Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
10-05-2025, 11:25 PM
পর্ব-১
ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনের মতো স্বামীর জন্য নাস্তার আয়োজন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো ৪১ বছরের মিথিলা। মিথিলা আর আরিফের ২০ বছরের সংসার। একমাত্র মেয়ে মহিমা কে নিয়ে সুখের সংসার মিথিলার। স্বামী প্রাইভেট ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। নিজেদের বাড়ি গাড়ি সব কিছুই আছে তাদের। মিথিলা সংসারের দায়িত্বগুলো বেশ ভালো ভাবেই পালন করে। বাবা মায়ের পছন্দেই তাদের বিয়ে টা হয়েছিল। সকালের কাজকর্ম সেরে মোবাইলে ফেসবুক স্ক্রল করছিল আর মুচকি মুচকি হাসছিল মিথিলা। গতকালই তাদের বিবাহিত জীবনের ২০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্বামী-স্ত্রীর একটা যুগল ছবি ফেসবুকে আপলোড করেছিল মিথিলা। ছবিতে মানুষের কমেন্ট গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখার সময় হঠাৎ একটা কমেন্টে নজর গেল মিথিলার। রুমন নামের একজন লিখেছে, " আপনাদের দুইজনকে খুব সুন্দর লাগছে"। মিথিলা কি মনে করে যেন কমেন্টে লাইক দিয়ে দিল। মেসেঞ্জারে একবার ঢুঁ মেরে বিভিন্ন মেসেজ চেক করার সময় দেখলো, রুমনের মেসেজ এসেছে সকাল ৮ টায়। মেসেজে ক্লিক করতেই দেখলো 'গুডমর্নিং' জানিয়ে একটা মেসেজ করেছে। মিথিলা চট করে রুমনের ফেসবুক চেক করে দেখলো সে তার স্বামীর মিচুয়াল ফ্রেন্ড এবং একই ব্যাংকে জব করে। ছেলে মেয়ের সাথে নিজের একটা ছবি দেওয়া আছে প্রোফাইলে। দেখতে কালো এবং স্লিম মনে হলো। বয়স আন্দাজ করতে পারলো না। তবে আরিফের চেয়ে বয়সে কমই মনে হলো। মিথিলা মেসেজের কোন রিপ্লাই না দিয়েই বের হয়ে গেল। আজকে সংসারের কিছু কেনাকাটা করতে বাইরে যেতে হবে। তাড়াতাড়ি বাসার কাপড় ছেড়ে প্রিন্টের সালোয়ার কামিজ পড়ে ইউনিমার্ট এর উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়লো। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে ২ ঘন্টার মধ্যেই বাসায় ফিরে এলো। দুপুরের রান্নাবান্না শেষ করে গোসল সেরে মেয়েকে একটা ফোন দিয়ে কখন আসবে সেটা জেনে নিলো। মেয়ে ফিরলেই একসাথে খাবে। এই ফাঁকে একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে শুয়ে ফেসবুক চালাতে লাগলো। হাল্কা ঘুম ঘুম ভাব এসে যাচ্ছে। তাও চোখ খুলে রাখছে। রিলস দেখতে দেখতেই কখন এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে টেরই পায়নি। হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে বুঝলো মেয়ে চলে এসেছে। মেয়ে এসেই ফ্রেশ হয়ে মায়ের সাথে খেতে বসলো। মহিমার এখন ১৮ বছর চলছে। খুব শান্তশিষ্ট লক্ষী মেয়ে। পড়াশোনা আর বই পড়া নিয়েই থাকে বেশির ভাগ সময়। বন্ধুবান্ধবদের সাথে খুব একটা আড্ডাবাজি করে না। মেয়েকে নিয়ে তাই মিথিলা নিশ্চিন্তেই থাকে। খাওয়া শেষ করে দুইজনই একটা ভাত ঘুম দিয়ে দিলো। আরিফ অফিস করে বাসায় ফিরলো সন্ধ্যায়। রাতে খাবার পরে ঘুমানোর সময় অনুভব করলো আজ গরম পড়েছে খুব। এসি টা ছেড়ে বিছানায় এলো মিথিলা। আরিফ খুব ক্লান্ত। হবেই বা না কেন। অফিসে কাজের চাপের পাশাপাশি তার বয়স টাও তো ৫০ এর উপরে হয়ে গেছে। আগের মতো আর এনার্জি পায় না শরীরে। অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায় এখন। তাই বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই চোখে রাজ্যের ঘুম এসে ভর করলো। শেষ কবে তাদের মধ্যে যৌন মিলন হয়েছিল ঠিকঠাক মনে করতে পারলো না মিথিলা। বালিশে মাথা দিয়ে পাশ ফিরে মোবাইল টা হাতে তুলে নিলো। মেসেঞ্জারের ইনবক্সে আবারো রুমনের মেসেজ এসেছে। খুলে দেখলো লেখা আছে 'গুডনাইট'। মিথিলা