে রাখার জন্য প্রশ্ন করলো
এদিকে রেস্টুরেন্ট এ ঢুকেই খাবারের গন্ধে বার বার মুখের ভেতরটা পানিতে ভরে আসতে লাগলো নাইম এর । যখন মহিলাটি তৈরি থাকা তেহারি অর্ডার না করে রুটি অর্ডার করলো মনে মনে একটু বিরক্ত হলো ও । কিন্তু একজন অচেনা মহিলা ওকে যেচে পড়ে খাওয়াচ্ছে তার উপর ও কিভাবে বলে আমি রুটি নয় তেহারি খাবো । তাই অনেকটা বিমর্ষ মনে রুটির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো নাইম । বার বার পেট মোচড় দিচ্ছে । হঠাত করে সেই * পরিহিত মহিলা ওর আরও কাছে ঘেঁসে এলো । একেবারে শরীর এর সাথে লেগে বসলো । আচমকা ওই মহিলার এমন আচরনে একটু কুঁকড়ে গেলো নাইম । * পরিহিত মহিলা একদম ওর শরীর এর সাথে ঘেঁসে নাইম এর নাম জানতে চাইলো ।
বিব্রত নাইম যতটা সম্ভব দূরে সরে পরার চেষ্টা করলো কিন্তু ওর দিকে আর জায়গা ছিলো না । ওর ঠিক পড়েই ছিলো দেয়াল । হঠাত করে নাইম এর মনে হলো এই মহিলা আবার অন্য ধরনের ঠগবাজ নয় তো । না হলে অপরিচিত একটা ছেলের সাথে যেচে এসে খাতির করছে কেন । যেখানে ঢাকার শহরে নিজের আপন লোক ই ফিরে তাকায় না । এই মহিলা হয়তো ওই দলের যারা কাছে এসে শরীর এর লোভ দেখিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেবে । এদের কথা গ্রামে খুব শুনেছে নাইম । কিন্তু ওর কাছে আছেই বা কি আর এ নেবেই বা কি ? এই চিন্তা করে একটু শান্ত হলো ।
আমার নাম নাইম ।
আবেগ তাড়িত হয়ে ছেলেটির কাছে ঘেঁসে বসা যে ভুল ছিলো সেটা ডলি ছেলেটির প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পারে । চেনে না জানে না একটা মহিলা হঠাত করে এতো ঘনিষ্ঠ হতে চাচ্ছে ব্যাপারটা একটু অন্যরকম ই বটে । তাই ডলি আবার দূরত্ব ঠিক করে বসলো । তারপর বলল
বাহ তোমার নামটা তো সুন্দর , সত্যি করে বলো তো তুমি গেইটে বইসা কান্না করতাসিলা কেন?
নাইম একটু চুপসে যায় । ও চিন্তা করে পায়না অপরিচিত একজন এর কাছে নিজের কথা বলা ঠিক হবে কিনা । কিন্তু পরক্ষনেই ভাবে কি হবে আর বললে । অন্তত এই মহিলা তো ওকে আদর করে খেতে দিয়েছে ।
আমি গেরাম থেইকা আসছি আমার এক গেরাম সম্পর্কের চাচা করিম এর কাছে । চাচা বলছিলো ওনার নাকি সিনেমা পাড়ায় অনেক নাম ডাক । আমি ওনার কাছে নায়ক হওয়ার লইগা আসছিলাম । এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ফেলে নাইম এর মাঝে রুটি গোস্ত চলে আসলে নাইম এর আর কথার দিকে মনোযোগ থাকে না । ও গোগ্রাসে খাওয়া শুরু করে ।
না চাইতেও ডলির হাসি চলে এলো , যে সে হাসি নয় একেবারে শব্দ করে খিলখিল হাসি । আসে পাসে বসা বাকি লোকজন অবাক আর বিরক্তি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে ডলির দিকে। আগা গোরা *ে ঢাকা এক মহিলা এমন করে হাসছে , দৃশ্যটা দৃষ্টি কটুই লাগার কথা । অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামালো ডলি । নাইম এর খাওয়া দেখে ডলির খুব মায়া হয় সাথে সাথে এক ধরনের তৃপ্তি ও অনুভব করে অভুক্ত ছেলেটিকে খাওয়াতে পেরে । নাইম এর খাওয়ায় আর ডিস্টার্ব না করে নিজের চায়ে চুমুক দেয় ডলি । খাওয়া দাওয়া শেষে ডলি নাইম কে জিজ্ঞাস করে