নিচের ঠোঁট কামড়ে একবার ভাবলো জিজ্ঞেস করবে, কে আপনি। পরে আবার ভাবলো, ধুর এরকম কত মেসেজই তো আসে। কিছুক্ষণ ছোট বোনের সাথে চ্যাটিং করে ঘুমিয়ে পড়লো। সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলো রুমনের আরেকটা মেসেজ এসেছে। এবার সে মেসেজে মিথিলা আর আরিফের ছবি টা দিয়ে লিখেছে, আপনাকে দেখে বুঝায় যায় না আপনাদের বিবাহিত জীবন ২০ বছরের। আপনাকে এখনো অনেক ইয়ং লাগে। মিথিলা মেসেজ টা পড়ে একবার ভাবলো আরিফ কে জিজ্ঞেস করবে রুমনের ব্যাপারে। পরে আবার ভাবলো, না থাক। রুমন আমাকে নক দিয়েছে এটা জানলে আরিফ আবার সন্দেহ করতে পারে। তারচেয়ে চুপচাপ থাকি। এরপর সারাদিনের সাংসারিক কাজের চাপে রুমনের কথা ভুলেই গেল মিথিলা। বিকালে আবার রুমনের মেসেজ, ' কেমন আছেন আপনি '। কোন উত্তর দিলো না মিথিলা। রাতেও 'গুডনাইট' জানিয়ে আরেকটা মেসেজ এলো রুমনের কাছ থেকে। মিথিলা এবার ফোনের সুইচ অফ করে ঘুমিয়ে পড়লো। সকালে যখন আরিফ আর মহিমা যে যার গন্তব্যের উদ্দেশ্য বের হয়ে পড়লো তখন মিথিলা ফোনের সুইচ অন করলো। অন করতেই ইনবক্সে রুমনের মেসেজ আসলো। 'গুডমর্নিং' জানিয়ে মেসেজের পাশাপাশি লিখেছে 'রাগ করেছেন নাকি আমার উপর?' মিথিলা দোনোমনা করতে লাগলো, কিছু লিখবে? নাকি লিখবে না! আরিফের সাথেই জব করে। কিছু লিখলে যদি সে আরিফ কে জানিয়ে দেয়! এসব ভাবতে ভাবতেই এক সময় মিথিলা জোরে নিঃশ্বাস ছেড়ে টাইপ করলো "গুডমর্নিং", তারপর কাঁপাকাঁপা আঙুলে সেন্ড বাটনে প্রেস করে স্ক্রিনের দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে থাকলো।
রুমন অফিসিয়াল মিটিং শেষ করে মেসেঞ্জার চেক করে মিথিলার মেসেজ দেখলো। মুখে হাল্কা হাসি নিয়ে "রাগ ভাঙলো" লিখলো। কিছুক্ষণ পরেই মিথিলার মেসেজ " রাগ দেখানোর মতো কি কিছু হয়েছে?" রুমনের ফিরতি মেসেজ " না সুন্দরীদের তো মুড সুইং বুঝা যায় না, কখন কিসে রাগ করে বসে বুঝা মুস্কিল"। মিথিলা নীচের ঠোঁটে দাঁত চেপে হাসি হাসি মুখ করে মেসেজ দিলো " তা এই পর্যন্ত কত জন সুন্দরীর রাগ ভাঙ্গানো হয়েছে?" রুমন পাকা খেলোয়াড়। সে বুঝতে পারলো একটু চেষ্টা করলেই মিথিলা খিল্লি খেয়ে যাবে। সে তাড়াহুড়ায় বিশ্বাসী না। একে ধীরে ধীরে খেলিয়ে বিছানায় পোষ মানাতে হবে। একটু চিন্তা করে লিখলো " এখনো পর্যন্ত সেরকম সুন্দরী কারো রাগ ভাঙ্গানোর সুযোগ হয়নি"। মিথিলা চাপা হাসি নিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখলো। তার ফর্সা মুখে লালের আভা দেখতে পেলো। নিজের শরীরের দিকে পূর্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকালো। ৫ ফুট উচ্চতায় শরীরের যেখানে যেখানে মাংসের পিন্ড থাকার কথা তার সবই আছে। কিছুটা লাজুক চোখেই নিজেকে দেখে ভাবলো, রুমন নিশ্চিত এই শরীরের প্রেমে পড়েছে। ভাবতে ভাবতেই তল পেটের নীচে শিরশির করে উঠলো মিথিলার। কয়েকটা মেসেজ পেয়েই সে এসব কি ভাবছে ছি: ছি:। পরপুরুষ নিয়ে এরকম ভাবনা আগে কখনো আসেনি তার মনে। তাহলে কি সে চাচ্ছে নতুন কোন সম্পর্ক?
Posts: 1,334
Threads: 2
Likes Received: 7,735 in 1,125 posts
Likes Given: 1,129
Joined: Jan 2023
Reputation:
2,798
Posts: 141
Threads: 0
Likes Received: 145 in 79 posts
Likes Given: 425
Joined: Dec 2021
Reputation:
6
ভালো শুরু। লেখার হাত ভালো আপনার। লিখতে থাকুন।
Posts: 42
Threads: 0
Likes Received: 38 in 34 posts
Likes Given: 218
Joined: Jan 2024
Reputation:
7
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(11-05-2025, 11:22 AM)কাদের Wrote: ভাল শুরু। লিখতে থাকুন। আপনার কাছ থেকে "ভালো"সার্টিফিকেট পেয়ে যেমন ভালো লাগছে তেমন একটু ভয় ভয় ও লাগছে। প্রত্যাশা পুরণের ভয় ?