তোমার মনেহয় ঢাকা শহরে যাওয়ার কোন জায়গা নাই তুমি কি আমার সাথে জাইবা ? যদিও একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে , অচেনা একটি ছেলে কে নিজের এক রুমের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওঠানো মানুষ কি চোখে দেখবে সেটা ডলি ভালো করে ই জানে । কিন্তু এটুকু বাড়াবাড়ি করতে ডলির ইচ্ছে হচ্ছে খুব ।
আপনের কোন সমস্যা হইবনা আমারে নিয়ে গেলে ? আহত মনে প্রশ্ন করে নাইম , কারন মহিলার প্রস্তাবটি ওর কাছে এই মুহূর্তে সাগরে ভাসতে থাকা ওই মানুষটির মতো যে এই মাত্র একটি কাঠের তক্তা খুজে পেয়েছে । কিন্তু ও জানে ওকে বাড়ি নিয়ে গেলে এই মহিলাকে নানা প্রশ্নের সমুখিন হতে হবে আর নিজের সাহায্যকারী কে কোন সমস্যায় ফেলতে চায়না নাইম ।
আমার কি সমস্যা ! তুমি ভয় পাইবা নাকি সেইটা বলো । ডলি হেঁসে উত্তর দেয় , এই হাঁসি হয়ত ছেলেটিকে একটু নর্মাল হতে সাহায্য করবে।
আমি ক্যান ভয় পামু , আমার ভয় পাওয়ার কি আসে । যার কিছু থাকে ভয় সে পায় । নাইম মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলে , কারন মহিলার এমন সদয় আচরনে ওর চোখে পানি চলে এসেছে ।
কথা তো ভালো সিখসো , তোমার যেমন কিছু নাই আমারো কিছু নাই , তাই আমারো কোন সমস্যা নাই তোমারে নিয়া গেলে । ওই একটা সি এন জী যায় । চলো উইঠা পরি , তোমার শরিলে যে গন্ধ উঠতে দিবে কিনা কে জানে?
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
৫
অনেক গুলো টাকা খরচ হয়ে গেলো ডলির যদিও । কিন্তু ডলির তেমন মন খারপ হলো না মনে হল ওর জমানো টাকা এতদিনে কোন কাজে এসেছে । টাকা গুলি খরচ করতেও ওর মন তৃপ্ত হয়েছে ।
এইজে আমার ঘর । লম্বা লম্বি অনেকগুলা টিনশেড ঘর এর একটির তালা বদ্ধ দরজা দেখিয়ে বলল ডলি । তারপর তালা খুলে ঘোরের ভেতরের লাইট জালালো ও । কমদামি সব ফার্নিচার দিয়ে সাজানো ঘরটা কিন্তু বেশ ছিমছাম । ঘরের একপাশে একটা কাঠের খাট তার উপর ফুলতোলা চাদর । একটা বেতের সেলফ একটা আলনা । একটা খাবার রাখার সেলফ আর কিছু পাতিল ।
আপনার বাড়ির অন্য লোকজন কই ? প্রশ্ন করলো নাইম
ঘরে ঢুকে মুখের * খুলে হাসতে হাসতে ডলি বলল আর লোকজন কই পাবো ? আমি একলাই থাকি ।
মুখের * খুলে ফেলতেই নাইম চিনে ফেললো মহিলাকে । বাংলা সিনেমায় প্রচুর কাজকরা সাইড অভিনেত্রী । দশবারটা ছবিতে দ্বিতীয় নাইকার কাজ ও করেছে এক সময় । এখন ছোটখাটো এক দুই মিনিট এর রোল করে যেসব রোল শেষ পর্যন্ত রেপ হয় । এছারাও ভিলেন দের বান্ধবির রোল ও করে যারা ছোট ছোট কাপড় পড়ে ভিলেনদের আসে পাশে থাকে সব সময় ।
ও আল্লা আপনে ডলি ম্যাডাম না ?
চিন্না ফেলসো তাহলে ?