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(11-05-2025, 12:34 PM)bluesky2021 Wrote: ভালো শুরু। লেখার হাত ভালো আপনার। লিখতে থাকুন।
ধন্যবাদ
•
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(11-05-2025, 01:41 PM)Force6414@ Wrote: Darun start ধন্যবাদ
•
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
14-05-2025, 05:35 AM
(This post was last modified: 14-05-2025, 05:36 AM by Rubya. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব-২
রুমন বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে গুলশানের অফিস থেকে বের হলো রাত ৮ টার দিকে। অফিসে ইদানীং কাজের অনেক চাপ। গাড়ীর স্টিয়ারিং এ হাত রেখে রাস্তার জ্যাম বুঝার চেষ্টা করছিল। কানে হেড ফোন লাগিয়ে বন্ধু ফয়সাল কে কল দিলো। ফয়সাল তার বাল্যকালের বন্ধু। সাভারে ফয়সালের একটা কৃষিখামারের বিজনেস আছে। ওখানে থাকার জন্য সুন্দর একটা কটেজ ও আছে। মাঝেমধ্যে ফ্যামিলি নিয়ে তারা ঘুরতে আসে এখানে। কথায় কথায় রুমন ফয়সালকে মিথিলার সাথে চ্যাটিং এর বিষয় টা বললো। রুমন হেসে বললো, "দাঁড়া আগে মাছ টা কে বড়শি তে গাঁথি তারপর না রান্না করে তোকে খাওয়াবো"। বলেই দুইজনে হা হা হা করে হাসিতে ফেটে পড়লো।
রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় টুং করে একটা মেসেজ আসার শব্দ হলো। মিথিলা বালিশের পাশ থেকে মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো রুমনের মেসেজ এসেছে। রাত বাজে সাড়ে বার টা। পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলো আরিফ ঘুমিয়ে পড়েছে। মিথিলা আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে পা টিপে টিপে দরজা খুলে পাশের রুমে গেল। বিছানায় বসতেই মহিমা এসে বললো, " কি ব্যাপার আম্মু তুমি হঠাৎ আজ এই ঘরে ঘুমাতে এলে যে?" মিথিলা একটু অপ্রস্তুত হয়ে জবাব দিলো " না মানে ঘুম আসছে না তাই ভাবলাম ফেসবুকে রিলস দেখি। ঐ ঘরে তোর আব্বু ঘুমাচ্ছে। রিলস এর আওয়াজে ঘুমের অসুবিধা হবে। তাই এই ঘরে চলে এলাম "। মহিমা অবাক হয়ে মিথিলার দিকে তাকিয়ে থাকলো। যেভাবে হড়বড় করে আম্মু কথাগুলো বললো তাতে মনে হলো লুকিয়ে লুকিয়ে খারাপ খারাপ ভিডিও দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছে! মহিমা ইচ্ছা করে চোখ নাচিয়ে হেসে বললো " এতো রাতে কি রিলস দেখবা আম্মু যে এই ঘরে আসতে হলো! তেমন কিছু না রে। যা না তুই তোর ঘরে। কাল ক্লাস নাই তোর? আছে তো! কিন্তু আমার মিষ্টি আম্মুটা এতো রাতে আব্বুর চোখ ফাঁকি দিয়ে কি এমন দেখছে তা জানতে খুব ইচ্ছে করছে। ঠিক সেই সময় পরপর দুইবার টুং টুং করে মেসেজ আসার শব্দ হলো। মিথিলার চোখ মুখ কেমন হয়ে গেল সাথে সাথে। মহিমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মা'য়ের দিকে তাকালো। মিথিলা মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো, তারপর মেয়েকে বললো, "তোর খালা মেসেজ দিয়েছে"। মহিমা খুবই বুদ্ধিমতী মেয়ে। তার মনে সন্দেহ থাকলেও সে সুন্দর একটা হাসি দিয়ে মায়ের পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো কি লিখেছে খালামনি? মিথিলার মুখ মুহূর্তে ফ্যাকাশে রুপ ধারণ করলো। মেয়ের কাছে ধরা খেলে জীবনেও তাকে আর সম্মান করবে না। তাই মিথিলা নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো। খুব ধীরে বললো, বোনদের মধ্যে কত কথা হয়। সব কথা ছোটদের শুনতে নেই রে মা। যা তুই শুয়ে পড়। অনেক রাত হয়েছে। মহিমা মিথিলাকে জড়িয়ে ধরে বললো, আজ তোমার সাথে ঘুমাবো আম্মু। মিথিলা স্নেহময় মমতায় মেয়ের মুখে হাতের স্পর্শে আদর করে বললো, ঠিক আছে মা আয় আমরা একসাথে ঘুমায়। মহিমা বললো, আম্মু তুমি ছোট বেলায় আমাকে ঘুমানোর সময় কত গল্প বলতে! রাজা রানী দৈত্য দানোর গল্প! আমি চোখ বড় বড় করে শুনতাম আর সব বিশ্বাস করতাম। বলেই ফিক করে হেসে দিল মহিমা। মা মেয়ে কথা বলতে বলতে এক সময় ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল। রোজকার মতো কাক ডাকা ভোরে মিথিলার ঘুম ভেঙ্গে গেল। মহিমা তখন গভীর ঘুমে। মিথিলা আড় চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে মোবাইল টা হাতে নিয়ে মেসেঞ্জারে ঢুকলো। রুমনের তিন টা মেসেজ বোল্ড হয়ে আছে।
খুলতেই দেখলো প্রথমে লেখা আছে,
" কি ঘুমিয়ে গেছেন নাকি আপনি?
তারপরের মেসেজ টায় লেখা,
" ঘুম আসছে না আমার"
পরের মেসেজে লেখা,
"কেন জানি খুব মিস করছি আপনাকে"।
অপলোক চোখে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলো মিথিলা। অদ্ভুত এক ভালো লাগা তার শরীরে অনুভব করলো। মোবাইল টা বুকের সাথে চেপে রেখে চোখ বন্ধ করে ভালো লাগার অনুভূতি অনুভব করতে লাগলো। এরকম হচ্ছে কেন তার! তনু মন সব যেন একত্রিভুত হয়ে যাচ্ছে। দূরে বহু দূরে, কেউ একজন তাকে মিস করছে এটা ভাবতেই মিথিলার মনের মধ্যে এক নিষিদ্ধ সুখের ঢেউ খেলা করতে লাগলো যেন। পরমুহুর্তে চোখ খুলে তাকাতেই দেখলো নিজের বিছানায় শুয়ে আছে সে। পাশে আরিফ নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। ভালো করে চারিদিকে তাকিয়ে দেয়াল ঘড়ির দিকে চোখ পড়লো। ঘড়ির কাঁটা ঠিক সকাল ৬:০৫ মিনিটে স্থির। তখনই মহিমার ঘর থেকে সাউন্ড সিস্টেমের স্পিকারে বেজে উঠলো,
Morning has broken
Like the first morning
Black bird has spoken
Like the first bird
Praise for the singing!
Praise for the morning!
Praise for them springing!
Fresh from the word!
Mine is the sunlight!
Mine is the morning
Born of the one light
Eden saw play!
Praise with elation
Praise every morning
God's recreation
Of the new day!
Posts: 53
Threads: 1
Likes Received: 56 in 35 posts
Likes Given: 5
Joined: Jul 2019
Reputation:
0
nice start. big update pls.
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
14-05-2025, 11:48 PM
(This post was last modified: 14-05-2025, 11:49 PM by Rubya. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(14-05-2025, 01:16 PM)milfomaniak Wrote: nice start. big update pls. [color=#ff66ff][b]গল্পটা ভালো লাগছে জেনে উৎসাহ বেড়ে গেল
•
Posts: 1,334
Threads: 2
Likes Received: 7,735 in 1,125 posts
Likes Given: 1,129
Joined: Jan 2023
Reputation:
2,798
মিথিলা রুমনের রিলেশন কোথায় গড়ায় দেখার অপেক্ষায়
Posts: 99
Threads: 0
Likes Received: 43 in 32 posts
Likes Given: 74
Joined: Aug 2023
Reputation:
1
Waiting for next update...
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(15-05-2025, 10:13 PM)Panu2 Wrote: Waiting for next update... আপডেট আসবে সামনে
•
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(15-05-2025, 06:10 PM)কাদের Wrote: মিথিলা রুমনের রিলেশন কোথায় গড়ায় দেখার অপেক্ষায় অপেক্ষার প্রহর মিষ্টিই হয়... অপেক্ষায় থাকুন দেখতে পাবেন
Posts: 1,334
Threads: 2
Likes Received: 7,735 in 1,125 posts
Likes Given: 1,129
Joined: Jan 2023
Reputation:
2,798
আপনার মেসেজের ইনবক্স ফুল। ইনবক্স থেকে মেসেজ ডিলিট করে, তারপর ট্র্যাশ ক্যানও ক্লিয়ার করেন। তাহলে মেসেজ দিতে বা নিতে পারবেন।
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(18-05-2025, 12:34 AM)কাদের Wrote: আপনার মেসেজের ইনবক্স ফুল। ইনবক্স থেকে মেসেজ ডিলিট করে, তারপর ট্র্যাশ ক্যানও ক্লিয়ার করেন। তাহলে মেসেজ দিতে বা নিতে পারবেন। ইনবক্স ক্লিয়ার করেছি, এখন মেসেজ পাবো
•
Posts: 2
Threads: 0
Likes Received: 2 in 2 posts
Likes Given: 1
Joined: May 2025
Reputation:
0
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
(19-05-2025, 02:42 PM)himhum51 Wrote: Update kobe diben? নেক্সট উইকের মধ্যেই পাবেন
•
Posts: 32
Threads: 2
Likes Received: 48 in 20 posts
Likes Given: 33
Joined: May 2024
Reputation:
13
পর্ব-৩
সকাল সাতটা কুড়ি। রান্নাঘরের দুধ উথলে উঠছে। মিথিলা গ্যাস কমিয়ে দিলো, কিন্তু মনটা তার রান্নাঘরে নেই। জানালার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে, বাইরে ছড়িয়ে থাকা হালকা রোদ যেন তার চোখে পড়ছে না। মাথার ভেতরে কিছু একটা গুঞ্জন করছে।
রাতের সেই তিনটা মেসেজ বারবার মনে পড়ছে।
"ঘুম আসছে না আমার..."