ওমা চিনুম না ক্যান , আপনে কি একটা দুইটা ছবি করসেন কত ছবিতে আপনেরে দেখি । নাইম এর গলায় কাপন , উত্তেজনার কাপন , নায়ক বা নাইকা না হোক অন্তত সিনেমায় কাজ করে এমন একজন এর সাথে তো দেখা হয়েছে ওর । গত চার দিনের দুঃখ আর টাকা হারানোর শোক যেন বুহুদিন আগে শুকিয়ে জাওয়া ক্ষতর মতো মনে হচ্ছে নাইম এর কাছে এখন ।
হু অগুলারে কি অভিনয় বলে , ক্যারেক্টারের নাম ও থাকে না বেশিরভাগ সময় , আর সব তো অই দুই তিন মিনিট এর রোল । একটু লজ্জা পেয়ে বলে ডলি । অবশ্য লজ্জা পাওয়ার কারন আছে , আজকাল যে সব রোল ডলি পায় , সেগুলির বেশিরভাগ হয় রেপ হওয়ার সিন , নয়ত ছোট পোশাক পরা ভিনেলের প্রেমিকা হওয়ার রোল । যাদের কাজ হচ্ছে ছোট ছোট পোশাক পরে ভিলেনের কোলে বসে থাকা । আর ভিলেন কে মদ ঢেলে দেয়া ।
তুমি এইখানে বসো আমি গিয়া দেইখা আসি বাথ রুম খালি নাকি , তোমার এখন সাবান দিয়া ভালো মতন গোসল দিতে হইবো ।
ডলির কথায় নিজের কাপড়ের দিকে নজর যায় নাইমের , আসলেই ভুসভুস করে ঘামের গন্ধ বের হচ্ছে । এবার লজ্জা পাওয়ার পালা নাইমের , লজ্জায় ওর ফর্সা চেহারা লালচে হয়ে যায় ।
ডলি এই ব্যাপারটা লক্ষ করে , কেমন লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে ছেলেটি । বুকটা কেমন হু হু করে ওঠে ওর । ১৭ বছর আগের নিজের জীবনের সেই কালো অধ্যায় মনে পরে যায় । ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে সেদিন নিজের কলিজার টুকরা কে বিসর্জন দিতে হয়েছিলো। কি সুন্দর হয়েছিলো দেখতে টুকটুকে ফর্সা , আজ হয়ত এই ছেলেটির সমান ই হতো । একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় ডলি ।
****
অনেক বেলা করে ঘুম ভাঙ্গে নাইমের , দেয়ালে টানানো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় সোয়া দশটা বাজে । আড়মোড়া ভেঙ্গে বিছানা থেকে নামে নাইম । ঘর খালি , ডলি কে কোথাও দেখতে পেলো না ও । ধিরে ধিরে বিছানা থেকে নামলো নাইম । গত রাতে ঘড়টি ভালভাবে দেখা হয়নি উত্তেজনার কারনে । সিনেমায় কাজ করে এমন কারো সাথে পরিচয় হওয়া তার বাসায় আসা , এর চেয়ে উত্তেজনাকর বিষয় আর কি হতে পারে নাইমের মতো সিনেমা পাগল ছেলের জন্য ।
নাইম ঘরের চারদিকে একবার তাকালো । ছিমছাম গছানো ঘর , আসবাব একেবারে নেই বললেই চলে , একটি সিঙ্গেল খাট যা গত রাতে নাইম দখল করেছে । শত অনুরধ ও কাজে আসেনি ডলি কিছুতেই নাইম কে নিচে শুতে দেয়নি , বরং নিজেই কাথা বিছিয়ে নিচে শুয়েছে । একপাশে একটি আলমারি তাতে গোটা কয়েক সাড়ি পেটিকোট ,আর কিছু সালোয়ার কামিজ । একটি ট্রাংক একটি সেলফ যার নিচের দুই তাক দখল করে আছে হাড়ি পাতিল , আর উপরের তাক প্রসাধনি আর একটি ছোটো আয়না । সব মিলিয়ে এই হচ্ছে ঘরের আসবাব , নাইম এতো অনাড়ম্বর জীবন জাপন দেখে অবাক হলো । সিনেমায় কাজ করা মানুষদের জীবন সম্পর্কে অন্য রকম ধারনা ছিলো নাইম এর । কিন্তু এই ডলি কে দেখে ওর ধারনা এক রাতেই অনেকটা পাল্টে গেছে । নাইম আবার ঘরময় চোখ বুলালো , এবার ট্রাংক এর উপর রাখা দুটো প্লেট ওর নজর কারলো একটি প্লেট দিয়ে অন্যটি ঢাকা , ক্ষুধা জানান দিলো নাইম এর পেট । বিছানা থেকে উঠে উপরের প্লেট তুলতেই দেখা গেলো একটি পলিথিনে কিছু ভাজি আর পত্রিকায় মোড়ানো কিছু একটা , নিশ্চয়ই পোরটা হবে । দ্রুত কল পার চলে গেলো নাইম চোখে মুখে পানি দিতে ।