"আপনাকে খুব মিস করছি..."
এসব লেখা দেখে তার মনে যে অনুভুতি টা হয়েছিল, সেটা মিথিলা কোন দিন কারো কাছে স্বীকার করতে পারবে না। যেন গোপনে কেউ তাকে আদরে ভিজিয়ে দিচ্ছে, আবার অপরাধবোধের এক ছায়া এসে বুক চেপে ধরছে।
মোবাইলটা সে আগের মতো খোলা জায়গায় রাখে না। মেসেঞ্জার লুকাতে শিখেছে। একটা গোপন অ্যাপ দিয়ে অন্য নামে সেট করে রেখেছে। এর আগে কখনো এমন কিছু সে করতে ভাবেনি। নিজেকে এখন মাঝেমধ্যে অপরিচিত মনে হয়।
আরিফ গেট খুলে গাড়ী বের করলো। যাওয়ার সময় মিথিলার দিকে তাকিয়ে শুধুমাত্র বললো," আজ একটু দেরী হতে পারে, মিটিং আছে। " মিথিলা মাথা নাড়লো, কিছু বললো না। কয়েক সেকেন্ড পরেই গেট বন্ধ হওয়ার শব্দে ঘরটা আবার নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
মোবাইল ভাইব্রেট করলো ঠিক তখনই।
" আপনার সাথে খুব জরুরী কথা আছে। সামনা-সামনি। আপনি কি সময় করে একদিন দেখা করবেন!
রুমন"
মেসেজটা দেখে মিথিলা কিছুক্ষণ স্থির হয়ে বসে রইলো। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো স্ক্রিনের দিকে। না জানি কেন, মনে হচ্ছিলো এই মেসেজটা তার জীবনে একটা বড় দরজার হাতল। সে চাইলেই খুলে ফেলতে পারে, কিংবা চাইলেই চিরতরে বন্ধ রাখতে পারে।
সেদিন দুপুরে, মিথিলা বারান্দায় বসে ছিল এক কাপ কফি নিয়ে। হঠাৎ করেই এক পুরোনো ছবি চোখে পড়লো। ফেসবুক মেমোরিতে এসেছে। কলেজের এক বোনভোজন, যেখানে তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল রোমেল। এক সময়ের খুব কাছের বন্ধু। রুমনের হাসিটা আজকাল রোমেলের মতোই লাগে। এই মিলটা কেন এতটা অনুভব করে সে?
একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার ভিতর থেকে।
পেছনে মহিমা এসে বললো, 'আম্মু তুমি আজকাল কেমন যেন চিন্তিত দেখাও। '
মিথিলা চমকে উঠলো। মেয়ের চোখে কি কিছু পড়ে গেছে?
"না, মা কিছু না। পুরানো দিনের কথা চিন্তা করছিলাম। "
মহিমা বসে বললো, "তোমার ফোনটা একটু দাও তো, আমি একটা গান শুনবো।" মিথিলার বুকের ভিতর ধক করে উঠলো। " না, মা ফোনে চার্জ কম, আর একটু পরে দিচ্ছি।" মহিমা খেয়াল করলো, আম্মুর চোখ কেমন আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে। কিছু একটা আছে, সে বুঝে। তবে সে চুপ করে গেল। মা মেয়ের সম্পর্ক কখনও কখনও এতটাই গভীর হয়, যেখানে প্রশ্ন না করলেও উত্তর অনুভব করা যায়।
রাত এগারোটা। মিথিলা ঘুমানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ঘুম আসে না। ঘরের জানালা খুলে রাখতেই দূর থেকে ভেসে এলো আজানের মতো সুরেলা গানের ধ্বনি। মহিমার ঘরের সেই সাউন্ড সিস্টেম থেকে। Moring has broken... Like the first morning...
হঠাৎ করেই তার মনে হলো, সে একটা পথের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে সংসার, আরেকদিকে এক অনির্ধারিত টান। জানে না কোনটা বেছে নেওয়া ঠিক।
ফোনটা হাতে নিলো।
" একদিন দেখা করবো। কিন্তু কোথায়, কখন?" সে টাইপ করলো।
পাঠাতে চাইল না। আঙুল থেমে গেল "send" বাটনের উপর। এক মুহুর্ত, দুই মুহুর্ত...