এই পোলা তুমি ডলির কি হও । কল পারে বসা এক মহিলা জিজ্ঞাস করলো নাইম কে । কি উত্তর দেবে ভেবে পেলো না নাইম , কি বলবে ? বলার মতো কেউ তো না ও , আত্মীয় লাগি , কোনোরকমে বলল নাইম । তবে মহিলার মুখ টিপে হাসা দেখে নাইম বুঝতে পারল উত্তরটা মনপুত হয়নি ঐ মহিলার । মনটা খারাপ হয়ে গেলো নাইম এর , নাইম চায় না ওর জন্য ডলির কোন সমস্যা হোক । এই আপনহীন শহরে এই মহিলা ওকে আদর করে নিজের কাছে আস্রয় দিয়েছে । এখন ওর জন্য যদি মহিলার বদনাম হয় সেটা নাইম মেনে নিতে পারবে না ।
পত্রিকার কাগজে মুড়ে রাখা পরটা দুটো আর পলিথিনে রাখা ভাজি কিছুই নাইম এর মুখে ভালো লাগলো না । একটা তেত স্বাদে ভরে গেছে মুখটা । এই আস্রয় ছেড়ে ওকে চলে যেতে হবে , সেটা বুঝতে পারার পর থেকে মনটা কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না । সিদ্ধান্ত নিলো ঘর থেকে বের হবে না । একটা সিনেমার ম্যাগাজিন নিয়ে পড়তে লাগলো শুয়ে শুয়ে ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
৬
সকাল বেলায় ছেলেটাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে একদম ইচ্ছে হয়নি ডলির , কেমন শান্তিতে ঘুমাচ্ছিলো ছেলেটা । মুখটা একটু হাঁ করা ছিলো , খুব মায়া হয়েছিলো ডলির । তাই ট্রাঙ্কের উপর নাস্তা ঢেকে রেখে চলে এসেছে । বাসে উঠেই মনে হয়েছে কি ভুল করে ফেলেছে , পরটা দুটো নিশ্চয়ই ঠাণ্ডা হয়ে যাবে । দকানের পরটা গরম অবস্থায়ই যা একটু খাওয়া যায় , ঠাণ্ডা হয়ে গেলে একদম অখাদ্য । কিন্তু কিছু করার ছিলো না ডলির , সকাল নয়টার মাঝে থাকতে হবে ডলি কে সিনেমা পাড়ায় । একটা কাজ এসেছে লিয়াকত ভাই খবর দিয়েছে । বেশ বড় রোল , সিনেমার কমেডিয়ান এর বউয়ের রোল । সব মিলিয়ে প্রায় ১৫-২০ মিনিট দেখানো হবে রোলটি । বেশ কিছু ডায়লগ ও আছে , নায়ক এর সাথেও কিছু সিন আছে । দেরি করে গেলে হয়ত অন্য কেউ পেয়ে যাবে রোলটা । এই মন্দার বাজারে এমন একটা রোল হাত ছাড়া হওয়া চাট্টি খানি কথা না ।
অফিসে ঢুকতেই মনটা বিমর্ষ হয়ে গেলো ডলির , ১০-১২ জন বসে আছে এই রোলের জন্য । এর মাঝে একজন আবার ডলির পরিচিত সেফালি । ডলি ওকে সেফালি বুবু বলে ডাকে । ডলি জানে এই কাজটা সেফালির অনেক দরকার , ওর ছেলে ভর্তি আছে হাসপাতালে । টাকা খরচ হচ্ছে দেদারসে , শিল্পী সমতি থেকে যা পাওয়া গেছে তা প্রয়জনের তুলনায় খুবি সামান্য । দিন রাত খাটে সেফালি , কিন্তু সেই পরিমান কাজ তো থাকতে হবে ? কাজ কই ।
কি গো সেফালি বু রতনের খবর কি ? সেফালির পাশে বসে জিজ্ঞাস করে ডলি ।
ঐ এক রকম আছে , টেকা নাই তো চিকিৎসা নাই , এতো টেকা পামু কই ? করুন স্বরে বলে সেফালি । তারপর আবার জিজ্ঞাস করে তুই ও এই কাজের জন্য আইসস ?
হ্যা বলতে একটু লজ্জা লাগে ডলির । তাই উত্তর একটু ঘুরিয়ে দেয় , তুমি ই পাইবা কাজ টা দেইখো । তারপর মুখ সেফালির কানের কাছে নিয়ে ফিস্ফিস করে বলে , তুমি নাকি “পালা শয়তান” ছবিতে কাম নিসো ।
হু নিসি, বড় একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে উত্তর দেয় সেফালি । ডলি আর কিছু বলে না , কি বলবে সুধু এতুকু জানে সেফালি যে কাজ নিয়েছে সেই কাজে একবার যে নামে সারাজিবন তাকে ঐ ধরনের কাজ ই করতে হয় । মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় ডলির , ইচ্ছে হয় ইন্টার্ভিউ না দিয়ে বেড়িয়ে যায়। কিন্তু সেটা সম্ভব না , নাম খারাপ হবে কেউ আর ডাকবে না । কিছুক্ষন পর ডাক পরে ডলির । সেফালির হাতে আলতো একটা চাপ দিয়ে উঠে পরে ডলি ।