অবশেষে, এক দীর্ঘশ্বাসের পর সে বাটনে চাপ দিল।
মেসেজ সেন্ডেড।
তার চোখ বন্ধ হয়ে এলো। না ঘুমানো জন্য, বরং এক গভীর পরাধীন ভালো লাগার মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা।
মিথিলা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলে ক্লিপ ঠিক করছিল। তার ডান কানে ছোট্ট একটা মুক্তোর দুল, গলায় পাতলা সোনার চেইন। গায়ে পিংক কালারের জামদানী শাড়ী আর ব্লাউজ। এতটা যত্ন নিয়ে সে নিজেকে খুব কম সাজায়। কেবল উৎসব বা বিশেষ দিন ছাড়া।
আজ সে ঘর থেকে বেরোচ্ছে এক 'বন্ধুর' সঙ্গে কফি খেতে।
রুমনের সাথে দেখা, প্রথমবার। এতদিন শুধু স্ক্রিনের এপারে ছিল সে। আজ সামনাসামনি।
"আম্মু কোথায় যাচ্ছো" মহিমা রান্নাঘর থেকে এসে জিজ্ঞেস করলো।
"একটা মেয়েদের মিটিং আছে রে, কফিশপে। তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।" মিথিলা চেষ্টা করলো স্বাভাবিক থাকার।
" মেয়েদের মিটিং এই সাজে?" মহিমা ভ্রু কুঁচকে বললো।
মিথিলা একটু থমকে গেল। মেয়েটা খুব সহজে ধরে ফেলে।
"আচ্ছা মা, দেরী হয়ে যাচ্ছে" বলে বেরিয়ে গেল সে। পেছনে মেয়ের চোখের সন্দেহ তখনও জ্বলজ্বল করছে।
রুমন একটু আগে এসে বসেছে। হালকা নীল শার্ট। চোখে রীমলেস চশমা, হাতে ঘড়ি, পরিপাটি। সে নার্ভাস, কিন্তু মুখে একরকম আত্মবিশ্বাসের ছায়া।
মিথিলা ঢোকার সময় দু'জনের চোখাচোখি হলো।
"অবশেষে" বললো রুমন।
"হ্যাঁ, অনেক ভাবনা চিন্তার পর", মিথিলা মৃদু হাসলো।
দু'জনেই একসাথে বসে কফি অর্ডার করলো। কথা শুরু হলো ছোটখাটো বিষয় দিয়ে। আবহাওয়া, অফিস, ছেলেমেয়েদের স্কু*ল কলেজ, সব যেন কথার অন্তরালে ভিন্ন কিছু লুকিয়ে আছে।
হঠাৎ রুমন বললো,
" তুমি জানো, আমি আসলে অনেক আগে থেকেই তোমায় চিনি"।
মিথিলা চমকে উঠলো।
"মানে?"
তুমি কি মনে করো এটা কাকতলীয়, যে আমরা হঠাৎ ফেসবুকে আলাপ করলাম?"
মিথিলা থমকে গেল।
"তুমি কলেজে পড়তে, আমি তখন তোমাদের ক্যাম্পাসেই ছাত্রলীগ করতাম। তোমার ওই বন্ধুর নাম ছিল রোমেল, ঠিক না? "
মিথিলার বুকের মধ্যে ধড়াস করে উঠলো। রোমেল! যার সাথে সে এক সময় খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
"তুমি রোমেলের বন্ধু" গলায় জোর হারিয়ে গেল।
"বন্ধু না, ভাই বলা চলে। ও এখন দেশের বাইরে। তুমি জানো ও তোমাকে খুঁজেছিল? বহুবার। কিন্তু তুমি কোন যোগাযোগ রাখো নি।"
মিথিলার গলার স্বর কাঁপতে লাগলো।
"ওকে ভুলে যেতে চেয়েছিলাম আমি।"
" আর তাই আমাকে তার ছায়ার মতো মনে হচ্ছিল, তাই না?"
মিথিলা তাকিয়ে থাকলো রুমনের চোখে। হঠাৎ করেই তার সব আবেগ, সব অনুভূতি যেন স্তব্ধ হয়ে গেল। এই লোকটা কি শুধুই আগ্রহ থেকে তার কাছে এসেছিল। না কি পুরনো এক গল্পের অসমাপ্ততা পুরন করতে?
রুমন এবার একটু নীচু স্বরে বললো,
" তুমি জানো, রোমেল আজও তোমায় ভালবাসে। আমার কাছে তার মেসেজ আছে। যদি চাও, দেখাতে পারি।"
মিথিলা উঠে দাঁড়ালো।
" তুমি কি চাও রুমন?"
তুমি জানো না তুমি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলে কারও জীবনে।"
" আর তুমি?"