আমাকে চিনতে পারসেন ? কাস্টিং ঘরে ঢুকতেই জিজ্ঞাস করে কাস্টিং ম্যানেজার । একটু থতমত খেয়ে যায় ডলি । আজকাল আর কেউ আপনি করে সম্বোধন করে না , তুমি করেই বলে সবাই । ডলি ভালো করে কাস্টিং ম্যানেজারের দিকে তাকালো , মাথায় টাক বেশ বড়সড় ভুরি আর পান খাওয়া ঠোট । একটা মাঝারি গোঁফ নাকের নিচে । ডলি ঠিক চিনতে পারলো না
জিনা আপনারে ঠিক চিনতে পারলাম না । ডলি নিচু স্বরে জবাব দিলো ।
না চিনার ই কথা , সময় তো কম হয় নাই । ১৮-১৯ বছর হইবো , আপনার প্রথম ছবিতে আমি প্রডাকশন বয় আসিলাম ।
নিচের ঠোট কামড়ে ধরলো ডলি , লজ্জায় একেবারে মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর । লজ্জা হচ্ছে আজকে নিজের অবস্থানের জন্য । প্রথম ছবিতে ডলি ছিলো সেকেন্ড লিড , আর এই কাস্টিং ম্যানেজার ছিলো প্রডাকশন বয় । আজ ডলি এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে সেফালি না থাকলে হয়ত এই রোলের জন্য এই কাস্টিং ম্যানেজারের বিছানা পর্যন্ত যেতে রাজি হতো ও ।
মাঝে সুবির দার লগে কলকাতা গেসিলাম গা , ঐখানে কাজ করসি , উনি ই আমারে হাতে ধইরা আজকার যায়গায় নিয়া আসছে । প্রডাকশন বয় থাইকা কাস্টিং ম্যানেজার হইসি । এই বলে লোকটা একটু থামল , তারপর আবার বলতে শুরু করলো । আপনের হিস্টোরি আমি শুনছি। এই বলে জিভ দিয়ে চুক চুক করে একটা শব্দ করলো কাস্টিং ম্যানেজার তারপর বলল, বড় দুঃখের কাহিনী । আপনের এখন কই থাকনের কথা আর কই আসেন ।
চোরা চোখে একবার কাস্টিং ম্যানেজারের দিকে তাকালো ডলি , লোকটার দৃষ্টি ওর শরীরের একটি বিশেষ অংশে দেখতে পেয়ে লজ্জা আরও দিগুন বেড়ে গেলো ওর , সাথে সাথে মাথা আবার নিচু করে ফেলল ।
আপনে যখন সিনেমায় আইলেন তখন পুরা সিনেমা পাড়ায় আপনের কথাই হইত। আপনের মতন ফিগার আর সুন্দরী ঐ সময় কেউ আসিলো না । সবাই কইত আপনে অনেকদিন এক নাম্বার হিরোইন হিসাবে থাকবেন । সত্যি কথা কইলে আমি তো আপনের প্রেমে পইড়া গেসিলাম হো হো হো
লোকটার এমন ভুরি নাচিয়ে বিশ্রী করে হাঁসা ডলির শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে । এমন কেন হচ্ছে ডলি ঠিক বুঝতে পারছে না এর চেয়ে অনেক খারাপ কাস্টিং ফেস করেছে ডলি । অনেক কাস্টিং ম্যানেজার তো সরাসরি শরীরে হাত দেয় কাস্টিং এর সময় । সেই তুলনায় এই লোক তো ফেরেস্তা ।
খালি আমি ক্যান , এই সিনেমা পাড়ায় এমুন কোন জোয়ান পোলা আসিলো না যে আপনের প্রেমে পরে নাই । বুড়া গো কথা বাদ দিলাম , এই বলে আবার এক প্রস্ত ভুরি নাচানো হাঁসি হাসল লোকটা । তারপর আবার বলল , আলতাফের কাছে আপনের ছবি দেইখা আমি তখনি ঠিক কইরা ফেলসি আপনেরে আমি এই রোলে নিমু , এই ইন্টারভিউ খালি লোক দেখানো , বুঝতেই তো পারেন সব কিছুর একটা নিয়ম আছে । কত নিবেন ? তিরিশ হাজার চলবো , যদিও আমারে পঁচিশ এর বাজেট দিসিলো , কিন্তু কি করি কন পুরানা প্রেম বইলা কথা । এই বলে আবার সেই বিটকেলে হাঁসি ।
কাজটা আমি করবো না , এই বলে উঠে দাঁড়ালো ডলি । কাস্টিং ম্যানেজারের হাঁসি থেমে গেছে , লালচে গোল গোল চোখ জোড়া আর গোল হয়ে গেছে । ভীষণ অবাক হয়েছে লোকটা আর লোকটাকে মুখের উপর না করতে পেরে দারুন একটা ভালো লাগা অনুভব করছে ডলি নিজের মাঝে ।
ডলি জানে এই সিদ্ধান্ত ডলি কে ভোগাবে বেশ , কিন্তু ডলি কিছুতেই এই কাজ করবে না । এর প্রধান করন হচ্ছে লোকটা ডলি কে বিছানায় নিয়ে যাবে । বিছানায় যেতে ডলির সমস্যা নেই , এর আগে অনেকবার গিয়েছে , কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই লোক নিজের পুরনো ফ্যান্টাসি পুরন করবে ডলিকে নিয়ে , আর ওখানেই ডলির আপত্তি , নিজের পুরনো ক্ষতে ডলি কিছুতেই এই লোক কে লবন লাগাতে দেবে না ।