" আমি, আমি জানি, আমি ভুল করছি। কিন্তু তোমাকে খুব কাছে পেতে চাওয়া ভুল মনে হয় না।"
মিথিলা চুপ করে রইল। চারপাশের শব্দ, আলো, মানুষের কোলাহল সব কিছু যেন এক মুহুর্তে নীরব হয়ে গেল। সে ধীরে পেছন ঘুরে বেরিয়ে এল কফিশপ থেকে।
গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে মিথিলা। শহরের আলোঝলমলে সড়ক, চোখ ধাঁধানো বিলবোর্ড, সব কিছুর মাঝেও তার বুকের ভেতরে চলছে ঝড়।
মোবাইল হাতে নিয়ে খুললো রুমনের মেসেজ পাঠানো একটা ভিডিও ক্লিপ।
রোমেল লন্ডনের এক পার্কে বসে বলছে, "তুমি যদি কখনো এটা দেখো, জেনো আমি এখনো অপেক্ষায় আছি। মিথিলা, তুমি এখনো আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ভুল।"
মিথিলা স্ক্রিন বন্ধ করে চোখ বন্ধ করলো। উত্তেজনায় নাক, কান দিয়ে গরম ভাপ বের হচ্ছে যেন। নিজের অজান্তেই স্তনের বোঁটা শক্ত হয়ে ব্লাউজের উপর দিয়ে গোলাপের কলির মতো তার উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করেছে।
তার মনে হলো, অতীতের ভুল আর বর্তমানের প্রলোভনের মাঝখানে সে একটা মস্ত সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে। যেটার দুই পাশে ছড়িয়ে আছে ভালোবাসা, কিন্তু দুই দিকেই পড়ে আছে গভীর অনুশোচনার খাদ।
সন্ধ্যার ঘনত্ব শহরকে ধীরে ধীরে ঢেকে দিচ্ছে। মিথিলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। হাতে চায়ের কাপ, কিন্তু ঠোঁট ছোঁয়ায়নি এখনো। মাথার ভিতরে ঘুরছে নানা চিন্তা। একদিকে রুমনের কাছ থেকে পাওয়া সেই ভিডিও। যেখানে রোমেল এখনো ভালোবাসার কথা বলছে। অন্যদিকে রুমনের আসল উদ্দেশ্য এখনো অস্পষ্ট। তার ভিতরে এক অস্থিরতা। না বলা কথা, অসমাপ্ত সম্পর্কের বোঝা যেন প্রতিদিন ভারী হয়ে যাচ্ছে।
ঠিক তখনই ফোনটা বেজে উঠলো।
+880171... অপরিচিত নম্বর।
মিথিলা একটু দ্বিধায় ছিল, তাও ধরলো।
" হ্যালো"
" মিথিলা... আমি... রোমেল!
" তুমি... বাংলাদেশে...?
" হ্যাঁ, আজ সকালেই নেমেছি। তোমার শহরে এখন আমি। শুধু একটা কথা বলার জন্য এসেছি। তুমি চাইলে শুনবে, না চাইলে একরাশ স্মৃতি নিয়ে চুপচাপ ফিরে যাবো।"
মিথিলা বোবা হয়ে গেল। সে জানে, এই ফোন কল তার জীবন বদলে দিতে পারে।
মহিমা মায়ের ফোনে রিচার্জ দিতে গিয়ে খেয়াল করলো একটা লুকানো অ্যাপ। নাম দেখে বুঝা যায় না কিছুই। কৌতুহলে ক্লিক করে ঢুকলো।
তখনই খুলে গেল মেসেঞ্জার চ্যাট। রুমনের সাথে মায়ের কথপোকথন।
স্ক্রল করতে করতে সেই মেসেজে পৌঁছে গেল।
" আপনাকে মিস করছি..."
"একদিন দেখা করতে চাই..."
মহিমার চোখে জল চলে এলো।
"আম্মু মিথ্যা বলছে? এই বয়সে এই সব?"
হঠাৎ করেই ভেতরে হাহাকার শুরু হলো তার। কিছু না বলেই সে নিজের ঘরে চলে গেল। দরজা বন্ধ করলো। কাঁথার নীচে মুখ গুঁজে কান্না শুরু করলো চুপচাপ।
সে কি করবে এখন? আব্বুকে বলবে? না মাকে সামনে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করবে?
তার ছোটবেলার সেই স্নেহময়ী, গল্প বলা আম্মু আজ তার চোখে একজন অচেনা নারী।
মিথিলা গুলশানের একটা নিরিবিলি রেস্টুরেন্টে বসে আছে। ঠিক সময় মতো এসে পৌঁছালো রোমেল। চোখে একধরনের ক্লান্তি, কিন্তু মুখে অভিমানের একটা আবরণ।
" অনেক বছর পর, মনে আছে কোথায় শেষ হয়েছিল আমাদের কথা?"
" হ্যাঁ আমি বলেছিলাম তুমি আমার ভবিষ্যৎ না... এবং আমি চলে গিয়েছিলাম। "
রোমেল গভীরভাবে তাকিয়ে থাকলো মিথিলার চোখে।
" কিন্তু তোমার সেই সিদ্ধান্ত শুধু আমাদের না, আমাকে ভেঙে দিয়েছিল। তুমি জানো না আমি এরপর কিভাবে বেঁচে ছিলাম।"
মিথিলা চোখ নামিয়ে ফেললো।
" কিন্তু এখন তুমি কেন এসেছো? আমি সংসার করছি। মেয়ে আছে। পরিবার আছে। "
" তবুও তুমি একজন পরপুরুষের মেসেজে মধ্যরাতে জেগে থাকো, দেখা করো এবং তাকে মিস করো। "
মিথিলা স্তব্ধ! রোমেল জানে! মিথিলার চোখে পানি চলে এলো। মিথিলা উঠে দাঁড়ালো। মুখে কোন উত্তর নেই, শুধু একরাশ ঘূর্ণি ঘুরছে তার ভেতর।
সেই মুহূর্তে ফোন বেজে উঠলো। স্ক্রিনে মহিমার নাম।
"হ্যালো মা?"