কাস্টিং অফিসের বাইরে এসে আলতাফের সাথে একচোট হলো ডলির , আর কোনদিন ডলিকে ডাকবে না বলে শাসিয়ে দিলো আলতাফ । সব কিছুই ডলি মাথা নিচু করে শুনে গেলো । আলতাফের সাথে কোন ঝগড়ায় জড়াতে চায় না ডলি । এই এক লোক যে সিনেমা পাড়ায় অদ্বিতীয় , নিজের পাঁচ পারসেন্ট ছাড়া বাড়তি কিছুই চায় না কখনো ।
ডলিদের মত থার্ড গ্রেড অভিনেত্রী না অনেক নতুন উদীয়মান কাম বয়সী মেয়েরাও আলতাফের সাথে বিছানায় যেতে রাজি । কিন্তু আলতাফ এসবে নেই । ৫% কমিশন দাও , কাজ নাও এই নীতিতে বিশ্বাসী সে । আলতাফের রাগ যখন একটু কমে আসলো তখন ডলি শেফালীর কথা তুলল । কিন্তু আলতাফ কিছুই করতে পারবে না বলে দিলো । বলল সেফালি যে লাইনে গেছে তারপর আর এমন রোলে ওর কাস্টিং হবে না ।
দিনের অর্ধেকটা সময় ডলি সিনেমা পাড়ায় ঘুরঘুর করলো । তারপর বাড়ির পথ ধরলো । আজকে কোন কাজ ছিলো না । তবে একটা গানের শুটিঙে নাইকার সখি হওয়ার কাজের ডাক পেয়েছিলো । কিন্তু ডলি যায়নি , মন ভালো ছিলো না । গেলে ৫০০ টাকা আর লাঞ্চ পাওয়া যেত ।
ঘরের দরজা খোলাই ছিলো , নাইম নামের ছেলেটা একটা ম্যাগাজিন খুলে দেখছে বিছানায় বসে । কি নায়ক সাহেব , কি করেন ? হাসিমুখে জিজ্ঞাস করে ডলি । ছেলেটাকে দেখে সারাদিনের মন খারাপ কিছুটা কমে । আসার সময় দুই প্যাকেট তেহারি কিনে এনেছে ডলি । গতকাল ছেলেটাকে তেহারি খাওয়াতে পারেনি বলে আজ মনে হলো নিয়ে যাই ।
খেতে খেতে ডলি ভাবে এই অপরিচিত ছেলেটার জন্য এতো মায়া হচ্ছে কেনো ওর । এমন মায়া হওয়া তো ভালো না । এমন মায়া শেষ পর্যন্ত দুঃখ ডেকে আনে ।
শুনো ছেলে কাল থাইকা আমার সাথে সিনেমা পাড়ায় যাইবা বুঝছো । নায়ক হইতে চাও যেহেতু ঘরে বইসা ম্যাগাজিন দেখলে হইবো না ।
মাথা কাত করে সায় দেয় নায়িম । ডলির দিকে সয়ারাসরি তাকাতে লজ্জা হচ্ছে । আজ ডলি ঘরে না থাকার সময় এমন এক কাণ্ড করেছে যে এখন লজ্জায় ডলির দিকে তাকাতে পারছে না । মন বলছে যে মহিলা এমন আদর করে ঘরে তুলল তার সাথে এমন বেয়াদবি করা ঠিক হয়নি । কিন্তু কাজটা আজ নতুন নয় , নাইম আগেও এ কাজ করেছে । তখন এমন গিল্টি ফিল হয়নি । তবে ডলিকে সামনা সামনি দেখে ,আর ওর প্রতি ডলির দরদ দেখে গিল্টি ফিল হচ্ছে । মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় নায়িম এমন কাজ আর করবে না , অতিতে যা করার করেছে।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 383
Threads: 0
Likes Received: 149 in 143 posts
Likes Given: 221
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
•
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
৭
প্রায় সপ্তা খানেক হলো , নাইম সিনেমা পাড়া আসছে । কত পরিচিত মুখ দেখছে , উত্তেজনায় এক সপ্তা কোন দিক থেকে গিয়েছে নিজেও বলতে পারবে না । নায়ক দিলবার খানের শুটিং দেখছে , নাইকা জেরিনের নাচ দেখছে । তবে একটা জিনিস নাইমের মন খারাপ করে দিয়েছে , নায়ক দিলবার খানের চুল নেই, মাথায় টাক , পরচুলা পরে অভিনয় করে । দেখতেও ভালো না বেশ বয়স্ক লাগে , অথচ সিনেমার পর্দায় কেমন সুদর্শন লাগে ।
আজো বসে আছে নাইম ডলির সাথে । একটু পরে ডলির একটা কাজে যেতে হবে । তাই ডলি নাইম কে বুঝিয়ে দিচ্ছে যেন এদিক সেদিক বেশি ঘোরাঘুরি না করে । শোনো ছেলে , এদিক সেদিক বেশি জাইও না । সিনেমায় সবারে ভালো মানুষ দেখাইলেও বাস্তবে সবাই অমন না বুঝছো?