ওপাশ থেকে কাঁপা কন্ঠে উত্তর এল,
" তুমি কোথায়? এখনই বাসায় আসো আম্মু, আমি তোমার মোবাইলে সব দেখেছি। "
মিথিলা ফিরে এলো, দরজা খুলতেই মহিমা চোখে চোখ রাখলো।
" তুমি কি করছো আম্মু? এটা কি তুমি? না কি আমার মায়ের মুখোশ পরে থাকা অন্য কেউ।"
মিথিলার মুখ থেকে কোন শব্দ বের হলো না।
" আম্মু তুমি আমাকে কেন মিথ্যা বললে?"
মিথিলার গলা কাঁপলো,
" মহিমা আমার জীবনে অনেক জটিলতা আছে, যা তোমাকে বোঝানো কঠিন। আমারও ভুল আছে... তবে আমি তোমাকে কখনো বেদনায় ফেলতে চাইনি"।
মহিমা নিজের ঘরে চলে এসে মোবাইল রেখে দিল টেবিলের ওপর। মায়ের ফোনে যা দেখেছে, তা এখন তার মাথায় নানা প্রশ্নের ঝড় তুলে দিয়েছে। সে জানে, এটা কোন সাধারণ ঘটনা নয়, এটা তার পুরো পৃথিবী বদলে দেবে। " আম্মু তুমি কি আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছো?" নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো সে। কিন্তু কি করে বলবে? কি বলে শুরু করবে? বাবা? না মা?
আরেক প্রান্তে রোমেল রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে এসে ধীরে ধীরে শহরের একান্ত গলি বেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। তার মাথায় শুধু একটায় চিন্তা, কি করলে মিথিলাকে তার খাটে তোলা যাবে। সে জানে সময় তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।
দিন বদলাতে শুরু করলো। মিথিলা এখন আরো কঠিন সিদ্ধান্তের সামনে। মিথিলা চোখ বন্ধ করে কাঁদছে। আর রোমেল অপেক্ষা করছে এক নতুন শুরুর জন্য।
রাত তখন অনেক গভীর। শহরের কোলাহল থেমেছে। কেবল গুলশানের নিরিবিলি রাস্তা জেগে আছে হালকা বাতাসে। মিথিলা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল, পরনে হাল্কা বেগুনি রঙের শাড়ি। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, চোখে অনিদ্রা। রোমেলের পাঠানো বার্তা তখনও ভেসে আছে ফোনের স্ক্রিনে।
" একবার দেখা করো৷ এই রাতটাই আমাদের শেষ হতে পারে... অথবা শুরু।
মিথিলা মনে মনে গেয়ে উঠলো,
Till now i always got by on my own
I never really cared untill i met you
And now It's chills me to the bone
You don't know how long i have wanted
To touch your lips and hold you tight
You don't know how long i have waited
And i was going to tell you tonight
But the secret is still my own
And my love for you is still unknown
রোমেলের ফোন বেজে উঠলো।
" মিথিলা"
একটা শব্দে তার পুরো জগৎ থমকে গেল। রোমেলের চোখে অজানা আবেগের ঝলক, মিথিলার কন্ঠে কি থাকবে পুনর্মিলনের সুর?
সময়ই বলে দিবে...
মিথিলা কি রোমেলের আহবানে সাড়া দিয়ে নিষিদ্ধ সম্পর্কে গভীর ভাবে নিমজ্জিত হবে?
নাকি মিথিলার মধ্যে এই সম্পর্ক নিয়ে অপরাধবোধ কাজ করবে?
পাঠক, লাইক কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন!
Posts: 1,334
Threads: 2
Likes Received: 7,735 in 1,125 posts
Likes Given: 1,129
Joined: Jan 2023
Reputation:
2,798
এই পর্বে গল্পটা জমে উঠছে। রুমন, রুমেল আর মিথিলা। প্রত্যেকটা ভাল গল্পে সব সময় কয়েকটা স্তর থাকে। রুমন, রোমেল আর মিথিলা সেই লেয়ার গুলো তৈরি করছে। সাথে মাহিমার অংশটুকু। তবে পাঠকের প্রশ্ন, রুমন কি রোমেলের জন্য মিথিলার সাথে যোগাযোগ করেছিল নাকি রুমন নিজেই মিথিলা কে চায়? আর মাহিমার অংশটুকু কে সুন্দর ভাবে ব্যবহার করলে গল্প আর চমৎকার হতে পারে। আর গল্প সুন্দর জায়গায় থামিয়েছেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
|