এতদিন হয়ে গেলো তবুও ডলি নাইম কে ছেলে অথবা নায়ক বলেই ডাকে , ডাকার দরকার হলে , “এই ছেলে” “নায়ক সাহেব” এইসব বলে সম্বোধন করে । ব্যাপারটা নাইমের ভালোই লাগে , এই রসকষ হীন ডাকেও যে স্নেহ টুইটূম্বুর সেটা আত্মীয় পরিজনহিন নাইমের বুঝতে অসুবিধা হয় না ।
ঘাড় নাড়িয়ে নাইম বলে দেয় সে বুঝতে পেরেছে । কিন্তু ডলি চোখের আড়াল হতেই এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি শুরু করে দেয় । একে ওকে জিজ্ঞাস করে জেরিনের শুটিং কোথায় চলছে । জেরিন হচ্ছে ওর বর্তমানের সপ্নের নাইকা । নাইম সপ্ন দেখে একদিন জেরিনের সাথে অভিনয় করবে , দুজনে মিলে রোম্যান্টিক গান করবে । চুমুর সিন করবে , বাঁশর ঘরের সিন করবে । ভাবতে ভাবতেই নাইমের কান লাল হয়ে ওঠে ।
হিট নাইকা জেরিনের কথা ভাবতে ভাবতে এদিক ওদিক আনমনে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত করেই একজনের সাথে ধাক্কা লাগে ওর । হ্যাংলা পাতলা নাইম পরেই যাচ্ছিলো প্রায় । কোন রকমে নিজেকে সামলে নেয় ও , তারপর ই কথা গুলো এসে ওকে ধাক্কা দেয় । যা শারীরিক ধাক্কার চেও প্রবল , এই শূয়রের বাচ্চা দেখে চলতে পারিস না ।
নায়িম গালি দেয়া লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখে , লোকটাকে ও চিনতে পারে । মাঝে মাঝে সাইড ভিলেনের কাজ করে । তেমন বড় কেউ না , নায়কের হাতে মার খাওয়াই এদের কাজ । নাইমের খুব রাগ হয় , বলে … গালি দেন ক্যান?
এক থাপ্পরে দাত ফালায়া দিবো খানকির পুত , কথা বলেই সুধু খান্ত হয় না একটা থাপ্পর বসিয়েও দেয় , নাইমের ফর্সা গালে আঙ্গুলের ছাপ গুলো স্পট ফুটে ওঠে । এরি মাঝে আশেপাশের লোকজন জর হতে শুরু করে । একেক জন এসে সাইড ভিলেন নাসির কে জিজ্ঞাস করেত থাকে কি হইসে নাসির ভাই , এইটা কে?
লজ্জায় নায়িমের চোখে পানি চলে আসে , ইচ্ছে হয় দৌরে পালিয়ে যেতে । থাপ্পর টা ওর শরীরে যতটা না আঘাত করেছে তারচেয়ে বেশি অহংবোধে । নিজে একদিন এই সিনেমা পাড়ার সেরা নায়ক হবে । তখন নিশ্চয়ই এই কথাটা সবাই মনে রাখবে । সবাই চুপি চুপি বলবে ওই দেখো নায়ক নায়িম যায় , একদিন এক জুনিওর আর্টিস্টের কাছে থাপ্পর খেয়েছিলো । আর ঐ নাসির লোকটাও কি কম বলবে এই কথা , যার তার কাছে বলে বেড়াবে ।
লজ্জায় অপমানে নায়িমের চোখে পানি চলে আসে , অনেক কষ্টে কান্না থামায় নায়িম । কান্নার বেগে ঠোঁট দুটো ফুলে ফুলে ওঠে ।
কি জানি কই থাইকা যে এই আবাল ছাবাল আহে , আমারে ধাক্কা দিলো, আরবার তেজ ও দেখায় , নিজেরে নায়ক ভাবে । নায়িম ওর ব্যাপারে নাসির কে বলতে শুনল । আশপাশ থেকে কয়েক জন নাসিরের কথায় মৃদু শ্বায় দিলো , বাকিরা হেসে উঠলো । লজ্জায় আরও লাল হয়ে উঠলো নায়িম , ও বুঝতে পারছে ওর এখন উচিৎ এখান থেকে চলে যাওয়া , কিন্তু নড়তে পারছে না একদম । ঢাকা শহর এসে অনেক রং দেখছে নায়িম , কিন্তু কেউ কোনদিন ওর সাথে এমন আচরন করেনি , না খেয়ে থেকেছে , রাস্তায় ঘুমিয়েছে । কিন্তু বাপ মা তুলে গালি দেয়া ,
এমন সময় কেউ একজন বলে উঠলো । এই ভাই এই রাস্তা ছাড়েন , রাস্তা ছাড়েন । হয়ত বড় কেউ এসেছে । দ্রুত রাস্তা পরিস্কার হয়ে গেলো , নায়িম তখনো নিচের দিকে তাকিয়ে থাকায় কে এসেছে সেটা দেখতে পেলো না , দেখার ইচ্ছাও নাই । এই অপমানিত মুখ কাউকে দেখাতে চায় না ও ।
যে এসেছে তাকে সবাই সালাম দিতে লাগলো , ওস্তাদজি বলে সম্বোধন করছে সবাই । এমন কি নাসির ও লোকটাকে সালাম দিলো।
এই এখানে কি হয়েছে ? তোমরা জটলা করছো কেনো? একটা পুরুষ কণ্ঠ শুনতে পেলো নায়িম , যদিও পুরুষ তারপর ও কেমন জানি মেয়েলী ভাব আছে কণ্ঠে ।
আর বইলেন না ওস্তাদজি , আজে বাজে লোকে ভইরা গেছে পাড়া , দেখেন নায়ক একজন , আমারে ধাক্কা দিলো , আমি বললাম ধাক্কা দিলা ক্যান , আমারে লাল চোখ দেখায় ।
বল কি নাসির , এইটুকু ছেলে , ওস্তাদজি নামের লোকটা এখন নাইমের দিকেই তাকিয়ে আছে , নায়িম একবার চোখ তুলে দেখে নিয়েছে লোকটাকে , ঘিয়ে রঙের দামি পাঞ্জাবি পাজামা পরে আছেন , চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমা । একটু বেঁটে আর কালো দেখতে , মাথায় চুল ও বেশ কম। বেশ বয়স লোকটার , যত টুকু দেখায় তারচেয়ে বয়স বেশি ই হবে ।
এই ছেলে তোমার নাম কি ? ওস্তাদজি জিজ্ঞাস করে , যদিও এই লোকটার কণ্ঠ বেশ নরম আর তাচ্ছিল্যের উপস্থিতি নেই । তারপর ও উত্তর দেয় না নাইম । লজ্জায় ওর মুখ দিয়ে শব্দ বের হয় না ।
দেখসেন নাকি ওস্তাদজি কেমন ফাজিল , আপনের প্রশ্নের উত্তর দেয় না । নাসির রাগত স্বরে বলে , তারপর নাইমের দিকে তাকিয়ে হুংকার ছেড়ে বলে , ওই কথা কস না ক্যান বান্দিরপুত , থাবড়া দিয়া কানাপট্টি গরম কইরা দিমু ।
আহা নাসির থামো তো , ওস্তাদজি বিরক্ত হয়ে বাধা দেয় , তারপর নাইমের দিকে এগিয়ে যায় । মাথায় হাত রাখে , লোকটার হাতের স্পর্শ নাইম কে অনেকটা শান্ত করে । কি নাম তোমার , এখানে কি করো ?
এবার নাইম ফুঁপিয়ে ওঠে , নায়কোচিত কাঠিন্য আর ধরে রাখতে পারে না । সেটা দেখে ওস্তাদজি বলেন । আহা কাদছো কেন ? তারপর জমা হওয়া লোকজন কে তাড়িয়ে দেন । নাসির যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে কি যেন বলতে বলতে যায় ।
তুমি আসো আমার সাথে ,ওস্তাদজি নাইম কে সাথে নিয়ে নিজের গন্তব্যের দিকে হাটা দেয় ।
*****
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
Posts: 711
Threads: 32
Likes Received: 657 in 320 posts
Likes Given: 239
Joined: Mar 2019
Reputation:
196
Posts: 383
Threads: 0
Likes Received: 149 in 143 posts
Likes Given: 221
Joined: Jan 2024
Reputation:
3
Posts: 2,924
Threads: 0
Likes Received: 1,309 in 1,159 posts
Likes Given: 45
Joined: May 2019
Reputation:
32
Posts: 326
Threads: 0
Likes Received: 102 in 92 posts
Likes Given: 0
Joined: Aug 2023
Reputation:
3
Posts: 386
Threads: 0
Likes Received: 199 in 157 posts
Likes Given: 613
Joined: Jun 2019
Reputation:
6
Posts: 73
Threads: 2
Likes Received: 122 in 45 posts
Likes Given: 56
Joined: Jul 2025
Reputation:
9
(11-08-2025, 04:43 PM)Abirkkz Wrote:
(11-08-2025, 06:25 PM)Saj890 Wrote: Darun
(11-08-2025, 07:22 PM)chndnds Wrote: Valo laglo
(12-08-2025, 02:27 AM)Momcuc Wrote: Update din
(12-08-2025, 09:44 AM)incboy29 Wrote: সুন্দর শুরু।।
সবাইকে ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য
কেউ কথা রাখে না
আসবো বলেও আসে না।
কথা রাখে সুধু একাকীত্ব ,
কখনো ছেড়ে যায় না।
•
|